Ajker Patrika

কারবালা

বিশ্বাসঘাতকতার বিপরীতে ইমানের জয়

মুফতি আবুল ফাতাহ কাসেমী
বিশ্বাসঘাতকতার বিপরীতে ইমানের জয়

কারবালা ইরাকের ফোরাত নদীর তীরে অবস্থিত একটি প্রান্তর, যেখানে ৬১ হিজরির মহররম মাসের ১০ তারিখে নবীনন্দিনী হজরত ফাতেমা (রা.)-এর আদরের দুলাল ইমাম হুসাইন (রা.) অত্যন্ত নির্মমভাবে শাহাদাতবরণ করেন। কারবালার ঘটনা ইতিহাসে এক বেদনাদায়ক অধ্যায়। এ ট্র্যাজেডির মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহর হৃদয়ে যে ক্ষত হয়েছে, তা যুগ যুগ ধরে নবীপ্রেমিক মুসলিমদের কাঁদিয়ে যাচ্ছে।

কারবালার মর্মান্তিক ইতিহাস হজরত হুসাইন (রা.)-এর শাহাদাতকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছিল। আর এর প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছিল ইয়াজিদকে খলিফা নিযুক্ত করার মাধ্যমে। হজরত মুআবিয়া (রা.) তাঁর জীবনের শেষ সময়ে তিনি পরবর্তী খলিফা কাকে নিযুক্ত করবেন এ বিষয়ে তৎকালীন বড় বড় সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়িনদের সঙ্গে পরামর্শ করেন। কিছু সাহাবির পরামর্শ ছিল তাঁর পুত্র ইয়াজিদের দিকে, আবার আবদুল্লাহ ইবনে উমর, আবদুল্লাহ ইবনে জুবাইর, সাইয়েদুনা ইমাম হুসাইন, আবদুর রহমান ইবনে আবি বকর প্রমুখের মতো প্রাজ্ঞ সাহাবিদের মত ছিল ভিন্ন। এ দুই পরামর্শের মধ্যে হজরত মুআবিয়া প্রথমটি গ্রহণ করেন। তবে ইয়াজিদের হাতে বাইয়াত গ্রহণ-বিষয়ক নিয়মে তিনি বিপরীত মতের সাহাবিদের সঙ্গে নরম ও ইনসাফ কায়েম করার আদেশও দেন। এবং মৃত্যুর পূর্বে হজরত মুআবিয়া (রা.) এ বিষয়ে তাঁর ছেলে ইয়াজিদকে বিশেষ অসিয়তও করে যান।

৬০ হিজরিতে হজরত মুআবিয়া (রা.) ইন্তেকাল করলে ইয়াজিদ শাসনভার গ্রহণ করে। এরপর সে আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে উয়াইসের মাধ্যমে সবার কাছে নিয়ম অনুযায়ী বাইয়াতের নির্দেশ দেয়। অপর দিকে আগে থেকেই কুফার গভর্নর ছিলেন নুমান ইবনে বাশির। মুআবিয়ার ইন্তেকালের পর কুফার জনগণ তার আনুগত্য থেকে বিরত থেকে হজরত হুসাইনের আনুগত্য করা ও তাঁর অধীনে চলার জন্য বিভিন্ন চিঠির মাধ্যমে তাঁকে কুফায় আসার আমন্ত্রণ জানান। কুফায় যাওয়ার বিষয়ে হুসাইন (রা.) তাঁর সঙ্গীদের সঙ্গে আলাপ করলে আবদুল্লাহ ইবনে উমরসহ অনেকেই তাঁকে কুফায় না যাওয়ার পরামর্শ দেন। কেননা ইতিপূর্বে তাঁর বাবা হজরত আলী (রা.)-এর শাহাদাতের পেছনে কুফাবাসীর হাত ছিল। কুফার লোকজন ওয়াদা রক্ষা করে না। তাঁর ভাইকেও আহত করেছিল। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাসও হজরত হুসাইনকে কুফায় সফর করতে নিষেধ করেন। তাঁর ভাই মুহাম্মদ ইবনে হানাফিয়াও তাঁকে নিষেধ করেছিলেন।

কিন্তু হজরত হুসাইন (রা.) ইজতিহাদ করে মনে করলেন ইয়াজিদ খলিফা হওয়ার উপযুক্ত নয়, তাই তিনি কুফার লোকজনের কথার ওপর ভরসা করে কুফায় যাওয়ার মনস্থ করেন। এ সময় কুফার বর্তমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার জন্য তিনি তাঁর চাচাতো ভাই ও ভগ্নিপতি মুসলিম ইবনে আকিলকে কুফায় প্রেরণ করেন। মুসলিম ইবনে আকিল কুফায় গেলে প্রায় ১২ হাজার কুফার বাসিন্দা তাঁর হাতে বাইয়াত হন এবং ইমাম হুসাইনকে (রা.) আসার জন্য তাঁর কাছে আবেদন করেন। পরে মুসলিম ইবনে আকিল চিঠি পাঠালে হজরত হুসাইন কুফায় রওনা হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেন।

শামের বাদশাহ ইয়াজিদ ইবনে মুআবিয়া দেখল, নুমান ইবনে বাশির কুফায় আসা মুসলিম ইবনে আকিলের প্রতি তেমন কঠোর না। তাই তাকে বরখাস্ত করে বসরার গভর্নর উবাইদুল্লাহ ইবনে জিয়াদকে কুফা ও বসরা উভয় এলাকায় গভর্নর বানায়। এরপর ইয়াজিদের পক্ষ থেকে মুসলিম ইবনে আকিলকে দ্রুত পাকড়াও করার নির্দেশ দেওয়া হয়। উবাইদুল্লাহ ইবনে জিয়াদ খোঁজখবর নিয়ে মুসলিম ইবনে আকিলকে পেয়ে শহীদ করে।

এদিকে হজরত হুসাইন (রা.) ৬০ হিজরিতে হজের এক দিন আগে কাফেলাসহ কুফার উদ্দেশে রওনা করেন। তিনি কাদেসিয়া নামক স্থানে এলে মুসলিম ইবনে আকিলের শাহাদাতের খবর শুনিয়ে হুর ইবনে ইয়াজিদ তামিমি তাঁকে কুফায় যেতে বারণ করেন। কিন্তু সে কাফেলায় থাকা মুসলিমের ভাই হজরত হুসাইনকে (রা.) মক্কায় ফিরে যেতে নিরুৎসাহিত করেন। এ ছাড়া তিনিও আত্মসম্মানের কারণে আগের সিদ্ধান্তে বহাল থাকেন। কাফেলায় তখন ৪৫ জন অশ্বারোহী এবং ১০০-র মতো পায়দল সফরকারী ছিলেন। রওনা হতে হতে ইতিমধ্যে তিনি ইরাকের ফুরাত নদীর কারবালা প্রান্তরে এসে পৌঁছান। এখানে ইয়াজিদ বাহিনীর পক্ষে ছিলেন আমর ইবনে সাদ। উভয়ে সামনাসামনি হলে এবং হজরত হুসাইন (রা.)-এর বাহিনীকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেললে তিনি আমর ইবনে সাদের সামনে তিনটি প্রস্তাব রাখেন। তিনি বলেন, ‘আমি তো যুদ্ধ করতে আসিনি, এমনকি ক্ষমতা দখলও আমার উদ্দেশ্য নয়। তোমরা আমাকে ডেকেছ বলে আমি এসেছি। এখন তোমরা কুফাবাসীরাই তোমাদের বাইয়াত পরিত্যাগ করছ। তাহলে আমাদের যেতে দাও, আমরা মদিনায় ফিরে যাই অথবা সীমান্তে কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করি। অন্যথায় ইয়াজিদের কাছে গিয়ে তার সঙ্গে বোঝাপড়া করি।’ কিন্তু হজরত হুসাইন (রা.)-কে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করতে আদেশ দেয় উবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদ। ঘৃণাভরে এ আদেশ প্রত্যাখ্যান করেন ইমাম হুসাইন (রা.)।

মহররমের ১০ তারিখে সকাল থেকে উবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদের নেতৃত্বে প্রায় ৪ হাজার ইয়াজিদ বাহিনী ইমাম হুসাইন (রা.)-এর ওপর আক্রমণ চালাতে থাকে। ইমাম হুসাইন (রা.) সঙ্গীদের নিয়ে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করতে থাকেন। এ লড়াইয়ে একমাত্র ছেলে হজরত জয়নুল আবেদিন (রহ.) ছাড়া পরিবারের শিশু, কিশোর, নারীসহ সবাই একে একে শাহাদাতবরণ করেন। শেষ পর্যন্ত অত্যন্ত নির্মম ও নির্দয়ভাবে ইমাম হুসাইন (রা.)-কে শহীদ করা হয়। সীমার নামক এক পাপিষ্ঠ নবীজির আদরের ফুল, হজরত ফাতেমার আদরের দুলাল, জান্নাতের যুবকদের সরদার হজরত হুসাইন (রা.)-এর মাথা দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। এ ছিল ইতিহাসের নির্মম এক অধ্যায়।

ইয়াজিদের এ ক্ষমতা বেশি দিন টিকে থাকেনি। মাত্র চার বছরের মধ্যে ইয়াজিদের মৃত্যু হয়। এর কয়েক দিনের মধ্যে মৃত্যু হয় তার পুত্রের। কারবালার এ মর্মান্তিক হত্যায় জড়িত প্রতিটি ব্যক্তি কয়েক বছরের মধ্যেই মুখতার সাকাফির বাহিনীর হাতে লজ্জাজনকভাবে নিহত হয়। এরপর ইয়াজিদের বংশের কেউ শাসনক্ষমতা লাভ করেনি। হজরত হুসাইন (রা.) আজও সত্য ও ন্যায়ের প্রতীক হয়ে মুসলিম উম্মাহর হৃদয়রাজ্যে বেঁচে আছেন। প্রতিটি মুমিন বিশ্বাস করে—কারবালায় ইমাম হুসাইন (রা.)-এর প্রাণ বিলিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে সেদিন বিজয় হয়েছিল সত্যের, বিজয় হয়েছিল ইমানের।

তথ্যসূত্র: ওয়াকেয়া কারবালা আওর উসকা পসে মানজর, সিরাতে হাসনাইন শারিফাইন

লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া কাসেম নানুতবী ঢাকা; খতিব, আয়েশা মসজিদ রামপুরা, ঢাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাজায় ৫০০ কোরআনের হাফেজকে রাজকীয় সংবর্ধনা

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

গাজা শহরের পশ্চিমে অবস্থিত আশ-শাতি শরণার্থীশিবিরে এক বিশাল কোরআনিক শোভাযাত্রা ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই আয়োজনে প্রায় ৫০০ জন পবিত্র কোরআনের হাফেজ ও হাফেজা অংশগ্রহণ করেন। দুই বছর ধরে ইসরায়েলি ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের কবলে পিষ্ট এই জনপদে শোভাযাত্রাটি আনন্দ ও উদ্‌যাপনের এক নতুন আমেজ নিয়ে আসে।

আইয়াদুল খাইর ফাউন্ডেশন এবং কুয়েতভিত্তিক চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশন আলিয়ার যৌথ উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ‘গাজা কোরআনের হাফেজদের মাধ্যমে প্রস্ফুটিত হচ্ছে’—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আয়োজিত হয় অনুষ্ঠানটি।

তাকবির ও তাহলিলের ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে আশ-শাতি শিবিরের ভেতর থেকে শোভাযাত্রাটি শুরু হয়। সুশৃঙ্খলভাবে হাফেজ ও হাফেজারা সারিবদ্ধ হয়ে এতে অংশ নেন। তাঁদের হাতে ছিল পবিত্র কোরআন, ফিলিস্তিনের জাতীয় পতাকা এবং ধৈর্য ও আশার প্রতীকসংবলিত নানা ফেস্টুন।

রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সাধারণ মানুষ করতালি ও দোয়ার মাধ্যমে এই গর্বের মুহূর্তের সঙ্গী হন। দীর্ঘদিনের বোমাবর্ষণ আর ধ্বংসস্তূপে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া রাস্তাগুলো এদিন এক স্বর্গীয় প্রশান্তি আর জন-উৎসবে রূপ নেয়।

অনুষ্ঠানের শেষে হাফেজ ও হাফেজাদের মধ্যে সম্মাননা সনদ ও বিশেষ উপহার বিতরণ করা হয়।

আয়োজকেরা জানান, গাজা উপত্যকার এই কঠিন বাস্তবতায় ধর্মীয় পরিচয় রক্ষা এবং নৈতিক মূল্যবোধকে জাগ্রত রাখাই ছিল এ সামাজিক উদ্যোগের প্রধান লক্ষ্য।

সূত্র: আল-আহেদ নিউজ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তাবলিগ জামাতের খুরুজের জোড় শুরু ২ জানুয়ারি

ইসলাম ডেস্ক 
তাবলিগ জামাতের শুরায়ি নেজামের জোড় ইজতেমা। ছবি: সংগৃহীত
তাবলিগ জামাতের শুরায়ি নেজামের জোড় ইজতেমা। ছবি: সংগৃহীত

আগামী ২, ৩ ও ৪ জানুয়ারি তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের (শুরায়ি নেজাম) ব্যবস্থাপনায় খুরুজের জোড় অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে প্রয়োজনীয় মাঠ প্রস্তুতির কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের (শুরায়ি নেজাম) মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান জানান, এই জোড়ে তাঁরাই অংশগ্রহণ করবেন, যাঁরা আল্লাহর রাস্তায় এক চিল্লা, তিন চিল্লা ও বিদেশ সফরের উদ্দেশ্যে বের হবেন এবং যাঁরা মেহনতের মাধ্যমে সাথিদের এই কাজে উদ্বুদ্ধ করে সঙ্গে নিয়ে আসবেন।

একটি মহল শুরায়ি নেজামের এই খুরুজের জোড়কে বিশ্ব ইজতেমা বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে জানিয়ে সবাইকে সতর্ক করে হাবিবুল্লাহ রায়হান বলেন, এটি কোনো ইজতেমা নয়; বরং সীমিত পরিসরে খুরুজের প্রস্তুতিমূলক জোড়।

এদিকে নির্ধারিত সময় অনুযায়ী টঙ্গীতে ৫৯তম বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের পর তা আয়োজন করা হবে। সরকারের এ সিদ্ধান্তের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ (শুরায়ি নেজাম) গত ৩ নভেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি দেশবাসীকে অবহিত করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আকাশপথে মুসলিম যাত্রীদের জন্য এমিরেটসের বিশেষ ব্যবস্থা

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আকাশপথে ভ্রমণরত মুসলিম যাত্রীদের ধর্মীয় প্রয়োজনীয়তা ও স্বাচ্ছন্দ্যকে গুরুত্ব দিয়ে নতুন উন্নত সংস্করণের পকেট জায়নামাজ চালু করেছে মধ্যপ্রাচ্যের বিমান সংস্থা এমিরেটস এয়ারলাইনস। আগের সংস্করণের তুলনায় জায়নামাজটি অধিক টেকসই ও আরামদায়ক হলেও এটি ওজনে হালকা এবং বহনে অত্যন্ত সুবিধাজনক।

এমিরেটস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের বহরের প্রতিটি ফ্লাইটে এখন থেকে এই বিশেষ পকেট জায়নামাজ পাওয়া যাবে। ফার্স্ট ক্লাস, বিজনেস ক্লাস কিংবা ইকোনমি—সব শ্রেণির যাত্রীদের জন্য এই সুবিধা উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। ফ্লাইট চলাকালে নামাজের প্রয়োজন হলে যাত্রীরা কর্তব্যরত কেবিন ক্রুদের কাছে অনুরোধ করলেই দ্রুত এই জায়নামাজ সরবরাহ করা হবে।

এমিরেটস কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, যাত্রীদের সর্বোচ্চ স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করতে জায়নামাজটির মান ও স্থায়িত্ব বৃদ্ধিতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

সূত্র: ইসলামিক ইনফরমেশন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শীতের টুপি পরে নামাজ আদায় করা যাবে কি?

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ১৯
ছবি: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি
ছবি: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি

শীতকালে প্রচণ্ড ঠান্ডার প্রকোপে অনেকেই কানটুপি, উলের টুপি কিংবা হুডি পরে থাকেন। এসব পরিধান করা অবস্থায় অনেক সময় নামাজের সময় হয়ে যায়। তাই নানা সময়ে মনে প্রশ্ন জাগে, শীতের টুপি বা হুডি পরে নামাজ আদায় করলে কি তা শুদ্ধ হবে?

ইসলামের বিধান হলো, নামাজে মাথা ঢাকা পুরুষের জন্য ফরজ নয়, বরং এটি নামাজের আদব ও সৌন্দর্যের অন্তর্ভুক্ত। রাসুলুল্লাহ (সা.) সাধারণত মাথা ঢেকেই নামাজ আদায় করতেন। আবু দাউদ শরিফে এসেছে, নবীজি (সা.) পাগড়ি পরিহিত অবস্থায় নামাজ আদায় করতেন। ফিকহের দৃষ্টিতে কানটুপি, উলের টুপি বা সাধারণ টুপি—সবই মাথা ঢাকার পোশাকের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং, শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে কানটুপি পরে নামাজ আদায় করা সম্পূর্ণ জায়েজ।

কানটুপি বা হুডি পরে নামাজ আদায় করার সময় একটি বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি—সেটি হলো সিজদা। সিজদার সময় কপাল সরাসরি মাটিতে বা জায়নামাজে লাগানো আবশ্যক। যদি টুপিটি এমনভাবে পরা হয়, যা কপালকে ঢেকে রাখে এবং মাটিতে কপাল ঠেকতে বাধা দেয়, তবে সিজদা অপূর্ণ থেকে যেতে পারে। তাই সিজদার সময় কপাল উন্মুক্ত রাখা উত্তম। তবে কপাল সামান্য আবৃত থাকলেও নামাজ হয়ে যাবে।

শীত থেকে বাঁচতে নাক-মুখ ঢেকে নামাজ আদায় করা অনুচিত। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া মুখ ঢেকে নামাজ আদায় করা মাকরুহ। তাই কান ও গলা আবৃত থাকলেও নাক-মুখ খোলা রাখা উচিত।

তাই শৈত্যপ্রবাহের সময় নিশ্চিন্তে কানটুপি পরা যাবে যদি টুপিটি পবিত্র (পাক-সাফ) হয়, এটি অহংকার বা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে না হয়ে কেবল শীত নিবারণের জন্য হয় এবং সিজদার সময় কপাল মাটিতে স্থাপনে কোনো বড় প্রতিবন্ধকতা তৈরি না করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত