Ajker Patrika

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলাসহ যেভাবে প্রতিশোধের কথা ভাবছে ইসরায়েল 

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলাসহ যেভাবে প্রতিশোধের কথা ভাবছে ইসরায়েল 

ইসরায়েলজুড়ে তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে ইরানে পারমাণবিক স্থাপনা ও তেল কূপের মতো কৌশলগত স্থাপনায় হামলার কথা ভাবছে তেল আবিব। ইসরায়েলি সূত্রের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওসের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া, ইরানি নেতৃত্বকে গুপ্তহত্যা করা এবং দেশটির আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় হামলার কথাও ভেবেছে ইসরায়েল।

ইরানের তেল কূপগুলোতে হামলার বিষয়টি ইরানের অর্থনীতিতে ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এর ফলে, গত বছরের অক্টোবরের ৭ তারিখ থেকে শুরু হওয়া মধ্যপ্রাচ্যের চলমান উত্তেজনা আরও উসকে উঠতে পারে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গতকাল বুধবার দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তেল আবিবে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) হেডকোয়ার্টারে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ইহুদি নববর্ষ রশ হাসানাহের ছুটি শুরু হওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ইসরায়েল থেকে ইরানে আক্রমণের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত, আইডিএফ চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল হেরজি হালেভি, মোসাদ প্রধান ডেভিড বার্নিয়া এবং গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের প্রধান রনেন বার উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন নেতানিয়াহুর সামরিক সহযোগী মেজর জেনারেল রনেন গফম্যান এবং প্রধানমন্ত্রীর চিফ অব স্টাফ জাচি ব্রাভারম্যান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসরায়েলি একটি সূত্র এক্সিওসকে জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার রাতে ইরানের হামলা পর জেরুসালেমে একটি ভূগর্ভস্থ বাংকারে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার এক ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় যে, ইসরায়েল ইরানি হামলার জবাব সামরিকভাবে উপায়েই দেবে। তবে এটি কীভাবে এই জবাব দেওয়া হবে সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত সেই বৈঠকে নেওয়া হয়নি।

মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় করে এই হামলার জবাব দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল। আর এ কারণেই ইসরায়েল এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি নির্দিষ্টভাবে। গতকাল বুধবার রাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে নেতানিয়াহুর টেলিফোনে কথা বলার কথা ছিল।

israel-2এর আগে, গত এপ্রিলে ইরান ইসরায়েলে ৩ শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছিল। এবার, গত মঙ্গলবার দেশটি ১৮১টি ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরায়েলে হামলা চালায়। ইসরায়েলের দাবি, তারা অধিকাংশই আটকে দিয়েছে। তবে ইরান দাবি করেছে, তাদের ৯০ শতাংশ ক্ষেপণাস্ত্রই লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। সেই হামলার পর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেন, ‘ইরান বড় ভুল করেছে, তাদের চড়া মূল্য চোকাতে হবে।’

তবে ইরান ইসরায়েলি হামলার জবাব কীভাবে দেবে সেটিও বিবেচনা করছেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা। তাদের আশঙ্কা, ইসরায়েলকে ইরানে গুরুতর আঘাত হানলে, ইরান নিজেই একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ শুরু করতে পারে। এ বিষয়ে এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেন, ‘ইরানিরা কীভাবে আক্রমণের প্রতিক্রিয়া জানাবে সে বিষয়ে আমাদের একটি বড় প্রশ্ন আছে। তবে আমরা সম্ভাবনাটি বিবেচনায় নিয়েছি যে, তারা পরিপূর্ণভাবে জড়িয়ে যাবে এবং সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের খেলা হবে।’

ইসরায়েলি রাজনীতিবিদেরাও ইরানকে কড়া জবাব দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ের লাপিদ বুধবার সকালে এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘প্রতিক্রিয়া অবশ্যই কঠোর হতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘একটি সামরিক প্রতিক্রিয়ার পাশাপাশি, আমাদের অবশ্যই একটি সামগ্রিক আঞ্চলিক রাজনৈতিক কৌশলও তৈরি করতে হবে। যা সামরিক সাফল্যকে কৌশলগত সাফল্যে পরিবর্তন করবে।’

iran 3ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেত তো একধাপ এগিয়ে স্পষ্টভাবে ইসরায়েলকে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা এবং তেল স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী সিএনএনকে বলেছেন, ‘আমাদের ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করতে হবে, আমাদের ইরানের শক্তি কেন্দ্রগুলোতে আক্রমণ করতে হবে এবং আমাদের সরকারের উচিত এখনই আক্রমণ করা।’

এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গতকাল বুধবার ইরানের ওপর সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া জানানো ক্ষেত্রে ইসরায়েলকে সমর্থন করার ইঙ্গিত দিয়েছে। হোয়াইট হাউস বলেছে, ‘এই হামলার পরিণতি হবে গুরুতর’ এবং প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছে, ‘এমনটা করতে তারা ইসরায়েলের সঙ্গে কাজ করবে।’ ইসরায়েল কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে চায় এমন প্রশ্নের জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, এটি সক্রিয় আলোচনার একটি বিষয় এবং তেহরানের পরিণতি কী হয় তা দেখতে হবে।

মার্কিন কর্মকর্তারা বুধবার পশ্চিমা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েলি প্রতিক্রিয়াকে সমর্থন করলেও, তারা বিশ্বাস করে যে এই জাতীয় প্রতিক্রিয়া সীমিত হওয়া উচিত এবং সংঘাত বৃদ্ধির পরিণতি সম্পর্কে উদ্বিগ্ন দেশটি। তবে মার্কিন কংগ্রেসে বিরোধী দল রিপাবলিকান পার্টির এবং ইসরায়েলপন্থী ডেমোক্র্যাটরা এরই মধ্যে, হোয়াইট হাউসকে কঠোর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলকে সমর্থন করার আহ্বান জানিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টাকে প্রতিহতের ঘোষণা উত্তর কোরিয়ার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। ছবি: এএফপি
উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। ছবি: এএফপি

জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের যে কোনো প্রচেষ্টা কঠোরভাবে প্রতিহত করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ রোববার (২১ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জাপানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা যে কোনো মূল্যে রোধ করা উচিত, কারণ এটি মানবজাতির জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘ইনস্টিটিউট ফর জাপান স্টাডিজ’-এর পরিচালক এক বিবৃতিতে বলেন, জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা শুধু এশিয়া নয়, পুরো বিশ্বের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করবে। তাঁর ভাষায়, ‘জাপানের পারমাণবিক হওয়ার প্রচেষ্টা মানবজাতির জন্য এক মহাবিপর্যয় বয়ে আনবে।’

যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার এই প্রতিক্রিয়ার পেছনে রয়েছে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তার সাম্প্রতিক মন্তব্য। জাপানের বার্তা সংস্থা কিয়োদো নিউজের খবরে বলা হয়, ওই কর্মকর্তা প্রকাশ্যে বলেছেন, টোকিওর পারমাণবিক অস্ত্র রাখা উচিত।

এই প্রেক্ষাপটে উত্তর কোরিয়া দাবি করেছে, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন বা বেপরোয়া মন্তব্য নয়; বরং জাপানের বহুদিনের পারমাণবিক অস্ত্রায়নের আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন।

উত্তর কোরিয়ার মতে, জাপান তাদের তথাকথিত ‘অ-পারমাণবিক নীতি’ পুনর্বিবেচনার কথা বলে কার্যত একটি ‘লাল রেখা’ অতিক্রম করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, জাপানের কর্মকর্তাদের মন্তব্যগুলোই বলে দিচ্ছে, টোকিও এখন প্রকাশ্যেই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের বাসনা জানাচ্ছে।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আরও দাবি করেছে, যুক্তরাষ্ট্র যখন গত অক্টোবরে দক্ষিণ কোরিয়াকে একটি পারমাণবিক সাবমেরিন নির্মাণের অনুমোদন দেয়, তার পরপরই জাপানে এই ধরনের বক্তব্য জোরালো হতে শুরু করে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ংয়ের সঙ্গে বাণিজ্য ও নিরাপত্তা ইস্যুতে শীর্ষ বৈঠকের পর ওই অনুমোদন দিয়েছিলেন।

উত্তর কোরিয়ার ওই কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেন—জাপান যদি পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করে, তবে এশিয়া ভয়াবহ পারমাণবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। তবে তিনি পিয়ংইয়ংয়ের নিজস্ব পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

ধারণা করা হয়, উত্তর কোরিয়া নিজেই একটি ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডারের অধিকারী। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান থাকার পরও দেশটি তার পারমাণবিক সক্ষমতা বজায় রাখা ও সম্প্রসারণের ঘোষণা দিয়ে আসছে। গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে উত্তর কোরিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী কিম সন গিয়ং বলেন—পারমাণবিক অস্ত্র তাদের রাষ্ট্রীয় আইন, জাতীয় নীতি এবং সার্বভৌম অধিকারের অংশ, যা তারা কোনো পরিস্থিতিতেই ত্যাগ করবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলার আরও একটি তেলের ট্যাংকার ধাওয়া করছে মার্কিন বাহিনী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ১৪
ক্যারিবিয়ান সাগরে পানামা পতাকাবাহী সেঞ্চুরি নামের একটি তেলবাহী জাহাজের ওপর মার্কিন সামরিক বাহিনীর টহল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে
ক্যারিবিয়ান সাগরে পানামা পতাকাবাহী সেঞ্চুরি নামের একটি তেলবাহী জাহাজের ওপর মার্কিন সামরিক বাহিনীর টহল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

ভেনেজুয়েলা উপকূলে আন্তর্জাতিক জলসীমায় আরও একটি তেলের ট্যাংকার ধাওয়া করছে মার্কিন কোস্ট গার্ড। আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) তিনজন মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এটি সফল হলে এক সপ্তাহের মধ্যে ভেনেজুয়েলাসংশ্লিষ্ট তিনটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করার ঘটনা ঘটবে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে ভেনেজুয়েলার ওপর ‘সর্বাত্মক নৌ অবরোধ’ ঘোষণার পর থেকে এই চিরুনি অভিযান শুরু হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মার্কিন কোস্ট গার্ড বর্তমানে একটি তেল ট্যাংকারকে ধাওয়া করছে। তবে অভিযানের সুনির্দিষ্ট অবস্থান বা জাহাজটির পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

এই অভিযান নিয়ে হোয়াইট হাউস বা পেন্টাগন থেকে তাৎক্ষণিক কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

হোয়াইট হাউসের ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের ডিরেক্টর কেভিন হ্যাসেট আজ জানিয়েছেন, এর আগে জব্দ করা দুটি ট্যাংকার ‘ব্ল্যাক মার্কেট’ বা কালোবাজারের মাধ্যমে বিভিন্ন নিষিদ্ধ দেশে তেল সরবরাহ করছিল।

কেভিন হ্যাসেট দাবি করেছেন, এই আটকের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে তেলের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। তাঁর মতে, এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা এবং কেবল কালোবাজারি জাহাজগুলোকেই লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে।

তবে বাজার বিশ্লেষক ও তেল ব্যবসায়ীরা ভিন্নমত পোষণ করছেন। একজন তেল ব্যবসায়ী রয়টার্সকে বলেন, এই ধরনের পদক্ষেপ ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। আগামীকাল সোমবার এশিয়ার বাজারে তেলের দাম বাড়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা তেলের দামের এই ঊর্ধ্বগতিকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।

গত সেপ্টেম্বর থেকে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ওপর চাপ বাড়াতে ট্রাম্প প্রশাসন এই অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। গত কয়েক মাসে প্রশান্ত মহাসাগর ও ক্যারিবিয়ান সাগরে ভেনেজুয়েলাসংশ্লিষ্ট ভেসেলগুলোর ওপর অন্তত দুই ডজন সামরিক হামলা চালানো হয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, এসব সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০০ জন নিহত হয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলায় মার্কিন হস্তক্ষেপ নিয়ে সতর্ক করলেন লুলা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। ছবি: সংগৃহীত
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। ছবি: সংগৃহীত

ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান চাপ ও সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপ ‘ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়’ ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। তিনি মত দিয়েছেন, ভেনেজুয়েলায় কোনো ধরনের সশস্ত্র হস্তক্ষেপ শুধু ওই দেশের জন্য নয়, বরং পুরো পৃথিবীর জন্যই এক বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ফোজ দো ইগুয়াসুতে দক্ষিণ আমেরিকার আঞ্চলিক জোট ‘মারকোসুর’-এর শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে লুলা এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘ভেনেজুয়েলায় সশস্ত্র হস্তক্ষেপ একটি মানবিক বিপর্যয়ে রূপ নেবে। এটি এমন একটি নজির সৃষ্টি করবে, যা বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি।’

এ বিষয়ে এক প্রতিবেদনে রোববার (২১ ডিসেম্বর) রয়টার্স জানিয়েছে, ভেনেজুয়েলা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা সম্প্রতি আরও বেড়েছে। গত মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলায় যাতায়াতকারী সব নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেলবাহী জাহাজের ওপর ‘অবরোধ’ আরোপের নির্দেশ দেন। ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপকে নিকোলাস মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর নতুন কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে। ভেনেজুয়েলার অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি তেল খাতকে লক্ষ্য করেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

লুলা স্মরণ করিয়ে দেন, ফকল্যান্ডস যুদ্ধের চার দশকেরও বেশি সময় পর দক্ষিণ আমেরিকা আবারও অন্য মহাদেশীয় কোনো শক্তির সামরিক উপস্থিতির আশঙ্কায় ভুগছে। তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ আমেরিকা আবার এমন এক ভূতের ছায়ায় পড়ছে, যেখানে এই অঞ্চলের বাইরে থেকে আসা সামরিক শক্তি আমাদের শান্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।’

চলতি সপ্তাহের শুরুতেই লাতিন আমেরিকার দুই বৃহত্তম অর্থনীতির শীর্ষ নেতা ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দ্য সিলভা এবং মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউম ভেনেজুয়েলা পরিস্থিতিতে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে গত শনিবারের বক্তব্যে লুলা আরও কঠোর দেখিয়েছেন।

‘মারকোসুর’ সম্মেলন শেষে দেওয়া এক যৌথ ঘোষণায় লাতিন আমেরিকার নেতারা ভেনেজুয়েলায় গণতান্ত্রিক নীতি ও মানবাধিকার রক্ষায় শান্তিপূর্ণ পথেই অগ্রসর হওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। এই ঘোষণায় আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে ও পানামার প্রেসিডেন্টদের পাশাপাশি বলিভিয়া, ইকুয়েডর ও পেরুর শীর্ষ কর্মকর্তারাও সমর্থন জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রেনের ভাড়া বাড়ছে ভারতেও

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ছবি: সংগৃহীত
২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ছবি: সংগৃহীত

ভারতেও ট্রেনের ভাড়া বাড়ছে। পকেটে টান পড়তে যাচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। ২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তবে স্বস্তির খবর হলো, লোকাল ট্রেনের ভাড়া অপরিবর্তিত থাকছে। মূলত দূরপাল্লার যাত্রীদের জন্যই এই বাড়তি ভাড়া কার্যকর হবে।

ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের ঘোষণা অনুযায়ী, ভ্রমণের দূরত্ব ও কোচের ধরনভেদে নতুন ভাড়ার হার নির্ধারিত হবে। ২১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত সাধারণ শ্রেণিতে ভাড়ায় কোনো পরিবর্তন নেই। তবে ২১৫ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটারে এক পয়সা করে ভাড়া বাড়বে।

মেল বা এক্সপ্রেস ট্রেনের (নন-এসি) যাত্রীদের জন্য প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া বাড়বে দুই পয়সা। এসি কোচ বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচের ক্ষেত্রেও কিলোমিটার প্রতি দুই পয়সা ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।

তবে যদি কোনো যাত্রী নন-এসি কোচে ৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন, নতুন নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে আগের চেয়ে ১০ রুপি বেশি ভাড়া দিতে হবে।

কেন এই ভাড়া বৃদ্ধি

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত এক দশকে রেলপথ সম্প্রসারণের ফলে জনবল এবং অন্যান্য ব্যয় বহুগুণ বেড়েছে। রেলওয়ের বর্তমান জনবল ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি রুপিতে এবং পেনশনের পেছনে খরচ হচ্ছে ৬০ হাজার কোটি রুপি। সব মিলিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট পরিচালনা ব্যয় বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি রুপি।

যাত্রীদের ভাড়া ও পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে খরচ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে রেলওয়ে। এর আগে গত জুলাই মাসেও ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল (নন-এসিতে এক পয়সা ও এসিতে দুই পয়সা)। তারও আগে ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি বড় ধরনের ভাড়া বৃদ্ধি কার্যকর করা হয়েছিল, যেখানে এসি কোচে ভাড়া বেড়েছিল কিলোমিটার প্রতি চার পয়সা পর্যন্ত।

রেলওয়ে কর্মকর্তাদের মতে, উন্নত সেবা এবং ক্রমবর্ধমান ব্যয় মেটাতে এই সামান্য ভাড়া বৃদ্ধি অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল। কর্তৃপক্ষ আশা করছে, এই ভাড়া বৃদ্ধির ফলে রেলওয়ের বার্ষিক আয় প্রায় ৬০০ কোটি রুপি বাড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত