Ajker Patrika

মসজিদে বোমা পাততে গিয়ে যেভাবে জীবন বদলে গেল মার্কিন সেনার

আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২৩, ১২: ২১
মসজিদে বোমা পাততে গিয়ে যেভাবে জীবন বদলে গেল মার্কিন সেনার

গত বছর যখন রিচার্ড ম্যাককিনির বিয়ের অনুষ্ঠানের সব আয়োজন করেন বিবি বাহরানি। তাঁকে সাহায্য করেন তাঁর বন্ধুরা। অতিথিদের জন্য আফগান খাবার রান্না করেন বাহরামি। কারণ তিনিও যুদ্ধের ক্ষত বয়ে বেড়ানো একজন আফগান অভিবাসী। গাজর ও কিশমিশ দিয়ে ভাত, মুরগির মাংস, গরুর মাংসসহ নানা মজাদার পদ প্রস্তুত করেন। আর ইসলামি রীতিতে ম্যাককিনির বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা পরিচালনা করেন বাহরামির স্বামী ডা. মোহাম্মদ সাবের বাহরামি। 

খুবই অনাড়ম্বর কিন্তু অতিথিদের উপস্থিতিতে আনন্দমুখর এই বিবাহের দৃশ্যকে অস্বাভাবিক ভাবার কোনো কারণ নেই। কিন্তু ম্যাককিনি এবং বাহরামিদের বন্ধুত্বের শুরুটা কেমন ছিল সেই গল্পটি ক্যামেরায় ধারণের আগে খুব কম মানুষেরই জানা ছিল। সিনেমার মতো সেই গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে তথ্যচিত্র ‘স্ট্রেঞ্জার অ্যাট দ্য গেট’। এটি গত বছর নির্মিত হলেও এবারের অস্কার মনোনয়নে নাম আসায় নতুন করে আলোচনায় এসেছে। 

সংক্ষেপে গল্পটি এমন: ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধের অভিজ্ঞতা থেকে ক্ষুব্ধ এবং মুসলমানদের প্রতি তীব্র ঘৃণা বয়ে বেড়ানো চওড়া কাঁধের, বাহুতে মার্কিন নেভির ট্যাটু আঁকা এক প্রবীণ ব্যক্তি; তিনি একবার যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যে ইসলামিক সেন্টার অব মানসিতে গিয়েছিলেন শক্তিশালী বোমা পেতে রাখতে। তিনি চেয়েছিলেন এই মসজিদে আসা সব ব্যক্তিকে একসঙ্গে প্রাণে মেরে ফেলতে। 

এই ব্যক্তিই হলেন রিচার্ড ম্যাককিনি। বোমা মেরে হত্যা করতে গিয়েই আশ্চর্যজনকভাবে বদলে যাওয়া ম্যাককিনিকে নিয়েই নির্মিত হয়েছে ৩০ মিনিটের ডকুমেন্টারি শর্ট ফিল্ম। ‘স্ট্রেঞ্জার অ্যাট দ্য গেট’ স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমাতে দেখানো হয়েছে, কীভাবে ইসলামিক সেন্টারের লোকদের সঙ্গে ম্যাককিনির সখ্য গড়ে ওঠে। তাঁদের সাদর অভ্যর্থনায় ব্যর্থ হয়ে যায় তাঁর হত্যা পরিকল্পনা। শুধু তা–ই দ্রুতই বদলে যায় তাঁর জীবনের গতিপথ। 

রোববার (১২ মার্চ) অনুষ্ঠেয় ৯৫ তম অস্কার পুরস্কারের জন্য সেরা ডকুমেন্টারি শর্ট ফিল্ম ক্যাটাগরিতে মনোনীত হয়েছে ‘স্ট্রেঞ্জার অ্যাট দ্য গেট’। 

ম্যাককিনি সম্পর্কে বিবি বাহরামি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমরা অনেক বছর ধরে বন্ধু ছিলাম। আর এখন পরিবারের মতো।’ ১৯৭৯ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন আফগানিস্তানে আগ্রাসন চালালে গৃহহারা হয়ে পড়েন বিবি বাহরামি। পরিবারের সঙ্গে পাকিস্তানে শরণার্থী হয়ে যান। সেখানে বেশ কয়েক বছর ছিলেন। সেখানে ডা. সাবেরের সঙ্গে পরিচয়। এরপর পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। তাঁদের বিয়ে হয়। এখন তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। 

ম্যাককিনি বলেন, বাহরামি পরিবারের সঙ্গে এই ‘অসম্ভব আত্মীয়তা’ অনেকের কাছে ‘বিভ্রান্তিকর’ মনে হতে পারে। এই পুরো যাত্রাটি ছিল অত্যন্ত পরাবাস্তব একটা ব্যাপার! 

 ‘স্ট্রেঞ্জার অ্যাট দ্য গেট’ সিনেমার নির্মাতা জোশুয়া সেফটেল বলেন, এটি হলো ম্যাককিনির দ্বিতীয় সুযোগ এবং রূপান্তরের গল্প। ঘৃণাকে জয় করা একটি প্রেমের গল্প। 

সেফটেল বলেন, ‘আজকাল নিরাশায় ডুবে যাওয়াটা সহজ; যখন আমি এই গল্পটি জেনেছিলাম, তখন ভেবেছিলাম, বাহ, মানবতায় বিশ্বাস করার কারণ এখনো রয়ে গেছে। যদি এই দুই ব্যক্তি বন্ধু হতে পারেন, তবে আমাদের কেউ কেন পারে না!’ 

‘সিক্রেট লাইফ অব মুসলিমস’ শীর্ষক একটি তথ্যচিত্র সিরিজে কাজ করতে গিয়ে এই অসাধারণ গল্পের সন্ধান পান সেফটেল। এই সিরিজের মাধ্যমে সেফটেল বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে আমেরিকান মুসলমানদের সম্পর্কে নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যযুক্ত এবং নেতিবাচক গৎবাঁধা ধারণাগুলো ভেঙে দিতে চাইছিলেন। 

এই সিরিজের অনুপ্রেরণা নিজের বিভীষিকাময় শৈশব থেকেই পেয়েছিলেন সেফটেল। নিজের মধ্যে এখনো ছোটবেলার ইহুদি বিদ্বেষের শিকার হওয়ার স্মৃতি দগদগে। তাঁকে একটি ইহুদি শিশু হিসেবে নানাভাবে হয়রানি শিকার হতে হয়েছিল। সেই ঘৃণার শিকল ছিঁড়তে চেয়েছেন তিনি। 

স্বামী মোহাম্মদ সাবেরের সঙ্গে বিবি বাহরামিসেফটেল বলেন, নাইল ইলেভেনের পর আমি মুসলমানদের প্রতি এই ধরনের ঘৃণা দেখেছিলাম। আমি শুধু ভেবেছিলাম, হয়তো আমি আমার চলচ্চিত্রের কাজ দিয়ে এই জায়গাটাতে কিছু করার চেষ্টা করতে পারি। 

 ২০২১ সালে নাইন ইলেভেন ২০ তম বার্ষিকীর আগে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) এবং এনওআরসি সেন্টার ফর পাবলিক অ্যাফেয়ার্স রিসার্চ যৌথভাবে একটি জরিপ করেছিল। সেই জরিপে দেখা যায়, ৫৩ শতাংশ আমেরিকান ইসলামের প্রতি বিরূপ দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন। ম্যাককিনিও এই দলেই ছিলেন। বলতে গেলে, তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে উৎসাহী ও সহিংস মনোভাবেরই ছিলেন তিনি। 

দীর্ঘ সামরিক কর্মজীবন রিচার্ড ম্যাককিনিকে অনেকগুলো তিক্ত অভিজ্ঞতা দিয়েছে। তিনি দেখেছেন ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধ। যুদ্ধের ময়দানে জীবনবাজি রেখেছেন। কর্মজীবনের সমাপ্তির পর ক্ষুব্ধ, তিক্ত এবং জীবন সম্পর্কে হতাশার বোধ তীব্র হয় তাঁর। এসব ভুলে থাকতে প্রচুর মদ্যপান করতেন। জীবনের একটা দীর্ঘ সময় তাঁর নিয়তি ছিল যুদ্ধে গিয়ে নির্বিচারে মানুষ হত্যা এবং একটি পতাকা-ঢাকা কফিনে করে বাড়ি ফেরা। বড়জোর বীর হিসেবে একটা সম্মাননা। 

যুদ্ধের অভিজ্ঞতা ম্যাককিনির মনে মুসলমানদের প্রতি চরম বিদ্বেষের জন্ম দেয়। সেনাবাহিনীতে থাকা অবস্থায় বিদেশে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এই মুসলমানরাই ছিল যুদ্ধক্ষেত্রের শত্রু। 

তথ্যচিত্রটিতে ম্যাককিনিকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার পরিকল্পনা ছিল একটি আইইডি (দূর নিয়ন্ত্রিত বোমা) বিস্ফোরণ ঘটানো। শুক্রবারে ইসলামিক সেন্টারের বাইরে যখন লোকজন নামাজের জন্য জড়ো হবে তখনই ঘটবে বিস্ফোরণ। আমি কমপক্ষে ২০০ বা তার বেশি মানুষকে হত্যা অথবা জখম করতে চেয়েছিলাম।’ 

যুদ্ধ থেকে ২০০৬ সালে মানসিতে ফেরেন ম্যাককিনি। এসে দেখেন পুরো এলাকায় মুসলিমদের বাস। স্কুলে মুসলিম শিশুদের সঙ্গে পড়তে হচ্ছে তাঁর সন্তানকেও। এটি সহ্য করতে পারেননি ম্যাককিনি। ২০০৯ সালে ইসলামিক সেন্টারের ওই মসজিদে যাতায়াত শুরু করেন তিনি। সেখানে গিয়ে লোকজনকে বলেন, তিনি ইসলাম সম্পর্কে জানতে চান। 

সিনেমায় ম্যাককিনি বলেন, ‘আমি তাঁদের বিশ্বাস করিনি।...আমি ভেবেছিলাম তারা আমাকে বেসমেন্টে আমার গলায় তলোয়ার ধরে রাখবে।’ কিন্তু বাস্তবে, মুসল্লিরা তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। তাঁরা তাঁকে আলিঙ্গন করেছিলেন। 

‘স্ট্রেঞ্জার অ্যাট দ্য গেট’ সিনেমা পোস্টারসিনেমাতে দেখা যায়, বিবি বাহরামি লোকসংগীতের একজন অনুরাগী শ্রোতা। তাঁর স্বামী ড. মোহাম্মদ সাবের বাহরামি তাঁকে ‘মুসলিম সম্প্রদায়ের মাদার তেরেসা’ বলে অভিহিত করেন। বাহরামি ম্যাককিনিকে সান্ত্বনা দিয়েছেন। বাড়িতে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে গেছেন, পছন্দের খাবার খাইয়েছেন। বাহরামির সংস্পর্শে শেষ পর্যন্ত নিজের সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি বদলে গেছেন ম্যাককিনির। অন্তরের কথা শুনেছেন কান পেতে। একদিন ম্যাককিনি বাহরামি বলেন, ‘আমার মুসলিম হওয়া উচিত।’ 

সিনেমাটির নির্মাতা সেফটেল বলেন, বাহরামি দর্শকদের দেখিয়েছেন, মানুষ তাঁকে আলিঙ্গন করেছেন। কেউ কেউ অশ্রুসজল চোখে তাঁর কাছে এসেছেন, তাঁকে বলেছে যে, তিনি তাঁদের আশা এবং সাহস দিয়েছেন। তাঁদের কমিউনিটির জন্য কাজ করার জন্য অনুরোধ করেছেন। 

কেউ কেউ এমন কঠিন প্রশ্নেরও মুখোমুখি করেছেন বাহরামিকে যে, ম্যাককিনিকে তিনি কীভাবে ক্ষমা করেছিলেন? 

জবাবে বাহরামি বলেন, যখন তিনি ম্যাককিনির কথা শুনেছিলেন, তাঁর বিশ্বাস হয়নি। ম্যাককিনি পরিকল্পনার কথা জেনে তিনি তাঁকে রাতের খাবারের জন্য আমন্ত্রণ জানান। ম্যাককিনি যা ভেবেছিলেন সেটি তাঁর কাছ থেকে জানতে চান। বাহরামি বলেন, আমার এক দৃঢ় বিশ্বাসী (ইমানদার), আমি মনে করি, আমার ইমানের একটি বড় অংশ হলো ক্ষমা। 

আরেকটি দিক তুলে ধরেন বাহরামি, তিনি ম্যাককিনির মধ্যে একটা দুর্বলতা টের পেয়েছিলেন। ম্যাককিনি আকুলভাবে ক্ষমাপ্রার্থী ছিলেন। 

সেফটেল যখন সিনেমাটির জন্য তাঁর কাছে গিয়েছিলে সেই সময়কার কথা স্মরণ করে বাহরামি বলেন, তিনি তখন অত্যন্ত অসুস্থ। কোমায় ছিলেন। সুস্থ হয়ে সেফটেলের অনুরোধটি বিবেচনা করেছিলেন। বাহরামির ভাষায়, ‘খোদা আমাকে দ্বিতীয় জীবন দিয়েছেন। যদি আমি মারা যাই, গল্পটি তো বেঁচে থাকবে!’ 

 ‘স্ট্রেঞ্জার অ্যাট দ্য গেট’ সিনেমাটি ২০২২ সালে ট্রিবেকা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে বিশেষ জুরি পুরস্কার জেতে। এর প্রযোজকদের একজন পাকিস্তানের নোবেলজয়ী অধিকারকর্মী মালালা ইউসুফজাই। প্রচারিত হচ্ছে দ্য নিউ ইয়র্কার পত্রিকার ওয়েবসাইট ও ইউটিউব চ্যানেলে। 

এ বছর অস্কারের মনোনয়ন পাওয়া ধর্মীয় থিমের সিনেমার মধ্যে ‘স্ট্রেঞ্জার অ্যাট দ্য গেট’ একমাত্র নয়। ‘উইমেন টকিং’ নামে একটি সিনেমাও সেরা ছবির জন্য মনোনীত হয়েছে। মিরিয়াম টোউসের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত সিনেমাটি বলিভিয়ার একটি মেনোনাইট সম্প্রদায়ের (খ্রিষ্টানদের বিশেষ গোত্র) একটি ভয়ংকর সত্য গল্প নিয়ে। ওই সম্প্রদায়ের পুরুষেরা বহু নারী ও শিশু–কিশোরীকে ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল। সিনেমায় দেখানো হয়েছে, সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে বেঁচে থাকা ব্যক্তিরা ধর্ম ত্যাগ করবেন কি না সেই সিদ্ধান্তহীনতায় লড়ছেন। কারণ দাগি অপরাধীদের ক্ষমা করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। 

সূত্র: ভয়েস অব আমেরিকা, দ্য নিউ ইয়র্কার

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলার আশপাশে ১৫ হাজার সেনা, ‘কোয়ারেন্টিন’ আরোপের নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ভেনেজুয়েলার উপকূলের কাছে ক্রমেই শক্তি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ছবি: সংগৃহীত
ভেনেজুয়েলার উপকূলের কাছে ক্রমেই শক্তি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ছবি: সংগৃহীত

হোয়াইট হাউস মার্কিন সামরিক বাহিনীকে আগামী অন্তত ২ মাস ভেনেজুয়েলার তেলের ওপর ‘কোয়ারেন্টিন’ বা অবরোধ আরোপের দিকেই প্রায় পুরোপুরি মনোনিবেশ করার নির্দেশ দিয়েছে। রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওয়াশিংটন বর্তমানে কারাকাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে সামরিক শক্তির চেয়ে অর্থনৈতিক পথকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।

গতকাল বুধবার নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘সামরিক পথ এখনো খোলা আছে সত্যি, তবে হোয়াইট হাউসের লক্ষ্য অর্জনে আপাতত নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার মাধ্যমে অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগের দিকেই নজর দেওয়া হচ্ছে।’

ভেনেজুয়েলা নিয়ে নিজের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জনসমক্ষে কিছুটা অস্পষ্টতার রাখলেও, গোপনে তিনি নিকোলাস মাদুরোকে দেশ ছেড়ে পালানোর জন্য চাপ দিচ্ছেন বলে রয়টার্স খবর প্রকাশ করেছে। গত সোমবার ট্রাম্প বলেন, মাদুরোর জন্য ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত নেওয়া পদক্ষেপগুলো মাদুরোর ওপর প্রবল চাপ তৈরি করেছে। আমাদের বিশ্বাস, জানুয়ারির শেষ নাগাদ ভেনেজুয়েলা এক ভয়াবহ অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে, যদি না তারা আমেরিকার কাছে নতি স্বীকার করে বড় কোনো আপস করতে রাজি হয়।’

ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটি যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচার করছে। গত কয়েক মাস ধরে তাঁর প্রশাসন দক্ষিণ আমেরিকা থেকে আসা এবং মাদক বহনকারী হিসেবে অভিযুক্ত নৌকাগুলোর ওপর বোমা হামলা চালাচ্ছে। অনেক দেশই এই আক্রমণকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হিসেবে নিন্দা জানিয়েছে।

এ ছাড়া, ট্রাম্প প্রায়ই স্থলের মাদক অবকাঠামোতে বোমা হামলার হুমকি দিয়েছেন এবং কারাকাস অভিমুখে সিআইএ-র গোপন তৎপরতার অনুমোদন দিয়েছেন। চলতি মাসে এখন পর্যন্ত মার্কিন কোস্টগার্ড ক্যারিবীয় সাগরে ভেনেজুয়েলার অপরিশোধিত তেল বোঝাই দুটি ট্যাংকার জব্দ করেছে।

হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তার এই মন্তব্য এমন সময়ে এল যখন রয়টার্স খবর দিয়েছে যে, কোস্টগার্ড ‘বেলা-১’ নামে একটি খালি ও নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত জাহাজ জব্দের জন্য অতিরিক্ত বাহিনীর অপেক্ষায় রয়েছে। গত রোববার তারা প্রথম এটি আটকের চেষ্টা করেছিল।

মঙ্গলবার জাতিসংঘে ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রদূত স্যামুয়েল মনকাডা বলেন, ‘ভেনেজুয়েলা কোনো হুমকি নয়। আসল হুমকি হলো মার্কিন সরকার।’

এদিকে, পেন্টাগন ক্যারিবীয় অঞ্চলে ১৫ হাজারেরও বেশি সৈন্যের এক বিশাল সামরিক উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে একটি বিমানবাহী রণতরী, ১১টি যুদ্ধজাহাজ এবং এক ডজনেরও বেশি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান। এই সম্পদের অনেকগুলো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে সহায়ক হলেও, যুদ্ধবিমানের মতো কিছু সরঞ্জাম এই কাজের জন্য খুব একটা উপযুক্ত নয়।

মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘকে জানিয়েছে, তারা মাদুরোকে সম্পদহীন করার জন্য ‘সর্বোচ্চ সীমা’ পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং তা কার্যকর করবে। চলতি মাসের শুরুতে ট্রাম্প ভেনেজুয়েলায় আসা-যাওয়া করা সমস্ত নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত তেল ট্যাংকারের ওপর ‘অবরোধ’ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

তবে হোয়াইট হাউসের ওই কর্মকর্তার মুখে এখন ‘কোয়ারেন্টিন’ শব্দের ব্যবহার ১৯৬২ সালের কিউবান মিসাইল সংকটের স্মৃতি মনে করিয়ে দিচ্ছে। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি সংঘাত এড়াতে এই শব্দ ব্যবহার করেছিলেন। কেনেডির তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রবার্ট ম্যাকনামারা ২০০২ সালে বলেছিলেন, ‘আমরা একে কোয়ারেন্টিন বলেছিলাম কারণ ‘ব্লকেড’ বা অবরোধ একটি যুদ্ধের শব্দ।’

বুধবার জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা এই অবরোধের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, এ ধরনের শক্তি প্রয়োগকে ‘অবৈধ সশস্ত্র আগ্রাসন’ হিসেবে গণ্য করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতে বাসে আগুন, জীবন্ত দগ্ধ হয়ে ৯ জনের মৃত্যু

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আগুন ধরে যাওয়া বাস। ছবি: সংগৃহীত
আগুন ধরে যাওয়া বাস। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের কর্ণাটকের চিত্রদুর্গ জেলায় এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৯ জন জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে ৪৮ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি ট্রাকের ধাক্কায় একটি বেসরকারি স্লিপার বাসে আগুন ধরে গেলে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। বাসটি বেঙ্গালুরু থেকে শিমোগা যাচ্ছিল।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক ডিভাইডার টপকে বাসটিকে সজোরে ধাক্কা মারে। এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ‘বৃহস্পতিবার ভোরে একটি লরি ডিভাইডার পার হয়ে বাসটিকে ধাক্কা দেয়। প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, লরিটি বাসের তেলের ট্যাংকে আঘাত করেছিল, যার ফলে জ্বালানি ছড়িয়ে পড়ে আগুন ধরে যায়। কয়েকজন যাত্রী কোনোমতে প্রাণ বাঁচাতে সক্ষম হলেও এখন পর্যন্ত আটজন যাত্রী এবং ট্রাকচালকের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে।’

সেই ভয়াবহ মুহূর্তের বর্ণনা দিতে গিয়ে আদিত্য নামের এক যাত্রী বলেন, ‘চারপাশে শুধু মানুষের আর্তনাদ। দুর্ঘটনার পর আমি পড়ে গিয়েছিলাম এবং দেখি চারদিকে আগুন। দরজা খোলা যাচ্ছিল না। আমরা জানালার কাচ ভেঙে পালানোর চেষ্টা করি...মানুষ একে অপরকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় তা কঠিন হয়ে পড়ে।’

এই দুর্ঘটনার জেরে তুমকুর রোডে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। গোকর্ণগামী এক নারী পর্যটক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘আমাদের সামনে একটি বাসে আগুন লেগেছে। প্রায় ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটে আমরা আটকে আছি, যা পরিষ্কার হতে আরও ঘণ্টা দু-এক সময় লাগতে পারে।’

এর আগে নভেম্বরেও তেলেঙ্গানাতেও একই ধরনের এক দুর্ঘটনা ঘটেছিল। হায়দরাবাদ-বিজাপুর মহাসড়কে পাথরবোঝাই একটি ট্রাকের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষে ২০ জনের মৃত্যু হয়। তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সড়ক পরিবহন নিগমের সেই বাসটিতে প্রায় ৭০ জন যাত্রী ছিলেন। ট্রাকের ওপর থাকা পাথর বাসের ভেতরে পড়ে যাওয়ায় অনেক যাত্রী চাপা পড়ে মারা যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো বিষ্ণু মূর্তি, নিন্দা জানাল ভারত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মূর্তিটি ২০১৪ সালে নির্মিত হয়েছিল। ছবি: সংগৃহীত
মূর্তিটি ২০১৪ সালে নির্মিত হয়েছিল। ছবি: সংগৃহীত

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্তে দুই দেশের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ এলাকায় ভগবান বিষ্ণুর একটি মূর্তি ধ্বংসের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে ভারত। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে একটি ‘অসম্মানজনক কাজ’ হিসেবে অভিহিত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট দুই দেশকেই আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আসার আহ্বান জানিয়েছে।

কম্বোডিয়ার প্রিয়া বিহার প্রদেশের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, গত সোমবার (২২ ডিসেম্বর) থাই সামরিক বাহিনী একটি এক্সকাভেটর ব্যবহার করে ভগবান বিষ্ণুর মূর্তিটি গুঁড়িয়ে দেয়।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূর্তিটি ২০১৪ সালে নির্মিত হয়েছিল। এটি সীমান্ত থেকে প্রায় ১০০ মিটার ভেতরে কম্বোডিয়ার আন সেস এলাকায় অবস্থিত ছিল।

প্রিয়া বিহারের মুখপাত্র লিম চানপানহা এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘বৌদ্ধ ও হিন্দু অনুসারীদের কাছে পূজনীয় প্রাচীন মন্দির ও মূর্তি ধ্বংসের এই ঘটনা আমরা কোনোভাবেই মেনে নেব না।’ তবে থাইল্যান্ডের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে বলেন, সীমান্ত বিরোধের জের ধরে এ ধরনের কাজ অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি বলেন, ‘ভূখণ্ড নিয়ে দাবি যাই থাকুক না কেন, এ ধরনের অসম্মানজনক কাজ বিশ্বজুড়ে হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে। এমন ঘটনা ঘটা উচিত নয়।’

ভারত আবারও উভয় পক্ষকে শান্তি বজায় রাখতে এবং জানমাল ও ঐতিহ্যের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সংলাপ ও কূটনীতির পথে ফেরার অনুরোধ জানিয়েছে।

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে ৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত নিয়ে বিরোধ দীর্ঘদিনের। ঔপনিবেশিক আমলের সীমানা নির্ধারণকে কেন্দ্র করে এই বিরোধের শুরু। গত জুলাইয়ে পাঁচ দিনের লড়াইয়ে কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়েছিল। গত ডিসেম্বরে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘাতে এ পর্যন্ত ৪০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

বুধবার থেকে উভয় দেশের সামরিক কর্মকর্তারা আবারও যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছেন।

বিষ্ণু মূর্তি ধ্বংসের এই ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ভারতসহ বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক মহল আশা করছে, সংঘাতের পরিবর্তে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমেই এই সংকটের সমাধান হবে। হিন্দু ও বৌদ্ধ দেবতারা এই অঞ্চলের মানুষের কাছে অত্যন্ত শ্রদ্ধার পাত্র এবং এটি আমাদের অভিন্ন সভ্যতা ও ঐতিহ্যের অংশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাজায় ধ্বংসস্তূপের মাঝেই বড়দিনের আনন্দ খুঁজছে ক্ষুদ্র খ্রিষ্টান সম্প্রদায়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪৭
গত ২১ ডিসেম্বর গাজা সিটিতে ক্রিসমাস উদযাপনের আগে হলি ফ্যামিলি ক্যাথলিক চার্চের বাইরে গাজার শিশু ও সন্ন্যাসিনীরা। ছবি: এপির সৌজন্যে
গত ২১ ডিসেম্বর গাজা সিটিতে ক্রিসমাস উদযাপনের আগে হলি ফ্যামিলি ক্যাথলিক চার্চের বাইরে গাজার শিশু ও সন্ন্যাসিনীরা। ছবি: এপির সৌজন্যে

গাজা উপত্যকায় দুই বছর ধরে চলা ধ্বংসলীলা আর লাশের মিছিলের মাঝেও বড়দিনের আনন্দ ফিরে পাওয়ার এক বিষাদময় চেষ্টা চালাচ্ছে সেখানকার ক্ষুদ্র খ্রিষ্টান সম্প্রদায়। একটি নড়বড়ে যুদ্ধবিরতি কিছুটা স্বস্তি দিলেও ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি আর বাস্তুচ্যুত মানুষের হাহাকার অনেক ঐতিহ্যবাহী উৎসবকে ম্লান করে দিয়েছে।

৭৬ বছর বয়সী আত্তাল্লাহ তরাজি সম্প্রতি বড়দিনের উপহার হিসেবে এক জোড়া মোজা আর স্কার্ফ পেয়েছেন। গাজার কনকনে শীত থেকে বাঁচতে এগুলোই এখন তাঁর বড় সম্বল। গির্জার অন্য সদস্যদের সঙ্গে তরাজি যখন গাইলেন—‘খ্রিষ্টের জন্ম হয়েছে, হালেলুইয়া’ (একটি হিব্রু শব্দ, যার অর্থ প্রভুর প্রশংসা), তখন কিছুক্ষণের জন্য হলেও যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার বিভীষিকা ঢাকা পড়েছিল বিশ্বাসের সুরে।

গাজার সেন্ট্রাল সিটি এলাকার ‘হলি ফ্যামিলি চার্চ’ কম্পাউন্ডে আশ্রয় নেওয়া তরাজি বলেন, ‘আমরা এই পবিত্র মুহূর্তে যুদ্ধ, বিপদ আর বোমাবর্ষণের কথা ভুলে যেতে চাই। খ্রিষ্টের জন্মের আনন্দ আমাদের সব তিক্ততাকে ছাপিয়ে যাক।’

তবে সবার জন্য উৎসবের অনুভূতি এক নয়। শাদি আবু দাউদের জন্য এবারের বড়দিনটি অত্যন্ত কষ্টের। গত জুলাই মাসে এই ক্যাথলিক চার্চ কম্পাউন্ডেই ইসরায়েলি হামলায় তাঁর মা নিহত হন ও ছেলে আহত হয়। ইসরায়েল একে ‘দুর্ঘটনা’ বলে দুঃখ প্রকাশ করলেও স্বজন হারানোর ক্ষত এখনো দগদগে। আবু দাউদ বলেন, জখম এখনো কাঁচা। এখানে কোনো উৎসব নেই, আমরা এখনো ‘না যুদ্ধ না শান্তি’র এক অদ্ভুত অবস্থার মধ্যে বাস করছি।

গাজার প্রায় ২০ লাখ বাসিন্দার মধ্যে খ্রিষ্টানদের সংখ্যা এখন নগণ্য। যুদ্ধের কারণে অনেক পরিবার দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। ২৩ বছর বয়সী ওয়াফা ইমাদ এলসায়েঘ জানান, বন্ধুবান্ধব আর আত্মীয়রা না থাকায় আগের মতো আমেজ নেই। তিনি বলেন, ‘আমরা পরিবার নিয়ে সাজসজ্জা করছি ঠিকই, কিন্তু যাদের সঙ্গে সব আনন্দ ভাগ করে নিতাম, তারা আজ গাজায় নেই। এই পরিবেশ আগের মতো করে আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।’

৩৫ বছর বয়সী মা এলিনোর আমাশ তাঁর সন্তানদের মুখে হাসি ফোটাতে ঘরে বড়দিনের গাছ (ক্রিসমাস ট্রি) সাজিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার সন্তানেরা কিছু চকলেট আর মিষ্টি পেয়ে বোমার ভয় ছাড়া শ্বাস নিতে পারছে। কিন্তু তাঁবুগুলোতে বসবাসকারী মানুষের কষ্ট দেখে চোখে জল আসে।’

গাজার খ্রিষ্টানরা মনে করেন, তাঁরা সংখ্যায় যত কম হোক না কেন, এটি এই ভূমির প্রতি ভালোবাসা এবং বিশ্বাসের এক অটল সাক্ষ্য। আত্তাল্লাহ তরাজি প্রার্থনা করেন যেন তাঁর জাতি শান্তি ও স্বাধীনতা পায়। তিনি বিশ্বাস করেন, এই পরিস্থিতির চেয়েও বড়দিনের আনন্দ এবং তাঁদের বিশ্বাস অনেক বেশি শক্তিশালী।

গত অক্টোবর থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির পর গাজায় হামলার তীব্রতা কমলেও মাঝেমধ্যে প্রাণঘাতী আঘাত আসছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি অভিযানে এ পর্যন্ত প্রায় ৭১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের অর্ধেকই নারী ও শিশু।

অতিবৃষ্টিতে বাস্তুচ্যুত মানুষের তাঁবুগুলো তলিয়ে গেছে, যা ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত