Ajker Patrika

ইসরায়েলের হামলার পরও সুরক্ষিত হিজবুল্লাহর ভূগর্ভস্থ অস্ত্রাগার ও যোগাযোগ

ডয়চে ভেলে
আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২: ৪১
ইসরায়েলের হামলার পরও সুরক্ষিত হিজবুল্লাহর ভূগর্ভস্থ অস্ত্রাগার ও যোগাযোগ

নমনীয় কাঠামোর চেইন অব কমান্ড, বিস্তৃত সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্ক এবং গত এক বছরে ক্ষেপণাস্ত্র ও অস্ত্রের বিশাল অস্ত্রাগার গড়ে তোলার কারণে হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের হামলা সামলে উঠতে পেরেছে। গোষ্ঠীটির কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অবগত তিনটি সূত্রের বরাতে রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে। 

গত সপ্তাহে ইসরায়েলের হামলায় হিজবুল্লাহর জ্যেষ্ঠ কমান্ডারদের টার্গেট করা হয় এবং পেজার-ওয়াকিটকির সিরিজ বিস্ফোরণেও অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন। গত শুক্রবার ইসরায়েলের হামলায় হিজবুল্লাহর অভিজাত রাদওয়ান বাহিনীর প্রতিষ্ঠা ও নেতৃত্ব দেওয়া ইব্রাহিম আকিল নিহত হন। সোমবার বৈরুতে হামলায় ৫৬০ জনেরও বেশি মারা গেছে ৷ নিহতদের মধ্যে ৫০ শিশুও ছিল বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। 

রোববার ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর প্রধান হেরজি হালেভি দাবি করেছেন, আকিলের মৃত্যু হিজবুল্লাহকে নাড়া দিয়েছে। তাঁর দাবি, হামলায় হিজবুল্লাহর হাজার হাজার রকেট ও শেল ধ্বংস হয়েছে। তবে হিজবুল্লাহ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে পরিচিত দুটি সূত্র জানিয়েছে, গোষ্ঠীটি দ্রুতই হামলায় নিহত আকিল এবং অন্যান্য জ্যেষ্ঠ কমান্ডারের দায়িত্ব প্রতিস্থাপন করেছে। হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ ১ আগস্ট একটি ভাষণে বলেছিলেন, যখনই কোনো নেতাকে হত্যা করা হয়, তখন দলটি দ্রুত তার শূন্যস্থান পূরণ করে। 

হিজবুল্লাহর একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, যোগাযোগ ডিভাইসে হামলায় দেড় হাজার যোদ্ধাকে আহত করেছে। তাঁদের অনেকেই অন্ধ হয়ে গেছেন বা তাঁদের হাত উড়ে গেছে। এটি একটি বড় ধাক্কা হলেও হিজবুল্লাহর শক্তির একটি ভগ্নাংশই কেবল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুক্রবার মার্কিন কংগ্রেসের একটি প্রতিবেদনে গোষ্ঠীটির যোদ্ধার সংখ্যা ৪০ থেকে ৫০ হাজারের মতো বলে উল্লেখ করা হলেও নাসরুল্লাহর দাবি, দলটির ১ লাখ যোদ্ধা রয়েছেন। 

অক্টোবর থেকে মিত্র হামাসের সমর্থনে ইসরায়েলে নানা সময় ছোট আকারে হামলা করেছে হিজবুল্লাহ। তিনটি সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, তখন থেকে দক্ষিণের ফ্রন্টলাইন এলাকায় হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের পুনরায় মোতায়েন করা হয়েছে ৷ এসব যোদ্ধার অনেকে সিরিয়া থেকেও এসেছেন বলে জানিয়েছে এই সূত্রগুলো। 

সর্বাত্মক যুদ্ধ এড়াতে চাইলেও পরবর্তী সময়ে দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের আভাস পেয়ে হিজবুল্লাহ লেবাননে দ্রুতগতিতে অনেক রকেট জড়ো করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে রয়টার্সের সূত্রগুলো। হিজবুল্লাহর প্রধান সমর্থক ও অস্ত্র সরবরাহকারী ইরান। মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে বিভিন্ন দেশে ইরানের মিত্র বাহিনীগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী দল এই হিজবুল্লাহ। তাদের অনেক অস্ত্রই ইরানি, রাশিয়ান বা চীনা মডেলের। 

বিষয়টির সংবেদনশীলতার কারণে রয়টার্সের সূত্রগুলো নাম প্রকাশে রাজি হয়নি। নতুন আসা অস্ত্রগুলো সম্পর্কে বা কোথা থেকে কেনা হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি সূত্রগুলো। হিজবুল্লাহর জনসংযোগ অফিসও এই প্রতিবেদনে উল্লেখিত বিষয়ে মন্তব্য করতে রয়টার্সের অনুরোধের জবাব দেয়নি। 

কিংস কলেজ লন্ডনের স্কুল অব সিকিউরিটি স্টাডিজের জ্যেষ্ঠ লেকচারার আন্দ্রেয়াস ক্রিগ বলেছেন, গত সপ্তাহের হামলায় হিজবুল্লাহর কার্যক্রম ব্যাহত হলেও নেটওয়ার্কভিত্তিক সাংগঠনিক কাঠামো এটিকে একটি অত্যন্ত স্থিতিশীল শক্তিতে পরিণত হতে সাহায্য করেছে। তিনি বলেন, ‘সংখ্যা ও প্রযুক্তি বিবেচনায় নয়, বরং স্থিতিশীলতা বিবেচনায় ইসরায়েলের যুদ্ধক্ষেত্রে তার সবচেয়ে শক্তিশালী শত্রুর মুখোমুখি হয়েছে।’ 

চলতি সপ্তাহে সংঘর্ষ বেড়েছে। ২৪ সেপ্টেম্বর ইসরায়েল হিজবুল্লাহর আরেক শীর্ষ কমান্ডার ইব্রাহিম কুবাইসিকে হত্যা করেছে। তার পরও হিজবুল্লাহ অপারেশন চালিয়ে যাওয়ার সক্ষমতা দেখিয়েছে। এত হামলার পরও ইসরায়েলের অভ্যন্তরে শত শত রকেট নিক্ষেপ করেছে। 

বুধবার হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, সীমান্ত থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে তেল আবিবের কাছে একটি ইসরায়েলি গোয়েন্দা ঘাঁটি লক্ষ্য করে তারা হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তেল আবিবে একটি ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপণযোগ্য মিসাইল ইসরায়েলি বিমান বাধা দেওয়ায় সতর্কীকরণ সাইরেন বেজে উঠেছিল। 

হিজবুল্লাহর সবচেয়ে শক্তিশালী রকেটগুলোর মধ্যে কোনটি উৎক্ষেপণ করা হয়েছে তা এখনো জানায়নি গোষ্ঠীটি। হিজবুল্লাহর কাছে ইরান নির্মিত ফাতেহ-১১০ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, যার রেঞ্জ ২৫০-৩০০ কিলোমিটার। ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের ২০১৮ সালের একটি গবেষণাপত্র অনুসারে, হিজবুল্লাহর ফাতেহ-১১০ এর ৪৫০-৫০০ কেজি ওয়ারহেড বহনের সক্ষমতা আছে। 

এক জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা দাবি করেছেন, পেজার ও রেডিও বিস্ফোরিত হওয়ার পরও হিজবুল্লাহর রকেট হামলা চালাতে সক্ষম হওয়াটাই প্রমাণ করে যে গ্রুপটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মুখেও চেইন অব কমান্ড বজায় রেখে কাজ করতে পারছে। ফিক্সড-লাইন টেলিফোন নেটওয়ার্ক এবং অন্যান্য ডিভাইস ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বজায় রেখে চলেছে ৷ অনেক যোদ্ধা পেজারের পুরোনো মডেল বহন করছিলেন, ফলে গত সপ্তাহের আক্রমণে তাদেরও কোনো ক্ষতি হয়নি। 

ইসরায়েলের হামলায় বেশ কয়েকজন কমান্ডার নিহত হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় হিজবুল্লাহ ফেব্রুয়ারিতে যোদ্ধাদের সেলফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে পেজার ব্যবহার বাড়িয়েছিল। রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলা জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চেইন অব কমান্ড ভেঙে গেলেও সীমান্তের কাছে কয়েকটি গ্রাম নিয়ে গঠিত ছোট, স্বাধীন গ্রুপে কাজ করার জন্য ফ্রন্টলাইন যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তারা স্বাধীনভাবেই দীর্ঘ সময়ের জন্য ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করতে সক্ষম। 

এর আগে, ২০০৬ সালে হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলের মধ্যে সবশেষ যুদ্ধের সময় এমন ঘটনা ঘটেছিল। ইসরায়েলের হামলার মুখেও কয়েক সপ্তাহ ধরে গোষ্ঠীটির যোদ্ধারা কয়েক সপ্তাহ ধরে সীমান্তের গ্রামগুলোতে যুদ্ধ চালিয়ে গিয়েছিল। 

দুটি সূত্র জানিয়েছে, হিজবুল্লাহ বেশ ভালোভাবেই তাদের অস্ত্র লুকিয়ে রেখেছে। রোববার দক্ষিণ লেবাননের এমন এলাকা থেকে রকেট ছোড়া হয়েছিল যেখানে তার কিছুক্ষণ আগেই ইসরায়েল হামলা চালিয়েছিল। হিজবুল্লাহর ভূগর্ভস্থ অস্ত্রাগার রয়েছে বলে মনে করা হয় এবং গত মাসে প্রকাশিত এক ফুটেজ যাতে দেখা যায়, হিজবুল্লাহর যোদ্ধারা রকেট লঞ্চার নিয়ে টানেলের মধ্য দিয়ে ট্রাক চালাচ্ছেন। রোববার ছোড়া রকেটগুলো ভূগর্ভ থেকে নিক্ষেপ করা হয়েছিল কি না, সেটি অবশ্য রয়টার্সের সূত্র জানাতে পারেনি। 

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত বলেছেন, সোমবারের হামলায় হিজবুল্লাহর হাজার হাজার রকেট ও যুদ্ধাস্ত্র ধ্বংস হয়েছে ৷ ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, দূরপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, ১০০ কেজি বিস্ফোরক বহন করতে সক্ষম ওয়ারহেডসহ রকেট, স্বল্প পাল্লার রকেট এবং বিস্ফোরক ইউএভি সোমবারের আঘাতে ধ্বংস হয়েছে। 

মার্কিন কংগ্রেসের এক প্রতিবেদন অনুসারে, হিজবুল্লাহর অস্ত্রাগারে প্রায় দেড় লাখ রকেট রয়েছে। সবচেয়ে শক্তিশালী এবং দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইলগুলো মাটির নিচেই রাখা হয়েছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রাম্পকে তরুণদের ‘রোল মডেল’ বললেন এক সময়ের ঘোর বিরোধী নিকি মিনাজ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
‘আমেরিকাফেস্ট’ সম্মেলনের মঞ্চে নিকি মিনাজ। ছবি: সংগৃহীত
‘আমেরিকাফেস্ট’ সম্মেলনের মঞ্চে নিকি মিনাজ। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় রক্ষণশীল সংগঠন টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ আয়োজিত ‘আমেরিকাফেস্ট’ সম্মেলনে হঠাৎ উপস্থিত হয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের প্রশংসা করেছেন মার্কিন র‍্যাপ তারকা নিকি মিনাজ। রোববার (২১ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত ওই সম্মেলনে তিনি তরুণ পুরুষদের জন্য ট্রাম্প ও ভ্যান্সকে ‘রোল মডেল’ হিসেবে উল্লেখ করেন। মিনাজের এই মন্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ চমক সৃষ্টি করেছে।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) ‘ফরচুন’ জানিয়েছে, এই সম্মেলনটি প্রয়াত রক্ষণশীল কর্মী চার্লি কার্কের স্মরণে আয়োজন করা হয়। মঞ্চে নিকি মিনাজের সাক্ষাৎকার নেন চার্লি কার্কের স্ত্রী ও বর্তমানে টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ-এর নেতৃত্বে থাকা অ্যারিকা কার্ক। আলোচনায় ট্রাম্পের প্রতি নতুন সমর্থনের কথা জানান মিনাজ—যদিও অতীতে তিনি ট্রাম্পের কঠোর সমালোচক ছিলেন। পাশাপাশি তিনি নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতারও নিন্দা জানান।

মিনাজ ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট গভর্নর গ্যাভিন নিউসমকে কটাক্ষ করে ট্রাম্পের দেওয়া ‘নিউ-স্কাম’ নামটি ব্যবহার করেন। বর্তমান প্রশাসনের প্রশংসা করে তিনি বলেন—বর্তমান প্রশাসনে হৃদয় ও আত্মা আছে এবং ট্রাম্প ও ভ্যান্স দুজনই এমন নেতা, যাদের সঙ্গে সাধারণ মানুষ সহজে নিজেদের মিল খুঁজে পায়।

এদিকে মঞ্চে এক অস্বস্তিকর মুহূর্ত তৈরি হয়, যখন ভ্যান্সের রাজনৈতিক দক্ষতার প্রশংসা করতে গিয়ে মিনাজ তাঁকে ‘অ্যাসাসিন’ বলে ফেলেন। কথাটি বলার পরই তিনি থেমে যান এবং পরিস্থিতি কিছুটা বিব্রতকর হয়ে ওঠে। চার্লি কার্ক হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ায় শব্দটি উপস্থিত অনেকের মনে আঘাত দেয়।

সম্প্রতি মিনাজ ট্রাম্পের ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ দেওয়া নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টান নির্যাতন সংক্রান্ত একটি পোস্ট শেয়ার করেছিলেন, যেখানে সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হয়। এ নিয়ে তিনি জাতিসংঘে মার্কিন মিশনে আয়োজিত এক প্যানেল আলোচনাতেও অংশ নেন।

নিজের পরিবর্তিত অবস্থান নিয়ে মিনাজ বলেন, ‘মত বদলানো দোষের নয়—মনের কথা বলাই এখন সবচেয়ে বড় অপরাধ হয়ে গেছে।’ বিনোদন জগৎ থেকে সমালোচনার প্রসঙ্গে জানান, তিনি এসব নিয়ে ভাবেন না। একসময় ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির তীব্র বিরোধিতা করা এই শিল্পী এখন প্রকাশ্যেই বলছেন, তাঁর মত বদলানো ঠিকই আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুদ্ধের মধ্যেই গাজায় দুবার সন্তান প্রসবের ভয়াবহ স্মৃতি হাদিলের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
হাদিল আল ঘেরবাওয়ির কোলে ছেলে জাওয়াদ। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান
হাদিল আল ঘেরবাওয়ির কোলে ছেলে জাওয়াদ। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান

‘এই বিভীষিকা আমি কখনো ভুলতে পারব না’—বলছিলেন হাদিল আল ঘেরবাওয়ি। ২৬ বছর বয়সী এই ফিলিস্তিনি নারী গাজা যুদ্ধে চরম ক্ষুধা, ভয় আর অনিশ্চয়তার মধ্যেই দুটি গর্ভধারণ ও দুবার সন্তান জন্ম দিয়েছেন।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর সময় হাদিল সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভধারণ হওয়ায় তিনি নিয়মিত ডাক্তার দেখাতেন, আলট্রাসাউন্ড করাতেন এবং ভিটামিন নিতেন। গাজা সিটির পূর্বাংশে ইসরায়েল সীমান্তের কাছে বসবাস করায় যুদ্ধ শুরুর প্রথম দিনই তিনি গাজার পশ্চিম অংশে বসবাস করা বাবা-মায়ের বাড়িতে চলে যান। হাদিল ভেবেছিলেন, কয়েক দিনের মধ্যেই তিনি আবার স্বামীর বাড়িতে ফিরে যাবেন। কিন্তু এরপর পরিবারটি অন্তত ১৩ বার বাস্তুচ্যুত হয় এবং স্বামীর বাড়িটিও একদিন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়।

২০২৩ সালের অক্টোবর মাসেই গাজা সিটিতে একটি আবাসিক ভবনে বড় ধরনের হামলার কাছাকাছি অবস্থানে ছিলেন হাদিল। তাঁর কাছে এটিকে একটি ভূমিকম্প মনে হয়েছিল। পরে আশ্রয় নেন আল-শিফা হাসপাতালে। সেখানে অন্যান্য আশ্রয়প্রার্থীর ভিড় এত বেশি ছিল যে, বাথরুম ব্যবহার করাও প্রায় অসম্ভব ছিল। সেদিনের দৃশ্য আজও তাড়া করে ফেরে হাদিলকে। স্তূপ করে রাখা লাশ, ড্রামে রাখা খণ্ড-বিখণ্ড অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আর তীব্র গন্ধ। তিনি বলেন, ‘আমি গর্ভবতী ছিলাম, সহ্য করতে পারিনি।’

অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে—নিরাপত্তার আশায় এবার তিনি ও তাঁর স্বামী খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে যান এবং চিকিৎসকদের কাছে আগেভাগেই সন্তান প্রসবের অনুরোধ করেন। হাদিল যখন সন্তান প্রসব করছিলেন, তখন হাসপাতালটির পাশের ভবনেই হামলা হয় এবং আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিশৃঙ্খল এই পরিস্থিতিতে সন্তান বদলে যাওয়ার আতঙ্কও গ্রাস করেছিল হাদিলকে। তবে আতঙ্কের মধ্যেই শেষ পর্যন্ত তিনি ছেলে জাওয়াদের জন্ম দেন।

নবজাতক নিয়ে হাদিলকে ৩০ জনের সঙ্গে একটি কক্ষে গাদাগাদি করে থাকতে হয়েছিল। সেই সময়টিতে সেলাইয়ের তীব্র ব্যথার মধ্যেও তিনি কোনো ওষুধ পাননি; রাতের পর রাত চুপচাপ এই ব্যথা সহ্য করেছেন। তাঁর ধারণা, প্রসবের পর তিনি বিষণ্নতায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।

কয়েক মাস পর তাঁরা একটি তাঁবুতে ওঠেন। বালু, পোকামাকড় আর প্রচণ্ড ঠান্ডায় একের পর এক নবজাতকের মৃত্যুর খবরে সারাক্ষণ আচ্ছন্ন হয়ে থাকতেন হাদিল। রাতে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে বারবার জেগে উঠতেন। জাওয়াদের বয়স ৯ মাস হলে আবারও গর্ভবতী হন তিনি। হাদিল বলেন, ‘তাঁবুতে থেকে আরেকটি সন্তান—ভীষণ ধাক্কা খেয়েছিলাম।’

চলতি বছরের জানুয়ারিতে সাময়িক যুদ্ধবিরতির খবর কিছুটা আশা জাগিয়েছিল তাঁদের। সেই আশা থেকেই ঝুঁকি নিয়ে তাঁরা নিজেদের বাড়িতে ফিরে যান। কিন্তু ছয় সপ্তাহ পরই ভেঙে যায় যুদ্ধবিরতি। পেটে সন্তান নিয়ে আবারও পালাতে হয় হাদিলকে। পালানোর পর তাঁদের বাড়িটিও ধ্বংস হয়ে যায়। যুদ্ধের মধ্যে দ্বিতীয় গর্ভধারণ হাদিলের জন্য ছিল সবচেয়ে কঠিন। এই সন্তান পেটে রাখার ৯ মাসই তাঁর যুদ্ধের মধ্যে কেটেছে। এমনও দিন গেছে, সারা দিন শুধু একটি শসা খেয়ে কাটিয়েছেন। আর কোথাও এক মুঠো খাবার পেলে নিজের ভাগটুকু তিনি ছেলে জাওয়াদকে দিতেন।

দ্বিতীয়বার প্রসবের সময়ও তিনি বাবা-মায়ের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন। কারণ ওই বাড়ি থেকে কাছাকাছি একটি হাসপাতালে নবজাতক সুরক্ষার জন্য ইনকিউবেটর ছিল। এক রাতে প্রসবব্যথা শুরু হলে, লিফট না থাকায় পাঁচ তলা থেকে হেঁটেই নামতে হয় হাদিলকে। পরে তিনি অ্যাম্বুলেন্সে ওঠেন এবং ওই হাসপাতালে দ্বিতীয় ছেলে ফারেসের জন্ম দেন। জন্মের সময় ফারেসের ওজন ছিল মাত্র ২ কেজি।

এবারে অ্যানেসথেসিয়া ছাড়াই সেলাই দেওয়া হয় হাদিলকে। আর অন্যকে সুযোগ করে দিতে কিছুক্ষণের মধ্যেই বিছানা খালি করে তাঁকে চেয়ারে বসে থাকতে হয়। ফারেসের জন্মের পাঁচ ঘণ্টা পর, চরম ক্লান্তি ও ব্যথা নিয়ে তিনি আবার পাঁচ তলা সিঁড়ি বেয়ে বাবা-মায়ের ঘরে ফেরেন। এই যুদ্ধ, তাঁর শরীর ও মনে রেখে গেছে এমন ক্ষত—যা ভুলবার নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আসাদের খালি হয়ে যাওয়া কুখ্যাত কারাগারগুলো ভরে উঠছে আবার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বাশার আল-আসাদের পতনের পর খালি হয়ে গিয়েছিল হোমসের এই কারাগারটি। ছবি: রয়টার্স
বাশার আল-আসাদের পতনের পর খালি হয়ে গিয়েছিল হোমসের এই কারাগারটি। ছবি: রয়টার্স

বাশার আল-আসাদের পতনের পর সিরিয়ার মানুষ ভেবেছিল—দেশটির কুখ্যাত কারাগার অধ্যায়ের অবসান ঘটেছে। বিদ্রোহীরা জেলখানার দরজা ভেঙে বন্দীদের মুক্ত করেছিল, পরিবারের লোকেরা ছুটে গিয়েছিল নিখোঁজ স্বজনদের খোঁজে। কিন্তু এক বছর না পেরোতেই সেই কারাগারগুলো আবার ভরে উঠছে। এবার নতুন সরকারের অধীনেই সিরিয়ায় আবারও ফিরে এসেছে গ্রেপ্তার, নির্যাতন ও চাঁদাবাজির অভিযোগ।

রয়টার্সের এক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, সিরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে গত এক বছরে অন্তত ৮২৯ জন নিরাপত্তাজনিত কারণে আটক হয়েছেন। প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আটক ব্যক্তিদের বড় অংশই কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ বা আদালতের আদেশ ছাড়াই বন্দী রয়েছেন।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) প্রকাশিত রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসাদ-পরবর্তী সিরিয়ায় প্রথম দফার গ্রেপ্তার শুরু হয়েছিল বিদ্রোহীদের বিজয়ের পরপরই। সে সময় মূলত আসাদের আমলের সেনা সদস্য ও কর্মকর্তাদের আটক করা হয়েছিল। পরে শীতের শেষ দিকে উপকূলীয় অঞ্চলে সহিংসতার জের ধরে আলাউইত সম্প্রদায়ের শত শত মানুষ গ্রেপ্তার হন। বসন্ত ও গ্রীষ্মে দ্রুজ অধ্যুষিত দক্ষিণাঞ্চলেও ব্যাপক ধরপাকড় চলে। একই সঙ্গে সুন্নি, খ্রিষ্টান ও শিয়া সম্প্রদায়ের লোকজনও ‘নিরাপত্তা ঝুঁকি’ বা আসাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অস্পষ্ট অভিযোগে আটক হন।

রয়টার্স জানিয়েছে, আসাদ আমলের অন্তত ২৮টি কারাগার ও আটক কেন্দ্র আবার সক্রিয় হয়েছে। এগুলোর অনেকগুলোই অতীতে নির্যাতনের জন্য কুখ্যাত ছিল। যদিও বর্তমান সরকার বলছে, অপরাধীদের বিচারের প্রয়োজনে এসব কেন্দ্র ব্যবহার করা হচ্ছে এবং অনেক বন্দীকে ইতিমধ্যে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, তবে কোনো নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান তারা প্রকাশ করেনি।

সাক্ষাৎকারে সাবেক বন্দী ও স্বজনেরা জানিয়েছেন, আটক কেন্দ্রগুলোতে ভয়াবহ মানবেতর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গাদাগাদি করে বন্দী রাখা, খাবার ও চিকিৎসার অভাব, ত্বকের রোগ এবং নিয়মিত মারধরের অভিযোগ রয়েছে। অন্তত ১১ জন বন্দী কারা হেফাজতে মারা গেছেন বলে নথিভুক্ত করেছে রয়টার্স। এদের মধ্যে কয়েকজনের মৃত্যুর খবর পরিবার জানতই না—দাফন সম্পন্ন হওয়ার পর তারা বিষয়টি জানতে পারে।

চাঁদাবাজিও নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। ১৪টি পরিবার জানিয়েছে, স্বজনকে মুক্তির বিনিময়ে ৫০০ থেকে ১৫ হাজার ডলার পর্যন্ত দাবি করা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে এই অঙ্ক ৯০ হাজার ডলার ছাড়িয়েছে। অর্থ পরিশোধের পরও অনেকেই মুক্তি পাননি।

এদিকে সরকার স্বীকার করেছে, প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্গঠনের সময় কিছু ‘ফাঁকফোকর’ তৈরি হয়েছে এবং কিছু নিরাপত্তা সদস্য নীতিমালা লঙ্ঘন করেছে। তাদের দাবি, চাঁদাবাজি ও সহিংসতার ঘটনায় অন্তত ১৫৯ জন নিরাপত্তা সদস্যকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।

তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ব্যাপক আটক ও গুমের অভিযোগ নতুন সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরও আসাদের পতনের পর ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা ও নির্বিচার আটক’-এর তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছে।

আসাদের শাসনামলের মতো নির্মম নির্যাতন না হলেও, পুরোনো কারাগার ব্যবস্থার পুনরুজ্জীবন সিরিয়ার নতুন ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি করছে। মানবাধিকারকর্মীদের ভাষায়, ‘শাসক বদলেছে, কিন্তু কারাগারের ছায়া এখনো কাটেনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মস্কোতে গাড়িবোমা হামলায় রুশ জেনারেল সারভারভ নিহত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
জেনারেল সারভারভের গাড়ির নিচে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরক ডিভাইস পেতে রাখা হয়েছিল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে
জেনারেল সারভারভের গাড়ির নিচে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরক ডিভাইস পেতে রাখা হয়েছিল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে এক ভয়াবহ গাড়িবোমা হামলায় দেশটির শীর্ষস্থানীয় এক জেনারেল নিহত হয়েছেন। আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে বলে রুশ কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি রাশিয়ার ইনভেস্টিগেটিভ কমিটির বরাতে জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তির নাম লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফানিল সারভারভ (৫৬)। তিনি রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর অপারেশনাল ট্রেনিং বিভাগের প্রধান ছিলেন।

তদন্ত কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আজ স্থানীয় সময় সকালে মস্কোর দক্ষিণাঞ্চলের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের পার্কিং লটে এই বিস্ফোরণ ঘটে। জেনারেল সারভারভের গাড়ির নিচে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরক ডিভাইস পেতে রাখা হয়েছিল। গাড়িটি চালু করার পরপরই সেটির বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে গুরুতর আহত অবস্থায় সারভারভকে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।

ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া ছবিতে দেখা গেছে, একটি সাদা রঙের গাড়ি বিস্ফোরণে দুমড়েমুচড়ে গেছে এবং সেটির যন্ত্রাংশ উড়ে গিয়ে পাশে থাকা অন্য যানবাহনের ওপর পড়েছে।

রুশ ইনভেস্টিগেটিভ কমিটি এ ঘটনাকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে অভিহিত করে তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিক তদন্তে রুশ কর্মকর্তাদের ধারণা, এই হামলার নেপথ্যে ইউক্রেনীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাত থাকতে পারে। তবে ইউক্রেন এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, জেনারেল সারভারভের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরপরই প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে তা জানানো হয়েছে।

৫৬ বছর বয়সী ফানিল সারভারভ রুশ সামরিক বাহিনীর অত্যন্ত অভিজ্ঞ কর্মকর্তা ছিলেন। রুশ গণমাধ্যমের তথ্যমতে, ফানিল সারভারভ নব্বইয়ের দশক এবং ২০০০ সালের শুরুতে তিনি ওসেটিয়ান-ইঙ্গুশ সংঘাত ও চেচেন যুদ্ধে সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন। ২০১৫-১৬ সালে সিরিয়ায় রুশ সামরিক অভিযানেও তিনি নেতৃত্ব দেন।

২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযান শুরু করার পর থেকে মস্কোতে হাইপ্রোফাইল ব্যক্তিদের ওপর বেশ কয়েকটি বড় হামলার ঘটনা ঘটেছে। ২০২২ সালে পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র আলেকজান্ডার দুগিনের কন্যা দারিয়া দুগিনা গাড়িবোমা হামলায় নিহত হন।

চলতি বছরের এপ্রিলে জেনারেল ইয়ারোস্লাভ মোসকালিক ও ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে জেনারেল ইগর কিরিলভও একই ধরনের হামলায় প্রাণ হারান।

নীতিগত কারণে ইউক্রেন সাধারণত এ ধরনের হামলার দায় স্বীকার করে না। তবে গত বছর জেনারেল কিরিলভ নিহতের ঘটনায় ইউক্রেনীয় নিরাপত্তা সংস্থার জড়িত থাকার ইঙ্গিত দিয়েছিল বিবিসির একটি সূত্র।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত