Ajker Patrika

আজকের পত্রিকা এক্সপ্লেইনার /আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তে সংঘর্ষের নেপথ্যে কী, সর্বশেষ যা জানা গেল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০২৫, ২০: ৫১
বেলুচিস্তানের চামান জেলার ইকরাম সীমান্তচৌকিতে পাকিস্তানি সেনাদের সতর্ক অবস্থান। ছবি: ইপিএ
বেলুচিস্তানের চামান জেলার ইকরাম সীমান্তচৌকিতে পাকিস্তানি সেনাদের সতর্ক অবস্থান। ছবি: ইপিএ

আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সীমান্তে ভয়াবহ সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। উভয় দেশই দাবি করছে—তারা একে অপরের সীমান্তচৌকি দখল ও ধ্বংস করেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে এটিই দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সীমান্ত সংঘর্ষ বলে মনে করা হচ্ছে।

তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ জানিয়েছেন, গতকাল শনিবার রাতে পাকিস্তানি বাহিনীর হামলার প্রতিশোধ নিতে আফগান বাহিনীর পাল্টা আক্রমণে অন্তত ৫৮ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছেন। এর ঠিক দুই দিন আগেই কাবুল ও পাকটিকা প্রদেশে বিমান হামলার ঘটনা ঘটেছিল।

অন্যদিকে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তাদের ২৩ জন সেনা শহীদ হয়েছেন। তবে পাল্টা হামলায় ২০০ জন তালেবান ও সহযোগী যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আফগান বাহিনীর হামলাকে ‘অযৌক্তিক গোলাগুলি’ বলে অভিহিত করেছেন।

তালেবান সরকার পাকিস্তানকে সাম্প্রতিক বিস্ফোরণের জন্য দায়ী করেছে। তবে ইসলামাবাদ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

সম্পর্কের টানাপোড়েন

পাকিস্তান অতীতে তালেবানদের সমর্থন দিয়েছিল এবং ১৯৯৬–২০০১ সালে প্রথম তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়া তিনটি দেশের একটি ছিল। কিন্তু ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর পাকিস্তানে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) গোষ্ঠীর হামলা বেড়ে গেলে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। ইসলামাবাদ অভিযোগ করছে, আফগানিস্তান টিটিপি যোদ্ধাদের আশ্রয় দিচ্ছে। তবে কাবুল বিষয়টি বরাবরই অস্বীকার করে আসছে।

সংঘর্ষে কী ঘটছে

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা বলছে, গতকাল রাত ১০টার দিকে আফগান বাহিনী পাকিস্তানের সীমান্তচৌকিতে হামলা চালায়। সংঘর্ষের স্থানগুলোর মধ্যে ছিল আঙুর আদা, বাজৌর, খুররম, দির, চিত্রাল (খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশ) ও বাহরাম চাহ (বেলুচিস্তান) অঞ্চল।

তালেবান মুখপাত্র মুজাহিদ জানান, আফগান বাহিনী ৫৮ জন পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা করেছে। ২৫টি সেনা ফাঁড়ি দখল করেছে এবং ৩০ জন সেনাকে আহত করেছে। কাবুলে এক সংবাদ সম্মেলনে মুজাহিদ বলেন, আফগানিস্তানের সব সীমান্ত ও ডি ফ্যাক্টো লাইনের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অবৈধ কার্যক্রম বহুলাংশে প্রতিরোধ করা হয়েছে।

আজ রোববার আফগানিস্তানের টোলোনিউজ চ্যানেল জানায়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কুনার প্রদেশের ২ হাজার ৬৪০ কিলোমিটার (১,৬৪০ মাইল) সীমান্তে (যা ঔপনিবেশিক আমলের ডুরান্ড লাইন নামেও পরিচিত) বেশ কয়েকটি এলাকায় ট্যাংক ও ভারী অস্ত্র মোতায়েন করছে।

অন্যদিকে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, এটি সীমান্ত অস্থিতিশীল করার নিন্দনীয় প্রচেষ্টা।

ইন্টার সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনস (আইএসপিআর) জানিয়েছে, তারা আত্মরক্ষার স্বার্থে পাল্টা হামলা চালায়। এতে বেশ কয়েকটি তালেবান ঘাঁটি ধ্বংস হয়েছে। এর পাশাপাশি তারা আফগান সীমান্তের অন্তত ২১টি সেনাচৌকি অস্থায়ীভাবে দখল করেছে। এ সংঘর্ষে ২৯ জন পাকিস্তানি সেনা আহত হন।

খুররম এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ভারী গোলাবর্ষণ থেমে গেছে। তবে এখনো থেমে থেমে গুলিবিনিময় চলছে।

কীভাবে সংঘর্ষের সূত্রপাত

গত বৃহস্পতিবার কাবুলের দুটি স্থানে ও পাকটিকা প্রদেশের একটি বাজারে বিমান হামলার ঘটনা ঘটে। এরপরই তালেবান সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের’ অভিযোগ তোলে। ইসলামাবাদ এ ঘটনার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার কথা সরাসরি অস্বীকার না করলেও তালেবান প্রশাসনকে টিটিপি নিয়ন্ত্রণে রাখার আহ্বান জানায়।

পাকিস্তানের একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, কাবুলে এ বিমান হামলার লক্ষ্য ছিল টিটিপি নেতা নুর ওয়ালি মেহসুদ। তাদের কাছে তথ্য ছিল, নুর ওয়ালি হামলার সময় একটি গাড়িতে ছিলেন। আল-জাজিরা যাচাই করতে পারেনি, ওই হামলার পর টিটিপি নেতা নুর ওয়ালি মেহসুদ বেঁচে আছেন কি না।

প্রতিনিয়ত বাড়ছে সহিংসতা

ইসলামাবাদভিত্তিক থিংকট্যাংক সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের (সিআরএসএস) তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কমপক্ষে ২ হাজার ৪১৪ জন নিহত হওয়ার ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে।

গত মাসে প্রকাশিত তাদের সর্বশেষ প্রতিবেদনে সিআরএসএস বলেছে, বর্তমান প্রবণতা চলতে থাকলে ২০২৫ সালটি পাকিস্তানের জন্য সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী বছর হতে পারে। গত বছর এ ধরনের হামলায় অন্তত ২ হাজার ৫৪৭ জন নিহত হয়েছিলেন।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, টিটিপির সাম্প্রতিক হামলার প্রতিশোধ নিতেই পাকিস্তান আফগান ভূখণ্ডে হামলা চালিয়েছে। পেশোয়ারভিত্তিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেহমুদ জান বাবর বলেন, তালেবান যদি টিটিপিকে নিয়ন্ত্রণে না রাখে, তাহলে পাকিস্তান সরাসরি তাদের ভূখণ্ডে হামলা চালাবে—এ বার্তাই দেওয়া হয়েছে। তবে তালেবানের ভেতরে টিটিপির প্রতি সহানুভূতি থাকায় কাবুল প্রশাসন সরাসরি পদক্ষেপ নিতে ভয় পাচ্ছে বলেও তিনি মনে করেন।

২০২২ সালের এপ্রিলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে এ ধরনের সশস্ত্র হামলা বেড়েছে। ইমরান খানের সরকার টিটিপিকে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে রাজি করাতে তালেবানকে যুক্ত করেছিল। যদিও ইমরান খানের মেয়াদেই যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেস্তে যায়, তবুও হামলার তীব্রতা কম ছিল।

সম্প্রতি ইসলামাবাদ আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে বিমান হামলা করায় সম্পর্ক আরও খারাপ হয়েছে। পাকিস্তান বলছে, টিটিপি যোদ্ধারা যেসব আস্তানা ব্যবহার করে, তারা সেগুলোকেই লক্ষ্যবস্তু করছে। কিন্তু তালেবান সরকারের দাবি, পাকিস্তানের এমন হামলায় তাদের ‘সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন’ হয়েছে।

এ ছাড়া পাকিস্তান হাজার হাজার আফগান শরণার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সম্পর্ক খারাপ হয়েছে। বহু দশকের সংঘাত থেকে পালিয়ে আসা কমপক্ষে ৩০ লাখ আফগান শরণার্থী পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছিল।

গতকাল ভারতের উত্তর প্রদেশের দেওবন্দে তালেবান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। ছবি: রয়টার্স
গতকাল ভারতের উত্তর প্রদেশের দেওবন্দে তালেবান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। ছবি: রয়টার্স

দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ গতকাল রাতে আফগান হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের সেনারা জবাব দিয়েছে এবং আফগান বাহিনীর একাধিক সীমান্তচৌকি ধ্বংস করেছে।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি বলেছেন, আফগান বাহিনীর হামলা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। তিনি এক্সে এক পোস্টে লেখেন, ‘আফগানিস্তান আগুন ও রক্তের খেলা খেলছে।’

অন্যদিকে আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এনায়াতুল্লাহ খোয়ারাজমি বলেন, ‘আমাদের আক্রমণ ছিল পাল্টা প্রতিক্রিয়া এবং তা মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। পাকিস্তান যদি আবার আমাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে, আমরা কঠোর জবাব দেব।’

আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়া

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি ইতিমধ্যে উভয় পক্ষকে সংযমের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, দুই দেশের স্থিতিশীলতা পুরো অঞ্চলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

এদিকে কাতার, সৌদি আরব ও চীনও সংলাপের মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছে। সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা দুই দেশকে সংযম ও সংলাপের আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।’

ভারত এখনো এ সংঘর্ষের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি বর্তমানে ভারতে সফরে আছেন। বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের এই কূটনৈতিক সম্পৃক্ততাও পাকিস্তানের উত্তেজনা বাড়ানোর একটি কারণ হতে পারে।

পরিস্থিতি কি আরও ভয়াবহ হবে?

পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত আসিফ দুররানি আল-জাজিরাকে বলেন, সংঘাত আরও বড় আকারে গড়ানোর সম্ভাবনা খুব কম, কারণ, আফগানিস্তানের প্রচলিত যুদ্ধক্ষমতা পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনীয় নয়।

কাবুলভিত্তিক বিশ্লেষক ইব্রাহিম বাহিস বলেন, উভয় দেশই এখন উত্তেজনা কমাতে আগ্রহী। পাকিস্তান ইতিমধ্যে অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় ব্যস্ত আর আফগান সরকারও অভ্যন্তরীণ সমর্থন ধরে রাখতে চাইছে।

তবে দুররানি সতর্ক করে বলেন, যত দিন পর্যন্ত তালেবান সরকার টিটিপিকে আশ্রয় দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করবে না, তত দিন দুই দেশের সম্পর্ক উত্তপ্তই থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে তুরস্কের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ১২: ৩৬
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: সিএনএন
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: সিএনএন

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তাঁর প্রশাসনের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন ইসরায়েলি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে তুরস্ক।

শুক্রবার ইস্তাম্বুলের প্রসিকিউটর অফিসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই তালিকায় ৩৭ জনের নাম রয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ, জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির এবং সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জামির। সম্পূর্ণ তালিকা এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

তুরস্কের অভিযোগ, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের এসব কর্মকর্তা ‘গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ পরিকল্পিতভাবে সংঘটিত’ করেছেন। গাজাকে অবরুদ্ধ করা হয়েছে এবং মানবিক সহায়তা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ১৭ অক্টোবর আল-আহলি ব্যাপটিস্ট হাসপাতালে হামলায় ৫০০ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন। এ ছাড়া ২০২৪ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি ইসরায়েলি সৈন্যরা ইচ্ছাকৃতভাবে চিকিৎসা সরঞ্জাম নষ্ট করেছিল।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, গত মার্চে গাজা উপত্যকায় তুরস্ক নির্মিত তুর্কি-ফিলিস্তিনি মৈত্রী হাসপাতালটি ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংস হয়।

অন্যদিকে ইসরায়েল এই পরোয়ানাকে ‘জনসংযোগের কৌশল’ বলে নিন্দা করেছে। ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিওন সার ‘এক্স’ প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, ‘স্বৈরাচারী এরদোয়ানের (তুরস্কের প্রেসিডেন্ট) সাম্প্রতিক জনসংযোগের কৌশল ইসরায়েল দৃঢ়ভাবে এবং ঘৃণার সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করছে।’

এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। তারা এটিকে একটি ‘প্রশংসনীয় পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে। হামাসের মতে, এটি ‘ন্যায়বিচার, মানবতা ও ভ্রাতৃত্বের মূল্যবোধের প্রতি তুরস্কের জনগণ ও তাদের নেতাদের আন্তরিক অবস্থানকে নিশ্চিত করে, যা তাঁদের নিপীড়িত ফিলিস্তিনি জনগণের সঙ্গে যুক্ত করেছে।’

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) নেতানিয়াহু এবং তাঁর সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রায় এক বছর পর তুরস্ক এই ঘোষণা দিল। গত বছর আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে দক্ষিণ আফ্রিকার মামলাতেও যোগ দিয়েছিল তুরস্ক।

গাজায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া ইসরায়েলের অভিযানে কমপক্ষে ৬৮ হাজার ৮৭৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং এক লাখ ৭০ হাজার ৬৭৯ জন আহত হয়েছেন। বর্তমানে ধ্বংসস্তূপে পরিণত গাজায় গত ১০ অক্টোবর থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আঞ্চলিক শান্তি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এক ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মার্কিন সরকারে অচলাবস্থা: রাজনৈতিক ‘দাবার ঘুঁটি’ বিমানকর্মীরা, একদিনে ৫০০০ ফ্লাইট বাতিল, বিলম্ব

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
যুক্তরাষ্ট্রে হাজার হাজার ফ্লাইট বন্ধে বিপাকে পড়েছেন অসংখ্য যাত্রী। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রে হাজার হাজার ফ্লাইট বন্ধে বিপাকে পড়েছেন অসংখ্য যাত্রী। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সরকারের দীর্ঘমেয়াদি অচলাবস্থার (শাটডাউন) সরাসরি প্রভাব পড়ল দেশের আকাশপথে। জরুরি নির্দেশে ৪০টি বৃহত্তম বিমানবন্দরে বিমান চলাচল কমানোর সরকারি সিদ্ধান্তের প্রথম দিনেই ৫ হাজারের বেশি মার্কিন ফ্লাইট বাতিল অথবা বিলম্বিত হয়েছে। বিনা বেতনে কাজ করতে বাধ্য হওয়া এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার ও অন্যান্য কেন্দ্রীয় কর্মীদের ওপর চাপ কমাতে এই নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

ঐতিহাসিক এই অচলাবস্থার মধ্যে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার (এটিসি) ও অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় কর্মীরা বেতন ছাড়াই কাজ করে চলেছেন। তবে বেতন না পাওয়ায় কর্মীদের মধ্যে অসুস্থতা এবং জীবিকা নির্বাহের জন্য অন্য কাজ খুঁজে নেওয়ার প্রবণতা বাড়ায় কর্মীদের উপস্থিতি মারাত্মকভাবে কমে গেছে। ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) পরিস্থিতি সামাল দিতে জরুরি নির্দেশ জারি করে প্রাথমিকভাবে ৪ শতাংশ ফ্লাইট কমানোর নির্দেশ দিয়েছে, যা আগামী সপ্তাহের মধ্যে ১০ শতাংশে উন্নীত করা হবে।

নিউইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেস, শিকাগো এবং ওয়াশিংটন ডিসির মতো প্রধান বিমানবন্দরগুলোতে এই নিয়ম কার্যকর হয়েছে। এফএএ জানিয়েছে, কর্মীদের চরম ক্লান্তির মধ্যেও যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পরিবহন মন্ত্রী শন ডাফি বিবিসিকে জানান, আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলোর কারণে আপাতত আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে এই কাটছাঁটের প্রভাব পড়েনি। তবে তিনি ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সতর্ক করেছেন, অচলাবস্থা চলতে থাকলে ফ্লাইট কমানোর হার ২০ শতাংশেও পৌঁছতে পারে।

এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলাররা, যারা দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম এই অচলাবস্থার মধ্যে বেতন ছাড়াই কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন, তাঁদের পরিস্থিতি ভয়াবহ। ন্যাশনাল এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নিক ড্যানিয়েলস ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, কন্ট্রোলারদের রাজনৈতিক অচলাবস্থার ‘দাবার ঘুঁটি’ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা কাজ চালিয়ে যাব, কিন্তু নিজেদের পকেটে টাকা ঢোকাতে পারব না। সরকারকে চালু করার জন্য কংগ্রেসকে উদ্যোগ নিতে হবে।’

বিমানযাত্রীরা চরম দুর্ভোগের শিকার। ওয়াশিংটন ডিসি থেকে আটলান্টা যাওয়ার পথে জো সুলিভান নামে এক যাত্রী জানতে পারেন তাঁর ফ্লাইট বাতিল হয়েছে, ফলে তাঁকে ১২ ঘণ্টা পর অন্য ফ্লাইটে রি-বুক করতে হয়। এর কারণে তিনি কাজিনের বিয়ের আগের দিনের সব পরিকল্পনা বাতিল করতে বাধ্য হন।

আরিয়ানা জাকোভলজেভিচ, কেন্দ্র সরকারের এখন বেতনহীন কর্মী। তিনি হতাশ হয়ে বলেন, ‘আমি এই মাত্র কলেজ থেকে পাস করেছি। এটাই ছিল আমার প্রথম চাকরি। ভাবিনি এমন হবে।’ যাত্রী বেন সসেদা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘বেতনহীন কর্মীদের হাতে জীবন সঁপে দেওয়া মানসিক চাপ সৃষ্টি করছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের থেকে সেরা পরিষেবা আশা করছি, কিন্তু তারা তাদের পরিবারের মুখে খাবার জোগানোর চিন্তা করছেন। সরকারের উচিত দ্রুত এর সমাধান করা।’

এদিকে সরকারের অচলাবস্থার ৩৯ তম দিনেও সংকট কাটেনি। রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে সমঝোতা হলেও তা বাস্তবে রূপায়িত হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। ডেমোক্র্যাটরা স্বাস্থ্যসেবা ভর্তুকি সম্প্রসারণের দাবিতে অনড়, রিপাবলিকানরা এটি মেনে নিতে রাজি নন।

অপর দিকে, সিনেট মেজরিটি লিডার জন থুন জানিয়েছেন, একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য কাজ সপ্তাহান্তে চলবে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিনেটের ‘ফিলিবাস্টার’ নিয়ম বাতিল করে ডেমোক্র্যাটদের সমর্থন ছাড়াই বিল পাস করার জন্য রিপাবলিকানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। যদিও এই প্রস্তাবে উভয় দলের অধিকাংশ সিনেটরের সমর্থন নেই।

এই অচলাবস্থার কারণে শুধু আকাশপথেই নয়, খাদ্য সহায়তা কর্মসূচিসহ সারা দেশে নজিরবিহীন ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়েছে। কবে এই অচলাবস্থা শেষ হবে, তার কোনো স্পষ্ট ইঙ্গিত এখনো পাওয়া যায়নি।

সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়েছেন, এই অচলাবস্থার মধ্যে সেনাবাহিনীর বেতন দেওয়ার জন্য এক বন্ধু তাঁকে বিপুল অর্থ অনুদান দিয়েছেন। কিন্তু সেই বন্ধুর পরিচয় তিনি প্রকাশ করেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ডায়াবেটিস, স্থূলতা ও হৃদ্‌রোগ থাকলে বাতিল হতে পারে মার্কিন ভিসার আবেদন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ১১: ৫৫
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের জন্য ভিসাপ্রার্থীদের মধ্যে যাঁদের ডায়াবেটিস বা স্থূলতার মতো স্বাস্থ্য সমস্যা আছে, তাঁদের আবেদন বাতিল হতে পারে—এমন একটি নির্দেশনা জারি করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর (স্টেট ডিপার্টমেন্ট) নতুন এ নির্দেশিকা জারি করে, যেখানে বলা হয়েছে, এ ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত আবেদনকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘পাবলিক চার্জ’ বা অর্থনৈতিকভাবে বোঝা হয়ে উঠতে পারেন এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ক্ষয় করতে পারেন। তাই যুক্তরাষ্ট্রে আসার আগে এসব বিষয় যাচাই করতে হবে।

ওয়াশিংটনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম কেএফএফ হেলথ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ নির্দেশনা মার্কিন দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোতে নোটিশ আকারে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে মার্কিন ভিসাপ্রক্রিয়ায় সংক্রামক রোগ, টিকাদানের ইতিহাস, মানসিক অবস্থা ও শারীরিক সুস্থতার মতো বিষয়গুলোই বিবেচনায় নেওয়া হতো। তবে নতুন এই নীতিমালায় আরও কিছু স্বাস্থ্য সমস্যাকে যুক্ত করা হয়েছে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আবেদনকারীর স্বাস্থ্য বিবেচনা করতে হবে। কিছু রোগের (যেমন হৃদ্‌রোগ, শ্বাসযন্ত্র, ক্যানসার, ডায়াবেটিস, মেটাবলিক, স্নায়বিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা) চিকিৎসার জন্য কয়েক লাখ ডলার পর্যন্ত খরচ হতে পারে। এ ক্ষেত্রে ভিসা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আবেদনকারী চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে সক্ষম কি না, তা মূল্যায়ন করতে হবে।

অলাভজনক আইনি সহায়তা সংস্থা ক্যাথলিক লিগ্যাল ইমিগ্রেশন নেটওয়ার্কের সিনিয়র অ্যাটর্নি চার্লস হুইলার বলেছেন, যদিও এ নির্দেশনা সব ধরনের ভিসার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, তবে এটি মূলত স্থায়ী বসবাসের (পারমানেন্ট রেসিডেন্সি) আবেদনকারীদের ওপরই প্রয়োগ করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

হুইলার আরও বলেন, চিকিৎসাসংক্রান্ত বিষয়গুলো মূল্যায়নের ক্ষমতা ভিসা কর্মকর্তাদের ওপর ন্যস্ত করাটা উদ্বেগজনক। তাঁরা চিকিৎসক নন, এ ক্ষেত্রে তাঁদের কোনো অভিজ্ঞতা নেই আর তাঁদের নিজস্ব ধারণা বা পক্ষপাতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া অনুচিত।

স্টেট ডিপার্টমেন্টের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, আবেদনকারীর কি আজীবন চিকিৎসার খরচ বহনের মতো পর্যাপ্ত আর্থিক সামর্থ্য আছে, যাতে তিনি সরকারি সহায়তা বা দীর্ঘমেয়াদি প্রতিষ্ঠানভিত্তিক সেবার প্রয়োজন ছাড়াই জীবন যাপন করতে পারেন? বিষয়টি অবশ্যই যাচাই করতে হবে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, আবেদনকারীর পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্যের দিকও বিবেচনা করতে হবে। যেমন সন্তান বা প্রবীণ অভিভাবকের কোনো শারীরিক অক্ষমতা, দীর্ঘস্থায়ী রোগ বা বিশেষ যত্নের প্রয়োজন আছে কি না। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কোনো নির্ভরশীল সদস্যের (ডিপেনডেন্ট) এমন কোনো শারীরিক বা মানসিক অবস্থা আছে কি না, যার কারণে আবেদনকারীর কাজে কোনো প্রভাব পড়তে পারে?

জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিবাসন আইনজীবী সোফিয়া জেনোভেস বলেন, এ নির্দেশিকায় আবেদনকারীদের চিকিৎসা ইতিহাসের ভিত্তিতে তাঁদের চিকিৎসা ব্যয়ের সম্ভাবনা ও যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থানের সক্ষমতা যাচাই করতে ভিসা কর্মকর্তাদের উৎসাহিত করা হয়েছে; যাতে তাঁরা বুঝতে পারেন, যুক্তরাষ্ট্রে আসার আবেদনকারী এ ধরনের কোনো জটিলতায় না পড়েন।

সার্বিকভাবে, স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত আবেদনকারীরা যুক্তরাষ্ট্রে এসে যেন ‘পাবলিক চার্জ’ বা অর্থনৈতিকভাবে বোঝা হয়ে না ওঠেন, তা এড়াতে এই নতুন নিয়ম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাংলাদেশ সীমান্তে সেনাসমাবেশ বাড়াচ্ছে ভারত, চিকেনস নেকের কাছে নতুন তিন গ্যারিসন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ১০: ৩৫
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে নতুন তিনটি সক্রিয় সেনাঘাঁটি স্থাপন করেছে ভারত। সিলিগুড়ি করিডর বা ‘চিকেনস নেক’ নামে পরিচিত এই অঞ্চল কৌশলগতভাবে ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ধারণা করা হচ্ছে, এর নিরাপত্তা বাড়াতেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসাম-বাংলাদেশ সীমান্তের ধুবড়ির কাছে বামুনি, বিহারের কিশনগঞ্জ এবং পশ্চিমবঙ্গের চোপড়ায় এই তিন নতুন ঘাঁটি তৈরি করা হয়েছে। এই পদক্ষেপ ভারতের পূর্ব সীমান্তে প্রতিরক্ষা জোরদার করার বড় পরিকল্পনার অংশ, যার লক্ষ্য সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো, ট্যাকটিক্যাল ঘাটতি পূরণ করা এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানানোর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

উত্তরবঙ্গের ২২ কিলোমিটার প্রশস্ত সিলিগুড়ি করিডর ভারতের মূল ভূখণ্ডকে সাতটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত করে। এই অঞ্চল চারদিক থেকে নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ ও চীনের ঘেরা।

চিকেনস নেককে অনেকে ভারতের দুর্বল অংশ মনে করলেও ভারতীয় সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা একে দেশের ‘সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা করিডর’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট এক সেনা সূত্রের ভাষায়, ‘সিলিগুড়ি করিডর বহুস্তরীয় নিরাপত্তাবলয়ে সুরক্ষিত। নতুন ঘাঁটিগুলো আমাদের দ্রুত চলাচল, লজিস্টিকস এবং রিয়েল টাইম গোয়েন্দা তথ্য সংহত করার ক্ষমতা আরও বাড়াবে।’

এর আগে ভারতীয় সেনাপ্রধানও মন্তব্য করেছিলেন, ‘চিকেনস নেককে আমি দুর্বল অংশ হিসেবে দেখি না। এটি আমাদের সবচেয়ে শক্তিশালী অঞ্চল। কারণ, পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থানরত আমাদের সব বাহিনী এখানে একত্রে মোতায়েন করা যায়।’

জানা গেছে, সিলিগুড়ির কাছে সুখনায় অবস্থিত ত্রি-শক্তি কর্পস (৩৩-কর্পস) এই করিডরের প্রতিরক্ষা তদারক করে।

ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আকাশপথে করিডরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে পশ্চিমবঙ্গের হাশিমারা বিমানঘাঁটিতে মোতায়েন রাফাল যুদ্ধবিমান। এ ছাড়া মিগ সিরিজের বিমান এবং ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র রেজিমেন্টও রয়েছে।

এ ছাড়া ভারত এই অঞ্চলে একটি উন্নত তিনস্তরের বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা স্থাপন করেছে, যেখানে রয়েছে রাশিয়া থেকে আনা এস-৪০০ সারফেস-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র, ইসরায়েল ও ডিআরডিওর যৌথভাবে তৈরি এমআরএসএএম সিস্টেম এবং দেশীয় আকাশ ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা। এই তিনটি মিলেই পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব দিক থেকে আসা বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ প্রতিরক্ষা কাভারেজ দেয়।

ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই অঞ্চলে এস-৪০০ সিস্টেম মূলত চীন বা অন্য শত্রুপক্ষের বিমান অনুপ্রবেশ ঠেকানোর উদ্দেশ্যে স্থাপন করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত