Ajker Patrika

নবীজির জন্মবর্ষ: বিজয়, আনন্দ ও অলৌকিক নিদর্শন

ড. আবু সালেহ মুহাম্মদ তোহা
মসজিদে নববী। ছবি: সংগৃহীত
মসজিদে নববী। ছবি: সংগৃহীত

মানব ইতিহাসের কিছু মুহূর্ত সমগ্র বিশ্বের জন্য যুগান্তকারী হয়ে দাঁড়ায়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জন্ম সেইরূপ এক ঘটনা। প্রসিদ্ধ মত অনুযায়ী, তিনি ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল সোমবার সুবহে সাদিকের সময় পবিত্র মক্কা নগরীর কুরাইশ বংশের হাশেমি গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জন্মের মাধ্যমে বিশ্বজগৎ পেয়েছে মুক্তি, রহমত ও আলো।

আল্লাহ তাআলা নবীজির জন্মকে সাধারণ কোনো জন্ম হিসেবে রাখেননি; বরং এর সঙ্গে যুক্ত করেছেন একাধিক অলৌকিক ও ঐতিহাসিক ঘটনা, যা এই মহান জন্মকে অনন্য মহিমায় সমুজ্জ্বল করেছে।

১. হস্তিবাহিনীর ধ্বংস হওয়া: রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জন্মের ৫০-৫৫ দিন আগে হস্তিবাহিনীর ধ্বংসের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনা ছিল নবী (সা.)-এর আবির্ভাবের অলৌকিক ইঙ্গিত ও ঘোষণা। হাবশার সম্রাট নাজ্জাসির পক্ষ থেকে ইয়েমেনের গভর্নর ছিল আবরাহা। সে রাজধানী সানায় খুব সুন্দর ও বড় গির্জা নির্মাণ করে চেষ্টা করল, যেন লোকেরা কাবাগৃহ ত্যাগ করে ইবাদত ও হজ-ওমরাহর জন্য সেখানে যায়।

এ কাজ মক্কাবাসী তথা অন্য আরবদের পছন্দ হয়নি। তারা কাবা ছেড়ে অন্য কোনো স্থানে যেতে রাজি হয়নি। এতে আবরাহা রাগান্বিত হয়ে কাবা ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নেয়। সে হাতির দল নিয়ে মক্কার দিকে অগ্রসর হয়। মক্কার কাছে পৌঁছে তারা মক্কার প্রধান [নবী (সা.)-এর দাদা] আবদুল মুত্তালিবের উটগুলো দখল করে নেয়। আবদুল মুত্তালিব আবরাহার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কেবল তাঁর উটগুলো ফেরত চায় আর কাবার বিষয়ে আল্লাহর ওপর ভরসা প্রকাশ করে।

অতঃপর যখন এই সেনাদল মিনাসংলগ্ন ‘মুহাসসার’ উপত্যকায় পৌঁছে, তখন আল্লাহ তাআলা একটি পাখির দলকে প্রেরণ করেন, যাদের ঠোঁটে ও পায়ে পোড়া মাটির কাঁকর ছিল। পাখিগুলো ওপর থেকে সেই কাঁকর বর্ষণ করে। ফলে তারা ধ্বংস হয়ে যায়।

আল্লাহ বলেন, ‘তুমি কি দেখোনি, তোমার প্রতিপালক হাতিওয়ালাদের সঙ্গে কী করেছিলেন? তাদের কৌশল কি তিনি বিফল করেননি? তিনি তাদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেছিলেন ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি। যারা নিক্ষেপ করছিল তাদের ওপর পোড়া মাটির পাথর। অতঃপর তিনি তাদের করলেন ভক্ষিত তৃণসাদৃশ।’ (সুরা ফিল: ১-৫)

২. দুর্ভিক্ষ থেকে মুক্তি: নবী (সা.)-এর জন্মের পূর্ববর্তী কয়েক বছর আরব উপদ্বীপ বিশেষ করে হিজাজ অঞ্চলে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ নেমে এসেছিল। মানুষ অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাত। কুরাইশ গোত্রসহ আরবের অধিকাংশ গোত্র চরম সংকটে পতিত হয়েছিল।

নবীজির জন্মের বছর আরবের সেই দুর্ভিক্ষ কেটে যায়। আরবের ঘরে ঘরে আনন্দের ফল্গুধারা বইতে থাকে। যেহেতু একই বছরে কুরাইশরা আবরাহার বিরুদ্ধে জয়লাভ করেছিল এবং দুর্ভিক্ষ থেকে পরিত্রাণ পেয়েছিল, তাই বছরটিকে আরববাসী ‘সানাতুল ফাতহ ওয়াল ইবতিহাজ’ অর্থাৎ ‘বিজয় ও আনন্দের বছর’ নাম দিয়েছিল। (ইবনে কাসির, আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ২য় খণ্ড, পৃ. ২৬৫; আস-সিরাতুল হালাবিয়া, ১ম খণ্ড, পৃ. ৭৮)

৩. নবীজির আগমনী বার্তা প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যে ছড়িয়ে পড়া: নবী (সা.)-এর জন্মের খবর শুধু আরবেই নয়, বরং ইহুদি-নাসারা আলেমদের মধ্যেও আলোচিত হয়েছিল। তৎকালীন ইহুদি-নাসারা তাঁদের কিতাবে নবী (সা.)-এর সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী পেতেন। নবী (সা.)-এর আগমনের মাধ্যমে আরব, বিশেষ করে কুরাইশ গোত্রের মর্যাদা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।

আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেছেন, মক্কা শরিফে এক ইহুদি বাস করতেন। যে রাতে নবী (সা.) জন্মগ্রহণ করেন, সে রাতে তিনি বললেন, ‘হে কুরাইশ দল, আজ রাতে কি তোমাদের কোনো শিশু জন্মগ্রহণ করেছে?’ তারা বলল, ‘আমাদের জানা নেই।’ তখন তিনি বললেন, ‘দেখো, আজ এই উম্মতের নবী আগমন করেছেন। যাঁর দুই কাঁধের মাঝখানে নবুওয়াতের চিহ্ন রয়েছে। তিনি দুই রাত পর্যন্ত দুধ পান করবেন না।’ লোকজন দ্রুত ওই সভা থেকে উঠে অনুসন্ধান শুরু করল। জানা গেল যে আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল মুত্তালিবের ঘরে একটি পুত্রসন্তান জন্মগ্রহণ করেছে।

ওই ইহুদি বললেন, ‘তোমরা আমাকে নিয়ে গিয়ে দেখাও।’ ইহুদি তাঁর দুই বাহুর মাঝখানের মোহরে নবুওয়াতের চিহ্ন দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেললেন। জ্ঞান ফেরার পর তিনি বললেন, ‘নবুওয়াত বনি ইসরাইল থেকে চলে গেছে। হে কুরাইশ সম্প্রদায়, শোনো, এই নবীর মাধ্যমে তোমাদের প্রভাব প্রতিপত্তি এতই বৃদ্ধি পেয়েছে যে তাঁর শুভাগমনের সংবাদ পৃথিবীর প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যে ছড়িয়ে পড়েছে।’ (মুস্তাদরাকে হাকিম: ৪১৭৭)

৪. নবীজির জন্মক্ষণ ভবিষ্যৎ বিজয়ের ইঙ্গিত: রাসুল (সা.)-এর জন্ম কোনো সাধারণ জন্ম ছিল না, বরং মহান আল্লাহ তাআলা পৃথিবীর মানুষের জন্য রহমত হিসেবে প্রেরণের নিদর্শনস্বরূপ বিভিন্ন মুজিজা ও আশ্চর্য চিহ্ন দ্বারা তা প্রকাশ করেছিলেন। নবী (সা.)-এর শুভ জন্মের সময় তাঁর মা একটি আলোকচ্ছটা দেখতে পেয়েছিলেন, যার মাধ্যমে সিরিয়ার প্রাসাদগুলো আলোকিত হয়ে গিয়েছিল। সিরিয়ায় প্রাসাদ আলোকিত হওয়া দ্বারা ভবিষ্যতের ইসলামি সভ্যতার প্রসার এবং রোমান সাম্রাজ্যের পতনের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

বাস্তবেও তা-ই হয়েছিল। ইরবাস ইবনে সারিয়্যা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.)-এর শুভ জন্মের সময় তাঁর মা একটি আলোকচ্ছটা দেখতে পান, এর মাধ্যমে সিরিয়ার প্রাসাদগুলো আলোকিত হয়ে যায়। (মুসতাদরাকে হাকিম: ৪১৭৮; মিশকাতুল মাসাবিহ: ৫৭৫৯)

৫. নবীজির জন্মক্ষণে রহমতের নূর: নবীজির জন্মকালে এমন আলো দেখা গিয়েছিল, যা সাধারণ কোনো আলো ছিল না, বরং তা ছিল এক অলৌকিক নিদর্শন। আকাশের তারকারাজি নিকটে চলে আসার যে বিষয়টি পাওয়া যায়, তা ভবিষ্যতের মহান পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করে। এর মাধ্যমে বোঝানো হয় যে নবী (সা.)-এর আগমনের মাধ্যমে আসমান ও জমিন উভয়ই এক নতুন অধ্যায়ের সাক্ষী হয়েছিল।

ফাতিমা বিনতে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, যখন নবী (সা.)-এর শুভাগমন ঘটে, তখন আমি আমিনার (নবীজির মা) কাছে উপস্থিত ছিলাম। আমি দেখলাম, প্রতিটি ঘর উজ্জ্বল আলোতে ভরে গেছে। আরও দেখলাম, আসমানের তারকারাজি এত কাছে এসেছে যে আমার মনে হলো—এই তারকা আমার ওপর পতিত হবে।’ (ফাতহুল বারি, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৪২৬)

এই বর্ণনাটি ইমাম ইবনে হাজার আসকালানি (রহ.) তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ফাতহুল বারিতে উল্লেখ করেছেন। তবে সনদের দিক থেকে এটি শক্তিশালী না হলেও নবীজির জন্মের অলৌকিকতা বর্ণনা করা অন্যান্য সহিহ্ হাদিসের সঙ্গে এর বিষয়বস্তু সামঞ্জস্যপূর্ণ।

পরিশেষে বলা যায়, নবীজির জন্মবর্ষের ঘটনাবলি প্রমাণ করে, তিনি ছিলেন আল্লাহর পক্ষ থেকে মানবজাতির জন্য বিশেষ রহমত। তাঁর জন্মের বছর আরববাসী পেয়েছিল বিজয়, মুক্তি ও সমৃদ্ধি। তাই সেই বছরকে যথার্থভাবেই বলা হয় ‘সানাতুল ফাতহ ওয়াল ইবতিহাজ’ বা বিজয় ও আনন্দের বছর। এই মহান জন্ম ছিল ইসলামের সূর্যোদয়ের প্রস্তুতি, যা পরবর্তীকালে বিশ্বসভ্যতার দিকনির্দেশক শক্তি হয়ে ওঠে।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শীতের টুপি পরে নামাজ আদায় করা যাবে কি?

ইসলাম ডেস্ক 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

শীতকালে প্রচণ্ড ঠান্ডার প্রকোপে অনেকেই কানটুপি, উলের টুপি কিংবা হুডি পরে থাকেন। এসব পরিধান করা অবস্থায় অনেক সময় নামাজের সময় হয়ে যায়। তাই নানা সময়ে মনে প্রশ্ন জাগে, শীতের টুপি বা হুডি পরে নামাজ আদায় করলে কি তা শুদ্ধ হবে?

ইসলামের বিধান হলো, নামাজে মাথা ঢাকা পুরুষের জন্য ফরজ নয়, বরং এটি নামাজের আদব ও সৌন্দর্যের অন্তর্ভুক্ত। রাসুলুল্লাহ (সা.) সাধারণত মাথা ঢেকেই নামাজ আদায় করতেন। আবু দাউদ শরিফে এসেছে, নবীজি (সা.) পাগড়ি পরিহিত অবস্থায় নামাজ আদায় করতেন। ফিকহের দৃষ্টিতে কানটুপি, উলের টুপি বা সাধারণ টুপি—সবই মাথা ঢাকার পোশাকের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং, শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে কানটুপি পরে নামাজ আদায় করা সম্পূর্ণ জায়েজ।

কানটুপি বা হুডি পরে নামাজ আদায় করার সময় একটি বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি—সেটি হলো সিজদা। সিজদার সময় কপাল সরাসরি মাটিতে বা জায়নামাজে লাগানো আবশ্যক। যদি টুপিটি এমনভাবে পরা হয়, যা কপালকে ঢেকে রাখে এবং মাটিতে কপাল ঠেকতে বাধা দেয়, তবে সিজদা অপূর্ণ থেকে যেতে পারে। তাই সিজদার সময় কপাল উন্মুক্ত রাখা উত্তম। তবে কপাল সামান্য আবৃত থাকলেও নামাজ হয়ে যাবে।

শীত থেকে বাঁচতে নাক-মুখ ঢেকে নামাজ আদায় করা অনুচিত। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া মুখ ঢেকে নামাজ আদায় করা মাকরুহ। তাই কান ও গলা আবৃত থাকলেও নাক-মুখ খোলা রাখা উচিত।

তাই শৈত্যপ্রবাহের সময় নিশ্চিন্তে কানটুপি পরা যাবে যদি টুপিটি পবিত্র (পাক-সাফ) হয়, এটি অহংকার বা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে না হয়ে কেবল শীত নিবারণের জন্য হয় এবং সিজদার সময় কপাল মাটিতে স্থাপনে কোনো বড় প্রতিবন্ধকতা তৈরি না করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ রোববার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ০৭ রজব ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১৮ মিনিট
ফজর০৫: ১৯ মিনিট০৬: ৩৮ মিনিট
জোহর১২: ০১ মিনিট০৩: ৪৩ মিনিট
আসর০৩: ৪৪ মিনিট০৫: ১৯ মিনিট
মাগরিব০৫: ২১ মিনিট০৬: ৪০ মিনিট
এশা০৬: ৪১ মিনিট০৫: ১৮ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ১২ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ০৬ রজব ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১৭ মিনিট
ফজর০৫: ১৮ মিনিট০৬: ৩৮ মিনিট
জোহর১২: ০০ মিনিট০৩: ৪৩ মিনিট
আসর০৩: ৪৪ মিনিট০৫: ১৯ মিনিট
মাগরিব০৫: ২১ মিনিট০৬: ৩৯ মিনিট
এশা০৬: ৪০ মিনিট০৫: ১৭ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শীতকালে অজুতে প্রয়োজন বাড়তি সতর্কতা

ইসলাম ডেস্ক 
অজু। ছবি: সংগৃহীত
অজু। ছবি: সংগৃহীত

শীতকালে ঠান্ডার কারণে অনেকে অজু করতে অলসতা করেন অথবা তাড়াহুড়ো করে অজুর অঙ্গগুলো ঠিকমতো না ভিজিয়েই ইবাদতে লিপ্ত হন। অথচ অজুর কোনো অংশ শুকনো থাকলে নামাজ ও ইবাদত কবুল হয় না। শীতের এ প্রতিকূল সময়ে ইবাদত কবুল হওয়ার জন্য নিচের বিষয়গুলো সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরি:

শীতের কাপড়ের কারণে অনেকে হাতা ঠিকমতো না গুটিয়েই হাত ধুয়ে নেন, ফলে কনুই শুকনো থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। মনে রাখতে হবে, কনুই বা পায়ের টাখনুর কোনো অংশ সামান্য শুকনো থাকলেও অজু হবে না। (সহিহ্ মুসলিম: ২৪৬)

তাড়াহুড়ো করে অজু করতে গিয়ে অনেকে পায়ের গোড়ালি ঠিকমতো ভেজান না। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে রাসুল (সা.) এ ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘আগুনের কঠিন শাস্তি সেই গোড়ালিগুলোর জন্য (যা অজুর সময় শুকনো থাকে)! তোমরা খুব ভালোভাবে অজু করো।’ (সহিহ্ মুসলিম: ২৪১)

ঠান্ডার ভয়ে অনেকে প্রস্রাব-পায়খানার বেগ চেপে রেখে আগের অজু দিয়ে নামাজ পড়ার চেষ্টা করেন। এটি স্বাস্থ্যের জন্য যেমন ক্ষতিকর, তেমনি ইসলামের দৃষ্টিতেও অপছন্দের। হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘খাবারের উপস্থিতিতে এবং মল-মূত্রের বেগ চেপে রাখা অবস্থায় কোনো নামাজ নেই।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৫৬০)। অন্য এক হাদিসে এসেছে, আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী কোনো মুমিনের জন্য মল-মূত্রের বেগ নিয়ে নামাজ পড়া বৈধ নয়। (সুনানে আবু দাউদ: ৯১)

শীতের কষ্টকে উপেক্ষা করে যথাযথভাবে অজু সম্পন্ন করা মুমিনের ইমানি দৃঢ়তার পরিচয়। তাই আমাদের উচিত, তাড়াহুড়ো না করে অজুর প্রতিটি অঙ্গ ভালোভাবে ধৌত করা এবং পূর্ণ পবিত্রতা অর্জনের পর আল্লাহর দরবারে দণ্ডায়মান হওয়া।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত