ইসলাম ডেস্ক

চলতি বছরের মার্চে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে আব্রাহামিক ফ্যামিলি হাউস নামের একটি জৌলুশপূর্ণ কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করা হয়। তিনটি প্রসিদ্ধ আব্রাহামিক ধর্মের (ইসলাম, ইহুদি ও খ্রিষ্টান) তিনটি আইকনিক উপাসনালয় নিয়ে নির্মিত কমপ্লেক্সটি এরই মধ্যে আন্তধর্মীয় সংলাপ ও সম্প্রীতির বৈশ্বিক কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। ধর্মীয় স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখেই কীভাবে একজন মসজিদের ইমাম, গির্জার বিশপ ও সিনাগগের রাব্বি একসঙ্গে চলতে পারেন—তা মানুষের সামনে তুলে ধরাই কমপ্লেক্সটি প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য। যদিও এ নিয়ে অনেকে আপত্তিও জানাচ্ছেন।
স্থাপত্যে ধর্মীয় সহাবস্থানের বার্তা
আব্রাহামিক ফ্যামিলি হাউস আবুধাবির সাদিয়াত সাংস্কৃতিক জেলায় অবস্থিত। এর পাশেই রয়েছে বিখ্যাত ল্যুভর মিউজিয়ামের আবুধাবি শাখা, জায়েদ ন্যাশনাল মিউজিয়ামসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।
ধর্মীয় সহিষ্ণুতা ছড়িয়ে দিতে ২০১৯ সালে এই কমপ্লেক্সের নির্মাণকাজ শুরু করে সংযুক্ত আরব আমিরাত। ভিত্তিফলকে দেশটির প্রেসিডেন্ট শেখ মুহাম্মদ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ান, দুবাইয়ের শাসক শেখ মুহাম্মদ বিন রশিদ, পোপ ফ্রান্সিস ও কায়রোর আল-আজহার গ্র্যান্ড মসজিদের ইমাম আহমেদ আল-তাইয়েবের স্বাক্ষর রয়েছে।
ঘানা বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ স্থপতি স্যার ডেভিড অ্যাডজায়ে আব্রাহামিক ফ্যামিলি হাউসের নান্দনিক নকশাটি তৈরি করেন। যথেষ্ট প্রাকৃতিক আলো-বাতাসের ব্যবস্থাসহ কমপ্লেক্সের নকশা সম্পর্কে তিনি বলেছেন, ‘মানুষের জীবনে সমৃদ্ধি আনাই আমার নকশার উদ্দেশ্য। এই স্থাপনায় বিচরণের মাধ্যমে সব ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের প্রয়োজনীয় দিকগুলো শিখবে।’
আব্রাহামিক ফ্যামিলি হাউসে তিনটি অত্যাধুনিক উপাসনালয় রয়েছে। প্রতিটিরই দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা ৩০ মিটার। কমপ্লেক্সের ভেতরের প্রতিটি লেখা তিনটি ভাষায়—আরবি, ইংরেজি ও হিব্রু।
এ ছাড়া প্রতিটি উপাসনালয়ের পাশেই রয়েছে পবিত্র হওয়ার ব্যবস্থা। গির্জার পাশে ব্যাপটিস্ট্রি, সিনাগগের পাশে মিকভা এবং মসজিদের পাশে অজুখানা। পুরো কমপ্লেক্সেই রয়েছে ত্রিভুজ আকৃতির ছোট-শান্ত হ্রদ, যা তিন ধর্মের সহাবস্থানকে উপস্থাপন করে।
চুনাপাথরের তৈরি ভবনগুলোর সামনের দিকে নকশা প্রতিটি ধর্মের স্বতন্ত্র বিশ্বাসের প্রতিনিধিত্ব করে। ক্যাথলিক গির্জাটির নাম রাখা হয়েছে হোলিনেস ফ্রান্সিস চার্চ। সোজাসুজি অনেকগুলো কলাম দিয়ে বাইরের নকশা করা হয়েছে। এতে একসঙ্গে ৩০০ জন বসার ব্যবস্থা রয়েছে।
মসজিদের নাম আহমেদ আল-তাইয়েব মসজিদ। এর সামনের দিকে রয়েছে সাতটি খিলান, যা ইসলামের একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যা। মসজিদে ৩২২ জন মুসল্লির একসঙ্গে নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে নারীদের নামাজের স্থানও।
সিনাগগের নাম রাখা হয়েছে ইহুদি দার্শনিক মোজেস বেন মাইমনের নামে। সিনাগগের দেয়ালে ইহুদি ধর্মের ১০ আদেশ (টেন কম্যানডেন্ট) লেখা হয়েছে। এর বাইরের নকশা ত্রিভুজ আকৃতির, যা হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর তাঁবু, নিরাপত্তা ও আতিথেয়তার প্রতীক।
তিন ধর্মকে এক করা উদ্দেশ্য নয়
তিনটি আব্রাহামিক ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে শান্তি ও সংলাপের বন্ধন তৈরি করার লক্ষ্য নিয়ে এই এটি নির্মিত। এই স্থাপত্য মোগল বাদশাহ আকবরে দিন-ই-ইলাহির মতো কিছুর সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। ২০১৯ সালে পোপ ফ্রান্সিস ও আল-আজহারের গ্র্যান্ড ইমাম আহমেদ আল-তাইয়েবের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর ফলে নির্মিত হয় আব্রাহামিক ফ্যামিলি হাউস। উদ্যোক্তারা বলেছেন, এর উদ্দেশ্য কোনোভাবেই তিন ধর্মকে এক করে ফেলা নয়। যদিও প্রথম দিকে অনেকেই এই বিষয়ে বিভ্রান্ত ছিলেন।
কমপ্লেক্সে অবস্থিত আহমেদ আল-তাইয়েব মসজিদের ইমাম মাহমুদ নাগাহ বলেন, ‘প্রথম যখন এই কমপ্লেক্স নির্মাণ শুরু হয়, তখন অনেকের মধ্যেই ভুল-বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছিল। তাঁরা মনে করেছিলেন, এটি তিন ধর্মকে এক করে আব্রাহামিক ধর্ম নামের একটি নতুন ধর্ম তৈরির মিশন।’
মাহমুদ নাগাহ আরও জানান, এই ভুল-বোঝাবুঝির অবসান ঘটাতে তিনি মানুষের সামনে বিষয়গুলো তুলে ধরেছিলেন। কীভাবে ধর্মীয় স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে পাশাপাশি ধর্মগুলো অবস্থান করতে পারে, তা ব্যাখ্যা করেছিলেন। তাঁর উদ্দেশ্য হলো, মুসলমানেরা যখন মসজিদে আসবেন, তখন যেন তাঁরা নিজে থেকেই বলেন—এটি তো আমিরাতের অন্য মসজিদগুলোর মতো একটি সাধারণ মসজিদই।
তিনটি উপাসনালয়ই আকারে আয়তনে সমান। মাহমুদ নাগাহ বলেন, ‘আমরা এখানে (মসজিদে) গির্জা ও সিনাগগ থেকে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্রভাবে কাজ করছি। তা সত্ত্বেও আমরা এক স্থানে জড়ো হই এবং আন্তধর্মীয় সংলাপে অংশ নিই। যে দিকগুলো আমাদের ধর্মে এক, সেসব বিষয়ে আমরা আলাপ করি।’
মাহমুদ আরও বলেন, ‘ধর্মগুলোকে মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির জন্য ব্যবহার করা উচিত নয়। বরং সবাইকে ঐক্যের সুতোয় গাঁথাই ধর্মীয় বিশ্বাসের লক্ষ্য হওয়া উচিত। আমি মনে করি, মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু অজ্ঞতা, যা মানুষে-মানুষে যোগাযোগ গড়ে তোলার প্রধান অন্তরায়।’
আমিরাতে ইহুদিদের ‘নতুন পথচলা’
২০২০ সালের সেপ্টেম্বরের শুরুতে, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মরক্কো ইসরায়েলের সঙ্গে মার্কিন মধ্যস্থতায় সম্পর্ক স্বাভাবিক করে। এর ফলে আমিরাতে ইসরায়েলের জন্য বাণিজ্য, কূটনীতি ও নিরাপত্তা সহযোগিতার দরজা খোলে। সম্পর্ক স্বাভাবিক করার এই প্রক্রিয়াকে বিশ্বের অনেক দেশ ও মুসলমানেরা স্বাভাবিকভাবে না নিলেও আমিরাতে ইহুদিদের আগমন ঠেকানো যায়নি।
আব্রাহামিক ফ্যামিলি হাউসের মোজেস বেন মাইমন সিনাগগের প্রধান রাব্বি ইয়াহুদা সারনা বলেন, ‘এটি উপসাগরীয় অঞ্চলে ১০০ বছরের মধ্যে প্রথম বিশেষ উদ্দেশ্যে নির্মিত সিনাগগ। আমিরাতে ইহুদিদের সংখ্যা বাড়ছে। কারণ এখানে মানুষ নিরাপদ বোধ করছে। বিলাসী জীবন পাচ্ছে।’
ইয়াহুদা সারনা আরও বলেন, ‘আমি ২০১০ সালে কানাডা থেকে আমিরাতে এসেছি। বিশ্বব্যাপী যখন ইহুদি-বিদ্বেষ বেড়েই চলেছে, তখন ইহুদিরা আমিরাতে নিরাপদ বোধ করছে। এখানে হলোকাস্ট থেকে বেঁচে ফেরাদের সন্তানেরা যেমন রয়েছে, তেমনি ইয়েমেনে হুতিদের হাতে নির্যাতিত ইহুদিরাও রয়েছে। সাদ্দামের আমলে ইরাক থেকে পালিয়ে আসা ইহুদি যেমন রয়েছে, ইরান থেকে চলে আসা ইহুদিও রয়েছে।’
ধর্মীয় সহাবস্থানের অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত
আব্রাহামিক ফ্যামিলি হাউসের প্রাথমিক সাফল্যে উচ্ছ্বসিত রাব্বি ইয়াহুদা সারনা বিশ্বের অন্যান্য দেশেও এমন প্রকল্প দেখতে চান, যেখানে শত মতপার্থক্য থাকার পরও সব ধর্মের অনুসারীরা সহাবস্থান করতে পারবে। আহমেদ আল-তাইয়েব মসজিদের ইমাম মাহমুদ নাগাহও তাঁর সঙ্গে একমত।
কমপ্লেক্সে অবস্থিত ফ্রান্সিস চার্চের প্রধান যাজক পাওলো মার্তিনেলি বলেন, ‘এখানে প্রার্থনা করতে একত্র হওয়া চমৎকার ব্যাপার। আমাদের বিশ্বাস স্পষ্টই আলাদা। তবে আমরা একই পরিসরে ভিন্ন ভিন্ন ধর্ম পালন করছি। আমরা বিশ্বকে দেখাতে চাই, বিশ্বাস আলাদা হলেও একসঙ্গে কাজ করা সম্ভব।’
পাওলো মার্তিনেলি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, এমন স্থাপনা পৃথিবীর যে কোনো স্থানেই ধর্মীয় সহাবস্থানের বার্তা ছড়িয়ে দেবে।’
আরব নিউজ থেকে সংক্ষিপ্ত অনুবাদ: ইজাজুল হক

চলতি বছরের মার্চে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে আব্রাহামিক ফ্যামিলি হাউস নামের একটি জৌলুশপূর্ণ কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করা হয়। তিনটি প্রসিদ্ধ আব্রাহামিক ধর্মের (ইসলাম, ইহুদি ও খ্রিষ্টান) তিনটি আইকনিক উপাসনালয় নিয়ে নির্মিত কমপ্লেক্সটি এরই মধ্যে আন্তধর্মীয় সংলাপ ও সম্প্রীতির বৈশ্বিক কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। ধর্মীয় স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখেই কীভাবে একজন মসজিদের ইমাম, গির্জার বিশপ ও সিনাগগের রাব্বি একসঙ্গে চলতে পারেন—তা মানুষের সামনে তুলে ধরাই কমপ্লেক্সটি প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য। যদিও এ নিয়ে অনেকে আপত্তিও জানাচ্ছেন।
স্থাপত্যে ধর্মীয় সহাবস্থানের বার্তা
আব্রাহামিক ফ্যামিলি হাউস আবুধাবির সাদিয়াত সাংস্কৃতিক জেলায় অবস্থিত। এর পাশেই রয়েছে বিখ্যাত ল্যুভর মিউজিয়ামের আবুধাবি শাখা, জায়েদ ন্যাশনাল মিউজিয়ামসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।
ধর্মীয় সহিষ্ণুতা ছড়িয়ে দিতে ২০১৯ সালে এই কমপ্লেক্সের নির্মাণকাজ শুরু করে সংযুক্ত আরব আমিরাত। ভিত্তিফলকে দেশটির প্রেসিডেন্ট শেখ মুহাম্মদ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ান, দুবাইয়ের শাসক শেখ মুহাম্মদ বিন রশিদ, পোপ ফ্রান্সিস ও কায়রোর আল-আজহার গ্র্যান্ড মসজিদের ইমাম আহমেদ আল-তাইয়েবের স্বাক্ষর রয়েছে।
ঘানা বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ স্থপতি স্যার ডেভিড অ্যাডজায়ে আব্রাহামিক ফ্যামিলি হাউসের নান্দনিক নকশাটি তৈরি করেন। যথেষ্ট প্রাকৃতিক আলো-বাতাসের ব্যবস্থাসহ কমপ্লেক্সের নকশা সম্পর্কে তিনি বলেছেন, ‘মানুষের জীবনে সমৃদ্ধি আনাই আমার নকশার উদ্দেশ্য। এই স্থাপনায় বিচরণের মাধ্যমে সব ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের প্রয়োজনীয় দিকগুলো শিখবে।’
আব্রাহামিক ফ্যামিলি হাউসে তিনটি অত্যাধুনিক উপাসনালয় রয়েছে। প্রতিটিরই দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা ৩০ মিটার। কমপ্লেক্সের ভেতরের প্রতিটি লেখা তিনটি ভাষায়—আরবি, ইংরেজি ও হিব্রু।
এ ছাড়া প্রতিটি উপাসনালয়ের পাশেই রয়েছে পবিত্র হওয়ার ব্যবস্থা। গির্জার পাশে ব্যাপটিস্ট্রি, সিনাগগের পাশে মিকভা এবং মসজিদের পাশে অজুখানা। পুরো কমপ্লেক্সেই রয়েছে ত্রিভুজ আকৃতির ছোট-শান্ত হ্রদ, যা তিন ধর্মের সহাবস্থানকে উপস্থাপন করে।
চুনাপাথরের তৈরি ভবনগুলোর সামনের দিকে নকশা প্রতিটি ধর্মের স্বতন্ত্র বিশ্বাসের প্রতিনিধিত্ব করে। ক্যাথলিক গির্জাটির নাম রাখা হয়েছে হোলিনেস ফ্রান্সিস চার্চ। সোজাসুজি অনেকগুলো কলাম দিয়ে বাইরের নকশা করা হয়েছে। এতে একসঙ্গে ৩০০ জন বসার ব্যবস্থা রয়েছে।
মসজিদের নাম আহমেদ আল-তাইয়েব মসজিদ। এর সামনের দিকে রয়েছে সাতটি খিলান, যা ইসলামের একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যা। মসজিদে ৩২২ জন মুসল্লির একসঙ্গে নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে নারীদের নামাজের স্থানও।
সিনাগগের নাম রাখা হয়েছে ইহুদি দার্শনিক মোজেস বেন মাইমনের নামে। সিনাগগের দেয়ালে ইহুদি ধর্মের ১০ আদেশ (টেন কম্যানডেন্ট) লেখা হয়েছে। এর বাইরের নকশা ত্রিভুজ আকৃতির, যা হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর তাঁবু, নিরাপত্তা ও আতিথেয়তার প্রতীক।
তিন ধর্মকে এক করা উদ্দেশ্য নয়
তিনটি আব্রাহামিক ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে শান্তি ও সংলাপের বন্ধন তৈরি করার লক্ষ্য নিয়ে এই এটি নির্মিত। এই স্থাপত্য মোগল বাদশাহ আকবরে দিন-ই-ইলাহির মতো কিছুর সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। ২০১৯ সালে পোপ ফ্রান্সিস ও আল-আজহারের গ্র্যান্ড ইমাম আহমেদ আল-তাইয়েবের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর ফলে নির্মিত হয় আব্রাহামিক ফ্যামিলি হাউস। উদ্যোক্তারা বলেছেন, এর উদ্দেশ্য কোনোভাবেই তিন ধর্মকে এক করে ফেলা নয়। যদিও প্রথম দিকে অনেকেই এই বিষয়ে বিভ্রান্ত ছিলেন।
কমপ্লেক্সে অবস্থিত আহমেদ আল-তাইয়েব মসজিদের ইমাম মাহমুদ নাগাহ বলেন, ‘প্রথম যখন এই কমপ্লেক্স নির্মাণ শুরু হয়, তখন অনেকের মধ্যেই ভুল-বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছিল। তাঁরা মনে করেছিলেন, এটি তিন ধর্মকে এক করে আব্রাহামিক ধর্ম নামের একটি নতুন ধর্ম তৈরির মিশন।’
মাহমুদ নাগাহ আরও জানান, এই ভুল-বোঝাবুঝির অবসান ঘটাতে তিনি মানুষের সামনে বিষয়গুলো তুলে ধরেছিলেন। কীভাবে ধর্মীয় স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে পাশাপাশি ধর্মগুলো অবস্থান করতে পারে, তা ব্যাখ্যা করেছিলেন। তাঁর উদ্দেশ্য হলো, মুসলমানেরা যখন মসজিদে আসবেন, তখন যেন তাঁরা নিজে থেকেই বলেন—এটি তো আমিরাতের অন্য মসজিদগুলোর মতো একটি সাধারণ মসজিদই।
তিনটি উপাসনালয়ই আকারে আয়তনে সমান। মাহমুদ নাগাহ বলেন, ‘আমরা এখানে (মসজিদে) গির্জা ও সিনাগগ থেকে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্রভাবে কাজ করছি। তা সত্ত্বেও আমরা এক স্থানে জড়ো হই এবং আন্তধর্মীয় সংলাপে অংশ নিই। যে দিকগুলো আমাদের ধর্মে এক, সেসব বিষয়ে আমরা আলাপ করি।’
মাহমুদ আরও বলেন, ‘ধর্মগুলোকে মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির জন্য ব্যবহার করা উচিত নয়। বরং সবাইকে ঐক্যের সুতোয় গাঁথাই ধর্মীয় বিশ্বাসের লক্ষ্য হওয়া উচিত। আমি মনে করি, মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু অজ্ঞতা, যা মানুষে-মানুষে যোগাযোগ গড়ে তোলার প্রধান অন্তরায়।’
আমিরাতে ইহুদিদের ‘নতুন পথচলা’
২০২০ সালের সেপ্টেম্বরের শুরুতে, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মরক্কো ইসরায়েলের সঙ্গে মার্কিন মধ্যস্থতায় সম্পর্ক স্বাভাবিক করে। এর ফলে আমিরাতে ইসরায়েলের জন্য বাণিজ্য, কূটনীতি ও নিরাপত্তা সহযোগিতার দরজা খোলে। সম্পর্ক স্বাভাবিক করার এই প্রক্রিয়াকে বিশ্বের অনেক দেশ ও মুসলমানেরা স্বাভাবিকভাবে না নিলেও আমিরাতে ইহুদিদের আগমন ঠেকানো যায়নি।
আব্রাহামিক ফ্যামিলি হাউসের মোজেস বেন মাইমন সিনাগগের প্রধান রাব্বি ইয়াহুদা সারনা বলেন, ‘এটি উপসাগরীয় অঞ্চলে ১০০ বছরের মধ্যে প্রথম বিশেষ উদ্দেশ্যে নির্মিত সিনাগগ। আমিরাতে ইহুদিদের সংখ্যা বাড়ছে। কারণ এখানে মানুষ নিরাপদ বোধ করছে। বিলাসী জীবন পাচ্ছে।’
ইয়াহুদা সারনা আরও বলেন, ‘আমি ২০১০ সালে কানাডা থেকে আমিরাতে এসেছি। বিশ্বব্যাপী যখন ইহুদি-বিদ্বেষ বেড়েই চলেছে, তখন ইহুদিরা আমিরাতে নিরাপদ বোধ করছে। এখানে হলোকাস্ট থেকে বেঁচে ফেরাদের সন্তানেরা যেমন রয়েছে, তেমনি ইয়েমেনে হুতিদের হাতে নির্যাতিত ইহুদিরাও রয়েছে। সাদ্দামের আমলে ইরাক থেকে পালিয়ে আসা ইহুদি যেমন রয়েছে, ইরান থেকে চলে আসা ইহুদিও রয়েছে।’
ধর্মীয় সহাবস্থানের অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত
আব্রাহামিক ফ্যামিলি হাউসের প্রাথমিক সাফল্যে উচ্ছ্বসিত রাব্বি ইয়াহুদা সারনা বিশ্বের অন্যান্য দেশেও এমন প্রকল্প দেখতে চান, যেখানে শত মতপার্থক্য থাকার পরও সব ধর্মের অনুসারীরা সহাবস্থান করতে পারবে। আহমেদ আল-তাইয়েব মসজিদের ইমাম মাহমুদ নাগাহও তাঁর সঙ্গে একমত।
কমপ্লেক্সে অবস্থিত ফ্রান্সিস চার্চের প্রধান যাজক পাওলো মার্তিনেলি বলেন, ‘এখানে প্রার্থনা করতে একত্র হওয়া চমৎকার ব্যাপার। আমাদের বিশ্বাস স্পষ্টই আলাদা। তবে আমরা একই পরিসরে ভিন্ন ভিন্ন ধর্ম পালন করছি। আমরা বিশ্বকে দেখাতে চাই, বিশ্বাস আলাদা হলেও একসঙ্গে কাজ করা সম্ভব।’
পাওলো মার্তিনেলি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, এমন স্থাপনা পৃথিবীর যে কোনো স্থানেই ধর্মীয় সহাবস্থানের বার্তা ছড়িয়ে দেবে।’
আরব নিউজ থেকে সংক্ষিপ্ত অনুবাদ: ইজাজুল হক

আল্লাহর দেওয়া জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। যে সম্পদ যত বেশি মূল্যবান, তার ব্যবহার-প্রক্রিয়াও তত বেশি সুপরিকল্পিত হওয়া প্রয়োজন। সময় বহমান স্রোতের মতো, যাকে কখনো বেঁধে রাখা যায় না। তাই জীবনের এই মূল্যবান সময়গুলো অবহেলায় নষ্ট করা কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
২ ঘণ্টা আগে
জানাজার স্থানে যদি পর্দার খেলাপ কিংবা নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সেখানে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় না। জানাজার নামাজ যেহেতু নারীদের জন্য আবশ্যক নয়, তাই এতে অংশ নিতে গিয়ে কোনো ফরজ বিধান লঙ্ঘন করা বিধানসম্মত নয়।
৭ ঘণ্টা আগে
জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।
৯ ঘণ্টা আগে
মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।
১১ ঘণ্টা আগেশায়খ আহমাদুল্লাহ

আল্লাহর দেওয়া জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। যে সম্পদ যত বেশি মূল্যবান, তার ব্যবহার-প্রক্রিয়াও তত বেশি সুপরিকল্পিত হওয়া প্রয়োজন। সময় বহমান স্রোতের মতো, যাকে কখনো বেঁধে রাখা যায় না। তাই জীবনের এই মূল্যবান সময়গুলো অবহেলায় নষ্ট করা কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়। ইসলামি শরিয়তের নির্দেশনা হলো, মানুষের জীবন ও সময় আল্লাহর সন্তুষ্টির পথেই ব্যয় হওয়া উচিত। পরিতাপের বিষয় হলো, আমরা আমাদের এই ক্ষণস্থায়ী জীবনের সময়গুলোকে এমন সব আচার-অনুষ্ঠান ও বিজাতীয় উৎসবে খরচ করছি, যার ভেতর না আছে দুনিয়ার কল্যাণ, না আছে পরকালের মুক্তি। তেমনই একটি অনর্থক ও শরিয়ত বিবর্জিত উৎসবের নাম ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট’।
থার্টি ফার্স্ট নাইটের গোড়ার ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এর সঙ্গে পৌত্তলিকতা ও কুসংস্কারের নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। প্রাচীন পারস্যের সম্রাট জামশিদ খ্রিষ্টপূর্ব ৮০০ সালে এবং পরবর্তী সময়ে রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার খ্রিষ্টপূর্ব ৪৬ সালে নববর্ষের প্রচলন করেন। মূলত এটি ইংরেজি নববর্ষ নয়, খ্রিষ্টীয় বা গ্রেগরিয়ান নববর্ষ, যা পোপ গ্রেগরির নামানুসারে প্রবর্তিত। প্রাচীনকালে পারস্যের প্রকৃতি পূজারিরা বিশ্বাস করত, বছরের প্রথম দিন আনন্দ-ফুর্তিতে কাটালে সারা বছর ভালো থাকা যাবে। সেই কুসংস্কার আজও আধুনিক সমাজের তথাকথিত বিজ্ঞানমনস্ক মানুষের মধ্যে গেঁথে আছে। অথচ বছরের প্রথম দিন উল্লাস করলে সারা বছর ভালো যাবে—এর চেয়ে অযৌক্তিক ও হাস্যকর বিশ্বাস আর কী হতে পারে!
ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গিতে কোনো উৎসব পালন করতে হলে কোরআন-সুন্নাহ ও সাহাবায়ে কেরামের আমলের প্রামাণ্যতা প্রয়োজন। গবেষণায় দেখা যায়, নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর সপক্ষে ইসলামে কোনো দলিল নেই। রাসুলুল্লাহ (সা.) স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি যে জাতির সঙ্গে সাদৃশ্য রাখবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে।’ (সুনানে আবু দাউদ)। কোনো জাগতিক কাজ তখনই বৈধ হয়, যখন তা শরিয়তের বিধান লঙ্ঘন করে না এবং সৃষ্টির হক নষ্ট করে না। কিন্তু থার্টি ফার্স্ট নাইট উদ্যাপনে এই দুটি শর্তই চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়। এটি একদিকে যেমন বিজাতীয় সংস্কৃতির অন্ধ অনুকরণ, অন্যদিকে এর মাধ্যমে নাগরিক শান্তি ও মানুষের অধিকার ব্যাপকভাবে ক্ষুণ্ন করা হয়।
এই উৎসবের সামাজিক ও নৈতিক ক্ষতির দিকগুলো অত্যন্ত ভয়াবহ। প্রথমত, এতে বিপুল অর্থের অপচয় হয়। যে রাতে আতশবাজি, ফানুস ও ডিজে পার্টির নামে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হয়, সেই হাড়কাঁপানো শীতের রাতেই দেশের লাখো গরিব মানুষ এক টুকরো গরম কাপড়ের অভাবে কষ্ট পায়। অপচয়কারীকে পবিত্র কোরআনে শয়তানের ভাই হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত বিকট শব্দে আতশবাজি ও সাউন্ডবক্স ব্যবহারের ফলে জনস্বাস্থ্যের বিপর্যয় ঘটে। শহরের ফ্ল্যাটে থাকা বৃদ্ধ, শিশু ও অসুস্থ রোগীরা এই শব্দদূষণে চরম স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে পড়ে। এমনকি পটকার শব্দে শিশুর মৃত্যু কিংবা ফানুসের আগুনে দগ্ধ হওয়ার মতো মর্মান্তিক ঘটনাও প্রতিবছর আমাদের দেখতে হয়।
তদুপরি এই বিজাতীয় সংস্কৃতি আমাদের তরুণ প্রজন্মকে এক ভোগবাদী ও নৈতিকতাহীন পথে ঠেলে দিচ্ছে। মাদক, গান-বাজনা এবং নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশার মাধ্যমে অশ্লীলতার বিস্তার ঘটছে, যা ইসলামের সুমহান দর্শনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। ইসলাম আমাদের ত্যাগের উৎসব শিখিয়েছে, যেখানে ভোগের চেয়ে অপরের কল্যাণ ও গরিবের হক বেশি গুরুত্ব পায়। অথচ থার্টি ফার্স্ট নাইটের মতো উৎসবে আত্মকেন্দ্রিক ভোগবাদ ছাড়া আর কিছুই নেই। আমাদের নিজস্ব সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য থাকতে কেন আমরা অন্যের দেউলিয়া সংস্কৃতির দ্বারস্থ হচ্ছি, সেটি আজ এক বড় প্রশ্ন।
প্রকৃতপক্ষে নতুন বছর আসা মানেই নতুনের আগমন নয়, বরং জীবন থেকে একটি বছরের পাতা ঝরে যাওয়া। জীবনের বরফ প্রতিনিয়ত গলে যাচ্ছে। আমরা কি একবারও ভাবি, কবরের দিকে আমাদের পা আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল! একজন ফাঁসির আসামির কাছে যেমন প্রতিটি সূর্যোদয় মৃত্যুর নিকটবর্তী হওয়ার সংকেত, আমাদের জীবনও ঠিক তেমনি ফুরিয়ে আসছে। তাই থার্টি ফার্স্ট নাইটের রাতে নেশা ও উন্মাদনায় মত্ত না হয়ে বিগত জীবনের গুনাহের জন্য তওবা করা এবং আগামীর জন্য নেক পরিকল্পনা করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
সন্তান, পরিবার ও সমাজকে এই ভ্রান্ত সংস্কৃতি থেকে রক্ষা করা আমাদের ইমানি ও নাগরিক দায়িত্ব। আল্লাহ তাআলা আমাদের বিজাতীয় সংস্কৃতি পরিহার করে ইসলামি জীবনাদর্শ গ্রহণ করার তৌফিক দান করুন।
জুমার মিম্বর থেকে গ্রন্থনা: সাব্বির জাদিদ

আল্লাহর দেওয়া জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। যে সম্পদ যত বেশি মূল্যবান, তার ব্যবহার-প্রক্রিয়াও তত বেশি সুপরিকল্পিত হওয়া প্রয়োজন। সময় বহমান স্রোতের মতো, যাকে কখনো বেঁধে রাখা যায় না। তাই জীবনের এই মূল্যবান সময়গুলো অবহেলায় নষ্ট করা কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়। ইসলামি শরিয়তের নির্দেশনা হলো, মানুষের জীবন ও সময় আল্লাহর সন্তুষ্টির পথেই ব্যয় হওয়া উচিত। পরিতাপের বিষয় হলো, আমরা আমাদের এই ক্ষণস্থায়ী জীবনের সময়গুলোকে এমন সব আচার-অনুষ্ঠান ও বিজাতীয় উৎসবে খরচ করছি, যার ভেতর না আছে দুনিয়ার কল্যাণ, না আছে পরকালের মুক্তি। তেমনই একটি অনর্থক ও শরিয়ত বিবর্জিত উৎসবের নাম ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট’।
থার্টি ফার্স্ট নাইটের গোড়ার ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এর সঙ্গে পৌত্তলিকতা ও কুসংস্কারের নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। প্রাচীন পারস্যের সম্রাট জামশিদ খ্রিষ্টপূর্ব ৮০০ সালে এবং পরবর্তী সময়ে রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার খ্রিষ্টপূর্ব ৪৬ সালে নববর্ষের প্রচলন করেন। মূলত এটি ইংরেজি নববর্ষ নয়, খ্রিষ্টীয় বা গ্রেগরিয়ান নববর্ষ, যা পোপ গ্রেগরির নামানুসারে প্রবর্তিত। প্রাচীনকালে পারস্যের প্রকৃতি পূজারিরা বিশ্বাস করত, বছরের প্রথম দিন আনন্দ-ফুর্তিতে কাটালে সারা বছর ভালো থাকা যাবে। সেই কুসংস্কার আজও আধুনিক সমাজের তথাকথিত বিজ্ঞানমনস্ক মানুষের মধ্যে গেঁথে আছে। অথচ বছরের প্রথম দিন উল্লাস করলে সারা বছর ভালো যাবে—এর চেয়ে অযৌক্তিক ও হাস্যকর বিশ্বাস আর কী হতে পারে!
ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গিতে কোনো উৎসব পালন করতে হলে কোরআন-সুন্নাহ ও সাহাবায়ে কেরামের আমলের প্রামাণ্যতা প্রয়োজন। গবেষণায় দেখা যায়, নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর সপক্ষে ইসলামে কোনো দলিল নেই। রাসুলুল্লাহ (সা.) স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি যে জাতির সঙ্গে সাদৃশ্য রাখবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে।’ (সুনানে আবু দাউদ)। কোনো জাগতিক কাজ তখনই বৈধ হয়, যখন তা শরিয়তের বিধান লঙ্ঘন করে না এবং সৃষ্টির হক নষ্ট করে না। কিন্তু থার্টি ফার্স্ট নাইট উদ্যাপনে এই দুটি শর্তই চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়। এটি একদিকে যেমন বিজাতীয় সংস্কৃতির অন্ধ অনুকরণ, অন্যদিকে এর মাধ্যমে নাগরিক শান্তি ও মানুষের অধিকার ব্যাপকভাবে ক্ষুণ্ন করা হয়।
এই উৎসবের সামাজিক ও নৈতিক ক্ষতির দিকগুলো অত্যন্ত ভয়াবহ। প্রথমত, এতে বিপুল অর্থের অপচয় হয়। যে রাতে আতশবাজি, ফানুস ও ডিজে পার্টির নামে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হয়, সেই হাড়কাঁপানো শীতের রাতেই দেশের লাখো গরিব মানুষ এক টুকরো গরম কাপড়ের অভাবে কষ্ট পায়। অপচয়কারীকে পবিত্র কোরআনে শয়তানের ভাই হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত বিকট শব্দে আতশবাজি ও সাউন্ডবক্স ব্যবহারের ফলে জনস্বাস্থ্যের বিপর্যয় ঘটে। শহরের ফ্ল্যাটে থাকা বৃদ্ধ, শিশু ও অসুস্থ রোগীরা এই শব্দদূষণে চরম স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে পড়ে। এমনকি পটকার শব্দে শিশুর মৃত্যু কিংবা ফানুসের আগুনে দগ্ধ হওয়ার মতো মর্মান্তিক ঘটনাও প্রতিবছর আমাদের দেখতে হয়।
তদুপরি এই বিজাতীয় সংস্কৃতি আমাদের তরুণ প্রজন্মকে এক ভোগবাদী ও নৈতিকতাহীন পথে ঠেলে দিচ্ছে। মাদক, গান-বাজনা এবং নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশার মাধ্যমে অশ্লীলতার বিস্তার ঘটছে, যা ইসলামের সুমহান দর্শনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। ইসলাম আমাদের ত্যাগের উৎসব শিখিয়েছে, যেখানে ভোগের চেয়ে অপরের কল্যাণ ও গরিবের হক বেশি গুরুত্ব পায়। অথচ থার্টি ফার্স্ট নাইটের মতো উৎসবে আত্মকেন্দ্রিক ভোগবাদ ছাড়া আর কিছুই নেই। আমাদের নিজস্ব সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য থাকতে কেন আমরা অন্যের দেউলিয়া সংস্কৃতির দ্বারস্থ হচ্ছি, সেটি আজ এক বড় প্রশ্ন।
প্রকৃতপক্ষে নতুন বছর আসা মানেই নতুনের আগমন নয়, বরং জীবন থেকে একটি বছরের পাতা ঝরে যাওয়া। জীবনের বরফ প্রতিনিয়ত গলে যাচ্ছে। আমরা কি একবারও ভাবি, কবরের দিকে আমাদের পা আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল! একজন ফাঁসির আসামির কাছে যেমন প্রতিটি সূর্যোদয় মৃত্যুর নিকটবর্তী হওয়ার সংকেত, আমাদের জীবনও ঠিক তেমনি ফুরিয়ে আসছে। তাই থার্টি ফার্স্ট নাইটের রাতে নেশা ও উন্মাদনায় মত্ত না হয়ে বিগত জীবনের গুনাহের জন্য তওবা করা এবং আগামীর জন্য নেক পরিকল্পনা করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
সন্তান, পরিবার ও সমাজকে এই ভ্রান্ত সংস্কৃতি থেকে রক্ষা করা আমাদের ইমানি ও নাগরিক দায়িত্ব। আল্লাহ তাআলা আমাদের বিজাতীয় সংস্কৃতি পরিহার করে ইসলামি জীবনাদর্শ গ্রহণ করার তৌফিক দান করুন।
জুমার মিম্বর থেকে গ্রন্থনা: সাব্বির জাদিদ

চলতি বছরের মার্চে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে আব্রাহামিক ফ্যামিলি হাউস নামের একটি জৌলুশপূর্ণ কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করা হয়। তিনটি প্রসিদ্ধ আব্রাহামিক ধর্মের (ইসলাম, ইহুদি ও খ্রিষ্টান) তিনটি আইকনিক উপাসনালয় নিয়ে নির্মিত কমপ্লেক্সটি এরই মধ্যে আন্তধর্মীয় সংলাপ ও সম্প্রীতির বৈশ্বিক কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
২৯ জুন ২০২৩
জানাজার স্থানে যদি পর্দার খেলাপ কিংবা নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সেখানে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় না। জানাজার নামাজ যেহেতু নারীদের জন্য আবশ্যক নয়, তাই এতে অংশ নিতে গিয়ে কোনো ফরজ বিধান লঙ্ঘন করা বিধানসম্মত নয়।
৭ ঘণ্টা আগে
জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।
৯ ঘণ্টা আগে
মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।
১১ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

কোনো মুসলমানের জানাজায় অংশগ্রহণ ও তাকে কবরস্থ করা সমাজের মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব। পাশাপাশি এতে রয়েছে অধিক পরিমাণে সওয়াব। এ ছাড়া এটি এক মুমিনের ওপর অন্য মুমিনের অধিকার।
জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত (পরিমাপের একক) সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে। এক কিরাত উহুদ পাহাড়ের সমান। আর যে ব্যক্তি জানাজার নামাজ আদায় করে মৃতকে সমাধিস্থ করার আগেই ফিরে আসবে, সে এক কিরাত সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে।’ (রিয়াদুস সালেহিন: ৯৩৫)
আমাদের সমাজে সাধারণত জানাজার নামাজ ও দাফন প্রক্রিয়ায় পুরুষদেরই দেখা যায় দেখা যায় অংশগ্রহণ করতে। তবে নারীদের জন্য জানাজার নামাজে অংশগ্রহণ বিষয়ে ইসলামবিষয়ক গবেষকদের মত হলো, নারীদের জন্য জানাজার নামাজ আদায় করা মৌলিকভাবে নিষিদ্ধ নয়। চাইলে তারাও জানাজায় শরিক হতে পারবে। এতে জানাজার কোনো ক্ষতি হবে না। তবে জানাজায় অংশগ্রহণের বিষয়ে নারীদেরকে ইসলাম নিরুৎসাহিত করে থাকে।
জানাজার স্থানে যদি পর্দার খেলাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে কিংবা নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সেখানে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় না। জানাজার নামাজ যেহেতু নারীদের জন্য আবশ্যক নয়, তাই এতে অংশ নিতে গিয়ে কোনো ফরজ বিধান লঙ্ঘন করা বিধান সম্মত নয়। কেননা, ইসলামের বিধান মতে—জানাজার নামাজ আদায়, মৃতদেহ বহন এবং দাফন সংক্রান্ত সামগ্রিক দায়িত্ব মূলত পুরুষদের ওপরই ন্যস্ত।
এ ছাড়া শরিয়তবিরোধী কোনো পরিস্থিতির আশঙ্কা থাকার কারণে অনেক আলেম নারীদের জানাজায় অংশগ্রহণে নিরুৎসাহিত করে থাকেন।

কোনো মুসলমানের জানাজায় অংশগ্রহণ ও তাকে কবরস্থ করা সমাজের মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব। পাশাপাশি এতে রয়েছে অধিক পরিমাণে সওয়াব। এ ছাড়া এটি এক মুমিনের ওপর অন্য মুমিনের অধিকার।
জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত (পরিমাপের একক) সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে। এক কিরাত উহুদ পাহাড়ের সমান। আর যে ব্যক্তি জানাজার নামাজ আদায় করে মৃতকে সমাধিস্থ করার আগেই ফিরে আসবে, সে এক কিরাত সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে।’ (রিয়াদুস সালেহিন: ৯৩৫)
আমাদের সমাজে সাধারণত জানাজার নামাজ ও দাফন প্রক্রিয়ায় পুরুষদেরই দেখা যায় দেখা যায় অংশগ্রহণ করতে। তবে নারীদের জন্য জানাজার নামাজে অংশগ্রহণ বিষয়ে ইসলামবিষয়ক গবেষকদের মত হলো, নারীদের জন্য জানাজার নামাজ আদায় করা মৌলিকভাবে নিষিদ্ধ নয়। চাইলে তারাও জানাজায় শরিক হতে পারবে। এতে জানাজার কোনো ক্ষতি হবে না। তবে জানাজায় অংশগ্রহণের বিষয়ে নারীদেরকে ইসলাম নিরুৎসাহিত করে থাকে।
জানাজার স্থানে যদি পর্দার খেলাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে কিংবা নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সেখানে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় না। জানাজার নামাজ যেহেতু নারীদের জন্য আবশ্যক নয়, তাই এতে অংশ নিতে গিয়ে কোনো ফরজ বিধান লঙ্ঘন করা বিধান সম্মত নয়। কেননা, ইসলামের বিধান মতে—জানাজার নামাজ আদায়, মৃতদেহ বহন এবং দাফন সংক্রান্ত সামগ্রিক দায়িত্ব মূলত পুরুষদের ওপরই ন্যস্ত।
এ ছাড়া শরিয়তবিরোধী কোনো পরিস্থিতির আশঙ্কা থাকার কারণে অনেক আলেম নারীদের জানাজায় অংশগ্রহণে নিরুৎসাহিত করে থাকেন।

চলতি বছরের মার্চে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে আব্রাহামিক ফ্যামিলি হাউস নামের একটি জৌলুশপূর্ণ কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করা হয়। তিনটি প্রসিদ্ধ আব্রাহামিক ধর্মের (ইসলাম, ইহুদি ও খ্রিষ্টান) তিনটি আইকনিক উপাসনালয় নিয়ে নির্মিত কমপ্লেক্সটি এরই মধ্যে আন্তধর্মীয় সংলাপ ও সম্প্রীতির বৈশ্বিক কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
২৯ জুন ২০২৩
আল্লাহর দেওয়া জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। যে সম্পদ যত বেশি মূল্যবান, তার ব্যবহার-প্রক্রিয়াও তত বেশি সুপরিকল্পিত হওয়া প্রয়োজন। সময় বহমান স্রোতের মতো, যাকে কখনো বেঁধে রাখা যায় না। তাই জীবনের এই মূল্যবান সময়গুলো অবহেলায় নষ্ট করা কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
২ ঘণ্টা আগে
জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।
৯ ঘণ্টা আগে
মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।
১১ ঘণ্টা আগেআবরার নাঈম

দুনিয়ার সফরের শেষ গন্তব্য মৃত্যু। মৃত্যু এক অপ্রিয় সত্য, যা সুনিশ্চিত অনিবার্য ও অবশ্যম্ভাবী। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘প্রতিটি প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৮৫)
জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘এক মুসলমানের অধিকার অন্য মুসলমানের ওপর পাঁচটি: সালামের জবাব দেওয়া, রোগীকে দেখতে যাওয়া, জানাজার সঙ্গে যাওয়া, দাওয়াত কবুল করা এবং হাঁচি দিলে তার জবাব দেওয়া।’ (রিয়াদুস সলেহিন: ৯০০)
কোনো মুসলমানের জানাজায় অংশগ্রহণ ও তাকে কবরস্থ করা সমাজের মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব। পাশাপাশি এতে রয়েছে অধিক পরিমাণে সওয়াব। যদিও সবার অংশগ্রহণ জরুরি নয়। তাই বলে এমন সওয়াবের কাজ থেকে পিছিয়ে থাকা কখনোই সমীচীন নয়।
জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত (পরিমাপের একক) সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে। এক কিরাত উহুদ পাহাড়ের সমান। আর যে ব্যক্তি জানাজার নামাজ আদায় করে মৃতকে সমাধিস্থ করার আগেই ফিরে আসবে, সে এক কিরাত সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে।’ (রিয়াদুস সলেহিন: ৯৩৫)

দুনিয়ার সফরের শেষ গন্তব্য মৃত্যু। মৃত্যু এক অপ্রিয় সত্য, যা সুনিশ্চিত অনিবার্য ও অবশ্যম্ভাবী। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘প্রতিটি প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৮৫)
জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘এক মুসলমানের অধিকার অন্য মুসলমানের ওপর পাঁচটি: সালামের জবাব দেওয়া, রোগীকে দেখতে যাওয়া, জানাজার সঙ্গে যাওয়া, দাওয়াত কবুল করা এবং হাঁচি দিলে তার জবাব দেওয়া।’ (রিয়াদুস সলেহিন: ৯০০)
কোনো মুসলমানের জানাজায় অংশগ্রহণ ও তাকে কবরস্থ করা সমাজের মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব। পাশাপাশি এতে রয়েছে অধিক পরিমাণে সওয়াব। যদিও সবার অংশগ্রহণ জরুরি নয়। তাই বলে এমন সওয়াবের কাজ থেকে পিছিয়ে থাকা কখনোই সমীচীন নয়।
জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত (পরিমাপের একক) সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে। এক কিরাত উহুদ পাহাড়ের সমান। আর যে ব্যক্তি জানাজার নামাজ আদায় করে মৃতকে সমাধিস্থ করার আগেই ফিরে আসবে, সে এক কিরাত সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে।’ (রিয়াদুস সলেহিন: ৯৩৫)

চলতি বছরের মার্চে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে আব্রাহামিক ফ্যামিলি হাউস নামের একটি জৌলুশপূর্ণ কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করা হয়। তিনটি প্রসিদ্ধ আব্রাহামিক ধর্মের (ইসলাম, ইহুদি ও খ্রিষ্টান) তিনটি আইকনিক উপাসনালয় নিয়ে নির্মিত কমপ্লেক্সটি এরই মধ্যে আন্তধর্মীয় সংলাপ ও সম্প্রীতির বৈশ্বিক কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
২৯ জুন ২০২৩
আল্লাহর দেওয়া জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। যে সম্পদ যত বেশি মূল্যবান, তার ব্যবহার-প্রক্রিয়াও তত বেশি সুপরিকল্পিত হওয়া প্রয়োজন। সময় বহমান স্রোতের মতো, যাকে কখনো বেঁধে রাখা যায় না। তাই জীবনের এই মূল্যবান সময়গুলো অবহেলায় নষ্ট করা কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
২ ঘণ্টা আগে
জানাজার স্থানে যদি পর্দার খেলাপ কিংবা নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সেখানে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় না। জানাজার নামাজ যেহেতু নারীদের জন্য আবশ্যক নয়, তাই এতে অংশ নিতে গিয়ে কোনো ফরজ বিধান লঙ্ঘন করা বিধানসম্মত নয়।
৭ ঘণ্টা আগে
মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।
১১ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন—‘তোমরা তোমাদের মৃতদের ভালো কাজগুলোর আলোচনা করো এবং মন্দ কাজের আলোচনা থেকে বিরত থাকো।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯০০)
কারও মৃত্যুর পর তাঁর পাশে উপস্থিত হলে লাশ দেখার সময় দোয়ার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। হজরত উম্মে সালামাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা রোগী কিংবা মৃতের কাছে উপস্থিত হলে ভালো কথা বলবে। কেননা তোমরা যা বলবে, ফেরেশতারা তার ওপর আমিন বলবেন।’
এই অবস্থায় এই দোয়া পড়া সুন্নত—‘আল্লাহুম্মাগফিরলি ওয়া লাহু ওয়া আকিবনি মিনহু উকবান হাসানাহ।’
অর্থ: ‘হে আল্লাহ, তুমি আমাকে ও তাকে ক্ষমা করো এবং আমাকে তার চেয়েও উত্তম প্রতিদান দাও।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৪৪৭)
পবিত্র কোরআনে পূর্ববর্তী নবীগণ নিজেদের এবং সমস্ত মুমিনের জন্য যেভাবে দোয়া করেছেন, তা আমাদের জন্য বড় শিক্ষা।
হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর দোয়া—‘রব্বানাগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়া ওয়ালিল মুমিনিনা ইয়াওমা ইয়াকুমুল হিসাব।’
অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, যেদিন হিসাব প্রতিষ্ঠিত হবে, সেদিন আমাকে, আমার পিতা-মাতা ও সব ইমানদারকে ক্ষমা করুন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৪১)
হজরত নুহ (আ.)-এর দোয়া—‘রব্বিগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়া ওয়ালিমান দাখালা বাইতিয়া মুমিনাও-ওয়ালিল মুমিনিনা ওয়াল মুমিনাত।’
অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, আমাকে ক্ষমা করে দিন এবং আমার পিতা-মাতাকেও; আর যে ইমান অবস্থায় আমার ঘরে প্রবেশ করেছে এবং সমস্ত মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীকেও।’ (সুরা নুহ: ২৮)

মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন—‘তোমরা তোমাদের মৃতদের ভালো কাজগুলোর আলোচনা করো এবং মন্দ কাজের আলোচনা থেকে বিরত থাকো।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯০০)
কারও মৃত্যুর পর তাঁর পাশে উপস্থিত হলে লাশ দেখার সময় দোয়ার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। হজরত উম্মে সালামাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা রোগী কিংবা মৃতের কাছে উপস্থিত হলে ভালো কথা বলবে। কেননা তোমরা যা বলবে, ফেরেশতারা তার ওপর আমিন বলবেন।’
এই অবস্থায় এই দোয়া পড়া সুন্নত—‘আল্লাহুম্মাগফিরলি ওয়া লাহু ওয়া আকিবনি মিনহু উকবান হাসানাহ।’
অর্থ: ‘হে আল্লাহ, তুমি আমাকে ও তাকে ক্ষমা করো এবং আমাকে তার চেয়েও উত্তম প্রতিদান দাও।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৪৪৭)
পবিত্র কোরআনে পূর্ববর্তী নবীগণ নিজেদের এবং সমস্ত মুমিনের জন্য যেভাবে দোয়া করেছেন, তা আমাদের জন্য বড় শিক্ষা।
হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর দোয়া—‘রব্বানাগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়া ওয়ালিল মুমিনিনা ইয়াওমা ইয়াকুমুল হিসাব।’
অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, যেদিন হিসাব প্রতিষ্ঠিত হবে, সেদিন আমাকে, আমার পিতা-মাতা ও সব ইমানদারকে ক্ষমা করুন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৪১)
হজরত নুহ (আ.)-এর দোয়া—‘রব্বিগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়া ওয়ালিমান দাখালা বাইতিয়া মুমিনাও-ওয়ালিল মুমিনিনা ওয়াল মুমিনাত।’
অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, আমাকে ক্ষমা করে দিন এবং আমার পিতা-মাতাকেও; আর যে ইমান অবস্থায় আমার ঘরে প্রবেশ করেছে এবং সমস্ত মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীকেও।’ (সুরা নুহ: ২৮)

চলতি বছরের মার্চে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে আব্রাহামিক ফ্যামিলি হাউস নামের একটি জৌলুশপূর্ণ কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করা হয়। তিনটি প্রসিদ্ধ আব্রাহামিক ধর্মের (ইসলাম, ইহুদি ও খ্রিষ্টান) তিনটি আইকনিক উপাসনালয় নিয়ে নির্মিত কমপ্লেক্সটি এরই মধ্যে আন্তধর্মীয় সংলাপ ও সম্প্রীতির বৈশ্বিক কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
২৯ জুন ২০২৩
আল্লাহর দেওয়া জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। যে সম্পদ যত বেশি মূল্যবান, তার ব্যবহার-প্রক্রিয়াও তত বেশি সুপরিকল্পিত হওয়া প্রয়োজন। সময় বহমান স্রোতের মতো, যাকে কখনো বেঁধে রাখা যায় না। তাই জীবনের এই মূল্যবান সময়গুলো অবহেলায় নষ্ট করা কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
২ ঘণ্টা আগে
জানাজার স্থানে যদি পর্দার খেলাপ কিংবা নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সেখানে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় না। জানাজার নামাজ যেহেতু নারীদের জন্য আবশ্যক নয়, তাই এতে অংশ নিতে গিয়ে কোনো ফরজ বিধান লঙ্ঘন করা বিধানসম্মত নয়।
৭ ঘণ্টা আগে
জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।
৯ ঘণ্টা আগে