Ajker Patrika

আল জাজিরার প্রতিবেদন /জোরপূর্বক ৮০ লাখ পুরুষকে বন্ধ্যা করেছিল ভারত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
নিজ পৌত্র এবং প্রৌপৌত্রদের সঙ্গে মোহাম্মদ দীনু। ছবি: আল-জাজিরার
নিজ পৌত্র এবং প্রৌপৌত্রদের সঙ্গে মোহাম্মদ দীনু। ছবি: আল-জাজিরার

সময়টা ১৯৭৬ সালের নভেম্বরের এক শীতের রাত। সবাই দৌড়ে পালাচ্ছিল। কেউ জঙ্গলের দিকে, কেউ আশপাশের গ্রামে, কেউ বা সরকারি কর্মকর্তাদের ভয়ে লুকিয়ে পড়ছিল কুয়োর ভেতর। তবে মোহাম্মদ দীনু ছিলেন স্থির। উত্তর ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের মেওয়াট অঞ্চলের উত্তাওয়ার গ্রামের বাসিন্দা তিনি। রাজধানী দিল্লি থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরের এই গ্রাম। ১৯৭৬ সালের নভেম্বরের সেই ঠান্ডা রাতে পুরো গ্রাম ঘিরে ফেলেছিল পুলিশ। তাদের ওপর নির্দেশ ছিল, গ্রামের সব প্রজননক্ষম বয়স্ক পুরুষকে মাঠে জমায়েত করতে হবে।

সে সময় ভারত দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকার অধ্যায়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ঘোষিত জাতীয় জরুরি অবস্থার ১৭ মাস পার হচ্ছিল। ওই সময়ে দেশের সব নাগরিক স্বাধীনতা কার্যত স্থগিত ছিল। হাজার হাজার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে বিচার ছাড়াই জেলে পাঠানো হয়েছিল। গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করা হয়েছিল। বিশ্বব্যাংক ও যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক সহযোগিতায় শুরু হয়েছিল ভারতের ইতিহাসের সবচেয়ে বিতর্কিত ‘জোরপূর্বক বন্ধ্যাকরণ কর্মসূচি।’

মোহাম্মদ দীনু এবং তাঁর আরও ১৪ জন বন্ধু এই কর্মসূচির লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিলেন। পুলিশ তাঁদের জোর করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় অব্যবস্থাপনা আর অযত্নে ভরা বন্ধ্যাকরণ শিবিরে। দীনুর চোখে এটি ছিল এক ধরনের ‘ত্যাগ’, যা নাকি গ্রামের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করেছে।

বর্তমানে ফিরে এসে ভাঙাচোরা একটি খাটে বসে ৯০ বছর বয়সী দীনু সেই দিনের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘সবাই যখন নিজেদের বাঁচাতে দৌড়াচ্ছিল, গ্রামের কিছু বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষ বুঝেছিলেন, কেউ ধরা না পড়লে আরও বড় বিপদ আসবে। তাই গ্রামের কিছু পুরুষকে একত্র করে হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের ত্যাগের মাধ্যমে এই গ্রামকে বাঁচিয়েছি। চারপাশে দেখো, আজ গ্রামের প্রতিটি কোনায় আল্লাহর দেওয়া শিশুরা দৌড়ে বেড়াচ্ছে।’

বিশ্বের ‘বৃহত্তম গণতন্ত্র’ বলে দাবি করা ভারত আজ থেকে ৫০ বছর আগে, ১৯৭৫ সালের ২৫ জুন যে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছিল, সেই দিনের বার্ষিকী পালন করছে। আর উত্তাওয়ারে জোরপূর্বক বন্ধ্যাকরণের শিকার পুরুষদের মধ্যে এখন বেঁচে আছেন একমাত্র মোহাম্মদ দীনু।

১৯৭৫ সালের মাঝামাঝি থেকে ১৯৭৭ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত চলা জরুরি অবস্থার সময়, ভারতে ৮০ লাখের বেশি পুরুষকে জোরপূর্বক ভ্যাসেক্টমি বা বন্ধ্যাকরণের মধ্যে দিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল। শুধু ১৯৭৬ সালেই এই সংখ্যা ছিল ৬০ লাখ। অব্যবস্থাপনার কারণে অন্তত ২ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন।

পাঁচ দশক পেরিয়ে গেলেও সেই ক্ষত এখনো রয়ে গেছে উত্তাওয়ারে। ভারত স্বাধীনতার মাত্র পাঁচ বছর পর, ১৯৫২ সালে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে জাতীয় পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি গ্রহণ করে। তখন সরকার শুধু নিরুৎসাহিত করতে চেয়েছিল দুই সন্তানের বেশি না নিতে।

কিন্তু ১৯৬০-এর দশকে, যখন ভারতের নারীদের গড় সন্তানসংখ্যা ছিল নারীপ্রতি প্রায় ৬ জন, তখন ইন্দিরা গান্ধীর সরকার আরও কঠোর অবস্থান নিতে শুরু করে। জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে দেশের অর্থনীতির জন্য বোঝা মনে করা হতো। কারণ, স্বাধীনতার পর থেকে ১৯৯০-এর দশক পর্যন্ত ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গড় হার ছিল মাত্র ৪ শতাংশ।

পাশ্চাত্যও এ নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল। বিশ্বব্যাংক ভারতের জন্য ৬৬ মিলিয়ন ডলারের ঋণ অনুমোদন করে বন্ধ্যাকরণ কর্মসূচির জন্য। যুক্তরাষ্ট্রও দুর্ভিক্ষে কাতর ভারতের জন্য খাদ্য সাহায্য নির্ভর করে রাখে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের সাফল্যের ওপর।

কিন্তু জরুরি অবস্থার সময়, যখন সব গণতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিবন্ধকতা সরিয়ে ফেলা হয়েছিল, তখন ইন্দিরা গান্ধীর সরকার পুরোপুরি লাগামছাড়া হয়ে পড়ে। সরকার ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ওপর ছিল বন্ধ্যাকরণের নির্দিষ্ট কোটা পূরণের চাপ। কোটা পূরণ না করলে বেতন বন্ধ করে দেওয়া হতো, চাকরি হারানোর হুমকি দেওয়া হতো। এমনকি যারা রাজি হতো না, সেই সব গ্রামের পানি-সেচও বন্ধ করে দেওয়া হতো।

এই বন্ধ্যাকরণ কর্মসূচির বিরোধিতা যারা করেছিলেন, তাদের ওপরও নেমে এসেছিল নিরাপত্তা বাহিনীর হামলা। সেই হামলার শিকার হয়েছিল উত্তাওয়ার গ্রামও। ওই গ্রামে মূলত মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ থাকতেন। সে সময় ভারতে মুসলিম জনসংখ্যার বৃদ্ধি হার অন্যদের তুলনায় বেশি ছিল। যে কারণে তাদের ওপর বিশেষ নজর পড়েছিল এই গণ-বন্ধ্যাকরণ কর্মসূচির আওতায়।

দীনুর বাড়ির পাশের গলিতে থাকতেন মোহাম্মদ নূর। তখন তিনি কেবল ১৩ বছরের কিশোর, বাবার কোলে বাড়ির সামনে খাটিয়ায় ঘুমাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই ঘোড়ায় চড়ে কিছু পুলিশ সদস্যসহ নিরাপত্তা বাহিনী সেখানে হানা দেয়। তাঁর বাবা দৌড়ে পাশের জঙ্গলের দিকে পালিয়ে যান, নূর ভয়ে ঘরের ভেতর ঢুকে পড়ে।

সে দিনের স্মৃতিচারণ করে নূর বলেন, ‘তারা দরজা-জানালা সবকিছু ভেঙে চুরমার করে দেয়, যা সামনে পেয়েছে সবকিছু ধ্বংস করেছে। আমাদের দুর্ভোগ বাড়াতে, তারা আটা-চালে বালি মিশিয়ে দেয়। পরের চার দিন গ্রামের কোনো ঘরেই রান্না হয়নি।’ পুলিশ তাঁকে তুলে নিয়ে স্থানীয় থানায় মারধর করে। তবে তখন তাঁর বয়স ১৫ বছরের কম হওয়ায়, বন্ধ্যাকরণের জন্য তাকে অযোগ্য বিবেচনা করে ছেড়ে দেয়।

গ্রামবাসীরা ওই রাতকে এখনো ‘ভয়ের রাত’ নামে স্মরণ করে। ওই রাত থেকেই জন্ম নেয় উত্তাওয়ারের স্থানীয় লোককথা, যার কেন্দ্রীয় চরিত্র তৎকালীন গ্রামপ্রধান আব্দুর রহমান। এই বিষয়ে নূরের বন্ধু ৬৩ বছর বয়সী তাজাম্মুল বলেন, ‘গ্রামের বাইরের লোকেরা হয়তো তাঁর নাম ভুলে গেছে, কিন্তু আমরা কেউ ভুলিনি।’

তাজাম্মুল জানান, উত্তাওয়ারে অভিযান চালানোর আগে বেশ কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা এসে আব্দুর রহমানকে অনুরোধ করেন কিছু পুরুষকে তাদের হাতে তুলে দিতে। তিনি বলেন, ‘কিন্তু তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে তাদের প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বলেছিলেন, আমি কোনো পরিবারের সদস্যকে এই অবস্থায় দিতে পারব না।’ স্থানীয় জনশ্রুতি অনুযায়ী, আব্দুর রহমান তখন সরকারি কর্মকর্তাদের বলেছিলেন, ‘আমি আমার এলাকা থেকে একটা কুকুরও দেব না, আর তোমরা মানুষের দাবি করছ! সেটা কখনোই হবে না!’

তবে আব্দুর রহমানের এই দৃঢ় মনোভাবও শেষ পর্যন্ত তাঁর গ্রামকে বাঁচাতে পারেনি। পুলিশের অভিযান শেষে গ্রাম শোকের আবহে ডুবে গিয়েছিল। এই বিষয়ে নূর বলেন, ‘যারা পালিয়ে গিয়েছিল, বা যাদের পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়েছিল, তারা সপ্তাহের পর সপ্তাহ ফেরেনি। উত্তাওয়ার যেন কবরস্থানে পরিণত হয়েছিল, নিস্তব্ধতা ছাড়া আর কিছুই ছিল না।’

এরপরের বছরগুলোতে এই ঘটনার পরিণতি আরও বেশি ভয়াবহ হয়ে ওঠে। আশপাশের গ্রামের লোকেরা উত্তাওয়ারের ছেলেদের সঙ্গে মেয়ে বিয়ে দিতে রাজি হতেন না। এমনকি যারা বন্ধ্যাকৃতও হয়নি তাদের সঙ্গেও নয়। কেউ কেউ বিদ্যমান বাগদানও ভেঙে দেয়। কাসিম নামে স্থানীয় এক সমাজকর্মী বলেন, ‘অনেকেই ওই মানসিক আঘাত থেকে আর কোনো দিনই বেরিয়ে আসতে পারেননি। দুশ্চিন্তা, ভীতি আর সামাজিক কলঙ্কে তারা ধীরে ধীরে ভেঙে পড়েন, অনেকের জীবন দ্রুতই শেষ হয়ে যায়।’

আজকের দিনে ভারতে কোনো জোরপূর্বক বন্ধ্যাকরণ কর্মসূচি নেই। দেশের গড় প্রজনন হার এখন দুইয়ের কিছু বেশি। কিন্তু কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, জরুরি অবস্থার সময় যে ভীতি আর দমন-পীড়নের পরিবেশ ছিল, সেটাই নতুন রূপে ফিরে এসেছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমলে।

ভারতের বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী ৭৫ বছর বয়সী শিব বিশ্বনাথন মনে করেন, ‘জরুরি অবস্থার মাধ্যমে ভারতে কর্তৃত্ববাদ আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।’ ১৯৭৫ সালের ১২ জুন, এলাহাবাদ হাইকোর্ট রায় দেয় যে, ইন্দিরা গান্ধী ১৯৭১ সালের নির্বাচন জিততে রাষ্ট্রযন্ত্রের অপব্যবহার করেছেন। আদালত তাঁকে ছয় বছরের জন্য নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিষিদ্ধ করে। মাত্র ১৩ দিন পর ইন্দিরা গান্ধী দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন।

বিশ্বনাথন আল-জাজিরাকে বলেন, ‘কর্তৃত্ববাদকে স্বাভাবিক করে তোলার যে প্রক্রিয়া, সেটাই জরুরি অবস্থার জন্ম দিয়েছিল, কোনো অনুতাপ ছিল না। আসলে, জরুরি অবস্থাই আজকের ভারতের আরও অনেক “জরুরি অবস্থার” বীজ রোপণ করেছে। এটিই আধুনিক ভারতের কর্তৃত্ববাদী ভিত।’

ইন্দিরা গান্ধীর ভক্তরা তাঁকে কখনো হিন্দু দেবী দুর্গার সঙ্গে তুলনা করতেন। শব্দের খেলায় তাঁকে ভারতের সঙ্গেও এক করে দেখা হতো—ঠিক যেমন এখন নরেন্দ্র মোদীর সমর্থকেরা তাকে হিন্দু ভগবান বিষ্ণুর সঙ্গে তুলনা করেন। ইন্দিরা গান্ধীর আমলে ব্যক্তিপূজার সংস্কৃতি যখন বাড়তে থাকে, তখন দেশবাসীর বাস্তবতা বোঝার ক্ষমতা হারিয়ে যায় বলে মনে করেন সমাজবিদ শিব বিশ্বনাথন। তিনি বলেন, ‘ইমার্জেন্সির মাধ্যমে কর্তৃত্ববাদ শাসনের হাতিয়ার হয়ে উঠেছিল।’

বিশ্বনাথনের মতে, ১৯৭৭ সালে দেশে জরুরি অবস্থার অবসান ঘটলেও, তার পর থেকেই ভারত ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ কর্তৃত্ববাদের দিকে এগিয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘ইন্দিরা গান্ধী থেকে শুরু করে নরেন্দ্র মোদী পর্যন্ত—প্রত্যেকেই কিছু না কিছু করে দেশটাকে একনায়কতন্ত্রের দিকে ঠেলে দিয়েছেন, যদিও বাইরের মুখে সবাই গণতন্ত্রের কথা বলেছেন।’

২০১৪ সালে মোদি ক্ষমতায় আসার পর থেকে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সূচকে ভারতের গণতন্ত্রের অবস্থা ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার সূচক উল্লেখযোগ্যভাবে খারাপ হয়েছে। বিরোধী নেতাদের কারাবন্দী করা, সাংবাদিকদের হয়রানি এবং বাক্‌স্বাধীনতার ওপর নানা বিধিনিষেধ এর জন্য দায়ী।

ভারতে মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করা সংগঠন ‘ফ্রি স্পিচ কালেকটিভের’ সহপ্রতিষ্ঠাতা গীতা শেঠু বলেন, জরুরি অবস্থার সময়ের সঙ্গে আজকের ভারতের মিল হলো মূলধারার সংবাদমাধ্যমের আত্মসমর্পণের জায়গাটিতে। তিনি বলেন, ‘তখন আইন করে নাগরিকদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল, আর এখন আইনের অপব্যবহার করে সেটা করা হচ্ছে। তখনকার সেই ভয়, আত্মনিয়ন্ত্রণ—আজও বিদ্যমান, যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়নি।’

রাজনৈতিক বিশ্লেষক আসিম আলীর মতে, জরুরি অবস্থার সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো—যখন কোনো নেতৃত্ব দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ও ক্ষমতাশালী হয়, তখন কীভাবে দেশের সাংবিধানিক কাঠামো ভেঙে পড়তে পারে। তবে জরুরি অবস্থার আরেকটি বড় শিক্ষা হলো—এর বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের সফল আন্দোলন। ১৯৭৭ সালের নির্বাচনে ইন্দিরা গান্ধী এবং তাঁর কংগ্রেস দলকে হারিয়ে দিয়েছিল বিরোধীরা। তাদের নির্বাচনী প্রচারে সরকারের অমানবিক কর্মকাণ্ড, বিশেষ করে গণ-বন্ধ্যাকরণ কর্মসূচি ছিল বড় ইস্যু।

আসিম আলী বলেন, ‘সত্তরের দশকের মতোই, এখন দেখার বিষয় হলো, মোদির পরে ভারতীয় গণতন্ত্র আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারে কি না।’

১৯৭৬ সালের নভেম্বরে দীনু যখন পুলিশের ভ্যানে বসেছিলেন, তখন তাঁর মনে শুধু তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সালিমার কথাই ঘুরছিল। সালিমা তখন বাড়িতে ছিলেন। দীনু বলেন, ‘অনেক পুরুষ, যাদের বিয়ে হয়নি বা সন্তান ছিল না, তারা পুলিশের কাছে অনুরোধ করছিলেন ছেড়ে দেওয়ার জন্য।’ কিন্তু দীনুর ১৪ জন বন্ধুর কাউকেই ছাড়া হয়নি। দীনু বলেন, ‘নাসবন্দি (বন্ধ্যাকরণ) এমন এক অভিশাপ, যা সেই সময় থেকে উত্তাওয়ার গ্রামের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে।’

ধরে নিয়ে যাওয়ার ৮ দিন পর পুলিশ হেফাজতে দীনুকে পাশের শহর পালওয়ালের একটি বন্ধ্যাকরণ শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁর অপারেশন করা হয়। এক মাস পর দীনু যখন অপারেশনের পর বাড়ি ফেরেন, তখন সালিমা তাদের একমাত্র সন্তানের জন্ম দেন। আজ দীনুর তিন নাতি ও বেশ কয়েকজন পৌত্র-প্রপৌত্র রয়েছে।

দীনু হেসে বলেন, ‘এই গ্রামকে আমরাই বাঁচিয়েছি। না হলে ইন্দিরা তো পুরো গ্রাম জ্বালিয়ে দিতেন।’ ২০২৪ সালে সালিমা দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর মারা যান। দীনু এখনো বেঁচে আছেন এবং নিজের দীর্ঘজীবনের জন্য বেশ গর্বিত। তিনি বলেন, ‘আমি আমার ঠাকুরদার সঙ্গে খেলেছি, এখন আমার প্রপৌত্রদের সঙ্গে খেলছি।’ প্লাস্টিকের কাপ থেকে ঠান্ডা সোডা পান করতে করতে দীনু বলেন, ‘সাত পুরুষ! এমন সৌভাগ্য কয় জনেরই বা হয়?’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পুতিনের বাসভবনে ড্রোন হামলার অভিযোগ—‘মিথ্যা’ বলছে ইউক্রেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইউক্রেনের ভলোদিমির জেলেনস্কি ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: এএফপি
ইউক্রেনের ভলোদিমির জেলেনস্কি ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: এএফপি

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন—এমন অভিযোগ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে পুরোপুরি ‘মিথ্যা ও সাজানো’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই হামলার কারণে চলমান শান্তি আলোচনায় রাশিয়ার অবস্থানের ‘পরিবর্তন বা পুনর্বিবেচনা’ করা হতে পারে। তবে মস্কো এখনই আলোচনা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছে না।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন সের্গেই লাভরভের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, গতকাল রোববার রাত থেকে আজ সোমবার ভোর পর্যন্ত পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ৯১টি দূরপাল্লার ড্রোন হামলা চালায় ইউক্রেন। রুশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সবকটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। তবে এতে কোনো হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি।

লাভরভ হুমকি দিয়ে বলেন, ইউক্রেনের এমন হঠকারী কর্মকাণ্ডের জবাব দেওয়া হবে। রুশ সামরিক বাহিনী ইতিমধ্যে পাল্টা হামলার জন্য লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ করে ফেলেছে। তবে হামলার সময় প্রেসিডেন্ট পুতিন নোভগোরোদের ওই বাসভবনে ছিলেন কি না, তা স্পষ্ট করা হয়নি।

ফ্লোরিডায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক শেষ করে ইউরোপে ফেরার পথে জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে নাকচ করে দেন। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া আবারও ভয়ংকর সব মিথ্যা বিবৃতি দিচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আমাদের কূটনৈতিক অগ্রগতির সাফল্য নষ্ট করতেই এমন নাটক সাজানো হচ্ছে। তারা মূলত কিয়েভের সরকারি ভবনগুলোতে বড় ধরনের হামলার ক্ষেত্র তৈরি করার জন্য এই অজুহাত দিচ্ছে।’

জেলেনস্কি জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার প্রায় ৯০ শতাংশ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, যা রাশিয়াকে বিচলিত করে তুলেছে।

এদিকে ক্রেমলিন বলছে, আজ প্রেসিডেন্ট পুতিন টেলিফোনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এই ড্রোন হামলার বিষয়টি জানিয়েছেন। পুতিন ট্রাম্পকে বলেছেন, এই হামলার পর রাশিয়া তাদের শান্তি আলোচনার শর্তগুলো পুনরায় খতিয়ে দেখবে।

রুশ গণমাধ্যমগুলো ক্রেমলিনের সহকারী ইউরি উশাকভের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, এই খবর শুনে ট্রাম্প ‘বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ’ হয়েছেন। তবে হোয়াইট হাউস থেকে এই ফোনালাপকে কেবল ‘ইতিবাচক’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে, বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তাইওয়ানকে ঘিরে ধরেছে চীনের যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান ও ড্রোন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মহড়ায় সরাসরি গুলির অনুশীলনও করা হচ্ছে। ছবি: চীনের পূর্বাঞ্চলীয় থিয়েটার কমান্ড
মহড়ায় সরাসরি গুলির অনুশীলনও করা হচ্ছে। ছবি: চীনের পূর্বাঞ্চলীয় থিয়েটার কমান্ড

তাইওয়ানকে ঘিরে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। সোমবার শুরু হওয়া এই মহড়ায় যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও সরাসরি গোলাবর্ষণও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ‘জাস্টিস মিশন ২০২৫’ নামের এই অভিযানে তাইওয়ানকে চারদিক থেকে ঘিরে সাতটি সামুদ্রিক অঞ্চলে সমন্বিত স্থল, নৌ ও আকাশ মহড়া চালানো হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি এখন পর্যন্ত তাইওয়ানকে লক্ষ্য করে চীনের সর্ববৃহৎ ও সবচেয়ে আক্রমণাত্মক সামরিক প্রদর্শন।

চীনের পূর্বাঞ্চলীয় থিয়েটার কমান্ড জানিয়েছে—মহড়ায় স্থল ও সমুদ্রের লক্ষ্যবস্তুর ওপর সিমুলেটেড হামলা, পাশাপাশি তাইওয়ানের প্রধান বন্দরগুলো অবরোধ করার অনুশীলন করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্ন করতে বা চাপের মুখে ফেলতে এই ধরনের অবরোধ ব্যবহৃত হতে পারে বলে মনে করছেন সামরিক বিশ্লেষকেরা। সরাসরি গোলাবর্ষণের মহড়া মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) পর্যন্ত চলবে এবং আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় এবার তাইওয়ানের আরও কাছাকাছি ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল ঘোষণা করা হয়েছে।

এই মহড়ার ফলে বেসামরিক বিমান ও নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বেশ কয়েকটি এয়ারলাইন তাদের ফ্লাইটের রুট পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে এবং তাইওয়ানের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বিকল্প আকাশপথ ব্যবহারের প্রস্তুতি নিয়েছে। চীনা সামরিক কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, এই মহড়া ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতাপন্থী শক্তি’ ও ‘বিদেশি হস্তক্ষেপের’ বিরুদ্ধে কঠোর সতর্কবার্তা।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি তাইওয়ানের কাছে ১১.১ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যা ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্যাকেজ। এতে রয়েছে ৮২টি হিমার্স রকেট লঞ্চার, ৪২০টি দূরপাল্লার এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র, স্বচালিত হাউইটজার, উন্নত ড্রোন ব্যবস্থা ও অ্যান্টি-আর্মার অস্ত্র। বেইজিং এই অস্ত্রচুক্তিকে তীব্রভাবে নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এতে তাইওয়ান একটি ‘বারুদের স্তূপে’ পরিণত হচ্ছে।

তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মহড়া চলাকালে তাদের দ্বীপভূমির চারপাশে ৮৯টি চীনা সামরিক বিমান, ১৪টি নৌজাহাজ ও ১৪টি কোস্ট গার্ড জাহাজ শনাক্ত করা হয়েছে। কিছু চীনা জাহাজ তাইওয়ানের উপকূলের খুব কাছাকাছি অবস্থানে এসে চোখ রাঙাচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রেখেছে তাইওয়ান।

চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে, মহড়ার মূল লক্ষ্য তাইওয়ানের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর—উত্তরের কিলুং ও দক্ষিণের কাওশিয়ুং বন্ধ করে দেওয়ার সক্ষমতা পরীক্ষা। চীন তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড দাবি করলেও তাইওয়ান বলছে, দ্বীপটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণের অধিকার শুধু সেখানকার জনগণেরই আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

১৭ বছরের সাজার রায় চ্যালেঞ্জ করে ইমরান খান ও বুশরা বিবির আপিল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবি। ছবি: এএফপি
ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবি। ছবি: এএফপি

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবি বর্তমানে কারাগারে। তোশাখানা দুর্নীতির মামলায় তাঁরা দুজনই সাজা খাটছেন। এর মধ্যে ২০ ডিসেম্বর তোশাখানা দুর্নীতির নতুন মামলায় তাঁদের আরও ১৭ বছর করে কারাদণ্ড দেন দেশটির একটি বিশেষ আদালত। এই রায় চ্যালেঞ্জ করে আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) ইসলামাবাদ হাইকোর্টে (আইএইচসি) পৃথক দুটি আপিল করেছেন ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবি।

আপিল আবেদনে ইমরান খান ও বুশরা বিবির আইনজীবীরা দাবি করেছেন, এই সাজা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ইমরান খানকে জাতীয় রাজনীতি থেকে দূরে রাখতেই এ ‘পরিকল্পিত’ রায় দেওয়া হয়েছে। আইনজীবীরা ইমরান খান ও বুশরা বিবির পক্ষে কিছু যুক্তি উত্থাপন করেছেন।

আইনজীবীদের দাবি, ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এফআইএ) কোনো এফআইআর ছাড়াই ইমরান খান ও বুশরা বিবির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। এর মাত্র দুই দিনের মাথায় তড়িঘড়ি করে চালানো তদন্তের ভিত্তিতে এই মামলা হয়, যা স্বচ্ছ বিচারের পরিপন্থী।

আপিল আবেদনে বলা হয়েছে, তোশাখানাসংক্রান্ত এটি চতুর্থ মামলা। একই বিষয়ে বারবার মামলা করা আইনের লঙ্ঘন এবং এটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে করা হয়েছে, যাতে ইমরান খানকে দীর্ঘদিন কারাগারে আটকে রাখা যায়।

আইনজীবীদের দাবি, ২০১৮ সালের তোশাখানা নীতিমালা অনুযায়ী নির্ধারিত মূল্যের ৫০ শতাংশ পরিশোধ করেই উপহারগুলো রাখা হয়েছিল। এখানে কোনো ধরনের বিশ্বাসভঙ্গ বা ‘ক্রিমিনাল ব্রিচ অব ট্রাস্ট’ ঘটেনি।

আপিলে যুক্তি দেওয়া হয়েছে, পাকিস্তান পেনাল কোড অনুযায়ী ইমরান খান ও বুশরা বিবি এই উপহার নেওয়ার সময় প্রচলিত সংজ্ঞায় ‘পাবলিক সার্ভেন্ট’ ছিলেন না। বিশেষ করে, বুশরা বিবি একজন গৃহিণী হিসেবে কোনো সরকারি পদের দায়িত্বে ছিলেন না।

প্রসঙ্গত, তোশাখানা মামলাটি মূলত ২০২১ সালের মে মাসে সৌদি আরব সফরকালে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের দেওয়া একটি দামি বুলগারি জুয়েলারি সেট নিয়ে। প্রায় ৮ কোটি রুপি মূল্যের এই নেকলেস, ব্রেসলেট, আংটি ও কানের দুলের সেটটি ইমরান দম্পতি মাত্র ২৯ লাখ রুপি পরিশোধ করে নিজের কাছে রেখেছিলেন।

এই মামলায় পাকিস্তানের ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এআইএ) বিশেষ আদালতের বিচারক শাহরুখ আরজুমান্দ তাঁদের প্রত্যেককে প্রথমে বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, এরপর দুর্নীতিবিরোধী আইনের আওতায় সাত বছরের কারাদণ্ড এবং ১ কোটি ৬৪ লাখ রুপি জরিমানা করেছিলেন।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে সংসদীয় অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন ইমরান খান। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা করা হয়। তিনি ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দী আছেন। বর্তমানে ইমরান খান ১৯ কোটি পাউন্ডের দুর্নীতির মামলায় ১৪ বছরের সাজা খাটছেন। বুশরা বিবিও একই মামলায় সাত বছরের সাজাপ্রাপ্ত।

ইমরানের দল পিটিআইয়ের দাবি, তোশাখানা মামলার বিচারপ্রক্রিয়া ‘ক্যাঙারু কোর্টে’র মতো রুদ্ধদ্বার কক্ষে সম্পন্ন হয়েছে। এটি ন্যায়বিচারের পরিপন্থী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাশিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক যুদ্ধবন্দীকে হত্যার অভিযোগ ইউক্রেনীয় কমান্ডারের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইউক্রেনের ২২৫ তম পৃথক অ্যাসল্ট ব্যাটালিয়নের সঙ্গে কমান্ডার ওলেহ শিরিয়াইভ (মাঝে)। ছবি: দ্য টাইমস
ইউক্রেনের ২২৫ তম পৃথক অ্যাসল্ট ব্যাটালিয়নের সঙ্গে কমান্ডার ওলেহ শিরিয়াইভ (মাঝে)। ছবি: দ্য টাইমস

ইউক্রেনের অন্যতম সর্বোচ্চ সামরিক সম্মানপ্রাপ্ত এক কমান্ডার অভিযোগ করেছেন, শান্তি আলোচনার মধ্যেই রুশ বাহিনী পরিকল্পিতভাবে ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দীদের হত্যা করছে। ‘হিরো অব ইউক্রেন’ খেতাবে ভূষিত মেজর ওলেহ শিরিয়াইভ বলেছেন, রুশ সেনারা নিয়মিত আত্মসমর্পণ করা ইউক্রেনীয় সৈন্যদের গুলি করে হত্যা করছে এবং এটি এখন একটি পদ্ধতিগত নীতিতে পরিণত হয়েছে।

সম্মুখ সমরের অজ্ঞাত একটি অবস্থান থেকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শিরিয়াইভ জানান, তারা নিয়মিত এমন রেডিও ও যোগাযোগ বার্তা ধরতে পারছেন, যেখানে রুশ সামরিক নেতৃত্ব সরাসরি আত্মসমর্পণকারী সেনাদের হত্যা করার নির্দেশ দিচ্ছে। তাঁর অভিযোগ, এই প্রথা গত দেড় বছরে একটি নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ ভয়াবহভাবে বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সামরিক পর্যবেক্ষকরাও। রুশ সেনা বা ইউক্রেনীয় ড্রোনে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা গেছে, আত্মসমর্পণের পর নিরস্ত্র সৈন্যদের সারিবদ্ধ করে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। ১৯ নভেম্বর পোকারোভস্কের কাছে ধারণ করা একটি ড্রোন ভিডিওতে দেখা যায়, এক রুশ সৈন্য মাটিতে উপুড় হয়ে থাকা চারজন নিরস্ত্র ইউক্রেনীয়কে গুলি করে হত্যা করে এবং পালানোর চেষ্টা করা আরেকজনের দিকেও অস্ত্র তাক করে।

ইউক্রেনের প্রসিকিউশন সার্ভিস জানিয়েছে, ২০২২ সালে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ শুরুর পর থেকে অন্তত ১৪৭ জন ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দীকে হত্যা করা হয়েছে, যার মধ্যে চলতি বছরেই ১২৭ জন। ইউক্রেনের প্রসিকিউটর জেনারেলের দপ্তরের যুদ্ধাপরাধ বিভাগের প্রধান ইউরি বেলাউসভ বলেন, ‘এই সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং একটি নীতির স্পষ্ট লক্ষণ।’

জাতিসংঘের মানবাধিকার পর্যবেক্ষকেরাও মধ্য নভেম্বরের পর থেকে রুশ বাহিনীর যুদ্ধাপরাধ বৃদ্ধির তথ্য নথিভুক্ত করেছে। আন্তর্জাতিক মানবিক আইন, বিশেষ করে তৃতীয় জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী, যুদ্ধবন্দীদের হত্যা স্পষ্ট যুদ্ধাপরাধ।

এদিকে, যুদ্ধে সম্মুখ সমরে রুশ বাহিনীর ক্ষয়ক্ষতি ইউক্রেনের তুলনায় অনেক বেশি হচ্ছে বলে দাবি করেছেন শিরিয়াইভ। ইউক্রেনের ২২৫ তম পৃথক অ্যাসল্ট ব্যাটালিয়নের এই কমান্ডার বলেন—শান্তি আলোচনা চললেও রাশিয়া কৌশলগত সুবিধা দেখাতে তাদের হাজার হাজার সৈন্যকে সামান্য ভূমি দখলের জন্য মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। শিরিয়াইভের দাবি, যুদ্ধে ইউক্রেনের ১টি সেনার বিপরীতে রুশ বাহিনী অন্তত ১০টি সেনা হারাচ্ছে।

অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বরাবরই দাবি করে আসছেন, রুশ বাহিনী আন্তর্জাতিক আইন মেনেই যুদ্ধবন্দীদের সঙ্গে আচরণ করে। অন্যদিকে ইউক্রেনীয় বাহিনীর বিরুদ্ধেও রুশ বন্দী হত্যার অভিযোগ উঠেছে। তবে সেই সংখ্যাটি তুলনামূলকভাবে অনেক কম।

শান্তি আলোচনার অগ্রগতির কথা বললেও শিরিয়াইভ সতর্ক করে বলেন, ইউক্রেন যদি অবস্থান ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়, তাহলে রুশ আগ্রাসন ইউরোপের অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত