Ajker Patrika

জেরুসালেম পোস্টের প্রতিবেদন

বাশার আল-আসাদকে তালাক দেবেন স্ত্রী, মস্কো ছেড়ে যাবেন লন্ডনে

আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩: ৩১
বাশার আল-আসাদ ও তাঁর স্ত্রী আসমা আল-আসাদ। ছবি: এএফপি
বাশার আল-আসাদ ও তাঁর স্ত্রী আসমা আল-আসাদ। ছবি: এএফপি

সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের স্ত্রী আসমা আল-আসাদ স্বামীকে তালাক দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন। তুরস্ক ও আরব বিশ্বের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুসালেম পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসমা এরই মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করেছেন। পাশাপাশি তিনি মস্কো ছেড়ে ব্রিটেনের রাজধানী লন্ডনে চলে যাওয়ার পরিকল্পনাও করছেন।

জেরুসালেম পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের স্ত্রী আসমা আল-আসাদ মস্কোয় নিজের জীবনের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করেছেন। তিনি লন্ডনে চলে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন বলেও জানা গেছে।

ব্রিটিশ নাগরিক আসমা সিরিয়ারও নাগরিক। তিনি সম্প্রতি রাশিয়ার আদালতে আবেদন করেছেন এবং মস্কো ছাড়ার জন্য বিশেষ অনুমতি চেয়েছেন। তাঁর আবেদন বর্তমানে রাশিয়ার কর্তৃপক্ষ মূল্যায়ন করছে বলে জানা গেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, দ্বৈত নাগরিক লন্ডনে সিরিয়ান বাবা-মায়ের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন এবং বেড়ে ওঠেন। আসমা ২০০০ সালে সিরিয়ায় যান এবং একই বছর ২৫ বছর বয়সে আসাদের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

এদিকে, রাশিয়া বাশার আল-আসাদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন মঞ্জুর করলেও তিনি কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে রয়েছেন বলে জানা গেছে। তাঁকে মস্কো ছাড়তে বা কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে অনুমতি দেওয়া হয়নি। রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ তাঁর সম্পদ ও অর্থ জব্দ করেছে। তাঁর সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে—২৭০ কেজি সোনা, ২ বিলিয়ন ডলার অর্থ এবং মস্কোয় ১৮টি অ্যাপার্টমেন্ট।

সৌদি আরব ও তুরস্কের সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাশার আল-আসাদের ভাই মাহের আল-আসাদ রাশিয়ায় আশ্রয় পাননি এবং তাঁর আবেদন এখনো পর্যালোচনাধীন। মাহের ও তাঁর পরিবার রাশিয়ায় গৃহবন্দী অবস্থায় রয়েছেন।

ডিসেম্বর মাসের শুরুর দিকে বিদ্রোহী বাহিনী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতৃত্বে চালানো আক্রমণে আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হন। যদিও এইচটিএস যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক একটি নিবন্ধিত সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত তবে যুক্তরাষ্ট্র এইচটিএস নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানির মাথার ওপর ঘোষিত ১০ মিলিয়ন ডলারের পুরস্কার প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এদিকে, সিরিয়ার ছাড়ার পর দেওয়া এক বিবৃতিতে বাশার আল-আসাদ বলেন, দেশত্যাগের ঘটনা পরিকল্পিত ছিল না। বিবৃতিতে বাশার আল-আসাদ বলেন, ‘সিরিয়া থেকে চলে যাওয়াটা পরিকল্পিত ছিল না এবং হামলার শিকার একটি সামরিক ঘাঁটি থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য মস্কো তাঁকে অনুরোধ করেছিল।’ সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের টেলিগ্রাম চ্যানেলে দেওয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘সিরিয়া থেকে আমার প্রস্থান পরিকল্পিত ছিল না, অথবা লড়াইয়ের শেষ সময়েও এটি ঘটেনি।’

সিরিয়ার সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বলেন, ৮ ডিসেম্বর (রোববার) সকালের দিকেই তিনি লাতাকিয়ায় চলে যান। এরপর সেদিন সন্ধ্যায় মস্কো তাঁকে তাৎক্ষণিকভাবে রাশিয়ায় সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করে। সিরিয়া বর্তমানে সন্ত্রাসীদের হাতে রয়েছে বলে বিবৃতিতে দাবি করেছেন বাশার আল-আসাদ।

বাবা হাফেজ আল-আসাদের মৃত্যুর পর ২০০০ সালে সিরিয়ার ক্ষমতায় আসেন বাশার আল-আসাদ। এরপর প্রায় তিন দশক ধরে শক্ত হাতে শাসন করেন সিরিয়া। দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর দুই সপ্তাহের কম সময়ের সরকারবিরোধী আন্দোলনে ৮ ডিসেম্বর বাশারের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটে।

বিবৃতিতে আসাদ বলেন, সিরিয়াজুড়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ছড়িয়ে পড়ায় এবং ৭ ডিসেম্বর (শনিবার) সন্ধ্যার দিকে সন্ত্রাসীরা দামেস্কে পৌঁছানোর ফলে প্রেসিডেন্টের ভাগ্য এবং তাঁর দেশে অবস্থান ঘিরে সংকট তৈরি হয়। ভুল তথ্যের ছড়াছড়ি ও আখ্যানের মাঝে এসব ঘটেছে। যার লক্ষ্য ছিল সিরিয়ার মুক্তি আন্দোলনের নামে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদকে আবারও পুনরুজ্জীবিত করা।

রাশিয়া-ইরানের ঘনিষ্ঠ মিত্র প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনকে অসম্ভব বলে মনে করা হলেও ওই দিন সিরিয়ার ইসলামপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতৃত্বে বিদ্যুৎগতির অভিযানে দেশটিতে সরকারের পতন ঘটে। অতীতে জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পৃক্ত আল-নুসরা ফ্রন্ট নামে পরিচিত ছিল হায়াত তাহরির আল-শাম।

বিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সশস্ত্র সদস্যরা রাজধানীতে ঢুকে পড়ায় তিনি সেদিনই দামেস্ক ত্যাগ করেন বলে জানিয়েছেন। দেশটির লাতাকিয়া প্রদেশে অবস্থিত রাশিয়ার সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রিত হামেইমিম বিমানঘাঁটিতে ড্রোন হামলার পরপরই তাঁকে মস্কোতে সরিয়ে নেওয়া হয়। আসাদ বলেন, তিনি দামেস্ক থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর লাতাকিয়া থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের তদারকি করছিলেন। সে সময় দেশের সব সামরিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছিল বলে স্বীকার করেছেন তিনি।

বাশার আল-আসাদ বলেন, ‘আমি রোববার (৮ ডিসেম্বর) ভোরবেলা পর্যন্ত দামেস্কে ছিলাম। সেখান থেকে আমার দায়িত্ব পালন করেছিলাম। সন্ত্রাসী বাহিনী যখন দামেস্কে অনুপ্রবেশ করে, তখন লড়াই অভিযানের তদারকি করার জন্য আমাদের রুশ মিত্রদের সঙ্গে সমন্বয় করে লাতাকিয়ায় চলে আসি। আমি সেদিন সকালেই হামেইমিম ঘাঁটিতে পৌঁছাই।’

বিবৃতিতে বলা হয়, মাঠপর্যায়ের পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকে। এর একপর্যায়ে রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটি তীব্র ড্রোন হামলার মুখে পড়ে। সামরিক ঘাঁটির কমান্ড ৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় তাঁকে তাৎক্ষণিকভাবে রাশিয়ায় সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করে।

এর আগে, সিরিয়ার সাবেক সরকারি পাঁচজন কর্মকর্তা ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছিলেন, বিদ্রোহী বাহিনী দামেস্ক দখল করে আসাদের সরকারের পতন ঘটানোর কয়েক ঘণ্টা আগেই সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দেশের বাইরে চলে যান। ওই কর্মকর্তারা বলেছেন, এমনকি আগের দিন রাতে বাশার আল-আসাদ তাঁর ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাকে একটি ভাষণ প্রস্তুত করতে বলেছিলেন। কিন্তু দামেস্ক বিমানবন্দর থেকে রাশিয়ার হামেইমিম বিমানঘাঁটি এবং সেখান থেকে দেশের বাইরে যাওয়ার আগে তাঁর আর সেই ভাষণ দেওয়া হয়নি।

বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘রাষ্ট্র যখন রাষ্ট্র সন্ত্রাসের কবলে পড়ে এবং অর্থপূর্ণ ভূমিকা রাখার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে, তখন সেখানে যে কারও অবস্থান উদ্দেশ্যহীন হয়ে যায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টাকে প্রতিহতের ঘোষণা উত্তর কোরিয়ার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। ছবি: এএফপি
উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। ছবি: এএফপি

জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের যে কোনো প্রচেষ্টা কঠোরভাবে প্রতিহত করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ রোববার (২১ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জাপানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা যে কোনো মূল্যে রোধ করা উচিত, কারণ এটি মানবজাতির জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘ইনস্টিটিউট ফর জাপান স্টাডিজ’-এর পরিচালক এক বিবৃতিতে বলেন, জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা শুধু এশিয়া নয়, পুরো বিশ্বের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করবে। তাঁর ভাষায়, ‘জাপানের পারমাণবিক হওয়ার প্রচেষ্টা মানবজাতির জন্য এক মহাবিপর্যয় বয়ে আনবে।’

যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার এই প্রতিক্রিয়ার পেছনে রয়েছে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তার সাম্প্রতিক মন্তব্য। জাপানের বার্তা সংস্থা কিয়োদো নিউজের খবরে বলা হয়, ওই কর্মকর্তা প্রকাশ্যে বলেছেন, টোকিওর পারমাণবিক অস্ত্র রাখা উচিত।

এই প্রেক্ষাপটে উত্তর কোরিয়া দাবি করেছে, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন বা বেপরোয়া মন্তব্য নয়; বরং জাপানের বহুদিনের পারমাণবিক অস্ত্রায়নের আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন।

উত্তর কোরিয়ার মতে, জাপান তাদের তথাকথিত ‘অ-পারমাণবিক নীতি’ পুনর্বিবেচনার কথা বলে কার্যত একটি ‘লাল রেখা’ অতিক্রম করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, জাপানের কর্মকর্তাদের মন্তব্যগুলোই বলে দিচ্ছে, টোকিও এখন প্রকাশ্যেই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের বাসনা জানাচ্ছে।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আরও দাবি করেছে, যুক্তরাষ্ট্র যখন গত অক্টোবরে দক্ষিণ কোরিয়াকে একটি পারমাণবিক সাবমেরিন নির্মাণের অনুমোদন দেয়, তার পরপরই জাপানে এই ধরনের বক্তব্য জোরালো হতে শুরু করে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ংয়ের সঙ্গে বাণিজ্য ও নিরাপত্তা ইস্যুতে শীর্ষ বৈঠকের পর ওই অনুমোদন দিয়েছিলেন।

উত্তর কোরিয়ার ওই কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেন—জাপান যদি পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করে, তবে এশিয়া ভয়াবহ পারমাণবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। তবে তিনি পিয়ংইয়ংয়ের নিজস্ব পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

ধারণা করা হয়, উত্তর কোরিয়া নিজেই একটি ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডারের অধিকারী। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান থাকার পরও দেশটি তার পারমাণবিক সক্ষমতা বজায় রাখা ও সম্প্রসারণের ঘোষণা দিয়ে আসছে। গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে উত্তর কোরিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী কিম সন গিয়ং বলেন—পারমাণবিক অস্ত্র তাদের রাষ্ট্রীয় আইন, জাতীয় নীতি এবং সার্বভৌম অধিকারের অংশ, যা তারা কোনো পরিস্থিতিতেই ত্যাগ করবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলার আরও একটি তেলের ট্যাংকার ধাওয়া করছে মার্কিন বাহিনী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ১৪
ক্যারিবিয়ান সাগরে পানামা পতাকাবাহী সেঞ্চুরি নামের একটি তেলবাহী জাহাজের ওপর মার্কিন সামরিক বাহিনীর টহল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে
ক্যারিবিয়ান সাগরে পানামা পতাকাবাহী সেঞ্চুরি নামের একটি তেলবাহী জাহাজের ওপর মার্কিন সামরিক বাহিনীর টহল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

ভেনেজুয়েলা উপকূলে আন্তর্জাতিক জলসীমায় আরও একটি তেলের ট্যাংকার ধাওয়া করছে মার্কিন কোস্ট গার্ড। আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) তিনজন মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এটি সফল হলে এক সপ্তাহের মধ্যে ভেনেজুয়েলাসংশ্লিষ্ট তিনটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করার ঘটনা ঘটবে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে ভেনেজুয়েলার ওপর ‘সর্বাত্মক নৌ অবরোধ’ ঘোষণার পর থেকে এই চিরুনি অভিযান শুরু হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মার্কিন কোস্ট গার্ড বর্তমানে একটি তেল ট্যাংকারকে ধাওয়া করছে। তবে অভিযানের সুনির্দিষ্ট অবস্থান বা জাহাজটির পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

এই অভিযান নিয়ে হোয়াইট হাউস বা পেন্টাগন থেকে তাৎক্ষণিক কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

হোয়াইট হাউসের ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের ডিরেক্টর কেভিন হ্যাসেট আজ জানিয়েছেন, এর আগে জব্দ করা দুটি ট্যাংকার ‘ব্ল্যাক মার্কেট’ বা কালোবাজারের মাধ্যমে বিভিন্ন নিষিদ্ধ দেশে তেল সরবরাহ করছিল।

কেভিন হ্যাসেট দাবি করেছেন, এই আটকের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে তেলের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। তাঁর মতে, এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা এবং কেবল কালোবাজারি জাহাজগুলোকেই লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে।

তবে বাজার বিশ্লেষক ও তেল ব্যবসায়ীরা ভিন্নমত পোষণ করছেন। একজন তেল ব্যবসায়ী রয়টার্সকে বলেন, এই ধরনের পদক্ষেপ ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। আগামীকাল সোমবার এশিয়ার বাজারে তেলের দাম বাড়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা তেলের দামের এই ঊর্ধ্বগতিকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।

গত সেপ্টেম্বর থেকে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ওপর চাপ বাড়াতে ট্রাম্প প্রশাসন এই অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। গত কয়েক মাসে প্রশান্ত মহাসাগর ও ক্যারিবিয়ান সাগরে ভেনেজুয়েলাসংশ্লিষ্ট ভেসেলগুলোর ওপর অন্তত দুই ডজন সামরিক হামলা চালানো হয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, এসব সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০০ জন নিহত হয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলায় মার্কিন হস্তক্ষেপ নিয়ে সতর্ক করলেন লুলা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। ছবি: সংগৃহীত
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। ছবি: সংগৃহীত

ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান চাপ ও সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপ ‘ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়’ ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। তিনি মত দিয়েছেন, ভেনেজুয়েলায় কোনো ধরনের সশস্ত্র হস্তক্ষেপ শুধু ওই দেশের জন্য নয়, বরং পুরো পৃথিবীর জন্যই এক বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ফোজ দো ইগুয়াসুতে দক্ষিণ আমেরিকার আঞ্চলিক জোট ‘মারকোসুর’-এর শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে লুলা এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘ভেনেজুয়েলায় সশস্ত্র হস্তক্ষেপ একটি মানবিক বিপর্যয়ে রূপ নেবে। এটি এমন একটি নজির সৃষ্টি করবে, যা বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি।’

এ বিষয়ে এক প্রতিবেদনে রোববার (২১ ডিসেম্বর) রয়টার্স জানিয়েছে, ভেনেজুয়েলা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা সম্প্রতি আরও বেড়েছে। গত মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলায় যাতায়াতকারী সব নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেলবাহী জাহাজের ওপর ‘অবরোধ’ আরোপের নির্দেশ দেন। ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপকে নিকোলাস মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর নতুন কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে। ভেনেজুয়েলার অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি তেল খাতকে লক্ষ্য করেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

লুলা স্মরণ করিয়ে দেন, ফকল্যান্ডস যুদ্ধের চার দশকেরও বেশি সময় পর দক্ষিণ আমেরিকা আবারও অন্য মহাদেশীয় কোনো শক্তির সামরিক উপস্থিতির আশঙ্কায় ভুগছে। তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ আমেরিকা আবার এমন এক ভূতের ছায়ায় পড়ছে, যেখানে এই অঞ্চলের বাইরে থেকে আসা সামরিক শক্তি আমাদের শান্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।’

চলতি সপ্তাহের শুরুতেই লাতিন আমেরিকার দুই বৃহত্তম অর্থনীতির শীর্ষ নেতা ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দ্য সিলভা এবং মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউম ভেনেজুয়েলা পরিস্থিতিতে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে গত শনিবারের বক্তব্যে লুলা আরও কঠোর দেখিয়েছেন।

‘মারকোসুর’ সম্মেলন শেষে দেওয়া এক যৌথ ঘোষণায় লাতিন আমেরিকার নেতারা ভেনেজুয়েলায় গণতান্ত্রিক নীতি ও মানবাধিকার রক্ষায় শান্তিপূর্ণ পথেই অগ্রসর হওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। এই ঘোষণায় আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে ও পানামার প্রেসিডেন্টদের পাশাপাশি বলিভিয়া, ইকুয়েডর ও পেরুর শীর্ষ কর্মকর্তারাও সমর্থন জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রেনের ভাড়া বাড়ছে ভারতেও

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ছবি: সংগৃহীত
২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ছবি: সংগৃহীত

ভারতেও ট্রেনের ভাড়া বাড়ছে। পকেটে টান পড়তে যাচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। ২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তবে স্বস্তির খবর হলো, লোকাল ট্রেনের ভাড়া অপরিবর্তিত থাকছে। মূলত দূরপাল্লার যাত্রীদের জন্যই এই বাড়তি ভাড়া কার্যকর হবে।

ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের ঘোষণা অনুযায়ী, ভ্রমণের দূরত্ব ও কোচের ধরনভেদে নতুন ভাড়ার হার নির্ধারিত হবে। ২১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত সাধারণ শ্রেণিতে ভাড়ায় কোনো পরিবর্তন নেই। তবে ২১৫ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটারে এক পয়সা করে ভাড়া বাড়বে।

মেল বা এক্সপ্রেস ট্রেনের (নন-এসি) যাত্রীদের জন্য প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া বাড়বে দুই পয়সা। এসি কোচ বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচের ক্ষেত্রেও কিলোমিটার প্রতি দুই পয়সা ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।

তবে যদি কোনো যাত্রী নন-এসি কোচে ৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন, নতুন নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে আগের চেয়ে ১০ রুপি বেশি ভাড়া দিতে হবে।

কেন এই ভাড়া বৃদ্ধি

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত এক দশকে রেলপথ সম্প্রসারণের ফলে জনবল এবং অন্যান্য ব্যয় বহুগুণ বেড়েছে। রেলওয়ের বর্তমান জনবল ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি রুপিতে এবং পেনশনের পেছনে খরচ হচ্ছে ৬০ হাজার কোটি রুপি। সব মিলিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট পরিচালনা ব্যয় বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি রুপি।

যাত্রীদের ভাড়া ও পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে খরচ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে রেলওয়ে। এর আগে গত জুলাই মাসেও ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল (নন-এসিতে এক পয়সা ও এসিতে দুই পয়সা)। তারও আগে ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি বড় ধরনের ভাড়া বৃদ্ধি কার্যকর করা হয়েছিল, যেখানে এসি কোচে ভাড়া বেড়েছিল কিলোমিটার প্রতি চার পয়সা পর্যন্ত।

রেলওয়ে কর্মকর্তাদের মতে, উন্নত সেবা এবং ক্রমবর্ধমান ব্যয় মেটাতে এই সামান্য ভাড়া বৃদ্ধি অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল। কর্তৃপক্ষ আশা করছে, এই ভাড়া বৃদ্ধির ফলে রেলওয়ের বার্ষিক আয় প্রায় ৬০০ কোটি রুপি বাড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত