Ajker Patrika

অগ্নি-সন্ত্রাসীদের বিচার দ্রুত করতে হবে, আইনজীবীদের সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৩, ১৮: ৪০
অগ্নি-সন্ত্রাসীদের বিচার দ্রুত করতে হবে, আইনজীবীদের সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী

‘অগ্নি-সন্ত্রাসীদের অনেকে আন্ডারগ্রাউন্ডে ছিল, এখন আন্দোলনের সুযোগ। আমরা বাধা দিচ্ছি না। একে একে সকলে সামনে আসছে। অপরাধীরা যেন যথাযথ সাজা পায় এবং দ্রুত যেন এদের বিচার শেষ হয়’ সেই আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘বিচারহীনতা যেন না চলে, ন্যায়বিচার যেন মানুষ পায়।’ 

আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত আইনজীবী মহাসমাবেশে তিনি এ আহ্বান জানান। 

অগ্নি-সন্ত্রাসীদের সঙ্গে জড়িতদের বিচার দ্রুত শেষ করতে আইনজীবীসহ সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এরা এত অন্যায় করেছে। এদের বিচারকাজ কেন দ্রুত হবে না। এ ব্যাপারে নজর দিতে হবে। কারণ, অন্যায়কে প্রশ্রয় দিলে এরা বাড়বে।’ 

আইনজীবী ও বিচারকের ওপর বিএনপি-জামায়াত হামলা করেছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে বিএনপি-জামায়াত এ দেশে মানুষের ওপর আক্রমণ করে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালায়। জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে তাদের লেলিয়ে দেয়। অবশ্যই তাদের বিচার বাংলাদেশে হতে হবে।’ 

বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দাভাব যাচ্ছে না উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘অর্থনৈতিক মন্দার হাত থেকে বাংলাদেশও রেহাই পায়নি। তবে আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞা, সেই সঙ্গে নতুন করে প্যালেস্টাইনের ওপর হামলা হয়েছে। হাসপাতালে হামলা করে নারী-শিশুদের নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে। এর ফলে আবারও বিশ্বব্যাপী তেল ও জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাচ্ছে। আজকে উন্নত দেশগুলো হিমশিম খাচ্ছে।’ 
 
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আইনজীবী মহাসমাবেশরিজার্ভ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে অনেকে আছে রিজার্ভ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। অথচ জাতির পিতা ১৯৭২ সালে যখন শাসনভার হাতে নেন তখন কোনো রিজার্ভ মানি ছিল না। কোনো মুদ্রা ছিল না। কোনো খাদ্য ছিল না।’ 

সরকারপ্রধান বলেন, ‘জাতির পিতার হাত ধরে বাংলাদেশের বিচার কাঠামোর গোড়াপত্তন ঘটে। জাতির পিতা আইনজীবীদের কল্যাণ ফান্ড করে দিয়ে যান। জাতির পিতা আমাদের যে পদক্ষেপ দিয়ে গেছেন, আমরা সেই পথ ধরে চলি।’ 
 
জেলায় জেলায় আইনজীবীদের জন্য ভবন নির্মাণে সহযোগিতা দেওয়ার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। এ ক্ষেত্রে তিনি আইনজীবীদের পক্ষ থেকে ফান্ড গঠনেরও আহ্বান জানান। একই সঙ্গে আইনজীবীদের নিজ নিজ জেলায় প্লট বরাদ্দের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান সরকারপ্রধান। তিনি বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের বেনাভোলেন্ট ফান্ডে ৩০ কোটি টাকা অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দেন। 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আইনের শাসন বিচার পাওয়ার অধিকার প্রতিটি মানুষ যেন পায়, সেই ব্যবস্থা আমরা করেছি। বিচারব্যবস্থার মান উন্নয়নে আমরা অবকাঠামোগত উন্নয়ন করি।’ 

তিনি বলেন, ‘জুডিশিয়ারি যাতে স্মার্ট হয়, সে জন্য প্রতিটি আইন ডিজিটালাইজড করা, রায়গুলো ডিজিটালাইজড করা, ইংরেজি রায়গুলো যাতে বাংলায় অনুবাদ হয়—সেটা যেন অনলাইনে পরিচালিত হয়, মানুষ যাতে দেখতে পারে—সেটা চাই।’ 
 

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। এই দেশে হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান প্রত্যেকে যার যার ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করবে। যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। এ ক্ষেত্রে কেউ কারও ধর্মের ওপর আঘাত হানবে না। বাংলাদেশে এ ধরনের ঘটনা যাতে কোনো রকম না ঘটে শেষ দিকে সবার বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।’ 
 
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই দেশের মানুষের মানবাধিকার সুরক্ষিত থাকুক, ন্যায়বিচার নিশ্চিত হোক। আমাদের মতো যেন ৩৫ বছর না লাগে বিচার পাওয়ার (বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচার)। সেই জন্য দ্রুত বিচার যাতে সম্পন্ন হয় সেই আহ্বান করছি।’ 
 
আইনজীবীদের মানুষের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেখানে অন্যায় দেখবেন, অবশ্যই সেই অন্যায়কারীরা যথাযথ সাজা পায় তার জন্য আপনারা শুধু প্র্যাকটিস করলে হবে না, মানুষের পাশে দাঁড়াবেন।’ 

২০০৭ সালে জরুরি অবস্থার সময় গ্রেপ্তার হওয়ার কথা উল্লেখ করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা তাঁর নামে চলা মামলায় পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য আইনজীবীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। 

তৎকালীন সরকার একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়েছিল উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘প্রতিনিয়ত কোর্টে আনত, যেভাবে যন্ত্রণা দিত। কিন্তু আমি কখনো মাথা নোয়াইনি। আমার ভয়ভীতি ছিল না। কারণ, আমি জানি, আমি কোনো অন্যায় করিনি। মিথ্যাভাবে মামলা দেওয়া হয়েছে। তারপরেও আইনজীবীরা, উচ্চ আদালতে প্র্যাকটিস করেন তাঁরাও গেছেন আমার পাশে দাঁড়াতে। সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’ 

আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, সদস্যসচিব শেখ ফজলে নূর তাপস, অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ রেজাউর রহমান, আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক নজিবুল্লাহ হিরু। স্বাগত বক্তব্য দেন আইনসচিব মো. গোলাম সারওয়ার। 

এর আগে বেলা ১১টায় বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নবনির্মিত ১৫তলা ভবনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভোটের আগে তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে ইসির বৈঠক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৩৭
নির্বাচন ভবনে পৌঁছালে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবলায়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ তিন বাহিনী প্রধানকে আলাদা আলাদাভাবে অভ্যর্থনা জানান। ছবি : আজকের পত্রিকা
নির্বাচন ভবনে পৌঁছালে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবলায়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ তিন বাহিনী প্রধানকে আলাদা আলাদাভাবে অভ্যর্থনা জানান। ছবি : আজকের পত্রিকা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনায় তিন বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে বসেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

আজ রোববার দুপুর ১২টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে এই বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব উপস্থিত রয়েছেন। ভোটের তফসিল ঘোষণার পর তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের এটি প্রথম সাক্ষাৎ।

বৈঠকে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান এবং বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন উপস্থিত রয়েছেন। নির্বাচন ভবনে পৌঁছালে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ তিন বাহিনীর প্রধানদের আলাদাভাবে অভ্যর্থনা জানান।

বৈঠকে ১২ ফেব্রুয়ারির ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং গণভোট উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনা হতে পারে।

এদিকে আজ বেলা আড়াইটায় নির্বাচন ভবনের সম্মেলনকক্ষে সিইসির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় সভায় প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, তিন বাহিনীর প্রধান বা তাঁদের উপযুক্ত প্রতিনিধি, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, মহাপুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি), এনএসআই, ডিজিএফআই, কোস্ট গার্ড, বিজিবি, র‍্যাব, আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার উপস্থিত থাকবেন।

ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন মল্লিক জানান, দুপুর ১২টায় তিন বাহিনীর প্রধানেরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সাক্ষাতের পর বেলা আড়াইটায় আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভা শেষে বেসমেন্টে গণমাধ্যমে এ বিষয়ে ব্রিফিং করা হবে।

নির্বাচন ভবনে পৌঁছালে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবলায়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ তিন বাহিনী প্রধানকে আলাদা আলাদাভাবে অভ্যর্থনা জানান। ছবি : আজকের পত্রিকা
নির্বাচন ভবনে পৌঁছালে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবলায়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ তিন বাহিনী প্রধানকে আলাদা আলাদাভাবে অভ্যর্থনা জানান। ছবি : আজকের পত্রিকা

সভার আলোচ্যসূচির মধ্যে রয়েছে নির্বাচন-পূর্ব আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম রোধে যৌথ বাহিনীর কার্যক্রম, প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলের জন্য প্রণীত আচরণ বিধিমালা, ২০২৫ অনুযায়ী আচরণবিধি প্রতিপালন এবং নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি পর্যালোচনা এবং বিবিধ বিষয়ে আলোচনা হবে।

নির্বাচন ভবনে পৌঁছালে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবলায়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ তিন বাহিনী প্রধানকে আলাদা আলাদাভাবে অভ্যর্থনা জানান। ছবি : আজকের পত্রিকা
নির্বাচন ভবনে পৌঁছালে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবলায়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ তিন বাহিনী প্রধানকে আলাদা আলাদাভাবে অভ্যর্থনা জানান। ছবি : আজকের পত্রিকা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চট্টগ্রামে ভারতীয় ভিসা সেন্টার অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ১৩
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট ঝুঁকির কারণে চট্টগ্রামে ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ইন্ডিয়ান ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার (আইভ্যাক) বাংলাদেশের ওয়েবসাইটে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।

নির্দেশনায় বলা হয়, চট্টগ্রামের ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনে (এএইচসিআই) সাম্প্রতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে চট্টগ্রাম আইভিএসি বা আইভ্যাকে ভারতীয় ভিসা কার্যক্রম আজ রোববার, অর্থাৎ ২১ ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ভিসা সেন্টার পুনরায় খোলার ঘোষণা দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দক্ষিণ সুদানে নিহত ৬ শান্তিরক্ষীর জানাজা সম্পন্ন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ৫১
রোববার ঢাকা সেনানিবাসের কেন্দ্রীয় মসজিদে ৬ শান্তিরক্ষীর জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: সংগৃহীত
রোববার ঢাকা সেনানিবাসের কেন্দ্রীয় মসজিদে ৬ শান্তিরক্ষীর জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ সুদানে জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত বাংলাদেশি ছয় সেনাসদস্যের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রোববার সকাল সোয়া ৯টার পর ঢাকা সেনানিবাসের কেন্দ্রীয় মসজিদে তাঁদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

নিহত ছয় শান্তিরক্ষী হলেন নাটোরের বাসিন্দা করপোরাল মো. মাসুদ রানা, কুড়িগ্রামের বাসিন্দা সৈনিক মো. মমিনুল ইসলাম ও সৈনিক শান্ত মণ্ডল, রাজবাড়ীর বাসিন্দা সৈনিক শামীম রেজা, কিশোরগঞ্জের বাসিন্দা মেস ওয়েটার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এবং গাইবান্ধার বাসিন্দা লন্ড্রি কর্মচারী মো. সবুজ মিয়া।

জানাজার আগে নিহত সেনাসদস্যদের জীবনবৃত্তান্ত পড়ে শোনানো হয়। পাশাপাশি তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।

জানাজায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান ও বিমানবাহিনীন প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁনসহ সশস্ত্র বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় নিহত শান্তিরক্ষীদের পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

জানাজার পর নিহত শান্তিরক্ষীদের কফিনে রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর তিন বাহিনীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে ছয় সেনাসদস্যের মরদেহ হেলিকপ্টারে করে তাঁদের নিজ নিজ গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়।

১৩ ডিসেম্বর সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিকস বেসে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠীর ড্রোন হামলায় দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয়জন শান্তিরক্ষী নিহত হন। আহত হন আরও ৯ শান্তিরক্ষী। তাঁরা হলেন কুষ্টিয়ার বাসিন্দা লেফটেন্যান্ট কর্নেল খোন্দকার খালেকুজ্জামান, দিনাজপুরের বাসিন্দা সার্জেন্ট মো. মোস্তাকিম হোসেন, ঢাকার বাসিন্দা করপোরাল আফরোজা পারভিন ইতি, বরগুনার বাসিন্দা ল্যান্স করপোরাল মহিবুল ইসলাম, কুড়িগ্রামের বাসিন্দা সৈনিক মো. মেজবাউল কবির, রংপুরের বাসিন্দা সৈনিক মোসা. উম্মে হানি আক্তার, মানিকগঞ্জের বাসিন্দা সৈনিক চুমকি আক্তার এবং নোয়াখালীর বাসিন্দা সৈনিক মো. মানাজির আহসান।

গতকাল শনিবার সকালে ছয় শান্তিরক্ষীর মরদেহ বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় আনা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মানবতাবিরোধী অপরাধ

শেখ হাসিনা ও ১০ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ আজ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ০৬
গুম-নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলায় অভিযুক্ত ১৩ সেনা কর্মকর্তাকে গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ হাজির করা হয়। এ সময় হাইকোর্ট এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।	ছবি: আজকের পত্রিকা
গুম-নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলায় অভিযুক্ত ১৩ সেনা কর্মকর্তাকে গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ হাজির করা হয়। এ সময় হাইকোর্ট এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন সেলে (টিএফআই) গুম-নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার ১০ সেনা কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশের দিন নির্ধারণ রয়েছে আজ রোববার।

আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই আদেশ দেবেন। ফলে আসামিদের বিচার শুরু হবে কি না, তা জানা যাবে।

এই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট আসামি ১৭ জন। এর মধ্যে গ্রেপ্তার ১০ সেনা কর্মকর্তা হলেন র‍্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, কর্নেল কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে), র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম।

শেখ হাসিনা ছাড়াও এই মামলায় পলাতক অন্য আসামিরা হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষাবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, র‍্যাবের সাবেক ডিজি এম খুরশিদ হোসেন, র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ ও র‍্যাবের সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মো. খায়রুল ইসলাম।

১৪ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার তিন আসামির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হামিদুল মিসবাহ ও সাতজনের হয়ে লড়েন তাবারক হোসেন। এ ছাড়া আসাদুজ্জামান খানসহ তিনজনের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী এম হাসান ইমাম, তিনজনের পক্ষে সুজাদ মিয়া ও শেখ হাসিনার হয়ে লড়েন আইনজীবী মো. আমির হোসেন।

প্রত্যেকেই শুনানিতে আলাদা আলাদা কারণ (গ্রাউন্ড) এনে নিজেদের মক্কেলের অব্যাহতি চেয়েছেন। তবে প্রসিকিউশনের পক্ষে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আবেদন করেন প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম।

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে এ বিষয়ে আদেশের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।

৩ ডিসেম্বর অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি শেষ করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। শুনানিতে টিএফআই সেলের বীভৎসতা তুলে ধরার পাশাপাশি গুমের অন্ধকার পেরিয়ে দীর্ঘ ১৬ বছর পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এক নতুন বাংলাদেশ উদিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। গুম হওয়া ব্যক্তিদের ভাগ্য দুভাবে নির্ধারণ হতো বলেও উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে ভাগ্য ভালো হলে গুমের শিকার ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হতো। দ্বিতীয়ত সাত-আট বছর গুম রাখার পর ফেলে রাখা হতো অজানা কোনো স্থানে।

চলতি বছরের ২২ অক্টোবর সেনা হেফাজতে থাকা ১০ কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১। একই সঙ্গে পলাতক আসামিদের হাজিরে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়।

তবে নির্ধারিত তারিখে হাজির না হওয়ায় তাঁদের পক্ষে স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দেন আদালত। ৮ অক্টোবর এই মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। পরে অভিযোগ আমলে নিয়ে ১৭ জনের বিরুদ্ধেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত