আমজাদ ইউনুস
রাসুল (সা.) একবার বনি ইসরাইলের এক বৃদ্ধার ঘটনা শুনিয়েছিলেন। ওই নারীর সঙ্গে নবী মুসা (আ.)-এর সাক্ষাৎ হয়। তিনি মুসা (আ.)-এর একটি উপকার করেন। সেই উপকারের বিনিময়ে তিনি পার্থিব সম্পদ ও সুখকে প্রাধান্য দেননি। কোনো ধনসম্পদ ও স্বর্ণ-রুপা চাননি; বরং তিনি জান্নাতের উচ্চতম মর্যাদা লাভকে প্রাধান্য দিয়েছেন। নিচে হাদিসের আলোকে ঘটনাটি বর্ণনা করা হলো—
একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) এক বেদুইনের অতিথি হলেন। বেদুইন তাঁকে সম্মান জানালেন। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘হে বেদুইন, তোমার ইচ্ছা প্রকাশ করো।’
বেদুইন বলল, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমি যাতায়াতের জন্য একটি উট এবং আমার পরিবারের দুধপানের জন্য একটি দুগ্ধবতী ছাগল চাই।’
তিনি এ অনুরোধ দুইবার করলেন। তখন রাসুল (সা.) বললেন, ‘তুমি কি বনি ইসরাইলের বৃদ্ধার মতো হতে পারলে না?’
সাহাবিরা জানতে চাইলেন: ‘হে আল্লাহর রাসুল, বনি ইসরাইলের বৃদ্ধার ঘটনা কী?’
তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন—
মুসা (আ.) বনি ইসরাইলকে নিয়ে বের হওয়ার সময় পথ হারিয়ে ফেলেন। তখন বনি ইসরাইলের আলেমরা বললেন, ‘আমরা শুনেছি, ইউসুফ (আ.) আমাদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন যে আমরা যেন তাঁর দেহও আমাদের সঙ্গে নিয়ে যাই।’
মুসা (আ.) জিজ্ঞাসা করলেন: ‘তোমাদের মধ্যে কে জানে, ইউসুফ (আ.)-এর কবর কোথায়?’ তারা উত্তর দিল, ‘শুধু বনি ইসরাইলের এক বৃদ্ধা এটি জানেন।’
মুসা (আ.) বৃদ্ধাকে ডেকে পাঠালেন এবং বললেন: ‘আমাকে ইউসুফ (আ.)-এর কবর দেখিয়ে দাও।’
বৃদ্ধা বললেন, ‘আল্লাহর কসম, আমি তোমাকে তাঁর কবর দেখাব না, যতক্ষণ না তুমি আমাকে জান্নাতে তোমার সঙ্গী হওয়ার প্রতিশ্রুতি দাও!’
মুসা (আ.) প্রথমে তাঁর এ কথা পছন্দ করেননি। কিন্তু আল্লাহর পক্ষ থেকে বলা হলো, ‘তাঁকে তাঁর চাওয়া সম্মান দাও।’
এরপর বৃদ্ধা এক সরোবরের কাছে গিয়ে বললেন: ‘এই পানির নিচেই ইউসুফ (আ.)-এর দেহ আছে। পানিটা সরাও।’
তারা পানি সরিয়ে ফেলল, তারপর বৃদ্ধা বললেন: ‘এখন এখানে খনন করো।’
খনন করার পর ইউসুফ (আ.)-এর হাড় বেরিয়ে এলো। যখন তাঁর দেহ তুলে নেওয়া হলো, তখন পথ এমন আলোকিত হয়ে গেল, যেন দিবালোকে চলা হচ্ছে!’
(মুস্তাদরাক হাকিম, হাদিস: ৪০৮৮)
গল্পের ৫ শিক্ষা
উচ্চ মর্যাদা প্রার্থনা করা: রাসুল (সা.) সাহাবিদের এবং উম্মতকে উচ্চ মর্যাদা চাওয়ার জন্য উৎসাহিত করেছেন, যেমন এই বৃদ্ধা মুসা (আ.)-এর কাছে জান্নাতে তাঁর সঙ্গী হওয়ার আবেদন করেছিল। রাসুল (সা.) সাহাবিদের আল্লাহর কাছে ফিরদাউস (যা জান্নাতের সর্বোচ্চ ও মধ্যস্থল) প্রার্থনা করতে বলেছেন।
ইহুদিদের ইতিহাস সংক্রান্ত তথ্য প্রদান: রাসুল (সা.) ইহুদিদের এমন কিছু ঘটনা বর্ণনা করেছেন, যা আহলে কিতাবের মধ্যেও অনেকের জানা ছিল না। এই বৃদ্ধার কাহিনিও তার একটি উদাহরণ। তার মানে এটি আল্লাহ তাআলা তাঁকে জানিয়ে দিয়েছেন।
উচ্চ মানসিকতার মহীয়সী নারী: বনি ইসরাইলের মধ্যেও মহৎ চরিত্র ও উচ্চ আকাঙ্ক্ষার অধিকারী মহীয়সী নারী ছিলেন।
নবীদের দেহ অক্ষত থাকে: এখানে ‘ইউসুফ (আ.)-এর হাড় বলতে তাঁর সম্পূর্ণ দেহকে বোঝানো হয়েছে, কেবল হাড় নয়। অর্থাৎ, তাঁর দেহ অক্ষতই ছিল। এতে করে এই হাদিস রাসুল (সা.)-এর সেই বর্ণনার বিরোধিতা করে না, যেখানে তিনি বলেছেন যে, আল্লাহ মাটি বা জমিনকে নবীদের দেহ ভক্ষণ করতে নিষেধ করেছেন।
আল্লাহর অহির প্রতি শ্রদ্ধা: মুসা (আ.) প্রথমে বৃদ্ধার চাওয়া পূরণে দ্বিধাগ্রস্ত হলেও আল্লাহর নির্দেশের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বৃদ্ধার চাওয়া মেনে নিয়েছিলেন। এতে অহির প্রতি একজন নবীর শ্রদ্ধা ও ভক্তির বিষয়টি ফুটে ওঠে।
রাসুল (সা.) একবার বনি ইসরাইলের এক বৃদ্ধার ঘটনা শুনিয়েছিলেন। ওই নারীর সঙ্গে নবী মুসা (আ.)-এর সাক্ষাৎ হয়। তিনি মুসা (আ.)-এর একটি উপকার করেন। সেই উপকারের বিনিময়ে তিনি পার্থিব সম্পদ ও সুখকে প্রাধান্য দেননি। কোনো ধনসম্পদ ও স্বর্ণ-রুপা চাননি; বরং তিনি জান্নাতের উচ্চতম মর্যাদা লাভকে প্রাধান্য দিয়েছেন। নিচে হাদিসের আলোকে ঘটনাটি বর্ণনা করা হলো—
একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) এক বেদুইনের অতিথি হলেন। বেদুইন তাঁকে সম্মান জানালেন। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘হে বেদুইন, তোমার ইচ্ছা প্রকাশ করো।’
বেদুইন বলল, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমি যাতায়াতের জন্য একটি উট এবং আমার পরিবারের দুধপানের জন্য একটি দুগ্ধবতী ছাগল চাই।’
তিনি এ অনুরোধ দুইবার করলেন। তখন রাসুল (সা.) বললেন, ‘তুমি কি বনি ইসরাইলের বৃদ্ধার মতো হতে পারলে না?’
সাহাবিরা জানতে চাইলেন: ‘হে আল্লাহর রাসুল, বনি ইসরাইলের বৃদ্ধার ঘটনা কী?’
তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন—
মুসা (আ.) বনি ইসরাইলকে নিয়ে বের হওয়ার সময় পথ হারিয়ে ফেলেন। তখন বনি ইসরাইলের আলেমরা বললেন, ‘আমরা শুনেছি, ইউসুফ (আ.) আমাদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন যে আমরা যেন তাঁর দেহও আমাদের সঙ্গে নিয়ে যাই।’
মুসা (আ.) জিজ্ঞাসা করলেন: ‘তোমাদের মধ্যে কে জানে, ইউসুফ (আ.)-এর কবর কোথায়?’ তারা উত্তর দিল, ‘শুধু বনি ইসরাইলের এক বৃদ্ধা এটি জানেন।’
মুসা (আ.) বৃদ্ধাকে ডেকে পাঠালেন এবং বললেন: ‘আমাকে ইউসুফ (আ.)-এর কবর দেখিয়ে দাও।’
বৃদ্ধা বললেন, ‘আল্লাহর কসম, আমি তোমাকে তাঁর কবর দেখাব না, যতক্ষণ না তুমি আমাকে জান্নাতে তোমার সঙ্গী হওয়ার প্রতিশ্রুতি দাও!’
মুসা (আ.) প্রথমে তাঁর এ কথা পছন্দ করেননি। কিন্তু আল্লাহর পক্ষ থেকে বলা হলো, ‘তাঁকে তাঁর চাওয়া সম্মান দাও।’
এরপর বৃদ্ধা এক সরোবরের কাছে গিয়ে বললেন: ‘এই পানির নিচেই ইউসুফ (আ.)-এর দেহ আছে। পানিটা সরাও।’
তারা পানি সরিয়ে ফেলল, তারপর বৃদ্ধা বললেন: ‘এখন এখানে খনন করো।’
খনন করার পর ইউসুফ (আ.)-এর হাড় বেরিয়ে এলো। যখন তাঁর দেহ তুলে নেওয়া হলো, তখন পথ এমন আলোকিত হয়ে গেল, যেন দিবালোকে চলা হচ্ছে!’
(মুস্তাদরাক হাকিম, হাদিস: ৪০৮৮)
গল্পের ৫ শিক্ষা
উচ্চ মর্যাদা প্রার্থনা করা: রাসুল (সা.) সাহাবিদের এবং উম্মতকে উচ্চ মর্যাদা চাওয়ার জন্য উৎসাহিত করেছেন, যেমন এই বৃদ্ধা মুসা (আ.)-এর কাছে জান্নাতে তাঁর সঙ্গী হওয়ার আবেদন করেছিল। রাসুল (সা.) সাহাবিদের আল্লাহর কাছে ফিরদাউস (যা জান্নাতের সর্বোচ্চ ও মধ্যস্থল) প্রার্থনা করতে বলেছেন।
ইহুদিদের ইতিহাস সংক্রান্ত তথ্য প্রদান: রাসুল (সা.) ইহুদিদের এমন কিছু ঘটনা বর্ণনা করেছেন, যা আহলে কিতাবের মধ্যেও অনেকের জানা ছিল না। এই বৃদ্ধার কাহিনিও তার একটি উদাহরণ। তার মানে এটি আল্লাহ তাআলা তাঁকে জানিয়ে দিয়েছেন।
উচ্চ মানসিকতার মহীয়সী নারী: বনি ইসরাইলের মধ্যেও মহৎ চরিত্র ও উচ্চ আকাঙ্ক্ষার অধিকারী মহীয়সী নারী ছিলেন।
নবীদের দেহ অক্ষত থাকে: এখানে ‘ইউসুফ (আ.)-এর হাড় বলতে তাঁর সম্পূর্ণ দেহকে বোঝানো হয়েছে, কেবল হাড় নয়। অর্থাৎ, তাঁর দেহ অক্ষতই ছিল। এতে করে এই হাদিস রাসুল (সা.)-এর সেই বর্ণনার বিরোধিতা করে না, যেখানে তিনি বলেছেন যে, আল্লাহ মাটি বা জমিনকে নবীদের দেহ ভক্ষণ করতে নিষেধ করেছেন।
আল্লাহর অহির প্রতি শ্রদ্ধা: মুসা (আ.) প্রথমে বৃদ্ধার চাওয়া পূরণে দ্বিধাগ্রস্ত হলেও আল্লাহর নির্দেশের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বৃদ্ধার চাওয়া মেনে নিয়েছিলেন। এতে অহির প্রতি একজন নবীর শ্রদ্ধা ও ভক্তির বিষয়টি ফুটে ওঠে।
সহিহ হাদিসে এমন কিছু বিস্ময়কর ঘটনার কথা বলা আছে, যা অবিশ্বাস্য হলেও সত্য। কারণ তা আল্লাহর নবী হজরত মুহাম্মদ (আ.) সাহাবিদের কাছে বর্ণনা করেছেন। আর তিনি কখনো নিজ থেকে বানিয়ে কথা বলেন না, বরং আল্লাহর কাছ থেকে অহির ভিত্তিতেই বলেন।
১০ ঘণ্টা আগেআবু আলি আল-হুসাইন ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে সিনা (৯৮০–১০৩৭ খ্রিষ্টাব্দ) (পশ্চিমে ‘অ্যাভিসেনা’ নামে পরিচিত) ছিলেন ইসলামের সোনালি যুগের অন্যতম প্রতিভাধর ব্যক্তি। চিকিৎসা, দর্শন, গণিত, জ্যোতির্বিজ্ঞান, রসায়ন ও ইসলামি চিন্তায় ব্যাপক অবদান রেখেছেন তিনি।
১১ ঘণ্টা আগেইসলামের বিধানমতে, সাবালক হওয়ার আগ পর্যন্ত শিশুদের জন্য রোজা রাখা ফরজ বা জরুরি নয়। কেননা রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তিন শ্রেণির মানুষ থেকে ইসলামের বিধান পালনের আবশ্যকতা উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। এক. ঘুমন্ত ব্যক্তি, যতক্ষণ না সে জাগ্রত হয়, দুই. শিশু, যতক্ষণ না সে সাবালক হয় এবং তিন. পাগল, যতক্ষণ না সে সুস্থ হয়।’
১ দিন আগেপৃথিবীতে যেকোনো ধরনের অনাচার ও বিপর্যয় সৃষ্টি করা একটি ঘৃণিত কাজ। মহান আল্লাহর কাছে অপছন্দনীয় এবং সুস্থ স্বভাবের বিপরীত। বিপর্যয় সৃষ্টি করা, অনিষ্ট করা এবং অন্যায়ভাবে ধ্বংস সাধন করা ইসলাম কখনো সমর্থন করে না। ইসলাম মানবজাতিকে এক উন্নত নৈতিক চরিত্র ও আত্মনিয়ন্ত্রণের শিক্ষা দেয়।
১ দিন আগে