Ajker Patrika

আল আকসা প্রাঙ্গণে ইহুদিদের প্রার্থনার ওপর নিষেধাজ্ঞা ইসরায়েলি আদালতে বহাল

আল আকসা প্রাঙ্গণে ইহুদিদের প্রার্থনার ওপর নিষেধাজ্ঞা ইসরায়েলি আদালতে বহাল

ইসরায়েলের একটি আপিল আদালত গতকাল বুধবার একজন ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশকে খারিজ করে দিয়ে আল আকসা প্রাঙ্গণে ইহুদিদের প্রার্থনার ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই ম্যাজিস্ট্রেট আল-আকসা প্রাঙ্গণে ইহুদিদের প্রার্থনায় নিষেধাজ্ঞা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ফিলিস্তিনিদের ক্ষোভ উসকে দিয়েছিলেন। 

আল আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণকে ইহুদিরা তাঁদের প্রাচীন প্রার্থনালয় হিসেবে বিশেষ শ্রদ্ধা করে। কয়েক দশকের ‘স্থিতাবস্থার’ অংশ হিসেবে ইহুদিরা প্রার্থনা থেকে বিরত থাকবে—এমন শর্তে আল আকসা প্রাঙ্গণ পরিদর্শনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল ইসরায়েলিদের। কিন্তু পবিত্র এ প্রাঙ্গণে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে প্রায়ই সংঘর্ষ হয়। প্রার্থনালয়টি জেরুজালেমের পুরোনো শহরে অবস্থিত।

এর আগে তিনজন ইহুদি যুবক আল আকসা প্রাঙ্গণে প্রার্থনা করলে পুলিশ তাদের এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকতে বলে। পরে তারা জেরুজালেম ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পুলিশের এ ধরনের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেন। এরপর আদালত রায় দেয় যে তাদের কর্মকাণ্ড শান্তি লঙ্ঘন করেনি। 

আদালতের এমন রায়ের প্রতিবাদ করেন ফিলিস্তিনিরা। অন্যদিকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দেয় ইসরায়েল। 

এরপর ওই রায়ের বিরুদ্ধে গত বুধবার জেরুজালেম জেলা আদালতে আবেদন করে রাষ্ট্র। দিনভর আলোচনার পর বিচারক এইনাত আভমান-মোলের তাঁর আদেশে বলেন, ‘টেম্পল মাউন্টের বিশেষ সংবেদনশীলতা নিয়ে বাড়াবাড়ি হতে পারে না।’ আল আকসাকে হিব্রু ভাষায় টেম্পল মাউন্ট বলা হয়। 

বিচারক আরও বলেন, ‘সেখানে ইহুদি প্রার্থনার অধিকার ‘নিরঙ্কুশ’ নয়। একই সঙ্গে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার মতো অন্যান্য স্বার্থকে এড়িয়ে যাওয়া উচিত হবে না।’ 

রয়টার্সকে দেওয়া এক বিবৃতিতে আসামিদের আইনজীবী নাতি রম বলেছেন, ‘এটি অদ্ভুত এবং দুঃখজনক যে এই একুশ শতকে একটি ইহুদি ও গণতান্ত্রিক দেশে ইহুদিদের মৌলিক মানবাধিকার এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ 

এ বছর ইহুদিদের পাসওভার উৎসব এবং মুসলিমদের রমজান একই সময়ে পড়েছিল। ফলে ইহুদিরে উপস্থিতি বেড়েছিল আল আকসা প্রাঙ্গণে। এতে ফিলিস্তিনের মধ্যে অস্বস্তি বাড়ে এবং দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। এখানে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনীর অংশীদার হিসেবে আল আকসার অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করছে জর্ডান। তারাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। 

আগামী ২৯ মে জেরুজালেম দখলের বর্ষপূতি উপলক্ষে ইসরায়েলিদের পতাকা পদযাত্রার কথা রয়েছে। এই কর্মসূচিকে ঘিরে প্রতি বছরই উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালের ২৯ মে জেরুজালেম দখল করেছিল ইসরায়েল। 

এদিকে মার্কিন দূতাবাস এক নির্দেশনায় সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে। দূতাবাস জানিয়েছে, রোববার যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি কর্মকর্তা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা কেউই ওল্ড সিটিতে প্রবেশ করতে পারবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব ঠেকাতে ট্রাম্পের পদক্ষেপ বৈধ কি না, সিদ্ধান্ত দেবেন সুপ্রিম কোর্ট

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট গতকাল শুক্রবার জানিয়েছে,ন দেশটিতে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব সীমিত করার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশনা বৈধ কি না, তা তাঁরা পর্যালোচনা করবেন। অভিবাসন সীমিত করার তাঁর উদ্যোগের একটি বিতর্কিত পদক্ষেপ এটি, যা কার্যকর হলে ঊনবিংশ শতাব্দীর সংবিধান সংশোধনী এত দিন যেভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, সে ধারণাই পাল্টে যাবে।

এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, বিচার মন্ত্রণালয়ের করা আপিল গতকাল গ্রহণ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা। ওই আপিলটি নিম্ন আদালতের এক রায়ের বিরুদ্ধে—যে রায়ে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ স্থগিত করা হয়েছিল। সেই আদেশে মার্কিন সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, যদি কোনো শিশুর মা-বাবা কেউই মার্কিন নাগরিক না হন বা বৈধ স্থায়ী বাসিন্দা (গ্রিন কার্ডধারী) না হন, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রে জন্মানো সেই শিশুকে নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি না দিতে।

নিম্ন আদালত রায় দিয়েছিলেন, ট্রাম্পের এই নীতি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ১৪তম সংশোধনী এবং জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার নিশ্চিত করা ফেডারেল আইনের লঙ্ঘন।

সুপ্রিম কোর্ট চলতি মেয়াদেই যুক্তিতর্ক শুনবেন এবং আগামী জুনের শেষ নাগাদ রায় দিতে পারেন। যুক্তিতর্কের জন্য এখনো কোনো তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি।

রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিন অর্থাৎ ২০ জানুয়ারি এই আদেশে স্বাক্ষর করেন। বৈধ ও অবৈধ—দুই ধরনের অভিবাসন দমনে তিনি যে উদ্যোগগুলো নিয়েছেন, তার অংশই ছিল এটি।

অভিবাসন নিয়ে তাঁর অবস্থান দুই মেয়াদেই মার্কিন রাজনীতির সবচেয়ে বিতর্কিত বিষয়গুলোর একটি; যেখানে সমালোচকেরা তাঁকে বর্ণ ও ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্যের অভিযোগ এনে সমালোচনা করেছেন।

দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীকে দেশটিতে জন্ম নেওয়া শিশুদের জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের নিশ্চয়তা হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়ে আসছে।

তবে ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তি দিচ্ছে, এই সংশোধনী অবৈধ অভিবাসীদের সন্তান বা দেশে বৈধভাবে থাকলেও অস্থায়ীভাবে থাকা ব্যক্তি, যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বা কর্মভিসাধারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র অ্যাবিগেইল জ্যাকসন বলেন, এই মামলার পরিণতি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নিরাপত্তা এবং নাগরিকত্বের পবিত্রতা—দুইয়ের ওপরই গভীর প্রভাব ফেলবে। জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বিষয়ে আমেরিকান জনগণের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতে ট্রাম্প প্রশাসন প্রস্তুত।

অন্যদিকে মামলার বাদীদের পক্ষে লড়াইরত আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের (এসিএলইউ) জাতীয় আইনি পরিচালক সিসিলিয়া ওয়াং বলেন, ‘সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীতে নাগরিকত্বের মৌলিক নিশ্চয়তা কোনো প্রেসিডেন্ট বদলে দিতে পারেন না। চলতি মেয়াদেই সুপ্রিম কোর্টে এই বিতর্কের স্থায়ী নিষ্পত্তি হবে বলে আমরা আশা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দক্ষিণ আফ্রিকায় হোস্টেলে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি, নিহত অন্তত ১১

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে ৪টার দিকে এই হামলার ঘটনা ঘটে। ছবি: সংগৃহীত
স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে ৪টার দিকে এই হামলার ঘটনা ঘটে। ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ আফ্রিকায় এলোপাতাড়ি গুলির ঘটনায় কমপক্ষে ১১ জন নিহত হয়েছে। শনিবার স্থানীয় সময় ভোরের দিকে রাজধানী প্রিটোরিয়ার পশ্চিমে সলসভিল টাউনশিপের একটি হোস্টেলে বন্দুকধারীরা এ হামলা চালায়। এতে আহত হয় আরও ১৪ জন। নিহতদের মধ্যে তিন বছরের একটি শিশুও রয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে ৪টার দিকে এই হামলার ঘটনা ঘটে।

পুলিশের মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার আথলেন্দা ম্যাথে বলেন, ‘ওই হোটেলে একদল লোক মদ্যপান করছিল। হঠাৎ তিনজন অজ্ঞাত বন্দুকধারী হোস্টেলে প্রবেশ করে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে।’

তিনি নিশ্চিত করেছেন, মোট ২৫ জনকে গুলি করা হয়েছিল। এর মধ্যে ঘটনাস্থলেই ১০ জন এবং হাসপাতালে আরও একজন মারা যায়। আহত ১৪ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ১২ বছর বয়সী একটি ছেলে এবং ১৬ বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে।

ব্রিগেডিয়ার আথলেন্দা ম্যাথে হোস্টেলটিকে ‘অবৈধ মদ বিক্রির আস্তানা’ হিসেবে বর্ণনা করেন। রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এসএবিসিকে তিনি বলেন, ‘এই ধরনের অবৈধ এবং লাইসেন্সবিহীন মদের দোকান নিয়ে বিভিন্ন ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে। এসব স্থানে প্রায়ই এমন গুলির ঘটনা ঘটে, তখন নিরীহ মানুষজনও ক্রসফায়ারে পড়ে যায়।’

তিনি জানান, হামলার উদ্দেশ্য এখনো জানা যায়নি। কাউকে গ্রেপ্তারও করা হয়নি।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অপরাধে জর্জরিত দক্ষিণ আফ্রিকায় গণগুলির ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ার সর্বশেষ ঘটনা এটি।

জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ-সংক্রান্ত অফিসের ২০২৩-২৪ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দক্ষিণ আফ্রিকায় বিশ্বের সর্বোচ্চ হত্যার হার রয়েছে (প্রতি ১ লাখ জনসংখ্যায় ৪৫ জন)। দেশটির পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৬৩ জন নিহত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ২৭
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান ‘সম্পূর্ণ তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত’। তিনি যে পরিস্থিতির কারণে ভারতে এসেছেন, সেটি এ বিষয়ে প্রভাব ফেলছে। আজ শনিবার এইচটি লিডারশিপ সামিটে এনডিটিভির সিইও ও প্রধান সম্পাদক রাহুল কানওয়ালের প্রশ্নের জবাবে জয়শঙ্কর এসব কথা বলেন।

জয়শঙ্কর বলেন, তিনি (হাসিনা) একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে ভারতে এসেছেন। সেই পরিস্থিতি তাঁর পরবর্তী পদক্ষেপকে প্রভাবিত করছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত তাঁকেই নিতে হবে।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনের অবসান হয়। এরপর তিনি ভারতে এসে আশ্রয় নেন। ওই সহিংসতায় শতাধিক মানুষ নিহত ও হাজারো মানুষ আহত হন। গত মাসে ৭৮ বছর বয়সী হাসিনাকে ঢাকার একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল তাঁর সরকারের দমনপীড়ন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন।

জয়শঙ্করের কাছে প্রশ্ন ছিল, শেখ হাসিনা কি ‘যত দিন চাইবেন’ ভারতে থাকতে পারবেন? জবাবে তিনি সরাসরি হ্যাঁ—না না বলে পরিস্থিতিনির্ভর ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, ‘এটি ভিন্ন বিষয়। তিনি একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে এখানে এসেছেন, এবং আমি মনে করি সেই পরিস্থিতি স্পষ্টভাবে এখন তাঁর ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলছে। তবে আবারও বলছি, এটি এমন একটি বিষয় যেখানে শেষ পর্যন্ত তাঁকেই নিজের সিদ্ধান্ত নিজেকেই নিতে হবে।’

আলাপচারিতায় জয়শঙ্কর দুই দেশের সম্পর্ক প্রসঙ্গেও কথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে যাঁরা এখন ক্ষমতায় আছেন, তাঁদের পূর্ববর্তী নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ ছিল। সে ক্ষেত্রে নতুন করে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার ওপর ভারত সব সময়ই গুরুত্ব দিয়েছে।

জয়শঙ্কর বলেন, যদি সমস্যা নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে হয়, তাহলে প্রথম কাজ হওয়া উচিত একটি সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা। তিনি আরও বলেন, ভারত তার প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশের মঙ্গল চায় এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি আস্থা রাখে।

জয়শঙ্কর বলেন, ‘আমরা চাই বাংলাদেশ ভালো থাকুক। গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে আমরা চাই, জনগণের ইচ্ছা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রতিফলিত হোক।’ তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আর আমি নিশ্চিত, যে সরকারই গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত হবে, তারা ভারসাম্যপূর্ণ ও পরিণত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নত করবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইন্ডিগোর শত শত ফ্লাইট বাতিল, তবু চড়া দামে টিকিট বিক্রি!

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ০৫
ভারতের ২০ বছরের পুরোনো বিমান পরিবহন সংস্থা ইন্ডিগোর ফ্লাইট বিপর্যয়। ছবি: পিটিআই
ভারতের ২০ বছরের পুরোনো বিমান পরিবহন সংস্থা ইন্ডিগোর ফ্লাইট বিপর্যয়। ছবি: পিটিআই

ভারতের ২০ বছরের পুরোনো বিমান পরিবহন সংস্থা ইন্ডিগোর শত শত ফ্লাইট বাতিলের কারণে বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়েছে হাজারো যাত্রী। দেশটির আকাশপথে দেখা দিয়েছে বড় রকমের শিডিউল বিপর্যয়। এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানা গেছে, ক্রু-সংক্রান্ত সমস্যা এবং প্রযুক্তিগত জটিলতাসহ একাধিক পরিচালনাগত ব্যাঘাতের কারণে এত ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।

কিন্তু এই বিপর্যয় সত্ত্বেও ইন্ডিগো তাদের পুরো বিমানবহর গ্রাউন্ড করেনি বা প্রতিদিন পরিচালিত ২ হাজার ২০০-এর বেশি অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সব ফ্লাইট বাতিলও করেনি। ফলে বিলম্ব ও বিঘ্নের কারণে গতকাল শুক্রবার ১ হাজারের বেশি ফ্লাইট বাতিল হয়।

বাতিলের তালিকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিল দিল্লি থেকে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটগুলো। কলকাতা-গুয়াহাটি, চেন্নাই-কোয়েম্বাটুর রুট এবং যেসব রুট নন-মেট্রো শহরগুলোকে যুক্ত করে যেসব ফ্লাইট রুট রয়েছে, সেগুলো চলছে। তবে সেগুলোতে কমেছে ফ্লাইটের সংখ্যা, বেড়েছে বিলম্ব।

এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠছে প্রতিদিন এত ফ্লাইট বাতিলের পরও তারা কেন এবং কীভাবে এত টিকিট বিক্রি করছে আর ভাড়াই বা এত বেশি কেন?

সাধারণত এয়ারলাইনসগুলো প্রায় সপ্তাহখানেক আগেই ফ্লাইট বাতিল করে না, যদি না পুরো সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ইন্ডিগোর ক্ষেত্রে এই বিঘ্নগুলো দৈনন্দিন ভিত্তিতে সামলানো হচ্ছে। অর্থাৎ আজকের ফ্লাইট বাতিল হতে পারে, কিন্তু তিন দিন বা এমনকি দুই দিন পরের ফ্লাইটগুলোর বুকিং খোলা আছে, এই আশায় যে ওই সময়ের মধ্যে কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

ইন্ডিগো জানিয়েছে, ফ্লাইটগুলো বাতিল করা ছিল এককালীন ‘সিস্টেম রিবুট’-এর অংশ, যাতে বিমান ও ক্রু পুনর্বিন্যস্ত করা যায় এবং নিয়মিত সময়সূচি পুনরায় চালু করা যায়। তারা আশা করছে, ধাপে ধাপে অপারেশন স্বাভাবিক হবে এবং ১০-১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার লক্ষ্য ধরা হয়েছে।

ভারতের বাণিজ্যিক অভ্যন্তরীণ বিমান পরিবহন বাজারের অর্ধেকের বেশি নিয়ন্ত্রণ করে ইন্ডিগো। কিছু হিসাবে ৬০ শতাংশের বেশি। তাই বিপুলসংখ্যক ফ্লাইট বাতিলের ফলে মুহূর্তেই সব এয়ারলাইনসের মোট আসনের সংখ্যা কমে গেছে। কিন্তু যাত্রীদের চাহিদা একই রয়ে গেছে।

আর চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে এই আকস্মিক ও চরম বৈপরীত্যের কারণে টিকিটের মূল্যও উচ্চ হারে বাড়ছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় দিল্লি-মুম্বাই ওয়ান-ওয়ে ভাড়া বেড়ে দাঁড়ায় ৫০ হাজার টাকা আর রিটার্ন ভাড়া ছুঁয়েছে ৬০ হাজার। অন্যদিকে দিল্লি-বেঙ্গালুরু টিকিটের দাম ১ লাখ টাকায় পৌঁছে যায়। বেঙ্গালুরু-মুম্বাই সর্বোচ্চ ভাড়া থাকে প্রায় ৭ হাজার টাকা, যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ হাজার টাকায়।

এ অবস্থায় অনেকেই বলছেন, এখন মনে হচ্ছে দিল্লি-লন্ডন টিকিটই যেন সস্তা!

নেটিজেনরা প্রশ্ন তুলছেন, সংকট বা জরুরি অবস্থার সময়ে এয়ারলাইন ও সরকার কি এসব অ্যালগরিদম নিষ্ক্রিয় করবে না? যাত্রীদের কাছ থেকে আরও বেশি টাকা আদায় করার বদলে যারা ইতিমধ্যে অর্থ প্রদান করেছেন তাদের পরিস্থিতি বিবেচনা করা কি জরুরি নয়?

বিঘ্নের সময়ে কোনো ফ্লাইটে ক্রু পুনর্বিন্যাস চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত বা বিমান ঘুরে আসার (aircraft rotation) প্রক্রিয়া ব্যর্থ না হওয়া পর্যন্ত এয়ারলাইনস সেই ফ্লাইটের সিট বিক্রি চালিয়ে যেতে পারে। শুধু এসব নিশ্চিত হওয়ার পরই ফ্লাইটটিকে ‘বাতিল’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

ফলস্বরূপ এয়ারলাইনের সিস্টেম এমনভাবে তৈরি, যদি না পরিচালনা করা যাবে না এমন নিশ্চিত হওয়া যায় ততক্ষণ পর্যন্ত টিকিট বিক্রি চলে। টিকিট বিক্রি বন্ধ করা হবে কেবল তখনই, যদি ইন্ডিগো নিজে বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয় বা বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ সেবা স্থগিতের নির্দেশ দেয়। যার কোনোটিই এখনো ঘটেনি।

ইন্ডিগো জানিয়েছে, শনিবার থেকে পরিস্থিতির উন্নতি আশা করা হচ্ছে, তবে পুরোপুরি স্থিতিশীল হতে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত