সজল জাহিদ

বুদ্ধদেবের ‘সবিনয় নিবেদন’ পড়ার সময় থেকেই খুব খুব ইচ্ছে জেগেছিল, সময় পেলেই বিহারের পালাম্যু অরণ্যে বেড়াতে যাব। সেই অরণ্যের মাঝে দু-এক দিন থেকে, ঘুরে তাঁর মতো করে না হলেও নিজের মতো করে উপভোগ করব। কেননা পাহাড়ের পরে সমুদ্রের চেয়েও অরণ্য আমার বেশি প্রিয়। তাই অরণ্যও দেখা হলো আবার অরণ্যপ্রেমী বুদ্ধদেবকে কিছুটা দেখা বা অনুভব করা হলো।
সবিনয় নিবেদন শেষ করে, যখন বুদ্ধদেবের ‘একটু উষ্ণতার জন্য’ পড়তে শুরু করলাম, তখন ঠিক করলাম, পালাম্যু পরে, আগে বুদ্ধদেবের প্রিয় জায়গা, প্রিয় প্রাঙ্গণ, প্রিয় স্টেশন, প্রিয় অরণ্য ম্যাকলাস্কিগঞ্জ ঘুরে আসব।
সেই ইচ্ছে থেকেই পরেরবার ভারত ভ্রমণের সুযোগ পেতেই কলকাতা থেকে রাঁচির ট্রেন টিকিট কেটে নিয়েছিলাম। রাঁচি, ঝাড়খণ্ড রাজ্যের রাজধানী, আর ভারতের খ্যাতিমান ক্রিকেটার মাহেন্দ্র সিং ধোনির বাড়ি। যদিও আমার ইচ্ছে বুদ্ধদেবের ম্যাকলাস্কিগঞ্জ দেখার, সেই সঙ্গে ধোনির বাড়ি বাড়তি পাওনা হয়ে যাবে।
এক শ্রাবণের ঝরা বরষার, স্নিগ্ধ আর ভেজা সকালে ট্রেন থেকে নেমেছিলাম অরণ্য রাজ্য, ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রাঁচি রেলওয়ে স্টেশনে। কারণ, রাতের ট্রেন হলেও, সকাল হওয়ার আগেই ঘুম ভেঙে যাওয়াতে, দেখে নেওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল ছোট আর মাঝারি পাহাড়ের মাঝ দিয়ে, ঘন সবুজের অরণ্যর বুক চিরে ছুটে চলা ট্রেন। যত দূর চোখ গেছে, তত দূর শুধু পাহাড় আর জঙ্গলে ভরা ঝাড়খণ্ডই চোখে পড়েছে। আর এর পর রাঁচি থেকে প্রিয় ম্যাকলাস্কিগঞ্জ যেতে আসতে পথের দুপাশে নানা রকম বন বাদাড়, ঘন জঙ্গল আর গভীর অরণ্যের যে রূপ দেখেছি, সেই থেকে ঝাড়খণ্ড মানেই আমার কাছে অরণ্য রাজ্য।
খুব সকালে রাঁচি স্টেশন থেকে সারা দিনের জন্য একটা কার ভাড়া করে চলতে শুরু করেছিলাম ৩৬ কিলোমিটার দূরের গভীর অরণ্যের জগতে—ম্যাকলাস্কিগঞ্জের দিকে। আধো ঘুমে, আধো জাগরণে, কত শত অরণ্য পেরিয়ে, পিচঢালা ঢেউখেলানো পথে, ঝিরিঝিরি বাতাস গায়ে মেখে পৌঁছে গিয়েছিলাম অনেক অপেক্ষার, আর বুদ্ধদেবের প্রিয় অরণ্যের রাজ্য ম্যাকলাস্কিগঞ্জের প্রবেশ পথে। এক অদ্ভুত অরণ্য ঘেরা, নীরব, নিশ্চুপ, আর সবুজে সবুজে ঘেরা শান্ত, স্নিগ্ধ স্টেশন ম্যাকলাস্কিগঞ্জ।
দেখেই কেমন একটা শিহরণ হলো যেন শরীর ও মনে। আহা, কত দিনের সাধ ছিল, প্রাচীন এই রেলওয়ে স্টেশনে আসব, বসব, একটু হেঁটে বেড়াব, কিছুটা অলস সময় কাটাব। আজ আমার সেই সাধ পূরণ হতে চলেছে। আমার সাধ্যের মধ্যে দেখা ছোট স্বপ্ন আজ সত্যি হতে চলেছে। সেটাও কোথায়? যেখানে, যে স্টেশনে একদিন প্রয়াত অরণ্য প্রিয় লেখক বুদ্ধদেব বসু হাঁটতেন, বসতেন, চা খেতেন, নানা রকম মানুষের সঙ্গে গল্প করতেন! ভাবা যায়, সেখানেই আমি চলে এসেছি! গাড়ি থেকে নেমে ধীর লয়ে, একদম ধীরে ধীরে সামনে গেলাম ম্যাকলাস্কিগঞ্জ স্টেশনের। দু-একটি ছবি তুললাম, তারপর ভেতরে গেলাম।
কী অদ্ভুত, কী অপরূপ, কী মায়াময়, কী নীরব, কী নির্জন, কী চুপচাপ! কোলাহলহীন সবুজের সমারোহ, চারপাশে অরণ্য দিয়ে ঘেরা, দূরের পাহাড়ের দেয়াল, টকটকে লাল ইটের একটা স্টেশন, ম্যাকলাস্কিগঞ্জে রেলওয়ে স্টেশন। দিনে হয়তো দু-একটি যাত্রীবাহী ট্রেন আসে এখানে। একজন যাত্রীর দেখাও পাওয়া গেল না। যদিও দূরপাল্লার দু-একটি ট্রেন এখানে আসে বা এই স্টেশনে থামে, বোঝা গেল ট্রেনের সময়সূচি দেখে। একদম ভিন্ন রকম একটা প্ল্যাটফর্ম, মাটির সঙ্গে লাগোয়া। অন্যান্য স্টেশনের মতো উঁচু নয়।
ম্যাকলাস্কিগঞ্জ স্টেশনে নেই তেমন কোনো সাজসজ্জা, আলাদা ওয়েটিং রুমের বাহার, নেই কোনো দোকান-পাট বা চায়ের আসর, নেই কোনো কুলিমজুরের হাঁকডাক, যাত্রীদের দৌড়ঝাঁপ, কোনো রকম শহুরে ব্যস্ততা। তবুও কোথায় যেন কী একটা আছে! একটা টান, একটা মায়া, একটা ভালো লাগা, একটা আলাদা আকর্ষণ, একটা অব্যক্ত মোহ এই ম্যাকলাস্কিগঞ্জ স্টেশনে। যার টানে, যে মায়ায়, যে ভালো লাগায় সেখানে কাটিয়ে দিয়েছিলাম অনেক অনেকটা সময়। কখনো রেললাইনের ওপরে, কখনো নির্জন প্ল্যাটফর্মে, কখনো সবুজ ঘাসের মাঝে, কখনো অলস পায়চারি করে, দূরের পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে, কখনো গহিন অরণ্যর রূপ দেখে, কখনো চলে যাওয়া পাথরের ট্রেনের শব্দ শুনে।

স্টেশনে বসে থাকার সাধ পূর্ণ হলে গাড়ি চেপে অরণ্যের পথের দিকে যেতে শুরু করলাম। পুরো ম্যাকলাস্কিগঞ্জই মূলত অরণ্যে ঘেরা কিছুটা পাহাড় টিলাময় অঞ্চল। কিন্তু সে অরণ্য এলাকাভেদে আলাদা আলাদা নামে নিজেকে জানান দিয়েছে। যেমন, স্টেশনের অদূরেই যে অরণ্য, তার নাম জাগ্রতি বিহার। একসময় এটা অ্যাংলো ইন্ডিয়ানদের অবসরের প্রিয় জায়গা ছিল। ওরা ধীরে ধীরে চলে যাওয়ার পর বনেদি, আর অরণ্যপ্রিয় ভারতীয়রা যার যার সাধ্যমতো তাঁদের আবাস গড়ে তুলেছিলেন একান্ত অবসর কাটানোর জন্য। বহু সাহিত্যিক, চলচ্চিত্র অভিনয় শিল্পী ছাড়াও অরণ্যপ্রিয় মানুষের আবাস ছিল ম্যাকলাস্কিগঞ্জের এই জাগ্রতি বিহার। অল্প সময়ের মধ্যেই পৌঁছে গেলাম ম্যাকলাস্কিগঞ্জের শুরুতেই নিজের প্রাচীন আভিজাত্য জানান দিয়ে জেগে থাকা গা ছমছমে অরণ্য।
থমথমে একটা পরিবেশ পুরো জাগ্রতি বিহারের সবটুকুজুড়ে। গেট থেকে শুরু করে পুরো পথ, প্রাচীন ভবন, তার আঙিনা, বারান্দা, বাগান, ছোট ছোট কটেজের ছাদ, খোলা চত্বর—সবকিছু ঢেকে গেছে বুনো ঘাস, লতাপাতা আর আগাছায়। আর চারপাশে তো রয়েছেই বুনো অরণ্যের ঝোপঝাড় আর ঘন জঙ্গলের আচ্ছাদন। বিধাতা যখন দিতে চায়, তখন বোধ হয় এভাবেই সবকিছু একদম উজাড় করে দেয়। যেমন দিয়েছিল ম্যাক্লাস্কিগঞ্জের জাগ্রতি বিহারের সেই ঘন অরণ্য আচ্ছাদিত সবকিছুতে।

নইলে এই একুশ শতকে, এমন আধুনিক আর কোলাহলে মুখরিত পৃথিবীতেও যে এমন মানুষহীন, নির্জন, ঘন, কালো, আর গা ছমছমে অরণ্যের দেখা পাব—সে আমি কল্পনাও করিনি। ভেবেছিলাম অরণ্য পেলেও সেখানে মানুষ, ঘরবাড়ি, দু-একটি দোকানপাট, ছোট্ট বাজার, বিভিন্ন যানবাহনসহ নানা কিছুর দেখা পাব কালের গর্ভে হারিয়ে যাওয়া অরণ্যে। হয়তো অরণ্যও থাকবে, পাব কাছে দূরে, কিছু গাছপালা, সবুজের ফাঁকা ফাঁকা লোকালয় এখানে সেখানে। কিন্তু না, এখানে অরণ্য যেন সেই প্রাচীন অরণ্যই রয়ে গেছে অভাবিত ব্যাপার হয়ে। যেটা সুদূরতম কল্পনাতেও ছিল না আমার।
আবাসস্থলের পথের পাশ দিয়ে আরও গভীরে যত যাচ্ছিলাম, ততই যেন গা শিরশিরে একটা অনুভূতি ঘিরে ধরেছিল। পথ তো আছে বোঝা যাচ্ছে, কিন্তু পুরোটাই ঘন ঘাস, লতাপাতা আর আগাছায় ঢেকে যাওয়া। এখানে যে বহুদিন কোনো মানুষের পা পড়েনি, সেটা স্পষ্ট। চারদিকে শুধু গাছ আর ঘন অরণ্যের অন্ধকার। হেঁটে হেঁটে কিছু দূর যেতে যে মোড় পেয়েছিলাম চার রাস্তার, সেটা দিয়ে পুব আর পশ্চিমে তাকালে দুটো বাড়ি দেখা যাচ্ছিল। সেখানে বেশ খোলামেলা আর আলো ছিল। কিন্তু মানুষ একটিও নেই কোথাও।

কিন্তু না সেদিকে যেতে মন চাইল না আমার। আমাকে ঘন অরণ্যের এই গা ছমছমে পথের রোমাঞ্চ পেয়ে বসেছে। এখনই এই রোমাঞ্চকে দূর করে সাধারণ কিছু চাইছি না। তাই সেই পথে না গিয়ে একদম সোজা যে পথ ছেয়ে রয়েছে আরও ঘন আগাছায়, ঘাসে, যে পথের প্রাচীন গাছে গাছে ঝুলে রয়েছে নানা রকম লতা, সেদিকে যেতে ইচ্ছে হলো। গাছের লতাপাতা সরিয়ে, ঘাসের বাধা আর নানা রকম কাঁটা ডিঙিয়ে সামনে চলে গেলাম। সেখানে জাগ্রতি বিহারের প্রাচীন আমলের একটি লাইব্রেরি বিল্ডিং রয়েছে পরিত্যক্ত অবস্থায়।
পাথুরে একটা একতলা বিল্ডিং, গাছে, ঘাসে, লতায়-পাতায় ঘিরে রয়েছে যার চারপাশ। দেখেই কোনো পুরোনো ভৌতিক সিনেমার বাড়ি বলে মনে হলো। একটু ভয়ে কিছুটা হিম হয়েই গেলাম কিছু সময়ের জন্য। এদিকে লক্ষ-কোটি মশার উপদ্রবে পরাজিত হয়ে সেখান থেকে পালালাম। আর সামনে এগোনোর কোনো উপায় নেই দেখে। একটু পেছনে এসে দূরের বড় দোতলা ভবনের দিকে এগিয়ে গেলাম। যার দুই পাশের আরও ঘন বড় বড় গাছের বিস্তীর্ণ অরণ্য, যেখানে কখনোই বোধ হয় রোদ পড়ে না। এতটাই ঘন আর অন্ধকার ছিল সেই পথের দুপাশ। ভেজা মাটির পিচ্ছিল পথে কিছুটা সাবধানেই এগিয়ে যেতে হলো আমাদের।
কিছুটা এগোতেই হাতের ডানে সরু একটা পথ চলে গেছে বেশ ভেতরের দিকে। সাইনবোর্ডে লেখা দেখলাম ডাইনিংয়ের নির্দেশনা। বাহ, ডাইনিংও আছে এখানে? অবাক না হয়ে পারলাম না সত্যি। বড় ভবনের পথ ছেড়ে সরু সেই পথে পা বাড়ালাম। যেখানে গিয়ে অবাক আর বাকরুদ্ধ না হয়ে পারিনি আমরা কেউই। একতলা পাথরের ডাইনিং হল বেশ বড়। ভিন্ন রকমের স্থাপত্যশৈলিতে দাঁড়িয়ে আছে চারদিকের জানালা আর ভেতরের আসবাবসহ—ভাঙা কাচের জানালা আর উন্মুক্ত দরজা দিয়ে দেখা গেল। আর একটু সামনে এগিয়ে গেলাম।
আরে বাপরে, এ যেন রূপকথার মতো একটি ছোট রাজ্যে এসে পড়েছি। একদম নিখাদ সবুজের মাঝে ছোট ছোট পাথুরে টেবিল আর বেঞ্চ; বেশ গোছানো গোলাকৃতির একটি উন্মুক্ত আঙিনা। সেখানে নানা রকম সভা, আলাপ আলোচনা আর মিটিং যে বসত কোন এক কালে, সেটা স্পষ্ট। আর সেই একতলা ডাইনিংয়ের যে ছাদ, তার ওপরে আরেকটি ছাদ আর দুই ছাদের ওপরে বসার জায়গা। সেটা দারুণ আকর্ষণ করল। পুরো ছাদ থেকে যেখানে যত দূর চোখ যায়, শুধু সবুজ, সবুজ আর সবুজের আচ্ছাদনে ঘেরা ঘন অরণ্য।
ওপরে শ্রাবণের মেঘলা আকাশ। চারদিকে ঘন বন ঘিরে রাখা ম্যাকলাস্কিগঞ্জের প্রাচীন জঙ্গল। শুধু পাতার বাঁশি, ঝরে পড়া বৃষ্টির শব্দ, অচেনা পাখির ডাক, অজানা কোনো পশুর দু-একটা আওয়াজ একটা গা ছমছমে পরিবেশ তৈরি করে রেখেছে। সেই একতলা ডাইনিং হলের ছাদে গাছের ছায়ার নিচে বসতেই বুদ্ধদেব যেন এসে কানে কানে বলে গেলেন, বুঝেছ এখন কেন ভালোবেসেছি এ অরণ্য, কতটা প্রেম ছিল আমার ম্যাকলাস্কিগঞ্জের প্রতি? কেন আমার লেখায় আমি অরণ্যকে নানা রূপে তুলে ধরতে বাধ্য হয়েছি, কেন আর কতটা ভালোবেসেছি এই ম্যাকলাস্কিগঞ্জ?
যখন বেলা গড়িয়ে আমাদের উঠে আসার সময় হয়েছিল, ধরেছিলাম ফেরার পথ। মনে হলো পেছন থেকে এই অরণ্যের প্রেমিক বুদ্ধদেবের গলায় সুর তুলে কবিতার মতো বলে উঠি—
‘অরণ্যের এই কাঁচাপাকা পথে অনেক দিন কোন আগন্তুক হাঁটেনি
এই সবুজের পানে, অনেক দিন কোন অবাক চোখ দৃষ্টি রাখেনি,
এমন ভর দুপুরে কেউ অলস বসে থাকেনি, এই নির্জনে
এতোটা আবেগে ভেসে যায়নি কেউ বহুদিন, এই অরণ্যে,
এমন করে কেউ ছুঁয়ে দেখেনি, এখানের ঘাস, লতা, পাতা, শ্রাবণের ধারা
এতোটা আকুল কেউ হয়নি, এখানে এসে, সেই কবে থেকে...!’
প্রিয় বুদ্ধদেব আর তাঁর প্রিয় ম্যাকলাস্কিগঞ্জ!
ম্যাকলাস্কিগঞ্জ যেতে হলে: কলকাতা থেকে রাঁচি ট্রেনে যেতে হবে। রাঁচি থেকে বাস বা কার ভাড়া করে ৩৬ কিলোমিটার দূরের এই অরণ্য ঘেরা ম্যাকলাস্কিগঞ্জ। থাকা খাওয়ার জায়গা আছে সব জায়গাতেই।

বুদ্ধদেবের ‘সবিনয় নিবেদন’ পড়ার সময় থেকেই খুব খুব ইচ্ছে জেগেছিল, সময় পেলেই বিহারের পালাম্যু অরণ্যে বেড়াতে যাব। সেই অরণ্যের মাঝে দু-এক দিন থেকে, ঘুরে তাঁর মতো করে না হলেও নিজের মতো করে উপভোগ করব। কেননা পাহাড়ের পরে সমুদ্রের চেয়েও অরণ্য আমার বেশি প্রিয়। তাই অরণ্যও দেখা হলো আবার অরণ্যপ্রেমী বুদ্ধদেবকে কিছুটা দেখা বা অনুভব করা হলো।
সবিনয় নিবেদন শেষ করে, যখন বুদ্ধদেবের ‘একটু উষ্ণতার জন্য’ পড়তে শুরু করলাম, তখন ঠিক করলাম, পালাম্যু পরে, আগে বুদ্ধদেবের প্রিয় জায়গা, প্রিয় প্রাঙ্গণ, প্রিয় স্টেশন, প্রিয় অরণ্য ম্যাকলাস্কিগঞ্জ ঘুরে আসব।
সেই ইচ্ছে থেকেই পরেরবার ভারত ভ্রমণের সুযোগ পেতেই কলকাতা থেকে রাঁচির ট্রেন টিকিট কেটে নিয়েছিলাম। রাঁচি, ঝাড়খণ্ড রাজ্যের রাজধানী, আর ভারতের খ্যাতিমান ক্রিকেটার মাহেন্দ্র সিং ধোনির বাড়ি। যদিও আমার ইচ্ছে বুদ্ধদেবের ম্যাকলাস্কিগঞ্জ দেখার, সেই সঙ্গে ধোনির বাড়ি বাড়তি পাওনা হয়ে যাবে।
এক শ্রাবণের ঝরা বরষার, স্নিগ্ধ আর ভেজা সকালে ট্রেন থেকে নেমেছিলাম অরণ্য রাজ্য, ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রাঁচি রেলওয়ে স্টেশনে। কারণ, রাতের ট্রেন হলেও, সকাল হওয়ার আগেই ঘুম ভেঙে যাওয়াতে, দেখে নেওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল ছোট আর মাঝারি পাহাড়ের মাঝ দিয়ে, ঘন সবুজের অরণ্যর বুক চিরে ছুটে চলা ট্রেন। যত দূর চোখ গেছে, তত দূর শুধু পাহাড় আর জঙ্গলে ভরা ঝাড়খণ্ডই চোখে পড়েছে। আর এর পর রাঁচি থেকে প্রিয় ম্যাকলাস্কিগঞ্জ যেতে আসতে পথের দুপাশে নানা রকম বন বাদাড়, ঘন জঙ্গল আর গভীর অরণ্যের যে রূপ দেখেছি, সেই থেকে ঝাড়খণ্ড মানেই আমার কাছে অরণ্য রাজ্য।
খুব সকালে রাঁচি স্টেশন থেকে সারা দিনের জন্য একটা কার ভাড়া করে চলতে শুরু করেছিলাম ৩৬ কিলোমিটার দূরের গভীর অরণ্যের জগতে—ম্যাকলাস্কিগঞ্জের দিকে। আধো ঘুমে, আধো জাগরণে, কত শত অরণ্য পেরিয়ে, পিচঢালা ঢেউখেলানো পথে, ঝিরিঝিরি বাতাস গায়ে মেখে পৌঁছে গিয়েছিলাম অনেক অপেক্ষার, আর বুদ্ধদেবের প্রিয় অরণ্যের রাজ্য ম্যাকলাস্কিগঞ্জের প্রবেশ পথে। এক অদ্ভুত অরণ্য ঘেরা, নীরব, নিশ্চুপ, আর সবুজে সবুজে ঘেরা শান্ত, স্নিগ্ধ স্টেশন ম্যাকলাস্কিগঞ্জ।
দেখেই কেমন একটা শিহরণ হলো যেন শরীর ও মনে। আহা, কত দিনের সাধ ছিল, প্রাচীন এই রেলওয়ে স্টেশনে আসব, বসব, একটু হেঁটে বেড়াব, কিছুটা অলস সময় কাটাব। আজ আমার সেই সাধ পূরণ হতে চলেছে। আমার সাধ্যের মধ্যে দেখা ছোট স্বপ্ন আজ সত্যি হতে চলেছে। সেটাও কোথায়? যেখানে, যে স্টেশনে একদিন প্রয়াত অরণ্য প্রিয় লেখক বুদ্ধদেব বসু হাঁটতেন, বসতেন, চা খেতেন, নানা রকম মানুষের সঙ্গে গল্প করতেন! ভাবা যায়, সেখানেই আমি চলে এসেছি! গাড়ি থেকে নেমে ধীর লয়ে, একদম ধীরে ধীরে সামনে গেলাম ম্যাকলাস্কিগঞ্জ স্টেশনের। দু-একটি ছবি তুললাম, তারপর ভেতরে গেলাম।
কী অদ্ভুত, কী অপরূপ, কী মায়াময়, কী নীরব, কী নির্জন, কী চুপচাপ! কোলাহলহীন সবুজের সমারোহ, চারপাশে অরণ্য দিয়ে ঘেরা, দূরের পাহাড়ের দেয়াল, টকটকে লাল ইটের একটা স্টেশন, ম্যাকলাস্কিগঞ্জে রেলওয়ে স্টেশন। দিনে হয়তো দু-একটি যাত্রীবাহী ট্রেন আসে এখানে। একজন যাত্রীর দেখাও পাওয়া গেল না। যদিও দূরপাল্লার দু-একটি ট্রেন এখানে আসে বা এই স্টেশনে থামে, বোঝা গেল ট্রেনের সময়সূচি দেখে। একদম ভিন্ন রকম একটা প্ল্যাটফর্ম, মাটির সঙ্গে লাগোয়া। অন্যান্য স্টেশনের মতো উঁচু নয়।
ম্যাকলাস্কিগঞ্জ স্টেশনে নেই তেমন কোনো সাজসজ্জা, আলাদা ওয়েটিং রুমের বাহার, নেই কোনো দোকান-পাট বা চায়ের আসর, নেই কোনো কুলিমজুরের হাঁকডাক, যাত্রীদের দৌড়ঝাঁপ, কোনো রকম শহুরে ব্যস্ততা। তবুও কোথায় যেন কী একটা আছে! একটা টান, একটা মায়া, একটা ভালো লাগা, একটা আলাদা আকর্ষণ, একটা অব্যক্ত মোহ এই ম্যাকলাস্কিগঞ্জ স্টেশনে। যার টানে, যে মায়ায়, যে ভালো লাগায় সেখানে কাটিয়ে দিয়েছিলাম অনেক অনেকটা সময়। কখনো রেললাইনের ওপরে, কখনো নির্জন প্ল্যাটফর্মে, কখনো সবুজ ঘাসের মাঝে, কখনো অলস পায়চারি করে, দূরের পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে, কখনো গহিন অরণ্যর রূপ দেখে, কখনো চলে যাওয়া পাথরের ট্রেনের শব্দ শুনে।

স্টেশনে বসে থাকার সাধ পূর্ণ হলে গাড়ি চেপে অরণ্যের পথের দিকে যেতে শুরু করলাম। পুরো ম্যাকলাস্কিগঞ্জই মূলত অরণ্যে ঘেরা কিছুটা পাহাড় টিলাময় অঞ্চল। কিন্তু সে অরণ্য এলাকাভেদে আলাদা আলাদা নামে নিজেকে জানান দিয়েছে। যেমন, স্টেশনের অদূরেই যে অরণ্য, তার নাম জাগ্রতি বিহার। একসময় এটা অ্যাংলো ইন্ডিয়ানদের অবসরের প্রিয় জায়গা ছিল। ওরা ধীরে ধীরে চলে যাওয়ার পর বনেদি, আর অরণ্যপ্রিয় ভারতীয়রা যার যার সাধ্যমতো তাঁদের আবাস গড়ে তুলেছিলেন একান্ত অবসর কাটানোর জন্য। বহু সাহিত্যিক, চলচ্চিত্র অভিনয় শিল্পী ছাড়াও অরণ্যপ্রিয় মানুষের আবাস ছিল ম্যাকলাস্কিগঞ্জের এই জাগ্রতি বিহার। অল্প সময়ের মধ্যেই পৌঁছে গেলাম ম্যাকলাস্কিগঞ্জের শুরুতেই নিজের প্রাচীন আভিজাত্য জানান দিয়ে জেগে থাকা গা ছমছমে অরণ্য।
থমথমে একটা পরিবেশ পুরো জাগ্রতি বিহারের সবটুকুজুড়ে। গেট থেকে শুরু করে পুরো পথ, প্রাচীন ভবন, তার আঙিনা, বারান্দা, বাগান, ছোট ছোট কটেজের ছাদ, খোলা চত্বর—সবকিছু ঢেকে গেছে বুনো ঘাস, লতাপাতা আর আগাছায়। আর চারপাশে তো রয়েছেই বুনো অরণ্যের ঝোপঝাড় আর ঘন জঙ্গলের আচ্ছাদন। বিধাতা যখন দিতে চায়, তখন বোধ হয় এভাবেই সবকিছু একদম উজাড় করে দেয়। যেমন দিয়েছিল ম্যাক্লাস্কিগঞ্জের জাগ্রতি বিহারের সেই ঘন অরণ্য আচ্ছাদিত সবকিছুতে।

নইলে এই একুশ শতকে, এমন আধুনিক আর কোলাহলে মুখরিত পৃথিবীতেও যে এমন মানুষহীন, নির্জন, ঘন, কালো, আর গা ছমছমে অরণ্যের দেখা পাব—সে আমি কল্পনাও করিনি। ভেবেছিলাম অরণ্য পেলেও সেখানে মানুষ, ঘরবাড়ি, দু-একটি দোকানপাট, ছোট্ট বাজার, বিভিন্ন যানবাহনসহ নানা কিছুর দেখা পাব কালের গর্ভে হারিয়ে যাওয়া অরণ্যে। হয়তো অরণ্যও থাকবে, পাব কাছে দূরে, কিছু গাছপালা, সবুজের ফাঁকা ফাঁকা লোকালয় এখানে সেখানে। কিন্তু না, এখানে অরণ্য যেন সেই প্রাচীন অরণ্যই রয়ে গেছে অভাবিত ব্যাপার হয়ে। যেটা সুদূরতম কল্পনাতেও ছিল না আমার।
আবাসস্থলের পথের পাশ দিয়ে আরও গভীরে যত যাচ্ছিলাম, ততই যেন গা শিরশিরে একটা অনুভূতি ঘিরে ধরেছিল। পথ তো আছে বোঝা যাচ্ছে, কিন্তু পুরোটাই ঘন ঘাস, লতাপাতা আর আগাছায় ঢেকে যাওয়া। এখানে যে বহুদিন কোনো মানুষের পা পড়েনি, সেটা স্পষ্ট। চারদিকে শুধু গাছ আর ঘন অরণ্যের অন্ধকার। হেঁটে হেঁটে কিছু দূর যেতে যে মোড় পেয়েছিলাম চার রাস্তার, সেটা দিয়ে পুব আর পশ্চিমে তাকালে দুটো বাড়ি দেখা যাচ্ছিল। সেখানে বেশ খোলামেলা আর আলো ছিল। কিন্তু মানুষ একটিও নেই কোথাও।

কিন্তু না সেদিকে যেতে মন চাইল না আমার। আমাকে ঘন অরণ্যের এই গা ছমছমে পথের রোমাঞ্চ পেয়ে বসেছে। এখনই এই রোমাঞ্চকে দূর করে সাধারণ কিছু চাইছি না। তাই সেই পথে না গিয়ে একদম সোজা যে পথ ছেয়ে রয়েছে আরও ঘন আগাছায়, ঘাসে, যে পথের প্রাচীন গাছে গাছে ঝুলে রয়েছে নানা রকম লতা, সেদিকে যেতে ইচ্ছে হলো। গাছের লতাপাতা সরিয়ে, ঘাসের বাধা আর নানা রকম কাঁটা ডিঙিয়ে সামনে চলে গেলাম। সেখানে জাগ্রতি বিহারের প্রাচীন আমলের একটি লাইব্রেরি বিল্ডিং রয়েছে পরিত্যক্ত অবস্থায়।
পাথুরে একটা একতলা বিল্ডিং, গাছে, ঘাসে, লতায়-পাতায় ঘিরে রয়েছে যার চারপাশ। দেখেই কোনো পুরোনো ভৌতিক সিনেমার বাড়ি বলে মনে হলো। একটু ভয়ে কিছুটা হিম হয়েই গেলাম কিছু সময়ের জন্য। এদিকে লক্ষ-কোটি মশার উপদ্রবে পরাজিত হয়ে সেখান থেকে পালালাম। আর সামনে এগোনোর কোনো উপায় নেই দেখে। একটু পেছনে এসে দূরের বড় দোতলা ভবনের দিকে এগিয়ে গেলাম। যার দুই পাশের আরও ঘন বড় বড় গাছের বিস্তীর্ণ অরণ্য, যেখানে কখনোই বোধ হয় রোদ পড়ে না। এতটাই ঘন আর অন্ধকার ছিল সেই পথের দুপাশ। ভেজা মাটির পিচ্ছিল পথে কিছুটা সাবধানেই এগিয়ে যেতে হলো আমাদের।
কিছুটা এগোতেই হাতের ডানে সরু একটা পথ চলে গেছে বেশ ভেতরের দিকে। সাইনবোর্ডে লেখা দেখলাম ডাইনিংয়ের নির্দেশনা। বাহ, ডাইনিংও আছে এখানে? অবাক না হয়ে পারলাম না সত্যি। বড় ভবনের পথ ছেড়ে সরু সেই পথে পা বাড়ালাম। যেখানে গিয়ে অবাক আর বাকরুদ্ধ না হয়ে পারিনি আমরা কেউই। একতলা পাথরের ডাইনিং হল বেশ বড়। ভিন্ন রকমের স্থাপত্যশৈলিতে দাঁড়িয়ে আছে চারদিকের জানালা আর ভেতরের আসবাবসহ—ভাঙা কাচের জানালা আর উন্মুক্ত দরজা দিয়ে দেখা গেল। আর একটু সামনে এগিয়ে গেলাম।
আরে বাপরে, এ যেন রূপকথার মতো একটি ছোট রাজ্যে এসে পড়েছি। একদম নিখাদ সবুজের মাঝে ছোট ছোট পাথুরে টেবিল আর বেঞ্চ; বেশ গোছানো গোলাকৃতির একটি উন্মুক্ত আঙিনা। সেখানে নানা রকম সভা, আলাপ আলোচনা আর মিটিং যে বসত কোন এক কালে, সেটা স্পষ্ট। আর সেই একতলা ডাইনিংয়ের যে ছাদ, তার ওপরে আরেকটি ছাদ আর দুই ছাদের ওপরে বসার জায়গা। সেটা দারুণ আকর্ষণ করল। পুরো ছাদ থেকে যেখানে যত দূর চোখ যায়, শুধু সবুজ, সবুজ আর সবুজের আচ্ছাদনে ঘেরা ঘন অরণ্য।
ওপরে শ্রাবণের মেঘলা আকাশ। চারদিকে ঘন বন ঘিরে রাখা ম্যাকলাস্কিগঞ্জের প্রাচীন জঙ্গল। শুধু পাতার বাঁশি, ঝরে পড়া বৃষ্টির শব্দ, অচেনা পাখির ডাক, অজানা কোনো পশুর দু-একটা আওয়াজ একটা গা ছমছমে পরিবেশ তৈরি করে রেখেছে। সেই একতলা ডাইনিং হলের ছাদে গাছের ছায়ার নিচে বসতেই বুদ্ধদেব যেন এসে কানে কানে বলে গেলেন, বুঝেছ এখন কেন ভালোবেসেছি এ অরণ্য, কতটা প্রেম ছিল আমার ম্যাকলাস্কিগঞ্জের প্রতি? কেন আমার লেখায় আমি অরণ্যকে নানা রূপে তুলে ধরতে বাধ্য হয়েছি, কেন আর কতটা ভালোবেসেছি এই ম্যাকলাস্কিগঞ্জ?
যখন বেলা গড়িয়ে আমাদের উঠে আসার সময় হয়েছিল, ধরেছিলাম ফেরার পথ। মনে হলো পেছন থেকে এই অরণ্যের প্রেমিক বুদ্ধদেবের গলায় সুর তুলে কবিতার মতো বলে উঠি—
‘অরণ্যের এই কাঁচাপাকা পথে অনেক দিন কোন আগন্তুক হাঁটেনি
এই সবুজের পানে, অনেক দিন কোন অবাক চোখ দৃষ্টি রাখেনি,
এমন ভর দুপুরে কেউ অলস বসে থাকেনি, এই নির্জনে
এতোটা আবেগে ভেসে যায়নি কেউ বহুদিন, এই অরণ্যে,
এমন করে কেউ ছুঁয়ে দেখেনি, এখানের ঘাস, লতা, পাতা, শ্রাবণের ধারা
এতোটা আকুল কেউ হয়নি, এখানে এসে, সেই কবে থেকে...!’
প্রিয় বুদ্ধদেব আর তাঁর প্রিয় ম্যাকলাস্কিগঞ্জ!
ম্যাকলাস্কিগঞ্জ যেতে হলে: কলকাতা থেকে রাঁচি ট্রেনে যেতে হবে। রাঁচি থেকে বাস বা কার ভাড়া করে ৩৬ কিলোমিটার দূরের এই অরণ্য ঘেরা ম্যাকলাস্কিগঞ্জ। থাকা খাওয়ার জায়গা আছে সব জায়গাতেই।

আপনি কি মিষ্টি খেতে বেশ ভালোবাসেন? মিষ্টি দেখলেই নিজেকে সামলে রাখতে পারেন না? এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের মিষ্টি নিয়ে অবসেশন কাজ করে। তাঁরা টিভি দেখতে দেখতে এক টব আইসক্রিম সাবাড় করে ফেলতে পারেন। কেউ আবার বন্ধুর জন্মদিনে বড় এক টুকরা কেক খেয়ে ফেলেন কোনো কিছু না ভেবেই। এমন ঘটনা আমাদের সবার জীবনেই কম-বেশি
১২ ঘণ্টা আগে
হিমালয়কন্যা নেপালের জেলা আরঘাখাঁচি। সেই জেলার পাণিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিমলে এলাকা এখন এক অপূর্ব দৃশ্যে সেজেছে। পাহাড়ের ঢালে ঢালে সারিবদ্ধ গাছগুলো পাকা কমলার ভারে নুয়ে পড়েছে। আর এতেই পুরো জনপদ যেন সেজেছে সোনালি-হলুদ রঙে। কিন্তু এ দৃশ্য কেবল চোখের প্রশান্তি নয়; বরং এটি একটি অর্থনৈতিক বিপ্লবের গল্প...
১৪ ঘণ্টা আগে
বেসন ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করে। যাঁরা ভাবছেন, বেসন ব্যবহারে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাঁরা জেনে রাখুন বিশেষ কয়েকটি উপাদান মেশালে বেসনের তৈরি প্যাকও ত্বক আর্দ্র রেখে উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দিতে পারে। এসব ব্যবহারে ত্বকের অবাঞ্ছিত ব্রণও দূর হবে।...
১৬ ঘণ্টা আগে
পৌষের রোদমাখা দিন চলে এল। টানা দুই মাস শীতের হিম শীতল দিন কাটানোর পালা। শীতকাল মানে যেন একটু আরাম আরাম ভাব, একটু অলসতা আর ব্যাপক খাওয়া-দাওয়া। এ সবই হয় মূলত বছরের এই বিশেষ সময়টিতে সবকিছু গুছিয়ে নতুন একটা বছরের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য। সবকিছু মিলিয়ে ঘরোয়া উষ্ণতা ও আনন্দ নিয়ে শীতকালটাকে একটু...
১৮ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

আপনি কি মিষ্টি খেতে বেশ ভালোবাসেন? মিষ্টি দেখলেই নিজেকে সামলে রাখতে পারেন না? এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের মিষ্টি নিয়ে অবসেশন কাজ করে। তাঁরা টিভি দেখতে দেখতে এক টব আইসক্রিম সাবাড় করে ফেলতে পারেন। কেউ আবার বন্ধুর জন্মদিনে বড় এক টুকরা কেক খেয়ে ফেলেন কোনো কিছু না ভেবেই। এমন ঘটনা আমাদের সবার জীবনেই কম-বেশি ঘটে। অনিচ্ছাকৃতভাবে বেশি চিনি বা ক্যালরি খেয়ে ফেলার পরদিন সকালে আমাদের মনে দানা বাঁধে অপরাধ বোধ, আর শুরু হয় নিজেকে ‘শাস্তি’ দেওয়ার পালা। আমরা ভাবি, আজ খাবার না খেয়ে বা খুব কম খেয়ে আগের রাতের ঘাটতি পুষিয়ে নেব। কিন্তু পুষ্টিবিদদের মতে, এই অভ্যাসটিই আমাদের স্বাস্থ্যের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে।
অতিরিক্ত খাবার বা চিনি খেয়ে ফেলাটা জীবনের এক অতি স্বাভাবিক অংশ। এর জন্য নিজেকে শাস্তি দেওয়া বা ক্লিনসিং করার প্রয়োজন নেই। বরং প্রচুর পানি পান, হালকা ব্যায়াম, ভারসাম্যপূর্ণ খাবার এবং নিজের প্রতি মমতা নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসাই সুস্থ থাকার আসল চাবিকাঠি। মনে রাখবেন, আপনার সুস্বাস্থ্য গড়ে ওঠে আপনার বড় ক্যানভাসের জীবনধারা দিয়ে, একটি মাত্র রাত দিয়ে নয়। ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক ডায়েটিশিয়ান ভিক্টোরিয়া হুইটিংটন এবং সাম্প্রতিক পুষ্টি গবেষণার আলোকে জেনে নিন, একদিনের অনিয়ম সামলে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার বিজ্ঞানসম্মত উপায়।

১. নিজেকে বঞ্চিত করবেন না
বেশি খেয়ে ফেলার পরদিন না খেয়ে থাকা বা খুব অল্প খাওয়ার যে প্রবণতা, তা আসলে উল্টো ফল আনে। গবেষণায় দেখা গেছে, খাবার নিয়ে অতিরিক্ত কড়াকড়ি করলে খাবারের প্রতি আকর্ষণ আরও বেড়ে যায়, যা পরবর্তী সময়ে আবার অনিয়ন্ত্রিত খাওয়ার দিকে ঠেলে দেয়। তাই অতিরিক্ত চিনি খেয়ে ফেলার পরদিন খাবার কমিয়ে দেওয়ার বদলে প্রোটিন, ফাইবার এবং ভালো ফ্যাটের সমন্বয়ে একটি ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাসে ফিরে আসাই বুদ্ধিমানের কাজ।
২. সকালের নাশতা হোক প্রোটিন ও ফাইবারসমৃদ্ধ
অনিয়মের পরদিন সকালের শুরুটা হওয়া চাই জুতসই। গবেষণা বলছে, উচ্চ প্রোটিনযুক্ত সকালের নাশতা রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এর সঙ্গে পর্যাপ্ত ফাইবার যোগ করলে তা রক্তে গ্লুকোজের আকস্মিক বৃদ্ধি রোধ করে এবং সারা দিন আপনাকে তৃপ্ত রাখে। খাবার বাদ দিলে শরীরে ‘ঘ্রেলিন’ বা ক্ষুধা উদ্দীপক হরমোন বেড়ে যায়, যা দিনশেষে আপনাকে আবারও বেশি খেতে প্ররোচিত করতে পারে।
৩. শরীরকে সচল রাখুন এবং পানি পান করুন
অতিরিক্ত খাওয়ার পর শরীরে যে অলসতা বা ভারী ভাব কাজ করে, তার পেছনে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতার বড় ভূমিকা থাকে। পর্যাপ্ত পানি পান করলে হজমপ্রক্রিয়া সহজ হয়। পাশাপাশি হালকা শারীরিক পরিশ্রম বা অল্প হাঁটাহাঁটি করা জরুরি। এতে আমাদের পেশিগুলো রক্তে জমে থাকা শর্করাকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারে এবং ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি পায়।

৪. ‘পারফেকশন’ নয়, গুরুত্ব দিন সামগ্রিক অভ্যাসে
পুষ্টিবিদ হুইটিংটন জোর দিয়ে বলেছেন, দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য মূলত আপনার নিয়মিত অভ্যাসের ওপর নির্ভর করে, কোনো একদিনের অনিয়মের ওপর নয়। নার্সেস হেলথ স্টাডির মতো বড় বড় গবেষণাও বলছে, কোনো একটি নির্দিষ্ট দিনের খাদ্যাভ্যাস নয়; বরং আপনার দীর্ঘদিনের খাদ্যাভ্যাসের ধরনই নির্ধারণ করে আপনার দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি। তাই একদিন বেশি খেয়ে ফেললে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। স্বাস্থ্য মানে নিখুঁত হওয়া নয়; বরং একটি সুস্থ ধারায় থাকা।
৫. নিজের প্রতি সদয় হোন
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো, নিজেকে ক্ষমা করা। গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা নিজেদের প্রতি সদয় থাকেন, তাঁরা আবেগতাড়িত হয়ে বেশি খাওয়ার অভ্যাসটি দ্রুত কাটিয়ে উঠতে পারেন। নিজেকে দোষারোপ না করে বরং বোঝার চেষ্টা করুন, সে মুহূর্তে আপনার কিসের প্রয়োজন ছিল। সমালোচনা নয়, কৌতূহলী মন নিয়ে নিজের আচরণ বিশ্লেষণ করলে আপনি ভবিষ্যতে আরও ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
সূত্র: ডেইলি মেইল

আপনি কি মিষ্টি খেতে বেশ ভালোবাসেন? মিষ্টি দেখলেই নিজেকে সামলে রাখতে পারেন না? এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের মিষ্টি নিয়ে অবসেশন কাজ করে। তাঁরা টিভি দেখতে দেখতে এক টব আইসক্রিম সাবাড় করে ফেলতে পারেন। কেউ আবার বন্ধুর জন্মদিনে বড় এক টুকরা কেক খেয়ে ফেলেন কোনো কিছু না ভেবেই। এমন ঘটনা আমাদের সবার জীবনেই কম-বেশি ঘটে। অনিচ্ছাকৃতভাবে বেশি চিনি বা ক্যালরি খেয়ে ফেলার পরদিন সকালে আমাদের মনে দানা বাঁধে অপরাধ বোধ, আর শুরু হয় নিজেকে ‘শাস্তি’ দেওয়ার পালা। আমরা ভাবি, আজ খাবার না খেয়ে বা খুব কম খেয়ে আগের রাতের ঘাটতি পুষিয়ে নেব। কিন্তু পুষ্টিবিদদের মতে, এই অভ্যাসটিই আমাদের স্বাস্থ্যের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে।
অতিরিক্ত খাবার বা চিনি খেয়ে ফেলাটা জীবনের এক অতি স্বাভাবিক অংশ। এর জন্য নিজেকে শাস্তি দেওয়া বা ক্লিনসিং করার প্রয়োজন নেই। বরং প্রচুর পানি পান, হালকা ব্যায়াম, ভারসাম্যপূর্ণ খাবার এবং নিজের প্রতি মমতা নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসাই সুস্থ থাকার আসল চাবিকাঠি। মনে রাখবেন, আপনার সুস্বাস্থ্য গড়ে ওঠে আপনার বড় ক্যানভাসের জীবনধারা দিয়ে, একটি মাত্র রাত দিয়ে নয়। ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক ডায়েটিশিয়ান ভিক্টোরিয়া হুইটিংটন এবং সাম্প্রতিক পুষ্টি গবেষণার আলোকে জেনে নিন, একদিনের অনিয়ম সামলে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার বিজ্ঞানসম্মত উপায়।

১. নিজেকে বঞ্চিত করবেন না
বেশি খেয়ে ফেলার পরদিন না খেয়ে থাকা বা খুব অল্প খাওয়ার যে প্রবণতা, তা আসলে উল্টো ফল আনে। গবেষণায় দেখা গেছে, খাবার নিয়ে অতিরিক্ত কড়াকড়ি করলে খাবারের প্রতি আকর্ষণ আরও বেড়ে যায়, যা পরবর্তী সময়ে আবার অনিয়ন্ত্রিত খাওয়ার দিকে ঠেলে দেয়। তাই অতিরিক্ত চিনি খেয়ে ফেলার পরদিন খাবার কমিয়ে দেওয়ার বদলে প্রোটিন, ফাইবার এবং ভালো ফ্যাটের সমন্বয়ে একটি ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাসে ফিরে আসাই বুদ্ধিমানের কাজ।
২. সকালের নাশতা হোক প্রোটিন ও ফাইবারসমৃদ্ধ
অনিয়মের পরদিন সকালের শুরুটা হওয়া চাই জুতসই। গবেষণা বলছে, উচ্চ প্রোটিনযুক্ত সকালের নাশতা রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এর সঙ্গে পর্যাপ্ত ফাইবার যোগ করলে তা রক্তে গ্লুকোজের আকস্মিক বৃদ্ধি রোধ করে এবং সারা দিন আপনাকে তৃপ্ত রাখে। খাবার বাদ দিলে শরীরে ‘ঘ্রেলিন’ বা ক্ষুধা উদ্দীপক হরমোন বেড়ে যায়, যা দিনশেষে আপনাকে আবারও বেশি খেতে প্ররোচিত করতে পারে।
৩. শরীরকে সচল রাখুন এবং পানি পান করুন
অতিরিক্ত খাওয়ার পর শরীরে যে অলসতা বা ভারী ভাব কাজ করে, তার পেছনে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতার বড় ভূমিকা থাকে। পর্যাপ্ত পানি পান করলে হজমপ্রক্রিয়া সহজ হয়। পাশাপাশি হালকা শারীরিক পরিশ্রম বা অল্প হাঁটাহাঁটি করা জরুরি। এতে আমাদের পেশিগুলো রক্তে জমে থাকা শর্করাকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারে এবং ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি পায়।

৪. ‘পারফেকশন’ নয়, গুরুত্ব দিন সামগ্রিক অভ্যাসে
পুষ্টিবিদ হুইটিংটন জোর দিয়ে বলেছেন, দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য মূলত আপনার নিয়মিত অভ্যাসের ওপর নির্ভর করে, কোনো একদিনের অনিয়মের ওপর নয়। নার্সেস হেলথ স্টাডির মতো বড় বড় গবেষণাও বলছে, কোনো একটি নির্দিষ্ট দিনের খাদ্যাভ্যাস নয়; বরং আপনার দীর্ঘদিনের খাদ্যাভ্যাসের ধরনই নির্ধারণ করে আপনার দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি। তাই একদিন বেশি খেয়ে ফেললে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। স্বাস্থ্য মানে নিখুঁত হওয়া নয়; বরং একটি সুস্থ ধারায় থাকা।
৫. নিজের প্রতি সদয় হোন
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো, নিজেকে ক্ষমা করা। গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা নিজেদের প্রতি সদয় থাকেন, তাঁরা আবেগতাড়িত হয়ে বেশি খাওয়ার অভ্যাসটি দ্রুত কাটিয়ে উঠতে পারেন। নিজেকে দোষারোপ না করে বরং বোঝার চেষ্টা করুন, সে মুহূর্তে আপনার কিসের প্রয়োজন ছিল। সমালোচনা নয়, কৌতূহলী মন নিয়ে নিজের আচরণ বিশ্লেষণ করলে আপনি ভবিষ্যতে আরও ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
সূত্র: ডেইলি মেইল

সবিনয় নিবেদন শেষ করে, যখন বুদ্ধদেবের ‘একটু উষ্ণতার জন্য’ পড়তে শুরু করলাম, তখন ঠিক করলাম, পালাম্যু পরে, আগে বুদ্ধদেবের প্রিয় জায়গা, প্রিয় প্রাঙ্গণ, প্রিয় স্টেশন, প্রিয় অরণ্য ম্যাকলাস্কিগঞ্জ ঘুরে আসব। সেই ইচ্ছে থেকেই পরেরবার ভারত ভ্রমণের সুযোগ পেতেই কলকাতা থেকে...
০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১
হিমালয়কন্যা নেপালের জেলা আরঘাখাঁচি। সেই জেলার পাণিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিমলে এলাকা এখন এক অপূর্ব দৃশ্যে সেজেছে। পাহাড়ের ঢালে ঢালে সারিবদ্ধ গাছগুলো পাকা কমলার ভারে নুয়ে পড়েছে। আর এতেই পুরো জনপদ যেন সেজেছে সোনালি-হলুদ রঙে। কিন্তু এ দৃশ্য কেবল চোখের প্রশান্তি নয়; বরং এটি একটি অর্থনৈতিক বিপ্লবের গল্প...
১৪ ঘণ্টা আগে
বেসন ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করে। যাঁরা ভাবছেন, বেসন ব্যবহারে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাঁরা জেনে রাখুন বিশেষ কয়েকটি উপাদান মেশালে বেসনের তৈরি প্যাকও ত্বক আর্দ্র রেখে উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দিতে পারে। এসব ব্যবহারে ত্বকের অবাঞ্ছিত ব্রণও দূর হবে।...
১৬ ঘণ্টা আগে
পৌষের রোদমাখা দিন চলে এল। টানা দুই মাস শীতের হিম শীতল দিন কাটানোর পালা। শীতকাল মানে যেন একটু আরাম আরাম ভাব, একটু অলসতা আর ব্যাপক খাওয়া-দাওয়া। এ সবই হয় মূলত বছরের এই বিশেষ সময়টিতে সবকিছু গুছিয়ে নতুন একটা বছরের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য। সবকিছু মিলিয়ে ঘরোয়া উষ্ণতা ও আনন্দ নিয়ে শীতকালটাকে একটু...
১৮ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

‘চাকরি ছেড়ে কৃষিতে লাখপতি’ কিংবা ‘যুবকের ভাগ্য ফিরল কৃষিতে’। এমন সংবাদ আমরা প্রায়ই দেখি সংবাদমাধ্যমে। এই যুবকেরা কখনো কখনো নীরবে বদলে দেয় পুরো জনপদের শত শত কৃষকের জীবন। এসব ঘটনা যে শুধু বাংলাদেশেই ঘটে, তা নয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ঘটে থাকে। নেপালেও এমনি একটি ঘটনা ঘটেছে। তা প্রকাশিত হয়েছে দেশটির জনপ্রিয় সংবাদপত্র ‘কাঠমান্ডু পোস্ট’-এ।
হিমালয়কন্যা নেপালের জেলা আরঘাখাঁচি। সেই জেলার পাণিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিমলে এলাকা এখন এক অপূর্ব দৃশ্যে সেজেছে। পাহাড়ের ঢালে ঢালে সারিবদ্ধ গাছগুলো পাকা কমলার ভারে নুয়ে পড়েছে। আর এতেই পুরো জনপদ যেন সেজেছে সোনালি-হলুদ রঙে। কিন্তু এ দৃশ্য কেবল চোখের প্রশান্তি নয়; বরং এটি একটি অর্থনৈতিক বিপ্লবের গল্প। সেখানে এই সোনালি-হলুদ ফলটি বদলে দিয়েছে শত শত কৃষকের ভাগ্য এবং পুরো গ্রামের জীবনযাত্রা।
ঘরের আঙিনায় চকচকে সাফল্য
এই পরিবর্তনের উজ্জ্বল প্রতীক তরুণ কৃষক রেবতি ভট্টরাই। উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে ভাগ্যের অন্বেষণে তিনি পাড়ি জমিয়েছিলেন বিদেশে। সেখানে প্রায় এক দশক হাড়ভাঙা খাটুনির পর কিছু অর্থ নিয়ে দেশে ফিরে এক সাহসী সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পৈতৃক জমিতে প্রচলিত দানাদার শস্যের চাষ বাদ দিয়ে তৈরি করেন কমলার বাগান। আজ তাঁর ৫৩৫টি কমলাগাছ ফলে ভরপুর। গত বছর ১৭০ কুইন্টাল কমলা বিক্রি করে তিনি ৯ লাখ রুপি আয় করেছেন। এবার ফলন আরও ভালো হওয়ায় ২০০ কুইন্টাল উৎপাদনের আশা করছেন তিনি। রেবতি বলেন, ‘বিদেশের চাকরির চেয়ে কমলার চাষ আমার জীবনকে বেশি বদলে দিয়েছে। এখন আর আমাকে বাজারের পেছনে ছুটতে হয় না। ফল পাকার আগেই ব্যবসায়ীরা এসে বাগান বুক করে নেন।’ কমলার আয়েই তিনি সিমলেতে আড়াই তলা একটি পাকা বাড়ি তুলেছেন।
পেনশনের চেয়েও বেশি আয়
শুধু তরুণেরাই নন, এ বিপ্লবে শামিল হয়েছেন অভিজ্ঞ ব্যক্তিরাও। তাঁদের মধ্যে একজন অবসরপ্রাপ্ত কৃষি টেকনিশিয়ান দধি রাম গৌতম। পাঁচ বছর ধরে তিনি বাণিজ্যিক কমলা চাষ করছেন। তাঁর ২৫০টি গাছের কমলা থেকে বছরে যে আয় হয়, তা তাঁর সরকারি পেনশনের চেয়ে তিন গুণ বেশি। বুটওয়াল, পাল্পা ও পোখারা থেকে ব্যবসায়ীরা গাড়ি নিয়ে তাঁর বাড়িতে এসে নগদ টাকায় কমলা কিনে নিয়ে যান।
কমলা চাষে এমনকি জনপ্রতিনিধিরাও পিছিয়ে নেই। ওয়ার্ড চেয়ারম্যান চন্দ্রকান্ত পাউডেল তাঁর জনসেবামূলক কাজের পাশাপাশি ৬০০টি কমলাগাছের বিশাল বাগান সামলাচ্ছেন। এ বছর শিলাবৃষ্টি বা পোকামাকড়ের আক্রমণ না থাকায় ফলন হয়েছে বাম্পার, যা আরও বেশি লাভের আশা জোগাচ্ছে।
কমলার এক নতুন হাব
পাণিনি-১-এর সলেরি টোল গ্রামে এখন প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই কমলার বাগান রয়েছে। গ্রামের কৃষকেরা নিজেদের সংগঠিত করতে গঠন করেছেন পাখাপানি কৃষক দল। ৪৫টি পরিবারের মধ্যে ৩০টিই এখন এই দলের সদস্য। গ্রামের বড় চাষি টুক বাহাদুর দারলামি গত বছর ৩ দশমিক ৫ লাখ রুপি আয় করেছেন কমলা চাষ করে। তিনি জানিয়েছেন, পুরো সলেরি গ্রাম এখন কমলার হাবে পরিণত হয়েছে। ফলে তাঁদের জমিগুলো আর অনাবাদি থাকছে না এবং গ্রাম থেকে মানুষের শহরে চলে যাওয়ার প্রবণতাও কমেছে।
অবকাঠামো ও অর্থনৈতিক প্রভাব
কৃষকদের এ সাফল্যে হাত বাড়িয়েছে অ্যাগ্রিকালচার নলেজ সেন্টার। সেচের সুবিধার জন্য তারা বড় বড় পানির ট্যাংক তৈরি করে দিয়েছে গ্রামটিতে। কৃষি টেকনিশিয়ান শারদা আচার্যের মতে, সিমলে গ্রামের এই ব্যাপক সাফল্য দেখে প্রতিবেশী গ্রামগুলোও এখন বাণিজ্যিকভাবে কমলা চাষে ঝুঁকছে। শুধু সিমলে গ্রাম থেকেই বছরে ৩ কোটি রুপিরও বেশি কমলা বিক্রি হয়। গত বছর পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি কমলার দাম ছিল ৬০ রুপি। এ বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ রুপিতে। কমলার আয়ে কৃষকেরা সন্তানদের ভালো শিক্ষা দিচ্ছেন, ঘরবাড়ি সংস্কার করছেন এবং গবাদিপশুর আধুনিক খামার গড়ে তুলছেন।
আরঘাখাঁচির এই জনপদে কমলা এখন আর কেবল একটি ফল নয়—স্বনির্ভরতার প্রতীক। যখন পুরো গ্রাম কমলার হলুদ রঙে ঝলমল করে ওঠে, তখন তা কেবল ঋতু পরিবর্তনের জানান দেয় না; বরং এক সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের গল্প শোনায়।
সূত্র: কাঠমান্ডু পোস্ট

‘চাকরি ছেড়ে কৃষিতে লাখপতি’ কিংবা ‘যুবকের ভাগ্য ফিরল কৃষিতে’। এমন সংবাদ আমরা প্রায়ই দেখি সংবাদমাধ্যমে। এই যুবকেরা কখনো কখনো নীরবে বদলে দেয় পুরো জনপদের শত শত কৃষকের জীবন। এসব ঘটনা যে শুধু বাংলাদেশেই ঘটে, তা নয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ঘটে থাকে। নেপালেও এমনি একটি ঘটনা ঘটেছে। তা প্রকাশিত হয়েছে দেশটির জনপ্রিয় সংবাদপত্র ‘কাঠমান্ডু পোস্ট’-এ।
হিমালয়কন্যা নেপালের জেলা আরঘাখাঁচি। সেই জেলার পাণিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিমলে এলাকা এখন এক অপূর্ব দৃশ্যে সেজেছে। পাহাড়ের ঢালে ঢালে সারিবদ্ধ গাছগুলো পাকা কমলার ভারে নুয়ে পড়েছে। আর এতেই পুরো জনপদ যেন সেজেছে সোনালি-হলুদ রঙে। কিন্তু এ দৃশ্য কেবল চোখের প্রশান্তি নয়; বরং এটি একটি অর্থনৈতিক বিপ্লবের গল্প। সেখানে এই সোনালি-হলুদ ফলটি বদলে দিয়েছে শত শত কৃষকের ভাগ্য এবং পুরো গ্রামের জীবনযাত্রা।
ঘরের আঙিনায় চকচকে সাফল্য
এই পরিবর্তনের উজ্জ্বল প্রতীক তরুণ কৃষক রেবতি ভট্টরাই। উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে ভাগ্যের অন্বেষণে তিনি পাড়ি জমিয়েছিলেন বিদেশে। সেখানে প্রায় এক দশক হাড়ভাঙা খাটুনির পর কিছু অর্থ নিয়ে দেশে ফিরে এক সাহসী সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পৈতৃক জমিতে প্রচলিত দানাদার শস্যের চাষ বাদ দিয়ে তৈরি করেন কমলার বাগান। আজ তাঁর ৫৩৫টি কমলাগাছ ফলে ভরপুর। গত বছর ১৭০ কুইন্টাল কমলা বিক্রি করে তিনি ৯ লাখ রুপি আয় করেছেন। এবার ফলন আরও ভালো হওয়ায় ২০০ কুইন্টাল উৎপাদনের আশা করছেন তিনি। রেবতি বলেন, ‘বিদেশের চাকরির চেয়ে কমলার চাষ আমার জীবনকে বেশি বদলে দিয়েছে। এখন আর আমাকে বাজারের পেছনে ছুটতে হয় না। ফল পাকার আগেই ব্যবসায়ীরা এসে বাগান বুক করে নেন।’ কমলার আয়েই তিনি সিমলেতে আড়াই তলা একটি পাকা বাড়ি তুলেছেন।
পেনশনের চেয়েও বেশি আয়
শুধু তরুণেরাই নন, এ বিপ্লবে শামিল হয়েছেন অভিজ্ঞ ব্যক্তিরাও। তাঁদের মধ্যে একজন অবসরপ্রাপ্ত কৃষি টেকনিশিয়ান দধি রাম গৌতম। পাঁচ বছর ধরে তিনি বাণিজ্যিক কমলা চাষ করছেন। তাঁর ২৫০টি গাছের কমলা থেকে বছরে যে আয় হয়, তা তাঁর সরকারি পেনশনের চেয়ে তিন গুণ বেশি। বুটওয়াল, পাল্পা ও পোখারা থেকে ব্যবসায়ীরা গাড়ি নিয়ে তাঁর বাড়িতে এসে নগদ টাকায় কমলা কিনে নিয়ে যান।
কমলা চাষে এমনকি জনপ্রতিনিধিরাও পিছিয়ে নেই। ওয়ার্ড চেয়ারম্যান চন্দ্রকান্ত পাউডেল তাঁর জনসেবামূলক কাজের পাশাপাশি ৬০০টি কমলাগাছের বিশাল বাগান সামলাচ্ছেন। এ বছর শিলাবৃষ্টি বা পোকামাকড়ের আক্রমণ না থাকায় ফলন হয়েছে বাম্পার, যা আরও বেশি লাভের আশা জোগাচ্ছে।
কমলার এক নতুন হাব
পাণিনি-১-এর সলেরি টোল গ্রামে এখন প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই কমলার বাগান রয়েছে। গ্রামের কৃষকেরা নিজেদের সংগঠিত করতে গঠন করেছেন পাখাপানি কৃষক দল। ৪৫টি পরিবারের মধ্যে ৩০টিই এখন এই দলের সদস্য। গ্রামের বড় চাষি টুক বাহাদুর দারলামি গত বছর ৩ দশমিক ৫ লাখ রুপি আয় করেছেন কমলা চাষ করে। তিনি জানিয়েছেন, পুরো সলেরি গ্রাম এখন কমলার হাবে পরিণত হয়েছে। ফলে তাঁদের জমিগুলো আর অনাবাদি থাকছে না এবং গ্রাম থেকে মানুষের শহরে চলে যাওয়ার প্রবণতাও কমেছে।
অবকাঠামো ও অর্থনৈতিক প্রভাব
কৃষকদের এ সাফল্যে হাত বাড়িয়েছে অ্যাগ্রিকালচার নলেজ সেন্টার। সেচের সুবিধার জন্য তারা বড় বড় পানির ট্যাংক তৈরি করে দিয়েছে গ্রামটিতে। কৃষি টেকনিশিয়ান শারদা আচার্যের মতে, সিমলে গ্রামের এই ব্যাপক সাফল্য দেখে প্রতিবেশী গ্রামগুলোও এখন বাণিজ্যিকভাবে কমলা চাষে ঝুঁকছে। শুধু সিমলে গ্রাম থেকেই বছরে ৩ কোটি রুপিরও বেশি কমলা বিক্রি হয়। গত বছর পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি কমলার দাম ছিল ৬০ রুপি। এ বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ রুপিতে। কমলার আয়ে কৃষকেরা সন্তানদের ভালো শিক্ষা দিচ্ছেন, ঘরবাড়ি সংস্কার করছেন এবং গবাদিপশুর আধুনিক খামার গড়ে তুলছেন।
আরঘাখাঁচির এই জনপদে কমলা এখন আর কেবল একটি ফল নয়—স্বনির্ভরতার প্রতীক। যখন পুরো গ্রাম কমলার হলুদ রঙে ঝলমল করে ওঠে, তখন তা কেবল ঋতু পরিবর্তনের জানান দেয় না; বরং এক সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের গল্প শোনায়।
সূত্র: কাঠমান্ডু পোস্ট

সবিনয় নিবেদন শেষ করে, যখন বুদ্ধদেবের ‘একটু উষ্ণতার জন্য’ পড়তে শুরু করলাম, তখন ঠিক করলাম, পালাম্যু পরে, আগে বুদ্ধদেবের প্রিয় জায়গা, প্রিয় প্রাঙ্গণ, প্রিয় স্টেশন, প্রিয় অরণ্য ম্যাকলাস্কিগঞ্জ ঘুরে আসব। সেই ইচ্ছে থেকেই পরেরবার ভারত ভ্রমণের সুযোগ পেতেই কলকাতা থেকে...
০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১
আপনি কি মিষ্টি খেতে বেশ ভালোবাসেন? মিষ্টি দেখলেই নিজেকে সামলে রাখতে পারেন না? এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের মিষ্টি নিয়ে অবসেশন কাজ করে। তাঁরা টিভি দেখতে দেখতে এক টব আইসক্রিম সাবাড় করে ফেলতে পারেন। কেউ আবার বন্ধুর জন্মদিনে বড় এক টুকরা কেক খেয়ে ফেলেন কোনো কিছু না ভেবেই। এমন ঘটনা আমাদের সবার জীবনেই কম-বেশি
১২ ঘণ্টা আগে
বেসন ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করে। যাঁরা ভাবছেন, বেসন ব্যবহারে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাঁরা জেনে রাখুন বিশেষ কয়েকটি উপাদান মেশালে বেসনের তৈরি প্যাকও ত্বক আর্দ্র রেখে উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দিতে পারে। এসব ব্যবহারে ত্বকের অবাঞ্ছিত ব্রণও দূর হবে।...
১৬ ঘণ্টা আগে
পৌষের রোদমাখা দিন চলে এল। টানা দুই মাস শীতের হিম শীতল দিন কাটানোর পালা। শীতকাল মানে যেন একটু আরাম আরাম ভাব, একটু অলসতা আর ব্যাপক খাওয়া-দাওয়া। এ সবই হয় মূলত বছরের এই বিশেষ সময়টিতে সবকিছু গুছিয়ে নতুন একটা বছরের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য। সবকিছু মিলিয়ে ঘরোয়া উষ্ণতা ও আনন্দ নিয়ে শীতকালটাকে একটু...
১৮ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

রূপচর্চায় বেসন খুব পরিচিত একটি উপকরণ। একসময় ত্বক পরিষ্কার করতে সাবানের পরিবর্তে বেসন ব্যবহার করা হতো। শীতে ত্বকের নির্জীব ভাব নিয়ে যাঁরা চিন্তায় রয়েছেন, তাঁরা সহজলভ্য এই উপকরণটি রোজকার ত্বকের যত্নে ব্যবহার করে নানা উপকার পেতে পারেন।
এ কথা তো সবাই জানেন, শীতকালের শুষ্ক আবহাওয়ায় ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখা খুব জরুরি। পাশাপাশি ত্বক দূষণমুক্ত রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। বেসন ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করে। যাঁরা ভাবছেন, বেসন ব্যবহারে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাঁরা জেনে রাখুন বিশেষ কয়েকটি উপাদান মেশালে বেসনের তৈরি প্যাকও ত্বক আর্দ্র রেখে উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দিতে পারে। এসব ব্যবহারে ত্বকের অবাঞ্ছিত ব্রণও দূর হবে।
বেসন ও এক্সট্রা ভার্জিন নারকেল তেলের প্যাক

পুরো শরীরের ত্বকে মাখার জন্য বেসন নিন। এতে কয়েক চামচ এক্সট্রা ভার্জিন নারকেল তেল নিন। এরপর ২ টেবিল চামচ দুধ মেশাতে পারেন। প্যাক তৈরিতে যতটুকু পানি প্রয়োজন, তা যোগ করুন। এই প্যাক ত্বকে লাগিয়ে রাখুন আধা শুকনো হওয়া পর্যন্ত। এরপর আলতো করে কুসুম গরম পানিতে পুরো শরীর ধুয়ে নিন। নারকেল তেল ও দুধ রুক্ষ ত্বকে গভীর থেকে পুষ্টি জোগায় ও ময়শ্চারাইজ করে। পাশাপাশি এ প্যাক ত্বকের ডিপ ক্লিনজিংয়েও সহায়তা করে। যাঁদের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক, তাদের জন্য এ প্যাক খুবই ভালো কাজ করে।
বেসন, টক দই ও হলুদের প্যাক
এ সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে একটি ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন। পুরো শরীরে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর হালকা গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে তা দিয়ে শরীর আলতো ঘষে প্যাক দিয়ে আলতো করে ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। টক দই ত্বকের আর্দ্রতা ও নমনীয়তা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি প্রাকৃতিক ব্লিচ হিসেবেও দুর্দান্ত কাজ করে। অন্যদিকে হলুদ ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়, দাগছোপ কমায় ও ব্রণের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
বেসন ও গাঁদা ফুল বাটার প্যাক
বেসনের সঙ্গে সমপরিমাণ গাঁদা ফুল বাটা মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে নিন। এই প্যাক মুখ, গলা ও ঘাড়ে লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট। তারপর ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের শুষ্কতা কমাতে ও নরম করতে এ প্যাক ভালো কাজ করে। যাঁদের ত্বকে ব্রণ ও দাগ রয়েছে তাঁরা প্রতি সপ্তাহে একবার করে এই প্যাক মুখে ব্যবহার করতে পারেন।
ডিপ ক্লিনজিং প্যাক
যাঁরা সকালে মুখ ধোয়ার ক্ষেত্রে ফেসওয়াশ ব্যবহার এড়াতে চান তাঁরা ১ টেবিল চামচ বেসনের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ দুধ, সামান্য হলুদ এবং ৩ ফোঁটা নারকেল তেল মিশিয়ে নিয়ে ফেসওয়াশ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন প্রতিদিন সকালে। এতে ত্বক গভীরভাবে পরিষ্কার হবে ও ধীরে ধীরে জেল্লাদার হয়ে উঠবে।
বেসন, মধু ও গোলাপজল
বেসন, মধু, গোলাপজল ও অল্প পানি মিশিয়ে মিহি পেস্ট তৈরি করুন। মিশ্রণটি মুখ, গলা ও ঘাড়ে লাগিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রাখুন। শুকাতে শুরু করলে হালকা করে ম্যাসাজ করে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার ব্যবহার করতে পারেন। মধু প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার। এটি ত্বক নরম রাখে। গোলাপজল ত্বক সতেজ করতে সাহায্য করে। মুখ ধোয়ার পর অবশ্যই একটি ভালো ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
মেছতার দাগ হালকা করতে
বেসনের সঙ্গে অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে মেছতার ওপর লাগান। ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এক দিন অন্তর এ প্যাক ব্যবহার করুন। দাগ কমে এলে ধীরে ধীরে প্যাক ব্যবহারও কমিয়ে আনুন। যেমন সপ্তাহে একবার, তারপর ১৫ দিনে একবার, তারপর মাসে একবার। এভাবে এই প্যাক ব্যবহার করলে ধীরে ধীরে দাগ একেবারে হালকা হয়ে আসবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও অন্যান্য

রূপচর্চায় বেসন খুব পরিচিত একটি উপকরণ। একসময় ত্বক পরিষ্কার করতে সাবানের পরিবর্তে বেসন ব্যবহার করা হতো। শীতে ত্বকের নির্জীব ভাব নিয়ে যাঁরা চিন্তায় রয়েছেন, তাঁরা সহজলভ্য এই উপকরণটি রোজকার ত্বকের যত্নে ব্যবহার করে নানা উপকার পেতে পারেন।
এ কথা তো সবাই জানেন, শীতকালের শুষ্ক আবহাওয়ায় ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখা খুব জরুরি। পাশাপাশি ত্বক দূষণমুক্ত রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। বেসন ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করে। যাঁরা ভাবছেন, বেসন ব্যবহারে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাঁরা জেনে রাখুন বিশেষ কয়েকটি উপাদান মেশালে বেসনের তৈরি প্যাকও ত্বক আর্দ্র রেখে উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দিতে পারে। এসব ব্যবহারে ত্বকের অবাঞ্ছিত ব্রণও দূর হবে।
বেসন ও এক্সট্রা ভার্জিন নারকেল তেলের প্যাক

পুরো শরীরের ত্বকে মাখার জন্য বেসন নিন। এতে কয়েক চামচ এক্সট্রা ভার্জিন নারকেল তেল নিন। এরপর ২ টেবিল চামচ দুধ মেশাতে পারেন। প্যাক তৈরিতে যতটুকু পানি প্রয়োজন, তা যোগ করুন। এই প্যাক ত্বকে লাগিয়ে রাখুন আধা শুকনো হওয়া পর্যন্ত। এরপর আলতো করে কুসুম গরম পানিতে পুরো শরীর ধুয়ে নিন। নারকেল তেল ও দুধ রুক্ষ ত্বকে গভীর থেকে পুষ্টি জোগায় ও ময়শ্চারাইজ করে। পাশাপাশি এ প্যাক ত্বকের ডিপ ক্লিনজিংয়েও সহায়তা করে। যাঁদের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক, তাদের জন্য এ প্যাক খুবই ভালো কাজ করে।
বেসন, টক দই ও হলুদের প্যাক
এ সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে একটি ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন। পুরো শরীরে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর হালকা গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে তা দিয়ে শরীর আলতো ঘষে প্যাক দিয়ে আলতো করে ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। টক দই ত্বকের আর্দ্রতা ও নমনীয়তা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি প্রাকৃতিক ব্লিচ হিসেবেও দুর্দান্ত কাজ করে। অন্যদিকে হলুদ ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়, দাগছোপ কমায় ও ব্রণের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
বেসন ও গাঁদা ফুল বাটার প্যাক
বেসনের সঙ্গে সমপরিমাণ গাঁদা ফুল বাটা মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে নিন। এই প্যাক মুখ, গলা ও ঘাড়ে লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট। তারপর ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের শুষ্কতা কমাতে ও নরম করতে এ প্যাক ভালো কাজ করে। যাঁদের ত্বকে ব্রণ ও দাগ রয়েছে তাঁরা প্রতি সপ্তাহে একবার করে এই প্যাক মুখে ব্যবহার করতে পারেন।
ডিপ ক্লিনজিং প্যাক
যাঁরা সকালে মুখ ধোয়ার ক্ষেত্রে ফেসওয়াশ ব্যবহার এড়াতে চান তাঁরা ১ টেবিল চামচ বেসনের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ দুধ, সামান্য হলুদ এবং ৩ ফোঁটা নারকেল তেল মিশিয়ে নিয়ে ফেসওয়াশ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন প্রতিদিন সকালে। এতে ত্বক গভীরভাবে পরিষ্কার হবে ও ধীরে ধীরে জেল্লাদার হয়ে উঠবে।
বেসন, মধু ও গোলাপজল
বেসন, মধু, গোলাপজল ও অল্প পানি মিশিয়ে মিহি পেস্ট তৈরি করুন। মিশ্রণটি মুখ, গলা ও ঘাড়ে লাগিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রাখুন। শুকাতে শুরু করলে হালকা করে ম্যাসাজ করে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার ব্যবহার করতে পারেন। মধু প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার। এটি ত্বক নরম রাখে। গোলাপজল ত্বক সতেজ করতে সাহায্য করে। মুখ ধোয়ার পর অবশ্যই একটি ভালো ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
মেছতার দাগ হালকা করতে
বেসনের সঙ্গে অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে মেছতার ওপর লাগান। ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এক দিন অন্তর এ প্যাক ব্যবহার করুন। দাগ কমে এলে ধীরে ধীরে প্যাক ব্যবহারও কমিয়ে আনুন। যেমন সপ্তাহে একবার, তারপর ১৫ দিনে একবার, তারপর মাসে একবার। এভাবে এই প্যাক ব্যবহার করলে ধীরে ধীরে দাগ একেবারে হালকা হয়ে আসবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও অন্যান্য

সবিনয় নিবেদন শেষ করে, যখন বুদ্ধদেবের ‘একটু উষ্ণতার জন্য’ পড়তে শুরু করলাম, তখন ঠিক করলাম, পালাম্যু পরে, আগে বুদ্ধদেবের প্রিয় জায়গা, প্রিয় প্রাঙ্গণ, প্রিয় স্টেশন, প্রিয় অরণ্য ম্যাকলাস্কিগঞ্জ ঘুরে আসব। সেই ইচ্ছে থেকেই পরেরবার ভারত ভ্রমণের সুযোগ পেতেই কলকাতা থেকে...
০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১
আপনি কি মিষ্টি খেতে বেশ ভালোবাসেন? মিষ্টি দেখলেই নিজেকে সামলে রাখতে পারেন না? এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের মিষ্টি নিয়ে অবসেশন কাজ করে। তাঁরা টিভি দেখতে দেখতে এক টব আইসক্রিম সাবাড় করে ফেলতে পারেন। কেউ আবার বন্ধুর জন্মদিনে বড় এক টুকরা কেক খেয়ে ফেলেন কোনো কিছু না ভেবেই। এমন ঘটনা আমাদের সবার জীবনেই কম-বেশি
১২ ঘণ্টা আগে
হিমালয়কন্যা নেপালের জেলা আরঘাখাঁচি। সেই জেলার পাণিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিমলে এলাকা এখন এক অপূর্ব দৃশ্যে সেজেছে। পাহাড়ের ঢালে ঢালে সারিবদ্ধ গাছগুলো পাকা কমলার ভারে নুয়ে পড়েছে। আর এতেই পুরো জনপদ যেন সেজেছে সোনালি-হলুদ রঙে। কিন্তু এ দৃশ্য কেবল চোখের প্রশান্তি নয়; বরং এটি একটি অর্থনৈতিক বিপ্লবের গল্প...
১৪ ঘণ্টা আগে
পৌষের রোদমাখা দিন চলে এল। টানা দুই মাস শীতের হিম শীতল দিন কাটানোর পালা। শীতকাল মানে যেন একটু আরাম আরাম ভাব, একটু অলসতা আর ব্যাপক খাওয়া-দাওয়া। এ সবই হয় মূলত বছরের এই বিশেষ সময়টিতে সবকিছু গুছিয়ে নতুন একটা বছরের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য। সবকিছু মিলিয়ে ঘরোয়া উষ্ণতা ও আনন্দ নিয়ে শীতকালটাকে একটু...
১৮ ঘণ্টা আগেফারিয়া রহমান খান

পৌষের রোদমাখা দিন চলে এল। টানা দুই মাস শীতের হিম শীতল দিন কাটানোর পালা। শীতকাল মানে যেন একটু আরাম আরাম ভাব, একটু অলসতা আর ব্যাপক খাওয়া-দাওয়া। এ সবই হয় মূলত বছরের এই বিশেষ সময়টিতে সবকিছু গুছিয়ে নতুন একটা বছরের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য। সবকিছু মিলিয়ে ঘরোয়া উষ্ণতা ও আনন্দ নিয়ে শীতকালটাকে একটু সুন্দর করে সেলিব্রেট করতে পারেন।
আলো ও উষ্ণতার আমেজ
শীতকাল মানেই ঠান্ডা আর কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ। সন্ধ্যার দিকে ঘরে কিছু ওয়ার্ম লাইট ও মোমবাতি জ্বালিয়ে দিন। রাতে ছাদে বা উঠানে আগুন জ্বালিয়ে পরিবার ও বন্ধুবান্ধব মিলে এর চারপাশে বসুন। আগুনের উষ্ণতা একটা শান্ত ও আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করে। এটি শুধু যে অন্ধকার দূর করে, তা-ই নয়; বরং শীতে একটা সুন্দর, স্নিগ্ধ ও উষ্ণ ভাব এনে দেয়। আগুনের তাপের সঙ্গে এই আয়োজনে থাকে সম্পর্কের উত্তাপও।

পুরোনো জিনিস সরিয়ে ঘর পরিষ্কার করুন
শীতকালে ঘর পরিষ্কার করে একটা ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করুন। নেতিবাচকতা দূর করতে ঘর পরিষ্কার করে ধূপ বা সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারেন। আবার শীতের আমেজ আনতে ঘরে দারুচিনি, এলাচি বা লবঙ্গ জাতীয় মসলার সুগন্ধ ব্যবহার করুন। চুলায় পানি গরম করে তাতে এসব দিয়ে ফুটতে দিন, ধীরে ধীরে পুরো বাসায় সুবাস ছড়িয়ে পড়বে। ঘর পরিষ্কার থাকলে মনও শান্ত থাকে আর নতুন দিনগুলোকে সুন্দরভাবে গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া যায়।
একটা সালতামামি হয়ে যাক
এ সময়টিতে নিজেকে নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করুন। এ বছর কী কী ভালো-খারাপ হলো বা কী কী শিখলেন, তা নিয়ে একটু ভাবুন। একটি ডায়েরিতে আপনার চিন্তাগুলো লিখে রাখতে পারেন। যেসব অভ্যাস এখন আর আপনার কাজে আসছে না, সেগুলো বাদ দিয়ে নিজের ভালো হয়—এমন কিছু ইতিবাচক অভ্যাস গড়ে তুলুন। নতুন বছরে কী কী করতে চান, সে লক্ষ্য ঠিক করে লিখে রাখুন।

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন
জীবনে ছোট-বড় যা কিছু ভালো আছে, সবকিছুর জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। একটি তালিকা তৈরি করুন, যেখানে আপনার অর্জন, প্রিয় মানুষ, ব্যক্তিগত ভালো লাগা ও সুন্দর মুহূর্তগুলোর কথা লিখে রাখবেন। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে মনে শান্তি পাবেন এবং অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি পাবেন।
নিজের যত্ন নিন
শীতকাল হলো নিজের শরীর ও মনের যত্ন নেওয়ার সময়। প্রতিদিন হালকা ইয়োগা, হাঁটাহাঁটি বা স্ট্রেচিং করে শরীর সচল রাখুন। নিজের পছন্দের কাজগুলো করুন এবং নিজেকে কিছু উপহার দিন। নিজের জন্য সময় বের করে নিজের অস্তিত্ব সেলিব্রেট করার জন্য শীতকাল হলো উপযুক্ত সময়।

প্রকৃতির সান্নিধ্যে থাকুন
শীতের সকাল বা বিকেলে প্রকৃতির কাছে থাকার চেষ্টা করুন। শিশিরভেজা ঘাসে খালি পায়ে কিছুক্ষণ হাঁটুন এবং শীতের নরম রোদ গায়ে মাখুন, যা আপনার মন ভালো করার পাশাপাশি শরীরে শক্তি জোগাবে। শীতকালীন ফুলগাছ বারান্দায় রাখুন ও মাটির তৈরি জিনিস দিয়ে ঘর সাজান। দেখবেন এই ছোট কাজগুলো ঘরে একটা স্নিগ্ধ ও সতেজ ভাব আনবে।
প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটান
শীতকাল মানেই পিঠাপুলির উৎসব। বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পিঠার আয়োজন করুন। একসঙ্গে গল্প, হাসি আর খাবার সম্পর্কগুলোকে আরও মজবুত করবে এবং সময় আরও বেশি উপভোগ্য করে তুলবে।
এবার ‘না’ বলতে শিখুন
শীতকাল মানেই বিভিন্ন রকম দাওয়াত। সেগুলোকে পাশে রেখে সামাজিক বা অন্যান্য কাজের চাপ এড়িয়ে চলুন। কোনো অনুষ্ঠানে যেতে বা কোনো কাজ করতে যদি একেবারেই ইচ্ছা না করে তবে, অযথা চাপ অনুভব না করে বিনীতভাবে এড়িয়ে চলুন। এ সময় নিজের বিশ্রাম ও মানসিক শান্তিকে অগ্রাধিকার দেওয়াটাই বেশি জরুরি।
সূত্র: রিদমস অব প্লে ও অন্যান্য

পৌষের রোদমাখা দিন চলে এল। টানা দুই মাস শীতের হিম শীতল দিন কাটানোর পালা। শীতকাল মানে যেন একটু আরাম আরাম ভাব, একটু অলসতা আর ব্যাপক খাওয়া-দাওয়া। এ সবই হয় মূলত বছরের এই বিশেষ সময়টিতে সবকিছু গুছিয়ে নতুন একটা বছরের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য। সবকিছু মিলিয়ে ঘরোয়া উষ্ণতা ও আনন্দ নিয়ে শীতকালটাকে একটু সুন্দর করে সেলিব্রেট করতে পারেন।
আলো ও উষ্ণতার আমেজ
শীতকাল মানেই ঠান্ডা আর কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ। সন্ধ্যার দিকে ঘরে কিছু ওয়ার্ম লাইট ও মোমবাতি জ্বালিয়ে দিন। রাতে ছাদে বা উঠানে আগুন জ্বালিয়ে পরিবার ও বন্ধুবান্ধব মিলে এর চারপাশে বসুন। আগুনের উষ্ণতা একটা শান্ত ও আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করে। এটি শুধু যে অন্ধকার দূর করে, তা-ই নয়; বরং শীতে একটা সুন্দর, স্নিগ্ধ ও উষ্ণ ভাব এনে দেয়। আগুনের তাপের সঙ্গে এই আয়োজনে থাকে সম্পর্কের উত্তাপও।

পুরোনো জিনিস সরিয়ে ঘর পরিষ্কার করুন
শীতকালে ঘর পরিষ্কার করে একটা ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করুন। নেতিবাচকতা দূর করতে ঘর পরিষ্কার করে ধূপ বা সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারেন। আবার শীতের আমেজ আনতে ঘরে দারুচিনি, এলাচি বা লবঙ্গ জাতীয় মসলার সুগন্ধ ব্যবহার করুন। চুলায় পানি গরম করে তাতে এসব দিয়ে ফুটতে দিন, ধীরে ধীরে পুরো বাসায় সুবাস ছড়িয়ে পড়বে। ঘর পরিষ্কার থাকলে মনও শান্ত থাকে আর নতুন দিনগুলোকে সুন্দরভাবে গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া যায়।
একটা সালতামামি হয়ে যাক
এ সময়টিতে নিজেকে নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করুন। এ বছর কী কী ভালো-খারাপ হলো বা কী কী শিখলেন, তা নিয়ে একটু ভাবুন। একটি ডায়েরিতে আপনার চিন্তাগুলো লিখে রাখতে পারেন। যেসব অভ্যাস এখন আর আপনার কাজে আসছে না, সেগুলো বাদ দিয়ে নিজের ভালো হয়—এমন কিছু ইতিবাচক অভ্যাস গড়ে তুলুন। নতুন বছরে কী কী করতে চান, সে লক্ষ্য ঠিক করে লিখে রাখুন।

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন
জীবনে ছোট-বড় যা কিছু ভালো আছে, সবকিছুর জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। একটি তালিকা তৈরি করুন, যেখানে আপনার অর্জন, প্রিয় মানুষ, ব্যক্তিগত ভালো লাগা ও সুন্দর মুহূর্তগুলোর কথা লিখে রাখবেন। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে মনে শান্তি পাবেন এবং অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি পাবেন।
নিজের যত্ন নিন
শীতকাল হলো নিজের শরীর ও মনের যত্ন নেওয়ার সময়। প্রতিদিন হালকা ইয়োগা, হাঁটাহাঁটি বা স্ট্রেচিং করে শরীর সচল রাখুন। নিজের পছন্দের কাজগুলো করুন এবং নিজেকে কিছু উপহার দিন। নিজের জন্য সময় বের করে নিজের অস্তিত্ব সেলিব্রেট করার জন্য শীতকাল হলো উপযুক্ত সময়।

প্রকৃতির সান্নিধ্যে থাকুন
শীতের সকাল বা বিকেলে প্রকৃতির কাছে থাকার চেষ্টা করুন। শিশিরভেজা ঘাসে খালি পায়ে কিছুক্ষণ হাঁটুন এবং শীতের নরম রোদ গায়ে মাখুন, যা আপনার মন ভালো করার পাশাপাশি শরীরে শক্তি জোগাবে। শীতকালীন ফুলগাছ বারান্দায় রাখুন ও মাটির তৈরি জিনিস দিয়ে ঘর সাজান। দেখবেন এই ছোট কাজগুলো ঘরে একটা স্নিগ্ধ ও সতেজ ভাব আনবে।
প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটান
শীতকাল মানেই পিঠাপুলির উৎসব। বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পিঠার আয়োজন করুন। একসঙ্গে গল্প, হাসি আর খাবার সম্পর্কগুলোকে আরও মজবুত করবে এবং সময় আরও বেশি উপভোগ্য করে তুলবে।
এবার ‘না’ বলতে শিখুন
শীতকাল মানেই বিভিন্ন রকম দাওয়াত। সেগুলোকে পাশে রেখে সামাজিক বা অন্যান্য কাজের চাপ এড়িয়ে চলুন। কোনো অনুষ্ঠানে যেতে বা কোনো কাজ করতে যদি একেবারেই ইচ্ছা না করে তবে, অযথা চাপ অনুভব না করে বিনীতভাবে এড়িয়ে চলুন। এ সময় নিজের বিশ্রাম ও মানসিক শান্তিকে অগ্রাধিকার দেওয়াটাই বেশি জরুরি।
সূত্র: রিদমস অব প্লে ও অন্যান্য

সবিনয় নিবেদন শেষ করে, যখন বুদ্ধদেবের ‘একটু উষ্ণতার জন্য’ পড়তে শুরু করলাম, তখন ঠিক করলাম, পালাম্যু পরে, আগে বুদ্ধদেবের প্রিয় জায়গা, প্রিয় প্রাঙ্গণ, প্রিয় স্টেশন, প্রিয় অরণ্য ম্যাকলাস্কিগঞ্জ ঘুরে আসব। সেই ইচ্ছে থেকেই পরেরবার ভারত ভ্রমণের সুযোগ পেতেই কলকাতা থেকে...
০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১
আপনি কি মিষ্টি খেতে বেশ ভালোবাসেন? মিষ্টি দেখলেই নিজেকে সামলে রাখতে পারেন না? এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের মিষ্টি নিয়ে অবসেশন কাজ করে। তাঁরা টিভি দেখতে দেখতে এক টব আইসক্রিম সাবাড় করে ফেলতে পারেন। কেউ আবার বন্ধুর জন্মদিনে বড় এক টুকরা কেক খেয়ে ফেলেন কোনো কিছু না ভেবেই। এমন ঘটনা আমাদের সবার জীবনেই কম-বেশি
১২ ঘণ্টা আগে
হিমালয়কন্যা নেপালের জেলা আরঘাখাঁচি। সেই জেলার পাণিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিমলে এলাকা এখন এক অপূর্ব দৃশ্যে সেজেছে। পাহাড়ের ঢালে ঢালে সারিবদ্ধ গাছগুলো পাকা কমলার ভারে নুয়ে পড়েছে। আর এতেই পুরো জনপদ যেন সেজেছে সোনালি-হলুদ রঙে। কিন্তু এ দৃশ্য কেবল চোখের প্রশান্তি নয়; বরং এটি একটি অর্থনৈতিক বিপ্লবের গল্প...
১৪ ঘণ্টা আগে
বেসন ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করে। যাঁরা ভাবছেন, বেসন ব্যবহারে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাঁরা জেনে রাখুন বিশেষ কয়েকটি উপাদান মেশালে বেসনের তৈরি প্যাকও ত্বক আর্দ্র রেখে উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দিতে পারে। এসব ব্যবহারে ত্বকের অবাঞ্ছিত ব্রণও দূর হবে।...
১৬ ঘণ্টা আগে