ধর্ম ও জীবন ডেস্ক

৬১৬ খ্রিষ্টাব্দ। মহানবী (সা.)-এর নবুয়তপ্রাপ্তির ষষ্ঠ বছর। মক্কায় তিনি দাওয়াতের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে হামজা (রা.), ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.)–সহ মক্কার প্রভাবশালী কয়েকজন নেতা ইসলাম গ্রহণ করেছেন। ফলে মহানবী (সা.) প্রকাশ্যে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে যাচ্ছেন।
অন্যদিকে মক্কার মুশরিকদের ক্রোধ ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছিল। ইসলাম গ্রহণকারী সাহাবিদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালানোর পাশাপাশি মহানবী (সা.)-কে থামানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছিল। অর্থবিত্ত, পদমর্যাদা, সুন্দরী নারী—কিসের লোভ দেখানো হয়নি তাঁকে! তবে তিনি টলেননি। অন্যদিকে গোত্র বনি হাশেম ও বনি মুত্তালিবকেও মহানবী (সা.)-এর সাহায্য থেকে বিরত রাখতে পারছিল না মক্কার মুশরিকেরা। ফলে তারা এ দুই গোত্রসহ মুহাম্মদ (সা.)-কে বয়কট করার ফন্দি আঁটে। ইসলামের ইতিহাসে যা ‘শিআবে আবি তালিবের বয়কট’ নামে পরিচিত।
বয়কটের চুক্তিনামা
মক্কার মুশরিকেরা মুহাসসাব উপত্যকায় বনি কিনানার এক তাঁবুতে বৈঠক করে এবং সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নেয় যে, বনি হাশিম ও বনি মুত্তালিবের সঙ্গে বেচাকেনা, সামাজিক কার্যকলাপ, সব ধরনের আর্থিক লেনদেন এমনকি কুশল বিনিময়ও বন্ধ রাখা হবে। কেউ তাদের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবে না। ওঠাবসা, কথোপকথন, মেলামেশা, বাড়িতে যাতায়াত সবকিছুই বন্ধ রাখা হবে। হত্যার জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে যতদিন তাদের হাতে সমর্পণ করা হবে না, ততদিন এ নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। বৈঠকে সবার কাছ থেকে অঙ্গীকার নেওয়া হয় যে, তারা কখনো বনু হাশিমের পক্ষ থেকে কোনো সন্ধিচুক্তির প্রস্তাব গ্রহণ করবে না এবং তাদের প্রতি কোনো প্রকার ভদ্রতা বা শিষ্টাচার দেখাবে না।
মহানবী (সা.)-এর চাচা আবু তালিব এ চুক্তির প্রস্তাব নাকচ করেন এবং জবাবে ঘোষণা করেন, ‘এ মসজিদের (কাবা শরিফ) মালিকের শপথ, আহমদকে আমরা কখনোই তাদের হাতে অর্পণ করব না। সকল ভয়াবহতা নিয়ে কালনাগিনী দংশন করলেও নয়।’
চুক্তিপত্রটি কাবা শরিফের দেয়ালে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। আবু লাহাব ছাড়া বনি হাশিম ও বনি মুত্তালিবের কাফির-মুসলিম সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এবং কাবার পাশে শিআবে আবি তালিব নামের এক গিরিখাদে আশ্রয় নেয়। নবুয়তের সপ্তম বর্ষের মহররম মাসে এই চুক্তি কার্যকর হয়। ফলে মহানবী (সা.) নিজের গোত্রসহ এক কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়েন। বিপদের পাহাড় নেমে আসে মহানবী (সা.)-এর অনুসারী ও হিতাকাঙ্ক্ষীদের ওপর। এই বয়কটের ডাকে মহানবী (সা.) বেশ কষ্ট পেয়েছিলেন। বয়কটের চুক্তিনামার লেখক বোগায়েজ ইবনে আমির ইবনে হাশিমকে তিনি বদদোয়াও দিয়েছিলেন। পরে তাঁর হাত অবশ হয়ে যায় বলেও ইতিহাস থেকে জানা যায়।
তিন বছরের অবরুদ্ধ সময়
বয়কটের কারণে বনি হাশিম ও বনি মুত্তালিবের লোকজনের অবস্থা অত্যন্ত সঙ্গিন হয়ে পড়ে। খাবার, নিত্যপণ্য এমনকি পানি সরবরাহও বন্ধ হয়ে যায়। মক্কার বাইরে থেকে যেসব পণ্যসামগ্রী আসত, তা মুশরিকেরা দ্রুতই কিনে নিত। ফলে অবরুদ্ধদের অবস্থা ক্রমেই করুণ হতে শুরু করে। খাদ্যাভাবে তাঁরা গাছের পাতা, ছাল-বাকল ও শুকনো চামড়া খেতে বাধ্য হন। সাহাবিদের বর্ণনায় এসেছে, ‘এ সময় আমরা গাছের পাতা সিদ্ধ করে ক্ষুধার জ্বালা নিবারণ করতাম। পানির অভাবে এবং গাছের পাতা খাওয়ার কারণে আমাদের পায়খানা ছাগলের পায়খানার মতো হয়ে গিয়েছিল।’
ক্ষুধার তাড়নায় অস্থির শিশু ও নারীদের আর্তচিৎকার শিআবে আবি তালিবের বাইরে থেকেও শোনা যেত। তবে মক্কাবাসীর পাথর হৃদয় একটুও বিচলিত হতো না। বিভিন্ন রোগও ছড়িয়ে পড়েছিল। বেশির ভাগ মানুষই মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেলেও তাঁরা ধৈর্য ও অবিচলতার পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করেন। তাঁদের মধ্যে একজনও আত্মসমর্পণ করেননি। এভাবেই দীর্ঘ তিন বছর চলে যায়।
এ সময় মহানবী (সা.)-এর হিতাকাঙ্ক্ষী সচ্ছল ও সামর্থ্যবান ব্যক্তিরা নিজেদের সব সম্পদ ব্যয় করে ফেলেন। খাদিজা (রা.) তাঁর সম্পূর্ণ অর্থ ব্যয় করেন। অতি গোপনে কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আসত, তা সবাই মিলে খেতেন। রজব, জিলকদ, জিলহজ ও মহররম মাস ছাড়া অন্য সময়ে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহের উদ্দেশ্যে তাঁরা গিরির বাইরে যেতে পারতেন না। খাদিজা (রা.)-এর ভাতিজা হাকিম ইবনে হিজাম কখনো কখনো তাঁর ফুফুর জন্য গম পাঠিয়ে দিতেন।
চাচা আবু তালিব রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নিরাপত্তা নিয়ে খুব চিন্তিত ছিলেন। নিরাপত্তার জন্য প্রতি রাতেই মহানবী (সা.)-এর শয্যা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে রাখা হতো। মহানবী (সা.)-এর বিছানায় থাকত অন্য কেউ। তবে বয়কট-অবরোধ সত্ত্বেও হজের সময় মহানবী (সা.)–সহ অন্য মুসলমানেরা বাইরে আসতেন এবং হজে আসা লোকজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ইসলামের দাওয়াত দিতেন। এ সময় মহানবী (সা.)-এর চাচা আবু লাহাব ও আবু জাহেল মুসলমানদের ওপর অবর্ণনীয় নির্যাতন চালায়।
চুক্তিনামা যেভাবে নষ্ট হয়
নবুয়তের দশম বছর মহররম মাসে মহানবী (সা.)-এর জীবনের এই সংকটময় সময়ের অবসান ঘটে। হিশাম ইবনে আমর নামের এক ব্যক্তি শিআবে আবি তালিবে গোপনে খাদ্য পাঠাতেন। তিনিই বয়কট অবসানের উদ্যোগ নেন। কুরাইশের গণ্যমান্য ব্যক্তি যুহাইর, জামআ ইবনে আসওয়াদ, মুতইম ইবনে আদির সঙ্গে মিলে হিশাম কাবার দেয়ালে ঝুলানো চুক্তিনামা ছিঁড়ে ফেলে অবরোধ অবসানের পরিকল্পনা করেন।
পরদিন কাবাপ্রাঙ্গণে এসে যুহাইর অবরুদ্ধদের নির্যাতিত হওয়ার কথা তুলে ধরেন এবং অবরোধের অবসান ঘটনোর আহ্বান জানান। তাঁর সঙ্গে অনেকেই যোগ দেয়। আবু জাহেল বিরোধিতা করে। তখন মহানবী (সা.)-এর পক্ষ থেকে সংবাদ নিয়ে চাচা আবু তালিবও কাবাচত্বরে উপস্থিত হন। ওহির মাধ্যমে মহানবী (সা.) জানতে পারেন যে, চুক্তিনামাটি আল্লাহর আদেশে পোকায় খেয়ে ফেলেছে এবং শুধু আল্লাহর নামের অংশ অবশিষ্ট আছে। আবু তালিব বলেন, ‘যদি তাঁর কথা মিথ্যা প্রমাণিত হয়, তাহলে তাঁর ও আপনাদের মধ্য থেকে আমি সরে দাঁড়াব। তখন আপনাদের যা ইচ্ছে করবেন। কিন্তু যদি সত্য প্রমাণিত হয়, তাহলে বয়কট তুলে নিতে হবে।’ এ কথায় কুরাইশেরা বললেন, ‘আপনি ইনসাফের কথাই বলছেন।’
পরে চুক্তিপত্র নামিয়ে দেখা গেল, সত্যি সত্যিই এক প্রকার কীট চুক্তিনামার লেখা সম্পূর্ণ নষ্ট করে দিয়েছে। শুধু ‘বিসমিকা আল্লাহুম্মা’ কথাটি অবশিষ্ট রয়েছে এবং যেখানে যেখানে আল্লাহর নাম লেখা ছিল শুধু সেই লেখাই বাকি রয়েছে। কীট সেগুলো খায়নি। ফলে চুক্তিনামাটি ছিঁড়ে বয়কটের অবসানের ঘোষণা দেওয়া হয়।
মহানবী (সা.)-এর এই মোজেজা দেখে প্রতিবারের মতো এবারও মুশরিকেরা মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং হেদায়ত থেকে বঞ্চিত হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা তাদের বৈশিষ্ট্য বয়ান করে বলেন, ‘কিন্তু তারা যখন কোনো নিদর্শন দেখে, তখন মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং বলে, এ তো সেই আগে থেকে চলে আসা জাদু।’ (সুরা কামার: ২)
সূত্র
১. বুখারি: ১ / ৫৫৮।
২. জাদুল মাআদ: ২ / ৪৬।
৩. ইবনে হিশাম: ১ / ৩৫০-৩৫১ ও ৩৭৪-৩৭৭।
৪. রাহমাতুল্লিল আলামীন: ১ / ৬৯-৭০।
৫. মুখতাসারুস সিরাহ: ১০৬-১১০।

৬১৬ খ্রিষ্টাব্দ। মহানবী (সা.)-এর নবুয়তপ্রাপ্তির ষষ্ঠ বছর। মক্কায় তিনি দাওয়াতের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে হামজা (রা.), ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.)–সহ মক্কার প্রভাবশালী কয়েকজন নেতা ইসলাম গ্রহণ করেছেন। ফলে মহানবী (সা.) প্রকাশ্যে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে যাচ্ছেন।
অন্যদিকে মক্কার মুশরিকদের ক্রোধ ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছিল। ইসলাম গ্রহণকারী সাহাবিদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালানোর পাশাপাশি মহানবী (সা.)-কে থামানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছিল। অর্থবিত্ত, পদমর্যাদা, সুন্দরী নারী—কিসের লোভ দেখানো হয়নি তাঁকে! তবে তিনি টলেননি। অন্যদিকে গোত্র বনি হাশেম ও বনি মুত্তালিবকেও মহানবী (সা.)-এর সাহায্য থেকে বিরত রাখতে পারছিল না মক্কার মুশরিকেরা। ফলে তারা এ দুই গোত্রসহ মুহাম্মদ (সা.)-কে বয়কট করার ফন্দি আঁটে। ইসলামের ইতিহাসে যা ‘শিআবে আবি তালিবের বয়কট’ নামে পরিচিত।
বয়কটের চুক্তিনামা
মক্কার মুশরিকেরা মুহাসসাব উপত্যকায় বনি কিনানার এক তাঁবুতে বৈঠক করে এবং সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নেয় যে, বনি হাশিম ও বনি মুত্তালিবের সঙ্গে বেচাকেনা, সামাজিক কার্যকলাপ, সব ধরনের আর্থিক লেনদেন এমনকি কুশল বিনিময়ও বন্ধ রাখা হবে। কেউ তাদের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবে না। ওঠাবসা, কথোপকথন, মেলামেশা, বাড়িতে যাতায়াত সবকিছুই বন্ধ রাখা হবে। হত্যার জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে যতদিন তাদের হাতে সমর্পণ করা হবে না, ততদিন এ নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। বৈঠকে সবার কাছ থেকে অঙ্গীকার নেওয়া হয় যে, তারা কখনো বনু হাশিমের পক্ষ থেকে কোনো সন্ধিচুক্তির প্রস্তাব গ্রহণ করবে না এবং তাদের প্রতি কোনো প্রকার ভদ্রতা বা শিষ্টাচার দেখাবে না।
মহানবী (সা.)-এর চাচা আবু তালিব এ চুক্তির প্রস্তাব নাকচ করেন এবং জবাবে ঘোষণা করেন, ‘এ মসজিদের (কাবা শরিফ) মালিকের শপথ, আহমদকে আমরা কখনোই তাদের হাতে অর্পণ করব না। সকল ভয়াবহতা নিয়ে কালনাগিনী দংশন করলেও নয়।’
চুক্তিপত্রটি কাবা শরিফের দেয়ালে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। আবু লাহাব ছাড়া বনি হাশিম ও বনি মুত্তালিবের কাফির-মুসলিম সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এবং কাবার পাশে শিআবে আবি তালিব নামের এক গিরিখাদে আশ্রয় নেয়। নবুয়তের সপ্তম বর্ষের মহররম মাসে এই চুক্তি কার্যকর হয়। ফলে মহানবী (সা.) নিজের গোত্রসহ এক কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়েন। বিপদের পাহাড় নেমে আসে মহানবী (সা.)-এর অনুসারী ও হিতাকাঙ্ক্ষীদের ওপর। এই বয়কটের ডাকে মহানবী (সা.) বেশ কষ্ট পেয়েছিলেন। বয়কটের চুক্তিনামার লেখক বোগায়েজ ইবনে আমির ইবনে হাশিমকে তিনি বদদোয়াও দিয়েছিলেন। পরে তাঁর হাত অবশ হয়ে যায় বলেও ইতিহাস থেকে জানা যায়।
তিন বছরের অবরুদ্ধ সময়
বয়কটের কারণে বনি হাশিম ও বনি মুত্তালিবের লোকজনের অবস্থা অত্যন্ত সঙ্গিন হয়ে পড়ে। খাবার, নিত্যপণ্য এমনকি পানি সরবরাহও বন্ধ হয়ে যায়। মক্কার বাইরে থেকে যেসব পণ্যসামগ্রী আসত, তা মুশরিকেরা দ্রুতই কিনে নিত। ফলে অবরুদ্ধদের অবস্থা ক্রমেই করুণ হতে শুরু করে। খাদ্যাভাবে তাঁরা গাছের পাতা, ছাল-বাকল ও শুকনো চামড়া খেতে বাধ্য হন। সাহাবিদের বর্ণনায় এসেছে, ‘এ সময় আমরা গাছের পাতা সিদ্ধ করে ক্ষুধার জ্বালা নিবারণ করতাম। পানির অভাবে এবং গাছের পাতা খাওয়ার কারণে আমাদের পায়খানা ছাগলের পায়খানার মতো হয়ে গিয়েছিল।’
ক্ষুধার তাড়নায় অস্থির শিশু ও নারীদের আর্তচিৎকার শিআবে আবি তালিবের বাইরে থেকেও শোনা যেত। তবে মক্কাবাসীর পাথর হৃদয় একটুও বিচলিত হতো না। বিভিন্ন রোগও ছড়িয়ে পড়েছিল। বেশির ভাগ মানুষই মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেলেও তাঁরা ধৈর্য ও অবিচলতার পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করেন। তাঁদের মধ্যে একজনও আত্মসমর্পণ করেননি। এভাবেই দীর্ঘ তিন বছর চলে যায়।
এ সময় মহানবী (সা.)-এর হিতাকাঙ্ক্ষী সচ্ছল ও সামর্থ্যবান ব্যক্তিরা নিজেদের সব সম্পদ ব্যয় করে ফেলেন। খাদিজা (রা.) তাঁর সম্পূর্ণ অর্থ ব্যয় করেন। অতি গোপনে কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আসত, তা সবাই মিলে খেতেন। রজব, জিলকদ, জিলহজ ও মহররম মাস ছাড়া অন্য সময়ে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহের উদ্দেশ্যে তাঁরা গিরির বাইরে যেতে পারতেন না। খাদিজা (রা.)-এর ভাতিজা হাকিম ইবনে হিজাম কখনো কখনো তাঁর ফুফুর জন্য গম পাঠিয়ে দিতেন।
চাচা আবু তালিব রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নিরাপত্তা নিয়ে খুব চিন্তিত ছিলেন। নিরাপত্তার জন্য প্রতি রাতেই মহানবী (সা.)-এর শয্যা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে রাখা হতো। মহানবী (সা.)-এর বিছানায় থাকত অন্য কেউ। তবে বয়কট-অবরোধ সত্ত্বেও হজের সময় মহানবী (সা.)–সহ অন্য মুসলমানেরা বাইরে আসতেন এবং হজে আসা লোকজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ইসলামের দাওয়াত দিতেন। এ সময় মহানবী (সা.)-এর চাচা আবু লাহাব ও আবু জাহেল মুসলমানদের ওপর অবর্ণনীয় নির্যাতন চালায়।
চুক্তিনামা যেভাবে নষ্ট হয়
নবুয়তের দশম বছর মহররম মাসে মহানবী (সা.)-এর জীবনের এই সংকটময় সময়ের অবসান ঘটে। হিশাম ইবনে আমর নামের এক ব্যক্তি শিআবে আবি তালিবে গোপনে খাদ্য পাঠাতেন। তিনিই বয়কট অবসানের উদ্যোগ নেন। কুরাইশের গণ্যমান্য ব্যক্তি যুহাইর, জামআ ইবনে আসওয়াদ, মুতইম ইবনে আদির সঙ্গে মিলে হিশাম কাবার দেয়ালে ঝুলানো চুক্তিনামা ছিঁড়ে ফেলে অবরোধ অবসানের পরিকল্পনা করেন।
পরদিন কাবাপ্রাঙ্গণে এসে যুহাইর অবরুদ্ধদের নির্যাতিত হওয়ার কথা তুলে ধরেন এবং অবরোধের অবসান ঘটনোর আহ্বান জানান। তাঁর সঙ্গে অনেকেই যোগ দেয়। আবু জাহেল বিরোধিতা করে। তখন মহানবী (সা.)-এর পক্ষ থেকে সংবাদ নিয়ে চাচা আবু তালিবও কাবাচত্বরে উপস্থিত হন। ওহির মাধ্যমে মহানবী (সা.) জানতে পারেন যে, চুক্তিনামাটি আল্লাহর আদেশে পোকায় খেয়ে ফেলেছে এবং শুধু আল্লাহর নামের অংশ অবশিষ্ট আছে। আবু তালিব বলেন, ‘যদি তাঁর কথা মিথ্যা প্রমাণিত হয়, তাহলে তাঁর ও আপনাদের মধ্য থেকে আমি সরে দাঁড়াব। তখন আপনাদের যা ইচ্ছে করবেন। কিন্তু যদি সত্য প্রমাণিত হয়, তাহলে বয়কট তুলে নিতে হবে।’ এ কথায় কুরাইশেরা বললেন, ‘আপনি ইনসাফের কথাই বলছেন।’
পরে চুক্তিপত্র নামিয়ে দেখা গেল, সত্যি সত্যিই এক প্রকার কীট চুক্তিনামার লেখা সম্পূর্ণ নষ্ট করে দিয়েছে। শুধু ‘বিসমিকা আল্লাহুম্মা’ কথাটি অবশিষ্ট রয়েছে এবং যেখানে যেখানে আল্লাহর নাম লেখা ছিল শুধু সেই লেখাই বাকি রয়েছে। কীট সেগুলো খায়নি। ফলে চুক্তিনামাটি ছিঁড়ে বয়কটের অবসানের ঘোষণা দেওয়া হয়।
মহানবী (সা.)-এর এই মোজেজা দেখে প্রতিবারের মতো এবারও মুশরিকেরা মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং হেদায়ত থেকে বঞ্চিত হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা তাদের বৈশিষ্ট্য বয়ান করে বলেন, ‘কিন্তু তারা যখন কোনো নিদর্শন দেখে, তখন মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং বলে, এ তো সেই আগে থেকে চলে আসা জাদু।’ (সুরা কামার: ২)
সূত্র
১. বুখারি: ১ / ৫৫৮।
২. জাদুল মাআদ: ২ / ৪৬।
৩. ইবনে হিশাম: ১ / ৩৫০-৩৫১ ও ৩৭৪-৩৭৭।
৪. রাহমাতুল্লিল আলামীন: ১ / ৬৯-৭০।
৫. মুখতাসারুস সিরাহ: ১০৬-১১০।
ধর্ম ও জীবন ডেস্ক

৬১৬ খ্রিষ্টাব্দ। মহানবী (সা.)-এর নবুয়তপ্রাপ্তির ষষ্ঠ বছর। মক্কায় তিনি দাওয়াতের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে হামজা (রা.), ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.)–সহ মক্কার প্রভাবশালী কয়েকজন নেতা ইসলাম গ্রহণ করেছেন। ফলে মহানবী (সা.) প্রকাশ্যে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে যাচ্ছেন।
অন্যদিকে মক্কার মুশরিকদের ক্রোধ ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছিল। ইসলাম গ্রহণকারী সাহাবিদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালানোর পাশাপাশি মহানবী (সা.)-কে থামানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছিল। অর্থবিত্ত, পদমর্যাদা, সুন্দরী নারী—কিসের লোভ দেখানো হয়নি তাঁকে! তবে তিনি টলেননি। অন্যদিকে গোত্র বনি হাশেম ও বনি মুত্তালিবকেও মহানবী (সা.)-এর সাহায্য থেকে বিরত রাখতে পারছিল না মক্কার মুশরিকেরা। ফলে তারা এ দুই গোত্রসহ মুহাম্মদ (সা.)-কে বয়কট করার ফন্দি আঁটে। ইসলামের ইতিহাসে যা ‘শিআবে আবি তালিবের বয়কট’ নামে পরিচিত।
বয়কটের চুক্তিনামা
মক্কার মুশরিকেরা মুহাসসাব উপত্যকায় বনি কিনানার এক তাঁবুতে বৈঠক করে এবং সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নেয় যে, বনি হাশিম ও বনি মুত্তালিবের সঙ্গে বেচাকেনা, সামাজিক কার্যকলাপ, সব ধরনের আর্থিক লেনদেন এমনকি কুশল বিনিময়ও বন্ধ রাখা হবে। কেউ তাদের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবে না। ওঠাবসা, কথোপকথন, মেলামেশা, বাড়িতে যাতায়াত সবকিছুই বন্ধ রাখা হবে। হত্যার জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে যতদিন তাদের হাতে সমর্পণ করা হবে না, ততদিন এ নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। বৈঠকে সবার কাছ থেকে অঙ্গীকার নেওয়া হয় যে, তারা কখনো বনু হাশিমের পক্ষ থেকে কোনো সন্ধিচুক্তির প্রস্তাব গ্রহণ করবে না এবং তাদের প্রতি কোনো প্রকার ভদ্রতা বা শিষ্টাচার দেখাবে না।
মহানবী (সা.)-এর চাচা আবু তালিব এ চুক্তির প্রস্তাব নাকচ করেন এবং জবাবে ঘোষণা করেন, ‘এ মসজিদের (কাবা শরিফ) মালিকের শপথ, আহমদকে আমরা কখনোই তাদের হাতে অর্পণ করব না। সকল ভয়াবহতা নিয়ে কালনাগিনী দংশন করলেও নয়।’
চুক্তিপত্রটি কাবা শরিফের দেয়ালে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। আবু লাহাব ছাড়া বনি হাশিম ও বনি মুত্তালিবের কাফির-মুসলিম সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এবং কাবার পাশে শিআবে আবি তালিব নামের এক গিরিখাদে আশ্রয় নেয়। নবুয়তের সপ্তম বর্ষের মহররম মাসে এই চুক্তি কার্যকর হয়। ফলে মহানবী (সা.) নিজের গোত্রসহ এক কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়েন। বিপদের পাহাড় নেমে আসে মহানবী (সা.)-এর অনুসারী ও হিতাকাঙ্ক্ষীদের ওপর। এই বয়কটের ডাকে মহানবী (সা.) বেশ কষ্ট পেয়েছিলেন। বয়কটের চুক্তিনামার লেখক বোগায়েজ ইবনে আমির ইবনে হাশিমকে তিনি বদদোয়াও দিয়েছিলেন। পরে তাঁর হাত অবশ হয়ে যায় বলেও ইতিহাস থেকে জানা যায়।
তিন বছরের অবরুদ্ধ সময়
বয়কটের কারণে বনি হাশিম ও বনি মুত্তালিবের লোকজনের অবস্থা অত্যন্ত সঙ্গিন হয়ে পড়ে। খাবার, নিত্যপণ্য এমনকি পানি সরবরাহও বন্ধ হয়ে যায়। মক্কার বাইরে থেকে যেসব পণ্যসামগ্রী আসত, তা মুশরিকেরা দ্রুতই কিনে নিত। ফলে অবরুদ্ধদের অবস্থা ক্রমেই করুণ হতে শুরু করে। খাদ্যাভাবে তাঁরা গাছের পাতা, ছাল-বাকল ও শুকনো চামড়া খেতে বাধ্য হন। সাহাবিদের বর্ণনায় এসেছে, ‘এ সময় আমরা গাছের পাতা সিদ্ধ করে ক্ষুধার জ্বালা নিবারণ করতাম। পানির অভাবে এবং গাছের পাতা খাওয়ার কারণে আমাদের পায়খানা ছাগলের পায়খানার মতো হয়ে গিয়েছিল।’
ক্ষুধার তাড়নায় অস্থির শিশু ও নারীদের আর্তচিৎকার শিআবে আবি তালিবের বাইরে থেকেও শোনা যেত। তবে মক্কাবাসীর পাথর হৃদয় একটুও বিচলিত হতো না। বিভিন্ন রোগও ছড়িয়ে পড়েছিল। বেশির ভাগ মানুষই মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেলেও তাঁরা ধৈর্য ও অবিচলতার পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করেন। তাঁদের মধ্যে একজনও আত্মসমর্পণ করেননি। এভাবেই দীর্ঘ তিন বছর চলে যায়।
এ সময় মহানবী (সা.)-এর হিতাকাঙ্ক্ষী সচ্ছল ও সামর্থ্যবান ব্যক্তিরা নিজেদের সব সম্পদ ব্যয় করে ফেলেন। খাদিজা (রা.) তাঁর সম্পূর্ণ অর্থ ব্যয় করেন। অতি গোপনে কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আসত, তা সবাই মিলে খেতেন। রজব, জিলকদ, জিলহজ ও মহররম মাস ছাড়া অন্য সময়ে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহের উদ্দেশ্যে তাঁরা গিরির বাইরে যেতে পারতেন না। খাদিজা (রা.)-এর ভাতিজা হাকিম ইবনে হিজাম কখনো কখনো তাঁর ফুফুর জন্য গম পাঠিয়ে দিতেন।
চাচা আবু তালিব রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নিরাপত্তা নিয়ে খুব চিন্তিত ছিলেন। নিরাপত্তার জন্য প্রতি রাতেই মহানবী (সা.)-এর শয্যা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে রাখা হতো। মহানবী (সা.)-এর বিছানায় থাকত অন্য কেউ। তবে বয়কট-অবরোধ সত্ত্বেও হজের সময় মহানবী (সা.)–সহ অন্য মুসলমানেরা বাইরে আসতেন এবং হজে আসা লোকজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ইসলামের দাওয়াত দিতেন। এ সময় মহানবী (সা.)-এর চাচা আবু লাহাব ও আবু জাহেল মুসলমানদের ওপর অবর্ণনীয় নির্যাতন চালায়।
চুক্তিনামা যেভাবে নষ্ট হয়
নবুয়তের দশম বছর মহররম মাসে মহানবী (সা.)-এর জীবনের এই সংকটময় সময়ের অবসান ঘটে। হিশাম ইবনে আমর নামের এক ব্যক্তি শিআবে আবি তালিবে গোপনে খাদ্য পাঠাতেন। তিনিই বয়কট অবসানের উদ্যোগ নেন। কুরাইশের গণ্যমান্য ব্যক্তি যুহাইর, জামআ ইবনে আসওয়াদ, মুতইম ইবনে আদির সঙ্গে মিলে হিশাম কাবার দেয়ালে ঝুলানো চুক্তিনামা ছিঁড়ে ফেলে অবরোধ অবসানের পরিকল্পনা করেন।
পরদিন কাবাপ্রাঙ্গণে এসে যুহাইর অবরুদ্ধদের নির্যাতিত হওয়ার কথা তুলে ধরেন এবং অবরোধের অবসান ঘটনোর আহ্বান জানান। তাঁর সঙ্গে অনেকেই যোগ দেয়। আবু জাহেল বিরোধিতা করে। তখন মহানবী (সা.)-এর পক্ষ থেকে সংবাদ নিয়ে চাচা আবু তালিবও কাবাচত্বরে উপস্থিত হন। ওহির মাধ্যমে মহানবী (সা.) জানতে পারেন যে, চুক্তিনামাটি আল্লাহর আদেশে পোকায় খেয়ে ফেলেছে এবং শুধু আল্লাহর নামের অংশ অবশিষ্ট আছে। আবু তালিব বলেন, ‘যদি তাঁর কথা মিথ্যা প্রমাণিত হয়, তাহলে তাঁর ও আপনাদের মধ্য থেকে আমি সরে দাঁড়াব। তখন আপনাদের যা ইচ্ছে করবেন। কিন্তু যদি সত্য প্রমাণিত হয়, তাহলে বয়কট তুলে নিতে হবে।’ এ কথায় কুরাইশেরা বললেন, ‘আপনি ইনসাফের কথাই বলছেন।’
পরে চুক্তিপত্র নামিয়ে দেখা গেল, সত্যি সত্যিই এক প্রকার কীট চুক্তিনামার লেখা সম্পূর্ণ নষ্ট করে দিয়েছে। শুধু ‘বিসমিকা আল্লাহুম্মা’ কথাটি অবশিষ্ট রয়েছে এবং যেখানে যেখানে আল্লাহর নাম লেখা ছিল শুধু সেই লেখাই বাকি রয়েছে। কীট সেগুলো খায়নি। ফলে চুক্তিনামাটি ছিঁড়ে বয়কটের অবসানের ঘোষণা দেওয়া হয়।
মহানবী (সা.)-এর এই মোজেজা দেখে প্রতিবারের মতো এবারও মুশরিকেরা মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং হেদায়ত থেকে বঞ্চিত হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা তাদের বৈশিষ্ট্য বয়ান করে বলেন, ‘কিন্তু তারা যখন কোনো নিদর্শন দেখে, তখন মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং বলে, এ তো সেই আগে থেকে চলে আসা জাদু।’ (সুরা কামার: ২)
সূত্র
১. বুখারি: ১ / ৫৫৮।
২. জাদুল মাআদ: ২ / ৪৬।
৩. ইবনে হিশাম: ১ / ৩৫০-৩৫১ ও ৩৭৪-৩৭৭।
৪. রাহমাতুল্লিল আলামীন: ১ / ৬৯-৭০।
৫. মুখতাসারুস সিরাহ: ১০৬-১১০।

৬১৬ খ্রিষ্টাব্দ। মহানবী (সা.)-এর নবুয়তপ্রাপ্তির ষষ্ঠ বছর। মক্কায় তিনি দাওয়াতের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে হামজা (রা.), ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.)–সহ মক্কার প্রভাবশালী কয়েকজন নেতা ইসলাম গ্রহণ করেছেন। ফলে মহানবী (সা.) প্রকাশ্যে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে যাচ্ছেন।
অন্যদিকে মক্কার মুশরিকদের ক্রোধ ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছিল। ইসলাম গ্রহণকারী সাহাবিদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালানোর পাশাপাশি মহানবী (সা.)-কে থামানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছিল। অর্থবিত্ত, পদমর্যাদা, সুন্দরী নারী—কিসের লোভ দেখানো হয়নি তাঁকে! তবে তিনি টলেননি। অন্যদিকে গোত্র বনি হাশেম ও বনি মুত্তালিবকেও মহানবী (সা.)-এর সাহায্য থেকে বিরত রাখতে পারছিল না মক্কার মুশরিকেরা। ফলে তারা এ দুই গোত্রসহ মুহাম্মদ (সা.)-কে বয়কট করার ফন্দি আঁটে। ইসলামের ইতিহাসে যা ‘শিআবে আবি তালিবের বয়কট’ নামে পরিচিত।
বয়কটের চুক্তিনামা
মক্কার মুশরিকেরা মুহাসসাব উপত্যকায় বনি কিনানার এক তাঁবুতে বৈঠক করে এবং সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নেয় যে, বনি হাশিম ও বনি মুত্তালিবের সঙ্গে বেচাকেনা, সামাজিক কার্যকলাপ, সব ধরনের আর্থিক লেনদেন এমনকি কুশল বিনিময়ও বন্ধ রাখা হবে। কেউ তাদের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবে না। ওঠাবসা, কথোপকথন, মেলামেশা, বাড়িতে যাতায়াত সবকিছুই বন্ধ রাখা হবে। হত্যার জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে যতদিন তাদের হাতে সমর্পণ করা হবে না, ততদিন এ নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। বৈঠকে সবার কাছ থেকে অঙ্গীকার নেওয়া হয় যে, তারা কখনো বনু হাশিমের পক্ষ থেকে কোনো সন্ধিচুক্তির প্রস্তাব গ্রহণ করবে না এবং তাদের প্রতি কোনো প্রকার ভদ্রতা বা শিষ্টাচার দেখাবে না।
মহানবী (সা.)-এর চাচা আবু তালিব এ চুক্তির প্রস্তাব নাকচ করেন এবং জবাবে ঘোষণা করেন, ‘এ মসজিদের (কাবা শরিফ) মালিকের শপথ, আহমদকে আমরা কখনোই তাদের হাতে অর্পণ করব না। সকল ভয়াবহতা নিয়ে কালনাগিনী দংশন করলেও নয়।’
চুক্তিপত্রটি কাবা শরিফের দেয়ালে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। আবু লাহাব ছাড়া বনি হাশিম ও বনি মুত্তালিবের কাফির-মুসলিম সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এবং কাবার পাশে শিআবে আবি তালিব নামের এক গিরিখাদে আশ্রয় নেয়। নবুয়তের সপ্তম বর্ষের মহররম মাসে এই চুক্তি কার্যকর হয়। ফলে মহানবী (সা.) নিজের গোত্রসহ এক কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়েন। বিপদের পাহাড় নেমে আসে মহানবী (সা.)-এর অনুসারী ও হিতাকাঙ্ক্ষীদের ওপর। এই বয়কটের ডাকে মহানবী (সা.) বেশ কষ্ট পেয়েছিলেন। বয়কটের চুক্তিনামার লেখক বোগায়েজ ইবনে আমির ইবনে হাশিমকে তিনি বদদোয়াও দিয়েছিলেন। পরে তাঁর হাত অবশ হয়ে যায় বলেও ইতিহাস থেকে জানা যায়।
তিন বছরের অবরুদ্ধ সময়
বয়কটের কারণে বনি হাশিম ও বনি মুত্তালিবের লোকজনের অবস্থা অত্যন্ত সঙ্গিন হয়ে পড়ে। খাবার, নিত্যপণ্য এমনকি পানি সরবরাহও বন্ধ হয়ে যায়। মক্কার বাইরে থেকে যেসব পণ্যসামগ্রী আসত, তা মুশরিকেরা দ্রুতই কিনে নিত। ফলে অবরুদ্ধদের অবস্থা ক্রমেই করুণ হতে শুরু করে। খাদ্যাভাবে তাঁরা গাছের পাতা, ছাল-বাকল ও শুকনো চামড়া খেতে বাধ্য হন। সাহাবিদের বর্ণনায় এসেছে, ‘এ সময় আমরা গাছের পাতা সিদ্ধ করে ক্ষুধার জ্বালা নিবারণ করতাম। পানির অভাবে এবং গাছের পাতা খাওয়ার কারণে আমাদের পায়খানা ছাগলের পায়খানার মতো হয়ে গিয়েছিল।’
ক্ষুধার তাড়নায় অস্থির শিশু ও নারীদের আর্তচিৎকার শিআবে আবি তালিবের বাইরে থেকেও শোনা যেত। তবে মক্কাবাসীর পাথর হৃদয় একটুও বিচলিত হতো না। বিভিন্ন রোগও ছড়িয়ে পড়েছিল। বেশির ভাগ মানুষই মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেলেও তাঁরা ধৈর্য ও অবিচলতার পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করেন। তাঁদের মধ্যে একজনও আত্মসমর্পণ করেননি। এভাবেই দীর্ঘ তিন বছর চলে যায়।
এ সময় মহানবী (সা.)-এর হিতাকাঙ্ক্ষী সচ্ছল ও সামর্থ্যবান ব্যক্তিরা নিজেদের সব সম্পদ ব্যয় করে ফেলেন। খাদিজা (রা.) তাঁর সম্পূর্ণ অর্থ ব্যয় করেন। অতি গোপনে কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আসত, তা সবাই মিলে খেতেন। রজব, জিলকদ, জিলহজ ও মহররম মাস ছাড়া অন্য সময়ে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহের উদ্দেশ্যে তাঁরা গিরির বাইরে যেতে পারতেন না। খাদিজা (রা.)-এর ভাতিজা হাকিম ইবনে হিজাম কখনো কখনো তাঁর ফুফুর জন্য গম পাঠিয়ে দিতেন।
চাচা আবু তালিব রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নিরাপত্তা নিয়ে খুব চিন্তিত ছিলেন। নিরাপত্তার জন্য প্রতি রাতেই মহানবী (সা.)-এর শয্যা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে রাখা হতো। মহানবী (সা.)-এর বিছানায় থাকত অন্য কেউ। তবে বয়কট-অবরোধ সত্ত্বেও হজের সময় মহানবী (সা.)–সহ অন্য মুসলমানেরা বাইরে আসতেন এবং হজে আসা লোকজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ইসলামের দাওয়াত দিতেন। এ সময় মহানবী (সা.)-এর চাচা আবু লাহাব ও আবু জাহেল মুসলমানদের ওপর অবর্ণনীয় নির্যাতন চালায়।
চুক্তিনামা যেভাবে নষ্ট হয়
নবুয়তের দশম বছর মহররম মাসে মহানবী (সা.)-এর জীবনের এই সংকটময় সময়ের অবসান ঘটে। হিশাম ইবনে আমর নামের এক ব্যক্তি শিআবে আবি তালিবে গোপনে খাদ্য পাঠাতেন। তিনিই বয়কট অবসানের উদ্যোগ নেন। কুরাইশের গণ্যমান্য ব্যক্তি যুহাইর, জামআ ইবনে আসওয়াদ, মুতইম ইবনে আদির সঙ্গে মিলে হিশাম কাবার দেয়ালে ঝুলানো চুক্তিনামা ছিঁড়ে ফেলে অবরোধ অবসানের পরিকল্পনা করেন।
পরদিন কাবাপ্রাঙ্গণে এসে যুহাইর অবরুদ্ধদের নির্যাতিত হওয়ার কথা তুলে ধরেন এবং অবরোধের অবসান ঘটনোর আহ্বান জানান। তাঁর সঙ্গে অনেকেই যোগ দেয়। আবু জাহেল বিরোধিতা করে। তখন মহানবী (সা.)-এর পক্ষ থেকে সংবাদ নিয়ে চাচা আবু তালিবও কাবাচত্বরে উপস্থিত হন। ওহির মাধ্যমে মহানবী (সা.) জানতে পারেন যে, চুক্তিনামাটি আল্লাহর আদেশে পোকায় খেয়ে ফেলেছে এবং শুধু আল্লাহর নামের অংশ অবশিষ্ট আছে। আবু তালিব বলেন, ‘যদি তাঁর কথা মিথ্যা প্রমাণিত হয়, তাহলে তাঁর ও আপনাদের মধ্য থেকে আমি সরে দাঁড়াব। তখন আপনাদের যা ইচ্ছে করবেন। কিন্তু যদি সত্য প্রমাণিত হয়, তাহলে বয়কট তুলে নিতে হবে।’ এ কথায় কুরাইশেরা বললেন, ‘আপনি ইনসাফের কথাই বলছেন।’
পরে চুক্তিপত্র নামিয়ে দেখা গেল, সত্যি সত্যিই এক প্রকার কীট চুক্তিনামার লেখা সম্পূর্ণ নষ্ট করে দিয়েছে। শুধু ‘বিসমিকা আল্লাহুম্মা’ কথাটি অবশিষ্ট রয়েছে এবং যেখানে যেখানে আল্লাহর নাম লেখা ছিল শুধু সেই লেখাই বাকি রয়েছে। কীট সেগুলো খায়নি। ফলে চুক্তিনামাটি ছিঁড়ে বয়কটের অবসানের ঘোষণা দেওয়া হয়।
মহানবী (সা.)-এর এই মোজেজা দেখে প্রতিবারের মতো এবারও মুশরিকেরা মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং হেদায়ত থেকে বঞ্চিত হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা তাদের বৈশিষ্ট্য বয়ান করে বলেন, ‘কিন্তু তারা যখন কোনো নিদর্শন দেখে, তখন মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং বলে, এ তো সেই আগে থেকে চলে আসা জাদু।’ (সুরা কামার: ২)
সূত্র
১. বুখারি: ১ / ৫৫৮।
২. জাদুল মাআদ: ২ / ৪৬।
৩. ইবনে হিশাম: ১ / ৩৫০-৩৫১ ও ৩৭৪-৩৭৭।
৪. রাহমাতুল্লিল আলামীন: ১ / ৬৯-৭০।
৫. মুখতাসারুস সিরাহ: ১০৬-১১০।

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৪ ঘণ্টা আগে
ভুল করা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। জীবন চলার পথে ছোট-বড় ভুল সবারই হয়। কিন্তু সে ভুলকে কীভাবে সংশোধন করতে হবে, তা মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ হজরত মুহাম্মদ (সা.) শিখিয়ে গেছেন। তিনি ভুলকে লজ্জা বা অপমানের কারণ হিসেবে দেখেননি; বরং এটিকে ইতিবাচক পরিবর্তনের একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
২১ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগে
হাফেজ আনাস রাজধানীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার ছাত্র। তাঁর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের লোপাড়া গ্রামে। এর আগেও হাফেজ আনাস বিন আতিক সৌদি আরব ও লিবিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছিলেন।
২ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ১১ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ১২ মিনিট | ০৬: ৩১ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৫৪ মিনিট | ০৩: ৩৭ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৩৮ মিনিট | ০৫: ১২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৪ মিনিট | ০৬: ৩৩ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৪ মিনিট | ০৫: ১১ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ১১ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ১২ মিনিট | ০৬: ৩১ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৫৪ মিনিট | ০৩: ৩৭ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৩৮ মিনিট | ০৫: ১২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৪ মিনিট | ০৬: ৩৩ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৪ মিনিট | ০৫: ১১ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

ইসলাম গ্রহণকারী সাহাবিদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালানোর পাশাপাশি মহানবী (সা.)-কে থামানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছিল। অর্থবিত্ত, পদমর্যাদা, সুন্দরী নারী—কিসের লোভ দেখানো হয়নি তাঁকে! তবে তিনি টলেননি।
০৫ ডিসেম্বর ২০২২
ভুল করা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। জীবন চলার পথে ছোট-বড় ভুল সবারই হয়। কিন্তু সে ভুলকে কীভাবে সংশোধন করতে হবে, তা মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ হজরত মুহাম্মদ (সা.) শিখিয়ে গেছেন। তিনি ভুলকে লজ্জা বা অপমানের কারণ হিসেবে দেখেননি; বরং এটিকে ইতিবাচক পরিবর্তনের একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
২১ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগে
হাফেজ আনাস রাজধানীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার ছাত্র। তাঁর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের লোপাড়া গ্রামে। এর আগেও হাফেজ আনাস বিন আতিক সৌদি আরব ও লিবিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছিলেন।
২ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

ভুল করা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। জীবন চলার পথে ছোট-বড় ভুল সবারই হয়। কিন্তু সে ভুলকে কীভাবে সংশোধন করতে হবে, তা মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ হজরত মুহাম্মদ (সা.) শিখিয়ে গেছেন। তিনি ভুলকে লজ্জা বা অপমানের কারণ হিসেবে দেখেননি; বরং এটিকে ইতিবাচক পরিবর্তনের একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছেন। মহানবী (সা.) কঠোরতা নয়, বরং ভদ্রতা, কোমলতা, সহানুভূতি এবং সৃজনশীলতার মাধ্যমে মানুষের ভুলত্রুটি শুধরেছেন।
ভুল সংশোধনে তাঁর প্রথম কৌশল ছিল কৌশলগত নীরবতা এবং ইঙ্গিতপূর্ণ আচরণ। তিনি সরাসরি সমালোচনা না করে এমনভাবে আচরণ করতেন, যেন ভুলকারী নিজেই নিজের ভুল বুঝতে পারে। একবার সাহাবিদের কোনো কাজে ভুল দেখতে পেলে তিনি তাঁদের ছেড়ে অন্য পথে হেঁটেছেন, যা দেখে তাঁরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। আবার কখনো কখনো, বিশেষ করে যখন ভুলটি গুরুতর হতো, তখন তিনি কথার পুনরাবৃত্তি করে এর গুরুত্ব বোঝাতেন। তাঁর আরেকটি অসাধারণ পদ্ধতি ছিল দুর্বল ও অসহায়দের প্রতি কোমল আচরণ। একইভাবে, তিনি মানুষকে আল্লাহর ক্ষমতা ও করুণার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ভুল থেকে ফিরিয়ে আনতেন।
মানুষের মর্যাদা রক্ষা ছিল তাঁর ভুল সংশোধনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক। তিনি কখনো জনসমক্ষে কাউকে লজ্জা দিতেন না। তাই অনেক সময় তিনি বলতেন, ‘লোকদের কী হয়েছে যে তারা এমন এমন কাজ করছে!’ এভাবে তিনি ব্যক্তির পরিচয় গোপন রেখে সাধারণ ভুলকারীদের সতর্ক করতেন। এমনকি যারা বারবার একই ভুল করত, তাদেরও তিনি তিরস্কারের পরিবর্তে ভালোবাসা ও দোয়া করতেন। তাঁর এই সহানুভূতিশীল পদ্ধতি প্রমাণ করে, ভুল শুধরানোর মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তিকে পরিশুদ্ধ করা, অপমান করা নয়।
রাসুল (সা.)-এর এ কৌশলগুলো আমাদের শেখায়, ভুল সংশোধন একটি শিল্প, যেখানে ভালোবাসা, সহমর্মিতা এবং সম্মানই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু একটি ত্রুটি দূর করার বিষয় নয়; বরং ব্যক্তির অন্তরকে আলোকময় করে তোলার এক মহৎ প্রক্রিয়া।

ভুল করা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। জীবন চলার পথে ছোট-বড় ভুল সবারই হয়। কিন্তু সে ভুলকে কীভাবে সংশোধন করতে হবে, তা মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ হজরত মুহাম্মদ (সা.) শিখিয়ে গেছেন। তিনি ভুলকে লজ্জা বা অপমানের কারণ হিসেবে দেখেননি; বরং এটিকে ইতিবাচক পরিবর্তনের একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছেন। মহানবী (সা.) কঠোরতা নয়, বরং ভদ্রতা, কোমলতা, সহানুভূতি এবং সৃজনশীলতার মাধ্যমে মানুষের ভুলত্রুটি শুধরেছেন।
ভুল সংশোধনে তাঁর প্রথম কৌশল ছিল কৌশলগত নীরবতা এবং ইঙ্গিতপূর্ণ আচরণ। তিনি সরাসরি সমালোচনা না করে এমনভাবে আচরণ করতেন, যেন ভুলকারী নিজেই নিজের ভুল বুঝতে পারে। একবার সাহাবিদের কোনো কাজে ভুল দেখতে পেলে তিনি তাঁদের ছেড়ে অন্য পথে হেঁটেছেন, যা দেখে তাঁরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। আবার কখনো কখনো, বিশেষ করে যখন ভুলটি গুরুতর হতো, তখন তিনি কথার পুনরাবৃত্তি করে এর গুরুত্ব বোঝাতেন। তাঁর আরেকটি অসাধারণ পদ্ধতি ছিল দুর্বল ও অসহায়দের প্রতি কোমল আচরণ। একইভাবে, তিনি মানুষকে আল্লাহর ক্ষমতা ও করুণার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ভুল থেকে ফিরিয়ে আনতেন।
মানুষের মর্যাদা রক্ষা ছিল তাঁর ভুল সংশোধনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক। তিনি কখনো জনসমক্ষে কাউকে লজ্জা দিতেন না। তাই অনেক সময় তিনি বলতেন, ‘লোকদের কী হয়েছে যে তারা এমন এমন কাজ করছে!’ এভাবে তিনি ব্যক্তির পরিচয় গোপন রেখে সাধারণ ভুলকারীদের সতর্ক করতেন। এমনকি যারা বারবার একই ভুল করত, তাদেরও তিনি তিরস্কারের পরিবর্তে ভালোবাসা ও দোয়া করতেন। তাঁর এই সহানুভূতিশীল পদ্ধতি প্রমাণ করে, ভুল শুধরানোর মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তিকে পরিশুদ্ধ করা, অপমান করা নয়।
রাসুল (সা.)-এর এ কৌশলগুলো আমাদের শেখায়, ভুল সংশোধন একটি শিল্প, যেখানে ভালোবাসা, সহমর্মিতা এবং সম্মানই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু একটি ত্রুটি দূর করার বিষয় নয়; বরং ব্যক্তির অন্তরকে আলোকময় করে তোলার এক মহৎ প্রক্রিয়া।

ইসলাম গ্রহণকারী সাহাবিদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালানোর পাশাপাশি মহানবী (সা.)-কে থামানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছিল। অর্থবিত্ত, পদমর্যাদা, সুন্দরী নারী—কিসের লোভ দেখানো হয়নি তাঁকে! তবে তিনি টলেননি।
০৫ ডিসেম্বর ২০২২
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৪ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগে
হাফেজ আনাস রাজধানীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার ছাত্র। তাঁর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের লোপাড়া গ্রামে। এর আগেও হাফেজ আনাস বিন আতিক সৌদি আরব ও লিবিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছিলেন।
২ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ১০ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ১১ মিনিট | ০৬: ৩০ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৫৩ মিনিট | ০৩: ৩৬ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৩৭ মিনিট | ০৫: ১২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৪ মিনিট | ০৬: ৩৩ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৪ মিনিট | ০৫: ১০ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ১০ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ১১ মিনিট | ০৬: ৩০ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৫৩ মিনিট | ০৩: ৩৬ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৩৭ মিনিট | ০৫: ১২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৪ মিনিট | ০৬: ৩৩ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৪ মিনিট | ০৫: ১০ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

ইসলাম গ্রহণকারী সাহাবিদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালানোর পাশাপাশি মহানবী (সা.)-কে থামানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছিল। অর্থবিত্ত, পদমর্যাদা, সুন্দরী নারী—কিসের লোভ দেখানো হয়নি তাঁকে! তবে তিনি টলেননি।
০৫ ডিসেম্বর ২০২২
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৪ ঘণ্টা আগে
ভুল করা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। জীবন চলার পথে ছোট-বড় ভুল সবারই হয়। কিন্তু সে ভুলকে কীভাবে সংশোধন করতে হবে, তা মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ হজরত মুহাম্মদ (সা.) শিখিয়ে গেছেন। তিনি ভুলকে লজ্জা বা অপমানের কারণ হিসেবে দেখেননি; বরং এটিকে ইতিবাচক পরিবর্তনের একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
২১ ঘণ্টা আগে
হাফেজ আনাস রাজধানীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার ছাত্র। তাঁর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের লোপাড়া গ্রামে। এর আগেও হাফেজ আনাস বিন আতিক সৌদি আরব ও লিবিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছিলেন।
২ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

মিসরের রাজধানী কায়রোতে অনুষ্ঠিত ৩২তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হাফেজ আনাস বিন আতিককে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।
আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় প্রথমে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এর তাঁকে ছাদখোলা বাসে ঢাকার রাজপথে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

এ সময় বিশ্বজয়ী হাফেজ আনাস তাঁর অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘আমরা যে দেশের ক্বারীদের তিলাওয়াত শুনে কেরাত শিখি, সে দেশের প্রতিযোগিতায় আমার এই অর্জন সত্যিই অনেক আনন্দের। কেরাতের রাজধানীখ্যাত মিসরে গিয়ে এ বিজয় অর্জন বেশ কঠিন ছিল। তবে আমার ওস্তাদ, মা-বাবা এবং দেশের মানুষের দোয়ায় তা সম্ভব হয়েছে।’
হাফেজ আনাসের ওস্তাদ শায়খ নেছার আহমদ আন নাছিরী বলেন, ‘তৃতীয়বারের মতো আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় বিশ্ব জয় করেছে আমার প্রিয় ছাত্র হাফেজ আনাস। সে বারবার বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করছে। এবার মিসরের রাজধানী কায়রোতে অনুষ্ঠিত ৩২তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে সে আবারও সবাইকে অবাক করে দিয়েছে।’

শায়খ নেছার আহমদ আন নাছিরী জানান, গত শনিবার (৭ ডিসেম্বর) কায়রোতে আনুষ্ঠানিকভাবে ৩২তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতার উদ্বোধন হয়। চার দিনব্যাপী এই আয়োজনে বিশ্বের ৭০টি দেশের প্রতিযোগীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রথম হয় বাংলাদেশ।
নেছার আহমদ আরও জানান, হাফেজ আনাস বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত জাতীয় বাছাইপর্বে প্রথম স্থান অর্জন করে এই বৈশ্বিক মঞ্চে অংশগ্রহণের যোগ্যতা লাভ করেন।
প্রসঙ্গত, হাফেজ আনাস রাজধানীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার ছাত্র। তাঁর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের লোপাড়া গ্রামে। এর আগেও হাফেজ আনাস বিন আতিক সৌদি আরব ও লিবিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছিলেন।

মিসরের রাজধানী কায়রোতে অনুষ্ঠিত ৩২তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হাফেজ আনাস বিন আতিককে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।
আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় প্রথমে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এর তাঁকে ছাদখোলা বাসে ঢাকার রাজপথে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

এ সময় বিশ্বজয়ী হাফেজ আনাস তাঁর অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘আমরা যে দেশের ক্বারীদের তিলাওয়াত শুনে কেরাত শিখি, সে দেশের প্রতিযোগিতায় আমার এই অর্জন সত্যিই অনেক আনন্দের। কেরাতের রাজধানীখ্যাত মিসরে গিয়ে এ বিজয় অর্জন বেশ কঠিন ছিল। তবে আমার ওস্তাদ, মা-বাবা এবং দেশের মানুষের দোয়ায় তা সম্ভব হয়েছে।’
হাফেজ আনাসের ওস্তাদ শায়খ নেছার আহমদ আন নাছিরী বলেন, ‘তৃতীয়বারের মতো আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় বিশ্ব জয় করেছে আমার প্রিয় ছাত্র হাফেজ আনাস। সে বারবার বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করছে। এবার মিসরের রাজধানী কায়রোতে অনুষ্ঠিত ৩২তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে সে আবারও সবাইকে অবাক করে দিয়েছে।’

শায়খ নেছার আহমদ আন নাছিরী জানান, গত শনিবার (৭ ডিসেম্বর) কায়রোতে আনুষ্ঠানিকভাবে ৩২তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতার উদ্বোধন হয়। চার দিনব্যাপী এই আয়োজনে বিশ্বের ৭০টি দেশের প্রতিযোগীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রথম হয় বাংলাদেশ।
নেছার আহমদ আরও জানান, হাফেজ আনাস বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত জাতীয় বাছাইপর্বে প্রথম স্থান অর্জন করে এই বৈশ্বিক মঞ্চে অংশগ্রহণের যোগ্যতা লাভ করেন।
প্রসঙ্গত, হাফেজ আনাস রাজধানীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার ছাত্র। তাঁর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের লোপাড়া গ্রামে। এর আগেও হাফেজ আনাস বিন আতিক সৌদি আরব ও লিবিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছিলেন।

ইসলাম গ্রহণকারী সাহাবিদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালানোর পাশাপাশি মহানবী (সা.)-কে থামানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছিল। অর্থবিত্ত, পদমর্যাদা, সুন্দরী নারী—কিসের লোভ দেখানো হয়নি তাঁকে! তবে তিনি টলেননি।
০৫ ডিসেম্বর ২০২২
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৪ ঘণ্টা আগে
ভুল করা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। জীবন চলার পথে ছোট-বড় ভুল সবারই হয়। কিন্তু সে ভুলকে কীভাবে সংশোধন করতে হবে, তা মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ হজরত মুহাম্মদ (সা.) শিখিয়ে গেছেন। তিনি ভুলকে লজ্জা বা অপমানের কারণ হিসেবে দেখেননি; বরং এটিকে ইতিবাচক পরিবর্তনের একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
২১ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগে