ইসলাম ডেস্ক

হজরত নুহ (আ.) ছিলেন মানবজাতির আদিপিতা হজরত আদম (আ.)–এর অষ্টম প্রজন্মের নবী ও রাসুল। হাদিসের ভাষ্য মতে, তিনিই পৃথিবীর প্রথম রাসুল তথা শরিয়তপ্রাপ্ত বার্তাবাহক। নুহ (আ.)-কে আল্লাহ তাআলা দীর্ঘ জীবন দান করেছিলেন। প্রায় ১ হাজার বছর তিনি জাতিকে আল্লাহর পথে ডাকেন। তবে খুব অল্প মানুষই তাঁর আনীত শরিয়তে বিশ্বাস স্থাপন করে। অবশেষে আল্লাহ তাআলা সেই অবাধ্য জাতিকে এক প্রলয়ঙ্কর মহাপ্লাবনে ধ্বংস করে দেন। কেবল মুক্তি পায় মুষ্টিমেয় বিশ্বাসী মানুষেরা।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা নুহ (আ.)-এর দাওয়াত প্রসঙ্গে এরশাদ করেন, ‘আমরা নুহকে তার কওমের কাছে পাঠালাম তাদের ওপরে মর্মান্তিক আজাব নাজিল হওয়ার আগেই তাদেরকে সতর্ক করার জন্য। নুহ তাদের বলল, হে আমার জাতি, আমি তোমাদের জন্য স্পষ্ট সতর্ককারী। তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো, তাঁকে ভয় করো এবং আমার আনুগত্য করো। তাতে আল্লাহ তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করবেন এবং নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অবকাশ দেবেন। তবে এটা নিশ্চিত যে, আল্লাহর নির্ধারিত সময় যখন এসে যাবে, তখন তা এতটুকুও পিছানো হবে না। যদি তোমরা তা জানতে।’ (সুরা নুহ: ১-৪)
হজরত নুহ (আ.) তাদের বিভিন্নভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেন। শিরক থেকে ফিরে এসে এক আল্লাহর ইবাদতের দাওয়াত দেন। তবে অল্প কিছু লোক ছাড়া কেউই তাঁর কথায় ইমান আনেনি। বরং বিভিন্নভাবে নুহ (আ.)-এর দাওয়াতি কাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করে গেছে। তার অবাধ্য কওম ইমান আনতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ৫টি আপত্তি জানায়। এর প্রতিটি আপত্তির জবাব নুহ (আ.) তাদের দিয়েছেন। তারপরও তারা তাঁর প্রতি ইমাম আনেনি। বরং তাঁকে ব্যঙ্গ করতেও ছাড়েনি।
কওমের ৫ আপত্তি ও জবাব
প্রথম আপত্তি ও জবাব: এরশাদ হয়েছে, তাঁর কওমের অবিশ্বাসীরা বলল, ‘এ লোক তো তোমাদের মতই মানুষ। আসলে সে তোমাদের ওপরে নেতৃত্ব করতে চায়। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তো একজন ফেরেশতা পাঠাতে পারতেন। এ ছাড়া এ লোক যেসব কথা বলছে, তাতো আমরা আমাদের বাপ-দাদাদের কাছে কখনো শুনিনি। আসলে লোকটার মধ্যে পাগলামী রয়েছে কিংবা তার সাথে কোনো জিন রয়েছে। অতএব তোমরা এ ব্যক্তির দিকে ভ্রুক্ষেপ করো না। বরং কিছুদিন অপেক্ষা করো।’ (সুরা মুমিনুন: ২৪-২৫)
এ কথার জবাবে নুহ (আ.) বলেন, ‘তোমরা কি এ বিষয়ে অবাক হচ্ছ যে, তোমাদের পালনকর্তার পয়গাম তোমাদের মধ্য থেকেই একজনের মাধ্যমে তোমাদের কাছে এসেছে, যাতে সে তোমাদের ভীতি প্রদর্শন করে ও তার ফলে তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও।’ (সুরা আরাফ: ৬৩)
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘যদি আমরা কোনো ফেরেশতাকে রাসুল করে পাঠাতাম, তবে সে মানুষের আকারেই হতো। কিন্তু এতেও তারা ওই সন্দেহই প্রকাশ করত, যা এখন করছে।’ (সুরা আনআম: ৯)
দ্বিতীয় আপত্তি ও জবাব: তারা বলেছিল, আপনার অনুসারীরা সমাজের গরিব ও নিচু জাতের। সুতরায় আপনি তাদের সঙ্গ পরিত্যাগ করুন। এর জবাবে নুহ (আ.) বলেন, ‘আমি কোনো (গরিব) ইমানদার ব্যক্তিকে তাড়িয়ে দিতে পারি না। তারা অবশ্যই তাদের পালনকর্তার দিদার লাভে ধন্য হবে। বরং আমি তোমাদেরই মূর্খ দেখছি। হে আমার কওম, আমি যদি ওসব লোকদের তাড়িয়ে দেই, তাহলে কে আমাকে আল্লাহর পাকড়াও থেকে রক্ষা করবে? তোমরা কি উপদেশ গ্রহণ করবে না?’ (সুরা হুদ: ২৯-৩০)
তৃতীয় আপত্তি ও জবাব: তারা বলেছিল, আপনি জাতির নেতৃত্বস্থানীয় কেউ নন, সুতরাং কেন আমরা আপনার কথা মান্য করব? জবাবে নুহ (আ.) বলেন, ‘তোমাদের দৃষ্টিতে যারা দীনহীন-অবাঞ্ছিত, তাদের আল্লাহ কোনো কল্যাণ দান করবেন না—এট আমি বলব না। তাদের মনের কথা আল্লাহ ভালো করেই জানেন। সুতরাং এমন কথা বললে আমি অন্যায়কারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব।’ (সুরা হুদ: ৩১)
চতুর্থ আপত্তি ও জবাব: তারা বলেছিল, আপনার দাওয়াত আমাদের পূর্বপুরুষদের প্রথাবিরোধী। সুতরাং আমরা তা মানব না। জবাবে নুহ (আ.) বলেন, ‘হে আমার কওম, আমার মধ্যে কোনো পথভ্রষ্টতা নেই। বরং আমি বিশ্বপালকের পক্ষ থেকে প্রেরিত রাসুল। আমি তোমাদের কাছে আমার প্রভুর বার্তা পৌঁছে দেই এবং সদুপদেশ দিয়ে থাকি। কেননা আমি আল্লাহর পক্ষ থেকে এমন বিষয় জানি, যা তোমরা জানো না।’ (সুরা আরাফ: ৬১-৬২)
পঞ্চম আপত্তি ও জবাব: তারা বলেছিল, মূলত আপনি ক্ষমতা চাচ্ছেন। জবাবে নুহ (আ.) বলেন, ‘এ দাওয়াতের বিনিময়ে আমি তোমাদের কাছে কোনো ধনদৌলত বা কোনো বিনিময় কামনা করি না। আমার পুরস্কার তো কেবল বিশ্বপালকের কাছেই রয়েছে।’ (সুরা শুআরা: ১০৯)
চূড়ান্ত অবাধ্যতা ও নুহ (আ.)-এর বদদোয়া
নুহ (আ.) সাড়ে নয়শ বছরের দীর্ঘ জীবন লাভ করেন। সুতরাং প্রজন্মের পর প্রজন্মের কাছে তিনি দাওয়াত পৌঁছান। তবে কওমের লোকজন তাঁকে সবসময় নিবৃত করার চেষ্টা করে গেছে। তারা বলেছে, ‘হে নুহ, যদি আপনি বিরত না হন, তবে পাথর মেরে আপনার মস্তক চূর্ণ করে দেওয়া হবে।’ (সুরা শুআরা: ১১৬) তবে নুহ (আ.) হতাশ হননি। বরং কওমের নির্বুদ্ধিতার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে গেছেন।
তবে দীর্ঘ নয়শ বছর দাওয়াত দেওয়ার পর আল্লাহ তাআলা জানিয়ে দিলেন, ‘তোমার কওমের যারা ইতিমধ্যে ইমান এনেছে, তারা ছাড়া আর কেউ ইমান আনবে না। অতএব তুমি ওদের কার্যকলাপে বিমর্ষ হইও না।’ (সুরা হুদ: ৩৬) তখন নুহ (আ.) ও আল্লাহর কাছে চূড়ান্ত ফায়সালার জন্য দোয়া করেন এবং বলেন, ‘অতএব আপনি আমার ও তাদের মাঝে চূড়ান্ত ফায়সালা করে দিন এবং আমাকে ও আমার সঙ্গী মুমিনদের (ওদের হাত থেকে) মুক্ত করো।’ (সুরা শুআরা: ১১৮)
নৌকা তৈরি ও মহাপ্লাবন
এ বিষয়ে সুরা হুদের ৩৭ থেকে ৪৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন। নুহ (আ.)-কে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তুমি আমার সম্মুখে আমারই নির্দেশনা মোতাবেক একটা নৌকা তৈরি করো এবং (স্বজাতির প্রতি দয়া পরবশ হয়ে) জালেমদের ব্যাপারে আমাকে কোনো কথা বলো না। অবশ্যই ওরা ডুবে মরবে।’
এরপর নুহ নৌকা তৈরি শুরু করলেন। তাঁর কওমের নেতারা যখন পাশ দিয়ে যেত, তখন তারা তাঁকে বিদ্রুপ করত। নুহ তাদের বললেন, ‘তোমরা যদি আমাদের উপহাস করে থাক, তবে জেনে রেখো তোমরা যেমন আমাদের উপহাস করছ, আমরাও তেমনি তোমাদের উপহাস করছি। অচিরেই তোমরা জানতে পারবে লাঞ্ছনাকর আজাব কাদের ওপরে আসে এবং কাদের ওপরে নেমে আসে চিরস্থায়ী গজব।’
পরের ঘটনা সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অবশেষে যখন আমার হুকুম এসে গেল এবং চুলা উদ্বেলিত হয়ে উঠল, (অর্থাৎ রান্নার চুলা থেকে পানি উথলে উঠল), তখন আমি বললাম, সব ধরনের জোড়া প্রাণীর দুটি করে এবং যাদের ওপরে আগেই হুকুম নির্ধারিত হয়ে গেছে তাদের বাদ দিয়ে তোমার পরিবারবর্গ ও সব ইমানদারদের নৌকায় তুলে নাও।’
নুহ (আ.)-এর প্রতি ইমান আনা লোকজনকে নৌকায় আরোহন করার নির্দেশ দিয়ে তিনি বললেন, ‘তোমরা এতে আরোহণ করো। আল্লাহর নামেই এর গতি ও স্থিতি। নিশ্চয়ই আমার প্রভু অতীব ক্ষমাশীল ও দয়াবান।’
এরপর নৌকাটি তাদের বহন করে নিয়ে চলল পর্বতপ্রমাণ তরঙ্গমালার মাঝ দিয়ে। অনেক দিন পর্যন্ত সেই মহাবন্যা স্থায়ী হলো। এক টানা অনেক দিন বৃষ্টি হলো। নুহ (আ.)-এর একজন পুত্র অবাধ্য ছিল, সেও বন্যার পানিতে ডুবে মরল। পৃথিবীর বুকে সেই নৌকায় আশ্রয় নেওয়া কয়েকজন মানুষ ছাড়া কেউই আর বেঁচে রইল না। অবশেষে আল্লাহর নির্দেশ এলো, ‘হে পৃথিবী, তোমার পানি গিলে ফেল (অর্থাৎ হে প্লাবনের পানি, নেমে যাও)। হে আকাশ, ক্ষান্ত হও (অর্থাৎ তোমার বিরামহীন বৃষ্টি বন্ধ করো)।’
অবশেষে পানি কমল এবং আজাবের সময় শেষ হলো। নৌকা ভিড়ল জুদি পাহাড়ে। আদেশ এলো, ‘হে নুহ, এখন (নৌকা থেকে) অবতরণ করো আমাদের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি সহকারে তোমার ওপর এবং তোমার সঙ্গী দলগুলোর ওপর...।’
অন্য সুরায় এ আজাবের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে এভাবে—‘তখন আমি খুলে দিলাম আকাশের দুয়ারসমূহ প্রবল বৃষ্টির মাধ্যমে। ভূমি থেকে প্রবাহিত করলাম নদীসমূহকে। এরপর উভয় পানি মিলিত হলো একটি পূর্ব নির্ধারিত কাজে (অর্থাৎ ডুবিয়ে মারার কাজে)। আমি নুহকে আরোহন করালাম এক কাষ্ঠ ও পেরেক নির্মিত জলযানে। যা চলত আমার দৃষ্টির সম্মুখে। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রতিশোধ ছিল, যাকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। ‘আমরা একে নিদর্শন হিসাবে রেখে দিয়েছি। অতএব কোনো চিন্তাশীল আছে কি?’ (সুরা কামার: ১১-১৫)

হজরত নুহ (আ.) ছিলেন মানবজাতির আদিপিতা হজরত আদম (আ.)–এর অষ্টম প্রজন্মের নবী ও রাসুল। হাদিসের ভাষ্য মতে, তিনিই পৃথিবীর প্রথম রাসুল তথা শরিয়তপ্রাপ্ত বার্তাবাহক। নুহ (আ.)-কে আল্লাহ তাআলা দীর্ঘ জীবন দান করেছিলেন। প্রায় ১ হাজার বছর তিনি জাতিকে আল্লাহর পথে ডাকেন। তবে খুব অল্প মানুষই তাঁর আনীত শরিয়তে বিশ্বাস স্থাপন করে। অবশেষে আল্লাহ তাআলা সেই অবাধ্য জাতিকে এক প্রলয়ঙ্কর মহাপ্লাবনে ধ্বংস করে দেন। কেবল মুক্তি পায় মুষ্টিমেয় বিশ্বাসী মানুষেরা।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা নুহ (আ.)-এর দাওয়াত প্রসঙ্গে এরশাদ করেন, ‘আমরা নুহকে তার কওমের কাছে পাঠালাম তাদের ওপরে মর্মান্তিক আজাব নাজিল হওয়ার আগেই তাদেরকে সতর্ক করার জন্য। নুহ তাদের বলল, হে আমার জাতি, আমি তোমাদের জন্য স্পষ্ট সতর্ককারী। তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো, তাঁকে ভয় করো এবং আমার আনুগত্য করো। তাতে আল্লাহ তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করবেন এবং নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অবকাশ দেবেন। তবে এটা নিশ্চিত যে, আল্লাহর নির্ধারিত সময় যখন এসে যাবে, তখন তা এতটুকুও পিছানো হবে না। যদি তোমরা তা জানতে।’ (সুরা নুহ: ১-৪)
হজরত নুহ (আ.) তাদের বিভিন্নভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেন। শিরক থেকে ফিরে এসে এক আল্লাহর ইবাদতের দাওয়াত দেন। তবে অল্প কিছু লোক ছাড়া কেউই তাঁর কথায় ইমান আনেনি। বরং বিভিন্নভাবে নুহ (আ.)-এর দাওয়াতি কাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করে গেছে। তার অবাধ্য কওম ইমান আনতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ৫টি আপত্তি জানায়। এর প্রতিটি আপত্তির জবাব নুহ (আ.) তাদের দিয়েছেন। তারপরও তারা তাঁর প্রতি ইমাম আনেনি। বরং তাঁকে ব্যঙ্গ করতেও ছাড়েনি।
কওমের ৫ আপত্তি ও জবাব
প্রথম আপত্তি ও জবাব: এরশাদ হয়েছে, তাঁর কওমের অবিশ্বাসীরা বলল, ‘এ লোক তো তোমাদের মতই মানুষ। আসলে সে তোমাদের ওপরে নেতৃত্ব করতে চায়। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তো একজন ফেরেশতা পাঠাতে পারতেন। এ ছাড়া এ লোক যেসব কথা বলছে, তাতো আমরা আমাদের বাপ-দাদাদের কাছে কখনো শুনিনি। আসলে লোকটার মধ্যে পাগলামী রয়েছে কিংবা তার সাথে কোনো জিন রয়েছে। অতএব তোমরা এ ব্যক্তির দিকে ভ্রুক্ষেপ করো না। বরং কিছুদিন অপেক্ষা করো।’ (সুরা মুমিনুন: ২৪-২৫)
এ কথার জবাবে নুহ (আ.) বলেন, ‘তোমরা কি এ বিষয়ে অবাক হচ্ছ যে, তোমাদের পালনকর্তার পয়গাম তোমাদের মধ্য থেকেই একজনের মাধ্যমে তোমাদের কাছে এসেছে, যাতে সে তোমাদের ভীতি প্রদর্শন করে ও তার ফলে তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও।’ (সুরা আরাফ: ৬৩)
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘যদি আমরা কোনো ফেরেশতাকে রাসুল করে পাঠাতাম, তবে সে মানুষের আকারেই হতো। কিন্তু এতেও তারা ওই সন্দেহই প্রকাশ করত, যা এখন করছে।’ (সুরা আনআম: ৯)
দ্বিতীয় আপত্তি ও জবাব: তারা বলেছিল, আপনার অনুসারীরা সমাজের গরিব ও নিচু জাতের। সুতরায় আপনি তাদের সঙ্গ পরিত্যাগ করুন। এর জবাবে নুহ (আ.) বলেন, ‘আমি কোনো (গরিব) ইমানদার ব্যক্তিকে তাড়িয়ে দিতে পারি না। তারা অবশ্যই তাদের পালনকর্তার দিদার লাভে ধন্য হবে। বরং আমি তোমাদেরই মূর্খ দেখছি। হে আমার কওম, আমি যদি ওসব লোকদের তাড়িয়ে দেই, তাহলে কে আমাকে আল্লাহর পাকড়াও থেকে রক্ষা করবে? তোমরা কি উপদেশ গ্রহণ করবে না?’ (সুরা হুদ: ২৯-৩০)
তৃতীয় আপত্তি ও জবাব: তারা বলেছিল, আপনি জাতির নেতৃত্বস্থানীয় কেউ নন, সুতরাং কেন আমরা আপনার কথা মান্য করব? জবাবে নুহ (আ.) বলেন, ‘তোমাদের দৃষ্টিতে যারা দীনহীন-অবাঞ্ছিত, তাদের আল্লাহ কোনো কল্যাণ দান করবেন না—এট আমি বলব না। তাদের মনের কথা আল্লাহ ভালো করেই জানেন। সুতরাং এমন কথা বললে আমি অন্যায়কারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব।’ (সুরা হুদ: ৩১)
চতুর্থ আপত্তি ও জবাব: তারা বলেছিল, আপনার দাওয়াত আমাদের পূর্বপুরুষদের প্রথাবিরোধী। সুতরাং আমরা তা মানব না। জবাবে নুহ (আ.) বলেন, ‘হে আমার কওম, আমার মধ্যে কোনো পথভ্রষ্টতা নেই। বরং আমি বিশ্বপালকের পক্ষ থেকে প্রেরিত রাসুল। আমি তোমাদের কাছে আমার প্রভুর বার্তা পৌঁছে দেই এবং সদুপদেশ দিয়ে থাকি। কেননা আমি আল্লাহর পক্ষ থেকে এমন বিষয় জানি, যা তোমরা জানো না।’ (সুরা আরাফ: ৬১-৬২)
পঞ্চম আপত্তি ও জবাব: তারা বলেছিল, মূলত আপনি ক্ষমতা চাচ্ছেন। জবাবে নুহ (আ.) বলেন, ‘এ দাওয়াতের বিনিময়ে আমি তোমাদের কাছে কোনো ধনদৌলত বা কোনো বিনিময় কামনা করি না। আমার পুরস্কার তো কেবল বিশ্বপালকের কাছেই রয়েছে।’ (সুরা শুআরা: ১০৯)
চূড়ান্ত অবাধ্যতা ও নুহ (আ.)-এর বদদোয়া
নুহ (আ.) সাড়ে নয়শ বছরের দীর্ঘ জীবন লাভ করেন। সুতরাং প্রজন্মের পর প্রজন্মের কাছে তিনি দাওয়াত পৌঁছান। তবে কওমের লোকজন তাঁকে সবসময় নিবৃত করার চেষ্টা করে গেছে। তারা বলেছে, ‘হে নুহ, যদি আপনি বিরত না হন, তবে পাথর মেরে আপনার মস্তক চূর্ণ করে দেওয়া হবে।’ (সুরা শুআরা: ১১৬) তবে নুহ (আ.) হতাশ হননি। বরং কওমের নির্বুদ্ধিতার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে গেছেন।
তবে দীর্ঘ নয়শ বছর দাওয়াত দেওয়ার পর আল্লাহ তাআলা জানিয়ে দিলেন, ‘তোমার কওমের যারা ইতিমধ্যে ইমান এনেছে, তারা ছাড়া আর কেউ ইমান আনবে না। অতএব তুমি ওদের কার্যকলাপে বিমর্ষ হইও না।’ (সুরা হুদ: ৩৬) তখন নুহ (আ.) ও আল্লাহর কাছে চূড়ান্ত ফায়সালার জন্য দোয়া করেন এবং বলেন, ‘অতএব আপনি আমার ও তাদের মাঝে চূড়ান্ত ফায়সালা করে দিন এবং আমাকে ও আমার সঙ্গী মুমিনদের (ওদের হাত থেকে) মুক্ত করো।’ (সুরা শুআরা: ১১৮)
নৌকা তৈরি ও মহাপ্লাবন
এ বিষয়ে সুরা হুদের ৩৭ থেকে ৪৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন। নুহ (আ.)-কে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তুমি আমার সম্মুখে আমারই নির্দেশনা মোতাবেক একটা নৌকা তৈরি করো এবং (স্বজাতির প্রতি দয়া পরবশ হয়ে) জালেমদের ব্যাপারে আমাকে কোনো কথা বলো না। অবশ্যই ওরা ডুবে মরবে।’
এরপর নুহ নৌকা তৈরি শুরু করলেন। তাঁর কওমের নেতারা যখন পাশ দিয়ে যেত, তখন তারা তাঁকে বিদ্রুপ করত। নুহ তাদের বললেন, ‘তোমরা যদি আমাদের উপহাস করে থাক, তবে জেনে রেখো তোমরা যেমন আমাদের উপহাস করছ, আমরাও তেমনি তোমাদের উপহাস করছি। অচিরেই তোমরা জানতে পারবে লাঞ্ছনাকর আজাব কাদের ওপরে আসে এবং কাদের ওপরে নেমে আসে চিরস্থায়ী গজব।’
পরের ঘটনা সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অবশেষে যখন আমার হুকুম এসে গেল এবং চুলা উদ্বেলিত হয়ে উঠল, (অর্থাৎ রান্নার চুলা থেকে পানি উথলে উঠল), তখন আমি বললাম, সব ধরনের জোড়া প্রাণীর দুটি করে এবং যাদের ওপরে আগেই হুকুম নির্ধারিত হয়ে গেছে তাদের বাদ দিয়ে তোমার পরিবারবর্গ ও সব ইমানদারদের নৌকায় তুলে নাও।’
নুহ (আ.)-এর প্রতি ইমান আনা লোকজনকে নৌকায় আরোহন করার নির্দেশ দিয়ে তিনি বললেন, ‘তোমরা এতে আরোহণ করো। আল্লাহর নামেই এর গতি ও স্থিতি। নিশ্চয়ই আমার প্রভু অতীব ক্ষমাশীল ও দয়াবান।’
এরপর নৌকাটি তাদের বহন করে নিয়ে চলল পর্বতপ্রমাণ তরঙ্গমালার মাঝ দিয়ে। অনেক দিন পর্যন্ত সেই মহাবন্যা স্থায়ী হলো। এক টানা অনেক দিন বৃষ্টি হলো। নুহ (আ.)-এর একজন পুত্র অবাধ্য ছিল, সেও বন্যার পানিতে ডুবে মরল। পৃথিবীর বুকে সেই নৌকায় আশ্রয় নেওয়া কয়েকজন মানুষ ছাড়া কেউই আর বেঁচে রইল না। অবশেষে আল্লাহর নির্দেশ এলো, ‘হে পৃথিবী, তোমার পানি গিলে ফেল (অর্থাৎ হে প্লাবনের পানি, নেমে যাও)। হে আকাশ, ক্ষান্ত হও (অর্থাৎ তোমার বিরামহীন বৃষ্টি বন্ধ করো)।’
অবশেষে পানি কমল এবং আজাবের সময় শেষ হলো। নৌকা ভিড়ল জুদি পাহাড়ে। আদেশ এলো, ‘হে নুহ, এখন (নৌকা থেকে) অবতরণ করো আমাদের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি সহকারে তোমার ওপর এবং তোমার সঙ্গী দলগুলোর ওপর...।’
অন্য সুরায় এ আজাবের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে এভাবে—‘তখন আমি খুলে দিলাম আকাশের দুয়ারসমূহ প্রবল বৃষ্টির মাধ্যমে। ভূমি থেকে প্রবাহিত করলাম নদীসমূহকে। এরপর উভয় পানি মিলিত হলো একটি পূর্ব নির্ধারিত কাজে (অর্থাৎ ডুবিয়ে মারার কাজে)। আমি নুহকে আরোহন করালাম এক কাষ্ঠ ও পেরেক নির্মিত জলযানে। যা চলত আমার দৃষ্টির সম্মুখে। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রতিশোধ ছিল, যাকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। ‘আমরা একে নিদর্শন হিসাবে রেখে দিয়েছি। অতএব কোনো চিন্তাশীল আছে কি?’ (সুরা কামার: ১১-১৫)
ইসলাম ডেস্ক

হজরত নুহ (আ.) ছিলেন মানবজাতির আদিপিতা হজরত আদম (আ.)–এর অষ্টম প্রজন্মের নবী ও রাসুল। হাদিসের ভাষ্য মতে, তিনিই পৃথিবীর প্রথম রাসুল তথা শরিয়তপ্রাপ্ত বার্তাবাহক। নুহ (আ.)-কে আল্লাহ তাআলা দীর্ঘ জীবন দান করেছিলেন। প্রায় ১ হাজার বছর তিনি জাতিকে আল্লাহর পথে ডাকেন। তবে খুব অল্প মানুষই তাঁর আনীত শরিয়তে বিশ্বাস স্থাপন করে। অবশেষে আল্লাহ তাআলা সেই অবাধ্য জাতিকে এক প্রলয়ঙ্কর মহাপ্লাবনে ধ্বংস করে দেন। কেবল মুক্তি পায় মুষ্টিমেয় বিশ্বাসী মানুষেরা।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা নুহ (আ.)-এর দাওয়াত প্রসঙ্গে এরশাদ করেন, ‘আমরা নুহকে তার কওমের কাছে পাঠালাম তাদের ওপরে মর্মান্তিক আজাব নাজিল হওয়ার আগেই তাদেরকে সতর্ক করার জন্য। নুহ তাদের বলল, হে আমার জাতি, আমি তোমাদের জন্য স্পষ্ট সতর্ককারী। তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো, তাঁকে ভয় করো এবং আমার আনুগত্য করো। তাতে আল্লাহ তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করবেন এবং নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অবকাশ দেবেন। তবে এটা নিশ্চিত যে, আল্লাহর নির্ধারিত সময় যখন এসে যাবে, তখন তা এতটুকুও পিছানো হবে না। যদি তোমরা তা জানতে।’ (সুরা নুহ: ১-৪)
হজরত নুহ (আ.) তাদের বিভিন্নভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেন। শিরক থেকে ফিরে এসে এক আল্লাহর ইবাদতের দাওয়াত দেন। তবে অল্প কিছু লোক ছাড়া কেউই তাঁর কথায় ইমান আনেনি। বরং বিভিন্নভাবে নুহ (আ.)-এর দাওয়াতি কাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করে গেছে। তার অবাধ্য কওম ইমান আনতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ৫টি আপত্তি জানায়। এর প্রতিটি আপত্তির জবাব নুহ (আ.) তাদের দিয়েছেন। তারপরও তারা তাঁর প্রতি ইমাম আনেনি। বরং তাঁকে ব্যঙ্গ করতেও ছাড়েনি।
কওমের ৫ আপত্তি ও জবাব
প্রথম আপত্তি ও জবাব: এরশাদ হয়েছে, তাঁর কওমের অবিশ্বাসীরা বলল, ‘এ লোক তো তোমাদের মতই মানুষ। আসলে সে তোমাদের ওপরে নেতৃত্ব করতে চায়। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তো একজন ফেরেশতা পাঠাতে পারতেন। এ ছাড়া এ লোক যেসব কথা বলছে, তাতো আমরা আমাদের বাপ-দাদাদের কাছে কখনো শুনিনি। আসলে লোকটার মধ্যে পাগলামী রয়েছে কিংবা তার সাথে কোনো জিন রয়েছে। অতএব তোমরা এ ব্যক্তির দিকে ভ্রুক্ষেপ করো না। বরং কিছুদিন অপেক্ষা করো।’ (সুরা মুমিনুন: ২৪-২৫)
এ কথার জবাবে নুহ (আ.) বলেন, ‘তোমরা কি এ বিষয়ে অবাক হচ্ছ যে, তোমাদের পালনকর্তার পয়গাম তোমাদের মধ্য থেকেই একজনের মাধ্যমে তোমাদের কাছে এসেছে, যাতে সে তোমাদের ভীতি প্রদর্শন করে ও তার ফলে তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও।’ (সুরা আরাফ: ৬৩)
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘যদি আমরা কোনো ফেরেশতাকে রাসুল করে পাঠাতাম, তবে সে মানুষের আকারেই হতো। কিন্তু এতেও তারা ওই সন্দেহই প্রকাশ করত, যা এখন করছে।’ (সুরা আনআম: ৯)
দ্বিতীয় আপত্তি ও জবাব: তারা বলেছিল, আপনার অনুসারীরা সমাজের গরিব ও নিচু জাতের। সুতরায় আপনি তাদের সঙ্গ পরিত্যাগ করুন। এর জবাবে নুহ (আ.) বলেন, ‘আমি কোনো (গরিব) ইমানদার ব্যক্তিকে তাড়িয়ে দিতে পারি না। তারা অবশ্যই তাদের পালনকর্তার দিদার লাভে ধন্য হবে। বরং আমি তোমাদেরই মূর্খ দেখছি। হে আমার কওম, আমি যদি ওসব লোকদের তাড়িয়ে দেই, তাহলে কে আমাকে আল্লাহর পাকড়াও থেকে রক্ষা করবে? তোমরা কি উপদেশ গ্রহণ করবে না?’ (সুরা হুদ: ২৯-৩০)
তৃতীয় আপত্তি ও জবাব: তারা বলেছিল, আপনি জাতির নেতৃত্বস্থানীয় কেউ নন, সুতরাং কেন আমরা আপনার কথা মান্য করব? জবাবে নুহ (আ.) বলেন, ‘তোমাদের দৃষ্টিতে যারা দীনহীন-অবাঞ্ছিত, তাদের আল্লাহ কোনো কল্যাণ দান করবেন না—এট আমি বলব না। তাদের মনের কথা আল্লাহ ভালো করেই জানেন। সুতরাং এমন কথা বললে আমি অন্যায়কারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব।’ (সুরা হুদ: ৩১)
চতুর্থ আপত্তি ও জবাব: তারা বলেছিল, আপনার দাওয়াত আমাদের পূর্বপুরুষদের প্রথাবিরোধী। সুতরাং আমরা তা মানব না। জবাবে নুহ (আ.) বলেন, ‘হে আমার কওম, আমার মধ্যে কোনো পথভ্রষ্টতা নেই। বরং আমি বিশ্বপালকের পক্ষ থেকে প্রেরিত রাসুল। আমি তোমাদের কাছে আমার প্রভুর বার্তা পৌঁছে দেই এবং সদুপদেশ দিয়ে থাকি। কেননা আমি আল্লাহর পক্ষ থেকে এমন বিষয় জানি, যা তোমরা জানো না।’ (সুরা আরাফ: ৬১-৬২)
পঞ্চম আপত্তি ও জবাব: তারা বলেছিল, মূলত আপনি ক্ষমতা চাচ্ছেন। জবাবে নুহ (আ.) বলেন, ‘এ দাওয়াতের বিনিময়ে আমি তোমাদের কাছে কোনো ধনদৌলত বা কোনো বিনিময় কামনা করি না। আমার পুরস্কার তো কেবল বিশ্বপালকের কাছেই রয়েছে।’ (সুরা শুআরা: ১০৯)
চূড়ান্ত অবাধ্যতা ও নুহ (আ.)-এর বদদোয়া
নুহ (আ.) সাড়ে নয়শ বছরের দীর্ঘ জীবন লাভ করেন। সুতরাং প্রজন্মের পর প্রজন্মের কাছে তিনি দাওয়াত পৌঁছান। তবে কওমের লোকজন তাঁকে সবসময় নিবৃত করার চেষ্টা করে গেছে। তারা বলেছে, ‘হে নুহ, যদি আপনি বিরত না হন, তবে পাথর মেরে আপনার মস্তক চূর্ণ করে দেওয়া হবে।’ (সুরা শুআরা: ১১৬) তবে নুহ (আ.) হতাশ হননি। বরং কওমের নির্বুদ্ধিতার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে গেছেন।
তবে দীর্ঘ নয়শ বছর দাওয়াত দেওয়ার পর আল্লাহ তাআলা জানিয়ে দিলেন, ‘তোমার কওমের যারা ইতিমধ্যে ইমান এনেছে, তারা ছাড়া আর কেউ ইমান আনবে না। অতএব তুমি ওদের কার্যকলাপে বিমর্ষ হইও না।’ (সুরা হুদ: ৩৬) তখন নুহ (আ.) ও আল্লাহর কাছে চূড়ান্ত ফায়সালার জন্য দোয়া করেন এবং বলেন, ‘অতএব আপনি আমার ও তাদের মাঝে চূড়ান্ত ফায়সালা করে দিন এবং আমাকে ও আমার সঙ্গী মুমিনদের (ওদের হাত থেকে) মুক্ত করো।’ (সুরা শুআরা: ১১৮)
নৌকা তৈরি ও মহাপ্লাবন
এ বিষয়ে সুরা হুদের ৩৭ থেকে ৪৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন। নুহ (আ.)-কে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তুমি আমার সম্মুখে আমারই নির্দেশনা মোতাবেক একটা নৌকা তৈরি করো এবং (স্বজাতির প্রতি দয়া পরবশ হয়ে) জালেমদের ব্যাপারে আমাকে কোনো কথা বলো না। অবশ্যই ওরা ডুবে মরবে।’
এরপর নুহ নৌকা তৈরি শুরু করলেন। তাঁর কওমের নেতারা যখন পাশ দিয়ে যেত, তখন তারা তাঁকে বিদ্রুপ করত। নুহ তাদের বললেন, ‘তোমরা যদি আমাদের উপহাস করে থাক, তবে জেনে রেখো তোমরা যেমন আমাদের উপহাস করছ, আমরাও তেমনি তোমাদের উপহাস করছি। অচিরেই তোমরা জানতে পারবে লাঞ্ছনাকর আজাব কাদের ওপরে আসে এবং কাদের ওপরে নেমে আসে চিরস্থায়ী গজব।’
পরের ঘটনা সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অবশেষে যখন আমার হুকুম এসে গেল এবং চুলা উদ্বেলিত হয়ে উঠল, (অর্থাৎ রান্নার চুলা থেকে পানি উথলে উঠল), তখন আমি বললাম, সব ধরনের জোড়া প্রাণীর দুটি করে এবং যাদের ওপরে আগেই হুকুম নির্ধারিত হয়ে গেছে তাদের বাদ দিয়ে তোমার পরিবারবর্গ ও সব ইমানদারদের নৌকায় তুলে নাও।’
নুহ (আ.)-এর প্রতি ইমান আনা লোকজনকে নৌকায় আরোহন করার নির্দেশ দিয়ে তিনি বললেন, ‘তোমরা এতে আরোহণ করো। আল্লাহর নামেই এর গতি ও স্থিতি। নিশ্চয়ই আমার প্রভু অতীব ক্ষমাশীল ও দয়াবান।’
এরপর নৌকাটি তাদের বহন করে নিয়ে চলল পর্বতপ্রমাণ তরঙ্গমালার মাঝ দিয়ে। অনেক দিন পর্যন্ত সেই মহাবন্যা স্থায়ী হলো। এক টানা অনেক দিন বৃষ্টি হলো। নুহ (আ.)-এর একজন পুত্র অবাধ্য ছিল, সেও বন্যার পানিতে ডুবে মরল। পৃথিবীর বুকে সেই নৌকায় আশ্রয় নেওয়া কয়েকজন মানুষ ছাড়া কেউই আর বেঁচে রইল না। অবশেষে আল্লাহর নির্দেশ এলো, ‘হে পৃথিবী, তোমার পানি গিলে ফেল (অর্থাৎ হে প্লাবনের পানি, নেমে যাও)। হে আকাশ, ক্ষান্ত হও (অর্থাৎ তোমার বিরামহীন বৃষ্টি বন্ধ করো)।’
অবশেষে পানি কমল এবং আজাবের সময় শেষ হলো। নৌকা ভিড়ল জুদি পাহাড়ে। আদেশ এলো, ‘হে নুহ, এখন (নৌকা থেকে) অবতরণ করো আমাদের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি সহকারে তোমার ওপর এবং তোমার সঙ্গী দলগুলোর ওপর...।’
অন্য সুরায় এ আজাবের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে এভাবে—‘তখন আমি খুলে দিলাম আকাশের দুয়ারসমূহ প্রবল বৃষ্টির মাধ্যমে। ভূমি থেকে প্রবাহিত করলাম নদীসমূহকে। এরপর উভয় পানি মিলিত হলো একটি পূর্ব নির্ধারিত কাজে (অর্থাৎ ডুবিয়ে মারার কাজে)। আমি নুহকে আরোহন করালাম এক কাষ্ঠ ও পেরেক নির্মিত জলযানে। যা চলত আমার দৃষ্টির সম্মুখে। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রতিশোধ ছিল, যাকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। ‘আমরা একে নিদর্শন হিসাবে রেখে দিয়েছি। অতএব কোনো চিন্তাশীল আছে কি?’ (সুরা কামার: ১১-১৫)

হজরত নুহ (আ.) ছিলেন মানবজাতির আদিপিতা হজরত আদম (আ.)–এর অষ্টম প্রজন্মের নবী ও রাসুল। হাদিসের ভাষ্য মতে, তিনিই পৃথিবীর প্রথম রাসুল তথা শরিয়তপ্রাপ্ত বার্তাবাহক। নুহ (আ.)-কে আল্লাহ তাআলা দীর্ঘ জীবন দান করেছিলেন। প্রায় ১ হাজার বছর তিনি জাতিকে আল্লাহর পথে ডাকেন। তবে খুব অল্প মানুষই তাঁর আনীত শরিয়তে বিশ্বাস স্থাপন করে। অবশেষে আল্লাহ তাআলা সেই অবাধ্য জাতিকে এক প্রলয়ঙ্কর মহাপ্লাবনে ধ্বংস করে দেন। কেবল মুক্তি পায় মুষ্টিমেয় বিশ্বাসী মানুষেরা।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা নুহ (আ.)-এর দাওয়াত প্রসঙ্গে এরশাদ করেন, ‘আমরা নুহকে তার কওমের কাছে পাঠালাম তাদের ওপরে মর্মান্তিক আজাব নাজিল হওয়ার আগেই তাদেরকে সতর্ক করার জন্য। নুহ তাদের বলল, হে আমার জাতি, আমি তোমাদের জন্য স্পষ্ট সতর্ককারী। তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো, তাঁকে ভয় করো এবং আমার আনুগত্য করো। তাতে আল্লাহ তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করবেন এবং নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অবকাশ দেবেন। তবে এটা নিশ্চিত যে, আল্লাহর নির্ধারিত সময় যখন এসে যাবে, তখন তা এতটুকুও পিছানো হবে না। যদি তোমরা তা জানতে।’ (সুরা নুহ: ১-৪)
হজরত নুহ (আ.) তাদের বিভিন্নভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেন। শিরক থেকে ফিরে এসে এক আল্লাহর ইবাদতের দাওয়াত দেন। তবে অল্প কিছু লোক ছাড়া কেউই তাঁর কথায় ইমান আনেনি। বরং বিভিন্নভাবে নুহ (আ.)-এর দাওয়াতি কাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করে গেছে। তার অবাধ্য কওম ইমান আনতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ৫টি আপত্তি জানায়। এর প্রতিটি আপত্তির জবাব নুহ (আ.) তাদের দিয়েছেন। তারপরও তারা তাঁর প্রতি ইমাম আনেনি। বরং তাঁকে ব্যঙ্গ করতেও ছাড়েনি।
কওমের ৫ আপত্তি ও জবাব
প্রথম আপত্তি ও জবাব: এরশাদ হয়েছে, তাঁর কওমের অবিশ্বাসীরা বলল, ‘এ লোক তো তোমাদের মতই মানুষ। আসলে সে তোমাদের ওপরে নেতৃত্ব করতে চায়। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তো একজন ফেরেশতা পাঠাতে পারতেন। এ ছাড়া এ লোক যেসব কথা বলছে, তাতো আমরা আমাদের বাপ-দাদাদের কাছে কখনো শুনিনি। আসলে লোকটার মধ্যে পাগলামী রয়েছে কিংবা তার সাথে কোনো জিন রয়েছে। অতএব তোমরা এ ব্যক্তির দিকে ভ্রুক্ষেপ করো না। বরং কিছুদিন অপেক্ষা করো।’ (সুরা মুমিনুন: ২৪-২৫)
এ কথার জবাবে নুহ (আ.) বলেন, ‘তোমরা কি এ বিষয়ে অবাক হচ্ছ যে, তোমাদের পালনকর্তার পয়গাম তোমাদের মধ্য থেকেই একজনের মাধ্যমে তোমাদের কাছে এসেছে, যাতে সে তোমাদের ভীতি প্রদর্শন করে ও তার ফলে তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও।’ (সুরা আরাফ: ৬৩)
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘যদি আমরা কোনো ফেরেশতাকে রাসুল করে পাঠাতাম, তবে সে মানুষের আকারেই হতো। কিন্তু এতেও তারা ওই সন্দেহই প্রকাশ করত, যা এখন করছে।’ (সুরা আনআম: ৯)
দ্বিতীয় আপত্তি ও জবাব: তারা বলেছিল, আপনার অনুসারীরা সমাজের গরিব ও নিচু জাতের। সুতরায় আপনি তাদের সঙ্গ পরিত্যাগ করুন। এর জবাবে নুহ (আ.) বলেন, ‘আমি কোনো (গরিব) ইমানদার ব্যক্তিকে তাড়িয়ে দিতে পারি না। তারা অবশ্যই তাদের পালনকর্তার দিদার লাভে ধন্য হবে। বরং আমি তোমাদেরই মূর্খ দেখছি। হে আমার কওম, আমি যদি ওসব লোকদের তাড়িয়ে দেই, তাহলে কে আমাকে আল্লাহর পাকড়াও থেকে রক্ষা করবে? তোমরা কি উপদেশ গ্রহণ করবে না?’ (সুরা হুদ: ২৯-৩০)
তৃতীয় আপত্তি ও জবাব: তারা বলেছিল, আপনি জাতির নেতৃত্বস্থানীয় কেউ নন, সুতরাং কেন আমরা আপনার কথা মান্য করব? জবাবে নুহ (আ.) বলেন, ‘তোমাদের দৃষ্টিতে যারা দীনহীন-অবাঞ্ছিত, তাদের আল্লাহ কোনো কল্যাণ দান করবেন না—এট আমি বলব না। তাদের মনের কথা আল্লাহ ভালো করেই জানেন। সুতরাং এমন কথা বললে আমি অন্যায়কারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব।’ (সুরা হুদ: ৩১)
চতুর্থ আপত্তি ও জবাব: তারা বলেছিল, আপনার দাওয়াত আমাদের পূর্বপুরুষদের প্রথাবিরোধী। সুতরাং আমরা তা মানব না। জবাবে নুহ (আ.) বলেন, ‘হে আমার কওম, আমার মধ্যে কোনো পথভ্রষ্টতা নেই। বরং আমি বিশ্বপালকের পক্ষ থেকে প্রেরিত রাসুল। আমি তোমাদের কাছে আমার প্রভুর বার্তা পৌঁছে দেই এবং সদুপদেশ দিয়ে থাকি। কেননা আমি আল্লাহর পক্ষ থেকে এমন বিষয় জানি, যা তোমরা জানো না।’ (সুরা আরাফ: ৬১-৬২)
পঞ্চম আপত্তি ও জবাব: তারা বলেছিল, মূলত আপনি ক্ষমতা চাচ্ছেন। জবাবে নুহ (আ.) বলেন, ‘এ দাওয়াতের বিনিময়ে আমি তোমাদের কাছে কোনো ধনদৌলত বা কোনো বিনিময় কামনা করি না। আমার পুরস্কার তো কেবল বিশ্বপালকের কাছেই রয়েছে।’ (সুরা শুআরা: ১০৯)
চূড়ান্ত অবাধ্যতা ও নুহ (আ.)-এর বদদোয়া
নুহ (আ.) সাড়ে নয়শ বছরের দীর্ঘ জীবন লাভ করেন। সুতরাং প্রজন্মের পর প্রজন্মের কাছে তিনি দাওয়াত পৌঁছান। তবে কওমের লোকজন তাঁকে সবসময় নিবৃত করার চেষ্টা করে গেছে। তারা বলেছে, ‘হে নুহ, যদি আপনি বিরত না হন, তবে পাথর মেরে আপনার মস্তক চূর্ণ করে দেওয়া হবে।’ (সুরা শুআরা: ১১৬) তবে নুহ (আ.) হতাশ হননি। বরং কওমের নির্বুদ্ধিতার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে গেছেন।
তবে দীর্ঘ নয়শ বছর দাওয়াত দেওয়ার পর আল্লাহ তাআলা জানিয়ে দিলেন, ‘তোমার কওমের যারা ইতিমধ্যে ইমান এনেছে, তারা ছাড়া আর কেউ ইমান আনবে না। অতএব তুমি ওদের কার্যকলাপে বিমর্ষ হইও না।’ (সুরা হুদ: ৩৬) তখন নুহ (আ.) ও আল্লাহর কাছে চূড়ান্ত ফায়সালার জন্য দোয়া করেন এবং বলেন, ‘অতএব আপনি আমার ও তাদের মাঝে চূড়ান্ত ফায়সালা করে দিন এবং আমাকে ও আমার সঙ্গী মুমিনদের (ওদের হাত থেকে) মুক্ত করো।’ (সুরা শুআরা: ১১৮)
নৌকা তৈরি ও মহাপ্লাবন
এ বিষয়ে সুরা হুদের ৩৭ থেকে ৪৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন। নুহ (আ.)-কে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তুমি আমার সম্মুখে আমারই নির্দেশনা মোতাবেক একটা নৌকা তৈরি করো এবং (স্বজাতির প্রতি দয়া পরবশ হয়ে) জালেমদের ব্যাপারে আমাকে কোনো কথা বলো না। অবশ্যই ওরা ডুবে মরবে।’
এরপর নুহ নৌকা তৈরি শুরু করলেন। তাঁর কওমের নেতারা যখন পাশ দিয়ে যেত, তখন তারা তাঁকে বিদ্রুপ করত। নুহ তাদের বললেন, ‘তোমরা যদি আমাদের উপহাস করে থাক, তবে জেনে রেখো তোমরা যেমন আমাদের উপহাস করছ, আমরাও তেমনি তোমাদের উপহাস করছি। অচিরেই তোমরা জানতে পারবে লাঞ্ছনাকর আজাব কাদের ওপরে আসে এবং কাদের ওপরে নেমে আসে চিরস্থায়ী গজব।’
পরের ঘটনা সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অবশেষে যখন আমার হুকুম এসে গেল এবং চুলা উদ্বেলিত হয়ে উঠল, (অর্থাৎ রান্নার চুলা থেকে পানি উথলে উঠল), তখন আমি বললাম, সব ধরনের জোড়া প্রাণীর দুটি করে এবং যাদের ওপরে আগেই হুকুম নির্ধারিত হয়ে গেছে তাদের বাদ দিয়ে তোমার পরিবারবর্গ ও সব ইমানদারদের নৌকায় তুলে নাও।’
নুহ (আ.)-এর প্রতি ইমান আনা লোকজনকে নৌকায় আরোহন করার নির্দেশ দিয়ে তিনি বললেন, ‘তোমরা এতে আরোহণ করো। আল্লাহর নামেই এর গতি ও স্থিতি। নিশ্চয়ই আমার প্রভু অতীব ক্ষমাশীল ও দয়াবান।’
এরপর নৌকাটি তাদের বহন করে নিয়ে চলল পর্বতপ্রমাণ তরঙ্গমালার মাঝ দিয়ে। অনেক দিন পর্যন্ত সেই মহাবন্যা স্থায়ী হলো। এক টানা অনেক দিন বৃষ্টি হলো। নুহ (আ.)-এর একজন পুত্র অবাধ্য ছিল, সেও বন্যার পানিতে ডুবে মরল। পৃথিবীর বুকে সেই নৌকায় আশ্রয় নেওয়া কয়েকজন মানুষ ছাড়া কেউই আর বেঁচে রইল না। অবশেষে আল্লাহর নির্দেশ এলো, ‘হে পৃথিবী, তোমার পানি গিলে ফেল (অর্থাৎ হে প্লাবনের পানি, নেমে যাও)। হে আকাশ, ক্ষান্ত হও (অর্থাৎ তোমার বিরামহীন বৃষ্টি বন্ধ করো)।’
অবশেষে পানি কমল এবং আজাবের সময় শেষ হলো। নৌকা ভিড়ল জুদি পাহাড়ে। আদেশ এলো, ‘হে নুহ, এখন (নৌকা থেকে) অবতরণ করো আমাদের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি সহকারে তোমার ওপর এবং তোমার সঙ্গী দলগুলোর ওপর...।’
অন্য সুরায় এ আজাবের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে এভাবে—‘তখন আমি খুলে দিলাম আকাশের দুয়ারসমূহ প্রবল বৃষ্টির মাধ্যমে। ভূমি থেকে প্রবাহিত করলাম নদীসমূহকে। এরপর উভয় পানি মিলিত হলো একটি পূর্ব নির্ধারিত কাজে (অর্থাৎ ডুবিয়ে মারার কাজে)। আমি নুহকে আরোহন করালাম এক কাষ্ঠ ও পেরেক নির্মিত জলযানে। যা চলত আমার দৃষ্টির সম্মুখে। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রতিশোধ ছিল, যাকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। ‘আমরা একে নিদর্শন হিসাবে রেখে দিয়েছি। অতএব কোনো চিন্তাশীল আছে কি?’ (সুরা কামার: ১১-১৫)

সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনায় অবস্থিত পবিত্র দুই মসজিদে গত এক মাসে রেকর্ডসংখ্যক মুসল্লির আগমন ঘটেছে। দুই পবিত্র মসজিদের তত্ত্বাবধায়ক কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যমতে, সদ্যসমাপ্ত জমাদিউস সানি মাসে মোট ৬ কোটি ৮৭ লাখ ৪১ হাজার ৮৫৩ জন ওমরাহ পালনকারী ও মুসল্লি মক্কার মসজিদে হারাম ও মদিনার মসজিদে নববিতে উপস্থিত...
১২ ঘণ্টা আগে
পরকালীন জীবনে সফল হতে আল্লাহর হুকুম পালনের পাশাপাশি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাহ ও আদর্শ অনুসরণ করা অপরিহার্য। পরকাল এক ধ্রুব সত্য; প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করে এই জগতে প্রবেশ করতে হবে।
১৭ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগে
গাজা শহরের পশ্চিমে অবস্থিত আশ-শাতি শরণার্থীশিবিরে এক বিশাল কোরআনিক শোভাযাত্রা ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই আয়োজনে প্রায় ৫০০ জন পবিত্র কোরআনের হাফেজ ও হাফেজা অংশগ্রহণ করেন। দুই বছর ধরে ইসরায়েলি ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের কবলে পিষ্ট এই জনপদে শোভাযাত্রাটি আনন্দ ও উদ্যাপনের এক নতুন আমেজ নিয়ে আসে।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনায় অবস্থিত পবিত্র দুই মসজিদে গত এক মাসে রেকর্ডসংখ্যক মুসল্লির আগমন ঘটেছে। দুই পবিত্র মসজিদের তত্ত্বাবধায়ক কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যমতে, সদ্যসমাপ্ত জমাদিউস সানি মাসে মোট ৬ কোটি ৮৭ লাখ ৪১ হাজার ৮৫৩ জন ওমরাহ পালনকারী ও মুসল্লি মক্কার মসজিদে হারাম ও মদিনার মসজিদে নববিতে উপস্থিত হয়েছেন। এই সংখ্যা আগের মাসের তুলনায় প্রায় ২১ লাখ বেশি।
কর্তৃপক্ষের তথ্যানুযায়ী, মসজিদে হারামে প্রায় ৩ কোটি মুসল্লি ইবাদত-বন্দেগি করেছেন। এর মধ্যে ৯৪ হাজার ৭০০ জন কাবা শরিফসংলগ্ন হাতিমে কাবায় নামাজ আদায়ের সুযোগ পেয়েছেন। আর মসজিদে নববিতে ইবাদত ও জিয়ারতের জন্য গিয়েছেন ২ কোটি ৩১ লাখ মানুষ। এ ছাড়া পবিত্র রিয়াজুল জান্নাতে প্রবেশের সুযোগ পেয়েছেন ১৩ লাখ মুসল্লি এবং নবী করিম (সা.) এবং দুই খলিফার রওজা জিয়ারত করেছেন ২৩ লাখ মানুষ।
সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, শুধু জমাদিউস সানি মাসেই দেশি-বিদেশি মিলিয়ে ১ কোটি ১৯ লাখের বেশি মানুষ ওমরাহ পালন করেছেন। এর মধ্যে বিদেশ থেকে আগত ওমরাহ যাত্রীর সংখ্যা ছিল ১৭ লাখের বেশি। উন্নত ডিজিটাল সেবা, আধুনিক লজিস্টিক ব্যবস্থাপনা এবং ওয়ান স্টপ সার্ভিস সহজলভ্য হওয়ায় ওমরাহ পালনকারীর সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মুসল্লিদের এই ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি সৌদি আরবের ‘ভিশন ২০৩০’ বাস্তবায়নেরই একটি অংশ। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মুসলমানদের জন্য হজ, ওমরাহ ও জিয়ারতপ্রক্রিয়াকে আরও নিরাপদ এবং সহজ করতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে সৌদি সরকার।

সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনায় অবস্থিত পবিত্র দুই মসজিদে গত এক মাসে রেকর্ডসংখ্যক মুসল্লির আগমন ঘটেছে। দুই পবিত্র মসজিদের তত্ত্বাবধায়ক কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যমতে, সদ্যসমাপ্ত জমাদিউস সানি মাসে মোট ৬ কোটি ৮৭ লাখ ৪১ হাজার ৮৫৩ জন ওমরাহ পালনকারী ও মুসল্লি মক্কার মসজিদে হারাম ও মদিনার মসজিদে নববিতে উপস্থিত হয়েছেন। এই সংখ্যা আগের মাসের তুলনায় প্রায় ২১ লাখ বেশি।
কর্তৃপক্ষের তথ্যানুযায়ী, মসজিদে হারামে প্রায় ৩ কোটি মুসল্লি ইবাদত-বন্দেগি করেছেন। এর মধ্যে ৯৪ হাজার ৭০০ জন কাবা শরিফসংলগ্ন হাতিমে কাবায় নামাজ আদায়ের সুযোগ পেয়েছেন। আর মসজিদে নববিতে ইবাদত ও জিয়ারতের জন্য গিয়েছেন ২ কোটি ৩১ লাখ মানুষ। এ ছাড়া পবিত্র রিয়াজুল জান্নাতে প্রবেশের সুযোগ পেয়েছেন ১৩ লাখ মুসল্লি এবং নবী করিম (সা.) এবং দুই খলিফার রওজা জিয়ারত করেছেন ২৩ লাখ মানুষ।
সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, শুধু জমাদিউস সানি মাসেই দেশি-বিদেশি মিলিয়ে ১ কোটি ১৯ লাখের বেশি মানুষ ওমরাহ পালন করেছেন। এর মধ্যে বিদেশ থেকে আগত ওমরাহ যাত্রীর সংখ্যা ছিল ১৭ লাখের বেশি। উন্নত ডিজিটাল সেবা, আধুনিক লজিস্টিক ব্যবস্থাপনা এবং ওয়ান স্টপ সার্ভিস সহজলভ্য হওয়ায় ওমরাহ পালনকারীর সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মুসল্লিদের এই ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি সৌদি আরবের ‘ভিশন ২০৩০’ বাস্তবায়নেরই একটি অংশ। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মুসলমানদের জন্য হজ, ওমরাহ ও জিয়ারতপ্রক্রিয়াকে আরও নিরাপদ এবং সহজ করতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে সৌদি সরকার।

হজরত নুহ (আ.) ছিলেন মানবজাতির আদিপিতা হজরত আদম (আ.)–এর অষ্টম প্রজন্মের নবী ও রাসুল। হাদিসের ভাষ্য মতে, তিনিই পৃথিবীর প্রথম রাসুল তথা শরিয়তপ্রাপ্ত বার্তাবাহক। নুহ (আ.)-কে আল্লাহ তাআলা দীর্ঘ জীবন দান করেছিলেন। প্রায় ১ হাজার বছর তিনি জাতিকে আল্লাহর পথে ডাকেন।
২১ মার্চ ২০২৫
পরকালীন জীবনে সফল হতে আল্লাহর হুকুম পালনের পাশাপাশি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাহ ও আদর্শ অনুসরণ করা অপরিহার্য। পরকাল এক ধ্রুব সত্য; প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করে এই জগতে প্রবেশ করতে হবে।
১৭ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগে
গাজা শহরের পশ্চিমে অবস্থিত আশ-শাতি শরণার্থীশিবিরে এক বিশাল কোরআনিক শোভাযাত্রা ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই আয়োজনে প্রায় ৫০০ জন পবিত্র কোরআনের হাফেজ ও হাফেজা অংশগ্রহণ করেন। দুই বছর ধরে ইসরায়েলি ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের কবলে পিষ্ট এই জনপদে শোভাযাত্রাটি আনন্দ ও উদ্যাপনের এক নতুন আমেজ নিয়ে আসে।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

পরকালীন জীবনে সফল হতে আল্লাহর হুকুম পালনের পাশাপাশি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাহ ও আদর্শ অনুসরণ করা অপরিহার্য। পরকাল এক ধ্রুব সত্য; প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করে এই জগতে প্রবেশ করতে হবে। কিয়ামতের কঠিন ময়দানে হাশর-নশর শেষে মানুষের চিরস্থায়ী ঠিকানা নির্ধারণ করা হবে। সেদিন কেউ কারও উপকারে আসবে না, এমনকি বাবা-মা বা সন্তান-সন্ততির কথাও কারও স্মরণে থাকবে না। প্রত্যেকেই ‘ইয়া নাফসি, ইয়া নাফসি’ (হায় আমার কী হবে) বলে আর্তনাদ করতে থাকবে।
পবিত্র কোরআনে সেই বিভীষিকাময় দিনের বর্ণনা দিয়ে ইরশাদ হয়েছে, ‘সেদিন মানুষ পালিয়ে যাবে তার ভাই, মা, বাবা, স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি থেকে। সেদিন তাদের প্রত্যেকেই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। সেদিন কিছু চেহারা হবে উজ্জ্বল, সহাস্য ও প্রফুল্ল। আর কিছু চেহারা হবে ধূলিমলিন ও অন্ধকারাচ্ছন্ন।’ (সুরা আবাসা: ৩৪-৪০)
রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর উম্মতকে জাহান্নাম থেকে বাঁচানোর জন্য বিভিন্ন সতর্কবাণী দিয়েছেন। সহিহ্ মুসলিমের এক হাদিসে পাঁচ শ্রেণির জাহান্নামির কথা উল্লেখ করা হয়েছে: ১. বিবেচনাহীন ব্যক্তি: এমন দুর্বল মানুষ যার ভালো-মন্দের পার্থক্য করার বুদ্ধি নেই এবং নিজের পরিবারের উন্নতির ফিকির না করে অন্যের তাঁবেদারি করে। ২. লোভী খিয়ানতকারী: যে অতি সামান্য বিষয়েও খিয়ানত বা বিশ্বাসভঙ্গ করে এবং যার লোভ সবার কাছে প্রকাশ্য। ৩. প্রতারক: যে ব্যক্তি পরিবার ও ধন-সম্পদের বিষয়ে মানুষের সঙ্গে সকাল-সন্ধ্যা প্রতারণা বা ধোঁকাবাজি করে। ৪. কৃপণ: যে আল্লাহর পথে ব্যয় না করে সম্পদ কুক্ষিগত করে রাখে। ৫. মিথ্যুক ও অশ্লীলভাষী: যারা সর্বদা মিথ্যা কথা বলে এবং অশ্লীল কথাবার্তা বা গালাগালিতে লিপ্ত থাকে।
পরকালের চিরস্থায়ী জীবনে মুক্তি পেতে হলে দুনিয়ার এই ক্ষণস্থায়ী জীবনে লোভ, প্রতারণা ও পাপাচার ত্যাগ করে মহান আল্লাহর প্রতি অনুগত হওয়া এবং নবীজি (সা.)-এর দেখানো পথে চলা একান্ত জরুরি।

পরকালীন জীবনে সফল হতে আল্লাহর হুকুম পালনের পাশাপাশি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাহ ও আদর্শ অনুসরণ করা অপরিহার্য। পরকাল এক ধ্রুব সত্য; প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করে এই জগতে প্রবেশ করতে হবে। কিয়ামতের কঠিন ময়দানে হাশর-নশর শেষে মানুষের চিরস্থায়ী ঠিকানা নির্ধারণ করা হবে। সেদিন কেউ কারও উপকারে আসবে না, এমনকি বাবা-মা বা সন্তান-সন্ততির কথাও কারও স্মরণে থাকবে না। প্রত্যেকেই ‘ইয়া নাফসি, ইয়া নাফসি’ (হায় আমার কী হবে) বলে আর্তনাদ করতে থাকবে।
পবিত্র কোরআনে সেই বিভীষিকাময় দিনের বর্ণনা দিয়ে ইরশাদ হয়েছে, ‘সেদিন মানুষ পালিয়ে যাবে তার ভাই, মা, বাবা, স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি থেকে। সেদিন তাদের প্রত্যেকেই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। সেদিন কিছু চেহারা হবে উজ্জ্বল, সহাস্য ও প্রফুল্ল। আর কিছু চেহারা হবে ধূলিমলিন ও অন্ধকারাচ্ছন্ন।’ (সুরা আবাসা: ৩৪-৪০)
রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর উম্মতকে জাহান্নাম থেকে বাঁচানোর জন্য বিভিন্ন সতর্কবাণী দিয়েছেন। সহিহ্ মুসলিমের এক হাদিসে পাঁচ শ্রেণির জাহান্নামির কথা উল্লেখ করা হয়েছে: ১. বিবেচনাহীন ব্যক্তি: এমন দুর্বল মানুষ যার ভালো-মন্দের পার্থক্য করার বুদ্ধি নেই এবং নিজের পরিবারের উন্নতির ফিকির না করে অন্যের তাঁবেদারি করে। ২. লোভী খিয়ানতকারী: যে অতি সামান্য বিষয়েও খিয়ানত বা বিশ্বাসভঙ্গ করে এবং যার লোভ সবার কাছে প্রকাশ্য। ৩. প্রতারক: যে ব্যক্তি পরিবার ও ধন-সম্পদের বিষয়ে মানুষের সঙ্গে সকাল-সন্ধ্যা প্রতারণা বা ধোঁকাবাজি করে। ৪. কৃপণ: যে আল্লাহর পথে ব্যয় না করে সম্পদ কুক্ষিগত করে রাখে। ৫. মিথ্যুক ও অশ্লীলভাষী: যারা সর্বদা মিথ্যা কথা বলে এবং অশ্লীল কথাবার্তা বা গালাগালিতে লিপ্ত থাকে।
পরকালের চিরস্থায়ী জীবনে মুক্তি পেতে হলে দুনিয়ার এই ক্ষণস্থায়ী জীবনে লোভ, প্রতারণা ও পাপাচার ত্যাগ করে মহান আল্লাহর প্রতি অনুগত হওয়া এবং নবীজি (সা.)-এর দেখানো পথে চলা একান্ত জরুরি।

হজরত নুহ (আ.) ছিলেন মানবজাতির আদিপিতা হজরত আদম (আ.)–এর অষ্টম প্রজন্মের নবী ও রাসুল। হাদিসের ভাষ্য মতে, তিনিই পৃথিবীর প্রথম রাসুল তথা শরিয়তপ্রাপ্ত বার্তাবাহক। নুহ (আ.)-কে আল্লাহ তাআলা দীর্ঘ জীবন দান করেছিলেন। প্রায় ১ হাজার বছর তিনি জাতিকে আল্লাহর পথে ডাকেন।
২১ মার্চ ২০২৫
সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনায় অবস্থিত পবিত্র দুই মসজিদে গত এক মাসে রেকর্ডসংখ্যক মুসল্লির আগমন ঘটেছে। দুই পবিত্র মসজিদের তত্ত্বাবধায়ক কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যমতে, সদ্যসমাপ্ত জমাদিউস সানি মাসে মোট ৬ কোটি ৮৭ লাখ ৪১ হাজার ৮৫৩ জন ওমরাহ পালনকারী ও মুসল্লি মক্কার মসজিদে হারাম ও মদিনার মসজিদে নববিতে উপস্থিত...
১২ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগে
গাজা শহরের পশ্চিমে অবস্থিত আশ-শাতি শরণার্থীশিবিরে এক বিশাল কোরআনিক শোভাযাত্রা ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই আয়োজনে প্রায় ৫০০ জন পবিত্র কোরআনের হাফেজ ও হাফেজা অংশগ্রহণ করেন। দুই বছর ধরে ইসরায়েলি ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের কবলে পিষ্ট এই জনপদে শোভাযাত্রাটি আনন্দ ও উদ্যাপনের এক নতুন আমেজ নিয়ে আসে।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ১৪ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ০৮ রজব ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ১৮ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ১৯ মিনিট | ০৬: ৩৯ মিনিট |
| জোহর | ১২: ০১ মিনিট | ০৩: ৪৪ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৫ মিনিট | ০৫: ২০ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২২ মিনিট | ০৬: ৪১ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪২ মিনিট | ০৫: ১৮ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ১৪ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ০৮ রজব ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ১৮ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ১৯ মিনিট | ০৬: ৩৯ মিনিট |
| জোহর | ১২: ০১ মিনিট | ০৩: ৪৪ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৫ মিনিট | ০৫: ২০ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২২ মিনিট | ০৬: ৪১ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪২ মিনিট | ০৫: ১৮ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

হজরত নুহ (আ.) ছিলেন মানবজাতির আদিপিতা হজরত আদম (আ.)–এর অষ্টম প্রজন্মের নবী ও রাসুল। হাদিসের ভাষ্য মতে, তিনিই পৃথিবীর প্রথম রাসুল তথা শরিয়তপ্রাপ্ত বার্তাবাহক। নুহ (আ.)-কে আল্লাহ তাআলা দীর্ঘ জীবন দান করেছিলেন। প্রায় ১ হাজার বছর তিনি জাতিকে আল্লাহর পথে ডাকেন।
২১ মার্চ ২০২৫
সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনায় অবস্থিত পবিত্র দুই মসজিদে গত এক মাসে রেকর্ডসংখ্যক মুসল্লির আগমন ঘটেছে। দুই পবিত্র মসজিদের তত্ত্বাবধায়ক কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যমতে, সদ্যসমাপ্ত জমাদিউস সানি মাসে মোট ৬ কোটি ৮৭ লাখ ৪১ হাজার ৮৫৩ জন ওমরাহ পালনকারী ও মুসল্লি মক্কার মসজিদে হারাম ও মদিনার মসজিদে নববিতে উপস্থিত...
১২ ঘণ্টা আগে
পরকালীন জীবনে সফল হতে আল্লাহর হুকুম পালনের পাশাপাশি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাহ ও আদর্শ অনুসরণ করা অপরিহার্য। পরকাল এক ধ্রুব সত্য; প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করে এই জগতে প্রবেশ করতে হবে।
১৭ ঘণ্টা আগে
গাজা শহরের পশ্চিমে অবস্থিত আশ-শাতি শরণার্থীশিবিরে এক বিশাল কোরআনিক শোভাযাত্রা ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই আয়োজনে প্রায় ৫০০ জন পবিত্র কোরআনের হাফেজ ও হাফেজা অংশগ্রহণ করেন। দুই বছর ধরে ইসরায়েলি ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের কবলে পিষ্ট এই জনপদে শোভাযাত্রাটি আনন্দ ও উদ্যাপনের এক নতুন আমেজ নিয়ে আসে।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

গাজা শহরের পশ্চিমে অবস্থিত আশ-শাতি শরণার্থীশিবিরে এক বিশাল কোরআনিক শোভাযাত্রা ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই আয়োজনে প্রায় ৫০০ জন পবিত্র কোরআনের হাফেজ ও হাফেজা অংশগ্রহণ করেন। দুই বছর ধরে ইসরায়েলি ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের কবলে পিষ্ট এই জনপদে শোভাযাত্রাটি আনন্দ ও উদ্যাপনের এক নতুন আমেজ নিয়ে আসে।
আইয়াদুল খাইর ফাউন্ডেশন এবং কুয়েতভিত্তিক চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশন আলিয়ার যৌথ উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ‘গাজা কোরআনের হাফেজদের মাধ্যমে প্রস্ফুটিত হচ্ছে’—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আয়োজিত হয় অনুষ্ঠানটি।
তাকবির ও তাহলিলের ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে আশ-শাতি শিবিরের ভেতর থেকে শোভাযাত্রাটি শুরু হয়। সুশৃঙ্খলভাবে হাফেজ ও হাফেজারা সারিবদ্ধ হয়ে এতে অংশ নেন। তাঁদের হাতে ছিল পবিত্র কোরআন, ফিলিস্তিনের জাতীয় পতাকা এবং ধৈর্য ও আশার প্রতীকসংবলিত নানা ফেস্টুন।
রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সাধারণ মানুষ করতালি ও দোয়ার মাধ্যমে এই গর্বের মুহূর্তের সঙ্গী হন। দীর্ঘদিনের বোমাবর্ষণ আর ধ্বংসস্তূপে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া রাস্তাগুলো এদিন এক স্বর্গীয় প্রশান্তি আর জন-উৎসবে রূপ নেয়।
অনুষ্ঠানের শেষে হাফেজ ও হাফেজাদের মধ্যে সম্মাননা সনদ ও বিশেষ উপহার বিতরণ করা হয়।
আয়োজকেরা জানান, গাজা উপত্যকার এই কঠিন বাস্তবতায় ধর্মীয় পরিচয় রক্ষা এবং নৈতিক মূল্যবোধকে জাগ্রত রাখাই ছিল এ সামাজিক উদ্যোগের প্রধান লক্ষ্য।
সূত্র: আল-আহেদ নিউজ

গাজা শহরের পশ্চিমে অবস্থিত আশ-শাতি শরণার্থীশিবিরে এক বিশাল কোরআনিক শোভাযাত্রা ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই আয়োজনে প্রায় ৫০০ জন পবিত্র কোরআনের হাফেজ ও হাফেজা অংশগ্রহণ করেন। দুই বছর ধরে ইসরায়েলি ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের কবলে পিষ্ট এই জনপদে শোভাযাত্রাটি আনন্দ ও উদ্যাপনের এক নতুন আমেজ নিয়ে আসে।
আইয়াদুল খাইর ফাউন্ডেশন এবং কুয়েতভিত্তিক চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশন আলিয়ার যৌথ উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ‘গাজা কোরআনের হাফেজদের মাধ্যমে প্রস্ফুটিত হচ্ছে’—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আয়োজিত হয় অনুষ্ঠানটি।
তাকবির ও তাহলিলের ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে আশ-শাতি শিবিরের ভেতর থেকে শোভাযাত্রাটি শুরু হয়। সুশৃঙ্খলভাবে হাফেজ ও হাফেজারা সারিবদ্ধ হয়ে এতে অংশ নেন। তাঁদের হাতে ছিল পবিত্র কোরআন, ফিলিস্তিনের জাতীয় পতাকা এবং ধৈর্য ও আশার প্রতীকসংবলিত নানা ফেস্টুন।
রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সাধারণ মানুষ করতালি ও দোয়ার মাধ্যমে এই গর্বের মুহূর্তের সঙ্গী হন। দীর্ঘদিনের বোমাবর্ষণ আর ধ্বংসস্তূপে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া রাস্তাগুলো এদিন এক স্বর্গীয় প্রশান্তি আর জন-উৎসবে রূপ নেয়।
অনুষ্ঠানের শেষে হাফেজ ও হাফেজাদের মধ্যে সম্মাননা সনদ ও বিশেষ উপহার বিতরণ করা হয়।
আয়োজকেরা জানান, গাজা উপত্যকার এই কঠিন বাস্তবতায় ধর্মীয় পরিচয় রক্ষা এবং নৈতিক মূল্যবোধকে জাগ্রত রাখাই ছিল এ সামাজিক উদ্যোগের প্রধান লক্ষ্য।
সূত্র: আল-আহেদ নিউজ

হজরত নুহ (আ.) ছিলেন মানবজাতির আদিপিতা হজরত আদম (আ.)–এর অষ্টম প্রজন্মের নবী ও রাসুল। হাদিসের ভাষ্য মতে, তিনিই পৃথিবীর প্রথম রাসুল তথা শরিয়তপ্রাপ্ত বার্তাবাহক। নুহ (আ.)-কে আল্লাহ তাআলা দীর্ঘ জীবন দান করেছিলেন। প্রায় ১ হাজার বছর তিনি জাতিকে আল্লাহর পথে ডাকেন।
২১ মার্চ ২০২৫
সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনায় অবস্থিত পবিত্র দুই মসজিদে গত এক মাসে রেকর্ডসংখ্যক মুসল্লির আগমন ঘটেছে। দুই পবিত্র মসজিদের তত্ত্বাবধায়ক কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যমতে, সদ্যসমাপ্ত জমাদিউস সানি মাসে মোট ৬ কোটি ৮৭ লাখ ৪১ হাজার ৮৫৩ জন ওমরাহ পালনকারী ও মুসল্লি মক্কার মসজিদে হারাম ও মদিনার মসজিদে নববিতে উপস্থিত...
১২ ঘণ্টা আগে
পরকালীন জীবনে সফল হতে আল্লাহর হুকুম পালনের পাশাপাশি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাহ ও আদর্শ অনুসরণ করা অপরিহার্য। পরকাল এক ধ্রুব সত্য; প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করে এই জগতে প্রবেশ করতে হবে।
১৭ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগে