Ajker Patrika

খতম তারাবি ও সুরা তারাবির বিধান

মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ
খতম তারাবি ও সুরা তারাবির বিধান

তারাবির নামাজ রমজানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আমল। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা তোমাদের ওপর রমজানের রোজা পালন করা ফরজ করেছেন। আর আমি তোমাদের জন্য কিয়াম পালন করা তথা তারাবির নামাজ পড়া সুন্নত করেছি। সুতরাং যে ইমান ও একিনের সঙ্গে সওয়াবের নিয়তে সিয়াম ও কিয়াম পালন করবে, তার অতীতের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (নাসায়ি ও ইবনে মাজাহ)

রাসুল (সা.) সাহাবিদের নিয়ে কয়েক দিন তারাবি পড়েছিলেন। পরে আল্লাহর পক্ষ থেকে ফরজ করে দেওয়ার আশঙ্কায় তিনি আর মসজিদে না এসে ঘরে একাকী তারাবি আদায় করেন। এরপর থেকে সাহাবিদের কেউ বাড়িতে বা মসজিদে একাকী, কেউ ছোট ছোট জামাতবদ্ধ হয়ে তারাবি পড়তেন। পরে ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা.) মসজিদে নববিতে হজরত উবাই ইবনে কাআব (রা.)-কে ইমাম বানিয়ে এক জামাতে তারাবি পড়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সব সাহাবি তাঁর এ সিদ্ধান্ত মেনে নেন। (বুখারি ও মুয়াত্তা মালেক)

এরপর থেকে সাহাবি, তাবেয়ি, তাবে তাবেয়িগণসহ যুগ যুগ ধরে সব মুসলমান জামাত সহকারে তারাবি পড়ে আসছেন। সব মতের ফকিহগণ এ নামাজকে নারী–পুরুষ উভয়ের জন্য সুন্নতে মুয়াক্কাদা বলেছেন এবং পুরুষের জন্য জামাত সহকারে পড়াকে সুন্নতে কিফায়া বলেছেন। (বাদায়িয়ুস সানায়ে) সুন্নতে কিফায়ার পরিচয় হলো, প্রতি এলাকায় কিছু মানুষকে অবশ্যই জামাতের সহিত তারাবি পড়তে হবে, কেউই না পড়লে পুরো এলাকাবাসী গুনাহগার হবে।

রমজানের প্রতি রাতে তারাবি পড়া সুন্নত। আবার তারাবিতে একবার পূর্ণাঙ্গ কোরআন খতম করা আলাদা সুন্নত। দুইবার খতম করা ভালো। তিনবার খতম করা আরও ভালো। খতম তারাবি পড়ালে মানুষ মসজিদে আসতে অলসতা করে এ অজুহাতে খতম তারাবি না পড়ানো ঠিক নয়। (ফাতাওয়া শামি)

ফিকহে হানাফির গ্রহণযোগ্য কিতাব মাবসুতে সারাখসিতে বলা হয়েছে, ‘তারাবিতে কুরআন খতম করা সুন্নত। এর দলিল হলো, ওমর (রা.) তিনজন ইমামকে ডেকে তাদের তিলাওয়াত শুনলেন। এরপর তাদের একজনকে প্রতি রাকাতে ৩০ আয়াত করে, দ্বিতীয় জনকে ২৫ আয়াত করে এবং অন্যজনকে ২০ আয়াত করে পড়ার নির্দেশ দিলেন। যেহেতু পুরো রমজানে ৬০০ রাকাত তারাবি পড়া হয় এবং কোরআনের আয়াত সংখ্যা ছয় হাজারের কিছু বেশি, সেহেতু প্রতি রাকাতে ১০ আয়াত করে পড়লেও এক খতম হয়ে যায়। আর যদি হুবহু হজরত ওমর (রা.)-এর নির্দেশনা অনুযায়ী পড়া হয়, তাহলে দুই-তিন বার খতম হবে।’ ইমাম কাসানি (রহ.) উক্ত বর্ণনা উল্লেখ করে বলেন, ইমাম আবু হানিফা যেটা বলেছেন (অর্থাৎ পুরো মাসে তারাবিতে একবার কুরআন খতম করা) সেটা সুন্নত। আর ওমর (রা.) যেটা বলেছেন (অর্থাৎ একাধিকবার খতম করা) সেটা উত্তম। (বাদায়িয়ুস সানায়ে)

তবে ঠিক কত দিনে খতম শেষ করতে হবে, তা নির্দিষ্ট নয়। তিন, পাঁচ, সাত, দশ যত দিনে ইচ্ছা কোরআন খতম করা যাবে। তবে এ ক্ষেত্রে তিনটি বিষয় খেয়াল রাখা বাঞ্ছনীয়।

এক. কোরআনকে মাখরাজ, মাদ, ওয়াকফ ইত্যাদির নিয়ম অনুসরণ করে পূর্ণাঙ্গ তাজভিদ সহকারে পড়তে হবে। দ্রুত শেষ করার জন্য তাড়াতাড়ি কোরআন পড়ার চেয়ে অল্প অল্প পড়ে দেরিতে খতম শেষ করা ঢের ভালো।

দুই. তিন-সাত-দশ দিনের খতমে কিছু মানুষ ইমামের রুকুতে যাওয়া পর্যন্ত বসে থাকে, রুকুতে গেলে তড়িঘড়ি করে নামাজে যুক্ত হয়। এটা মারাত্মক ভুল। এভাবে খতম আদায় হয় না এবং জামাতে কোরআন শোনার সওয়াবও পাওয়া যায় না।

তিন. অনেকেই খতম শেষ হওয়ার পর আর তারাবিই পড়ে না। অথচ তারাবিতে কোরআন খতম করা এবং রমজানের প্রতি রাতে তারাবি পড়া দুটি স্বতন্ত্র সুন্নত। তিন বা দশ দিনে খতম শেষ হয়ে গেলেও বাকি রাতগুলোতে তারাবি পড়তে হবে। (ফাতাওয়া দারুল উলুম দেউবন্দ)

সম্ভব হলেহাফেজ ইমামের পেছনে খতম তারাবি পড়া উত্তম। সাহাবিগণ তাই করতেন। সাহাবি সালাবা ইবনে আবু মালেক (রা.) বলেন, রমজানের এক রাতে রাসুল (সা.) বাইরে এলেন। তিনি মসজিদের এক পাশে কিছু লোককে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করতে দেখলেন। জিজ্ঞেস করলেন, ‘এরা কী করছে?’ একজন উত্তর দিল, ‘এই লোকদের পুরো কোরআন মুখস্থ নেই। আর উবাই ইবনে কাআবের পুরোটা মুখস্থ আছে। তাই তারা তাঁর পেছনে নামাজ আদায় করতে এসেছে।’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘এটা তারা ভালো করেছে।’ (বাইহাকি)

অবশ্য অসুস্থতা, শারীরিক দুর্বলতা, নানাবিধ ব্যস্ততা থাকলে অথবা অন্য কোনো কারণে খতম তারাবি পড়তে না চাইলে সুরা তারাবি পড়ার অবকাশ আছে। এ ক্ষেত্রে ইসলাম তার প্রতি কোনোরকম দোষারোপ করে না। সুরা তারাবি পড়ার সময় প্রতি রাকাতে সুরা ফাতিহার পর একটি ছোট সুরা অথবা কমপক্ষে তিনটি ছোট আয়াত বা তিনটি ছোট আয়াতের সমান একটি বড় আয়াত তিলাওয়াত করা আবশ্যক। এর কম হলে নামাজ আদায় হবে না। (ফাতাওয়া শামি)

লেখক: শিক্ষক ও অনুবাদক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ১০ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ০৪ রজব ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১৬ মিনিট
ফজর০৫: ১৭ মিনিট০৬: ৩৭ মিনিট
জোহর১১: ৫৯ মিনিট০৩: ৪২ মিনিট
আসর০৩: ৪৩ মিনিট০৫: ১৮ মিনিট
মাগরিব০৫: ২০ মিনিট০৬: ৩৮ মিনিট
এশা০৬: ৩৯ মিনিট০৫: ১৬ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যে তিন শ্রেণির নামাজির জন্য রয়েছে দুর্ভোগ

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৩৯
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নামাজ বা সালাত অন্যতম প্রধান ফরজ ইবাদত। পবিত্র কোরআনের ৮২টি স্থানে নামাজের কথা উল্লেখ করে এর অপরিসীম গুরুত্ব বর্ণনা করা হয়েছে। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘যখন তোমরা সালাত (নামাজ) পূর্ণ করবে, তখন দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে আল্লাহকে স্মরণ করবে। অতঃপর যখন নিশ্চিন্ত হবে, তখন সালাত (পূর্বের নিয়মে) কায়েম করবে। নিশ্চয়ই সালাত মুমিনদের ওপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরজ।’ (সুরা নিসা: ১০৩)

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাদিসেও বারবার গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ওয়াক্তমতো নামাজ আদায়ের ওপর। এমনকি আল্লাহর কাছেও এটি অত্যন্ত প্রিয় একটি আমল। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেন, আমি রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, কোন আমল আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয়? তিনি বললেন, ‘যথাসময়ে সালাত আদায় করা।’ আমি পুনরায় জিজ্ঞেস করলাম, এরপর কোনটি? তিনি বললেন, ‘পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার।’ আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, ‘এরপর কোনটি?’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘আল্লাহর পথে লড়াই করা’। (সহিহ্ বুখারি: ৫০২)

নামাজ পড়া সত্ত্বেও তিন শ্রেণির নামাজির জন্য পরকালে রয়েছে ভয়াবহ শাস্তির হুঁশিয়ারি। এই তিন শ্রেণি হলো: ১. যারা লোক দেখানোর জন্য নামাজ আদায় করে। ২. যারা নামাজে চরম অমনোযোগী। ৩. যারা নামাজে চুরি করে, অর্থাৎ রুকু-সিজদা ঠিকমতো আদায় করে না।

পবিত্র কোরআনে প্রথম দুই শ্রেণির কথা উল্লেখ করে আল্লাহ বলেন, ‘অতএব সেই নামাজ আদায়কারীদের জন্য দুর্ভোগ, যারা নিজেদের নামাজে অমনোযোগী এবং যারা লোক দেখানোর জন্য তা করে।’ (সুরা মাউন: ৪-৬)

অন্যদিকে, তৃতীয় শ্রেণির নামাজি তথা নামাজ চোরদের সম্পর্কে আবু কাতাদাহ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘চোরদের মধ্যে সবচেয়ে বড় চোর হলো ওই ব্যক্তি, যে নামাজে চুরি করে।’ সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, নামাজে চুরি কীভাবে হয়?’ জবাবে নবীজি (সা.) বললেন, ‘নামাজে চুরি হলো রুকু-সিজদা পূর্ণ না করা (ঠিকমতো আদায় না করা)।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ্: ৮৮৫)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ০৯ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ০৩ রজব ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১৬ মিনিট
ফজর০৫: ১৭ মিনিট০৬: ৩৭ মিনিট
জোহর১১: ৫৯ মিনিট০৩: ৪১ মিনিট
আসর০৩: ৪২ মিনিট০৫: ১৭ মিনিট
মাগরিব০৫: ১৯ মিনিট০৬: ৩৮ মিনিট
এশা০৬: ৩৯ মিনিট০৫: ১৬ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজানের আগে নামাজ আদায় করা যাবে কি

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৭
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ইসলামি শরিয়তে প্রাপ্তবয়স্ক প্রতিটি মুসলমানের ওপর দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা ফরজ। এটি ইসলামের পাঁচটি মূল স্তম্ভের অন্যতম। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা নামাজ কায়েম করো, জাকাত দাও এবং যারা নামাজে অবনত হয়, তাদের সঙ্গে তোমরাও অবনত হও।’ (সুরা বাকারা: ৪৩)

নামাজের প্রতি মুমিনের যত্নবান হওয়ার নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ তাআলা আরও বলেন, ‘সব নামাজের প্রতি যত্নবান হও; বিশেষ করে মধ্যবর্তী নামাজের (আসর) ব্যাপারে। আর আল্লাহর সামনে একান্ত আদবের সঙ্গে দাঁড়াও।’ (সুরা বাকারা: ২৩৮)

প্রতিদিন পাঁচবার আজানের মাধ্যমে মুসল্লিদের আল্লাহর ঘরের দিকে ডাকা হয়। আজানের প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং এর প্রতি ভালোবাসা পোষণ করা প্রতিটি মুসলমানের ইমানি দায়িত্ব। নামাজ কবুল হওয়ার জন্য তা নির্দিষ্ট সময়ে বা ওয়াক্তমতো আদায় করা অপরিহার্য। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘নির্ধারিত সময়ে নামাজ আদায় করা মুমিনদের জন্য অবশ্যকর্তব্য।’ (সুরা নিসা: ১০৩)

এখানে একটি বিষয় জেনে রাখা জরুরি, নামাজের জন্য ওয়াক্ত হওয়া শর্ত, আজান হওয়া নয়। আজানের মূল উদ্দেশ্য হলো জামাতের সঙ্গে ফরজ নামাজ আদায়ের আহ্বান জানানো। যদি কোনো কারণে আজান হতে দেরি হয়, কিন্তু নামাজের ওয়াক্ত শুরু হয়ে যায়, তবে আজানের আগেই নামাজ আদায় করে নেওয়া বৈধ এবং নামাজ হয়ে যাবে। মূলত, একাকী নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে আজান হওয়া জরুরি নয়, বরং ওয়াক্ত শুরু হওয়াটাই আসল শর্ত। তবে ওয়াক্ত হওয়ার আগে নামাজ আদায় করলে তা কবুল হবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত