Ajker Patrika

বন্দুকের মুখে বাংলাদেশে ‘পুশ ইন’ করা হচ্ছে ভারতীয় মুসলমানদের—আসামে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৫ জুন ২০২৫, ২১: ০৫
শোনা বানু-কে গত মাসে পুলিশ সন্দেহজনকভাবে আটক করে বাংলাদেশে পাঠায়; চার দিন পর তাঁকে আবার ভারতে ফেরত পাঠানো হয়। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
শোনা বানু-কে গত মাসে পুলিশ সন্দেহজনকভাবে আটক করে বাংলাদেশে পাঠায়; চার দিন পর তাঁকে আবার ভারতে ফেরত পাঠানো হয়। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

গত কয়েক দিনের কথা মনে করে ভারতের আসাম রাজ্যের বরপেটা জেলার ৫৮ বছর বয়সী সোনা বানু এখনো শিউরে ওঠেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, গত ২৫ মে তাঁকে স্থানীয় থানায় ডেকে নেওয়া হয়। পরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নিয়ে গিয়ে, সেখান থেকে তাঁকে ও আরও প্রায় ১৩ জনকে বন্দুকের মুখে জোর করে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেন তাঁকে এমন করা হয়েছে, তা জানানো হয়নি বলে জানান সোনা বানু।

সম্প্রতি ভারত থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন সীমান্তে একাধিক পুশ ইনের ঘটনা ঘটেছে। ভারতের দাবি, তারা অবৈধ অভিবাসীদের শনাক্ত করে বাংলাদেশে পুশ ব্যাক করছে। শুরুটা হয়েছিল গত ২২ এপ্রিল ভারত শাসিত কাশ্মীরের পেহেলগাম হত্যাকাণ্ডের পর। ভারতের নানা রাজ্যে শুরু হয় এক বিশেষ অভিযান—‘অবৈধ বাংলাদেশি চিহ্নিত’ করার অভিযান। প্রথম অভিযানটা হয়েছিল গুজরাটে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বিষয়টি নিয়ে একটি সরেজমিন প্রতিবেদন তৈরি করেছে। ভুক্তভোগী অনেকের সঙ্গে কথা বলে বিবিসি জানতে পেয়েছে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য।

সোনা বানু, সারা জীবন আসামেই বসবাস করেছেন। কিন্তু কয়েক বছর ধরে তাঁকে বারবার প্রমাণ করতে হচ্ছে, তিনি ভারতীয় নাগরিক। বাংলাদেশের ‘অবৈধ অভিবাসী’ নন। চোখের জল মুছতে মুছতে বানু বলেন, ‘বন্দুক ঠেকিয়ে আমাকে ওপারে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। দুদিন ধরে আমি ভারত ও বাংলাদেশের মাঝখানে, হাঁটুসমান জলের মাঠে মশার কামড় ও জোঁকের মধ্যে খাবার-পানি ছাড়া কাটিয়েছি।’ দুই দিন পর তাঁকে বাংলাদেশ সীমান্তের একটি পুরোনো জেলখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দুই দিন থাকার পর, তাঁকে ও আরও কয়েকজনকে বাংলাদেশি কর্মকর্তারা সীমান্তের ওপারে নিয়ে যান। পরবর্তী সময় ভারতীয় কর্মকর্তারা তাঁদের গ্রহণ করেন এবং বাড়িতে ফেরত পাঠান।

সোনা বানুকে কেন হঠাৎ বাংলাদেশে পাঠানো হলো এবং আবার কেন ফিরিয়ে আনা হলো, তা স্পষ্ট নয়। তবে তাঁর ঘটনাটি সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এমন একাধিক ঘটনার মধ্যে একটি। আসামের কর্তৃপক্ষ তাদের ট্রাইব্যুনাল থেকে ঘোষিত সন্দেহভাজন ‘অবৈধ বাংলাদেশি’দের ধরে নিয়ে সীমান্তে ঠেলে দিচ্ছেন। বিবিসি এমন ছয়টি ঘটনা খুঁজে পেয়েছে। ভুক্তভোগী এই মানুষজন অভিযোগ করেছেন, তাঁদের পরিবারের সদস্যদের তুলে নিয়ে সীমান্তে পাঠানো হয়েছে এবং ‘ওপারে (বাংলাদেশে) ঠেলে দেওয়া হয়েছে’।

বিবিসির পক্ষ থেকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ), আসাম পুলিশ ও রাজ্য সরকারের কাছে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলেও কোনো জবাব মেলেনি।

ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে, যার অনেক সংবেদনশীল এলাকা কড়া পাহারায় থাকা সত্ত্বেও সীমান্ত পেরোনো তুলনামূলক সহজ। তবে আইনজীবীরা বলছেন, নিয়ম মেনে আইনি প্রক্রিয়া ছাড়া হঠাৎ কাউকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে অন্য দেশে ঠেলে দেওয়ার ঘটনা বিরল। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ ধরে এই ধরনের ঘটনা বেড়েছে বলে মনে হচ্ছে।

মালেকা খাতুন এখনো বাংলাদেশে রয়েছেন। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী একটি পরিবার তাঁকে অস্থায়ী আশ্রয় দিয়েছে। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
মালেকা খাতুন এখনো বাংলাদেশে রয়েছেন। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী একটি পরিবার তাঁকে অস্থায়ী আশ্রয় দিয়েছে। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

ভারতের সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি, সাম্প্রতিক অভিযানে কতজনকে ওপারে পাঠানো হয়েছে। তবে বাংলাদেশি প্রশাসনের কয়েকটি উচ্চপদস্থ সূত্র দাবি করেছে, শুধু মে মাসেই ভারত ‘অবৈধভাবে’ ১ হাজার ২০০-এর বেশি মানুষকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে। শুধু আসাম নয়, অন্যান্য রাজ্য থেকেও এসেছে। এই সূত্রগুলো নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরও জানিয়েছে, বাংলাদেশ এই ১ হাজার ২০০ জনের মধ্যে ১০০ জনকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত করে আবার তাঁদের ভারতে ফেরত পাঠিয়েছে।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এসব চেষ্টা রুখতে তারা সীমান্তে টহল বাড়িয়েছে। তবে ভারত বাংলাদেশ বা বিজিবির এই অভিযোগগুলো নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, সাম্প্রতিক এই অভিযানে অন্যান্য রাজ্যে বসবাসকারী রোহিঙ্গা মুসলিমরাও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তবে আসামের পরিস্থিতি তুলনামূলক জটিল ও উত্তেজনাপূর্ণ, যেখানে নাগরিকত্ব আর জাতিগত পরিচয় দীর্ঘদিন ধরেই রাজনীতির প্রধান বিষয়।

মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ আসামের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। এসব সীমান্তবর্তী এলাকার অনেক মানুষই সুযোগের সন্ধানে বা ধর্মীয় নিপীড়ন থেকে বাঁচতে ভারতে প্রবেশ করেন। ফলে আসামের স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। স্থানীয় অনেকেই মনে করছেন, এর ফলে জনসংখ্যার বিন্যাস বদলে যাচ্ছে ও স্থানীয়দের সম্পদ কমে যাচ্ছে।

ভারত ও বাংলাদেশের মাঝখানের নির্জন এলাকা — শোনা বানুর দাবি, তিনি এখানে একটি মাঠের মধ্যে দু’দিন কাটিয়েছেন। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
ভারত ও বাংলাদেশের মাঝখানের নির্জন এলাকা — শোনা বানুর দাবি, তিনি এখানে একটি মাঠের মধ্যে দু’দিন কাটিয়েছেন। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

আসাম ও কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) বারবার অবৈধ অভিবাসন বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাজ্যের জাতীয় নাগরিক পুঞ্জি (এনআরসি) তৈরির কাজকেও অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এই পঞ্জিকা এমন একটি তালিকা যেখানে বলা হয়েছে, যাঁরা ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের (বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার আগের দিন) মধ্যে আসামে এসেছিলেন, কেবল তাঁরাই স্থান পেয়েছেন। তালিকাটি একাধিকবার সংশোধন করা হয়েছে। এ ছাড়া যাঁদের নাম বাদ পড়েছিল, তাঁদের ‘ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল’ নামক আধা বিচারিক ফোরামে সরকারি নথি দেখিয়ে ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রমাণ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।

তবে নানান আলোচনা-সমালোচনার পর একটি বিশৃঙ্খল প্রক্রিয়ায় ২০১৯ সালে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়। এতে আসামের প্রায় ২০ লাখ বাসিন্দা বাদ পড়েন। তাঁদের মধ্যে অনেককে ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হয়, অন্যরা তাঁদের বাদ পড়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেন। সোনা বানু জানান, তাঁর মামলাটিই সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এটা জেনেও তাঁকে জোর করে দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছে।

বিবিসি আসামের আরও ছয়জন মুসলিমের কাছ থেকে একই ধরনের কথা শুনেছে। এরা সবাই অভিযোগ করেছেন, তাঁদের পরিবারের সদস্যদেরও সোনা বানুর সঙ্গে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা দাবি করেন, তাঁদের প্রয়োজনীয় নথি ছিল ও তাঁরা কয়েক প্রজন্ম ধরে ভারতে বসবাস করছেন জেনেও প্রশাসন এই কাজ করেছে। এই ছয়জন মুসলিমের মধ্যে চারজন এখন বাড়িতে ফিরে এসেছেন। কিন্তু কেন তাঁদের তুলে নেওয়া হয়েছিল, তার কোনো উত্তর এখনো তাঁরা পাননি।

আসামের ৩ কোটি ২০ লাখ বাসিন্দার এক-তৃতীয়াংশ মুসলিম। তাদের মধ্যে অনেকে ব্রিটিশ শাসনের সময় এখানে বসতি স্থাপনকারী অভিবাসীদের বংশধর।

আসামের বরপেটার ৬৭ বছর বয়সী মালেকা খাতুন এখনো বাংলাদেশে রয়েছেন। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী একটি পরিবার তাঁকে অস্থায়ী আশ্রয় দিয়েছে। তিনি দুঃখ করে বলেন, ‘এখানে আমার কেউ নেই।’ তাঁর পরিবার তাঁর সঙ্গে কথা বলতে পেরেছে, কিন্তু তিনি কখন ফিরতে পারবেন, তা জানেন না। তিনি ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল ও রাজ্যের হাইকোর্টে মামলা হেরেছিলেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেননি, তাই তাঁকে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে চিহ্নিত করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

বিবিসি বরপেটা থেকে প্রায় ১৬৭ কিলোমিটার দূরে মরিগাঁওয়ের রিতা খানমের সঙ্গে কথা বলে। তিনি একটি টেবিলের কাছে বসেছিলেন, যেখানে অনেকগুলো কাগজের স্তূপ ছিল। তাঁর স্বামী খাইরুল ইসলাম (৫১), একজন স্কুলশিক্ষক। রিতা খানম জানান, সোনা বানুর সঙ্গে তাঁর স্বামী খাইরুল ইসলামকেও তুলে নিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। একটি ট্রাইব্যুনাল ২০১৬ সালে তাঁকে বিদেশি ঘোষণা করেছিল। এরপর প্রায় দুই বছর তিনি একটি ডিটেনশন সেন্টারেও কাটান। সোনা বানুর মতো, তাঁর মামলাও সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন।

রিতা খানম বলেন, ‘আমার স্বামী ভারতীয়, তাঁর প্রমাণ হিসেবে সব নথি রয়েছে।’ তিনি তাঁর স্বামীর স্কুল থেকে স্নাতক সম্পন্ন করার সনদপত্র ও কিছু জমির রেকর্ডও দেখান। কিন্তু কর্তৃপক্ষের কাছে জাতীয়তা প্রমাণ করার জন্য এগুলো যথেষ্ট ছিল না।

সাঞ্জিমা বেগমের হাতে সরকারি কাগজপত্র রয়েছে, যেগুলো তাঁর দাবি অনুযায়ী তাঁর বাবার পরিচয় প্রমাণ করে। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
সাঞ্জিমা বেগমের হাতে সরকারি কাগজপত্র রয়েছে, যেগুলো তাঁর দাবি অনুযায়ী তাঁর বাবার পরিচয় প্রমাণ করে। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

রিতা খানম জানান, গত ২৩ মে পুলিশ তাঁদের বাড়িতে এসে কোনো ব্যাখ্যা ছাড়াই খাইরুল ইসলামকে নিয়ে যায়। কয়েক দিন পর যখন একজন বাংলাদেশি সাংবাদিকের খাইরুল ইসলামকে নিয়ে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়—তখনই পরিবার জানতে পারে তিনি কোথায় আছেন। সোনা বানুর মতো খাইরুল ইসলামকেও এখন ভারতে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তাঁর পরিবার তাঁর ফেরার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে আসাম পুলিশ বিবিসিকে জানিয়েছে, তাদের কাছে খাইরুল ইসলামের ফেরত আসার ‘কোনো তথ্য নেই’।

হঠাৎ বিশেষ অভিযান কেন শুরু হলো, কেনই-বা ভারতে আটক হওয়ার পরে কয়েকজনকে বাংলাদেশে দেখা গেল, তা নিয়ে কোনো প্রশ্নের জবাব দেয়নি আসাম পুলিশ।

পুলিশের মহানির্দেশকের কাছে এই বিষয়ে তথ্য চেয়ে ই-মেইল করা হয়েছে, তবে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তার জবাব আসেনি।

সম্প্রতি এ ধরনের ঘটনা শুরু হওয়ার কয়েক দিন পর, মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা ফেব্রুয়ারিতে দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের একটি নির্দেশের কথা উল্লেখ করেন। যেখানে বলা হয়েছে, ‘বিদেশি ঘোষিত’ কিন্তু ডিটেনশন সেন্টারে থাকা ব্যক্তিদের পুশ ব্যাক করার প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দিয়েছিল সরকার। হেমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, ‘যাঁরা বিদেশি হিসেবে ঘোষিত, কিন্তু আদালতে আপিল করেননি, আমরা তাঁদের ফেরত পাঠাচ্ছি।’ তিনি দাবি করেন, যাঁদের আদালতের আপিল বিচারাধীন, তাঁদের ‘বিরক্ত করা হচ্ছে না’।

তবে আসামে নাগরিকত্ব মামলা নিয়ে কাজ করা আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক ভূঁইয়া অভিযোগ করেছেন, সাম্প্রতিক অনেক ঘটনায় নিয়ম মেনে (ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সমন্বয় করে) কাজ করা হয়নি। তিনি বলেন, ‘যা ঘটছে তা আদালতের আদেশের ইচ্ছাকৃত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপব্যাখ্যা।’

আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক ভূঁইয়া সম্প্রতি একটি ছাত্রসংগঠনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন করেছিলেন, যেখানে তাঁরা ‘জোরপূর্বক ও অবৈধ পুশ ব্যাক নীতি’ বন্ধ করার জন্য আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়েছিলেন। তবে সুপ্রিম কোর্ট তাঁদের প্রথমে আসাম হাইকোর্টে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তাসনিম জারা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘২০২৫’ নিয়ে ১৯৯৮ সালে করা আমেরিকানদের ভবিষ্যদ্বাণী কতটুকু মিলেছে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০: ৫৭
ছবি: সিএনএন
ছবি: সিএনএন

১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও সমাজ বাস্তবতা ছিল একেবারেই ভিন্ন। সেই বছর প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন অভিশংসন প্রক্রিয়ার মুখে পড়েছিলেন, অস্কারে রাজত্ব করেছিল টাইটানিক, আর অধিকাংশ আমেরিকানের ঘরে ছিল ল্যান্ডলাইন ফোন। ঠিক সেই সময়েই গ্যালাপ ও ইউএসএ টুডে এক ব্যতিক্রমী জরিপ চালায়। ল্যান্ডলাইন ফোনে ১ হাজার ৫৫ জন আমেরিকানের সঙ্গে কথা বলে জানতে চাওয়া হয়—দূর ভবিষ্যৎ ‘২০২৫ সাল’ কেমন হবে বলে তাঁরা মনে করেন।

সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সিএনএন জানিয়েছে, ২০২৫ সাল নিয়ে সে সময় মার্কিনরা যে ভবিষ্যদ্বাণীগুলো করেছিল, সেগুলো সংরক্ষিত আছে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রোপার সেন্টারের জরিপ আর্কাইভে। ২০২৫ সালের শেষ প্রান্তে এসে এখন দেখা যাচ্ছে—সেই সব অনুমানের কোনোটা মিলেছে, আর কোনোটা মেলেনি।

এ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, সেই সময়ের অনেক পূর্বাভাসই ছিল বিস্ময়করভাবে সঠিক। অধিকাংশ আমেরিকান তখনই ধারণা করেছিলেন, আগামী ২৭ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে একজন কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন, সমকামী বিবাহ বৈধ ও স্বাভাবিক হয়ে উঠবে এবং একটি ‘মারাত্মক নতুন রোগ’ বিশ্বকে নাড়িয়ে দেবে। বাস্তবে বারাক ওবামার প্রেসিডেন্ট হওয়া, সমকামী বিবাহের আইনি স্বীকৃতি এবং করোনা মহামারি সেই অনুমানগুলোকে সত্য প্রমাণ করেছে।

একইভাবে অনেকেই সেই সময় সঠিকভাবে ধারণা করেছিলেন, সাধারণ মানুষের জন্য মহাকাশ ভ্রমণ খুব সাধারণ বিষয় হয়ে উঠবে না এবং ভিনগ্রহের প্রাণীর সঙ্গে মানুষের সরাসরি যোগাযোগ ঘটবে না।

তবে কিছু ভবিষ্যদ্বাণী বাস্তবতার সঙ্গে মেলেনি। জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ মনে করেছিলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র একজন নারী প্রেসিডেন্ট পাবে—যা এখনো ঘটেনি। অর্ধেকের বেশি মানুষ আশা করেছিলেন ক্যানসারের নিরাময় আবিষ্কৃত হবে এবং ৬১ শতাংশ মনে করেছিলেন মানুষ নিয়মিতভাবে ১০০ বছর বয়স পর্যন্ত বাঁচবে। বাস্তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানে অগ্রগতি হলেও এসব প্রত্যাশা পুরোপুরি পূরণ হয়নি।

জরিপে দেশের সামগ্রিক দিকনির্দেশনা নিয়েও প্রশ্ন ছিল। সেখানে ফুটে উঠেছিল প্রবল হতাশা। ৭০ শতাংশ মনে করেছিলেন ধনীদের জীবনমান উন্নত হবে, কিন্তু মধ্যবিত্তদের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিভক্ত মতামত ছিল। দরিদ্রদের জীবন আরও কঠিন হবে—এমনটাই ভাবতেন বেশির ভাগ। প্রায় ৮০ শতাংশ ধারণা করেছিলেন ব্যক্তিগত গোপনীয়তা কমবে, আর ৫৭ শতাংশ মনে করেছিলেন ব্যক্তিগত স্বাধীনতাও হ্রাস পাবে। অপরাধ বৃদ্ধি, পরিবেশের অবনতি এবং নৈতিক মূল্যবোধের পতনের আশঙ্কাও ছিল প্রবল। ৭১ শতাংশ মত দিয়েছিলেন, সন্তানকে ভালো মানুষ হিসেবে বড় করা আরও কঠিন হবে।

তবে কিছু আশাবাদী দিকও ছিল। অধিকাংশ আমেরিকান বিশ্বাস করতেন, জাতিগত সম্পর্কের উন্নতি হবে এবং চিকিৎসাসেবা আরও সহজলভ্য হবে—যদিও তা হবে ব্যয়বহুল।

গ্যালাপ আজও জরিপ চালিয়ে যাচ্ছে, যদিও এখন ল্যান্ডলাইনের ওপর নির্ভরতা কম। এই দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে জনমতও নাটকীয়ভাবে বদলে গেছে। ১৯৯৮ সালে যেখানে প্রায় ৬০ শতাংশ আমেরিকান দেশের গতিপথ নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন, বর্তমানে সেই হার নেমে এসেছে মাত্র ২৪ শতাংশে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তাসনিম জারা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পুতিনের বাসভবনে ড্রোন হামলার অভিযোগ—‘মিথ্যা’ বলছে ইউক্রেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইউক্রেনের ভলোদিমির জেলেনস্কি ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: এএফপি
ইউক্রেনের ভলোদিমির জেলেনস্কি ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: এএফপি

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন—এমন অভিযোগ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে পুরোপুরি ‘মিথ্যা ও সাজানো’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই হামলার কারণে চলমান শান্তি আলোচনায় রাশিয়ার অবস্থানের ‘পরিবর্তন বা পুনর্বিবেচনা’ করা হতে পারে। তবে মস্কো এখনই আলোচনা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছে না।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন সের্গেই লাভরভের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, গতকাল রোববার রাত থেকে আজ সোমবার ভোর পর্যন্ত পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ৯১টি দূরপাল্লার ড্রোন হামলা চালায় ইউক্রেন। রুশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সবকটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। তবে এতে কোনো হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি।

লাভরভ হুমকি দিয়ে বলেন, ইউক্রেনের এমন হঠকারী কর্মকাণ্ডের জবাব দেওয়া হবে। রুশ সামরিক বাহিনী ইতিমধ্যে পাল্টা হামলার জন্য লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ করে ফেলেছে। তবে হামলার সময় প্রেসিডেন্ট পুতিন নোভগোরোদের ওই বাসভবনে ছিলেন কি না, তা স্পষ্ট করা হয়নি।

ফ্লোরিডায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক শেষ করে ইউরোপে ফেরার পথে জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে নাকচ করে দেন। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া আবারও ভয়ংকর সব মিথ্যা বিবৃতি দিচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আমাদের কূটনৈতিক অগ্রগতির সাফল্য নষ্ট করতেই এমন নাটক সাজানো হচ্ছে। তারা মূলত কিয়েভের সরকারি ভবনগুলোতে বড় ধরনের হামলার ক্ষেত্র তৈরি করার জন্য এই অজুহাত দিচ্ছে।’

জেলেনস্কি জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার প্রায় ৯০ শতাংশ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, যা রাশিয়াকে বিচলিত করে তুলেছে।

এদিকে ক্রেমলিন বলছে, আজ প্রেসিডেন্ট পুতিন টেলিফোনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এই ড্রোন হামলার বিষয়টি জানিয়েছেন। পুতিন ট্রাম্পকে বলেছেন, এই হামলার পর রাশিয়া তাদের শান্তি আলোচনার শর্তগুলো পুনরায় খতিয়ে দেখবে।

রুশ গণমাধ্যমগুলো ক্রেমলিনের সহকারী ইউরি উশাকভের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, এই খবর শুনে ট্রাম্প ‘বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ’ হয়েছেন। তবে হোয়াইট হাউস থেকে এই ফোনালাপকে কেবল ‘ইতিবাচক’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে, বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তাসনিম জারা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তাইওয়ানকে ঘিরে ধরেছে চীনের যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান ও ড্রোন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মহড়ায় সরাসরি গুলির অনুশীলনও করা হচ্ছে। ছবি: চীনের পূর্বাঞ্চলীয় থিয়েটার কমান্ড
মহড়ায় সরাসরি গুলির অনুশীলনও করা হচ্ছে। ছবি: চীনের পূর্বাঞ্চলীয় থিয়েটার কমান্ড

তাইওয়ানকে ঘিরে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। সোমবার শুরু হওয়া এই মহড়ায় যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও সরাসরি গোলাবর্ষণও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ‘জাস্টিস মিশন ২০২৫’ নামের এই অভিযানে তাইওয়ানকে চারদিক থেকে ঘিরে সাতটি সামুদ্রিক অঞ্চলে সমন্বিত স্থল, নৌ ও আকাশ মহড়া চালানো হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি এখন পর্যন্ত তাইওয়ানকে লক্ষ্য করে চীনের সর্ববৃহৎ ও সবচেয়ে আক্রমণাত্মক সামরিক প্রদর্শন।

চীনের পূর্বাঞ্চলীয় থিয়েটার কমান্ড জানিয়েছে—মহড়ায় স্থল ও সমুদ্রের লক্ষ্যবস্তুর ওপর সিমুলেটেড হামলা, পাশাপাশি তাইওয়ানের প্রধান বন্দরগুলো অবরোধ করার অনুশীলন করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্ন করতে বা চাপের মুখে ফেলতে এই ধরনের অবরোধ ব্যবহৃত হতে পারে বলে মনে করছেন সামরিক বিশ্লেষকেরা। সরাসরি গোলাবর্ষণের মহড়া মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) পর্যন্ত চলবে এবং আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় এবার তাইওয়ানের আরও কাছাকাছি ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল ঘোষণা করা হয়েছে।

এই মহড়ার ফলে বেসামরিক বিমান ও নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বেশ কয়েকটি এয়ারলাইন তাদের ফ্লাইটের রুট পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে এবং তাইওয়ানের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বিকল্প আকাশপথ ব্যবহারের প্রস্তুতি নিয়েছে। চীনা সামরিক কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, এই মহড়া ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতাপন্থী শক্তি’ ও ‘বিদেশি হস্তক্ষেপের’ বিরুদ্ধে কঠোর সতর্কবার্তা।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি তাইওয়ানের কাছে ১১.১ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যা ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্যাকেজ। এতে রয়েছে ৮২টি হিমার্স রকেট লঞ্চার, ৪২০টি দূরপাল্লার এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র, স্বচালিত হাউইটজার, উন্নত ড্রোন ব্যবস্থা ও অ্যান্টি-আর্মার অস্ত্র। বেইজিং এই অস্ত্রচুক্তিকে তীব্রভাবে নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এতে তাইওয়ান একটি ‘বারুদের স্তূপে’ পরিণত হচ্ছে।

তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মহড়া চলাকালে তাদের দ্বীপভূমির চারপাশে ৮৯টি চীনা সামরিক বিমান, ১৪টি নৌজাহাজ ও ১৪টি কোস্ট গার্ড জাহাজ শনাক্ত করা হয়েছে। কিছু চীনা জাহাজ তাইওয়ানের উপকূলের খুব কাছাকাছি অবস্থানে এসে চোখ রাঙাচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রেখেছে তাইওয়ান।

চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে, মহড়ার মূল লক্ষ্য তাইওয়ানের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর—উত্তরের কিলুং ও দক্ষিণের কাওশিয়ুং বন্ধ করে দেওয়ার সক্ষমতা পরীক্ষা। চীন তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড দাবি করলেও তাইওয়ান বলছে, দ্বীপটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণের অধিকার শুধু সেখানকার জনগণেরই আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তাসনিম জারা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

১৭ বছরের সাজার রায় চ্যালেঞ্জ করে ইমরান খান ও বুশরা বিবির আপিল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবি। ছবি: এএফপি
ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবি। ছবি: এএফপি

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবি বর্তমানে কারাগারে। তোশাখানা দুর্নীতির মামলায় তাঁরা দুজনই সাজা খাটছেন। এর মধ্যে ২০ ডিসেম্বর তোশাখানা দুর্নীতির নতুন মামলায় তাঁদের আরও ১৭ বছর করে কারাদণ্ড দেন দেশটির একটি বিশেষ আদালত। এই রায় চ্যালেঞ্জ করে আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) ইসলামাবাদ হাইকোর্টে (আইএইচসি) পৃথক দুটি আপিল করেছেন ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবি।

আপিল আবেদনে ইমরান খান ও বুশরা বিবির আইনজীবীরা দাবি করেছেন, এই সাজা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ইমরান খানকে জাতীয় রাজনীতি থেকে দূরে রাখতেই এ ‘পরিকল্পিত’ রায় দেওয়া হয়েছে। আইনজীবীরা ইমরান খান ও বুশরা বিবির পক্ষে কিছু যুক্তি উত্থাপন করেছেন।

আইনজীবীদের দাবি, ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এফআইএ) কোনো এফআইআর ছাড়াই ইমরান খান ও বুশরা বিবির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। এর মাত্র দুই দিনের মাথায় তড়িঘড়ি করে চালানো তদন্তের ভিত্তিতে এই মামলা হয়, যা স্বচ্ছ বিচারের পরিপন্থী।

আপিল আবেদনে বলা হয়েছে, তোশাখানাসংক্রান্ত এটি চতুর্থ মামলা। একই বিষয়ে বারবার মামলা করা আইনের লঙ্ঘন এবং এটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে করা হয়েছে, যাতে ইমরান খানকে দীর্ঘদিন কারাগারে আটকে রাখা যায়।

আইনজীবীদের দাবি, ২০১৮ সালের তোশাখানা নীতিমালা অনুযায়ী নির্ধারিত মূল্যের ৫০ শতাংশ পরিশোধ করেই উপহারগুলো রাখা হয়েছিল। এখানে কোনো ধরনের বিশ্বাসভঙ্গ বা ‘ক্রিমিনাল ব্রিচ অব ট্রাস্ট’ ঘটেনি।

আপিলে যুক্তি দেওয়া হয়েছে, পাকিস্তান পেনাল কোড অনুযায়ী ইমরান খান ও বুশরা বিবি এই উপহার নেওয়ার সময় প্রচলিত সংজ্ঞায় ‘পাবলিক সার্ভেন্ট’ ছিলেন না। বিশেষ করে, বুশরা বিবি একজন গৃহিণী হিসেবে কোনো সরকারি পদের দায়িত্বে ছিলেন না।

প্রসঙ্গত, তোশাখানা মামলাটি মূলত ২০২১ সালের মে মাসে সৌদি আরব সফরকালে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের দেওয়া একটি দামি বুলগারি জুয়েলারি সেট নিয়ে। প্রায় ৮ কোটি রুপি মূল্যের এই নেকলেস, ব্রেসলেট, আংটি ও কানের দুলের সেটটি ইমরান দম্পতি মাত্র ২৯ লাখ রুপি পরিশোধ করে নিজের কাছে রেখেছিলেন।

এই মামলায় পাকিস্তানের ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এআইএ) বিশেষ আদালতের বিচারক শাহরুখ আরজুমান্দ তাঁদের প্রত্যেককে প্রথমে বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, এরপর দুর্নীতিবিরোধী আইনের আওতায় সাত বছরের কারাদণ্ড এবং ১ কোটি ৬৪ লাখ রুপি জরিমানা করেছিলেন।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে সংসদীয় অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন ইমরান খান। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা করা হয়। তিনি ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দী আছেন। বর্তমানে ইমরান খান ১৯ কোটি পাউন্ডের দুর্নীতির মামলায় ১৪ বছরের সাজা খাটছেন। বুশরা বিবিও একই মামলায় সাত বছরের সাজাপ্রাপ্ত।

ইমরানের দল পিটিআইয়ের দাবি, তোশাখানা মামলার বিচারপ্রক্রিয়া ‘ক্যাঙারু কোর্টে’র মতো রুদ্ধদ্বার কক্ষে সম্পন্ন হয়েছে। এটি ন্যায়বিচারের পরিপন্থী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তাসনিম জারা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত