Ajker Patrika

আলোর বাতিঘর মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.)

হেদায়াতুল্লাহ বিন হাবিব, ঢাকা
আপডেট : ২৬ জুন ২০২৫, ১৮: ৩৮
মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.)। একজন আদর্শ শিক্ষক। ছাত্র গড়ার কারিগর। ইলম ও আমলের একজন অপূর্ব সমন্বয়ক। ঢাকার ঐতিহ্যবাহী জামেউল উলুম মাদ্রাসার সাবেক ভাইস প্রিন্সিপাল ও শিক্ষাসচিব। এ ছাড়া দেশ-বিদেশের উল্লেখযোগ্য অনেক প্রতিষ্ঠানে রয়েছে তার প্রায় তিন যুগের অধ্যাপনা। ব্যক্তি জীবনে ছিলেন অত্যন্ত ভদ্র, সজ্জন ও সম্ভ্রান্ত। সবার মন জয় করে চলার চমৎকার এক গুণ ছিল তাঁর মাঝে। চলতি বছরের গত ১৮ মে (রবিবার) তিনি দুনিয়ার সফর শেষ করে পরপারে পাড়ি জমান।

৫৮ বছর হায়াত পেয়েছিলেন মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.)। অল্প সময়ের বর্ণাঢ্য এক জীবনের অধিকারী ছিলেন তিনি। প্রধানত শিক্ষক ছিলেন। শিক্ষকতা করেছেন সৌদি আরব, ঢাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জের প্রসিদ্ধ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে। বিস্তৃত কর্মজীবনের সুবাদে দেশ-বিদেশে তাঁর অসংখ্য ছাত্র-শিষ্য, ভক্ত ও অনুরাগী ছড়িয়ে আছে। শায়খের ইন্তেকালে সকলের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। কর্মজীবনের ব্যস্ততা ও দূরত্ব-সহ নানাবিধ কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও জানাজায় শরিক হতে পারেননি অনেকে। দূর থেকেই প্রিয় শিক্ষকের জন্য মাগফিরাতের দোয়া করেছেন

জন্ম: মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.) ১৯৬৭ সনের ২৭ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার হিয়ালা গ্রামের স্বনামধন্য চৌধুরী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম মাওলানা হারুনুর রশীদ চৌধুরী। পারিবারিকভাবে তাঁরা খুবই সম্ভ্রান্ত, ভদ্র ও সুশিক্ষিত ছিলেন।

শিক্ষাদীক্ষা: তিনি প্রথম জীবনে কিছুদিন কিশোরগঞ্জে তাঁর বাবার কাছে থেকে পড়াশোনা করেন। এরপরে হবিগঞ্জ সদরের সুপ্রাচীন ঐতিহ্যবাহী রায়ধর মাদ্রাসায় মক্তব বিভাগে ভর্তি হন। তৎকালীন বাংলাদেশে, বিশেষত সিলেট অঞ্চলে এই মাদ্রাসার খুব সুনাম-সুখ্যাতি ছিল। বড় বড় মনীষী আলেম এখানে পড়াশোনা করেছেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মাওলানা তাফাজ্জল হক হবিগঞ্জী, মুফতি তাজুল ইসলাম (আরজাবাদ), মাওলানা নুরুল ইসলাম ওলীপুরী প্রমুখ। মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.) একাধারে শরহে জামি পর্যন্ত সুনাম ও কৃতিত্বের সঙ্গে এখানে পড়াশোনা করেন। এরপর মেশকাত জামাত পর্যন্ত পড়েন বাহুবল কাসিমুল উলুম মাদ্রাসায়। এখান থেকে ১৯৮৮ সনে মেশকাতের পরীক্ষায় ‘দ্বীনি শিক্ষা বোর্ড হবিগঞ্জ’-এ প্রথম স্থান অধিকার করে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। সর্বশেষ দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসায় দাওরায়ে হাদিস পড়ার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সমাপ্তি ঘটান।

কর্মজীবন: ১৯৮৯ সনে ছাত্র জীবন শেষ হলে ওই বছরই কর্মের ময়দানে নেমে পড়েন। তাঁর কৃতিত্বের কারণে ছাত্র জীবনের ২য় প্রতিষ্ঠান কাসিমুল উলুম বাহুবল মাদ্রাসা থেকে ডাক আসে। উস্তাদদের পরামর্শে এখানে চলে আসেন। ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৯ পর্যন্ত টানা ১১ বছর মুহাদ্দিস হিসেবে সেখানে কর্মরত থাকেন। এরপরে আল্লামা তাফাজ্জল হক হবিগঞ্জী (রহ.) পরিচালিত জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া উমেদনগর মাদ্রাসায় মুহাদ্দিস হিসেবে যোগ দেন। সেখানে দুই বছর অধ্যাপনা করে সৌদি আরব পাড়ি জমান। সেখানে ‘হাইয়া আমর বিল মারুফ একাডেমিতে’ ইসলাম প্রচারক ও শিক্ষক হিসেবে তিন বছর দায়িত্ব পালন করেন। এরপর দেশে ফিরে পুনরায় উমেদনগর মাদ্রাসায় পূর্বের পদে যোগদান করেন। ২০০৩ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী দারুল আরকাম মাদ্রাসায় মুহাদ্দিস ও মুফাসসির হিসেবে যুক্ত হোন। পাশাপাশি ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহিলা মাদ্রাসায়ও হাদিসের পাঠদান করেন।

২০০৭ সালের শুরুতে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী জামেউল উলুম মাদ্রাসার নাজেমে তালিমাত বা শিক্ষাসচিব পদ শূন্য হলে একজন চতুর্মুখী জ্ঞান ও গুণের অধিকারী সুযোগ্য লোকের প্রয়োজন দেখা দেয়। তখন তাঁর বাল্যবন্ধু এবং দীর্ঘদিনের সহপাঠী, জামেউল উলুম মাদ্রাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি আবদুল আজিজ কাসেমী তাঁকে ঢাকায় আসার পরামর্শ দেন। এবং জামেউল উলুম কর্তৃপক্ষ উক্ত পদের জন্য তাঁকে উপযুক্ত মনে করে নিয়োগ কনফার্ম করে। ভাইস প্রিন্সিপাল ও নাজেমে তালিমাত হিসেবে রাজধানীতে তাঁর নতুন কর্মজীবনের সূচনা হয়। সেখানে তিনি সহিহ্ বুখারি, সহিহ্ মুসলিম ও হেদায়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ কিতাবসমূহ পাঠদান করেন।

পারিবারিক জীবন: মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.) দুই পুত্র ও দুই কন্যা সন্তানের জনক ছিলেন। বড় ছেলে আদনান ইতালিপ্রবাসী। ছোট ছেলে হাফেজ বোরহান মাদ্রাসা শিক্ষার্থী। দুই মেয়ের স্বামীরা যোগ্য আলেম এবং কর্মজীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত।

গবেষণা ও শিক্ষা কার্যক্রম: তিনি মূলত একজন শিক্ষাবিদ আলেম ছিলেন। শিক্ষা কেন্দ্রিক তাঁর অনেক গবেষণা ও কর্ম রয়েছে। হবিগঞ্জ দ্বীনি শিক্ষা বোর্ডের সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ছিলেন দুই বছর। তাঁর উস্তাদ আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলীপুরীর প্রতিষ্ঠিত আল-ফারুক ইসলামি গবেষণা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন দীর্ঘদিন। গবেষণার সুবিধার্থে বাড়িতে স্বতন্ত্র পাঠাগার গড়ে তোলেন বড় পরিসরে। এ ছাড়া কর্মস্থল ঢাকাতেও বইপত্রের বিশাল সমাহার ছিল তাঁর।

সামাজিক অবদান: মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.) জীবনভর শিক্ষকতা করেছেন দেশ-বিদেশে। ফলে নিজ এলাকায় থাকা হয়েছে খুব কম সময়। তবু শেকড়ের টানে গ্রামের মানুষদের জন্য কিছু করার চিন্তা সব সময় তাঁকে তাড়িয়ে বেড়াত। সে থেকেই তিনি সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হোন। নিজ গ্রামের ‘হিয়ালা তাফসীরুল কোরআন ও ইসলামি সমাজকল্যাণ পরিষদ’র সভাপতি ছিলেন এক যুগেরও অধিক সময়।

রচনাবলি: অধ্যাপনা ও গবেষণার পাশাপাশি মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.) বেশ কিছু কিতাব রচনা করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য–

১. دراسة المكرم على مقدمة مسلم

২. تقليد المذاهب الأربعة

৩. تعريف اثبت الكلام في القرائة خلف الإمام

৪. খোলাসাতুন্নাহু

৫. স্বপ্ন ব্যাখ্যার মূলনীতি

অসুস্থতা: নিভৃতচারী এ শিক্ষাবিদ দ্বীনের খেদমত করে যাচ্ছিলেন নিরবচ্ছিন্ন। সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু ২০১৯-২০ সালের দিকে হঠাৎ তাঁর শরীরে এক রোগ দেখা দেয়। রোগের ধরন অনেকটা বিরল–মস্তিষ্কের রগগুলো শুকিয়ে রক্তশূন্য হতে থাকে ক্রমেই। এর প্রভাব পড়ে পুরো শরীরে। আগের মতো সবকিছু মনে রাখতে পারেন না। কথা বলতে কষ্ট হয়। শরীরে কাঁপুনি আসে। ধীরে ধীরে হাঁটাচলাও কঠিন হয়ে যায়। এমনকি শরীরে প্যারালাইসিসের প্রভাবও দেখা দেয়। অনেক ধরনের চিকিৎসা নেওয়া হয়, ডাক্তার দেখানো হয়। কিন্তু কোনো প্রতিকার হয় না। এই মরণব্যাধি মাত্র দুই-তিন বছরে একদম অচলাবস্থায় নিয়ে যায় তাঁকে। অনেক সময় হুইল চেয়ারেও চলতে হতো। বিশাল এক কর্মবীরকে চোখের সামনে এভাবেই স্থবির হতে দেখে সবাই।

প্রতিষ্ঠান থেকে অব্যাহতি: মাওলানা আহমদ আবদুল্লাহ চৌধুরী (রহ.) সর্বদা তাঁর দায়িত্বের ব্যাপারে সচেতন ছিলেন। এই সব রোগ-ব্যাধির মাঝেও সকল দায়িত্ব যথাসময়ে পালনের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতেন। যখন থেকে দায়িত্ব আদায়ে ত্রুটি অনুভব করছিলেন, তখন থেকেই মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি নিতে চাচ্ছিলেন। কিন্তু মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তাঁর প্রতি সদয় হয়ে দরস ও দায়িত্ব কমিয়ে প্রতিবারই অব্যাহতির অনুরোধ নাকচ করে দিচ্ছিল। শায়খের খেদমতের সুবিধার্থে তাঁর স্ত্রীকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। কিন্তু মাদ্রাসার বেতন ভোগ করে আগের মতো দায়িত্ব পালন করতে না পারায় তাঁর ভেতরে এক ধরনের পীড়া কাজ করত। তাই সর্বশেষ ২০২২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত অব্যাহতি নিয়ে গ্রামে চলে যান।

গ্রামীণ আলো-বাতাস ও প্রাকৃতিক পরিবেশে কিছুদিন থাকার পরে আগের তুলনায় কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠেন। স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। কিছুটা হাঁটাহাঁটি করতে পারেন। এই সময়ে নিজ উস্তাদ আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলীপুরীর আগ্রহে তাঁর প্রতিষ্ঠিত নূরে মদীনা মাদ্রাসায় কিছুদিন দরস দেন। কিন্তু কিছুদিন পরে ফের শরীর খারাপ করলে এখান থেকেও অব্যাহতি নিয়ে চলে আসেন। এরপর আমৃত্যু বাড়িতেই কাটান তিনি।

ইন্তেকাল: গত ১২ মে তিনি হার্ট অ্যাটাক করলে তাঁকে সিলেট মাউন্ট এডোরা হসপিটালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় হাসপাতালেই রাখা হয়। সেখানেই প্রায় ৬ দিন পরে ১৮ মে সকাল ৭.৪৫ মিনিটে তিনি ইহকালের সফর সমাপ্ত করে পরকালের যাত্রা শুরু করেন। ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। শায়খের চিরসজীব হাস্যোজ্জ্বল চেহারা দেখে কবির এই পংক্তিটিই বারবার মনে পড়ছিল–

‘এমন জীবন তুমি করিও গঠন,

মরিলে হাসিবে তুমি, কাঁদিবে ভুবন!’

জানাজা: ওই দিনই বাদ আসর জানাজার সময় নির্ধারণ করা হয়। জানাজায় দূর-দুরান্ত থেকে তাঁর ছাত্র, ভক্ত, গুণমুগ্ধরা অংশ নেন। তাঁর সর্বশেষ কর্মস্থল ঢাকা থেকে শতাধিক ছাত্রের এক কাফেলা অংশগ্রহণ করে। কর্মস্থলসমূহের সহকর্মীরাও তাঁকে বিদায় জানাতে আসেন। জানাজার ইমামতি করেন মরহুমের ছোট ছেলে হাফেজ বোরহান চৌধুরী। জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে পিতার পাশেই দাফন করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাজায় ৫০০ কোরআনের হাফেজকে রাজকীয় সংবর্ধনা

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

গাজা শহরের পশ্চিমে অবস্থিত আশ-শাতি শরণার্থীশিবিরে এক বিশাল কোরআনিক শোভাযাত্রা ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই আয়োজনে প্রায় ৫০০ জন পবিত্র কোরআনের হাফেজ ও হাফেজা অংশগ্রহণ করেন। দুই বছর ধরে ইসরায়েলি ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের কবলে পিষ্ট এই জনপদে শোভাযাত্রাটি আনন্দ ও উদ্‌যাপনের এক নতুন আমেজ নিয়ে আসে।

আইয়াদুল খাইর ফাউন্ডেশন এবং কুয়েতভিত্তিক চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশন আলিয়ার যৌথ উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ‘গাজা কোরআনের হাফেজদের মাধ্যমে প্রস্ফুটিত হচ্ছে’—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আয়োজিত হয় অনুষ্ঠানটি।

তাকবির ও তাহলিলের ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে আশ-শাতি শিবিরের ভেতর থেকে শোভাযাত্রাটি শুরু হয়। সুশৃঙ্খলভাবে হাফেজ ও হাফেজারা সারিবদ্ধ হয়ে এতে অংশ নেন। তাঁদের হাতে ছিল পবিত্র কোরআন, ফিলিস্তিনের জাতীয় পতাকা এবং ধৈর্য ও আশার প্রতীকসংবলিত নানা ফেস্টুন।

রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সাধারণ মানুষ করতালি ও দোয়ার মাধ্যমে এই গর্বের মুহূর্তের সঙ্গী হন। দীর্ঘদিনের বোমাবর্ষণ আর ধ্বংসস্তূপে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া রাস্তাগুলো এদিন এক স্বর্গীয় প্রশান্তি আর জন-উৎসবে রূপ নেয়।

অনুষ্ঠানের শেষে হাফেজ ও হাফেজাদের মধ্যে সম্মাননা সনদ ও বিশেষ উপহার বিতরণ করা হয়।

আয়োজকেরা জানান, গাজা উপত্যকার এই কঠিন বাস্তবতায় ধর্মীয় পরিচয় রক্ষা এবং নৈতিক মূল্যবোধকে জাগ্রত রাখাই ছিল এ সামাজিক উদ্যোগের প্রধান লক্ষ্য।

সূত্র: আল-আহেদ নিউজ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তাবলিগ জামাতের খুরুজের জোড় শুরু ২ জানুয়ারি

ইসলাম ডেস্ক 
তাবলিগ জামাতের শুরায়ি নেজামের জোড় ইজতেমা। ছবি: সংগৃহীত
তাবলিগ জামাতের শুরায়ি নেজামের জোড় ইজতেমা। ছবি: সংগৃহীত

আগামী ২, ৩ ও ৪ জানুয়ারি তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের (শুরায়ি নেজাম) ব্যবস্থাপনায় খুরুজের জোড় অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে প্রয়োজনীয় মাঠ প্রস্তুতির কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের (শুরায়ি নেজাম) মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান জানান, এই জোড়ে তাঁরাই অংশগ্রহণ করবেন, যাঁরা আল্লাহর রাস্তায় এক চিল্লা, তিন চিল্লা ও বিদেশ সফরের উদ্দেশ্যে বের হবেন এবং যাঁরা মেহনতের মাধ্যমে সাথিদের এই কাজে উদ্বুদ্ধ করে সঙ্গে নিয়ে আসবেন।

একটি মহল শুরায়ি নেজামের এই খুরুজের জোড়কে বিশ্ব ইজতেমা বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে জানিয়ে সবাইকে সতর্ক করে হাবিবুল্লাহ রায়হান বলেন, এটি কোনো ইজতেমা নয়; বরং সীমিত পরিসরে খুরুজের প্রস্তুতিমূলক জোড়।

এদিকে নির্ধারিত সময় অনুযায়ী টঙ্গীতে ৫৯তম বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের পর তা আয়োজন করা হবে। সরকারের এ সিদ্ধান্তের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ (শুরায়ি নেজাম) গত ৩ নভেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি দেশবাসীকে অবহিত করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আকাশপথে মুসলিম যাত্রীদের জন্য এমিরেটসের বিশেষ ব্যবস্থা

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আকাশপথে ভ্রমণরত মুসলিম যাত্রীদের ধর্মীয় প্রয়োজনীয়তা ও স্বাচ্ছন্দ্যকে গুরুত্ব দিয়ে নতুন উন্নত সংস্করণের পকেট জায়নামাজ চালু করেছে মধ্যপ্রাচ্যের বিমান সংস্থা এমিরেটস এয়ারলাইনস। আগের সংস্করণের তুলনায় জায়নামাজটি অধিক টেকসই ও আরামদায়ক হলেও এটি ওজনে হালকা এবং বহনে অত্যন্ত সুবিধাজনক।

এমিরেটস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের বহরের প্রতিটি ফ্লাইটে এখন থেকে এই বিশেষ পকেট জায়নামাজ পাওয়া যাবে। ফার্স্ট ক্লাস, বিজনেস ক্লাস কিংবা ইকোনমি—সব শ্রেণির যাত্রীদের জন্য এই সুবিধা উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। ফ্লাইট চলাকালে নামাজের প্রয়োজন হলে যাত্রীরা কর্তব্যরত কেবিন ক্রুদের কাছে অনুরোধ করলেই দ্রুত এই জায়নামাজ সরবরাহ করা হবে।

এমিরেটস কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, যাত্রীদের সর্বোচ্চ স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করতে জায়নামাজটির মান ও স্থায়িত্ব বৃদ্ধিতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

সূত্র: ইসলামিক ইনফরমেশন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতের টুপি পরে নামাজ আদায় করা যাবে কি?

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ১৯
ছবি: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি
ছবি: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি

শীতকালে প্রচণ্ড ঠান্ডার প্রকোপে অনেকেই কানটুপি, উলের টুপি কিংবা হুডি পরে থাকেন। এসব পরিধান করা অবস্থায় অনেক সময় নামাজের সময় হয়ে যায়। তাই নানা সময়ে মনে প্রশ্ন জাগে, শীতের টুপি বা হুডি পরে নামাজ আদায় করলে কি তা শুদ্ধ হবে?

ইসলামের বিধান হলো, নামাজে মাথা ঢাকা পুরুষের জন্য ফরজ নয়, বরং এটি নামাজের আদব ও সৌন্দর্যের অন্তর্ভুক্ত। রাসুলুল্লাহ (সা.) সাধারণত মাথা ঢেকেই নামাজ আদায় করতেন। আবু দাউদ শরিফে এসেছে, নবীজি (সা.) পাগড়ি পরিহিত অবস্থায় নামাজ আদায় করতেন। ফিকহের দৃষ্টিতে কানটুপি, উলের টুপি বা সাধারণ টুপি—সবই মাথা ঢাকার পোশাকের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং, শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে কানটুপি পরে নামাজ আদায় করা সম্পূর্ণ জায়েজ।

কানটুপি বা হুডি পরে নামাজ আদায় করার সময় একটি বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি—সেটি হলো সিজদা। সিজদার সময় কপাল সরাসরি মাটিতে বা জায়নামাজে লাগানো আবশ্যক। যদি টুপিটি এমনভাবে পরা হয়, যা কপালকে ঢেকে রাখে এবং মাটিতে কপাল ঠেকতে বাধা দেয়, তবে সিজদা অপূর্ণ থেকে যেতে পারে। তাই সিজদার সময় কপাল উন্মুক্ত রাখা উত্তম। তবে কপাল সামান্য আবৃত থাকলেও নামাজ হয়ে যাবে।

শীত থেকে বাঁচতে নাক-মুখ ঢেকে নামাজ আদায় করা অনুচিত। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া মুখ ঢেকে নামাজ আদায় করা মাকরুহ। তাই কান ও গলা আবৃত থাকলেও নাক-মুখ খোলা রাখা উচিত।

তাই শৈত্যপ্রবাহের সময় নিশ্চিন্তে কানটুপি পরা যাবে যদি টুপিটি পবিত্র (পাক-সাফ) হয়, এটি অহংকার বা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে না হয়ে কেবল শীত নিবারণের জন্য হয় এবং সিজদার সময় কপাল মাটিতে স্থাপনে কোনো বড় প্রতিবন্ধকতা তৈরি না করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত