Ajker Patrika

ইংলিশ চ্যানেলে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নৌকাডুবিতে নিহত ৬

আপডেট : ১২ আগস্ট ২০২৩, ২০: ৩০
ইংলিশ চ্যানেলে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নৌকাডুবিতে নিহত ৬

যুক্তরাজ্যের ইংলিশ চ্যানেলে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের একটি নৌকাডুবিতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ৫ থেকে ১০ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছেন ফরাসি উপকূলীয় কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র প্রেমার। এ ছাড়া ব্রিটিশ ও ফরাসি কোস্ট গার্ডরা প্রায় ৫০ জনকে উদ্ধার করেছেন। এএফপি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।  

যুক্তরাজ্যর ডোভারে স্ট্রেচারে করে একটি লাইফবোট থেকে নামিয়ে আনতে দেখা গেছে। তবে হতাহতের সঠিক সংখ্যা এখনো স্পষ্ট নয়। উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্য দুজনকে ডোভারে এবং বেশ কয়েকজনকে ক্যালায়িসে নেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় সময় আজ শনিবার ভোরবেলায় পাশ দিয়ে যাওয়া একটি জাহাজ প্রথমে অ্যালার্ম বাজিয়ে জানায়, একটি মাত্রাতিরিক্ত বোঝাই নৌকা ক্যালাইসের কাছে সাঙ্গাতে উপকূলে সমস্যায় পড়েছে। ফরাসি উদ্ধার নৌকা এসে পৌঁছলে তারা সমুদ্রে অসংখ্য মানুষকে দেখতে পায়।

উদ্ধারকারী নৌকাগুলোর একটিতে থাকা একজন স্বেচ্ছাসেবক রয়টার্সকে বলেন, অভিবাসীরা ডুবে যাওয়া নৌকা থেকে পানি বের করার জন্য জুতা ব্যবহার করছিলেন। নৌকায় ‘অনেক’ লোক ছিল বলেও জানান অ্যান থোরেল।

একজন ফরাসি প্রসিকিউটর এএফপিকে বলেছেন, ২৫ থেকে ৩০ বছর বয়সী এক আফগান ব্যক্তি প্রথমে মারা যান।

উদ্ধারকর্মীরা বলছেন, এই সপ্তাহে সপ্তমবারের মতো তাঁদের পানি থেকে মানুষকে উদ্ধার করতে হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের কাছে ঘটনার বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্র্যাভারম্যান বলেছেন, এটি একটি ‘মর্মান্তিক প্রাণহানির’ ঘটনা। অন্যদিকে ডোভারের এমপি নাটালি এলফিকে বলেন, ঘটনাটি ফরাসি উপকূলে যৌথ টহলের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।

এদিকে ব্রিটিশ কোস্ট গার্ড জানিয়েছে, আরেকটি ছোট নৌকাও সমস্যায় পড়েছিল। কিন্তু নৌকায় থাকা সবাইকে উদ্ধার করা হয়েছে।

ইংলিশ চ্যানেল বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক এবং ব্যস্ততম শিপিং লেনগুলোর মধ্যে একটি, যেখানে প্রতিদিন ৬০০টি ট্যাংকার এবং ২০০টি ফেরি পার হয়।

সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, ১০ আগস্ট পর্যন্ত এই বছর ১৫ হাজার ৮২৬ জন ছোট নৌকায় চ্যানেল পাড়ি দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিরিয়ায় নতুন বিদ্রোহের প্রস্তুতি—নেপথ্যে আসাদের নির্বাসিত গোয়েন্দাপ্রধান ও চাচাতো ভাই

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ১৩
ছবি: রয়টার্স
ছবি: রয়টার্স

সিরিয়ায় বাশার আল–আসাদের পতনের পর দেশজুড়ে ক্ষমতার নতুন লড়াই শুরু হয়েছে। দেশটির নির্বাসিত সাবেক গোয়েন্দা প্রধান কামাল হাসান এবং আসাদের বিলিয়নিয়ার চাচাতো ভাই রামি মাখলুফ এখন রাশিয়ার রাজধানী মস্কো থেকে সিরিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলে নতুন বিদ্রোহ ও শক্তি পুনর্গঠনের চেষ্টা করছেন।

রয়টার্সের তদন্তে জানা গেছে, তাঁরা ইতিমধ্যেই কয়েক মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে আলাওয়াইত সম্প্রদায়ের সদস্যদের নিয়ে নতুন সশস্ত্র দল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। দাবি করা হচ্ছে, সশস্ত্র এই দলের সদস্য সংখ্যা বর্তমানে ৫০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) এই বিষয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—বাশার আল–আসাদের নির্বাসন মেনে নেওয়া হলেও তাঁর পরিবার ও ঘনিষ্ঠদের একটি বড় অংশ এখনো ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার স্বপ্ন ত্যাগ করেনি। সাবেক সামরিক গোয়েন্দা প্রধান কামাল হাসান এবং ব্যবসায়ী রামি মাখলুফ আলাদা আলাদাভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে ১৪টি গোপন সামরিক কমান্ড সেন্টার ও অস্ত্রভান্ডারের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করছেন। এসব কেন্দ্র আসাদ শাসনের শেষ সময়ে তৈরি করা হয়েছিল।

চাচাতো ভাই মাখলুফ একসময় আসাদ সরকারের অর্থনৈতিক স্তম্ভ ছিলেন। তবে পরিবারের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জের ধরে একসময় তিনি গৃহবন্দী হন এবং পরবর্তীতে রাশিয়ার মস্কোয় পালিয়ে যান। এখন তিনি নিজেকে ধর্মীয়ভাবে ‘মসিহ–সদৃশ’ চরিত্র বা ত্রাণকর্তারূপে তুলে ধরে দাবি করছেন, এক চূড়ান্ত যুদ্ধের মাধ্যমে আলাওয়াইতদের ক্ষমতায় ফিরতে হবে।

অন্যদিকে কামাল হাসান সাবেক সেনা ও গোয়েন্দা শাখার সদস্যদের একত্র করে উপকূলীয় অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ স্থাপনের স্বপ্ন দেখছেন। তিনি হোয়াটসঅ্যাপ ও গোপন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সমর্থকদের উদ্দেশে বারবার বলেছেন—‘অস্ত্র ছাড়বেন না, সময় এলে আমি আপনাদের সম্মান ফিরিয়ে দেব।’

এই পরিকল্পনাকে ঠেকাতে সিরিয়ার নতুন সরকারও তৎপর। এ ক্ষেত্রে তারা আরেক সাবেক আসাদ-ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি খালেদ আল–আহমাদকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে। খালেদ আল–আহমাদ যুদ্ধের সময় আসাদের পক্ষ ত্যাগ করে বিদ্রোহীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন। বর্তমান সরকারের নির্দেশনায় খালেদ আল–আহমাদের কাজ হলো, আলাওয়াইত সম্প্রদায়ের মানুষদের এটা বোঝানো যে—নতুন সরকারই তাঁদের নিরাপত্তার উপায়, পুরোনো শক্তি নয়।

খালেদ আল–আহমাদ ইতিমধ্যে এক ঘোষণায় বলেছেন, ‘এই জাতির সামনে পথ শুধু একটি। আর এটা ঘৃণা নয়, পুনর্মিলন।’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিরিয়ার উপকূলে সাম্প্রতিক বিক্ষোভ ও অতীতের ব্যর্থ বিদ্রোহে এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। গত মার্চে একটি ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর প্রায় দেড় হাজার আলাওয়াইত নিহত হন। এই ঘটনার পর ওই সম্প্রদায়ের মধ্যে আবারও নিরাপত্তাহীনতা বেড়েছে। তবে এই পরিস্থিতিকেই সুযোগ হিসেবে দেখছেন কামাল হাসান ও মাখলুফ।

এদিকে বিশ্লেষকদের ধারণা, হাসান কিংবা মাখলুফের পরিকল্পনা সফল হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। কারণ দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে শত্রুভাবাপন্ন এবং রাশিয়া এখনো কাউকেই সমর্থন দেয়নি। এ ছাড়া আলাওয়াইত জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশই এখন এই নেতৃত্বের ওপর আস্থা হারিয়েছে। আর নতুন সরকারও কঠোর নজরদারি চালাচ্ছে।

তারপরও পরিস্থিতি অস্থিতিশীল। যদি এই নেটওয়ার্ক সক্রিয় হয়, তবে আবারও রক্তক্ষয়ী সাম্প্রদায়িক সংঘাতে নিমজ্জিত হতে পারে সিরিয়া।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পুতিনের হাতে ভগবদ্গীতা তুলে দিলেন মোদি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: এক্স
ছবি: এক্স

ভারত-রাশিয়া বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে দিল্লিতে এসেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সম্মেলন শুরুর আগে পুতিনকে রুশ ভাষায় অনূদিত ‘শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা’ উপহার দিয়েছেন মোদি।

এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি ছবি শেয়ার করে মোদি লিখেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট পুতিনকে রুশ ভাষায় অনূদিত এক কপি গীতা উপহার দিলাম। এই গীতার শিক্ষা বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষকে অনুপ্রেরণা জোগায়।’

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত-রাশিয়া বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থের বিভিন্ন বিষয় গুরুত্ব পাচ্ছে। এ ছাড়া বিশ্ব বাণিজ্য এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আরোপিত বিভিন্ন পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাও বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে বলে জানা গেছে। প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর এটিই পুতিনের প্রথম ভারত সফর।

এদিকে এই সম্মেলন এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন রুশ তেল কেনার কারণে ভারতের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দিল্লি পৌঁছান। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে যান। এ সময় দুই নেতা করমর্দন, আলিঙ্গন ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং এরপর তাঁরা একই গাড়িতে বিমানবন্দর ছাড়েন।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম স্পুটনিক জানিয়েছে, পুতিনকে ব্যক্তিগতভাবে স্বাগত জানাতে গিয়ে মোদি কূটনৈতিক প্রটোকল ভেঙে ফেলেন; যা রুশ পক্ষকে বিস্মিত করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অস্ট্রেলিয়ায় ‘এশিয়ান এল চ্যাপোকে’ ১৬ বছরের কারাদণ্ড

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
অস্ট্রেলিয়ার পুলিশের হেফাজতে তে চি লপ। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান
অস্ট্রেলিয়ার পুলিশের হেফাজতে তে চি লপ। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান

আন্তর্জাতিক মাদক পাচারের অন্যতম প্রধান চক্রের নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগে কুখ্যাত অপরাধী তে চি লপকে ১৬ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার একটি আদালত। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) মেলবোর্নের আদালত তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগে রায় ঘোষণা করে।

যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, ৬২ বছর বয়সী তে চি লপ একজন কানাডীয় নাগরিক হলেও তিনি জন্মগ্রহণ করেন চীনে। ইন্টারপোল তাঁকে দীর্ঘদিন ধরে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের অন্যতম বড় মাদক সিন্ডিকেট ‘স্যাম গোর’ বা দ্য কোম্পানি-র মূল হোতা হিসেবে চিহ্নিত করে আসছিল। এই সিন্ডিকেট বছরে প্রায় ১৩ বিলিয়ন পাউন্ড আয় করত বলে ধারণা করা হয় এবং জাপান থেকে শুরু করে নিউজিল্যান্ড পর্যন্ত অন্তত ১২টি দেশে মাদক সরবরাহ করত।

২০১৯ সালে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে থমসন রয়টার্স তাঁকে বিশ্বের প্রভাবশালী ও আলোচিত মাদক সম্রাট জোয়াকিন ‘এল চ্যাপো’ গুজম্যান এবং পাবলো এসকোবারের সমতুল্য হিসেবে উল্লেখ করেছিল। এমনকি তাঁর নিরাপত্তায় থাই কিকবক্সার ভাড়া করা হতো বলেও প্রতিবেদনে উঠে আসে।

২০২১ সালে ইন্টারপোলের নোটিশের ভিত্তিতে নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডাম বিমানবন্দর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং অস্ট্রেলিয়ার অনুরোধে তাঁকে সেখান থেকে প্রত্যর্পণ করা হয়। আদালতে উপস্থাপিত অভিযোগে বলা হয়, ২০১২ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে তে চি লপ অস্ট্রেলিয়ায় বিপুল পরিমাণে মেথঅ্যামফেটামিন পাচারের ষড়যন্ত্র করেন।

রায়ে বিচারক পিটার রোজেন বলেন, মামলাটির সাজা আজীবন কারাদণ্ড হওয়াই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে একটি বিশেষ প্রত্যর্পণ চুক্তির কারণে তুলনামূলক কম সাজা দিতে হয়েছে।

আদালতে দণ্ড ঘোষণার সময় তে চি লপ নীল শার্ট ও কালো চশমা পরে মাথা নিচু করে বসে ছিলেন। তিনি দশ বছর কারাভোগের পর জামিনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেল পুলিশের কমিশনার ক্রিসি ব্যারেট বলেন, ‘এই রায় প্রমাণ করে, অস্ট্রেলিয়ার আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাত বিশ্বের যে কোনো অপরাধীর কাছে পৌঁছাতে পারে।’

তিন বছর বিচার প্রক্রিয়া চলার পর অবশেষে এই আলোচিত মামলার পরিসমাপ্তি ঘটল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভিত্তিহীন অভিযোগে হার্ভার্ডের অধ্যাপককে গ্রেপ্তার করল মার্কিন অভিবাসন কর্তৃপক্ষ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
হার্ভার্ড ল স্কুলের অধ্যাপক কার্লোস পর্তুগাল গুভেয়া। ছবি: হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি
হার্ভার্ড ল স্কুলের অধ্যাপক কার্লোস পর্তুগাল গুভেয়া। ছবি: হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি

মার্কিন অভিবাসন কর্তৃপক্ষ হার্ভার্ড ল স্কুলের একজন অধ্যাপককে গ্রেপ্তার করেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হার্ভার্ডের অধ্যাপক ও ব্রাজিলের নাগরিক কার্লোস পর্তুগাল গুভেয়াকে বুধবার গ্রেপ্তার করেছে ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, গুভেয়ার অস্থায়ী নন-ইমিগ্রান্ট ভিসা বাতিল করার পরই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

অধ্যাপক গুভেয়া ব্রাজিলের সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক। তিনি সদ্য সমাপ্ত শরৎকালীন সেমিস্টারে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে হার্ভার্ডে পড়িয়েছেন। ডিএইচএস জানিয়েছে, গুভেয়া যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করতে সম্মত হয়েছেন। তবে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। হার্ভার্ডও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত অক্টোবরে অধ্যাপক গুভেয়ার বিরুদ্ধে ইহুদিদের ধর্মীয় উৎসবের আগের দিন ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের একটি সিনাগগের (ইহুদি উপাসনালয়) বাইরে পেলেট গান (ছররা গুলি) ছোড়ার অভিযোগ আনা হয়েছিল।

ম্যাসাচুসেটসের ব্রুকলাইনে টেম্পল বেথ জিয়নের (ইহুদি উপসনালয়) কাছে গত ১ অক্টোবর সন্ধ্যায় অস্ত্র হাতে এক ব্যক্তির উপস্থিতির খবর পায় পুলিশ। পরে সেখানে গিয়ে পুলিশ গুভেয়াকে আটক করে। ওই সময়টা ছিল ইহুদিদের পবিত্র উৎসব ইয়ম কিপুরের আগের দিন। পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুভেয়া দাবি করেছিলেন, তিনি কাছাকাছি ইঁদুর মারতে পেলেট গান ব্যবহার করছিলেন।

কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন ওই ঘটনাকে ‘ইহুদিবিদ্বেষী’ ঘটনা বলে আখ্যা দেয়। অন্যদিকে ট্রাম্প প্রশাসনের দাবির বিপরীতে টেম্পল বেথ জিয়ন জানায়, ঘটনাটি ইহুদিবিদ্বেষ থেকে ঘটেছে বলে মনে হয় না। ঘটনাটি তদন্তের পর ব্রুকলাইন পুলিশ বিভাগও একই মত দেয়। উপসনালয়টির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, পুলিশ তাদের জানিয়েছে, গুভেয়া জানতেন না যে তিনি যেখানে থাকেন, সেখানে একটি উপাসনালয় আছে বা ওই দিন সেখানে কোনো ধর্মীয় উৎসব চলছে।

তবে গত মাসে অবৈধভাবে পেলেট গান ছোড়ার অভিযোগে দোষ স্বীকার করেন গুভোয়া। এরপর তিনি ছয় মাসের প্রিট্রায়াল প্রবেশন (বিচার পূর্ববর্তী বিশেষ ব্যবস্থা) মেনে নেন। তখন তাঁর বিরুদ্ধে আনা শান্তিভঙ্গ, বিশৃঙ্খল আচরণ ও সম্পত্তি নষ্টের অভিযোগগুলো প্লিয়া ডিলের (ফৌজদারি আইনের একটি প্রক্রিয়া) অংশ হিসেবে বাতিল করা হয়।

কিন্তু গত বুধবার ছয় মাসের প্রিট্রায়াল প্রবেশন শেষ হওয়ার আগেই অস্থায়ী নন-ইমিগ্রান্ট ভিসা বাতিল করে অধ্যাপক গুভেয়াকে একটি ভিত্তিহীন অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এদিকে গুভেয়ার গ্রেপ্তারের খবর এমন সময়ে এল, যখন ট্রাম্প প্রশাসন হার্ভার্ডের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে বিশ্ববিদ্যালয়টির সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছাতে চাপ দিচ্ছে।

হার্ভার্ডের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে—বিশ্ববিদ্যালয়টি ইহুদিবিদ্বেষ মোকাবিলায় যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি এবং ক্যাম্পাসে ইহুদি শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এ নিয়ে হার্ভার্ড কিছু সরকারি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে মামলাও করেছে। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গত সেপ্টেম্বরে একজন বিচারক রায় দেন যে ট্রাম্প প্রশাসন বেআইনিভাবে হার্ভার্ডের জন্য বরাদ্দ করা ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি গবেষণা অনুদান বাতিল করেছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত