মন্টি বৈষ্ণব

ঘুরতে যেতে কে না ভালোবাসে। বাঙালি হিসেবে আমরা বরাবরই ভ্রমণপিপাসু জাতি। প্রতিদিনের একঘেয়ে জীবনে মানুষ যখন হাঁপিয়ে ওঠে, তখনই মন পালাই পালাই করে। ঠিক সে সময় যদি ছুটি মিলে যায়, তবে সেই সুযোগ হাতছাড়া না করে অনেকেই ঘুরতে চলে যান পাহাড়ে কিংবা সমুদ্রে। আবার ভ্রমণে গেলে যান্ত্রিক জীবন থেকে পাওয়া যায় মুক্তি। পুতুলের মতো টানা কাজ করা থেকে পাওয়া যায় কিছু সময়ের বিরতি।
ঘড়ির সঙ্গে ঘুরতে থাকা জীবনে কিছুটা বদল তো চাই। স্বাদ হোক আর হাওয়া বদলই হোক, ভ্রমণের চেয়ে ভালো কিছু তো নেই। তাই ভ্রমণই সই। মন নেচে উঠল ভাবতেই। সঙ্গে ঢোলের বাড়ি হয়ে এল বোনের কাছ থেকে পাহাড়ে যাওয়ার আমন্ত্রণ। অফিস থেকে ছুটি নিয়ে চলে গেলাম; গন্তব্য খাগড়াছড়ি।
আমরা যাত্রা শুরু করেছিলাম ১৩ এপ্রিলের রাতে। আরামবাগ থেকে বাসে করে রওনা দিলাম। যাত্রা অবশ্য ব্যাঘাতহীন ছিল না। পোহাতে হয়েছে ভোগান্তি। না, তেমন বড় কিছু নয়। স্থানে স্থানে সড়কের দশা ও বাহনের শরীর-স্বাস্থ্য মিলিয়ে একটা অবস্থা আরকি। মাঝপথে শ্যামলী পরিবহনের গাড়ির (নন এসি) এঁকেবেঁকে চলতে দেখে মনে মনে গাইলাম ‘তোমার সাপের বেণি নাচে না, নাচে শ্যামলী পরিবহনের গাড়ি’।
বেহাল সড়ক পেরিয়ে অবশেষে পৌঁছালাম খাগড়াছড়িতে। রাস্তার কারণে ঘুমাতে না পারার সুবিধাটা হলো ভোরের আলো ফুটতে দেখেছি। ভোরের আলোয় অদ্ভুত এক মায়াবী পরশ জড়িয়ে থাকে। গাড়ি থেকে মনে হয় কোনো এক রাজকন্যা আলতো ছোঁয়ায় ভোরকে রাঙিয়ে দিচ্ছে।
আমরা দলে ভারী ছিলাম। তাই পূজা-পার্বণে কারও বাড়িতে গিয়ে সমস্যায় ফেলতে চাইনি। উঠলাম হোটেল গাইরিংয়ে। গাইরিং মানে হচ্ছে টংঘর। হোটেলের প্রবেশপথেই দেখা হলো মধুমঞ্জুরি ফুলেদের সঙ্গে। তাদের অভ্যর্থনা বেশ ভালোই লাগল। এর কিছুক্ষণ পরই কোকিলের ডাক শুনে মুগ্ধ হলাম। ভালো লাগার বিষয় ছিল, এই কোকিলের ডাক শুনলাম টানা তিন দিন। যেখানে যেতাম, সেখানেই মনে হতো কোকিলেরা আমাদের সঙ্গেই রয়েছে।
দিনটি ছিল ১৪ এপ্রিল। মানে পয়লা বৈশাখ। হোটেল থেকে হাতমুখ ধুয়ে বেরিয়ে পড়লাম। চলে গেলাম ঠাকুরছড়া গ্রামের ভবতোষ রোয়াজা দাদার বাড়িতে। এ গ্রামের কথা বলার আগে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর পূজা-পার্বণের কথা বলতে চাই।
পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ত্রিপুরা, মারমা ও চাকমা জনগোষ্ঠীর বর্ষবরণ উৎসব বৈসাবি। ত্রিপুরাদের বৈসু বা বৈসুক, মারমাদের সাংগ্রাই ও চাকমাদের বিজু নামের আদ্যক্ষর দিয়ে বৈসাবি নামের উৎপত্তি।
ত্রিপুরারা বৈসু উৎসব একটানা তিন দিন ধরে, মানে বাংলা বছরের শেষ দুই দিন এবং নতুন বছরের প্রথম দিন উদ্যাপন করে। দিনের পরিক্রমায় এই তিন দিনের অনুষ্ঠানগুলোর নাম হলো প্রথম দিন হারি বৈসু, দ্বিতীয় দিন বৈসু বা বৈসুক মা, আর তৃতীয় দিন বিসিকাতাল।
হারি বৈসু: হারি বৈসু দিয়ে উৎসবের প্রথম দিনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। চৈত্রসংক্রান্তির আগের দিন এই উৎসব পালন করা হয়। এই দিনে খুব ভোরে গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি থেকে ফুল সংগ্রহ করে এখানকার কিশোর-কিশোরীরা। এরপর সেই ফুল দিয়ে মালা তৈরি করে ঝোলানো হয় ঘরের দরজায়। ফুলের সঙ্গে দেওয়া হয় নিমপাতা, আমপাতাও। পাশাপাশি গৃহপালিত পশুর গলায়ও ফুলের মালা পরানো হয়। ফুল ঘরকে সুবাসিত করে আর নিমপাতা বাড়িকে রোগবালাই থেকে দূরে রাখে। এই দিনে অনেকেই দূর-দূরান্ত থেকে দেবতা পুকুরে তীর্থ দর্শনে যায়। এ ছাড়া এই দিনে ত্রিপুরাদের ঐতিহ্যবাহী গরিয়া নৃত্যের দল বিভিন্ন পাড়া প্রদক্ষিণ করে বেড়ায়।
বৈসু/বৈসুক মা: চৈত্র মাসের শেষ দিন, অর্থাৎ চৈত্রসংক্রান্তিতে এই উৎসব পালন করা হয়। এদিন সকালে বাড়ির ছেলেমেয়েরা কুচাই পানি (কুচাই পানিকে ত্রিপুরারা পবিত্র পানি বলে গণ্য করে) দিয়ে স্নান করে। এরপর গ্রামের বিভিন্ন বাড়ির উঠানে গিয়ে গৃহপালিত পশুদের জন্য ধান ছিটিয়ে দেওয়া হয়। এই দিন প্রাণী হত্যা করা হয় না। ঘরে ঘরে রান্না করা হয় হরেক রকমের সবজি দিয়ে নিরামিষ তরকারি। এই জনপ্রিয় তরকারি পাচন নামে পরিচিত। এ ছাড়া এই দিনে ঘরে ঘরে তৈরি করা হয় নানা রকমের পিঠা। আর বিকেল থেকে শুরু হয় এক পাড়া থেকে অন্য পাড়ায় বেড়ানো।
বিসিকাতাল: বছরের প্রথম দিনে পালন করা হয় বিসিকাতাল বা নববর্ষ। বিসিকাতাল মূলত ত্রিপুরাদের নববর্ষ। এই দিনে নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়া হয়। সকালে বাড়ির ছেলেমেয়েরা বাবা-মাসহ বাড়ির গুরুজনদের স্নান করায়। এতে পারিবারিক বন্ধন হয় দৃঢ়। এ ছাড়া এই দিনে সবাই মন্দিরে গিয়ে প্রণাম করে আসে। সবার মঙ্গল কামনা করে গঙ্গাকে উদ্দেশ্য করে জলপূজা করা হয়। গঙ্গাপূজায় আগামী দিনের সুখ-শান্তির জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা হয়। এ ছাড়া নদীর পাড়ে কলাপাতায় ফুল, টাকা, মোমবাতি, ধূপকাঠি জ্বালিয়ে করা হয় পূজা। গঙ্গাপূজার প্রধান উদ্দেশ্যই থাকে পানি দিয়ে পুরোনো দিনের সব গ্লানি ধুয়ে দেওয়া। এই দিনও আবার অনেকে দেবতা পুকুর দর্শন করতে যায়। এ ছাড়া বিসিকাতাল দিনে আমিষসহ ভালোমন্দ খাবারের আয়োজন করা হয়। এই দিন ভালো খাবার খাওয়াতে পারলে সারা বছর ভালো যাবে বলে বিশ্বাস করা হয়।
এবার আসি ঠাকুরছড়া গ্রামের আলাপে। ভবতোষ দাদার বাড়িতে ঢুকতেই মাথার সঙ্গে টুক করে লাগল ফুল ও পাতা দিয়ে তৈরি মালা। দরজার ওপরে নানা রঙের ফুলের মালা দেখে মনটা ভরে উঠল। দুপুরে খেতে বসে দেখলাম নানা রকমের খাবারের আয়োজন। খাবারের মধ্যে ছিল বৈসুর বিশেষ খাবার পাচন, তেল ছাড়া বিভিন্ন তরকারি। তবে এসব খাবারে শুঁটকির প্রাধান্য ছিল অনেক বেশি। অবাক করার মতো স্বাদ ছিল শুধু সেদ্ধ করেই তৈরি করা মজাদার সব তরকারির। আমরা খুব তৃপ্তি নিয়ে খেলাম। এরপর গেলাম কাটা ধানের আইল দিয়ে বাড়ির পাশে চেঙ্গি নদীর তীরে। আমাদের সঙ্গে ছিল বাড়ির কুকুর বিল্টু। এ নাম আমরা দিয়েছি। বিল্টু আমাদের সঙ্গে অনেক ছবি তুলল। আর যতক্ষণ না পর্যন্ত আমরা নদীর তীর থেকে বাড়িতে ফিরলাম, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের পথ প্রদর্শক হিসেবেই থাকল। আমাদের চেঙ্গী নদীর তীরের সময়টাও কাটল দারুণ।
এরপর বিকেলে রীতি অনুযায়ী এ বাড়ি-ও বাড়ি বেড়াতে বের হলাম। এখানকার মানুষ যে কতটা আন্তরিক, তা পাড়া ঘুরতে বের না হলে বুঝতে পারতাম না। পাড়া ঘুরতে গিয়ে সবার বাড়িতে খেলাম পাচন, বিরিয়ানি (এই বিরিয়ানি মোটর ডাল আর শূকরের মাংস দিয়ে তৈরি), তরমুজ, কলাসহ বিভিন্ন খাবার। পাড়া ঘুরতে গিয়ে দেবাশীষ রোয়াজা দাদার বাড়িতে গিয়ে চোখ আটকে গেল। এই বাড়ির বিশাল জায়গাজুড়ে ছিল ফুলের বাগান। সবচেয়ে অবাক করার মতো বিষয় ছিল গন্ধরাজ ফুলের বাগান। সারা জীবনেও গাছভর্তি এত গন্ধরাজ ফুল দেখিনি। ফুলবাগানের মালিক দেবাশীষ দাদা বললেন, ‘ফুলের সঙ্গে থাকতে আমি খুব পছন্দ করি। যখন ফুলের গাছ মরে যায়, তখন বুকটা হাহাকার করে।’
পরদিন ছিল বিসিকাতাল, মানে ত্রিপুরাদের নববর্ষ। কোকিলের ডাকে ভাঙল ঘুম। ঘুম ভাঙার পর শুনলাম খোল-করতালসহকারে নগর কীর্তনের সুর। কীর্তনের সুর শুনতে শুনতে চলে গেলাম চেঙ্গী নদীর তীরে গঙ্গাপূজার স্থানে। সেখানে যাওয়ামাত্রই নামলাম পানিতে। দেখলাম হাঁটুপানিতে সবাই গঙ্গাপূজা করছেন। এদিন সবার মঙ্গল কামনা করে গঙ্গাপূজা করা হয়। পানিতে বাঁশ দিয়ে ভাসমান বেদি তৈরি করা হয়েছে। সেই বেদিতে রয়েছে হরেক রঙের ফুল। সেখানে জ্বলছে মোমবাতি। পানিতে ঘুরতে ঘুরতে দেখলাম তীরে কলাপাতায় ফুল, টাকা আর মোমবাতি জ্বালছে। আর দেখলাম চেঙ্গী নদীর তীর ঘেঁষে অনেক দূর পর্যন্ত কলাপাতা আর ফুলের দীর্ঘ লাইন।
বলে রাখা ভালো, বাংলাদেশের বর্ষপঞ্জি অনুসারে ১৪ এপ্রিল পয়লা বৈশাখ পালন করা হলেও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী এখনো সৌর পঞ্জিকা অনুসারেই বৈসু উৎসব পালন করে। তাই চাকমাদের বিজু উৎসবের সঙ্গে ত্রিপুরাদের বৈসু উৎসবের এক দিনের পার্থক্য থাকে। এই বৈসু উৎসবের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে হাজার বছরের ঐতিহ্য ও ইতিহাস। এই উৎসবের মধ্য দিয়ে মুছে যায় পুরোনো দিনের গ্লানি, দুঃখ, হিংসা, বিদ্বেষ।

ঘুরতে যেতে কে না ভালোবাসে। বাঙালি হিসেবে আমরা বরাবরই ভ্রমণপিপাসু জাতি। প্রতিদিনের একঘেয়ে জীবনে মানুষ যখন হাঁপিয়ে ওঠে, তখনই মন পালাই পালাই করে। ঠিক সে সময় যদি ছুটি মিলে যায়, তবে সেই সুযোগ হাতছাড়া না করে অনেকেই ঘুরতে চলে যান পাহাড়ে কিংবা সমুদ্রে। আবার ভ্রমণে গেলে যান্ত্রিক জীবন থেকে পাওয়া যায় মুক্তি। পুতুলের মতো টানা কাজ করা থেকে পাওয়া যায় কিছু সময়ের বিরতি।
ঘড়ির সঙ্গে ঘুরতে থাকা জীবনে কিছুটা বদল তো চাই। স্বাদ হোক আর হাওয়া বদলই হোক, ভ্রমণের চেয়ে ভালো কিছু তো নেই। তাই ভ্রমণই সই। মন নেচে উঠল ভাবতেই। সঙ্গে ঢোলের বাড়ি হয়ে এল বোনের কাছ থেকে পাহাড়ে যাওয়ার আমন্ত্রণ। অফিস থেকে ছুটি নিয়ে চলে গেলাম; গন্তব্য খাগড়াছড়ি।
আমরা যাত্রা শুরু করেছিলাম ১৩ এপ্রিলের রাতে। আরামবাগ থেকে বাসে করে রওনা দিলাম। যাত্রা অবশ্য ব্যাঘাতহীন ছিল না। পোহাতে হয়েছে ভোগান্তি। না, তেমন বড় কিছু নয়। স্থানে স্থানে সড়কের দশা ও বাহনের শরীর-স্বাস্থ্য মিলিয়ে একটা অবস্থা আরকি। মাঝপথে শ্যামলী পরিবহনের গাড়ির (নন এসি) এঁকেবেঁকে চলতে দেখে মনে মনে গাইলাম ‘তোমার সাপের বেণি নাচে না, নাচে শ্যামলী পরিবহনের গাড়ি’।
বেহাল সড়ক পেরিয়ে অবশেষে পৌঁছালাম খাগড়াছড়িতে। রাস্তার কারণে ঘুমাতে না পারার সুবিধাটা হলো ভোরের আলো ফুটতে দেখেছি। ভোরের আলোয় অদ্ভুত এক মায়াবী পরশ জড়িয়ে থাকে। গাড়ি থেকে মনে হয় কোনো এক রাজকন্যা আলতো ছোঁয়ায় ভোরকে রাঙিয়ে দিচ্ছে।
আমরা দলে ভারী ছিলাম। তাই পূজা-পার্বণে কারও বাড়িতে গিয়ে সমস্যায় ফেলতে চাইনি। উঠলাম হোটেল গাইরিংয়ে। গাইরিং মানে হচ্ছে টংঘর। হোটেলের প্রবেশপথেই দেখা হলো মধুমঞ্জুরি ফুলেদের সঙ্গে। তাদের অভ্যর্থনা বেশ ভালোই লাগল। এর কিছুক্ষণ পরই কোকিলের ডাক শুনে মুগ্ধ হলাম। ভালো লাগার বিষয় ছিল, এই কোকিলের ডাক শুনলাম টানা তিন দিন। যেখানে যেতাম, সেখানেই মনে হতো কোকিলেরা আমাদের সঙ্গেই রয়েছে।
দিনটি ছিল ১৪ এপ্রিল। মানে পয়লা বৈশাখ। হোটেল থেকে হাতমুখ ধুয়ে বেরিয়ে পড়লাম। চলে গেলাম ঠাকুরছড়া গ্রামের ভবতোষ রোয়াজা দাদার বাড়িতে। এ গ্রামের কথা বলার আগে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর পূজা-পার্বণের কথা বলতে চাই।
পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ত্রিপুরা, মারমা ও চাকমা জনগোষ্ঠীর বর্ষবরণ উৎসব বৈসাবি। ত্রিপুরাদের বৈসু বা বৈসুক, মারমাদের সাংগ্রাই ও চাকমাদের বিজু নামের আদ্যক্ষর দিয়ে বৈসাবি নামের উৎপত্তি।
ত্রিপুরারা বৈসু উৎসব একটানা তিন দিন ধরে, মানে বাংলা বছরের শেষ দুই দিন এবং নতুন বছরের প্রথম দিন উদ্যাপন করে। দিনের পরিক্রমায় এই তিন দিনের অনুষ্ঠানগুলোর নাম হলো প্রথম দিন হারি বৈসু, দ্বিতীয় দিন বৈসু বা বৈসুক মা, আর তৃতীয় দিন বিসিকাতাল।
হারি বৈসু: হারি বৈসু দিয়ে উৎসবের প্রথম দিনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। চৈত্রসংক্রান্তির আগের দিন এই উৎসব পালন করা হয়। এই দিনে খুব ভোরে গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি থেকে ফুল সংগ্রহ করে এখানকার কিশোর-কিশোরীরা। এরপর সেই ফুল দিয়ে মালা তৈরি করে ঝোলানো হয় ঘরের দরজায়। ফুলের সঙ্গে দেওয়া হয় নিমপাতা, আমপাতাও। পাশাপাশি গৃহপালিত পশুর গলায়ও ফুলের মালা পরানো হয়। ফুল ঘরকে সুবাসিত করে আর নিমপাতা বাড়িকে রোগবালাই থেকে দূরে রাখে। এই দিনে অনেকেই দূর-দূরান্ত থেকে দেবতা পুকুরে তীর্থ দর্শনে যায়। এ ছাড়া এই দিনে ত্রিপুরাদের ঐতিহ্যবাহী গরিয়া নৃত্যের দল বিভিন্ন পাড়া প্রদক্ষিণ করে বেড়ায়।
বৈসু/বৈসুক মা: চৈত্র মাসের শেষ দিন, অর্থাৎ চৈত্রসংক্রান্তিতে এই উৎসব পালন করা হয়। এদিন সকালে বাড়ির ছেলেমেয়েরা কুচাই পানি (কুচাই পানিকে ত্রিপুরারা পবিত্র পানি বলে গণ্য করে) দিয়ে স্নান করে। এরপর গ্রামের বিভিন্ন বাড়ির উঠানে গিয়ে গৃহপালিত পশুদের জন্য ধান ছিটিয়ে দেওয়া হয়। এই দিন প্রাণী হত্যা করা হয় না। ঘরে ঘরে রান্না করা হয় হরেক রকমের সবজি দিয়ে নিরামিষ তরকারি। এই জনপ্রিয় তরকারি পাচন নামে পরিচিত। এ ছাড়া এই দিনে ঘরে ঘরে তৈরি করা হয় নানা রকমের পিঠা। আর বিকেল থেকে শুরু হয় এক পাড়া থেকে অন্য পাড়ায় বেড়ানো।
বিসিকাতাল: বছরের প্রথম দিনে পালন করা হয় বিসিকাতাল বা নববর্ষ। বিসিকাতাল মূলত ত্রিপুরাদের নববর্ষ। এই দিনে নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়া হয়। সকালে বাড়ির ছেলেমেয়েরা বাবা-মাসহ বাড়ির গুরুজনদের স্নান করায়। এতে পারিবারিক বন্ধন হয় দৃঢ়। এ ছাড়া এই দিনে সবাই মন্দিরে গিয়ে প্রণাম করে আসে। সবার মঙ্গল কামনা করে গঙ্গাকে উদ্দেশ্য করে জলপূজা করা হয়। গঙ্গাপূজায় আগামী দিনের সুখ-শান্তির জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা হয়। এ ছাড়া নদীর পাড়ে কলাপাতায় ফুল, টাকা, মোমবাতি, ধূপকাঠি জ্বালিয়ে করা হয় পূজা। গঙ্গাপূজার প্রধান উদ্দেশ্যই থাকে পানি দিয়ে পুরোনো দিনের সব গ্লানি ধুয়ে দেওয়া। এই দিনও আবার অনেকে দেবতা পুকুর দর্শন করতে যায়। এ ছাড়া বিসিকাতাল দিনে আমিষসহ ভালোমন্দ খাবারের আয়োজন করা হয়। এই দিন ভালো খাবার খাওয়াতে পারলে সারা বছর ভালো যাবে বলে বিশ্বাস করা হয়।
এবার আসি ঠাকুরছড়া গ্রামের আলাপে। ভবতোষ দাদার বাড়িতে ঢুকতেই মাথার সঙ্গে টুক করে লাগল ফুল ও পাতা দিয়ে তৈরি মালা। দরজার ওপরে নানা রঙের ফুলের মালা দেখে মনটা ভরে উঠল। দুপুরে খেতে বসে দেখলাম নানা রকমের খাবারের আয়োজন। খাবারের মধ্যে ছিল বৈসুর বিশেষ খাবার পাচন, তেল ছাড়া বিভিন্ন তরকারি। তবে এসব খাবারে শুঁটকির প্রাধান্য ছিল অনেক বেশি। অবাক করার মতো স্বাদ ছিল শুধু সেদ্ধ করেই তৈরি করা মজাদার সব তরকারির। আমরা খুব তৃপ্তি নিয়ে খেলাম। এরপর গেলাম কাটা ধানের আইল দিয়ে বাড়ির পাশে চেঙ্গি নদীর তীরে। আমাদের সঙ্গে ছিল বাড়ির কুকুর বিল্টু। এ নাম আমরা দিয়েছি। বিল্টু আমাদের সঙ্গে অনেক ছবি তুলল। আর যতক্ষণ না পর্যন্ত আমরা নদীর তীর থেকে বাড়িতে ফিরলাম, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের পথ প্রদর্শক হিসেবেই থাকল। আমাদের চেঙ্গী নদীর তীরের সময়টাও কাটল দারুণ।
এরপর বিকেলে রীতি অনুযায়ী এ বাড়ি-ও বাড়ি বেড়াতে বের হলাম। এখানকার মানুষ যে কতটা আন্তরিক, তা পাড়া ঘুরতে বের না হলে বুঝতে পারতাম না। পাড়া ঘুরতে গিয়ে সবার বাড়িতে খেলাম পাচন, বিরিয়ানি (এই বিরিয়ানি মোটর ডাল আর শূকরের মাংস দিয়ে তৈরি), তরমুজ, কলাসহ বিভিন্ন খাবার। পাড়া ঘুরতে গিয়ে দেবাশীষ রোয়াজা দাদার বাড়িতে গিয়ে চোখ আটকে গেল। এই বাড়ির বিশাল জায়গাজুড়ে ছিল ফুলের বাগান। সবচেয়ে অবাক করার মতো বিষয় ছিল গন্ধরাজ ফুলের বাগান। সারা জীবনেও গাছভর্তি এত গন্ধরাজ ফুল দেখিনি। ফুলবাগানের মালিক দেবাশীষ দাদা বললেন, ‘ফুলের সঙ্গে থাকতে আমি খুব পছন্দ করি। যখন ফুলের গাছ মরে যায়, তখন বুকটা হাহাকার করে।’
পরদিন ছিল বিসিকাতাল, মানে ত্রিপুরাদের নববর্ষ। কোকিলের ডাকে ভাঙল ঘুম। ঘুম ভাঙার পর শুনলাম খোল-করতালসহকারে নগর কীর্তনের সুর। কীর্তনের সুর শুনতে শুনতে চলে গেলাম চেঙ্গী নদীর তীরে গঙ্গাপূজার স্থানে। সেখানে যাওয়ামাত্রই নামলাম পানিতে। দেখলাম হাঁটুপানিতে সবাই গঙ্গাপূজা করছেন। এদিন সবার মঙ্গল কামনা করে গঙ্গাপূজা করা হয়। পানিতে বাঁশ দিয়ে ভাসমান বেদি তৈরি করা হয়েছে। সেই বেদিতে রয়েছে হরেক রঙের ফুল। সেখানে জ্বলছে মোমবাতি। পানিতে ঘুরতে ঘুরতে দেখলাম তীরে কলাপাতায় ফুল, টাকা আর মোমবাতি জ্বালছে। আর দেখলাম চেঙ্গী নদীর তীর ঘেঁষে অনেক দূর পর্যন্ত কলাপাতা আর ফুলের দীর্ঘ লাইন।
বলে রাখা ভালো, বাংলাদেশের বর্ষপঞ্জি অনুসারে ১৪ এপ্রিল পয়লা বৈশাখ পালন করা হলেও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী এখনো সৌর পঞ্জিকা অনুসারেই বৈসু উৎসব পালন করে। তাই চাকমাদের বিজু উৎসবের সঙ্গে ত্রিপুরাদের বৈসু উৎসবের এক দিনের পার্থক্য থাকে। এই বৈসু উৎসবের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে হাজার বছরের ঐতিহ্য ও ইতিহাস। এই উৎসবের মধ্য দিয়ে মুছে যায় পুরোনো দিনের গ্লানি, দুঃখ, হিংসা, বিদ্বেষ।

আপনি কি মিষ্টি খেতে বেশ ভালোবাসেন? মিষ্টি দেখলেই নিজেকে সামলে রাখতে পারেন না? এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের মিষ্টি নিয়ে অবসেশন কাজ করে। তাঁরা টিভি দেখতে দেখতে এক টব আইসক্রিম সাবাড় করে ফেলতে পারেন। কেউ আবার বন্ধুর জন্মদিনে বড় এক টুকরা কেক খেয়ে ফেলেন কোনো কিছু না ভেবেই। এমন ঘটনা আমাদের সবার জীবনেই কম-বেশি
৫ ঘণ্টা আগে
হিমালয়কন্যা নেপালের জেলা আরঘাখাঁচি। সেই জেলার পাণিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিমলে এলাকা এখন এক অপূর্ব দৃশ্যে সেজেছে। পাহাড়ের ঢালে ঢালে সারিবদ্ধ গাছগুলো পাকা কমলার ভারে নুয়ে পড়েছে। আর এতেই পুরো জনপদ যেন সেজেছে সোনালি-হলুদ রঙে। কিন্তু এ দৃশ্য কেবল চোখের প্রশান্তি নয়; বরং এটি একটি অর্থনৈতিক বিপ্লবের গল্প...
৭ ঘণ্টা আগে
বেসন ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করে। যাঁরা ভাবছেন, বেসন ব্যবহারে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাঁরা জেনে রাখুন বিশেষ কয়েকটি উপাদান মেশালে বেসনের তৈরি প্যাকও ত্বক আর্দ্র রেখে উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দিতে পারে। এসব ব্যবহারে ত্বকের অবাঞ্ছিত ব্রণও দূর হবে।...
৯ ঘণ্টা আগে
পৌষের রোদমাখা দিন চলে এল। টানা দুই মাস শীতের হিম শীতল দিন কাটানোর পালা। শীতকাল মানে যেন একটু আরাম আরাম ভাব, একটু অলসতা আর ব্যাপক খাওয়া-দাওয়া। এ সবই হয় মূলত বছরের এই বিশেষ সময়টিতে সবকিছু গুছিয়ে নতুন একটা বছরের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য। সবকিছু মিলিয়ে ঘরোয়া উষ্ণতা ও আনন্দ নিয়ে শীতকালটাকে একটু...
১১ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

আপনি কি মিষ্টি খেতে বেশ ভালোবাসেন? মিষ্টি দেখলেই নিজেকে সামলে রাখতে পারেন না? এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের মিষ্টি নিয়ে অবসেশন কাজ করে। তাঁরা টিভি দেখতে দেখতে এক টব আইসক্রিম সাবাড় করে ফেলতে পারেন। কেউ আবার বন্ধুর জন্মদিনে বড় এক টুকরা কেক খেয়ে ফেলেন কোনো কিছু না ভেবেই। এমন ঘটনা আমাদের সবার জীবনেই কম-বেশি ঘটে। অনিচ্ছাকৃতভাবে বেশি চিনি বা ক্যালরি খেয়ে ফেলার পরদিন সকালে আমাদের মনে দানা বাঁধে অপরাধ বোধ, আর শুরু হয় নিজেকে ‘শাস্তি’ দেওয়ার পালা। আমরা ভাবি, আজ খাবার না খেয়ে বা খুব কম খেয়ে আগের রাতের ঘাটতি পুষিয়ে নেব। কিন্তু পুষ্টিবিদদের মতে, এই অভ্যাসটিই আমাদের স্বাস্থ্যের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে।
অতিরিক্ত খাবার বা চিনি খেয়ে ফেলাটা জীবনের এক অতি স্বাভাবিক অংশ। এর জন্য নিজেকে শাস্তি দেওয়া বা ক্লিনসিং করার প্রয়োজন নেই। বরং প্রচুর পানি পান, হালকা ব্যায়াম, ভারসাম্যপূর্ণ খাবার এবং নিজের প্রতি মমতা নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসাই সুস্থ থাকার আসল চাবিকাঠি। মনে রাখবেন, আপনার সুস্বাস্থ্য গড়ে ওঠে আপনার বড় ক্যানভাসের জীবনধারা দিয়ে, একটি মাত্র রাত দিয়ে নয়। ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক ডায়েটিশিয়ান ভিক্টোরিয়া হুইটিংটন এবং সাম্প্রতিক পুষ্টি গবেষণার আলোকে জেনে নিন, একদিনের অনিয়ম সামলে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার বিজ্ঞানসম্মত উপায়।

১. নিজেকে বঞ্চিত করবেন না
বেশি খেয়ে ফেলার পরদিন না খেয়ে থাকা বা খুব অল্প খাওয়ার যে প্রবণতা, তা আসলে উল্টো ফল আনে। গবেষণায় দেখা গেছে, খাবার নিয়ে অতিরিক্ত কড়াকড়ি করলে খাবারের প্রতি আকর্ষণ আরও বেড়ে যায়, যা পরবর্তী সময়ে আবার অনিয়ন্ত্রিত খাওয়ার দিকে ঠেলে দেয়। তাই অতিরিক্ত চিনি খেয়ে ফেলার পরদিন খাবার কমিয়ে দেওয়ার বদলে প্রোটিন, ফাইবার এবং ভালো ফ্যাটের সমন্বয়ে একটি ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাসে ফিরে আসাই বুদ্ধিমানের কাজ।
২. সকালের নাশতা হোক প্রোটিন ও ফাইবারসমৃদ্ধ
অনিয়মের পরদিন সকালের শুরুটা হওয়া চাই জুতসই। গবেষণা বলছে, উচ্চ প্রোটিনযুক্ত সকালের নাশতা রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এর সঙ্গে পর্যাপ্ত ফাইবার যোগ করলে তা রক্তে গ্লুকোজের আকস্মিক বৃদ্ধি রোধ করে এবং সারা দিন আপনাকে তৃপ্ত রাখে। খাবার বাদ দিলে শরীরে ‘ঘ্রেলিন’ বা ক্ষুধা উদ্দীপক হরমোন বেড়ে যায়, যা দিনশেষে আপনাকে আবারও বেশি খেতে প্ররোচিত করতে পারে।
৩. শরীরকে সচল রাখুন এবং পানি পান করুন
অতিরিক্ত খাওয়ার পর শরীরে যে অলসতা বা ভারী ভাব কাজ করে, তার পেছনে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতার বড় ভূমিকা থাকে। পর্যাপ্ত পানি পান করলে হজমপ্রক্রিয়া সহজ হয়। পাশাপাশি হালকা শারীরিক পরিশ্রম বা অল্প হাঁটাহাঁটি করা জরুরি। এতে আমাদের পেশিগুলো রক্তে জমে থাকা শর্করাকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারে এবং ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি পায়।

৪. ‘পারফেকশন’ নয়, গুরুত্ব দিন সামগ্রিক অভ্যাসে
পুষ্টিবিদ হুইটিংটন জোর দিয়ে বলেছেন, দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য মূলত আপনার নিয়মিত অভ্যাসের ওপর নির্ভর করে, কোনো একদিনের অনিয়মের ওপর নয়। নার্সেস হেলথ স্টাডির মতো বড় বড় গবেষণাও বলছে, কোনো একটি নির্দিষ্ট দিনের খাদ্যাভ্যাস নয়; বরং আপনার দীর্ঘদিনের খাদ্যাভ্যাসের ধরনই নির্ধারণ করে আপনার দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি। তাই একদিন বেশি খেয়ে ফেললে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। স্বাস্থ্য মানে নিখুঁত হওয়া নয়; বরং একটি সুস্থ ধারায় থাকা।
৫. নিজের প্রতি সদয় হোন
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো, নিজেকে ক্ষমা করা। গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা নিজেদের প্রতি সদয় থাকেন, তাঁরা আবেগতাড়িত হয়ে বেশি খাওয়ার অভ্যাসটি দ্রুত কাটিয়ে উঠতে পারেন। নিজেকে দোষারোপ না করে বরং বোঝার চেষ্টা করুন, সে মুহূর্তে আপনার কিসের প্রয়োজন ছিল। সমালোচনা নয়, কৌতূহলী মন নিয়ে নিজের আচরণ বিশ্লেষণ করলে আপনি ভবিষ্যতে আরও ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
সূত্র: ডেইলি মেইল

আপনি কি মিষ্টি খেতে বেশ ভালোবাসেন? মিষ্টি দেখলেই নিজেকে সামলে রাখতে পারেন না? এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের মিষ্টি নিয়ে অবসেশন কাজ করে। তাঁরা টিভি দেখতে দেখতে এক টব আইসক্রিম সাবাড় করে ফেলতে পারেন। কেউ আবার বন্ধুর জন্মদিনে বড় এক টুকরা কেক খেয়ে ফেলেন কোনো কিছু না ভেবেই। এমন ঘটনা আমাদের সবার জীবনেই কম-বেশি ঘটে। অনিচ্ছাকৃতভাবে বেশি চিনি বা ক্যালরি খেয়ে ফেলার পরদিন সকালে আমাদের মনে দানা বাঁধে অপরাধ বোধ, আর শুরু হয় নিজেকে ‘শাস্তি’ দেওয়ার পালা। আমরা ভাবি, আজ খাবার না খেয়ে বা খুব কম খেয়ে আগের রাতের ঘাটতি পুষিয়ে নেব। কিন্তু পুষ্টিবিদদের মতে, এই অভ্যাসটিই আমাদের স্বাস্থ্যের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে।
অতিরিক্ত খাবার বা চিনি খেয়ে ফেলাটা জীবনের এক অতি স্বাভাবিক অংশ। এর জন্য নিজেকে শাস্তি দেওয়া বা ক্লিনসিং করার প্রয়োজন নেই। বরং প্রচুর পানি পান, হালকা ব্যায়াম, ভারসাম্যপূর্ণ খাবার এবং নিজের প্রতি মমতা নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসাই সুস্থ থাকার আসল চাবিকাঠি। মনে রাখবেন, আপনার সুস্বাস্থ্য গড়ে ওঠে আপনার বড় ক্যানভাসের জীবনধারা দিয়ে, একটি মাত্র রাত দিয়ে নয়। ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক ডায়েটিশিয়ান ভিক্টোরিয়া হুইটিংটন এবং সাম্প্রতিক পুষ্টি গবেষণার আলোকে জেনে নিন, একদিনের অনিয়ম সামলে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার বিজ্ঞানসম্মত উপায়।

১. নিজেকে বঞ্চিত করবেন না
বেশি খেয়ে ফেলার পরদিন না খেয়ে থাকা বা খুব অল্প খাওয়ার যে প্রবণতা, তা আসলে উল্টো ফল আনে। গবেষণায় দেখা গেছে, খাবার নিয়ে অতিরিক্ত কড়াকড়ি করলে খাবারের প্রতি আকর্ষণ আরও বেড়ে যায়, যা পরবর্তী সময়ে আবার অনিয়ন্ত্রিত খাওয়ার দিকে ঠেলে দেয়। তাই অতিরিক্ত চিনি খেয়ে ফেলার পরদিন খাবার কমিয়ে দেওয়ার বদলে প্রোটিন, ফাইবার এবং ভালো ফ্যাটের সমন্বয়ে একটি ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাসে ফিরে আসাই বুদ্ধিমানের কাজ।
২. সকালের নাশতা হোক প্রোটিন ও ফাইবারসমৃদ্ধ
অনিয়মের পরদিন সকালের শুরুটা হওয়া চাই জুতসই। গবেষণা বলছে, উচ্চ প্রোটিনযুক্ত সকালের নাশতা রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এর সঙ্গে পর্যাপ্ত ফাইবার যোগ করলে তা রক্তে গ্লুকোজের আকস্মিক বৃদ্ধি রোধ করে এবং সারা দিন আপনাকে তৃপ্ত রাখে। খাবার বাদ দিলে শরীরে ‘ঘ্রেলিন’ বা ক্ষুধা উদ্দীপক হরমোন বেড়ে যায়, যা দিনশেষে আপনাকে আবারও বেশি খেতে প্ররোচিত করতে পারে।
৩. শরীরকে সচল রাখুন এবং পানি পান করুন
অতিরিক্ত খাওয়ার পর শরীরে যে অলসতা বা ভারী ভাব কাজ করে, তার পেছনে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতার বড় ভূমিকা থাকে। পর্যাপ্ত পানি পান করলে হজমপ্রক্রিয়া সহজ হয়। পাশাপাশি হালকা শারীরিক পরিশ্রম বা অল্প হাঁটাহাঁটি করা জরুরি। এতে আমাদের পেশিগুলো রক্তে জমে থাকা শর্করাকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারে এবং ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি পায়।

৪. ‘পারফেকশন’ নয়, গুরুত্ব দিন সামগ্রিক অভ্যাসে
পুষ্টিবিদ হুইটিংটন জোর দিয়ে বলেছেন, দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য মূলত আপনার নিয়মিত অভ্যাসের ওপর নির্ভর করে, কোনো একদিনের অনিয়মের ওপর নয়। নার্সেস হেলথ স্টাডির মতো বড় বড় গবেষণাও বলছে, কোনো একটি নির্দিষ্ট দিনের খাদ্যাভ্যাস নয়; বরং আপনার দীর্ঘদিনের খাদ্যাভ্যাসের ধরনই নির্ধারণ করে আপনার দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি। তাই একদিন বেশি খেয়ে ফেললে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। স্বাস্থ্য মানে নিখুঁত হওয়া নয়; বরং একটি সুস্থ ধারায় থাকা।
৫. নিজের প্রতি সদয় হোন
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো, নিজেকে ক্ষমা করা। গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা নিজেদের প্রতি সদয় থাকেন, তাঁরা আবেগতাড়িত হয়ে বেশি খাওয়ার অভ্যাসটি দ্রুত কাটিয়ে উঠতে পারেন। নিজেকে দোষারোপ না করে বরং বোঝার চেষ্টা করুন, সে মুহূর্তে আপনার কিসের প্রয়োজন ছিল। সমালোচনা নয়, কৌতূহলী মন নিয়ে নিজের আচরণ বিশ্লেষণ করলে আপনি ভবিষ্যতে আরও ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
সূত্র: ডেইলি মেইল

পরের দিন ছিল বিশাকাতাল মানে ত্রিপুরাদের নববর্ষ। কোকিলের ডাকে ভাঙল ঘুম। ঘুম ভাঙার পর শুনলাম খোল-করতাল সহকারে নগর কীর্তনের সুর। কীর্তনের সুর শুনতে শুনতে চলে গেলাম চেঙ্গী নদীর তীরে গঙ্গা পূজার স্থানে। সেখানে যাওয়া মাত্রই নামলাম পানিতে। দেখলাম হাঁটু পানিতে সবাই...
১৯ এপ্রিল ২০২২
হিমালয়কন্যা নেপালের জেলা আরঘাখাঁচি। সেই জেলার পাণিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিমলে এলাকা এখন এক অপূর্ব দৃশ্যে সেজেছে। পাহাড়ের ঢালে ঢালে সারিবদ্ধ গাছগুলো পাকা কমলার ভারে নুয়ে পড়েছে। আর এতেই পুরো জনপদ যেন সেজেছে সোনালি-হলুদ রঙে। কিন্তু এ দৃশ্য কেবল চোখের প্রশান্তি নয়; বরং এটি একটি অর্থনৈতিক বিপ্লবের গল্প...
৭ ঘণ্টা আগে
বেসন ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করে। যাঁরা ভাবছেন, বেসন ব্যবহারে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাঁরা জেনে রাখুন বিশেষ কয়েকটি উপাদান মেশালে বেসনের তৈরি প্যাকও ত্বক আর্দ্র রেখে উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দিতে পারে। এসব ব্যবহারে ত্বকের অবাঞ্ছিত ব্রণও দূর হবে।...
৯ ঘণ্টা আগে
পৌষের রোদমাখা দিন চলে এল। টানা দুই মাস শীতের হিম শীতল দিন কাটানোর পালা। শীতকাল মানে যেন একটু আরাম আরাম ভাব, একটু অলসতা আর ব্যাপক খাওয়া-দাওয়া। এ সবই হয় মূলত বছরের এই বিশেষ সময়টিতে সবকিছু গুছিয়ে নতুন একটা বছরের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য। সবকিছু মিলিয়ে ঘরোয়া উষ্ণতা ও আনন্দ নিয়ে শীতকালটাকে একটু...
১১ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

‘চাকরি ছেড়ে কৃষিতে লাখপতি’ কিংবা ‘যুবকের ভাগ্য ফিরল কৃষিতে’। এমন সংবাদ আমরা প্রায়ই দেখি সংবাদমাধ্যমে। এই যুবকেরা কখনো কখনো নীরবে বদলে দেয় পুরো জনপদের শত শত কৃষকের জীবন। এসব ঘটনা যে শুধু বাংলাদেশেই ঘটে, তা নয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ঘটে থাকে। নেপালেও এমনি একটি ঘটনা ঘটেছে। তা প্রকাশিত হয়েছে দেশটির জনপ্রিয় সংবাদপত্র ‘কাঠমান্ডু পোস্ট’-এ।
হিমালয়কন্যা নেপালের জেলা আরঘাখাঁচি। সেই জেলার পাণিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিমলে এলাকা এখন এক অপূর্ব দৃশ্যে সেজেছে। পাহাড়ের ঢালে ঢালে সারিবদ্ধ গাছগুলো পাকা কমলার ভারে নুয়ে পড়েছে। আর এতেই পুরো জনপদ যেন সেজেছে সোনালি-হলুদ রঙে। কিন্তু এ দৃশ্য কেবল চোখের প্রশান্তি নয়; বরং এটি একটি অর্থনৈতিক বিপ্লবের গল্প। সেখানে এই সোনালি-হলুদ ফলটি বদলে দিয়েছে শত শত কৃষকের ভাগ্য এবং পুরো গ্রামের জীবনযাত্রা।
ঘরের আঙিনায় চকচকে সাফল্য
এই পরিবর্তনের উজ্জ্বল প্রতীক তরুণ কৃষক রেবতি ভট্টরাই। উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে ভাগ্যের অন্বেষণে তিনি পাড়ি জমিয়েছিলেন বিদেশে। সেখানে প্রায় এক দশক হাড়ভাঙা খাটুনির পর কিছু অর্থ নিয়ে দেশে ফিরে এক সাহসী সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পৈতৃক জমিতে প্রচলিত দানাদার শস্যের চাষ বাদ দিয়ে তৈরি করেন কমলার বাগান। আজ তাঁর ৫৩৫টি কমলাগাছ ফলে ভরপুর। গত বছর ১৭০ কুইন্টাল কমলা বিক্রি করে তিনি ৯ লাখ রুপি আয় করেছেন। এবার ফলন আরও ভালো হওয়ায় ২০০ কুইন্টাল উৎপাদনের আশা করছেন তিনি। রেবতি বলেন, ‘বিদেশের চাকরির চেয়ে কমলার চাষ আমার জীবনকে বেশি বদলে দিয়েছে। এখন আর আমাকে বাজারের পেছনে ছুটতে হয় না। ফল পাকার আগেই ব্যবসায়ীরা এসে বাগান বুক করে নেন।’ কমলার আয়েই তিনি সিমলেতে আড়াই তলা একটি পাকা বাড়ি তুলেছেন।
পেনশনের চেয়েও বেশি আয়
শুধু তরুণেরাই নন, এ বিপ্লবে শামিল হয়েছেন অভিজ্ঞ ব্যক্তিরাও। তাঁদের মধ্যে একজন অবসরপ্রাপ্ত কৃষি টেকনিশিয়ান দধি রাম গৌতম। পাঁচ বছর ধরে তিনি বাণিজ্যিক কমলা চাষ করছেন। তাঁর ২৫০টি গাছের কমলা থেকে বছরে যে আয় হয়, তা তাঁর সরকারি পেনশনের চেয়ে তিন গুণ বেশি। বুটওয়াল, পাল্পা ও পোখারা থেকে ব্যবসায়ীরা গাড়ি নিয়ে তাঁর বাড়িতে এসে নগদ টাকায় কমলা কিনে নিয়ে যান।
কমলা চাষে এমনকি জনপ্রতিনিধিরাও পিছিয়ে নেই। ওয়ার্ড চেয়ারম্যান চন্দ্রকান্ত পাউডেল তাঁর জনসেবামূলক কাজের পাশাপাশি ৬০০টি কমলাগাছের বিশাল বাগান সামলাচ্ছেন। এ বছর শিলাবৃষ্টি বা পোকামাকড়ের আক্রমণ না থাকায় ফলন হয়েছে বাম্পার, যা আরও বেশি লাভের আশা জোগাচ্ছে।
কমলার এক নতুন হাব
পাণিনি-১-এর সলেরি টোল গ্রামে এখন প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই কমলার বাগান রয়েছে। গ্রামের কৃষকেরা নিজেদের সংগঠিত করতে গঠন করেছেন পাখাপানি কৃষক দল। ৪৫টি পরিবারের মধ্যে ৩০টিই এখন এই দলের সদস্য। গ্রামের বড় চাষি টুক বাহাদুর দারলামি গত বছর ৩ দশমিক ৫ লাখ রুপি আয় করেছেন কমলা চাষ করে। তিনি জানিয়েছেন, পুরো সলেরি গ্রাম এখন কমলার হাবে পরিণত হয়েছে। ফলে তাঁদের জমিগুলো আর অনাবাদি থাকছে না এবং গ্রাম থেকে মানুষের শহরে চলে যাওয়ার প্রবণতাও কমেছে।
অবকাঠামো ও অর্থনৈতিক প্রভাব
কৃষকদের এ সাফল্যে হাত বাড়িয়েছে অ্যাগ্রিকালচার নলেজ সেন্টার। সেচের সুবিধার জন্য তারা বড় বড় পানির ট্যাংক তৈরি করে দিয়েছে গ্রামটিতে। কৃষি টেকনিশিয়ান শারদা আচার্যের মতে, সিমলে গ্রামের এই ব্যাপক সাফল্য দেখে প্রতিবেশী গ্রামগুলোও এখন বাণিজ্যিকভাবে কমলা চাষে ঝুঁকছে। শুধু সিমলে গ্রাম থেকেই বছরে ৩ কোটি রুপিরও বেশি কমলা বিক্রি হয়। গত বছর পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি কমলার দাম ছিল ৬০ রুপি। এ বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ রুপিতে। কমলার আয়ে কৃষকেরা সন্তানদের ভালো শিক্ষা দিচ্ছেন, ঘরবাড়ি সংস্কার করছেন এবং গবাদিপশুর আধুনিক খামার গড়ে তুলছেন।
আরঘাখাঁচির এই জনপদে কমলা এখন আর কেবল একটি ফল নয়—স্বনির্ভরতার প্রতীক। যখন পুরো গ্রাম কমলার হলুদ রঙে ঝলমল করে ওঠে, তখন তা কেবল ঋতু পরিবর্তনের জানান দেয় না; বরং এক সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের গল্প শোনায়।
সূত্র: কাঠমান্ডু পোস্ট

‘চাকরি ছেড়ে কৃষিতে লাখপতি’ কিংবা ‘যুবকের ভাগ্য ফিরল কৃষিতে’। এমন সংবাদ আমরা প্রায়ই দেখি সংবাদমাধ্যমে। এই যুবকেরা কখনো কখনো নীরবে বদলে দেয় পুরো জনপদের শত শত কৃষকের জীবন। এসব ঘটনা যে শুধু বাংলাদেশেই ঘটে, তা নয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ঘটে থাকে। নেপালেও এমনি একটি ঘটনা ঘটেছে। তা প্রকাশিত হয়েছে দেশটির জনপ্রিয় সংবাদপত্র ‘কাঠমান্ডু পোস্ট’-এ।
হিমালয়কন্যা নেপালের জেলা আরঘাখাঁচি। সেই জেলার পাণিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিমলে এলাকা এখন এক অপূর্ব দৃশ্যে সেজেছে। পাহাড়ের ঢালে ঢালে সারিবদ্ধ গাছগুলো পাকা কমলার ভারে নুয়ে পড়েছে। আর এতেই পুরো জনপদ যেন সেজেছে সোনালি-হলুদ রঙে। কিন্তু এ দৃশ্য কেবল চোখের প্রশান্তি নয়; বরং এটি একটি অর্থনৈতিক বিপ্লবের গল্প। সেখানে এই সোনালি-হলুদ ফলটি বদলে দিয়েছে শত শত কৃষকের ভাগ্য এবং পুরো গ্রামের জীবনযাত্রা।
ঘরের আঙিনায় চকচকে সাফল্য
এই পরিবর্তনের উজ্জ্বল প্রতীক তরুণ কৃষক রেবতি ভট্টরাই। উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে ভাগ্যের অন্বেষণে তিনি পাড়ি জমিয়েছিলেন বিদেশে। সেখানে প্রায় এক দশক হাড়ভাঙা খাটুনির পর কিছু অর্থ নিয়ে দেশে ফিরে এক সাহসী সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পৈতৃক জমিতে প্রচলিত দানাদার শস্যের চাষ বাদ দিয়ে তৈরি করেন কমলার বাগান। আজ তাঁর ৫৩৫টি কমলাগাছ ফলে ভরপুর। গত বছর ১৭০ কুইন্টাল কমলা বিক্রি করে তিনি ৯ লাখ রুপি আয় করেছেন। এবার ফলন আরও ভালো হওয়ায় ২০০ কুইন্টাল উৎপাদনের আশা করছেন তিনি। রেবতি বলেন, ‘বিদেশের চাকরির চেয়ে কমলার চাষ আমার জীবনকে বেশি বদলে দিয়েছে। এখন আর আমাকে বাজারের পেছনে ছুটতে হয় না। ফল পাকার আগেই ব্যবসায়ীরা এসে বাগান বুক করে নেন।’ কমলার আয়েই তিনি সিমলেতে আড়াই তলা একটি পাকা বাড়ি তুলেছেন।
পেনশনের চেয়েও বেশি আয়
শুধু তরুণেরাই নন, এ বিপ্লবে শামিল হয়েছেন অভিজ্ঞ ব্যক্তিরাও। তাঁদের মধ্যে একজন অবসরপ্রাপ্ত কৃষি টেকনিশিয়ান দধি রাম গৌতম। পাঁচ বছর ধরে তিনি বাণিজ্যিক কমলা চাষ করছেন। তাঁর ২৫০টি গাছের কমলা থেকে বছরে যে আয় হয়, তা তাঁর সরকারি পেনশনের চেয়ে তিন গুণ বেশি। বুটওয়াল, পাল্পা ও পোখারা থেকে ব্যবসায়ীরা গাড়ি নিয়ে তাঁর বাড়িতে এসে নগদ টাকায় কমলা কিনে নিয়ে যান।
কমলা চাষে এমনকি জনপ্রতিনিধিরাও পিছিয়ে নেই। ওয়ার্ড চেয়ারম্যান চন্দ্রকান্ত পাউডেল তাঁর জনসেবামূলক কাজের পাশাপাশি ৬০০টি কমলাগাছের বিশাল বাগান সামলাচ্ছেন। এ বছর শিলাবৃষ্টি বা পোকামাকড়ের আক্রমণ না থাকায় ফলন হয়েছে বাম্পার, যা আরও বেশি লাভের আশা জোগাচ্ছে।
কমলার এক নতুন হাব
পাণিনি-১-এর সলেরি টোল গ্রামে এখন প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই কমলার বাগান রয়েছে। গ্রামের কৃষকেরা নিজেদের সংগঠিত করতে গঠন করেছেন পাখাপানি কৃষক দল। ৪৫টি পরিবারের মধ্যে ৩০টিই এখন এই দলের সদস্য। গ্রামের বড় চাষি টুক বাহাদুর দারলামি গত বছর ৩ দশমিক ৫ লাখ রুপি আয় করেছেন কমলা চাষ করে। তিনি জানিয়েছেন, পুরো সলেরি গ্রাম এখন কমলার হাবে পরিণত হয়েছে। ফলে তাঁদের জমিগুলো আর অনাবাদি থাকছে না এবং গ্রাম থেকে মানুষের শহরে চলে যাওয়ার প্রবণতাও কমেছে।
অবকাঠামো ও অর্থনৈতিক প্রভাব
কৃষকদের এ সাফল্যে হাত বাড়িয়েছে অ্যাগ্রিকালচার নলেজ সেন্টার। সেচের সুবিধার জন্য তারা বড় বড় পানির ট্যাংক তৈরি করে দিয়েছে গ্রামটিতে। কৃষি টেকনিশিয়ান শারদা আচার্যের মতে, সিমলে গ্রামের এই ব্যাপক সাফল্য দেখে প্রতিবেশী গ্রামগুলোও এখন বাণিজ্যিকভাবে কমলা চাষে ঝুঁকছে। শুধু সিমলে গ্রাম থেকেই বছরে ৩ কোটি রুপিরও বেশি কমলা বিক্রি হয়। গত বছর পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি কমলার দাম ছিল ৬০ রুপি। এ বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ রুপিতে। কমলার আয়ে কৃষকেরা সন্তানদের ভালো শিক্ষা দিচ্ছেন, ঘরবাড়ি সংস্কার করছেন এবং গবাদিপশুর আধুনিক খামার গড়ে তুলছেন।
আরঘাখাঁচির এই জনপদে কমলা এখন আর কেবল একটি ফল নয়—স্বনির্ভরতার প্রতীক। যখন পুরো গ্রাম কমলার হলুদ রঙে ঝলমল করে ওঠে, তখন তা কেবল ঋতু পরিবর্তনের জানান দেয় না; বরং এক সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের গল্প শোনায়।
সূত্র: কাঠমান্ডু পোস্ট

পরের দিন ছিল বিশাকাতাল মানে ত্রিপুরাদের নববর্ষ। কোকিলের ডাকে ভাঙল ঘুম। ঘুম ভাঙার পর শুনলাম খোল-করতাল সহকারে নগর কীর্তনের সুর। কীর্তনের সুর শুনতে শুনতে চলে গেলাম চেঙ্গী নদীর তীরে গঙ্গা পূজার স্থানে। সেখানে যাওয়া মাত্রই নামলাম পানিতে। দেখলাম হাঁটু পানিতে সবাই...
১৯ এপ্রিল ২০২২
আপনি কি মিষ্টি খেতে বেশ ভালোবাসেন? মিষ্টি দেখলেই নিজেকে সামলে রাখতে পারেন না? এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের মিষ্টি নিয়ে অবসেশন কাজ করে। তাঁরা টিভি দেখতে দেখতে এক টব আইসক্রিম সাবাড় করে ফেলতে পারেন। কেউ আবার বন্ধুর জন্মদিনে বড় এক টুকরা কেক খেয়ে ফেলেন কোনো কিছু না ভেবেই। এমন ঘটনা আমাদের সবার জীবনেই কম-বেশি
৫ ঘণ্টা আগে
বেসন ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করে। যাঁরা ভাবছেন, বেসন ব্যবহারে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাঁরা জেনে রাখুন বিশেষ কয়েকটি উপাদান মেশালে বেসনের তৈরি প্যাকও ত্বক আর্দ্র রেখে উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দিতে পারে। এসব ব্যবহারে ত্বকের অবাঞ্ছিত ব্রণও দূর হবে।...
৯ ঘণ্টা আগে
পৌষের রোদমাখা দিন চলে এল। টানা দুই মাস শীতের হিম শীতল দিন কাটানোর পালা। শীতকাল মানে যেন একটু আরাম আরাম ভাব, একটু অলসতা আর ব্যাপক খাওয়া-দাওয়া। এ সবই হয় মূলত বছরের এই বিশেষ সময়টিতে সবকিছু গুছিয়ে নতুন একটা বছরের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য। সবকিছু মিলিয়ে ঘরোয়া উষ্ণতা ও আনন্দ নিয়ে শীতকালটাকে একটু...
১১ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

রূপচর্চায় বেসন খুব পরিচিত একটি উপকরণ। একসময় ত্বক পরিষ্কার করতে সাবানের পরিবর্তে বেসন ব্যবহার করা হতো। শীতে ত্বকের নির্জীব ভাব নিয়ে যাঁরা চিন্তায় রয়েছেন, তাঁরা সহজলভ্য এই উপকরণটি রোজকার ত্বকের যত্নে ব্যবহার করে নানা উপকার পেতে পারেন।
এ কথা তো সবাই জানেন, শীতকালের শুষ্ক আবহাওয়ায় ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখা খুব জরুরি। পাশাপাশি ত্বক দূষণমুক্ত রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। বেসন ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করে। যাঁরা ভাবছেন, বেসন ব্যবহারে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাঁরা জেনে রাখুন বিশেষ কয়েকটি উপাদান মেশালে বেসনের তৈরি প্যাকও ত্বক আর্দ্র রেখে উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দিতে পারে। এসব ব্যবহারে ত্বকের অবাঞ্ছিত ব্রণও দূর হবে।
বেসন ও এক্সট্রা ভার্জিন নারকেল তেলের প্যাক

পুরো শরীরের ত্বকে মাখার জন্য বেসন নিন। এতে কয়েক চামচ এক্সট্রা ভার্জিন নারকেল তেল নিন। এরপর ২ টেবিল চামচ দুধ মেশাতে পারেন। প্যাক তৈরিতে যতটুকু পানি প্রয়োজন, তা যোগ করুন। এই প্যাক ত্বকে লাগিয়ে রাখুন আধা শুকনো হওয়া পর্যন্ত। এরপর আলতো করে কুসুম গরম পানিতে পুরো শরীর ধুয়ে নিন। নারকেল তেল ও দুধ রুক্ষ ত্বকে গভীর থেকে পুষ্টি জোগায় ও ময়শ্চারাইজ করে। পাশাপাশি এ প্যাক ত্বকের ডিপ ক্লিনজিংয়েও সহায়তা করে। যাঁদের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক, তাদের জন্য এ প্যাক খুবই ভালো কাজ করে।
বেসন, টক দই ও হলুদের প্যাক
এ সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে একটি ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন। পুরো শরীরে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর হালকা গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে তা দিয়ে শরীর আলতো ঘষে প্যাক দিয়ে আলতো করে ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। টক দই ত্বকের আর্দ্রতা ও নমনীয়তা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি প্রাকৃতিক ব্লিচ হিসেবেও দুর্দান্ত কাজ করে। অন্যদিকে হলুদ ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়, দাগছোপ কমায় ও ব্রণের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
বেসন ও গাঁদা ফুল বাটার প্যাক
বেসনের সঙ্গে সমপরিমাণ গাঁদা ফুল বাটা মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে নিন। এই প্যাক মুখ, গলা ও ঘাড়ে লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট। তারপর ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের শুষ্কতা কমাতে ও নরম করতে এ প্যাক ভালো কাজ করে। যাঁদের ত্বকে ব্রণ ও দাগ রয়েছে তাঁরা প্রতি সপ্তাহে একবার করে এই প্যাক মুখে ব্যবহার করতে পারেন।
ডিপ ক্লিনজিং প্যাক
যাঁরা সকালে মুখ ধোয়ার ক্ষেত্রে ফেসওয়াশ ব্যবহার এড়াতে চান তাঁরা ১ টেবিল চামচ বেসনের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ দুধ, সামান্য হলুদ এবং ৩ ফোঁটা নারকেল তেল মিশিয়ে নিয়ে ফেসওয়াশ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন প্রতিদিন সকালে। এতে ত্বক গভীরভাবে পরিষ্কার হবে ও ধীরে ধীরে জেল্লাদার হয়ে উঠবে।
বেসন, মধু ও গোলাপজল
বেসন, মধু, গোলাপজল ও অল্প পানি মিশিয়ে মিহি পেস্ট তৈরি করুন। মিশ্রণটি মুখ, গলা ও ঘাড়ে লাগিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রাখুন। শুকাতে শুরু করলে হালকা করে ম্যাসাজ করে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার ব্যবহার করতে পারেন। মধু প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার। এটি ত্বক নরম রাখে। গোলাপজল ত্বক সতেজ করতে সাহায্য করে। মুখ ধোয়ার পর অবশ্যই একটি ভালো ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
মেছতার দাগ হালকা করতে
বেসনের সঙ্গে অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে মেছতার ওপর লাগান। ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এক দিন অন্তর এ প্যাক ব্যবহার করুন। দাগ কমে এলে ধীরে ধীরে প্যাক ব্যবহারও কমিয়ে আনুন। যেমন সপ্তাহে একবার, তারপর ১৫ দিনে একবার, তারপর মাসে একবার। এভাবে এই প্যাক ব্যবহার করলে ধীরে ধীরে দাগ একেবারে হালকা হয়ে আসবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও অন্যান্য

রূপচর্চায় বেসন খুব পরিচিত একটি উপকরণ। একসময় ত্বক পরিষ্কার করতে সাবানের পরিবর্তে বেসন ব্যবহার করা হতো। শীতে ত্বকের নির্জীব ভাব নিয়ে যাঁরা চিন্তায় রয়েছেন, তাঁরা সহজলভ্য এই উপকরণটি রোজকার ত্বকের যত্নে ব্যবহার করে নানা উপকার পেতে পারেন।
এ কথা তো সবাই জানেন, শীতকালের শুষ্ক আবহাওয়ায় ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখা খুব জরুরি। পাশাপাশি ত্বক দূষণমুক্ত রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। বেসন ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করে। যাঁরা ভাবছেন, বেসন ব্যবহারে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাঁরা জেনে রাখুন বিশেষ কয়েকটি উপাদান মেশালে বেসনের তৈরি প্যাকও ত্বক আর্দ্র রেখে উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দিতে পারে। এসব ব্যবহারে ত্বকের অবাঞ্ছিত ব্রণও দূর হবে।
বেসন ও এক্সট্রা ভার্জিন নারকেল তেলের প্যাক

পুরো শরীরের ত্বকে মাখার জন্য বেসন নিন। এতে কয়েক চামচ এক্সট্রা ভার্জিন নারকেল তেল নিন। এরপর ২ টেবিল চামচ দুধ মেশাতে পারেন। প্যাক তৈরিতে যতটুকু পানি প্রয়োজন, তা যোগ করুন। এই প্যাক ত্বকে লাগিয়ে রাখুন আধা শুকনো হওয়া পর্যন্ত। এরপর আলতো করে কুসুম গরম পানিতে পুরো শরীর ধুয়ে নিন। নারকেল তেল ও দুধ রুক্ষ ত্বকে গভীর থেকে পুষ্টি জোগায় ও ময়শ্চারাইজ করে। পাশাপাশি এ প্যাক ত্বকের ডিপ ক্লিনজিংয়েও সহায়তা করে। যাঁদের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক, তাদের জন্য এ প্যাক খুবই ভালো কাজ করে।
বেসন, টক দই ও হলুদের প্যাক
এ সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে একটি ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন। পুরো শরীরে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর হালকা গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে তা দিয়ে শরীর আলতো ঘষে প্যাক দিয়ে আলতো করে ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। টক দই ত্বকের আর্দ্রতা ও নমনীয়তা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি প্রাকৃতিক ব্লিচ হিসেবেও দুর্দান্ত কাজ করে। অন্যদিকে হলুদ ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়, দাগছোপ কমায় ও ব্রণের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
বেসন ও গাঁদা ফুল বাটার প্যাক
বেসনের সঙ্গে সমপরিমাণ গাঁদা ফুল বাটা মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে নিন। এই প্যাক মুখ, গলা ও ঘাড়ে লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট। তারপর ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের শুষ্কতা কমাতে ও নরম করতে এ প্যাক ভালো কাজ করে। যাঁদের ত্বকে ব্রণ ও দাগ রয়েছে তাঁরা প্রতি সপ্তাহে একবার করে এই প্যাক মুখে ব্যবহার করতে পারেন।
ডিপ ক্লিনজিং প্যাক
যাঁরা সকালে মুখ ধোয়ার ক্ষেত্রে ফেসওয়াশ ব্যবহার এড়াতে চান তাঁরা ১ টেবিল চামচ বেসনের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ দুধ, সামান্য হলুদ এবং ৩ ফোঁটা নারকেল তেল মিশিয়ে নিয়ে ফেসওয়াশ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন প্রতিদিন সকালে। এতে ত্বক গভীরভাবে পরিষ্কার হবে ও ধীরে ধীরে জেল্লাদার হয়ে উঠবে।
বেসন, মধু ও গোলাপজল
বেসন, মধু, গোলাপজল ও অল্প পানি মিশিয়ে মিহি পেস্ট তৈরি করুন। মিশ্রণটি মুখ, গলা ও ঘাড়ে লাগিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রাখুন। শুকাতে শুরু করলে হালকা করে ম্যাসাজ করে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার ব্যবহার করতে পারেন। মধু প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার। এটি ত্বক নরম রাখে। গোলাপজল ত্বক সতেজ করতে সাহায্য করে। মুখ ধোয়ার পর অবশ্যই একটি ভালো ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
মেছতার দাগ হালকা করতে
বেসনের সঙ্গে অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে মেছতার ওপর লাগান। ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এক দিন অন্তর এ প্যাক ব্যবহার করুন। দাগ কমে এলে ধীরে ধীরে প্যাক ব্যবহারও কমিয়ে আনুন। যেমন সপ্তাহে একবার, তারপর ১৫ দিনে একবার, তারপর মাসে একবার। এভাবে এই প্যাক ব্যবহার করলে ধীরে ধীরে দাগ একেবারে হালকা হয়ে আসবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও অন্যান্য

পরের দিন ছিল বিশাকাতাল মানে ত্রিপুরাদের নববর্ষ। কোকিলের ডাকে ভাঙল ঘুম। ঘুম ভাঙার পর শুনলাম খোল-করতাল সহকারে নগর কীর্তনের সুর। কীর্তনের সুর শুনতে শুনতে চলে গেলাম চেঙ্গী নদীর তীরে গঙ্গা পূজার স্থানে। সেখানে যাওয়া মাত্রই নামলাম পানিতে। দেখলাম হাঁটু পানিতে সবাই...
১৯ এপ্রিল ২০২২
আপনি কি মিষ্টি খেতে বেশ ভালোবাসেন? মিষ্টি দেখলেই নিজেকে সামলে রাখতে পারেন না? এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের মিষ্টি নিয়ে অবসেশন কাজ করে। তাঁরা টিভি দেখতে দেখতে এক টব আইসক্রিম সাবাড় করে ফেলতে পারেন। কেউ আবার বন্ধুর জন্মদিনে বড় এক টুকরা কেক খেয়ে ফেলেন কোনো কিছু না ভেবেই। এমন ঘটনা আমাদের সবার জীবনেই কম-বেশি
৫ ঘণ্টা আগে
হিমালয়কন্যা নেপালের জেলা আরঘাখাঁচি। সেই জেলার পাণিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিমলে এলাকা এখন এক অপূর্ব দৃশ্যে সেজেছে। পাহাড়ের ঢালে ঢালে সারিবদ্ধ গাছগুলো পাকা কমলার ভারে নুয়ে পড়েছে। আর এতেই পুরো জনপদ যেন সেজেছে সোনালি-হলুদ রঙে। কিন্তু এ দৃশ্য কেবল চোখের প্রশান্তি নয়; বরং এটি একটি অর্থনৈতিক বিপ্লবের গল্প...
৭ ঘণ্টা আগে
পৌষের রোদমাখা দিন চলে এল। টানা দুই মাস শীতের হিম শীতল দিন কাটানোর পালা। শীতকাল মানে যেন একটু আরাম আরাম ভাব, একটু অলসতা আর ব্যাপক খাওয়া-দাওয়া। এ সবই হয় মূলত বছরের এই বিশেষ সময়টিতে সবকিছু গুছিয়ে নতুন একটা বছরের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য। সবকিছু মিলিয়ে ঘরোয়া উষ্ণতা ও আনন্দ নিয়ে শীতকালটাকে একটু...
১১ ঘণ্টা আগেফারিয়া রহমান খান

পৌষের রোদমাখা দিন চলে এল। টানা দুই মাস শীতের হিম শীতল দিন কাটানোর পালা। শীতকাল মানে যেন একটু আরাম আরাম ভাব, একটু অলসতা আর ব্যাপক খাওয়া-দাওয়া। এ সবই হয় মূলত বছরের এই বিশেষ সময়টিতে সবকিছু গুছিয়ে নতুন একটা বছরের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য। সবকিছু মিলিয়ে ঘরোয়া উষ্ণতা ও আনন্দ নিয়ে শীতকালটাকে একটু সুন্দর করে সেলিব্রেট করতে পারেন।
আলো ও উষ্ণতার আমেজ
শীতকাল মানেই ঠান্ডা আর কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ। সন্ধ্যার দিকে ঘরে কিছু ওয়ার্ম লাইট ও মোমবাতি জ্বালিয়ে দিন। রাতে ছাদে বা উঠানে আগুন জ্বালিয়ে পরিবার ও বন্ধুবান্ধব মিলে এর চারপাশে বসুন। আগুনের উষ্ণতা একটা শান্ত ও আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করে। এটি শুধু যে অন্ধকার দূর করে, তা-ই নয়; বরং শীতে একটা সুন্দর, স্নিগ্ধ ও উষ্ণ ভাব এনে দেয়। আগুনের তাপের সঙ্গে এই আয়োজনে থাকে সম্পর্কের উত্তাপও।

পুরোনো জিনিস সরিয়ে ঘর পরিষ্কার করুন
শীতকালে ঘর পরিষ্কার করে একটা ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করুন। নেতিবাচকতা দূর করতে ঘর পরিষ্কার করে ধূপ বা সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারেন। আবার শীতের আমেজ আনতে ঘরে দারুচিনি, এলাচি বা লবঙ্গ জাতীয় মসলার সুগন্ধ ব্যবহার করুন। চুলায় পানি গরম করে তাতে এসব দিয়ে ফুটতে দিন, ধীরে ধীরে পুরো বাসায় সুবাস ছড়িয়ে পড়বে। ঘর পরিষ্কার থাকলে মনও শান্ত থাকে আর নতুন দিনগুলোকে সুন্দরভাবে গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া যায়।
একটা সালতামামি হয়ে যাক
এ সময়টিতে নিজেকে নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করুন। এ বছর কী কী ভালো-খারাপ হলো বা কী কী শিখলেন, তা নিয়ে একটু ভাবুন। একটি ডায়েরিতে আপনার চিন্তাগুলো লিখে রাখতে পারেন। যেসব অভ্যাস এখন আর আপনার কাজে আসছে না, সেগুলো বাদ দিয়ে নিজের ভালো হয়—এমন কিছু ইতিবাচক অভ্যাস গড়ে তুলুন। নতুন বছরে কী কী করতে চান, সে লক্ষ্য ঠিক করে লিখে রাখুন।

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন
জীবনে ছোট-বড় যা কিছু ভালো আছে, সবকিছুর জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। একটি তালিকা তৈরি করুন, যেখানে আপনার অর্জন, প্রিয় মানুষ, ব্যক্তিগত ভালো লাগা ও সুন্দর মুহূর্তগুলোর কথা লিখে রাখবেন। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে মনে শান্তি পাবেন এবং অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি পাবেন।
নিজের যত্ন নিন
শীতকাল হলো নিজের শরীর ও মনের যত্ন নেওয়ার সময়। প্রতিদিন হালকা ইয়োগা, হাঁটাহাঁটি বা স্ট্রেচিং করে শরীর সচল রাখুন। নিজের পছন্দের কাজগুলো করুন এবং নিজেকে কিছু উপহার দিন। নিজের জন্য সময় বের করে নিজের অস্তিত্ব সেলিব্রেট করার জন্য শীতকাল হলো উপযুক্ত সময়।

প্রকৃতির সান্নিধ্যে থাকুন
শীতের সকাল বা বিকেলে প্রকৃতির কাছে থাকার চেষ্টা করুন। শিশিরভেজা ঘাসে খালি পায়ে কিছুক্ষণ হাঁটুন এবং শীতের নরম রোদ গায়ে মাখুন, যা আপনার মন ভালো করার পাশাপাশি শরীরে শক্তি জোগাবে। শীতকালীন ফুলগাছ বারান্দায় রাখুন ও মাটির তৈরি জিনিস দিয়ে ঘর সাজান। দেখবেন এই ছোট কাজগুলো ঘরে একটা স্নিগ্ধ ও সতেজ ভাব আনবে।
প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটান
শীতকাল মানেই পিঠাপুলির উৎসব। বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পিঠার আয়োজন করুন। একসঙ্গে গল্প, হাসি আর খাবার সম্পর্কগুলোকে আরও মজবুত করবে এবং সময় আরও বেশি উপভোগ্য করে তুলবে।
এবার ‘না’ বলতে শিখুন
শীতকাল মানেই বিভিন্ন রকম দাওয়াত। সেগুলোকে পাশে রেখে সামাজিক বা অন্যান্য কাজের চাপ এড়িয়ে চলুন। কোনো অনুষ্ঠানে যেতে বা কোনো কাজ করতে যদি একেবারেই ইচ্ছা না করে তবে, অযথা চাপ অনুভব না করে বিনীতভাবে এড়িয়ে চলুন। এ সময় নিজের বিশ্রাম ও মানসিক শান্তিকে অগ্রাধিকার দেওয়াটাই বেশি জরুরি।
সূত্র: রিদমস অব প্লে ও অন্যান্য

পৌষের রোদমাখা দিন চলে এল। টানা দুই মাস শীতের হিম শীতল দিন কাটানোর পালা। শীতকাল মানে যেন একটু আরাম আরাম ভাব, একটু অলসতা আর ব্যাপক খাওয়া-দাওয়া। এ সবই হয় মূলত বছরের এই বিশেষ সময়টিতে সবকিছু গুছিয়ে নতুন একটা বছরের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য। সবকিছু মিলিয়ে ঘরোয়া উষ্ণতা ও আনন্দ নিয়ে শীতকালটাকে একটু সুন্দর করে সেলিব্রেট করতে পারেন।
আলো ও উষ্ণতার আমেজ
শীতকাল মানেই ঠান্ডা আর কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ। সন্ধ্যার দিকে ঘরে কিছু ওয়ার্ম লাইট ও মোমবাতি জ্বালিয়ে দিন। রাতে ছাদে বা উঠানে আগুন জ্বালিয়ে পরিবার ও বন্ধুবান্ধব মিলে এর চারপাশে বসুন। আগুনের উষ্ণতা একটা শান্ত ও আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করে। এটি শুধু যে অন্ধকার দূর করে, তা-ই নয়; বরং শীতে একটা সুন্দর, স্নিগ্ধ ও উষ্ণ ভাব এনে দেয়। আগুনের তাপের সঙ্গে এই আয়োজনে থাকে সম্পর্কের উত্তাপও।

পুরোনো জিনিস সরিয়ে ঘর পরিষ্কার করুন
শীতকালে ঘর পরিষ্কার করে একটা ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করুন। নেতিবাচকতা দূর করতে ঘর পরিষ্কার করে ধূপ বা সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারেন। আবার শীতের আমেজ আনতে ঘরে দারুচিনি, এলাচি বা লবঙ্গ জাতীয় মসলার সুগন্ধ ব্যবহার করুন। চুলায় পানি গরম করে তাতে এসব দিয়ে ফুটতে দিন, ধীরে ধীরে পুরো বাসায় সুবাস ছড়িয়ে পড়বে। ঘর পরিষ্কার থাকলে মনও শান্ত থাকে আর নতুন দিনগুলোকে সুন্দরভাবে গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া যায়।
একটা সালতামামি হয়ে যাক
এ সময়টিতে নিজেকে নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করুন। এ বছর কী কী ভালো-খারাপ হলো বা কী কী শিখলেন, তা নিয়ে একটু ভাবুন। একটি ডায়েরিতে আপনার চিন্তাগুলো লিখে রাখতে পারেন। যেসব অভ্যাস এখন আর আপনার কাজে আসছে না, সেগুলো বাদ দিয়ে নিজের ভালো হয়—এমন কিছু ইতিবাচক অভ্যাস গড়ে তুলুন। নতুন বছরে কী কী করতে চান, সে লক্ষ্য ঠিক করে লিখে রাখুন।

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন
জীবনে ছোট-বড় যা কিছু ভালো আছে, সবকিছুর জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। একটি তালিকা তৈরি করুন, যেখানে আপনার অর্জন, প্রিয় মানুষ, ব্যক্তিগত ভালো লাগা ও সুন্দর মুহূর্তগুলোর কথা লিখে রাখবেন। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে মনে শান্তি পাবেন এবং অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি পাবেন।
নিজের যত্ন নিন
শীতকাল হলো নিজের শরীর ও মনের যত্ন নেওয়ার সময়। প্রতিদিন হালকা ইয়োগা, হাঁটাহাঁটি বা স্ট্রেচিং করে শরীর সচল রাখুন। নিজের পছন্দের কাজগুলো করুন এবং নিজেকে কিছু উপহার দিন। নিজের জন্য সময় বের করে নিজের অস্তিত্ব সেলিব্রেট করার জন্য শীতকাল হলো উপযুক্ত সময়।

প্রকৃতির সান্নিধ্যে থাকুন
শীতের সকাল বা বিকেলে প্রকৃতির কাছে থাকার চেষ্টা করুন। শিশিরভেজা ঘাসে খালি পায়ে কিছুক্ষণ হাঁটুন এবং শীতের নরম রোদ গায়ে মাখুন, যা আপনার মন ভালো করার পাশাপাশি শরীরে শক্তি জোগাবে। শীতকালীন ফুলগাছ বারান্দায় রাখুন ও মাটির তৈরি জিনিস দিয়ে ঘর সাজান। দেখবেন এই ছোট কাজগুলো ঘরে একটা স্নিগ্ধ ও সতেজ ভাব আনবে।
প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটান
শীতকাল মানেই পিঠাপুলির উৎসব। বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পিঠার আয়োজন করুন। একসঙ্গে গল্প, হাসি আর খাবার সম্পর্কগুলোকে আরও মজবুত করবে এবং সময় আরও বেশি উপভোগ্য করে তুলবে।
এবার ‘না’ বলতে শিখুন
শীতকাল মানেই বিভিন্ন রকম দাওয়াত। সেগুলোকে পাশে রেখে সামাজিক বা অন্যান্য কাজের চাপ এড়িয়ে চলুন। কোনো অনুষ্ঠানে যেতে বা কোনো কাজ করতে যদি একেবারেই ইচ্ছা না করে তবে, অযথা চাপ অনুভব না করে বিনীতভাবে এড়িয়ে চলুন। এ সময় নিজের বিশ্রাম ও মানসিক শান্তিকে অগ্রাধিকার দেওয়াটাই বেশি জরুরি।
সূত্র: রিদমস অব প্লে ও অন্যান্য

পরের দিন ছিল বিশাকাতাল মানে ত্রিপুরাদের নববর্ষ। কোকিলের ডাকে ভাঙল ঘুম। ঘুম ভাঙার পর শুনলাম খোল-করতাল সহকারে নগর কীর্তনের সুর। কীর্তনের সুর শুনতে শুনতে চলে গেলাম চেঙ্গী নদীর তীরে গঙ্গা পূজার স্থানে। সেখানে যাওয়া মাত্রই নামলাম পানিতে। দেখলাম হাঁটু পানিতে সবাই...
১৯ এপ্রিল ২০২২
আপনি কি মিষ্টি খেতে বেশ ভালোবাসেন? মিষ্টি দেখলেই নিজেকে সামলে রাখতে পারেন না? এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের মিষ্টি নিয়ে অবসেশন কাজ করে। তাঁরা টিভি দেখতে দেখতে এক টব আইসক্রিম সাবাড় করে ফেলতে পারেন। কেউ আবার বন্ধুর জন্মদিনে বড় এক টুকরা কেক খেয়ে ফেলেন কোনো কিছু না ভেবেই। এমন ঘটনা আমাদের সবার জীবনেই কম-বেশি
৫ ঘণ্টা আগে
হিমালয়কন্যা নেপালের জেলা আরঘাখাঁচি। সেই জেলার পাণিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিমলে এলাকা এখন এক অপূর্ব দৃশ্যে সেজেছে। পাহাড়ের ঢালে ঢালে সারিবদ্ধ গাছগুলো পাকা কমলার ভারে নুয়ে পড়েছে। আর এতেই পুরো জনপদ যেন সেজেছে সোনালি-হলুদ রঙে। কিন্তু এ দৃশ্য কেবল চোখের প্রশান্তি নয়; বরং এটি একটি অর্থনৈতিক বিপ্লবের গল্প...
৭ ঘণ্টা আগে
বেসন ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করে। যাঁরা ভাবছেন, বেসন ব্যবহারে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাঁরা জেনে রাখুন বিশেষ কয়েকটি উপাদান মেশালে বেসনের তৈরি প্যাকও ত্বক আর্দ্র রেখে উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দিতে পারে। এসব ব্যবহারে ত্বকের অবাঞ্ছিত ব্রণও দূর হবে।...
৯ ঘণ্টা আগে