মুহাম্মদ ছফিউল্লাহ হাশেমী

মসজিদুল আকসা বায়তুল মোকাদ্দাস নামেও পরিচিত। জেরুজালেমে অবস্থিত মুসলমানদের প্রথম কিবলা। মহানবী (সা.)-কে আল্লাহ তাআলা মিরাজের রাতে প্রথমে মসজিদুল আকসায় নিয়ে যান। এরপর ঊর্ধ্ব আকাশ ভ্রমণ করান। মসজিদুল আকসা ও এর আশপাশের এলাকাটি অনেক নবী-রাসুলের স্মৃতিবিজড়িত স্থান। এখানে রয়েছে অসংখ্য নবী-রাসুলের সমাধি। মহানবী (সা.) এরশাদ করেছেন, ‘জেরুজালেমে এমন কোনো জায়গা নেই, যেখানে কোনো নবী সালাত আদায় করেননি বা কোনো ফেরেশতা দাঁড়াননি।’ (তিরমিজি)
মসজিদুল আকসার মোট সাতটি নাম রয়েছে। মসজিদুল আকসা, বায়তুল মোকাদ্দাস, আল-কুদস, মসজিদে ইলিয়া, সালাম, উরুশলেম ও ইয়াবুস। মসজিদুল আকসার নির্মাণ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়। একদল ইতিহাসবিদ মনে করেন, মসজিদুল আকসা মূলত হজরত আদম (আ.)-এর হাতে তৈরি হয়, যা পরবর্তী নবীরা পুনর্নির্মাণ ও সংস্কার করেন। আবার অনেকে মনে করেন, হজরত সুলায়মান (আ.) এই মসজিদ নির্মাণ করেন। তবে সঠিক তথ্য হলো, হজরত ইবরাহিম (আ.) কর্তৃক কাবাঘর নির্মাণের ৪০ বছর পর তাঁর দৌহিত্র হজরত ইয়াকুব (আ.) মসজিদুল আকসা নির্মাণ করেন।
হাদিস থেকে জানা যায়, হজরত আবু জর গিফারি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করি, ‘হে আল্লাহর রাসুল, প্রথম কোন মসজিদ নির্মিত হয়েছে?’ তিনি বলেন, ‘মসজিদুল হারাম।’ আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, ‘তারপর কোনটি?’ তিনি বললেন, ‘তারপর মসজিদুল আকসা।’ আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘উভয়ের মধ্যে ব্যবধান কত বছরের?’ তিনি বললেন, ‘৪০ বছরের।’ (ইবনে মাজাহ)
হজরত সুলায়মান (আ.) খ্রিষ্টপূর্ব ১০০৪ সালে আল-আকসা মসজিদের পুনর্নির্মাণ করেন। এই মসজিদ নির্মাণে ৩০ হাজার শ্রমিকের সাত বছর সময় লেগেছিল। তিনি খুব সুন্দর নকশায় মসজিদটি নির্মাণ করেন। পরবর্তী বিভিন্ন শাসকের সময় মসজিদে অতিরিক্ত অংশ যোগ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে গম্বুজ, আঙিনা, মিম্বার, মিহরাব, অভ্যন্তরীণ কাঠামো ইত্যাদি।
৬৩৮ খ্রিষ্টাব্দে ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা.)-এর খিলাফতকালে সাহাবি হজরত আবু ওবাইদা ইবনুল জাররাহ (রা.)-এর নেতৃত্বে পুরো বায়তুল মোকাদ্দাস এলাকা মুসলমানদের দখলে আসে। এরপর মুসলিম শাসকেরা কয়েকবার এ মসজিদের সংস্কার করেন। তবে ১০৯৯ সালের ১৫ জুলাই খ্রিষ্টান সেনাপতি গডফ্রে ডিবো ইউনের নেতৃত্বে খ্রিষ্টান ক্রুসেডাররা ফিলিস্তিন দখল করে নেওয়ার পর আল-আকসা মসজিদের ব্যাপক পরিবর্তন করে একে গির্জায় পরিণত করে। মসজিদের গম্বুজের ওপরে তারা ক্রুশ স্থাপন করে, মসজিদের এক অংশকে আস্তাবল বানায় এবং অন্য অংশে নিজেদের থাকার ব্যবস্থা করে।
এভাবে জেরুজালেমে ৪৬২ বছরের মুসলিম শাসনের পতন ঘটে। এরপর দীর্ঘ প্রতীক্ষা, পরাধীনতার শিকল ভেঙে মাথা তুলে দাঁড়ানোর জন্য মুসলিম জাতি অপেক্ষা করেছিল একজন মুক্তিদূতের। ১১৮৭ সালে হিত্তিনের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে মুসলিম বীর সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবি জেরুজালেম শহর মুসলমানদের অধিকারে নিয়ে আসেন। এ সময়ে আগের নকশা অনুযায়ী আল-আকসা মসজিদের পুনর্নির্মাণ করা হয়।
এরপর খ্রিষ্টশক্তি পিছু হটলেও ইহুদি চক্র বায়তুল মোকাদ্দাসের দিকে লোলুপদৃষ্টি রাখে। তারা ফিলিস্তিন থেকে নিয়ে সুদূর মদিনা পর্যন্ত সমগ্র মুসলিম এলাকা নিয়ে বৃহত্তর ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র করে বসে। ১৯৪৮ সালের ১৫ মে বেলফোর ঘোষণার মাধ্যমে ফিলিস্তিনে ইসরায়েল নামক রাষ্ট্রের জন্ম হয়। ১৯৬৭ সালের জুন মাসে মাত্র ছয় দিনের যুদ্ধে মিসর, সিরিয়া, জর্ডান ও ইরাক এই চারটি আরব দেশের প্রতিরোধব্যূহ ধ্বংস করে ইসরায়েল পূর্ব আল কুদস, পশ্চিম তীর, গাজা ও গোলান মালভূমি দখল করে নেয়। বর্তমানে দখলদার ইসরায়েল ঐতিহাসিক আল-আকসা মসজিদ দখল করে রেখেছে। ১৯৬৯ সালে তারা একবার আল-আকসা মসজিদে অগ্নিসংযোগও করেছিল।
বর্তমানে এ মসজিদে প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত। ইসরায়েলের মুসলিম বাসিন্দা এবং পূর্ব জেরুজালেমে বসবাসরত ফিলিস্তিনিরা মসজিদুল আকসায় প্রবেশ ও নামাজ আদায় করতে পারেন। আবার অনেক সময় বাধাও দেওয়া হয়। গাজার অধিবাসীদের জন্য বিধিনিষেধ অনেক বেশি কঠোর।
লেখক: কলেজশিক্ষক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক

মসজিদুল আকসা বায়তুল মোকাদ্দাস নামেও পরিচিত। জেরুজালেমে অবস্থিত মুসলমানদের প্রথম কিবলা। মহানবী (সা.)-কে আল্লাহ তাআলা মিরাজের রাতে প্রথমে মসজিদুল আকসায় নিয়ে যান। এরপর ঊর্ধ্ব আকাশ ভ্রমণ করান। মসজিদুল আকসা ও এর আশপাশের এলাকাটি অনেক নবী-রাসুলের স্মৃতিবিজড়িত স্থান। এখানে রয়েছে অসংখ্য নবী-রাসুলের সমাধি। মহানবী (সা.) এরশাদ করেছেন, ‘জেরুজালেমে এমন কোনো জায়গা নেই, যেখানে কোনো নবী সালাত আদায় করেননি বা কোনো ফেরেশতা দাঁড়াননি।’ (তিরমিজি)
মসজিদুল আকসার মোট সাতটি নাম রয়েছে। মসজিদুল আকসা, বায়তুল মোকাদ্দাস, আল-কুদস, মসজিদে ইলিয়া, সালাম, উরুশলেম ও ইয়াবুস। মসজিদুল আকসার নির্মাণ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়। একদল ইতিহাসবিদ মনে করেন, মসজিদুল আকসা মূলত হজরত আদম (আ.)-এর হাতে তৈরি হয়, যা পরবর্তী নবীরা পুনর্নির্মাণ ও সংস্কার করেন। আবার অনেকে মনে করেন, হজরত সুলায়মান (আ.) এই মসজিদ নির্মাণ করেন। তবে সঠিক তথ্য হলো, হজরত ইবরাহিম (আ.) কর্তৃক কাবাঘর নির্মাণের ৪০ বছর পর তাঁর দৌহিত্র হজরত ইয়াকুব (আ.) মসজিদুল আকসা নির্মাণ করেন।
হাদিস থেকে জানা যায়, হজরত আবু জর গিফারি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করি, ‘হে আল্লাহর রাসুল, প্রথম কোন মসজিদ নির্মিত হয়েছে?’ তিনি বলেন, ‘মসজিদুল হারাম।’ আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, ‘তারপর কোনটি?’ তিনি বললেন, ‘তারপর মসজিদুল আকসা।’ আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘উভয়ের মধ্যে ব্যবধান কত বছরের?’ তিনি বললেন, ‘৪০ বছরের।’ (ইবনে মাজাহ)
হজরত সুলায়মান (আ.) খ্রিষ্টপূর্ব ১০০৪ সালে আল-আকসা মসজিদের পুনর্নির্মাণ করেন। এই মসজিদ নির্মাণে ৩০ হাজার শ্রমিকের সাত বছর সময় লেগেছিল। তিনি খুব সুন্দর নকশায় মসজিদটি নির্মাণ করেন। পরবর্তী বিভিন্ন শাসকের সময় মসজিদে অতিরিক্ত অংশ যোগ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে গম্বুজ, আঙিনা, মিম্বার, মিহরাব, অভ্যন্তরীণ কাঠামো ইত্যাদি।
৬৩৮ খ্রিষ্টাব্দে ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা.)-এর খিলাফতকালে সাহাবি হজরত আবু ওবাইদা ইবনুল জাররাহ (রা.)-এর নেতৃত্বে পুরো বায়তুল মোকাদ্দাস এলাকা মুসলমানদের দখলে আসে। এরপর মুসলিম শাসকেরা কয়েকবার এ মসজিদের সংস্কার করেন। তবে ১০৯৯ সালের ১৫ জুলাই খ্রিষ্টান সেনাপতি গডফ্রে ডিবো ইউনের নেতৃত্বে খ্রিষ্টান ক্রুসেডাররা ফিলিস্তিন দখল করে নেওয়ার পর আল-আকসা মসজিদের ব্যাপক পরিবর্তন করে একে গির্জায় পরিণত করে। মসজিদের গম্বুজের ওপরে তারা ক্রুশ স্থাপন করে, মসজিদের এক অংশকে আস্তাবল বানায় এবং অন্য অংশে নিজেদের থাকার ব্যবস্থা করে।
এভাবে জেরুজালেমে ৪৬২ বছরের মুসলিম শাসনের পতন ঘটে। এরপর দীর্ঘ প্রতীক্ষা, পরাধীনতার শিকল ভেঙে মাথা তুলে দাঁড়ানোর জন্য মুসলিম জাতি অপেক্ষা করেছিল একজন মুক্তিদূতের। ১১৮৭ সালে হিত্তিনের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে মুসলিম বীর সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবি জেরুজালেম শহর মুসলমানদের অধিকারে নিয়ে আসেন। এ সময়ে আগের নকশা অনুযায়ী আল-আকসা মসজিদের পুনর্নির্মাণ করা হয়।
এরপর খ্রিষ্টশক্তি পিছু হটলেও ইহুদি চক্র বায়তুল মোকাদ্দাসের দিকে লোলুপদৃষ্টি রাখে। তারা ফিলিস্তিন থেকে নিয়ে সুদূর মদিনা পর্যন্ত সমগ্র মুসলিম এলাকা নিয়ে বৃহত্তর ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র করে বসে। ১৯৪৮ সালের ১৫ মে বেলফোর ঘোষণার মাধ্যমে ফিলিস্তিনে ইসরায়েল নামক রাষ্ট্রের জন্ম হয়। ১৯৬৭ সালের জুন মাসে মাত্র ছয় দিনের যুদ্ধে মিসর, সিরিয়া, জর্ডান ও ইরাক এই চারটি আরব দেশের প্রতিরোধব্যূহ ধ্বংস করে ইসরায়েল পূর্ব আল কুদস, পশ্চিম তীর, গাজা ও গোলান মালভূমি দখল করে নেয়। বর্তমানে দখলদার ইসরায়েল ঐতিহাসিক আল-আকসা মসজিদ দখল করে রেখেছে। ১৯৬৯ সালে তারা একবার আল-আকসা মসজিদে অগ্নিসংযোগও করেছিল।
বর্তমানে এ মসজিদে প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত। ইসরায়েলের মুসলিম বাসিন্দা এবং পূর্ব জেরুজালেমে বসবাসরত ফিলিস্তিনিরা মসজিদুল আকসায় প্রবেশ ও নামাজ আদায় করতে পারেন। আবার অনেক সময় বাধাও দেওয়া হয়। গাজার অধিবাসীদের জন্য বিধিনিষেধ অনেক বেশি কঠোর।
লেখক: কলেজশিক্ষক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক

সৌদি আরবের মক্কায় অবস্থিত মসজিদুল হারামে শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) জুমার নামাজে ইমামতি করবেন প্রখ্যাত আলেম শায়খ ড. আবদুর রহমান বিন আবদুল আজিজ আস-সুদাইস। একই দিনে মদিনায় অবস্থিত মসজিদে নববিতে জুমার নামাজ পড়াবেন খ্যাতনামা কারি শায়খ ড. আবদুল্লাহ বিন আবদুর রহমান আল-বুআইজান।
৪ ঘণ্টা আগে
সময়ের আবর্তনে আমাদের দোরগোড়ায় আবারও হাজির হয়েছে মহিমান্বিত আরবি মাস—রজব। হিজরি পঞ্জিকাবর্ষের সপ্তম এই মাসটি মুমিনের জীবনে এক পরম পুণ্যের বার্তা নিয়ে আসে। পরকালীন পাথেয় ও সওয়াব হাসিলের তরে রজব মাস এক বিশাল সুযোগের মোহনা, যা বিশেষভাবে সিয়াম সাধনার মাস রমজানের অগ্রিম আগমনী বার্তা ঘোষণা করে।
৮ ঘণ্টা আগে
হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ, প্রাপ্তি-বঞ্চনার দীর্ঘ পথ পেরিয়ে মানুষ যখন নতুন বছরে প্রবেশ করে, তখন অনুভূতির ভেতর এক অদ্ভুত দ্বন্দ্ব কাজ করে। একদিকে নতুন সূচনার আনন্দ, অন্যদিকে জীবন থেকে আরেকটি বছর অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার বেদনাবোধ। প্রতিটি অতিবাহিত বছর মানে নির্ধারিত হায়াতের একটি অংশ কমে যাওয়া।
৮ ঘণ্টা আগে
ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলামের আগমনী ইতিহাস সুদূর প্রাচীন ও বৈচিত্র্যময়। বিশেষত দক্ষিণ ভারতের কেরালা রাজ্য ইসলামের প্রাচীনতম স্থাপত্যের নিদর্শনের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। আরব সাগরের উপকূলবর্তী এই অঞ্চলে আরব বণিকদের নিয়মিত আগমনের সূত্রে ইসলামের প্রচার ও প্রসার ঘটেছিল। সেই ঐতিহাসিক সময়ের স্মৃতিচিহ্ন...
৮ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

সৌদি আরবের মক্কায় অবস্থিত মসজিদুল হারামে শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) জুমার নামাজে ইমামতি করবেন প্রখ্যাত আলেম শায়খ ড. আবদুর রহমান বিন আবদুল আজিজ আস-সুদাইস। একই দিনে মদিনায় অবস্থিত মসজিদে নববিতে জুমার নামাজ পড়াবেন খ্যাতনামা কারি শায়খ ড. আবদুল্লাহ বিন আবদুর রহমান আল-বুআইজান। সংবাদমাধ্যম দ্য ইসলামিক ইনফরমেশন এ তথ্য জানিয়েছে।
কে এই শায়খ ড. আবদুর রহমান আস-সুদাইস
মসজিদুল হারামের এ সপ্তাহের জুমার ইমাম শায়খ আবদুর রহমান বিন আবদুল আজিজ আস-সুদাইস বিশ্ব মুসলিমের কাছে অন্যতম জনপ্রিয় ইসলামি ব্যক্তিত্ব ও কারি। তিনি শায়খ আস-সুদাইস নামে ব্যাপক পরিচিত। আবেগঘন ও হৃদয়স্পর্শী কোরআন তিলাওয়াতের জন্য বিশ্বজুড়ে তাঁর খ্যাতি রয়েছে। তাঁর তিলাওয়াত শ্রোতাদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়।
শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইস ১৯৬০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরবের আল-কাসিম প্রদেশের আনাজা গোত্রে জন্মগ্রহণ করেছেন। শৈশব থেকেই ইসলামি শিক্ষায় মনোযোগী ছিলেন। আল-মুছানা বিন হারিস প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাধ্যমে তাঁর পড়াশোনা শুরু হয়। সেখানেই মাত্র ১২ বছর বয়সে কোরআনের হিফজ সম্পন্ন করেন তিনি।
১৯৭৯ সালে রিয়াদের সায়েন্টিফিক ইনস্টিটিউশন থেকে স্নাতক শেষ করেন এবং রিয়াদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শরিয়াহ বিষয়ে ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর ইমাম মুহাম্মদ বিন সৌদ ইসলামিক ইউনিভার্সিটি থেকে ইসলামি মূলনীতিতে মাস্টার্স এবং উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামিক শরিয়ায় পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইস ১৯৮৪ সালে মাত্র ২২ বছর বয়সে মসজিদুল হারামের ইমাম হিসেবে নিয়োগ পান। ওই বছরের জুলাই মাসে মসজিদুল হারামে প্রথমবার খুতবা প্রদান করেন। এরপর থেকে অনেকবার তারাবির নামাজে ইমামতি করেছেন।
শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইসকে ২০১২ সালে দুই পবিত্র মসজিদ (মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববি) বিষয়ক জেনারেল প্রেসিডেন্সির প্রেসিডেন্ট করা হয়। ২০১৬ সালে তাঁকে আবারও এই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। তাঁর নেতৃত্বে এই দুই পবিত্র স্থান ব্যবস্থাপনায় অসাধারণ উন্নতি হয়েছে।
শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইস টানা চার দশকের বেশি সময় কাবার ইমামের দায়িত্ব পালন করছেন। ২০২৩ সালে তিনি কাবার ইমাম হিসেবে ৪০ বছর পূর্ণ করেছেন।
অন্যদিকে, মসজিদে নববির এ সপ্তাহের জুমার ইমাম শায়খ ড. আবদুল্লাহ বিন আবদুর রহমান আল-বুআইজান সুললিত কণ্ঠে কোরআন তিলাওয়াতের জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিতি।
কে এই শায়খ ড. আবদুল্লাহ বিন আবদুর রহমান আল-বুআইজান
তাঁর পুরো নাম আবদুল্লাহ বিন আবদুর রহমান বিন সুলাইমান আল-বুআইজান আত-তামিমি। তিনি মসজিদে নববির সম্মানিত ইমাম ও খতিব এবং মদিনা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের শরিয়াহ অনুষদের একজন শিক্ষক। ১৪৩৪ হিজরির ৪ জিলহজ রাজকীয় ফরমানের মাধ্যমে তিনি মসজিদে নববির অফিশিয়াল ইমাম হিসেবে নিযুক্ত হন।
তিনি ১৪২২ হিজরিতে ইমাম মুহাম্মদ বিন সাউদ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের শরিয়াহ অনুষদ থেকে স্নাতক (বিএ) ডিগ্রি লাভ করেন। স্নাতক শেষ করার পর ১৪২২ হিজরি থেকে ১৪২৯ হিজরি পর্যন্ত তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ১৪২৬ হিজরিতে তিনি ‘উচ্চতর বিচার বিভাগীয় ইনস্টিটিউট’ (মাজহাদুল আলি লিল কাজা)-এর ‘সিয়াসাহ শারইয়্যাহ’ বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর (এমএ) ডিগ্রি অর্জন করেন।
এরপর তিনি কিং সাউদ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আল-খারজ প্রদেশের ‘কলেজ অব সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ’-এ লেকচারার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৪৩৪ হিজরিতে মসজিদে নববির ইমাম হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার পর তিনি মদিনা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় স্থানান্তরিত হন। অতঃপর ১৪৩৭ হিজরিতে ইমাম মুহাম্মদ বিন সাউদ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর বিচার বিভাগীয় ইনস্টিটিউট থেকে ‘সিয়াসাহ শারইয়্যাহ’ বিভাগে ‘মুমতাজ’ (এক্সিলেন্ট) গ্রেডসহ ডক্টরেট (পিএইচডি) ডিগ্রি লাভ করেন।
শায়খ আল-বুআইজান ইমাম আসিমের কিরাত অনুযায়ী হাফস রেওয়ায়েতে (শাতোবিইয়াহ্ পদ্ধতিতে) কোরআন তিলাওয়াতের বিশেষ সনদ বা ‘ইজাজাহ্’ লাভ করেছেন। তিনি এই ইজাজাহ্ গ্রহণ করেছেন ইমাম মুহাম্মদ বিন সাউদ বিশ্ববিদ্যালয়ের কিরাত শাস্ত্রের অধ্যাপক শায়খ প্রফেসর ড. ইবরাহিম বিন সাইদ আদ-দোসারির কাছ থেকে। এ ছাড়াও তিনি কিং ফাহাদ কোরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্সের বৈজ্ঞানিক কমিটির সদস্য মরহুম শায়খ আবদুল হাকিম বিন আবদুস সালাম খাতিরের কাছ থেকেও ইজাজাহ্প্রাপ্ত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববি মুসলিম বিশ্বের অন্যতম সম্মানিত ও পবিত্র স্থান। এই দুই মসজিদে নামাজ পড়ার বিশেষ ফজিলত রয়েছে। হজরত আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মসজিদে হারামে এক (ওয়াক্ত) নামাজ এক লাখ নামাজের সমান, আমার মসজিদে (মসজিদে নববি) এক ওয়াক্ত নামাজ এক হাজার (ওয়াক্ত) নামাজের সমান এবং বাইতুল মুকাদ্দাসে এক (ওয়াক্ত) নামাজ ৫০০ নামাজের সমান।’ (মাজমাউজ জাওয়াইদ: ৪/১১)
অন্য হাদিসে ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমার এ মসজিদে এক ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা মসজিদে হারাম ছাড়া অন্যান্য মসজিদে এক হাজার (ওয়াক্ত) নামাজ আদায় করার চেয়েও উত্তম। (সহিহ্ বুখারি: ১১৯০, সহিহ্ মুসলিম: ১৩৯৪)

সৌদি আরবের মক্কায় অবস্থিত মসজিদুল হারামে শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) জুমার নামাজে ইমামতি করবেন প্রখ্যাত আলেম শায়খ ড. আবদুর রহমান বিন আবদুল আজিজ আস-সুদাইস। একই দিনে মদিনায় অবস্থিত মসজিদে নববিতে জুমার নামাজ পড়াবেন খ্যাতনামা কারি শায়খ ড. আবদুল্লাহ বিন আবদুর রহমান আল-বুআইজান। সংবাদমাধ্যম দ্য ইসলামিক ইনফরমেশন এ তথ্য জানিয়েছে।
কে এই শায়খ ড. আবদুর রহমান আস-সুদাইস
মসজিদুল হারামের এ সপ্তাহের জুমার ইমাম শায়খ আবদুর রহমান বিন আবদুল আজিজ আস-সুদাইস বিশ্ব মুসলিমের কাছে অন্যতম জনপ্রিয় ইসলামি ব্যক্তিত্ব ও কারি। তিনি শায়খ আস-সুদাইস নামে ব্যাপক পরিচিত। আবেগঘন ও হৃদয়স্পর্শী কোরআন তিলাওয়াতের জন্য বিশ্বজুড়ে তাঁর খ্যাতি রয়েছে। তাঁর তিলাওয়াত শ্রোতাদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়।
শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইস ১৯৬০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরবের আল-কাসিম প্রদেশের আনাজা গোত্রে জন্মগ্রহণ করেছেন। শৈশব থেকেই ইসলামি শিক্ষায় মনোযোগী ছিলেন। আল-মুছানা বিন হারিস প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাধ্যমে তাঁর পড়াশোনা শুরু হয়। সেখানেই মাত্র ১২ বছর বয়সে কোরআনের হিফজ সম্পন্ন করেন তিনি।
১৯৭৯ সালে রিয়াদের সায়েন্টিফিক ইনস্টিটিউশন থেকে স্নাতক শেষ করেন এবং রিয়াদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শরিয়াহ বিষয়ে ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর ইমাম মুহাম্মদ বিন সৌদ ইসলামিক ইউনিভার্সিটি থেকে ইসলামি মূলনীতিতে মাস্টার্স এবং উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামিক শরিয়ায় পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইস ১৯৮৪ সালে মাত্র ২২ বছর বয়সে মসজিদুল হারামের ইমাম হিসেবে নিয়োগ পান। ওই বছরের জুলাই মাসে মসজিদুল হারামে প্রথমবার খুতবা প্রদান করেন। এরপর থেকে অনেকবার তারাবির নামাজে ইমামতি করেছেন।
শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইসকে ২০১২ সালে দুই পবিত্র মসজিদ (মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববি) বিষয়ক জেনারেল প্রেসিডেন্সির প্রেসিডেন্ট করা হয়। ২০১৬ সালে তাঁকে আবারও এই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। তাঁর নেতৃত্বে এই দুই পবিত্র স্থান ব্যবস্থাপনায় অসাধারণ উন্নতি হয়েছে।
শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইস টানা চার দশকের বেশি সময় কাবার ইমামের দায়িত্ব পালন করছেন। ২০২৩ সালে তিনি কাবার ইমাম হিসেবে ৪০ বছর পূর্ণ করেছেন।
অন্যদিকে, মসজিদে নববির এ সপ্তাহের জুমার ইমাম শায়খ ড. আবদুল্লাহ বিন আবদুর রহমান আল-বুআইজান সুললিত কণ্ঠে কোরআন তিলাওয়াতের জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিতি।
কে এই শায়খ ড. আবদুল্লাহ বিন আবদুর রহমান আল-বুআইজান
তাঁর পুরো নাম আবদুল্লাহ বিন আবদুর রহমান বিন সুলাইমান আল-বুআইজান আত-তামিমি। তিনি মসজিদে নববির সম্মানিত ইমাম ও খতিব এবং মদিনা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের শরিয়াহ অনুষদের একজন শিক্ষক। ১৪৩৪ হিজরির ৪ জিলহজ রাজকীয় ফরমানের মাধ্যমে তিনি মসজিদে নববির অফিশিয়াল ইমাম হিসেবে নিযুক্ত হন।
তিনি ১৪২২ হিজরিতে ইমাম মুহাম্মদ বিন সাউদ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের শরিয়াহ অনুষদ থেকে স্নাতক (বিএ) ডিগ্রি লাভ করেন। স্নাতক শেষ করার পর ১৪২২ হিজরি থেকে ১৪২৯ হিজরি পর্যন্ত তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ১৪২৬ হিজরিতে তিনি ‘উচ্চতর বিচার বিভাগীয় ইনস্টিটিউট’ (মাজহাদুল আলি লিল কাজা)-এর ‘সিয়াসাহ শারইয়্যাহ’ বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর (এমএ) ডিগ্রি অর্জন করেন।
এরপর তিনি কিং সাউদ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আল-খারজ প্রদেশের ‘কলেজ অব সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ’-এ লেকচারার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৪৩৪ হিজরিতে মসজিদে নববির ইমাম হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার পর তিনি মদিনা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় স্থানান্তরিত হন। অতঃপর ১৪৩৭ হিজরিতে ইমাম মুহাম্মদ বিন সাউদ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর বিচার বিভাগীয় ইনস্টিটিউট থেকে ‘সিয়াসাহ শারইয়্যাহ’ বিভাগে ‘মুমতাজ’ (এক্সিলেন্ট) গ্রেডসহ ডক্টরেট (পিএইচডি) ডিগ্রি লাভ করেন।
শায়খ আল-বুআইজান ইমাম আসিমের কিরাত অনুযায়ী হাফস রেওয়ায়েতে (শাতোবিইয়াহ্ পদ্ধতিতে) কোরআন তিলাওয়াতের বিশেষ সনদ বা ‘ইজাজাহ্’ লাভ করেছেন। তিনি এই ইজাজাহ্ গ্রহণ করেছেন ইমাম মুহাম্মদ বিন সাউদ বিশ্ববিদ্যালয়ের কিরাত শাস্ত্রের অধ্যাপক শায়খ প্রফেসর ড. ইবরাহিম বিন সাইদ আদ-দোসারির কাছ থেকে। এ ছাড়াও তিনি কিং ফাহাদ কোরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্সের বৈজ্ঞানিক কমিটির সদস্য মরহুম শায়খ আবদুল হাকিম বিন আবদুস সালাম খাতিরের কাছ থেকেও ইজাজাহ্প্রাপ্ত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববি মুসলিম বিশ্বের অন্যতম সম্মানিত ও পবিত্র স্থান। এই দুই মসজিদে নামাজ পড়ার বিশেষ ফজিলত রয়েছে। হজরত আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মসজিদে হারামে এক (ওয়াক্ত) নামাজ এক লাখ নামাজের সমান, আমার মসজিদে (মসজিদে নববি) এক ওয়াক্ত নামাজ এক হাজার (ওয়াক্ত) নামাজের সমান এবং বাইতুল মুকাদ্দাসে এক (ওয়াক্ত) নামাজ ৫০০ নামাজের সমান।’ (মাজমাউজ জাওয়াইদ: ৪/১১)
অন্য হাদিসে ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমার এ মসজিদে এক ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা মসজিদে হারাম ছাড়া অন্যান্য মসজিদে এক হাজার (ওয়াক্ত) নামাজ আদায় করার চেয়েও উত্তম। (সহিহ্ বুখারি: ১১৯০, সহিহ্ মুসলিম: ১৩৯৪)

মসজিদুল আকসা বায়তুল মোকাদ্দাস নামেও পরিচিত। জেরুজালেমে অবস্থিত মুসলমানদের প্রথম কিবলা। মহানবী (সা.)-কে আল্লাহ তাআলা মিরাজের রাতে প্রথমে মসজিদুল আকসায় নিয়ে যান। এরপর ঊর্ধ্ব আকাশ ভ্রমণ করান। মসজিদুল আকসা ও এর আশপাশের এলাকাটি অনেক নবী-রাসুলের স্মৃতিবিজড়িত স্থান। এখানে রয়েছে অসংখ্য নবী-রাসুলের সমাধি।
২০ অক্টোবর ২০২৩
সময়ের আবর্তনে আমাদের দোরগোড়ায় আবারও হাজির হয়েছে মহিমান্বিত আরবি মাস—রজব। হিজরি পঞ্জিকাবর্ষের সপ্তম এই মাসটি মুমিনের জীবনে এক পরম পুণ্যের বার্তা নিয়ে আসে। পরকালীন পাথেয় ও সওয়াব হাসিলের তরে রজব মাস এক বিশাল সুযোগের মোহনা, যা বিশেষভাবে সিয়াম সাধনার মাস রমজানের অগ্রিম আগমনী বার্তা ঘোষণা করে।
৮ ঘণ্টা আগে
হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ, প্রাপ্তি-বঞ্চনার দীর্ঘ পথ পেরিয়ে মানুষ যখন নতুন বছরে প্রবেশ করে, তখন অনুভূতির ভেতর এক অদ্ভুত দ্বন্দ্ব কাজ করে। একদিকে নতুন সূচনার আনন্দ, অন্যদিকে জীবন থেকে আরেকটি বছর অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার বেদনাবোধ। প্রতিটি অতিবাহিত বছর মানে নির্ধারিত হায়াতের একটি অংশ কমে যাওয়া।
৮ ঘণ্টা আগে
ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলামের আগমনী ইতিহাস সুদূর প্রাচীন ও বৈচিত্র্যময়। বিশেষত দক্ষিণ ভারতের কেরালা রাজ্য ইসলামের প্রাচীনতম স্থাপত্যের নিদর্শনের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। আরব সাগরের উপকূলবর্তী এই অঞ্চলে আরব বণিকদের নিয়মিত আগমনের সূত্রে ইসলামের প্রচার ও প্রসার ঘটেছিল। সেই ঐতিহাসিক সময়ের স্মৃতিচিহ্ন...
৮ ঘণ্টা আগেমুফতি এনায়েতুল্লাহ ফাহাদ

সময়ের আবর্তনে আমাদের দোরগোড়ায় আবারও হাজির হয়েছে মহিমান্বিত আরবি মাস—রজব। হিজরি পঞ্জিকাবর্ষের সপ্তম এই মাসটি মুমিনের জীবনে এক পরম পুণ্যের বার্তা নিয়ে আসে। পরকালীন পাথেয় ও সওয়াব হাসিলের তরে রজব মাস এক বিশাল সুযোগের মোহনা, যা বিশেষভাবে সিয়াম সাধনার মাস রমজানের অগ্রিম আগমনী বার্তা ঘোষণা করে। আধ্যাত্মিক পরিভাষায় এই রজব যেন আমলের বসন্ত; যে বসন্তের স্নিগ্ধ হাওয়ায় মুমিন হৃদয় হয়ে ওঠে সবুজ ও সজীব। জান্নাতি খুশবুর ঘ্রাণে মাতোয়ারা মুমিনের মন দুলতে থাকে রবের একান্ত প্রেমে। রজব যেন দিগন্তের আকাশে ভেসে বেড়ানো রহমতের মেঘমালা, যা আল্লাহর তৃষ্ণার্ত বান্দার হৃদয়কে মহান প্রভুর করুণার সুশীতল ছায়ায় পরম মমতায় ঢেকে দেয়। এভাবে প্রতিটি মুমিন হৃদয়ে রজব মাস হয়ে ওঠে ইবাদত ও আনুগত্যের এক অনন্য ঋতু।
রজব মাসের মাহাত্ম্য
রজব মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনস্বীকার্য। এর প্রধান কারণ হলো, এই মাসকে মহান আল্লাহ এবং তাঁর প্রিয় রাসুল (সা.) বিশেষভাবে সম্মানিত বলে ঘোষণা করেছেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ‘আশহুরুল হুরুম’ বা সম্মানিত যে চারটি মাসের কথা উল্লেখ করেছেন, রজব তার মধ্যে অন্যতম। ইরশাদ হয়েছে—‘নিশ্চয় আসমান ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকেই মহান আল্লাহর বিধান ও গণনায় মাসের সংখ্যা বারোটি। এর মধ্যে চার মাস সম্মানিত। এটাই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান। সুতরাং এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি অন্যায় করে নিজেদের ক্ষতিগ্রস্ত কোরো না।’ (সুরা তাওবা: ৩৬)
হাদিস শরিফেও এই সম্মানিত মাসগুলোর বিবরণ চমৎকারভাবে বর্ণিত হয়েছে। হজরত আবু বকর (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন—‘বছর হচ্ছে বারো মাস। এর মধ্যে চার মাস হারাম বা নিষিদ্ধ। তিনটি ধারাবাহিক: জিলকদ, জিলহজ ও মহররম; আর অন্যটি হলো (মুদার গোত্রের) রজব মাস, যা জুমাদাল উখরা ও শাবান মাসের মধ্যবর্তী সময়ে অবস্থিত।’ (সহিহ বুখারি: ৪৬৬২, সহিহ মুসলিম: ১৬৭৯)
রজব: রমজানের প্রস্তুতির সুবর্ণ সময়
রজব মাস থেকেই মূলত আমাদের কাঙ্ক্ষিত রমজানের প্রস্তুতি শুরু হওয়া উচিত। কেননা রজবের পরেই আসবে শাবান, আর এই দুই মাসের প্রহরগুলো গড়ালেই শুরু হবে সিয়াম সাধনার পবিত্র মাস—রমজান। রমজানের সেই সুকঠিন ও মহান সাধনার গুরুত্ব বিবেচনা করে দুই মাস আগে রজব থেকেই এর মানসিক ও আধ্যাত্মিক প্রস্তুতি গ্রহণের কথা হাদিসে গুরুত্বের সঙ্গে বলা হয়েছে। তাই তো রজব মাসের চাঁদ উদিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রাসুলুল্লাহ (সা.) এই দোয়াটি পাঠ করতেন—‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রাজাবা ওয়া শাবানা ওয়া বাল্লিগনা রামাদান।’ অর্থাৎ: ‘হে আল্লাহ, রজব ও শাবান মাসে আমাদের জন্য বরকত দান করুন এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত জীবিত রাখুন (রমজানে পৌঁছিয়ে দিন)।’ (মুসনাদে আহমদ: ২৩৪৬)
রমজানের পূর্ণ বরকত পেতে হলে প্রয়োজন শারীরিক, মানসিক ও অর্থনৈতিক সুপরিকল্পিত প্রস্তুতি। রমজানে যেহেতু ইবাদত, আহার ও নিদ্রার সময়সূচিতে আমূল পরিবর্তন আসে, তাই আমাদের উচিত এ রজব মাস থেকেই নফল রোজা রাখার মাধ্যমে নিজেকে অভ্যস্ত করে তোলা। হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী, নবীজি (সা.) রমজান ছাড়া সবচেয়ে বেশি নফল রোজা রাখতেন শাবান মাসে, আর এর প্রস্তুতি শুরু হতো রজব থেকে। উম্মুল মুমিনিন হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) বলেন, ‘রজব মাস এলে আমরা নবীজি (সা.)-এর বিশেষ আমল ও ইবাদত দেখে তা অনুভব করতে পারতাম।’ (সহিহ মুসলিম: ১৪৪৩)
তিলাওয়াত ও আধ্যাত্মিক অনুশীলন
কেবল রোজা নয়, বরং পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত ও এর চর্চায় মনোযোগী হওয়া রজব মাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। কোরআন তিলাওয়াত শেখা, অশুদ্ধি সংশোধন করা, নামাজের প্রয়োজনীয় সুরা-কিরাত এবং দোয়া-দরুদগুলো ভালোভাবে আয়ত্ত করা এ সময়ে অত্যন্ত জরুরি। এতে করে রমজানের পবিত্র দিনগুলোতে আমল করা অনেক সহজ ও সাবলীল হয়ে ওঠে। বিখ্যাত তাফসিরগ্রন্থগুলোতে এসেছে যে এই সম্মানিত মাসগুলোর বিশেষত্ব হলো—এতে অধিক ইবাদত ও নেক আমলের অনুশীলন করলে বছরের বাকি মাসগুলোতেও ইবাদতের প্রতি একনিষ্ঠতা বজায় রাখা সহজ হয়ে যায়। (আহকামুল কোরআন: খণ্ড ২, পৃ. ১১১)
সতর্কতা ও বিশেষ আমল
আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন যে আইয়ামে বিজ (চাঁদের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ) এবং প্রতি সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবারের নফল রোজা ব্যতীত রজব মাসে আলাদাভাবে বিশেষ কোনো তারিখ বা দিনে সুনির্দিষ্ট রোজার আমল নেই। তবে রমজানের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে আমরা যেকোনো নিষিদ্ধ সময় ব্যতীত নফল রোজা রাখতে পারি। যেহেতু রজব ‘আশহুরুল হুরুম’ বা সম্মানিত মাসের অন্তর্ভুক্ত, তাই এ সময়ে সম্পাদিত নেক আমলের বিপরীতে মহান আল্লাহর কাছে অধিক সওয়াবের আশা করা যায়। মুস্তাহাব আমল হিসেবে এই হারাম মাসগুলোতে রোজা রাখার সপক্ষে নবীজি (সা.)-এর একটি হাদিস পাওয়া যায়। রাসুল (সা.) বলেন, ‘সম্মানিত মাসগুলোতে রোজা রাখো এবং রোজা ভঙ্গও কোরো (অর্থাৎ বিরতি দিয়ে দিয়ে নফল রোজা রাখো)।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২৪২৪)
হাদিসের বর্ণনায় রজবের আরও একটি শ্রেষ্ঠ আমলের কথা এসেছে—তা হলো দোয়া। রাসুল (সা.)-এর ভাষ্য অনুযায়ী ‘দোয়া হলো ইবাদতের মগজ’। তাই আমলের এই বসন্তলগ্নে আমাদের উচিত অধিক পরিমাণে কায়মনোবাক্যে প্রভুর দরবারে রোনাজারি করা।
লেখক: খতিব, সোনার বাংলা জামে মসজিদ, কুষ্টিয়া

সময়ের আবর্তনে আমাদের দোরগোড়ায় আবারও হাজির হয়েছে মহিমান্বিত আরবি মাস—রজব। হিজরি পঞ্জিকাবর্ষের সপ্তম এই মাসটি মুমিনের জীবনে এক পরম পুণ্যের বার্তা নিয়ে আসে। পরকালীন পাথেয় ও সওয়াব হাসিলের তরে রজব মাস এক বিশাল সুযোগের মোহনা, যা বিশেষভাবে সিয়াম সাধনার মাস রমজানের অগ্রিম আগমনী বার্তা ঘোষণা করে। আধ্যাত্মিক পরিভাষায় এই রজব যেন আমলের বসন্ত; যে বসন্তের স্নিগ্ধ হাওয়ায় মুমিন হৃদয় হয়ে ওঠে সবুজ ও সজীব। জান্নাতি খুশবুর ঘ্রাণে মাতোয়ারা মুমিনের মন দুলতে থাকে রবের একান্ত প্রেমে। রজব যেন দিগন্তের আকাশে ভেসে বেড়ানো রহমতের মেঘমালা, যা আল্লাহর তৃষ্ণার্ত বান্দার হৃদয়কে মহান প্রভুর করুণার সুশীতল ছায়ায় পরম মমতায় ঢেকে দেয়। এভাবে প্রতিটি মুমিন হৃদয়ে রজব মাস হয়ে ওঠে ইবাদত ও আনুগত্যের এক অনন্য ঋতু।
রজব মাসের মাহাত্ম্য
রজব মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনস্বীকার্য। এর প্রধান কারণ হলো, এই মাসকে মহান আল্লাহ এবং তাঁর প্রিয় রাসুল (সা.) বিশেষভাবে সম্মানিত বলে ঘোষণা করেছেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ‘আশহুরুল হুরুম’ বা সম্মানিত যে চারটি মাসের কথা উল্লেখ করেছেন, রজব তার মধ্যে অন্যতম। ইরশাদ হয়েছে—‘নিশ্চয় আসমান ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকেই মহান আল্লাহর বিধান ও গণনায় মাসের সংখ্যা বারোটি। এর মধ্যে চার মাস সম্মানিত। এটাই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান। সুতরাং এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি অন্যায় করে নিজেদের ক্ষতিগ্রস্ত কোরো না।’ (সুরা তাওবা: ৩৬)
হাদিস শরিফেও এই সম্মানিত মাসগুলোর বিবরণ চমৎকারভাবে বর্ণিত হয়েছে। হজরত আবু বকর (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন—‘বছর হচ্ছে বারো মাস। এর মধ্যে চার মাস হারাম বা নিষিদ্ধ। তিনটি ধারাবাহিক: জিলকদ, জিলহজ ও মহররম; আর অন্যটি হলো (মুদার গোত্রের) রজব মাস, যা জুমাদাল উখরা ও শাবান মাসের মধ্যবর্তী সময়ে অবস্থিত।’ (সহিহ বুখারি: ৪৬৬২, সহিহ মুসলিম: ১৬৭৯)
রজব: রমজানের প্রস্তুতির সুবর্ণ সময়
রজব মাস থেকেই মূলত আমাদের কাঙ্ক্ষিত রমজানের প্রস্তুতি শুরু হওয়া উচিত। কেননা রজবের পরেই আসবে শাবান, আর এই দুই মাসের প্রহরগুলো গড়ালেই শুরু হবে সিয়াম সাধনার পবিত্র মাস—রমজান। রমজানের সেই সুকঠিন ও মহান সাধনার গুরুত্ব বিবেচনা করে দুই মাস আগে রজব থেকেই এর মানসিক ও আধ্যাত্মিক প্রস্তুতি গ্রহণের কথা হাদিসে গুরুত্বের সঙ্গে বলা হয়েছে। তাই তো রজব মাসের চাঁদ উদিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রাসুলুল্লাহ (সা.) এই দোয়াটি পাঠ করতেন—‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রাজাবা ওয়া শাবানা ওয়া বাল্লিগনা রামাদান।’ অর্থাৎ: ‘হে আল্লাহ, রজব ও শাবান মাসে আমাদের জন্য বরকত দান করুন এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত জীবিত রাখুন (রমজানে পৌঁছিয়ে দিন)।’ (মুসনাদে আহমদ: ২৩৪৬)
রমজানের পূর্ণ বরকত পেতে হলে প্রয়োজন শারীরিক, মানসিক ও অর্থনৈতিক সুপরিকল্পিত প্রস্তুতি। রমজানে যেহেতু ইবাদত, আহার ও নিদ্রার সময়সূচিতে আমূল পরিবর্তন আসে, তাই আমাদের উচিত এ রজব মাস থেকেই নফল রোজা রাখার মাধ্যমে নিজেকে অভ্যস্ত করে তোলা। হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী, নবীজি (সা.) রমজান ছাড়া সবচেয়ে বেশি নফল রোজা রাখতেন শাবান মাসে, আর এর প্রস্তুতি শুরু হতো রজব থেকে। উম্মুল মুমিনিন হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) বলেন, ‘রজব মাস এলে আমরা নবীজি (সা.)-এর বিশেষ আমল ও ইবাদত দেখে তা অনুভব করতে পারতাম।’ (সহিহ মুসলিম: ১৪৪৩)
তিলাওয়াত ও আধ্যাত্মিক অনুশীলন
কেবল রোজা নয়, বরং পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত ও এর চর্চায় মনোযোগী হওয়া রজব মাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। কোরআন তিলাওয়াত শেখা, অশুদ্ধি সংশোধন করা, নামাজের প্রয়োজনীয় সুরা-কিরাত এবং দোয়া-দরুদগুলো ভালোভাবে আয়ত্ত করা এ সময়ে অত্যন্ত জরুরি। এতে করে রমজানের পবিত্র দিনগুলোতে আমল করা অনেক সহজ ও সাবলীল হয়ে ওঠে। বিখ্যাত তাফসিরগ্রন্থগুলোতে এসেছে যে এই সম্মানিত মাসগুলোর বিশেষত্ব হলো—এতে অধিক ইবাদত ও নেক আমলের অনুশীলন করলে বছরের বাকি মাসগুলোতেও ইবাদতের প্রতি একনিষ্ঠতা বজায় রাখা সহজ হয়ে যায়। (আহকামুল কোরআন: খণ্ড ২, পৃ. ১১১)
সতর্কতা ও বিশেষ আমল
আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন যে আইয়ামে বিজ (চাঁদের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ) এবং প্রতি সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবারের নফল রোজা ব্যতীত রজব মাসে আলাদাভাবে বিশেষ কোনো তারিখ বা দিনে সুনির্দিষ্ট রোজার আমল নেই। তবে রমজানের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে আমরা যেকোনো নিষিদ্ধ সময় ব্যতীত নফল রোজা রাখতে পারি। যেহেতু রজব ‘আশহুরুল হুরুম’ বা সম্মানিত মাসের অন্তর্ভুক্ত, তাই এ সময়ে সম্পাদিত নেক আমলের বিপরীতে মহান আল্লাহর কাছে অধিক সওয়াবের আশা করা যায়। মুস্তাহাব আমল হিসেবে এই হারাম মাসগুলোতে রোজা রাখার সপক্ষে নবীজি (সা.)-এর একটি হাদিস পাওয়া যায়। রাসুল (সা.) বলেন, ‘সম্মানিত মাসগুলোতে রোজা রাখো এবং রোজা ভঙ্গও কোরো (অর্থাৎ বিরতি দিয়ে দিয়ে নফল রোজা রাখো)।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২৪২৪)
হাদিসের বর্ণনায় রজবের আরও একটি শ্রেষ্ঠ আমলের কথা এসেছে—তা হলো দোয়া। রাসুল (সা.)-এর ভাষ্য অনুযায়ী ‘দোয়া হলো ইবাদতের মগজ’। তাই আমলের এই বসন্তলগ্নে আমাদের উচিত অধিক পরিমাণে কায়মনোবাক্যে প্রভুর দরবারে রোনাজারি করা।
লেখক: খতিব, সোনার বাংলা জামে মসজিদ, কুষ্টিয়া

মসজিদুল আকসা বায়তুল মোকাদ্দাস নামেও পরিচিত। জেরুজালেমে অবস্থিত মুসলমানদের প্রথম কিবলা। মহানবী (সা.)-কে আল্লাহ তাআলা মিরাজের রাতে প্রথমে মসজিদুল আকসায় নিয়ে যান। এরপর ঊর্ধ্ব আকাশ ভ্রমণ করান। মসজিদুল আকসা ও এর আশপাশের এলাকাটি অনেক নবী-রাসুলের স্মৃতিবিজড়িত স্থান। এখানে রয়েছে অসংখ্য নবী-রাসুলের সমাধি।
২০ অক্টোবর ২০২৩
সৌদি আরবের মক্কায় অবস্থিত মসজিদুল হারামে শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) জুমার নামাজে ইমামতি করবেন প্রখ্যাত আলেম শায়খ ড. আবদুর রহমান বিন আবদুল আজিজ আস-সুদাইস। একই দিনে মদিনায় অবস্থিত মসজিদে নববিতে জুমার নামাজ পড়াবেন খ্যাতনামা কারি শায়খ ড. আবদুল্লাহ বিন আবদুর রহমান আল-বুআইজান।
৪ ঘণ্টা আগে
হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ, প্রাপ্তি-বঞ্চনার দীর্ঘ পথ পেরিয়ে মানুষ যখন নতুন বছরে প্রবেশ করে, তখন অনুভূতির ভেতর এক অদ্ভুত দ্বন্দ্ব কাজ করে। একদিকে নতুন সূচনার আনন্দ, অন্যদিকে জীবন থেকে আরেকটি বছর অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার বেদনাবোধ। প্রতিটি অতিবাহিত বছর মানে নির্ধারিত হায়াতের একটি অংশ কমে যাওয়া।
৮ ঘণ্টা আগে
ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলামের আগমনী ইতিহাস সুদূর প্রাচীন ও বৈচিত্র্যময়। বিশেষত দক্ষিণ ভারতের কেরালা রাজ্য ইসলামের প্রাচীনতম স্থাপত্যের নিদর্শনের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। আরব সাগরের উপকূলবর্তী এই অঞ্চলে আরব বণিকদের নিয়মিত আগমনের সূত্রে ইসলামের প্রচার ও প্রসার ঘটেছিল। সেই ঐতিহাসিক সময়ের স্মৃতিচিহ্ন...
৮ ঘণ্টা আগেফয়জুল্লাহ রিয়াদ

হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ, প্রাপ্তি-বঞ্চনার দীর্ঘ পথ পেরিয়ে মানুষ যখন নতুন বছরে প্রবেশ করে, তখন অনুভূতির ভেতর এক অদ্ভুত দ্বন্দ্ব কাজ করে। একদিকে নতুন সূচনার আনন্দ, অন্যদিকে জীবন থেকে আরেকটি বছর অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার বেদনাবোধ। প্রতিটি অতিবাহিত বছর মানে নির্ধারিত হায়াতের একটি অংশ কমে যাওয়া। নতুন বছর আগমনের এ সন্ধিক্ষণ মুমিনের জন্য ত্মসমালোচনা ও ভবিষ্যৎ-পরিকল্পনার সময়।
ইসলামের দৃষ্টিতে একজন ইমানদারের জন্য নতুন বছরের করণীয় মৌলিকভাবে দুটি—এক. অতীত জীবনের হিসাব নেওয়া। দুই. আগামীর পথচলা সুপরিকল্পিত করা।
মানুষের জীবন আল্লাহ তাআলার দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ আমানত। এই আমানতের প্রতিটি মুহূর্ত কীভাবে ব্যয় করা হলো, আখিরাতে তার পূর্ণাঙ্গ জবাবদিহি করতে হবে। আল্লাহ তাআলার কোনো আদেশ অমান্য করা কিংবা সময়কে অলসতায় নষ্ট করা এই আমানতের খেয়ানতের শামিল। খেয়ানতের পরিণতি যে ভয়াবহ, তা কোরআন-হাদিসে বারবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কিয়ামতের দিন পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর না দেওয়া পর্যন্ত কোনো মানুষ আল্লাহর দরবার থেকে এক পা-ও নড়তে পারবে না। এক. তার জীবন সম্পর্কে, সে কীভাবে তা অতিবাহিত করেছে। দুই. তার যৌবনকাল সম্পর্কে, সে কোন কাজে তা ব্যয় করেছে। তিন. তার সম্পদ সম্পর্কে, কীভাবে সে তা উপার্জন করেছে। চার. এবং উপার্জিত সম্পদ কোথায় ব্যয় করেছে। পাঁচ. সে যে জ্ঞান অর্জন করেছিল, সে অনুযায়ী কতটুকু আমল করেছে।’ (জামে তিরমিজি: ২৪১৬)। যেহেতু হিসাব অবশ্যম্ভাবী, তাই পরকালের কাঠগড়ায় দাঁড়ানোর আগে নিজের হিসাব নিজে করে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
নতুন বছরের শুরুতে মুমিনের প্রথম কাজ হওয়া উচিত গত বছরের জীবনচিত্র পর্যালোচনা করা। যদি দেখা যায়, সময়ের একটি বড় অংশ আল্লাহর আনুগত্যে ব্যয় হয়েছে, তাহলে তার জন্য কৃতজ্ঞতা আদায় করা জরুরি। কারণ কৃতজ্ঞতা নিয়ামত বৃদ্ধির অন্যতম চাবিকাঠি। আর যদি গুনাহ, অবহেলা ও ত্রুটির হিসাব চোখে পড়ে, তবে বিলম্ব না করে ক্ষমা প্রার্থনা ও খাঁটি তওবা করে নেকির পথে ফিরে আসাই ইমানদারের কাজ।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা, তোমরা আন্তরিকভাবে আল্লাহর কাছে তওবা করো। আশা করা যায়, তোমাদের রব তোমাদের পাপ মোচন করে দেবেন এবং তোমাদের প্রবেশ করাবেন এমন জান্নাতে, যার তলদেশে নহর প্রবাহিত।’ (সুরা তাহরিম: ৮)
তওবার পাশাপাশি নেক আমলে আত্মনিয়োগ করাও জরুরি। কেননা সৎকর্ম পাপের কালিমা মুছে দেয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই পুণ্যরাজি পাপরাশিকে মিটিয়ে দেয়। যারা উপদেশ মানে, এটা তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ।’ (সুরা হুদ: ১১৪)
নতুন বছরে মুমিনের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হলো আগামীর জন্য সুদৃঢ় সুচিন্তিত পরিকল্পনা গ্রহণ করা। যাতে অবশিষ্ট জীবন আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে ব্যয় হয়। অহেতুক ব্যস্ততা, অর্থহীন বিনোদন কিংবা অলসতায় যেন একটি মুহূর্তও নষ্ট না হয়।
এই পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য হবে নিজের নফসকে সংযত রাখা এবং মৃত্যু-পরবর্তী জীবনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া। এ প্রসঙ্গে শাদ্দাদ ইবনে আউস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘বুদ্ধিমান হলো সে, যে নিজের কুপ্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং মৃত্যু-পরবর্তী জীবনের জন্য আমল করে। আর অক্ষম হলো সে, যে নিজের কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করে চলে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমার আশা পোষণ করে।’ (জামে তিরমিজি: ২৪৫৯)
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ, প্রাপ্তি-বঞ্চনার দীর্ঘ পথ পেরিয়ে মানুষ যখন নতুন বছরে প্রবেশ করে, তখন অনুভূতির ভেতর এক অদ্ভুত দ্বন্দ্ব কাজ করে। একদিকে নতুন সূচনার আনন্দ, অন্যদিকে জীবন থেকে আরেকটি বছর অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার বেদনাবোধ। প্রতিটি অতিবাহিত বছর মানে নির্ধারিত হায়াতের একটি অংশ কমে যাওয়া। নতুন বছর আগমনের এ সন্ধিক্ষণ মুমিনের জন্য ত্মসমালোচনা ও ভবিষ্যৎ-পরিকল্পনার সময়।
ইসলামের দৃষ্টিতে একজন ইমানদারের জন্য নতুন বছরের করণীয় মৌলিকভাবে দুটি—এক. অতীত জীবনের হিসাব নেওয়া। দুই. আগামীর পথচলা সুপরিকল্পিত করা।
মানুষের জীবন আল্লাহ তাআলার দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ আমানত। এই আমানতের প্রতিটি মুহূর্ত কীভাবে ব্যয় করা হলো, আখিরাতে তার পূর্ণাঙ্গ জবাবদিহি করতে হবে। আল্লাহ তাআলার কোনো আদেশ অমান্য করা কিংবা সময়কে অলসতায় নষ্ট করা এই আমানতের খেয়ানতের শামিল। খেয়ানতের পরিণতি যে ভয়াবহ, তা কোরআন-হাদিসে বারবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কিয়ামতের দিন পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর না দেওয়া পর্যন্ত কোনো মানুষ আল্লাহর দরবার থেকে এক পা-ও নড়তে পারবে না। এক. তার জীবন সম্পর্কে, সে কীভাবে তা অতিবাহিত করেছে। দুই. তার যৌবনকাল সম্পর্কে, সে কোন কাজে তা ব্যয় করেছে। তিন. তার সম্পদ সম্পর্কে, কীভাবে সে তা উপার্জন করেছে। চার. এবং উপার্জিত সম্পদ কোথায় ব্যয় করেছে। পাঁচ. সে যে জ্ঞান অর্জন করেছিল, সে অনুযায়ী কতটুকু আমল করেছে।’ (জামে তিরমিজি: ২৪১৬)। যেহেতু হিসাব অবশ্যম্ভাবী, তাই পরকালের কাঠগড়ায় দাঁড়ানোর আগে নিজের হিসাব নিজে করে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
নতুন বছরের শুরুতে মুমিনের প্রথম কাজ হওয়া উচিত গত বছরের জীবনচিত্র পর্যালোচনা করা। যদি দেখা যায়, সময়ের একটি বড় অংশ আল্লাহর আনুগত্যে ব্যয় হয়েছে, তাহলে তার জন্য কৃতজ্ঞতা আদায় করা জরুরি। কারণ কৃতজ্ঞতা নিয়ামত বৃদ্ধির অন্যতম চাবিকাঠি। আর যদি গুনাহ, অবহেলা ও ত্রুটির হিসাব চোখে পড়ে, তবে বিলম্ব না করে ক্ষমা প্রার্থনা ও খাঁটি তওবা করে নেকির পথে ফিরে আসাই ইমানদারের কাজ।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা, তোমরা আন্তরিকভাবে আল্লাহর কাছে তওবা করো। আশা করা যায়, তোমাদের রব তোমাদের পাপ মোচন করে দেবেন এবং তোমাদের প্রবেশ করাবেন এমন জান্নাতে, যার তলদেশে নহর প্রবাহিত।’ (সুরা তাহরিম: ৮)
তওবার পাশাপাশি নেক আমলে আত্মনিয়োগ করাও জরুরি। কেননা সৎকর্ম পাপের কালিমা মুছে দেয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই পুণ্যরাজি পাপরাশিকে মিটিয়ে দেয়। যারা উপদেশ মানে, এটা তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ।’ (সুরা হুদ: ১১৪)
নতুন বছরে মুমিনের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হলো আগামীর জন্য সুদৃঢ় সুচিন্তিত পরিকল্পনা গ্রহণ করা। যাতে অবশিষ্ট জীবন আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে ব্যয় হয়। অহেতুক ব্যস্ততা, অর্থহীন বিনোদন কিংবা অলসতায় যেন একটি মুহূর্তও নষ্ট না হয়।
এই পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য হবে নিজের নফসকে সংযত রাখা এবং মৃত্যু-পরবর্তী জীবনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া। এ প্রসঙ্গে শাদ্দাদ ইবনে আউস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘বুদ্ধিমান হলো সে, যে নিজের কুপ্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং মৃত্যু-পরবর্তী জীবনের জন্য আমল করে। আর অক্ষম হলো সে, যে নিজের কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করে চলে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমার আশা পোষণ করে।’ (জামে তিরমিজি: ২৪৫৯)
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

মসজিদুল আকসা বায়তুল মোকাদ্দাস নামেও পরিচিত। জেরুজালেমে অবস্থিত মুসলমানদের প্রথম কিবলা। মহানবী (সা.)-কে আল্লাহ তাআলা মিরাজের রাতে প্রথমে মসজিদুল আকসায় নিয়ে যান। এরপর ঊর্ধ্ব আকাশ ভ্রমণ করান। মসজিদুল আকসা ও এর আশপাশের এলাকাটি অনেক নবী-রাসুলের স্মৃতিবিজড়িত স্থান। এখানে রয়েছে অসংখ্য নবী-রাসুলের সমাধি।
২০ অক্টোবর ২০২৩
সৌদি আরবের মক্কায় অবস্থিত মসজিদুল হারামে শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) জুমার নামাজে ইমামতি করবেন প্রখ্যাত আলেম শায়খ ড. আবদুর রহমান বিন আবদুল আজিজ আস-সুদাইস। একই দিনে মদিনায় অবস্থিত মসজিদে নববিতে জুমার নামাজ পড়াবেন খ্যাতনামা কারি শায়খ ড. আবদুল্লাহ বিন আবদুর রহমান আল-বুআইজান।
৪ ঘণ্টা আগে
সময়ের আবর্তনে আমাদের দোরগোড়ায় আবারও হাজির হয়েছে মহিমান্বিত আরবি মাস—রজব। হিজরি পঞ্জিকাবর্ষের সপ্তম এই মাসটি মুমিনের জীবনে এক পরম পুণ্যের বার্তা নিয়ে আসে। পরকালীন পাথেয় ও সওয়াব হাসিলের তরে রজব মাস এক বিশাল সুযোগের মোহনা, যা বিশেষভাবে সিয়াম সাধনার মাস রমজানের অগ্রিম আগমনী বার্তা ঘোষণা করে।
৮ ঘণ্টা আগে
ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলামের আগমনী ইতিহাস সুদূর প্রাচীন ও বৈচিত্র্যময়। বিশেষত দক্ষিণ ভারতের কেরালা রাজ্য ইসলামের প্রাচীনতম স্থাপত্যের নিদর্শনের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। আরব সাগরের উপকূলবর্তী এই অঞ্চলে আরব বণিকদের নিয়মিত আগমনের সূত্রে ইসলামের প্রচার ও প্রসার ঘটেছিল। সেই ঐতিহাসিক সময়ের স্মৃতিচিহ্ন...
৮ ঘণ্টা আগেমোখতারুল ইসলাম মিলন

ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলামের আগমনী ইতিহাস সুদূর প্রাচীন ও বৈচিত্র্যময়। বিশেষত দক্ষিণ ভারতের কেরালা রাজ্য ইসলামের প্রাচীনতম স্থাপত্যের নিদর্শনের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। আরব সাগরের উপকূলবর্তী এই অঞ্চলে আরব বণিকদের নিয়মিত আগমনের সূত্রে ইসলামের প্রচার ও প্রসার ঘটেছিল। সেই ঐতিহাসিক সময়ের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে আজও টিকে আছে কেরালার কয়েকটি প্রাচীন মসজিদ। এই প্রবন্ধে কেরালার তিনটি উল্লেখযোগ্য প্রাচীন মসজিদ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:
চেরামান জুমা মসজিদ
কেরালার থ্রিসুর জেলার কোডুঙ্গাল্লুর এলাকায় অবস্থিত চেরামান জুমা মসজিদকে ভারতের প্রাচীনতম মসজিদ হিসেবে গণ্য করা হয়। ঐতিহাসিক বর্ণনা অনুযায়ী, এই মসজিদ ৬২৯ খ্রিষ্টাব্দে অর্থাৎ নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবদ্দশায়ই নির্মিত হয়েছিল। স্থানীয় জনশ্রুতি অনুসারে, চেরা রাজবংশের রাজা চেরামান পেরুমাল চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়ার স্বপ্ন দেখে আরবে যান এবং সেখানে নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর হাতে ইসলাম গ্রহণ করেন। মক্কা থেকে ফেরার পথে তিনি কয়েকজন সাহাবিকে সঙ্গে নিয়ে এসে কেরালায় এই মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন। যদিও এই বর্ণনার ঐতিহাসিক সত্যতা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে, তবু এই মসজিদের প্রাচীনত্ব অনস্বীকার্য।
চেরামান জুমা মসজিদের স্থাপত্যশৈলী অনন্য। এটি কেরালার ঐতিহ্যবাহী হিন্দু মন্দিরের স্থাপত্যরীতির সঙ্গে ইসলামিক উপাদানের এক সমন্বয়। মসজিদের ভেতরে একটি তেল প্রদীপ রয়েছে। কথিত আছে, নবী (সা.)-এর যুগ থেকে এটি অবিরাম জ্বলছে। কাঠের স্তম্ভ, ঢালু ছাদ এবং উঠান—এগুলো স্থানীয় স্থাপত্যরীতির প্রতিফলন। এই মসজিদটি কেবল একটি ধর্মীয় স্থাপনা নয়, বরং ভারতে ইসলামের প্রাচীন উপস্থিতির এক জীবন্ত প্রমাণ।

মসজিদে বিলাল
কেরালার মালাপ্পুরম জেলায় অবস্থিত মসজিদে বিলাল আরেকটি উল্লেখযোগ্য প্রাচীন মসজিদ।
এই মসজিদটির নামকরণ করা হয়েছে ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন হজরত বিলাল (রা.)-এর নাম অনুসারে। স্থানীয়ভাবে জনশ্রুতি আছে, হজরত বিলাল (রা.)-এর কোনো অনুসারী এই অঞ্চলে এসে ইসলামের প্রচার করেছিলেন। যদিও এই বর্ণনার সত্যতা নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত নয়, তবু মসজিদটির প্রাচীনত্ব এবং ধর্মীয় গুরুত্ব অপরিসীম।
মসজিদে বিলালের স্থাপত্যশৈলী কেরালার অন্যান্য প্রাচীন মসজিদের মতোই। কাঠের তৈরি স্তম্ভ, ঐতিহ্যবাহী কেরালীয় ছাদ এবং সরল অলংকরণ এই মসজিদের বৈশিষ্ট্য। মসজিদের প্রাঙ্গণে একটি প্রাচীন কূপ রয়েছে, যার পানিকে স্থানীয়রা পবিত্র বলে বিশ্বাস করে। মসজিদটি স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় ও সামাজিক কেন্দ্র হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।

পালায়াম মসজিদ
কেরালার কোল্লাম জেলায় অবস্থিত পালায়াম মসজিদ আরেকটি প্রাচীন ইসলামি স্থাপনা।
ধারণা করা হয়, এই মসজিদটি নবম শতাব্দীতে আরব বণিকদের দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। সেই সময় মসলা বাণিজ্যের কারণে আরব বণিকেরা এই অঞ্চলে নিয়মিত আসা-যাওয়া করতেন এবং অনেকেই কেরালায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁদের বৈবাহিক সম্পর্কের মাধ্যমে কেরালার মুসলিম সমাজ বা ‘মাপ্পিলা’ সম্প্রদায়ের উদ্ভব ঘটে।
পালায়াম মসজিদের স্থাপত্যেও কেরালার ঐতিহ্যবাহী নির্মাণশৈলীর ছাপ স্পষ্ট। মসজিদটি কাঠ ও ইট দিয়ে নির্মিত এবং এর ছাদ টালি দিয়ে আচ্ছাদিত। অভ্যন্তরে প্রাচীন আরবি ক্যালিগ্রাফি ও কারুকাজ দেখা যায়। মসজিদের পাশে একটি প্রাচীন কবরস্থান রয়েছে, যেখানে আরব বণিক ও প্রথম যুগের মুসলমানদের সমাধি রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। বর্তমানে মসজিদটি সংস্কার করা হলেও এর মূল কাঠামো এবং ঐতিহাসিক চরিত্র অক্ষুণ্ন রাখা হয়েছে।
লেখক: শিক্ষার্থী, শরীফবাগ ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা

ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলামের আগমনী ইতিহাস সুদূর প্রাচীন ও বৈচিত্র্যময়। বিশেষত দক্ষিণ ভারতের কেরালা রাজ্য ইসলামের প্রাচীনতম স্থাপত্যের নিদর্শনের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। আরব সাগরের উপকূলবর্তী এই অঞ্চলে আরব বণিকদের নিয়মিত আগমনের সূত্রে ইসলামের প্রচার ও প্রসার ঘটেছিল। সেই ঐতিহাসিক সময়ের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে আজও টিকে আছে কেরালার কয়েকটি প্রাচীন মসজিদ। এই প্রবন্ধে কেরালার তিনটি উল্লেখযোগ্য প্রাচীন মসজিদ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:
চেরামান জুমা মসজিদ
কেরালার থ্রিসুর জেলার কোডুঙ্গাল্লুর এলাকায় অবস্থিত চেরামান জুমা মসজিদকে ভারতের প্রাচীনতম মসজিদ হিসেবে গণ্য করা হয়। ঐতিহাসিক বর্ণনা অনুযায়ী, এই মসজিদ ৬২৯ খ্রিষ্টাব্দে অর্থাৎ নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবদ্দশায়ই নির্মিত হয়েছিল। স্থানীয় জনশ্রুতি অনুসারে, চেরা রাজবংশের রাজা চেরামান পেরুমাল চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়ার স্বপ্ন দেখে আরবে যান এবং সেখানে নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর হাতে ইসলাম গ্রহণ করেন। মক্কা থেকে ফেরার পথে তিনি কয়েকজন সাহাবিকে সঙ্গে নিয়ে এসে কেরালায় এই মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন। যদিও এই বর্ণনার ঐতিহাসিক সত্যতা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে, তবু এই মসজিদের প্রাচীনত্ব অনস্বীকার্য।
চেরামান জুমা মসজিদের স্থাপত্যশৈলী অনন্য। এটি কেরালার ঐতিহ্যবাহী হিন্দু মন্দিরের স্থাপত্যরীতির সঙ্গে ইসলামিক উপাদানের এক সমন্বয়। মসজিদের ভেতরে একটি তেল প্রদীপ রয়েছে। কথিত আছে, নবী (সা.)-এর যুগ থেকে এটি অবিরাম জ্বলছে। কাঠের স্তম্ভ, ঢালু ছাদ এবং উঠান—এগুলো স্থানীয় স্থাপত্যরীতির প্রতিফলন। এই মসজিদটি কেবল একটি ধর্মীয় স্থাপনা নয়, বরং ভারতে ইসলামের প্রাচীন উপস্থিতির এক জীবন্ত প্রমাণ।

মসজিদে বিলাল
কেরালার মালাপ্পুরম জেলায় অবস্থিত মসজিদে বিলাল আরেকটি উল্লেখযোগ্য প্রাচীন মসজিদ।
এই মসজিদটির নামকরণ করা হয়েছে ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন হজরত বিলাল (রা.)-এর নাম অনুসারে। স্থানীয়ভাবে জনশ্রুতি আছে, হজরত বিলাল (রা.)-এর কোনো অনুসারী এই অঞ্চলে এসে ইসলামের প্রচার করেছিলেন। যদিও এই বর্ণনার সত্যতা নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত নয়, তবু মসজিদটির প্রাচীনত্ব এবং ধর্মীয় গুরুত্ব অপরিসীম।
মসজিদে বিলালের স্থাপত্যশৈলী কেরালার অন্যান্য প্রাচীন মসজিদের মতোই। কাঠের তৈরি স্তম্ভ, ঐতিহ্যবাহী কেরালীয় ছাদ এবং সরল অলংকরণ এই মসজিদের বৈশিষ্ট্য। মসজিদের প্রাঙ্গণে একটি প্রাচীন কূপ রয়েছে, যার পানিকে স্থানীয়রা পবিত্র বলে বিশ্বাস করে। মসজিদটি স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় ও সামাজিক কেন্দ্র হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।

পালায়াম মসজিদ
কেরালার কোল্লাম জেলায় অবস্থিত পালায়াম মসজিদ আরেকটি প্রাচীন ইসলামি স্থাপনা।
ধারণা করা হয়, এই মসজিদটি নবম শতাব্দীতে আরব বণিকদের দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। সেই সময় মসলা বাণিজ্যের কারণে আরব বণিকেরা এই অঞ্চলে নিয়মিত আসা-যাওয়া করতেন এবং অনেকেই কেরালায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁদের বৈবাহিক সম্পর্কের মাধ্যমে কেরালার মুসলিম সমাজ বা ‘মাপ্পিলা’ সম্প্রদায়ের উদ্ভব ঘটে।
পালায়াম মসজিদের স্থাপত্যেও কেরালার ঐতিহ্যবাহী নির্মাণশৈলীর ছাপ স্পষ্ট। মসজিদটি কাঠ ও ইট দিয়ে নির্মিত এবং এর ছাদ টালি দিয়ে আচ্ছাদিত। অভ্যন্তরে প্রাচীন আরবি ক্যালিগ্রাফি ও কারুকাজ দেখা যায়। মসজিদের পাশে একটি প্রাচীন কবরস্থান রয়েছে, যেখানে আরব বণিক ও প্রথম যুগের মুসলমানদের সমাধি রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। বর্তমানে মসজিদটি সংস্কার করা হলেও এর মূল কাঠামো এবং ঐতিহাসিক চরিত্র অক্ষুণ্ন রাখা হয়েছে।
লেখক: শিক্ষার্থী, শরীফবাগ ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা

মসজিদুল আকসা বায়তুল মোকাদ্দাস নামেও পরিচিত। জেরুজালেমে অবস্থিত মুসলমানদের প্রথম কিবলা। মহানবী (সা.)-কে আল্লাহ তাআলা মিরাজের রাতে প্রথমে মসজিদুল আকসায় নিয়ে যান। এরপর ঊর্ধ্ব আকাশ ভ্রমণ করান। মসজিদুল আকসা ও এর আশপাশের এলাকাটি অনেক নবী-রাসুলের স্মৃতিবিজড়িত স্থান। এখানে রয়েছে অসংখ্য নবী-রাসুলের সমাধি।
২০ অক্টোবর ২০২৩
সৌদি আরবের মক্কায় অবস্থিত মসজিদুল হারামে শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) জুমার নামাজে ইমামতি করবেন প্রখ্যাত আলেম শায়খ ড. আবদুর রহমান বিন আবদুল আজিজ আস-সুদাইস। একই দিনে মদিনায় অবস্থিত মসজিদে নববিতে জুমার নামাজ পড়াবেন খ্যাতনামা কারি শায়খ ড. আবদুল্লাহ বিন আবদুর রহমান আল-বুআইজান।
৪ ঘণ্টা আগে
সময়ের আবর্তনে আমাদের দোরগোড়ায় আবারও হাজির হয়েছে মহিমান্বিত আরবি মাস—রজব। হিজরি পঞ্জিকাবর্ষের সপ্তম এই মাসটি মুমিনের জীবনে এক পরম পুণ্যের বার্তা নিয়ে আসে। পরকালীন পাথেয় ও সওয়াব হাসিলের তরে রজব মাস এক বিশাল সুযোগের মোহনা, যা বিশেষভাবে সিয়াম সাধনার মাস রমজানের অগ্রিম আগমনী বার্তা ঘোষণা করে।
৮ ঘণ্টা আগে
হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ, প্রাপ্তি-বঞ্চনার দীর্ঘ পথ পেরিয়ে মানুষ যখন নতুন বছরে প্রবেশ করে, তখন অনুভূতির ভেতর এক অদ্ভুত দ্বন্দ্ব কাজ করে। একদিকে নতুন সূচনার আনন্দ, অন্যদিকে জীবন থেকে আরেকটি বছর অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার বেদনাবোধ। প্রতিটি অতিবাহিত বছর মানে নির্ধারিত হায়াতের একটি অংশ কমে যাওয়া।
৮ ঘণ্টা আগে