Ajker Patrika

পার্কে যাওয়ার ছলে চার ছেলেকে নিয়ে ট্রেনে কাটা পড়লেন বাবা

অনলাইন ডেস্ক
ফরিদাবাদের এলসন চক ফ্লাইওভারের নিচে চার ছেলেকে নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন মনোজ মেহতো। ছবি: সংগৃহীত
ফরিদাবাদের এলসন চক ফ্লাইওভারের নিচে চার ছেলেকে নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন মনোজ মেহতো। ছবি: সংগৃহীত

চিপস আর কোলা হাতে চার সন্তানকে নিয়ে রেললাইনের পাশে অপেক্ষা করছিলেন মনোজ মেহতো। কেউ ভাবতেও পারেনি, ওই মুহূর্তটাই হবে তাদের জীবনের শেষ সময়। গত মঙ্গলবার দুপুরে ভারতের ফরিদাবাদের বল্লভগড়ে ঘটেছে এমনি এক মর্মান্তিক ঘটনা। যেখানে এক পিতা তাঁর চার সন্তানকে নিয়ে ট্রেনের নিচে আত্মহুতি দিয়েছেন।

দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া এক প্রতিবেদন এ খবর জানিয়েছে।

৩৬ বছর বয়সী দিনমজুর মনোজ মেহতো। মঙ্গলবার মাঝ দুপুরে তিনি চার ছেলেকে নিয়ে রেললাইনের পাশে দীর্ঘক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছিলেন। হঠাৎ একটি ট্রেন আসলে তিনি ছেলেদের নিয়ে রেললাইনের মাঝখানে গিয়ে দাঁড়ান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ট্রেন আসার সময় শিশুরা কাঁদতে কাঁদতে তাঁকে বলছিল, ‘বাবা, আমাদের ছেড়ে দাও।’ কিন্তু মনোজ তাদের হাত শক্ত করে ধরে রাখেন এবং ট্রেন এসে সবাইকে পিষে দেয়।

এই ভয়াবহ ঘটনা ঘটে দুপুর ১টা ১০ মিনিটের দিকে, যখন মুম্বাই থেকে আসা গোল্ডেন টেম্পল এক্সপ্রেস ওই লাইনে প্রবেশ করে। বল্লভগড় সরকারি রেল পুলিশ ইউনিটের স্টেশন হাউস অফিসার রাজপাল বলেন, ট্রেনটি তাদের চাকার নিচে পিষে ফেলে।

মনোজ বিহারের বাসিন্দা হলেও পরিবার নিয়ে ফরিদাবাদের সুবাস কলোনিতে থাকতেন। দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটের দিকে তিনি তাঁর স্ত্রী প্রিয়া মেহতোকে বলেন, তিনি ছেলেদের পার্কে নিয়ে যাচ্ছেন খেলতে। কিন্তু পার্কে না গিয়ে তিনি চার সন্তানকে নিয়ে এলসন চক ফ্লাইওভারের নিচে বসে পড়েন এবং প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ট্রেন আসার অপেক্ষা করেন। তিনি শিশুদের জন্য চিপস ও কোমল পানীয়ও কিনে দেন।

দুর্ঘটনার পর ট্রেনচালক বল্লভগড় স্টেশনে খবর পাঠান। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মনোজের পকেটে তাঁর আধার কার্ড এবং স্ত্রীর ফোন নম্বর লেখা একটি চিরকুট খুঁজে পান। এটি দেখে পুলিশ মনে করে, এটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত আত্মহত্যা।

পুলিশ প্রথমে ধারণা করেছিল, কোনো মা তাঁর সন্তানদের নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু পরে জানা যায়, একজন বাবা ও তাঁর চার সন্তানকে নিয়ে আত্মহুতি দিয়েছেন।

পুলিশ প্রিয়া মেহতাকে ফোনে ঘটনাটি জানালে তিনি বলেন, তাঁর স্বামী সন্তানদের পার্কে নিয়ে গেছেন এবং শিগগিরই বাড়ি ফিরে আসবেন। কিন্তু ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্বামী-সন্তানদের মরদেহ দেখে তিনি জ্ঞান হারান।

বাবা ও চার ছেলের পাঁচ মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বাদশাহ খান সিভিল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, মনোজ কেন এমন পদক্ষেপ নিয়েছেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, তাঁর দাম্পত্য জীবনে অশান্তি ছিল। কিন্তু এটি আত্মহত্যার পেছনে সরাসরি কারণ কি না—তা এখনো স্পষ্ট নয়।

এক তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে মনোজ কী মানসিক অবস্থায় ছিলেন এবং কী কারণে এমন চরম সিদ্ধান্ত নিলেন, তা খুঁজে বের করা। সেইসঙ্গে শোকাহত পরিবারটিকে যথাযথ সহায়তা দেওয়াও জরুরি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বদলির আদেশ ছিঁড়ে বরখাস্ত হলেন এনবিআরের ১৪ কর্মকর্তা

বাংলাদেশের সোনালি মুরগিতে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া: গবেষণা

প্রেক্ষাপটবিহীন প্রতিবেদন কি সাংবাদিকতা হতে পারে?

বিমানবন্দর থেকেই ৯৬ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া

বিধি লঙ্ঘন করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হলেন এনসিপি নেতা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত