Ajker Patrika

আলিপুরদুয়ার থেকে মোদির ‘মিশন বেঙ্গল’, নজর বাংলাদেশে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ারে একটি জনসভায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি: পিটিআই
পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ারে একটি জনসভায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি: পিটিআই

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ার থেকে বিজেপির ‘মিশন বেঙ্গল’ শুরু করেছেন। মূলত ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে লক্ষ্য করে এই প্রচার শুরু হলেও বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই সফরের মাধ্যমে মোদি প্রতিবেশী বাংলাদেশের প্রতি একটি কড়া বার্তা দিতে চান। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোদি তাঁর এই গুরুত্বপূর্ণ সমাবেশের জন্য আলিপুরদুয়ারকে বেছে নিয়েছেন, যা বাংলাদেশের সীমান্তের খুব কাছে। রাজ্য বিজেপির সূত্র বলছে, বৃহস্পতিবারের (২৯ মে) এই সভার স্থান নির্বাচনের সিদ্ধান্ত সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকেই আসে।

বিশ্লেষকদের মতে, আলিপুরদুয়ারের অবস্থান কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি হাসিমারা বিমানঘাঁটির কাছাকাছি, যা সম্প্রতি পাকিস্তানের সঙ্গে চার দিনের সংঘাতে ভারতের বিমানশক্তির শ্রেষ্ঠত্ব প্রদর্শনে ব্যবহৃত হয়েছিল। সংশ্লিষ্টদের মতে, এর মাধ্যমে ভারত তার সামরিক সক্ষমতার একটি ইঙ্গিত দিতে চাইছে। এটি বাংলাদেশের জন্যও একটি সামরিক ও রাজনৈতিক সিগন্যাল।

আরও একটি কারণ হলো, আলিপুরদুয়ার ‘শিলিগুড়ি করিডর’ বা ‘চিকেন নেক’-এর অংশ। এটি ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সিকিম ও উত্তর-পূর্বের সেভেন সিস্টার্সের একমাত্র স্থলপথ। এই অঞ্চলের ভৌগোলিক দুর্বলতা ভারতের জন্য সব সময় উদ্বেগের। আর এখানেই আসে বাংলাদেশের প্রসঙ্গ—গত মার্চ মাসে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. ইউনূসের বেইজিং সফরের সময় একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে গিয়েছিল। তাই ভারতের এই সীমান্তে মোদির এ সফরকে সেই উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের প্রতি একটি কৌশলগত বার্তা হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

সভায় মোদি তাঁর বক্তব্যে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীত, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজ আটকে রাখা ও অপারেশন সিঁদুরের সাফল্যের কথা তুলে ধরেন। তিনি রাজ্যের রাজনীতিতে বিজেপির অবস্থান শক্তিশালী করার ওপরও জোর দেন। তবে, তাঁর ভাষণের অন্তর্নিহিত লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের সঙ্গে সাম্প্রতিক কূটনৈতিক টানাপোড়েন। বিশেষ করে, বাংলাদেশের সঙ্গে ‘চীনের ঘনিষ্ঠতা’ নিয়ে ভারতের অস্বস্তির ইঙ্গিত দেন তিনি।

তিনি বলেন, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর বিজেপি দুটি নির্বাচনে ভালো ফল করলেও সেগুলো খুব বড় জয় না। দলের রাজ্য নেতৃত্ব পরিবর্তন এবং শুভেন্দু অধিকারীর ওপর নির্ভরতাও পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির ভাগ্য খুব বেশি বদলাতে পারেনি। ২০২১ সালের নির্বাচনে বিজেপি উত্তরবঙ্গে ৩০টি আসন পেলেও, গত কয়েক বছরে পাঁচটি আসন তৃণমূলে চলে গেছে। তাই মোদি চান এই অঞ্চলে বিজেপির প্রভাব ফিরিয়ে আনতে।

মোদি এই সফরের পর ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের জন্য বিজেপির বড় প্রচারণার ঘোষণা দেন। তবে ধারণা করা হচ্ছে, মোদির আলিপুরদুয়ারের সভা ‘বাংলাদেশকে ভারতের শক্তি দেখানোর’ একটি বার্তা।

জনসভার আগে, মোদি কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার জেলার জন্য ১ হাজার ১০ কোটি রুপির বেশি মূল্যের একটি গ্যাস প্রকল্পের ভিত্তি স্থাপন করেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে আড়াই লাখেরও বেশি পরিবার গ্যাস পাবে ও নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। তবে কলকাতার মতো বড় শহরের পরিবর্তে পশ্চিমবঙ্গের দুটি দূরবর্তী জেলাকে বেছে নেওয়া এই অঞ্চলের ভৌগোলিক গুরুত্বকেই তুলে ধরে। এর মাধ্যমে বিজেপি কলকাতার দিকেও নিজেদের পথ তৈরি করতে চাইছে, যেখান থেকে নজর রাখা যাবে বাংলাদেশেও।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্কের পর সেই চিকিৎসককে অব্যাহতি ও শোকজ নোটিশ

খালেদা জিয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যেতে পারেন বুধবার

তুমি কে? নিজেকে কী ভাব—পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে ক্ষুব্ধ ইমরান-সমর্থকদের কড়া প্রতিক্রিয়া

মৃত নবজাতক নিয়ে থানায় হাজির মা-বাবা, হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ

চেরনোবিল পারমাণবিক চুল্লি ক্ষতিগ্রস্ত, তেজস্ক্রিয় বিকিরণের বিষয়ে জাতিসংঘের সতর্কবার্তা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাকিস্তানি স্ত্রীকে করাচিতে ফেলে ভারতে দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি, স্বামীর বিচার চেয়ে মোদির কাছে আবেদন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
নিকিতা। ছবি: সংগৃহীত
নিকিতা। ছবি: সংগৃহীত

এক পাকিস্তানি নারী তাঁর ভারতীয় স্বামীর বিরুদ্ধে তাঁকে করাচিতে ফেলে রেখে গোপনে দিল্লিতে দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি নেওয়ার অভিযোগ এনেছেন। নিকিতা নাগদেব নামে পরিচিত ওই মহিলা এই বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে বিচার চেয়ে একটি মরিয়া ভিডিও আবেদন প্রকাশ করেছেন। এই ভিডিও উভয় দেশের সামাজিক গোষ্ঠী এবং আইনি সংস্থাগুলোর মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।

করাচির বাসিন্দা নিকিতা অভিযোগ করেছেন, তিনি ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি হিন্দু প্রথা মেনে করাচিতে বিক্রম নাগদেবকে বিয়ে করেন। বিক্রম ভারতীয় বংশোদ্ভূত পাকিস্তানি, তবে দীর্ঘমেয়াদি ভিসায় ভারতের ইন্দোরে থাকেন। বিয়ের এক মাস পর, ২৬ ফেব্রুয়ারি বিক্রম তাঁকে ভারতে নিয়ে আসেন। কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যেই নিকিতার জীবন পাল্টে যায় বলে তিনি জানান।

২০২০ সালের ৯ জুলাই, তাঁকে ‘ভিসার কারিগরি ত্রুটির’ অজুহাতে আটারি সীমান্তে ঠেলে দেওয়া হয় এবং জোর করে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানো হয়। নিকিতার দাবি, তারপর থেকে বিক্রম তাঁকে ফিরিয়ে আনার কোনো চেষ্টা করেননি। তাঁর আবেগপূর্ণ ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমি তাঁকে বারবার অনুরোধ করেছি। আমাকে ভারতে ডেকে নেওয়ার জন্য, কিন্তু তিনি প্রতিবারই প্রত্যাখ্যান করেছেন।’

করাচি থেকে করা ভিডিওতে নিকিতা আবেদন জানান, ‘আজ যদি ন্যায়বিচার না হয়, তবে নারীরা ন্যায়বিচারের প্রতি বিশ্বাস হারাবেন। অনেক মেয়ে তাঁদের শ্বশুরবাড়িতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন। আমি সবার কাছে আমার পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করছি।’

তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিয়ের পরপরই তিনি তাঁর শ্বশুরবাড়িতে অপ্রত্যাশিত আচরণের শিকার হন। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান থেকে শ্বশুরবাড়িতে ফেরার পর তাঁদের আচরণ সম্পূর্ণ পাল্টে যায়। আমি জানতে পারি, আমার স্বামী আমার এক আত্মীয়ার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন। যখন আমি আমার শ্বশুরকে এ কথা বলি, তিনি বলেন, ছেলেরা তো সম্পর্ক করেই, এতে কিছু করার নেই।’

নিকিতা আরও অভিযোগ করেন, কোভিড-১৯ মহামারির লকডাউনের সময় বিক্রম তাঁকে জোর করে পাকিস্তানে ফেরত পাঠান এবং এখন তাঁকে ভারতে প্রবেশ করতে দিতে অস্বীকার করছেন। তিনি বলেন, ‘ভারতের প্রতিটি নারীর ন্যায়বিচার প্রাপ্য।’

করাচিতে ফিরে আসার পর নিকিতা জানতে পারেন, বিক্রম দিল্লিতে অন্য এক নারীর সঙ্গে দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আইনত বিবাহিত থাকা সত্ত্বেও বিচ্ছেদের আশঙ্কায় বিপর্যস্ত হয়ে নিকিতা চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারী একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

এই মামলাটি মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট কর্তৃক অনুমোদিত সিন্ধি পঞ্চ মধ্যস্থতা ও আইনি পরামর্শ কেন্দ্রের (Sindhi Panch Mediation and Legal Counsel Centre) সামনে আসে। বিক্রম এবং তাঁর কথিত বাগদত্তাকে নোটিশ জারি করা হয় এবং একটি শুনানিও অনুষ্ঠিত হয়। তবে মধ্যস্থতা ব্যর্থ হয়। ২৫ এপ্রিল ওই কাউনসেল সেন্টারের রিপোর্টে বলা হয়, যেহেতু স্বামী বা স্ত্রী কেউই ভারতীয় নাগরিক নন, তাই বিষয়টি পাকিস্তানের এখতিয়ারভুক্ত এবং তারা বিক্রমকে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানোর সুপারিশ করেছে।

এই প্রথম নয় যে মামলাটি ইন্দোরে উঠেছে। চলতি বছরের মে মাসে নিকিতা ইন্দোর সমাজ পঞ্চায়েতের দ্বারস্থ হন, যারা বিক্রমকে নির্বাসনের সুপারিশ করে। কালেক্টর আশীষ সিং নিশ্চিত করেছেন, এই বিষয়ে একটি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

তথ্যসূত্র: এনডিটিভি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্কের পর সেই চিকিৎসককে অব্যাহতি ও শোকজ নোটিশ

খালেদা জিয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যেতে পারেন বুধবার

তুমি কে? নিজেকে কী ভাব—পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে ক্ষুব্ধ ইমরান-সমর্থকদের কড়া প্রতিক্রিয়া

মৃত নবজাতক নিয়ে থানায় হাজির মা-বাবা, হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ

চেরনোবিল পারমাণবিক চুল্লি ক্ষতিগ্রস্ত, তেজস্ক্রিয় বিকিরণের বিষয়ে জাতিসংঘের সতর্কবার্তা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতের গোয়ায় নাইটক্লাবে আগুন, নিহত অন্তত ২৩

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ১১
ভারতের গোয়ায় নাইটক্লাবে অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ২৩ জন নিহত হয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের গোয়ায় নাইটক্লাবে অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ২৩ জন নিহত হয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত

উত্তর গোয়ার আর্পোরায় জনপ্রিয় নাইটক্লাব বার্চ বাই রোমিও লেনে গতকাল গভীর রাতে এক বিধ্বংসী আগুনে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। কর্মকর্তাদের দেওয়া প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছেন এবং বর্তমানে তাঁরা গোয়া মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন।

প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গেছে, গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে ক্লাবটিতে আগুন ধরে যায়। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিন থেকে চারজন পর্যটক এবং ১৯ জন ক্লাবের কর্মী রয়েছেন।

ঘটনাটি রাত আনুমানিক ১টা নাগাদ ঘটে। পুলিশ প্রথমে সন্দেহ করেছিল যে রান্নাঘরের কাছে একটি সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কারণে আগুন লেগেছে। তবে এই সম্ভাবনা নাকচ করা হয়েছে। গোয়ার ডিরেক্টর জেনারেল অব পুলিশের (ডিজিপি) মতে, পরিদর্শনের সময় সিলিন্ডারগুলো অক্ষত ছিল।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণটি এতটা শক্তিশালী ছিল যে আগুন কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে পুরো ভবনটিকে গ্রাস করে ফেলেছিল। ফলে ভেতরে থাকা লোকজনের পালানোর সুযোগ কম ছিল।

নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। আহত ব্যক্তিদের সংখ্যা এবং তাঁদের অবস্থা সম্পর্কে সরকারি বিস্তারিত তথ্যের জন্য এখনো অপেক্ষা করা হচ্ছে।

সারা রাত উদ্ধারকাজ চলে এবং কর্তৃপক্ষ মৃত ব্যক্তিদের পরিচয় শনাক্ত করতে এবং পরিবারকে খবর দিতে কাজ করছে।

গোয়ার ডিরেক্টর জেনারেল অব পুলিশ জানিয়েছেন, ক্লাবের নিরাপত্তাব্যবস্থা, গ্যাস সংযোগ ব্যবস্থা এবং জরুরি বহির্গমন পরিকল্পনায় কোনো নিয়ম লঙ্ঘন হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতেও তদন্ত করা হবে।

একাধিক দমকলের ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং প্রায় দুই ঘণ্টা তীব্র প্রচেষ্টার পর অবশেষে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

নাইটক্লাবটি আপাতত সিল করে দেওয়া হয়েছে এবং মালিক ও ব্যবস্থাপকদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, ক্লাবটি অগ্নিনিরাপত্তা বিধি মেনে চলেনি।

গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী ডা. প্রমোদ সাওয়ান্ত আর্পোরায় বার্চ বাই রোমিও লেন নাইটক্লাবে এই মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে ‘খুবই বেদনাদায়ক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

মুখ্যমন্ত্রী সাওয়ান্ত নিশ্চিত করেছেন যে অগ্নিকাণ্ডের সঠিক কারণ জানতে এবং অগ্নিনিরাপত্তা বিধি ও বিল্ডিং নিয়মাবলি অনুসরণ করা হয়েছিল কি না, তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করার জন্য তিনি একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্কের পর সেই চিকিৎসককে অব্যাহতি ও শোকজ নোটিশ

খালেদা জিয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যেতে পারেন বুধবার

তুমি কে? নিজেকে কী ভাব—পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে ক্ষুব্ধ ইমরান-সমর্থকদের কড়া প্রতিক্রিয়া

মৃত নবজাতক নিয়ে থানায় হাজির মা-বাবা, হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ

চেরনোবিল পারমাণবিক চুল্লি ক্ষতিগ্রস্ত, তেজস্ক্রিয় বিকিরণের বিষয়ে জাতিসংঘের সতর্কবার্তা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চেরনোবিল পারমাণবিক চুল্লি ক্ষতিগ্রস্ত, তেজস্ক্রিয় বিকিরণের বিষয়ে জাতিসংঘের সতর্কবার্তা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গত ফেব্রুয়ারিতে ড্রোন হামলায় চেরনোবিল পারমাণবিক চুল্লির সুরক্ষা আবরণে একটি ছিদ্র তৈরি হয়। ছবি: এপির সৌজন্যে
গত ফেব্রুয়ারিতে ড্রোন হামলায় চেরনোবিল পারমাণবিক চুল্লির সুরক্ষা আবরণে একটি ছিদ্র তৈরি হয়। ছবি: এপির সৌজন্যে

ইউক্রেনের চেরনোবিল পারমাণবিক চুল্লির ওপর তৈরি একটি সুরক্ষামূলক কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে এটি আর তেজস্ক্রিয়তা আটকানোর কাজ করতে পারছে না বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের পরমাণু কর্মসূচিবিষয়ক পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক পারমাণবিক সংস্থা (আইএইএ)।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ফেব্রুয়ারিতে ড্রোন হামলায় এর একটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ওই হামলায় চেরনোবিল পারমাণবিক চুল্লির সুরক্ষা আবরণে একটি ছিদ্র তৈরি হয়।

এর আগে ১৯৮৬ সালে চেরনোবিলের পারমাণবিক চুল্লিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ইউরোপজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল। বিস্ফোরণে চুল্লিটির ছাদ উড়ে গিয়েছিল। এ অবস্থায় যেন বিকিরণ না ছড়ায়, সে জন্য চুল্লির ক্ষতিগ্রস্ত অংশটির ওপর কংক্রিট ও স্টিলের তৈরি একটি প্রতিরক্ষা স্তর সংযুক্ত করা হয়েছিল।

তবে গত সপ্তাহে আইএইএর পরিদর্শনে দেখা গেছে, ড্রোনের আঘাতে কংক্রিট ও স্টিলের তৈরি ওই সুরক্ষা কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়েছে। আইএইএর মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত হয়েছি, সুরক্ষামূলক কাঠামোটি প্রাথমিক নিরাপত্তা কার্যকারিতা (তেজস্ক্রিয়তা নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা) হারিয়েছে।’ তবে তিনি জানান, এর ভার বহনকারী কাঠামোর তেমন ক্ষতি হয়নি।

গ্রোসি বলেন, সাময়িকভাবে মেরামত করা হয়েছে। তবে দীর্ঘ মেয়াদে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে আরও পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন জানায়, বিস্ফোরক বহনকারী একটি ড্রোন চেরনোবিল চুল্লিতে আঘাত হানে, যার ফলে আগুন লাগে এবং চুল্লির চারপাশের প্রতিরক্ষামূলক আচ্ছাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ ড্রোনটি রাশিয়ার বলে দাবি করেছিল। তবে মস্কো প্ল্যান্টে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আক্রমণের প্রথম কয়েক সপ্তাহ রুশ বাহিনী কিয়েভের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করলে এক মাসের বেশি সময় চেরনোবিল ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকা দখল করে রেখেছিল।

প্রায় চার দশক আগে (১৯৮৬ সালে) চেরনোবিল দুর্ঘটনায় মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হিসাব অনুযায়ী, বিস্ফোরণে তৎক্ষণাৎ ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তবে জাতিসংঘের হিসাব মতে, সরাসরি বিকিরণের কারণে ৫০ জন মারা গিয়েছিলেন। ২০০৫ সালে জাতিসংঘ অনুমান করেছিল, ভবিষ্যতে চেরনোবিলের বিকিরণজনিত কারণে আরও ৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্কের পর সেই চিকিৎসককে অব্যাহতি ও শোকজ নোটিশ

খালেদা জিয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যেতে পারেন বুধবার

তুমি কে? নিজেকে কী ভাব—পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে ক্ষুব্ধ ইমরান-সমর্থকদের কড়া প্রতিক্রিয়া

মৃত নবজাতক নিয়ে থানায় হাজির মা-বাবা, হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ

চেরনোবিল পারমাণবিক চুল্লি ক্ষতিগ্রস্ত, তেজস্ক্রিয় বিকিরণের বিষয়ে জাতিসংঘের সতর্কবার্তা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তুমি কে? নিজেকে কী ভাব—পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে ক্ষুব্ধ ইমরান-সমর্থকদের কড়া প্রতিক্রিয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০: ১০
ইমরান খানের ভক্তরা তাঁর দীর্ঘ ক্রীড়া জীবনের ও রাজনৈতিক নানা অর্জন তুলে ধরে পোস্ট দেন। ছবি: পিটিআই
ইমরান খানের ভক্তরা তাঁর দীর্ঘ ক্রীড়া জীবনের ও রাজনৈতিক নানা অর্জন তুলে ধরে পোস্ট দেন। ছবি: পিটিআই

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানকে ঘিরে সমর্থকদের উত্তাপ বেড়েছে। তাঁকে নিয়ে দেশটির সামরিক বাহিনীর মুখপাত্রের সাম্প্রতিক মন্তব্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। আইএসপিআর ডিজি লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী ইমরান খানকে ‘মানসিক রোগী’ ও ‘জাতীয় নিরাপত্তার হুমকি’ আখ্যা দিয়েছেন। এতে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন পিটিআই নেতা-কর্মী, সমর্থক ও সাবেক এই বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটারের ভক্তরা। ‘এক্স’ প্ল্যাটফর্মে তাঁরা নানা ধরনের ভিডিও-মন্টাজ, পুরোনো অর্জনের তালিকা, রাজনৈতিক বক্তব্য ও মিছিলের দৃশ্য শেয়ার করে এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন।

রাওয়ালপিন্ডিতে অনুষ্ঠিত প্রেস কনফারেন্সের শুরুতেই আহমেদ শরীফ চৌধুরী ‘ধীরে ধীরে বাড়তে থাকা জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি’র কথা উল্লেখ করেন, যা সেনাবাহিনীর জন্য মোকাবিলা করা প্রয়োজন হয়ে উঠেছে।

ইমরান খানের নাম উল্লেখ না করে আইএসপিআর ডিজি বলেন, ‘এই হুমকি আসে এক বিভ্রমগ্রস্ত মানুষের বিভ্রমপূর্ণ মানসিকতা থেকে, যিনি নিজের অহংকারের কাছে বন্দী। তিনি মনে করেন তাঁর ইচ্ছাই পাকিস্তান রাষ্ট্রের ইচ্ছার চেয়ে বড়। তাঁর অহং, তাঁর ইচ্ছা আর হতাশা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে তিনি মনে করেন তাঁকে ছাড়া দুনিয়া টিকে থাকতে পারবে না। তুমি কে? নিজেকে কী ভাব তুমি?’

ডিজি আইএসপিআর আরও বলেন, ‘আমার কাছ থেকে এটা শোনা হয়তো কিছুটা অস্বাভাবিক লাগতে পারে, কিন্তু ওই ব্যক্তিটি যে বয়ান দিচ্ছে, তা এখন আর রাজনীতি নয়, এটি জাতীয় নিরাপত্তার বিষয় হয়ে গেছে।’

লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী বলেন, ‘পরিষ্কারভাবে সব বলা, সব দ্বিধা ও সন্দেহ দূর করা এবং প্রয়োজনীয় কথাগুলো প্রকাশ করা সেনাবাহিনীর গণমাধ্যম শাখার জন্য জরুরি হয়ে উঠেছে। আমাদের বুঝতে হবে এই বয়ান কীভাবে কাজ করছে এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এটি কীভাবে বাইরের শক্তির গভীর যোগসাজশে কাজ করছে।’

ইমরান খানের ‘রাষ্ট্রবিরোধী বর্ণনা ও বিভ্রান্তিমূলক প্রচার’ মোকাবিলায় সামরিক বাহিনী কঠোর হবে বলে জানান আইএসপিআর প্রধান। এরপরই সামাজিকমাধ্যমে ইমরান খানের সমর্থকদের প্রবল সাড়া দেখা যায়।

ক্রিকেট তারকা থেকে প্রধানমন্ত্রী—স্মৃতিচারণায় ভরল টাইমলাইন

খানের ভক্তরা তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক ও ক্রীড়া জীবনের নানা অর্জন তুলে ধরে পোস্ট দিতে থাকেন। অভিনেত্রী মাহিরা খান ও ফাওয়াদ খানের ইমরান খানের নেতৃত্বগুণের প্রশংসামূলক বক্তব্যের পুরোনো ক্লিপ জুড়ে তৈরি করা মন্টাজ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।

এর সঙ্গে যোগ হয়েছে তাঁর ক্রীড়া জীবনের প্রধান মাইলফলকগুলো

  • ১৯৮৩ সালে প্রাইড অব পারফরম্যান্স
  • ১৯৯২ সালে হিলাল-ই-ইমতিয়াজ
  • একই বছরে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয়ের অধিনায়ক
  • ২০১০ সালে আইসিসি হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্তি

এই পোস্টগুলোতে সমর্থকরা দাবি করছেন, ‘এমন একজন জাতীয় আইকনকে রাষ্ট্রবিরোধী চ্যালেঞ্জ বলা হচ্ছে— এটা দেশের জন্যই লজ্জাজনক।’

র‍্যালির দৃশ্য, রাজনৈতিক স্লোগান ও জিন্নাহর উদ্ধৃতি

ইমরান খানকে সমর্থন জানাতে অনেকেই সাম্প্রতিক পিটিআই সমর্থকদের র‍্যালির ভিডিও পোস্ট করেছেন। এসব পোস্টে জিন্নাহর নাগরিক–সামরিক সম্পর্কতত্ত্ব থেকে উদ্ধৃতি তুলে দিয়ে বেসামরিক নেতৃত্বের প্রাধান্যের পক্ষে দাবিও দেখা গেছে। কেউ কেউ লিখেছেন, ‘ইমরান খান কেবল খেলার মাঠেই নয়, রাজনীতিতেও দৃষ্টিভঙ্গি এনে দিয়েছেন। তাঁর জনপ্রিয়তা মুছে দেওয়া যাবে না।’

সামরিক বাহিনীর প্রতি পাকিস্তানে প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঐতিহাসিকর বার্তাটিও অনেকে শেয়ার করেছেন। তিনি বলেছিলেন, ‘ভুলে যেও না, সশস্ত্র বাহিনী জনগণের চাকর। তোমরা জাতীয় নীতি তৈরি কর না, আমরা বেসামরিকরাই এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিই। আর তোমাদের দায়িত্ব হলো অর্পিত দায়িত্বপালন করা।’

তিন বছর ধরে কারাবন্দী—তবু জনপ্রিয়তা অটুট

২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ইমরান খান ২০২৩ সাল থেকে কারাবন্দী। তবু অনলাইনে যে প্রবল সমর্থন ছড়িয়ে পড়েছে, তা তাঁর রাজনৈতিক সক্রিয়তা এবং স্মারক-ইমেজ কতটা প্রভাবশালী রয়ে গেছে!’

বিশ্লেষকদের অনেকে বলছেন, আইএসপিআর ডিজির মন্তব্য খানের সমর্থকদের আরও সংগঠিত করে তুলেছে। তাঁদের মতে, পরিস্থিতির রাজনৈতিক উত্তাপ দেখে মনে হচ্ছে, আগামী দিনগুলোতে অনলাইনে এই বিরোধ-বিতর্ক আরও তীব্র হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্কের পর সেই চিকিৎসককে অব্যাহতি ও শোকজ নোটিশ

খালেদা জিয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যেতে পারেন বুধবার

তুমি কে? নিজেকে কী ভাব—পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে ক্ষুব্ধ ইমরান-সমর্থকদের কড়া প্রতিক্রিয়া

মৃত নবজাতক নিয়ে থানায় হাজির মা-বাবা, হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ

চেরনোবিল পারমাণবিক চুল্লি ক্ষতিগ্রস্ত, তেজস্ক্রিয় বিকিরণের বিষয়ে জাতিসংঘের সতর্কবার্তা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত