Ajker Patrika

প্রক্রিয়াজাত খাবার যেভাবে স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
আপডেট : ০৫ জুলাই ২০২৫, ০০: ২৯
প্রতিদিন ৪ বারের বেশি প্রক্রিয়াজাত খাবার খেলে মৃত্যুর ঝুঁকি ১৮ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। ছবি: পেক্সেলস
প্রতিদিন ৪ বারের বেশি প্রক্রিয়াজাত খাবার খেলে মৃত্যুর ঝুঁকি ১৮ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। ছবি: পেক্সেলস

আধুনিক জীবনযাত্রায় প্রক্রিয়াজাত খাবার, বিশেষ করে অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার খুবই জনপ্রিয়। এগুলো সহজলভ্য, স্বাদে ভালো এবং তুলনামূলক সস্তা। তবে গবেষণাগুলো বলছে, এই খাবারগুলো নিয়মিত বা অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে শরীরের ওপর পড়তে পারে ক্ষতিকর প্রভাব। এগুলো অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত করায় প্রাকৃতিক উপাদান কম থাকে। এতে থাকে সংরক্ষণকারী পদার্থ, কৃত্রিম রং ও স্বাদ, অতিরিক্ত চিনি, লবণ এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাট। যেমন প্যাকেটজাত স্ন্যাকস, চিপস, সফট ড্রিংকস, ইনস্ট্যান্ট নুডলস, কেক, বিস্কুট ইত্যাদি।

খাদ্যতালিকায় অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবারের পরিমাণ যত বাড়ছে, মৃত্যুঝুঁকিও তত বাড়ছে। ছবি: পেক্সেলস
খাদ্যতালিকায় অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবারের পরিমাণ যত বাড়ছে, মৃত্যুঝুঁকিও তত বাড়ছে। ছবি: পেক্সেলস

এক গবেষণায় বলা হয়েছে, এ ধরনের খাবার খাওয়ার কারণে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ২৪ হাজার মানুষের অকালমৃত্যু ঘটছে। যুক্তরাষ্ট্রের ‘আমেরিকান জার্নাল অব প্রিভেনটিভ মেডিসিন’-এ গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণাটির জন্য আটটি দেশের প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার মানুষের তথ্য বিশ্লেষণ করেন গবেষকেরা। এই বিশ্লেষণের মাধ্যমে গবেষকেরা দেখেন, খাদ্যতালিকায় অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবারের পরিমাণ যত বাড়ছে, মৃত্যুঝুঁকিও তত বাড়ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা বেশি পরিমাণে প্রক্রিয়াজাত খাবার খান, তাঁদের ওজন বৃদ্ধি, ডায়াবেটিস, হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি। প্রতিদিন ৪ বারের বেশি এমন খাবার খেলে মৃত্যুর ঝুঁকি ১৮ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে।

প্রক্রিয়াজাত খাবার কী

প্রক্রিয়াজাত খাবার বলতে মূলত প্রাকৃতিক অবস্থায় না থাকা খাবারকে বোঝানো হয়। খাবার দীর্ঘ সময় সংরক্ষণ করতে কিছু পদ্ধতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সেসব পদ্ধতির মধ্যে আছে খাবারের মূল উপাদানগুলো রোদে শুকানো ও আগুনে সেঁকে শুকনো করা বা সংরক্ষণকারী তরলে ডুবিয়ে রাখা এবং চিনি, লবণ, তেল, রং বা রাসায়নিক উপকরণে রান্না বা সংরক্ষণ করা। এগুলোর মধ্যে প্রথম দুই পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা খাবারের শরীরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলার ইতিহাস পাওয়া যায় না তেমন। তৃতীয় পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা খাবার শরীরের অবস্থার ওপর নির্ভর করে ইতিবাচক বা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তবে শরীরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে চিনি, লবণ, তেল, রং বা রাসায়নিক উপকরণে রান্না করা ও সংরক্ষিত খাবার। এ ধরনের খাবারের মধ্যে আছে ফাস্ট ফুড, মিষ্টি, বেকারি পণ্য, সসেজ, বেকন ইত্যাদির মতো প্রক্রিয়াজাত মাংস এবং চিনি, লবণ বা ফ্যাট যোগ করা খাবার। এসব খাবার দেখতে সুন্দর, খেতেও মজাদার। কিন্তু নিয়মিত খেলে শরীরের ক্ষতি হয়। কারণ, এসব খাবারে থাকে অতিরিক্ত চিনি, কৃত্রিম উপাদান, আঁশের ঘাটতি, ট্রান্স ফ্যাট। এসবে কোনো পুষ্টি থাকে না। আর এ ধরনের খাবারে ক্যালরি বেশি গ্রহণ করা হয়ে যায়।

অতিরিক্ত চিনি

অধিকাংশ প্রক্রিয়াজাত খাবারে অতিরিক্ত চিনি ও হাই-ফ্রুকটোজ কর্ন সিরাপ থাকে। এগুলো ওজন বাড়ায়, ইনসুলিনের ভারসাম্য নষ্ট করে ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। কোমল পানীয় বা কোলা জাতীয় পানীয়তে বেশি চিনি থাকে।

কোমল পানীয় বা কোলা জাতীয় পানীয়তে বেশি চিনি থাকে। ছবি: পেক্সেলস
কোমল পানীয় বা কোলা জাতীয় পানীয়তে বেশি চিনি থাকে। ছবি: পেক্সেলস

কৃত্রিম উপাদান

প্রক্রিয়াজাত খাবারে থাকা রং, ঘ্রাণ—সবই রাসায়নিকের তৈরি। আর্টিফিশিয়াল ফ্লেভার বা কৃত্রিম গন্ধ একাধিক রাসায়নিকের মিশ্রণে তৈরি, যার প্রকৃত উপাদান জানা যায় না।

পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট

প্রাকৃতিক শস্যের বদলে ব্যবহৃত হয় সাদা আটা, কর্ন ফ্লাওয়ার ইত্যাদি। এগুলো পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট। এগুলো খাওয়ার ফলে রক্তে চিনির মাত্রা দ্রুত বেড়ে যায়, যা হঠাৎ ক্ষুধা ও ক্লান্তির কারণ হতে পারে।

আঁশের ঘাটতি

আঁশ বা ফাইবার হজমে সাহায্য করে ও পেট ভরা রাখে। প্রক্রিয়াজাত খাবারে প্রাকৃতিক আঁশ প্রায় থাকে না বললেই চলে।

ট্রান্স ফ্যাট

প্রক্রিয়াজাত খাবারে হাইড্রোজেনযুক্ত তেল ব্যবহারে তৈরি হয় ট্রান্স ফ্যাট। এটি শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল বাড়ায়, ভালো কোলেস্টেরল কমায়। এ ছাড়া হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবারে ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট খুবই কম থাকে। ছবি: পেক্সেলস
অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবারে ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট খুবই কম থাকে। ছবি: পেক্সেলস

পুষ্টির অভাব

এসব খাবারে ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট খুবই কম থাকে। অনেক সময় কৃত্রিমভাবে কিছু ভিটামিন যোগ করা হয়। কিন্তু তা প্রকৃত খাবারের বিকল্প নয়।

দ্রুত ক্যালরি গ্রহণ

এ ধরনের খাবার চিবোতে এবং হজমে কম সময় লাগে। ফলে কম সময়ে বেশি খেয়ে ফেলা হয়। তাতে ক্যালরি, ওজন—দুটোই বাড়ে।

করণীয় কী

স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়তে হলে প্রক্রিয়াজাত খাবার যতটা সম্ভব কমাতে হবে। এ জন্য প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখুন,

  • শাকসবজি ও ফলমূল
  • ডাল, বাদাম ও বীজ
  • শস্য
  • সেদ্ধ বা গ্রিল করা মাছ ও মুরগি
বিশেষজ্ঞদের মতে, উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে অতি প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার পরিমাণ এক দশক ধরে তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থাকলেও তা এখনো অনেক বেশি। এদিকে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে দিনে দিনে বাড়ছে এই প্রবণতা।

আমরা যত সহজে ও মজা করে প্রক্রিয়াজাত খাবারগুলো খাই, ততটাই কঠিন এর পরিণাম। সাময়িক স্বাদের জন্য দীর্ঘ মেয়াদে নিজেকে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলবেন কি না, একবার ভাবুন।

সূত্র: মেডিকেল নিউজ টুডে

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সবুজ পৃথিবীর জন্য ২০২৬: নতুন বছরে কিছু পরিবেশবান্ধব সংকল্প নিন

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
২০২৬ সালে সবুজ ও বাসযোগ্য পৃথিবী গড়তে জীবনে যোগ করুন কিছু অভ্যাস। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।
২০২৬ সালে সবুজ ও বাসযোগ্য পৃথিবী গড়তে জীবনে যোগ করুন কিছু অভ্যাস। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।

২০২৬ সাল আমাদের দোরগোড়ায়। নতুন বছর মানেই নিজের উন্নতির জন্য নতুন সব পরিকল্পনা। কিন্তু এই বছর ব্যক্তিগত লক্ষ্যের পাশাপাশি আমাদের এই সুন্দর গ্রহটিকে সুস্থ করে তোলার দায়িত্বও কি আমাদের নয়? জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশদূষণের এই সময়ে আমাদের ছোট ছোট কিছু অভ্যাসই পারে বড় পরিবর্তন আনতে। ২০২৬ সালে একটি সবুজ ও বাসযোগ্য পৃথিবী গড়তে আপনি কিছু অভ্যাস নিজের জীবনে যোগ করতে পারেন।

বর্জ্য নিয়ে নতুন করে ভাবুন

আমাদের প্রতিদিনের ছোট ছোট সমন্বয় বর্জ্য কমাতে বিশাল ভূমিকা রাখে।

একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক ছেড়ে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য বোতল বা পাত্র ব্যবহার শুরু করুন। ছবি: পেক্সেলস
একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক ছেড়ে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য বোতল বা পাত্র ব্যবহার শুরু করুন। ছবি: পেক্সেলস
  • একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক ছেড়ে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য বোতল বা পাত্র ব্যবহার শুরু করুন।
  • খাবার সংরক্ষণের জন্য প্লাস্টিকের বদলে কাচ বা ধাতব পাত্র বেছে নিন, যা রাসায়নিকমুক্ত এবং দীর্ঘস্থায়ী।
  • প্লাস্টিক ব্যাগের চাহিদা কমাতে সব সময় সঙ্গে একটি কাপড়ের ব্যাগ রাখুন।
  • বাড়িতে পেপার ন্যাপকিনের বদলে কাপড়ের ন্যাপকিন ব্যবহার করুন। এগুলো বর্জ্য কমানোর পাশাপাশি আপনার ডাইনিংয়ে আভিজাত্য যোগ করবে।
  • মেকআপ তোলা বা ঘর মোছার জন্য ওয়ান-টাইম ওয়াইপস ব্যবহার বন্ধ করুন। এগুলো পচতে ১০০ বছরের বেশি সময় লাগে। এর বদলে সুতি কাপড় বা রিইউজেবল প্যাড ব্যবহার করুন।
  • প্লাস্টিকে মোড়ানো ফল বা সবজি না কিনে আলগা বা কাগজে মোড়ানো পণ্য কিনুন।

যাতায়াতে আনুন পরিবর্তন

স্বল্প দূরত্বের যাত্রায় গাড়ির বদলে বিকল্প পথ বেছে নিলে বায়ুদূষণ কমে, যানজট হ্রাস পায়। ছবি: ফ্রিপিক
স্বল্প দূরত্বের যাত্রায় গাড়ির বদলে বিকল্প পথ বেছে নিলে বায়ুদূষণ কমে, যানজট হ্রাস পায়। ছবি: ফ্রিপিক

যানবাহন থেকে নির্গত ধোঁয়া কার্বন নিঃসরণের অন্যতম প্রধান কারণ। আপনি গাড়ি যত কম চালাবেন, পৃথিবী তত বেশি শ্বাস নিতে পারবে। বাস, ট্রেন বা সাবওয়ে ব্যবহার আপনার কার্বন ফুটপ্রিন্ট অনেক কমিয়ে দেয়। ছোট যাত্রায় গাড়ির বদলে বিকল্প পথ বেছে নিলে বায়ুদূষণ কমে, যানজট হ্রাস পায় এবং আপনার ব্যক্তিগত কার্বন ফুটপ্রিন্ট অনেক নিচে নেমে আসে। এটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো। দূরে কোথাও যাওয়ার বদলে নিজের এলাকার আশপাশে ঘুরুন বা বন্ধুর সঙ্গে তাঁর বাড়িতে কিংবা আপনার বাড়িতেই ছুটি কাটান। এই সময়ে দৈনন্দিন বিরক্তিকর কাজগুলো থেকে ছুটি নিয়ে নিজের এলাকার অচেনা জায়গাগুলো ঘুরে দেখুন, স্থানীয় খাবার চেখে দেখুন। এতে একটি দীর্ঘ বিমানযাত্রা বা ক্লান্তিকর সফর থেকে পরিবেশ বেঁচে যাবে। এতে বিমান বা দীর্ঘ সফরের দূষণ কমবে।

খাদ্যাভ্যাসে আনুন টেকসই ধারা

আপনার খাবার প্লেটের সিদ্ধান্তই ঠিক করে দেয় পরিবেশের ভবিষ্যৎ। প্লেটে নিরামিষ বা প্ল্যান্টবেজড রেসিপি, যেমন মসুর ডাল বা কাজু-পান্তা মাংসের তুলনায় অনেক কম কার্বন নিঃসরণ করে। সপ্তাহে অন্তত এক দিন বা দুই দিন মাংস ছাড়া খাওয়ার চেষ্টা করুন। সব সময় স্থানীয় খামারে উৎপাদিত এবং মৌসুমি ফল ও সবজি কেনার চেষ্টা করুন। প্লাস্টিকে মোড়ানো সবজি এড়িয়ে খোলা সবজি কিনুন। খাবারের অপচয় রোধে আগে থেকেই মিল প্ল্যানিং করুন। এটি আপনাকে বাইরের প্লাস্টিক মোড়ানো খাবারের ওপর নির্ভরশীলতা কমাবে।

বাড়িতে কম্পোস্টিং শুরু করলে তা আপনার গাছের পুষ্টি জোগাবে এবং বর্জ্য কমাবে। ছবি: পেক্সেলস
বাড়িতে কম্পোস্টিং শুরু করলে তা আপনার গাছের পুষ্টি জোগাবে এবং বর্জ্য কমাবে। ছবি: পেক্সেলস

ঘরে শক্তি সাশ্রয় করুন

বিদ্যুৎ সাশ্রয় আপনার পকেটের পাশাপাশি পৃথিবীরও উপকার করে। অনেক সময় যন্ত্র বন্ধ থাকলেও প্লাগ লাগানো থাকলে বিদ্যুৎ খরচ হয়। কাজ শেষে প্লাগ খুলে রাখুন। হ্যালোজেন বাল্বের বদলে এলইডি ব্যবহার করুন। নতুন কোনো যন্ত্র কেনার আগে সেটির এনার্জি রেটিং দেখে নিন। পুরোনো যন্ত্র বদলে এনার্জি-এফিসিয়েন্ট ফ্রিজ বা ওয়াশিং মেশিন কিনুন। স্মার্ট মিটার ব্যবহার করুন, যা আপনার বিদ্যুৎ খরচের ধরন বুঝতে এবং সাশ্রয় করতে সাহায্য করবে। বাড়িতে সোলার প্যানেল বা এয়ার সোর্স হিট পাম্প লাগানোর কথা ভাবতে পারেন।

পানি সংরক্ষণ ও বনায়ন

পানি জীবন হলেও আমাদের অপচয়ের কারণে এটি ক্রমেই দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠছে। লো-ফ্লো ফাউসেট বা শাওয়ার ফিক্সচার ব্যবহার করুন। এ ছাড়া ওয়াশিং মেশিনে কাপড় ধোয়ার সময় লোড পূর্ণ হলে তবেই মেশিন চালান। নিজের জানালার পাশে বা বারান্দায় টমেটো বা হার্বস চাষ শুরু করুন। ঘরোয়া উদ্ভিদের কাটিং থেকে নতুন চারা তৈরি করে বন্ধুদের উপহার দিন। বাড়িতে কম্পোস্টিং শুরু করলে তা আপনার গাছের পুষ্টি জোগাবে এবং বর্জ্য কমাবে।

একা লড়াই করার চেয়ে দলগত কাজ বেশি কার্যকর। আপনি চাইলে স্থানীয় কোনো ক্লাইমেট অ্যাকশন গ্রুপে যোগ দিতে পারেন। তাদের সঙ্গে এলাকা পরিষ্কার করা বা পরিবেশ সচেতনতামূলক প্রচারণায় অংশ নিন। ২০২৬ সাল হোক আমাদের সচেতনতার বছর। আপনার ছোট একটি পদক্ষেপই পারে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সবুজ ও সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে। শুরুটা হোক আজ থেকেই!

সূত্র: ইকোমিনা, গুড এনার্জি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতে ময়শ্চারাইজার ব্যবহারের পাশাপাশি খেতে হবে এই কয়েকটি খাবার

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
শীতে ত্বকের যত্নে ময়শ্চারাইজার ব্যবহারের পাশাপাশি খেতে হবে পুষ্টিকর খাবার। প্রতীকী ছবি: ফ্রিপিক
শীতে ত্বকের যত্নে ময়শ্চারাইজার ব্যবহারের পাশাপাশি খেতে হবে পুষ্টিকর খাবার। প্রতীকী ছবি: ফ্রিপিক

শীতে ত্বকের অতিরিক্ত শুষ্ক ভাব দূর করতে কত কীই-না করি আমরা। যতবার হাত ধোয়া হচ্ছে, ততবারই ময়শ্চারাইজার না মাখলে হাত খসখসে হয়ে উঠছে। ময়শ্চারাইজার মাখার পরও কিছুক্ষণ বাদে বাদে রিঅ্যাপ্লাই করতে হচ্ছে। শোনা যাচ্ছে, ঠান্ডা নাকি আরও বাড়বে। ফলে শুষ্ক ত্বকের অধিকারীদের চিন্তায় এখনই কপালে ভাঁজ পড়ে গেছে। রূপবিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ত্বকের শুষ্ক ও নির্জীব ভাব দূর করতে বাইরে থেকে যেমন মশ্চারাইজার ব্যবহার করা প্রয়োজন, তেমনি নিয়মিত কয়েকটি খাবার খাওয়া উচিত। এতে করে শীতে ত্বক থাকবে উজ্জ্বল, নরম ও মসৃণ। পাশাপাশি ত্বকে বয়সের ছাপও পড়বে দেরিতে।

শীতে ত্বকের আর্দ্রতা কমে যায়। বয়স যত বেশি, ত্বকের আর্দ্রতা তত কম থাকে এই ঋতুতে। এ সমস্যা দূর করতে সাহায্য করতে পারে কিছু খাবার। ঘি, আমলকী, বাদাম, টমেটো, সামুদ্রিক মাছ ইত্যাদি খাবার খেলে ত্বকের স্বাভাবিক তেল উৎপাদন অব্যাহত থাকে। কোলাজেন উৎপাদনও বাড়ে। ফলে ত্বক পরিপুষ্ট হওয়ার পাশাপাশি জেল্লা ছড়ায়। শারমিন কচি, রূপবিশেষজ্ঞ এবং স্বত্বাধিকারী, বিন্দিয়া এক্সক্লুসিভ কেয়ার

ময়শ্চারাইজার ব্যবহারের পাশাপাশি যেসব খাবার খাবেন

খাঁটি ঘি

প্রতিদিন অন্তত এক চা-চামচ ঘি খান। এতে রয়েছে স্বাস্থ্যকর চর্বি ও চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন। এগুলো খেলে শরীর ভালো রাখার পাশাপাশি ত্বকও পরিপুষ্ট হবে। ত্বকের প্রাকৃতিক তৈলাক্ত ভাব বজায় রাখতেও সাহায্য করে ঘি। ফলে ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে ওঠে না।

সালাদে টমেটো রাখুন

শীতে বাজারে যে টমেটো পাওয়া যায়, তাতে প্রচুর লাইকোপিন থাকে, যা ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করে। সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ত্বকের কোলাজেন ভেঙে দেয়। ফলে বলিরেখা পড়ে। এ ছাড়া এটি শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতেও সহায়তা করে।

শীতে সালাদে রাখুন টমেটো। এ ছাড়াও যেভাবে সম্ভব টমেটো খেতে হবে প্রতিদিন। ছবি: পেক্সেলস
শীতে সালাদে রাখুন টমেটো। এ ছাড়াও যেভাবে সম্ভব টমেটো খেতে হবে প্রতিদিন। ছবি: পেক্সেলস

আমলকী

ত্বক তারুণ্যদীপ্ত রাখে ভিটামিন সি। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, শীতকালে শরীরে ভিটামিন সি-এর ঘাটতি একাই পূরণ করতে পারে আমলকী। এই ছোট্ট ফল নিয়মিত খেলে তা কোলাজেন বাড়াতে সাহায্য করে। ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্র ভাব এবং টান টান ভাব বজায় রাখার জন্য এই কোলাজেন বেশি জরুরি।

তিল

এই শীতে তিলের নাড়ু, হালুয়া, ভর্তা তৈরি করে খেতে পারেন। এটি ত্বকের ইলাস্টিসিটি বজায় রাখতে সহায়তা করে। এতে ত্বক থাকে কোমল ও উজ্জ্বল। তিলে থাকা জিংক ও স্বাস্থ্যকর চর্বি ত্বক প্রাকৃতিকভাবে ময়শ্চারাইজড রাখে।

সামুদ্রিক মাছ

সামুদ্রিক মাছের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও ভিটামিন ডি ত্বক কোমল ও হাড় মজবুত রাখে। সপ্তাহে অন্তত দুদিন সামুদ্রিক মাছ খাওয়া দরকার। তবে এই মাছ রান্নায় অতিরিক্ত তেল ব্যবহার না করাই ভালো।

কাঠবাদাম ও আখরোট

ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে ৬টি ভেজানো কাঠবাদাম খান। এতে ত্বক সুন্দর থাকবে। কাঠবাদামে রয়েছে ভিটামিন ই এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি, যা ত্বকের কোষ ভালো রাখে। কাঠবাদাম ছাড়াও খেতে পারেন আখরোট। এতে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড; যা ত্বকের ইলাস্টিসিটি বজায় রাখে, টক্সিনকে ত্বকের ক্ষতি করতে দেয় না।

বিটরুট

বিটরুটের ভিটামিন এ, সি, পটাশিয়াম ও সুপার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের মৃত কোষ দূর করে ত্বক পরিষ্কার রাখে, ত্বকের পোর বা ছিদ্রগুলো মেরামত করে। প্রতিদিন ৫০০ মিলি লিটার বিটরুটের জুস পান করলে বা সালাদ হিসেবে বিটরুট খেলে ত্বক ভালো থাকে।

টক দই

ত্বকের জন্য যত ধরনের স্বাস্থ্যকর খাবার রয়েছে, সেগুলোর মধ্য়ে প্রোবায়োটিকস খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রোবায়োটিকস হিসেবে টক দই খুব ভালো ও সহজলভ্য একটি খাবার। এতে রয়েছে পেটের জন্য উপকারী ব্যাকটেরিয়া, যা অন্ত্রে পৌঁছে অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, পেটের স্বাস্থ্যের প্রভাব পড়ে ত্বকে। নিয়মিত খাদ্যতালিকায় টক দই রাখলে ত্বকের স্বাভাবিক তৈলাক্ত ভাব বজায় থাকে। ফলে শীতকালে ত্বকের অতিরিক্ত শুষ্কতা নিয়ে বাড়তি ভাবনা থাকে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জেন-জি প্রজন্ম কি আসলে ভীত?

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৫৩
গ্যাব্রিয়েল রুবিনের দীর্ঘ গবেষণায় উঠে এসেছে জেনারেশন জেড প্রজন্মের গভীর উদ্বেগ, নিরাশা এবং পৃথিবীকে দেখার এক ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।
গ্যাব্রিয়েল রুবিনের দীর্ঘ গবেষণায় উঠে এসেছে জেনারেশন জেড প্রজন্মের গভীর উদ্বেগ, নিরাশা এবং পৃথিবীকে দেখার এক ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।

এখন যাদের বয়স ১৩ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে, একটা নির্দিষ্ট বয়সের ভাগে তারাই আসলে জেনারেশন জি প্রজন্মের মানুষ। এই প্রজন্ম নিয়ে পৃথিবীতে সম্ভবত বেশি গবেষণা হয়েছে। এর কারণও আছে। সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া পুরো দুনিয়ার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সঙ্গে এই প্রজন্মের মানুষের একটা যোগাযোগ আছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের সরকারের পতন নিশ্চিত করার ঘটনায় বেশ আলোচনায় আছে জেন-জি প্রজন্ম। এ জন্য এ প্রজন্মের মানুষের সাহসের প্রশংসা করেন অনেকেই। কিন্তু সে প্রশংসার আগুনে বরফ ঢেলে দিয়েছেন এক গবেষক! তাঁর নাম গ্যাব্রিয়েল রুবিন।

এখন ‘স্নোফ্লেক’ জেনারেশন শব্দটি প্রায়ই শোনা যায়। শব্দটি ‘কলিন্স ইংলিশ ডিকশনারি’তে সংযুক্ত হওয়া ২০১৬ সালের শব্দগুলোর মধ্যে একটি। একটি প্রজন্মকে তার আগের প্রজন্মের তুলনায় কম সহিষ্ণু এবং অপরাধপ্রবণ হিসেবে দেখা হয়, কলিন্স ডিকশনারিতে শব্দটিকে মূলত এভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। নিউ জার্সির মন্টক্লেয়ার স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক গ্যাব্রিয়েল রুবিন। তিনি ২০২৫ সালের ‘সোসাইটি ফর রিস্ক অ্যানালাইসিস’ কনফারেন্সে জেন-জি বা ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া তরুণদের বিষয়ে এক চাঞ্চল্যকর গবেষণাপত্র পেশ করেছেন। তাঁর দীর্ঘ গবেষণায় উঠে এসেছে এই প্রজন্মের গভীর উদ্বেগ, নিরাশা এবং পৃথিবীকে দেখার এক ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি।

গবেষণার তিনটি মূল দিক

অধ্যাপক রুবিন ১০৭ জন তরুণের দীর্ঘ সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তিনটি বড় বিষয় চিহ্নিত করেছেন।

ভয়ংকর পৃথিবী: কোভিড-১৯ লকডাউন এবং বন্দুক হামলার মতো অভিজ্ঞতার কারণে এই প্রজন্ম পৃথিবীকে একটি অত্যন্ত অনিরাপদ স্থান মনে করে।

পরিবর্তনের ক্ষমতাহীনতা: তারা বিশ্বাস করে যে রাজনীতি বা আন্দোলনের মাধ্যমে পৃথিবী পরিবর্তনের ক্ষমতা তাদের নেই। যখন কোনো মানুষ পরিস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণ হারায়, তখন চারপাশের জগৎকে তার কাছে আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ মনে হয়।

নেতিবাচক ভবিষ্যৎ: জলবায়ু পরিবর্তনের মতো অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই বা অর্থনৈতিক সংকটের কোনো সহজ সমাধান না থাকায় তারা ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম হতাশ ও বিষণ্ন।

ঝুঁকি দেখার নতুন দৃষ্টিভঙ্গি

গবেষণায় দেখা গেছে, জেন-জি প্রজন্ম যেকোনো ঝুঁকিকে দুটি বিষয়ের ওপর বিচার করে। বিষয়টিকে একেবারে সাদাকালো অর্থাৎ নিরাপদ অথবা বিপজ্জনক এই দুই মেরুতে তারা বিচার করে। তারা বুঝতে ব্যর্থ হচ্ছে যে ঝুঁকি একটি ধারাবাহিক বিষয়, যা সামলানো বা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এর ফলে তারা জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে ঝুঁকি অনুভব করে।

নারী ও বর্তমান সমাজ

এই গবেষণায় তরুণীদের ওপর প্রভাব সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে। প্রায় সব নারী মনে করে, বিশেষ করে প্রজননস্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা তাদের অধিকার। এটি হুমকির মুখে। এই ভীতি অনেক ক্ষেত্রে তাদের আত্মহত্যা বা চরম বিষণ্নতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

কেন হচ্ছে এমন

অধ্যাপক রুবিন এর কারণ হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং তথ্যের প্রবল প্রবাহকে দায়ী করেছেন। মোবাইল ফোনের পুশ নোটিফিকেশন আর অবিরাম সোশ্যাল মিডিয়া আপডেট তাদের সারাক্ষণ ঝুঁকির কথা মনে করিয়ে দেয়। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, জেন-জি সেন্সরি প্রসেসিং সেনসিটিভিটিতে ভুগছে। যার অর্থ তারা যেকোনো তথ্য বা পরিস্থিতি সাধারণ মানুষের চেয়ে অনেক বেশি গভীর ও তীব্রভাবে অনুভব করে।

পরস্পরবিরোধী বাস্তবতা

মজার বিষয় হলো, পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত তিন বছর মানব ইতিহাসের অন্যতম নিরাপদ সময়। কিন্তু জেন-জি প্রজন্মের কাছে তাদের অভ্যন্তরীণ ভয়গুলো বাস্তব হুমকির চেয়েও বড়। তারা নিজেদের স্নোফ্লেক বা অধিকারপ্রত্যাশী ট্যাগ দেওয়াটা পছন্দ করে না। বরং এটি তাদের আরও বেশি দুশ্চিন্তায় ফেলে দেয়।

অধ্যাপক রুবিন মনে করেন, পুলিশ বিভাগ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত এই তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা। পৃথিবী হয়তো বাইরে থেকে নিরাপদ। কিন্তু জেন-জি প্রজন্মের ভেতরে যে ভয়ের জগৎ তৈরি হয়েছে, তা দূর করতে তাদের আরও শক্তিশালী এবং আশাবাদী করে তোলা জরুরি।

সূত্র: ডেইলি মেইল, ইউরেক অ্যালার্ট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: প্রেমের সম্ভাবনা নষ্ট করবে অহংকার, সময় নিয়ে দাঁত মাজুন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ১০
আজকের রাশিফল: প্রেমের সম্ভাবনা নষ্ট করবে অহংকার, সময় নিয়ে দাঁত মাজুন

মেষ

অফিসে আজ কোনো এক সহকর্মী আপনার ধৈর্যের পরীক্ষা নেবে। তারা এমন একটা আলতু-ফালতু মন্তব্য করবে, যা শুনে আপনার মনে হবে আপনি সাক্ষাৎ গজব! কিন্তু সাবধান, বসের দিকে তেড়ে যাওয়ার আগে ক্যালেন্ডারটা একবার দেখে নিন—মাস শেষ হতে মাত্র কয়েকটা দিন বাকি। এখন মেজাজ গরম করা মানেই মাসের শেষের পকেট মানি আর ইনক্রিমেন্ট দুটোই হারানো। নিজেকে বোঝান যে আপনি একজন সাধু ব্যক্তি, আর রাগটা ফ্রিজের একদম নিচের বরফ বাক্সে ঢুকিয়ে রাখুন। আজ আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে অন্তত পাঁচ মিনিট নিজের প্রশংসা করুন। অন্য কেউ তো করবেই না, উল্টো বদনাম করতে পারে!

বৃষ

প্রেমের নীল সমুদ্রে আজ টাইটানিকের মতো হাবুডুবু খেতে পারেন। তবে রোমান্টিক হওয়ার আগে মনে রাখবেন, গ্রহরা বলছে আজ আপনার ইগো বা অহংকার একটু বেশিই চড়া থাকবে। প্রিয়জনের সঙ্গে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ঝগড়া করে দিনটা মাটি করবেন না, না হলে কপালে ডিনারের বদলে শুধু বাসি শিঙাড়া জুটবে। যাঁরা ব্যবসা করছেন, তাঁরা অংশীদারদের অন্ধ বিশ্বাস করবেন না; সই করার আগে সব কাগজ অন্তত দুবার পড়ুন এবং তাঁদের টিফিন বক্সটাও চেক করে নিন—কী জানি কী লুকিয়ে রেখেছে! আজ যদি খুব লটারির টিকিট কাটার নেশা চাপে, তবে ওই টাকায় এক কাপ ভালো চা আর বিস্কুট খেয়ে সোজা বাড়ি চলে যান। লাভ বেশি হবে।

মিথুন

আজ আপনার জন্য যোগাযোগের দরজা খোলা। ইনবক্সে একগাদা ই-মেইল বা পুরোনো বন্ধুর মেসেজ আসার সম্ভাবনা প্রবল। তবে সব উত্তর দিতে গিয়ে ফোনের চার্জ আর রিচার্জ দুটোই শেষ করবেন না। শরীরের ওপর আজ একটু চাপ বাড়তে পারে, পিঠ বা ঘাড়ের ব্যথা জানান দেবে যে আপনি আর কুড়ি বছরের তরুণ নন। কাজের ফাঁকে মাঝেমধ্যে লম্বা একটা হাই তুলুন আর হাত-পা ছড়িয়ে একটু আড়মোড়া ভেঙে নিন। নতুন কোনো সম্পর্কে পা দেওয়ার আগে ঠান্ডা মাথায় ভাবুন—সেই মানুষটি কি আপনার সব আজব আবদার আর মাঝরাতের খিদে সহ্য করতে পারবে?

কর্কট

বাড়ির লোকের আবেগঘন কথা আজ আপনাকে কাবু করতে পারে। পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠদের কথায় একটু বেশি কান দিন, নতুবা রাতে পছন্দের তরকারিটা প্লেটে না-ও জুটতে পারে। হঠাৎ করে দূরে কোথাও পাহাড় বা সমুদ্রে ঘুরতে যাওয়ার প্রবল ইচ্ছা জাগবে, কিন্তু ব্যাংকের ব্যালেন্স দেখা মাত্রই সেই ইচ্ছা তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়বে। অগত্যা ইউটিউবে অন্যের ট্রাভেল ভ্লগ দেখেই সাধ মেটাতে হবে। যাঁরা ছাত্রছাত্রী, তাঁদের জন্য পড়াশোনার চেয়ে আজ পড়ার টেবিল গোছানোটা বেশি জরুরি হতে পারে। টেবিল পরিষ্কার থাকলে অন্তত মনে হবে যে আপনি পড়ছেন!

সিংহ

আপনার রাজকীয় চালচলন আজ বজায় থাকবে। অনেক দিন ধরে ঝুলে থাকা কোনো একটা কাজ বিকেলের দিকে মিটে যেতে পারে। তবে সতর্ক থাকুন, আজ কাছের মানুষ বা স্ত্রী এমন কোনো সত্য কথা তিরের মতো ছুড়ে দেবে, যা সরাসরি ইগোতে গিয়ে লাগবে। পাত্তা দেবেন না! নিজের ওপর বিশ্বাস রাখুন, যদিও আপনার আত্মবিশ্বাস মাঝেমধ্যে হিমালয়ের চূড়া ছাড়িয়ে যায়। অফিসের বসকে আজ মহাজ্ঞানী মনে করুন। তিনি যা-ই বলুন না কেন, তর্কে না গিয়ে শুধু মুখটা ৩২ পাটি বের করে হাসুন আর বলুন, ‘হ্যাঁ স্যার, একদম ঠিক বলেছেন।’

কন্যা

আপনার খুঁতখুঁতে স্বভাব আজ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাবে। চায়ে চিনির দানা কয়টা আছে তা-ও হয়তো আপনি গুনে দেখতে চাইবেন। জীবনের বড় কোনো সিদ্ধান্ত, বিশেষ করে বিয়ের কথা বা চাকরি বদলের চিন্তা আজ স্থগিত রাখাই ভালো। কারণ, আপনার বিচারবুদ্ধি আজ একটু বেশিই জটিল পথে হাঁটছে। হঠাৎ কোনো পুরোনো বন্ধু বা পাওনাদার সামনে উদয় হতে পারে—পকেট সামলান! আজ আপনার হাসিতে একটা অন্যরকম জাদু থাকবে। তাই দাঁত মাজার সময় একটু বেশি সময় দিন, যাতে সেই জাদুর আলোয় সবাই ভিরমি খায়!

তুলা

সারা দিন মনে হবে পৃথিবীটা যেন উল্টে যাচ্ছে। একটা অজানা হাহাকার বা অস্থিরতা তাড়া করবে। তবে ঘাবড়াবেন না, এটা কি সত্যিই কোনো গভীর আধ্যাত্মিক বিষয় নাকি দুপুরের তেল-চর্বিযুক্ত বিরিয়ানির ফলাফল, সেটা আগে এন্টাসিড খেয়ে নিশ্চিত করুন। পারিবারিক অশান্তিতে ঘি না ঢেলে যুক্তিবাদী হওয়ার চেষ্টা করুন। রাত জেগে অন্যের সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল চেক করা বন্ধ করুন। নিজের চোখের নিচের কালি দূর করতে একটু শান্তিতে ঘুমানো জরুরি।

বৃশ্চিক

অর্থিক যোগ মন্দ নয়, পকেটে দু-চার টাকা আসার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু সমস্যা হলো শত্রু বা যারা আপনাকে হিংসা করে, তারা ওত পেতে বসে আছে। ব্যাংক ব্যালেন্সের গল্প বা কেনাকাটার ফিরিস্তি আজ কাউকে শোনাবেন না। কোনো গোপন কথা আজ ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয় আছে, তাই মুখে কুলুপ আঁটুন। সন্ধ্যার পর মনের আকাশ থেকে পুরোনো মেঘ কেটে গিয়ে হালকা রোমান্টিক ঝিলিক দেখা দিতে পারে। উপভোগ করুন!

ধনু

আজ নিজেকে খুব বুদ্ধিমান মনে করবেন এবং পুরোনো কিছু সাফল্যের স্মৃতিচারণা করে খুশিতে ডগমগ করবেন। তবে গ্রহের ফেরে আজ বাড়ির কোনো ছোটখাটো বিষয় নিয়ে অশান্তি হতে পারে। আপনার যুক্তি খুব প্রখর থাকবে, কিন্তু ঝগড়ার সময় সেই যুক্তি যেন কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে না বদলে যায় সেদিকে খেয়াল রাখুন। মিষ্টি কথায় কাজ হাসিল করার চেষ্টা করুন। রাস্তাঘাটে চলবার সময় বড়দের সম্মান দিন। কে জানে, কোনো বয়স্ক আত্মীয়র মন জয় করতে পারলে পকেট থেকে দু-পাঁচ শ টাকার নোট আশীর্বাদ হিসেবে বেরিয়েও আসতে পারে!

মকর

কাউকে আজ উদার হয়ে টাকা ধার দিতে যাবেন না। নক্ষত্ররা বলছে, ওই টাকা ফেরত পাওয়া আর অমাবস্যার চাঁদ দেখা একই কথা। পার্টনার আজ খুব স্পর্শকাতর মুডে থাকবে, তাই ভুল করেও কোনো সেনসিটিভ কথা তুলবেন না। শান্তি বজায় রাখতে আজ নিজেকে ‘বোবা’ বানিয়ে রাখতে পারেন। দুনিয়াটা যদি আজ একঘেয়ে বা সাদাকালো মনে হয়, তবে একটা সস্তা রঙিন চশমা পরে নিন—সবকিছুই রঙিন আর রঙিন মনে হবে!

কুম্ভ

কথার জাদুতে আজ অসম্ভব কাজও সম্ভব হয়ে যাবে। অফিসে যে জট পাকিয়ে বসে ছিল, তা আপনার দুই মিনিটের লেকচারে খুলে যাবে। তবে সন্তানদের পড়াশোনা বা তাদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে কিছুটা মানসিক চাপের সৃষ্টি হতে পারে। খরচ কমানোর পরিকল্পনা করবেন ঠিকই, কিন্তু অনলাইন শপিং অ্যাপের নোটিফিকেশন সেই পরিকল্পনার বারোটা বাজাতে পারে। আজ লড়াই বা তর্কে জেতার চেয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়াটাই হবে আপনার সবচেয়ে বড় জয়।

মীন

আপনার কল্পনাশক্তি আজ আকাশছোঁয়া হবে। নতুন কিছু আঁকা, লেখা বা গান গাওয়ার চেষ্টা করবেন। আপনার কাণ্ডকারখানা দেখে চারপাশের মানুষ রীতিমতো চমকে উঠবে। তবে আপনার ঘরদোর আজ যা অগোছালো হয়ে আছে, তাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাটা প্রধান চ্যালেঞ্জ। সব কিছুর মধ্যে একটা অদ্ভুত ছন্দ খুঁজে পাবেন। আজ ভুলেও কাউকে অনুকরণ বা নকল করতে যাবেন না। আপনি যেমন অদ্ভুত, তেমনই থাকুন—তাতেই আপনার বিশেষত্ব!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত