Ajker Patrika

ভারত-পাকিস্তান

পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা

  • রাতে কাশ্মীর ও পাঞ্জাবে বিস্ফোরণের শব্দ, জম্মুতে ব্ল্যাকআউট।
  • বুধবার ভারতের ২৯টি ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি পাকিস্তানের।
ভারতীয় ড্রোন ভূপতিত হওয়ার পর রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়াম-সংলগ্ন ক্ষতিগ্রস্ত একটি রেস্তোরাঁ। গতকাল রেস্তোরাঁটির সামনে ভিড় করেন স্থানীয়রা। ছবি: এএফপি
ভারতীয় ড্রোন ভূপতিত হওয়ার পর রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়াম-সংলগ্ন ক্ষতিগ্রস্ত একটি রেস্তোরাঁ। গতকাল রেস্তোরাঁটির সামনে ভিড় করেন স্থানীয়রা। ছবি: এএফপি

উপমহাদেশের পারমাণবিক শক্তিধর দুই বৈরী প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনার পারদ বেড়েই চলেছে। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পাকিস্তানে ভারতের বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এবং কাশ্মীর সীমান্তে দুই পক্ষের গোলাগুলির পর গত বুধবার দিবাগত রাতে পাকিস্তানের কয়েকটি জায়গায় ড্রোন হামলা চালিয়েছে ভারত। আর গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরজুড়ে বেজে ওঠে সতর্কসংকেত। অন্ধকারাচ্ছন্ন ভুতুড়ে নগরীতে পরিণত হয় জম্মু। সতর্কসংকেত বেজেছে ভারতের পাঞ্জাবেও।

এর আগে বুধবার দিবাগত রাতে ড্রোন হামলায় লাহোরে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করার দাবি করে ভারত। তবে পাকিস্তান এ দাবি উড়িয়ে দিয়ে বলেছে, তারা ভারতের ২৯টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। পাকিস্তান অভিযোগ করেছে, পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে জলবিদ্যুৎকেন্দ্রে ভারত ড্রোন হামলা চালিয়েছে। ভারত অভিযোগ করেছে, বুধবার দিবাগত রাতে পাকিস্তানি বাহিনী ভারতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ওই রাতে দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে সীমান্তে ব্যাপক গোলাগুলিও হয়েছে।

কাশ্মীরের পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল সন্ত্রাসী হামলা হয়। ভারতের অভিযোগ, পাকিস্তান এ হামলায় জড়িত। তবে পাকিস্তান অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ওই হামলার পর প্রায় দুই সপ্তাহ টানটান উত্তেজনার মধ্যে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পাকিস্তানের কয়েকটি জায়গায় হামলা চালায় ভারত। দেশটির দাবি, তারা ‘সন্ত্রাসী আস্তানা’ লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। তবে পাকিস্তান দাবি করেছে, ভারতীয় বাহিনী বেসামরিক বাড়িঘর ও মসজিদে হামলা চালিয়েছে। দেশটি আরও দাবি করেছে, তারা চীনের তৈরি যুদ্ধবিমান দিয়ে তাড়া করে ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। এর মধ্যে তিনটি রাফায়েল যুদ্ধবিমান, একটি মিগ-২৯ এবং অন্যটি সুখোই-৩০। এ বিষয়ে ভারতের তরফ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য গতকাল শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আসেনি।

এদিকে পাকিস্তান বলেছে, ভারতের হামলায় দেশটিতে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ৩১ জনে দাঁড়িয়েছে, আহত হয়েছেন ৫৭ জন। অন্যদিকে ভারতের সেনাবাহিনী বলেছে, পাকিস্তানের গোলার আঘাতে দেশটিতে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ১৬ জনে দাঁড়িয়েছে।

ভারতের হামলার পর বুধবার পাকিস্তানে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনএসসি) বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ তাঁর দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে ‘প্রতিশোধ নিতে যথোপযুক্ত পদক্ষেপ’ নেওয়ার নির্দেশ দেন। এদিকে হামলার আগে ও পরে ভারত দেশজুড়ে যুদ্ধ পরিস্থিতির মহড়া চালিয়েছে। পাশাপাশি সর্বদলীয় বৈঠক করেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার।

ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সতর্কসংকেত

বিবিসি জানায়, পাকিস্তানি বাহিনী জম্মু-কাশ্মীরে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। জম্মু বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, বিস্ফোরকবাহী এসব ড্রোন লক্ষ্যবস্তুতে গিয়ে আঘাত হেনেছে। হামলার পরিপ্রেক্ষিতে কাশ্মীরজুড়ে বেজে উঠেছে সতর্কসংকেত, সক্রিয় হয়েছে ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা।

স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর জম্মুতে বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে, বেজে চলেছে সতর্কসংকেত। ওই শহরে বিদ্যুৎ নেই। ফলে রাতে শহরটি পুরোপুরি অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায়। এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, জম্মু বিমানবন্দরে বিস্ফোরণ ঘটেছে। তিনি বিমানবন্দর ও আশপাশে ১৬টি বস্তু পড়তে দেখেছেন। প্রাণ বাঁচাতে মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছিল তখন।

ভারতীয় সেনাবাহিনী সূত্র নিশ্চিত করেছে, জম্মুতে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সক্রিয় হয়েছে। পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় কাশ্মীরের জম্মু ও উদামপুর এবং পাঞ্জাবের পাঠানকোটে ভারতের তিনটি সামরিক ঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) সেনাবাহিনী বলেছে, হামলায় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। হুমকি ‘মোকাবিলা’ করা হয়েছে।

জম্মুতে পুলিশ স্থানীয়দের উদ্দেশে বাড়িঘরের আলো নিভিয়ে সবাইকে ঘরের ভেতরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে। অপ্রয়োজনে কোনো যানবাহনে ভ্রমণ এড়াতে এবং আতঙ্কিত না হতেও পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ।

এদিকে সিএনএন জানায়, পাঞ্জাব পুলিশ সূত্র বলেছে, ভারতীয় সেনাবাহিনী পাঞ্জাবের ওপর দিয়ে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ছে। পাঠানকোটের জ্যেষ্ঠ পুলিশ সুপার দলজিন্দর সিং ডিলন বলেন, পাকিস্তানের দিক থেকে গোলাগুলি হচ্ছে। তবে ড্রোন না অন্য কিছুর হামলা হচ্ছে, তাৎক্ষণিকভাবে তা বলা যাচ্ছে না।

এর আগে ভারত সরকার গতকাল অভিযোগ করে, বুধবার দিবাগত রাতভর পাকিস্তানি বাহিনী ভারতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। জবাবে ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানে সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এদিকে যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে ভারতে ২১টি বিমানবন্দর আগামীকাল শনিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে।

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, পাকিস্তান ড্রোন পাঠিয়ে ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ভারতের বেশ কয়েকটি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার চেষ্টা করেছে। তবে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা এসব ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করে দিয়েছে। হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর, পাঞ্জাবের অমৃতসর, লুধিয়ানা ও চণ্ডীগড় এবং গুজরাটের ভুজ।

ভারত আরও অভিযোগ করেছে, কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখার (এলওসি) ওপার থেকে পাকিস্তানি বাহিনীর গোলাগুলির হার বেড়ে গেছে।

সীমান্তে দুই দেশের সেনাদের গুলিবিনিময়ের পর ক্ষতিগ্রস্ত নিজ বাড়ির সামনে এক কিশোর। গতকাল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের উরি সীমান্ত এলাকায়। ছবি: এএফপি
সীমান্তে দুই দেশের সেনাদের গুলিবিনিময়ের পর ক্ষতিগ্রস্ত নিজ বাড়ির সামনে এক কিশোর। গতকাল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের উরি সীমান্ত এলাকায়। ছবি: এএফপি

লাহোর ও আজাদ কাশ্মীরে ভারতের হামলা

বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, পাকিস্তানি বাহিনী গতকাল এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, তারা ভারতের ২৫টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। এগুলো ইসরায়েলের তৈরি হ্যারোপ ড্রোন। বিবৃতিতে পাকিস্তানির সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আহমেদ শরিফ চৌধুরী বলেন, ‘গত রাতে (বুধবার দিবাগত রাত) ভারত বেশ কয়েকটি স্থানে ড্রোন পাঠিয়ে আবারও আগ্রাসন চালিয়েছে। লাহোরে চার সেনাসদস্য আহত হয়েছেন।’ পাকিস্তান বলেছে, ড্রোন হামলায় সিন্ধু প্রদেশে একজন নিহত ও একজন আহত হয়েছেন।

স্থানীয় সূত্র বলেছে, হামলার সময় লাহোরজুড়ে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা গেছে। পাকিস্তানের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত করাচি বিমানবন্দর বন্ধ রাখে। রাজধানী ইসলামাবাদ ও লাহোরেও কিছু সময়ের জন্য বিমানবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ ছিল গতকাল।

বিবিসি জানায়, ভারত সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা পাকিস্তানের কয়েক জায়গায় আকাশ প্রতিরক্ষা রাডার ও ব্যবস্থায় হামলা চালিয়েছে। এসব হামলায় লাহোরে একটি আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে।

তবে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আফিস বার্তা সংস্থা রয়টার্সের কাছে দাবি করেছেন, ভারতের ড্রোন হামলায় লাহোরে কোনো সামরিক স্থাপনা কিংবা আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আহমেদ শরিফ চৌধুরী অভিযোগ করেছেন, ভারত পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে নিলম-ঝিলম জলবিদ্যুৎকেন্দ্রেও হামলা চালিয়েছে। এতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের বাঁধ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তবে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ‘এটা ডাহা মিথ্যা অভিযোগ। ভারত কেবল সন্ত্রাসী অবকাঠামোয় আঘাত হেনেছে।’ তিনি অভিযোগ করেন, পাকিস্তানি বাহিনী ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুঁচে শিখ সম্প্রদায়ের লোকজনকে লক্ষ্য করে গোলা ছুড়ছে। পাকিস্তানের গোলা সেখানকার গুরদোয়ারা জেলায় আঘাত হেনেছে। ওই হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন।

ভারতে সর্বদলীয় বৈঠক

বিবিসি জানায়, ভারতে গতকাল সর্বদলীয় বৈঠক করেছে সরকার। সংসদবিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেন, বৈঠকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে পাকিস্তান ও পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন। এ সময় বিরোধী রাজনীতিকেরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে পরামর্শ দেন।

বৈঠক শেষে কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট মল্লিকার্জুন খাড়গে বার্তা সংস্থা এএনআইকে বলেন, ‘সরকার বলেছে, জাতীয় স্বার্থে কিছু বিষয় গোপন রাখতে হচ্ছে। আমরা (সব বিরোধীরা) বলেছি, আমরা সরকারের সঙ্গে আছি।’

অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেজাদুল মুসলিমিন পার্টির প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি বলেন, তিনি সরকারকে জঙ্গিগোষ্ঠী দ্য রেজিস্ট্যান্স ফোর্সের (টিআরএফ) বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রচারণা চালানোর পরামর্শ দিয়েছেন।

গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার দায় স্বীকার করেছে টিআরএফ। ভারতের দাবি, টিআরএফ জাতিসংঘঘোষিত জঙ্গিগোষ্ঠী পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়েবার একটি শাখা।

যে প্রশ্ন এড়িয়ে গেলেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব

সিএনএন জানায়, পাকিস্তানের তথ্য মন্ত্রণালয় গতকাল দাবি করেছে, কাশ্মীরে তাদের গোলার আঘাতে সীমান্তের ওপারে ৪০-৫০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন। তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার স্কাই নিউজকে বলেছেন, ‘আমরা তাদের (ভারত) সামরিক স্থাপনা উড়িয়ে দিয়েছি।’ বিবিসি জানায়, এসব দাবির বিষয়ে গতকালের সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করা হলে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি কোনো জবাব দেননি।

ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার পাকিস্তানের দাবির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব সরাসরি জবাব দেননি। শুধু বলেছেন, উপযুক্ত সময়ে এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেওয়া হবে।

কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলে (আইএমএফ) পাকিস্তানের ঋণের বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য আজ শুক্রবার আইএমএফের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে তোলা হবে বলে ব্রিফিংয়ে জানান বিক্রম মিশ্রি। তিনি বলেছেন, আইএমএফে ভারতের নির্বাহী পরিচালক ওই ঋণের বিষয়ে ভারতের অবস্থান তুলে ধরবেন।

উত্তেজনা নিরসনে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ

দুই বৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনা নিরসনে আন্তর্জাতিক উদ্যোগও থেমে নেই। এর মধ্যে আলোচনার জন্য ভারতে পৌঁছেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ভারতের হামলার আগের দিন তিনি পাকিস্তানে ছিলেন। সেখানে তিনি পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এর আগে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা নিরসনে মধ্যস্থতা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছিল ইরান।

এদিকে ভারতে পৌঁছেছেন সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী আদেল আল-জুবেইর। কোনো আগাম ঘোষণা না দিয়েই তিনি গতকাল নয়াদিল্লি সফরে গেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি। তিনি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন।

এদিকে বুধবার অনেকটা উষ্মা প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমরা দেখতে চাই, তারা (ভারত ও পাকিস্তান) থেমেছে।’ ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা নিয়ে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) উভয় পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। এর আগে জাতিসংঘও একই আহ্বান জানিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার যে ব্যাখ্যা দিলেন আখতার

রাতে শাহবাগে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে যা বললেন ডিএমপি কমিশনার

জটিল ও সংকটময় মুহূর্ত পার করছেন খালেদা জিয়া: এ জেড এম জাহিদ

রাষ্ট্রপতির কাছে অব্যাহতিপত্র দিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান

জামায়াতে ইসলামী নির্ভরযোগ্য মিত্র না: সামান্তা শারমিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাজা স্থিতিশীলতা বাহিনীতে যোগ দিতে প্রস্তুত পাকিস্তান, তবে আপত্তি হামাসকে নিরস্ত্র করার শর্তে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দার। ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দার। ছবি: সংগৃহীত

গাজায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত আন্তর্জাতিক বাহিনীতে যোগ দিতে নীতিগতভাবে সম্মতি জানিয়েছে পাকিস্তান। তবে এই বাহিনীর ম্যান্ডেটে যদি ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসকে নিরস্ত্র করার শর্ত থাকে, তবে পাকিস্তান তাতে অংশ নেবে না। আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দার এ কথা বলেছেন।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেসের ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে পাকিস্তানের কূটনৈতিক সাফল্য পর্যালোচনা করতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়াজন করা হয়েছিল। সংবাদ সম্মেলনে ইশাক দার বলেন, গাজা শান্তি চুক্তির আওতায় ‘ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাবিলাইজেশন ফোর্স’ (আইএসএফ) গঠন একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয়। পাকিস্তান যেকোনো আন্তর্জাতিক ফোরামে ‘পিস এনফোর্সমেন্ট’ (শান্তি বলবৎকরণ) নয়, বরং ‘পিসকিপিং’ (শান্তি রক্ষা) শব্দ ব্যবহারের ওপর জোর দিচ্ছে।

হামাসকে নিরস্ত্র করা প্রসঙ্গে ইশাক দার স্পষ্ট করে বলেন, ‘যদি এই বাহিনীর ম্যান্ডেটে হামাসকে নিরস্ত্র করার কোনো ভূমিকা থাকে, তবে আমরা তাতে অংশ নেব না। এটি আমাদের কাজ নয়। হামাসকে নিরস্ত্র করার দায়িত্ব ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বা সেখানকার স্থানীয় সরকারের।’

ইশাক দার আরও বলেন, ‘পাকিস্তানের ভূমিকা শুধু শান্তি বজায় রাখায় সহায়তা করার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। বলপ্রয়োগের মাধ্যমে কাউকে নিরস্ত্র করার কোনো অভিযানে পাকিস্তান তার সৈন্যদের জড়াতে চায় না।’

ইশাক দার জানান, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ নীতিগতভাবে সৈন্য পাঠানোর বিষয়ে প্রাথমিক সম্মতি দিলেও, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে পাকিস্তান এই বাহিনীর ‘টার্মস অব রেফারেন্স’ (টিওআর) এবং ম্যান্ডেট পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করবে।

প্রসঙ্গত, গত নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনাকে সমর্থন করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি রেজল্যুশন পাস হয়। পাকিস্তানসহ ১৩টি দেশ এর পক্ষে ভোট দিলেও রাশিয়া ও চীন ভোটদানে বিরত ছিল। ওই পরিকল্পনারই একটি অন্যতম অংশ হলো এই ‘আইএসএফ’ গঠন। এখানে মূলত মুসলিমপ্রধান দেশগুলোর সৈন্যদের প্রাধান্য থাকবে।

ইশাক দার জানান, ইন্দোনেশিয়া এই বাহিনীতে ২০ হাজার সৈন্য পাঠানোর প্রস্তাব দিলেও তারাও হামাসকে নিরস্ত্র করার বিষয়ে পাকিস্তানের মতোই আপত্তি ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

পারমাণবিক শক্তিধর দেশ এবং অভিজ্ঞ সামরিক বাহিনীর অধিকারী হওয়ায় গাজা শান্তি মিশনে পাকিস্তানের অংশগ্রহণ ওয়াশিংটনের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে দেশের অভ্যন্তরে ধর্মীয় দলগুলোর প্রতিবাদ এবং হামাসের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি এড়াতে পাকিস্তান অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে এই পথে এগোচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে ইশাক দার দাবি করেন, একসময় পাকিস্তান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ‘কূটনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন’ বলে বিবেচিত হলেও বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টায় দেশটি পুনরায় বিশ্বমঞ্চে শক্তিশালী অবস্থানে ফিরে এসেছে। তিনি জানান, প্রধান বৈশ্বিক ইস্যুগুলোতে পাকিস্তানের নীতিগত ও দৃঢ় অবস্থানের কারণে আন্তর্জাতিক মহলে ইসলামাবাদের গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার যে ব্যাখ্যা দিলেন আখতার

রাতে শাহবাগে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে যা বললেন ডিএমপি কমিশনার

জটিল ও সংকটময় মুহূর্ত পার করছেন খালেদা জিয়া: এ জেড এম জাহিদ

রাষ্ট্রপতির কাছে অব্যাহতিপত্র দিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান

জামায়াতে ইসলামী নির্ভরযোগ্য মিত্র না: সামান্তা শারমিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠকের আগে ইউক্রেনে রাশিয়ার ব্যাপক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
রুশ হামলায় রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
রুশ হামলায় রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের ঠিক আগে রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ভাষ্য অনুযায়ী, শুক্রবার রাতভর চালানো এই হামলায় প্রায় ৫০০ ড্রোন ও ৪০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়। এতে কিয়েভের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।

জেলেনস্কি এই হামলাকে ওয়াশিংটনের মধ্যস্থতায় চলমান শান্তি প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে রাশিয়ার ‘সরাসরি জবাব’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন শুরুর পর এটিই তাদের সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংঘাত, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর নজিরবিহীন।’

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ শনিবার স্থানীয় সময় সকাল পর্যন্ত হামলা অব্যাহত ছিল। রাজধানী কিয়েভে প্রায় ১০ ঘণ্টা ধরে চলা বিমান হামলার সতর্কতা স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ২০ মিনিটে প্রত্যাহার করা হয়। ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, কিয়েভ ও আশপাশের এলাকায় অন্তত দুজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে কমপক্ষে ৪৬ জন, যাদের মধ্যে দুটি শিশু রয়েছে।

তবে এ বিষয়ে রাশিয়ার পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা ইউক্রেনারগো জানায়, দেশজুড়ে জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা হয়েছে। ফলে রাজধানী কিয়েভে জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখতে হয়েছে।

এই হামলার প্রভাব ইউক্রেনের প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ডেও পড়েছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে দক্ষিণ-পূর্ব পোল্যান্ডের রেশজো ও লুবলিন বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছিল। পরে বিমানবন্দর দুটি আবার চালু করা হয়।

ট্রাম্প-জেলেনস্কি আলোচনার টেবিলে কী আছে

জেলেনস্কি বর্তমানে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে ফ্লোরিডার মার-এ-লাগো রিসোর্টের উদ্দেশে বিমানে রয়েছেন। এক অডিও বার্তায় তিনি জানান, পথে কানাডায় থামবেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে ফোনালাপ করবেন।

এর আগে শুক্রবার কিয়েভে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের যৌথ প্রচেষ্টায় তৈরি হওয়া ২০ দফার শান্তি পরিকল্পনার ৯০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘রোববার যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে যুদ্ধ শেষে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা ও ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলোচনা হবে।’

জেলেনস্কির মতে, যুক্তরাষ্ট্র কী ধরনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেবে, সেটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘এটা নির্ভর করবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কী দিতে প্রস্তুত, কখন দিতে প্রস্তুত এবং কত দিনের জন্য।’

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও বলেছেন, এই শান্তি প্রক্রিয়ায় মূল চালিকাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রই। পলিটিকোকে তিনি বলেন, ‘আমার অনুমোদন না পাওয়া পর্যন্ত তাঁর (জেলেনস্কির) কিছুই চূড়ান্ত নয়। দেখা যাক, সে কী নিয়ে আসে।’ তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, রোববারের বৈঠক ভালো হবে। তিনি আরও জানান, খুব শিগগির তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও কথা বলতে চান।

দোনেৎস্কের ভবিষ্যৎই এখন মূল প্রশ্ন

মস্কো দাবি করছে, ইউক্রেনকে দোনেৎস্কের একটি বড় ও ঘনবসতিপূর্ণ অংশ থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। এই অঞ্চল রুশ বাহিনী প্রায় চার বছরের যুদ্ধেও পুরোপুরি দখল করতে পারেনি। অন্যদিকে কিয়েভ চায়, বর্তমান ফ্রন্টলাইনে যুদ্ধ থামানো হোক।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত এক সমঝোতার আওতায়, ইউক্রেনীয় বাহিনী দোনেৎস্কের কিছু এলাকা থেকে সরে গেলে সেখানে একটি মুক্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনের কথা রয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনো বিস্তারিত ঠিক হয়নি।

জেলেনস্কি ইঙ্গিত দিয়েছেন, যদি চুক্তিতে বড় ধরনের আঞ্চলিক ছাড় দেওয়ার প্রশ্ন আসে, তবে তিনি তা গণভোটের মাধ্যমে জনগণের কাছে নিয়ে যেতে পারেন। তবে যুদ্ধের এমন পরিস্থিতিতে গণভোট আয়োজন অসম্ভব বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

রুশ উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ জানিয়েছেন, কিয়েভের ২০ দফা পরিকল্পনা রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার চেয়ে কিছুটা ভিন্ন, তবে শান্তি প্রক্রিয়ায় একটি ‘টার্নিং পয়েন্ট’ বা মোড় আসার বিষয়ে তিনি আশাবাদী। এখন সবার নজর রোববার ফ্লোরিডায় হতে যাওয়া ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠকের দিকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার যে ব্যাখ্যা দিলেন আখতার

রাতে শাহবাগে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে যা বললেন ডিএমপি কমিশনার

জটিল ও সংকটময় মুহূর্ত পার করছেন খালেদা জিয়া: এ জেড এম জাহিদ

রাষ্ট্রপতির কাছে অব্যাহতিপত্র দিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান

জামায়াতে ইসলামী নির্ভরযোগ্য মিত্র না: সামান্তা শারমিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গুয়াতেমালায় বাস খাদে পড়ে নিহত অন্তত ১৫, আহত ১৯

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ধারণা করা হচ্ছে, কুয়াশা বা যান্ত্রিক ত্রুটি এ দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।  ছবি: সংগৃহীত
ধারণা করা হচ্ছে, কুয়াশা বা যান্ত্রিক ত্রুটি এ দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। ছবি: সংগৃহীত

মধ্য আমেরিকার দেশ গুয়াতেমালায় একটি যাত্রীবাহী বাস গভীর খাদে পড়ে অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় ইন্টার-আমেরিকান হাইওয়েতে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আরও অন্তত ১৯ জন যাত্রী গুরুতর আহত হয়েছেন।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের মুখপাত্র লিয়ান্দ্রো আমাদোর বরাত দিয়ে জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১১ জন পুরুষ, ৩ জন নারী এবং ১টি শিশু রয়েছে।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাসটি গুয়াতেমালা সিটি থেকে মেক্সিকো সীমান্তবর্তী সান মার্কোস বিভাগের দিকে যাচ্ছিল। পথে টোটোনিকাপান বিভাগের ১৭২ থেকে ১৭৪ কিলোমিটারের মধ্যবর্তী এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রায় ৭৫ মিটার (২৫০ ফুট) গভীর একটি খাদে পড়ে যায়। দুর্ঘটনাস্থলটি ‘আলাস্কা পিক’ নামে পরিচিত। দুর্গম ভূখণ্ড এবং খাড়া ঢালের কারণে এলাকাটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

ধারণা করা হচ্ছে, কুয়াশা বা যান্ত্রিক ত্রুটি এ দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে, তবে সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি।

দেশটির ফায়ার সার্ভিস ডিপার্টমেন্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুর্ঘটনার কিছু ছবি শেয়ার করেছে। এতে দেখা যায়, দুমড়েমুচড়ে যাওয়া বাসটি থেকে হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করা হচ্ছে।

আহত ১৯ ব্যক্তিকে উদ্ধার করে কাছের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

এদিকে, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে প্রিয়জনদের খোঁজে ঘটনাস্থল ও হাসপাতালগুলোতে ভিড় করছেন স্বজনেরা।

উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের শুরুতেই গুয়াতেমালা সিটির বাইরে একটি বাস খাদে পড়ে ৫০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। বছরের শেষ দিকে এসে আবারও একই ধরনের বড় দুর্ঘটনায় দেশটিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার যে ব্যাখ্যা দিলেন আখতার

রাতে শাহবাগে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে যা বললেন ডিএমপি কমিশনার

জটিল ও সংকটময় মুহূর্ত পার করছেন খালেদা জিয়া: এ জেড এম জাহিদ

রাষ্ট্রপতির কাছে অব্যাহতিপত্র দিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান

জামায়াতে ইসলামী নির্ভরযোগ্য মিত্র না: সামান্তা শারমিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সোমালিল্যান্ডকে ইসরায়েলের স্বীকৃতি—‘রাষ্ট্রীয় আগ্রাসন’ আখ্যা দিয়ে প্রতাহারের দাবি সোমালিয়ার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৫০
বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি ‘স্বাধীন ও সার্বভৌম’ রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি ‘স্বাধীন ও সার্বভৌম’ রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে সোমালিয়ার বিচ্ছিন্ন অঞ্চল সোমালিল্যান্ডকে একটি ‘স্বাধীন ও সার্বভৌম’ রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সোমালিল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আবদিরহমান মোহাম্মদ আবদুল্লাহি (সিরো) এক ভার্চুয়াল বৈঠকে এ-সংক্রান্ত একটি যৌথ ঘোষণাপত্রে সই করেন।

তবে ইসরায়েলের এই পদক্ষেপকে ‘রাষ্ট্রীয় আগ্রাসন’ হিসেবে অভিহিত করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সোমালিয়া সরকার। মোগাদিশুর দাবি, এটি সোমালিয়ার সার্বভৌমত্বের ওপর নগ্ন হামলা এবং এর পেছনে ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে উচ্ছেদ করে সোমালিল্যান্ডে পাঠানোর গোপন পরিকল্পনা রয়েছে। সেই সঙ্গে তারা সোমালিল্যান্ডকে দেওয়া ‘স্বাধীন ও সার্বভৌম’ রাষ্ট্রের স্বীকৃতি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।

এদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই ঐতিহাসিক মাইলফলককে ‘আব্রাহাম চুক্তি’র অংশ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এর মাধ্যমে দুই দেশ পূর্ণাঙ্গ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করবে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে একে অপরের রাজধানীতে দূতাবাস ও রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করবে। কৃষি, স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে ইসরায়েল সোমালিল্যান্ডকে সরাসরি সহায়তা দেবে।

সোমালিয়ার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আলি ওমর আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ইসরায়েলের এই ধৃষ্টতা কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। এটি আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন।

সোমালিয়ার অভিযোগ, ইসরায়েল গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক উচ্ছেদ করে সোমালিল্যান্ডে পুনর্বাসিত করার জন্য এই স্বীকৃতির চাল চেলেছে। ফিলিস্তিন সরকারও এই আশঙ্কায় সংহতি প্রকাশ করে একে একটি ‘বিপজ্জনক সীমা’ হিসেবে অভিহিত করেছে।

সোমালিয়া সরকার স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, সোমালিল্যান্ড তাদের ভূখণ্ডের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং এর অখণ্ডতা রক্ষায় তারা যেকোনো কূটনৈতিক ও আইনি পদক্ষেপ নেবে।

ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্তে বিশ্ব রাজনীতিতেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র হওয়া সত্ত্বেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ইস্যুতে নেতানিয়াহু থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছেন। তিনি নিউইয়র্ক পোস্টকে বলেছেন, ‘আমি এখনই এই পথে হাঁটব না।’

এদিকে আফ্রিকান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহামুদ আলি ইউসুফ সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দেওয়ার যেকোনো উদ্যোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, এতে বিপজ্জনক নজির তৈরি হবে, যার সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়তে পারে। আফ্রিকান ইউনিয়ন ১৯৬৪ সালের একটি নীতির কথা উল্লেখ করে, যেখানে স্বাধীনতার সময় উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া সীমান্ত অক্ষুণ্ন রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

আরব লিগের মহাসচিব আহমেদ আবুল গেইতও ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি একে একটি আরব ও আফ্রিকান রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের ওপর উসকানিমূলক আক্রমণ বলে উল্লেখ করেন এবং বলেন, এটি আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

অন্যদিকে আন্তর্জাতিক সমালোচনার মধ্যেও শুক্রবার হারগেইসার রাস্তায় হাজারো মানুষ নেমে আসে উদ্‌যাপনে। অনেকের কাছে এটি ছিল ৩০ বছরের কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতার অবসান। দেশটির জাতীয় জাদুঘরে ইসরায়েলের পতাকা টানানো হয় এবং বাসিন্দারা এই স্বীকৃতিকে স্বাগত জানান।

ঐতিহাসিকভাবে সোমালিয়ার সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্কে টানাপোড়েন আছে। এর পেছনে রয়েছে সোমালিয়ার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইথিওপিয়ার সঙ্গে ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। স্নায়ুযুদ্ধের সময় ইসরায়েল ইথিওপিয়াকে সামরিক প্রশিক্ষণ, গোয়েন্দা সহায়তা ও অস্ত্র সরবরাহ করেছিল। অন্যদিকে আরব রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে জোটবদ্ধ সোমালিয়া ১৯৭৭ সালের ওগাডেন যুদ্ধে পরাজিত হয়, যা পরবর্তী কয়েক দশকের গৃহবিবাদকে উসকে দেয়।

১৯৯১ সালে তৎকালীন নেতা মোহাম্মদ সিয়াদ বারের শাসনামলে নিপীড়নের পর সোমালিল্যান্ড স্বাধীনতা ঘোষণা করলেও সোমালিয়া কখনোই অঞ্চলটিকে স্বীকৃতি দেয়নি। জাতিসংঘের কোনো সদস্যরাষ্ট্রও অঞ্চলটিকে স্বীকৃতি দেয়নি। তবে সোমালিল্যান্ড নিজেদের আলাদা মুদ্রা, পতাকা ও সংসদ গঠন করেছে।

হর্ন অব আফ্রিকা অঞ্চলে বাবেল মান্দেব প্রণালির কাছে কৌশলগত অবস্থানের কারণে এই অঞ্চল ভূরাজনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চলতি মাসের শুরুতে ইসরায়েলের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী শ্যারেন হাসকেল জানান, হুথির প্রভাব নিয়ে যৌথ উদ্বেগের বিষয়ে সোমালিয়া সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল। তবে সোমালিয়ার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আলি ওমর এই দাবি অস্বীকার করে বলেন, ইসরায়েলের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই এবং ইসরায়েলি নীতির বিষয়ে সোমালিয়ার অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার যে ব্যাখ্যা দিলেন আখতার

রাতে শাহবাগে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে যা বললেন ডিএমপি কমিশনার

জটিল ও সংকটময় মুহূর্ত পার করছেন খালেদা জিয়া: এ জেড এম জাহিদ

রাষ্ট্রপতির কাছে অব্যাহতিপত্র দিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান

জামায়াতে ইসলামী নির্ভরযোগ্য মিত্র না: সামান্তা শারমিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত