Ajker Patrika

ইউএসএআইডি কী, কেন ট্রাম্প-মাস্ক এটি বন্ধ করতে চাইছেন

আপডেট : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩: ১৪
গত বছরের নভেম্বরে এক নির্বাচনী সমাবেশে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইলন মাস্ক। ছবি: ইপিএ
গত বছরের নভেম্বরে এক নির্বাচনী সমাবেশে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইলন মাস্ক। ছবি: ইপিএ

মার্কিন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। কর্মীদের দপ্তরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে এবং ট্রাম্প প্রশাসন সংস্থাটিকে পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা করছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী ইউএসএআইডি পররাষ্ট্র দপ্তরের অধীন একটি শাখা হিসেবে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। তবে বাজেট ও জনবল কমিয়ে আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

গতকাল সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ইউএসএআইডির দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ‘অবাধ্যতার’ অভিযোগ আনেন। এরপরেই তাঁকে সংস্থাটির ‘অস্থায়ী প্রধান’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর শীর্ষ উপদেষ্টাদের একজন ধনকুবের ইলন মাস্ক। তিনি ইউএসএআইডির ব্যয়ের কঠোর সমালোচনা করেছেন। মাস্ক ইউএসএআইডিকে ‘অপরাধী সংগঠন’ বলে অভিহিত করেন। তবে সংস্থাটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেলে বিশ্বব্যাপী মানবিক সহায়তা কর্মসূচিতে ব্যাপক প্রভাব পড়বে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।

ইউএসএআইডি কী এবং এটি কীভাবে কাজ করে

১৯৬০-এর দশকের গোড়ার দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যাপী মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ইউএসএআইডি প্রতিষ্ঠা করে। বর্তমানে সংস্থাটিতে প্রায় ১০ হাজার কর্মী রয়েছেন। তাঁদের দুই-তৃতীয়াংশই বিদেশে কাজ করেন। বিশ্বের ৬০টির বেশি দেশে সংস্থাটির কার্যালয় রয়েছে এবং আরও বহু দেশে এর কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ইউএসএআইডির অর্থায়নে এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব বিভিন্ন সংস্থার ওপর ন্যস্ত থাকে।

এই সংস্থার কার্যক্রমের পরিধি বিশাল। ইউএসএআইডি শুধু খাদ্যসহায়তা দেয় না; বরং দুর্ভিক্ষ শনাক্তেও কাজ করে। সংস্থাটির বাজেটের বড় অংশ স্বাস্থ্য কার্যক্রমে ব্যয় হয়। যেমন— ইউএসএআইডি পোলিও টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনা এবং সম্ভাব্য মহামারি ঠেকাতে সহায়তা করা।

ইউএসএআইডিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কত ব্যয় হয়

যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন সহায়তায় সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সহায়তায় মোট ৬৮ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। এর মধ্যে ইউএসএআইডির জন্য বাজেট ছিল প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলার; যা দেশটির মোট বৈদেশিক সহায়তার অর্ধেকের বেশি।

এই বাজেটের বেশির ভাগই এশিয়া, সাব-সাহারান আফ্রিকা ও ইউরোপে ব্যয় হয়; বিশেষত ইউক্রেনের মানবিক সহায়তায়।

ট্রাম্প ও ইলন মাস্ক ইউএসএআইডি বন্ধ করতে চান কেন

ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে বৈদেশিক সহায়তা ব্যয়ের সমালোচনা করে আসছেন। তিনি মনে করেন, এটি আমেরিকান জনগণের করের অর্থের সঠিক ব্যবহার নয়। তিনি ইউএসএআইডিকে ‘উগ্র বামপন্থীদের’ নিয়ন্ত্রিত একটি সংস্থা বলেও মন্তব্য করেন।

এ ছাড়া একটি জনমত জরিপে দেখা গেছে, বেশির ভাগ আমেরিকান ভোটার বৈদেশিক সহায়তার খরচ কমানোর পক্ষে। ২০২৪ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরে, ট্রাম্প প্রথমেই ৯০ দিনের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা ব্যয় স্থগিত রাখার নির্বাহী আদেশ জারি করেন।

এরপর স্টেট ডিপার্টমেন্ট ইউএসএআইডির বেশির ভাগ প্রকল্প বন্ধ করে দেয়। যদিও মানবিক সহায়তা প্রকল্পের জন্য পরে বিশেষ ছাড় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক উন্নয়ন খাতে বিশাল অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে।

ইলন মাস্ক ট্রাম্প প্রশাসনের ফেডারেল বাজেটের ব্যয় সংকোচনের দায়িত্বে আছেন। তিনি ইউএসএআইডির আর্থিক নথিপত্র পর্যালোচনা করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হন। এরপর এই সংস্থার দুজন ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়।

গতকাল সোমবার এক আলোচনায় মাস্ক বলেন, ‘আমি এই বিষয়ে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেছি এবং তিনি এটি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্তে আমার সঙ্গে একমত হয়েছেন।’

ট্রাম্প একা কি ইউএসএআইডি বন্ধ করতে পারবেন

যদিও ট্রাম্প প্রশাসনের ইউএসএআইডির ওপর বড় ধরনের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, তবে আইনগতভাবে এটি সরাসরি বন্ধ করা সম্ভব নয়।

১৯৬১ সালে কংগ্রেস ‘ফরেন অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাক্ট’ পাস করে, যার ভিত্তিতে ইউএসএআইডি গঠিত হয়। ১৯৯৮ সালে আরেকটি আইন সংস্থাটিকে ‘স্বতন্ত্র নির্বাহী সংস্থা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

ফলে নির্বাহী আদেশ দিয়ে এটি বিলুপ্ত করা সম্ভব নয়। এমন কিছু করতে গেলে কংগ্রেস ও আদালতে আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতে পারে। কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া সংস্থাটি পুরোপুরি বন্ধও করা যাবে না।

বর্তমানে রিপাবলিকানরা কংগ্রেসের দুই কক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও ব্যবধান খুবই কম, তাই বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

ইউএসএআইডি বন্ধ হলে কী প্রভাব পড়বে

বিশ্বব্যাপী মানবিক সহায়তার জন্য ইউএসএআইডির অবদান অনেক। সংস্থাটি ইউক্রেনের আহত সৈন্যদের জন্য কৃত্রিম অঙ্গ সরবরাহ করছে, আফ্রিকায় ইবোলা ভাইরাস প্রতিরোধে কাজ করছে এবং ভূমি মাইন অপসারণসহ বিশ্বব্যাপী নানা গুরুত্বপূর্ণ ও মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

তবে ৯০ দিনের ব্যয় স্থগিতাদেশের ফলে ইতিমধ্যে সংস্থাটির মানবিক সহায়তায় বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে।

ডেমোক্র্যাটরা এই সিদ্ধান্তকে ‘অবৈধ’ বলে অভিহিত করেছেন এবং সতর্ক করেছেন, এটি মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে।

তবে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে ট্রাম্প প্রশাসন বৈদেশিক সহায়তা খাতে আরও বড় ধরনের পরিবর্তনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আর ইলন মাস্ক যেহেতু ট্রাম্প প্রশাসনের ফেডারেল বাজেটের ব্যয় সংকোচনের দায়িত্বে আছেন, তাই ধারণা করা হচ্ছে, ভবিষ্যতে মার্কিন বাজেট থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলার ব্যয় সংকোচন করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টাকে প্রতিহতের ঘোষণা উত্তর কোরিয়ার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। ছবি: এএফপি
উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। ছবি: এএফপি

জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের যে কোনো প্রচেষ্টা কঠোরভাবে প্রতিহত করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ রোববার (২১ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জাপানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা যে কোনো মূল্যে রোধ করা উচিত, কারণ এটি মানবজাতির জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘ইনস্টিটিউট ফর জাপান স্টাডিজ’-এর পরিচালক এক বিবৃতিতে বলেন, জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা শুধু এশিয়া নয়, পুরো বিশ্বের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করবে। তাঁর ভাষায়, ‘জাপানের পারমাণবিক হওয়ার প্রচেষ্টা মানবজাতির জন্য এক মহাবিপর্যয় বয়ে আনবে।’

যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার এই প্রতিক্রিয়ার পেছনে রয়েছে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তার সাম্প্রতিক মন্তব্য। জাপানের বার্তা সংস্থা কিয়োদো নিউজের খবরে বলা হয়, ওই কর্মকর্তা প্রকাশ্যে বলেছেন, টোকিওর পারমাণবিক অস্ত্র রাখা উচিত।

এই প্রেক্ষাপটে উত্তর কোরিয়া দাবি করেছে, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন বা বেপরোয়া মন্তব্য নয়; বরং জাপানের বহুদিনের পারমাণবিক অস্ত্রায়নের আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন।

উত্তর কোরিয়ার মতে, জাপান তাদের তথাকথিত ‘অ-পারমাণবিক নীতি’ পুনর্বিবেচনার কথা বলে কার্যত একটি ‘লাল রেখা’ অতিক্রম করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, জাপানের কর্মকর্তাদের মন্তব্যগুলোই বলে দিচ্ছে, টোকিও এখন প্রকাশ্যেই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের বাসনা জানাচ্ছে।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আরও দাবি করেছে, যুক্তরাষ্ট্র যখন গত অক্টোবরে দক্ষিণ কোরিয়াকে একটি পারমাণবিক সাবমেরিন নির্মাণের অনুমোদন দেয়, তার পরপরই জাপানে এই ধরনের বক্তব্য জোরালো হতে শুরু করে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ংয়ের সঙ্গে বাণিজ্য ও নিরাপত্তা ইস্যুতে শীর্ষ বৈঠকের পর ওই অনুমোদন দিয়েছিলেন।

উত্তর কোরিয়ার ওই কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেন—জাপান যদি পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করে, তবে এশিয়া ভয়াবহ পারমাণবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। তবে তিনি পিয়ংইয়ংয়ের নিজস্ব পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

ধারণা করা হয়, উত্তর কোরিয়া নিজেই একটি ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডারের অধিকারী। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান থাকার পরও দেশটি তার পারমাণবিক সক্ষমতা বজায় রাখা ও সম্প্রসারণের ঘোষণা দিয়ে আসছে। গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে উত্তর কোরিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী কিম সন গিয়ং বলেন—পারমাণবিক অস্ত্র তাদের রাষ্ট্রীয় আইন, জাতীয় নীতি এবং সার্বভৌম অধিকারের অংশ, যা তারা কোনো পরিস্থিতিতেই ত্যাগ করবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলার আরও একটি তেলের ট্যাংকার ধাওয়া করছে মার্কিন বাহিনী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ১৪
ক্যারিবিয়ান সাগরে পানামা পতাকাবাহী সেঞ্চুরি নামের একটি তেলবাহী জাহাজের ওপর মার্কিন সামরিক বাহিনীর টহল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে
ক্যারিবিয়ান সাগরে পানামা পতাকাবাহী সেঞ্চুরি নামের একটি তেলবাহী জাহাজের ওপর মার্কিন সামরিক বাহিনীর টহল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

ভেনেজুয়েলা উপকূলে আন্তর্জাতিক জলসীমায় আরও একটি তেলের ট্যাংকার ধাওয়া করছে মার্কিন কোস্ট গার্ড। আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) তিনজন মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এটি সফল হলে এক সপ্তাহের মধ্যে ভেনেজুয়েলাসংশ্লিষ্ট তিনটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করার ঘটনা ঘটবে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে ভেনেজুয়েলার ওপর ‘সর্বাত্মক নৌ অবরোধ’ ঘোষণার পর থেকে এই চিরুনি অভিযান শুরু হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মার্কিন কোস্ট গার্ড বর্তমানে একটি তেল ট্যাংকারকে ধাওয়া করছে। তবে অভিযানের সুনির্দিষ্ট অবস্থান বা জাহাজটির পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

এই অভিযান নিয়ে হোয়াইট হাউস বা পেন্টাগন থেকে তাৎক্ষণিক কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

হোয়াইট হাউসের ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের ডিরেক্টর কেভিন হ্যাসেট আজ জানিয়েছেন, এর আগে জব্দ করা দুটি ট্যাংকার ‘ব্ল্যাক মার্কেট’ বা কালোবাজারের মাধ্যমে বিভিন্ন নিষিদ্ধ দেশে তেল সরবরাহ করছিল।

কেভিন হ্যাসেট দাবি করেছেন, এই আটকের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে তেলের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। তাঁর মতে, এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা এবং কেবল কালোবাজারি জাহাজগুলোকেই লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে।

তবে বাজার বিশ্লেষক ও তেল ব্যবসায়ীরা ভিন্নমত পোষণ করছেন। একজন তেল ব্যবসায়ী রয়টার্সকে বলেন, এই ধরনের পদক্ষেপ ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। আগামীকাল সোমবার এশিয়ার বাজারে তেলের দাম বাড়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা তেলের দামের এই ঊর্ধ্বগতিকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।

গত সেপ্টেম্বর থেকে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ওপর চাপ বাড়াতে ট্রাম্প প্রশাসন এই অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। গত কয়েক মাসে প্রশান্ত মহাসাগর ও ক্যারিবিয়ান সাগরে ভেনেজুয়েলাসংশ্লিষ্ট ভেসেলগুলোর ওপর অন্তত দুই ডজন সামরিক হামলা চালানো হয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, এসব সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০০ জন নিহত হয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলায় মার্কিন হস্তক্ষেপ নিয়ে সতর্ক করলেন লুলা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। ছবি: সংগৃহীত
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। ছবি: সংগৃহীত

ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান চাপ ও সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপ ‘ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়’ ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। তিনি মত দিয়েছেন, ভেনেজুয়েলায় কোনো ধরনের সশস্ত্র হস্তক্ষেপ শুধু ওই দেশের জন্য নয়, বরং পুরো পৃথিবীর জন্যই এক বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ফোজ দো ইগুয়াসুতে দক্ষিণ আমেরিকার আঞ্চলিক জোট ‘মারকোসুর’-এর শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে লুলা এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘ভেনেজুয়েলায় সশস্ত্র হস্তক্ষেপ একটি মানবিক বিপর্যয়ে রূপ নেবে। এটি এমন একটি নজির সৃষ্টি করবে, যা বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি।’

এ বিষয়ে এক প্রতিবেদনে রোববার (২১ ডিসেম্বর) রয়টার্স জানিয়েছে, ভেনেজুয়েলা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা সম্প্রতি আরও বেড়েছে। গত মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলায় যাতায়াতকারী সব নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেলবাহী জাহাজের ওপর ‘অবরোধ’ আরোপের নির্দেশ দেন। ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপকে নিকোলাস মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর নতুন কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে। ভেনেজুয়েলার অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি তেল খাতকে লক্ষ্য করেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

লুলা স্মরণ করিয়ে দেন, ফকল্যান্ডস যুদ্ধের চার দশকেরও বেশি সময় পর দক্ষিণ আমেরিকা আবারও অন্য মহাদেশীয় কোনো শক্তির সামরিক উপস্থিতির আশঙ্কায় ভুগছে। তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ আমেরিকা আবার এমন এক ভূতের ছায়ায় পড়ছে, যেখানে এই অঞ্চলের বাইরে থেকে আসা সামরিক শক্তি আমাদের শান্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।’

চলতি সপ্তাহের শুরুতেই লাতিন আমেরিকার দুই বৃহত্তম অর্থনীতির শীর্ষ নেতা ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দ্য সিলভা এবং মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউম ভেনেজুয়েলা পরিস্থিতিতে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে গত শনিবারের বক্তব্যে লুলা আরও কঠোর দেখিয়েছেন।

‘মারকোসুর’ সম্মেলন শেষে দেওয়া এক যৌথ ঘোষণায় লাতিন আমেরিকার নেতারা ভেনেজুয়েলায় গণতান্ত্রিক নীতি ও মানবাধিকার রক্ষায় শান্তিপূর্ণ পথেই অগ্রসর হওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। এই ঘোষণায় আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে ও পানামার প্রেসিডেন্টদের পাশাপাশি বলিভিয়া, ইকুয়েডর ও পেরুর শীর্ষ কর্মকর্তারাও সমর্থন জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রেনের ভাড়া বাড়ছে ভারতেও

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ছবি: সংগৃহীত
২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ছবি: সংগৃহীত

ভারতেও ট্রেনের ভাড়া বাড়ছে। পকেটে টান পড়তে যাচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। ২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তবে স্বস্তির খবর হলো, লোকাল ট্রেনের ভাড়া অপরিবর্তিত থাকছে। মূলত দূরপাল্লার যাত্রীদের জন্যই এই বাড়তি ভাড়া কার্যকর হবে।

ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের ঘোষণা অনুযায়ী, ভ্রমণের দূরত্ব ও কোচের ধরনভেদে নতুন ভাড়ার হার নির্ধারিত হবে। ২১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত সাধারণ শ্রেণিতে ভাড়ায় কোনো পরিবর্তন নেই। তবে ২১৫ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটারে এক পয়সা করে ভাড়া বাড়বে।

মেল বা এক্সপ্রেস ট্রেনের (নন-এসি) যাত্রীদের জন্য প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া বাড়বে দুই পয়সা। এসি কোচ বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচের ক্ষেত্রেও কিলোমিটার প্রতি দুই পয়সা ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।

তবে যদি কোনো যাত্রী নন-এসি কোচে ৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন, নতুন নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে আগের চেয়ে ১০ রুপি বেশি ভাড়া দিতে হবে।

কেন এই ভাড়া বৃদ্ধি

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত এক দশকে রেলপথ সম্প্রসারণের ফলে জনবল এবং অন্যান্য ব্যয় বহুগুণ বেড়েছে। রেলওয়ের বর্তমান জনবল ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি রুপিতে এবং পেনশনের পেছনে খরচ হচ্ছে ৬০ হাজার কোটি রুপি। সব মিলিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট পরিচালনা ব্যয় বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি রুপি।

যাত্রীদের ভাড়া ও পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে খরচ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে রেলওয়ে। এর আগে গত জুলাই মাসেও ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল (নন-এসিতে এক পয়সা ও এসিতে দুই পয়সা)। তারও আগে ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি বড় ধরনের ভাড়া বৃদ্ধি কার্যকর করা হয়েছিল, যেখানে এসি কোচে ভাড়া বেড়েছিল কিলোমিটার প্রতি চার পয়সা পর্যন্ত।

রেলওয়ে কর্মকর্তাদের মতে, উন্নত সেবা এবং ক্রমবর্ধমান ব্যয় মেটাতে এই সামান্য ভাড়া বৃদ্ধি অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল। কর্তৃপক্ষ আশা করছে, এই ভাড়া বৃদ্ধির ফলে রেলওয়ের বার্ষিক আয় প্রায় ৬০০ কোটি রুপি বাড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত