Ajker Patrika

জনগণের জন্য মামলা খেয়েছি, দুঃখ নেই: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৬ জানুয়ারি ২০২২, ১৩: ৪৭
জনগণের জন্য মামলা খেয়েছি, দুঃখ নেই: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘প্রথমবার যেকোনো কাজ যখন আমরা করতে গিয়েছি, পরবর্তী সরকার এসে আমার বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। প্ল্যানেটারিয়াম করার জন্য আমার বিরুদ্ধে দুটি মামলা দেওয়া হয়েছিল। কেন ঠিক তা আমি জানি না। এটা করার সময় সব ইউটিলিটি যেন সামরিক জাদুঘরও ব্যবহার করতে পারে, তার ব্যবস্থা করেছিলাম।’ 

আজ বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। 

১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পরে বিমান বাহিনীর জন্য দুটি মিগ ২৯ কেনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটার জন্য দুটি মামলা আমার বিরুদ্ধে দেওয়া হয়। আমাদের বিমান বাহিনী যথেষ্ট শক্তিশালী। সেখানে মেয়েরা পর্যন্ত কাজ করছেন।’ 

নৌবাহিনীর কার্যক্ষমতা বাড়াতে ১৯৯৬ সালে দুটি ফ্রিগেট কেনার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সেটা কেনার জন্যও আরও দুটি মামলা আমার বিরুদ্ধে করা হয়েছিল। কিন্তু আমার এখানে দুঃখ নেই। আমি যা করেছি জনগণের জন্যই করেছি। যদিও এখানে তারা কোনো কিছু প্রমাণ করতে পারেনি।’ 

দেশের জন্য কাজ করাই সরকারের লক্ষ্য জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের প্রতিটি বাহিনীকে আধুনিকায়ন করাই ছিল লক্ষ্য। এমনকি পদবিগুলোও পরিবর্তন করে আন্তর্জাতিক মানের করে দিয়েছি।’ 

সরকারপ্রধান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে আমরা আপনজন হারিয়েছি ঠিকই, কিন্তু বাংলাদেশ কী হারিয়েছিল? একের পর এক ক্যু হয়েছে। কত সামরিক কর্মকর্তা, সৈনিককে জীবন দিতে হয়েছে। অনেক পরিবার এখনো তাদের আপনজনের খোঁজও পায়নি। পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতাদের ওপর অত্যাচার ও নির্যাতন। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ যে আদর্শ নিয়ে স্বাধীন হয়েছিল, তা থেকে বিচ্যুত হয়। দেশের অগ্রযাত্রা থেমে যায়, যা কখনো হওয়ার কথা না।’ 

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিকায়নের জন্য তৎকালীন সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য বেসরকারি খাতকে তখন সরকার উন্মুক্ত করে দিয়েছিল বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পাঁচটি বছর আমরা ক্ষমতায় ছিলাম। অন্তত এইটুকু দাবি করতে পারি, সেটা বাংলাদেশের জন্য স্বর্ণযুগই ছিল। মানুষের মনে একটা আশার প্রদীপ জ্বলে উঠেছিল যে তারাও সুন্দরভাবে বাঁচতে পারবে। সরকার যে জনগণের সেবক, সেটাই আমরা প্রমাণ করেছিলাম।’ 

২০০৯ সাল থেকে দীর্ঘ সময় সরকারে থাকার সুফল দেশের জনগণ পাচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশকে শুধু উন্নয়ন করা না, উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছি। যেটা ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা ছিল। সেই সুনির্দিষ্ট কাজ করছি বলেই এটা সম্ভব হয়েছে।’ 

সশস্ত্র বাহিনী দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রতীক জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষ এ সম্পর্কে যেন জ্ঞান অর্জন, জানতে ও উপলব্ধি করতে পারে যে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী কী কাজ করে। কীভাবে চলে বা অতীতে তারা কী করছে, এটা মানুষকে জানানো দরকার। বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানা। সেই সঙ্গে আমাদের ভবিষ্যৎ কী হচ্ছে সে সম্পর্কেও জ্ঞান অর্জন একান্ত দরকার।’ 

সামরিক জাদুঘর প্রথমে খুব ক্ষুদ্র পরিসরে নির্মিত হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিজয় সরণির পাশে এই জাদুঘর প্রস্তুত করা হয়। আমার আকাঙ্ক্ষা ছিল এটি এমনভাবে তৈরি করা, যেটা খুব একটা আকর্ষণীয় স্থান হবে। তারই পাশে আরেকটি জায়গায় প্রথমবার সরকারে থাকার সময় আমরা প্ল্যানেটারিয়াম (নভোথিয়েটার) করে ফেলি।’

সামরিক জাদুঘরকে দৃষ্টিনন্দন করে তৈরি করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সারা বিশ্বে যত সামরিক জাদুঘর রয়েছে, তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ জাদুঘর হিসাবে প্রতিষ্ঠা পায়, সেটাই আমার আকাঙ্ক্ষা ছিল। আমি সত্যিই আনন্দিত যে যতটুকু ছবি দেখেছি তাতে মনে হয়েছে এটা হবে পৃথিবীর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ, সুন্দর, আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন একটি সামরিক জাদুঘর। সেভাবে এটা তৈরি হোক। সেটাই আমি চাই।’ 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর জন্য আলাদা আলাদা জায়গা আছে। যাতে করে প্রতিটি বিষয়ে শিশু, তরুণ বা বয়োবৃদ্ধ যাঁরাই আসবেন, তাঁরা জ্ঞান অর্জন করবেন। সেই সঙ্গে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীতে তরুণ প্রজন্ম যোগদান করতে আগ্রহী হবে। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তারা উদ্বুদ্ধ হবে। এটাই আমি মনে করি।’ 

সামরিক জাদুঘরের পাশে একটি শিশু পার্ক তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটার পেছনে একটা ইতিহাস আছে। কোনো একজন, আমি নাম বলতে চাই না, হয়তো এখন শুনলে লজ্জা পাবে। তিনি হঠাৎ দাবি করে বসলেন এখানে একটি বহুতল ভবন করবেন। সঙ্গে সঙ্গে আমি আমার তৎকালীন সামরিক সচিব জয়নাল আবেদিনকে বললাম, এই জায়গায় কিছুতেই বহুতল ভবন করা যাবে না। কারণ তা করতে গেলে সামরিক জাদুঘর ও প্ল্যানেটারিয়াম সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যাবে। ওখানে আমি শিশু পার্ক করে দেব। সেখানে এখন দৃষ্টিনন্দন শিশু পার্ক হয়ে গেছে। কেউ আর নিতে পারবে না। ওই দালানকোঠা বানাতেও পারবে না।’ 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষের বিনোদনের জায়গা খুব সীমিত। সে জন্য আমাদের চেষ্টা থাকে তাদের বিনোদনের ব্যবস্থার। তার সঙ্গে রয়েছে শিক্ষণীয়। নভোথিয়েটারে আমাদের অনেক শিক্ষার্থী আসে। অনেক কিছু জানতে পারে। সেই সঙ্গে আমাদের সামরিক জাদুঘরে আসতে পারবে। দেখতে পারবে। ছোট্ট শিশুদের বিনোদনের ব্যবস্থা শিশু পার্কে আছে। সবকিছু মিলিয়ে একটা চমৎকার জায়গা। আমাদের বিজয় সরণি। বিজয় সরণি বিজয়ের স্মৃতি নিয়েই চলবে। সেটাই হচ্ছে বড় কথা।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথমবার সরকারে এসে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিচুক্তি করে সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠা করি। আমরা কিন্তু নিজেরাই করেছি। বাইরের কাউকে হাত দিতে দেইনি। কারণ এটা আমার নিজের দেশের ভেতরে। অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। আমাদের দেশের নাগরিক। তাদের সঙ্গে সমস্যা থাকলে আমরাই সমাধান করতে পারব। সেভাবেই আমরা করতে পেরেছি। একই সঙ্গে ভারতের সঙ্গে গঙ্গা পানি চুক্তি করে ন্যায্য হিস্যা নিয়েছি।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জিয়াউর রহমানের সমাধির পাশেই হতে পারে খালেদা জিয়ার দাফন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ০৭
জিয়াউর রহমানের সমাধির পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন খালেদা জিয়া। ছবি: উইকিপিডিয়া
জিয়াউর রহমানের সমাধির পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন খালেদা জিয়া। ছবি: উইকিপিডিয়া

বিএনপি চেয়ারপারসন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দেশের রাজনীতির ‘আপসহীন’ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।

বর্ষীয়ান এই নেত্রীর প্রয়াণে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সারা দেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর দাফন রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জিয়া উদ্যানে তাঁর স্বামী, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে হতে পারে। এটি দল ও পরিবারের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত।

এ ছাড়া আগামীকাল বুধবার রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে খালেদা জিয়ার জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। জানাজা ও দাফন প্রক্রিয়ার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য বিএনপি বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষার চেষ্টা করছে।

বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন জটিলতাসহ নানা রোগে ভুগছিলেন। চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। চিকিৎসা শেষে ৬ মে তিনি দেশে ফেরেন। সে সময় স্বাস্থ্যের কিছুটা উন্নতিও দেখা গিয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘদিনের শারীরিক জটিলতা এবং মানসিক ধকলের কারণে তিনি অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন।

গত ২৩ নভেম্বর তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে পুনরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে এক মাসেরও বেশি সময় চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ ভোরে তিনি চিকিৎসায় সাড়া দেওয়া বন্ধ করে দেন এবং চিরবিদায় নেন।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে নেতৃত্ব দেওয়া খালেদা জিয়া ‘দেশনেত্রী’ হিসেবে জনগণের কাছে সমাদৃত ছিলেন। সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে তাঁর অটল ভূমিকার কারণে তাঁকে ‘আপসহীন’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। তিনবারের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুতে একটি যুগের অবসান ঘটল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে তাঁর মরদেহ হিমাগারে রাখা হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিকতা শেষে তা পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। দলের পক্ষ থেকে পরবর্তী কর্মসূচি বিস্তারিতভাবে ঘোষণা করার প্রক্রিয়া চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে নির্বাচন কমিশনের শোক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন।

আজ মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের পরিচালক (জনসংযোগ) মো. রুহুল আমিন মল্লিক স্বাক্ষরিত এক শোকবার্তায় জানানো হয়, বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে একজন প্রভাবশালী ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন। তিনি ১৯৯১ সালে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে আরও দুই দফা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। রাজনৈতিক জীবনে তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র, সাংবিধানিক শাসনব্যবস্থা ও রাজনৈতিক অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন। তিনি দীর্ঘদিন বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবেও সংসদীয় রাজনীতিতে সক্রিয় থেকে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় আপসহীন ভূমিকা পালন করেন।

নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহের বিকাশে তাঁর রাজনৈতিক ভূমিকা বাংলাদেশের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

নির্বাচন কমিশন মরহুমার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছে এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন, স্বজন ও সহকর্মীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি ঠিক করতে উপদেষ্টাদের বৈঠক, দুপুরে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ০১
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক স্মরণীয় অধ্যায়ের অবসান ঘটিয়ে চিরবিদায় নিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।

বেগম জিয়ার মৃত্যুতে দেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর মৃত্যুপরবর্তী রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি ও শোক পালনের রূপরেখা নির্ধারণে জরুরি বৈঠকে বসেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এই বিশেষ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও উপস্থিত আছেন।

সরকারি সূত্র জানিয়েছে, বেলা ১২টার পর প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। এই ভাষণেই রাষ্ট্রীয় শোক এবং সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর শেষ বিদায়ের রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা রয়েছে।

অন্যদিকে, দলের চেয়ারপারসনের মৃত্যুতে পরবর্তী করণীয় ও জানাজার সময়সূচি নির্ধারণে স্থায়ী কমিটির জরুরি সভা ডেকেছে বিএনপি। দুপুর সাড়ে ১২টায় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

জাতীয় নির্বাচনের দিন জুলাই সনদের বিষয়ে প্রস্তাবিত গণভোটের সরকারি প্রচার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। গণভোট বিষয়ে জনসচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রমের মুখ্য সমন্বয়ক ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন শেষ না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের প্রচার বন্ধ থাকবে। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই এই গণভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

১৯৪৫ সালে জন্ম নেওয়া বেগম খালেদা জিয়া ১৯৯১ সালে বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে ইতিহাস গড়েছিলেন। তিন মেয়াদে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এই নেত্রী মুক্তবাজার অর্থনীতি এবং নারী শিক্ষার প্রসারে আমৃত্যু কাজ করে গেছেন। দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা এবং রাজনৈতিক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ২০২৪ সালের আগস্ট বিপ্লবের পর তিনি পূর্ণ মুক্তি পেলেও শারীরিক জটিলতার কারণে দীর্ঘদিন হাসপাতালেই কাটছিল তাঁর সময়।

তাঁর মৃত্যুতে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ গভীর শোক প্রকাশ করছেন। হাসপাতালের সামনে এবং নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে ভিড় করছেন হাজার হাজার শোকাতুর নেতা-কর্মী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার দাফন পর্যন্ত গণভোটের প্রচার বন্ধ রাখার নির্দেশনা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ০১
জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে সুপার ক‍্যারাভান। ছবি: প্রেস উইং
জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে সুপার ক‍্যারাভান। ছবি: প্রেস উইং

জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোটের পক্ষে সরকারি প্রচার বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আজকের পত্রিকাকে এই তথ্য জানিয়েছেন গণভোট বিষয়ে জনসচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রমের মুখ্য সমন্বয়ক ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (উপদেষ্টা পদমর্যাদা) অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

আলী রীয়াজ বলেন, ‘খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন না হওয়া পর্যন্ত গণভোটের সমস্ত রকম প্রচার বন্ধ থাকবে।’

আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাচন ও জুলাই সনদের বিষয়ে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণের দিন গণভোট দিতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে সারা দেশে প্রচার করছে সরকার। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়সহ ১৯টি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে এই প্রচার চলছে।

দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আজ মঙ্গলবার ভোরে তিনি মারা যান। তাঁর মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি ঠিক করতে উপদেষ্টা পরিষদ বিশেষ বৈঠকে বসেছে। এতে সভাপতিত্ব করছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দুপুর ১২টার পরে জাতির উদ্দেশে ভাষণে কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারেন প্রধান উপদেষ্টা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত