Ajker Patrika

মুসলিম ঐতিহ্যে টুপির গুরুত্ব

ইসলাম ডেস্ক 
মুসলিম ঐতিহ্যে টুপির গুরুত্ব

হাজার বছরের মুসলিম ঐতিহ্যের স্মারক টুপি। ইসলামের সূচনাকাল থেকেই টুপি পরিধানের চল রয়েছে। ফিকহের দৃষ্টিকোণে টুপি পরা সুন্নত। মহানবী (সা.) সর্বদা টুপি পরতেন, হাদিসের একাধিক বর্ণনায় তার প্রমাণ মেলে। সাহাবায়ে কেরাম ও পরবর্তী যুগের সব অনুসরণীয় মুসলিম টুপি পরেছেন। শালীনতা ও সৌন্দর্যের আবরণ টুপি মুসলমানদের জাতীয় ঐক্যের প্রতীক এবং সুন্নাহসম্মত ইসলামি পোশাকের অন্তর্ভুক্ত।

হাদিসের ভাষ্যে

টুপি পরা মহানবী (সা.)-এর অভ্যাসগত সুন্নত। তিনি সর্বদা টুপি পরতেন। হাদিসের বিভিন্ন বর্ণনায় এটিকে তাঁর অভ্যাসগত সুন্নত হিসেবে দেখানো হয়েছে। হাসান বিন মেহরান বর্ণনা করেন, ‘এক সাহাবি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে তাঁর দস্তরখানে খাবার খেয়েছি এবং তাঁর মাথায় সাদা টুপি দেখেছি।’ (আল ইসাবাহ: ৪ / ৩৩৯)

রাসুল (সা.) পরিহিত তিন প্রকারের টুপির কথা সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর তিন ধরনের টুপি ছিল। সাদা তুলার আস্তরণের টুপি, ডোরাকাটা ইয়ামেনি চাদরের টুপি এবং কানঢাকা টুপি। শেষোক্ত টুপিটি তিনি সফরকালে পরতেন এবং কখনো কখনো নামাজ আদায়ের সময় সেটি সামনে রেখে দিতেন।’ (আখলাকুন নবী: ২ / ৩১৫)

সাহাবা যুগে

সাহাবায়ে কেরাম সত্যের মাপকাঠি। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁরা মহানবী (সা.)-এর পদাঙ্ক অনুসরণ করেছেন। হাদিসের কিতাবে সাহাবায়ে কেরামের টুপি পরিধানের অসংখ্য প্রমাণ আছে। হাসান বসরি (রহ.) বলেন, লোকেরা (সাহাবায়ে কিরাম) গরমের দিনে পাগড়ি ও টুপির ওপর সিজদা করতেন। (ফতহুল বারি: ১ / ৫৮৮)

সুলাইমান ইবনে আবু আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমি প্রথম সারির মুহাজিরদের দেখেছি, তারা সুতির পাগড়ি পরিধান করতেন, কালো, সাদা, লাল, সবুজ, হলুদ ইত্যাদি রঙের। তাঁরা পাগড়ির কাপড় মাথায় রেখে তার ওপর টুপি রাখতেন। তারপর তার ওপর পাগড়ি পেঁচিয়ে পরতেন।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, খণ্ড ১২, পৃষ্ঠা ৫৪৫)

তাবেয়ি যুগে

সাহাবায়ে কেরামের পর তাবেয়িনরাও টুপি পরিধানের সুন্নত অব্যাহতভাবে পালন করেন, তার অসংখ্য প্রমাণ পাওয়া যায়। আবদুল্লাহ ইবনে আবি হিন্দ (রহ.) বলেন, ‘আমি আলী ইবনে হুসাইন (রহ.)-এর মাথায় একটি সাদা টুপি দেখেছি, যা মাথার সঙ্গে মিলিত ছিল।’ (তবাকাতে ইবনে সাদ: ৩ / ৩২৪৩)

খালেদ ইবনে বকর বলেন, ‘আমি সালেম (রহ.)-এর মাথায় সাদা টুপি দেখেছি।’ (সিয়ারু আলামিন নুবালা: ৪ / ৪৬৪)

মুহাম্মাদ ইবনে হিলাল বলেন, ‘আমি সাঈদ ইবনুল মুসাইয়িবকে একটি পাতলা টুপির ওপর পাগড়ি বাঁধতে দেখেছি।’ (তবাকাতে ইবনে সাদ: ৫ / ১৩৮)

পরবর্তী যুগে

মুজতাহিদ ইমামরাও টুপি ব্যবহার করেছেন। ‘ইমাম আবু হানিফা উঁচু টুপি পরতেন।’ (আলইনতিকা, পৃষ্ঠা: ৩২৬)

ইমাম মালিক (রহ.)-এর টুপি প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘মালিক (রহ.) যখন হাদিস বর্ণনার জন্য বের হতেন, তখন অজু করতেন, টুপি পরতেন ও দাড়ি আঁচড়ে নিতেন। (আল-জামে, খতিব বাগদাদি,১ / ৩৮৮)

‘আমি ইমাম আহমদকে টুপির ওপর পাগড়ি পরিহিত অবস্থায় দেখেছি।...তবে কখনো কখনো তিনি পাগড়ি ছাড়া টুপি পরেছেন।’ (সিয়ারু আলামিন নুবালা: ১১ / ২২০)

জাতীয় ঐক্যের প্রতীক

টুপি মুসলমানদের জাতীয় ঐক্যের প্রতীক। রাসুলের যুগ থেকে বর্তমান পর্যন্ত, সব যুগেই মুসলমানদের মধ্যে টুপির ব্যাপক প্রচলন ছিল। মুসলিমরা ইউরোপীয় সংস্কৃতির পোশাক-আশাক গ্রহণ করতে শুরু করলেও টুপি পরা বন্ধ করেননি। উসমানি আমলে সেনাবাহিনীর জন্যও বিশেষ ‘লাল টুপি’র বাধ্যবাধকতা ছিল বলে জানা যায়। বর্তমানে ভৌগোলিক ও ঐতিহ্যগত কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানের টুপির আকার-আকৃতি বিভিন্ন ধরনের দেখা যায়। উপমহাদেশেও বিভিন্ন ধারার চিন্তা ও প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ডিজাইনের টুপির ব্যবহার লক্ষ করা যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তারেক রহমানের পোস্টে সুরা আলে ইমরানের ২৬ নম্বর আয়াত

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসনের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে দেশের মাটিতে পা রাখলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাঁর সঙ্গে দেশে ফিরেছেন স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও কন্যা জাইমা রহমান। রাজনীতির বাইরে ও ভেতরে—এই প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে ছিল আবেগ, কৌতূহল ও আলোচনার ঢেউ।

আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ৫৪ মিনিটে সপরিবারে তিনি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবেশ করেন। ভিআইপি লাউঞ্জে তারেক রহমানকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা।

এরপর সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে লাল-সবুজ রঙের একটি বুলেটপ্রুফ গাড়িতে চড়ে তিনি রওনা হন পূর্বাচলের ৩০০ ফুটে গণসংবর্ধনা মঞ্চের দিকে।

এদিনের প্রতিটি মুহূর্ত ধরা পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ফ্রেমে। দেশে ফেরা উপলক্ষে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বেলা ২টা পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে সাতটি পোস্ট দেন তারেক রহমান। প্রতিটি পোস্টে ফুটে ওঠে দীর্ঘ প্রবাসজীবন শেষে দেশে ফেরার অনুভূতি, আবেগ ও কৃতজ্ঞতার ভাষা।

পূর্বাচলের ৩০০ ফুটে গণসংবর্ধনা মঞ্চে পৌঁছার আগ মুহূর্তে আজ বেলা ৩টা ১৭ মিনিটে তাঁর ফেসবুকে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা যায় তিনি জনতাকে উদ্দেশ্য করে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। এর ক্যাপশনে তিনি উল্লেখ করেন পবিত্র কোরআনের সুরা আলে ইমরানের ২৬ নম্বর আয়াত—‘হে সার্বভৌম শক্তির মালিক আল্লাহ্! আপনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান করেন এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা কেড়ে নেন; যাকে ইচ্ছা আপনি সম্মানিত করেন আর যাকে ইচ্ছা আপনি হীন করেন। কল্যাণ আপনারই হাতে। নিশ্চয়ই আপনি সবকিছুর ওপর ক্ষমতাবান।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সফর শেষে নিজ দেশে ফিরে যে আমল করতেন নবীজি

কাউসার লাবীব
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ১১
মরুভূমির পথ ধরে হেঁটে চলছে একটি কাফেলা। ছবি: সংগৃহীত
মরুভূমির পথ ধরে হেঁটে চলছে একটি কাফেলা। ছবি: সংগৃহীত

সফর মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। নানা প্রয়োজনে মানুষ সফর করে। এই ধারা পৃথিবীতে মানুষের বসবাস শুরু হওয়ার পর থেকেই চলে আসছে। সফর এক ভিন্ন রকম অভিজ্ঞতা। এর মাধ্যমে মানুষের জ্ঞান সমৃদ্ধ হয়, বিভিন্ন বিষয়ে জানতে পারে। ইসলামে সফর, অর্থাৎ ভ্রমণের প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা পৃথিবীতে পরিভ্রমণ করো।’ (সুরা রুম: ৪২)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করে না—তাহলে তারা হৃদয় দিয়ে বুঝতে পারত, আর তাদের কান শুনতে পারত। প্রকৃতপক্ষে চোখ অন্ধ নয়, বরং বুকের ভেতর যে হৃদয় আছে তা অন্ধ।’ (সুরা হজ: ৪৬)

আমাদের নবী করিম (সা.) একেবারে ছেলেবেলা থেকেই ভ্রমণ করেছেন দূরদেশে। এরপর ব্যবসায়িক কাজে তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন কাফেলা নিয়ে দেশ থেকে দেশান্তরে। আল্লাহর পক্ষ থেকে নবুওয়াত প্রাপ্তির পরও এই ধারা অব্যাহত ছিল। ইসলামের জন্য হিজরত করেছেন মক্কা থেকে মদিনায়। আল্লাহর পথে লড়াইয়ের জন্য সফর করেছেন। নানা কাজে ভ্রমণ করেছেন বিভিন্ন জায়গায়।

নবীজি (সা.)-এর সুন্নত ছিল, তিনি সফর থেকে ফিরে দুই রাকাত নামাজ পড়তেন। সফর নিরাপদে শেষ করতে পারায় আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করতেন। দোয়া পড়তেন। এরপর পরিবারের কাছে যেতেন।

সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) সফর থেকে যখন ফিরতেন, তখন একটি দোয়া পড়তেন। দোয়াটি হলো, ‘আয়িবুনা ইনশা আল্লাহু তায়িবুনা আবিদুনা লি-রাব্বিনা হামিদুন।’

অর্থ: আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা প্রত্যাবর্তনকারী, তওবাকারী, ইবাদতকারী নিজ রবের প্রশংসাকারী। (সহিহ্ বুখারি: ১৭৯৭, সহিহ্ মুসলিম: ১৩৪৪)

অন্য হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) কোথাও সফরের উদ্দেশ্যে তাঁর উটে আরোহণের সময় তিনবার ‘আল্লাহু আকবার’ বলতেন, এরপর এই দোয়াটি পাঠ করতেন—‘সুবহানাল্লাজি সাখখারা লানা ওয়ামা কুন্না লাহু মুকরিনিন, ওয়া ইন্না ইলা রাব্বিনা লামুনকালিবুন। আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকা ফি সাফারিনা হাজাল বিররা ওয়াত তাকওয়া। ওয়া মিনাল আমালি মা তারদা। আল্লাহুম্মা হাওয়িন আলাইনা সাফারানা হাজা ওয়াত্উই আন্না বু’দাহু। আল্লাহুম্মা আনতাস সাহিবু ফিস সাফারি ওয়াল খালিফাতু ফিল আহলি। আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন ওয়াছাইস সাফারি ওয়া কাআবাতিল মানজারি ওয়া সুইল মুনকালাবি ফিল মালি ওয়াল আহলি।’

অর্থ: ‘পবিত্র মহান সে সত্তা, যিনি একে আমাদের বশীভূত করে দিয়েছেন, যদিও আমরা একে বশীভূত করতে সক্ষম ছিলাম না। অবশ্যই আমাদের প্রতিপালকের নিকট ফিরে যেতে হবে। হে আল্লাহ, এই সফরে আমরা তোমার নিকট কল্যাণ, তাকওয়া এবং তোমার সন্তুষ্টি অর্জন হয় এমন কাজের সামর্থ্য চাই। হে আল্লাহ, আমাদের এই সফর সহজ করে দাও এবং এর দূরত্ব কমিয়ে দাও। হে আল্লাহ, তুমিই (আমাদের) সফরসঙ্গী এবং পরিবারের তত্ত্বাবধানকারী। হে আল্লাহ, তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি সফরের কষ্ট, দুঃখজনক দৃশ্য এবং ফিরে এসে সম্পদ ও পরিবারের ক্ষতিকর পরিবর্তন থেকে।’

এরপর তিনি যখন সফর থেকে ফিরে আসতেন, তখনো উপরিউক্ত দোয়া পড়তেন এবং এর সঙ্গে যুক্ত করতেন, ‘আইবুনা তাইবুনা আবিদুনা লিরাব্বিনা হামিদুন।’ অর্থ: ‘আমরা প্রত্যাবর্তনকারী, তওবাকারী, আমাদের প্রতিপালকের ইবাদতকারী ও প্রশংসাকারী।’ (সহিহ্ মুসলিম: ১৩৪২)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অতিথিকে যেভাবে সম্মান করতে বলেছেন নবীজি (সা.)

আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ২৫
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইসলাম আগমনের আগেই নবী (সা.) যেসব গুণের জন্য সবার প্রিয় ছিলেন, তার মধ্যে একটি মেহমানদারি বা অতিথিপরায়ণতা। মেহমানদারি ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্যমণ্ডিত মানবিক দিক। নবী (সা.) নিজেই মেহমানদারি করতেন এবং সাহাবায়ে কেরামগণকেও উৎসাহিত করতেন।

হেরা গুহায় নবী (সা.) প্রথমবার যখন হজরত জিবরাইল (আ.)-কে দেখে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে হজরত খাদিজা (রা.)-এর কাছে ফিরে এলেন, তখন তিনি তাঁকে যেসব কথা বলে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন, এর মধ্যে মেহমানদারি অন্যতম। খাদিজা (রা.) বলেছিলেন, ‘আল্লাহর কসম, কখনোই নয়। আল্লাহ তাআলা আপনাকে কখনো লাঞ্ছিত করবেন না। আপনি তো আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সদাচরণ করেন, অসহায়-দুস্থদের দায়িত্ব বহন করেন, নিঃস্বকে সহযোগিতা করেন, মেহমানের আপ্যায়ন করেন এবং হক পথের দুর্দশাগ্রস্তকে সাহায্য করেন।’ (সহিহ্ বুখারি: ৩)

মেহমানদারির ফজিলত প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তারা নিজের ওপর অন্যকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। যদিও নিজেরা ক্ষুধার্ত থাকে। আর যারা স্বভাবজাত লোভ-লালসা ও কামনা থেকে মুক্তি লাভ করে, তারাই সফলকাম।’ (সুরা হাশর: ৯)

মেহমানদারির ফজিলত প্রসঙ্গে হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ঘরে মেহমানদারি করা হয়, উটের কুঁজের মাংস কাটার উদ্দেশ্যে ছুরি যত দ্রুত অগ্রসর হয়, সে ঘরে বরকত তার চেয়েও দ্রুত প্রবেশ করে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ)

অন্যত্র মেহমানদারির প্রতি উৎসাহিত করে নবী (সা.) আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.)-কে উদ্দেশ করে বলেন, ‘নিশ্চয়ই তোমার ওপর তোমার মেহমানের হক রয়েছে।’ (সহিহ্ বুখারি)

প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের উচিত, মেহমানদারির হক ও নিয়মগুলো মেনে চলা। কোরআন-সুন্নাহয় বর্ণিত ফজিলত ও মর্যাদাগুলো অর্জন করা। অযথা কাউকে কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকা। আল্লাহ তাআলা উম্মাহকে মেহমানদারির হকগুলো যথাযথ আদায় ও ফজিলতসমূহ লাভ করার তাওফিক দান করুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যেসব দোয়ায় রয়েছে পরকালীন মুক্তি ও অসামান্য সওয়াব

ইসলাম ডেস্ক 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

পরকালীন সফলতার জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পাশাপাশি কোরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করা জরুরি। তবে ইবাদতের ক্ষেত্রে ইসলাম আমাদের বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘নিশ্চয়ই দ্বীন সহজ-সরল। দ্বীন নিয়ে যে কড়াকড়ি করে, দ্বীন তার ওপর বিজয়ী হয় (অর্থাৎ সে ক্লান্ত হয়ে আমল ছেড়ে দেয়)। কাজেই তোমরা মধ্যপন্থা অবলম্বন করো এবং তার নিকটবর্তী থাকো। আশান্বিত থাকো এবং সকাল-সন্ধ্যায় ও রাতের শেষাংশে (ইবাদতের মাধ্যমে) আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করো।’ (সহিহ বুখারি: ৩৮)

রাসুলুল্লাহ (সা.) সকাল-সন্ধ্যায় মহান রবের কাছে কল্যাণ কামনার বিশেষ কিছু দোয়া শিখিয়েছেন। এমন একটি জিকির আছে, যা নিয়মিত করলে কিয়ামতের দিন সওয়াবের দিক থেকে কেউ তাকে ছাড়িয়ে যেতে পারবে না। আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সকালে জেগে উঠে ১০০ বার বলবে—‘সুবহানাল্লাহিল আজিম, ওয়া বিহামদিহি’ এবং সন্ধ্যায়ও অনুরূপ বলে, তাহলে সৃষ্টিজগতের কেউই (কিয়ামতের দিন) তার মতো মর্যাদা ও সওয়াব অর্জনে সক্ষম হবে না।’ (সুনান আবু দাউদ: ৫০৯১)

দৈন্য, অলসতা ও কবরের আজাব থেকে সুরক্ষা পেতে রাসুল (সা.) একটি বিশেষ দোয়া পাঠ করতেন। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিস অনুযায়ী দোয়াটি হলো—‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল বুখলি, ওয়াল কাসালি, ওয়া-আরদালিল উমুরি, ওয়া-আজাবিল কাবরি, ওয়া-ফিতনাতিল মাহইয়া ওয়াল মামাতি।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে কৃপণতা, অলসতা, বয়সের নিকৃষ্টতম সময় (বার্ধক্যের দৈন্য), কবরের আজাব এবং জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে আশ্রয় চাই।’ (সহিহ মুসলিম: ৬৬২৯)

প্রতিদিনের কর্মব্যস্ততার মাঝে সকাল ও সন্ধ্যায় এই ছোট ছোট আমল আমাদের আত্মিক প্রশান্তি দেওয়ার পাশাপাশি পরকালে বিশাল সাফল্যের পথ সুগম করতে পারে। আল্লাহ আমাদের নবীজি (সা.)-এর শেখানো এই দোয়া ও জিকিরগুলোর ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত