Ajker Patrika

ইসলামপূর্ব যুগে যেমন ছিল হজের আচার-অনুষ্ঠান

ইজাজুল হক, ঢাকা
ইসলামপূর্ব যুগে যেমন ছিল হজের আচার-অনুষ্ঠান

হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর সময়েই আল্লাহ তাআলা হজের বিধান দিয়েছিলেন। তবে সময়ের সঙ্গে মানুষ তাতে ব্যাপক বিকৃতি সাধন করে। এক সময় কাবাঘরে মূর্তি স্থাপন করে সেই বিকৃতির চূড়ান্ত রূপ দেয়। ইবরাহিম (আ.)-এর পর থেকে ইসলামের আগের এই যুগটিকে ইসলামের ইতিহাসে জাহিলি যুগ হিসেবে চিত্রিত করা হয়। 

তখন আরবের নেতৃস্থানীয় গোত্রগুলো ছোট-ছোট সমমনা গোত্রগুলোকে সঙ্গে নিয়ে মক্কায় হজ করতে রওনা হতো। সেকালের কবিরা গোত্রের বীরদের সাহস, কীর্তি, মর্যাদা, শক্তি ও বদান্যতার প্রশংসা করত। একই সঙ্গে অন্য গোত্রগুলোর কাপুরুষতা, কৃপণতা, দুর্বলতা ইত্যাদি নিয়ে অতিরঞ্জিত বয়ান হাজির করত এবং ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করত। গোত্রগুলোর মধ্যে দান-সদকা ও বদান্যতার প্রতিযোগিতা চলত। 

নিজেদের সেরা প্রমাণ করতে গোত্র সর্দারেরা এখানে-ওখানে বড় বড় কড়াই বসাত। একের পর এক উট জবাই করত। মাংস রান্না করে হজযাত্রীদের মধ্যে বিলিয়ে দিত। এত বদান্যতার পেছনের কারণ ছিল—পুরো আরবে তাদের নাম উচ্চকিত হবে, এই সুপ্ত বাসনা। এই গোত্র এত এত উট জবাই করেছে এবং এত এত মানুষকে খাইয়েছে—এটি জানান দিয়ে মানুষের প্রশংসা কুড়ানোই ছিল গোত্রগুলোর উদ্দেশ্য। পথে পথে গান-বাজনা হতো তখন। অবাধে মাদক গ্রহণ করত মানুষ। অবৈধ যৌনাচার স্বাভাবিক ছিল। আল্লাহর ভয় অন্তরে লালন করেন এমন মানুষের সংখ্যা ছিল নিতান্ত হাতেগোনা। 

তাওয়াফের বিধান সাত চক্করের বদলে এক চক্কর করা হয়েছিল। নারী-পুরুষ উভয়েই সম্পূর্ণ উলঙ্গ হয়ে তাওয়াফ করত তখন। তারা বলত, ‘আমাদের মায়েরা যেভাবে আমাদের জন্ম দিয়েছেন, সেভাবেই আমরা আল্লাহর সামনে হাজির হব।’ 

মাকামে ইবরাহিমে নামাজ আদায়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল হাততালি, বাঁশি বাজানো ও শিঙায় ফুঁক দেওয়ার আচার। তালবিয়া তথা লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইকে আল্লাহর নাম উচ্চারিত হতো ঠিক, তবে এই পবিত্র স্লোগানও বিকৃত করে ফেলা হয়। তালবিয়ায় পৌত্তলিকতার অনুমোদন সংবলিত কথাও যুক্ত করেছিল জাহিলি যুগের মানুষ। তারা তালবিয়ায় বলত, ‘আপনি যাদের অনুমোদন দিয়েছেন তারা ছাড়া আপনার কোনো অংশীদার নেই। আপনি তাদের প্রভু এবং তারা যা কিছুর মালিক তারও প্রভু।’ 

কোরবানি আল্লাহর নামেই দেওয়া হতো ঠিক, তবে কোরবানির পশুর মাংস ও রক্ত কাবার দেয়ালে ছিটানো হতো। তাদের বিশ্বাস ছিল, আল্লাহ রক্ত-মাংস দুটোই চান। হজের মৌসুম হিসেবে পরিচিত চার মাস—শাওয়াল, জিলকদ, জিলহজ ও মহররমেও তাদের অপকর্ম থামত না। এই মাসগুলোতে তারা যুদ্ধ বাঁধাত। পবিত্র মাসে যুদ্ধ বাঁধিয়ে বলত, ‘এই মাসে যুদ্ধ করে নিই, আগামী বছর আরেকটি মাস কাফফারা হিসেবে যুদ্ধ করা থেকে বিরত থাকব।’ 

এক শ্রেণির ধার্মিক ছিল, যারা হজের পথ পাড়ি দেওয়ার পাথেয় জোগাড় না করেই হজ করতে বেরিয়ে পড়ত। পথে পথে ভিক্ষা করতে করতেই তারা মক্কায় পৌঁছাত। এই ভিক্ষাবৃত্তিকে তারা দীনদারি মনে করত। তাদের দাবি ছিল, তারা আল্লাহর ওপর ভরসাকারী তথা মুতাওয়াক্কিলদের দলভুক্ত। তাই আল্লাহর ঘরে যেতে তাদের কোনো পাথেয় জোগাড় করার দরকার নেই। 

হজের যাত্রাপথে জীবিকা নির্বাহের জন্য ব্যবসা করা বা অন্য কোনো কাজ করাকে হারাম মনে করা হতো। কেউ আবার পানাহার থেকেও বিরত থাকত এবং একে হজের অংশ মনে করত। কেউ কেউ হজের সময়জুড়ে কথা বলা থেকেও বিরত থাকত। 

এভাবেই প্রায় আড়াই হাজার বছর ধরে চলছিল হজের বিকৃত আচার-অনুষ্ঠান। এই দীর্ঘ সময়ে আরবে কোনো নবীর জন্ম হয়নি, বাইরের কোনো নবীর শিক্ষাও আরবে পৌঁছায়নি। ইবরাহিম (আ.)-এর বংশ থেকে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম হয় এবং ৪০ বছর বয়সে নব্যুয়ত পান। তিনি ইবরাহিম (আ.)-এর সময়ের হজ ও কোরবানির বিধানগুলোতে ফের প্রাণের সঞ্চার করেন। 

মহানবী (সা.) জাহিলি যুগের সব কুসংস্কার ও মূর্তিপূজার রীতি বিলুপ্ত করেন। কাবাঘরের সব মূর্তি ভেঙে ফেলা হয় এবং সেখানে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও ইবাদত করা নিষিদ্ধ করা হয়। হজকে ঘিরে সব ধরনের কৌলীন্য, কুসংস্কার ও কুপ্রথা রহিত করা হয় এবং অনৈতিকতা ও অশ্লীলতায় ভরা মক্কার আনন্দমেলাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। 

আসমানি আদেশ আসে, আল্লাহর নির্দেশিত পথেই আল্লাহর ইবাদত করতে হবে। নবী (সা.) বলেছেন, ‘হজের আচার-অনুষ্ঠান তোমরা কেবল আমার কাছ থেকেই গ্রহণ করো।’ পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা হজের সময় সব ধরনের অশ্লীল ও অনৈতিক কাজ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। এরশাদ হয়েছে, ‘হজের সময় কোনো অশ্লীল কাজ ও ঝগড়া-বিবাদ করা যাবে না।’ (সুরা বাকারা: ১৯৭) 

বংশের গৌরব নিয়ে কবিদের মধ্যে যে প্রতিযোগিতা চলত, তাও বন্ধ হয়ে যায়। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘এরপর যখন হজের আচার-অনুষ্ঠান শেষ করবে, তখন আল্লাহর স্মরণে মশগুল হও, যেমন তোমরা নিজেদের বাপ-দাদাদের স্মরণে মশগুল থাক; বরং তার চেয়েও বেশি স্মরণ করো।’ (সুরা বাকারা: ২০০) 

স্রেফ নাম-যশের জন্য বদান্যতার যে প্রতিযোগিতা চলত, তাও বন্ধ হয়ে যায় এবং এর বদলে ইবরাহিম (আ.)-এর সময়ের রীতিনীতিগুলো চালু হতে থাকে। আল্লাহর নামে জবাই করা পশুগুলো গরিব-অসহায় হজযাত্রীরা খাবার হিসেবে পেতে লাগলেন। 

হজ সম্পর্কেই আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘খাও ও পান করো, তবে অপচয় কোরো না। অপচয়কারীদের আল্লাহ পছন্দ করেন না।’ (সুরা আরাফ: ৩১) অন্য আয়াতে এরশাদ হয়েছে, ‘সুতরাং যখন এসব প্রাণী সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াবে, তখন এগুলোর ওপর (জবাই করার সময়) আল্লাহর নাম উচ্চারণ করো। যখন তা এক পাশে পড়ে যায় (মারা যায়), তখন তা থেকে খাও। যারা (ভিক্ষা না করে) তৃপ্ত থাকে তাদেরও খাওয়াও এবং যারা আকুতি-মিনতি করে ভিক্ষা করে তাদেরও খাওয়াও।’ (সুরা হজ: ৩৬) 

কোরবানি করার পর পশুর রক্ত-মাংস কাবার দেয়ালে ছিটানোর রীতিও বন্ধ হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহর কাছে ওগুলোর গোশতও পৌঁছে না, রক্তও পৌঁছে না; বরং তাঁর কাছে তোমাদের তাকওয়াই পৌঁছে।’ (সুরা হজ: ৩৭) 

উলঙ্গ হয়ে কাবা তাওয়াফ করার রীতিও আল্লাহর নির্দেশে বন্ধ হয়ে যায়। আল্লাহ তাআলা এ বিষয়ে বলেন, ‘বলো, যেসব সৌন্দর্য-শোভামণ্ডিত বস্তু (কাপড়) ও পবিত্র জীবিকা তিনি তাঁর বান্দাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন—তা কে হারাম করল?’ (সুরা আরাফ: ৩২) 

যে পবিত্র মাসগুলোতে যুদ্ধ করা হারাম, সেগুলোকে হালাল বানানোর মতো স্বেচ্ছাচারও কঠোরভাবে নিষেধ করে দেওয়া হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিষিদ্ধ মাসকে পিছিয়ে দেওয়া কুফরির ওপর আরেক কুফরি কাজ, এর মাধ্যমে কাফিরদের পথভ্রষ্ট করা হয়। এক বছর তারা একটি মাস হালাল করে, আরেক বছর ওই মাসকে হারাম করে, যাতে আল্লাহর হারাম করা মাসগুলোর সংখ্যা পূর্ণ করা যায়।’ (সুরা তাওবা: ৩৭) 

হজে যাওয়ার পাথেয় জোগাড় না করেই বের হয়ে পড়াও নিষিদ্ধ করা হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা (হজের জন্য) পাথেয়র ব্যবস্থা করবে। (কারণ পৃথিবীর কোনো ভ্রমণের জন্য পাথেয় না নেওয়া পরকালের পাথেয় নেওয়ার সমার্থক নয়।) আর আল্লাহর ভয়ই (পরকালের) শ্রেষ্ঠ পাথেয়।’ (সুরা বাকারা: ১৯৭) 

হজের যাত্রাপথে ব্যবসা-বাণিজ্য করে উপার্জন করা হারাম মনে করার ধারণাও বাতিল করা হয়। এরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের কোনো গুনাহ নেই—যদি তোমরা (ব্যবসা ইত্যাদির মাধ্যমে) তোমাদের রবের অনুগ্রহ খোঁজ করো।’ (সুরা বাকারা: ১৯৮) 

একইভাবে হজের সময় পানাহার ও কথা থেকে বিরত থাকার রীতিও বাতিল করা হয়। 

জাহিলি যুগের এসব কুপ্রথা বাতিল করে ইসলাম হজকে দীনদারি, তাকওয়া, শুদ্ধতা, সরলতা ও নিষ্ঠার প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করেছে। হজযাত্রীরা যখন বাড়ি থেকে বেরোয়, তখনই তাদের পার্থিব সব দূষণ, যৌনতা, অশ্লীল কথাবার্তা ও কাজকর্ম থেকে বিরত থাকার আদেশ দেওয়া হয়। 

মিকাত থেকে ইহরাম পরতে হয়। দুই টুকরো সাদা কাপড় পরে মানুষ ভুলে যায় দেশ, জাতি, গোত্র, বর্ণের ভেদাভেদ। ইহরাম অবস্থায় সব ধরনের পশুপাখি শিকার করাও হারাম। শান্তির পরিবেশ তৈরি করতে এবং হজযাত্রীদের মন আধ্যাত্মিকতায় ভরিয়ে তুলতেই এই আদেশ দিয়েছে ইসলাম। 

হজের প্রতিটি পদক্ষেপে আল্লাহকেই স্মরণ করা হয়। হজের একমাত্র স্লোগান—তালবিয়া। তালবিয়ার মর্ম হলো—‘আমি আপনার দরবারে হাজির, হে আল্লাহ। আমি হাজির, আমি হাজির। আপনার কোনো অংশীদার নেই। আমি হাজির। সব প্রশংসা ও নেয়ামত আপনারই। সার্বভৌমত্ব আপনারই। আপনার কোনো অংশীদার নেই।’ 

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) স্বচ্ছ, সুন্দর, নিঃস্বার্থ ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালিত হজ সম্পর্কে বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কেবল আল্লাহর জন্য হজ করে এবং যৌনতা ও গুনাহের কাজ থেকে বিরত থাকে, সে সদ্যোজাত শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে ফিরে আসে।’ (বুখারি ও মুসলিম) 

আরব নিউজ ও অ্যাবাউট ইসলাম ডটনেট অবলম্বনে

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১১ মিনিট
ফজর০৫: ১২ মিনিট০৬: ৩১ মিনিট
জোহর১১: ৫৪ মিনিট০৩: ৩৭ মিনিট
আসর০৩: ৩৮ মিনিট০৫: ১২ মিনিট
মাগরিব০৫: ১৪ মিনিট০৬: ৩৩ মিনিট
এশা০৬: ৩৪ মিনিট০৫: ১১ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যেভাবে অন্যদের ভুল শুধরে দিতেন নবীজি

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ভুল করা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। জীবন চলার পথে ছোট-বড় ভুল সবারই হয়। কিন্তু সে ভুলকে কীভাবে সংশোধন করতে হবে, তা মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ হজরত মুহাম্মদ (সা.) শিখিয়ে গেছেন। তিনি ভুলকে লজ্জা বা অপমানের কারণ হিসেবে দেখেননি; বরং এটিকে ইতিবাচক পরিবর্তনের একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছেন। মহানবী (সা.) কঠোরতা নয়, বরং ভদ্রতা, কোমলতা, সহানুভূতি এবং সৃজনশীলতার মাধ্যমে মানুষের ভুলত্রুটি শুধরেছেন।

ভুল সংশোধনে তাঁর প্রথম কৌশল ছিল কৌশলগত নীরবতা এবং ইঙ্গিতপূর্ণ আচরণ। তিনি সরাসরি সমালোচনা না করে এমনভাবে আচরণ করতেন, যেন ভুলকারী নিজেই নিজের ভুল বুঝতে পারে। একবার সাহাবিদের কোনো কাজে ভুল দেখতে পেলে তিনি তাঁদের ছেড়ে অন্য পথে হেঁটেছেন, যা দেখে তাঁরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। আবার কখনো কখনো, বিশেষ করে যখন ভুলটি গুরুতর হতো, তখন তিনি কথার পুনরাবৃত্তি করে এর গুরুত্ব বোঝাতেন। তাঁর আরেকটি অসাধারণ পদ্ধতি ছিল দুর্বল ও অসহায়দের প্রতি কোমল আচরণ। একইভাবে, তিনি মানুষকে আল্লাহর ক্ষমতা ও করুণার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ভুল থেকে ফিরিয়ে আনতেন।

মানুষের মর্যাদা রক্ষা ছিল তাঁর ভুল সংশোধনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক। তিনি কখনো জনসমক্ষে কাউকে লজ্জা দিতেন না। তাই অনেক সময় তিনি বলতেন, ‘লোকদের কী হয়েছে যে তারা এমন এমন কাজ করছে!’ এভাবে তিনি ব্যক্তির পরিচয় গোপন রেখে সাধারণ ভুলকারীদের সতর্ক করতেন। এমনকি যারা বারবার একই ভুল করত, তাদেরও তিনি তিরস্কারের পরিবর্তে ভালোবাসা ও দোয়া করতেন। তাঁর এই সহানুভূতিশীল পদ্ধতি প্রমাণ করে, ভুল শুধরানোর মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তিকে পরিশুদ্ধ করা, অপমান করা নয়।

রাসুল (সা.)-এর এ কৌশলগুলো আমাদের শেখায়, ভুল সংশোধন একটি শিল্প, যেখানে ভালোবাসা, সহমর্মিতা এবং সম্মানই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু একটি ত্রুটি দূর করার বিষয় নয়; বরং ব্যক্তির অন্তরকে আলোকময় করে তোলার এক মহৎ প্রক্রিয়া।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১০ মিনিট
ফজর০৫: ১১ মিনিট০৬: ৩০ মিনিট
জোহর১১: ৫৩ মিনিট০৩: ৩৬ মিনিট
আসর০৩: ৩৭ মিনিট০৫: ১২ মিনিট
মাগরিব০৫: ১৪ মিনিট০৬: ৩৩ মিনিট
এশা০৬: ৩৪ মিনিট০৫: ১০ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মিসরে কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হাফেজ আনাসকে বিমানবন্দরে সংবর্ধনা

ইসলাম ডেস্ক 
৭০টি দেশকে হারিয়ে বাংলাদেশি হাফেজ আনাসের বিশ্বজয়। ছবি: সংগৃহীত
৭০টি দেশকে হারিয়ে বাংলাদেশি হাফেজ আনাসের বিশ্বজয়। ছবি: সংগৃহীত

মিসরের রাজধানী কায়রোতে অনুষ্ঠিত ৩২তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হাফেজ আনাস বিন আতিককে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।

আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় প্রথমে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এর তাঁকে ছাদখোলা বাসে ঢাকার রাজপথে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

বিমানবন্দরে সংবর্ধনায় অভিব্যক্তি প্রকাশ করছেন বিশ্বজয়ী হাফেজ আনাস।
বিমানবন্দরে সংবর্ধনায় অভিব্যক্তি প্রকাশ করছেন বিশ্বজয়ী হাফেজ আনাস।

এ সময় বিশ্বজয়ী হাফেজ আনাস তাঁর অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘আমরা যে দেশের ক্বারীদের তিলাওয়াত শুনে কেরাত শিখি, সে দেশের প্রতিযোগিতায় আমার এই অর্জন সত্যিই অনেক আনন্দের। কেরাতের রাজধানীখ্যাত মিসরে গিয়ে এ বিজয় অর্জন বেশ কঠিন ছিল। তবে আমার ওস্তাদ, মা-বাবা এবং দেশের মানুষের দোয়ায় তা সম্ভব হয়েছে।’

হাফেজ আনাসের ওস্তাদ শায়খ নেছার আহমদ আন নাছিরী বলেন, ‘তৃতীয়বারের মতো আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় বিশ্ব জয় করেছে আমার প্রিয় ছাত্র হাফেজ আনাস। সে বারবার বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করছে। এবার মিসরের রাজধানী কায়রোতে অনুষ্ঠিত ৩২তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে সে আবারও সবাইকে অবাক করে দিয়েছে।’

হাফেজ আনাস ও তার ওস্তাদ শায়েখ নেছার আহমদ আন নাছিরীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
হাফেজ আনাস ও তার ওস্তাদ শায়েখ নেছার আহমদ আন নাছিরীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

শায়খ নেছার আহমদ আন নাছিরী জানান, গত শনিবার (৭ ডিসেম্বর) কায়রোতে আনুষ্ঠানিকভাবে ৩২তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতার উদ্বোধন হয়। চার দিনব্যাপী এই আয়োজনে বিশ্বের ৭০টি দেশের প্রতিযোগীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রথম হয় বাংলাদেশ।

নেছার আহমদ আরও জানান, হাফেজ আনাস বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত জাতীয় বাছাইপর্বে প্রথম স্থান অর্জন করে এই বৈশ্বিক মঞ্চে অংশগ্রহণের যোগ্যতা লাভ করেন।

প্রসঙ্গত, হাফেজ আনাস রাজধানীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার ছাত্র। তাঁর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের লোপাড়া গ্রামে। এর আগেও হাফেজ আনাস বিন আতিক সৌদি আরব ও লিবিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত