Ajker Patrika

বাংলাদেশে পুশ ইনের পর যেভাবে ভারতে ফিরলেন খাইরুল

ডয়চে ভেলে  
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ভারতের আসাম রাজ্যে চলছে বিদেশি ধরপাকড় অভিযান। ২৩ মে রাজ্যের পুলিশ মরিগাঁও, বরপেটা, ধুবরি এলাকা থেকে ১৪ জন সন্দেহভাজন বাংলাদেশিকে আটক করে। তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় গোয়ালপাড়ার মাটিয়ায় ভারতের সবচেয়ে বড় ডিটেনশন ক্যাম্প বা বিদেশি আটক শিবিরে। তিন দিন পর রাতের অন্ধকারে ১৪ জনকে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল বাংলাদেশে। সেখানে আরও তিন দিন কাটিয়ে রাতের অন্ধকারে তাঁরা আসামে ফেরেন। ডয়চে ভেলের কাছে এমনটিই দাবি করেছেন সদ্য নিজের বাড়িতে ফেরা মোহাম্মদ খাইরুল ইসলাম।

আসামের মরিগাঁও জেলার এই সাবেক শিক্ষক বাড়ি ফেরার পর কিছু দিন কথা বলতে চাননি। অবশেষে ঘটনার কথা তিনি জানালেন ডয়চে ভেলেকে। খাইরুল বলেন, ‘মনে হচ্ছে পুনর্জন্ম পেয়েছি। দুই সন্তান ও স্ত্রীকে রেখে গেছিলাম। একসময় মনে হয়েছিল আর তাদের দেখতে পাব না।’

২৩ মে মরিগাঁও জেলার একদল পুলিশ তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় মিকিরভেটা থানায়। সেখানে তাঁর নথি নিয়ে আলোচনা হয়। এরপর পুলিশের গাড়িতে বসিয়ে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় জেলার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে। সেখানে কিছু কর্মকর্তা তাঁর নাগরিকত্ব, মামলা ইত্যাদি বিষয়ে প্রশ্ন করেন এবং রাতে পুলিশের গাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় গোয়ালপাড়া জেলায়।

খাইরুলের দাবি, বিকেল চারটে নাগাদ পুলিশের গাড়িতে বসিয়ে দেওয়া হয়। একজন কর্মকর্তা বলেন, আপাতত মাটিয়া ডিটেনশন ক্যাম্পে যেতে হবে। হাত বেঁধে কড়া পাহারায় সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়। খাইরুল আরেও বলেন, ‘ভোর চারটে নাগাদ সেখানে গিয়ে পৌঁছাই আমরা। আমার সঙ্গে মরিগাঁও জেলার আরও আটজন মানুষ ছিলেন। তাঁরা সবাই পুরুষ। যেখানে আমাদের রাখা হয়েছিল, আমার মতো আরও ৩১ জন ছিলেন। আমরা সবাই নাকি বিদেশি, পুলিশের মুখে এমনটাই শুনেছিলাম। আমি আগেও দুই বছর ডিটেনশন ক্যাম্পে থেকেছি, তবে সেটা অন্য জায়গায়।’

এনআরসির নামে বাঙালিবিদ্বেষ?

২৬ মে বিকেলে খাইরুলসহ ১৪ জনকে গাড়িতে উঠতে বলে পুলিশ এবং তখন খাইরুলের সন্দেহ হয়, তাঁদের সঙ্গে কিছু একটা ঘটতে চলেছে। খাইরুল ডয়চে ভেলেকে বলেন, তখন গাড়িতে উঠতে চাননি তিনি এবং এ কারণে তাঁকে প্রচণ্ড মারধর করা হয়। তিনি বলেন, ‘আমার হাত বেঁধে লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। একেবারে পশুর মতো ব্যবহার করা হয়েছিল তখন। একসময় বুঝতে পেরেছিলাম, আর বাধা দিলে হয়তো মেরেই ফেলবে। তাই শেষমেশ হাল ছেড়ে দিই এবং তাদের কথামতোই গাড়িতে উঠি।’

তারপর গোয়ালপাড়ার মাটিয়া থেকে ১৪৫ কিলোমিটার দূরে মানকাচর জেলার ঠাকুরানবাড়ি এলাকায় তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় বলে দাবি খাইরুলের। ২৬ মে বিকেল চারটে নাগাদ তাঁদের নিয়ে রওনা দেয় পুলিশ। রাত ৯টা নাগাদ সেখানে গিয়ে পৌঁছান তাঁরা। সেখানে তাঁদের বসিয়ে রাখা হয় এবং রাত তিনটে নাগাদ বিএসএফের কিছু গাড়ি আসে। ১৪ জনকে একে একে গাড়িতে তুলে দেওয়া হয় এবং ভোর চারটে নাগাদ সীমান্তের গেট খুলে তাঁদের ওপারে চলে যেতে বলে বিএসএফ।

খাইরুলের কথায়, ‘একটা ভয়ের পরিবেশ ছিল সেখানে। আমরা মাত্র ১৪ জন আর বিএসএফের বন্দুকধারী জওয়ান অনেক বেশি। সেখানে প্রতিবাদ করলে হয়তো প্রাণে বাঁচব না, এটা ভেবে চুপ থাকি। ওরা আমাদের যেভাবে সীমান্ত পেরিয়ে যেতে বলে, আমরা যেতে থাকি। অনেকটা ভেতর চলে যাওয়ার পর তারা গেট বন্ধ করে দেয়। তবে আমরা এক অজানার উদ্দেশ্যে হাঁটতে থাকি। কিছুক্ষণ যাওয়ার পর ছুটে আসে বাংলাদেশের সুরক্ষা বাহিনীর জওয়ানরা। প্রথমে তারা আমাদের ওপর রেগে যায় এবং চিৎকার করে। আমরা তাদের কাছে হাতজোড় করি, তাদের জানাই আমরা জোর করে ঢুকে আসিনি। আমাদের এদিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।’

বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) এক কর্মকর্তা এগিয়ে এসে তাঁদের কথা শোনেন এবং আপাতত তাঁদের আন্তর্জাতিক সীমান্তের জিরো লাইন বা নোম্যানস ল্যান্ডে অপেক্ষা করতে বলেন। সকালে আরও কিছু কর্মকর্তা আসেন এবং প্রত্যেকেই তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। খাইরুল জানান, বাংলাদেশের বরাইবারি এলাকার মানুষ তাঁদের বিস্কুটসহ অন্যান্য খাবার দিতে থাকেন। যে এলাকায় তাঁদের অপেক্ষা করতে বলা হয়েছিল, সেটা ধানখেতের মতো এবং সেখানে বৃষ্টির জমা জল ছিল। তাঁরা বিকেল ৫টা পর্যন্ত সেখানেই বসে থাকেন।

দুপুরে বিজিবির এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এসে তাঁদের জানান, তাঁরা বারবার বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন এবং চিঠিও পাঠিয়েছেন, তবে বিএসএফ তাদের চিঠি গ্রহণ করছে না। খাইরুল ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘বিজিবির ওই কর্মকর্তা আমাদের বলেন, আমরা বাংলায় প্রশ্ন করব, আপনারা অসমীয়ায় উত্তর দেবেন। হয়তো এর মাধ্যমে তারা প্রমাণ করতে চাইছিলেন, আমরা আসামের মানুষ।’

ওই দিন সন্ধ্যায় প্রায় এক কিলোমিটার দূরে বিজিবির একটি ছাউনিতে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয়। বিজিবি তাঁদের জন্য খাবারের ব্যবস্থাও করে। ডাল, ভাত আর পনির তরকারি নিয়ে এসে এক কর্মকর্তা বলেছিলেন, তাঁদের কাছে এটুকুই আছে। খাইরুল বলেন, ‘তাঁরা বারবার বলছিলেন, আমরা যেন কিছু মনে না করি, তাঁদের কাছে আপাতত এটুকুই খাবার আছে। এই সময়ও কেউ এমন কথা বলছে দেখে মনে কিছুটা শান্তি পাই আমরা।’

এরপর রাত ১টা নাগাদ বিজিবির কর্মকর্তারা ফের সেখানে যান এবং খাইরুলসহ সবাইকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা হয়। গাড়িতে প্রায় তিন ঘণ্টা যাওয়ার পর জামালপুর নামের একটি জায়গায় পৌঁছান খাইরুলেরা। সেখানে একটি ঘরে আগে থেকে ১৪ জনের জন্য আলাদা আলাদা বিছানা সাজানো ছিল। পুরুষ ও নারীদের আলাদা দিকে রাখা হয়। তাঁদের খাবার দেওয়া হয় এবং ফের এক কর্মকর্তা তাঁদের ডেকে পাঠান। তাঁদের গোটা বিষয় শুনে সেই কর্মকর্তা চলে যান।

পুরোটা দিন ওই ক্যাম্পে থাকার পর সন্ধ্যায় আবার একটি গাড়িতে বসতে বলা হয়। খাইরুল বলেন, ‘বিজিবির ব্যবহার ভালো ছিল, তবে আমাদের মনে তো ভয় ছিলই। অবৈধ বিদেশি হিসেবে আরেকটা দেশে এসেছি, অন্তত জেল তো খাটতে হবে, এটা ধরেই নিয়েছিলাম। কিন্তু ওই দিন সন্ধ্যায় গাড়িতে বসিয়ে আমাদের নিয়ে যাওয়া হয় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে, যেখান দিয়ে আমাদের দুদিন আগে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। গভীর রাতে বিজিবি আমাদের তুলে দেয় বিএসএফের হাতে। এরপর বিএসএফ আমাদের পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ সবাইকে আলাদা আলাদা গাড়িতে বসিয়ে সেখান থেকে নিয়ে আসে। অন্যদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল জানি না, আমাকে পাঠানো হয় মরিগাঁও জেলার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে। সেখানে কেউ বিশেষ কিছু বলেননি। শুধু কয়েক ঘণ্টা পর আমাকে বলা হয় বাড়ি চলে যেতে।’

খাইরুল সরাসরি বাড়ি ফেরেননি। তিন দিন ঘুরে বেড়িয়েছেন আত্মীয়দের বাড়ি। তাঁর দাবি, তখনো মনে ভয় ছিল, বাড়ি ফিরলেই হয়তো পুলিশ তুলে নিয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘যখন আমাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, বারবার পুলিশকে জিজ্ঞেস করেছি আমার অপরাধ কী? তারা কেউ কিছু বলেনি। আমাকে প্রচণ্ড মারধর করার পর হাতজোড় করে বলেছিলাম, একটু মানবিকতা দেখাতে। তাঁদের মধ্যে একজন বলেছিলেন, আমি চুপ থাকলেই আমার মঙ্গল। তাই দেশে ফেরার পর প্রথমে চুপ ছিলাম। আমরা দুর্বল, সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, আমার চাকরি গেছে, এবার এই যন্ত্রণা ভোগ করে ফিরেছি। শুধু দুই সন্তান আর স্ত্রীর জন্য এখনো বেঁচে থাকার ইচ্ছেটা হারাইনি। না হলে এই অপমান সহ্য করা সহজ নয়।’

সুপ্রিম কোর্টে খাইরুলের মামলা চলছে। তাঁর আইনজীবী অভিজিৎ রায় ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘যেভাবে খাইরুলকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তা বেআইনি। আমরা সুপ্রিম কোর্টে এই বিষয়টি উল্লেখ করব। খাইরুল যে ভারতীয়, তার একাধিক নথি আমাদের হাতে আছে।’ খাইরুল ও তাঁর আইনজীবীর বক্তব্য, ১৯৫৬ সালে মরিগাঁও জেলায় একটি চালকল চালু করেছিলেন খাইরুলের বাবা। তখন অবিভক্ত আসামের রাজধানী ছিল শিলং। শিলংয়ের এক সরকারি কার্যালয় তাঁর বাবার চালকল খোলার অনুমতি দিয়েছিল এবং তাঁদের কাছে সেই কাগজ আছে বলেও দাবি করেন খাইরুল ও তাঁর আইনজীবী। খাইরুল আরেও বলেন, তাঁর ঠাকুরদাদা একসময় বড় ব্যবসায়ী ছিলেন। ১৯২৭ সালে একটি বন্দুক রাখার লাইসেন্স পেয়েছিলেন তিনি ভারত সরকারের কাছ থেকে। এ ছাড়া ভারত স্বাধীন হওয়ার আগে নানা নথিও তাঁদের কাছে আছে। এইসব নথিই সুপ্রিম কোর্টে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

আসামে দীর্ঘদিন ধরে এনআরসি ও নাগরিকত্ব নিয়ে আন্দোলন করছেন কমল চক্রবর্তী। ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, যেভাবে নতুন করে ধরপাকড় শুরু হয়েছে, তা আইনসম্মত নয়। আর রাতের অন্ধকারে সীমান্ত পার করিয়ে দেওয়া কোনো সভ্য দেশে হতে পারে না।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা অবশ্য বলেছেন, ‘বিদেশি তাড়ানোর বিষয়ে ১৯৫০ সালের একটি আইন এখনো বাতিল হয়নি। এবার থেকে ওই আইনের মাধ্যমে সন্দেহভাজন বাংলাদেশিদের সীমান্তের ওপারে ঠেলে দেওয়া হবে।’ মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ১৯৫০ সালের ওই আইনে বলা হয়েছে, সন্দেহভাজন বিদেশিদের সীমান্তের বাইরে পাঠানোর নির্দেশ জারি করার অধিকার জেলা শাসকের আছে। তাই এবার থেকে সে রকম কেউ ধরা পড়লে আর ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে যেতে হবে না। আসাম বিধানসভায় গত সোমবার বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৩০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন ভারতীয় নারী, গ্রিন কার্ড সাক্ষাৎকারে গিয়ে আটক

বগুড়ায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৮ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

পাকিস্তানি বলে গুঞ্জন—বন্ডাই বিচের হামলাকারীরা আসলে ভারতীয়

ফয়সালের সঙ্গে ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গেছি, এতটুকুই—আদালতে কবির

রেকর্ড ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে মোস্তাফিজকে নিল কলকাতা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রাম্পের ১০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ মামলা প্রতিহতের ঘোষণা দিল বিবিসি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: বিবিসি
ছবি: বিবিসি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দায়ের করা মানহানি ও ক্ষতিপূরণ মামলার বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। ট্রাম্প বিবিসির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারিতে সংঘটিত ক্যাপিটল দাঙ্গার আগে দেওয়া তাঁর ভাষণ ‘ইচ্ছাকৃতভাবে বিকৃত’ করে প্যানোরামা ডকুমেন্টারিতে সম্প্রচার করা হয়েছে।

ফ্লোরিডার একটি আদালতে দায়ের করা ওই মামলায় ট্রাম্প বিবিসির বিরুদ্ধে মানহানি ও বাণিজ্যিক আচরণবিষয়ক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছেন। ক্ষতিপূরণ দাবির অঙ্ক নিয়ে বিভিন্ন প্রতিবেদনে ভিন্ন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই অঙ্ক ৫ বিলিয়ন ডলার বলা হলেও, ট্রাম্পের আইনজীবীদের সাম্প্রতিক নথি ও ব্রিফিং অনুযায়ী ক্ষতিপূরণের দাবি ১০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার রাতে (১৬ ডিসেম্বর) বিবিসি জানিয়েছে, কথিত প্যানোরামা ডকুমেন্টারিতে ট্রাম্পের ভাষণের দুটি ভিন্ন অংশ সম্পাদনার মাধ্যমে একত্রে দেখানো হয়। সেখানে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা ক্যাপিটলের দিকে হাঁটব... এবং আমি তোমাদের সঙ্গে থাকব। আমরা লড়াই করব, দারুণভাবে লড়াই করব।’ তবে বাস্তবে এই দুটি বক্তব্য ভাষণের মধ্যে প্রায় ৫০ মিনিটের ব্যবধানে দেওয়া হয়েছিল।

বিবিসি স্বীকার করেছে, এই সম্পাদনার ফলে ভুল ধারণা তৈরি হতে পারে যে, ট্রাম্প সরাসরি সহিংসতার আহ্বান জানিয়েছিলেন। এ জন্য তারা গত মাসে দুঃখ প্রকাশ করলেও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি প্রত্যাখ্যান করে জানায়, মানহানির অভিযোগের কোনো আইনি ভিত্তি নেই।

বিবিসির এক মুখপাত্র বলেন, ‘আগেও যেমন বলা হয়েছে, আমরা এই মামলার বিরুদ্ধে আত্মপক্ষ সমর্থন করব।’ চলমান আইনি প্রক্রিয়ার কারণে তারা বিস্তারিত মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।

মামলায় আরও দাবি করা হয়েছে, ডকুমেন্টারিটি যুক্তরাজ্যের বাইরে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্প্রচার না হলেও ভিপিএন বা ব্রিটবক্সের মতো স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের, বিশেষ করে ফ্লোরিডার দর্শকেরা এটি দেখতে পারেন। বিবিসি এসব অভিযোগের বিষয়ে এখনো নির্দিষ্ট করে প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

এই বিষয়ে ব্রিটিশ সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, এটি বিবিসির নিজস্ব আইনি বিষয়। একই সঙ্গে তারা একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ গণমাধ্যম হিসেবে বিবিসির ভূমিকার ওপর আস্থার কথাও পুনর্ব্যক্ত করেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রে মানহানির মামলা জেতা কঠিন হলেও এই মামলা বিবিসির সম্পাদকীয় স্বাধীনতা ও বিশ্বাসযোগ্যতার প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৩০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন ভারতীয় নারী, গ্রিন কার্ড সাক্ষাৎকারে গিয়ে আটক

বগুড়ায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৮ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

পাকিস্তানি বলে গুঞ্জন—বন্ডাই বিচের হামলাকারীরা আসলে ভারতীয়

ফয়সালের সঙ্গে ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গেছি, এতটুকুই—আদালতে কবির

রেকর্ড ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে মোস্তাফিজকে নিল কলকাতা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

টান দিয়ে নারীর মুখের নিকাব সরিয়ে তোপের মুখে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ৫৪
টান দিয়ে নারীর মুখের নিকাব সরিয়ে তোপের মুখে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার

সরকারি এক অনুষ্ঠানে সার্টিফিকেট নিতে আসা এক মুসলিম নারীর মুখ দেখতে তাঁর নিকাব টান দিয়ে সরিয়ে দিয়েছেন ভারতের বিহার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। গতকাল সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) পাটনায় তাঁর এ কাণ্ডে ভারতজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

ঘটনাটির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, ৭৪ বছর বয়সী জেডিইউর প্রধান নীতীশ কুমার এক সরকারি অনুষ্ঠানে এক আয়ুষ (আয়ুর্বেদ, যোগ ও ন্যাচারোপ্যাথি, ইউনানি, সিদ্ধা ও হোমিওপ্যাথি) চিকিৎসকের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিচ্ছিলেন।

সে সময় তিনি ওই নারী চিকিৎসককে ইশারায় নিকাব সরাতে বলেন। নারী চিকিৎসক নিকাব না সরালে নীতীশ নিজেই হাত বাড়িয়ে তাঁর নিকাব নিচের দিকে নামিয়ে দেন, যাতে তাঁর মুখ ও থুতনি দৃশ্যমান হয়।

ভিডিওতে পেছনে উপস্থিত কয়েকজনকে হাসতে দেখা যায়। একই সঙ্গে বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরীকেও নীতীশকে থামানোর চেষ্টা করতে দেখা যায়।

সরকারি অনুষ্ঠানে নারী চিকিৎসকের মুখ থেকে নিকাব টেনে খোলার ঘটনায় বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করছে বিরোধী দলগুলো।

এ ঘটনাকে ‘জঘন্য’ হিসেবে অভিহিত করে কংগ্রেস তাঁর পদত্যাগের দাবি করেছে।

হিন্দুত্ববাদী বিজেপির সঙ্গে জোট গড়ে মুখ্যমন্ত্রী হওয়া নীতীশের কড়া সমালোচনা করে বিরোধী দল আরজেডি এক বিবৃতিতে বলেছে, পর্দা করা মুসলিম নারীর নিকাব খুলে ফেলে জেডিও এবং বিজেপি নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার নামে কী রাজনীতি করছে, সেটি প্রকাশ করে দিয়েছে।

আরজেডি তাদের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে হিন্দিতে লিখেছে, ‘নীতীশজির কী হয়েছে? তাঁর মানসিক অবস্থা এখন করুণ পর্যায়ে পৌঁছেছে।’

কংগ্রেসও মুখ্যমন্ত্রীর এই আচরণকে ‘লজ্জাজনক’ ও ‘ঘৃণ্য’ বলে নিন্দা করেছে। দলের এক্স হ্যান্ডেলে লেখা হয়, ‘একজন নারী চিকিৎসক নিয়োগপত্র নিতে এসেছিলেন আর নীতীশ কুমার তাঁর নিকাব টেনে নামালেন। বিহারের সর্বোচ্চ পদে থাকা একজন ব্যক্তি প্রকাশ্যে এমন ঘৃণ্য আচরণ করছেন। ভাবুন তো, রাজ্যে নারীরা কতটা নিরাপদ? এই জঘন্য আচরণের জন্য নীতীশ কুমারের অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত।’

এর আগেও বিতর্কে জড়িয়েছিলেন নীতীশ কুমার। গত নভেম্বরের বিহার বিধানসভা নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে এক জনসভায় এক নারীকে মালা পরানোর ভিডিও ভাইরাল হলে সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। সে সময় এক জেডিইউ সংসদ সদস্য থামানোর চেষ্টা করলে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে ধমক দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৩০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন ভারতীয় নারী, গ্রিন কার্ড সাক্ষাৎকারে গিয়ে আটক

বগুড়ায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৮ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

পাকিস্তানি বলে গুঞ্জন—বন্ডাই বিচের হামলাকারীরা আসলে ভারতীয়

ফয়সালের সঙ্গে ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গেছি, এতটুকুই—আদালতে কবির

রেকর্ড ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে মোস্তাফিজকে নিল কলকাতা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বন্ডাই বিচে হামলাকারীকে থামাতে গিয়ে প্রাণ হারান এক বৃদ্ধ দম্পতিও!

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
হামলাকারীর সঙ্গে বরিস ও সোফিয়ার লড়াইয়ের এই মুহূর্তটি একটি ড্যাশক্যাম ফুটেজ থেকে নেওয়া
হামলাকারীর সঙ্গে বরিস ও সোফিয়ার লড়াইয়ের এই মুহূর্তটি একটি ড্যাশক্যাম ফুটেজ থেকে নেওয়া

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে সন্ত্রাসী হামলার সময় এক হামলাকারীর কাছ থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে ‘নায়ক’ বনে গেছেন ৪৩ বছর বয়সী আহমেদ আল-আহমেদ। এবার জানা গেল, এক বৃদ্ধ দম্পতিও হামলাকারীদের থামাতে এগিয়ে গিয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁদের নির্মম পরিণতি বরণ করতে হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, হামলাকারীর সঙ্গে লড়াই করে নিহত হয়েছেন এমন এক দম্পতির পরিচয় প্রকাশিত হয়েছে। একটি ড্যাশক্যাম ফুটেজে দেখা গেছে, বন্দুকধারীর সঙ্গে সরাসরি লড়াইয়ে জড়িয়েছেন ৬৯ বছরের বরিস গুরম্যান এবং তাঁর স্ত্রী ৬১ বছরের সোফিয়া গুরম্যান। হামলার শুরুর দিকেই তাঁরা সাহসিকতার সঙ্গে এগিয়ে গিয়ে প্রাণ হারান।

গত ১৪ ডিসেম্বর বন্ডাই বিচের ওই হামলায় এক হামলাকারী সহ ১৬ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে বরিস ও সোফিয়া গুরম্যানও রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে তাঁদের পরিবার। সিডনি মর্নিং হেরাল্ডকে পরিবারের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমাদের প্রিয় বরিস ও সোফিয়াকে হঠাৎ এবং অর্থহীনভাবে হারিয়ে আমরা গভীর শোকাহত।’

বরিস গুরম্যান ও তাঁর স্ত্রী সোফিয়া গুরম্যান। ছবি: সংগৃহীত
বরিস গুরম্যান ও তাঁর স্ত্রী সোফিয়া গুরম্যান। ছবি: সংগৃহীত

জানা গেছে, বরিস ও সোফিয়া গুরম্যান ৩৪ বছর ধরে দাম্পত্য জীবনে ছিলেন এবং জানুয়ারিতেই তাঁরা ৩৫ তম বিবাহবার্ষিকী উদ্‌যাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। একই সঙ্গে চলতি ডিসেম্বরেই সোফিয়ার ৬২ তম জন্মদিন পালনের কথা ছিল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ড্যাশক্যাম ফুটেজে দেখা গেছে, ক্যাম্পবেল প্যারেডে নিজের গাড়ি থেকে নেমে বন্দুকধারী সাজিদ আকরামের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন বরিস। বেগুনি রঙের শার্ট পরা বরিস বন্দুকধারীকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে বন্দুক ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় তাঁর সহযোগিতায় ধস্তাধস্তিতে এসে যোগ দেন স্ত্রী সোফিয়াও। ঘটনাটি অনিচ্ছাকৃতভাবে স্থানীয় এক বাসিন্দার গাড়ির ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘সাধারণ মানুষের এমন বীরত্ব কখনো ভুলে যাওয়া উচিত নয়।’

পরবর্তী সময়ে ড্রোনে ধারণ করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ফুটপাথে পাশাপাশি নিথর হয়ে পড়ে আছেন বরিস ও সোফিয়া। পরিবার জানিয়েছে, বরিস ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত মেকানিক। তিনি উদার, নীরব শক্তির প্রতীক এবং প্রয়োজনে সবার পাশে দাঁড়ানোর মতো মানুষ। সোফিয়া কাজ করতেন অস্ট্রেলিয়া পোস্টে—সহকর্মী ও স্থানীয় কমিউনিটিতে তিনি ছিলেন অত্যন্ত প্রিয়।

পরিবার তাঁদের সাহসিকতার কথাও তুলে ধরে বলেছে, ‘আমরা ফুটেজে দেখেছি, সোফিয়াকে সঙ্গে নিয়ে বরিস অন্যদের রক্ষা করতে হামলাকারীকে নিরস্ত করার চেষ্টা করেছিলেন। এই আত্মত্যাগই তাঁদের প্রকৃত পরিচয়।’

এদিকে হামলাকারীর কাছ থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে ‘নায়ক’ বনে যাওয়া আহমেদ আল-আহমেদের সাহসের প্রশংসা করেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বর্তমানে আহমেদ গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ঘটনার সময় হামলাকারী সাজিদ আকরামকে শেষ পর্যন্ত গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। অপর হামলাকারী তাঁরই ছেলে নাভিদ আকরাম। গুরুতর আহত অবস্থায় নাভিদ এখন পুলিশ পাহারায় হাসপাতালে রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৩০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন ভারতীয় নারী, গ্রিন কার্ড সাক্ষাৎকারে গিয়ে আটক

বগুড়ায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৮ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

পাকিস্তানি বলে গুঞ্জন—বন্ডাই বিচের হামলাকারীরা আসলে ভারতীয়

ফয়সালের সঙ্গে ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গেছি, এতটুকুই—আদালতে কবির

রেকর্ড ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে মোস্তাফিজকে নিল কলকাতা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

৩০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন ভারতীয় নারী, গ্রিন কার্ড সাক্ষাৎকারে গিয়ে আটক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৪৭
বাব্বলজিৎ কৌড় ওরফে বাবলি। ছবি: সংগৃহীত
বাব্বলজিৎ কৌড় ওরফে বাবলি। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৩০ বছর ধরে বসবাস করেন ৬০ বছর বয়সী ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারী বাব্বলজিৎ কৌড় ওরফে বাবলি। তাঁকে গ্রিন কার্ডের শেষ ধাপের সাক্ষাৎকারে আটক করেছেন দেশটির অভিবাসন কর্মকর্তারা।

আজ মঙ্গলবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

বাবলি কৌড়ের মেয়ে জ্যোতি জানান, গ্রিন কার্ড আবেদন-সংক্রান্ত বায়োমেট্রিক স্ক্যানের জন্য ১ ডিসেম্বর বাবলি যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) কার্যালয়ে গেলে সেখানে ফেডারেল এজেন্টরা তাঁকে আটক করেন।

লং বিচ ওয়াচডগ জানিয়েছে, কৌড়ের আরেক মেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও তাঁর স্বামী গ্রিন কার্ডধারী। তাঁরা মায়ের পক্ষে গ্রিন কার্ড পিটিশন দাখিল করেছিলেন, যা এরই মধ্যে অনুমোদিত হয়েছে।

জ্যোতি জানান, আইসিই কার্যালয়ের ফ্রন্ট ডেস্কে অপেক্ষার সময় কয়েকজন ফেডারেল এজেন্ট ভবনে প্রবেশ করেন। এরপর কৌড়কে একটি কক্ষে ডাকা হয়, যেখানে তাঁকে জানানো হয় যে, তাঁকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। যদিও তাঁকে আইনজীবীর সঙ্গে ফোনে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, তবু তাঁকে আটক রাখা হয়।

পরিবারের সদস্যদের কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত জানানো হয়নি কৌড়কে কোথায় নেওয়া হয়েছে। পরে জানা যায়, তাঁকে রাতারাতি অ্যাডেলান্টোয় স্থানান্তর করা হয়েছে, যা আগে একটি ফেডারেল কারাগার ছিল এবং বর্তমানে আইসিই ডিটেনশন সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

দীর্ঘদিনের বসবাস ও পারিবারিক পরিচয়

পরিবারসহ যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানোর পর কৌড় প্রথমে লাগুনা বিচে বসবাস শুরু করেন। পরে কাজের প্রয়োজনে তাঁরা লং বিচের বেলমন্ট শোর এলাকায় চলে যান। কৌড় ও তাঁর স্বামীর তিন সন্তান রয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৩৪ বছর বয়সী জ্যোতি যুক্তরাষ্ট্রের ডিফার্ড অ্যাকশন ফর চাইল্ডহুড অ্যারাইভালস (ডিএসিএ) কর্মসূচির আওতায় বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন এবং বড় ছেলে ও মেয়ে দুজনেই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কৌড় ও তাঁর স্বামী দুই দশকের বেশি সময় বেলমন্ট শোরের সেকেন্ড স্ট্রিটে ‘নাটরাজ কুইজিন অব ইন্ডিয়া অ্যান্ড নেপাল’ নামে একটি রেস্তোরাঁ চালান। রেস্তোরাঁটি স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। এ ছাড়া তিনি প্রায় ২৫ বছর বেলমন্ট শোর রাইট এইড ফার্মেসিতে কাজ করেছেন। চলতি বছর প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তিনি আবার রেস্তোরাঁয় কাজ শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

মুক্তির দাবি

লং বিচের ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান রবার্ট গার্সিয়া বাবলি কৌড়ের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন। তাঁর কার্যালয় জানায়, বিষয়টি নিয়ে তিনি ফেডারেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। কৌড়ের পরিবার আইনিপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে জামিনে মুক্তির জন্য অতিরিক্ত আবেদন প্রস্তুত করছে।

পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, অ্যাডেলান্টো ডিটেনশন সেন্টারে কৌড়কে বড় ডরমিটরি ধরনের একটি কক্ষে রাখা হয়েছে, যেখানে আরও বহু বন্দী রয়েছেন। সারা রাত আলো জ্বালানো থাকে এবং উচ্চশব্দের কারণে ঘুমানো কঠিন হয়ে পড়ে।

স্বজনেরা জানিয়েছেন, কৌড়ের সঙ্গে স্বল্প সময়ের সাক্ষাতের সুযোগ পেলেও এর জন্য পুরো দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে পরিবারের সদস্যদের।

মেয়ে জ্যোতি বলেন, ‘এটা এক দুঃস্বপ্ন। আমরা তাঁকে বের করে আনার জন্য সবকিছু করার চেষ্টা করছি। তিনি এখানে থাকার মতো কেউ নন। এটা ভীষণ অমানবিক।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৩০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন ভারতীয় নারী, গ্রিন কার্ড সাক্ষাৎকারে গিয়ে আটক

বগুড়ায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৮ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

পাকিস্তানি বলে গুঞ্জন—বন্ডাই বিচের হামলাকারীরা আসলে ভারতীয়

ফয়সালের সঙ্গে ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গেছি, এতটুকুই—আদালতে কবির

রেকর্ড ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে মোস্তাফিজকে নিল কলকাতা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত