মিডলইস্ট আইয়ের প্রতিবেদন
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর সাবেক প্রধান জর্জ টেনেট তাঁকে ‘ওসামা বিন লাদেনের মতোই বিপজ্জনক’ বলে মনে করতেন। ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সাবেক প্রধান সাবতাই শাভিত আফসোস করে বলেছিলেন, সুযোগ পেলে তিনি তাঁকে হত্যা করতেন।
যাঁর কথা বলছিলাম, তিনি প্রায় ২৫ কোটি পাকিস্তানির কাছে পরিচিত এক নাম—আবদুল কাদির খান। পাকিস্তানিদের কাছে তিনি এক কিংবদন্তি, জাতীয় বীর। পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচির জনক হিসেবে পরিচিত তিনি। ১৯৩৬ সালে জন্ম নেওয়া এই পরমাণুবিজ্ঞানী ২০২১ সালে ৮৫ বছর বয়সে মারা যান। দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশকে পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রে পরিণত করার ক্ষেত্রে তিনিই সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন।
আবদুল কাদির খান অতি গোপনে ও অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে একটি আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক পরিচালনা করতেন, যার মাধ্যমে ইরান, লিবিয়া ও উত্তর কোরিয়াকে পারমাণবিক প্রযুক্তি দিয়ে সহযোগিতা করা হয়। এই তিন দেশের মধ্যে উত্তর কোরিয়া শেষ পর্যন্ত প্রতীক্ষিত সামরিক মর্যাদার সেই প্রতীক, অর্থাৎ পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনে সক্ষম হয়।
ইসরায়েল নিজেও পারমাণবিক শক্তিধর দেশ, যদিও তারা কখনো আনুষ্ঠানিকভাবে তা স্বীকার করেনি। পাকিস্তান যাতে পারমাণবিক শক্তি অর্জন করতে না পারে, তা ঠেকাতে ইসরায়েল নানাভাবে আবদুল কাদির খানকে হত্যাচেষ্টা ও হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ১৯৮০-এর দশকে ইসরায়েল ভারতের সহযোগিতায় পাকিস্তানের পারমাণবিক স্থাপনা বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। তবে শেষ পর্যন্ত ভারত সরকার এই পরিকল্পনা থেকে সরে দাঁড়ায়।
পাকিস্তান পারমাণবিক বোমা তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় ভারতের দেখানো পথ অনুসরণ করে। ১৯৭৪ সালের ১৮ মে ভারত তাদের প্রথম পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালায়, যার নাম দেওয়া হয় ‘স্মাইলিং বুদ্ধ।’ এরপর পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো ঘোষণা দেন, তাঁর দেশও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করবে।
ভুট্টো বলেছিলেন, ‘আমরা ঘাস খাব, পাতা খাব, না খেয়ে থাকব, তবুও নিজেদের পারমাণবিক বোমা তৈরি করব।’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘বিশ্বে রয়েছে খ্রিষ্টান বোমা, ইহুদি বোমা, হিন্দু বোমা। তাহলে ইসলামি বোমা কেন থাকবে না?’
ব্রিটিশ শাসিত উপমহাদেশে জন্ম নেওয়া আবদুল কাদির খান ১৯৬০ সালে করাচি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিষয়ে ডিগ্রি নেন। এরপর বার্লিনে মেটালার্জিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়েন। পরে নেদারল্যান্ডস ও বেলজিয়ামেও পড়াশোনা করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি আমস্টারডামে ইউরেনকো নামে একটি বড় পরমাণু জ্বালানি সংস্থায় চাকরি পান।
এই কোম্পানি ইউরোপের পারমাণবিক চুল্লির জন্য সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম জ্বালানি সরবরাহ করত। খান ওই প্রতিষ্ঠানে অত্যন্ত গোপনীয় এলাকায় প্রবেশের সুযোগ পান এবং বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত সেন্ট্রিফিউজ প্রযুক্তির নকশাও হাতে পান, যা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করে অস্ত্র তৈরির জন্য উপযোগী করে তোলে।
১৯৭৬ সালের জানুয়ারিতে তিনি হঠাৎ নেদারল্যান্ডস ছেড়ে পাকিস্তানে ফিরে আসেন। বলেন, তিনি এমন এক প্রস্তাব পেয়েছেন, যেটা ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। পরে তাঁকে নেদারল্যান্ডসের কাছ থেকে ইউরেনিয়াম সেন্ট্রিফিউজের নকশা চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়।
সে বছরের জুলাইয়ে তিনি রাওয়ালপিন্ডিতে একটি গবেষণা ল্যাব প্রতিষ্ঠা করেন, যা পাকিস্তানের জন্য পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির ইউরেনিয়াম প্রস্তুত করত। প্রথম দিকে পুরো প্রকল্পটি অত্যন্ত গোপনে চলছিল। ভুয়া কোম্পানির নামে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আমদানি করা হতো, বাইরে প্রচার করা হতো এগুলো টেক্সটাইল কারখানার জন্য।
প্রমাণ আছে, পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী এই প্রকল্পে আবদুল কাদির খানকে সরাসরি সহযোগিতা করেছিল। তবে তখনকার বেসামরিক সরকারগুলো এসবের কিছুই জানত না। ব্যতিক্রম শুধু প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো। এমনকি তাঁর কন্যা, পরে প্রধানমন্ত্রী হওয়া বেনজির ভুট্টোও বিষয়টি জানতেন না। ১৯৮৯ সালে তেহরানে এক বৈঠকে ইরানের প্রেসিডেন্ট আকবর হাশেমি রাফসানজানি যখন তাঁকে ‘বিশেষ প্রতিরক্ষাবিষয়ক’ চুক্তি নবায়নের কথা বলেন, বেনজির ভুট্টো তখন হতবাক হয়ে জানতে চান, তিনি কী বলতে চাচ্ছেন। রাফসানজানি স্পষ্ট করে বলেন, ‘পারমাণবিক প্রযুক্তি, ম্যাডাম প্রধানমন্ত্রী, পারমাণবিক প্রযুক্তি।’ বেনজির ভুট্টো হতভম্ব হয়ে যান।
১৯৭৯ সালের জুনে ‘এইট ডেজ’ নামের একটি ম্যাগাজিন পাকিস্তানের এই গোপন পারমাণবিক কর্মসূচির খবর প্রকাশ করে। বিশ্বজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। ইসরায়েল ডাচ সরকারের কাছে প্রতিবাদ জানায়। তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। ১৯৮৩ সালে এক ডাচ আদালত খানকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে। যদিও পরে কারিগরি কারণে সেই রায় বাতিল হয়ে যায়। তবে প্রকল্প থেমে থাকেনি।
১৯৮৬ সালের মধ্যে খান নিশ্চিত হন, পাকিস্তান পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে সক্ষম। তাঁর এই কর্মকাণ্ডের পেছনে আদর্শিক চিন্তাধারাই সবচেয়ে বড় প্রেরণা ছিল। তিনি বলেছিলেন, ‘আমেরিকান আর ব্রিটিশদের এত সাধু সাজার অধিকার কে দিয়েছে? এরা কি পৃথিবীর স্বঘোষিত অভিভাবক?’
ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ এই প্রকল্প থামাতে নানাভাবে চেষ্টা করেছে। ইউরোপের যেসব কোম্পানি খানের সঙ্গে ব্যবসা করছিল, তাদের নির্বাহীদের টার্গেট করা হয়। জার্মানিতে এক নির্বাহীর বাড়িতে বোমা পাঠানো হয়। যদিও তিনি বেঁচে যান, কিন্তু তাঁর কুকুরটি মারা যায়।
আরেকটি বোমা হামলা হয় সুইজারল্যান্ডের কোর-আ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার ওপর। এই কোম্পানি পাকিস্তানের পারমাণবিক প্রকল্পে যুক্ত ছিল। ইতিহাসবিদদের মতে, মোসাদ বারবার হুমকি দিয়েছে, হত্যাচেষ্টা চালিয়েছে, কিন্তু পাকিস্তানকে পারমাণবিক শক্তিধর হওয়া ঠেকাতে পারেনি।
সুইজারল্যান্ডের ব্যবসায়ী সিগফ্রিড শার্টলার জানিয়েছেন, মোসাদের এজেন্টরা তাঁকে ও তাঁর কর্মীদের ফোন করে হুমকি দিত। এমনকি জার্মানিতে ইসরায়েলি দূতাবাসের এক কর্মকর্তা তাঁকে বলেন, এই পারমাণবিক প্রকল্পে সহযোগিতা বন্ধ করতে হবে। পাকিস্তানের সাবেক পারমাণবিক কর্মকর্তা ফিরোজ খান জানিয়েছেন, ইসরায়েল কোনো মুসলিম দেশের হাতে পারমাণবিক বোমা দেখতে চায়নি।
১৯৮০-এর দশকের শুরুতে ইসরায়েল ভারতের সঙ্গে মিলে পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডির কাছে কাহুটা পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা করে। তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী অনুমোদনও দেন। ইসরায়েলি এফ-১৬ ও এফ-১৫ যুদ্ধবিমান ভারতের গুজরাটের জামনগর বিমানঘাঁটি থেকে উড়ে গিয়ে ওই হামলা চালানোর কথা ছিল। কিন্তু পরে ইন্দিরা গান্ধী সিদ্ধান্ত বদলে পরিকল্পনা বাতিল করেন।
ইন্দিরার ছেলে রাজীব গান্ধীর আমলে ১৯৮৭ সালে ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল সুন্দরজি পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ বাধানোর চেষ্টা করেন, যাতে ওই পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানো যায়। ৫ লাখ ভারতীয় সেনা, শত শত ট্যাংক আর সাঁজোয়া যান পাকিস্তান সীমান্তে মোতায়েন করা হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী পুরো বিষয়টি বুঝতে পেরে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর চীনও গোপনে পাকিস্তানকে সহযোগিতা করে। চীন সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম, ট্রিটিয়াম ও বিজ্ঞানী পাঠায়। আর যুক্তরাষ্ট্র তখন শীতল যুদ্ধের কারণে পাকিস্তানকে পাশে পেতে চায়। ১৯৭৯ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার পাকিস্তানের প্রতি অর্থনৈতিক সহযোগিতা বন্ধ করলেও কয়েক মাসের মধ্যে আফগানিস্তানে সোভিয়েত আগ্রাসনের পর সেই সিদ্ধান্ত বদলে ফেলেন। ১৯৮০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের পরমাণুবিজ্ঞানীদের গোপনে প্রশিক্ষণ দেয় এবং পুরো কর্মসূচির দিকে চোখ বন্ধ রাখে।
কিন্তু শীতল যুদ্ধ শেষ হতেই চিত্র বদলে যায়। ১৯৯০ সালের অক্টোবর মাসে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক ও সামরিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। পাকিস্তান জানায়, তারা পারমাণবিক বোমা তৈরির কাজ থামাবে। কিন্তু কাদির খান পরে জানান, প্রকৃতপক্ষে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের কাজ গোপনে চলতেই থাকে।
১৯৯৮ সালের ১১ মে ভারত তাদের পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালায়। একই মাসে পাকিস্তান বেলুচিস্তানের মরুভূমিতে সফল পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়। যুক্তরাষ্ট্র তখন ভারত ও পাকিস্তান, দুই দেশের ওপরই নিষেধাজ্ঞা দেয়। পাকিস্তান হয়ে ওঠে বিশ্বের সপ্তম পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। কাদির খান তখন জাতীয় নায়ক। তাঁর গাড়িবহর ছিল প্রধানমন্ত্রীর মতোই, নিরাপত্তা দিত সেনাবাহিনীর কমান্ডোরা। তাঁর নামে রাস্তা, স্কুল এমনকি ক্রিকেট দলও গড়া হয়।
টেলিভিশনে এসে কাদির খান ঘোষণা দেন, ‘পারমাণবিক বোমা কে বানিয়েছে? আমি বানিয়েছি। ক্ষেপণাস্ত্র কে বানিয়েছে? আমি বানিয়েছি।’ কিন্তু এর বাইরেও তিনি আরেকটি দুঃসাহসী কাজ করেছিলেন। ১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে তিনি একটি আন্তর্জাতিক পারমাণবিক নেটওয়ার্ক পরিচালনা করতেন, যার মাধ্যমে ইরান, উত্তর কোরিয়া ও লিবিয়াকে প্রযুক্তি ও ডিজাইন সরবরাহ করা হতো। তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে প্রয়োজনের চেয়ে দ্বিগুণ যন্ত্রপাতি আনাতেন। অতিরিক্ত অংশগুলো তিনি অন্য দেশে বিক্রি করতেন।
ইরানের বিপ্লবী নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি পারমাণবিক বোমাকে ইসলামে নিষিদ্ধ মনে করলেও দেশটির সরকার পাকিস্তানের সামরিক শাসক জিয়াউল হকের কাছ থেকে সাহায্য নেয়। ১৯৮৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান ইরানকে পরমাণু বোমা তৈরির কিছু যন্ত্রপাতি দেয়, যদিও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি কাদির খান পাকিস্তানের জন্য রেখে দেন।
মোসাদ কাদির খানের ওপর নজরদারি করলেও তিনি আসলে কী করছেন, তা তারা বুঝতে পারেনি। পরে মোসাদের প্রধান শাভিত বলেন, যদি তিনি আগে বুঝতেন, তাহলে ‘ইতিহাস বদলাতে খানকে হত্যা করার কথা ভাবতেন।’
এরপর, ২০০৩ সালে লিবিয়ার শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফি মার্কিন সমর্থন পাওয়ার জন্য পুরো নেটওয়ার্ক ফাঁস করে দেন। তিনি জানান, কাদির খান লিবিয়ার জন্যও পরমাণু স্থাপনা বানাচ্ছিলেন। আর এই কাজ চলছিল কিছু স্থাপনা ছাগলের খামার বা মুরগির খামারের ছদ্মবেশে। মিসরের সুয়েজ খাল দিয়ে পাঠানোর সময় যুক্তরাষ্ট্র সেসব যন্ত্রপাতি জব্দ করে। ইসলামাবাদের একটি ড্রাই ক্লিনারের ব্যাগে অস্ত্রের নকশাও পাওয়া যায়।
পরে ২০০৪ সালে কাদির খান স্বীকার করেন, তিনি ইরান, লিবিয়া ও উত্তর কোরিয়াকে পারমাণবিক প্রযুক্তি দিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, এককভাবে তিনি কাজ করেছেন, পাকিস্তান সরকার জড়িত নয়। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ তাঁকে ‘আমার বীর’ বলে আখ্যায়িত করেন। তবে মার্কিন চাপের মুখে খানকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়, যা ২০০৯ পর্যন্ত চলে।
গৃহবন্দিত্ব থেকে মুক্তির পর কাদির খান বলেন, তিনি প্রথমবার পাকিস্তানকে পারমাণবিক শক্তি দিয়ে বাঁচিয়েছেন, দ্বিতীয়বার পুরো দায় নিজের কাঁধে নিয়ে দেশকে রক্ষা করেছেন। ২০০৬ সালে তাঁর প্রোস্টেট ক্যানসার ধরা পড়ে, অস্ত্রোপচারে তিনি সুস্থ হন। প্রচুর ধনী হয়ে ওঠা কাদির খান জীবনের শেষদিকে ইসলামাবাদে একটি কমিউনিটি সেন্টার বানান। তাঁর ঘনিষ্ঠদের ভাষায়, তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন—যা করেছেন, তা সঠিক ছিল। তিনি পশ্চিমাদের চোখ রাঙিয়ে মুসলিম দেশগুলোকে পারমাণবিক প্রযুক্তি দিতে চেয়েছিলেন।
এক ঘনিষ্ঠজন বলেন, ‘তিনি বলতেন, মুসলিম দেশকে প্রযুক্তি দেওয়া কোনো অপরাধ নয়।’ ২০২১ সালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তাঁকে ‘জাতীয় প্রতীক’ বলে অভিহিত করেন। এখনো অধিকাংশ পাকিস্তানির কাছে তিনি সেভাবেই স্মরণীয়। ২০১৯ সালে তিনি বলেছিলেন, ‘দেশবাসী নিশ্চিত থাকতে পারে, পাকিস্তান একটি নিরাপদ পারমাণবিক শক্তি। কেউ চোখ তুলে তাকানোর সাহস পাবে না।’

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর সাবেক প্রধান জর্জ টেনেট তাঁকে ‘ওসামা বিন লাদেনের মতোই বিপজ্জনক’ বলে মনে করতেন। ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সাবেক প্রধান সাবতাই শাভিত আফসোস করে বলেছিলেন, সুযোগ পেলে তিনি তাঁকে হত্যা করতেন।
যাঁর কথা বলছিলাম, তিনি প্রায় ২৫ কোটি পাকিস্তানির কাছে পরিচিত এক নাম—আবদুল কাদির খান। পাকিস্তানিদের কাছে তিনি এক কিংবদন্তি, জাতীয় বীর। পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচির জনক হিসেবে পরিচিত তিনি। ১৯৩৬ সালে জন্ম নেওয়া এই পরমাণুবিজ্ঞানী ২০২১ সালে ৮৫ বছর বয়সে মারা যান। দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশকে পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রে পরিণত করার ক্ষেত্রে তিনিই সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন।
আবদুল কাদির খান অতি গোপনে ও অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে একটি আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক পরিচালনা করতেন, যার মাধ্যমে ইরান, লিবিয়া ও উত্তর কোরিয়াকে পারমাণবিক প্রযুক্তি দিয়ে সহযোগিতা করা হয়। এই তিন দেশের মধ্যে উত্তর কোরিয়া শেষ পর্যন্ত প্রতীক্ষিত সামরিক মর্যাদার সেই প্রতীক, অর্থাৎ পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনে সক্ষম হয়।
ইসরায়েল নিজেও পারমাণবিক শক্তিধর দেশ, যদিও তারা কখনো আনুষ্ঠানিকভাবে তা স্বীকার করেনি। পাকিস্তান যাতে পারমাণবিক শক্তি অর্জন করতে না পারে, তা ঠেকাতে ইসরায়েল নানাভাবে আবদুল কাদির খানকে হত্যাচেষ্টা ও হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ১৯৮০-এর দশকে ইসরায়েল ভারতের সহযোগিতায় পাকিস্তানের পারমাণবিক স্থাপনা বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। তবে শেষ পর্যন্ত ভারত সরকার এই পরিকল্পনা থেকে সরে দাঁড়ায়।
পাকিস্তান পারমাণবিক বোমা তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় ভারতের দেখানো পথ অনুসরণ করে। ১৯৭৪ সালের ১৮ মে ভারত তাদের প্রথম পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালায়, যার নাম দেওয়া হয় ‘স্মাইলিং বুদ্ধ।’ এরপর পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো ঘোষণা দেন, তাঁর দেশও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করবে।
ভুট্টো বলেছিলেন, ‘আমরা ঘাস খাব, পাতা খাব, না খেয়ে থাকব, তবুও নিজেদের পারমাণবিক বোমা তৈরি করব।’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘বিশ্বে রয়েছে খ্রিষ্টান বোমা, ইহুদি বোমা, হিন্দু বোমা। তাহলে ইসলামি বোমা কেন থাকবে না?’
ব্রিটিশ শাসিত উপমহাদেশে জন্ম নেওয়া আবদুল কাদির খান ১৯৬০ সালে করাচি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিষয়ে ডিগ্রি নেন। এরপর বার্লিনে মেটালার্জিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়েন। পরে নেদারল্যান্ডস ও বেলজিয়ামেও পড়াশোনা করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি আমস্টারডামে ইউরেনকো নামে একটি বড় পরমাণু জ্বালানি সংস্থায় চাকরি পান।
এই কোম্পানি ইউরোপের পারমাণবিক চুল্লির জন্য সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম জ্বালানি সরবরাহ করত। খান ওই প্রতিষ্ঠানে অত্যন্ত গোপনীয় এলাকায় প্রবেশের সুযোগ পান এবং বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত সেন্ট্রিফিউজ প্রযুক্তির নকশাও হাতে পান, যা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করে অস্ত্র তৈরির জন্য উপযোগী করে তোলে।
১৯৭৬ সালের জানুয়ারিতে তিনি হঠাৎ নেদারল্যান্ডস ছেড়ে পাকিস্তানে ফিরে আসেন। বলেন, তিনি এমন এক প্রস্তাব পেয়েছেন, যেটা ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। পরে তাঁকে নেদারল্যান্ডসের কাছ থেকে ইউরেনিয়াম সেন্ট্রিফিউজের নকশা চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়।
সে বছরের জুলাইয়ে তিনি রাওয়ালপিন্ডিতে একটি গবেষণা ল্যাব প্রতিষ্ঠা করেন, যা পাকিস্তানের জন্য পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির ইউরেনিয়াম প্রস্তুত করত। প্রথম দিকে পুরো প্রকল্পটি অত্যন্ত গোপনে চলছিল। ভুয়া কোম্পানির নামে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আমদানি করা হতো, বাইরে প্রচার করা হতো এগুলো টেক্সটাইল কারখানার জন্য।
প্রমাণ আছে, পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী এই প্রকল্পে আবদুল কাদির খানকে সরাসরি সহযোগিতা করেছিল। তবে তখনকার বেসামরিক সরকারগুলো এসবের কিছুই জানত না। ব্যতিক্রম শুধু প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো। এমনকি তাঁর কন্যা, পরে প্রধানমন্ত্রী হওয়া বেনজির ভুট্টোও বিষয়টি জানতেন না। ১৯৮৯ সালে তেহরানে এক বৈঠকে ইরানের প্রেসিডেন্ট আকবর হাশেমি রাফসানজানি যখন তাঁকে ‘বিশেষ প্রতিরক্ষাবিষয়ক’ চুক্তি নবায়নের কথা বলেন, বেনজির ভুট্টো তখন হতবাক হয়ে জানতে চান, তিনি কী বলতে চাচ্ছেন। রাফসানজানি স্পষ্ট করে বলেন, ‘পারমাণবিক প্রযুক্তি, ম্যাডাম প্রধানমন্ত্রী, পারমাণবিক প্রযুক্তি।’ বেনজির ভুট্টো হতভম্ব হয়ে যান।
১৯৭৯ সালের জুনে ‘এইট ডেজ’ নামের একটি ম্যাগাজিন পাকিস্তানের এই গোপন পারমাণবিক কর্মসূচির খবর প্রকাশ করে। বিশ্বজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। ইসরায়েল ডাচ সরকারের কাছে প্রতিবাদ জানায়। তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। ১৯৮৩ সালে এক ডাচ আদালত খানকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে। যদিও পরে কারিগরি কারণে সেই রায় বাতিল হয়ে যায়। তবে প্রকল্প থেমে থাকেনি।
১৯৮৬ সালের মধ্যে খান নিশ্চিত হন, পাকিস্তান পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে সক্ষম। তাঁর এই কর্মকাণ্ডের পেছনে আদর্শিক চিন্তাধারাই সবচেয়ে বড় প্রেরণা ছিল। তিনি বলেছিলেন, ‘আমেরিকান আর ব্রিটিশদের এত সাধু সাজার অধিকার কে দিয়েছে? এরা কি পৃথিবীর স্বঘোষিত অভিভাবক?’
ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ এই প্রকল্প থামাতে নানাভাবে চেষ্টা করেছে। ইউরোপের যেসব কোম্পানি খানের সঙ্গে ব্যবসা করছিল, তাদের নির্বাহীদের টার্গেট করা হয়। জার্মানিতে এক নির্বাহীর বাড়িতে বোমা পাঠানো হয়। যদিও তিনি বেঁচে যান, কিন্তু তাঁর কুকুরটি মারা যায়।
আরেকটি বোমা হামলা হয় সুইজারল্যান্ডের কোর-আ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার ওপর। এই কোম্পানি পাকিস্তানের পারমাণবিক প্রকল্পে যুক্ত ছিল। ইতিহাসবিদদের মতে, মোসাদ বারবার হুমকি দিয়েছে, হত্যাচেষ্টা চালিয়েছে, কিন্তু পাকিস্তানকে পারমাণবিক শক্তিধর হওয়া ঠেকাতে পারেনি।
সুইজারল্যান্ডের ব্যবসায়ী সিগফ্রিড শার্টলার জানিয়েছেন, মোসাদের এজেন্টরা তাঁকে ও তাঁর কর্মীদের ফোন করে হুমকি দিত। এমনকি জার্মানিতে ইসরায়েলি দূতাবাসের এক কর্মকর্তা তাঁকে বলেন, এই পারমাণবিক প্রকল্পে সহযোগিতা বন্ধ করতে হবে। পাকিস্তানের সাবেক পারমাণবিক কর্মকর্তা ফিরোজ খান জানিয়েছেন, ইসরায়েল কোনো মুসলিম দেশের হাতে পারমাণবিক বোমা দেখতে চায়নি।
১৯৮০-এর দশকের শুরুতে ইসরায়েল ভারতের সঙ্গে মিলে পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডির কাছে কাহুটা পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা করে। তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী অনুমোদনও দেন। ইসরায়েলি এফ-১৬ ও এফ-১৫ যুদ্ধবিমান ভারতের গুজরাটের জামনগর বিমানঘাঁটি থেকে উড়ে গিয়ে ওই হামলা চালানোর কথা ছিল। কিন্তু পরে ইন্দিরা গান্ধী সিদ্ধান্ত বদলে পরিকল্পনা বাতিল করেন।
ইন্দিরার ছেলে রাজীব গান্ধীর আমলে ১৯৮৭ সালে ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল সুন্দরজি পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ বাধানোর চেষ্টা করেন, যাতে ওই পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানো যায়। ৫ লাখ ভারতীয় সেনা, শত শত ট্যাংক আর সাঁজোয়া যান পাকিস্তান সীমান্তে মোতায়েন করা হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী পুরো বিষয়টি বুঝতে পেরে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর চীনও গোপনে পাকিস্তানকে সহযোগিতা করে। চীন সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম, ট্রিটিয়াম ও বিজ্ঞানী পাঠায়। আর যুক্তরাষ্ট্র তখন শীতল যুদ্ধের কারণে পাকিস্তানকে পাশে পেতে চায়। ১৯৭৯ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার পাকিস্তানের প্রতি অর্থনৈতিক সহযোগিতা বন্ধ করলেও কয়েক মাসের মধ্যে আফগানিস্তানে সোভিয়েত আগ্রাসনের পর সেই সিদ্ধান্ত বদলে ফেলেন। ১৯৮০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের পরমাণুবিজ্ঞানীদের গোপনে প্রশিক্ষণ দেয় এবং পুরো কর্মসূচির দিকে চোখ বন্ধ রাখে।
কিন্তু শীতল যুদ্ধ শেষ হতেই চিত্র বদলে যায়। ১৯৯০ সালের অক্টোবর মাসে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক ও সামরিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। পাকিস্তান জানায়, তারা পারমাণবিক বোমা তৈরির কাজ থামাবে। কিন্তু কাদির খান পরে জানান, প্রকৃতপক্ষে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের কাজ গোপনে চলতেই থাকে।
১৯৯৮ সালের ১১ মে ভারত তাদের পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালায়। একই মাসে পাকিস্তান বেলুচিস্তানের মরুভূমিতে সফল পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়। যুক্তরাষ্ট্র তখন ভারত ও পাকিস্তান, দুই দেশের ওপরই নিষেধাজ্ঞা দেয়। পাকিস্তান হয়ে ওঠে বিশ্বের সপ্তম পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। কাদির খান তখন জাতীয় নায়ক। তাঁর গাড়িবহর ছিল প্রধানমন্ত্রীর মতোই, নিরাপত্তা দিত সেনাবাহিনীর কমান্ডোরা। তাঁর নামে রাস্তা, স্কুল এমনকি ক্রিকেট দলও গড়া হয়।
টেলিভিশনে এসে কাদির খান ঘোষণা দেন, ‘পারমাণবিক বোমা কে বানিয়েছে? আমি বানিয়েছি। ক্ষেপণাস্ত্র কে বানিয়েছে? আমি বানিয়েছি।’ কিন্তু এর বাইরেও তিনি আরেকটি দুঃসাহসী কাজ করেছিলেন। ১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে তিনি একটি আন্তর্জাতিক পারমাণবিক নেটওয়ার্ক পরিচালনা করতেন, যার মাধ্যমে ইরান, উত্তর কোরিয়া ও লিবিয়াকে প্রযুক্তি ও ডিজাইন সরবরাহ করা হতো। তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে প্রয়োজনের চেয়ে দ্বিগুণ যন্ত্রপাতি আনাতেন। অতিরিক্ত অংশগুলো তিনি অন্য দেশে বিক্রি করতেন।
ইরানের বিপ্লবী নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি পারমাণবিক বোমাকে ইসলামে নিষিদ্ধ মনে করলেও দেশটির সরকার পাকিস্তানের সামরিক শাসক জিয়াউল হকের কাছ থেকে সাহায্য নেয়। ১৯৮৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান ইরানকে পরমাণু বোমা তৈরির কিছু যন্ত্রপাতি দেয়, যদিও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি কাদির খান পাকিস্তানের জন্য রেখে দেন।
মোসাদ কাদির খানের ওপর নজরদারি করলেও তিনি আসলে কী করছেন, তা তারা বুঝতে পারেনি। পরে মোসাদের প্রধান শাভিত বলেন, যদি তিনি আগে বুঝতেন, তাহলে ‘ইতিহাস বদলাতে খানকে হত্যা করার কথা ভাবতেন।’
এরপর, ২০০৩ সালে লিবিয়ার শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফি মার্কিন সমর্থন পাওয়ার জন্য পুরো নেটওয়ার্ক ফাঁস করে দেন। তিনি জানান, কাদির খান লিবিয়ার জন্যও পরমাণু স্থাপনা বানাচ্ছিলেন। আর এই কাজ চলছিল কিছু স্থাপনা ছাগলের খামার বা মুরগির খামারের ছদ্মবেশে। মিসরের সুয়েজ খাল দিয়ে পাঠানোর সময় যুক্তরাষ্ট্র সেসব যন্ত্রপাতি জব্দ করে। ইসলামাবাদের একটি ড্রাই ক্লিনারের ব্যাগে অস্ত্রের নকশাও পাওয়া যায়।
পরে ২০০৪ সালে কাদির খান স্বীকার করেন, তিনি ইরান, লিবিয়া ও উত্তর কোরিয়াকে পারমাণবিক প্রযুক্তি দিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, এককভাবে তিনি কাজ করেছেন, পাকিস্তান সরকার জড়িত নয়। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ তাঁকে ‘আমার বীর’ বলে আখ্যায়িত করেন। তবে মার্কিন চাপের মুখে খানকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়, যা ২০০৯ পর্যন্ত চলে।
গৃহবন্দিত্ব থেকে মুক্তির পর কাদির খান বলেন, তিনি প্রথমবার পাকিস্তানকে পারমাণবিক শক্তি দিয়ে বাঁচিয়েছেন, দ্বিতীয়বার পুরো দায় নিজের কাঁধে নিয়ে দেশকে রক্ষা করেছেন। ২০০৬ সালে তাঁর প্রোস্টেট ক্যানসার ধরা পড়ে, অস্ত্রোপচারে তিনি সুস্থ হন। প্রচুর ধনী হয়ে ওঠা কাদির খান জীবনের শেষদিকে ইসলামাবাদে একটি কমিউনিটি সেন্টার বানান। তাঁর ঘনিষ্ঠদের ভাষায়, তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন—যা করেছেন, তা সঠিক ছিল। তিনি পশ্চিমাদের চোখ রাঙিয়ে মুসলিম দেশগুলোকে পারমাণবিক প্রযুক্তি দিতে চেয়েছিলেন।
এক ঘনিষ্ঠজন বলেন, ‘তিনি বলতেন, মুসলিম দেশকে প্রযুক্তি দেওয়া কোনো অপরাধ নয়।’ ২০২১ সালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তাঁকে ‘জাতীয় প্রতীক’ বলে অভিহিত করেন। এখনো অধিকাংশ পাকিস্তানির কাছে তিনি সেভাবেই স্মরণীয়। ২০১৯ সালে তিনি বলেছিলেন, ‘দেশবাসী নিশ্চিত থাকতে পারে, পাকিস্তান একটি নিরাপদ পারমাণবিক শক্তি। কেউ চোখ তুলে তাকানোর সাহস পাবে না।’

ইয়েমেনের দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতে এবার নতুন মাত্রার উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এক সময় একই জোটে থাকা সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এখন কার্যত বিপরীত অবস্থানে। সাম্প্রতিক বিমান হামলা ও কূটনৈতিক বক্তব্যে এই বিভাজন প্রকাশ্যে এসেছে, যা ওই অঞ্চলের যুদ্ধকে আরও জটিল করে তুলছে।
৩ ঘণ্টা আগে
১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও সমাজ বাস্তবতা ছিল একেবারেই ভিন্ন। সেই বছর প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন অভিশংসন প্রক্রিয়ার মুখে পড়েছিলেন, অস্কারে রাজত্ব করেছিল টাইটানিক, আর অধিকাংশ আমেরিকানের ঘরে ছিল ল্যান্ডলাইন ফোন। ঠিক সেই সময়েই গ্যালাপ ও ইউএসএ টুডে এক ব্যতিক্রমী জরিপ চালায়।
১ দিন আগে
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন—এমন অভিযোগ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে পুরোপুরি ‘মিথ্যা ও সাজানো’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
১ দিন আগে
তাইওয়ানকে ঘিরে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। সোমবার শুরু হওয়া এই মহড়ায় যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও সরাসরি গোলাবর্ষণও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ‘জাস্টিস মিশন ২০২৫’ নামের এই অভিযানে তাইওয়ানকে চারদিক থেকে ঘিরে সাতটি সামুদ্রিক অঞ্চলে সমন্বিত স্থল, নৌ ও আকাশ মহড়া চালানো হচ্ছে।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইয়েমেনের দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতে এবার নতুন মাত্রার উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এক সময় একই জোটে থাকা সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এখন কার্যত বিপরীত অবস্থানে। সাম্প্রতিক বিমান হামলা ও কূটনৈতিক বক্তব্যে এই বিভাজন প্রকাশ্যে এসেছে, যা ওই অঞ্চলের যুদ্ধকে আরও জটিল করে তুলছে।
যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে সৌদি আরব ইয়েমেনের দক্ষিণাঞ্চলে বিমান হামলা চালায়। এই হামলার লক্ষ্য ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত–সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ‘সাউদার্ন ট্রানজিশনাল কাউন্সিল’ (এসটিসি)।
সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের দাবি—হাদরামাউতের বন্দরনগরী মুকাল্লায় এসটিসির জন্য অস্ত্র ও সাঁজোয়া যান নামানো হচ্ছিল, যা তাদের ‘সীমারেখা’ অতিক্রমের সমান। সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, জাহাজগুলোর ট্র্যাকিং সিস্টেম বন্ধ ছিল এবং এসব অস্ত্র তাৎক্ষণিক নিরাপত্তা হুমকি তৈরি করছিল।
অন্যদিকে, এসটিসি এই হামলা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের দাবি, হামলায় হাদরামাউতে মোতায়েন এসটিসির অভিজাত ইউনিটগুলোকে লক্ষ্য করা হয়েছে। যদিও সৌদি কর্তৃপক্ষ বলছে, রাতের আঁধারে হামলা চালানো হয়েছে যাতে বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি না হয়।
এই সংঘর্ষ সৌদি আরব ও ইউএইর মধ্যে বাড়তে থাকা মতবিরোধকে প্রকাশ্যে এনেছে। হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন একসঙ্গে লড়াই করলেও, ইয়েমেনের ভেতরে দুই দেশ ভিন্ন ভিন্ন গোষ্ঠীকে সমর্থন দিয়ে আসছে। সৌদি আরবের অভিযোগ, এসটিসিকে আমিরাতের সমর্থন ইয়েমেন ও পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। রিয়াদ একে নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি হিসেবেও উল্লেখ করেছে।
এই উত্তেজনার মধ্যেই ইয়েমেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের প্রেসিডেনশিয়াল লিডারশিপ কাউন্সিলের প্রধান রাশাদ আল-আলিমি আরব আমিরাতের সঙ্গে যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তি বাতিল করেন এবং দেশটি থেকে আমিরাতের সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে তিনি সাময়িক সময়ের জন্য আকাশ ও নৌ অবরোধও ঘোষণা করেন।
বিশ্লেষকদের মতে, দক্ষিণ ইয়েমেনে এসটিসির দ্রুত সম্প্রসারণ দেশটিকে কার্যত বিভক্ত করার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। দক্ষিণে গুরুত্বপূর্ণ তেলসমৃদ্ধ অঞ্চল ও বন্দর, আর উত্তরে রাজধানী সানাসহ হুতিদের শক্ত ঘাঁটি—এই বাস্তবতায় ইয়েমেন আবারও এক গভীর ও বহুমাত্রিক সংকটের দিকে এগোচ্ছে।

ইয়েমেনের দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতে এবার নতুন মাত্রার উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এক সময় একই জোটে থাকা সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এখন কার্যত বিপরীত অবস্থানে। সাম্প্রতিক বিমান হামলা ও কূটনৈতিক বক্তব্যে এই বিভাজন প্রকাশ্যে এসেছে, যা ওই অঞ্চলের যুদ্ধকে আরও জটিল করে তুলছে।
যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে সৌদি আরব ইয়েমেনের দক্ষিণাঞ্চলে বিমান হামলা চালায়। এই হামলার লক্ষ্য ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত–সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ‘সাউদার্ন ট্রানজিশনাল কাউন্সিল’ (এসটিসি)।
সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের দাবি—হাদরামাউতের বন্দরনগরী মুকাল্লায় এসটিসির জন্য অস্ত্র ও সাঁজোয়া যান নামানো হচ্ছিল, যা তাদের ‘সীমারেখা’ অতিক্রমের সমান। সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, জাহাজগুলোর ট্র্যাকিং সিস্টেম বন্ধ ছিল এবং এসব অস্ত্র তাৎক্ষণিক নিরাপত্তা হুমকি তৈরি করছিল।
অন্যদিকে, এসটিসি এই হামলা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের দাবি, হামলায় হাদরামাউতে মোতায়েন এসটিসির অভিজাত ইউনিটগুলোকে লক্ষ্য করা হয়েছে। যদিও সৌদি কর্তৃপক্ষ বলছে, রাতের আঁধারে হামলা চালানো হয়েছে যাতে বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি না হয়।
এই সংঘর্ষ সৌদি আরব ও ইউএইর মধ্যে বাড়তে থাকা মতবিরোধকে প্রকাশ্যে এনেছে। হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন একসঙ্গে লড়াই করলেও, ইয়েমেনের ভেতরে দুই দেশ ভিন্ন ভিন্ন গোষ্ঠীকে সমর্থন দিয়ে আসছে। সৌদি আরবের অভিযোগ, এসটিসিকে আমিরাতের সমর্থন ইয়েমেন ও পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। রিয়াদ একে নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি হিসেবেও উল্লেখ করেছে।
এই উত্তেজনার মধ্যেই ইয়েমেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের প্রেসিডেনশিয়াল লিডারশিপ কাউন্সিলের প্রধান রাশাদ আল-আলিমি আরব আমিরাতের সঙ্গে যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তি বাতিল করেন এবং দেশটি থেকে আমিরাতের সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে তিনি সাময়িক সময়ের জন্য আকাশ ও নৌ অবরোধও ঘোষণা করেন।
বিশ্লেষকদের মতে, দক্ষিণ ইয়েমেনে এসটিসির দ্রুত সম্প্রসারণ দেশটিকে কার্যত বিভক্ত করার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। দক্ষিণে গুরুত্বপূর্ণ তেলসমৃদ্ধ অঞ্চল ও বন্দর, আর উত্তরে রাজধানী সানাসহ হুতিদের শক্ত ঘাঁটি—এই বাস্তবতায় ইয়েমেন আবারও এক গভীর ও বহুমাত্রিক সংকটের দিকে এগোচ্ছে।

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর সাবেক প্রধান জর্জ টেনেট তাঁকে ‘ওসামা বিন লাদেনের মতোই বিপজ্জনক’ বলে মনে করতেন। ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সাবেক প্রধান সাবতাই শাভিত আফসোস করে বলেছিলেন, সুযোগ পেলে তিনি তাঁকে হত্যা করতেন।
২৬ জুন ২০২৫
১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও সমাজ বাস্তবতা ছিল একেবারেই ভিন্ন। সেই বছর প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন অভিশংসন প্রক্রিয়ার মুখে পড়েছিলেন, অস্কারে রাজত্ব করেছিল টাইটানিক, আর অধিকাংশ আমেরিকানের ঘরে ছিল ল্যান্ডলাইন ফোন। ঠিক সেই সময়েই গ্যালাপ ও ইউএসএ টুডে এক ব্যতিক্রমী জরিপ চালায়।
১ দিন আগে
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন—এমন অভিযোগ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে পুরোপুরি ‘মিথ্যা ও সাজানো’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
১ দিন আগে
তাইওয়ানকে ঘিরে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। সোমবার শুরু হওয়া এই মহড়ায় যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও সরাসরি গোলাবর্ষণও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ‘জাস্টিস মিশন ২০২৫’ নামের এই অভিযানে তাইওয়ানকে চারদিক থেকে ঘিরে সাতটি সামুদ্রিক অঞ্চলে সমন্বিত স্থল, নৌ ও আকাশ মহড়া চালানো হচ্ছে।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও সমাজ বাস্তবতা ছিল একেবারেই ভিন্ন। সেই বছর প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন অভিশংসন প্রক্রিয়ার মুখে পড়েছিলেন, অস্কারে রাজত্ব করেছিল টাইটানিক, আর অধিকাংশ আমেরিকানের ঘরে ছিল ল্যান্ডলাইন ফোন। ঠিক সেই সময়েই গ্যালাপ ও ইউএসএ টুডে এক ব্যতিক্রমী জরিপ চালায়। ল্যান্ডলাইন ফোনে ১ হাজার ৫৫ জন আমেরিকানের সঙ্গে কথা বলে জানতে চাওয়া হয়—দূর ভবিষ্যৎ ‘২০২৫ সাল’ কেমন হবে বলে তাঁরা মনে করেন।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সিএনএন জানিয়েছে, ২০২৫ সাল নিয়ে সে সময় মার্কিনরা যে ভবিষ্যদ্বাণীগুলো করেছিল, সেগুলো সংরক্ষিত আছে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রোপার সেন্টারের জরিপ আর্কাইভে। ২০২৫ সালের শেষ প্রান্তে এসে এখন দেখা যাচ্ছে—সেই সব অনুমানের কোনোটা মিলেছে, আর কোনোটা মেলেনি।
এ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, সেই সময়ের অনেক পূর্বাভাসই ছিল বিস্ময়করভাবে সঠিক। অধিকাংশ আমেরিকান তখনই ধারণা করেছিলেন, আগামী ২৭ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে একজন কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন, সমকামী বিবাহ বৈধ ও স্বাভাবিক হয়ে উঠবে এবং একটি ‘মারাত্মক নতুন রোগ’ বিশ্বকে নাড়িয়ে দেবে। বাস্তবে বারাক ওবামার প্রেসিডেন্ট হওয়া, সমকামী বিবাহের আইনি স্বীকৃতি এবং করোনা মহামারি সেই অনুমানগুলোকে সত্য প্রমাণ করেছে।
একইভাবে অনেকেই সেই সময় সঠিকভাবে ধারণা করেছিলেন, সাধারণ মানুষের জন্য মহাকাশ ভ্রমণ খুব সাধারণ বিষয় হয়ে উঠবে না এবং ভিনগ্রহের প্রাণীর সঙ্গে মানুষের সরাসরি যোগাযোগ ঘটবে না।
তবে কিছু ভবিষ্যদ্বাণী বাস্তবতার সঙ্গে মেলেনি। জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ মনে করেছিলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র একজন নারী প্রেসিডেন্ট পাবে—যা এখনো ঘটেনি। অর্ধেকের বেশি মানুষ আশা করেছিলেন ক্যানসারের নিরাময় আবিষ্কৃত হবে এবং ৬১ শতাংশ মনে করেছিলেন মানুষ নিয়মিতভাবে ১০০ বছর বয়স পর্যন্ত বাঁচবে। বাস্তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানে অগ্রগতি হলেও এসব প্রত্যাশা পুরোপুরি পূরণ হয়নি।
জরিপে দেশের সামগ্রিক দিকনির্দেশনা নিয়েও প্রশ্ন ছিল। সেখানে ফুটে উঠেছিল প্রবল হতাশা। ৭০ শতাংশ মনে করেছিলেন ধনীদের জীবনমান উন্নত হবে, কিন্তু মধ্যবিত্তদের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিভক্ত মতামত ছিল। দরিদ্রদের জীবন আরও কঠিন হবে—এমনটাই ভাবতেন বেশির ভাগ। প্রায় ৮০ শতাংশ ধারণা করেছিলেন ব্যক্তিগত গোপনীয়তা কমবে, আর ৫৭ শতাংশ মনে করেছিলেন ব্যক্তিগত স্বাধীনতাও হ্রাস পাবে। অপরাধ বৃদ্ধি, পরিবেশের অবনতি এবং নৈতিক মূল্যবোধের পতনের আশঙ্কাও ছিল প্রবল। ৭১ শতাংশ মত দিয়েছিলেন, সন্তানকে ভালো মানুষ হিসেবে বড় করা আরও কঠিন হবে।
তবে কিছু আশাবাদী দিকও ছিল। অধিকাংশ আমেরিকান বিশ্বাস করতেন, জাতিগত সম্পর্কের উন্নতি হবে এবং চিকিৎসাসেবা আরও সহজলভ্য হবে—যদিও তা হবে ব্যয়বহুল।
গ্যালাপ আজও জরিপ চালিয়ে যাচ্ছে, যদিও এখন ল্যান্ডলাইনের ওপর নির্ভরতা কম। এই দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে জনমতও নাটকীয়ভাবে বদলে গেছে। ১৯৯৮ সালে যেখানে প্রায় ৬০ শতাংশ আমেরিকান দেশের গতিপথ নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন, বর্তমানে সেই হার নেমে এসেছে মাত্র ২৪ শতাংশে।

১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও সমাজ বাস্তবতা ছিল একেবারেই ভিন্ন। সেই বছর প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন অভিশংসন প্রক্রিয়ার মুখে পড়েছিলেন, অস্কারে রাজত্ব করেছিল টাইটানিক, আর অধিকাংশ আমেরিকানের ঘরে ছিল ল্যান্ডলাইন ফোন। ঠিক সেই সময়েই গ্যালাপ ও ইউএসএ টুডে এক ব্যতিক্রমী জরিপ চালায়। ল্যান্ডলাইন ফোনে ১ হাজার ৫৫ জন আমেরিকানের সঙ্গে কথা বলে জানতে চাওয়া হয়—দূর ভবিষ্যৎ ‘২০২৫ সাল’ কেমন হবে বলে তাঁরা মনে করেন।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সিএনএন জানিয়েছে, ২০২৫ সাল নিয়ে সে সময় মার্কিনরা যে ভবিষ্যদ্বাণীগুলো করেছিল, সেগুলো সংরক্ষিত আছে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রোপার সেন্টারের জরিপ আর্কাইভে। ২০২৫ সালের শেষ প্রান্তে এসে এখন দেখা যাচ্ছে—সেই সব অনুমানের কোনোটা মিলেছে, আর কোনোটা মেলেনি।
এ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, সেই সময়ের অনেক পূর্বাভাসই ছিল বিস্ময়করভাবে সঠিক। অধিকাংশ আমেরিকান তখনই ধারণা করেছিলেন, আগামী ২৭ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে একজন কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন, সমকামী বিবাহ বৈধ ও স্বাভাবিক হয়ে উঠবে এবং একটি ‘মারাত্মক নতুন রোগ’ বিশ্বকে নাড়িয়ে দেবে। বাস্তবে বারাক ওবামার প্রেসিডেন্ট হওয়া, সমকামী বিবাহের আইনি স্বীকৃতি এবং করোনা মহামারি সেই অনুমানগুলোকে সত্য প্রমাণ করেছে।
একইভাবে অনেকেই সেই সময় সঠিকভাবে ধারণা করেছিলেন, সাধারণ মানুষের জন্য মহাকাশ ভ্রমণ খুব সাধারণ বিষয় হয়ে উঠবে না এবং ভিনগ্রহের প্রাণীর সঙ্গে মানুষের সরাসরি যোগাযোগ ঘটবে না।
তবে কিছু ভবিষ্যদ্বাণী বাস্তবতার সঙ্গে মেলেনি। জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ মনে করেছিলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র একজন নারী প্রেসিডেন্ট পাবে—যা এখনো ঘটেনি। অর্ধেকের বেশি মানুষ আশা করেছিলেন ক্যানসারের নিরাময় আবিষ্কৃত হবে এবং ৬১ শতাংশ মনে করেছিলেন মানুষ নিয়মিতভাবে ১০০ বছর বয়স পর্যন্ত বাঁচবে। বাস্তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানে অগ্রগতি হলেও এসব প্রত্যাশা পুরোপুরি পূরণ হয়নি।
জরিপে দেশের সামগ্রিক দিকনির্দেশনা নিয়েও প্রশ্ন ছিল। সেখানে ফুটে উঠেছিল প্রবল হতাশা। ৭০ শতাংশ মনে করেছিলেন ধনীদের জীবনমান উন্নত হবে, কিন্তু মধ্যবিত্তদের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিভক্ত মতামত ছিল। দরিদ্রদের জীবন আরও কঠিন হবে—এমনটাই ভাবতেন বেশির ভাগ। প্রায় ৮০ শতাংশ ধারণা করেছিলেন ব্যক্তিগত গোপনীয়তা কমবে, আর ৫৭ শতাংশ মনে করেছিলেন ব্যক্তিগত স্বাধীনতাও হ্রাস পাবে। অপরাধ বৃদ্ধি, পরিবেশের অবনতি এবং নৈতিক মূল্যবোধের পতনের আশঙ্কাও ছিল প্রবল। ৭১ শতাংশ মত দিয়েছিলেন, সন্তানকে ভালো মানুষ হিসেবে বড় করা আরও কঠিন হবে।
তবে কিছু আশাবাদী দিকও ছিল। অধিকাংশ আমেরিকান বিশ্বাস করতেন, জাতিগত সম্পর্কের উন্নতি হবে এবং চিকিৎসাসেবা আরও সহজলভ্য হবে—যদিও তা হবে ব্যয়বহুল।
গ্যালাপ আজও জরিপ চালিয়ে যাচ্ছে, যদিও এখন ল্যান্ডলাইনের ওপর নির্ভরতা কম। এই দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে জনমতও নাটকীয়ভাবে বদলে গেছে। ১৯৯৮ সালে যেখানে প্রায় ৬০ শতাংশ আমেরিকান দেশের গতিপথ নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন, বর্তমানে সেই হার নেমে এসেছে মাত্র ২৪ শতাংশে।

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর সাবেক প্রধান জর্জ টেনেট তাঁকে ‘ওসামা বিন লাদেনের মতোই বিপজ্জনক’ বলে মনে করতেন। ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সাবেক প্রধান সাবতাই শাভিত আফসোস করে বলেছিলেন, সুযোগ পেলে তিনি তাঁকে হত্যা করতেন।
২৬ জুন ২০২৫
ইয়েমেনের দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতে এবার নতুন মাত্রার উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এক সময় একই জোটে থাকা সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এখন কার্যত বিপরীত অবস্থানে। সাম্প্রতিক বিমান হামলা ও কূটনৈতিক বক্তব্যে এই বিভাজন প্রকাশ্যে এসেছে, যা ওই অঞ্চলের যুদ্ধকে আরও জটিল করে তুলছে।
৩ ঘণ্টা আগে
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন—এমন অভিযোগ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে পুরোপুরি ‘মিথ্যা ও সাজানো’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
১ দিন আগে
তাইওয়ানকে ঘিরে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। সোমবার শুরু হওয়া এই মহড়ায় যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও সরাসরি গোলাবর্ষণও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ‘জাস্টিস মিশন ২০২৫’ নামের এই অভিযানে তাইওয়ানকে চারদিক থেকে ঘিরে সাতটি সামুদ্রিক অঞ্চলে সমন্বিত স্থল, নৌ ও আকাশ মহড়া চালানো হচ্ছে।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন—এমন অভিযোগ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে পুরোপুরি ‘মিথ্যা ও সাজানো’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই হামলার কারণে চলমান শান্তি আলোচনায় রাশিয়ার অবস্থানের ‘পরিবর্তন বা পুনর্বিবেচনা’ করা হতে পারে। তবে মস্কো এখনই আলোচনা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছে না।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন সের্গেই লাভরভের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, গতকাল রোববার রাত থেকে আজ সোমবার ভোর পর্যন্ত পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ৯১টি দূরপাল্লার ড্রোন হামলা চালায় ইউক্রেন। রুশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সবকটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। তবে এতে কোনো হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি।
লাভরভ হুমকি দিয়ে বলেন, ইউক্রেনের এমন হঠকারী কর্মকাণ্ডের জবাব দেওয়া হবে। রুশ সামরিক বাহিনী ইতিমধ্যে পাল্টা হামলার জন্য লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ করে ফেলেছে। তবে হামলার সময় প্রেসিডেন্ট পুতিন নোভগোরোদের ওই বাসভবনে ছিলেন কি না, তা স্পষ্ট করা হয়নি।
ফ্লোরিডায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক শেষ করে ইউরোপে ফেরার পথে জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে নাকচ করে দেন। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া আবারও ভয়ংকর সব মিথ্যা বিবৃতি দিচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আমাদের কূটনৈতিক অগ্রগতির সাফল্য নষ্ট করতেই এমন নাটক সাজানো হচ্ছে। তারা মূলত কিয়েভের সরকারি ভবনগুলোতে বড় ধরনের হামলার ক্ষেত্র তৈরি করার জন্য এই অজুহাত দিচ্ছে।’
জেলেনস্কি জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার প্রায় ৯০ শতাংশ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, যা রাশিয়াকে বিচলিত করে তুলেছে।
এদিকে ক্রেমলিন বলছে, আজ প্রেসিডেন্ট পুতিন টেলিফোনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এই ড্রোন হামলার বিষয়টি জানিয়েছেন। পুতিন ট্রাম্পকে বলেছেন, এই হামলার পর রাশিয়া তাদের শান্তি আলোচনার শর্তগুলো পুনরায় খতিয়ে দেখবে।
রুশ গণমাধ্যমগুলো ক্রেমলিনের সহকারী ইউরি উশাকভের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, এই খবর শুনে ট্রাম্প ‘বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ’ হয়েছেন। তবে হোয়াইট হাউস থেকে এই ফোনালাপকে কেবল ‘ইতিবাচক’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে, বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন—এমন অভিযোগ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে পুরোপুরি ‘মিথ্যা ও সাজানো’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই হামলার কারণে চলমান শান্তি আলোচনায় রাশিয়ার অবস্থানের ‘পরিবর্তন বা পুনর্বিবেচনা’ করা হতে পারে। তবে মস্কো এখনই আলোচনা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছে না।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন সের্গেই লাভরভের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, গতকাল রোববার রাত থেকে আজ সোমবার ভোর পর্যন্ত পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ৯১টি দূরপাল্লার ড্রোন হামলা চালায় ইউক্রেন। রুশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সবকটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। তবে এতে কোনো হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি।
লাভরভ হুমকি দিয়ে বলেন, ইউক্রেনের এমন হঠকারী কর্মকাণ্ডের জবাব দেওয়া হবে। রুশ সামরিক বাহিনী ইতিমধ্যে পাল্টা হামলার জন্য লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ করে ফেলেছে। তবে হামলার সময় প্রেসিডেন্ট পুতিন নোভগোরোদের ওই বাসভবনে ছিলেন কি না, তা স্পষ্ট করা হয়নি।
ফ্লোরিডায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক শেষ করে ইউরোপে ফেরার পথে জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে নাকচ করে দেন। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া আবারও ভয়ংকর সব মিথ্যা বিবৃতি দিচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আমাদের কূটনৈতিক অগ্রগতির সাফল্য নষ্ট করতেই এমন নাটক সাজানো হচ্ছে। তারা মূলত কিয়েভের সরকারি ভবনগুলোতে বড় ধরনের হামলার ক্ষেত্র তৈরি করার জন্য এই অজুহাত দিচ্ছে।’
জেলেনস্কি জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার প্রায় ৯০ শতাংশ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, যা রাশিয়াকে বিচলিত করে তুলেছে।
এদিকে ক্রেমলিন বলছে, আজ প্রেসিডেন্ট পুতিন টেলিফোনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এই ড্রোন হামলার বিষয়টি জানিয়েছেন। পুতিন ট্রাম্পকে বলেছেন, এই হামলার পর রাশিয়া তাদের শান্তি আলোচনার শর্তগুলো পুনরায় খতিয়ে দেখবে।
রুশ গণমাধ্যমগুলো ক্রেমলিনের সহকারী ইউরি উশাকভের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, এই খবর শুনে ট্রাম্প ‘বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ’ হয়েছেন। তবে হোয়াইট হাউস থেকে এই ফোনালাপকে কেবল ‘ইতিবাচক’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে, বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর সাবেক প্রধান জর্জ টেনেট তাঁকে ‘ওসামা বিন লাদেনের মতোই বিপজ্জনক’ বলে মনে করতেন। ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সাবেক প্রধান সাবতাই শাভিত আফসোস করে বলেছিলেন, সুযোগ পেলে তিনি তাঁকে হত্যা করতেন।
২৬ জুন ২০২৫
ইয়েমেনের দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতে এবার নতুন মাত্রার উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এক সময় একই জোটে থাকা সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এখন কার্যত বিপরীত অবস্থানে। সাম্প্রতিক বিমান হামলা ও কূটনৈতিক বক্তব্যে এই বিভাজন প্রকাশ্যে এসেছে, যা ওই অঞ্চলের যুদ্ধকে আরও জটিল করে তুলছে।
৩ ঘণ্টা আগে
১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও সমাজ বাস্তবতা ছিল একেবারেই ভিন্ন। সেই বছর প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন অভিশংসন প্রক্রিয়ার মুখে পড়েছিলেন, অস্কারে রাজত্ব করেছিল টাইটানিক, আর অধিকাংশ আমেরিকানের ঘরে ছিল ল্যান্ডলাইন ফোন। ঠিক সেই সময়েই গ্যালাপ ও ইউএসএ টুডে এক ব্যতিক্রমী জরিপ চালায়।
১ দিন আগে
তাইওয়ানকে ঘিরে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। সোমবার শুরু হওয়া এই মহড়ায় যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও সরাসরি গোলাবর্ষণও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ‘জাস্টিস মিশন ২০২৫’ নামের এই অভিযানে তাইওয়ানকে চারদিক থেকে ঘিরে সাতটি সামুদ্রিক অঞ্চলে সমন্বিত স্থল, নৌ ও আকাশ মহড়া চালানো হচ্ছে।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

তাইওয়ানকে ঘিরে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। সোমবার শুরু হওয়া এই মহড়ায় যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও সরাসরি গোলাবর্ষণও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ‘জাস্টিস মিশন ২০২৫’ নামের এই অভিযানে তাইওয়ানকে চারদিক থেকে ঘিরে সাতটি সামুদ্রিক অঞ্চলে সমন্বিত স্থল, নৌ ও আকাশ মহড়া চালানো হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি এখন পর্যন্ত তাইওয়ানকে লক্ষ্য করে চীনের সর্ববৃহৎ ও সবচেয়ে আক্রমণাত্মক সামরিক প্রদর্শন।
চীনের পূর্বাঞ্চলীয় থিয়েটার কমান্ড জানিয়েছে—মহড়ায় স্থল ও সমুদ্রের লক্ষ্যবস্তুর ওপর সিমুলেটেড হামলা, পাশাপাশি তাইওয়ানের প্রধান বন্দরগুলো অবরোধ করার অনুশীলন করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্ন করতে বা চাপের মুখে ফেলতে এই ধরনের অবরোধ ব্যবহৃত হতে পারে বলে মনে করছেন সামরিক বিশ্লেষকেরা। সরাসরি গোলাবর্ষণের মহড়া মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) পর্যন্ত চলবে এবং আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় এবার তাইওয়ানের আরও কাছাকাছি ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল ঘোষণা করা হয়েছে।
এই মহড়ার ফলে বেসামরিক বিমান ও নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বেশ কয়েকটি এয়ারলাইন তাদের ফ্লাইটের রুট পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে এবং তাইওয়ানের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বিকল্প আকাশপথ ব্যবহারের প্রস্তুতি নিয়েছে। চীনা সামরিক কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, এই মহড়া ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতাপন্থী শক্তি’ ও ‘বিদেশি হস্তক্ষেপের’ বিরুদ্ধে কঠোর সতর্কবার্তা।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি তাইওয়ানের কাছে ১১.১ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যা ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্যাকেজ। এতে রয়েছে ৮২টি হিমার্স রকেট লঞ্চার, ৪২০টি দূরপাল্লার এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র, স্বচালিত হাউইটজার, উন্নত ড্রোন ব্যবস্থা ও অ্যান্টি-আর্মার অস্ত্র। বেইজিং এই অস্ত্রচুক্তিকে তীব্রভাবে নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এতে তাইওয়ান একটি ‘বারুদের স্তূপে’ পরিণত হচ্ছে।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মহড়া চলাকালে তাদের দ্বীপভূমির চারপাশে ৮৯টি চীনা সামরিক বিমান, ১৪টি নৌজাহাজ ও ১৪টি কোস্ট গার্ড জাহাজ শনাক্ত করা হয়েছে। কিছু চীনা জাহাজ তাইওয়ানের উপকূলের খুব কাছাকাছি অবস্থানে এসে চোখ রাঙাচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রেখেছে তাইওয়ান।
চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে, মহড়ার মূল লক্ষ্য তাইওয়ানের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর—উত্তরের কিলুং ও দক্ষিণের কাওশিয়ুং বন্ধ করে দেওয়ার সক্ষমতা পরীক্ষা। চীন তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড দাবি করলেও তাইওয়ান বলছে, দ্বীপটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণের অধিকার শুধু সেখানকার জনগণেরই আছে।

তাইওয়ানকে ঘিরে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। সোমবার শুরু হওয়া এই মহড়ায় যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও সরাসরি গোলাবর্ষণও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ‘জাস্টিস মিশন ২০২৫’ নামের এই অভিযানে তাইওয়ানকে চারদিক থেকে ঘিরে সাতটি সামুদ্রিক অঞ্চলে সমন্বিত স্থল, নৌ ও আকাশ মহড়া চালানো হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি এখন পর্যন্ত তাইওয়ানকে লক্ষ্য করে চীনের সর্ববৃহৎ ও সবচেয়ে আক্রমণাত্মক সামরিক প্রদর্শন।
চীনের পূর্বাঞ্চলীয় থিয়েটার কমান্ড জানিয়েছে—মহড়ায় স্থল ও সমুদ্রের লক্ষ্যবস্তুর ওপর সিমুলেটেড হামলা, পাশাপাশি তাইওয়ানের প্রধান বন্দরগুলো অবরোধ করার অনুশীলন করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্ন করতে বা চাপের মুখে ফেলতে এই ধরনের অবরোধ ব্যবহৃত হতে পারে বলে মনে করছেন সামরিক বিশ্লেষকেরা। সরাসরি গোলাবর্ষণের মহড়া মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) পর্যন্ত চলবে এবং আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় এবার তাইওয়ানের আরও কাছাকাছি ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল ঘোষণা করা হয়েছে।
এই মহড়ার ফলে বেসামরিক বিমান ও নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বেশ কয়েকটি এয়ারলাইন তাদের ফ্লাইটের রুট পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে এবং তাইওয়ানের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বিকল্প আকাশপথ ব্যবহারের প্রস্তুতি নিয়েছে। চীনা সামরিক কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, এই মহড়া ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতাপন্থী শক্তি’ ও ‘বিদেশি হস্তক্ষেপের’ বিরুদ্ধে কঠোর সতর্কবার্তা।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি তাইওয়ানের কাছে ১১.১ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যা ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্যাকেজ। এতে রয়েছে ৮২টি হিমার্স রকেট লঞ্চার, ৪২০টি দূরপাল্লার এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র, স্বচালিত হাউইটজার, উন্নত ড্রোন ব্যবস্থা ও অ্যান্টি-আর্মার অস্ত্র। বেইজিং এই অস্ত্রচুক্তিকে তীব্রভাবে নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এতে তাইওয়ান একটি ‘বারুদের স্তূপে’ পরিণত হচ্ছে।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মহড়া চলাকালে তাদের দ্বীপভূমির চারপাশে ৮৯টি চীনা সামরিক বিমান, ১৪টি নৌজাহাজ ও ১৪টি কোস্ট গার্ড জাহাজ শনাক্ত করা হয়েছে। কিছু চীনা জাহাজ তাইওয়ানের উপকূলের খুব কাছাকাছি অবস্থানে এসে চোখ রাঙাচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রেখেছে তাইওয়ান।
চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে, মহড়ার মূল লক্ষ্য তাইওয়ানের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর—উত্তরের কিলুং ও দক্ষিণের কাওশিয়ুং বন্ধ করে দেওয়ার সক্ষমতা পরীক্ষা। চীন তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড দাবি করলেও তাইওয়ান বলছে, দ্বীপটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণের অধিকার শুধু সেখানকার জনগণেরই আছে।

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর সাবেক প্রধান জর্জ টেনেট তাঁকে ‘ওসামা বিন লাদেনের মতোই বিপজ্জনক’ বলে মনে করতেন। ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সাবেক প্রধান সাবতাই শাভিত আফসোস করে বলেছিলেন, সুযোগ পেলে তিনি তাঁকে হত্যা করতেন।
২৬ জুন ২০২৫
ইয়েমেনের দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতে এবার নতুন মাত্রার উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এক সময় একই জোটে থাকা সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এখন কার্যত বিপরীত অবস্থানে। সাম্প্রতিক বিমান হামলা ও কূটনৈতিক বক্তব্যে এই বিভাজন প্রকাশ্যে এসেছে, যা ওই অঞ্চলের যুদ্ধকে আরও জটিল করে তুলছে।
৩ ঘণ্টা আগে
১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও সমাজ বাস্তবতা ছিল একেবারেই ভিন্ন। সেই বছর প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন অভিশংসন প্রক্রিয়ার মুখে পড়েছিলেন, অস্কারে রাজত্ব করেছিল টাইটানিক, আর অধিকাংশ আমেরিকানের ঘরে ছিল ল্যান্ডলাইন ফোন। ঠিক সেই সময়েই গ্যালাপ ও ইউএসএ টুডে এক ব্যতিক্রমী জরিপ চালায়।
১ দিন আগে
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন—এমন অভিযোগ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে পুরোপুরি ‘মিথ্যা ও সাজানো’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
১ দিন আগে