
ইন্দোনেশিয়ার উত্তর সুমাত্রা প্রদেশের হালিমা নাসুতিয়ন একসময় ভাবতেন, তাঁর জীবনে সবকিছুই আছে। বছরের পর বছর, তিনি এবং তাঁর স্বামী আগুস সাপুত্রা বিয়ে, পড়াশোনা এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠান জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন করেও অর্থ জমাতে পারতেন। পরিবারের ভাইবোনদের ভরণপোষণের ব্যয় বহন করেও প্রতি মাসে তাঁরা প্রায় ৩০ লাখ রুপাইয়া বা ১ হাজার ৯১৭ ডলার সমপরিমাণ অর্থ উপার্জন করতেন।
মাসিক আয়ের এক-চতুর্থাংশ ব্যয় করেও হালিমা-আগুস দম্পতি ইন্দোনেশিয়ার উচ্চমধ্যবিত্ত শ্রেণির সদস্য ছিলেন। দেশটির সরকারি হিসাবে, যারা মাসে অন্তত ২০ লাখ রুপাইয়া (১২৭ ডলার) থেকে ৯ দশমিক ৯৯ লাখ রুপাইয়া (৬৩৮ ডলার) পর্যন্ত ব্যয় করতে পারে তারাই মধ্যবিত্ত।
কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারির পর সবকিছু বদলে গেছে। ধীরে ধীরে ইন্দোনেশিয়ার মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। হালিমা নাসুতিয়ন আল-জাজিরাকে বলেন, ‘আমরা সবই হারিয়েছে (কোভিড মহামারির কারণে)।’ সেই মহামারির পর পেরিয়ে গেছে আরও কয়েক বছর। কিন্তু এখনো হালিমা-আগুস দম্পতি খাবি খাচ্ছেন তাদের আগের অবস্থানে ফিরে যেতে।
হালিমা-আগুস দম্পতি হলেন ইন্দোনেশিয়ার সেই লাখো পরিবারের একটি যারা মধ্যবিত্ত শ্রেণি থেকে বিচ্যুত হয়েছেন। দেশটির কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের সংখ্যা ছিল ৫ কোটি ৭৩ লাখ। চলতি বছর তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৭৮ লাখে। তবে উদীয়মান মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংখ্যা একই সময়ে ১২ কোটি ৮৮ লাখ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৩ কোটি ৭৫ লাখ। এই দুই শ্রেণি ইন্দোনেশিয়ার ২৭ কোটি ৭০ লাখ মানুষের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব এবং সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা এই পতনের প্রধান কারণ। জাতীয় দারিদ্র্য হ্রাস ত্বরান্বিতকরণ টিমের নীতি বিশেষজ্ঞ এগা কুরনিয়া ইয়াজিদ বলেন, ‘বিভিন্ন আন্তঃসংযুক্ত কারণ মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংকোচনের জন্য দায়ী। মধ্যবিত্তরা মূলত কর রাজস্বে বড় অবদান রাখে। কিন্তু তারা খুবই সীমিত সামাজিক সহায়তা পায়। এই সহায়তার বেশির ভাগই চাকরি নিরাপত্তা এবং জাতীয় স্বাস্থ্য বিমার মতো আনুষ্ঠানিক কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়।’ তিনি বলেন, ‘নগদ অর্থ সহায়তা ও জ্বালানি ভর্তুকির মতো অন্যান্য সহায়তা কার্যক্রমে প্রায়ই ভুলভ্রান্তি হয়। এসব সহায়তা সঠিকভাবে এই শ্রেণির কাছে পৌঁছায় না।’
নাসুতিয়ন ও তাঁর স্বামী মহামারির সময় সরকারি সহায়তার অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। নুসাতিয়ন বলেন, ‘মহামারির সময় কাজ হারানোর পর কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে আমরা কোনো সাহায্য পাইনি। গ্রামের স্থানীয় কার্যালয় থেকে প্রতি মাসে মাত্র ৩ লাখ রুপিয়া (প্রায় ১৯ ডলার) সহায়তা পেয়েছি, যা কেবল নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতেই বেরিয়ে যেত।’
মহামারি শেষে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশের তালিকায় ১০ নম্বরে থাকা ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতি স্থিতিশীল গতিতে এগিয়ে যেতে শুরু করে। যেখানে দেশটির বার্ষিক জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ৫ শতাংশ। অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতিও বৈশ্বিক বাণিজ্যের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি মন্থর হওয়ায় দেশটির বাণিজ্যও চাপে পড়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতিবিদ ইয়াজিদ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও জাপানের মতো প্রধান বাণিজ্য অংশীদাররা সংকোচনের মধ্যে রয়েছে। এটি পিএমআই (পারচেজিং ম্যানেজারস ইনডেক্স) সূচকে প্রতিফলিত হচ্ছে। ফলে ইন্দোনেশিয়ার পণ্যের আন্তর্জাতিক চাহিদা কমে যাচ্ছে। এটি মধ্যবিত্ত শ্রেণির ওপর আরও চাপ তৈরি করছে।’
আন্তর্জাতিক থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (সিএসআইএস) অর্থনৈতিক গবেষক আদিনোভা ফাউরি বলেন, ‘ইন্দোনেশিয়ার মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংকট গভীরতর কাঠামোগত সমস্যাগুলোকেই তুলে ধরে। বিশেষ করে, দেশটিতে শিল্প খাতের অবক্ষয়ের প্রভাব স্পষ্ট।’
ফাউরি আরও বলেন, ‘যেখানে একসময় শিল্প খাত অধিকাংশ শ্রমিককে নিয়োজিত করত, এখন আর তা সম্ভব হচ্ছে না। শ্রমিকদের বড় একটি অংশ সেবা খাতে স্থানান্তরিত হয়েছে। তবে এর বেশির ভাগই অনানুষ্ঠানিক খাত, যেখানে বেতন কম এবং সামাজিক সুরক্ষা নেই বললেই চলে।’
শ্রমিকদের অবস্থা এবং উৎপাদনশীলতা উন্নয়ন জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন ফাউরি। তিনি বলেন, ‘ভিয়েতনাম বা বাংলাদেশের মতো দেশের সঙ্গে শুধু কম মজুরির ভিত্তিতে প্রতিযোগিতা সম্ভব নয়, বরং শ্রমিকদের অবস্থা ও নিয়মকানুন উন্নত করতে হবে। এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো নতুন বাজারে প্রবেশ করা সম্ভব হবে, যেখানে উন্নত শ্রম মানদণ্ডকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।’
ফাউরি আরও বলেন, ‘উৎপাদনশীলতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শুধু দক্ষতার দিক থেকে নয়, শ্রমিকদের স্বাস্থ্যগত অবস্থার দিক থেকেও। অন্যান্য দেশ থেকে শিখতে হবে। গবেষণা ও উন্নয়নে বিনিয়োগ এবং উদ্ভাবনের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। ”
এদিকে, গত মাসে ইন্দোনেশিয়ার অষ্টম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন প্রাবোও সুবিয়ান্তো। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় প্রাবোও ৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং দারিদ্র্য ও শিশুদের অপুষ্টি দূর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এ জন্য তিনি স্কুলে বিনা মূল্যে খাবারের কর্মসূচি চালু করার পরিকল্পনার কথা বলেন।
কিন্তু প্রতিশ্রুতি আর বাস্তবতা ভিন্ন। কারণ, কোভিডের পর দুই বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও নাসুতিয়ন এবং তাঁর পরিবার এখনো তাদের বিপর্যস্ত জীবন গুছানোর চেষ্টা করে চলেছেন। তাঁরা তাদের পরিবারের জন্য কিস্তিতে ফার্নিচার ও অন্যান্য সামগ্রী কিনেছিলেন। কিন্তু এসব কেনার পরই তাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তারা আর্থিক সমস্যায় পড়ে গেছেন।
নাসুতিয়ন বলেন, ‘আমরা আমাদের গাড়ি, জমি বিক্রি করেছি এবং বাড়ি বন্ধক দিয়েছি। সব শেষ। আমাদের ব্যবসা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।’ এরপর, নাসুতিয়নের স্বামী জীবিকার তাগিদে অন্য একটি কাজ নিতে বাধ্য হন। তিনি পাম ফল সংগ্রহের কাজে যোগ দেন। মাসিক আয় মাত্র ২৮ লাখ রুপাইয়া (প্রায় ১৭৯ ডলার)।
নাসুতিয়ন নিজেও একটি পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ নেন। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত, সপ্তাহে ছয় দিন কাজ করেন। মাসিক বেতন মাত্র ১০ লাখ রুপাইয়া। বর্তমানে এই দম্পতির মাসিক খরচ দুই মিলিয়ন রুপাইয়ার (প্রায় ১২৭ ডলার) মধ্যে সীমাবদ্ধ। এই পরিমাণ খরচ মধ্যবিত্তের জীবনের জন্য ন্যূনতম সীমা বলে বিবেচিত ইন্দোনেশিয়ায়।
নাসুতিয়ন বলেন, ‘আমাদের জীবন এখন একেবারেই ভিন্ন। আমরা এখন আগের মতো স্থিতিশীল নই। আবার ব্যবসা শুরু করতে পুঁজির প্রয়োজন, কিন্তু সঞ্চয় করার মতো অর্থ নেই।’ তিনি বলেন, ‘আমরা কোনোভাবে বেঁচে থাকার মতো অর্থ উপার্জন করছি। জীবন চড়াই-উতরাইয়ে ভরা। আশা করি, পরিস্থিতি একদিন বদলাবে। আল্লাহ ভরসা।’

ইন্দোনেশিয়ার উত্তর সুমাত্রা প্রদেশের হালিমা নাসুতিয়ন একসময় ভাবতেন, তাঁর জীবনে সবকিছুই আছে। বছরের পর বছর, তিনি এবং তাঁর স্বামী আগুস সাপুত্রা বিয়ে, পড়াশোনা এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠান জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন করেও অর্থ জমাতে পারতেন। পরিবারের ভাইবোনদের ভরণপোষণের ব্যয় বহন করেও প্রতি মাসে তাঁরা প্রায় ৩০ লাখ রুপাইয়া বা ১ হাজার ৯১৭ ডলার সমপরিমাণ অর্থ উপার্জন করতেন।
মাসিক আয়ের এক-চতুর্থাংশ ব্যয় করেও হালিমা-আগুস দম্পতি ইন্দোনেশিয়ার উচ্চমধ্যবিত্ত শ্রেণির সদস্য ছিলেন। দেশটির সরকারি হিসাবে, যারা মাসে অন্তত ২০ লাখ রুপাইয়া (১২৭ ডলার) থেকে ৯ দশমিক ৯৯ লাখ রুপাইয়া (৬৩৮ ডলার) পর্যন্ত ব্যয় করতে পারে তারাই মধ্যবিত্ত।
কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারির পর সবকিছু বদলে গেছে। ধীরে ধীরে ইন্দোনেশিয়ার মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। হালিমা নাসুতিয়ন আল-জাজিরাকে বলেন, ‘আমরা সবই হারিয়েছে (কোভিড মহামারির কারণে)।’ সেই মহামারির পর পেরিয়ে গেছে আরও কয়েক বছর। কিন্তু এখনো হালিমা-আগুস দম্পতি খাবি খাচ্ছেন তাদের আগের অবস্থানে ফিরে যেতে।
হালিমা-আগুস দম্পতি হলেন ইন্দোনেশিয়ার সেই লাখো পরিবারের একটি যারা মধ্যবিত্ত শ্রেণি থেকে বিচ্যুত হয়েছেন। দেশটির কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের সংখ্যা ছিল ৫ কোটি ৭৩ লাখ। চলতি বছর তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৭৮ লাখে। তবে উদীয়মান মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংখ্যা একই সময়ে ১২ কোটি ৮৮ লাখ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৩ কোটি ৭৫ লাখ। এই দুই শ্রেণি ইন্দোনেশিয়ার ২৭ কোটি ৭০ লাখ মানুষের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব এবং সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা এই পতনের প্রধান কারণ। জাতীয় দারিদ্র্য হ্রাস ত্বরান্বিতকরণ টিমের নীতি বিশেষজ্ঞ এগা কুরনিয়া ইয়াজিদ বলেন, ‘বিভিন্ন আন্তঃসংযুক্ত কারণ মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংকোচনের জন্য দায়ী। মধ্যবিত্তরা মূলত কর রাজস্বে বড় অবদান রাখে। কিন্তু তারা খুবই সীমিত সামাজিক সহায়তা পায়। এই সহায়তার বেশির ভাগই চাকরি নিরাপত্তা এবং জাতীয় স্বাস্থ্য বিমার মতো আনুষ্ঠানিক কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়।’ তিনি বলেন, ‘নগদ অর্থ সহায়তা ও জ্বালানি ভর্তুকির মতো অন্যান্য সহায়তা কার্যক্রমে প্রায়ই ভুলভ্রান্তি হয়। এসব সহায়তা সঠিকভাবে এই শ্রেণির কাছে পৌঁছায় না।’
নাসুতিয়ন ও তাঁর স্বামী মহামারির সময় সরকারি সহায়তার অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। নুসাতিয়ন বলেন, ‘মহামারির সময় কাজ হারানোর পর কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে আমরা কোনো সাহায্য পাইনি। গ্রামের স্থানীয় কার্যালয় থেকে প্রতি মাসে মাত্র ৩ লাখ রুপিয়া (প্রায় ১৯ ডলার) সহায়তা পেয়েছি, যা কেবল নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতেই বেরিয়ে যেত।’
মহামারি শেষে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশের তালিকায় ১০ নম্বরে থাকা ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতি স্থিতিশীল গতিতে এগিয়ে যেতে শুরু করে। যেখানে দেশটির বার্ষিক জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ৫ শতাংশ। অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতিও বৈশ্বিক বাণিজ্যের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি মন্থর হওয়ায় দেশটির বাণিজ্যও চাপে পড়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতিবিদ ইয়াজিদ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও জাপানের মতো প্রধান বাণিজ্য অংশীদাররা সংকোচনের মধ্যে রয়েছে। এটি পিএমআই (পারচেজিং ম্যানেজারস ইনডেক্স) সূচকে প্রতিফলিত হচ্ছে। ফলে ইন্দোনেশিয়ার পণ্যের আন্তর্জাতিক চাহিদা কমে যাচ্ছে। এটি মধ্যবিত্ত শ্রেণির ওপর আরও চাপ তৈরি করছে।’
আন্তর্জাতিক থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (সিএসআইএস) অর্থনৈতিক গবেষক আদিনোভা ফাউরি বলেন, ‘ইন্দোনেশিয়ার মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংকট গভীরতর কাঠামোগত সমস্যাগুলোকেই তুলে ধরে। বিশেষ করে, দেশটিতে শিল্প খাতের অবক্ষয়ের প্রভাব স্পষ্ট।’
ফাউরি আরও বলেন, ‘যেখানে একসময় শিল্প খাত অধিকাংশ শ্রমিককে নিয়োজিত করত, এখন আর তা সম্ভব হচ্ছে না। শ্রমিকদের বড় একটি অংশ সেবা খাতে স্থানান্তরিত হয়েছে। তবে এর বেশির ভাগই অনানুষ্ঠানিক খাত, যেখানে বেতন কম এবং সামাজিক সুরক্ষা নেই বললেই চলে।’
শ্রমিকদের অবস্থা এবং উৎপাদনশীলতা উন্নয়ন জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন ফাউরি। তিনি বলেন, ‘ভিয়েতনাম বা বাংলাদেশের মতো দেশের সঙ্গে শুধু কম মজুরির ভিত্তিতে প্রতিযোগিতা সম্ভব নয়, বরং শ্রমিকদের অবস্থা ও নিয়মকানুন উন্নত করতে হবে। এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো নতুন বাজারে প্রবেশ করা সম্ভব হবে, যেখানে উন্নত শ্রম মানদণ্ডকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।’
ফাউরি আরও বলেন, ‘উৎপাদনশীলতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শুধু দক্ষতার দিক থেকে নয়, শ্রমিকদের স্বাস্থ্যগত অবস্থার দিক থেকেও। অন্যান্য দেশ থেকে শিখতে হবে। গবেষণা ও উন্নয়নে বিনিয়োগ এবং উদ্ভাবনের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। ”
এদিকে, গত মাসে ইন্দোনেশিয়ার অষ্টম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন প্রাবোও সুবিয়ান্তো। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় প্রাবোও ৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং দারিদ্র্য ও শিশুদের অপুষ্টি দূর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এ জন্য তিনি স্কুলে বিনা মূল্যে খাবারের কর্মসূচি চালু করার পরিকল্পনার কথা বলেন।
কিন্তু প্রতিশ্রুতি আর বাস্তবতা ভিন্ন। কারণ, কোভিডের পর দুই বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও নাসুতিয়ন এবং তাঁর পরিবার এখনো তাদের বিপর্যস্ত জীবন গুছানোর চেষ্টা করে চলেছেন। তাঁরা তাদের পরিবারের জন্য কিস্তিতে ফার্নিচার ও অন্যান্য সামগ্রী কিনেছিলেন। কিন্তু এসব কেনার পরই তাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তারা আর্থিক সমস্যায় পড়ে গেছেন।
নাসুতিয়ন বলেন, ‘আমরা আমাদের গাড়ি, জমি বিক্রি করেছি এবং বাড়ি বন্ধক দিয়েছি। সব শেষ। আমাদের ব্যবসা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।’ এরপর, নাসুতিয়নের স্বামী জীবিকার তাগিদে অন্য একটি কাজ নিতে বাধ্য হন। তিনি পাম ফল সংগ্রহের কাজে যোগ দেন। মাসিক আয় মাত্র ২৮ লাখ রুপাইয়া (প্রায় ১৭৯ ডলার)।
নাসুতিয়ন নিজেও একটি পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ নেন। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত, সপ্তাহে ছয় দিন কাজ করেন। মাসিক বেতন মাত্র ১০ লাখ রুপাইয়া। বর্তমানে এই দম্পতির মাসিক খরচ দুই মিলিয়ন রুপাইয়ার (প্রায় ১২৭ ডলার) মধ্যে সীমাবদ্ধ। এই পরিমাণ খরচ মধ্যবিত্তের জীবনের জন্য ন্যূনতম সীমা বলে বিবেচিত ইন্দোনেশিয়ায়।
নাসুতিয়ন বলেন, ‘আমাদের জীবন এখন একেবারেই ভিন্ন। আমরা এখন আগের মতো স্থিতিশীল নই। আবার ব্যবসা শুরু করতে পুঁজির প্রয়োজন, কিন্তু সঞ্চয় করার মতো অর্থ নেই।’ তিনি বলেন, ‘আমরা কোনোভাবে বেঁচে থাকার মতো অর্থ উপার্জন করছি। জীবন চড়াই-উতরাইয়ে ভরা। আশা করি, পরিস্থিতি একদিন বদলাবে। আল্লাহ ভরসা।’

ইন্দোনেশিয়ার উত্তর সুমাত্রা প্রদেশের হালিমা নাসুতিয়ন একসময় ভাবতেন, তাঁর জীবনে সবকিছুই আছে। বছরের পর বছর, তিনি এবং তাঁর স্বামী আগুস সাপুত্রা বিয়ে, পড়াশোনা এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠান জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন করেও অর্থ জমাতে পারতেন। পরিবারের ভাইবোনদের ভরণপোষণের ব্যয় বহন করেও প্রতি মাসে তাঁরা প্রায় ৩০ লাখ রুপাইয়া বা ১ হাজার ৯১৭ ডলার সমপরিমাণ অর্থ উপার্জন করতেন।
মাসিক আয়ের এক-চতুর্থাংশ ব্যয় করেও হালিমা-আগুস দম্পতি ইন্দোনেশিয়ার উচ্চমধ্যবিত্ত শ্রেণির সদস্য ছিলেন। দেশটির সরকারি হিসাবে, যারা মাসে অন্তত ২০ লাখ রুপাইয়া (১২৭ ডলার) থেকে ৯ দশমিক ৯৯ লাখ রুপাইয়া (৬৩৮ ডলার) পর্যন্ত ব্যয় করতে পারে তারাই মধ্যবিত্ত।
কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারির পর সবকিছু বদলে গেছে। ধীরে ধীরে ইন্দোনেশিয়ার মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। হালিমা নাসুতিয়ন আল-জাজিরাকে বলেন, ‘আমরা সবই হারিয়েছে (কোভিড মহামারির কারণে)।’ সেই মহামারির পর পেরিয়ে গেছে আরও কয়েক বছর। কিন্তু এখনো হালিমা-আগুস দম্পতি খাবি খাচ্ছেন তাদের আগের অবস্থানে ফিরে যেতে।
হালিমা-আগুস দম্পতি হলেন ইন্দোনেশিয়ার সেই লাখো পরিবারের একটি যারা মধ্যবিত্ত শ্রেণি থেকে বিচ্যুত হয়েছেন। দেশটির কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের সংখ্যা ছিল ৫ কোটি ৭৩ লাখ। চলতি বছর তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৭৮ লাখে। তবে উদীয়মান মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংখ্যা একই সময়ে ১২ কোটি ৮৮ লাখ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৩ কোটি ৭৫ লাখ। এই দুই শ্রেণি ইন্দোনেশিয়ার ২৭ কোটি ৭০ লাখ মানুষের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব এবং সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা এই পতনের প্রধান কারণ। জাতীয় দারিদ্র্য হ্রাস ত্বরান্বিতকরণ টিমের নীতি বিশেষজ্ঞ এগা কুরনিয়া ইয়াজিদ বলেন, ‘বিভিন্ন আন্তঃসংযুক্ত কারণ মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংকোচনের জন্য দায়ী। মধ্যবিত্তরা মূলত কর রাজস্বে বড় অবদান রাখে। কিন্তু তারা খুবই সীমিত সামাজিক সহায়তা পায়। এই সহায়তার বেশির ভাগই চাকরি নিরাপত্তা এবং জাতীয় স্বাস্থ্য বিমার মতো আনুষ্ঠানিক কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়।’ তিনি বলেন, ‘নগদ অর্থ সহায়তা ও জ্বালানি ভর্তুকির মতো অন্যান্য সহায়তা কার্যক্রমে প্রায়ই ভুলভ্রান্তি হয়। এসব সহায়তা সঠিকভাবে এই শ্রেণির কাছে পৌঁছায় না।’
নাসুতিয়ন ও তাঁর স্বামী মহামারির সময় সরকারি সহায়তার অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। নুসাতিয়ন বলেন, ‘মহামারির সময় কাজ হারানোর পর কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে আমরা কোনো সাহায্য পাইনি। গ্রামের স্থানীয় কার্যালয় থেকে প্রতি মাসে মাত্র ৩ লাখ রুপিয়া (প্রায় ১৯ ডলার) সহায়তা পেয়েছি, যা কেবল নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতেই বেরিয়ে যেত।’
মহামারি শেষে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশের তালিকায় ১০ নম্বরে থাকা ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতি স্থিতিশীল গতিতে এগিয়ে যেতে শুরু করে। যেখানে দেশটির বার্ষিক জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ৫ শতাংশ। অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতিও বৈশ্বিক বাণিজ্যের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি মন্থর হওয়ায় দেশটির বাণিজ্যও চাপে পড়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতিবিদ ইয়াজিদ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও জাপানের মতো প্রধান বাণিজ্য অংশীদাররা সংকোচনের মধ্যে রয়েছে। এটি পিএমআই (পারচেজিং ম্যানেজারস ইনডেক্স) সূচকে প্রতিফলিত হচ্ছে। ফলে ইন্দোনেশিয়ার পণ্যের আন্তর্জাতিক চাহিদা কমে যাচ্ছে। এটি মধ্যবিত্ত শ্রেণির ওপর আরও চাপ তৈরি করছে।’
আন্তর্জাতিক থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (সিএসআইএস) অর্থনৈতিক গবেষক আদিনোভা ফাউরি বলেন, ‘ইন্দোনেশিয়ার মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংকট গভীরতর কাঠামোগত সমস্যাগুলোকেই তুলে ধরে। বিশেষ করে, দেশটিতে শিল্প খাতের অবক্ষয়ের প্রভাব স্পষ্ট।’
ফাউরি আরও বলেন, ‘যেখানে একসময় শিল্প খাত অধিকাংশ শ্রমিককে নিয়োজিত করত, এখন আর তা সম্ভব হচ্ছে না। শ্রমিকদের বড় একটি অংশ সেবা খাতে স্থানান্তরিত হয়েছে। তবে এর বেশির ভাগই অনানুষ্ঠানিক খাত, যেখানে বেতন কম এবং সামাজিক সুরক্ষা নেই বললেই চলে।’
শ্রমিকদের অবস্থা এবং উৎপাদনশীলতা উন্নয়ন জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন ফাউরি। তিনি বলেন, ‘ভিয়েতনাম বা বাংলাদেশের মতো দেশের সঙ্গে শুধু কম মজুরির ভিত্তিতে প্রতিযোগিতা সম্ভব নয়, বরং শ্রমিকদের অবস্থা ও নিয়মকানুন উন্নত করতে হবে। এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো নতুন বাজারে প্রবেশ করা সম্ভব হবে, যেখানে উন্নত শ্রম মানদণ্ডকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।’
ফাউরি আরও বলেন, ‘উৎপাদনশীলতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শুধু দক্ষতার দিক থেকে নয়, শ্রমিকদের স্বাস্থ্যগত অবস্থার দিক থেকেও। অন্যান্য দেশ থেকে শিখতে হবে। গবেষণা ও উন্নয়নে বিনিয়োগ এবং উদ্ভাবনের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। ”
এদিকে, গত মাসে ইন্দোনেশিয়ার অষ্টম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন প্রাবোও সুবিয়ান্তো। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় প্রাবোও ৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং দারিদ্র্য ও শিশুদের অপুষ্টি দূর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এ জন্য তিনি স্কুলে বিনা মূল্যে খাবারের কর্মসূচি চালু করার পরিকল্পনার কথা বলেন।
কিন্তু প্রতিশ্রুতি আর বাস্তবতা ভিন্ন। কারণ, কোভিডের পর দুই বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও নাসুতিয়ন এবং তাঁর পরিবার এখনো তাদের বিপর্যস্ত জীবন গুছানোর চেষ্টা করে চলেছেন। তাঁরা তাদের পরিবারের জন্য কিস্তিতে ফার্নিচার ও অন্যান্য সামগ্রী কিনেছিলেন। কিন্তু এসব কেনার পরই তাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তারা আর্থিক সমস্যায় পড়ে গেছেন।
নাসুতিয়ন বলেন, ‘আমরা আমাদের গাড়ি, জমি বিক্রি করেছি এবং বাড়ি বন্ধক দিয়েছি। সব শেষ। আমাদের ব্যবসা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।’ এরপর, নাসুতিয়নের স্বামী জীবিকার তাগিদে অন্য একটি কাজ নিতে বাধ্য হন। তিনি পাম ফল সংগ্রহের কাজে যোগ দেন। মাসিক আয় মাত্র ২৮ লাখ রুপাইয়া (প্রায় ১৭৯ ডলার)।
নাসুতিয়ন নিজেও একটি পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ নেন। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত, সপ্তাহে ছয় দিন কাজ করেন। মাসিক বেতন মাত্র ১০ লাখ রুপাইয়া। বর্তমানে এই দম্পতির মাসিক খরচ দুই মিলিয়ন রুপাইয়ার (প্রায় ১২৭ ডলার) মধ্যে সীমাবদ্ধ। এই পরিমাণ খরচ মধ্যবিত্তের জীবনের জন্য ন্যূনতম সীমা বলে বিবেচিত ইন্দোনেশিয়ায়।
নাসুতিয়ন বলেন, ‘আমাদের জীবন এখন একেবারেই ভিন্ন। আমরা এখন আগের মতো স্থিতিশীল নই। আবার ব্যবসা শুরু করতে পুঁজির প্রয়োজন, কিন্তু সঞ্চয় করার মতো অর্থ নেই।’ তিনি বলেন, ‘আমরা কোনোভাবে বেঁচে থাকার মতো অর্থ উপার্জন করছি। জীবন চড়াই-উতরাইয়ে ভরা। আশা করি, পরিস্থিতি একদিন বদলাবে। আল্লাহ ভরসা।’

ইন্দোনেশিয়ার উত্তর সুমাত্রা প্রদেশের হালিমা নাসুতিয়ন একসময় ভাবতেন, তাঁর জীবনে সবকিছুই আছে। বছরের পর বছর, তিনি এবং তাঁর স্বামী আগুস সাপুত্রা বিয়ে, পড়াশোনা এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠান জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন করেও অর্থ জমাতে পারতেন। পরিবারের ভাইবোনদের ভরণপোষণের ব্যয় বহন করেও প্রতি মাসে তাঁরা প্রায় ৩০ লাখ রুপাইয়া বা ১ হাজার ৯১৭ ডলার সমপরিমাণ অর্থ উপার্জন করতেন।
মাসিক আয়ের এক-চতুর্থাংশ ব্যয় করেও হালিমা-আগুস দম্পতি ইন্দোনেশিয়ার উচ্চমধ্যবিত্ত শ্রেণির সদস্য ছিলেন। দেশটির সরকারি হিসাবে, যারা মাসে অন্তত ২০ লাখ রুপাইয়া (১২৭ ডলার) থেকে ৯ দশমিক ৯৯ লাখ রুপাইয়া (৬৩৮ ডলার) পর্যন্ত ব্যয় করতে পারে তারাই মধ্যবিত্ত।
কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারির পর সবকিছু বদলে গেছে। ধীরে ধীরে ইন্দোনেশিয়ার মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। হালিমা নাসুতিয়ন আল-জাজিরাকে বলেন, ‘আমরা সবই হারিয়েছে (কোভিড মহামারির কারণে)।’ সেই মহামারির পর পেরিয়ে গেছে আরও কয়েক বছর। কিন্তু এখনো হালিমা-আগুস দম্পতি খাবি খাচ্ছেন তাদের আগের অবস্থানে ফিরে যেতে।
হালিমা-আগুস দম্পতি হলেন ইন্দোনেশিয়ার সেই লাখো পরিবারের একটি যারা মধ্যবিত্ত শ্রেণি থেকে বিচ্যুত হয়েছেন। দেশটির কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের সংখ্যা ছিল ৫ কোটি ৭৩ লাখ। চলতি বছর তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৭৮ লাখে। তবে উদীয়মান মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংখ্যা একই সময়ে ১২ কোটি ৮৮ লাখ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৩ কোটি ৭৫ লাখ। এই দুই শ্রেণি ইন্দোনেশিয়ার ২৭ কোটি ৭০ লাখ মানুষের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব এবং সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা এই পতনের প্রধান কারণ। জাতীয় দারিদ্র্য হ্রাস ত্বরান্বিতকরণ টিমের নীতি বিশেষজ্ঞ এগা কুরনিয়া ইয়াজিদ বলেন, ‘বিভিন্ন আন্তঃসংযুক্ত কারণ মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংকোচনের জন্য দায়ী। মধ্যবিত্তরা মূলত কর রাজস্বে বড় অবদান রাখে। কিন্তু তারা খুবই সীমিত সামাজিক সহায়তা পায়। এই সহায়তার বেশির ভাগই চাকরি নিরাপত্তা এবং জাতীয় স্বাস্থ্য বিমার মতো আনুষ্ঠানিক কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়।’ তিনি বলেন, ‘নগদ অর্থ সহায়তা ও জ্বালানি ভর্তুকির মতো অন্যান্য সহায়তা কার্যক্রমে প্রায়ই ভুলভ্রান্তি হয়। এসব সহায়তা সঠিকভাবে এই শ্রেণির কাছে পৌঁছায় না।’
নাসুতিয়ন ও তাঁর স্বামী মহামারির সময় সরকারি সহায়তার অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। নুসাতিয়ন বলেন, ‘মহামারির সময় কাজ হারানোর পর কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে আমরা কোনো সাহায্য পাইনি। গ্রামের স্থানীয় কার্যালয় থেকে প্রতি মাসে মাত্র ৩ লাখ রুপিয়া (প্রায় ১৯ ডলার) সহায়তা পেয়েছি, যা কেবল নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতেই বেরিয়ে যেত।’
মহামারি শেষে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশের তালিকায় ১০ নম্বরে থাকা ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতি স্থিতিশীল গতিতে এগিয়ে যেতে শুরু করে। যেখানে দেশটির বার্ষিক জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ৫ শতাংশ। অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতিও বৈশ্বিক বাণিজ্যের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি মন্থর হওয়ায় দেশটির বাণিজ্যও চাপে পড়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতিবিদ ইয়াজিদ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও জাপানের মতো প্রধান বাণিজ্য অংশীদাররা সংকোচনের মধ্যে রয়েছে। এটি পিএমআই (পারচেজিং ম্যানেজারস ইনডেক্স) সূচকে প্রতিফলিত হচ্ছে। ফলে ইন্দোনেশিয়ার পণ্যের আন্তর্জাতিক চাহিদা কমে যাচ্ছে। এটি মধ্যবিত্ত শ্রেণির ওপর আরও চাপ তৈরি করছে।’
আন্তর্জাতিক থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (সিএসআইএস) অর্থনৈতিক গবেষক আদিনোভা ফাউরি বলেন, ‘ইন্দোনেশিয়ার মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংকট গভীরতর কাঠামোগত সমস্যাগুলোকেই তুলে ধরে। বিশেষ করে, দেশটিতে শিল্প খাতের অবক্ষয়ের প্রভাব স্পষ্ট।’
ফাউরি আরও বলেন, ‘যেখানে একসময় শিল্প খাত অধিকাংশ শ্রমিককে নিয়োজিত করত, এখন আর তা সম্ভব হচ্ছে না। শ্রমিকদের বড় একটি অংশ সেবা খাতে স্থানান্তরিত হয়েছে। তবে এর বেশির ভাগই অনানুষ্ঠানিক খাত, যেখানে বেতন কম এবং সামাজিক সুরক্ষা নেই বললেই চলে।’
শ্রমিকদের অবস্থা এবং উৎপাদনশীলতা উন্নয়ন জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন ফাউরি। তিনি বলেন, ‘ভিয়েতনাম বা বাংলাদেশের মতো দেশের সঙ্গে শুধু কম মজুরির ভিত্তিতে প্রতিযোগিতা সম্ভব নয়, বরং শ্রমিকদের অবস্থা ও নিয়মকানুন উন্নত করতে হবে। এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো নতুন বাজারে প্রবেশ করা সম্ভব হবে, যেখানে উন্নত শ্রম মানদণ্ডকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।’
ফাউরি আরও বলেন, ‘উৎপাদনশীলতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শুধু দক্ষতার দিক থেকে নয়, শ্রমিকদের স্বাস্থ্যগত অবস্থার দিক থেকেও। অন্যান্য দেশ থেকে শিখতে হবে। গবেষণা ও উন্নয়নে বিনিয়োগ এবং উদ্ভাবনের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। ”
এদিকে, গত মাসে ইন্দোনেশিয়ার অষ্টম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন প্রাবোও সুবিয়ান্তো। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় প্রাবোও ৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং দারিদ্র্য ও শিশুদের অপুষ্টি দূর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এ জন্য তিনি স্কুলে বিনা মূল্যে খাবারের কর্মসূচি চালু করার পরিকল্পনার কথা বলেন।
কিন্তু প্রতিশ্রুতি আর বাস্তবতা ভিন্ন। কারণ, কোভিডের পর দুই বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও নাসুতিয়ন এবং তাঁর পরিবার এখনো তাদের বিপর্যস্ত জীবন গুছানোর চেষ্টা করে চলেছেন। তাঁরা তাদের পরিবারের জন্য কিস্তিতে ফার্নিচার ও অন্যান্য সামগ্রী কিনেছিলেন। কিন্তু এসব কেনার পরই তাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তারা আর্থিক সমস্যায় পড়ে গেছেন।
নাসুতিয়ন বলেন, ‘আমরা আমাদের গাড়ি, জমি বিক্রি করেছি এবং বাড়ি বন্ধক দিয়েছি। সব শেষ। আমাদের ব্যবসা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।’ এরপর, নাসুতিয়নের স্বামী জীবিকার তাগিদে অন্য একটি কাজ নিতে বাধ্য হন। তিনি পাম ফল সংগ্রহের কাজে যোগ দেন। মাসিক আয় মাত্র ২৮ লাখ রুপাইয়া (প্রায় ১৭৯ ডলার)।
নাসুতিয়ন নিজেও একটি পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ নেন। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত, সপ্তাহে ছয় দিন কাজ করেন। মাসিক বেতন মাত্র ১০ লাখ রুপাইয়া। বর্তমানে এই দম্পতির মাসিক খরচ দুই মিলিয়ন রুপাইয়ার (প্রায় ১২৭ ডলার) মধ্যে সীমাবদ্ধ। এই পরিমাণ খরচ মধ্যবিত্তের জীবনের জন্য ন্যূনতম সীমা বলে বিবেচিত ইন্দোনেশিয়ায়।
নাসুতিয়ন বলেন, ‘আমাদের জীবন এখন একেবারেই ভিন্ন। আমরা এখন আগের মতো স্থিতিশীল নই। আবার ব্যবসা শুরু করতে পুঁজির প্রয়োজন, কিন্তু সঞ্চয় করার মতো অর্থ নেই।’ তিনি বলেন, ‘আমরা কোনোভাবে বেঁচে থাকার মতো অর্থ উপার্জন করছি। জীবন চড়াই-উতরাইয়ে ভরা। আশা করি, পরিস্থিতি একদিন বদলাবে। আল্লাহ ভরসা।’

যে বয়সে শিশুরা বর্ণমালা শেখে, ছত্তিশগড়ের বাস্তার জেলার বাকাওয়ান্দ গ্রামের বাসিন্দা লিসা তখন ভয়কে জানছিলেন। ছয় বছর বয়সেই তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় বাইরের জগতের সব শব্দ। বাড়ির দরজা শুধু খাবারের জন্য খুলত, জীবনের জন্য নয়। ২০ বছর পর কর্তৃপক্ষ যখন তাঁকে খুঁজে পায়, তখন তাঁর চোখে নয়, স্মৃতিতেও...
২৫ মিনিট আগে
প্রায় বারো ঘণ্টা ধরে যাত্রীরা নিজেদের মালপত্র হাতে পেতে রীতিমতো সংগ্রাম করছেন। খাবার–পানির কোনো ব্যবস্থা নেই, আর ইন্ডিগোর কাউন্টারগুলি ফাঁকা। ভারতের অন্যতম বৃহত্তম বিমান সংস্থা সংস্থা ইন্ডিগোর পরিচালনগত ত্রুটির কারণে পাঁচ শতাধিক ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় ভারতের বিমানবন্দরগুলোতে এমন বিশৃঙ্খল দৃশ্য দেখা গেছে
২৮ মিনিট আগে
গত বছর রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার সিঙ্ক্রো ইভেন্টে সোনা জেতেন ইউক্রেনীয় ডাইভার সোফিয়া লাইসকুন (২৩)। তবে সম্প্রতি আকস্মিকভাবে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখানোর পর তাঁকে চরম শাস্তির মুখে পড়তে হলো। ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশন (ইউডিএফ) ফেডারেশনের অধীনে পাওয়া তাঁর সমস্ত...
২ ঘণ্টা আগে
পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রথম প্রধান বা চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছেন, পাকিস্তান এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আওয়াইন-ই-সদরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ঘরোয়া আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

পৃথিবী যখন খেলায় মত্ত, তখন তিনি বন্দী ছিলেন অন্ধকারে। ছয় বছর বয়সে ঘরবন্দী হওয়া লিসা ২০ বছর পর সেই দরজা পেরিয়ে বাইরে এলেও আলো দেখার ক্ষমতা প্রায় হারিয়ে ফেলেছেন।
কিছু গল্প ক্ষতের মতো করে উন্মোচিত হয়। কিছু শৈশব যেন কোনোদিনই শুরু হয় না। লিসার জীবন তেমনই এক গল্প। নিঃশব্দে হারিয়ে যাওয়া এক শৈশবের, পরিস্থিতিতে মুছে যাওয়া এক শিশুর এবং এক নারীর।
যে বয়সে শিশুরা বর্ণমালা শেখে, ছত্তিশগড়ের বাস্তার জেলার বাকাওয়ান্দ গ্রামের বাসিন্দা লিসা তখন ভয়কে জানছিলেন। ছয় বছর বয়সেই তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় বাইরের জগতের সব শব্দ। বাড়ির দরজা শুধু খাবারের জন্য খুলত, জীবনের জন্য নয়। ২০ বছর পর কর্তৃপক্ষ যখন তাঁকে খুঁজে পায়, তখন তাঁর চোখে নয়, স্মৃতিতেও ছিল শুধু অন্ধকার।
ছায়াই ছিল তাঁর পরিচয়। কথোপকথন বলতে ছিল শুধু দরজার নিচ দিয়ে ঠেলে দেওয়া থালাবাটির শব্দ। দুই দশক ধরে বন্দিদশার পর এখন তিনি নিজের নামে সাড়া দিতেও হিমশিম খান।
লিসার বন্দিত্ব শুরু হয়েছিল না লোহার শিক দিয়ে, না শিকল দিয়ে—শুরু হয়েছিল আতঙ্ক দিয়ে।
২০০০ সালে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় গ্রামের এক ব্যক্তি তাঁকে হত্যার হুমকি দেন। সেই কথায় আতঙ্ক এত গভীর হয়, তিনি নিজেকে গুটিয়ে ফেলেন নীরবতায়। এরই মধ্যে মারা যান তাঁর মা। কৃষক বাবা হয়ে পড়েন দুর্বল ও আতঙ্কিত। কোনো সহায়তা নেই, নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নেই, কারও কাছে ভরসা চাওয়ার নেই। তাই তিনি এমন এক সিদ্ধান্ত নেন, যা মেয়ের জীবনের পরবর্তী ২০ বছর নির্ধারণ করে দেয়।
তিনি মেয়েকে মাটির ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখেন। বলেন, অন্ধকারই তাঁকে বিপদ থেকে রক্ষা করবে। জানালাবিহীন একটি ঘরই হয়ে ওঠে তাঁর পৃথিবী। না সূর্যের আলো। না কোনো কথা। না কোনো মানুষের স্পর্শ।
শুধু দরজায় রেখে যাওয়া এক প্লেট খাবার আর প্রতিদিন একটু একটু করে সংকুচিত হয়ে যাওয়া জীবনের প্রতিধ্বনি।
যে ব্যবস্থা তাঁকে রক্ষা করবে ভাবা হয়েছিল, তা-ই শেষমেশ তাঁকে সম্পূর্ণ গ্রাস করে নেয়।
সমাজকল্যাণ দপ্তরের দল যখন কুঁড়েঘরে প্রবেশ করে, তারা দেখতে পায় এক নারীকে, যাঁর দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনা প্রায় অসম্ভব।
চিকিৎসকদের মতে, দীর্ঘদিন প্রাকৃতিক আলো থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে লিসার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ। তাঁর মানসিক বিকাশও গুরুতরভাবে ব্যাহত হয়েছে। আচরণ বয়সের তুলনায় অনেক কম বয়সী শিশুর মতো। প্রতিটি শব্দে ভয় পান। যেকোনো স্পর্শে চমকে ওঠেন।
উদ্ধারের পর লিসাকে নিয়ে যাওয়া হয় জগদলপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, যেখানে তাঁর শারীরিক ও মানসিক অবস্থার বিস্তারিত পরীক্ষা শুরু হয়। প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে, লিসার শৈশব থেমে যায় প্রবল ট্রমায় আর প্রাপ্তবয়স্ক জীবন গঠিত হয়েছে ইন্দ্রিয়ের বঞ্চনায়।
সমাজকল্যাণ দপ্তর পুরো ঘটনায় এরই মধ্যে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে।
কর্তৃপক্ষ লিসার পরিবার ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে—কেন তিনি ২০ বছর ধরে বন্দী ছিলেন এবং এই বন্দিত্ব আইনবহির্ভূত আটক হিসেবে বিবেচিত হবে কি না।
জেলার প্রশাসন কর্মকর্তারা বলেন, ‘তদন্ত রিপোর্ট জমা পড়লে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
এ ছাড়া কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখছে, লিসার বাবা কি ভয়ে ও অজ্ঞতার কারণে স্কুল, পঞ্চায়েত বা স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে কোনো সাহায্য চাননি?
লিসা বর্তমানে মধ্যপ্রদেশের এক আশ্রমে আছেন, যেখানে সেবাকর্মী ও কাউন্সেলররা তাঁকে নতুন করে জীবন খুঁজে পেতে সহায়তা করছেন।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি

পৃথিবী যখন খেলায় মত্ত, তখন তিনি বন্দী ছিলেন অন্ধকারে। ছয় বছর বয়সে ঘরবন্দী হওয়া লিসা ২০ বছর পর সেই দরজা পেরিয়ে বাইরে এলেও আলো দেখার ক্ষমতা প্রায় হারিয়ে ফেলেছেন।
কিছু গল্প ক্ষতের মতো করে উন্মোচিত হয়। কিছু শৈশব যেন কোনোদিনই শুরু হয় না। লিসার জীবন তেমনই এক গল্প। নিঃশব্দে হারিয়ে যাওয়া এক শৈশবের, পরিস্থিতিতে মুছে যাওয়া এক শিশুর এবং এক নারীর।
যে বয়সে শিশুরা বর্ণমালা শেখে, ছত্তিশগড়ের বাস্তার জেলার বাকাওয়ান্দ গ্রামের বাসিন্দা লিসা তখন ভয়কে জানছিলেন। ছয় বছর বয়সেই তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় বাইরের জগতের সব শব্দ। বাড়ির দরজা শুধু খাবারের জন্য খুলত, জীবনের জন্য নয়। ২০ বছর পর কর্তৃপক্ষ যখন তাঁকে খুঁজে পায়, তখন তাঁর চোখে নয়, স্মৃতিতেও ছিল শুধু অন্ধকার।
ছায়াই ছিল তাঁর পরিচয়। কথোপকথন বলতে ছিল শুধু দরজার নিচ দিয়ে ঠেলে দেওয়া থালাবাটির শব্দ। দুই দশক ধরে বন্দিদশার পর এখন তিনি নিজের নামে সাড়া দিতেও হিমশিম খান।
লিসার বন্দিত্ব শুরু হয়েছিল না লোহার শিক দিয়ে, না শিকল দিয়ে—শুরু হয়েছিল আতঙ্ক দিয়ে।
২০০০ সালে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় গ্রামের এক ব্যক্তি তাঁকে হত্যার হুমকি দেন। সেই কথায় আতঙ্ক এত গভীর হয়, তিনি নিজেকে গুটিয়ে ফেলেন নীরবতায়। এরই মধ্যে মারা যান তাঁর মা। কৃষক বাবা হয়ে পড়েন দুর্বল ও আতঙ্কিত। কোনো সহায়তা নেই, নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নেই, কারও কাছে ভরসা চাওয়ার নেই। তাই তিনি এমন এক সিদ্ধান্ত নেন, যা মেয়ের জীবনের পরবর্তী ২০ বছর নির্ধারণ করে দেয়।
তিনি মেয়েকে মাটির ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখেন। বলেন, অন্ধকারই তাঁকে বিপদ থেকে রক্ষা করবে। জানালাবিহীন একটি ঘরই হয়ে ওঠে তাঁর পৃথিবী। না সূর্যের আলো। না কোনো কথা। না কোনো মানুষের স্পর্শ।
শুধু দরজায় রেখে যাওয়া এক প্লেট খাবার আর প্রতিদিন একটু একটু করে সংকুচিত হয়ে যাওয়া জীবনের প্রতিধ্বনি।
যে ব্যবস্থা তাঁকে রক্ষা করবে ভাবা হয়েছিল, তা-ই শেষমেশ তাঁকে সম্পূর্ণ গ্রাস করে নেয়।
সমাজকল্যাণ দপ্তরের দল যখন কুঁড়েঘরে প্রবেশ করে, তারা দেখতে পায় এক নারীকে, যাঁর দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনা প্রায় অসম্ভব।
চিকিৎসকদের মতে, দীর্ঘদিন প্রাকৃতিক আলো থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে লিসার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ। তাঁর মানসিক বিকাশও গুরুতরভাবে ব্যাহত হয়েছে। আচরণ বয়সের তুলনায় অনেক কম বয়সী শিশুর মতো। প্রতিটি শব্দে ভয় পান। যেকোনো স্পর্শে চমকে ওঠেন।
উদ্ধারের পর লিসাকে নিয়ে যাওয়া হয় জগদলপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, যেখানে তাঁর শারীরিক ও মানসিক অবস্থার বিস্তারিত পরীক্ষা শুরু হয়। প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে, লিসার শৈশব থেমে যায় প্রবল ট্রমায় আর প্রাপ্তবয়স্ক জীবন গঠিত হয়েছে ইন্দ্রিয়ের বঞ্চনায়।
সমাজকল্যাণ দপ্তর পুরো ঘটনায় এরই মধ্যে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে।
কর্তৃপক্ষ লিসার পরিবার ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে—কেন তিনি ২০ বছর ধরে বন্দী ছিলেন এবং এই বন্দিত্ব আইনবহির্ভূত আটক হিসেবে বিবেচিত হবে কি না।
জেলার প্রশাসন কর্মকর্তারা বলেন, ‘তদন্ত রিপোর্ট জমা পড়লে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
এ ছাড়া কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখছে, লিসার বাবা কি ভয়ে ও অজ্ঞতার কারণে স্কুল, পঞ্চায়েত বা স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে কোনো সাহায্য চাননি?
লিসা বর্তমানে মধ্যপ্রদেশের এক আশ্রমে আছেন, যেখানে সেবাকর্মী ও কাউন্সেলররা তাঁকে নতুন করে জীবন খুঁজে পেতে সহায়তা করছেন।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি

কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব এবং সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা এই পতনের প্রধান কারণ। জাতীয় দারিদ্র্য হ্রাস ত্বরান্বিতকরণ টিমের নীতি বিশেষজ্ঞ এগা কুরনিয়া ইয়াজিদ বলেন, ‘বিভিন্ন আন্তঃসংযুক্ত কারণ মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংকোচনের জন্য দায়ী। মধ্যবিত্তরা মূলত কর রাজস্বে বড় অবদান রাখে। কিন্তু তারা খুবই সীমিত
১৫ নভেম্বর ২০২৪
প্রায় বারো ঘণ্টা ধরে যাত্রীরা নিজেদের মালপত্র হাতে পেতে রীতিমতো সংগ্রাম করছেন। খাবার–পানির কোনো ব্যবস্থা নেই, আর ইন্ডিগোর কাউন্টারগুলি ফাঁকা। ভারতের অন্যতম বৃহত্তম বিমান সংস্থা সংস্থা ইন্ডিগোর পরিচালনগত ত্রুটির কারণে পাঁচ শতাধিক ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় ভারতের বিমানবন্দরগুলোতে এমন বিশৃঙ্খল দৃশ্য দেখা গেছে
২৮ মিনিট আগে
গত বছর রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার সিঙ্ক্রো ইভেন্টে সোনা জেতেন ইউক্রেনীয় ডাইভার সোফিয়া লাইসকুন (২৩)। তবে সম্প্রতি আকস্মিকভাবে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখানোর পর তাঁকে চরম শাস্তির মুখে পড়তে হলো। ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশন (ইউডিএফ) ফেডারেশনের অধীনে পাওয়া তাঁর সমস্ত...
২ ঘণ্টা আগে
পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রথম প্রধান বা চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছেন, পাকিস্তান এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আওয়াইন-ই-সদরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ঘরোয়া আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

প্রায় বারো ঘণ্টা ধরে যাত্রীরা নিজেদের মালপত্র হাতে পেতে রীতিমতো সংগ্রাম করছেন। খাবার–পানির কোনো ব্যবস্থা নেই, আর ইন্ডিগোর কাউন্টারগুলি ফাঁকা। ভারতের অন্যতম বৃহত্তম বিমান সংস্থা সংস্থা ইন্ডিগোর পরিচালনগত ত্রুটির কারণে পাঁচ শতাধিক ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় ভারতের বিমানবন্দরগুলোতে এমন বিশৃঙ্খল দৃশ্য দেখা গেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি সরেজমিনে গিয়ে দেখেছে, দিল্লি বিমানবন্দরের টার্মিনালে হাজার হাজার স্যুটকেস পড়ে আছে। বহু যাত্রী মেঝেতে ঘুমিয়ে পড়েছেন, আর কেউ কেউ ক্ষোভে ফেটে পড়ে স্লোগান দিচ্ছিলেন।
এক যাত্রী ইন্ডিগোর এই ব্যর্থতাকে ‘মানসিক অত্যাচার’ বলে অভিহিত করে এনডিটিভিকে জানান, বারো ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও তিনি বিমান সংস্থাটির কাছ থেকে কোনো স্পষ্ট জবাব পাচ্ছেন না। তাঁর কথায়, ‘আমি বারো ঘণ্টার বেশি সময় ধরে এখানে। প্রতিবার তারা বলছেন এক ঘণ্টা দেরি, দু–ঘণ্টা দেরি। আমরা একটা বিয়েতে যাচ্ছিলাম, কিন্তু আমাদের মালপত্র পর্যন্ত হাতে নেই। ইন্ডিগোর কর্মীরা আমাদের কিছু বলছেন না। এই মুহূর্তে এটি সবচেয়ে খারাপ বিমান সংস্থা। আমি বুঝি না কেন তারা নতুন যাত্রী নিচ্ছে আর মালপত্র জমিয়ে রাখছেন।’
আরেক যাত্রী জানালেন যে তিনি গতকাল দুপুর থেকে বিমানবন্দরে অপেক্ষা করছেন। তিনি বলেন, ‘তারা বারবার ফ্লাইট পিছিয়ে দিচ্ছে। ইন্ডিগোর তরফ থেকে আমরা কোনো স্পষ্ট খবর পাচ্ছি না।’ আরেক যাত্রী বলেন, ‘খুবই মানসিক চাপের বিষয় এটা। চৌদ্দ ঘণ্টা ধরে আমি বিমানবন্দরে বসে আছি। খাবার বা অন্য কিছুর জন্য কোনো কুপন নেই। আমার কানেকটিং ফ্লাইটটি বাতিল হয়েছে। যাত্রীরা চিৎকার-চেঁচামেচি করছেন, কিন্তু কর্মীরা কোনো স্পষ্ট জবাব দিচ্ছেন না। এমন জরুরি পরিস্থিতি সামলানোর জন্য কর্মীদের বিন্দুমাত্র প্রশিক্ষণ নেই।’
হায়দরাবাদ বিমানবন্দরসহ অন্যান্য বিমানবন্দরেও একই ধরনের দৃশ্য দেখা গেছে। আটকা পড়া যাত্রীরা ক্ষোভে ফেটে পড়ছিলেন। কারণ তাদের কোনো খাবার বা থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়নি। একদল যাত্রী প্রতিবাদস্বরূপ একটি এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট পর্যন্ত আটকে দিয়েছিলেন।
হায়দরাবাদ বিমানবন্দরের এক যাত্রী বলেন, ‘আমার ফ্লাইট গতকাল (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ছাড়ার কথা ছিল। আমি আমার সহকর্মীকে নিয়ে সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ বিমানবন্দরে পৌঁছাই। আমাদের বলা হয়েছিল যে ফ্লাইট সময়মতো চলবে। এখন আমরা এখানে বারো ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আছি। ইন্ডিগো আমাদের কোনো স্পষ্ট ধারণা দেয়নি। তারা শুধু বলে চলেছে, অনির্দিষ্টকালের জন্য দেরি হচ্ছে। আমাদের কোনো স্পষ্ট খবর, খাবার বা পানি দেওয়া হয়নি। ইন্ডিগোর সাড়া একেবারেই যাচ্ছেতাই। এখানে বয়স্ক মানুষ আছেন, যাদের বিশেষ দায়বদ্ধতা আছে, তাদের জন্য কোনো সমাধান নেই। এটা খুবই হাস্যকর।’
গোয়া বিমানবন্দরে একদল যাত্রী হতাশায় ভেঙে পড়েন। এক ভিডিওতে দেখা যায় তারা ইন্ডিগোর কর্মীদের লক্ষ্য করে চিৎকার করছেন। পরিস্থিতি সামলাতে বহু পুলিশ কর্মীকেও সেখানে দেখা যায়। চেন্নাই বিমানবন্দরে শত শত যাত্রী আটকা পড়েছেন। সেখানে সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স (সিআইএসএফ) ইন্ডিগোর যাত্রীদের প্রবেশ করতে বাধা দিয়েছে। বিশাখাপত্তম বিমানবন্দরে কমপক্ষে ঊনপঞ্চাশটি বহির্গমন ও তেতাল্লিশটি ইনকামিং ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।
ইন্ডিগোর এই পরিচালনগত ত্রুটি আজ চতুর্থ দিনের মতো চলছে। কুড়ি বছরের পুরোনো এই বিমান সংস্থাটি ক্রু-সংকট ও প্রযুক্তিগত সমস্যাসহ একাধিক কারণে পাঁচ শ পঞ্চাশটিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করার রেকর্ড তৈরি করেছে। এর মধ্যে মুম্বাই বিমানবন্দরে এক শ চারটি, দিল্লি বিমানবন্দরে দু শ পঁচিশটি, বেঙ্গালুরুতে এক শ দু'টি এবং হায়দরাবাদে বিরানব্বইটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। ভূপাল বিমানবন্দরেও কমপক্ষে পাঁচটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।
ইন্ডিগো স্বীকার করেছে যে তারা নতুন নিয়ম অনুযায়ী ক্রু-এর প্রয়োজনীয়তা ভুলভাবে আন্দাজ করেছিল এবং পরিকল্পনায় ঘাটতি ছিল, যার ফলস্বরূপ শীতকালীন আবহাওয়া ও যানজটের সময়ে পর্যাপ্ত ক্রু-এর অভাব দেখা দিয়েছে। বিমান সংস্থাটি সতর্ক করেছে, সময়সূচি স্বাভাবিক করার চেষ্টার অংশ হিসেবে আগামী দুই থেকে তিন দিন পর্যন্ত ফ্লাইট বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তারা জানিয়েছে, আগামী ৮ ডিসেম্বর থেকে তারা আরও বিঘ্ন এড়াতে ফ্লাইট পরিচালন কমিয়ে দেবে।
অন্যদিকে, ইন্ডিগোর সিইও পিটার এলবার্স কর্মীদের বলেছেন যে পরিচালন স্বাভাবিক করা এবং সময়ানুবর্তিতা ফিরিয়ে আনা ‘সহজ লক্ষ্য হবে না।’ বিমান সংস্থাটি গত রাতে তাদের গ্রাহক ও স্টেকহোল্ডারদের কাছে নতুন করে দুঃখ প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে তারা বলেছে, ‘গত দুই দিন ধরে ইন্ডিগোর নেটওয়ার্ক এবং পরিচালন ব্যবস্থায় ব্যাপক বিঘ্ন দেখা দিয়েছে। এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত আমাদের সব গ্রাহক এবং শিল্প স্টেকহোল্ডারদের কাছে আমরা আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’ তারা আরও যোগ করেছে, ‘ইন্ডিগো এই বিলম্বের প্রভাব কমাতে এবং স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে নিরলসভাবে ও সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’

প্রায় বারো ঘণ্টা ধরে যাত্রীরা নিজেদের মালপত্র হাতে পেতে রীতিমতো সংগ্রাম করছেন। খাবার–পানির কোনো ব্যবস্থা নেই, আর ইন্ডিগোর কাউন্টারগুলি ফাঁকা। ভারতের অন্যতম বৃহত্তম বিমান সংস্থা সংস্থা ইন্ডিগোর পরিচালনগত ত্রুটির কারণে পাঁচ শতাধিক ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় ভারতের বিমানবন্দরগুলোতে এমন বিশৃঙ্খল দৃশ্য দেখা গেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি সরেজমিনে গিয়ে দেখেছে, দিল্লি বিমানবন্দরের টার্মিনালে হাজার হাজার স্যুটকেস পড়ে আছে। বহু যাত্রী মেঝেতে ঘুমিয়ে পড়েছেন, আর কেউ কেউ ক্ষোভে ফেটে পড়ে স্লোগান দিচ্ছিলেন।
এক যাত্রী ইন্ডিগোর এই ব্যর্থতাকে ‘মানসিক অত্যাচার’ বলে অভিহিত করে এনডিটিভিকে জানান, বারো ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও তিনি বিমান সংস্থাটির কাছ থেকে কোনো স্পষ্ট জবাব পাচ্ছেন না। তাঁর কথায়, ‘আমি বারো ঘণ্টার বেশি সময় ধরে এখানে। প্রতিবার তারা বলছেন এক ঘণ্টা দেরি, দু–ঘণ্টা দেরি। আমরা একটা বিয়েতে যাচ্ছিলাম, কিন্তু আমাদের মালপত্র পর্যন্ত হাতে নেই। ইন্ডিগোর কর্মীরা আমাদের কিছু বলছেন না। এই মুহূর্তে এটি সবচেয়ে খারাপ বিমান সংস্থা। আমি বুঝি না কেন তারা নতুন যাত্রী নিচ্ছে আর মালপত্র জমিয়ে রাখছেন।’
আরেক যাত্রী জানালেন যে তিনি গতকাল দুপুর থেকে বিমানবন্দরে অপেক্ষা করছেন। তিনি বলেন, ‘তারা বারবার ফ্লাইট পিছিয়ে দিচ্ছে। ইন্ডিগোর তরফ থেকে আমরা কোনো স্পষ্ট খবর পাচ্ছি না।’ আরেক যাত্রী বলেন, ‘খুবই মানসিক চাপের বিষয় এটা। চৌদ্দ ঘণ্টা ধরে আমি বিমানবন্দরে বসে আছি। খাবার বা অন্য কিছুর জন্য কোনো কুপন নেই। আমার কানেকটিং ফ্লাইটটি বাতিল হয়েছে। যাত্রীরা চিৎকার-চেঁচামেচি করছেন, কিন্তু কর্মীরা কোনো স্পষ্ট জবাব দিচ্ছেন না। এমন জরুরি পরিস্থিতি সামলানোর জন্য কর্মীদের বিন্দুমাত্র প্রশিক্ষণ নেই।’
হায়দরাবাদ বিমানবন্দরসহ অন্যান্য বিমানবন্দরেও একই ধরনের দৃশ্য দেখা গেছে। আটকা পড়া যাত্রীরা ক্ষোভে ফেটে পড়ছিলেন। কারণ তাদের কোনো খাবার বা থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়নি। একদল যাত্রী প্রতিবাদস্বরূপ একটি এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট পর্যন্ত আটকে দিয়েছিলেন।
হায়দরাবাদ বিমানবন্দরের এক যাত্রী বলেন, ‘আমার ফ্লাইট গতকাল (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ছাড়ার কথা ছিল। আমি আমার সহকর্মীকে নিয়ে সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ বিমানবন্দরে পৌঁছাই। আমাদের বলা হয়েছিল যে ফ্লাইট সময়মতো চলবে। এখন আমরা এখানে বারো ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আছি। ইন্ডিগো আমাদের কোনো স্পষ্ট ধারণা দেয়নি। তারা শুধু বলে চলেছে, অনির্দিষ্টকালের জন্য দেরি হচ্ছে। আমাদের কোনো স্পষ্ট খবর, খাবার বা পানি দেওয়া হয়নি। ইন্ডিগোর সাড়া একেবারেই যাচ্ছেতাই। এখানে বয়স্ক মানুষ আছেন, যাদের বিশেষ দায়বদ্ধতা আছে, তাদের জন্য কোনো সমাধান নেই। এটা খুবই হাস্যকর।’
গোয়া বিমানবন্দরে একদল যাত্রী হতাশায় ভেঙে পড়েন। এক ভিডিওতে দেখা যায় তারা ইন্ডিগোর কর্মীদের লক্ষ্য করে চিৎকার করছেন। পরিস্থিতি সামলাতে বহু পুলিশ কর্মীকেও সেখানে দেখা যায়। চেন্নাই বিমানবন্দরে শত শত যাত্রী আটকা পড়েছেন। সেখানে সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স (সিআইএসএফ) ইন্ডিগোর যাত্রীদের প্রবেশ করতে বাধা দিয়েছে। বিশাখাপত্তম বিমানবন্দরে কমপক্ষে ঊনপঞ্চাশটি বহির্গমন ও তেতাল্লিশটি ইনকামিং ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।
ইন্ডিগোর এই পরিচালনগত ত্রুটি আজ চতুর্থ দিনের মতো চলছে। কুড়ি বছরের পুরোনো এই বিমান সংস্থাটি ক্রু-সংকট ও প্রযুক্তিগত সমস্যাসহ একাধিক কারণে পাঁচ শ পঞ্চাশটিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করার রেকর্ড তৈরি করেছে। এর মধ্যে মুম্বাই বিমানবন্দরে এক শ চারটি, দিল্লি বিমানবন্দরে দু শ পঁচিশটি, বেঙ্গালুরুতে এক শ দু'টি এবং হায়দরাবাদে বিরানব্বইটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। ভূপাল বিমানবন্দরেও কমপক্ষে পাঁচটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।
ইন্ডিগো স্বীকার করেছে যে তারা নতুন নিয়ম অনুযায়ী ক্রু-এর প্রয়োজনীয়তা ভুলভাবে আন্দাজ করেছিল এবং পরিকল্পনায় ঘাটতি ছিল, যার ফলস্বরূপ শীতকালীন আবহাওয়া ও যানজটের সময়ে পর্যাপ্ত ক্রু-এর অভাব দেখা দিয়েছে। বিমান সংস্থাটি সতর্ক করেছে, সময়সূচি স্বাভাবিক করার চেষ্টার অংশ হিসেবে আগামী দুই থেকে তিন দিন পর্যন্ত ফ্লাইট বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তারা জানিয়েছে, আগামী ৮ ডিসেম্বর থেকে তারা আরও বিঘ্ন এড়াতে ফ্লাইট পরিচালন কমিয়ে দেবে।
অন্যদিকে, ইন্ডিগোর সিইও পিটার এলবার্স কর্মীদের বলেছেন যে পরিচালন স্বাভাবিক করা এবং সময়ানুবর্তিতা ফিরিয়ে আনা ‘সহজ লক্ষ্য হবে না।’ বিমান সংস্থাটি গত রাতে তাদের গ্রাহক ও স্টেকহোল্ডারদের কাছে নতুন করে দুঃখ প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে তারা বলেছে, ‘গত দুই দিন ধরে ইন্ডিগোর নেটওয়ার্ক এবং পরিচালন ব্যবস্থায় ব্যাপক বিঘ্ন দেখা দিয়েছে। এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত আমাদের সব গ্রাহক এবং শিল্প স্টেকহোল্ডারদের কাছে আমরা আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’ তারা আরও যোগ করেছে, ‘ইন্ডিগো এই বিলম্বের প্রভাব কমাতে এবং স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে নিরলসভাবে ও সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’

কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব এবং সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা এই পতনের প্রধান কারণ। জাতীয় দারিদ্র্য হ্রাস ত্বরান্বিতকরণ টিমের নীতি বিশেষজ্ঞ এগা কুরনিয়া ইয়াজিদ বলেন, ‘বিভিন্ন আন্তঃসংযুক্ত কারণ মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংকোচনের জন্য দায়ী। মধ্যবিত্তরা মূলত কর রাজস্বে বড় অবদান রাখে। কিন্তু তারা খুবই সীমিত
১৫ নভেম্বর ২০২৪
যে বয়সে শিশুরা বর্ণমালা শেখে, ছত্তিশগড়ের বাস্তার জেলার বাকাওয়ান্দ গ্রামের বাসিন্দা লিসা তখন ভয়কে জানছিলেন। ছয় বছর বয়সেই তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় বাইরের জগতের সব শব্দ। বাড়ির দরজা শুধু খাবারের জন্য খুলত, জীবনের জন্য নয়। ২০ বছর পর কর্তৃপক্ষ যখন তাঁকে খুঁজে পায়, তখন তাঁর চোখে নয়, স্মৃতিতেও...
২৫ মিনিট আগে
গত বছর রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার সিঙ্ক্রো ইভেন্টে সোনা জেতেন ইউক্রেনীয় ডাইভার সোফিয়া লাইসকুন (২৩)। তবে সম্প্রতি আকস্মিকভাবে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখানোর পর তাঁকে চরম শাস্তির মুখে পড়তে হলো। ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশন (ইউডিএফ) ফেডারেশনের অধীনে পাওয়া তাঁর সমস্ত...
২ ঘণ্টা আগে
পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রথম প্রধান বা চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছেন, পাকিস্তান এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আওয়াইন-ই-সদরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ঘরোয়া আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

গত বছর রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার সিঙ্ক্রো ইভেন্টে সোনা জেতেন ইউক্রেনীয় ডাইভার সোফিয়া লাইসকুন (২৩)। তবে সম্প্রতি আকস্মিকভাবে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখানোর পর তাঁকে চরম শাস্তির মুখে পড়তে হলো। ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশন (ইউডিএফ) ফেডারেশনের অধীনে পাওয়া তাঁর সমস্ত খেতাব, পদক ও পুরস্কার প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছে।
ইউডিএফ জানিয়েছে, লাইসকুন দেশের ক্রীড়া মহলের কোনো পক্ষকেই তাঁর এই সিদ্ধান্তের কথা জানাননি। তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ দলবদলের বিষয়ে ফেডারেশন, কোচিং স্টাফ এমনকি ইউক্রেনের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কেও অবগত করেননি। তাঁর এই অপ্রত্যাশিত দলবদলের ঘটনায় ফেডারেশন ‘তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা’ জানিয়েছে।
ফেডারেশনের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে অত্যন্ত কঠোর ভাষায় বলা হয়েছে: ‘এই ধরনের পদক্ষেপ শুধু চূড়ান্তভাবে অগ্রহণযোগ্যই নয়, এগুলো জাতীয় দল এবং ইউক্রেনের মর্যাদার ওপর সরাসরি আঘাত। যে মুহূর্তে পুরো ইউক্রেনীয় দল আন্তর্জাতিক মঞ্চে আমাদের দেশের প্রতিনিধিত্ব করার অধিকারের জন্য নিঃস্বার্থভাবে লড়াই করছে, ঠিক তখনই একজন চ্যাম্পিয়নের এমন পদক্ষেপ পুরো প্রচেষ্টাকেই হেয় করে।’
ইউক্রেনীয় ফেডারেশনের এই সমালোচনার বিপরীতে লাইসকুন তাঁর সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। রাশিয়ার সংবাদপত্র ইজভেস্তিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউক্রেনে তিনি তাঁর কোচদের অধীনে আর পেশাদারভাবে ‘উন্নতি’ করতে পারছিলেন না।
লাইসকুন অভিযোগ করেন, তাঁর ইউক্রেনীয় কোচিং স্টাফে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা ‘সবাই জিমন্যাস্ট বা ট্রাম্পোলিন ক্রীড়াবিদ ছিলেন’, এটি আন্তর্জাতিক ডাইভিং-এর মতো বিশেষায়িত খেলার জন্য অনুকূল ছিল না। তাঁর মতে, উপযুক্ত বিশেষজ্ঞের অভাবই তাঁকে দলবদলে উৎসাহিত করেছে।
লাইসকুনের দলবদলের পর ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির এক জরুরি বৈঠক বসে। সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে ইউক্রেন জাতীয় দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর পাশাপাশি, ফেডারেশনের অধীনে সোফিয়া লাইসকুনের অর্জিত সমস্ত খেতাব ও পুরস্কার বাতিল করার মতো কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ফেডারেশন জানিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সংস্থাগুলোর কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদন জানাবে, যাতে বর্তমান আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী এই ক্রীড়াবিদের ওপর ‘স্পোর্টস কোয়ারেন্টাইন’ আরোপ করা হয়। এর অর্থ হলো, ইউক্রেন চাচ্ছে, লাইসকুন যেন কিছু নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে না পারে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর রাশিয়া এবং বেলারুশের ক্রীড়াবিদদের ওয়ার্ল্ড অ্যাকুয়াটিক্স ইভেন্টগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নিষিদ্ধ ছিল। তবে সেই বিধিনিষেধগুলো সম্প্রতি শিথিল করা হয়েছে। বর্তমানে রুশ এবং বেলারুশীয় ক্রীড়াবিদদের তাঁদের জাতীয় পতাকা বা প্রতীক ছাড়াই নিরপেক্ষ ক্রীড়াবিদ হিসেবে ব্যক্তিগত ইভেন্টগুলোতে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। আগামী জানুয়ারি থেকে তাঁরা দলগত ইভেন্টেও নিরপেক্ষ ক্রীড়াবিদ হিসেবে অংশ নিতে পারবেন। লাইসকুন-এর এই দলবদল এমন এক সময়ে ঘটল, যখন রাশিয়ার ক্রীড়াবিদেরা ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া মঞ্চে ফেরার সুযোগ পাচ্ছেন।

গত বছর রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার সিঙ্ক্রো ইভেন্টে সোনা জেতেন ইউক্রেনীয় ডাইভার সোফিয়া লাইসকুন (২৩)। তবে সম্প্রতি আকস্মিকভাবে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখানোর পর তাঁকে চরম শাস্তির মুখে পড়তে হলো। ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশন (ইউডিএফ) ফেডারেশনের অধীনে পাওয়া তাঁর সমস্ত খেতাব, পদক ও পুরস্কার প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছে।
ইউডিএফ জানিয়েছে, লাইসকুন দেশের ক্রীড়া মহলের কোনো পক্ষকেই তাঁর এই সিদ্ধান্তের কথা জানাননি। তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ দলবদলের বিষয়ে ফেডারেশন, কোচিং স্টাফ এমনকি ইউক্রেনের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কেও অবগত করেননি। তাঁর এই অপ্রত্যাশিত দলবদলের ঘটনায় ফেডারেশন ‘তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা’ জানিয়েছে।
ফেডারেশনের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে অত্যন্ত কঠোর ভাষায় বলা হয়েছে: ‘এই ধরনের পদক্ষেপ শুধু চূড়ান্তভাবে অগ্রহণযোগ্যই নয়, এগুলো জাতীয় দল এবং ইউক্রেনের মর্যাদার ওপর সরাসরি আঘাত। যে মুহূর্তে পুরো ইউক্রেনীয় দল আন্তর্জাতিক মঞ্চে আমাদের দেশের প্রতিনিধিত্ব করার অধিকারের জন্য নিঃস্বার্থভাবে লড়াই করছে, ঠিক তখনই একজন চ্যাম্পিয়নের এমন পদক্ষেপ পুরো প্রচেষ্টাকেই হেয় করে।’
ইউক্রেনীয় ফেডারেশনের এই সমালোচনার বিপরীতে লাইসকুন তাঁর সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। রাশিয়ার সংবাদপত্র ইজভেস্তিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউক্রেনে তিনি তাঁর কোচদের অধীনে আর পেশাদারভাবে ‘উন্নতি’ করতে পারছিলেন না।
লাইসকুন অভিযোগ করেন, তাঁর ইউক্রেনীয় কোচিং স্টাফে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা ‘সবাই জিমন্যাস্ট বা ট্রাম্পোলিন ক্রীড়াবিদ ছিলেন’, এটি আন্তর্জাতিক ডাইভিং-এর মতো বিশেষায়িত খেলার জন্য অনুকূল ছিল না। তাঁর মতে, উপযুক্ত বিশেষজ্ঞের অভাবই তাঁকে দলবদলে উৎসাহিত করেছে।
লাইসকুনের দলবদলের পর ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির এক জরুরি বৈঠক বসে। সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে ইউক্রেন জাতীয় দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর পাশাপাশি, ফেডারেশনের অধীনে সোফিয়া লাইসকুনের অর্জিত সমস্ত খেতাব ও পুরস্কার বাতিল করার মতো কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ফেডারেশন জানিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সংস্থাগুলোর কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদন জানাবে, যাতে বর্তমান আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী এই ক্রীড়াবিদের ওপর ‘স্পোর্টস কোয়ারেন্টাইন’ আরোপ করা হয়। এর অর্থ হলো, ইউক্রেন চাচ্ছে, লাইসকুন যেন কিছু নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে না পারে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর রাশিয়া এবং বেলারুশের ক্রীড়াবিদদের ওয়ার্ল্ড অ্যাকুয়াটিক্স ইভেন্টগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নিষিদ্ধ ছিল। তবে সেই বিধিনিষেধগুলো সম্প্রতি শিথিল করা হয়েছে। বর্তমানে রুশ এবং বেলারুশীয় ক্রীড়াবিদদের তাঁদের জাতীয় পতাকা বা প্রতীক ছাড়াই নিরপেক্ষ ক্রীড়াবিদ হিসেবে ব্যক্তিগত ইভেন্টগুলোতে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। আগামী জানুয়ারি থেকে তাঁরা দলগত ইভেন্টেও নিরপেক্ষ ক্রীড়াবিদ হিসেবে অংশ নিতে পারবেন। লাইসকুন-এর এই দলবদল এমন এক সময়ে ঘটল, যখন রাশিয়ার ক্রীড়াবিদেরা ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া মঞ্চে ফেরার সুযোগ পাচ্ছেন।

কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব এবং সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা এই পতনের প্রধান কারণ। জাতীয় দারিদ্র্য হ্রাস ত্বরান্বিতকরণ টিমের নীতি বিশেষজ্ঞ এগা কুরনিয়া ইয়াজিদ বলেন, ‘বিভিন্ন আন্তঃসংযুক্ত কারণ মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংকোচনের জন্য দায়ী। মধ্যবিত্তরা মূলত কর রাজস্বে বড় অবদান রাখে। কিন্তু তারা খুবই সীমিত
১৫ নভেম্বর ২০২৪
যে বয়সে শিশুরা বর্ণমালা শেখে, ছত্তিশগড়ের বাস্তার জেলার বাকাওয়ান্দ গ্রামের বাসিন্দা লিসা তখন ভয়কে জানছিলেন। ছয় বছর বয়সেই তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় বাইরের জগতের সব শব্দ। বাড়ির দরজা শুধু খাবারের জন্য খুলত, জীবনের জন্য নয়। ২০ বছর পর কর্তৃপক্ষ যখন তাঁকে খুঁজে পায়, তখন তাঁর চোখে নয়, স্মৃতিতেও...
২৫ মিনিট আগে
প্রায় বারো ঘণ্টা ধরে যাত্রীরা নিজেদের মালপত্র হাতে পেতে রীতিমতো সংগ্রাম করছেন। খাবার–পানির কোনো ব্যবস্থা নেই, আর ইন্ডিগোর কাউন্টারগুলি ফাঁকা। ভারতের অন্যতম বৃহত্তম বিমান সংস্থা সংস্থা ইন্ডিগোর পরিচালনগত ত্রুটির কারণে পাঁচ শতাধিক ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় ভারতের বিমানবন্দরগুলোতে এমন বিশৃঙ্খল দৃশ্য দেখা গেছে
২৮ মিনিট আগে
পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রথম প্রধান বা চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছেন, পাকিস্তান এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আওয়াইন-ই-সদরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ঘরোয়া আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রথম প্রধান বা চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছেন, পাকিস্তান এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আওয়াইন-ই-সদরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ঘরোয়া আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
আসিম মুনির বলেন, ‘সবই তো ঠিক আছে, আপনাদের চোখের সামনেই তো সব। অবস্থার উন্নতি হচ্ছে, আর এখন থেকে পাকিস্তান আরও অনন্য উচ্চতায় পৌঁছাবে।’ তাঁর এই মন্তব্য এল ঠিক এমন এক সময়ে, যখন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ একটি নোট প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির কাছে পাঠিয়েছিলেন। তাতে সেনাপ্রধান মুনিরকে পাকিস্তানের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) হিসেবে নিয়োগ করার সুপারিশ করা হয়। এরপরই প্রেসিডেন্ট এই অনুমোদন দেন।
সত্তরের দশকের পর দেশটির সামরিক কমান্ডে এটি হলো সবচেয়ে বড় ও ব্যাপক পরিবর্তন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এই নিয়োগে অনুমোদন দেন। খবর দ্য ডনের
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ‘প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে পাঁচ বছরের জন্য সেনাপ্রধানের (সিওএএস) সঙ্গে সমান্তরালভাবে সিডিএফ হিসেবেও নিয়োগে অনুমোদন দিয়েছেন।’ এই বিবৃতি বহুদিনের জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটাল। এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শাহবাজই প্রেসিডেন্টকে এই নতুন দ্বৈত দায়িত্বপ্রাপ্ত পদে ফিল্ড মার্শাল মুনিরকে নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে সেনাবাহিনীর প্রধান এবং চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসেবে নিয়োগের সারসংক্ষেপ প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন।’
এই নতুন ব্যবস্থা পাকিস্তানের সংবিধানের ২৭তম সংশোধনীতে ২৪৩ অনুচ্ছেদের পরিবর্তনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। যার ফলে একটি অফিসের অধীনে সশস্ত্র বাহিনীর অপারেশনাল, প্রশাসনিক ও কৌশলগত ক্ষমতাকে একত্র করা হয়েছে। সংশোধিত ২৪৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট সেনাপ্রধানকে নিয়োগ করবেন, যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসেবেও কাজ করবেন।
এই সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৭৬ সাল থেকে চালু থাকা তিন বাহিনীর সমন্বয় ব্যবস্থা—চেয়ারম্যান জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির (সিজেসিএসসি) অফিস বিলুপ্ত করা হয়। এর ফলে যৌথ কমান্ডের ইন্টিগ্রেশন সিডিএফের হাতে চলে এল।
সাংবিধানিক এই আমূল পরিবর্তনকে সামরিক বাহিনীর আইনি কাঠামোর মধ্যে আনার জন্য সরকার ২৭তম সংশোধনীর পরপরই ১৯৫২ সালের পাকিস্তান আর্মি অ্যাক্টেও (পিএএ) সংশোধন আনে। পিএএর ৮এ অনুচ্ছেদের উপধারা (১) এখন জানাচ্ছে, ‘প্রথমবারের মতো সেনাবাহিনীর প্রধান যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হবেন [...], তাঁর মেয়াদ এই ধারার অধীনে ওই পদের বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে শুরু হবে।’
আরও বলা হয়েছে, এই প্রথম সিওএএসসহ-সিডিএফের বিজ্ঞপ্তি জারি হলে ‘বর্তমান সেনাপ্রধানের বিদ্যমান মেয়াদ ওই বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে পুনরায় শুরু হয়েছে বলে গণ্য হবে।’ ৮এ অনুচ্ছেদের উপধারা (৩) অনুযায়ী, সিওএএস যিনি একই সঙ্গে সিডিএফেরও দায়িত্বে থাকবেন, তাঁর ‘শর্তাবলি ও নিয়ম’ প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট স্থির করবেন।
ফিল্ড মার্শাল মুনির ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর ১৭তম সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ২০২৪ সালের নভেম্বরে সরকার পিএএ-তে পরিবর্তন আনে, যেখানে সিজেসিএসসির মেয়াদ তিন বছর অপরিবর্তিত রেখে বাকি তিন বাহিনীর প্রধানদের মেয়াদ তিন থেকে বাড়িয়ে পাঁচ বছর করা হয়। একই সংশোধনীতে সার্ভিস চিফদের পুনর্নিয়োগ বা তাঁদের মেয়াদ পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ রাখা হয়, যা আগে সর্বোচ্চ তিন বছর ছিল।

পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রথম প্রধান বা চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছেন, পাকিস্তান এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আওয়াইন-ই-সদরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ঘরোয়া আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
আসিম মুনির বলেন, ‘সবই তো ঠিক আছে, আপনাদের চোখের সামনেই তো সব। অবস্থার উন্নতি হচ্ছে, আর এখন থেকে পাকিস্তান আরও অনন্য উচ্চতায় পৌঁছাবে।’ তাঁর এই মন্তব্য এল ঠিক এমন এক সময়ে, যখন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ একটি নোট প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির কাছে পাঠিয়েছিলেন। তাতে সেনাপ্রধান মুনিরকে পাকিস্তানের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) হিসেবে নিয়োগ করার সুপারিশ করা হয়। এরপরই প্রেসিডেন্ট এই অনুমোদন দেন।
সত্তরের দশকের পর দেশটির সামরিক কমান্ডে এটি হলো সবচেয়ে বড় ও ব্যাপক পরিবর্তন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এই নিয়োগে অনুমোদন দেন। খবর দ্য ডনের
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ‘প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে পাঁচ বছরের জন্য সেনাপ্রধানের (সিওএএস) সঙ্গে সমান্তরালভাবে সিডিএফ হিসেবেও নিয়োগে অনুমোদন দিয়েছেন।’ এই বিবৃতি বহুদিনের জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটাল। এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শাহবাজই প্রেসিডেন্টকে এই নতুন দ্বৈত দায়িত্বপ্রাপ্ত পদে ফিল্ড মার্শাল মুনিরকে নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে সেনাবাহিনীর প্রধান এবং চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসেবে নিয়োগের সারসংক্ষেপ প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন।’
এই নতুন ব্যবস্থা পাকিস্তানের সংবিধানের ২৭তম সংশোধনীতে ২৪৩ অনুচ্ছেদের পরিবর্তনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। যার ফলে একটি অফিসের অধীনে সশস্ত্র বাহিনীর অপারেশনাল, প্রশাসনিক ও কৌশলগত ক্ষমতাকে একত্র করা হয়েছে। সংশোধিত ২৪৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট সেনাপ্রধানকে নিয়োগ করবেন, যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসেবেও কাজ করবেন।
এই সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৭৬ সাল থেকে চালু থাকা তিন বাহিনীর সমন্বয় ব্যবস্থা—চেয়ারম্যান জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির (সিজেসিএসসি) অফিস বিলুপ্ত করা হয়। এর ফলে যৌথ কমান্ডের ইন্টিগ্রেশন সিডিএফের হাতে চলে এল।
সাংবিধানিক এই আমূল পরিবর্তনকে সামরিক বাহিনীর আইনি কাঠামোর মধ্যে আনার জন্য সরকার ২৭তম সংশোধনীর পরপরই ১৯৫২ সালের পাকিস্তান আর্মি অ্যাক্টেও (পিএএ) সংশোধন আনে। পিএএর ৮এ অনুচ্ছেদের উপধারা (১) এখন জানাচ্ছে, ‘প্রথমবারের মতো সেনাবাহিনীর প্রধান যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হবেন [...], তাঁর মেয়াদ এই ধারার অধীনে ওই পদের বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে শুরু হবে।’
আরও বলা হয়েছে, এই প্রথম সিওএএসসহ-সিডিএফের বিজ্ঞপ্তি জারি হলে ‘বর্তমান সেনাপ্রধানের বিদ্যমান মেয়াদ ওই বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে পুনরায় শুরু হয়েছে বলে গণ্য হবে।’ ৮এ অনুচ্ছেদের উপধারা (৩) অনুযায়ী, সিওএএস যিনি একই সঙ্গে সিডিএফেরও দায়িত্বে থাকবেন, তাঁর ‘শর্তাবলি ও নিয়ম’ প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট স্থির করবেন।
ফিল্ড মার্শাল মুনির ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর ১৭তম সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ২০২৪ সালের নভেম্বরে সরকার পিএএ-তে পরিবর্তন আনে, যেখানে সিজেসিএসসির মেয়াদ তিন বছর অপরিবর্তিত রেখে বাকি তিন বাহিনীর প্রধানদের মেয়াদ তিন থেকে বাড়িয়ে পাঁচ বছর করা হয়। একই সংশোধনীতে সার্ভিস চিফদের পুনর্নিয়োগ বা তাঁদের মেয়াদ পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ রাখা হয়, যা আগে সর্বোচ্চ তিন বছর ছিল।

কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব এবং সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা এই পতনের প্রধান কারণ। জাতীয় দারিদ্র্য হ্রাস ত্বরান্বিতকরণ টিমের নীতি বিশেষজ্ঞ এগা কুরনিয়া ইয়াজিদ বলেন, ‘বিভিন্ন আন্তঃসংযুক্ত কারণ মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংকোচনের জন্য দায়ী। মধ্যবিত্তরা মূলত কর রাজস্বে বড় অবদান রাখে। কিন্তু তারা খুবই সীমিত
১৫ নভেম্বর ২০২৪
যে বয়সে শিশুরা বর্ণমালা শেখে, ছত্তিশগড়ের বাস্তার জেলার বাকাওয়ান্দ গ্রামের বাসিন্দা লিসা তখন ভয়কে জানছিলেন। ছয় বছর বয়সেই তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় বাইরের জগতের সব শব্দ। বাড়ির দরজা শুধু খাবারের জন্য খুলত, জীবনের জন্য নয়। ২০ বছর পর কর্তৃপক্ষ যখন তাঁকে খুঁজে পায়, তখন তাঁর চোখে নয়, স্মৃতিতেও...
২৫ মিনিট আগে
প্রায় বারো ঘণ্টা ধরে যাত্রীরা নিজেদের মালপত্র হাতে পেতে রীতিমতো সংগ্রাম করছেন। খাবার–পানির কোনো ব্যবস্থা নেই, আর ইন্ডিগোর কাউন্টারগুলি ফাঁকা। ভারতের অন্যতম বৃহত্তম বিমান সংস্থা সংস্থা ইন্ডিগোর পরিচালনগত ত্রুটির কারণে পাঁচ শতাধিক ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় ভারতের বিমানবন্দরগুলোতে এমন বিশৃঙ্খল দৃশ্য দেখা গেছে
২৮ মিনিট আগে
গত বছর রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার সিঙ্ক্রো ইভেন্টে সোনা জেতেন ইউক্রেনীয় ডাইভার সোফিয়া লাইসকুন (২৩)। তবে সম্প্রতি আকস্মিকভাবে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখানোর পর তাঁকে চরম শাস্তির মুখে পড়তে হলো। ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশন (ইউডিএফ) ফেডারেশনের অধীনে পাওয়া তাঁর সমস্ত...
২ ঘণ্টা আগে