কাউসার লাবীব

জনসম্পদকে আমানত হিসেবে দেখা, এর প্রতি যত্নশীল হওয়া এবং এর অপব্যবহার থেকে বিরত থাকা ইমানের অপরিহার্য অংশ। এটি একজন মুমিনের সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্যের পরিচায়ক। এই সম্পদের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ নৈতিক ও ইমানি কর্তব্য। ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে রাষ্ট্রীয় সম্পদকে জনগণের কাছে আল্লাহর দেওয়া আমানত হিসেবে দেখা হয়, যার খেয়ানতকারীকে ইহকাল ও পরকালে কঠিন জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।
জনসম্পদ সবার হক
ইসলামের মৌলিক নীতি হলো, রাষ্ট্রীয় সম্পদ কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর সম্পত্তি নয়, বরং তা দেশের প্রতিটি মানুষের সমান অধিকারের বস্তু। ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) এই সত্যকে অত্যন্ত স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন। তিনি কসম করে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই এই (রাষ্ট্রীয়) সম্পদে কেউ কারও চেয়ে বেশি হকদার নয়। আমিও কারও চেয়ে বেশি হকদার নই। এই সম্পদে সব মুসলমানের অধিকার আছে, তবে মালিকানাধীন দাস ছাড়া।’ এই ঘোষণা থেকে স্পষ্ট হয়, জনসম্পদ হলো একধরনের সমষ্টিগত মালিকানা, যার সুষ্ঠু বণ্টন ও ব্যবহার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের পবিত্র দায়িত্ব। এই সম্পদ থেকে একজন যোগ্য ব্যক্তি যাতে তার প্রাপ্য সম্মান ও অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়, তার জন্য আল্লাহ তাআলা সুস্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন আমানতগুলো হকদারদের কাছে পৌঁছে দিতে।’ (সুরা নিসা: ৫৮)
জনসম্পদের খেয়ানত জঘন্য পাপ
রাষ্ট্রীয় সম্পদের খেয়ানত বা আত্মসাৎ করা শুধু অর্থনৈতিক দুর্নীতি নয়, বরং এটি লাখো মানুষের অধিকার হরণের শামিল। ইসলামে এই পাপকে অত্যন্ত জঘন্য হিসেবে গণ্য করা হয়। কারণ, এটি সরাসরি ‘হক্কুল ইবাদ’ বা বান্দার হক নষ্ট করার অপরাধ। আল্লাহ তাআলা বান্দার ব্যক্তিগত পাপ ক্ষমা করলেও বান্দার হক নষ্ট করার পাপ বান্দা নিজে ক্ষমা না করলে তিনি ক্ষমা করেন না। তাই যে ব্যক্তি রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাৎ করে, সে দেশের সব মানুষের কাছে ঋণী হয়ে যায়, যার থেকে মুক্তি পাওয়া অত্যন্ত কঠিন। এই পাপের মাধ্যমে সমাজে বৈষম্য, অস্থিরতা ও অনাস্থা জন্ম নেয়, যা একটি জাতির জন্য ধ্বংস ডেকে আনে। একজন শাসক বা প্রশাসক যখন জনসম্পদের রক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে খেয়ানত করেন, তখন তিনি আল্লাহর কাছেও চরম বেইমান হিসেবে গণ্য হন।
জনসম্পদ আত্মসাতের ভয়াবহ পরিণতি
জনসম্পদ আত্মসাতের পরিণাম পরকালে হবে অত্যন্ত ভয়াবহ ও লোমহর্ষক। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘কোনো নবীর জন্য শোভনীয় নয় যে তিনি খেয়ানত করবেন। আর যে ব্যক্তি খেয়ানত করবে, সে কিয়ামতের দিন সেই খেয়ানত করা বস্তু নিয়ে উপস্থিত হবে। অতঃপর প্রত্যেকেই পরিপূর্ণভাবে পাবে, যা সে অর্জন করেছে। আর তাদের প্রতি কোনো অন্যায় করা হবে না।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৬১)। এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, কেয়ামতের দিন প্রত্যেককে তার কৃতকর্মের জন্য ব্যক্তিগতভাবে জবাবদিহি করতে হবে এবং আত্মসাৎকৃত সম্পদকে কাঁধে বহন করে আল্লাহর সামনে হাজির হতে হবে।
হাদিসের বর্ণনায় এই পরিণতি আরও পরিষ্কার হয়ে ওঠে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘কিছু মানুষ আল্লাহর দেওয়া সম্পদ অন্যায়ভাবে ব্যয় করে, কিয়ামতের দিন তাদের জন্য জাহান্নাম নির্ধারিত।’ (সহিহ্ বুখারি: ৩১১৮)। আরেকটি হাদিসে তিনি আত্মসাৎকারীদের শাস্তির এক মর্মান্তিক চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘যাঁর হাতে আমার প্রাণ, সেই সত্তার কসম, সদকার মাল থেকে স্বল্প পরিমাণও যে আত্মসাৎ করবে, সে তা কাঁধে করে কেয়ামতের দিন উপস্থিত হবে। সেটা উট হলে তার আওয়াজ করবে, গাভি হলে হাম্বা হাম্বা করবে আর বকরি হলে ভ্যাঁ ভ্যাঁ করতে থাকবে।’ এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, রাষ্ট্রীয় সম্পদের খেয়ানত আল্লাহ কত কঠিন অপরাধ হিসেবে দেখেন।
এক সূক্ষ্ম খেয়ানত
রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের সময় কোনো ব্যক্তি সামান্য উপহার বা হাদিয়া গ্রহণ করলেও তা ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে এক সূক্ষ্ম খেয়ানত। এর কারণ হলো, এই উপহার তার ব্যক্তিগত যোগ্যতা বা গুণের জন্য নয়, বরং তার পদ ও ক্ষমতার কারণে দেওয়া হয়। এই হাদিয়া এক প্রকারের ঘুষ; যা দিয়ে প্রভাব বিস্তার বা পক্ষপাতিত্বের চেষ্টা করা হয়। রাসুল (সা.)-এর যুগের একটি ঘটনা এ ক্ষেত্রে অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে আছে।
রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের সময় কোনো ব্যক্তি সামান্য উপহার বা হাদিয়া গ্রহণ করলেও তা ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে এক সূক্ষ্ম খেয়ানত।
আবু হুমাইদ সাঈদ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) সদকা সংগ্রহের কাজে ইবনে উতবিয়া নামক এক ব্যক্তিকে নিযুক্ত করেন। সে কাজ শেষে ফিরে এসে কিছু সম্পদ দেখিয়ে বলল, ‘এগুলো আপনাদের, আর এগুলো আমাকে হাদিয়া দেওয়া হয়েছে।’ রাসুল (সা.) তখন তার এ কথায় ভীষণ ক্রোধান্বিত হয়ে বলেন, ‘সে তার বাবার ঘরে কিংবা তার মায়ের ঘরে বসে থাকল না কেন? তখন সে দেখতে পেত, তাকে কেউ হাদিয়া দেয় কি না।’
এই ঘটনা থেকে বোঝা যায়, কোনো সরকারি বা জনপদে অধিষ্ঠিত থাকার কারণে প্রাপ্ত যেকোনো উপহারকে প্রত্যাখ্যান করা আবশ্যক। অন্যথায় তা দুর্নীতির পথ খুলে দেয় এবং একজন যোগ্য ও সৎ ব্যক্তি তার প্রাপ্য সম্মান থেকে বঞ্চিত হয়। রাসুল (সা.)-এর এই উক্তি প্রত্যেক দায়িত্বশীল ব্যক্তির জন্য এক কঠিন সতর্কবার্তা।

জনসম্পদকে আমানত হিসেবে দেখা, এর প্রতি যত্নশীল হওয়া এবং এর অপব্যবহার থেকে বিরত থাকা ইমানের অপরিহার্য অংশ। এটি একজন মুমিনের সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্যের পরিচায়ক। এই সম্পদের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ নৈতিক ও ইমানি কর্তব্য। ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে রাষ্ট্রীয় সম্পদকে জনগণের কাছে আল্লাহর দেওয়া আমানত হিসেবে দেখা হয়, যার খেয়ানতকারীকে ইহকাল ও পরকালে কঠিন জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।
জনসম্পদ সবার হক
ইসলামের মৌলিক নীতি হলো, রাষ্ট্রীয় সম্পদ কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর সম্পত্তি নয়, বরং তা দেশের প্রতিটি মানুষের সমান অধিকারের বস্তু। ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) এই সত্যকে অত্যন্ত স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন। তিনি কসম করে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই এই (রাষ্ট্রীয়) সম্পদে কেউ কারও চেয়ে বেশি হকদার নয়। আমিও কারও চেয়ে বেশি হকদার নই। এই সম্পদে সব মুসলমানের অধিকার আছে, তবে মালিকানাধীন দাস ছাড়া।’ এই ঘোষণা থেকে স্পষ্ট হয়, জনসম্পদ হলো একধরনের সমষ্টিগত মালিকানা, যার সুষ্ঠু বণ্টন ও ব্যবহার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের পবিত্র দায়িত্ব। এই সম্পদ থেকে একজন যোগ্য ব্যক্তি যাতে তার প্রাপ্য সম্মান ও অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়, তার জন্য আল্লাহ তাআলা সুস্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন আমানতগুলো হকদারদের কাছে পৌঁছে দিতে।’ (সুরা নিসা: ৫৮)
জনসম্পদের খেয়ানত জঘন্য পাপ
রাষ্ট্রীয় সম্পদের খেয়ানত বা আত্মসাৎ করা শুধু অর্থনৈতিক দুর্নীতি নয়, বরং এটি লাখো মানুষের অধিকার হরণের শামিল। ইসলামে এই পাপকে অত্যন্ত জঘন্য হিসেবে গণ্য করা হয়। কারণ, এটি সরাসরি ‘হক্কুল ইবাদ’ বা বান্দার হক নষ্ট করার অপরাধ। আল্লাহ তাআলা বান্দার ব্যক্তিগত পাপ ক্ষমা করলেও বান্দার হক নষ্ট করার পাপ বান্দা নিজে ক্ষমা না করলে তিনি ক্ষমা করেন না। তাই যে ব্যক্তি রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাৎ করে, সে দেশের সব মানুষের কাছে ঋণী হয়ে যায়, যার থেকে মুক্তি পাওয়া অত্যন্ত কঠিন। এই পাপের মাধ্যমে সমাজে বৈষম্য, অস্থিরতা ও অনাস্থা জন্ম নেয়, যা একটি জাতির জন্য ধ্বংস ডেকে আনে। একজন শাসক বা প্রশাসক যখন জনসম্পদের রক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে খেয়ানত করেন, তখন তিনি আল্লাহর কাছেও চরম বেইমান হিসেবে গণ্য হন।
জনসম্পদ আত্মসাতের ভয়াবহ পরিণতি
জনসম্পদ আত্মসাতের পরিণাম পরকালে হবে অত্যন্ত ভয়াবহ ও লোমহর্ষক। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘কোনো নবীর জন্য শোভনীয় নয় যে তিনি খেয়ানত করবেন। আর যে ব্যক্তি খেয়ানত করবে, সে কিয়ামতের দিন সেই খেয়ানত করা বস্তু নিয়ে উপস্থিত হবে। অতঃপর প্রত্যেকেই পরিপূর্ণভাবে পাবে, যা সে অর্জন করেছে। আর তাদের প্রতি কোনো অন্যায় করা হবে না।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৬১)। এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, কেয়ামতের দিন প্রত্যেককে তার কৃতকর্মের জন্য ব্যক্তিগতভাবে জবাবদিহি করতে হবে এবং আত্মসাৎকৃত সম্পদকে কাঁধে বহন করে আল্লাহর সামনে হাজির হতে হবে।
হাদিসের বর্ণনায় এই পরিণতি আরও পরিষ্কার হয়ে ওঠে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘কিছু মানুষ আল্লাহর দেওয়া সম্পদ অন্যায়ভাবে ব্যয় করে, কিয়ামতের দিন তাদের জন্য জাহান্নাম নির্ধারিত।’ (সহিহ্ বুখারি: ৩১১৮)। আরেকটি হাদিসে তিনি আত্মসাৎকারীদের শাস্তির এক মর্মান্তিক চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘যাঁর হাতে আমার প্রাণ, সেই সত্তার কসম, সদকার মাল থেকে স্বল্প পরিমাণও যে আত্মসাৎ করবে, সে তা কাঁধে করে কেয়ামতের দিন উপস্থিত হবে। সেটা উট হলে তার আওয়াজ করবে, গাভি হলে হাম্বা হাম্বা করবে আর বকরি হলে ভ্যাঁ ভ্যাঁ করতে থাকবে।’ এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, রাষ্ট্রীয় সম্পদের খেয়ানত আল্লাহ কত কঠিন অপরাধ হিসেবে দেখেন।
এক সূক্ষ্ম খেয়ানত
রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের সময় কোনো ব্যক্তি সামান্য উপহার বা হাদিয়া গ্রহণ করলেও তা ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে এক সূক্ষ্ম খেয়ানত। এর কারণ হলো, এই উপহার তার ব্যক্তিগত যোগ্যতা বা গুণের জন্য নয়, বরং তার পদ ও ক্ষমতার কারণে দেওয়া হয়। এই হাদিয়া এক প্রকারের ঘুষ; যা দিয়ে প্রভাব বিস্তার বা পক্ষপাতিত্বের চেষ্টা করা হয়। রাসুল (সা.)-এর যুগের একটি ঘটনা এ ক্ষেত্রে অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে আছে।
রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের সময় কোনো ব্যক্তি সামান্য উপহার বা হাদিয়া গ্রহণ করলেও তা ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে এক সূক্ষ্ম খেয়ানত।
আবু হুমাইদ সাঈদ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) সদকা সংগ্রহের কাজে ইবনে উতবিয়া নামক এক ব্যক্তিকে নিযুক্ত করেন। সে কাজ শেষে ফিরে এসে কিছু সম্পদ দেখিয়ে বলল, ‘এগুলো আপনাদের, আর এগুলো আমাকে হাদিয়া দেওয়া হয়েছে।’ রাসুল (সা.) তখন তার এ কথায় ভীষণ ক্রোধান্বিত হয়ে বলেন, ‘সে তার বাবার ঘরে কিংবা তার মায়ের ঘরে বসে থাকল না কেন? তখন সে দেখতে পেত, তাকে কেউ হাদিয়া দেয় কি না।’
এই ঘটনা থেকে বোঝা যায়, কোনো সরকারি বা জনপদে অধিষ্ঠিত থাকার কারণে প্রাপ্ত যেকোনো উপহারকে প্রত্যাখ্যান করা আবশ্যক। অন্যথায় তা দুর্নীতির পথ খুলে দেয় এবং একজন যোগ্য ও সৎ ব্যক্তি তার প্রাপ্য সম্মান থেকে বঞ্চিত হয়। রাসুল (সা.)-এর এই উক্তি প্রত্যেক দায়িত্বশীল ব্যক্তির জন্য এক কঠিন সতর্কবার্তা।
কাউসার লাবীব

জনসম্পদকে আমানত হিসেবে দেখা, এর প্রতি যত্নশীল হওয়া এবং এর অপব্যবহার থেকে বিরত থাকা ইমানের অপরিহার্য অংশ। এটি একজন মুমিনের সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্যের পরিচায়ক। এই সম্পদের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ নৈতিক ও ইমানি কর্তব্য। ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে রাষ্ট্রীয় সম্পদকে জনগণের কাছে আল্লাহর দেওয়া আমানত হিসেবে দেখা হয়, যার খেয়ানতকারীকে ইহকাল ও পরকালে কঠিন জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।
জনসম্পদ সবার হক
ইসলামের মৌলিক নীতি হলো, রাষ্ট্রীয় সম্পদ কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর সম্পত্তি নয়, বরং তা দেশের প্রতিটি মানুষের সমান অধিকারের বস্তু। ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) এই সত্যকে অত্যন্ত স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন। তিনি কসম করে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই এই (রাষ্ট্রীয়) সম্পদে কেউ কারও চেয়ে বেশি হকদার নয়। আমিও কারও চেয়ে বেশি হকদার নই। এই সম্পদে সব মুসলমানের অধিকার আছে, তবে মালিকানাধীন দাস ছাড়া।’ এই ঘোষণা থেকে স্পষ্ট হয়, জনসম্পদ হলো একধরনের সমষ্টিগত মালিকানা, যার সুষ্ঠু বণ্টন ও ব্যবহার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের পবিত্র দায়িত্ব। এই সম্পদ থেকে একজন যোগ্য ব্যক্তি যাতে তার প্রাপ্য সম্মান ও অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়, তার জন্য আল্লাহ তাআলা সুস্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন আমানতগুলো হকদারদের কাছে পৌঁছে দিতে।’ (সুরা নিসা: ৫৮)
জনসম্পদের খেয়ানত জঘন্য পাপ
রাষ্ট্রীয় সম্পদের খেয়ানত বা আত্মসাৎ করা শুধু অর্থনৈতিক দুর্নীতি নয়, বরং এটি লাখো মানুষের অধিকার হরণের শামিল। ইসলামে এই পাপকে অত্যন্ত জঘন্য হিসেবে গণ্য করা হয়। কারণ, এটি সরাসরি ‘হক্কুল ইবাদ’ বা বান্দার হক নষ্ট করার অপরাধ। আল্লাহ তাআলা বান্দার ব্যক্তিগত পাপ ক্ষমা করলেও বান্দার হক নষ্ট করার পাপ বান্দা নিজে ক্ষমা না করলে তিনি ক্ষমা করেন না। তাই যে ব্যক্তি রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাৎ করে, সে দেশের সব মানুষের কাছে ঋণী হয়ে যায়, যার থেকে মুক্তি পাওয়া অত্যন্ত কঠিন। এই পাপের মাধ্যমে সমাজে বৈষম্য, অস্থিরতা ও অনাস্থা জন্ম নেয়, যা একটি জাতির জন্য ধ্বংস ডেকে আনে। একজন শাসক বা প্রশাসক যখন জনসম্পদের রক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে খেয়ানত করেন, তখন তিনি আল্লাহর কাছেও চরম বেইমান হিসেবে গণ্য হন।
জনসম্পদ আত্মসাতের ভয়াবহ পরিণতি
জনসম্পদ আত্মসাতের পরিণাম পরকালে হবে অত্যন্ত ভয়াবহ ও লোমহর্ষক। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘কোনো নবীর জন্য শোভনীয় নয় যে তিনি খেয়ানত করবেন। আর যে ব্যক্তি খেয়ানত করবে, সে কিয়ামতের দিন সেই খেয়ানত করা বস্তু নিয়ে উপস্থিত হবে। অতঃপর প্রত্যেকেই পরিপূর্ণভাবে পাবে, যা সে অর্জন করেছে। আর তাদের প্রতি কোনো অন্যায় করা হবে না।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৬১)। এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, কেয়ামতের দিন প্রত্যেককে তার কৃতকর্মের জন্য ব্যক্তিগতভাবে জবাবদিহি করতে হবে এবং আত্মসাৎকৃত সম্পদকে কাঁধে বহন করে আল্লাহর সামনে হাজির হতে হবে।
হাদিসের বর্ণনায় এই পরিণতি আরও পরিষ্কার হয়ে ওঠে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘কিছু মানুষ আল্লাহর দেওয়া সম্পদ অন্যায়ভাবে ব্যয় করে, কিয়ামতের দিন তাদের জন্য জাহান্নাম নির্ধারিত।’ (সহিহ্ বুখারি: ৩১১৮)। আরেকটি হাদিসে তিনি আত্মসাৎকারীদের শাস্তির এক মর্মান্তিক চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘যাঁর হাতে আমার প্রাণ, সেই সত্তার কসম, সদকার মাল থেকে স্বল্প পরিমাণও যে আত্মসাৎ করবে, সে তা কাঁধে করে কেয়ামতের দিন উপস্থিত হবে। সেটা উট হলে তার আওয়াজ করবে, গাভি হলে হাম্বা হাম্বা করবে আর বকরি হলে ভ্যাঁ ভ্যাঁ করতে থাকবে।’ এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, রাষ্ট্রীয় সম্পদের খেয়ানত আল্লাহ কত কঠিন অপরাধ হিসেবে দেখেন।
এক সূক্ষ্ম খেয়ানত
রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের সময় কোনো ব্যক্তি সামান্য উপহার বা হাদিয়া গ্রহণ করলেও তা ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে এক সূক্ষ্ম খেয়ানত। এর কারণ হলো, এই উপহার তার ব্যক্তিগত যোগ্যতা বা গুণের জন্য নয়, বরং তার পদ ও ক্ষমতার কারণে দেওয়া হয়। এই হাদিয়া এক প্রকারের ঘুষ; যা দিয়ে প্রভাব বিস্তার বা পক্ষপাতিত্বের চেষ্টা করা হয়। রাসুল (সা.)-এর যুগের একটি ঘটনা এ ক্ষেত্রে অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে আছে।
রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের সময় কোনো ব্যক্তি সামান্য উপহার বা হাদিয়া গ্রহণ করলেও তা ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে এক সূক্ষ্ম খেয়ানত।
আবু হুমাইদ সাঈদ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) সদকা সংগ্রহের কাজে ইবনে উতবিয়া নামক এক ব্যক্তিকে নিযুক্ত করেন। সে কাজ শেষে ফিরে এসে কিছু সম্পদ দেখিয়ে বলল, ‘এগুলো আপনাদের, আর এগুলো আমাকে হাদিয়া দেওয়া হয়েছে।’ রাসুল (সা.) তখন তার এ কথায় ভীষণ ক্রোধান্বিত হয়ে বলেন, ‘সে তার বাবার ঘরে কিংবা তার মায়ের ঘরে বসে থাকল না কেন? তখন সে দেখতে পেত, তাকে কেউ হাদিয়া দেয় কি না।’
এই ঘটনা থেকে বোঝা যায়, কোনো সরকারি বা জনপদে অধিষ্ঠিত থাকার কারণে প্রাপ্ত যেকোনো উপহারকে প্রত্যাখ্যান করা আবশ্যক। অন্যথায় তা দুর্নীতির পথ খুলে দেয় এবং একজন যোগ্য ও সৎ ব্যক্তি তার প্রাপ্য সম্মান থেকে বঞ্চিত হয়। রাসুল (সা.)-এর এই উক্তি প্রত্যেক দায়িত্বশীল ব্যক্তির জন্য এক কঠিন সতর্কবার্তা।

জনসম্পদকে আমানত হিসেবে দেখা, এর প্রতি যত্নশীল হওয়া এবং এর অপব্যবহার থেকে বিরত থাকা ইমানের অপরিহার্য অংশ। এটি একজন মুমিনের সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্যের পরিচায়ক। এই সম্পদের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ নৈতিক ও ইমানি কর্তব্য। ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে রাষ্ট্রীয় সম্পদকে জনগণের কাছে আল্লাহর দেওয়া আমানত হিসেবে দেখা হয়, যার খেয়ানতকারীকে ইহকাল ও পরকালে কঠিন জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।
জনসম্পদ সবার হক
ইসলামের মৌলিক নীতি হলো, রাষ্ট্রীয় সম্পদ কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর সম্পত্তি নয়, বরং তা দেশের প্রতিটি মানুষের সমান অধিকারের বস্তু। ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) এই সত্যকে অত্যন্ত স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন। তিনি কসম করে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই এই (রাষ্ট্রীয়) সম্পদে কেউ কারও চেয়ে বেশি হকদার নয়। আমিও কারও চেয়ে বেশি হকদার নই। এই সম্পদে সব মুসলমানের অধিকার আছে, তবে মালিকানাধীন দাস ছাড়া।’ এই ঘোষণা থেকে স্পষ্ট হয়, জনসম্পদ হলো একধরনের সমষ্টিগত মালিকানা, যার সুষ্ঠু বণ্টন ও ব্যবহার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের পবিত্র দায়িত্ব। এই সম্পদ থেকে একজন যোগ্য ব্যক্তি যাতে তার প্রাপ্য সম্মান ও অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়, তার জন্য আল্লাহ তাআলা সুস্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন আমানতগুলো হকদারদের কাছে পৌঁছে দিতে।’ (সুরা নিসা: ৫৮)
জনসম্পদের খেয়ানত জঘন্য পাপ
রাষ্ট্রীয় সম্পদের খেয়ানত বা আত্মসাৎ করা শুধু অর্থনৈতিক দুর্নীতি নয়, বরং এটি লাখো মানুষের অধিকার হরণের শামিল। ইসলামে এই পাপকে অত্যন্ত জঘন্য হিসেবে গণ্য করা হয়। কারণ, এটি সরাসরি ‘হক্কুল ইবাদ’ বা বান্দার হক নষ্ট করার অপরাধ। আল্লাহ তাআলা বান্দার ব্যক্তিগত পাপ ক্ষমা করলেও বান্দার হক নষ্ট করার পাপ বান্দা নিজে ক্ষমা না করলে তিনি ক্ষমা করেন না। তাই যে ব্যক্তি রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাৎ করে, সে দেশের সব মানুষের কাছে ঋণী হয়ে যায়, যার থেকে মুক্তি পাওয়া অত্যন্ত কঠিন। এই পাপের মাধ্যমে সমাজে বৈষম্য, অস্থিরতা ও অনাস্থা জন্ম নেয়, যা একটি জাতির জন্য ধ্বংস ডেকে আনে। একজন শাসক বা প্রশাসক যখন জনসম্পদের রক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে খেয়ানত করেন, তখন তিনি আল্লাহর কাছেও চরম বেইমান হিসেবে গণ্য হন।
জনসম্পদ আত্মসাতের ভয়াবহ পরিণতি
জনসম্পদ আত্মসাতের পরিণাম পরকালে হবে অত্যন্ত ভয়াবহ ও লোমহর্ষক। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘কোনো নবীর জন্য শোভনীয় নয় যে তিনি খেয়ানত করবেন। আর যে ব্যক্তি খেয়ানত করবে, সে কিয়ামতের দিন সেই খেয়ানত করা বস্তু নিয়ে উপস্থিত হবে। অতঃপর প্রত্যেকেই পরিপূর্ণভাবে পাবে, যা সে অর্জন করেছে। আর তাদের প্রতি কোনো অন্যায় করা হবে না।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৬১)। এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, কেয়ামতের দিন প্রত্যেককে তার কৃতকর্মের জন্য ব্যক্তিগতভাবে জবাবদিহি করতে হবে এবং আত্মসাৎকৃত সম্পদকে কাঁধে বহন করে আল্লাহর সামনে হাজির হতে হবে।
হাদিসের বর্ণনায় এই পরিণতি আরও পরিষ্কার হয়ে ওঠে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘কিছু মানুষ আল্লাহর দেওয়া সম্পদ অন্যায়ভাবে ব্যয় করে, কিয়ামতের দিন তাদের জন্য জাহান্নাম নির্ধারিত।’ (সহিহ্ বুখারি: ৩১১৮)। আরেকটি হাদিসে তিনি আত্মসাৎকারীদের শাস্তির এক মর্মান্তিক চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘যাঁর হাতে আমার প্রাণ, সেই সত্তার কসম, সদকার মাল থেকে স্বল্প পরিমাণও যে আত্মসাৎ করবে, সে তা কাঁধে করে কেয়ামতের দিন উপস্থিত হবে। সেটা উট হলে তার আওয়াজ করবে, গাভি হলে হাম্বা হাম্বা করবে আর বকরি হলে ভ্যাঁ ভ্যাঁ করতে থাকবে।’ এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, রাষ্ট্রীয় সম্পদের খেয়ানত আল্লাহ কত কঠিন অপরাধ হিসেবে দেখেন।
এক সূক্ষ্ম খেয়ানত
রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের সময় কোনো ব্যক্তি সামান্য উপহার বা হাদিয়া গ্রহণ করলেও তা ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে এক সূক্ষ্ম খেয়ানত। এর কারণ হলো, এই উপহার তার ব্যক্তিগত যোগ্যতা বা গুণের জন্য নয়, বরং তার পদ ও ক্ষমতার কারণে দেওয়া হয়। এই হাদিয়া এক প্রকারের ঘুষ; যা দিয়ে প্রভাব বিস্তার বা পক্ষপাতিত্বের চেষ্টা করা হয়। রাসুল (সা.)-এর যুগের একটি ঘটনা এ ক্ষেত্রে অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে আছে।
রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের সময় কোনো ব্যক্তি সামান্য উপহার বা হাদিয়া গ্রহণ করলেও তা ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে এক সূক্ষ্ম খেয়ানত।
আবু হুমাইদ সাঈদ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) সদকা সংগ্রহের কাজে ইবনে উতবিয়া নামক এক ব্যক্তিকে নিযুক্ত করেন। সে কাজ শেষে ফিরে এসে কিছু সম্পদ দেখিয়ে বলল, ‘এগুলো আপনাদের, আর এগুলো আমাকে হাদিয়া দেওয়া হয়েছে।’ রাসুল (সা.) তখন তার এ কথায় ভীষণ ক্রোধান্বিত হয়ে বলেন, ‘সে তার বাবার ঘরে কিংবা তার মায়ের ঘরে বসে থাকল না কেন? তখন সে দেখতে পেত, তাকে কেউ হাদিয়া দেয় কি না।’
এই ঘটনা থেকে বোঝা যায়, কোনো সরকারি বা জনপদে অধিষ্ঠিত থাকার কারণে প্রাপ্ত যেকোনো উপহারকে প্রত্যাখ্যান করা আবশ্যক। অন্যথায় তা দুর্নীতির পথ খুলে দেয় এবং একজন যোগ্য ও সৎ ব্যক্তি তার প্রাপ্য সম্মান থেকে বঞ্চিত হয়। রাসুল (সা.)-এর এই উক্তি প্রত্যেক দায়িত্বশীল ব্যক্তির জন্য এক কঠিন সতর্কবার্তা।

বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সম্পন্ন করার চূড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর বেলা ২টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এই জানাজায় ইমামতি করবেন জাতীয় মসজিদ...
৮ ঘণ্টা আগে
জীবনে প্রিয়জন হারানো এক অপূরণীয় বেদনা। এই কঠিন মুহূর্তে মানুষ কীভাবে আচরণ করবে, কেমনভাবে শোক প্রকাশ করবে—সেই বিষয়ে ইসলাম দিয়েছে পরিপূর্ণ দিকনির্দেশনা। ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি হলো—শোক প্রকাশে ভারসাম্য রাখা, কষ্টকে অস্বীকার না করা, আবার সীমালঙ্ঘনও না করা।
১২ ঘণ্টা আগে
আজ মঙ্গলবার ভোরে যখন কুয়াশাভেজা প্রকৃতিতে ফজরের আজান ধ্বনিত হচ্ছিল, এর ঠিক কিছু পরেই চিরদিনের জন্য চোখ বুজলেন বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব খালেদা জিয়া। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি শুধু একজন সফল প্রধানমন্ত্রীই ছিলেন না, বরং মুসলিম উম্মাহর স্বার্থরক্ষা এবং ইসলামি মূল্যবোধকে...
১২ ঘণ্টা আগে
মানুষের জন্ম যেমন অবশ্যম্ভাবী, তেমনি তার মৃত্যুও পৃথিবীর এক অমোঘ সত্য। জীবনে চলার পথে যত সাফল্য, ব্যস্ততা বা আকাঙ্ক্ষা থাকুক; মৃত্যুর মুহূর্তে সবকিছু থেমে যায়। ইসলাম এই বাস্তবতাকে অত্যন্ত গভীরভাবে তুলে ধরেছে এবং আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছে যে প্রতিটি প্রাণী একদিন তার প্রভুর কাছে ফিরে যাবে।
১৫ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সম্পন্ন করার চূড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর বেলা ২টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এই জানাজায় ইমামতি করবেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আবদুল মালেক।
মঙ্গলবার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
মির্জা ফখরুল জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। বুধবার বেলা ২টায় পার্লামেন্ট ভবনের দক্ষিণ প্লাজা ও মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এলাকায় জানাজা সম্পন্ন হবে। জানাজা শেষে শেরেবাংলা নগরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশেই তাঁকে সমাহিত করা হবে।

বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সম্পন্ন করার চূড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর বেলা ২টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এই জানাজায় ইমামতি করবেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আবদুল মালেক।
মঙ্গলবার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
মির্জা ফখরুল জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। বুধবার বেলা ২টায় পার্লামেন্ট ভবনের দক্ষিণ প্লাজা ও মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এলাকায় জানাজা সম্পন্ন হবে। জানাজা শেষে শেরেবাংলা নগরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশেই তাঁকে সমাহিত করা হবে।

জনসম্পদকে আমানত হিসেবে দেখা, এর প্রতি যত্নশীল হওয়া এবং এর অপব্যবহার থেকে বিরত থাকা ইমানের অপরিহার্য অংশ। এটি একজন মুমিনের সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্যের পরিচায়ক। এই সম্পদের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ নৈতিক ও ইমানি কর্তব্য।
১৫ আগস্ট ২০২৫
জীবনে প্রিয়জন হারানো এক অপূরণীয় বেদনা। এই কঠিন মুহূর্তে মানুষ কীভাবে আচরণ করবে, কেমনভাবে শোক প্রকাশ করবে—সেই বিষয়ে ইসলাম দিয়েছে পরিপূর্ণ দিকনির্দেশনা। ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি হলো—শোক প্রকাশে ভারসাম্য রাখা, কষ্টকে অস্বীকার না করা, আবার সীমালঙ্ঘনও না করা।
১২ ঘণ্টা আগে
আজ মঙ্গলবার ভোরে যখন কুয়াশাভেজা প্রকৃতিতে ফজরের আজান ধ্বনিত হচ্ছিল, এর ঠিক কিছু পরেই চিরদিনের জন্য চোখ বুজলেন বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব খালেদা জিয়া। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি শুধু একজন সফল প্রধানমন্ত্রীই ছিলেন না, বরং মুসলিম উম্মাহর স্বার্থরক্ষা এবং ইসলামি মূল্যবোধকে...
১২ ঘণ্টা আগে
মানুষের জন্ম যেমন অবশ্যম্ভাবী, তেমনি তার মৃত্যুও পৃথিবীর এক অমোঘ সত্য। জীবনে চলার পথে যত সাফল্য, ব্যস্ততা বা আকাঙ্ক্ষা থাকুক; মৃত্যুর মুহূর্তে সবকিছু থেমে যায়। ইসলাম এই বাস্তবতাকে অত্যন্ত গভীরভাবে তুলে ধরেছে এবং আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছে যে প্রতিটি প্রাণী একদিন তার প্রভুর কাছে ফিরে যাবে।
১৫ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনে প্রিয়জন হারানো এক অপূরণীয় বেদনা। এই কঠিন মুহূর্তে মানুষ কীভাবে আচরণ করবে, কেমনভাবে শোক প্রকাশ করবে—সেই বিষয়ে ইসলাম দিয়েছে পরিপূর্ণ দিকনির্দেশনা। ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি হলো—শোক প্রকাশে ভারসাম্য রাখা, কষ্টকে অস্বীকার না করা, আবার সীমালঙ্ঘনও না করা।
ইসলাম এ বিপদে ধৈর্য ও আল্লাহর সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট থাকার শিক্ষা দেয়। তবে কান্না করাকে নিষেধ করেনি, বরং তা স্বাভাবিক ও মানবিক অনুভূতির প্রকাশ হিসেবে বিবেচিত। রাসুলুল্লাহও (সা.) কেঁদেছেন তাঁর সন্তান ইবরাহিম (রা.)-এর মৃত্যুর সময়।
সাহাবি আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) বিস্ময় প্রকাশ করলে নবীজি (সা.) বলেন, ‘এ কান্না স্নেহ-ভালোবাসার প্রকাশ। আমার হৃদয় বেদনাহত, চোখ দুটো সিক্ত, তবে আমি বলছি সেই কথাই, যা আমার রবকে সন্তুষ্ট করে। ইবরাহিম, তোমার বিচ্ছেদে আমরা শোকাহত।’ (সহিহ বুখারি)
ইসলাম কান্নাকে মানবিক বললেও অতিরিক্ত বিলাপ, উচ্চ স্বরে চিৎকার, গায়ে চপেটাঘাত, জামাকাপড় ছিঁড়ে ফেলা বা আকুতি-মিনতি করতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মৃতের জন্য বিলাপ করা জাহিলি যুগের প্রথা। বিলাপকারী যদি মৃত্যুর আগে তওবা না করে, তবে কিয়ামতের দিন তাকে আগুনের পোশাক ও আলকাতরার চাদর পরানো হবে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ)

জীবনে প্রিয়জন হারানো এক অপূরণীয় বেদনা। এই কঠিন মুহূর্তে মানুষ কীভাবে আচরণ করবে, কেমনভাবে শোক প্রকাশ করবে—সেই বিষয়ে ইসলাম দিয়েছে পরিপূর্ণ দিকনির্দেশনা। ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি হলো—শোক প্রকাশে ভারসাম্য রাখা, কষ্টকে অস্বীকার না করা, আবার সীমালঙ্ঘনও না করা।
ইসলাম এ বিপদে ধৈর্য ও আল্লাহর সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট থাকার শিক্ষা দেয়। তবে কান্না করাকে নিষেধ করেনি, বরং তা স্বাভাবিক ও মানবিক অনুভূতির প্রকাশ হিসেবে বিবেচিত। রাসুলুল্লাহও (সা.) কেঁদেছেন তাঁর সন্তান ইবরাহিম (রা.)-এর মৃত্যুর সময়।
সাহাবি আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) বিস্ময় প্রকাশ করলে নবীজি (সা.) বলেন, ‘এ কান্না স্নেহ-ভালোবাসার প্রকাশ। আমার হৃদয় বেদনাহত, চোখ দুটো সিক্ত, তবে আমি বলছি সেই কথাই, যা আমার রবকে সন্তুষ্ট করে। ইবরাহিম, তোমার বিচ্ছেদে আমরা শোকাহত।’ (সহিহ বুখারি)
ইসলাম কান্নাকে মানবিক বললেও অতিরিক্ত বিলাপ, উচ্চ স্বরে চিৎকার, গায়ে চপেটাঘাত, জামাকাপড় ছিঁড়ে ফেলা বা আকুতি-মিনতি করতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মৃতের জন্য বিলাপ করা জাহিলি যুগের প্রথা। বিলাপকারী যদি মৃত্যুর আগে তওবা না করে, তবে কিয়ামতের দিন তাকে আগুনের পোশাক ও আলকাতরার চাদর পরানো হবে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ)

জনসম্পদকে আমানত হিসেবে দেখা, এর প্রতি যত্নশীল হওয়া এবং এর অপব্যবহার থেকে বিরত থাকা ইমানের অপরিহার্য অংশ। এটি একজন মুমিনের সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্যের পরিচায়ক। এই সম্পদের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ নৈতিক ও ইমানি কর্তব্য।
১৫ আগস্ট ২০২৫
বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সম্পন্ন করার চূড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর বেলা ২টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এই জানাজায় ইমামতি করবেন জাতীয় মসজিদ...
৮ ঘণ্টা আগে
আজ মঙ্গলবার ভোরে যখন কুয়াশাভেজা প্রকৃতিতে ফজরের আজান ধ্বনিত হচ্ছিল, এর ঠিক কিছু পরেই চিরদিনের জন্য চোখ বুজলেন বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব খালেদা জিয়া। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি শুধু একজন সফল প্রধানমন্ত্রীই ছিলেন না, বরং মুসলিম উম্মাহর স্বার্থরক্ষা এবং ইসলামি মূল্যবোধকে...
১২ ঘণ্টা আগে
মানুষের জন্ম যেমন অবশ্যম্ভাবী, তেমনি তার মৃত্যুও পৃথিবীর এক অমোঘ সত্য। জীবনে চলার পথে যত সাফল্য, ব্যস্ততা বা আকাঙ্ক্ষা থাকুক; মৃত্যুর মুহূর্তে সবকিছু থেমে যায়। ইসলাম এই বাস্তবতাকে অত্যন্ত গভীরভাবে তুলে ধরেছে এবং আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছে যে প্রতিটি প্রাণী একদিন তার প্রভুর কাছে ফিরে যাবে।
১৫ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

আজ মঙ্গলবার ভোরে যখন কুয়াশাভেজা প্রকৃতিতে ফজরের আজান ধ্বনিত হচ্ছিল, এর ঠিক কিছু পরেই চিরদিনের জন্য চোখ বুজলেন বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব খালেদা জিয়া। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি শুধু একজন সফল প্রধানমন্ত্রীই ছিলেন না, বরং মুসলিম উম্মাহর স্বার্থরক্ষা এবং ইসলামি মূল্যবোধকে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করার অন্যতম এক বাতিঘর ছিলেন।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর যে কজন রাজনৈতিক নেতৃত্ব ধর্মীয় চেতনা ও মুসলমানদের অধিকার রক্ষায় আপসহীন ভূমিকা রেখেছেন, খালেদা জিয়ার নাম সেখানে অনেকটা অগ্রভাগেই থাকবে।
খালেদা জিয়া শুধু রাজনীতির ময়দানেই বিচরণ করেননি, তিনি অন্তরে লালন করতেন বাংলাদেশি মুসলিম জাতীয়তাবাদের আদর্শ। গৃহবধূ থেকে দেশের শীর্ষ নেতৃত্বে উঠে আসার দীর্ঘ লড়াইয়ে তিনি সব সময় আলেমসমাজকে পরম মমতায় কাছে টেনে নিয়েছেন।
১৯৯১ সালে এরশাদ সরকারের পতনের পর যখন নানামুখী রাজনৈতিক চাপ ছিল, তখন খালেদা জিয়া দৃঢ়তার সঙ্গে সংবিধানের প্রস্তাবনায় ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ এবং ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ বজায় রাখার পক্ষে অবস্থান নেন। ২০০৫ সালের সংসদীয় কার্যবিবরণী সাক্ষ্য দেয়, তিনি বারবার সংসদে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের মর্যাদা রক্ষার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছিলেন।
আলেমসমাজ ও মাদ্রাসাশিক্ষার্থীদের হৃদয়ে খালেদা জিয়া অমর হয়ে থাকবেন তাঁর শিক্ষা সংস্কারের জন্য।
বায়তুল মোকাররম মসজিদের সংস্কার, জাতীয় ঈদগাহের আধুনিকায়ন এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম-মুয়াজ্জিন প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের পরিধি বাড়ানো ছিল তাঁর নিয়মিত কাজের অংশ। আল্লাহর ওলিদের মাজার রক্ষণাবেক্ষণেও তিনি ছিলেন অত্যন্ত আন্তরিক। পাশাপাশি হজযাত্রীদের যাতায়াত সহজ করতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসকে শক্তিশালী করা এবং সৌদি সরকারের সঙ্গে সফল কূটনীতির মাধ্যমে ভিসা সমস্যার সমাধান করেছিলেন তিনি।
খালেদা জিয়ার শাসনামলেই বাংলাদেশে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিং ও ইসলামি আর্থিক ব্যবস্থা দ্রুত বিস্তৃত হয়। মধ্যবিত্ত মানুষের কাছে ইসলামি ব্যাংকিংকে আস্থার জায়গায় নিয়ে যেতে তাঁর সরকার নীতিগত সহায়তা প্রদান করে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ওআইসিসহ সৌদি আরব, মালয়েশিয়া ও ব্রুনাইয়ের মতো মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছিল।
২০০৫ সালে ইউরোপে নবীজি (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর কার্টুন প্রকাশিত হলে তাঁর সরকার রাষ্ট্রীয়ভাবে কঠোর নিন্দা জানিয়েছিল।
আজ ফজরের পর তিনি যখন মহান রবের ডাকে সাড়া দিয়ে চলে গেলেন, তখন পেছনে রেখে গেছেন এমন এক কর্মময় জীবন, যা এ দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলামের মর্যাদা রক্ষা এবং ইসলামি প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার যে বীজ তিনি বপন করেছিলেন, তা আজ এক বিশাল মহিরুহে পরিণত হয়েছে।
আল্লাহ তাঁকে তাঁর সকল নেক আমল কবুল করে এবং ভুলত্রুটি ক্ষমা করে জান্নাতুল ফিরদাউসের উচ্চ মাকাম দান করুন।

আজ মঙ্গলবার ভোরে যখন কুয়াশাভেজা প্রকৃতিতে ফজরের আজান ধ্বনিত হচ্ছিল, এর ঠিক কিছু পরেই চিরদিনের জন্য চোখ বুজলেন বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব খালেদা জিয়া। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি শুধু একজন সফল প্রধানমন্ত্রীই ছিলেন না, বরং মুসলিম উম্মাহর স্বার্থরক্ষা এবং ইসলামি মূল্যবোধকে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করার অন্যতম এক বাতিঘর ছিলেন।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর যে কজন রাজনৈতিক নেতৃত্ব ধর্মীয় চেতনা ও মুসলমানদের অধিকার রক্ষায় আপসহীন ভূমিকা রেখেছেন, খালেদা জিয়ার নাম সেখানে অনেকটা অগ্রভাগেই থাকবে।
খালেদা জিয়া শুধু রাজনীতির ময়দানেই বিচরণ করেননি, তিনি অন্তরে লালন করতেন বাংলাদেশি মুসলিম জাতীয়তাবাদের আদর্শ। গৃহবধূ থেকে দেশের শীর্ষ নেতৃত্বে উঠে আসার দীর্ঘ লড়াইয়ে তিনি সব সময় আলেমসমাজকে পরম মমতায় কাছে টেনে নিয়েছেন।
১৯৯১ সালে এরশাদ সরকারের পতনের পর যখন নানামুখী রাজনৈতিক চাপ ছিল, তখন খালেদা জিয়া দৃঢ়তার সঙ্গে সংবিধানের প্রস্তাবনায় ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ এবং ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ বজায় রাখার পক্ষে অবস্থান নেন। ২০০৫ সালের সংসদীয় কার্যবিবরণী সাক্ষ্য দেয়, তিনি বারবার সংসদে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের মর্যাদা রক্ষার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছিলেন।
আলেমসমাজ ও মাদ্রাসাশিক্ষার্থীদের হৃদয়ে খালেদা জিয়া অমর হয়ে থাকবেন তাঁর শিক্ষা সংস্কারের জন্য।
বায়তুল মোকাররম মসজিদের সংস্কার, জাতীয় ঈদগাহের আধুনিকায়ন এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম-মুয়াজ্জিন প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের পরিধি বাড়ানো ছিল তাঁর নিয়মিত কাজের অংশ। আল্লাহর ওলিদের মাজার রক্ষণাবেক্ষণেও তিনি ছিলেন অত্যন্ত আন্তরিক। পাশাপাশি হজযাত্রীদের যাতায়াত সহজ করতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসকে শক্তিশালী করা এবং সৌদি সরকারের সঙ্গে সফল কূটনীতির মাধ্যমে ভিসা সমস্যার সমাধান করেছিলেন তিনি।
খালেদা জিয়ার শাসনামলেই বাংলাদেশে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিং ও ইসলামি আর্থিক ব্যবস্থা দ্রুত বিস্তৃত হয়। মধ্যবিত্ত মানুষের কাছে ইসলামি ব্যাংকিংকে আস্থার জায়গায় নিয়ে যেতে তাঁর সরকার নীতিগত সহায়তা প্রদান করে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ওআইসিসহ সৌদি আরব, মালয়েশিয়া ও ব্রুনাইয়ের মতো মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছিল।
২০০৫ সালে ইউরোপে নবীজি (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর কার্টুন প্রকাশিত হলে তাঁর সরকার রাষ্ট্রীয়ভাবে কঠোর নিন্দা জানিয়েছিল।
আজ ফজরের পর তিনি যখন মহান রবের ডাকে সাড়া দিয়ে চলে গেলেন, তখন পেছনে রেখে গেছেন এমন এক কর্মময় জীবন, যা এ দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলামের মর্যাদা রক্ষা এবং ইসলামি প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার যে বীজ তিনি বপন করেছিলেন, তা আজ এক বিশাল মহিরুহে পরিণত হয়েছে।
আল্লাহ তাঁকে তাঁর সকল নেক আমল কবুল করে এবং ভুলত্রুটি ক্ষমা করে জান্নাতুল ফিরদাউসের উচ্চ মাকাম দান করুন।

জনসম্পদকে আমানত হিসেবে দেখা, এর প্রতি যত্নশীল হওয়া এবং এর অপব্যবহার থেকে বিরত থাকা ইমানের অপরিহার্য অংশ। এটি একজন মুমিনের সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্যের পরিচায়ক। এই সম্পদের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ নৈতিক ও ইমানি কর্তব্য।
১৫ আগস্ট ২০২৫
বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সম্পন্ন করার চূড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর বেলা ২টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এই জানাজায় ইমামতি করবেন জাতীয় মসজিদ...
৮ ঘণ্টা আগে
জীবনে প্রিয়জন হারানো এক অপূরণীয় বেদনা। এই কঠিন মুহূর্তে মানুষ কীভাবে আচরণ করবে, কেমনভাবে শোক প্রকাশ করবে—সেই বিষয়ে ইসলাম দিয়েছে পরিপূর্ণ দিকনির্দেশনা। ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি হলো—শোক প্রকাশে ভারসাম্য রাখা, কষ্টকে অস্বীকার না করা, আবার সীমালঙ্ঘনও না করা।
১২ ঘণ্টা আগে
মানুষের জন্ম যেমন অবশ্যম্ভাবী, তেমনি তার মৃত্যুও পৃথিবীর এক অমোঘ সত্য। জীবনে চলার পথে যত সাফল্য, ব্যস্ততা বা আকাঙ্ক্ষা থাকুক; মৃত্যুর মুহূর্তে সবকিছু থেমে যায়। ইসলাম এই বাস্তবতাকে অত্যন্ত গভীরভাবে তুলে ধরেছে এবং আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছে যে প্রতিটি প্রাণী একদিন তার প্রভুর কাছে ফিরে যাবে।
১৫ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

মানুষের জন্ম যেমন অবশ্যম্ভাবী, তেমনি তার মৃত্যুও পৃথিবীর এক অমোঘ সত্য। জীবনে চলার পথে যত সাফল্য, ব্যস্ততা বা আকাঙ্ক্ষা থাকুক; মৃত্যুর মুহূর্তে সবকিছু থেমে যায়। ইসলাম এই বাস্তবতাকে অত্যন্ত গভীরভাবে তুলে ধরেছে এবং আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছে যে প্রতিটি প্রাণী একদিন তার প্রভুর কাছে ফিরে যাবে।
মৃত্যু অবধারিত সত্য। তা থেকে পালানোর কোনো পথ নেই। কোনো বস্তু জীবনের অস্তিত্ব লাভ করলে তার মৃত্যু সুনিশ্চিত। কোরআন ও হাদিসে এ ব্যাপারে অসংখ্য বর্ণনা রয়েছে।
কেউ যখন মারা যায়, তার মৃত্যুর খবর শুনলে একটি দোয়া পড়তে হয়, দোয়াটি বর্ণিত হয়েছে পবিত্র কোরআনের সুরা বাকারার ১৫৬ নম্বর আয়াতে।
দোয়াটি হলো: ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন, আল্লাহুম্মা আজিরনি ফি মুসিবাতি; ওয়া আখলিফ-লি খাইরাম মিনহা।’
দোয়ার অর্থ: ‘আমরা আল্লাহর এবং নিশ্চয় আল্লাহর কাছেই ফিরে যাব। হে আল্লাহ, আমাকে আমার এই বিপদে বিনিময় দান করুন এবং আমার জন্য এর চেয়ে উত্তম ব্যবস্থা করে দিন।’

মানুষের জন্ম যেমন অবশ্যম্ভাবী, তেমনি তার মৃত্যুও পৃথিবীর এক অমোঘ সত্য। জীবনে চলার পথে যত সাফল্য, ব্যস্ততা বা আকাঙ্ক্ষা থাকুক; মৃত্যুর মুহূর্তে সবকিছু থেমে যায়। ইসলাম এই বাস্তবতাকে অত্যন্ত গভীরভাবে তুলে ধরেছে এবং আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছে যে প্রতিটি প্রাণী একদিন তার প্রভুর কাছে ফিরে যাবে।
মৃত্যু অবধারিত সত্য। তা থেকে পালানোর কোনো পথ নেই। কোনো বস্তু জীবনের অস্তিত্ব লাভ করলে তার মৃত্যু সুনিশ্চিত। কোরআন ও হাদিসে এ ব্যাপারে অসংখ্য বর্ণনা রয়েছে।
কেউ যখন মারা যায়, তার মৃত্যুর খবর শুনলে একটি দোয়া পড়তে হয়, দোয়াটি বর্ণিত হয়েছে পবিত্র কোরআনের সুরা বাকারার ১৫৬ নম্বর আয়াতে।
দোয়াটি হলো: ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন, আল্লাহুম্মা আজিরনি ফি মুসিবাতি; ওয়া আখলিফ-লি খাইরাম মিনহা।’
দোয়ার অর্থ: ‘আমরা আল্লাহর এবং নিশ্চয় আল্লাহর কাছেই ফিরে যাব। হে আল্লাহ, আমাকে আমার এই বিপদে বিনিময় দান করুন এবং আমার জন্য এর চেয়ে উত্তম ব্যবস্থা করে দিন।’

জনসম্পদকে আমানত হিসেবে দেখা, এর প্রতি যত্নশীল হওয়া এবং এর অপব্যবহার থেকে বিরত থাকা ইমানের অপরিহার্য অংশ। এটি একজন মুমিনের সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্যের পরিচায়ক। এই সম্পদের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ নৈতিক ও ইমানি কর্তব্য।
১৫ আগস্ট ২০২৫
বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সম্পন্ন করার চূড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর বেলা ২টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এই জানাজায় ইমামতি করবেন জাতীয় মসজিদ...
৮ ঘণ্টা আগে
জীবনে প্রিয়জন হারানো এক অপূরণীয় বেদনা। এই কঠিন মুহূর্তে মানুষ কীভাবে আচরণ করবে, কেমনভাবে শোক প্রকাশ করবে—সেই বিষয়ে ইসলাম দিয়েছে পরিপূর্ণ দিকনির্দেশনা। ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি হলো—শোক প্রকাশে ভারসাম্য রাখা, কষ্টকে অস্বীকার না করা, আবার সীমালঙ্ঘনও না করা।
১২ ঘণ্টা আগে
আজ মঙ্গলবার ভোরে যখন কুয়াশাভেজা প্রকৃতিতে ফজরের আজান ধ্বনিত হচ্ছিল, এর ঠিক কিছু পরেই চিরদিনের জন্য চোখ বুজলেন বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব খালেদা জিয়া। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি শুধু একজন সফল প্রধানমন্ত্রীই ছিলেন না, বরং মুসলিম উম্মাহর স্বার্থরক্ষা এবং ইসলামি মূল্যবোধকে...
১২ ঘণ্টা আগে