Ajker Patrika

অনলাইন ফিটনেস গ্রুপগুলো এখন উগ্রবাদের আখড়া! 

অনলাইন ফিটনেস গ্রুপগুলো এখন উগ্রবাদের আখড়া! 

চরমপন্থীরা বৃহত্তর রাজনৈতিক সংগ্রামের অংশ হিসেবে এখন আত্মোন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দেওয়া শুরু করেছে। উগ্র ডানপন্থীরা অনলাইন ফিটনেস গ্রুপগুলোর মাধ্যমে সদস্য সংগ্রহ করছে। কোভিড মহামারিকালে এসব গ্রুপের জনপ্রিয়তা বেড়ে যাওয়ায় এই প্রবণতা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। এই গ্রুপগুলোতে নতুন সদস্যদের সহিংসতার জন্য উসকানি দেওয়া হচ্ছে। বিশ্লেষকেরা আশঙ্কা করছেন, ফিটনেস ফ্রিকদের উগ্রপন্থায় দীক্ষিত করে সহিংসতার দিকে ঠেলে দেওয়া হতে পারে। 

সংশ্লিষ্ট গবেষক ও পর্যেবক্ষকদের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান এমন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। 

গবেষকেরা মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে অনলাইন ‘ফ্যাসিবাদী ফিটনেস’ চ্যাট গ্রুপের একটি নেটওয়ার্ক সনাক্ত করেছেন। এগুলোর মধ্যে একটি বড় অংশ ফ্যাসিবাদী সংগঠন ‘নিও-নাজি প্যাট্রিয়টিক অল্টারনেটিভ’-এর সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। এই সংগঠনটি ব্রিটেনে বৃহত্তম চরম ডানপন্থী গোষ্ঠী। 

বর্ণবাদ বিরোধী বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় উসকানি দেওয়া এবং অংশ নেওয়ার অপরাধে ২০১৮ সালে কুখ্যাত শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী রাইজ অ্যাবভ মুভমেন্টের (র‍্যাম) চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ধরনের গোষ্ঠীগুলো ইউরোপীয় এবং মার্কিন ফাইট গ্রুপগুলোকে নিয়মিত মহিমান্বিত করে উপস্থাপন করে। 

র‍্যামের প্রশংসা করার জন্য যুক্তরাজ্যের গ্রুপগুলোর মধ্যে হোয়াইট স্ট্যাগ অ্যাথলেটিক ক্লাবের (ডব্লিউএসএসি) সদস্যরা স্বস্তিকা আঁকা পতাকার ছবি পোস্ট করে। গত নভেম্বরে কাইল রিটেনহাউস জেল থেকে খালাস পাওয়া উদযাপন করে। কাইল ২০২০ সালে উইসকনসিনে দুই বর্ণবাদ-বিরোধী প্রতিবাদকারীকে গুলি করে হত্যা করেন। 

মহামারী চলাকালীন ফিটনেস অ্যাপের সাহায্যে ঘরে ফিটনেস চর্চার প্রবণতা বেড়েছে। এসব অ্যাপের লক্ষ লক্ষ ব্যবহারকারী। এ সময় জিম বন্ধ থাকায় অনলাইন গ্রুপগুলো এর মাধ্যমেই ফিটনেস ফ্রিকদের আকৃষ্ট করেছে। 

অ্যান্টি-ফ্যাসিস্ট সংগঠন হোপ নট হেট-এর বিশ্লেষণ বলছে, ব্রিটেনের চরম ডানপন্থীরা এখন ‘বিস্তৃত রাজনৈতিক সংগ্রামের’ অংশ হিসেবে শারীরিক ফিটনেসের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। কোভিড বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পরেও কীভাবে ডব্লিউএসএসি-এর মতো অনলাইন গ্রুপগুলোর বাড়বাড়ন্ত অব্যাহত থাকতে পারে সেটির ব্যাখ্যা হিসেবে এই প্রবণতাকে উল্লেখ করেছে সংগঠনটি। 

হোপ নট হেট-এর বার্ষিক মূল্যায়নে বলা হয়েছে, এই গোষ্ঠীগুলোর পক্ষ থেকে সম্ভাব্য বিপদ নিহিত রয়েছে দুটি প্রবণতার মধ্যে। প্রথমত, তারা কর্মীদের যোদ্ধায় রূপান্তরিত করার ওপর জোর দিচ্ছে। এতে নতুন সদস্যরা সহিংসতামূলক কাজ করতে অনুপ্রাণিত হতে পারে। দ্বিতীয়ত, তারা যে গোষ্ঠী তৈরি করছে, সেখানে সদস্যরা ফ্যাসিবাদে বিশ্বাসের পাশাপাশি জীবনে বাস্তব ও ইতিবাচক পরিবর্তন যুক্ত করতে শুরু করে। 

জ্যেষ্ঠ গবেষক প্যাট্রিক হারম্যানসন বলেন, ‘এই ফিটনেস গ্রুপগুলো একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক সংগ্রামের অংশ হিসেবে ব্যক্তিগত উন্নতিকে যুক্ত করে। তারা শারীরিক সংঘাত এবং সহিংসতাকে বৈধ এবং প্রয়োজনীয় বলে বিশ্বাস করে। এর মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে নতুন প্রেরণা এবং লক্ষ্যের অনুভূতি তৈরি করে। তারা চরম ডানপন্থী লোকদের জড়ো করার প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে।’ 

ডব্লিউএসএসি নামে নাৎসী গ্রুপটি তৈরি হয় মহামারি চলাকালে। ইয়র্কশায়ার-ভিত্তিক একজন নিরাপত্তা প্রহরী এটি চালান, তাঁর ছদ্মনাম ‘সার্জ’। তাঁর সঙ্গে প্যাট্রিয়টিক অল্টারনেটিভের (পিএ) সম্পর্ক রয়েছে। গ্রুপটি আগে একটি ফ্যাসিবাদী পডকাস্ট চালু করতে সহায়তা করেছিল। তাঁর টেলিগ্রাম চ্যানেলে সম্প্রতি পিএ নেতা মার্ক কোলেট এবং চরম ডানপন্থী ইউটিউবার লরা টাওলারকে নিয়ে ফিচার করা হয়েছে। 

ডব্লিউএসএসি এখন সদস্য সংগ্রহের কার্যক্রম টেলিগ্রামেও বিস্তৃত করেছে। ‘চূড়ান্ত লক্ষ্য হিসেবে সম্মিলিত লড়াইয়ে অংশ নেওয়ার’ কথা প্রচার করে এ গ্রুপ। সহিংসতা পরিচালনার সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য পরামর্শ দেয়। 

বেশ কয়েক মাস ধরে ফিটনেস গ্রুপগুলো পর্যবেক্ষণ করেছেন হারম্যানসন। তিনি দেখেছেন, সদস্যদের প্রাথমিকভাবে স্বাস্থ্য টিপস দিয়ে প্রলুব্ধ করা হয়। পরে ক্লোজড চ্যাট গ্রুপগুলোতে এনে চরমপন্থা দীক্ষা দেওয়া হয়। এসব গ্রুপে যুক্ত হওয়া অনেক ফিটনেস ফ্রিক তাঁদের সফলতার গল্পও বলেছেন। যেমন-দ্রুত ওজন কমানো, ক্যারিয়ারে উন্নতি ইত্যাদি। 

গবেষক হারম্যানসন বলছেন, ‘একটি হিংস্র এবং ঘৃণ্য মতাদর্শের সঙ্গে জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন যুক্ত হওয়ার এমন ঘটনা স্পষ্টতই বিপজ্জনক।’ 

গ্রুপগুলোতে পোস্ট করা ছবির মধ্যে হিটলারের আবক্ষ ছবি দেখা যায়। ‘আপনার জাতিকে রক্ষা করুন, আপনার ভূমি রক্ষা করুন, অমরত্ব লাভ করুন’—এ ধরনের বার্তা আদান প্রদান করেন তাঁরা। 

বেন এলি নামে আরেকজন গবেষক বলেন, চরম ডানপন্থী আত্ম উন্নয়নকামী গ্রুপের সদস্যরা বিশ্বাস করেন, শারীরিকভাবে শক্তিশালী হয়ে তাঁরা শ্বেতাঙ্গ জাতিকে ধ্বংসের হাতে থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারবেন। আত্ম উন্নয়ন ‘একটি ন্যায্য ম্যানিকিয়ান যুদ্ধের অংশ হয়ে উঠছে। এরা আত্মদান এবং পুরস্কারের ভারসাম্যকে ব্যাপকভাবে বিকৃত করে।’ 

বিশ শততের ব্রিটিশ রাজনীতিক ও ফ্যাসিস্ট অসওয়াল্ড মোসলে এবং তাঁর প্রতিষ্ঠিত ‘ব্রিটিশ ইউনিয়ন অব ফ্যাসিস্ট’ নামের সংগঠনটিও সমর্থকদের শারীরিক ফিটনেসের ওপর জোর দিয়েছিল। এ লক্ষ্যে সংগঠনের পক্ষ থেকে নিয়মিত স্পোর্টস ক্লাবের আয়োজন করা হতো। সংগঠনের ম্যাগাজিনে সাপ্তাহিক ফিটনেস টিপসের একটি কলাম থাকতো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টাকে প্রতিহতের ঘোষণা উত্তর কোরিয়ার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। ছবি: এএফপি
উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। ছবি: এএফপি

জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের যে কোনো প্রচেষ্টা কঠোরভাবে প্রতিহত করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ রোববার (২১ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জাপানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা যে কোনো মূল্যে রোধ করা উচিত, কারণ এটি মানবজাতির জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘ইনস্টিটিউট ফর জাপান স্টাডিজ’-এর পরিচালক এক বিবৃতিতে বলেন, জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা শুধু এশিয়া নয়, পুরো বিশ্বের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করবে। তাঁর ভাষায়, ‘জাপানের পারমাণবিক হওয়ার প্রচেষ্টা মানবজাতির জন্য এক মহাবিপর্যয় বয়ে আনবে।’

যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার এই প্রতিক্রিয়ার পেছনে রয়েছে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তার সাম্প্রতিক মন্তব্য। জাপানের বার্তা সংস্থা কিয়োদো নিউজের খবরে বলা হয়, ওই কর্মকর্তা প্রকাশ্যে বলেছেন, টোকিওর পারমাণবিক অস্ত্র রাখা উচিত।

এই প্রেক্ষাপটে উত্তর কোরিয়া দাবি করেছে, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন বা বেপরোয়া মন্তব্য নয়; বরং জাপানের বহুদিনের পারমাণবিক অস্ত্রায়নের আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন।

উত্তর কোরিয়ার মতে, জাপান তাদের তথাকথিত ‘অ-পারমাণবিক নীতি’ পুনর্বিবেচনার কথা বলে কার্যত একটি ‘লাল রেখা’ অতিক্রম করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, জাপানের কর্মকর্তাদের মন্তব্যগুলোই বলে দিচ্ছে, টোকিও এখন প্রকাশ্যেই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের বাসনা জানাচ্ছে।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আরও দাবি করেছে, যুক্তরাষ্ট্র যখন গত অক্টোবরে দক্ষিণ কোরিয়াকে একটি পারমাণবিক সাবমেরিন নির্মাণের অনুমোদন দেয়, তার পরপরই জাপানে এই ধরনের বক্তব্য জোরালো হতে শুরু করে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ংয়ের সঙ্গে বাণিজ্য ও নিরাপত্তা ইস্যুতে শীর্ষ বৈঠকের পর ওই অনুমোদন দিয়েছিলেন।

উত্তর কোরিয়ার ওই কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেন—জাপান যদি পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করে, তবে এশিয়া ভয়াবহ পারমাণবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। তবে তিনি পিয়ংইয়ংয়ের নিজস্ব পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

ধারণা করা হয়, উত্তর কোরিয়া নিজেই একটি ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডারের অধিকারী। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান থাকার পরও দেশটি তার পারমাণবিক সক্ষমতা বজায় রাখা ও সম্প্রসারণের ঘোষণা দিয়ে আসছে। গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে উত্তর কোরিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী কিম সন গিয়ং বলেন—পারমাণবিক অস্ত্র তাদের রাষ্ট্রীয় আইন, জাতীয় নীতি এবং সার্বভৌম অধিকারের অংশ, যা তারা কোনো পরিস্থিতিতেই ত্যাগ করবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলার আরও একটি তেলের ট্যাংকার ধাওয়া করছে মার্কিন বাহিনী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ১৪
ক্যারিবিয়ান সাগরে পানামা পতাকাবাহী সেঞ্চুরি নামের একটি তেলবাহী জাহাজের ওপর মার্কিন সামরিক বাহিনীর টহল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে
ক্যারিবিয়ান সাগরে পানামা পতাকাবাহী সেঞ্চুরি নামের একটি তেলবাহী জাহাজের ওপর মার্কিন সামরিক বাহিনীর টহল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

ভেনেজুয়েলা উপকূলে আন্তর্জাতিক জলসীমায় আরও একটি তেলের ট্যাংকার ধাওয়া করছে মার্কিন কোস্ট গার্ড। আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) তিনজন মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এটি সফল হলে এক সপ্তাহের মধ্যে ভেনেজুয়েলাসংশ্লিষ্ট তিনটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করার ঘটনা ঘটবে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে ভেনেজুয়েলার ওপর ‘সর্বাত্মক নৌ অবরোধ’ ঘোষণার পর থেকে এই চিরুনি অভিযান শুরু হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মার্কিন কোস্ট গার্ড বর্তমানে একটি তেল ট্যাংকারকে ধাওয়া করছে। তবে অভিযানের সুনির্দিষ্ট অবস্থান বা জাহাজটির পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

এই অভিযান নিয়ে হোয়াইট হাউস বা পেন্টাগন থেকে তাৎক্ষণিক কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

হোয়াইট হাউসের ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের ডিরেক্টর কেভিন হ্যাসেট আজ জানিয়েছেন, এর আগে জব্দ করা দুটি ট্যাংকার ‘ব্ল্যাক মার্কেট’ বা কালোবাজারের মাধ্যমে বিভিন্ন নিষিদ্ধ দেশে তেল সরবরাহ করছিল।

কেভিন হ্যাসেট দাবি করেছেন, এই আটকের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে তেলের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। তাঁর মতে, এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা এবং কেবল কালোবাজারি জাহাজগুলোকেই লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে।

তবে বাজার বিশ্লেষক ও তেল ব্যবসায়ীরা ভিন্নমত পোষণ করছেন। একজন তেল ব্যবসায়ী রয়টার্সকে বলেন, এই ধরনের পদক্ষেপ ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। আগামীকাল সোমবার এশিয়ার বাজারে তেলের দাম বাড়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা তেলের দামের এই ঊর্ধ্বগতিকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।

গত সেপ্টেম্বর থেকে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ওপর চাপ বাড়াতে ট্রাম্প প্রশাসন এই অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। গত কয়েক মাসে প্রশান্ত মহাসাগর ও ক্যারিবিয়ান সাগরে ভেনেজুয়েলাসংশ্লিষ্ট ভেসেলগুলোর ওপর অন্তত দুই ডজন সামরিক হামলা চালানো হয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, এসব সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০০ জন নিহত হয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলায় মার্কিন হস্তক্ষেপ নিয়ে সতর্ক করলেন লুলা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। ছবি: সংগৃহীত
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। ছবি: সংগৃহীত

ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান চাপ ও সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপ ‘ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়’ ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। তিনি মত দিয়েছেন, ভেনেজুয়েলায় কোনো ধরনের সশস্ত্র হস্তক্ষেপ শুধু ওই দেশের জন্য নয়, বরং পুরো পৃথিবীর জন্যই এক বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ফোজ দো ইগুয়াসুতে দক্ষিণ আমেরিকার আঞ্চলিক জোট ‘মারকোসুর’-এর শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে লুলা এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘ভেনেজুয়েলায় সশস্ত্র হস্তক্ষেপ একটি মানবিক বিপর্যয়ে রূপ নেবে। এটি এমন একটি নজির সৃষ্টি করবে, যা বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি।’

এ বিষয়ে এক প্রতিবেদনে রোববার (২১ ডিসেম্বর) রয়টার্স জানিয়েছে, ভেনেজুয়েলা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা সম্প্রতি আরও বেড়েছে। গত মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলায় যাতায়াতকারী সব নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেলবাহী জাহাজের ওপর ‘অবরোধ’ আরোপের নির্দেশ দেন। ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপকে নিকোলাস মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর নতুন কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে। ভেনেজুয়েলার অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি তেল খাতকে লক্ষ্য করেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

লুলা স্মরণ করিয়ে দেন, ফকল্যান্ডস যুদ্ধের চার দশকেরও বেশি সময় পর দক্ষিণ আমেরিকা আবারও অন্য মহাদেশীয় কোনো শক্তির সামরিক উপস্থিতির আশঙ্কায় ভুগছে। তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ আমেরিকা আবার এমন এক ভূতের ছায়ায় পড়ছে, যেখানে এই অঞ্চলের বাইরে থেকে আসা সামরিক শক্তি আমাদের শান্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।’

চলতি সপ্তাহের শুরুতেই লাতিন আমেরিকার দুই বৃহত্তম অর্থনীতির শীর্ষ নেতা ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দ্য সিলভা এবং মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউম ভেনেজুয়েলা পরিস্থিতিতে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে গত শনিবারের বক্তব্যে লুলা আরও কঠোর দেখিয়েছেন।

‘মারকোসুর’ সম্মেলন শেষে দেওয়া এক যৌথ ঘোষণায় লাতিন আমেরিকার নেতারা ভেনেজুয়েলায় গণতান্ত্রিক নীতি ও মানবাধিকার রক্ষায় শান্তিপূর্ণ পথেই অগ্রসর হওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। এই ঘোষণায় আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে ও পানামার প্রেসিডেন্টদের পাশাপাশি বলিভিয়া, ইকুয়েডর ও পেরুর শীর্ষ কর্মকর্তারাও সমর্থন জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রেনের ভাড়া বাড়ছে ভারতেও

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ছবি: সংগৃহীত
২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ছবি: সংগৃহীত

ভারতেও ট্রেনের ভাড়া বাড়ছে। পকেটে টান পড়তে যাচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। ২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তবে স্বস্তির খবর হলো, লোকাল ট্রেনের ভাড়া অপরিবর্তিত থাকছে। মূলত দূরপাল্লার যাত্রীদের জন্যই এই বাড়তি ভাড়া কার্যকর হবে।

ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের ঘোষণা অনুযায়ী, ভ্রমণের দূরত্ব ও কোচের ধরনভেদে নতুন ভাড়ার হার নির্ধারিত হবে। ২১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত সাধারণ শ্রেণিতে ভাড়ায় কোনো পরিবর্তন নেই। তবে ২১৫ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটারে এক পয়সা করে ভাড়া বাড়বে।

মেল বা এক্সপ্রেস ট্রেনের (নন-এসি) যাত্রীদের জন্য প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া বাড়বে দুই পয়সা। এসি কোচ বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচের ক্ষেত্রেও কিলোমিটার প্রতি দুই পয়সা ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।

তবে যদি কোনো যাত্রী নন-এসি কোচে ৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন, নতুন নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে আগের চেয়ে ১০ রুপি বেশি ভাড়া দিতে হবে।

কেন এই ভাড়া বৃদ্ধি

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত এক দশকে রেলপথ সম্প্রসারণের ফলে জনবল এবং অন্যান্য ব্যয় বহুগুণ বেড়েছে। রেলওয়ের বর্তমান জনবল ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি রুপিতে এবং পেনশনের পেছনে খরচ হচ্ছে ৬০ হাজার কোটি রুপি। সব মিলিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট পরিচালনা ব্যয় বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি রুপি।

যাত্রীদের ভাড়া ও পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে খরচ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে রেলওয়ে। এর আগে গত জুলাই মাসেও ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল (নন-এসিতে এক পয়সা ও এসিতে দুই পয়সা)। তারও আগে ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি বড় ধরনের ভাড়া বৃদ্ধি কার্যকর করা হয়েছিল, যেখানে এসি কোচে ভাড়া বেড়েছিল কিলোমিটার প্রতি চার পয়সা পর্যন্ত।

রেলওয়ে কর্মকর্তাদের মতে, উন্নত সেবা এবং ক্রমবর্ধমান ব্যয় মেটাতে এই সামান্য ভাড়া বৃদ্ধি অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল। কর্তৃপক্ষ আশা করছে, এই ভাড়া বৃদ্ধির ফলে রেলওয়ের বার্ষিক আয় প্রায় ৬০০ কোটি রুপি বাড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত