Ajker Patrika

শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভি: উপমহাদেশে ইসলামি নবজাগরণের অগ্রদূত

মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ 
আপডেট : ২৪ মার্চ ২০২৫, ১৯: ০৭
শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভির মাজার। ছবি: সংগৃহীত
শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভির মাজার। ছবি: সংগৃহীত

শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভি (১৭০৩–৬২ খ্রিষ্টাব্দ) ছিলেন দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইসলামি চিন্তাবিদ, মুজাদ্দিদ, সমাজ সংস্কারক ও হাদিস বিশারদ। তিনি এমন এক যুগে জন্মগ্রহণ করেন, যখন মোগল সাম্রাজ্যের পতন শুরু হয়েছিল এবং মুসলিম সমাজ বিভক্তির শিকার হচ্ছিল। তাঁর চিন্তাধারা, কোরআনের অনুবাদ ও সামাজিক সংস্কার আন্দোলনের মাধ্যমে তিনি ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলামের পুনর্জাগরণের পথ তৈরি করেছিলেন। তিনি ইসলামি দর্শন, তাফসির, হাদিস, ফিকহ এবং রাজনীতি নিয়ে বিস্তর গবেষণা করে মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করেন।

প্রাথমিক জীবন

শাহ ওয়ালিউল্লাহ ১৭০৩ খ্রিষ্টাব্দে (১১১৪ হিজরি) ভারতের দিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা শাহ আব্দুর রহিম ছিলেন একজন বিশিষ্ট আলেম এবং দিল্লির বিখ্যাত মাদরাসা মাদরাসা-ই-রহিমিয়া-এর প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ছোটবেলা থেকেই অসাধারণ মেধার অধিকারী ছিলেন এবং মাত্র ১৫ বছর বয়সে ইসলামি শিক্ষার সব স্তর সম্পন্ন করেন।

শাহ ওয়ালিউল্লাহ ১৭৩১ সালে হজের উদ্দেশ্যে মক্কায় যান এবং সেখানে ইসলামি শিক্ষা ও গবেষণায় আত্মনিয়োগ করেন। তিনি মক্কা ও মদিনার বিখ্যাত আলেমদের কাছ থেকে হাদিস, ফিকহ ও তাফসির অধ্যয়ন করেন। বিশেষত, তিনি শাইখ আবু তাহির কুরাইশি ও শাইখ ওয়াফদুল্লাহ আল-আলাভির মতো প্রখ্যাত ইসলামি পণ্ডিতদের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। দু বছর পর তিনি ভারত ফিরে আসেন এবং ইসলামি শিক্ষা, সমাজ সংস্কার ও রাজনৈতিক চিন্তাধারার প্রচার শুরু করেন।

অবদান

কোরআন: শাহ ওয়ালিউল্লাহ কোরআনের মূল শিক্ষা সাধারণ জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য এর ফারসি ভাষায় অনুবাদ করেন, যা সে সময় একটি বিপ্লবী পদক্ষেপ ছিল। আগে কোরআনের ব্যাখ্যা আরবি ভাষায় সীমাবদ্ধ ছিল, ফলে সাধারণ মানুষ তা বুঝতে পারত না। তাঁর অনুবাদ পরবর্তীকালে উর্দু, বাংলা ও অন্যান্য ভাষায় কোরআনের অনুবাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।

হাদিস: তিনি হাদিস শাস্ত্রের ওপর গভীর গবেষণা করেন এবং ইসলামের মূল শিক্ষা প্রচারের জন্য হাদিসের বিভিন্ন সংকলন ও ব্যাখ্যা লিখেন। তাঁর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রচনা ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা’, যেখানে তিনি ইসলামের মৌলিক নীতিগুলোর দার্শনিক ও সামাজিক বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেন।

ফিকহ: ফিকহ নিয়ে তাঁর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিল বিভিন্ন মাজহাবের মধ্যে ঐক্যের প্রচেষ্টা। তিনি মনে করতেন যে চারটি প্রধান মাজহাব (হানাফি, মালিকি, শাফেয়ি ও হাম্বলি) একে অপরের বিরোধী নয়, বরং প্রতিটি ইসলামের মৌলিক বিধিমালাকে সহজবোধ্যরূপে সর্বসাধারণের জন্য উপস্থাপন করে।

সমাজ সংস্কার: শাহ ওয়ালিউল্লাহ ভারতীয় মুসলমানদের মধ্যে সামাজিক ও রাজনৈতিক দুর্বলতা দূর করতে চেয়েছিলেন। তিনি লক্ষ্য করেন যে, মুসলিম শাসকরা দুর্বল হয়ে পড়ছে এবং হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য আনতে রাজনৈতিক চিন্তাধারা উপস্থাপন করেন এবং ইসলামি শাসনব্যবস্থার উন্নতির জন্য বিভিন্ন পরামর্শ দেন। মুসলমানদের শক্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য আহমদ শাহ আবদালির (পাঠান শাসক) সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং তাঁকে ভারত আক্রমণ করতে উদ্বুদ্ধ করেন। তাঁর প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ ১৭৬১ সালে পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধ সংঘটিত হয়, যেখানে মারাঠাদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের বিজয় নিশ্চিত হয়। তবে এটি দীর্ঘমেয়াদে মুসলিম সাম্রাজ্যের পতন রোধ করতে ব্যর্থ হয়।

আধ্যাত্মিকতা: শাহ ওয়ালিউল্লাহ সুফিবাদ ও শরিয়াহর মধ্যে সামঞ্জস্য বিধানের চেষ্টা করেন। তিনি শরিয়াহ-বিরোধী সুফিবাদ থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেন। তিনি মনে করতেন যে কোরআন ও হাদিসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সুফিবাদ মুসলমানদের নৈতিক ও আত্মিক উন্নতি ঘটাতে পারে।

ইসলাম প্রচার: তিনি ইসলামের মৌলিক শিক্ষাকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য বহু গ্রন্থ রচনা করেন। তাঁর বইগুলোতে কোরআনের ব্যাখ্যা, হাদিসের বিশ্লেষণ, সমাজ সংস্কার, রাজনৈতিক দর্শন ও আধ্যাত্মিক চিন্তাধারার সংমিশ্রণ দেখা যায়।

রচনাবলি

শাহ ওয়ালিউল্লাহ বহু মূল্যবান গ্রন্থ রচনা করেছেন, যা ইসলামি গবেষণার ক্ষেত্রে আজও গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর কিছু প্রধান গ্রন্থ হলো—

হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা: ইসলামের মূলনীতি ও দর্শন ব্যাখ্যা।

ইজালাতুল খাফা আন খিলাফতিল খুলাফা: খেলাফত ও রাজনৈতিক চিন্তাধারার ব্যাখ্যা।

আল-ফাওজুল কবির: কোরআনের তাফসিরের মূলনীতি নিয়ে লেখা।

কিরতাসুল জাজি: ইসলামের ইতিহাস ও শিক্ষা সম্পর্কিত রচনা।

মৃত্যু ও উত্তরাধিকার

১৭৬২ সালে (১১৭৬ হিজরি) দিল্লিতে শাহ ওয়ালিউল্লাহ ইন্তেকাল করেন। তবে তাঁর চিন্তাধারা ও কর্ম ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলমানদের মধ্যে যুগ যুগ ধরে প্রভাব বিস্তার করে আসছে। তাঁর সন্তান ও অনুসারীরা তাঁর শিক্ষাকে প্রচার ও বিস্তৃত করেছেন, যা পরবর্তীকালে বিভিন্ন ইসলামি আন্দোলনের ভিত্তি স্থাপন করেছে।

সূত্র

১. শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভি, হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা

২. মাওলানা আবুল হাসান নদভি, তারিখে দাওয়াত ও আজিমত

৩. মুফতি তাকী উসমানি, ইসলামের ইতিহাস ও মুসলিম উম্মাহ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রিয়জনের মৃত্যুতে শোক পালনে ইসলামের নির্দেশনা

ইসলাম ডেস্ক 
ব্লু মসজিদ, ইস্তাম্বুল। ছবি: সংগৃহীত
ব্লু মসজিদ, ইস্তাম্বুল। ছবি: সংগৃহীত

জীবনে প্রিয়জন হারানো এক অপূরণীয় বেদনা। এই কঠিন মুহূর্তে মানুষ কীভাবে আচরণ করবে, কেমনভাবে শোক প্রকাশ করবে—সেই বিষয়ে ইসলাম দিয়েছে পরিপূর্ণ দিকনির্দেশনা। ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি হলো—শোক প্রকাশে ভারসাম্য রাখা, কষ্টকে অস্বীকার না করা, আবার সীমালঙ্ঘনও না করা।

ইসলাম এ বিপদে ধৈর্য ও আল্লাহর সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট থাকার শিক্ষা দেয়। তবে কান্না করাকে নিষেধ করেনি, বরং তা স্বাভাবিক ও মানবিক অনুভূতির প্রকাশ হিসেবে বিবেচিত। রাসুলুল্লাহও (সা.) কেঁদেছেন তাঁর সন্তান ইবরাহিম (রা.)-এর মৃত্যুর সময়।

সাহাবি আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) বিস্ময় প্রকাশ করলে নবীজি (সা.) বলেন, ‘এ কান্না স্নেহ-ভালোবাসার প্রকাশ। আমার হৃদয় বেদনাহত, চোখ দুটো সিক্ত, তবে আমি বলছি সেই কথাই, যা আমার রবকে সন্তুষ্ট করে। ইবরাহিম, তোমার বিচ্ছেদে আমরা শোকাহত।’ (সহিহ বুখারি)

ইসলাম কান্নাকে মানবিক বললেও অতিরিক্ত বিলাপ, উচ্চ স্বরে চিৎকার, গায়ে চপেটাঘাত, জামাকাপড় ছিঁড়ে ফেলা বা আকুতি-মিনতি করতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মৃতের জন্য বিলাপ করা জাহিলি যুগের প্রথা। বিলাপকারী যদি মৃত্যুর আগে তওবা না করে, তবে কিয়ামতের দিন তাকে আগুনের পোশাক ও আলকাতরার চাদর পরানো হবে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইসলাম ও মুসলমানদের স্বার্থরক্ষায় খালেদা জিয়ার অনন্য কিছু উদ্যোগ

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ২৫
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আজ মঙ্গলবার ভোরে যখন কুয়াশাভেজা প্রকৃতিতে ফজরের আজান ধ্বনিত হচ্ছিল, এর ঠিক কিছু পরেই চিরদিনের জন্য চোখ বুজলেন বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব খালেদা জিয়া। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি শুধু একজন সফল প্রধানমন্ত্রীই ছিলেন না, বরং মুসলিম উম্মাহর স্বার্থরক্ষা এবং ইসলামি মূল্যবোধকে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করার অন্যতম এক বাতিঘর ছিলেন।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর যে কজন রাজনৈতিক নেতৃত্ব ধর্মীয় চেতনা ও মুসলমানদের অধিকার রক্ষায় আপসহীন ভূমিকা রেখেছেন, খালেদা জিয়ার নাম সেখানে অনেকটা অগ্রভাগেই থাকবে।

খালেদা জিয়া শুধু রাজনীতির ময়দানেই বিচরণ করেননি, তিনি অন্তরে লালন করতেন বাংলাদেশি মুসলিম জাতীয়তাবাদের আদর্শ। গৃহবধূ থেকে দেশের শীর্ষ নেতৃত্বে উঠে আসার দীর্ঘ লড়াইয়ে তিনি সব সময় আলেমসমাজকে পরম মমতায় কাছে টেনে নিয়েছেন।

সংবিধানে আল্লাহর ওপর বিশ্বাস ও রাষ্ট্রধর্মের সুরক্ষা

১৯৯১ সালে এরশাদ সরকারের পতনের পর যখন নানামুখী রাজনৈতিক চাপ ছিল, তখন খালেদা জিয়া দৃঢ়তার সঙ্গে সংবিধানের প্রস্তাবনায় ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ এবং ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ বজায় রাখার পক্ষে অবস্থান নেন। ২০০৫ সালের সংসদীয় কার্যবিবরণী সাক্ষ্য দেয়, তিনি বারবার সংসদে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের মর্যাদা রক্ষার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছিলেন।

কওমি ও আলিয়া মাদ্রাসার যুগান্তকারী সংস্কার

আলেমসমাজ ও মাদ্রাসাশিক্ষার্থীদের হৃদয়ে খালেদা জিয়া অমর হয়ে থাকবেন তাঁর শিক্ষা সংস্কারের জন্য।

  • ফাজিল ও কামিলের স্বীকৃতি: ২০০১-০৬ মেয়াদে ফাজিলকে ডিগ্রি এবং কামিলকে মাস্টার্সের সমমান দিয়ে তিনি মাদ্রাসাশিক্ষার্থীদের মূলধারার সঙ্গে প্রতিযোগিতার সুযোগ করে দেন।
  • কওমি সনদের প্রথম রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি: ২০০৫ সালে আলেমদের সঙ্গে বৈঠকের পর ২০০৬ সালের ২০ ডিসেম্বর তিনি দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্সের সমমান দেওয়ার ঐতিহাসিক গেজেট প্রকাশ করেন। সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ায় বাস্তবায়ন অসম্পূর্ণ থাকলেও এটিই ছিল কওমি সনদের প্রথম রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির মাইলফলক।
  • ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়: কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ইসলামিক স্টাডিজ অ্যান্ড দাওয়াহ’ অনুষদসহ নতুন নতুন বিভাগ অনুমোদনের মাধ্যমে উচ্চতর ইসলামি শিক্ষার প্রসারে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।

ধর্মীয় স্থাপনা ও হজ ব্যবস্থাপনায় সংস্কার

বায়তুল মোকাররম মসজিদের সংস্কার, জাতীয় ঈদগাহের আধুনিকায়ন এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম-মুয়াজ্জিন প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের পরিধি বাড়ানো ছিল তাঁর নিয়মিত কাজের অংশ। আল্লাহর ওলিদের মাজার রক্ষণাবেক্ষণেও তিনি ছিলেন অত্যন্ত আন্তরিক। পাশাপাশি হজযাত্রীদের যাতায়াত সহজ করতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসকে শক্তিশালী করা এবং সৌদি সরকারের সঙ্গে সফল কূটনীতির মাধ্যমে ভিসা সমস্যার সমাধান করেছিলেন তিনি।

ইসলামি অর্থনীতি ও বিশ্ব মুসলিম ভ্রাতৃত্ব

খালেদা জিয়ার শাসনামলেই বাংলাদেশে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিং ও ইসলামি আর্থিক ব্যবস্থা দ্রুত বিস্তৃত হয়। মধ্যবিত্ত মানুষের কাছে ইসলামি ব্যাংকিংকে আস্থার জায়গায় নিয়ে যেতে তাঁর সরকার নীতিগত সহায়তা প্রদান করে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ওআইসিসহ সৌদি আরব, মালয়েশিয়া ও ব্রুনাইয়ের মতো মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছিল।

২০০৫ সালে ইউরোপে নবীজি (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর কার্টুন প্রকাশিত হলে তাঁর সরকার রাষ্ট্রীয়ভাবে কঠোর নিন্দা জানিয়েছিল।

আজ ফজরের পর তিনি যখন মহান রবের ডাকে সাড়া দিয়ে চলে গেলেন, তখন পেছনে রেখে গেছেন এমন এক কর্মময় জীবন, যা এ দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলামের মর্যাদা রক্ষা এবং ইসলামি প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার যে বীজ তিনি বপন করেছিলেন, তা আজ এক বিশাল মহিরুহে পরিণত হয়েছে।

আল্লাহ তাঁকে তাঁর সকল নেক আমল কবুল করে এবং ভুলত্রুটি ক্ষমা করে জান্নাতুল ফিরদাউসের উচ্চ মাকাম দান করুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কারও মৃত্যুর সংবাদ শুনলে যে দোয়া পড়বেন

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

মানুষের জন্ম যেমন অবশ্যম্ভাবী, তেমনি তার মৃত্যুও পৃথিবীর এক অমোঘ সত্য। জীবনে চলার পথে যত সাফল্য, ব্যস্ততা বা আকাঙ্ক্ষা থাকুক; মৃত্যুর মুহূর্তে সবকিছু থেমে যায়। ইসলাম এই বাস্তবতাকে অত্যন্ত গভীরভাবে তুলে ধরেছে এবং আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছে যে প্রতিটি প্রাণী একদিন তার প্রভুর কাছে ফিরে যাবে।

মৃত্যু অবধারিত ‎সত্য। তা থেকে পালানোর কোনো পথ নেই। কোনো বস্তু জীবনের অস্তিত্ব লাভ করলে তার মৃত্যু সুনিশ্চিত। কোরআন ও হাদিসে এ ব্যাপারে অসংখ্য বর্ণনা রয়েছে।

কেউ যখন মারা যায়, তার মৃত্যুর খবর শুনলে একটি দোয়া পড়তে হয়, দোয়াটি বর্ণিত হয়েছে পবিত্র কোরআনের সুরা বাকারার ১৫৬ নম্বর আয়াতে।

দোয়াটি হলো: ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন, আল্লাহুম্মা আজিরনি ফি মুসিবাতি; ওয়া আখলিফ-লি খাইরাম মিনহা।’

দোয়ার অর্থ: ‘আমরা আল্লাহর এবং নিশ্চয় আল্লাহর কাছেই ফিরে যাব। হে আল্লাহ, আমাকে আমার এই বিপদে বিনিময় দান করুন এবং আমার জন্য এর চেয়ে উত্তম ব্যবস্থা করে দিন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতকালে কখন তায়াম্মুম করা যাবে, কখন যাবে না

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৩৮
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ইসলামি শরিয়তে পানি না থাকলে অথবা পানি ব্যবহারে অক্ষম হলে অজু ও গোসলের বিকল্প হিসেবে তায়াম্মুম করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা যদি পীড়িত হও বা সফরে থাকো বা তোমাদের কেউ শৌচালয় থেকে আসে বা তোমরা স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হও এবং পানি না পাও, তবে পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করবে; অর্থাৎ তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাত মাসেহ করবে। আল্লাহ তোমাদের কষ্ট দিতে চান না; তিনি শুধু তোমাদের পবিত্র করতে এবং তোমাদের প্রতি তাঁর অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করতে চান, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করো।’ (সুরা মায়িদা: ৬)

পবিত্র কোরআনের এই আয়াত এবং সংশ্লিষ্ট হাদিসগুলোর আলোকে ফকিহরা শীতকালে তায়াম্মুমের বিধান সম্পর্কে যে সমাধান দিয়েছেন, তার সারমর্ম নিচে তুলে ধরা হলো:

তায়াম্মুম কখন বৈধ?

যদি প্রচণ্ড ঠান্ডায় পানি ব্যবহার করলে মৃত্যুঝুঁকি থাকে অথবা শরীরের কোনো অঙ্গ অকার্যকর হয়ে যাওয়ার প্রবল আশঙ্কা থাকে, তবে তায়াম্মুম করা যাবে। অসুস্থ ব্যক্তির ক্ষেত্রে পানি ব্যবহারে রোগ বৃদ্ধি পাওয়ার বা সুস্থ হতে দীর্ঘ সময় লাগার অকাট্য প্রমাণ বা প্রবল ধারণা থাকলে তায়াম্মুম বৈধ।

তায়াম্মুম কখন বৈধ নয়?

ক্ষতি হওয়ার নিশ্চিত বা প্রবল আশঙ্কা না থেকে কেবল সাধারণ ঠান্ডার ভয় বা অলসতাবশত তায়াম্মুম করা জায়েজ নয়। (আল বাহরুর রায়েক: ১/১৪৮, ফাতাওয়া কাজিখান: ১/৫৮)

প্রতিকূলতায় অজুর সওয়াব

আমাদের দেশে সাধারণত যে মাত্রার শীত পড়ে, তাতে পানি ব্যবহার করলে মৃত্যু বা গুরুতর অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি খুব একটা থাকে না। সামান্য কষ্ট হলেও তা সহ্য করে অজু করা ইমানি দৃঢ়তার পরিচয়। এই কষ্টের বিনিময়ে আল্লাহ তাআলা দ্বিগুণ সওয়াব দান করেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্রচণ্ড ঠান্ডার মৌসুমে যে ব্যক্তি পূর্ণরূপে অজু করবে, তাকে দ্বিগুণ সওয়াব দেওয়া হবে।’ (মাজমাউজ জাওয়ায়িদ)

অন্য এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতিকূল পরিবেশে পূর্ণরূপে অজু করাকে পাপ মোচন এবং মর্যাদা বৃদ্ধির অন্যতম আমল হিসেবে উল্লেখ করেছেন। (জামে তিরমিজি)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত