Ajker Patrika

মেয়েদের শিক্ষা নিয়ে বিভাজন, দেশ ছেড়ে পালালেন তালেবান মন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক
তালেবানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক উপদেষ্টা শের আব্বাস স্তানিকজাই। ছবি: দ্য ইনডিপেনডেন্ট
তালেবানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক উপদেষ্টা শের আব্বাস স্তানিকজাই। ছবি: দ্য ইনডিপেনডেন্ট

আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের একজন সিনিয়র মন্ত্রী মেয়েদের শিক্ষার ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছিলেন। মঙ্গলবার ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, শেষ পর্যন্ত গ্রেপ্তারের আশঙ্কায় আফগানিস্তান থেকে পালিয়েছেন ওই মন্ত্রী।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মাসেই তালেবানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক উপদেষ্টা শের আব্বাস স্তানিকজাই মেয়েদের জন্য পুনরায় স্কুল চালু করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘মেয়েদের শিক্ষার ওপর নিষেধাজ্ঞা ইসলামি শরিয়াহ আইনের পরিপন্থী। এর কোনো যুক্তিসংগত কারণ নেই—না এখন, না ভবিষ্যতে।’

আফগানিস্তানের নারী জনসংখ্যার দিকে ইঙ্গিত করে স্তানিকজাই বলেছিলেন, ‘আমরা ২ কোটি মানুষের প্রতি অবিচার করছি।’

খোস্ত প্রদেশে এক সমাবর্তন অনুষ্ঠানে দেওয়া ওই বক্তব্যটি ছিল তালেবানের নারী শিক্ষাবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে প্রথম প্রকাশ্য প্রতিবাদ। এর মাধ্যমে আফগানিস্তানের শাসকদের মধ্যে বিরল মতপার্থক্যের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

আফগানিস্তানের বর্তমান তালেবান সরকার তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে নারীদের জন্য ষষ্ঠ শ্রেণির পর শিক্ষা নিষিদ্ধ করেছে। এই ইস্যুতে দেশটি আন্তর্জাতিকভাবে অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

স্তানিকজাইয়ের বক্তব্যের পর তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা তাঁকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন এবং তাঁর ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন বলে জানা গেছে। তবে গ্রেপ্তার হওয়ার আগেই স্তানিকজাই সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশে দেশত্যাগ করেন বলে আফগানিস্তান ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে।

স্থানীয় গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্তানিকজাই অবশ্য দাবি করেছেন, তিনি চিকিৎসার প্রয়োজনে দুবাই গিয়েছেন।

মেয়েদের শিক্ষার পক্ষে এবারই প্রথম নয়, এর আগেও কথা বলেছিলেন স্তানিকজাই। তালেবানেরা ক্ষমতা গ্রহণের এক বছর পর ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি বলেছিলেন, ‘কেউ মেয়েদের শিক্ষার অধিকার কেড়ে নেওয়ার ধর্মীয় কারণ দেখাতে পারবে না। শিক্ষা নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য বাধ্যতামূলক।’

বিশ্লেষকদের মতে, স্তানিকজাইয়ের দেশত্যাগের খবরটি তালেবানের নেতৃত্বে বিভক্তির বিষয়টি আরও স্পষ্ট করে তুলেছে। আফগানিস্তান পুনর্গঠনের জন্য নিয়োজিত মার্কিন বিশেষ পরিদর্শক সংস্থা (এসআইজিএআর) জানিয়েছে, তালেবানের অভ্যন্তরীণ দুই ক্ষমতার কেন্দ্র—কাবুল ও কান্দাহারের মধ্যে মেয়েদের শিক্ষায় নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।

সম্প্রতি তালেবানের উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নবি ওমারি খোস্ত প্রদেশের এক সভায় মেয়েদের শিক্ষা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, ‘আমি জানি, ধর্মীয় বিধিনিষেধ থাকলেও এটি বৈধ হওয়া উচিত।’

এই মন্তব্যের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে, যা তালেবান নেতৃত্বের মধ্যে ক্রমবর্ধমান মতবিরোধের চিত্র তুলে ধরছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিবিসি বাংলার সমালোচনার পর দুঃখপ্রকাশ করলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

ছুটি না দেওয়ায় চার সহকর্মীকে ছুরিকাঘাত করে সদর্পে হাঁটা দিলেন সরকারি কর্মকর্তা

ভারতকে যুদ্ধের হুমকি পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের

গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে রাজশাহীর সাবেক মেয়র লিটনের বাড়ি

হাসিনার বক্তব্যে ‘ভারতের দায় নেই’, বাংলাদেশের দূতকে পাল্টা তলব

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত