Ajker Patrika

ঢাকা-নয়াদিল্লির সম্পর্কের মূল ভিত্তি দুই দেশের জনগণ: ভারত

আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭: ১৭
ভারত বলেছে বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের মূল ভিত্তি হলো জনগণ। ছবি: ইন্ডিয়া টাইমসের সৌজন্যে
ভারত বলেছে বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের মূল ভিত্তি হলো জনগণ। ছবি: ইন্ডিয়া টাইমসের সৌজন্যে

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে সম্পর্কের প্রধান ভিত্তি হলো দুই দেশের জনগণ। এ ছাড়া, ভারত একটি ‘গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, প্রগতিশীল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ’ দেখতে চায় এবং এর প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে।

ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল শুক্রবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সাপ্তাহিক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই অবস্থান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বলতে গেলে, আমরা আগেও তা স্পষ্ট করেছি এবং আবারও বলছি, এই দৃষ্টিভঙ্গি পররাষ্ট্রসচিবের ঢাকা সফরের সময় স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছিল। তিনি ভারতের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন একটি গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, প্রগতিশীল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের জন্য।’

এই মন্তব্য এমন একসময়ে এল, যার মাত্র কয়েক দিন আগেই বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার দেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত একাধিক মামলার আসামি শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের জন্য ভারতের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে দাবি জানিয়েছে।

শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে তিনি বাংলাদেশ ত্যাগ করেন। এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানান, পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি তাঁর সাম্প্রতিক ঢাকা সফরে ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে পারস্পরিক বিশ্বাস, শ্রদ্ধা এবং উভয় দেশের উদ্বেগ ও স্বার্থের প্রতি সংবেদনশীলতার ভিত্তিতে গড়ে তোলার ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘তিনি (মিশ্রি) আরও জোর দিয়ে বলেছেন যে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের প্রধান অংশীদার হলো দুই দেশের জনগণ। ভারতের উন্নয়ন সহযোগিতা এবং বাংলাদেশে বাণিজ্য, সংযোগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে বহুমুখী কর্মকাণ্ড চলছে, সেগুলোর লক্ষ্যই বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণ। সুতরাং, এটাই আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি।’

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক ঘটনাবলি প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরও বলেন, ‘অনেক ঘটনা প্রতিদিন ঘটছে। তবে বাংলাদেশের প্রতি আমাদের সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি যা বললাম, আমরা সেই সম্পর্ক জোরদার করতে চাই।’

এদিকে, ভারত ও বাংলাদেশ আগামী ৫ জানুয়ারি এক যৌথ মুক্তি ও প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ৯৫ জন ভারতীয় মৎস্যজীবী এবং ৯০ জন বাংলাদেশি মৎস্যজীবীকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই প্রক্রিয়া উভয় দেশের কোস্টগার্ডের সহযোগিতায় পরিচালিত হচ্ছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, এই বিনিময় উভয় দেশের মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের মানবিক ও জীবিকার বিষয়টি মাথায় রেখে পরিকল্পনা করা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের বিনিময় সম্পর্কে বিস্তারিত বলতে গিয়ে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘মৎস্যজীবী ইস্যুতে বিনিময়টি ৫ তারিখে (জানুয়ারি) সম্পন্ন হবে। তাদের (বাংলাদেশের) পক্ষ থেকে ৯৫ জন ভারতীয় মৎস্যজীবী এবং আমাদের পক্ষ থেকে ৯০ জন বাংলাদেশি মৎস্যজীবী ফেরত যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই মৎস্যজীবীরা সাগরে ভুল করে পথ হারিয়েছিল, যেহেতু জলসীমায় সঠিক চিহ্ন থাকে না বা মানুষ পথ হারিয়ে ফেলতে পারে। এটাই এখানে ঘটেছে।’

এই পদক্ষেপ উভয় দেশের জন্য একটি মানবিক উদ্যোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে এবং এটি দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

উ. কোরিয়ার এজেন্ট সন্দেহে ১৮০০—এর বেশি চাকরি আবেদন বাতিল করল আমাজন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
উত্তর কোরিয়ার এজেন্ট সন্দেহে অন্তত ১ হাজার ৮০০টি চাকরি আবেদন বাতিল করেছে আমাজন। ছবি: সংগৃহীত
উত্তর কোরিয়ার এজেন্ট সন্দেহে অন্তত ১ হাজার ৮০০টি চাকরি আবেদন বাতিল করেছে আমাজন। ছবি: সংগৃহীত

টেক জায়ান্ট আমাজন উত্তর কোরিয়ার এজেন্ট সন্দেহে ১ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি চাকরির আবেদন বাতিল করে দিয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন, আমাজনের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

আমাজনের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা স্টিফেন শ্মিট লিঙ্কডিনে শেয়ার করা এক পোস্টে বলেন, উত্তর কোরিয়রা চুরি করা অথবা ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে রিমোট আইটি চাকরির জন্য আবেদন করার চেষ্টা করেছিল। তিনি উল্লেখ করেন, ‘তাদের লক্ষ্য সাধারণত খুব সহজ—চাকরিতে যোগ দেওয়া, বেতন নেওয়া এবং সেই অর্থ দিয়ে তাদের দেশের অস্ত্র কর্মসূচিতে তহবিল জোগানো।’ তিনি আরও বলেন, এই প্রবণতা সম্ভবত পুরো শিল্পজুড়ে বড় আকারে ঘটছে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে।

যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার কর্তৃপক্ষ পিয়ংইয়ংয়ের এজেন্টদের এই ধরনের অনলাইন জালিয়াতি সম্পর্কে আগেই সতর্ক করেছিল। শ্মিট তাঁর পোস্টে জানান, গত এক বছরে আমাজনে উত্তর কোরিয়দের চাকরির আবেদন প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি বলেন, এই এজেন্টরা সাধারণত ‘ল্যাপটপ ফার্ম’ পরিচালনাকারীদের সঙ্গে যোগসাজশে কাজ করে। ল্যাপটপ ফার্ম বলতে এমন সব কম্পিউটারকে বোঝায় যা যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত হলেও দেশের বাইরে থেকে রিমোটলি পরিচালনা করা হয়।

শ্মিট জানান, চাকরির আবেদনগুলো যাচাই করার জন্য আমাজন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং কর্মী দিয়ে সরাসরি যাচাইকরণের একটি সমন্বিত পদ্ধতি ব্যবহার করেছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, এই জালিয়াতিদের কৌশল এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি উন্নত।

দুষ্কৃতকারীরা ভেরিফিকেশন পাওয়ার জন্য ফাঁস হওয়া তথ্য ব্যবহার করে লিঙ্কডিনের নিষ্ক্রিয় অ্যাকাউন্টগুলো দখল করে নিচ্ছে। বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য তারা প্রকৃত সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের লক্ষ্য বানাচ্ছে। শ্মিট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোকেও সন্দেহজনক চাকরির আবেদনের বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে জানানোর অনুরোধ করেন। নিয়োগকর্তাদের প্রতি শ্মিট পরামর্শ দেন—যেন তারা উত্তর কোরিয়ার জালিয়াতিপূর্ণ আবেদনের কিছু লক্ষণের দিকে নজর রাখেন; যেমন—ভুল ফরম্যাটের ফোন নম্বর এবং শিক্ষাগত যোগ্যতার তথ্যে অসংগতি।

গত জুনে মার্কিন সরকার জানিয়েছিল, তারা দেশজুড়ে অবৈধভাবে পরিচালিত ২৯টি ‘ল্যাপটপ ফার্ম’ খুঁজে পেয়েছে, যা উত্তর কোরিয়ার আইটি কর্মীরা ব্যবহার করছিল। মার্কিন বিচার বিভাগ জানায়, তারা উত্তর কোরিয়ার নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার জন্য আমেরিকানদের চুরি করা বা জাল পরিচয় ব্যবহার করত।

এই ঘটনায় উত্তর কোরিয়ার এজেন্টদের চাকরি পেতে সাহায্য করার দায়ে মার্কিন দালালদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া, গত জুলাইয়ে অ্যারিজোনার এক নারীকে আট বছরেরও বেশি কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তিনি ৩০০-এর বেশি মার্কিন কোম্পানিতে উত্তর কোরিয়ার আইটি কর্মীদের রিমোট চাকরি পাইয়ে দিতে ল্যাপটপ ফার্ম পরিচালনা করতেন।

বিচার বিভাগ জানিয়েছে, এই পরিকল্পনার মাধ্যমে ওই নারী এবং পিয়ংইয়ং প্রশাসন ১ কোটি ৭০ লাখ ডলারেরও বেশি অবৈধ অর্থ আয় করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুক্তরাষ্ট্র-চীনও মোদিকে ভয় পায়, বাংলাদেশ নিয়ে চুপ থাকবেন না তিনি: বিজেপি নেতার হুঁশিয়ারি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ১৪
বিজেপি নেতা সুনীল শর্মা বলেছেন—বাংলাদেশ ইস্যুতে মোদি চুপ করে থাকবেন না বলেই মনে করেন তিনি। ছবি: সংগৃহীত
বিজেপি নেতা সুনীল শর্মা বলেছেন—বাংলাদেশ ইস্যুতে মোদি চুপ করে থাকবেন না বলেই মনে করেন তিনি। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের ইস্যুতে চুপ থাকবেন না ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এমনকি তাঁকে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশও ভয় পায়; এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভারতের এক হিন্দু নেতা। জম্মু-কাশ্মীরের কিশতওয়ারে হিন্দু সংগঠনগুলোর ডাকা এক প্রতিবাদ কর্মসূচিতে এই মন্তব্য করেন বিজেপি বিধায়ক ও জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভার বিরোধীদলীয় নেতা সুনীল শর্মা।

সনাতন ধর্ম সভার সভাপতি মহন্ত রাম শরণ দাস আচার্যের নেতৃত্বে আয়োজিত এই প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নেন বিজেপি নেতারা। বাংলাদেশে এক হিন্দু শ্রমিককে হত্যা ও সহিংসতার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। মিছিলে সুনীল শর্মা বলেন, বাংলাদেশে যা ঘটছে, তা ভারতকে উসকানি দেওয়ার এবং দেশটিকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি রাষ্ট্রের একটি ষড়যন্ত্র।

কিশতওয়ার শহরের প্রতিবাদ সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার সময় শর্মা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও চীন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ভয় পায়, যিনি বিশ্বজুড়ে বিশেষ করে বাংলাদেশে হিন্দুদের আশা-ভরসার প্রতীক। ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারত যেহেতু সামরিক ও অর্থনৈতিক পরাশক্তিতে পরিণত হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তাই ভারতকে দুর্বল করার জন্য একদল দেশের ষড়যন্ত্র চলছে।’

পরে বিক্ষোভকারীদের একটি দল ডেপুটি কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়ে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। এ ছাড়া তারা ভারতের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছেও স্মারকলিপি দেবেন, যাতে কেন্দ্র বাংলাদেশে হিন্দু রক্ষা এবং তাদের সম্পত্তি ও উপাসনালয় সুরক্ষায় হস্তক্ষেপ করে। বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। সনাতন ধর্ম সভার ডাকা বন্ধের কারণে বেশ কিছু দোকানপাট ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল।

শর্মা বলেন, বাংলাদেশে হত্যার শিকার ‘দিপুর একমাত্র অপরাধ ছিল, সে একজন হিন্দু। আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোতে হিন্দু সংখ্যালঘুদের লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে এবং আমরা এখানেও এই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছি।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘দুই কোটি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ করেছে। এ ছাড়া বার্মা (মিয়ানমার) ও পাকিস্তান থেকেও অনুপ্রবেশকারীরা এখানে এসেছে এবং তাদের অনেকে পরিচয়পত্র পেয়ে ভোটার হয়ে গেছে।’

তিনি বলেন, হিন্দুরা তাদের ‘সংস্কৃতি ও সনাতন’ টিকিয়ে রাখার জন্য প্রতিদিন লড়াই করছে। শর্মা প্রশ্ন তোলেন, ‘আমরা মোগল ও ব্রিটিশ আক্রমণ থেকে বেঁচে ফিরেছি এবং সাম্প্রতিক এই চ্যালেঞ্জ থেকেও টিকে থাকব। কেউ আমাদের মুছে ফেলতে পারবে না...বাংলাদেশে যা ঘটছে, তা নিয়ে জাতিসংঘ বা সংখ্যালঘু অধিকার সংস্থার মতো বিশ্ব সংস্থাগুলো কেন চুপ?’

বিজেপি এই নেতার দাবি, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে যে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল, তা পিছিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই সেখানে বিক্ষোভের নেপথ্যে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত যে মোদিজি চুপ করে থাকবেন না, তা সে পাকিস্তান হোক বা বাংলাদেশ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গ্রিনল্যান্ড ‘আমাদের পেতেই হবে’, ‘অভিযান’ চালাতে দূত পাঠাচ্ছেন ট্রাম্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

গ্রিনল্যান্ড নিয়ে ডেনমার্কের সাথে নতুন করে বিবাদে জড়িয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। বিশাল এই সুমেরু দ্বীপটি দখলের ইচ্ছা তিনি আগেও প্রকাশ করেছিলেন, আর এবার সেখানে একজন বিশেষ দূত নিয়োগ দিয়ে সেই বিতর্ককে আবার উসকে দিলেন।

লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যের রিপাবলিকান গভর্নর জেফ ল্যান্ড্রিকে এই নতুন পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বিবিসির এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ‘জাতীয় সুরক্ষার’ জন্য গ্রিনল্যান্ড প্রয়োজন এবং ‘এটি আমাদের পেতেই হবে।’ ডেনমার্কের অধীনে থাকা এই আধা-স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলটিতে ল্যান্ড্রি ‘অভিযানের নেতৃত্ব দেবেন’ বলে ট্রাম্প উল্লেখ করেন।

ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ কোপেনহেগেন জানিয়েছে, তারা ‘ব্যাখ্যার’ জন্য মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব করবে। গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দ্বীপটির ভবিষ্যৎ ‘নিজেদেরই নির্ধারণ করতে হবে’ এবং এর ‘আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে অবশ্যই সম্মান জানাতে হবে।’

গভর্নর ল্যান্ড্রি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে জানান, গ্রিনল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের অংশ করার এই ‘স্বেচ্ছাসেবী পদে’ সেবা করা তাঁর জন্য সম্মানের। গত জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ফেরার পর থেকেই ট্রাম্প গ্রিনল্যান্ডের ব্যাপারে তাঁর দীর্ঘদিনের আগ্রহ পুনরুজ্জীবিত করেছেন। দ্বীপটির কৌশলগত অবস্থান এবং খনিজ সম্পদের প্রাচুর্যের কথা তিনি বারবার বলে আসছেন।

দ্বীপটির নিয়ন্ত্রণ নিতে সামরিক শক্তি ব্যবহারের সম্ভাবনাও তিনি উড়িয়ে দেননি। ট্রাম্পের এমন অবস্থানে স্তম্ভিত ডেনমার্ক। ন্যাটো মিত্র হিসেবে ওয়াশিংটনের সাথে ডেনমার্কের দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের এটি সমাধান করতে হবে। খনিজ সম্পদের জন্য নয়, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে গ্রিনল্যান্ড আমাদের প্রয়োজন।’ সাগরের নিকটবর্তী অঞ্চলে চীন ও রাশিয়ার জাহাজগুলোকে সম্ভাব্য হুমকি হিসেবেও তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।

প্রায় ৫৭ হাজার মানুষের বসতি গ্রিনল্যান্ডে ১৯৭৯ সাল থেকে ব্যাপক স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা চালু রয়েছে। যদিও প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রনীতি এখনো ডেনমার্কের হাতে। অধিকাংশ গ্রিনল্যান্ডবাসী ডেনমার্ক থেকে চূড়ান্ত স্বাধীনতার পক্ষে থাকলেও, জনমত জরিপ বলছে যে তারা যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হওয়ার ঘোর বিরোধী।

ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লার্ক লোকে রাসমুসেন ল্যান্ড্রির নিয়োগকে ‘গভীর হতাশাজনক’ বলে বর্ণনা করেছেন এবং মার্কিন সার্বভৌমত্বকে সম্মান করার জন্য ওয়াশিংটনকে সতর্ক করেছেন। ড্যানিশ সম্প্রচার মাধ্যম টিভি২-কে তিনি বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত ডেনমার্ক, ফ্যারো দ্বীপপুঞ্জ এবং গ্রিনল্যান্ড নিয়ে আমাদের এই রাজত্ব টিকে আছে, ততক্ষণ আমরা আঞ্চলিক অখণ্ডতা ক্ষুণ্ণকারী কোনো পদক্ষেপ মেনে নিতে পারি না।’

গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেন্স-ফ্রেডেরিক নিলসেন জানিয়েছেন, তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের সাথে সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক, তবে তা হতে হবে পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে। তিনি বলেন, ‘বিশেষ দূত নিয়োগের ফলে আমাদের জন্য কিছুই বদলে যাচ্ছে না। আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ নিজেরাই নির্ধারণ করি। গ্রিনল্যান্ড কেবল গ্রিনল্যান্ডবাসীর জন্য, আর এর আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে অবশ্যই সম্মান করতে হবে।’

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেয়ন এক্সে দেওয়া পোস্টে বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ‘ডেনমার্ক এবং গ্রিনল্যান্ডের জনগণের সাথে পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করছে।’ এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছিলেন, ল্যান্ড্রি বোঝেন যে ‘জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গ্রিনল্যান্ড কতটা অপরিহার্য’ এবং তিনি মার্কিন স্বার্থকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।

এই নিয়োগের তাৎপর্য দুটি জায়গায়—প্রথমত, যুক্তরাষ্ট্র ধরে নিয়েছে যে গ্রিনল্যান্ড ডেনমার্ক থেকে আলাদা; এবং দ্বিতীয়ত, নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত দূতের দাবি যে তিনি দ্বীপটিকে যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হতে সাহায্য করবেন। বিশেষ দূত সাধারণত অনানুষ্ঠানিক নিয়োগ এবং প্রাতিষ্ঠানিক কূটনীতিকদের মতো তাঁদের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশের অনুমোদনের প্রয়োজন হয় না। এই নিয়োগ এটিই প্রমাণ করে যে, গ্রিনল্যান্ড দখলের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ট্রাম্পের মনে এখনো অটুট রয়েছে।

ভেনেজুয়েলার প্রতি তাঁর সামরিক ও তাত্ত্বিক আগ্রাসনের মতো এটিও ইঙ্গিত দেয় যে, ট্রাম্প তাঁর সাম্প্রতিক জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলে উল্লিখিত ‘পশ্চিম গোলার্ধের’ ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর। তিনি চান পুরো আমেরিকা জুড়ে তাঁর এই প্রভাব বলয় বিস্তৃত হোক। ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদে গ্রিনল্যান্ড কেনার চেষ্টা করেছিলেন। ডেনমার্ক ও গ্রিনল্যান্ড উভয় সরকারই ২০১৯ সালের সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলেছিল, ‘গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয়।’

ল্যান্ড্রি আগেও গ্রিনল্যান্ড নিয়ে তাঁর মতামত দিয়েছিলেন। গত জানুয়ারিতে নিজের ব্যক্তিগত এক্স অ্যাকাউন্টে তিনি লিখেছিলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড জে ট্রাম্প একদম ঠিক বলেছেন! আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যেন গ্রিনল্যান্ড যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যুক্ত হয়। তাদের জন্য দারুণ হবে, আমাদের জন্যও দারুণ হবে! চলুন এটা করে ফেলি!’

সামরিক বাহিনীতে কাজ করা এবং সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ল্যান্ড্রি ২০২৩ সালে গভর্নর নির্বাচিত হওয়ার আগে মার্কিন কংগ্রেস সদস্য এবং লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর এই নতুন দায়িত্ব গভর্নর হিসেবে তাঁর কর্তব্যে কোনো ব্যাঘাত ঘটাবে না।

মেরু অঞ্চলে যখন কৌশলগত প্রতিযোগিতা বাড়ছে, ঠিক তখনই এই নিয়োগ ঘিরে বিতর্ক তৈরি হলো। বরফ গলার ফলে সেখানে নতুন নৌপথ উন্মোচিত হচ্ছে এবং মূল্যবান খনিজ সম্পদে প্রবেশের সুযোগ বাড়ছে। উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের মাঝে সুমেরু অঞ্চলে গ্রিনল্যান্ডের অবস্থান, যা যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর নিরাপত্তা পরিকল্পনার কেন্দ্রে রয়েছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসিরা ডেনমার্ক দখল করলে যুক্তরাষ্ট্র সেখানে হানা দেয় এবং সামরিক ও রেডিও স্টেশন স্থাপনের মাধ্যমে ঘাঁটি গড়ে তোলে। সেই সময় থেকেই গ্রিনল্যান্ডে মার্কিন ঘাঁটি টিকে আছে। গত মার্চে ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স গ্রিনল্যান্ডের সেই ঘাঁটি পরিদর্শন করেন এবং সেখানকার মানুষকে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ‘একটি চুক্তিতে আসার’ আহ্বান জানান। ১৯৫৩ সালে বন্ধ করে দেওয়ার পর ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ২০২০ সালে গ্রিনল্যান্ডের রাজধানী নুক-এ মার্কিন কনস্যুলেট পুনরায় চালু করা হয়। বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ এবং কানাডারও গ্রিনল্যান্ডে অনারারি কনস্যুলেট রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নতুন করে শতাধিক আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করেছে চীন: পেন্টাগন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৩৫
চীনের তৈরি ডিএফ–৩১ সিরিজের একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। ছবি: সংগৃহীত
চীনের তৈরি ডিএফ–৩১ সিরিজের একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। ছবি: সংগৃহীত

চীন সাম্প্রতিক সময়ে তিনটি সাইলোতে (সাধারণত সাইলো বলতে অস্ত্র, বিশেষ করে ক্ষেপণাস্ত্র মজুত করার জায়গাকে বোঝানো হয়)। ১০০টির বেশি আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) মোতায়েন করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগনের এক খসড়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেইজিং ক্রমবর্ধমান সামরিকভাবে উচ্চাকাঙ্ক্ষী হয়ে উঠছে এবং অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আলোচনার বিষয়ে দেশটির কোনো আগ্রহ নেই।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, শিকাগোভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা বুলেটিন অব দ্য অ্যাটমিক সায়েন্টিস্টসের মতে, অন্য যেকোনো পারমাণবিক শক্তিধর দেশের তুলনায় চীন তাদের অস্ত্রভান্ডার দ্রুত সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন করছে। তবে বেইজিং সামরিক শক্তি বৃদ্ধির এই প্রতিবেদনগুলোকে ‘চীনকে কলঙ্কিত’ করার ও দেশটির ‘মানহানি’ করার লক্ষ্যে ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্ত করার প্রচেষ্টা’ হিসেবে অভিহিত করেছে।

গত মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করতে পারেন। তবে রয়টার্সের দেখা পেন্টাগনের ওই খসড়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেইজিং এতে আগ্রহী বলে মনে হচ্ছে না। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘আমরা বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে এই ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ বা আরও ব্যাপক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আলোচনার বিষয়ে কোনো আগ্রহ দেখতে পাচ্ছি না।’

বিশেষ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গোলিয়া সীমান্তের কাছে চীনের নতুন সাইলো ক্ষেত্রগুলোতে তারা সম্ভবত ১০০টির বেশি সলিড ফুয়েলচালিত ডিএফ-৩১ আইসিবিএম মোতায়েন করেছে। পেন্টাগন এর আগে এই সাইলো ক্ষেত্রগুলোর অস্তিত্বের কথা জানালেও সেখানে কতগুলো ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, তা এই প্রথম জানাল। পেন্টাগন অবশ্য এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

ওয়াশিংটন ডিসির চীনা দূতাবাস জানিয়েছে, চীন একটি ‘প্রতিরক্ষামূলক পারমাণবিক কৌশল বজায় রেখেছে, পারমাণবিক শক্তিকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম স্তরে রেখেছে এবং পারমাণবিক পরীক্ষা বন্ধ রাখার অঙ্গীকার মেনে চলছে।’

পেন্টাগনের খসড়া প্রতিবেদনে নতুন বসানো এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তু সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি। মার্কিন কর্মকর্তারা উল্লেখ করেছেন, আইনপ্রণেতাদের কাছে পাঠানোর আগে এই প্রতিবেদনে পরিবর্তন আসতে পারে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে চীনের পারমাণবিক ওয়ারহেডের মজুত ছিল ৬০০-এর কোঠায়, যা পূর্ববর্তী বছরগুলোর তুলনায় ‘উৎপাদনের মন্থর গতি’ নির্দেশ করে। তবে চীনের পারমাণবিক সম্প্রসারণ অব্যাহত রয়েছে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে দেশটির ১ হাজারের বেশি ওয়ারহেড থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। চীন অবশ্য দাবি করেছে, তারা ‘আত্মরক্ষার পারমাণবিক কৌশল এবং প্রথমে ব্যবহার না করার নীতি’ মেনে চলে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, তিনি চান যুক্তরাষ্ট্র আবারও পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা শুরু করুক, তবে তা কী আকারে হবে তা স্পষ্ট নয়। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদে ‘নিউ স্টার্ট’ চুক্তির পরিবর্তে চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে একটি ত্রিপক্ষীয় কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তির চেষ্টা করেছিলেন।

পেন্টাগনের এই বিস্তৃত প্রতিবেদনে চীনের সামরিক প্রস্তুতির বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে বলা হয়েছে, ‘চীন আশা করছে ২০২৭ সালের শেষ নাগাদ তারা তাইওয়ানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হতে পারবে।’ তাইওয়ানকে নিজ ভূখণ্ড বলে দাবি করা চীন কখনোই এই দ্বীপটিকে ‘পুনরেকত্রীকরণ’ করতে শক্তি প্রয়োগের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়নি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেইজিং তাইওয়ান দখলের জন্য ‘পাশবিক শক্তি’ ব্যবহারের সামরিক বিকল্পগুলো নিয়ে কাজ করছে। এর মধ্যে একটি বিকল্প হতে পারে চীন থেকে ১ থেকে ২ হাজার নটিক্যাল মাইল দূরে আঘাত হানা। এতে আরও বলা হয়, ‘পর্যাপ্ত পরিমাণে এই ধরনের হামলা এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতিকে মারাত্মক চ্যালেঞ্জ এবং বিঘ্নিত করতে পারে।’

২০১০ সালের ‘নিউ স্টার্ট’ চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার দুই মাসেরও কম সময় আগে এই প্রতিবেদনটি এল। এটিই যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে সর্বশেষ পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি, যা উভয় পক্ষকে ১ হাজার ৫৫০টির বেশি কৌশলগত পারমাণবিক ওয়ারহেড এবং ৭০০টি ডেলিভারি সিস্টেম মোতায়েনে সীমাবদ্ধ রাখে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং বাইডেন ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই চুক্তির মেয়াদ পাঁচ বছর বাড়িয়েছিলেন, তবে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী এর আর কোনো আনুষ্ঠানিক মেয়াদ বাড়ানোর সুযোগ নেই।

অনেক বিশেষজ্ঞ আশঙ্কা করছেন, এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে তা ত্রিপক্ষীয় পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতাকে উসকে দিতে পারে। পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে কাজ করা সংস্থা আর্মস কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী পরিচালক ড্যারিল কিম্বল বলেন, ‘অধিক পারমাণবিক অস্ত্র এবং কূটনীতির অনুপস্থিতি চীন, রাশিয়া বা যুক্তরাষ্ট্র—কাউকেই নিরাপদ করবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত