Ajker Patrika

পৃথিবীর জন্য বিনিয়োগ করি

সানজিদা সামরিন
পৃথিবীর জন্য বিনিয়োগ করি

আজ ২২ এপ্রিল; এক বিশেষ দিন। একটু সুন্দর করে উচ্চারণ করতে চাইলে বলতে হবে আজ ধরিত্রী দিবস। মানে পৃথিবী দিবস। ১৯৭০ সালে প্রথম এই ধরিত্রী দিবস পালিত হয়। সে বছর যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিনের মার্কিন সিনেটর পরিবেশগত সমস্যা সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর আহ্বান জানান। সারা দেশে তখন সমাবেশ হয়। বছরের শেষ নাগাদ, মার্কিন সরকার পরিবেশ সুরক্ষা সংস্থা গড়ে তোলে। এখন বিশ্বের ১৯৩ টিরও বেশি দেশ প্রতি বছর এই দিবস পালন করে।

চলতি বছর আর্থ ডে বা ধরিত্রী দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে—আমাদের গ্রহে বিনিয়োগ করুন। পৃথিবীর জলবায়ু ও পরিবেশ রক্ষার্থে এই বিনিয়োগটা কী হতে পারে? বৃক্ষরোপণ তো বটেই পাশাপাশি বিদ্য়ুৎ সাশ্রয়, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পানি অপচয় রোধ, ব্যবহার্য জিনিসের পুনর্ব্যবহার এবং বায়ু, মাটি ও পানি দূষণ রোধে সচেতনভাবে কাজ করা।

পরিবেশ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে ও পরিবেশ দূষণ রোধে এখন অনেক তরুণও নানাভাবে কাজ করছেন। মো. সাদিত উজ জামান তাঁদের মধ্যেই একজন। দেশের প্রথম সারির একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ শেষ করে একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থায় চার বছর কাজ করেন সাদিত। এর পর নিজের উদ্যোগে একটি ফ্যাশন হাউস চালু করেন। পাশাপাশি ব্যবহৃত টি-ব্যাগ, বেভারেজ ক্যান, ওষুধের স্ট্রিপ, চিপসের প্যাকেটের মতো জাঙ্ক ম্যাটেরিয়াল নিয়েও কাজ করছেন।

সাদিত বলেন, ‘আমরা এত বেশি পরিবেশ নোংরা করি! ফেলে দেওয়া জিনিস দিয়ে নতুন কী করা যায়, সব সময় তা-ই ভাবতে থাকি, যা কিনা মানুষের কাছে বার্তা পৌঁছে দেবে যে, আমরা যেন পরিবেশের ক্ষতি না করি এভাবে আবর্জনা ফেলে।’

ব্যবহৃত টি-ব্যাগের ওপর সমকালীন ঘটনা অবলম্বনে ছবি তো আঁকেনই পাশাপাশি জাঙ্ক জার্নিস নামেও তাঁর একটি প্রোজেক্ট রয়েছে। এই প্রোজেক্টের আওতায় বেভারেজ ক্যান, ওষুধের স্ট্রিপ, ম্যাচবক্স, পুরোনো ইনহেলার, বোতল, চিপসের প্যাকেটের মতো জাঙ্ক ম্যাটেরিয়াল নিয়ে কাজ করছেন সাদিত।

ব্যবহৃত ইনহেলার দিয়ে টম অ্যান্ড জেরি।এই বৈশাখের আবহে চারপাশে নিভৃতে একটু একটু করে কৃষ্ণচূড়া ফুটছে। অভিনব উপায়ে তারই প্রতিকৃতি তৈরি করেছেন সাদিত। কোকাকোলা, ফ্যান্টা ও স্প্রাইটের ক্যান কেটে বানিয়েছেন কৃষ্ণচূড়া ফুল ও পাতা। এই রিসাইকেল আর্টের উদ্দেশ্য় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রথম উদ্দেশ্য় হচ্ছে, আশপাশের সবাইকে সচেতন করা। আমরা চারপাশের পরিবেশ সবচেয়ে বেশি নষ্ট করি চিপসের প্যাকেট, ক্যান ইত্যাদি দিয়েই। ফলে আমার এই রিসাইকেল আর্টগুলো দিয়ে আমি সবাইকে সচেতন করতে চাই এই বলে যে, এগুলো যেখানে-সেখানে ফেলে না দিয়ে আমরা নতুন কিছু তৈরি করতে পারি।’

না, একাই সব বর্জ্যকে ফুলে রূপান্তর করে দেবেন—এমনটা ভাবেন না সাদিত। তবে মনে করেন, এর মাধ্যমে একটা বোধ তৈরি করা যাবে। বললেন, ‘আমরা যতটা পণ্য ব্যবহার করি অতটা রিসাইকেল করতে পারি না, সম্ভবও না। যেমন আমি এই কৃষ্ণচূড়া ফুলটি হয়তো চার-পাঁচটি ক্যান দিয়ে করেছি। কিন্তু এসব পণ্য তো আমি এর চেয়েও অনেক বেশি কিনি। সে ক্ষেত্রে আমার এই কাজটা একটা প্রতীকী মাধ্যম। ফলে যাদের মধ্য়ে সৃজনশীলতা আছে, তারা এ রকম কিছু হয়তো তৈরি করবে। সবাই না। তবে হ্যাঁ, পরিবেশ বাঁচাতে সবাইকেই সৃজনশীল কিছু করতে হবে, তা নয়। আমার কাজ দিয়ে আমি এই বার্তা সবার কাছে পৌঁছতে চাই যে, আমরা আবর্জনা যেখানে-সেখানে না ফেলে, নির্দিষ্ট জায়গাতেই যেন ফেলি।’

ওষুধের স্ট্রিপে কৃষ্ণচূড়া। পরিবেশবান্ধব জীবনযাপনের কথা এখন অনেকেই বলেন। বিভিন্ন সভা-সেমিনারেও এ নিয়ে হয় বিস্তর আলাপ। কিন্তু এই পরিবেশবান্ধব জীবনযাপন আসলে কী? সাদিত বলেন, ‘আমার বাবা বাগান করতে ভালোবাসেন। ফলে সারাক্ষণ সবুজের আবেশেই থাকা হয়। আর ব্যক্তিগতভাবে আমি জাঙ্ক ম্যাটেরিয়াল নিয়ে যেসব রিসাইকেল আর্টের কাজ করছি, তা পরিবেশের কথা ভেবেই এবং প্রাকৃতিক উপকরণগুলোর ওপর ফোকাস করেই করছি।’

বোঝা গেল সাদিত পরিবেশবান্ধব জীবনের সংজ্ঞা নিজের জীবন দিয়েই নির্ধারণ করেছেন। পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়াটা যেমন, তেমনি প্রকৃতির ওপর বাড়তি বর্জ্যভার না চাপিয়ে বরং তা লাঘবের অন্য নামই তাঁর কাছে পরিবেশবান্ধব জীবনযাপন। এই একই বিষয়ে কথা হয়েছিল সাদিকা রুমনের সঙ্গে। যাঁরা অল্প দামে সুন্দর ও টিপটপ গয়না কিনতে চান, তাঁদের কাছে ‘হরপ্পা’ নামটি পরিচিত। বিশেষ করে ফুলের প্রতি যাঁদের আগ্রহ রয়েছে, তাঁরা হরপ্পার গয়না ভালোবাসেন। ফেসবুকে গয়নার পেজ ‘হরপ্পা’ খুললেই পেয়ে যাবেন রঙিন পুঁতির সব মালা, কানের দুল, আংটি ইত্যাদি। সাদিকা রুমন এই হরপ্পার স্বত্বাধিকারী।

বেভারেজ ক্যান দিয়ে কৃষ্ণচূড়া।সাদিকা রুমন বলেন, ‘পরিবেশের কথা ভেবে সচেতনভাবে যে কয়টা কাজ করার চেষ্টা করি, ব্যবসায়ের কথাই যদি বলি, আমার ব্যবসায়ী উদ্যোগে প্রতিটি পার্সেলের সঙ্গে গাছের বীজ দিই সবুজায়নকে উৎসাহিত করতে। প্যাকেজিং এখনো সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব উপায়ে করতে না পারলেও ঈদের পর ইচ্ছে আছে পরিবেশবান্ধব পচনশীল বায়োপ্লাস্টিক পলকার তৈরি প্যাকেটে পণ্য ডেলিভারি দিতে। পলিথিন বা প্লাস্টিকের ব্যাগ তো পরিবেশবান্ধব না।’

ম্যাচ বক্স দিয়ে তরমুজ।এ ছাড়াও হরপ্পার গয়না তৈরিতে অন্যান্য উপকরণের পাশাপাশি সাদিকা ব্যবহার করেন কাঠের পুঁতি ও কাপড়। নকশায় শোভা পায় ফুলপাতা। ব্যবসায়ের শুরুর দিকে কাপড়ের গয়নায় প্রথম সোনালু ফুলের একটা মালা তৈরি করেন সাদিকা রুমন। এর পর শুধু ফুল আর গাছ দিয়ে একটি সিরিজ করার কথা ভাবেন। কারণ, ফুল ও গাছ প্রকৃতির কথা বলে। হরপ্পার পেজে একটা অ্যালবাম আছে, যার নাম আরণ্যক। এই অ্যালবামের সব গয়নাই কাপড়ের ওপর হাতে সেলাই করে তৈরি। এর বিষয় ফুল ও গাছ।

গয়নায় প্রকৃতির উপকরণ। ব্যক্তিগত সবুজ জীবনযাপন করার বিষয়ে সাদিকা বলেন, ‘একটু একটু করে আমরা সবাই যে যার জায়গা থেকে যদি ভাবি পৃথিবীর সম্পদ মানেই আমার সম্পদ। তাহলে হয়তো পরিবর্তন আসবে। আমরা যদি পানির অপচয় না করার চেষ্টা করি, গ্যাস, বিদ্যুৎ অপচয় না করার চেষ্টা করি, পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যাগের ব্যবহার কমাতে পারি, তাহলে সবাই মিলে একটু একটু করে পরিবেশকে বাঁচাতে বড় ভূমিকা রাখতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বর্ষবরণে যেসব শুভ রঙে নিজেকে সাজাতে পারেন

ফারিয়া রহমান খান 
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ১৭
২০২৬ সালে নিজের ব্যক্তিত্বকে দৃঢ়ভাবে প্রকাশ করতে বেগুনি রঙের পোশাক হতে পারে এক অনবদ্য পছন্দ। ছবি সৌজন্য: ওয়্যারহাউজ
২০২৬ সালে নিজের ব্যক্তিত্বকে দৃঢ়ভাবে প্রকাশ করতে বেগুনি রঙের পোশাক হতে পারে এক অনবদ্য পছন্দ। ছবি সৌজন্য: ওয়্যারহাউজ

পুরোনোকে বিদায় জানিয়ে নতুনকে বরণ করে নেওয়ার ব্যাপারটি সত্যিই বিশেষ। একটি বছর ঘুরে যখন নতুন বছর আসে, তখন আমাদের মনে জাগে একরাশ প্রত্যাশা। এই নতুন সময়ে আমরা বেশ কিছু ছোট ছোট কাজ করে নিজের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার চেষ্টা করি। বছরের প্রথম দিন প্রতিটি কাজই আমরা এমনভাবে করার চেষ্টা করি যাতে পুরো বছরে তার একটা রেশ থাকে। পোশাকের রং নির্বাচনের বেলায়ও কিন্তু এ কথাটা খাটে। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, আসছে বছর অর্থাৎ ২০২৬ সালে পৃথিবীর ওপর সূর্যের প্রভাব থাকবে। ফলে কয়েকটি শুভ রঙের পোশাক আলমারিতে রাখলে পুরো বছরটাই চনমনে কাটবে বলে আশা করা হচ্ছে। কয়েকটি বিশেষ রংকে শক্তি, সুরক্ষা ও সমৃদ্ধির প্রতীক বলে মনে করা হয়। তবে পোশাকের রং নির্বাচনের মাধ্যমেই যে আপনি সফল হয়ে যাবেন, বিষয়টা এমন নয়। বরং, এই প্রতীকী ভঙ্গিটি আপনার মানসিক সংকল্পকে দৃঢ় করবে। ২০২৬ সালকে বরণ করতে যে ৭টি রং আপনার জীবনে শুভ বার্তা নিয়ে আসতে পারে, তা নিয়েই আজকের এই ফিচার।

নতুন বছরে লাল রঙের পোশাক আপনার মধ্যে সাহস ও আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনবে। ছবি সৌজন্য: ওয়্যারহাউজ
নতুন বছরে লাল রঙের পোশাক আপনার মধ্যে সাহস ও আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনবে। ছবি সৌজন্য: ওয়্যারহাউজ

যেসব রঙের পোশাক আলমারিতে রাখতে পারেন

লাল

জীবনীশক্তি ও সুরক্ষার প্রতীক লাল রংকে এশিয়ান সংস্কৃতিতে বিশেষ করে চীনে সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে মনে করা হয়। বিয়ে থেকে শুরু করে নববর্ষ—সব শুভ উপলক্ষেই লাল রং প্রাধান্য পায়। এটি নেতিবাচকতা ও অশুভ শক্তিকে দূরে রাখার শক্তিশালী ঢাল হিসেবেও কাজ করে। এই নতুন বছরে লাল রঙের পোশাক আপনার মধ্যে সাহস ও আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনবে।

সোনালি

প্রাচুর্য ও ধারাবাহিক সাফল্যের প্রতীক এই রং যুগ যুগ ধরে স্বর্ণ বা মূল্যবান ধাতুর সমার্থক, যা সরাসরি সম্পদ ও ক্ষমতার জানান দেয়। নতুন বছরে যারা ক্যারিয়ার বা ব্যবসায় বিশেষ উন্নতি ও সমৃদ্ধি খুঁজছেন, তাঁদের জন্য সোনালি রঙের পোশাক হবে আত্মবিশ্বাসের এক চমৎকার উৎস।

রুপালি

মানসিক স্বচ্ছতা এবং অন্তর্দৃষ্টির প্রতীক রুপালি রঙের সঙ্গে চাঁদের স্নিগ্ধ আভার সম্পর্ক রয়েছে। অন্ধকারে যেমন চাঁদের আলো পথ দেখায়, তেমনই রুপালি রং প্রতিকূলতার মধ্যেও সঠিক পথ দেখায় বলে মনে করা হয়। ভারসাম্যপূর্ণ ও শান্ত নতুন বছরের জন্য রুপালি রঙের পোশাক বেছে নেওয়া হতে পারে বুদ্ধিমানের কাজ।

প্রকৃতির মতোই সবুজ রং নবজীবন, বিকাশ ও সুস্থতার প্রতীক। ছবি সৌজন্য: ওয়্যারহাউজ
প্রকৃতির মতোই সবুজ রং নবজীবন, বিকাশ ও সুস্থতার প্রতীক। ছবি সৌজন্য: ওয়্যারহাউজ

সবুজ

প্রকৃতির মতোই সবুজ রং নবজীবন, বিকাশ ও সুস্থতার প্রতীক। এটি হঠাৎ আসা কোনো সৌভাগ্য নয়, বরং ধারাবাহিক পরিশ্রমের মাধ্যমে পাওয়া টেকসই সাফল্যের কথা মনে করিয়ে দেয়। যাঁরা নতুন বছরে নিজের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার ওপর জোর দিতে চান এবং জীবনে স্থিতিশীল সমৃদ্ধি আনতে চান, তাঁদের পোশাকে সবুজের ছোঁয়া থাকা জরুরি।

নীল

মধ্যপ্রাচ্য ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে হাজার বছর ধরে নীল রংকে অশুভ দৃষ্টি ও ঈর্ষা থেকে বাঁচার এক শক্তিশালী কবচ হিসেবে দেখা হয়। এ ছাড়া নীল রঙের মাহাত্ম্য মানসিক প্রশান্তি, ভারসাম্য ও স্থিরতার ধারক হিসেবেও রয়েছে। আধুনিক জীবনের চরম অস্থিরতা ও দুশ্চিন্তা কাটিয়ে যাঁরা নতুন বছরে স্থিতিশীল থাকতে চান, নীল রঙের পোশাক হবে তাঁদের জন্য এক ধরনের আশ্রয়ের মতো, যা আপনাকে সুরক্ষার অনুভূতি দিয়ে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে।

সাদা

সাদা রঙের দুটি বিশেষ দিক রয়েছে। এটি যেমন বিদায়কে সম্মান জানায়, তেমনই নতুনের পবিত্রতাকেও তুলে ধরে। পুরোনো বছরের সব ক্লান্তি মুছে ফেলে যারা একেবারে নতুন করে জীবন শুরু করতে চান, সাদা রং তাদের জন্য সেরা। এটি যেন জীবনের এক ‘ব্ল্যাঙ্ক পেজ’ বা সাদা পাতার মতো, যেখানে আপনি নিজের মতো করে নিজের জীবনের গল্প লিখতে পারবেন।

বেগুনি

ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যায়, বেগুনি রং একসময় সাধারণের ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল। এটি শুধু রাজপরিবার, সম্রাট এবং উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের পোশাকের জন্যই বরাদ্দ থাকত। এর মূল কারণ ছিল এই রঙের দুষ্প্রাপ্যতা এবং উচ্চমূল্য। এখনো এই রংকে ক্ষমতা, উচ্চাকাঙ্ক্ষা আর ব্যক্তিগত আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবেই দেখা হয়। ২০২৬ সালে নিজের ব্যক্তিত্বকে দৃঢ়ভাবে প্রকাশ করতে এই রং হতে পারে এক অনবদ্য পছন্দ।

সূত্র: গ্ল্যামার ও অন্যান্য

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কফি দিয়ে তৈরি ডেজার্ট দিয়ে শুরু হোক নতুন বছর

ফিচার ডেস্ক
‘কেটো তিরামিসু মুস’ হতে পারে বিকেলের নাশতা বা ডিনারের পর এক দুর্দান্ত ডেজার্ট। ছবি: পেক্সেলস
‘কেটো তিরামিসু মুস’ হতে পারে বিকেলের নাশতা বা ডিনারের পর এক দুর্দান্ত ডেজার্ট। ছবি: পেক্সেলস

আর মাত্র এক দিন পর আসছে নতুন বছর। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে আমরা কতই না আয়োজন করে থাকি। এর একটি অংশের আয়োজন হয় রান্নাঘরে। অনেক কিছু না হোক, ব্যস্ত জীবন থেকে একটু সময় বের করে প্রিয়জনের সঙ্গে প্রিয় খাবার খেয়ে হলেও আমরা নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ভালোবাসি। কোনো কিছুর শুরু ভালো দিয়ে করতে চাইলে মিষ্টি খাওয়া ভালো। অনেকে এই ধারণায় এখনো বিশ্বাসী। কফি ও মিষ্টি খাবার খেতে যাঁরা ভালোবাসেন, তাঁদের জন্য থাকছে কফি দিয়ে তৈরি কিছু ডেজার্টের রেসিপি।

কফি মাফিন কেক

স্বাস্থ্যকর এবং দারুণ স্বাদের কফি মাফিন হতে পারে আপনার উদ্‌যাপনের সঙ্গী। এর জন্য দরকার—

১ কাপ সাধারণ ময়দা

আধা চা চামচ বেকিং সোডা

এক চিমটি লবণ

স্বাদ বাড়াতে সামান্য দারুচিনি গুঁড়া

১ টেবিল চামচ এসপ্রেসো বা কফি পাউডার

কোয়ার্টার কাপ টক দই

মিষ্টি প্রয়োজনমতো।

কোয়ার্টার কাপ কড়া লিকারের কফি

কোয়ার্টার কাপ সোডা ওয়াটার বা স্পার্কলিং ওয়াটার

মাখন গলিয়ে তাতে কফি বিন ভিজিয়ে রেখে কফি বাটার (ঐচ্ছিক) তৈরি করে নিন।

কফি দিয়ে তৈরি চটজলদি ডেজার্ট দিয়ে স্বাগত জানাতে পারেন নতুন বছরকে। ছবি: পেক্সেলস
কফি দিয়ে তৈরি চটজলদি ডেজার্ট দিয়ে স্বাগত জানাতে পারেন নতুন বছরকে। ছবি: পেক্সেলস

প্রস্তুত প্রণালি

ওভেন ২২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড (৪২৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট) তাপমাত্রায় প্রি-হিট করতে দিন। মাফিন টিনে সামান্য তেল বা মাখন ব্রাশ করে নিন। একটি বড় পাত্রে আটা, বেকিং সোডা, লবণ, দারুচিনি গুঁড়া এবং কফি পাউডার একসঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে নিন। আলাদা একটি পাত্রে টক দই, মধু এবং তৈরি করা কড়া লিকারের কফি মিশিয়ে নিন। শুকনো উপকরণের মিশ্রণে দই ও কফির মিশ্রণটি ঢালুন। এরপর এতে সোডা ওয়াটার যোগ করুন। খুব দ্রুত হালকা হাতে মেশান (বেশি ঘুঁটবেন না)। দেরি না করে দ্রুত ব্যাটারটি মাফিন টিনে ঢালুন। প্রথমে ২২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় ৫ মিনিট বেক করুন। এরপর তাপমাত্রা কমিয়ে ১৯০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড (৩৭৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট) করে আরও ৮-১০ মিনিট বেক করুন। একটি কাঠি মাফিনের ভেতর ঢুকিয়ে দেখুন, কাঠি পরিষ্কার বের হয়ে এলে বুঝবেন, মাফিন তৈরি। মাফিনগুলো ঠান্ডা হলে ওপরে কফি-মাখন বা ক্রিম চিজ লাগিয়ে সকালের নাশতায় উপভোগ করুন।

স্বাস্থ্যকর এবং দারুণ স্বাদের কফি মাফিন হতে পারে আপনার উদ্‌যাপনের সঙ্গী। ছবি: পেক্সেলস
স্বাস্থ্যকর এবং দারুণ স্বাদের কফি মাফিন হতে পারে আপনার উদ্‌যাপনের সঙ্গী। ছবি: পেক্সেলস

চকলেট কফি মউজ

মাত্র ৫টি উপকরণ দিয়ে কোনো জেলাটিন বা হেভি ক্রিম ছাড়াই শুধু ডিমের সাদা অংশ ব্যবহার করে তৈরি করতে পারেন কফি মউজ। উপকরণসমূহ—

১. ডার্ক চকলেট (৭০-৮০% কোকো হলে ভালো)।

২. ঘরোয়া তাপমাত্রায় থাকা ডিমের সাদা অংশ (ফ্রিজ থেকে ৩০ মিনিট আগে বের করে রাখা)।

৩. ১ টেবিল চামচ ম্যাপেল সিরাপ (মিষ্টি ও ক্যারামেল ফ্লেভারের জন্য)।

৪. আধা কাপ কড়া লিকারের কফি

৫. সাজানোর জন্য টাটকা বা ফ্রোজেন বেরি বা স্ট্রবেরি

প্রস্তুত প্রণালি (মাত্র ১০ মিনিটে)

একটি সস প্যানে অল্প আঁচে চকলেট গলিয়ে নিন। এতে ম্যাপেল সিরাপ ও কফি দিয়ে নাড়ুন। মসৃণ হয়ে গেলে চুলা থেকে নামিয়ে রাখুন। একটি পরিষ্কার কাচ বা মেটালের পাত্রে ডিমের সাদা অংশগুলো ইলেকট্রিক হুইস্ক দিয়ে বিট করুন, যতক্ষণ না এটি ঘন সাদা ফেনার মতো হয়। এবার গলানো চকলেটের মিশ্রণটি অল্প অল্প করে ডিমের সাদা অংশে যোগ করুন। একটি স্প্যাচুলা দিয়ে আলতো হাতে চকলেট এবং ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে নিন। খুব জোরে নাড়বেন না, তাহলে ফুরফুরে ভাব নষ্ট হয়ে যাবে। মিশ্রণটি ছোট ছোট গ্লাস বা কাপে ভাগ করে ঢালুন। ফ্রিজে অন্তত ৩০ মিনিট রাখুন। পুরো রাত রাখলে আরও ভালো টেক্সচার আসবে।

মাত্র ৫টি উপকরণ দিয়ে কোনো জেলাটিন বা হেভি ক্রিম ছাড়াই শুধু ডিমের সাদা অংশ ব্যবহার করে তৈরি করতে পারেন কফি মউজ। ছবি: দ্য বিগ ম্যান্স ওয়ার্ল্ড
মাত্র ৫টি উপকরণ দিয়ে কোনো জেলাটিন বা হেভি ক্রিম ছাড়াই শুধু ডিমের সাদা অংশ ব্যবহার করে তৈরি করতে পারেন কফি মউজ। ছবি: দ্য বিগ ম্যান্স ওয়ার্ল্ড

কেটো তিরামিসু মুস

তিরামিসু নিয়ে কিছু বিতর্ক আছে। তার মধ্যে একটি হলো তিরামিসু কি আসলে কেক? এর সহজ উত্তর হলো, সঠিক প্রণালিতে তিরামিসু তৈরি করে খেয়ে বোঝা। কেটো ডায়েট যাঁরা অনুসরণ করছেন, তাঁদের জন্য ‘কেটো তিরামিসু মুস’ হতে পারে বিকেলের নাশতা বা ডিনারের পর এক দুর্দান্ত ডেজার্ট। এটি যেমন দেখতে অভিজাত, খেতেও তেমনি ক্রিমি এবং রিচ। এসপ্রেসো কফি, মাস্কারপোন চিজ এবং কোকো পাউডারের স্তরে সাজানো এই মুসটি লো-কার্ব বা কম শর্করাযুক্ত ঘরানার।

প্রস্তুত প্রণালি

একটি বড় পাত্রে চিজ, হেভি হুইপিং ক্রিম, চিনির পরিবর্তে এরিথ্রিটল, এক চিমটি লবণ এবং এসপ্রেসো কফি একসঙ্গে নিন। একটি ইলেকট্রিক বিটার বা হ্যান্ড হুইস্ক দিয়ে মিশ্রণটিকে ততক্ষণ পর্যন্ত বিট করুন, যতক্ষণ না এটি ঘন এবং ফুরফুরে হয়ে ওঠে। এবার পরিবেশনের গ্লাস নিন। প্রথমে কিছুটা মাস্কারপোন মিশ্রণ দিন, তার ওপর সামান্য কোকো পাউডার ছিটিয়ে দিন। এভাবে কয়েকবার স্তর তৈরি করুন। সবশেষে ওপরে সামান্য এসপ্রেসো পাউডার ছিটিয়ে দিন এবং সুন্দর দেখানোর জন্য কয়েকটি কফি বিন বসিয়ে দিন। বানিয়েই পরিবেশন করতে পারেন অথবা ফ্রিজে রেখে কিছুটা ঠান্ডা করে উপভোগ করুন। যাঁরা খুব দ্রুত কিন্তু স্পেশাল কিছু তৈরি করতে চান, তাঁদের জন্য এটি পারফেক্ট। সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে পরিবেশনের গ্লাসে সাজিয়ে নিন এবং ওপরে কিছুটা এসপ্রেসো পাউডার ছিটিয়ে দিন। ব্যস, তৈরি হয়ে গেল চমৎকার স্বাদের এই মিষ্টি পদ। মিষ্টি, ক্রিমি এবং কফির ফ্লেভারের এই মেলবন্ধন এড়িয়ে যাওয়া সত্যিই অসম্ভব।

সূত্র: মাই শেফস এপ্রোন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জেন আলফা বদলে দিচ্ছে আগামীর খাদ্যাভ্যাস

ফিচার ডেস্ক
জেন আলফা আমাদের শেখাচ্ছে খাবার পরিবারকে কাছে আনার একটি মাধ্যম, পরিবেশকে রক্ষার হাতিয়ার এবং নিজের পরিচয়ের বহিঃপ্রকাশ। ছবি: পেক্সেলস
জেন আলফা আমাদের শেখাচ্ছে খাবার পরিবারকে কাছে আনার একটি মাধ্যম, পরিবেশকে রক্ষার হাতিয়ার এবং নিজের পরিচয়ের বহিঃপ্রকাশ। ছবি: পেক্সেলস

গেল বছর থেকে জেন-জিরা গোটা বিশ্বে ব্যাপক আলোচনায়। তাদের ফ্যাশন, স্টাইল, খাবার, চলাফেরা, কথা বলা, চিন্তা, ভ্রমণ নিয়ে হয়েছে নানান আলোচনা-সমালোচনা। তুলনা করতে গিয়ে কথা এসেছে অন্যান্য প্রজন্মের। এবার সেই জেন-জিদের পরের প্রজন্মের আলোচনায় আসা যাক। কারণ, ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া এই নতুন প্রজন্ম আমাদের চারপাশে ধীরে ধীরে বেড়ে উঠছে। যাদের আমরা বলছি ‘জেন আলফা’। বয়সে ছোট হলেও এখনই তারা আমাদের কেনাকাটা, খাদ্যাভ্যাস এবং সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিতে এক বিশাল পরিবর্তনের ঢেউ নিয়ে এসেছে। ২০২৯ সালের মধ্যে যখন এই প্রজন্মের একটি বড় অংশ প্রাপ্তবয়স্ক হবে, তখন বিশ্ববাজারে তাদের খরচ করার ক্ষমতা ৫.৫ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রযুক্তির সঙ্গে বেড়ে ওঠা এই প্রজন্ম কেবল মাউস বা স্ক্রিনেই দক্ষ নয়, তাদের খাবারের থালায় কী থাকবে, সেটিও তারা এখন থেকেই নিয়ন্ত্রণ করছে।

জেন আলফা আমাদের শেখাচ্ছে যে খাবার কেবল বেঁচে থাকার রসদ নয়। এটি পরিবারকে কাছে আনার একটি মাধ্যম, পরিবেশকে রক্ষার হাতিয়ার এবং নিজের পরিচয়ের বহিঃপ্রকাশ। ফার্ম থেকে টেবিল পর্যন্ত খাবারের প্রতিটি ধাপে এই সচেতন প্রজন্ম যে পরিবর্তন আনছে, তা আমাদের সবার জন্যই এক স্বাস্থ্যকর ও টেকসই ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিচ্ছে। তারা স্রেফ সস্তা বিজ্ঞাপন দেখে নয়, বরং নিজের ভালো লাগা এবং নৈতিক অবস্থান থেকেই ঠিক করছে তারা কী খাবে।

এই প্রজন্ম কেবল মাউস বা স্ক্রিনেই নয়, তাদের খাবারের থালায় কী থাকবে, সেটিও নিয়ন্ত্রণ করছে এখন থেকেই। ছবি: পেক্সেলস
এই প্রজন্ম কেবল মাউস বা স্ক্রিনেই নয়, তাদের খাবারের থালায় কী থাকবে, সেটিও নিয়ন্ত্রণ করছে এখন থেকেই। ছবি: পেক্সেলস

ছোট্ট কণ্ঠের বড় প্রভাব

আগেকার দিনে শিশুরা সাধারণত মা-বাবা যা পাতে দিতেন তাই খেত। হাতে গোনা কয়েকজন এমন হতো যারা, ‘আমি চাই’ বলার সাহস করত। তবে নিমিষেই তাদের ইচ্ছাকে দাবিয়ে দিতেন অভিভাবকেরা। জেন আলফার ক্ষেত্রে এই চিত্রটা ভিন্ন। বর্তমানে অভিভাবকেরা তাদের প্রতি অনেক বেশি নমনীয় এবং তারা সন্তানদের মতামতকে গুরুত্ব দেন। যুক্তরাজ্যের এক গবেষণা বলছে, ৬৩ শতাংশ মা-বাবা সন্তানদের পছন্দের ওপর ভিত্তি করে পরিবারের খাবারের তালিকা ঠিক করেন। ভারতেও প্রায় অর্ধেক মা-বাবা বিশ্বাস করেন যে তাঁদের সন্তানদের সিদ্ধান্তগুলো ভবিষ্যতে বড় পরিবর্তন আনবে। এটি কেবল একগুঁয়েমি নয়, নিজের ভালো-মন্দ বোঝার এক নতুন সচেতনতা। আধুনিক প্যারেন্টিং স্টাইল বা মা-বাবার দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের কারণে জেন আলফা এখন অনেক বেশি স্বাধীন।

শৈশব থেকেই সুস্বাস্থ্য ও পুষ্টির পাঠ

জেন আলফা প্রজন্মের কাছে ‘গাট হেলথ’ বা পেটের সুস্থতা একটি অত্যন্ত পরিচিত বিষয়। তারা প্রিবায়োটিক পানীয় এবং পুষ্টিসমৃদ্ধ স্ন্যাকসের কথা জেনেই বড় হচ্ছে। ফিটনেস ট্রেন্ডের কারণে হাই-প্রোটিন খাবারের চাহিদা বেড়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় গত এক দশকে প্রোটিন নিয়ে আলোচনার হার প্রতিবছর ১০ শতাংশ হারে বাড়ছে। এমনকি যুক্তরাজ্যের ‘বেলি বাগস’-এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলো অন্ত্রের অণুজীব বা মাইক্রোবায়োমকে ‘পোষা প্রাণীর’ মতো যত্ন নেওয়ার বিষয়টিকে গেমে রূপান্তর করেছে। ফলে ছোটবেলা থেকেই তারা বোঝে যে কোন খাবার শরীর ও মনের জ্বালানি হিসেবে কাজ করে। করোনা মহামারির পর থেকে পরিবারের এই স্বাস্থ্য সচেতনতা আরও বেড়েছে। ২০২৪ সালের তথ্য মতে, শিশুদের জন্য বাজারে আসা প্রতি তিনটি নতুন খাবারের একটিতে বাড়তি পুষ্টি বা নিউট্রিয়েন্টস যোগ করা হয়েছে। চীন ও যুক্তরাজ্যের অভিভাবকেরা ভিটামিন ও মিনারেল সাপ্লিমেন্টের দিকে ঝুঁকছেন, আর এই চাহিদা মেটাতে ব্র্যান্ডগুলো সাপ্লিমেন্টকে এখন ক্যান্ডি বা মুখরোচক স্ন্যাকসের মতো করে তৈরি করছে।

যুক্তরাজ্যে প্রায় অর্ধেক অভিভাবক বলছেন যে তাঁদের সন্তানেরা পরিবেশের কথা ভেবে প্রাণিজ খাবার কমিয়ে উদ্ভিজ্জ বা প্ল্যান্ট-বেজড খাবার খেতে উৎসাহিত হচ্ছে। ছবি: পেক্সেলস
যুক্তরাজ্যে প্রায় অর্ধেক অভিভাবক বলছেন যে তাঁদের সন্তানেরা পরিবেশের কথা ভেবে প্রাণিজ খাবার কমিয়ে উদ্ভিজ্জ বা প্ল্যান্ট-বেজড খাবার খেতে উৎসাহিত হচ্ছে। ছবি: পেক্সেলস

জলবায়ু সচেতনতা ও খাবারের নৈতিকতা

এই প্রজন্ম একটি জলবায়ু সংকটের মধ্যে জন্ম নিয়েছে। তাই পরিবেশের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা অনেক বেশি। তারা কেবল খাবারের স্বাদ দেখে না, তারা সেই ব্র্যান্ডের নৈতিকতা ও স্বচ্ছতাও বিচার করে। যুক্তরাজ্যে প্রায় অর্ধেক অভিভাবক বলছেন যে তাঁদের সন্তানেরা পরিবেশের কথা ভেবে প্রাণিজ খাবার কমিয়ে উদ্ভিজ্জ বা প্ল্যান্ট-বেজড খাবার খেতে উৎসাহিত হচ্ছে। ২০৫০ সাল নাগাদ যখন খাদ্যের চাহিদা ৫০ শতাংশ বাড়বে। তখন এই জেন আলফাই হয়তো ল্যাব-গ্রোন মিট (ল্যাবে তৈরি মাংস) বা জিনগতভাবে পরিবর্তিত শস্যকে স্বাভাবিক সমাধান হিসেবে গ্রহণ করবে। ইতিমধ্যে জার্মানির অর্ধেক অভিভাবক কৃত্রিমভাবে তৈরি টেকসই খাবার গ্রহণে আগ্রহী।

বৈচিত্র্যময় স্বাদ ও অভিজ্ঞতার খোঁজে

সোশ্যাল মিডিয়া এবং ফুড ডেলিভারি অ্যাপের কারণে জেন আলফার স্বাদ এখন বিশ্বজনীন। বাড়ির বাইরে না গিয়েই তারা বিশ্বের নানা প্রান্তের খাবারের স্বাদ নিচ্ছে। তাদের কাছে খাবার কেবল পেট ভরানোর মাধ্যম নয়, বরং একটি অভিজ্ঞতা। বিশেষ করে চীন ও জাপানে ‘ইমারসিভ ডাইনিং’ বা গল্পের মাধ্যমে খাবার পরিবেশনের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। ডিজিটাল যুগে বড় হলেও তারা বাস্তব জীবনের ছোঁয়া পেতে চায়, আর খাবার তাদের সেই সংযোগের সুযোগ করে দেয়।

বিদ্রোহী কিন্তু সচেতন

জেন আলফা পূর্ববর্তী জেন জি প্রজন্মের চেয়েও অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী এবং স্বতন্ত্র। তারা কেবল ট্রেন্ড অনুসরণ করে না, বরং তারা নিজেদের মূল্যবোধের সঙ্গে মিলে এমন ব্র্যান্ডই পছন্দ করে। যদিও অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং শৈশবকালীন স্থূলতার মতো চ্যালেঞ্জগুলো এখনো রয়ে গেছে, তবুও আশার কথা হলো ব্র্যান্ডগুলো এখন ‘নো অ্যাডেড সুগার’ বা চিনিহীন খাবারের দিকে ঝুঁকছে। ২০২৪ সালে এ ধরনের পণ্যের হার ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

সূত্র: শোবিজ ডেইলি, ফুড নেভিগেটর

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নতুন বছরে আপনার ঘরে আনুন সচেতন পরিবর্তন

ফিচার ডেস্ক
আপনার ছোট ছোট এই পদক্ষেপগুলোই ২০২৬ সালে আপনার ঘরকে করে তুলবে প্রাণবন্ত। ছবি: পেক্সেলস
আপনার ছোট ছোট এই পদক্ষেপগুলোই ২০২৬ সালে আপনার ঘরকে করে তুলবে প্রাণবন্ত। ছবি: পেক্সেলস

নতুন বছর মানেই নতুন শুরুর সতেজতা। আমরা অনেকেই চাই আমাদের জীবনযাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে। নতুন ডায়েট, নতুন জামা, নতুন বছর। ২০২৬ সালে আপনার সেই পরিবর্তনের কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে আপনার নিজের ঘর। বড় কোনো বিপ্লবের প্রয়োজন নেই। ছোট ছোট এবং চিন্তাশীল কিছু অভ্যাসই পারে আপনার ঘরকে আরও সবুজ ও টেকসই করে তুলতে। নতুন বছরে আপনার যাপিত জীবন ও গৃহকোণকে প্রকৃতিবান্ধব করতে সহজ কিছু সংকল্প গ্রহণ করতে পারেন। সেটা হতে পারে আপনার রান্নাঘরে বর্জ্য কমানো, ঘরের আসবাব কমিয়ে আনা কিংবা পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া। আপনার ছোট ছোট এই পদক্ষেপগুলোই ২০২৬ সালে আপনার ঘরকে করে তুলবে প্রাণবন্ত এবং পৃথিবীকে আরও সবুজ করে তুলবে।

রান্নাঘরে আনুন সচেতন পরিবর্তন

পরিবর্তনের শুরুটা হতে পারে আপনার রান্নাঘর থেকে। রান্নাঘরের বর্জ্য কমিয়ে পরিবেশবান্ধব করে তোলা মোটেও কঠিন কিছু নয়। ছোট ছোট কিছু স্মার্ট বদল আপনার রান্নাঘরকে দিতে পারে এক নতুন সজীবতা। যেমন খাবারের সতেজতা ধরে রাখতে প্লাস্টিকের ক্লিন ফিল্মের বদলে মৌমাছির মোমের তৈরি র‍্যাপ ব্যবহার করুন। এগুলো ধুয়ে বারবার ব্যবহার করা যায় এবং নষ্ট হলে অনায়াসেই মাটিতে মিশে যায়। স্যান্ডউইচ মোড়ানো বা বেঁচে যাওয়া খাবার ঢেকে রাখতে এটি সেরা। এমনকি সুতি কাপড়ে গলানো মোম লাগিয়ে আপনি নিজেই বাড়িতে এটি বানিয়ে নিতে পারেন।

অনেক টি-ব্যাগে ক্ষতিকর মাইক্রোপ্লাস্টিক থাকে। তাই টি-ব্যাগ বর্জন করে সরাসরি খোলা চা-পাতা ব্যবহার শুরু করুন। এতে চায়ের স্বাদ যেমন অটুট থাকে, তেমনি পরিবেশও বাঁচে। একবার ব্যবহারযোগ্য স্পঞ্জের বদলে কাঠের তৈরি ডিশ ব্রাশ এবং কম্পোস্টেবল (পচনশীল) ডিশ ক্লথ বা বাসন মোছার কাপড় ব্যবহার করুন। লিকুইড সাবানের প্লাস্টিক বোতলের ঝামেলা এড়াতে সলিড ডিশ সোপ ব্লক ব্যবহার করুন। এগুলো লিকুইড সাবানের মতোই কার্যকর কিন্তু প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি করে না। এই সামান্য পরিবর্তনগুলোই আপনার রান্নাঘরকে একটি টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব রূপ দিতে পারে। মৌসুমি ফল বা সবজি বেশি থাকলে তা সংরক্ষণের অভ্যাস গড়ে তুলুন। সবজি হালকা ভাপিয়ে ফ্রিজে রাখা কিংবা উদ্বৃত্ত ফল দিয়ে জ্যাম বা আচার তৈরি করা খাবার অপচয় রোধের অন্যতম সেরা উপায়।

রান্নাঘরের বর্জ্য কমিয়ে পরিবেশবান্ধব করে তোলা মোটেও কঠিন কিছু নয়। ছবি: পেক্সেলস
রান্নাঘরের বর্জ্য কমিয়ে পরিবেশবান্ধব করে তোলা মোটেও কঠিন কিছু নয়। ছবি: পেক্সেলস

পরিচ্ছন্নতায় আনুন প্রাকৃতিক সমাধান

বাজারের কড়া রাসায়নিকযুক্ত ক্লিনারের বদলে বেকিং সোডা এবং সাদা ভিনেগার ব্যবহার করুন। এগুলো দাগ দূর করতে এবং কার্পেট সতেজ রাখতে জাদুর মতো কাজ করে। অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সুগন্ধের জন্য জলে টি-ট্রি বা ল্যাভেন্ডার অয়েল মিশিয়ে স্প্রে তৈরি করুন। টিস্যু পেপারের বদলে বাঁশের তৈরি কাপড় বা মাইক্রোফাইবার ক্লথ ব্যবহার করুন। আপনার বাগানের পুরোনো কাঠের প্যালেট দিয়ে বেঞ্চ বা টেবিল বানিয়ে নিতে পারেন। পুরোনো আসবাবের ওপর স্রেফ রঙের এক পোঁচ দিলেই তার হারানো জেল্লা ফিরে আসে। নতুন কেনার আগে বাড়িতে থাকা জিনিসের সৃজনশীল ব্যবহার পরিবেশের জন্য দারুণ এক উপহার। শাকসবজির খোসা, ডিমের খোসা বা কফির তলানি না ফেলে দিয়ে তা থেকে জৈব সার তৈরি করুন। এটি আপনার ঘরের বর্জ্য বহুগুণ কমিয়ে দেবে এবং বাগানের মাটিকে দেবে প্রচুর পুষ্টি। জায়গার অভাব থাকলে ছোট কম্পোস্ট বিন বা ‘ওয়ার্মারি’ ব্যবহার করতে পারেন।

ঘর গোছানো হোক উদ্দেশ্যপূর্ণ

নতুন বছরে ঘর থেকে অপ্রয়োজনীয় জিনিস সরিয়ে ফেলা বা ‘ডিক্লাটারিং’ করাটা মনের জন্য বেশ স্বস্তিদায়ক হতে পারে। তবে পরিবেশের কথা মাথায় রাখলে, কোনো কিছু রিসাইকেল করার চেয়ে তার ব্যবহার কমিয়ে আনা বা অন্য কাজে লাগানো বেশি জরুরি। মনে রাখবেন টেকসই জীবনের মূলমন্ত্র হলো রিডিউস (কমানো), রিইউজ (পুনরায় ব্যবহার) এবং রিসাইকেল (পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ)। একটি পুরোনো কাঠের বাক্স অনায়াসেই গাছের টব বা স্টোরেজ বক্সে রূপান্তরিত হতে পারে। বন্ধুদের সঙ্গে পোশাক অদলবদল করুন অথবা চ্যারিটিতে দান করুন। সারা বছর পুদিনা, পার্সলে বা থাইম চাষ করে আপনি যেমন টাটকা স্বাদ পাবেন, তেমনি ঘরের বাতাসও থাকবে সতেজ। রোদ উজ্জ্বল জায়গায় এই ছোট ভেষজ বাগান (Herb garden) গড়ে তোলা সম্ভব। তবে মনে রাখবেন, পুদিনা খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, তাই একে আলাদা টবে রাখাই ভালো।

নতুন বছরে ঘর থেকে অপ্রয়োজনীয় জিনিস সরিয়ে ফেলা বা ‘ডিক্লাটারিং’ করাটা মনের জন্য বেশ স্বস্তিদায়ক হতে পারে। ছবি: পেক্সেলস
নতুন বছরে ঘর থেকে অপ্রয়োজনীয় জিনিস সরিয়ে ফেলা বা ‘ডিক্লাটারিং’ করাটা মনের জন্য বেশ স্বস্তিদায়ক হতে পারে। ছবি: পেক্সেলস

বাথরুম হোক প্লাস্টিকমুক্ত

প্লাস্টিক বর্জ্য কমানোর কথা উঠলে আমরা প্রায়ই বাথরুমের কথা ভুলে যাই। অথচ প্লাস্টিকমুক্ত জীবন শুরু করার জন্য এটিই সবচেয়ে সহজ জায়গা। ২০২৬ সালে আপনার বাথরুমকে প্লাস্টিকমুক্ত এবং স্টাইলিশ করে তুলতে এই ছোট পরিবর্তনগুলো করতে পারেন। প্লাস্টিকের টুথব্রাশ বা নখের ব্রাশের বদলে কাঠের ব্রাশ ব্যবহার শুরু করুন। এগুলো যেমন দীর্ঘস্থায়ী, তেমনি দেখতেও বেশ নান্দনিক। প্লাস্টিকের বোতলের ঝামেলা চিরতরে দূর করতে শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনারের বার (সাবানের মতো শক্ত বার) ব্যবহার করুন। এটি বাথরুম থেকে প্লাস্টিকের বোতলের স্তূপ কমাতে জাদুর মতো কাজ করে। একবার ব্যবহারযোগ্য বা ওয়ান-টাইম প্লাস্টিক রেজারের বদলে সেফটি রেজার কিংবা বাঁশের হাতলওয়ালা রেজার বেছে নিন। এগুলো অনেক বেশি টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব। এই সামান্য পরিবর্তনগুলো কেবল প্লাস্টিক বর্জ্যই কমাবে না, আপনার বাথরুমে যোগ করবে এক চমৎকার ‘ইকো-ফ্রেন্ডলি’ আভিজাত্য।

নতুন বছরে সাসটেইনেবল ইন্টেরিয়র টিপস

নতুন বছরে ঘরের সাজসজ্জায় পরিবর্তন আনতে চাইলে কিছু বাড়তি বিষয় মাথায় রাখতে পারেন:

এনার্জি অ্যাসেসমেন্ট: আপনার ঘরের বিদ্যুৎ খরচ কোথায় কমানো সম্ভব তা বুঝতে বিশেষজ্ঞের সহায়তা নিন।

সেকেন্ড-হ্যান্ড ফার্নিচার: নতুন আসবাবের বদলে পুরোনো বা অ্যান্টিক দোকান থেকে আসবাব সংগ্রহ করুন। এটি ঘরে একটি অনন্য আভিজাত্য যোগ করে।

গ্রে-ওয়াটার সিস্টেম: বাথরুমের ব্যবহৃত পানি বা বৃষ্টির পানি সংগ্রহ করে তা বাগানে ব্যবহারের কথা ভাবুন।

ঘর সংস্কারের সময় স্থানীয় জীববৈচিত্র্য এবং প্রাণিকুলের কথা মাথায় রেখে অ-বিষাক্ত উপাদান এবং নেটিভ গাছপালা ব্যবহার করুন।

সূত্র: কান্ট্রি লিভিং ম্যাগাজিন, আর্থ সায়েন্স ডিজাইন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত