রজত কান্তি রায়, ঢাকা
জাহাজের নাম এমভি প্লানসিয়াস। মোট যাত্রী ১১২ জন। এই ১১২ জনের মধ্যে আছেন বাংলাদেশের ২৭ জন। পৃথিবীর সর্বদক্ষিণের শেষ শহর আর্জেন্টিনার উশুয়াইয়া থেকে ৬ ডিসেম্বর ছেড়ে যায় এমভি প্লানসিয়াস। গন্তব্য অ্যান্টার্কটিকা। পথে পড়বে দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের প্যাটাগনিয়ান শেলফের ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ, দক্ষিণ জর্জিয়াসহ অনেক দ্বীপ। এ ভ্রমণ শেষ হবে ২৫ ডিসেম্বর।
‘কোট-পরা ভদ্রলোক’ তারা। তাদের নিয়ে রোমাঞ্চ জেগেছিল সেই কিশোরবেলায়। দক্ষিণ মেরুতে তাদের বসবাস। উড়তে না পারলেও তারা দুর্দান্ত সাঁতারু। তাদের দেখা পাওয়া কঠিন। বিশেষ করে আমাদের মতো দেশের মানুষের জন্য তা প্রায় অসম্ভব। তারা পেঙ্গুইন। এদের মধ্যে সম্ভবত অ্যাডেলি পেঙ্গুইনের নাম আমাদের কাছে বেশি পরিচিত।
১১ জন হলে একটি খেলার দল হয়। ২৭ জনকে আর দলে সীমাবদ্ধ করা যায় না। সেটাকে বহর বলা ভালো। দেশের ২৭ জনের বিশাল বহর এখন অ্যান্টার্কটিকার পথে। সেই দলে কিছু বন্ধুবান্ধবও আছেন। ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে তাঁদের বর্ণিল ভ্রমণের টুকরা টুকরা স্মৃতি।
ইতিপূর্বে বিশাল অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশ ঘুরে এসেছেন এ দেশের মাত্র কয়েকজন মানুষ। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ইনাম আল হক, পাখিবিশারদ হিসেবে যিনি বরেণ্য এ দেশে। ৮০ বছরের চিরযুবা মানুষটিও আছেন ২৭ জনের বহরে। আছেন আবদুল জলিল। তিনিও ৮০ বছরের চিরযুবা। আছে ১১ বছরের জারিতা। সে কানাডা থেকে যোগ দিয়েছে মা-বাবার সঙ্গে। বহরে আছেন ১০ জন নারী। বিভিন্ন দিক থেকে বাংলাদেশের মানুষের এ ভ্রমণ আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশি ২৭ অভিযাত্রীর মধ্যে ১৩ জন গেছেন দেশ থেকে। অন্যরা প্রবাসী বাংলাদেশি। তাঁরা যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ওমান ও অস্ট্রেলিয়া থেকে উড়ে গিয়ে আর্জেন্টিনায় যোগ দিয়েছেন এ বহরের সঙ্গে। নানা পেশা ও বয়সের এই অভিযাত্রীরা বয়ে নিয়ে গেছেন দেশের লাল-সবুজ পতাকা। এই বহরে আছেন পর্যটক ও লেখক তারেক অণু। ১০ ডিসেম্বর নিজের ফেসবুক ওয়ালে একটি গ্রুপ ছবি পোস্ট করেছিলেন তিনি। সে ছবির ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘অ্যান্টার্কটিকার পথে ২৭ জন বাংলাদেশি (সবাই অবশ্য ছবিতে নেই)। ...১১ থেকে ৮০—সকল বয়সের নানা পেশার, কিন্তু ভ্রমণের নেশায় আক্রান্ত সকলেই। এমন ভ্রমণ এর আগে হয়নি, কোনো দিন হবে কি না কে জানে।’
১০ ডিসেম্বর রাতে অ্যান্টার্কটিকা অভিযানের সদস্য তানভীর অপু টুকটুক করে হোয়াটসঅ্যাপে ছবি পাঠালেন, সঙ্গে ভিডিও। আর লিখে দিলেন, ভালো আছি। অফিসফেরত ক্লান্ত আমি নিমেষে চাঙা হয়ে উঠলাম। জানতে চাইলাম, এখন কোথায় আছেন? জানালেন, ফকল্যান্ড দ্বীপ থেকে দক্ষিণ জর্জিয়ার উদ্দেশে জাহাজ ছেড়েছে। আড়াই দিন লাগবে পৌঁছাতে। যে ছবিগুলো তিনি পাঠালেন, সেগুলো ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের ওয়েস্ট পয়েন্ট, সন্ডার্স আর স্ট্যানলি দ্বীপে তোলা। তরতাজা প্রকৃতি, তিমি ও পেঙ্গুইনের ছবি আছে তাতে। শত শত পেঙ্গুইন! দেখে মনে হবে, এ তাদেরই সাম্রাজ্য। মানুষ সেখানে অনাহূত।
শীতল সেসব দ্বীপের ছবি দেখেই ঠান্ডা লেগে গেল। কিন্তু কী উজ্জ্বল আর তরতাজা প্রকৃতি! ঢাকা যখন বায়ুদূষণে পৃথিবীতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে বসে আছে, তখন স্ট্যানলি দ্বীপের ছবি দেখে সর্দি লেগে যাওয়ারই কথা। আমারও তা-ই হলো। হোয়াটসঅ্যাপে কল করে বসলেন তানভীর অপু। আমি মৌন হয়ে গেলাম। মোবাইল ফোনের অন্য প্রান্ত থেকে অপুর কথার সঙ্গে ভেসে এল জলের শব্দ। শীতল দক্ষিণের জলের শব্দ। মৌনতা ভেঙে জানতে চাইলাম, সবাই সুস্থ কি না। অপু জানালেন, সবাই মোটামুটি ভালো, কিন্তু দীর্ঘ সমুদ্র ভ্রমণজনিত সমস্যা আছে। এবার সাংবাদিকসুলভ প্রশ্ন করলাম, আপনার অনুভূতি কী? অপু বললেন, ‘এটা অনেক বড় একটা ভ্রমণ হচ্ছে। আমাদের অনেক দিনের স্বপ্ন। বিশেষ করে ওয়াইল্ড লাইফ যা দেখছি—তিমি, পেঙ্গুইন, পাহাড়—এসব দেখা জীবনের স্বপ্ন ছিল।’
স্বপ্ন পূরণের পথে থাকা এসব মানুষের জন্য আমাদের শুভেচ্ছা রইল। অভিনন্দন, আর নিরাপদে ফিরে আসার জন্য প্রার্থনা রইল।
জাহাজের নাম এমভি প্লানসিয়াস। মোট যাত্রী ১১২ জন। এই ১১২ জনের মধ্যে আছেন বাংলাদেশের ২৭ জন। পৃথিবীর সর্বদক্ষিণের শেষ শহর আর্জেন্টিনার উশুয়াইয়া থেকে ৬ ডিসেম্বর ছেড়ে যায় এমভি প্লানসিয়াস। গন্তব্য অ্যান্টার্কটিকা। পথে পড়বে দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের প্যাটাগনিয়ান শেলফের ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ, দক্ষিণ জর্জিয়াসহ অনেক দ্বীপ। এ ভ্রমণ শেষ হবে ২৫ ডিসেম্বর।
‘কোট-পরা ভদ্রলোক’ তারা। তাদের নিয়ে রোমাঞ্চ জেগেছিল সেই কিশোরবেলায়। দক্ষিণ মেরুতে তাদের বসবাস। উড়তে না পারলেও তারা দুর্দান্ত সাঁতারু। তাদের দেখা পাওয়া কঠিন। বিশেষ করে আমাদের মতো দেশের মানুষের জন্য তা প্রায় অসম্ভব। তারা পেঙ্গুইন। এদের মধ্যে সম্ভবত অ্যাডেলি পেঙ্গুইনের নাম আমাদের কাছে বেশি পরিচিত।
১১ জন হলে একটি খেলার দল হয়। ২৭ জনকে আর দলে সীমাবদ্ধ করা যায় না। সেটাকে বহর বলা ভালো। দেশের ২৭ জনের বিশাল বহর এখন অ্যান্টার্কটিকার পথে। সেই দলে কিছু বন্ধুবান্ধবও আছেন। ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে তাঁদের বর্ণিল ভ্রমণের টুকরা টুকরা স্মৃতি।
ইতিপূর্বে বিশাল অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশ ঘুরে এসেছেন এ দেশের মাত্র কয়েকজন মানুষ। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ইনাম আল হক, পাখিবিশারদ হিসেবে যিনি বরেণ্য এ দেশে। ৮০ বছরের চিরযুবা মানুষটিও আছেন ২৭ জনের বহরে। আছেন আবদুল জলিল। তিনিও ৮০ বছরের চিরযুবা। আছে ১১ বছরের জারিতা। সে কানাডা থেকে যোগ দিয়েছে মা-বাবার সঙ্গে। বহরে আছেন ১০ জন নারী। বিভিন্ন দিক থেকে বাংলাদেশের মানুষের এ ভ্রমণ আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশি ২৭ অভিযাত্রীর মধ্যে ১৩ জন গেছেন দেশ থেকে। অন্যরা প্রবাসী বাংলাদেশি। তাঁরা যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ওমান ও অস্ট্রেলিয়া থেকে উড়ে গিয়ে আর্জেন্টিনায় যোগ দিয়েছেন এ বহরের সঙ্গে। নানা পেশা ও বয়সের এই অভিযাত্রীরা বয়ে নিয়ে গেছেন দেশের লাল-সবুজ পতাকা। এই বহরে আছেন পর্যটক ও লেখক তারেক অণু। ১০ ডিসেম্বর নিজের ফেসবুক ওয়ালে একটি গ্রুপ ছবি পোস্ট করেছিলেন তিনি। সে ছবির ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘অ্যান্টার্কটিকার পথে ২৭ জন বাংলাদেশি (সবাই অবশ্য ছবিতে নেই)। ...১১ থেকে ৮০—সকল বয়সের নানা পেশার, কিন্তু ভ্রমণের নেশায় আক্রান্ত সকলেই। এমন ভ্রমণ এর আগে হয়নি, কোনো দিন হবে কি না কে জানে।’
১০ ডিসেম্বর রাতে অ্যান্টার্কটিকা অভিযানের সদস্য তানভীর অপু টুকটুক করে হোয়াটসঅ্যাপে ছবি পাঠালেন, সঙ্গে ভিডিও। আর লিখে দিলেন, ভালো আছি। অফিসফেরত ক্লান্ত আমি নিমেষে চাঙা হয়ে উঠলাম। জানতে চাইলাম, এখন কোথায় আছেন? জানালেন, ফকল্যান্ড দ্বীপ থেকে দক্ষিণ জর্জিয়ার উদ্দেশে জাহাজ ছেড়েছে। আড়াই দিন লাগবে পৌঁছাতে। যে ছবিগুলো তিনি পাঠালেন, সেগুলো ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের ওয়েস্ট পয়েন্ট, সন্ডার্স আর স্ট্যানলি দ্বীপে তোলা। তরতাজা প্রকৃতি, তিমি ও পেঙ্গুইনের ছবি আছে তাতে। শত শত পেঙ্গুইন! দেখে মনে হবে, এ তাদেরই সাম্রাজ্য। মানুষ সেখানে অনাহূত।
শীতল সেসব দ্বীপের ছবি দেখেই ঠান্ডা লেগে গেল। কিন্তু কী উজ্জ্বল আর তরতাজা প্রকৃতি! ঢাকা যখন বায়ুদূষণে পৃথিবীতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে বসে আছে, তখন স্ট্যানলি দ্বীপের ছবি দেখে সর্দি লেগে যাওয়ারই কথা। আমারও তা-ই হলো। হোয়াটসঅ্যাপে কল করে বসলেন তানভীর অপু। আমি মৌন হয়ে গেলাম। মোবাইল ফোনের অন্য প্রান্ত থেকে অপুর কথার সঙ্গে ভেসে এল জলের শব্দ। শীতল দক্ষিণের জলের শব্দ। মৌনতা ভেঙে জানতে চাইলাম, সবাই সুস্থ কি না। অপু জানালেন, সবাই মোটামুটি ভালো, কিন্তু দীর্ঘ সমুদ্র ভ্রমণজনিত সমস্যা আছে। এবার সাংবাদিকসুলভ প্রশ্ন করলাম, আপনার অনুভূতি কী? অপু বললেন, ‘এটা অনেক বড় একটা ভ্রমণ হচ্ছে। আমাদের অনেক দিনের স্বপ্ন। বিশেষ করে ওয়াইল্ড লাইফ যা দেখছি—তিমি, পেঙ্গুইন, পাহাড়—এসব দেখা জীবনের স্বপ্ন ছিল।’
স্বপ্ন পূরণের পথে থাকা এসব মানুষের জন্য আমাদের শুভেচ্ছা রইল। অভিনন্দন, আর নিরাপদে ফিরে আসার জন্য প্রার্থনা রইল।
১৯৬০ সালের দিকে স্যাম পানাপুলোস এবং তাঁর ভাই ঐতিহ্যবাহী পিৎজায় এক নতুন উপাদান যোগ করার সিদ্ধান্ত নেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী পিৎজার উপাদানের সঙ্গে যুক্ত হলো প্যাকেটজাত আনারস। এর নাম রাখা হয় হাওয়াইয়ান পিৎজা। মাসখানেকের...
২ দিন আগেঅ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের জন্য নেপাল উপযুক্ত জায়গা। উঁচু পাহাড়ে ট্রেকিং থেকে শুরু করে প্যারাগ্লাইডিং কিংবা বাঞ্জি জাম্পিংয়ের মতো দুর্দান্ত সব কর্মকাণ্ডের জন্য এক নামে পরিচিত দেশটি। তবে এসব অ্যাকটিভিটি ছাড়াও সব ধরনের ভ্রমণপিয়াসির জন্য নেপালে কিছু না কিছু কর্মকাণ্ড রয়েছে।
২ দিন আগেপাহাড় বলতে বান্দরবানই আমাকে বেশি মুগ্ধ করে। এর নৈসর্গিক ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মুখে বলে কিংবা ছবিতে দেখিয়ে শেষ করা যাবে না।
২ দিন আগেপঞ্চাশ হাজার ফুলের বীজ থেকে তৈরি হয়েছে ৩৬০ বর্গমিটার দীর্ঘ একটি কার্পেট। এতে আরও যোগ হয়েছে ঐতিহ্যবাহী জ্যামিতিক নকশা ও মার্বেল পাথর। সেটি দেখতে ভিড় জমেছে পর্যটকের।
২ দিন আগে