জাহীদ রেজা নূর

অবশেষে কাতার এয়ারওয়েজের ৭০৫ রুটের বিমানটি নিউইয়র্কের জেএফকে বিমানবন্দরে অবতরণ করল। খুবই মসৃণ অবতরণ। ঘড়িতে তখন রাত সাড়ে এগারোটা। ১৯ এপ্রিল। ঢাকায় ততক্ষণে ২০ এপ্রিলের সকাল হয়ে গেছে। আমরা ঢাকা থেকে রওনা হয়েছিলাম ১৯ এপ্রিল সকাল দশটা পঞ্চাশ মিনিটে। এর মধ্যে টাইমজোন পরিবর্তিত হয়েছে। এখন নিউইয়র্কে আমরা সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দশ ঘণ্টা এগিয়ে।
নিউইয়র্কে যখনই আসি, তখনই একবার ব্রডওয়ে ঘুরে আসতে মন চায়। ব্রডওয়ের কোনো এক থিয়েটারে একটা নাটক দেখতে পেলে অনেক কিছু ভাবার অবকাশ মেলে। হোক সেটা ব্রডওয়ে, অফ ব্রডওয়ে কিংবা অফ অফ ব্রডওয়ে। তাতে কিছু আসে যায় না। শিল্পকে এরা কোথায় নিয়ে গেছে, তা ভেবে মানুষের কল্পনাশক্তি আর কারিগরি ক্যারিশমার সৃজনশীল অবয়বের জন্য গর্ব হয়। চ্যাটজিপিটির কালে মানুষের নান্দনিকতার দাম কমে না যাওয়ার একটা বড় জায়গা হিসেবে সৃজনশীলতা আরও বহুদিন বেঁচে থাকবে বলে অন্তত আমার মনে হয়। আর সেই সৃজনশীলতা মরে যেতে পারে, হেরে যেতে পারে, যদি যান্ত্রিক শব্দাবলিই একসময় মানুষের স্বপ্নের আকাশ ঢেকে দেয়।
যাহোক, ঢাকা মহানগর যখন চল্লিশোর্ধ্ব সেলসিয়াস মাথায় করে কাটিয়ে যাচ্ছিল ভয়াবহ দিন-রাত, তখন শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে পূর্বনির্ধারিত নিউইয়র্কগামী প্লেনে চড়ে বসার পরও মনে হয়নি যে রাত সাড়ে এগারোটায় নিউইয়র্ক পৌঁছুলে একটা জ্যাকেট চড়াতে হবে শরীরে। দশ ঘণ্টা সময়ের হেরফের বাংলাদেশ আর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে, আর তাতেই তাপমাত্রা নত হয়েছে কতটা!
এবারের বিমানযাত্রা, ইমিগ্রেশন, লাগেজ বুঝে পাওয়া—সবই ছিল সহজ। শুধু ঢাকা থেকে রওনা হওয়ার সময় এয়ারপোর্টে কাতার এয়ারওয়েজের এক কর্মকর্তার চোখ পড়েছিল আমার হ্যান্ড লাগেজের দিকে। বিমানবন্দরের কাতার এয়ারওয়েজের কাউন্টারগুলোর সর্বত্র লেখা আছে, ল্যাপটপসহ সাত কেজির বেশি জিনিসপত্তর নেওয়া যাবে না হাতব্যাগে। আমার হ্যান্ড লাগেজে মালামাল ছিল কিছুটা বেশি। বেঁকে বসলেন সেবাদানকারী কর্মকর্তা। এ জন্য বাড়তি টাকা গুনতে বললেন। তাঁকে সুযোগ না দিয়ে ব্যাগে থাকা সোয়েটারটি পরে নিলাম, হাতে নিলাম দুটো থান ইটের মতো বই, তারপর বললাম, ‘বইগুলো আমরা পড়ব। আর এবার ব্যাগটা মাপুন তো!’
ভদ্রলোক তাজ্জব বনে গেলেন এবং চুপ করে রইলেন। এ রকম সহজ সমাধান আছে, সেটা তাঁর মাথায় কুলাল না। তাঁরই একজন ডান হাত বা বাঁ হাত, সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী হ্যান্ড লাগেজে ট্যাগ লাগিয়ে দিতে দিতে বললেন, ‘ঈদ হিসেবে স্যার আপনার লাগেজের জন্য অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে না। ঈদের সময় এমনটা হতেই পারে। আপনাদের যাত্রা শুভ হোক।’
দেখো দেখি কাণ্ড! এ কথাটা আগে বললে কি আর ভারী সোয়েটারটা শরীরে জড়াতে হয়!
প্লেনে নাকি এখন ভালো খাবার দেয় না, এমনটাই শুনেছিলাম। গতবার যখন নিউইয়র্কের জেএফকে বিমানবন্দর থেকে কুয়েত এয়ারওয়েজে করে ফিরেছিলাম ঢাকায়, তখন সত্যিই খাবারের এই রেশনিংয়ের সামনে পড়েছিলাম। পাইলট মহাশয় অবশ্য আগেভাগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘তোমাদের কারও খিদে লাগলে কেবিন ক্রুকে বোলো। ওরা তোমার ইচ্ছেমতো জুস, চা-কফি আর স্যান্ডউইচ সরবরাহ করবে।’
কখনো চেয়ে খাওয়ার ইচ্ছে হয়নি আমার। তাই যে কবার যেচে এসে খাবার দিয়ে গেছে ক্রুরা, তার বেশি চাইনি।
ঢাকা-দোহা রুটে যে বিমানটি ছিল, সেটিতে আসনগুলো ভাগ করা ছিল ২-৪-২ হিসেবে। আমরা দুজন। একটি আইল-আসন পেলে সুবিধা হয়। সেটা পাওয়া গিয়েছিল। তবে আসনের সামনে যে মনিটরটি আছে, সেটি নিয়ন্ত্রণে রাখা মোটেই সহজসাধ্য ছিল না। যে সিনেমা দেখতে চাই, সেটা ঠিকভাবে দেখা যায় না। গান শুনতে চাইলে সেটা খুঁজে পাওয়া যায় না। ফলে ঢাকা-দোহার আকাশটা ছিল বিনোদনের সুযোগহীন।
তবে দোহা-নিউইয়র্কের পথে সেই সমস্যা ছিল না। ৩-৪-৩ আসনবিন্যাসের বড় উড়োজাহাজটির ইকোনমি ক্লাসের ভ্রমণটি ছিল আরামদায়ক।
একটা কৌতূহল আমার মনে অনেক দিন ধরেই বাস করছে। আমরা যারা সাশ্রয়ী মূল্যে বিমানের টিকিট কিনি, তাদের ইকোনমি ক্লাসের যাত্রী বলা হয়। এই গরিব যাত্রীদের প্লেনে ওঠানো হয় বিজনেস ক্লাসের দরজা দিয়ে। অর্থাৎ আঁটসাঁট ইকোনমি ক্লাসের আসনের দিকে এগোনোর সময় বিজনেস ক্লাসের বিলাসবহুল আসনগুলো দেখে যেন পরবর্তীকালে বেশি পয়সা খরচ করে বিজনেস ক্লাসে ভ্রমণ করার স্বাদ জাগে—তারই মনস্তাত্ত্বিক খেলা কি না এটা, কে জানে!
আরে ভাই, বাজার অর্থনীতির যুগে আমাদের বসবাস। এখানে নিজেকে জাহির করার চেয়ে ‘বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান’।
এবার ঢাকা-দোহা, দোহা-নিউইয়র্কে দেখা গেল খাদ্য আর পানীয়ের সমাহার। কিছুক্ষণ পর পর হয় গলা ভেজাতে বলে, নয়তো খাবার গিলতে বলে! এবং অবাক হয়ে লক্ষ করি, ফ্লাইটের কোনো না কোনো বিমানবালার চেহারায় যে বিরক্তি ফুটে উঠতে দেখেছি নানা সময়ে, এবার যেন তা ছিল না। বরং ছোটখাটো কথা বলে বিমানযাত্রাটি আনন্দমুখর করে তুলতে চাইছিলেন তাঁরা। একটা উদাহরণ না দিলে বোঝা যাবে না। ডিনারে ছিল চিকেন অ্যান্ড রাইস, আর বিফ অ্যান্ড পটেটো। গরুর মাংসের সঙ্গে আমার আজন্ম ভালোবাসা বলে সেটাই চাইলাম।
বিমানবালা হেসে জানতে চাইল, ‘তুমি চিকেন খাবে না কেন?’
‘আগেরবার চিকেন নিয়েছিলাম। আর ডিনারে আমি বিফ পছন্দ করি।’
‘কোথা থেকে আসছ?’
‘ঢাকা থেকে।’
‘আচ্ছা!’
এটুকুই কথাবার্তা। কিন্তু এই যে আপাতকার্যকারণহীন কথাবার্তা, তারও তো একটা মূল্য আছে জীবনে।
জেএফকে বিমানবন্দরে রাত সাড়ে এগারোটায় নামার পর শীতটা টের পাওয়া গেল। লাগেজের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হলো না। দুটো ট্রলি বারো ডলার দিয়ে নিয়ে মালসামানসহ আট নম্বর টার্মিনাল থেকে বেরিয়ে এলাম আমরা দুজন। নিউইয়র্কে থাকা আমাদের মেয়ে ঝড়ের বেগে টার্মিনালে প্রবেশ করে আমাদের দুজনের হাতে ধরিয়ে দিল গতবার আমাদেরই রেখে যাওয়া দুটো জ্যাকেট। হ্যাঁ, ততক্ষণে আমরা ঢাকা শহরের প্রায় মধ্যপ্রাচ্য বনে যাওয়া আবহাওয়া থেকে বেরিয়ে এসেছি। বুঝতে পারছি, একই পৃথিবীতে বসবাস করলেও প্রকৃতি নিজেকে সাজিয়েছে কত না বৈচিত্র্যময় করে। এক জায়গায় মানুষের যখন গরমে ত্রাহি মধুসূদন অবস্থা, অন্য এক জায়গার মানুষ তখন শীতে কাঁপছে!
বৈচিত্র্যের কথা বললে আবার নিউইয়র্কের কথাই বলতে হয়। এ শহর প্রত্যেক মানুষকে যেন জড়িয়ে রেখেছে পরম আদরে। অকারণে এই শহরকে নানা নামে ডাকা হয় না। সম্ভবত বাংলা ভাষায়ই সোভিয়েত সাহিত্যিক মাক্সিম গোর্কির একটা বই পড়েছিলাম, ‘পীতদানবের দেশে’ নামে যার অনুবাদ হয়েছিল। নিউইয়র্ককে পীতদানবের দেশ নামেও ডাকা হয়। বলা হয় ‘বিশালাকার আপেল’। আর হ্যাঁ, যে ডাকটির সঙ্গে সত্যের মাখামাখি আছে, সেটি হলো ‘বিশ্বের রাজধানী।’ এই শেষ দুটি শব্দে একটু থামুন। ‘বিশ্বের রাজধানী’ বলতে হলে একটি শহরকে কেমন হতে হবে, সেটা ভেবে নিন।
আদুরে শহর
বলা হয়, নিউইয়র্ক যেন মানুষকে আদর করে ধরে রাখে। এ শহর কোটিপতি আর উন্মাদের শহর। এ শহর দরিদ্র আর অভিজাত মানুষের শহর। পৃথিবীর সব রং ধরা আছে এ শহরে। পৃথিবীর যেকোনো নৃতাত্ত্বিক উত্তরাধিকারকে পাওয়া যাবে এখানে। শুধু কি তাই? চীনের মানুষেরা এসে এখানে গড়ে তুলেছে তাদের পাড়া, সেখানে ইংরেজির পাশে চৈনিক ভাষায় লেখা সাইনবোর্ড। নিউইয়র্কের কুইনসের ফ্লাশিংয়ে গেলে কিংবা ম্যানহাটানের চায়না টাউনে গেলে বোঁচা নাকের মানুষের ভিড় দেখে বোঝাই যাবে না, এটা আমেরিকা। মনে হবে, এখন বুঝি চীনেই আছি আমরা।
রুশ জাতি এসে আস্তানা গেড়েছে নিউইয়র্কের যেসব জায়গায়, সেগুলোতেও মানুষ ইংরেজির চেয়ে রুশ ভাষায় কথা বলতে বেশি ভালোবাসে। বিশেষ করে ব্রাইটন বিচ কিংবা ফরেস্ট হিলসে গেলে রুশ ভাষাটাই যেন হয়ে যায় সেই এলাকার ভাষা। কোনো বাঙালিও যদি রুশ ভাষায় কথা বলে, এসব এলাকায় কেউ অবাক হবে না। রুশ ভাষায় কথা না বললেই বরং ভাববে—‘মালটা নতুন আমদানি’। আফ্রিকার মানুষের জন্য ম্যানহাটানের ‘হারলেম’ একসময় বিখ্যাত ছিল। এখানকার অধিকাংশ মানুষই ছিল কৃষ্ণবর্ণের। খুনোখুনিও বেশি হতো। অপরাধজগৎ বলে নাম ছিল হারলেমের। এখন অবশ্য অবস্থা পাল্টেছে। সংখ্যায় কমে গিয়ে শতকরা চল্লিশের মতো হয়েছে আফ্রিকান আমেরিকান। তবে কুইনসের জ্যামাইকায় গেলেও এখন দেখা যাবে আফ্রিকান আমেরিকানদের জয়জয়কার।
আর বাঙালি? জি হ্যাঁ, গ্যারান্টি দিয়ে বলছি, জ্যাকসন হাইটসে দু-তিনটি রাস্তাই আছে, যেখানে দোকানগুলোয় কর্মরত প্রায় সবাই বাঙালি। এখানকার দোকানপাটের সাইনবোর্ডে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলার অবস্থান। এমন মানুষকেও জ্যাকসন হাইটসে পাওয়া যাবে, যিনি এক বর্ণ ইংরেজি জানেন না। কোনো না কোনোভাবে নিউইয়র্কে এসে সেই যে কাজে ঢুকে গেছেন, সেটাই হয়ে গেছে তাঁর জগৎ। আর এখান থেকে কোথাও যাননি। মুখস্থ জায়গায় নেমে কাজ করে আবার মুখস্থ জায়গায় ফিরে যান তাঁরা। ব্রুকলিন, ব্রংকসেও কত যে বাঙালির বসবাস! ইদানীং কুইনসের পারসনস বুলভার্ড থেকে ১৭৯ স্ট্রিট পর্যন্ত গেলেও মনে হবে, মিনি বাংলাদেশেই বুঝি এসে পড়েছি।
আমরা জার্নি করেছি চব্বিশ ঘণ্টার কাছাকাছি। সব মিলিয়ে তা বড়ই ক্লান্তিকর। প্লেনেই বসে থাকতে হয়েছে কম করে হলেও আঠারো ঘণ্টা। ফলে এ রকম একটি ভ্রমণের পর দিন-রাতের ব্যবধান ঘুচে যায়। সময় পরিবর্তন হয়েছে বলে কারও কারও রাতের ঘুম দিনে হয়, রাতে চোখ মেলে বসে থাকতে হয়। কেউ সারা দিন মড়ার মতো ঘুমায়, কারও চোখে ঘুম আসে না।
বইয়ের মধ্যে নিউইয়র্কের খোঁজ
যাদের ঘুম আসে না, তাদের কেউ কেউ কিছু পড়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠে। এ মুহূর্তে রাত দুটো বাজতে দশ মিনিট বাকি যখন, তখন তেমনই এক রাতজাগা মানুষের ইচ্ছে হলো বইপত্তরের খোঁজ নেবে। এবং অবধারিতভাবে নিউইয়র্কবিষয়ক ভালো বইয়ের দিকেই রাখতে হবে দৃষ্টি।
কেন এই বইগুলোর কথা জানতে চাইছি? এর কারণ হলো, সব তো নিজের চোখে দেখা সম্ভব নয়। এসব উপন্যাসের মাধ্যমে নিউইয়র্কের জীবনটা যেন পরিষ্কার হয়ে উঠে আসে পাঠকের মনে। পাঠকের জন্য এই বই-ভ্রমণটাও খুব সস্তা কিছু নয়। বাস্তবে দেশ দেখা হোক আর না হোক, বইয়ের পৃষ্ঠায় সেই দেশকে দেখে ফেলার সুযোগ পাওয়া বিরল সৌভাগ্য।
গিওম ম্যুসো লিখেছেন ‘সেন্ট্রাল পার্ক’ উপন্যাসটি। সেন্ট্রাল পার্ক কিন্তু নিউইয়র্কের কেন্দ্র। বিশাল এ সবুজ পার্কে অবকাশ কাটাতে ভালো লাগে। স্বাস্থ্য উদ্ধার করতে চান যাঁরা, তাঁরা এখানে চলে আসেন সকাল-বিকেলে। রয়েছে রিকশা। চড়া ভাড়ায় তা পার্কের কিছু অংশ ঘুরিয়ে আনে পর্যটককে। সেই পার্ক নিয়েই গিওমের উপন্যাসটি। সেন্ট্রাল পার্কের এক বেঞ্চিতে হঠাৎ ঘুম ভাঙল এলিসের। এলিস দেখল, তার হাতে হাতকড়া। সেই হাতকড়ায় বাঁধা আছে অন্য এক অজানা পুরুষের হাত। একটু পর মেয়েটা জানতে পারে, একটি জাজ দলের সদস্য এই লোকটি। এলিস কিছুতেই বুঝতে পারে না, নিউইয়র্কের সেন্ট্রাল পার্কের এক বেঞ্চিতে কী করে এ রকম একজন অচেনা মানুষের সঙ্গে হাতকড়া পরা অবস্থায় সে বসে আছে। এলিসের হঠাৎ তার পেশার কথা মনে হয়। পুলিশে চাকরি করে মেয়েটি। বছর দুয়েক আগে ইরিক বোগ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করেছিল সে। এমন কি হতে পারে, সেই ইরিক বোগ এখনো জীবিত আর এখন সে এলিসের ওপর প্রতিশোধ নিচ্ছে? প্রশ্নের জন্ম হয় অনেক বেশি, উত্তর আসে অনেক কম। এলিস অবশ্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সে মনে করে, এই রহস্যের সমাধান তাকেই করতে হবে।
কে এই অচেনা মানুষটি, কী তার পরিচয়, এ প্রশ্নও তো এড়ানো যায় না। এভাবেই এগিয়ে চলে উপন্যাসটি।
নিউইয়র্ক শহরের নিশ্বাস শোনা যায় এই উপন্যাসে।
সেন্ট্রাল পার্কের কথা উঠলেই অনেকের মনে পড়ে যায় ‘হোম অ্যালোন’ সিরিজের ‘লস্ট ইন নিউইয়র্ক’ ছবিটির কথা। যে হোটেলে এসে উঠেছিল কেভিন, তার পাশেই ছিল সেন্ট্রাল পার্ক। আর সেই সেন্ট্রাল পার্কে ‘ভেজা দস্যু’রা প্রায় ধরে ফেলেছিল কেভিনকে! সেই সিনেমায় এক পলকের জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও দেখা গিয়েছিল, পরবর্তীকালে যিনি হয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।
সেন্ট্রাল পার্কের একটা জায়গা আছে, যা জন লেননের প্রতি উৎসর্গীকৃত। স্ট্রবেরি ফিল্ডস তার নাম। সেখানে অনেকেই আসে। কেউ আসে গিটার হাতে। লেননের গান পরিবেশন করে। অনেকে সেখানে দাঁড়িয়ে বা বসে ছবি তোলে। পার্ক পার হলেই ড্যাকোটা অ্যাপার্টমেন্ট। এইন অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের একটি ফ্ল্যাটেই থাকতেন লেনন। চ্যাপম্যান নামে এক ভক্তকে যখন অটোগ্রাফ দিচ্ছিলেন অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের সামনে, তখনই সেই ভক্ত গুলি ছুড়েছিল জন লেননের শরীরে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরও তিনি বাঁচেননি। সেন্ট্রাল পার্কের কাছে এলে লেননের কথা মনে পড়ে।
সোফি কিনসেলার উপন্যাসটার নাম ‘শপাহোলিক টেকস ম্যানহাটান’। উপন্যাসটির কথা বলার আগে ম্যানহাটানের কথা একটু বলে নিই। তারও আগে নিউইয়র্ক রাজ্যটির কথা। এ কথা সবাই জানেন, নিউইয়র্ক যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি অঙ্গরাজ্য। এই রাজ্যেরই রাজধানী নিউইয়র্ক সিটি। রাজ্যের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে এলে এই ম্যানহাটানের দেখা পাওয়া যাবে।
‘শপাহোলিক টেকস ম্যানহাটান’-এর গল্প বলতে গেলে কেন নিউইয়র্ক শহর সম্পর্কে জানার প্রয়োজন পড়ে, তা পরিষ্কার করব এবার। আসলে ‘ম্যানহাটান’ শব্দটি যুক্তরাষ্ট্রে বেড়াতে আসা পর্যটকদের মন দুলিয়ে দেয়। নিউইয়র্ক সিটি যে পাঁচটি প্রশাসনিক অঞ্চল বা বরো নিয়ে তৈরি, তার একটি হচ্ছে ম্যানহাটান। বাকিগুলোর নাম হলো ব্রুকলিন, ব্রংকস, কুইনস আর স্ট্যাটেন আইল্যান্ড। ঘটনাচক্রে আমি যখন নিউইয়র্কে আসি, তখন কুইনস ভিলেজে থাকি। অতি ব্যস্ত ম্যানহাটানের তুলনায় কুইনস ভিলেজ কিছুটা নীরব।
নিউইয়র্ক সিটির সবচেয়ে বড় বরো হলো কুইনস। আর সবচেয়ে ছোট কিন্তু সবচেয়ে প্রভাবশালী বরোর নাম ম্যানহাটান। ম্যানহাটানকে নিউইয়র্ক সিটির প্রাণ বললে একেবারেই বাড়িয়ে বলা হবে না। এখানকার গগনচুম্বী ভবনগুলো এবং ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা জাদুঘর, খাবারের দোকান কিংবা শপিং মল মন কেড়ে নেয় পর্যটকদের। এমপায়ার স্টেট বিল্ডিং, ক্রিসলার বিল্ডিং, সিটিকর্প সেন্টারসহ বড় বড় প্রাসাদসম ভবন এই ম্যানহাটানেই অবস্থিত। আর ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের কথা তো আলাদাভাবে বলতে হবে। ম্যানহাটান ভ্রমণের কথা হবে পরে। আগে এটুকু শুধু বলে নিই, শুরুতেই যে ব্রডওয়ে থিয়েটারের কথা বলেছিলাম, তা দেখতে হলে আসতে হবে এই ম্যানহাটানেই। নিউইয়র্কের দুই বিখ্যাত নদী হাডসন আর ইস্ট রিভারের কথাও পরে বলা হবে। আটলান্টিকের কথাও আসবে পরে।
সোফি কিনসেলার বইটির কথা এবার বলা যায়। এখন বলা হবে নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের শপিং মল আর দোকানপাটের কথা। কেন বলা হবে? বলা হবে, কারণ, এই বিষয়টিই তো কিনসেলার বইয়ের মূল প্রতিপাদ্য। কীভাবে এই দোকানগুলো মোহগ্রস্ত করে ফেলে মানুষকে, তারই আঁচ পাওয়া যাবে বইয়ের ভেতর ঢুকলে। ম্যানহাটান বদলে দেয় মানুষের ভাবনাকে। তছনছ করে দেয় হৃদয়ের যৌক্তিক ভাবনার চলাচলকে। বেকি বলে যে মেয়েটির কথা বলা হচ্ছে উপন্যাসে, তার জীবনে এ রকম বড় বড় ঢেউ এসে লাগবে, সে কথা আগে থেকে কে জানত? ম্যানহাটান তাকে তার জীবন এবং ক্রেডিট কার্ড নিয়ে ভাবনার মধ্যে আমূল পরিবর্তন নিয়ে এল। গুগেনহেইম জাদুঘরে তো বেকিকে যেতেই হবে, কিন্তু লোভনীয় দোকানগুলোর কাচের বিভিন্ন জানালা মোহিত করে ফেলে বেকিকে, এরপর সে শুধু কিনতে থাকে, কিনতে থাকে, কিনতে থাকে…।
নাহ্! উপন্যাসগুলো নিয়ে পরে কথা হবে। শুধু এ কথাই বলার চেষ্টা করলাম যে আদতে নিউইয়র্ককে চিনতে হলে এর প্রাণকেন্দ্রে যেতে হয় বারবার। ওই যে, ম্যানহাটানের টাইমস স্কয়ারের পাশেই যেখানে একটি দোকানের ভেতর ছোট্ট মিউজিয়ামের মতো করে স্বনামধন্য শিল্পীদের ব্যবহৃত পোশাক-আশাক আর বাদ্যযন্ত্রের দেখা মেলে, সেখানেই হঠাৎ করে কনসার্ট ফর বাংলাদেশে ব্যবহার করা জর্জ হ্যারিসনের গিটারটি দেখলে কেমন লাগবে আপনার? কিংবা ঘুরতে ঘুরতে মোমায় এসে ভ্যান গঘের ‘স্টারি নাইট’ দেখে ফেললে কি আপনি আর আগের মানুষটা থেকে যেতে পারবেন? আর পিকাসোর সেই বিখ্যাত ছাগলটি কি আপনাকে অনেকখানি বদলে ফেলবে না?
দরদাম
নাহ্! নিউইয়র্ক নিয়ে এত কিছু বলার আছে, যা এক বসায় লিখে যাওয়া সম্ভব নয়। ঘুম থেকে উঠে প্রথম দিন যখন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে দোকানে গেলাম, তখন বুঝতে পারলাম, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের দীর্ঘ ছায়া পড়েছে পণ্যের দামে।
সবচেয়ে অবাক করেছে ডিমের দাম। যুদ্ধের আগে ডিম ছিল স্বাভাবিক দামে। যদি ভুল করে না থাকি, তাহলে ডিমের ডজন ছিল ২ ডলার। এখানে অবশ্য তিন আকারের ডিম আছে। খুব বড়, বড় আর মাঝারি। ‘ছোট ডিম’ বলে কোনো লেবেল দেখিনি কখনো। ছোটটাকেই বুঝি ‘মেজ’ নামে চালিয়ে দেওয়া হয়।
পূর্ব ইউরোপে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ধাই ধাই করে ডিমের দাম কেন বেড়ে গেল, সেটা কে বলতে পারবে কে জানে। সে সময় দোকানগুলোয় লেখা থাকত, ‘এই দাম সাময়িক। কিছুদিন পর আবার সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে যাবে।’ সে সময় ১২টা ডিমের দাম কখনো কখনো ৫ ডলারও হয়েছিল। এবার ডিম কিনলাম প্রথমে সাড়ে চার ডলার, পরে সাড়ে তিন ডলার ডজন। একটু তো কমেছে দাম, কিন্তু আগের জায়গায় তা ফেরেনি।
রেস্তোরাঁয় খাবারদাবারের দাম বেড়েছে। বাইরের স্ট্রিট ফুডের ক্ষেত্রেও চড়া দামের আভাস। গাড়ির তেলের দামও আগের তুলনায় বেশি।
আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘সুন্দরী’ সিনেমায় ববিতার ঠোঁটে একটা সংলাপ ছিল, ‘বাপ মরছে আমার আর দাড়ি রাখছে কাঞ্চন’। সংলাপটা একটু ঘুরিয়ে বলি, ‘যুদ্ধ করে রাশিয়া-ইউক্রেন, আর খাবারের দাম বাড়ে যুক্তরাষ্ট্রে।’ না, কথাটা খুব একটা ঠিক বলা হলো না। এই যুদ্ধে বিশ্বমোড়লদের কাউকেই ধোয়া তুলসীপাতা বলা যাবে না। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসা দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ বাধার ক্ষেত্রে বাইরের দেশগুলোর ইন্ধন রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বারবার রাশিয়াকে উসকে দিয়েছে। রাশিয়াও সেই উসকানিতে সায় দিয়ে যুদ্ধ বাধিয়েছে।
তাতে লাভ হয়েছে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা অস্ত্র ব্যবসায়ীদের; বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের। কিন্তু সেই চাপ এসে লেগেছে যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ মানুষের বুকে। তবে চাপ কতটা গভীর, সেটা বোঝার জন্য যেতে হবে বাজারে, শপিং মলে, রাজপথে। কান পাততে হবে মানুষের সংলাপে।
তারই অপেক্ষায় রয়েছি।

অবশেষে কাতার এয়ারওয়েজের ৭০৫ রুটের বিমানটি নিউইয়র্কের জেএফকে বিমানবন্দরে অবতরণ করল। খুবই মসৃণ অবতরণ। ঘড়িতে তখন রাত সাড়ে এগারোটা। ১৯ এপ্রিল। ঢাকায় ততক্ষণে ২০ এপ্রিলের সকাল হয়ে গেছে। আমরা ঢাকা থেকে রওনা হয়েছিলাম ১৯ এপ্রিল সকাল দশটা পঞ্চাশ মিনিটে। এর মধ্যে টাইমজোন পরিবর্তিত হয়েছে। এখন নিউইয়র্কে আমরা সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দশ ঘণ্টা এগিয়ে।
নিউইয়র্কে যখনই আসি, তখনই একবার ব্রডওয়ে ঘুরে আসতে মন চায়। ব্রডওয়ের কোনো এক থিয়েটারে একটা নাটক দেখতে পেলে অনেক কিছু ভাবার অবকাশ মেলে। হোক সেটা ব্রডওয়ে, অফ ব্রডওয়ে কিংবা অফ অফ ব্রডওয়ে। তাতে কিছু আসে যায় না। শিল্পকে এরা কোথায় নিয়ে গেছে, তা ভেবে মানুষের কল্পনাশক্তি আর কারিগরি ক্যারিশমার সৃজনশীল অবয়বের জন্য গর্ব হয়। চ্যাটজিপিটির কালে মানুষের নান্দনিকতার দাম কমে না যাওয়ার একটা বড় জায়গা হিসেবে সৃজনশীলতা আরও বহুদিন বেঁচে থাকবে বলে অন্তত আমার মনে হয়। আর সেই সৃজনশীলতা মরে যেতে পারে, হেরে যেতে পারে, যদি যান্ত্রিক শব্দাবলিই একসময় মানুষের স্বপ্নের আকাশ ঢেকে দেয়।
যাহোক, ঢাকা মহানগর যখন চল্লিশোর্ধ্ব সেলসিয়াস মাথায় করে কাটিয়ে যাচ্ছিল ভয়াবহ দিন-রাত, তখন শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে পূর্বনির্ধারিত নিউইয়র্কগামী প্লেনে চড়ে বসার পরও মনে হয়নি যে রাত সাড়ে এগারোটায় নিউইয়র্ক পৌঁছুলে একটা জ্যাকেট চড়াতে হবে শরীরে। দশ ঘণ্টা সময়ের হেরফের বাংলাদেশ আর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে, আর তাতেই তাপমাত্রা নত হয়েছে কতটা!
এবারের বিমানযাত্রা, ইমিগ্রেশন, লাগেজ বুঝে পাওয়া—সবই ছিল সহজ। শুধু ঢাকা থেকে রওনা হওয়ার সময় এয়ারপোর্টে কাতার এয়ারওয়েজের এক কর্মকর্তার চোখ পড়েছিল আমার হ্যান্ড লাগেজের দিকে। বিমানবন্দরের কাতার এয়ারওয়েজের কাউন্টারগুলোর সর্বত্র লেখা আছে, ল্যাপটপসহ সাত কেজির বেশি জিনিসপত্তর নেওয়া যাবে না হাতব্যাগে। আমার হ্যান্ড লাগেজে মালামাল ছিল কিছুটা বেশি। বেঁকে বসলেন সেবাদানকারী কর্মকর্তা। এ জন্য বাড়তি টাকা গুনতে বললেন। তাঁকে সুযোগ না দিয়ে ব্যাগে থাকা সোয়েটারটি পরে নিলাম, হাতে নিলাম দুটো থান ইটের মতো বই, তারপর বললাম, ‘বইগুলো আমরা পড়ব। আর এবার ব্যাগটা মাপুন তো!’
ভদ্রলোক তাজ্জব বনে গেলেন এবং চুপ করে রইলেন। এ রকম সহজ সমাধান আছে, সেটা তাঁর মাথায় কুলাল না। তাঁরই একজন ডান হাত বা বাঁ হাত, সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী হ্যান্ড লাগেজে ট্যাগ লাগিয়ে দিতে দিতে বললেন, ‘ঈদ হিসেবে স্যার আপনার লাগেজের জন্য অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে না। ঈদের সময় এমনটা হতেই পারে। আপনাদের যাত্রা শুভ হোক।’
দেখো দেখি কাণ্ড! এ কথাটা আগে বললে কি আর ভারী সোয়েটারটা শরীরে জড়াতে হয়!
প্লেনে নাকি এখন ভালো খাবার দেয় না, এমনটাই শুনেছিলাম। গতবার যখন নিউইয়র্কের জেএফকে বিমানবন্দর থেকে কুয়েত এয়ারওয়েজে করে ফিরেছিলাম ঢাকায়, তখন সত্যিই খাবারের এই রেশনিংয়ের সামনে পড়েছিলাম। পাইলট মহাশয় অবশ্য আগেভাগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘তোমাদের কারও খিদে লাগলে কেবিন ক্রুকে বোলো। ওরা তোমার ইচ্ছেমতো জুস, চা-কফি আর স্যান্ডউইচ সরবরাহ করবে।’
কখনো চেয়ে খাওয়ার ইচ্ছে হয়নি আমার। তাই যে কবার যেচে এসে খাবার দিয়ে গেছে ক্রুরা, তার বেশি চাইনি।
ঢাকা-দোহা রুটে যে বিমানটি ছিল, সেটিতে আসনগুলো ভাগ করা ছিল ২-৪-২ হিসেবে। আমরা দুজন। একটি আইল-আসন পেলে সুবিধা হয়। সেটা পাওয়া গিয়েছিল। তবে আসনের সামনে যে মনিটরটি আছে, সেটি নিয়ন্ত্রণে রাখা মোটেই সহজসাধ্য ছিল না। যে সিনেমা দেখতে চাই, সেটা ঠিকভাবে দেখা যায় না। গান শুনতে চাইলে সেটা খুঁজে পাওয়া যায় না। ফলে ঢাকা-দোহার আকাশটা ছিল বিনোদনের সুযোগহীন।
তবে দোহা-নিউইয়র্কের পথে সেই সমস্যা ছিল না। ৩-৪-৩ আসনবিন্যাসের বড় উড়োজাহাজটির ইকোনমি ক্লাসের ভ্রমণটি ছিল আরামদায়ক।
একটা কৌতূহল আমার মনে অনেক দিন ধরেই বাস করছে। আমরা যারা সাশ্রয়ী মূল্যে বিমানের টিকিট কিনি, তাদের ইকোনমি ক্লাসের যাত্রী বলা হয়। এই গরিব যাত্রীদের প্লেনে ওঠানো হয় বিজনেস ক্লাসের দরজা দিয়ে। অর্থাৎ আঁটসাঁট ইকোনমি ক্লাসের আসনের দিকে এগোনোর সময় বিজনেস ক্লাসের বিলাসবহুল আসনগুলো দেখে যেন পরবর্তীকালে বেশি পয়সা খরচ করে বিজনেস ক্লাসে ভ্রমণ করার স্বাদ জাগে—তারই মনস্তাত্ত্বিক খেলা কি না এটা, কে জানে!
আরে ভাই, বাজার অর্থনীতির যুগে আমাদের বসবাস। এখানে নিজেকে জাহির করার চেয়ে ‘বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান’।
এবার ঢাকা-দোহা, দোহা-নিউইয়র্কে দেখা গেল খাদ্য আর পানীয়ের সমাহার। কিছুক্ষণ পর পর হয় গলা ভেজাতে বলে, নয়তো খাবার গিলতে বলে! এবং অবাক হয়ে লক্ষ করি, ফ্লাইটের কোনো না কোনো বিমানবালার চেহারায় যে বিরক্তি ফুটে উঠতে দেখেছি নানা সময়ে, এবার যেন তা ছিল না। বরং ছোটখাটো কথা বলে বিমানযাত্রাটি আনন্দমুখর করে তুলতে চাইছিলেন তাঁরা। একটা উদাহরণ না দিলে বোঝা যাবে না। ডিনারে ছিল চিকেন অ্যান্ড রাইস, আর বিফ অ্যান্ড পটেটো। গরুর মাংসের সঙ্গে আমার আজন্ম ভালোবাসা বলে সেটাই চাইলাম।
বিমানবালা হেসে জানতে চাইল, ‘তুমি চিকেন খাবে না কেন?’
‘আগেরবার চিকেন নিয়েছিলাম। আর ডিনারে আমি বিফ পছন্দ করি।’
‘কোথা থেকে আসছ?’
‘ঢাকা থেকে।’
‘আচ্ছা!’
এটুকুই কথাবার্তা। কিন্তু এই যে আপাতকার্যকারণহীন কথাবার্তা, তারও তো একটা মূল্য আছে জীবনে।
জেএফকে বিমানবন্দরে রাত সাড়ে এগারোটায় নামার পর শীতটা টের পাওয়া গেল। লাগেজের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হলো না। দুটো ট্রলি বারো ডলার দিয়ে নিয়ে মালসামানসহ আট নম্বর টার্মিনাল থেকে বেরিয়ে এলাম আমরা দুজন। নিউইয়র্কে থাকা আমাদের মেয়ে ঝড়ের বেগে টার্মিনালে প্রবেশ করে আমাদের দুজনের হাতে ধরিয়ে দিল গতবার আমাদেরই রেখে যাওয়া দুটো জ্যাকেট। হ্যাঁ, ততক্ষণে আমরা ঢাকা শহরের প্রায় মধ্যপ্রাচ্য বনে যাওয়া আবহাওয়া থেকে বেরিয়ে এসেছি। বুঝতে পারছি, একই পৃথিবীতে বসবাস করলেও প্রকৃতি নিজেকে সাজিয়েছে কত না বৈচিত্র্যময় করে। এক জায়গায় মানুষের যখন গরমে ত্রাহি মধুসূদন অবস্থা, অন্য এক জায়গার মানুষ তখন শীতে কাঁপছে!
বৈচিত্র্যের কথা বললে আবার নিউইয়র্কের কথাই বলতে হয়। এ শহর প্রত্যেক মানুষকে যেন জড়িয়ে রেখেছে পরম আদরে। অকারণে এই শহরকে নানা নামে ডাকা হয় না। সম্ভবত বাংলা ভাষায়ই সোভিয়েত সাহিত্যিক মাক্সিম গোর্কির একটা বই পড়েছিলাম, ‘পীতদানবের দেশে’ নামে যার অনুবাদ হয়েছিল। নিউইয়র্ককে পীতদানবের দেশ নামেও ডাকা হয়। বলা হয় ‘বিশালাকার আপেল’। আর হ্যাঁ, যে ডাকটির সঙ্গে সত্যের মাখামাখি আছে, সেটি হলো ‘বিশ্বের রাজধানী।’ এই শেষ দুটি শব্দে একটু থামুন। ‘বিশ্বের রাজধানী’ বলতে হলে একটি শহরকে কেমন হতে হবে, সেটা ভেবে নিন।
আদুরে শহর
বলা হয়, নিউইয়র্ক যেন মানুষকে আদর করে ধরে রাখে। এ শহর কোটিপতি আর উন্মাদের শহর। এ শহর দরিদ্র আর অভিজাত মানুষের শহর। পৃথিবীর সব রং ধরা আছে এ শহরে। পৃথিবীর যেকোনো নৃতাত্ত্বিক উত্তরাধিকারকে পাওয়া যাবে এখানে। শুধু কি তাই? চীনের মানুষেরা এসে এখানে গড়ে তুলেছে তাদের পাড়া, সেখানে ইংরেজির পাশে চৈনিক ভাষায় লেখা সাইনবোর্ড। নিউইয়র্কের কুইনসের ফ্লাশিংয়ে গেলে কিংবা ম্যানহাটানের চায়না টাউনে গেলে বোঁচা নাকের মানুষের ভিড় দেখে বোঝাই যাবে না, এটা আমেরিকা। মনে হবে, এখন বুঝি চীনেই আছি আমরা।
রুশ জাতি এসে আস্তানা গেড়েছে নিউইয়র্কের যেসব জায়গায়, সেগুলোতেও মানুষ ইংরেজির চেয়ে রুশ ভাষায় কথা বলতে বেশি ভালোবাসে। বিশেষ করে ব্রাইটন বিচ কিংবা ফরেস্ট হিলসে গেলে রুশ ভাষাটাই যেন হয়ে যায় সেই এলাকার ভাষা। কোনো বাঙালিও যদি রুশ ভাষায় কথা বলে, এসব এলাকায় কেউ অবাক হবে না। রুশ ভাষায় কথা না বললেই বরং ভাববে—‘মালটা নতুন আমদানি’। আফ্রিকার মানুষের জন্য ম্যানহাটানের ‘হারলেম’ একসময় বিখ্যাত ছিল। এখানকার অধিকাংশ মানুষই ছিল কৃষ্ণবর্ণের। খুনোখুনিও বেশি হতো। অপরাধজগৎ বলে নাম ছিল হারলেমের। এখন অবশ্য অবস্থা পাল্টেছে। সংখ্যায় কমে গিয়ে শতকরা চল্লিশের মতো হয়েছে আফ্রিকান আমেরিকান। তবে কুইনসের জ্যামাইকায় গেলেও এখন দেখা যাবে আফ্রিকান আমেরিকানদের জয়জয়কার।
আর বাঙালি? জি হ্যাঁ, গ্যারান্টি দিয়ে বলছি, জ্যাকসন হাইটসে দু-তিনটি রাস্তাই আছে, যেখানে দোকানগুলোয় কর্মরত প্রায় সবাই বাঙালি। এখানকার দোকানপাটের সাইনবোর্ডে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলার অবস্থান। এমন মানুষকেও জ্যাকসন হাইটসে পাওয়া যাবে, যিনি এক বর্ণ ইংরেজি জানেন না। কোনো না কোনোভাবে নিউইয়র্কে এসে সেই যে কাজে ঢুকে গেছেন, সেটাই হয়ে গেছে তাঁর জগৎ। আর এখান থেকে কোথাও যাননি। মুখস্থ জায়গায় নেমে কাজ করে আবার মুখস্থ জায়গায় ফিরে যান তাঁরা। ব্রুকলিন, ব্রংকসেও কত যে বাঙালির বসবাস! ইদানীং কুইনসের পারসনস বুলভার্ড থেকে ১৭৯ স্ট্রিট পর্যন্ত গেলেও মনে হবে, মিনি বাংলাদেশেই বুঝি এসে পড়েছি।
আমরা জার্নি করেছি চব্বিশ ঘণ্টার কাছাকাছি। সব মিলিয়ে তা বড়ই ক্লান্তিকর। প্লেনেই বসে থাকতে হয়েছে কম করে হলেও আঠারো ঘণ্টা। ফলে এ রকম একটি ভ্রমণের পর দিন-রাতের ব্যবধান ঘুচে যায়। সময় পরিবর্তন হয়েছে বলে কারও কারও রাতের ঘুম দিনে হয়, রাতে চোখ মেলে বসে থাকতে হয়। কেউ সারা দিন মড়ার মতো ঘুমায়, কারও চোখে ঘুম আসে না।
বইয়ের মধ্যে নিউইয়র্কের খোঁজ
যাদের ঘুম আসে না, তাদের কেউ কেউ কিছু পড়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠে। এ মুহূর্তে রাত দুটো বাজতে দশ মিনিট বাকি যখন, তখন তেমনই এক রাতজাগা মানুষের ইচ্ছে হলো বইপত্তরের খোঁজ নেবে। এবং অবধারিতভাবে নিউইয়র্কবিষয়ক ভালো বইয়ের দিকেই রাখতে হবে দৃষ্টি।
কেন এই বইগুলোর কথা জানতে চাইছি? এর কারণ হলো, সব তো নিজের চোখে দেখা সম্ভব নয়। এসব উপন্যাসের মাধ্যমে নিউইয়র্কের জীবনটা যেন পরিষ্কার হয়ে উঠে আসে পাঠকের মনে। পাঠকের জন্য এই বই-ভ্রমণটাও খুব সস্তা কিছু নয়। বাস্তবে দেশ দেখা হোক আর না হোক, বইয়ের পৃষ্ঠায় সেই দেশকে দেখে ফেলার সুযোগ পাওয়া বিরল সৌভাগ্য।
গিওম ম্যুসো লিখেছেন ‘সেন্ট্রাল পার্ক’ উপন্যাসটি। সেন্ট্রাল পার্ক কিন্তু নিউইয়র্কের কেন্দ্র। বিশাল এ সবুজ পার্কে অবকাশ কাটাতে ভালো লাগে। স্বাস্থ্য উদ্ধার করতে চান যাঁরা, তাঁরা এখানে চলে আসেন সকাল-বিকেলে। রয়েছে রিকশা। চড়া ভাড়ায় তা পার্কের কিছু অংশ ঘুরিয়ে আনে পর্যটককে। সেই পার্ক নিয়েই গিওমের উপন্যাসটি। সেন্ট্রাল পার্কের এক বেঞ্চিতে হঠাৎ ঘুম ভাঙল এলিসের। এলিস দেখল, তার হাতে হাতকড়া। সেই হাতকড়ায় বাঁধা আছে অন্য এক অজানা পুরুষের হাত। একটু পর মেয়েটা জানতে পারে, একটি জাজ দলের সদস্য এই লোকটি। এলিস কিছুতেই বুঝতে পারে না, নিউইয়র্কের সেন্ট্রাল পার্কের এক বেঞ্চিতে কী করে এ রকম একজন অচেনা মানুষের সঙ্গে হাতকড়া পরা অবস্থায় সে বসে আছে। এলিসের হঠাৎ তার পেশার কথা মনে হয়। পুলিশে চাকরি করে মেয়েটি। বছর দুয়েক আগে ইরিক বোগ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করেছিল সে। এমন কি হতে পারে, সেই ইরিক বোগ এখনো জীবিত আর এখন সে এলিসের ওপর প্রতিশোধ নিচ্ছে? প্রশ্নের জন্ম হয় অনেক বেশি, উত্তর আসে অনেক কম। এলিস অবশ্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সে মনে করে, এই রহস্যের সমাধান তাকেই করতে হবে।
কে এই অচেনা মানুষটি, কী তার পরিচয়, এ প্রশ্নও তো এড়ানো যায় না। এভাবেই এগিয়ে চলে উপন্যাসটি।
নিউইয়র্ক শহরের নিশ্বাস শোনা যায় এই উপন্যাসে।
সেন্ট্রাল পার্কের কথা উঠলেই অনেকের মনে পড়ে যায় ‘হোম অ্যালোন’ সিরিজের ‘লস্ট ইন নিউইয়র্ক’ ছবিটির কথা। যে হোটেলে এসে উঠেছিল কেভিন, তার পাশেই ছিল সেন্ট্রাল পার্ক। আর সেই সেন্ট্রাল পার্কে ‘ভেজা দস্যু’রা প্রায় ধরে ফেলেছিল কেভিনকে! সেই সিনেমায় এক পলকের জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও দেখা গিয়েছিল, পরবর্তীকালে যিনি হয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।
সেন্ট্রাল পার্কের একটা জায়গা আছে, যা জন লেননের প্রতি উৎসর্গীকৃত। স্ট্রবেরি ফিল্ডস তার নাম। সেখানে অনেকেই আসে। কেউ আসে গিটার হাতে। লেননের গান পরিবেশন করে। অনেকে সেখানে দাঁড়িয়ে বা বসে ছবি তোলে। পার্ক পার হলেই ড্যাকোটা অ্যাপার্টমেন্ট। এইন অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের একটি ফ্ল্যাটেই থাকতেন লেনন। চ্যাপম্যান নামে এক ভক্তকে যখন অটোগ্রাফ দিচ্ছিলেন অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের সামনে, তখনই সেই ভক্ত গুলি ছুড়েছিল জন লেননের শরীরে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরও তিনি বাঁচেননি। সেন্ট্রাল পার্কের কাছে এলে লেননের কথা মনে পড়ে।
সোফি কিনসেলার উপন্যাসটার নাম ‘শপাহোলিক টেকস ম্যানহাটান’। উপন্যাসটির কথা বলার আগে ম্যানহাটানের কথা একটু বলে নিই। তারও আগে নিউইয়র্ক রাজ্যটির কথা। এ কথা সবাই জানেন, নিউইয়র্ক যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি অঙ্গরাজ্য। এই রাজ্যেরই রাজধানী নিউইয়র্ক সিটি। রাজ্যের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে এলে এই ম্যানহাটানের দেখা পাওয়া যাবে।
‘শপাহোলিক টেকস ম্যানহাটান’-এর গল্প বলতে গেলে কেন নিউইয়র্ক শহর সম্পর্কে জানার প্রয়োজন পড়ে, তা পরিষ্কার করব এবার। আসলে ‘ম্যানহাটান’ শব্দটি যুক্তরাষ্ট্রে বেড়াতে আসা পর্যটকদের মন দুলিয়ে দেয়। নিউইয়র্ক সিটি যে পাঁচটি প্রশাসনিক অঞ্চল বা বরো নিয়ে তৈরি, তার একটি হচ্ছে ম্যানহাটান। বাকিগুলোর নাম হলো ব্রুকলিন, ব্রংকস, কুইনস আর স্ট্যাটেন আইল্যান্ড। ঘটনাচক্রে আমি যখন নিউইয়র্কে আসি, তখন কুইনস ভিলেজে থাকি। অতি ব্যস্ত ম্যানহাটানের তুলনায় কুইনস ভিলেজ কিছুটা নীরব।
নিউইয়র্ক সিটির সবচেয়ে বড় বরো হলো কুইনস। আর সবচেয়ে ছোট কিন্তু সবচেয়ে প্রভাবশালী বরোর নাম ম্যানহাটান। ম্যানহাটানকে নিউইয়র্ক সিটির প্রাণ বললে একেবারেই বাড়িয়ে বলা হবে না। এখানকার গগনচুম্বী ভবনগুলো এবং ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা জাদুঘর, খাবারের দোকান কিংবা শপিং মল মন কেড়ে নেয় পর্যটকদের। এমপায়ার স্টেট বিল্ডিং, ক্রিসলার বিল্ডিং, সিটিকর্প সেন্টারসহ বড় বড় প্রাসাদসম ভবন এই ম্যানহাটানেই অবস্থিত। আর ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের কথা তো আলাদাভাবে বলতে হবে। ম্যানহাটান ভ্রমণের কথা হবে পরে। আগে এটুকু শুধু বলে নিই, শুরুতেই যে ব্রডওয়ে থিয়েটারের কথা বলেছিলাম, তা দেখতে হলে আসতে হবে এই ম্যানহাটানেই। নিউইয়র্কের দুই বিখ্যাত নদী হাডসন আর ইস্ট রিভারের কথাও পরে বলা হবে। আটলান্টিকের কথাও আসবে পরে।
সোফি কিনসেলার বইটির কথা এবার বলা যায়। এখন বলা হবে নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের শপিং মল আর দোকানপাটের কথা। কেন বলা হবে? বলা হবে, কারণ, এই বিষয়টিই তো কিনসেলার বইয়ের মূল প্রতিপাদ্য। কীভাবে এই দোকানগুলো মোহগ্রস্ত করে ফেলে মানুষকে, তারই আঁচ পাওয়া যাবে বইয়ের ভেতর ঢুকলে। ম্যানহাটান বদলে দেয় মানুষের ভাবনাকে। তছনছ করে দেয় হৃদয়ের যৌক্তিক ভাবনার চলাচলকে। বেকি বলে যে মেয়েটির কথা বলা হচ্ছে উপন্যাসে, তার জীবনে এ রকম বড় বড় ঢেউ এসে লাগবে, সে কথা আগে থেকে কে জানত? ম্যানহাটান তাকে তার জীবন এবং ক্রেডিট কার্ড নিয়ে ভাবনার মধ্যে আমূল পরিবর্তন নিয়ে এল। গুগেনহেইম জাদুঘরে তো বেকিকে যেতেই হবে, কিন্তু লোভনীয় দোকানগুলোর কাচের বিভিন্ন জানালা মোহিত করে ফেলে বেকিকে, এরপর সে শুধু কিনতে থাকে, কিনতে থাকে, কিনতে থাকে…।
নাহ্! উপন্যাসগুলো নিয়ে পরে কথা হবে। শুধু এ কথাই বলার চেষ্টা করলাম যে আদতে নিউইয়র্ককে চিনতে হলে এর প্রাণকেন্দ্রে যেতে হয় বারবার। ওই যে, ম্যানহাটানের টাইমস স্কয়ারের পাশেই যেখানে একটি দোকানের ভেতর ছোট্ট মিউজিয়ামের মতো করে স্বনামধন্য শিল্পীদের ব্যবহৃত পোশাক-আশাক আর বাদ্যযন্ত্রের দেখা মেলে, সেখানেই হঠাৎ করে কনসার্ট ফর বাংলাদেশে ব্যবহার করা জর্জ হ্যারিসনের গিটারটি দেখলে কেমন লাগবে আপনার? কিংবা ঘুরতে ঘুরতে মোমায় এসে ভ্যান গঘের ‘স্টারি নাইট’ দেখে ফেললে কি আপনি আর আগের মানুষটা থেকে যেতে পারবেন? আর পিকাসোর সেই বিখ্যাত ছাগলটি কি আপনাকে অনেকখানি বদলে ফেলবে না?
দরদাম
নাহ্! নিউইয়র্ক নিয়ে এত কিছু বলার আছে, যা এক বসায় লিখে যাওয়া সম্ভব নয়। ঘুম থেকে উঠে প্রথম দিন যখন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে দোকানে গেলাম, তখন বুঝতে পারলাম, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের দীর্ঘ ছায়া পড়েছে পণ্যের দামে।
সবচেয়ে অবাক করেছে ডিমের দাম। যুদ্ধের আগে ডিম ছিল স্বাভাবিক দামে। যদি ভুল করে না থাকি, তাহলে ডিমের ডজন ছিল ২ ডলার। এখানে অবশ্য তিন আকারের ডিম আছে। খুব বড়, বড় আর মাঝারি। ‘ছোট ডিম’ বলে কোনো লেবেল দেখিনি কখনো। ছোটটাকেই বুঝি ‘মেজ’ নামে চালিয়ে দেওয়া হয়।
পূর্ব ইউরোপে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ধাই ধাই করে ডিমের দাম কেন বেড়ে গেল, সেটা কে বলতে পারবে কে জানে। সে সময় দোকানগুলোয় লেখা থাকত, ‘এই দাম সাময়িক। কিছুদিন পর আবার সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে যাবে।’ সে সময় ১২টা ডিমের দাম কখনো কখনো ৫ ডলারও হয়েছিল। এবার ডিম কিনলাম প্রথমে সাড়ে চার ডলার, পরে সাড়ে তিন ডলার ডজন। একটু তো কমেছে দাম, কিন্তু আগের জায়গায় তা ফেরেনি।
রেস্তোরাঁয় খাবারদাবারের দাম বেড়েছে। বাইরের স্ট্রিট ফুডের ক্ষেত্রেও চড়া দামের আভাস। গাড়ির তেলের দামও আগের তুলনায় বেশি।
আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘সুন্দরী’ সিনেমায় ববিতার ঠোঁটে একটা সংলাপ ছিল, ‘বাপ মরছে আমার আর দাড়ি রাখছে কাঞ্চন’। সংলাপটা একটু ঘুরিয়ে বলি, ‘যুদ্ধ করে রাশিয়া-ইউক্রেন, আর খাবারের দাম বাড়ে যুক্তরাষ্ট্রে।’ না, কথাটা খুব একটা ঠিক বলা হলো না। এই যুদ্ধে বিশ্বমোড়লদের কাউকেই ধোয়া তুলসীপাতা বলা যাবে না। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসা দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ বাধার ক্ষেত্রে বাইরের দেশগুলোর ইন্ধন রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বারবার রাশিয়াকে উসকে দিয়েছে। রাশিয়াও সেই উসকানিতে সায় দিয়ে যুদ্ধ বাধিয়েছে।
তাতে লাভ হয়েছে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা অস্ত্র ব্যবসায়ীদের; বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের। কিন্তু সেই চাপ এসে লেগেছে যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ মানুষের বুকে। তবে চাপ কতটা গভীর, সেটা বোঝার জন্য যেতে হবে বাজারে, শপিং মলে, রাজপথে। কান পাততে হবে মানুষের সংলাপে।
তারই অপেক্ষায় রয়েছি।

পুরোনোকে বিদায় জানিয়ে নতুনকে বরণ করে নেওয়ার ব্যাপারটি সত্যিই বিশেষ। একটি বছর ঘুরে যখন নতুন বছর আসে, তখন আমাদের মনে জাগে একরাশ প্রত্যাশা। এই নতুন সময়ে আমরা বেশ কিছু ছোট ছোট কাজ করে নিজের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার চেষ্টা করি। বছরের প্রথম দিন প্রতিটি কাজই আমরা এমনভাবে করার চেষ্টা করি যাতে পুরো বছরে
১১ ঘণ্টা আগে
আর মাত্র এক দিন পর আসছে নতুন বছর। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে আমরা কতই না আয়োজন করে থাকি। এর একটি অংশের আয়োজন হয় রান্নাঘরে। অনেক কিছু না হোক, ব্যস্ত জীবন থেকে একটু সময় বের করে প্রিয়জনের সঙ্গে প্রিয় খাবার খেয়ে হলেও আমরা নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ভালোবাসি। কোনো কিছুর শুরু ভালো দিয়ে করতে চাইলে মিষ্টি খাওয়া
১২ ঘণ্টা আগে
গেল বছর থেকে জেন-জিরা গোটা বিশ্বে ব্যাপক আলোচনায়। তাদের ফ্যাশন, স্টাইল, খাবার, চলাফেরা, কথা বলা, চিন্তা, ভ্রমণ নিয়ে হয়েছে নানান আলোচনা-সমালোচনা। তুলনা করতে গিয়ে কথা এসেছে অন্যান্য প্রজন্মের। এবার সেই জেন-জিদের পরের প্রজন্মের আলোচনায় আসা যাক। কারণ, ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া এই নতুন
১৫ ঘণ্টা আগে
নতুন বছর মানেই নতুন শুরুর সতেজতা। আমরা অনেকেই চাই আমাদের জীবনযাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে। নতুন ডায়েট, নতুন জামা, নতুন বছর। ২০২৬ সালে আপনার সেই পরিবর্তনের কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে আপনার নিজের ঘর। বড় কোনো বিপ্লবের প্রয়োজন নেই। ছোট ছোট এবং চিন্তাশীল কিছু অভ্যাসই পারে আপনার ঘরকে আরও সবুজ ও টেকসই করে তুল
১৭ ঘণ্টা আগেফারিয়া রহমান খান

পুরোনোকে বিদায় জানিয়ে নতুনকে বরণ করে নেওয়ার ব্যাপারটি সত্যিই বিশেষ। একটি বছর ঘুরে যখন নতুন বছর আসে, তখন আমাদের মনে জাগে একরাশ প্রত্যাশা। এই নতুন সময়ে আমরা বেশ কিছু ছোট ছোট কাজ করে নিজের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার চেষ্টা করি। বছরের প্রথম দিন প্রতিটি কাজই আমরা এমনভাবে করার চেষ্টা করি যাতে পুরো বছরে তার একটা রেশ থাকে। পোশাকের রং নির্বাচনের বেলায়ও কিন্তু এ কথাটা খাটে। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, আসছে বছর অর্থাৎ ২০২৬ সালে পৃথিবীর ওপর সূর্যের প্রভাব থাকবে। ফলে কয়েকটি শুভ রঙের পোশাক আলমারিতে রাখলে পুরো বছরটাই চনমনে কাটবে বলে আশা করা হচ্ছে। কয়েকটি বিশেষ রংকে শক্তি, সুরক্ষা ও সমৃদ্ধির প্রতীক বলে মনে করা হয়। তবে পোশাকের রং নির্বাচনের মাধ্যমেই যে আপনি সফল হয়ে যাবেন, বিষয়টা এমন নয়। বরং, এই প্রতীকী ভঙ্গিটি আপনার মানসিক সংকল্পকে দৃঢ় করবে। ২০২৬ সালকে বরণ করতে যে ৭টি রং আপনার জীবনে শুভ বার্তা নিয়ে আসতে পারে, তা নিয়েই আজকের এই ফিচার।

যেসব রঙের পোশাক আলমারিতে রাখতে পারেন
লাল
জীবনীশক্তি ও সুরক্ষার প্রতীক লাল রংকে এশিয়ান সংস্কৃতিতে বিশেষ করে চীনে সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে মনে করা হয়। বিয়ে থেকে শুরু করে নববর্ষ—সব শুভ উপলক্ষেই লাল রং প্রাধান্য পায়। এটি নেতিবাচকতা ও অশুভ শক্তিকে দূরে রাখার শক্তিশালী ঢাল হিসেবেও কাজ করে। এই নতুন বছরে লাল রঙের পোশাক আপনার মধ্যে সাহস ও আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনবে।
সোনালি
প্রাচুর্য ও ধারাবাহিক সাফল্যের প্রতীক এই রং যুগ যুগ ধরে স্বর্ণ বা মূল্যবান ধাতুর সমার্থক, যা সরাসরি সম্পদ ও ক্ষমতার জানান দেয়। নতুন বছরে যারা ক্যারিয়ার বা ব্যবসায় বিশেষ উন্নতি ও সমৃদ্ধি খুঁজছেন, তাঁদের জন্য সোনালি রঙের পোশাক হবে আত্মবিশ্বাসের এক চমৎকার উৎস।
রুপালি
মানসিক স্বচ্ছতা এবং অন্তর্দৃষ্টির প্রতীক রুপালি রঙের সঙ্গে চাঁদের স্নিগ্ধ আভার সম্পর্ক রয়েছে। অন্ধকারে যেমন চাঁদের আলো পথ দেখায়, তেমনই রুপালি রং প্রতিকূলতার মধ্যেও সঠিক পথ দেখায় বলে মনে করা হয়। ভারসাম্যপূর্ণ ও শান্ত নতুন বছরের জন্য রুপালি রঙের পোশাক বেছে নেওয়া হতে পারে বুদ্ধিমানের কাজ।

সবুজ
প্রকৃতির মতোই সবুজ রং নবজীবন, বিকাশ ও সুস্থতার প্রতীক। এটি হঠাৎ আসা কোনো সৌভাগ্য নয়, বরং ধারাবাহিক পরিশ্রমের মাধ্যমে পাওয়া টেকসই সাফল্যের কথা মনে করিয়ে দেয়। যাঁরা নতুন বছরে নিজের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার ওপর জোর দিতে চান এবং জীবনে স্থিতিশীল সমৃদ্ধি আনতে চান, তাঁদের পোশাকে সবুজের ছোঁয়া থাকা জরুরি।
নীল
মধ্যপ্রাচ্য ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে হাজার বছর ধরে নীল রংকে অশুভ দৃষ্টি ও ঈর্ষা থেকে বাঁচার এক শক্তিশালী কবচ হিসেবে দেখা হয়। এ ছাড়া নীল রঙের মাহাত্ম্য মানসিক প্রশান্তি, ভারসাম্য ও স্থিরতার ধারক হিসেবেও রয়েছে। আধুনিক জীবনের চরম অস্থিরতা ও দুশ্চিন্তা কাটিয়ে যাঁরা নতুন বছরে স্থিতিশীল থাকতে চান, নীল রঙের পোশাক হবে তাঁদের জন্য এক ধরনের আশ্রয়ের মতো, যা আপনাকে সুরক্ষার অনুভূতি দিয়ে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে।
সাদা
সাদা রঙের দুটি বিশেষ দিক রয়েছে। এটি যেমন বিদায়কে সম্মান জানায়, তেমনই নতুনের পবিত্রতাকেও তুলে ধরে। পুরোনো বছরের সব ক্লান্তি মুছে ফেলে যারা একেবারে নতুন করে জীবন শুরু করতে চান, সাদা রং তাদের জন্য সেরা। এটি যেন জীবনের এক ‘ব্ল্যাঙ্ক পেজ’ বা সাদা পাতার মতো, যেখানে আপনি নিজের মতো করে নিজের জীবনের গল্প লিখতে পারবেন।
বেগুনি
ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যায়, বেগুনি রং একসময় সাধারণের ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল। এটি শুধু রাজপরিবার, সম্রাট এবং উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের পোশাকের জন্যই বরাদ্দ থাকত। এর মূল কারণ ছিল এই রঙের দুষ্প্রাপ্যতা এবং উচ্চমূল্য। এখনো এই রংকে ক্ষমতা, উচ্চাকাঙ্ক্ষা আর ব্যক্তিগত আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবেই দেখা হয়। ২০২৬ সালে নিজের ব্যক্তিত্বকে দৃঢ়ভাবে প্রকাশ করতে এই রং হতে পারে এক অনবদ্য পছন্দ।
সূত্র: গ্ল্যামার ও অন্যান্য

পুরোনোকে বিদায় জানিয়ে নতুনকে বরণ করে নেওয়ার ব্যাপারটি সত্যিই বিশেষ। একটি বছর ঘুরে যখন নতুন বছর আসে, তখন আমাদের মনে জাগে একরাশ প্রত্যাশা। এই নতুন সময়ে আমরা বেশ কিছু ছোট ছোট কাজ করে নিজের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার চেষ্টা করি। বছরের প্রথম দিন প্রতিটি কাজই আমরা এমনভাবে করার চেষ্টা করি যাতে পুরো বছরে তার একটা রেশ থাকে। পোশাকের রং নির্বাচনের বেলায়ও কিন্তু এ কথাটা খাটে। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, আসছে বছর অর্থাৎ ২০২৬ সালে পৃথিবীর ওপর সূর্যের প্রভাব থাকবে। ফলে কয়েকটি শুভ রঙের পোশাক আলমারিতে রাখলে পুরো বছরটাই চনমনে কাটবে বলে আশা করা হচ্ছে। কয়েকটি বিশেষ রংকে শক্তি, সুরক্ষা ও সমৃদ্ধির প্রতীক বলে মনে করা হয়। তবে পোশাকের রং নির্বাচনের মাধ্যমেই যে আপনি সফল হয়ে যাবেন, বিষয়টা এমন নয়। বরং, এই প্রতীকী ভঙ্গিটি আপনার মানসিক সংকল্পকে দৃঢ় করবে। ২০২৬ সালকে বরণ করতে যে ৭টি রং আপনার জীবনে শুভ বার্তা নিয়ে আসতে পারে, তা নিয়েই আজকের এই ফিচার।

যেসব রঙের পোশাক আলমারিতে রাখতে পারেন
লাল
জীবনীশক্তি ও সুরক্ষার প্রতীক লাল রংকে এশিয়ান সংস্কৃতিতে বিশেষ করে চীনে সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে মনে করা হয়। বিয়ে থেকে শুরু করে নববর্ষ—সব শুভ উপলক্ষেই লাল রং প্রাধান্য পায়। এটি নেতিবাচকতা ও অশুভ শক্তিকে দূরে রাখার শক্তিশালী ঢাল হিসেবেও কাজ করে। এই নতুন বছরে লাল রঙের পোশাক আপনার মধ্যে সাহস ও আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনবে।
সোনালি
প্রাচুর্য ও ধারাবাহিক সাফল্যের প্রতীক এই রং যুগ যুগ ধরে স্বর্ণ বা মূল্যবান ধাতুর সমার্থক, যা সরাসরি সম্পদ ও ক্ষমতার জানান দেয়। নতুন বছরে যারা ক্যারিয়ার বা ব্যবসায় বিশেষ উন্নতি ও সমৃদ্ধি খুঁজছেন, তাঁদের জন্য সোনালি রঙের পোশাক হবে আত্মবিশ্বাসের এক চমৎকার উৎস।
রুপালি
মানসিক স্বচ্ছতা এবং অন্তর্দৃষ্টির প্রতীক রুপালি রঙের সঙ্গে চাঁদের স্নিগ্ধ আভার সম্পর্ক রয়েছে। অন্ধকারে যেমন চাঁদের আলো পথ দেখায়, তেমনই রুপালি রং প্রতিকূলতার মধ্যেও সঠিক পথ দেখায় বলে মনে করা হয়। ভারসাম্যপূর্ণ ও শান্ত নতুন বছরের জন্য রুপালি রঙের পোশাক বেছে নেওয়া হতে পারে বুদ্ধিমানের কাজ।

সবুজ
প্রকৃতির মতোই সবুজ রং নবজীবন, বিকাশ ও সুস্থতার প্রতীক। এটি হঠাৎ আসা কোনো সৌভাগ্য নয়, বরং ধারাবাহিক পরিশ্রমের মাধ্যমে পাওয়া টেকসই সাফল্যের কথা মনে করিয়ে দেয়। যাঁরা নতুন বছরে নিজের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার ওপর জোর দিতে চান এবং জীবনে স্থিতিশীল সমৃদ্ধি আনতে চান, তাঁদের পোশাকে সবুজের ছোঁয়া থাকা জরুরি।
নীল
মধ্যপ্রাচ্য ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে হাজার বছর ধরে নীল রংকে অশুভ দৃষ্টি ও ঈর্ষা থেকে বাঁচার এক শক্তিশালী কবচ হিসেবে দেখা হয়। এ ছাড়া নীল রঙের মাহাত্ম্য মানসিক প্রশান্তি, ভারসাম্য ও স্থিরতার ধারক হিসেবেও রয়েছে। আধুনিক জীবনের চরম অস্থিরতা ও দুশ্চিন্তা কাটিয়ে যাঁরা নতুন বছরে স্থিতিশীল থাকতে চান, নীল রঙের পোশাক হবে তাঁদের জন্য এক ধরনের আশ্রয়ের মতো, যা আপনাকে সুরক্ষার অনুভূতি দিয়ে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে।
সাদা
সাদা রঙের দুটি বিশেষ দিক রয়েছে। এটি যেমন বিদায়কে সম্মান জানায়, তেমনই নতুনের পবিত্রতাকেও তুলে ধরে। পুরোনো বছরের সব ক্লান্তি মুছে ফেলে যারা একেবারে নতুন করে জীবন শুরু করতে চান, সাদা রং তাদের জন্য সেরা। এটি যেন জীবনের এক ‘ব্ল্যাঙ্ক পেজ’ বা সাদা পাতার মতো, যেখানে আপনি নিজের মতো করে নিজের জীবনের গল্প লিখতে পারবেন।
বেগুনি
ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যায়, বেগুনি রং একসময় সাধারণের ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল। এটি শুধু রাজপরিবার, সম্রাট এবং উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের পোশাকের জন্যই বরাদ্দ থাকত। এর মূল কারণ ছিল এই রঙের দুষ্প্রাপ্যতা এবং উচ্চমূল্য। এখনো এই রংকে ক্ষমতা, উচ্চাকাঙ্ক্ষা আর ব্যক্তিগত আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবেই দেখা হয়। ২০২৬ সালে নিজের ব্যক্তিত্বকে দৃঢ়ভাবে প্রকাশ করতে এই রং হতে পারে এক অনবদ্য পছন্দ।
সূত্র: গ্ল্যামার ও অন্যান্য

অবশেষে কাতার এয়ারওয়েজের ৭০৫ রুটের বিমানটি নিউইয়র্কের জেএফকে বিমানবন্দরে অবতরণ করল। খুবই মসৃণ অবতরণ। ঘড়িতে তখন রাত সাড়ে এগারোটা। ১৯ এপ্রিল। ঢাকায় ততক্ষণে ২০ এপ্রিলের সকাল হয়ে গেছে। আমরা ঢাকা থেকে রওনা হয়েছিলাম ১৯ এপ্রিল সকাল দশটা
২৫ এপ্রিল ২০২৩
আর মাত্র এক দিন পর আসছে নতুন বছর। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে আমরা কতই না আয়োজন করে থাকি। এর একটি অংশের আয়োজন হয় রান্নাঘরে। অনেক কিছু না হোক, ব্যস্ত জীবন থেকে একটু সময় বের করে প্রিয়জনের সঙ্গে প্রিয় খাবার খেয়ে হলেও আমরা নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ভালোবাসি। কোনো কিছুর শুরু ভালো দিয়ে করতে চাইলে মিষ্টি খাওয়া
১২ ঘণ্টা আগে
গেল বছর থেকে জেন-জিরা গোটা বিশ্বে ব্যাপক আলোচনায়। তাদের ফ্যাশন, স্টাইল, খাবার, চলাফেরা, কথা বলা, চিন্তা, ভ্রমণ নিয়ে হয়েছে নানান আলোচনা-সমালোচনা। তুলনা করতে গিয়ে কথা এসেছে অন্যান্য প্রজন্মের। এবার সেই জেন-জিদের পরের প্রজন্মের আলোচনায় আসা যাক। কারণ, ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া এই নতুন
১৫ ঘণ্টা আগে
নতুন বছর মানেই নতুন শুরুর সতেজতা। আমরা অনেকেই চাই আমাদের জীবনযাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে। নতুন ডায়েট, নতুন জামা, নতুন বছর। ২০২৬ সালে আপনার সেই পরিবর্তনের কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে আপনার নিজের ঘর। বড় কোনো বিপ্লবের প্রয়োজন নেই। ছোট ছোট এবং চিন্তাশীল কিছু অভ্যাসই পারে আপনার ঘরকে আরও সবুজ ও টেকসই করে তুল
১৭ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

আর মাত্র এক দিন পর আসছে নতুন বছর। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে আমরা কতই না আয়োজন করে থাকি। এর একটি অংশের আয়োজন হয় রান্নাঘরে। অনেক কিছু না হোক, ব্যস্ত জীবন থেকে একটু সময় বের করে প্রিয়জনের সঙ্গে প্রিয় খাবার খেয়ে হলেও আমরা নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ভালোবাসি। কোনো কিছুর শুরু ভালো দিয়ে করতে চাইলে মিষ্টি খাওয়া ভালো। অনেকে এই ধারণায় এখনো বিশ্বাসী। কফি ও মিষ্টি খাবার খেতে যাঁরা ভালোবাসেন, তাঁদের জন্য থাকছে কফি দিয়ে তৈরি কিছু ডেজার্টের রেসিপি।
কফি মাফিন কেক
স্বাস্থ্যকর এবং দারুণ স্বাদের কফি মাফিন হতে পারে আপনার উদ্যাপনের সঙ্গী। এর জন্য দরকার—
১ কাপ সাধারণ ময়দা
আধা চা চামচ বেকিং সোডা
এক চিমটি লবণ
স্বাদ বাড়াতে সামান্য দারুচিনি গুঁড়া
১ টেবিল চামচ এসপ্রেসো বা কফি পাউডার
কোয়ার্টার কাপ টক দই
মিষ্টি প্রয়োজনমতো।
কোয়ার্টার কাপ কড়া লিকারের কফি
কোয়ার্টার কাপ সোডা ওয়াটার বা স্পার্কলিং ওয়াটার
মাখন গলিয়ে তাতে কফি বিন ভিজিয়ে রেখে কফি বাটার (ঐচ্ছিক) তৈরি করে নিন।

প্রস্তুত প্রণালি
ওভেন ২২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড (৪২৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট) তাপমাত্রায় প্রি-হিট করতে দিন। মাফিন টিনে সামান্য তেল বা মাখন ব্রাশ করে নিন। একটি বড় পাত্রে আটা, বেকিং সোডা, লবণ, দারুচিনি গুঁড়া এবং কফি পাউডার একসঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে নিন। আলাদা একটি পাত্রে টক দই, মধু এবং তৈরি করা কড়া লিকারের কফি মিশিয়ে নিন। শুকনো উপকরণের মিশ্রণে দই ও কফির মিশ্রণটি ঢালুন। এরপর এতে সোডা ওয়াটার যোগ করুন। খুব দ্রুত হালকা হাতে মেশান (বেশি ঘুঁটবেন না)। দেরি না করে দ্রুত ব্যাটারটি মাফিন টিনে ঢালুন। প্রথমে ২২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় ৫ মিনিট বেক করুন। এরপর তাপমাত্রা কমিয়ে ১৯০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড (৩৭৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট) করে আরও ৮-১০ মিনিট বেক করুন। একটি কাঠি মাফিনের ভেতর ঢুকিয়ে দেখুন, কাঠি পরিষ্কার বের হয়ে এলে বুঝবেন, মাফিন তৈরি। মাফিনগুলো ঠান্ডা হলে ওপরে কফি-মাখন বা ক্রিম চিজ লাগিয়ে সকালের নাশতায় উপভোগ করুন।

চকলেট কফি মউজ
মাত্র ৫টি উপকরণ দিয়ে কোনো জেলাটিন বা হেভি ক্রিম ছাড়াই শুধু ডিমের সাদা অংশ ব্যবহার করে তৈরি করতে পারেন কফি মউজ। উপকরণসমূহ—
১. ডার্ক চকলেট (৭০-৮০% কোকো হলে ভালো)।
২. ঘরোয়া তাপমাত্রায় থাকা ডিমের সাদা অংশ (ফ্রিজ থেকে ৩০ মিনিট আগে বের করে রাখা)।
৩. ১ টেবিল চামচ ম্যাপেল সিরাপ (মিষ্টি ও ক্যারামেল ফ্লেভারের জন্য)।
৪. আধা কাপ কড়া লিকারের কফি
৫. সাজানোর জন্য টাটকা বা ফ্রোজেন বেরি বা স্ট্রবেরি
প্রস্তুত প্রণালি (মাত্র ১০ মিনিটে)
একটি সস প্যানে অল্প আঁচে চকলেট গলিয়ে নিন। এতে ম্যাপেল সিরাপ ও কফি দিয়ে নাড়ুন। মসৃণ হয়ে গেলে চুলা থেকে নামিয়ে রাখুন। একটি পরিষ্কার কাচ বা মেটালের পাত্রে ডিমের সাদা অংশগুলো ইলেকট্রিক হুইস্ক দিয়ে বিট করুন, যতক্ষণ না এটি ঘন সাদা ফেনার মতো হয়। এবার গলানো চকলেটের মিশ্রণটি অল্প অল্প করে ডিমের সাদা অংশে যোগ করুন। একটি স্প্যাচুলা দিয়ে আলতো হাতে চকলেট এবং ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে নিন। খুব জোরে নাড়বেন না, তাহলে ফুরফুরে ভাব নষ্ট হয়ে যাবে। মিশ্রণটি ছোট ছোট গ্লাস বা কাপে ভাগ করে ঢালুন। ফ্রিজে অন্তত ৩০ মিনিট রাখুন। পুরো রাত রাখলে আরও ভালো টেক্সচার আসবে।

কেটো তিরামিসু মুস
তিরামিসু নিয়ে কিছু বিতর্ক আছে। তার মধ্যে একটি হলো তিরামিসু কি আসলে কেক? এর সহজ উত্তর হলো, সঠিক প্রণালিতে তিরামিসু তৈরি করে খেয়ে বোঝা। কেটো ডায়েট যাঁরা অনুসরণ করছেন, তাঁদের জন্য ‘কেটো তিরামিসু মুস’ হতে পারে বিকেলের নাশতা বা ডিনারের পর এক দুর্দান্ত ডেজার্ট। এটি যেমন দেখতে অভিজাত, খেতেও তেমনি ক্রিমি এবং রিচ। এসপ্রেসো কফি, মাস্কারপোন চিজ এবং কোকো পাউডারের স্তরে সাজানো এই মুসটি লো-কার্ব বা কম শর্করাযুক্ত ঘরানার।
প্রস্তুত প্রণালি
একটি বড় পাত্রে চিজ, হেভি হুইপিং ক্রিম, চিনির পরিবর্তে এরিথ্রিটল, এক চিমটি লবণ এবং এসপ্রেসো কফি একসঙ্গে নিন। একটি ইলেকট্রিক বিটার বা হ্যান্ড হুইস্ক দিয়ে মিশ্রণটিকে ততক্ষণ পর্যন্ত বিট করুন, যতক্ষণ না এটি ঘন এবং ফুরফুরে হয়ে ওঠে। এবার পরিবেশনের গ্লাস নিন। প্রথমে কিছুটা মাস্কারপোন মিশ্রণ দিন, তার ওপর সামান্য কোকো পাউডার ছিটিয়ে দিন। এভাবে কয়েকবার স্তর তৈরি করুন। সবশেষে ওপরে সামান্য এসপ্রেসো পাউডার ছিটিয়ে দিন এবং সুন্দর দেখানোর জন্য কয়েকটি কফি বিন বসিয়ে দিন। বানিয়েই পরিবেশন করতে পারেন অথবা ফ্রিজে রেখে কিছুটা ঠান্ডা করে উপভোগ করুন। যাঁরা খুব দ্রুত কিন্তু স্পেশাল কিছু তৈরি করতে চান, তাঁদের জন্য এটি পারফেক্ট। সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে পরিবেশনের গ্লাসে সাজিয়ে নিন এবং ওপরে কিছুটা এসপ্রেসো পাউডার ছিটিয়ে দিন। ব্যস, তৈরি হয়ে গেল চমৎকার স্বাদের এই মিষ্টি পদ। মিষ্টি, ক্রিমি এবং কফির ফ্লেভারের এই মেলবন্ধন এড়িয়ে যাওয়া সত্যিই অসম্ভব।
সূত্র: মাই শেফস এপ্রোন

আর মাত্র এক দিন পর আসছে নতুন বছর। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে আমরা কতই না আয়োজন করে থাকি। এর একটি অংশের আয়োজন হয় রান্নাঘরে। অনেক কিছু না হোক, ব্যস্ত জীবন থেকে একটু সময় বের করে প্রিয়জনের সঙ্গে প্রিয় খাবার খেয়ে হলেও আমরা নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ভালোবাসি। কোনো কিছুর শুরু ভালো দিয়ে করতে চাইলে মিষ্টি খাওয়া ভালো। অনেকে এই ধারণায় এখনো বিশ্বাসী। কফি ও মিষ্টি খাবার খেতে যাঁরা ভালোবাসেন, তাঁদের জন্য থাকছে কফি দিয়ে তৈরি কিছু ডেজার্টের রেসিপি।
কফি মাফিন কেক
স্বাস্থ্যকর এবং দারুণ স্বাদের কফি মাফিন হতে পারে আপনার উদ্যাপনের সঙ্গী। এর জন্য দরকার—
১ কাপ সাধারণ ময়দা
আধা চা চামচ বেকিং সোডা
এক চিমটি লবণ
স্বাদ বাড়াতে সামান্য দারুচিনি গুঁড়া
১ টেবিল চামচ এসপ্রেসো বা কফি পাউডার
কোয়ার্টার কাপ টক দই
মিষ্টি প্রয়োজনমতো।
কোয়ার্টার কাপ কড়া লিকারের কফি
কোয়ার্টার কাপ সোডা ওয়াটার বা স্পার্কলিং ওয়াটার
মাখন গলিয়ে তাতে কফি বিন ভিজিয়ে রেখে কফি বাটার (ঐচ্ছিক) তৈরি করে নিন।

প্রস্তুত প্রণালি
ওভেন ২২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড (৪২৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট) তাপমাত্রায় প্রি-হিট করতে দিন। মাফিন টিনে সামান্য তেল বা মাখন ব্রাশ করে নিন। একটি বড় পাত্রে আটা, বেকিং সোডা, লবণ, দারুচিনি গুঁড়া এবং কফি পাউডার একসঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে নিন। আলাদা একটি পাত্রে টক দই, মধু এবং তৈরি করা কড়া লিকারের কফি মিশিয়ে নিন। শুকনো উপকরণের মিশ্রণে দই ও কফির মিশ্রণটি ঢালুন। এরপর এতে সোডা ওয়াটার যোগ করুন। খুব দ্রুত হালকা হাতে মেশান (বেশি ঘুঁটবেন না)। দেরি না করে দ্রুত ব্যাটারটি মাফিন টিনে ঢালুন। প্রথমে ২২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় ৫ মিনিট বেক করুন। এরপর তাপমাত্রা কমিয়ে ১৯০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড (৩৭৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট) করে আরও ৮-১০ মিনিট বেক করুন। একটি কাঠি মাফিনের ভেতর ঢুকিয়ে দেখুন, কাঠি পরিষ্কার বের হয়ে এলে বুঝবেন, মাফিন তৈরি। মাফিনগুলো ঠান্ডা হলে ওপরে কফি-মাখন বা ক্রিম চিজ লাগিয়ে সকালের নাশতায় উপভোগ করুন।

চকলেট কফি মউজ
মাত্র ৫টি উপকরণ দিয়ে কোনো জেলাটিন বা হেভি ক্রিম ছাড়াই শুধু ডিমের সাদা অংশ ব্যবহার করে তৈরি করতে পারেন কফি মউজ। উপকরণসমূহ—
১. ডার্ক চকলেট (৭০-৮০% কোকো হলে ভালো)।
২. ঘরোয়া তাপমাত্রায় থাকা ডিমের সাদা অংশ (ফ্রিজ থেকে ৩০ মিনিট আগে বের করে রাখা)।
৩. ১ টেবিল চামচ ম্যাপেল সিরাপ (মিষ্টি ও ক্যারামেল ফ্লেভারের জন্য)।
৪. আধা কাপ কড়া লিকারের কফি
৫. সাজানোর জন্য টাটকা বা ফ্রোজেন বেরি বা স্ট্রবেরি
প্রস্তুত প্রণালি (মাত্র ১০ মিনিটে)
একটি সস প্যানে অল্প আঁচে চকলেট গলিয়ে নিন। এতে ম্যাপেল সিরাপ ও কফি দিয়ে নাড়ুন। মসৃণ হয়ে গেলে চুলা থেকে নামিয়ে রাখুন। একটি পরিষ্কার কাচ বা মেটালের পাত্রে ডিমের সাদা অংশগুলো ইলেকট্রিক হুইস্ক দিয়ে বিট করুন, যতক্ষণ না এটি ঘন সাদা ফেনার মতো হয়। এবার গলানো চকলেটের মিশ্রণটি অল্প অল্প করে ডিমের সাদা অংশে যোগ করুন। একটি স্প্যাচুলা দিয়ে আলতো হাতে চকলেট এবং ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে নিন। খুব জোরে নাড়বেন না, তাহলে ফুরফুরে ভাব নষ্ট হয়ে যাবে। মিশ্রণটি ছোট ছোট গ্লাস বা কাপে ভাগ করে ঢালুন। ফ্রিজে অন্তত ৩০ মিনিট রাখুন। পুরো রাত রাখলে আরও ভালো টেক্সচার আসবে।

কেটো তিরামিসু মুস
তিরামিসু নিয়ে কিছু বিতর্ক আছে। তার মধ্যে একটি হলো তিরামিসু কি আসলে কেক? এর সহজ উত্তর হলো, সঠিক প্রণালিতে তিরামিসু তৈরি করে খেয়ে বোঝা। কেটো ডায়েট যাঁরা অনুসরণ করছেন, তাঁদের জন্য ‘কেটো তিরামিসু মুস’ হতে পারে বিকেলের নাশতা বা ডিনারের পর এক দুর্দান্ত ডেজার্ট। এটি যেমন দেখতে অভিজাত, খেতেও তেমনি ক্রিমি এবং রিচ। এসপ্রেসো কফি, মাস্কারপোন চিজ এবং কোকো পাউডারের স্তরে সাজানো এই মুসটি লো-কার্ব বা কম শর্করাযুক্ত ঘরানার।
প্রস্তুত প্রণালি
একটি বড় পাত্রে চিজ, হেভি হুইপিং ক্রিম, চিনির পরিবর্তে এরিথ্রিটল, এক চিমটি লবণ এবং এসপ্রেসো কফি একসঙ্গে নিন। একটি ইলেকট্রিক বিটার বা হ্যান্ড হুইস্ক দিয়ে মিশ্রণটিকে ততক্ষণ পর্যন্ত বিট করুন, যতক্ষণ না এটি ঘন এবং ফুরফুরে হয়ে ওঠে। এবার পরিবেশনের গ্লাস নিন। প্রথমে কিছুটা মাস্কারপোন মিশ্রণ দিন, তার ওপর সামান্য কোকো পাউডার ছিটিয়ে দিন। এভাবে কয়েকবার স্তর তৈরি করুন। সবশেষে ওপরে সামান্য এসপ্রেসো পাউডার ছিটিয়ে দিন এবং সুন্দর দেখানোর জন্য কয়েকটি কফি বিন বসিয়ে দিন। বানিয়েই পরিবেশন করতে পারেন অথবা ফ্রিজে রেখে কিছুটা ঠান্ডা করে উপভোগ করুন। যাঁরা খুব দ্রুত কিন্তু স্পেশাল কিছু তৈরি করতে চান, তাঁদের জন্য এটি পারফেক্ট। সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে পরিবেশনের গ্লাসে সাজিয়ে নিন এবং ওপরে কিছুটা এসপ্রেসো পাউডার ছিটিয়ে দিন। ব্যস, তৈরি হয়ে গেল চমৎকার স্বাদের এই মিষ্টি পদ। মিষ্টি, ক্রিমি এবং কফির ফ্লেভারের এই মেলবন্ধন এড়িয়ে যাওয়া সত্যিই অসম্ভব।
সূত্র: মাই শেফস এপ্রোন

অবশেষে কাতার এয়ারওয়েজের ৭০৫ রুটের বিমানটি নিউইয়র্কের জেএফকে বিমানবন্দরে অবতরণ করল। খুবই মসৃণ অবতরণ। ঘড়িতে তখন রাত সাড়ে এগারোটা। ১৯ এপ্রিল। ঢাকায় ততক্ষণে ২০ এপ্রিলের সকাল হয়ে গেছে। আমরা ঢাকা থেকে রওনা হয়েছিলাম ১৯ এপ্রিল সকাল দশটা
২৫ এপ্রিল ২০২৩
পুরোনোকে বিদায় জানিয়ে নতুনকে বরণ করে নেওয়ার ব্যাপারটি সত্যিই বিশেষ। একটি বছর ঘুরে যখন নতুন বছর আসে, তখন আমাদের মনে জাগে একরাশ প্রত্যাশা। এই নতুন সময়ে আমরা বেশ কিছু ছোট ছোট কাজ করে নিজের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার চেষ্টা করি। বছরের প্রথম দিন প্রতিটি কাজই আমরা এমনভাবে করার চেষ্টা করি যাতে পুরো বছরে
১১ ঘণ্টা আগে
গেল বছর থেকে জেন-জিরা গোটা বিশ্বে ব্যাপক আলোচনায়। তাদের ফ্যাশন, স্টাইল, খাবার, চলাফেরা, কথা বলা, চিন্তা, ভ্রমণ নিয়ে হয়েছে নানান আলোচনা-সমালোচনা। তুলনা করতে গিয়ে কথা এসেছে অন্যান্য প্রজন্মের। এবার সেই জেন-জিদের পরের প্রজন্মের আলোচনায় আসা যাক। কারণ, ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া এই নতুন
১৫ ঘণ্টা আগে
নতুন বছর মানেই নতুন শুরুর সতেজতা। আমরা অনেকেই চাই আমাদের জীবনযাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে। নতুন ডায়েট, নতুন জামা, নতুন বছর। ২০২৬ সালে আপনার সেই পরিবর্তনের কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে আপনার নিজের ঘর। বড় কোনো বিপ্লবের প্রয়োজন নেই। ছোট ছোট এবং চিন্তাশীল কিছু অভ্যাসই পারে আপনার ঘরকে আরও সবুজ ও টেকসই করে তুল
১৭ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

গেল বছর থেকে জেন-জিরা গোটা বিশ্বে ব্যাপক আলোচনায়। তাদের ফ্যাশন, স্টাইল, খাবার, চলাফেরা, কথা বলা, চিন্তা, ভ্রমণ নিয়ে হয়েছে নানান আলোচনা-সমালোচনা। তুলনা করতে গিয়ে কথা এসেছে অন্যান্য প্রজন্মের। এবার সেই জেন-জিদের পরের প্রজন্মের আলোচনায় আসা যাক। কারণ, ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া এই নতুন প্রজন্ম আমাদের চারপাশে ধীরে ধীরে বেড়ে উঠছে। যাদের আমরা বলছি ‘জেন আলফা’। বয়সে ছোট হলেও এখনই তারা আমাদের কেনাকাটা, খাদ্যাভ্যাস এবং সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিতে এক বিশাল পরিবর্তনের ঢেউ নিয়ে এসেছে। ২০২৯ সালের মধ্যে যখন এই প্রজন্মের একটি বড় অংশ প্রাপ্তবয়স্ক হবে, তখন বিশ্ববাজারে তাদের খরচ করার ক্ষমতা ৫.৫ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রযুক্তির সঙ্গে বেড়ে ওঠা এই প্রজন্ম কেবল মাউস বা স্ক্রিনেই দক্ষ নয়, তাদের খাবারের থালায় কী থাকবে, সেটিও তারা এখন থেকেই নিয়ন্ত্রণ করছে।
জেন আলফা আমাদের শেখাচ্ছে যে খাবার কেবল বেঁচে থাকার রসদ নয়। এটি পরিবারকে কাছে আনার একটি মাধ্যম, পরিবেশকে রক্ষার হাতিয়ার এবং নিজের পরিচয়ের বহিঃপ্রকাশ। ফার্ম থেকে টেবিল পর্যন্ত খাবারের প্রতিটি ধাপে এই সচেতন প্রজন্ম যে পরিবর্তন আনছে, তা আমাদের সবার জন্যই এক স্বাস্থ্যকর ও টেকসই ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিচ্ছে। তারা স্রেফ সস্তা বিজ্ঞাপন দেখে নয়, বরং নিজের ভালো লাগা এবং নৈতিক অবস্থান থেকেই ঠিক করছে তারা কী খাবে।

ছোট্ট কণ্ঠের বড় প্রভাব
আগেকার দিনে শিশুরা সাধারণত মা-বাবা যা পাতে দিতেন তাই খেত। হাতে গোনা কয়েকজন এমন হতো যারা, ‘আমি চাই’ বলার সাহস করত। তবে নিমিষেই তাদের ইচ্ছাকে দাবিয়ে দিতেন অভিভাবকেরা। জেন আলফার ক্ষেত্রে এই চিত্রটা ভিন্ন। বর্তমানে অভিভাবকেরা তাদের প্রতি অনেক বেশি নমনীয় এবং তারা সন্তানদের মতামতকে গুরুত্ব দেন। যুক্তরাজ্যের এক গবেষণা বলছে, ৬৩ শতাংশ মা-বাবা সন্তানদের পছন্দের ওপর ভিত্তি করে পরিবারের খাবারের তালিকা ঠিক করেন। ভারতেও প্রায় অর্ধেক মা-বাবা বিশ্বাস করেন যে তাঁদের সন্তানদের সিদ্ধান্তগুলো ভবিষ্যতে বড় পরিবর্তন আনবে। এটি কেবল একগুঁয়েমি নয়, নিজের ভালো-মন্দ বোঝার এক নতুন সচেতনতা। আধুনিক প্যারেন্টিং স্টাইল বা মা-বাবার দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের কারণে জেন আলফা এখন অনেক বেশি স্বাধীন।
শৈশব থেকেই সুস্বাস্থ্য ও পুষ্টির পাঠ
জেন আলফা প্রজন্মের কাছে ‘গাট হেলথ’ বা পেটের সুস্থতা একটি অত্যন্ত পরিচিত বিষয়। তারা প্রিবায়োটিক পানীয় এবং পুষ্টিসমৃদ্ধ স্ন্যাকসের কথা জেনেই বড় হচ্ছে। ফিটনেস ট্রেন্ডের কারণে হাই-প্রোটিন খাবারের চাহিদা বেড়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় গত এক দশকে প্রোটিন নিয়ে আলোচনার হার প্রতিবছর ১০ শতাংশ হারে বাড়ছে। এমনকি যুক্তরাজ্যের ‘বেলি বাগস’-এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলো অন্ত্রের অণুজীব বা মাইক্রোবায়োমকে ‘পোষা প্রাণীর’ মতো যত্ন নেওয়ার বিষয়টিকে গেমে রূপান্তর করেছে। ফলে ছোটবেলা থেকেই তারা বোঝে যে কোন খাবার শরীর ও মনের জ্বালানি হিসেবে কাজ করে। করোনা মহামারির পর থেকে পরিবারের এই স্বাস্থ্য সচেতনতা আরও বেড়েছে। ২০২৪ সালের তথ্য মতে, শিশুদের জন্য বাজারে আসা প্রতি তিনটি নতুন খাবারের একটিতে বাড়তি পুষ্টি বা নিউট্রিয়েন্টস যোগ করা হয়েছে। চীন ও যুক্তরাজ্যের অভিভাবকেরা ভিটামিন ও মিনারেল সাপ্লিমেন্টের দিকে ঝুঁকছেন, আর এই চাহিদা মেটাতে ব্র্যান্ডগুলো সাপ্লিমেন্টকে এখন ক্যান্ডি বা মুখরোচক স্ন্যাকসের মতো করে তৈরি করছে।

জলবায়ু সচেতনতা ও খাবারের নৈতিকতা
এই প্রজন্ম একটি জলবায়ু সংকটের মধ্যে জন্ম নিয়েছে। তাই পরিবেশের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা অনেক বেশি। তারা কেবল খাবারের স্বাদ দেখে না, তারা সেই ব্র্যান্ডের নৈতিকতা ও স্বচ্ছতাও বিচার করে। যুক্তরাজ্যে প্রায় অর্ধেক অভিভাবক বলছেন যে তাঁদের সন্তানেরা পরিবেশের কথা ভেবে প্রাণিজ খাবার কমিয়ে উদ্ভিজ্জ বা প্ল্যান্ট-বেজড খাবার খেতে উৎসাহিত হচ্ছে। ২০৫০ সাল নাগাদ যখন খাদ্যের চাহিদা ৫০ শতাংশ বাড়বে। তখন এই জেন আলফাই হয়তো ল্যাব-গ্রোন মিট (ল্যাবে তৈরি মাংস) বা জিনগতভাবে পরিবর্তিত শস্যকে স্বাভাবিক সমাধান হিসেবে গ্রহণ করবে। ইতিমধ্যে জার্মানির অর্ধেক অভিভাবক কৃত্রিমভাবে তৈরি টেকসই খাবার গ্রহণে আগ্রহী।
বৈচিত্র্যময় স্বাদ ও অভিজ্ঞতার খোঁজে
সোশ্যাল মিডিয়া এবং ফুড ডেলিভারি অ্যাপের কারণে জেন আলফার স্বাদ এখন বিশ্বজনীন। বাড়ির বাইরে না গিয়েই তারা বিশ্বের নানা প্রান্তের খাবারের স্বাদ নিচ্ছে। তাদের কাছে খাবার কেবল পেট ভরানোর মাধ্যম নয়, বরং একটি অভিজ্ঞতা। বিশেষ করে চীন ও জাপানে ‘ইমারসিভ ডাইনিং’ বা গল্পের মাধ্যমে খাবার পরিবেশনের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। ডিজিটাল যুগে বড় হলেও তারা বাস্তব জীবনের ছোঁয়া পেতে চায়, আর খাবার তাদের সেই সংযোগের সুযোগ করে দেয়।
বিদ্রোহী কিন্তু সচেতন
জেন আলফা পূর্ববর্তী জেন জি প্রজন্মের চেয়েও অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী এবং স্বতন্ত্র। তারা কেবল ট্রেন্ড অনুসরণ করে না, বরং তারা নিজেদের মূল্যবোধের সঙ্গে মিলে এমন ব্র্যান্ডই পছন্দ করে। যদিও অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং শৈশবকালীন স্থূলতার মতো চ্যালেঞ্জগুলো এখনো রয়ে গেছে, তবুও আশার কথা হলো ব্র্যান্ডগুলো এখন ‘নো অ্যাডেড সুগার’ বা চিনিহীন খাবারের দিকে ঝুঁকছে। ২০২৪ সালে এ ধরনের পণ্যের হার ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সূত্র: শোবিজ ডেইলি, ফুড নেভিগেটর

গেল বছর থেকে জেন-জিরা গোটা বিশ্বে ব্যাপক আলোচনায়। তাদের ফ্যাশন, স্টাইল, খাবার, চলাফেরা, কথা বলা, চিন্তা, ভ্রমণ নিয়ে হয়েছে নানান আলোচনা-সমালোচনা। তুলনা করতে গিয়ে কথা এসেছে অন্যান্য প্রজন্মের। এবার সেই জেন-জিদের পরের প্রজন্মের আলোচনায় আসা যাক। কারণ, ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া এই নতুন প্রজন্ম আমাদের চারপাশে ধীরে ধীরে বেড়ে উঠছে। যাদের আমরা বলছি ‘জেন আলফা’। বয়সে ছোট হলেও এখনই তারা আমাদের কেনাকাটা, খাদ্যাভ্যাস এবং সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিতে এক বিশাল পরিবর্তনের ঢেউ নিয়ে এসেছে। ২০২৯ সালের মধ্যে যখন এই প্রজন্মের একটি বড় অংশ প্রাপ্তবয়স্ক হবে, তখন বিশ্ববাজারে তাদের খরচ করার ক্ষমতা ৫.৫ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রযুক্তির সঙ্গে বেড়ে ওঠা এই প্রজন্ম কেবল মাউস বা স্ক্রিনেই দক্ষ নয়, তাদের খাবারের থালায় কী থাকবে, সেটিও তারা এখন থেকেই নিয়ন্ত্রণ করছে।
জেন আলফা আমাদের শেখাচ্ছে যে খাবার কেবল বেঁচে থাকার রসদ নয়। এটি পরিবারকে কাছে আনার একটি মাধ্যম, পরিবেশকে রক্ষার হাতিয়ার এবং নিজের পরিচয়ের বহিঃপ্রকাশ। ফার্ম থেকে টেবিল পর্যন্ত খাবারের প্রতিটি ধাপে এই সচেতন প্রজন্ম যে পরিবর্তন আনছে, তা আমাদের সবার জন্যই এক স্বাস্থ্যকর ও টেকসই ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিচ্ছে। তারা স্রেফ সস্তা বিজ্ঞাপন দেখে নয়, বরং নিজের ভালো লাগা এবং নৈতিক অবস্থান থেকেই ঠিক করছে তারা কী খাবে।

ছোট্ট কণ্ঠের বড় প্রভাব
আগেকার দিনে শিশুরা সাধারণত মা-বাবা যা পাতে দিতেন তাই খেত। হাতে গোনা কয়েকজন এমন হতো যারা, ‘আমি চাই’ বলার সাহস করত। তবে নিমিষেই তাদের ইচ্ছাকে দাবিয়ে দিতেন অভিভাবকেরা। জেন আলফার ক্ষেত্রে এই চিত্রটা ভিন্ন। বর্তমানে অভিভাবকেরা তাদের প্রতি অনেক বেশি নমনীয় এবং তারা সন্তানদের মতামতকে গুরুত্ব দেন। যুক্তরাজ্যের এক গবেষণা বলছে, ৬৩ শতাংশ মা-বাবা সন্তানদের পছন্দের ওপর ভিত্তি করে পরিবারের খাবারের তালিকা ঠিক করেন। ভারতেও প্রায় অর্ধেক মা-বাবা বিশ্বাস করেন যে তাঁদের সন্তানদের সিদ্ধান্তগুলো ভবিষ্যতে বড় পরিবর্তন আনবে। এটি কেবল একগুঁয়েমি নয়, নিজের ভালো-মন্দ বোঝার এক নতুন সচেতনতা। আধুনিক প্যারেন্টিং স্টাইল বা মা-বাবার দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের কারণে জেন আলফা এখন অনেক বেশি স্বাধীন।
শৈশব থেকেই সুস্বাস্থ্য ও পুষ্টির পাঠ
জেন আলফা প্রজন্মের কাছে ‘গাট হেলথ’ বা পেটের সুস্থতা একটি অত্যন্ত পরিচিত বিষয়। তারা প্রিবায়োটিক পানীয় এবং পুষ্টিসমৃদ্ধ স্ন্যাকসের কথা জেনেই বড় হচ্ছে। ফিটনেস ট্রেন্ডের কারণে হাই-প্রোটিন খাবারের চাহিদা বেড়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় গত এক দশকে প্রোটিন নিয়ে আলোচনার হার প্রতিবছর ১০ শতাংশ হারে বাড়ছে। এমনকি যুক্তরাজ্যের ‘বেলি বাগস’-এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলো অন্ত্রের অণুজীব বা মাইক্রোবায়োমকে ‘পোষা প্রাণীর’ মতো যত্ন নেওয়ার বিষয়টিকে গেমে রূপান্তর করেছে। ফলে ছোটবেলা থেকেই তারা বোঝে যে কোন খাবার শরীর ও মনের জ্বালানি হিসেবে কাজ করে। করোনা মহামারির পর থেকে পরিবারের এই স্বাস্থ্য সচেতনতা আরও বেড়েছে। ২০২৪ সালের তথ্য মতে, শিশুদের জন্য বাজারে আসা প্রতি তিনটি নতুন খাবারের একটিতে বাড়তি পুষ্টি বা নিউট্রিয়েন্টস যোগ করা হয়েছে। চীন ও যুক্তরাজ্যের অভিভাবকেরা ভিটামিন ও মিনারেল সাপ্লিমেন্টের দিকে ঝুঁকছেন, আর এই চাহিদা মেটাতে ব্র্যান্ডগুলো সাপ্লিমেন্টকে এখন ক্যান্ডি বা মুখরোচক স্ন্যাকসের মতো করে তৈরি করছে।

জলবায়ু সচেতনতা ও খাবারের নৈতিকতা
এই প্রজন্ম একটি জলবায়ু সংকটের মধ্যে জন্ম নিয়েছে। তাই পরিবেশের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা অনেক বেশি। তারা কেবল খাবারের স্বাদ দেখে না, তারা সেই ব্র্যান্ডের নৈতিকতা ও স্বচ্ছতাও বিচার করে। যুক্তরাজ্যে প্রায় অর্ধেক অভিভাবক বলছেন যে তাঁদের সন্তানেরা পরিবেশের কথা ভেবে প্রাণিজ খাবার কমিয়ে উদ্ভিজ্জ বা প্ল্যান্ট-বেজড খাবার খেতে উৎসাহিত হচ্ছে। ২০৫০ সাল নাগাদ যখন খাদ্যের চাহিদা ৫০ শতাংশ বাড়বে। তখন এই জেন আলফাই হয়তো ল্যাব-গ্রোন মিট (ল্যাবে তৈরি মাংস) বা জিনগতভাবে পরিবর্তিত শস্যকে স্বাভাবিক সমাধান হিসেবে গ্রহণ করবে। ইতিমধ্যে জার্মানির অর্ধেক অভিভাবক কৃত্রিমভাবে তৈরি টেকসই খাবার গ্রহণে আগ্রহী।
বৈচিত্র্যময় স্বাদ ও অভিজ্ঞতার খোঁজে
সোশ্যাল মিডিয়া এবং ফুড ডেলিভারি অ্যাপের কারণে জেন আলফার স্বাদ এখন বিশ্বজনীন। বাড়ির বাইরে না গিয়েই তারা বিশ্বের নানা প্রান্তের খাবারের স্বাদ নিচ্ছে। তাদের কাছে খাবার কেবল পেট ভরানোর মাধ্যম নয়, বরং একটি অভিজ্ঞতা। বিশেষ করে চীন ও জাপানে ‘ইমারসিভ ডাইনিং’ বা গল্পের মাধ্যমে খাবার পরিবেশনের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। ডিজিটাল যুগে বড় হলেও তারা বাস্তব জীবনের ছোঁয়া পেতে চায়, আর খাবার তাদের সেই সংযোগের সুযোগ করে দেয়।
বিদ্রোহী কিন্তু সচেতন
জেন আলফা পূর্ববর্তী জেন জি প্রজন্মের চেয়েও অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী এবং স্বতন্ত্র। তারা কেবল ট্রেন্ড অনুসরণ করে না, বরং তারা নিজেদের মূল্যবোধের সঙ্গে মিলে এমন ব্র্যান্ডই পছন্দ করে। যদিও অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং শৈশবকালীন স্থূলতার মতো চ্যালেঞ্জগুলো এখনো রয়ে গেছে, তবুও আশার কথা হলো ব্র্যান্ডগুলো এখন ‘নো অ্যাডেড সুগার’ বা চিনিহীন খাবারের দিকে ঝুঁকছে। ২০২৪ সালে এ ধরনের পণ্যের হার ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সূত্র: শোবিজ ডেইলি, ফুড নেভিগেটর

অবশেষে কাতার এয়ারওয়েজের ৭০৫ রুটের বিমানটি নিউইয়র্কের জেএফকে বিমানবন্দরে অবতরণ করল। খুবই মসৃণ অবতরণ। ঘড়িতে তখন রাত সাড়ে এগারোটা। ১৯ এপ্রিল। ঢাকায় ততক্ষণে ২০ এপ্রিলের সকাল হয়ে গেছে। আমরা ঢাকা থেকে রওনা হয়েছিলাম ১৯ এপ্রিল সকাল দশটা
২৫ এপ্রিল ২০২৩
পুরোনোকে বিদায় জানিয়ে নতুনকে বরণ করে নেওয়ার ব্যাপারটি সত্যিই বিশেষ। একটি বছর ঘুরে যখন নতুন বছর আসে, তখন আমাদের মনে জাগে একরাশ প্রত্যাশা। এই নতুন সময়ে আমরা বেশ কিছু ছোট ছোট কাজ করে নিজের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার চেষ্টা করি। বছরের প্রথম দিন প্রতিটি কাজই আমরা এমনভাবে করার চেষ্টা করি যাতে পুরো বছরে
১১ ঘণ্টা আগে
আর মাত্র এক দিন পর আসছে নতুন বছর। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে আমরা কতই না আয়োজন করে থাকি। এর একটি অংশের আয়োজন হয় রান্নাঘরে। অনেক কিছু না হোক, ব্যস্ত জীবন থেকে একটু সময় বের করে প্রিয়জনের সঙ্গে প্রিয় খাবার খেয়ে হলেও আমরা নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ভালোবাসি। কোনো কিছুর শুরু ভালো দিয়ে করতে চাইলে মিষ্টি খাওয়া
১২ ঘণ্টা আগে
নতুন বছর মানেই নতুন শুরুর সতেজতা। আমরা অনেকেই চাই আমাদের জীবনযাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে। নতুন ডায়েট, নতুন জামা, নতুন বছর। ২০২৬ সালে আপনার সেই পরিবর্তনের কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে আপনার নিজের ঘর। বড় কোনো বিপ্লবের প্রয়োজন নেই। ছোট ছোট এবং চিন্তাশীল কিছু অভ্যাসই পারে আপনার ঘরকে আরও সবুজ ও টেকসই করে তুল
১৭ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

নতুন বছর মানেই নতুন শুরুর সতেজতা। আমরা অনেকেই চাই আমাদের জীবনযাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে। নতুন ডায়েট, নতুন জামা, নতুন বছর। ২০২৬ সালে আপনার সেই পরিবর্তনের কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে আপনার নিজের ঘর। বড় কোনো বিপ্লবের প্রয়োজন নেই। ছোট ছোট এবং চিন্তাশীল কিছু অভ্যাসই পারে আপনার ঘরকে আরও সবুজ ও টেকসই করে তুলতে। নতুন বছরে আপনার যাপিত জীবন ও গৃহকোণকে প্রকৃতিবান্ধব করতে সহজ কিছু সংকল্প গ্রহণ করতে পারেন। সেটা হতে পারে আপনার রান্নাঘরে বর্জ্য কমানো, ঘরের আসবাব কমিয়ে আনা কিংবা পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া। আপনার ছোট ছোট এই পদক্ষেপগুলোই ২০২৬ সালে আপনার ঘরকে করে তুলবে প্রাণবন্ত এবং পৃথিবীকে আরও সবুজ করে তুলবে।
রান্নাঘরে আনুন সচেতন পরিবর্তন
পরিবর্তনের শুরুটা হতে পারে আপনার রান্নাঘর থেকে। রান্নাঘরের বর্জ্য কমিয়ে পরিবেশবান্ধব করে তোলা মোটেও কঠিন কিছু নয়। ছোট ছোট কিছু স্মার্ট বদল আপনার রান্নাঘরকে দিতে পারে এক নতুন সজীবতা। যেমন খাবারের সতেজতা ধরে রাখতে প্লাস্টিকের ক্লিন ফিল্মের বদলে মৌমাছির মোমের তৈরি র্যাপ ব্যবহার করুন। এগুলো ধুয়ে বারবার ব্যবহার করা যায় এবং নষ্ট হলে অনায়াসেই মাটিতে মিশে যায়। স্যান্ডউইচ মোড়ানো বা বেঁচে যাওয়া খাবার ঢেকে রাখতে এটি সেরা। এমনকি সুতি কাপড়ে গলানো মোম লাগিয়ে আপনি নিজেই বাড়িতে এটি বানিয়ে নিতে পারেন।
অনেক টি-ব্যাগে ক্ষতিকর মাইক্রোপ্লাস্টিক থাকে। তাই টি-ব্যাগ বর্জন করে সরাসরি খোলা চা-পাতা ব্যবহার শুরু করুন। এতে চায়ের স্বাদ যেমন অটুট থাকে, তেমনি পরিবেশও বাঁচে। একবার ব্যবহারযোগ্য স্পঞ্জের বদলে কাঠের তৈরি ডিশ ব্রাশ এবং কম্পোস্টেবল (পচনশীল) ডিশ ক্লথ বা বাসন মোছার কাপড় ব্যবহার করুন। লিকুইড সাবানের প্লাস্টিক বোতলের ঝামেলা এড়াতে সলিড ডিশ সোপ ব্লক ব্যবহার করুন। এগুলো লিকুইড সাবানের মতোই কার্যকর কিন্তু প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি করে না। এই সামান্য পরিবর্তনগুলোই আপনার রান্নাঘরকে একটি টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব রূপ দিতে পারে। মৌসুমি ফল বা সবজি বেশি থাকলে তা সংরক্ষণের অভ্যাস গড়ে তুলুন। সবজি হালকা ভাপিয়ে ফ্রিজে রাখা কিংবা উদ্বৃত্ত ফল দিয়ে জ্যাম বা আচার তৈরি করা খাবার অপচয় রোধের অন্যতম সেরা উপায়।

পরিচ্ছন্নতায় আনুন প্রাকৃতিক সমাধান
বাজারের কড়া রাসায়নিকযুক্ত ক্লিনারের বদলে বেকিং সোডা এবং সাদা ভিনেগার ব্যবহার করুন। এগুলো দাগ দূর করতে এবং কার্পেট সতেজ রাখতে জাদুর মতো কাজ করে। অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সুগন্ধের জন্য জলে টি-ট্রি বা ল্যাভেন্ডার অয়েল মিশিয়ে স্প্রে তৈরি করুন। টিস্যু পেপারের বদলে বাঁশের তৈরি কাপড় বা মাইক্রোফাইবার ক্লথ ব্যবহার করুন। আপনার বাগানের পুরোনো কাঠের প্যালেট দিয়ে বেঞ্চ বা টেবিল বানিয়ে নিতে পারেন। পুরোনো আসবাবের ওপর স্রেফ রঙের এক পোঁচ দিলেই তার হারানো জেল্লা ফিরে আসে। নতুন কেনার আগে বাড়িতে থাকা জিনিসের সৃজনশীল ব্যবহার পরিবেশের জন্য দারুণ এক উপহার। শাকসবজির খোসা, ডিমের খোসা বা কফির তলানি না ফেলে দিয়ে তা থেকে জৈব সার তৈরি করুন। এটি আপনার ঘরের বর্জ্য বহুগুণ কমিয়ে দেবে এবং বাগানের মাটিকে দেবে প্রচুর পুষ্টি। জায়গার অভাব থাকলে ছোট কম্পোস্ট বিন বা ‘ওয়ার্মারি’ ব্যবহার করতে পারেন।
ঘর গোছানো হোক উদ্দেশ্যপূর্ণ
নতুন বছরে ঘর থেকে অপ্রয়োজনীয় জিনিস সরিয়ে ফেলা বা ‘ডিক্লাটারিং’ করাটা মনের জন্য বেশ স্বস্তিদায়ক হতে পারে। তবে পরিবেশের কথা মাথায় রাখলে, কোনো কিছু রিসাইকেল করার চেয়ে তার ব্যবহার কমিয়ে আনা বা অন্য কাজে লাগানো বেশি জরুরি। মনে রাখবেন টেকসই জীবনের মূলমন্ত্র হলো রিডিউস (কমানো), রিইউজ (পুনরায় ব্যবহার) এবং রিসাইকেল (পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ)। একটি পুরোনো কাঠের বাক্স অনায়াসেই গাছের টব বা স্টোরেজ বক্সে রূপান্তরিত হতে পারে। বন্ধুদের সঙ্গে পোশাক অদলবদল করুন অথবা চ্যারিটিতে দান করুন। সারা বছর পুদিনা, পার্সলে বা থাইম চাষ করে আপনি যেমন টাটকা স্বাদ পাবেন, তেমনি ঘরের বাতাসও থাকবে সতেজ। রোদ উজ্জ্বল জায়গায় এই ছোট ভেষজ বাগান (Herb garden) গড়ে তোলা সম্ভব। তবে মনে রাখবেন, পুদিনা খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, তাই একে আলাদা টবে রাখাই ভালো।

বাথরুম হোক প্লাস্টিকমুক্ত
প্লাস্টিক বর্জ্য কমানোর কথা উঠলে আমরা প্রায়ই বাথরুমের কথা ভুলে যাই। অথচ প্লাস্টিকমুক্ত জীবন শুরু করার জন্য এটিই সবচেয়ে সহজ জায়গা। ২০২৬ সালে আপনার বাথরুমকে প্লাস্টিকমুক্ত এবং স্টাইলিশ করে তুলতে এই ছোট পরিবর্তনগুলো করতে পারেন। প্লাস্টিকের টুথব্রাশ বা নখের ব্রাশের বদলে কাঠের ব্রাশ ব্যবহার শুরু করুন। এগুলো যেমন দীর্ঘস্থায়ী, তেমনি দেখতেও বেশ নান্দনিক। প্লাস্টিকের বোতলের ঝামেলা চিরতরে দূর করতে শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনারের বার (সাবানের মতো শক্ত বার) ব্যবহার করুন। এটি বাথরুম থেকে প্লাস্টিকের বোতলের স্তূপ কমাতে জাদুর মতো কাজ করে। একবার ব্যবহারযোগ্য বা ওয়ান-টাইম প্লাস্টিক রেজারের বদলে সেফটি রেজার কিংবা বাঁশের হাতলওয়ালা রেজার বেছে নিন। এগুলো অনেক বেশি টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব। এই সামান্য পরিবর্তনগুলো কেবল প্লাস্টিক বর্জ্যই কমাবে না, আপনার বাথরুমে যোগ করবে এক চমৎকার ‘ইকো-ফ্রেন্ডলি’ আভিজাত্য।
নতুন বছরে সাসটেইনেবল ইন্টেরিয়র টিপস
নতুন বছরে ঘরের সাজসজ্জায় পরিবর্তন আনতে চাইলে কিছু বাড়তি বিষয় মাথায় রাখতে পারেন:
এনার্জি অ্যাসেসমেন্ট: আপনার ঘরের বিদ্যুৎ খরচ কোথায় কমানো সম্ভব তা বুঝতে বিশেষজ্ঞের সহায়তা নিন।
সেকেন্ড-হ্যান্ড ফার্নিচার: নতুন আসবাবের বদলে পুরোনো বা অ্যান্টিক দোকান থেকে আসবাব সংগ্রহ করুন। এটি ঘরে একটি অনন্য আভিজাত্য যোগ করে।
গ্রে-ওয়াটার সিস্টেম: বাথরুমের ব্যবহৃত পানি বা বৃষ্টির পানি সংগ্রহ করে তা বাগানে ব্যবহারের কথা ভাবুন।
ঘর সংস্কারের সময় স্থানীয় জীববৈচিত্র্য এবং প্রাণিকুলের কথা মাথায় রেখে অ-বিষাক্ত উপাদান এবং নেটিভ গাছপালা ব্যবহার করুন।
সূত্র: কান্ট্রি লিভিং ম্যাগাজিন, আর্থ সায়েন্স ডিজাইন

নতুন বছর মানেই নতুন শুরুর সতেজতা। আমরা অনেকেই চাই আমাদের জীবনযাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে। নতুন ডায়েট, নতুন জামা, নতুন বছর। ২০২৬ সালে আপনার সেই পরিবর্তনের কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে আপনার নিজের ঘর। বড় কোনো বিপ্লবের প্রয়োজন নেই। ছোট ছোট এবং চিন্তাশীল কিছু অভ্যাসই পারে আপনার ঘরকে আরও সবুজ ও টেকসই করে তুলতে। নতুন বছরে আপনার যাপিত জীবন ও গৃহকোণকে প্রকৃতিবান্ধব করতে সহজ কিছু সংকল্প গ্রহণ করতে পারেন। সেটা হতে পারে আপনার রান্নাঘরে বর্জ্য কমানো, ঘরের আসবাব কমিয়ে আনা কিংবা পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া। আপনার ছোট ছোট এই পদক্ষেপগুলোই ২০২৬ সালে আপনার ঘরকে করে তুলবে প্রাণবন্ত এবং পৃথিবীকে আরও সবুজ করে তুলবে।
রান্নাঘরে আনুন সচেতন পরিবর্তন
পরিবর্তনের শুরুটা হতে পারে আপনার রান্নাঘর থেকে। রান্নাঘরের বর্জ্য কমিয়ে পরিবেশবান্ধব করে তোলা মোটেও কঠিন কিছু নয়। ছোট ছোট কিছু স্মার্ট বদল আপনার রান্নাঘরকে দিতে পারে এক নতুন সজীবতা। যেমন খাবারের সতেজতা ধরে রাখতে প্লাস্টিকের ক্লিন ফিল্মের বদলে মৌমাছির মোমের তৈরি র্যাপ ব্যবহার করুন। এগুলো ধুয়ে বারবার ব্যবহার করা যায় এবং নষ্ট হলে অনায়াসেই মাটিতে মিশে যায়। স্যান্ডউইচ মোড়ানো বা বেঁচে যাওয়া খাবার ঢেকে রাখতে এটি সেরা। এমনকি সুতি কাপড়ে গলানো মোম লাগিয়ে আপনি নিজেই বাড়িতে এটি বানিয়ে নিতে পারেন।
অনেক টি-ব্যাগে ক্ষতিকর মাইক্রোপ্লাস্টিক থাকে। তাই টি-ব্যাগ বর্জন করে সরাসরি খোলা চা-পাতা ব্যবহার শুরু করুন। এতে চায়ের স্বাদ যেমন অটুট থাকে, তেমনি পরিবেশও বাঁচে। একবার ব্যবহারযোগ্য স্পঞ্জের বদলে কাঠের তৈরি ডিশ ব্রাশ এবং কম্পোস্টেবল (পচনশীল) ডিশ ক্লথ বা বাসন মোছার কাপড় ব্যবহার করুন। লিকুইড সাবানের প্লাস্টিক বোতলের ঝামেলা এড়াতে সলিড ডিশ সোপ ব্লক ব্যবহার করুন। এগুলো লিকুইড সাবানের মতোই কার্যকর কিন্তু প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি করে না। এই সামান্য পরিবর্তনগুলোই আপনার রান্নাঘরকে একটি টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব রূপ দিতে পারে। মৌসুমি ফল বা সবজি বেশি থাকলে তা সংরক্ষণের অভ্যাস গড়ে তুলুন। সবজি হালকা ভাপিয়ে ফ্রিজে রাখা কিংবা উদ্বৃত্ত ফল দিয়ে জ্যাম বা আচার তৈরি করা খাবার অপচয় রোধের অন্যতম সেরা উপায়।

পরিচ্ছন্নতায় আনুন প্রাকৃতিক সমাধান
বাজারের কড়া রাসায়নিকযুক্ত ক্লিনারের বদলে বেকিং সোডা এবং সাদা ভিনেগার ব্যবহার করুন। এগুলো দাগ দূর করতে এবং কার্পেট সতেজ রাখতে জাদুর মতো কাজ করে। অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সুগন্ধের জন্য জলে টি-ট্রি বা ল্যাভেন্ডার অয়েল মিশিয়ে স্প্রে তৈরি করুন। টিস্যু পেপারের বদলে বাঁশের তৈরি কাপড় বা মাইক্রোফাইবার ক্লথ ব্যবহার করুন। আপনার বাগানের পুরোনো কাঠের প্যালেট দিয়ে বেঞ্চ বা টেবিল বানিয়ে নিতে পারেন। পুরোনো আসবাবের ওপর স্রেফ রঙের এক পোঁচ দিলেই তার হারানো জেল্লা ফিরে আসে। নতুন কেনার আগে বাড়িতে থাকা জিনিসের সৃজনশীল ব্যবহার পরিবেশের জন্য দারুণ এক উপহার। শাকসবজির খোসা, ডিমের খোসা বা কফির তলানি না ফেলে দিয়ে তা থেকে জৈব সার তৈরি করুন। এটি আপনার ঘরের বর্জ্য বহুগুণ কমিয়ে দেবে এবং বাগানের মাটিকে দেবে প্রচুর পুষ্টি। জায়গার অভাব থাকলে ছোট কম্পোস্ট বিন বা ‘ওয়ার্মারি’ ব্যবহার করতে পারেন।
ঘর গোছানো হোক উদ্দেশ্যপূর্ণ
নতুন বছরে ঘর থেকে অপ্রয়োজনীয় জিনিস সরিয়ে ফেলা বা ‘ডিক্লাটারিং’ করাটা মনের জন্য বেশ স্বস্তিদায়ক হতে পারে। তবে পরিবেশের কথা মাথায় রাখলে, কোনো কিছু রিসাইকেল করার চেয়ে তার ব্যবহার কমিয়ে আনা বা অন্য কাজে লাগানো বেশি জরুরি। মনে রাখবেন টেকসই জীবনের মূলমন্ত্র হলো রিডিউস (কমানো), রিইউজ (পুনরায় ব্যবহার) এবং রিসাইকেল (পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ)। একটি পুরোনো কাঠের বাক্স অনায়াসেই গাছের টব বা স্টোরেজ বক্সে রূপান্তরিত হতে পারে। বন্ধুদের সঙ্গে পোশাক অদলবদল করুন অথবা চ্যারিটিতে দান করুন। সারা বছর পুদিনা, পার্সলে বা থাইম চাষ করে আপনি যেমন টাটকা স্বাদ পাবেন, তেমনি ঘরের বাতাসও থাকবে সতেজ। রোদ উজ্জ্বল জায়গায় এই ছোট ভেষজ বাগান (Herb garden) গড়ে তোলা সম্ভব। তবে মনে রাখবেন, পুদিনা খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, তাই একে আলাদা টবে রাখাই ভালো।

বাথরুম হোক প্লাস্টিকমুক্ত
প্লাস্টিক বর্জ্য কমানোর কথা উঠলে আমরা প্রায়ই বাথরুমের কথা ভুলে যাই। অথচ প্লাস্টিকমুক্ত জীবন শুরু করার জন্য এটিই সবচেয়ে সহজ জায়গা। ২০২৬ সালে আপনার বাথরুমকে প্লাস্টিকমুক্ত এবং স্টাইলিশ করে তুলতে এই ছোট পরিবর্তনগুলো করতে পারেন। প্লাস্টিকের টুথব্রাশ বা নখের ব্রাশের বদলে কাঠের ব্রাশ ব্যবহার শুরু করুন। এগুলো যেমন দীর্ঘস্থায়ী, তেমনি দেখতেও বেশ নান্দনিক। প্লাস্টিকের বোতলের ঝামেলা চিরতরে দূর করতে শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনারের বার (সাবানের মতো শক্ত বার) ব্যবহার করুন। এটি বাথরুম থেকে প্লাস্টিকের বোতলের স্তূপ কমাতে জাদুর মতো কাজ করে। একবার ব্যবহারযোগ্য বা ওয়ান-টাইম প্লাস্টিক রেজারের বদলে সেফটি রেজার কিংবা বাঁশের হাতলওয়ালা রেজার বেছে নিন। এগুলো অনেক বেশি টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব। এই সামান্য পরিবর্তনগুলো কেবল প্লাস্টিক বর্জ্যই কমাবে না, আপনার বাথরুমে যোগ করবে এক চমৎকার ‘ইকো-ফ্রেন্ডলি’ আভিজাত্য।
নতুন বছরে সাসটেইনেবল ইন্টেরিয়র টিপস
নতুন বছরে ঘরের সাজসজ্জায় পরিবর্তন আনতে চাইলে কিছু বাড়তি বিষয় মাথায় রাখতে পারেন:
এনার্জি অ্যাসেসমেন্ট: আপনার ঘরের বিদ্যুৎ খরচ কোথায় কমানো সম্ভব তা বুঝতে বিশেষজ্ঞের সহায়তা নিন।
সেকেন্ড-হ্যান্ড ফার্নিচার: নতুন আসবাবের বদলে পুরোনো বা অ্যান্টিক দোকান থেকে আসবাব সংগ্রহ করুন। এটি ঘরে একটি অনন্য আভিজাত্য যোগ করে।
গ্রে-ওয়াটার সিস্টেম: বাথরুমের ব্যবহৃত পানি বা বৃষ্টির পানি সংগ্রহ করে তা বাগানে ব্যবহারের কথা ভাবুন।
ঘর সংস্কারের সময় স্থানীয় জীববৈচিত্র্য এবং প্রাণিকুলের কথা মাথায় রেখে অ-বিষাক্ত উপাদান এবং নেটিভ গাছপালা ব্যবহার করুন।
সূত্র: কান্ট্রি লিভিং ম্যাগাজিন, আর্থ সায়েন্স ডিজাইন

অবশেষে কাতার এয়ারওয়েজের ৭০৫ রুটের বিমানটি নিউইয়র্কের জেএফকে বিমানবন্দরে অবতরণ করল। খুবই মসৃণ অবতরণ। ঘড়িতে তখন রাত সাড়ে এগারোটা। ১৯ এপ্রিল। ঢাকায় ততক্ষণে ২০ এপ্রিলের সকাল হয়ে গেছে। আমরা ঢাকা থেকে রওনা হয়েছিলাম ১৯ এপ্রিল সকাল দশটা
২৫ এপ্রিল ২০২৩
পুরোনোকে বিদায় জানিয়ে নতুনকে বরণ করে নেওয়ার ব্যাপারটি সত্যিই বিশেষ। একটি বছর ঘুরে যখন নতুন বছর আসে, তখন আমাদের মনে জাগে একরাশ প্রত্যাশা। এই নতুন সময়ে আমরা বেশ কিছু ছোট ছোট কাজ করে নিজের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার চেষ্টা করি। বছরের প্রথম দিন প্রতিটি কাজই আমরা এমনভাবে করার চেষ্টা করি যাতে পুরো বছরে
১১ ঘণ্টা আগে
আর মাত্র এক দিন পর আসছে নতুন বছর। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে আমরা কতই না আয়োজন করে থাকি। এর একটি অংশের আয়োজন হয় রান্নাঘরে। অনেক কিছু না হোক, ব্যস্ত জীবন থেকে একটু সময় বের করে প্রিয়জনের সঙ্গে প্রিয় খাবার খেয়ে হলেও আমরা নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ভালোবাসি। কোনো কিছুর শুরু ভালো দিয়ে করতে চাইলে মিষ্টি খাওয়া
১২ ঘণ্টা আগে
গেল বছর থেকে জেন-জিরা গোটা বিশ্বে ব্যাপক আলোচনায়। তাদের ফ্যাশন, স্টাইল, খাবার, চলাফেরা, কথা বলা, চিন্তা, ভ্রমণ নিয়ে হয়েছে নানান আলোচনা-সমালোচনা। তুলনা করতে গিয়ে কথা এসেছে অন্যান্য প্রজন্মের। এবার সেই জেন-জিদের পরের প্রজন্মের আলোচনায় আসা যাক। কারণ, ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া এই নতুন
১৫ ঘণ্টা আগে