আজকের পত্রিকা ডেস্ক

নারীর শারীরিক শক্তি নিয়ে প্রচলিত ধারণা বদলে যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই তাঁরা পুরুষদের ছাপিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি একাধিক নারী ক্রীড়াবিদ এমন নজির স্থাপন করেছেন, যা কেবল ক্রীড়াঙ্গনের সীমানায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং এসব সাফল্য আমাদের শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে বহু পুরোনো ধ্যানধারণার ভিতে নাড়া দিচ্ছে। এটি একধরনের সাংস্কৃতিক পরিবর্তন, যা নতুনভাবে চিনিয়ে দিচ্ছে নারীর শরীর ও শক্তির প্রকৃত সক্ষমতাকে।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের টারা ডোয়ার অ্যাপালাচিয়ান ট্রেইল শেষ করেছেন মাত্র ৪০ দিন ১৮ ঘণ্টা ৬ মিনিটে, যা আগের রেকর্ডধারী পুরুষের চেয়ে ১৩ ঘণ্টা কম। একই বছর, অ্যারিজোনার অড্রে জিমেনেজ ইতিহাস গড়েছেন—ছেলেদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেই ডিভিশন-১ হাইস্কুল কুস্তি চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন তিনি। দীর্ঘ ম্যারাথন, পাহাড়ে দৌড়, সাঁতার ও রক ক্লাইম্বিং—এসব খেলায় নারীরা নিয়মিতভাবে পুরুষদের চেয়ে ভালো করছেন।
গত বছর জাসমিন প্যারিস বিশ্বের অন্যতম কঠিন ১০০ মাইলের বার্কলে ম্যারাথন শেষ করেছেন ৬০ ঘণ্টারও কম সময়েই। একই সময়ে তিনি একজন স্তন্যদায়ী মায়ের ভূমিকাও পালন করেছেন।
এদিকে নদীপথে দীর্ঘ দূরত্ব সাঁতারে এখন নারীরা এতটাই এগিয়ে যে, তাদের কীর্তি অনেক ক্ষেত্রে সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০২৪ সালে বার্বারা ‘বাবসি’ জ্যাঙ্গার্ল ইয়োসেমাইট ন্যাশনাল পার্কের এল ক্যাপিটান পর্বত অপ্রস্তুত অবস্থায় জয় করেছেন—এটাই প্রথমবার কেউ এমনটি করতে পেরেছেন। এই অর্জনগুলো শুধু শারীরিক নয়, সাংস্কৃতিক পরিবর্তনেরও প্রতীক।
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও অনুশীলন বিজ্ঞানী স্ট্যাসি সিমস বলছেন, ‘৭০ বছর ঊর্ধ্ব নারীরাও এখন ডেডলিফট (ভারউত্তোলন) রেকর্ড গড়ছেন।’
সহনশীলতায় নারীর জয়
যখন ‘শক্তি’র কথা বলা হয়, তখন সাধারণত তা বোঝায় স্বল্প সময়ে সর্বোচ্চ গতি, যেখানে পুরুষদের দেহ কিছুটা এগিয়ে থাকে। তবে সহনশীলতা, দ্রুত পুনরুদ্ধার, মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা—এসব ক্ষেত্রেও নারীরা শারীরিকভাবে এগিয়ে।
ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, প্রাচীন মানবসমাজে নারীরা শুধু গৃহস্থালি নয়, জীবনসংগ্রামের ময়দানেও ছিলেন সক্রিয়। তাঁরা নিয়মিতভাবে ভারী সামগ্রী বহন করতেন, শিকারের পেছনে হাঁটতেন এবং দৈনিক ৮ থেকে ১০ মাইল পথ অতিক্রম করতেন—অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায়, পিরিয়ডের সময় বা শিশুকে কোলে নিয়েও।
অস্ট্রেলিয়ার পার্থের ইডিথ কোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোর্টস বিজ্ঞান উপ-উপাচার্য সোফিয়া নিমফিয়াস বলেন, ‘নারীদের দেহ অধিক ক্লান্তি প্রতিরোধী।’
মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যায়াম বিশেষজ্ঞ সান্দ্রা হান্টারের গবেষণায় দেখা গেছে, নারীদের পেশি দীর্ঘ সময় ধরে হালকা ভারে কার্যকরভাবে কাজ করতে পারে—যেখানে পুরুষেরা শুরুতেই শারীরিক শক্তিতে এগিয়ে থাকলেও, দীর্ঘ মেয়াদে নারীরাই এগিয়ে থাকেন। কারণ হিসেবে দেখা গেছে, নারীরা শক্তির জন্য অপেক্ষাকৃত ধীরগতিতে চর্বি পোড়াতে পারদর্শী, যা দীর্ঘ সময় ধরে দেহকে শক্তি দেয়।
নারীদের শরীরে সাধারণত ‘স্লো-টুইচ’ মাংসপেশির পরিমাণ বেশি থাকে, যা ধীরগতির হলেও অধিক দক্ষ ও ক্লান্তিহীন। অন্যদিকে পুরুষদের দেহে ‘ফাস্ট-টুইচ’ মাংসপেশি বেশি, যা শক্তিশালী হলেও দ্রুত ক্লান্ত হয়।
দ্রুত পুনরুদ্ধার এবং লড়াকু মনোভাব
নারীদের এই ধীরগতির পেশি শুধু সহনশীলতাই নয়, দ্রুত পুনরুদ্ধারের ক্ষমতাও বাড়িয়ে দেয়। ছোট আকারের কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, দ্রুতগতির দৌড় বা ভার উত্তোলনের পর নারীদের শরীর পুরুষদের তুলনায় দ্রুত সেরে ওঠে। ইস্ট্রোজেন হরমোন শরীরের প্রদাহ কমায় ও মাংসপেশি সারাতে সাহায্য করে—এটাই এই পার্থক্যের অন্যতম ব্যাখ্যা।
তবে, নারীরা নির্দিষ্ট কিছু ইনজুরির ঝুঁকিতে বেশি থাকেন—বিশেষ করে হাঁটু ও এসিএল ইনজুরিতে। এর পেছনে জৈবিক, হরমোনজনিত বা পুরুষদের উপযোগী প্রশিক্ষণ পদ্ধতি দায়ী হতে পারে।
শারীরিক শক্তির পাশাপাশি মানসিক দৃঢ়তাও নারীর সাফল্যের পেছনে বড় ভূমিকা রাখে। স্ট্যানফোর্ডের ‘ফাস্টার’ প্রোগ্রামের পরিচালক এমিলি ক্রাউস বলেন, ‘নারীরা এমন এক মানসিক অবস্থায় যেতে পারেন, যা তাঁদের সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ার শক্তি দেয়।’
নারীর শরীরের চারটি অসাধারণ ক্ষমতা
১. ব্যথা সহ্য করার ক্ষমতা
নারীর দেহ নানা ধরনের ব্যথা সহ্য করে—পিরিয়ডের ব্যথা, সন্তান জন্মদানের যন্ত্রণা, পিঠে আঘাত বা হাড়ভাঙা যন্ত্রণা। এসব ব্যথা পরিমাপ করা কঠিন হলেও, অধিকাংশ গবেষণা একমত যে নারীরা ব্যথা পুরুষদের চেয়েও ভালোভাবে সহ্য করতে পারেন।
ক্রীড়াবিদেরা ব্যথা সহ্য করার সত্যিকারের পরিক্ষার্থী। বহু গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণ মানুষের তুলনায় ক্রীড়াবিদেরা ব্যথা বেশি সহ্য করতে পারেন, আর সেখানে নারী-পুরুষের তুলনায় নারী ক্রীড়াবিদদের সহ্যক্ষমতা কম নয় বরং অনেক সময় বেশি। যদিও নারীরা ব্যথা বেশি অনুভব করেন, তবু তারা তুলনামূলক ইনজুরি নিয়েও বেশি সময় ধরে খেলতে পারেন।
অস্ট্রেলিয়ার পার্থের ইডিথ কোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোর্টস বিভাগের উপ-উপাচার্য সোফিয়া নিমফিয়াস বলেন, এটি আসলে জীববিজ্ঞান এবং অভিজ্ঞতার মিশ্রণ। ১৯৮১ সালের একটি গবেষণায় স্পষ্ট বলা হয়, ‘নারী ক্রীড়াবিদদের ব্যথা সহ্যক্ষমতা এবং সহ্যসীমা সর্বোচ্চ।’
২. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা
মানুষসহ অধিকাংশ স্তন্যপায়ী প্রাণীর মধ্যে নারীর রোগ প্রতিরোধক্ষমতা পুরুষের তুলনায় শক্তিশালী। এর পেছনে রয়েছে ইস্ট্রোজেন হরমোন এবং নারীদের দুটি ‘এক্স’ ক্রোমোজোম, যা রোগ প্রতিরোধব্যবস্থায় বৈচিত্র্য ও শক্তি জোগায়।
২০০৯ সালের এক নিবন্ধে মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবর্তন জীববিজ্ঞানী মার্লেন জুক লিখেছেন, ‘কে বেশি অসুস্থ হয়, এ বিষয়ে কোনো বিতর্ক নেই—প্রায় সব সময়ই তা পুরুষ।’
তবে এর একটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও আছে। অধিক প্রতিরোধব্যবস্থার কারণে নারীরা অটোইমিউন রোগে বেশি আক্রান্ত হন। এ যেন রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে নিজেদের শরীরই আঘাত পায়।
৩. স্থিতিস্থাপকতা
দীর্ঘ সময় ধরে শারীরিক পরিশ্রমে নারীদের শরীর কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দীর্ঘমেয়াদি ব্যায়ামের তথ্য অনুযায়ী, শারীরিক চাপ সামলাতে নারীর শরীর পুরুষের তুলনায় কম ক্ষয় হয়। উদাহরণস্বরূপ, ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশন ৪০ বছরের ওপরের ৩০০ জন অ্যাথলেটের রক্তনালির অবস্থা পরীক্ষা করে। এদের মধ্যে ছিলেন দীর্ঘ দৌড়বিদ, সাইক্লিস্ট, রোয়ার এবং সাঁতারু।
গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষ অ্যাথলেটদের রক্তনালির বয়স বেড়ে হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি বেড়েছে, কখনো কখনো ১০ বছর পর্যন্ত। তবে নারীদের ক্ষেত্রে এর বিপরীত ফল পাওয়া গেছে। তাদের রক্তনালি জৈবিকভাবে আরও তরুণ এবং হৃদ্রোগের ঝুঁকি কম।
৪. দীর্ঘায়ু
মানবদেহের চূড়ান্ত পরীক্ষাই হলো জীবনকাল। আর সেখানে নারীরাই এগিয়ে। প্রায় প্রতিটি সমাজ ও প্রজাতিতে নারীরা পুরুষদের তুলনায় বেশি দিন বাঁচে।
এর কিছুটা ব্যাখ্যা আচরণগত। কারণ পুরুষ বেশি ঝুঁকি নেয়, নারীরা পুরুষদের তুলনায় বেশি দিন বাঁচে। তবে এটি মূলত জৈবিক। নারী রোগ, অপুষ্টি ও আঘাত থেকে পুরুষদের তুলনায় বেশি টিকে যায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষদের ওয়াই ক্রোমোজোম সময়ের সঙ্গে বেশি ক্ষয় হয়, যাকে বলা হয় ‘মোজাইক লস অব ওয়াই’। এই ক্ষয়ের সঙ্গে পুরুষদের হৃদ্রোগ, ক্যানসারসহ নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি যুক্ত।
এ কারণে নারীর জীবনকাল সাধারণত পুরুষের থেকে দীর্ঘ হয়।
ঐতিহ্যগতভাবে আমরা শক্তিকে বোঝাই পুরুষের প্রাধান্যযুক্ত দক্ষতা—যেমন সর্বোচ্চ ওজন তোলা বা দ্রুততম দৌড়। অথচ যদি পরিমাপ হয় ধৈর্য, পুনরুদ্ধার, টিকে থাকার ক্ষমতা আর দীর্ঘায়ু দিয়ে—তাহলে সেই শক্তির সংজ্ঞায় নারীদেহই এগিয়ে থাকবে।
তবে এখনো নারীকে নিয়ে পর্যাপ্ত গবেষণা পরিচালনা হয় না। তারা পুরুষের মতো প্রশিক্ষণ বা উৎসাহ পায় না। ২০২১ সালের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ক্রীড়া ও ব্যায়ামবিষয়ক গবেষণার মাত্র ৬ শতাংশ নারীর শরীর নিয়ে হয়েছে।
তথ্যসূত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট

নারীর শারীরিক শক্তি নিয়ে প্রচলিত ধারণা বদলে যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই তাঁরা পুরুষদের ছাপিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি একাধিক নারী ক্রীড়াবিদ এমন নজির স্থাপন করেছেন, যা কেবল ক্রীড়াঙ্গনের সীমানায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং এসব সাফল্য আমাদের শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে বহু পুরোনো ধ্যানধারণার ভিতে নাড়া দিচ্ছে। এটি একধরনের সাংস্কৃতিক পরিবর্তন, যা নতুনভাবে চিনিয়ে দিচ্ছে নারীর শরীর ও শক্তির প্রকৃত সক্ষমতাকে।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের টারা ডোয়ার অ্যাপালাচিয়ান ট্রেইল শেষ করেছেন মাত্র ৪০ দিন ১৮ ঘণ্টা ৬ মিনিটে, যা আগের রেকর্ডধারী পুরুষের চেয়ে ১৩ ঘণ্টা কম। একই বছর, অ্যারিজোনার অড্রে জিমেনেজ ইতিহাস গড়েছেন—ছেলেদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেই ডিভিশন-১ হাইস্কুল কুস্তি চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন তিনি। দীর্ঘ ম্যারাথন, পাহাড়ে দৌড়, সাঁতার ও রক ক্লাইম্বিং—এসব খেলায় নারীরা নিয়মিতভাবে পুরুষদের চেয়ে ভালো করছেন।
গত বছর জাসমিন প্যারিস বিশ্বের অন্যতম কঠিন ১০০ মাইলের বার্কলে ম্যারাথন শেষ করেছেন ৬০ ঘণ্টারও কম সময়েই। একই সময়ে তিনি একজন স্তন্যদায়ী মায়ের ভূমিকাও পালন করেছেন।
এদিকে নদীপথে দীর্ঘ দূরত্ব সাঁতারে এখন নারীরা এতটাই এগিয়ে যে, তাদের কীর্তি অনেক ক্ষেত্রে সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০২৪ সালে বার্বারা ‘বাবসি’ জ্যাঙ্গার্ল ইয়োসেমাইট ন্যাশনাল পার্কের এল ক্যাপিটান পর্বত অপ্রস্তুত অবস্থায় জয় করেছেন—এটাই প্রথমবার কেউ এমনটি করতে পেরেছেন। এই অর্জনগুলো শুধু শারীরিক নয়, সাংস্কৃতিক পরিবর্তনেরও প্রতীক।
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও অনুশীলন বিজ্ঞানী স্ট্যাসি সিমস বলছেন, ‘৭০ বছর ঊর্ধ্ব নারীরাও এখন ডেডলিফট (ভারউত্তোলন) রেকর্ড গড়ছেন।’
সহনশীলতায় নারীর জয়
যখন ‘শক্তি’র কথা বলা হয়, তখন সাধারণত তা বোঝায় স্বল্প সময়ে সর্বোচ্চ গতি, যেখানে পুরুষদের দেহ কিছুটা এগিয়ে থাকে। তবে সহনশীলতা, দ্রুত পুনরুদ্ধার, মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা—এসব ক্ষেত্রেও নারীরা শারীরিকভাবে এগিয়ে।
ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, প্রাচীন মানবসমাজে নারীরা শুধু গৃহস্থালি নয়, জীবনসংগ্রামের ময়দানেও ছিলেন সক্রিয়। তাঁরা নিয়মিতভাবে ভারী সামগ্রী বহন করতেন, শিকারের পেছনে হাঁটতেন এবং দৈনিক ৮ থেকে ১০ মাইল পথ অতিক্রম করতেন—অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায়, পিরিয়ডের সময় বা শিশুকে কোলে নিয়েও।
অস্ট্রেলিয়ার পার্থের ইডিথ কোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোর্টস বিজ্ঞান উপ-উপাচার্য সোফিয়া নিমফিয়াস বলেন, ‘নারীদের দেহ অধিক ক্লান্তি প্রতিরোধী।’
মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যায়াম বিশেষজ্ঞ সান্দ্রা হান্টারের গবেষণায় দেখা গেছে, নারীদের পেশি দীর্ঘ সময় ধরে হালকা ভারে কার্যকরভাবে কাজ করতে পারে—যেখানে পুরুষেরা শুরুতেই শারীরিক শক্তিতে এগিয়ে থাকলেও, দীর্ঘ মেয়াদে নারীরাই এগিয়ে থাকেন। কারণ হিসেবে দেখা গেছে, নারীরা শক্তির জন্য অপেক্ষাকৃত ধীরগতিতে চর্বি পোড়াতে পারদর্শী, যা দীর্ঘ সময় ধরে দেহকে শক্তি দেয়।
নারীদের শরীরে সাধারণত ‘স্লো-টুইচ’ মাংসপেশির পরিমাণ বেশি থাকে, যা ধীরগতির হলেও অধিক দক্ষ ও ক্লান্তিহীন। অন্যদিকে পুরুষদের দেহে ‘ফাস্ট-টুইচ’ মাংসপেশি বেশি, যা শক্তিশালী হলেও দ্রুত ক্লান্ত হয়।
দ্রুত পুনরুদ্ধার এবং লড়াকু মনোভাব
নারীদের এই ধীরগতির পেশি শুধু সহনশীলতাই নয়, দ্রুত পুনরুদ্ধারের ক্ষমতাও বাড়িয়ে দেয়। ছোট আকারের কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, দ্রুতগতির দৌড় বা ভার উত্তোলনের পর নারীদের শরীর পুরুষদের তুলনায় দ্রুত সেরে ওঠে। ইস্ট্রোজেন হরমোন শরীরের প্রদাহ কমায় ও মাংসপেশি সারাতে সাহায্য করে—এটাই এই পার্থক্যের অন্যতম ব্যাখ্যা।
তবে, নারীরা নির্দিষ্ট কিছু ইনজুরির ঝুঁকিতে বেশি থাকেন—বিশেষ করে হাঁটু ও এসিএল ইনজুরিতে। এর পেছনে জৈবিক, হরমোনজনিত বা পুরুষদের উপযোগী প্রশিক্ষণ পদ্ধতি দায়ী হতে পারে।
শারীরিক শক্তির পাশাপাশি মানসিক দৃঢ়তাও নারীর সাফল্যের পেছনে বড় ভূমিকা রাখে। স্ট্যানফোর্ডের ‘ফাস্টার’ প্রোগ্রামের পরিচালক এমিলি ক্রাউস বলেন, ‘নারীরা এমন এক মানসিক অবস্থায় যেতে পারেন, যা তাঁদের সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ার শক্তি দেয়।’
নারীর শরীরের চারটি অসাধারণ ক্ষমতা
১. ব্যথা সহ্য করার ক্ষমতা
নারীর দেহ নানা ধরনের ব্যথা সহ্য করে—পিরিয়ডের ব্যথা, সন্তান জন্মদানের যন্ত্রণা, পিঠে আঘাত বা হাড়ভাঙা যন্ত্রণা। এসব ব্যথা পরিমাপ করা কঠিন হলেও, অধিকাংশ গবেষণা একমত যে নারীরা ব্যথা পুরুষদের চেয়েও ভালোভাবে সহ্য করতে পারেন।
ক্রীড়াবিদেরা ব্যথা সহ্য করার সত্যিকারের পরিক্ষার্থী। বহু গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণ মানুষের তুলনায় ক্রীড়াবিদেরা ব্যথা বেশি সহ্য করতে পারেন, আর সেখানে নারী-পুরুষের তুলনায় নারী ক্রীড়াবিদদের সহ্যক্ষমতা কম নয় বরং অনেক সময় বেশি। যদিও নারীরা ব্যথা বেশি অনুভব করেন, তবু তারা তুলনামূলক ইনজুরি নিয়েও বেশি সময় ধরে খেলতে পারেন।
অস্ট্রেলিয়ার পার্থের ইডিথ কোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোর্টস বিভাগের উপ-উপাচার্য সোফিয়া নিমফিয়াস বলেন, এটি আসলে জীববিজ্ঞান এবং অভিজ্ঞতার মিশ্রণ। ১৯৮১ সালের একটি গবেষণায় স্পষ্ট বলা হয়, ‘নারী ক্রীড়াবিদদের ব্যথা সহ্যক্ষমতা এবং সহ্যসীমা সর্বোচ্চ।’
২. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা
মানুষসহ অধিকাংশ স্তন্যপায়ী প্রাণীর মধ্যে নারীর রোগ প্রতিরোধক্ষমতা পুরুষের তুলনায় শক্তিশালী। এর পেছনে রয়েছে ইস্ট্রোজেন হরমোন এবং নারীদের দুটি ‘এক্স’ ক্রোমোজোম, যা রোগ প্রতিরোধব্যবস্থায় বৈচিত্র্য ও শক্তি জোগায়।
২০০৯ সালের এক নিবন্ধে মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবর্তন জীববিজ্ঞানী মার্লেন জুক লিখেছেন, ‘কে বেশি অসুস্থ হয়, এ বিষয়ে কোনো বিতর্ক নেই—প্রায় সব সময়ই তা পুরুষ।’
তবে এর একটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও আছে। অধিক প্রতিরোধব্যবস্থার কারণে নারীরা অটোইমিউন রোগে বেশি আক্রান্ত হন। এ যেন রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে নিজেদের শরীরই আঘাত পায়।
৩. স্থিতিস্থাপকতা
দীর্ঘ সময় ধরে শারীরিক পরিশ্রমে নারীদের শরীর কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দীর্ঘমেয়াদি ব্যায়ামের তথ্য অনুযায়ী, শারীরিক চাপ সামলাতে নারীর শরীর পুরুষের তুলনায় কম ক্ষয় হয়। উদাহরণস্বরূপ, ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশন ৪০ বছরের ওপরের ৩০০ জন অ্যাথলেটের রক্তনালির অবস্থা পরীক্ষা করে। এদের মধ্যে ছিলেন দীর্ঘ দৌড়বিদ, সাইক্লিস্ট, রোয়ার এবং সাঁতারু।
গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষ অ্যাথলেটদের রক্তনালির বয়স বেড়ে হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি বেড়েছে, কখনো কখনো ১০ বছর পর্যন্ত। তবে নারীদের ক্ষেত্রে এর বিপরীত ফল পাওয়া গেছে। তাদের রক্তনালি জৈবিকভাবে আরও তরুণ এবং হৃদ্রোগের ঝুঁকি কম।
৪. দীর্ঘায়ু
মানবদেহের চূড়ান্ত পরীক্ষাই হলো জীবনকাল। আর সেখানে নারীরাই এগিয়ে। প্রায় প্রতিটি সমাজ ও প্রজাতিতে নারীরা পুরুষদের তুলনায় বেশি দিন বাঁচে।
এর কিছুটা ব্যাখ্যা আচরণগত। কারণ পুরুষ বেশি ঝুঁকি নেয়, নারীরা পুরুষদের তুলনায় বেশি দিন বাঁচে। তবে এটি মূলত জৈবিক। নারী রোগ, অপুষ্টি ও আঘাত থেকে পুরুষদের তুলনায় বেশি টিকে যায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষদের ওয়াই ক্রোমোজোম সময়ের সঙ্গে বেশি ক্ষয় হয়, যাকে বলা হয় ‘মোজাইক লস অব ওয়াই’। এই ক্ষয়ের সঙ্গে পুরুষদের হৃদ্রোগ, ক্যানসারসহ নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি যুক্ত।
এ কারণে নারীর জীবনকাল সাধারণত পুরুষের থেকে দীর্ঘ হয়।
ঐতিহ্যগতভাবে আমরা শক্তিকে বোঝাই পুরুষের প্রাধান্যযুক্ত দক্ষতা—যেমন সর্বোচ্চ ওজন তোলা বা দ্রুততম দৌড়। অথচ যদি পরিমাপ হয় ধৈর্য, পুনরুদ্ধার, টিকে থাকার ক্ষমতা আর দীর্ঘায়ু দিয়ে—তাহলে সেই শক্তির সংজ্ঞায় নারীদেহই এগিয়ে থাকবে।
তবে এখনো নারীকে নিয়ে পর্যাপ্ত গবেষণা পরিচালনা হয় না। তারা পুরুষের মতো প্রশিক্ষণ বা উৎসাহ পায় না। ২০২১ সালের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ক্রীড়া ও ব্যায়ামবিষয়ক গবেষণার মাত্র ৬ শতাংশ নারীর শরীর নিয়ে হয়েছে।
তথ্যসূত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

নারীর শারীরিক শক্তি নিয়ে প্রচলিত ধারণা বদলে যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই তাঁরা পুরুষদের ছাপিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি একাধিক নারী ক্রীড়াবিদ এমন নজির স্থাপন করেছেন, যা কেবল ক্রীড়াঙ্গনের সীমানায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং এসব সাফল্য আমাদের শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে বহু পুরোনো ধ্যানধারণার ভিতে নাড়া দিচ্ছে। এটি একধরনের সাংস্কৃতিক পরিবর্তন, যা নতুনভাবে চিনিয়ে দিচ্ছে নারীর শরীর ও শক্তির প্রকৃত সক্ষমতাকে।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের টারা ডোয়ার অ্যাপালাচিয়ান ট্রেইল শেষ করেছেন মাত্র ৪০ দিন ১৮ ঘণ্টা ৬ মিনিটে, যা আগের রেকর্ডধারী পুরুষের চেয়ে ১৩ ঘণ্টা কম। একই বছর, অ্যারিজোনার অড্রে জিমেনেজ ইতিহাস গড়েছেন—ছেলেদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেই ডিভিশন-১ হাইস্কুল কুস্তি চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন তিনি। দীর্ঘ ম্যারাথন, পাহাড়ে দৌড়, সাঁতার ও রক ক্লাইম্বিং—এসব খেলায় নারীরা নিয়মিতভাবে পুরুষদের চেয়ে ভালো করছেন।
গত বছর জাসমিন প্যারিস বিশ্বের অন্যতম কঠিন ১০০ মাইলের বার্কলে ম্যারাথন শেষ করেছেন ৬০ ঘণ্টারও কম সময়েই। একই সময়ে তিনি একজন স্তন্যদায়ী মায়ের ভূমিকাও পালন করেছেন।
এদিকে নদীপথে দীর্ঘ দূরত্ব সাঁতারে এখন নারীরা এতটাই এগিয়ে যে, তাদের কীর্তি অনেক ক্ষেত্রে সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০২৪ সালে বার্বারা ‘বাবসি’ জ্যাঙ্গার্ল ইয়োসেমাইট ন্যাশনাল পার্কের এল ক্যাপিটান পর্বত অপ্রস্তুত অবস্থায় জয় করেছেন—এটাই প্রথমবার কেউ এমনটি করতে পেরেছেন। এই অর্জনগুলো শুধু শারীরিক নয়, সাংস্কৃতিক পরিবর্তনেরও প্রতীক।
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও অনুশীলন বিজ্ঞানী স্ট্যাসি সিমস বলছেন, ‘৭০ বছর ঊর্ধ্ব নারীরাও এখন ডেডলিফট (ভারউত্তোলন) রেকর্ড গড়ছেন।’
সহনশীলতায় নারীর জয়
যখন ‘শক্তি’র কথা বলা হয়, তখন সাধারণত তা বোঝায় স্বল্প সময়ে সর্বোচ্চ গতি, যেখানে পুরুষদের দেহ কিছুটা এগিয়ে থাকে। তবে সহনশীলতা, দ্রুত পুনরুদ্ধার, মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা—এসব ক্ষেত্রেও নারীরা শারীরিকভাবে এগিয়ে।
ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, প্রাচীন মানবসমাজে নারীরা শুধু গৃহস্থালি নয়, জীবনসংগ্রামের ময়দানেও ছিলেন সক্রিয়। তাঁরা নিয়মিতভাবে ভারী সামগ্রী বহন করতেন, শিকারের পেছনে হাঁটতেন এবং দৈনিক ৮ থেকে ১০ মাইল পথ অতিক্রম করতেন—অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায়, পিরিয়ডের সময় বা শিশুকে কোলে নিয়েও।
অস্ট্রেলিয়ার পার্থের ইডিথ কোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোর্টস বিজ্ঞান উপ-উপাচার্য সোফিয়া নিমফিয়াস বলেন, ‘নারীদের দেহ অধিক ক্লান্তি প্রতিরোধী।’
মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যায়াম বিশেষজ্ঞ সান্দ্রা হান্টারের গবেষণায় দেখা গেছে, নারীদের পেশি দীর্ঘ সময় ধরে হালকা ভারে কার্যকরভাবে কাজ করতে পারে—যেখানে পুরুষেরা শুরুতেই শারীরিক শক্তিতে এগিয়ে থাকলেও, দীর্ঘ মেয়াদে নারীরাই এগিয়ে থাকেন। কারণ হিসেবে দেখা গেছে, নারীরা শক্তির জন্য অপেক্ষাকৃত ধীরগতিতে চর্বি পোড়াতে পারদর্শী, যা দীর্ঘ সময় ধরে দেহকে শক্তি দেয়।
নারীদের শরীরে সাধারণত ‘স্লো-টুইচ’ মাংসপেশির পরিমাণ বেশি থাকে, যা ধীরগতির হলেও অধিক দক্ষ ও ক্লান্তিহীন। অন্যদিকে পুরুষদের দেহে ‘ফাস্ট-টুইচ’ মাংসপেশি বেশি, যা শক্তিশালী হলেও দ্রুত ক্লান্ত হয়।
দ্রুত পুনরুদ্ধার এবং লড়াকু মনোভাব
নারীদের এই ধীরগতির পেশি শুধু সহনশীলতাই নয়, দ্রুত পুনরুদ্ধারের ক্ষমতাও বাড়িয়ে দেয়। ছোট আকারের কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, দ্রুতগতির দৌড় বা ভার উত্তোলনের পর নারীদের শরীর পুরুষদের তুলনায় দ্রুত সেরে ওঠে। ইস্ট্রোজেন হরমোন শরীরের প্রদাহ কমায় ও মাংসপেশি সারাতে সাহায্য করে—এটাই এই পার্থক্যের অন্যতম ব্যাখ্যা।
তবে, নারীরা নির্দিষ্ট কিছু ইনজুরির ঝুঁকিতে বেশি থাকেন—বিশেষ করে হাঁটু ও এসিএল ইনজুরিতে। এর পেছনে জৈবিক, হরমোনজনিত বা পুরুষদের উপযোগী প্রশিক্ষণ পদ্ধতি দায়ী হতে পারে।
শারীরিক শক্তির পাশাপাশি মানসিক দৃঢ়তাও নারীর সাফল্যের পেছনে বড় ভূমিকা রাখে। স্ট্যানফোর্ডের ‘ফাস্টার’ প্রোগ্রামের পরিচালক এমিলি ক্রাউস বলেন, ‘নারীরা এমন এক মানসিক অবস্থায় যেতে পারেন, যা তাঁদের সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ার শক্তি দেয়।’
নারীর শরীরের চারটি অসাধারণ ক্ষমতা
১. ব্যথা সহ্য করার ক্ষমতা
নারীর দেহ নানা ধরনের ব্যথা সহ্য করে—পিরিয়ডের ব্যথা, সন্তান জন্মদানের যন্ত্রণা, পিঠে আঘাত বা হাড়ভাঙা যন্ত্রণা। এসব ব্যথা পরিমাপ করা কঠিন হলেও, অধিকাংশ গবেষণা একমত যে নারীরা ব্যথা পুরুষদের চেয়েও ভালোভাবে সহ্য করতে পারেন।
ক্রীড়াবিদেরা ব্যথা সহ্য করার সত্যিকারের পরিক্ষার্থী। বহু গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণ মানুষের তুলনায় ক্রীড়াবিদেরা ব্যথা বেশি সহ্য করতে পারেন, আর সেখানে নারী-পুরুষের তুলনায় নারী ক্রীড়াবিদদের সহ্যক্ষমতা কম নয় বরং অনেক সময় বেশি। যদিও নারীরা ব্যথা বেশি অনুভব করেন, তবু তারা তুলনামূলক ইনজুরি নিয়েও বেশি সময় ধরে খেলতে পারেন।
অস্ট্রেলিয়ার পার্থের ইডিথ কোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোর্টস বিভাগের উপ-উপাচার্য সোফিয়া নিমফিয়াস বলেন, এটি আসলে জীববিজ্ঞান এবং অভিজ্ঞতার মিশ্রণ। ১৯৮১ সালের একটি গবেষণায় স্পষ্ট বলা হয়, ‘নারী ক্রীড়াবিদদের ব্যথা সহ্যক্ষমতা এবং সহ্যসীমা সর্বোচ্চ।’
২. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা
মানুষসহ অধিকাংশ স্তন্যপায়ী প্রাণীর মধ্যে নারীর রোগ প্রতিরোধক্ষমতা পুরুষের তুলনায় শক্তিশালী। এর পেছনে রয়েছে ইস্ট্রোজেন হরমোন এবং নারীদের দুটি ‘এক্স’ ক্রোমোজোম, যা রোগ প্রতিরোধব্যবস্থায় বৈচিত্র্য ও শক্তি জোগায়।
২০০৯ সালের এক নিবন্ধে মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবর্তন জীববিজ্ঞানী মার্লেন জুক লিখেছেন, ‘কে বেশি অসুস্থ হয়, এ বিষয়ে কোনো বিতর্ক নেই—প্রায় সব সময়ই তা পুরুষ।’
তবে এর একটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও আছে। অধিক প্রতিরোধব্যবস্থার কারণে নারীরা অটোইমিউন রোগে বেশি আক্রান্ত হন। এ যেন রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে নিজেদের শরীরই আঘাত পায়।
৩. স্থিতিস্থাপকতা
দীর্ঘ সময় ধরে শারীরিক পরিশ্রমে নারীদের শরীর কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দীর্ঘমেয়াদি ব্যায়ামের তথ্য অনুযায়ী, শারীরিক চাপ সামলাতে নারীর শরীর পুরুষের তুলনায় কম ক্ষয় হয়। উদাহরণস্বরূপ, ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশন ৪০ বছরের ওপরের ৩০০ জন অ্যাথলেটের রক্তনালির অবস্থা পরীক্ষা করে। এদের মধ্যে ছিলেন দীর্ঘ দৌড়বিদ, সাইক্লিস্ট, রোয়ার এবং সাঁতারু।
গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষ অ্যাথলেটদের রক্তনালির বয়স বেড়ে হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি বেড়েছে, কখনো কখনো ১০ বছর পর্যন্ত। তবে নারীদের ক্ষেত্রে এর বিপরীত ফল পাওয়া গেছে। তাদের রক্তনালি জৈবিকভাবে আরও তরুণ এবং হৃদ্রোগের ঝুঁকি কম।
৪. দীর্ঘায়ু
মানবদেহের চূড়ান্ত পরীক্ষাই হলো জীবনকাল। আর সেখানে নারীরাই এগিয়ে। প্রায় প্রতিটি সমাজ ও প্রজাতিতে নারীরা পুরুষদের তুলনায় বেশি দিন বাঁচে।
এর কিছুটা ব্যাখ্যা আচরণগত। কারণ পুরুষ বেশি ঝুঁকি নেয়, নারীরা পুরুষদের তুলনায় বেশি দিন বাঁচে। তবে এটি মূলত জৈবিক। নারী রোগ, অপুষ্টি ও আঘাত থেকে পুরুষদের তুলনায় বেশি টিকে যায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষদের ওয়াই ক্রোমোজোম সময়ের সঙ্গে বেশি ক্ষয় হয়, যাকে বলা হয় ‘মোজাইক লস অব ওয়াই’। এই ক্ষয়ের সঙ্গে পুরুষদের হৃদ্রোগ, ক্যানসারসহ নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি যুক্ত।
এ কারণে নারীর জীবনকাল সাধারণত পুরুষের থেকে দীর্ঘ হয়।
ঐতিহ্যগতভাবে আমরা শক্তিকে বোঝাই পুরুষের প্রাধান্যযুক্ত দক্ষতা—যেমন সর্বোচ্চ ওজন তোলা বা দ্রুততম দৌড়। অথচ যদি পরিমাপ হয় ধৈর্য, পুনরুদ্ধার, টিকে থাকার ক্ষমতা আর দীর্ঘায়ু দিয়ে—তাহলে সেই শক্তির সংজ্ঞায় নারীদেহই এগিয়ে থাকবে।
তবে এখনো নারীকে নিয়ে পর্যাপ্ত গবেষণা পরিচালনা হয় না। তারা পুরুষের মতো প্রশিক্ষণ বা উৎসাহ পায় না। ২০২১ সালের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ক্রীড়া ও ব্যায়ামবিষয়ক গবেষণার মাত্র ৬ শতাংশ নারীর শরীর নিয়ে হয়েছে।
তথ্যসূত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট

নারীর শারীরিক শক্তি নিয়ে প্রচলিত ধারণা বদলে যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই তাঁরা পুরুষদের ছাপিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি একাধিক নারী ক্রীড়াবিদ এমন নজির স্থাপন করেছেন, যা কেবল ক্রীড়াঙ্গনের সীমানায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং এসব সাফল্য আমাদের শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে বহু পুরোনো ধ্যানধারণার ভিতে নাড়া দিচ্ছে। এটি একধরনের সাংস্কৃতিক পরিবর্তন, যা নতুনভাবে চিনিয়ে দিচ্ছে নারীর শরীর ও শক্তির প্রকৃত সক্ষমতাকে।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের টারা ডোয়ার অ্যাপালাচিয়ান ট্রেইল শেষ করেছেন মাত্র ৪০ দিন ১৮ ঘণ্টা ৬ মিনিটে, যা আগের রেকর্ডধারী পুরুষের চেয়ে ১৩ ঘণ্টা কম। একই বছর, অ্যারিজোনার অড্রে জিমেনেজ ইতিহাস গড়েছেন—ছেলেদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেই ডিভিশন-১ হাইস্কুল কুস্তি চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন তিনি। দীর্ঘ ম্যারাথন, পাহাড়ে দৌড়, সাঁতার ও রক ক্লাইম্বিং—এসব খেলায় নারীরা নিয়মিতভাবে পুরুষদের চেয়ে ভালো করছেন।
গত বছর জাসমিন প্যারিস বিশ্বের অন্যতম কঠিন ১০০ মাইলের বার্কলে ম্যারাথন শেষ করেছেন ৬০ ঘণ্টারও কম সময়েই। একই সময়ে তিনি একজন স্তন্যদায়ী মায়ের ভূমিকাও পালন করেছেন।
এদিকে নদীপথে দীর্ঘ দূরত্ব সাঁতারে এখন নারীরা এতটাই এগিয়ে যে, তাদের কীর্তি অনেক ক্ষেত্রে সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০২৪ সালে বার্বারা ‘বাবসি’ জ্যাঙ্গার্ল ইয়োসেমাইট ন্যাশনাল পার্কের এল ক্যাপিটান পর্বত অপ্রস্তুত অবস্থায় জয় করেছেন—এটাই প্রথমবার কেউ এমনটি করতে পেরেছেন। এই অর্জনগুলো শুধু শারীরিক নয়, সাংস্কৃতিক পরিবর্তনেরও প্রতীক।
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও অনুশীলন বিজ্ঞানী স্ট্যাসি সিমস বলছেন, ‘৭০ বছর ঊর্ধ্ব নারীরাও এখন ডেডলিফট (ভারউত্তোলন) রেকর্ড গড়ছেন।’
সহনশীলতায় নারীর জয়
যখন ‘শক্তি’র কথা বলা হয়, তখন সাধারণত তা বোঝায় স্বল্প সময়ে সর্বোচ্চ গতি, যেখানে পুরুষদের দেহ কিছুটা এগিয়ে থাকে। তবে সহনশীলতা, দ্রুত পুনরুদ্ধার, মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা—এসব ক্ষেত্রেও নারীরা শারীরিকভাবে এগিয়ে।
ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, প্রাচীন মানবসমাজে নারীরা শুধু গৃহস্থালি নয়, জীবনসংগ্রামের ময়দানেও ছিলেন সক্রিয়। তাঁরা নিয়মিতভাবে ভারী সামগ্রী বহন করতেন, শিকারের পেছনে হাঁটতেন এবং দৈনিক ৮ থেকে ১০ মাইল পথ অতিক্রম করতেন—অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায়, পিরিয়ডের সময় বা শিশুকে কোলে নিয়েও।
অস্ট্রেলিয়ার পার্থের ইডিথ কোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোর্টস বিজ্ঞান উপ-উপাচার্য সোফিয়া নিমফিয়াস বলেন, ‘নারীদের দেহ অধিক ক্লান্তি প্রতিরোধী।’
মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যায়াম বিশেষজ্ঞ সান্দ্রা হান্টারের গবেষণায় দেখা গেছে, নারীদের পেশি দীর্ঘ সময় ধরে হালকা ভারে কার্যকরভাবে কাজ করতে পারে—যেখানে পুরুষেরা শুরুতেই শারীরিক শক্তিতে এগিয়ে থাকলেও, দীর্ঘ মেয়াদে নারীরাই এগিয়ে থাকেন। কারণ হিসেবে দেখা গেছে, নারীরা শক্তির জন্য অপেক্ষাকৃত ধীরগতিতে চর্বি পোড়াতে পারদর্শী, যা দীর্ঘ সময় ধরে দেহকে শক্তি দেয়।
নারীদের শরীরে সাধারণত ‘স্লো-টুইচ’ মাংসপেশির পরিমাণ বেশি থাকে, যা ধীরগতির হলেও অধিক দক্ষ ও ক্লান্তিহীন। অন্যদিকে পুরুষদের দেহে ‘ফাস্ট-টুইচ’ মাংসপেশি বেশি, যা শক্তিশালী হলেও দ্রুত ক্লান্ত হয়।
দ্রুত পুনরুদ্ধার এবং লড়াকু মনোভাব
নারীদের এই ধীরগতির পেশি শুধু সহনশীলতাই নয়, দ্রুত পুনরুদ্ধারের ক্ষমতাও বাড়িয়ে দেয়। ছোট আকারের কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, দ্রুতগতির দৌড় বা ভার উত্তোলনের পর নারীদের শরীর পুরুষদের তুলনায় দ্রুত সেরে ওঠে। ইস্ট্রোজেন হরমোন শরীরের প্রদাহ কমায় ও মাংসপেশি সারাতে সাহায্য করে—এটাই এই পার্থক্যের অন্যতম ব্যাখ্যা।
তবে, নারীরা নির্দিষ্ট কিছু ইনজুরির ঝুঁকিতে বেশি থাকেন—বিশেষ করে হাঁটু ও এসিএল ইনজুরিতে। এর পেছনে জৈবিক, হরমোনজনিত বা পুরুষদের উপযোগী প্রশিক্ষণ পদ্ধতি দায়ী হতে পারে।
শারীরিক শক্তির পাশাপাশি মানসিক দৃঢ়তাও নারীর সাফল্যের পেছনে বড় ভূমিকা রাখে। স্ট্যানফোর্ডের ‘ফাস্টার’ প্রোগ্রামের পরিচালক এমিলি ক্রাউস বলেন, ‘নারীরা এমন এক মানসিক অবস্থায় যেতে পারেন, যা তাঁদের সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ার শক্তি দেয়।’
নারীর শরীরের চারটি অসাধারণ ক্ষমতা
১. ব্যথা সহ্য করার ক্ষমতা
নারীর দেহ নানা ধরনের ব্যথা সহ্য করে—পিরিয়ডের ব্যথা, সন্তান জন্মদানের যন্ত্রণা, পিঠে আঘাত বা হাড়ভাঙা যন্ত্রণা। এসব ব্যথা পরিমাপ করা কঠিন হলেও, অধিকাংশ গবেষণা একমত যে নারীরা ব্যথা পুরুষদের চেয়েও ভালোভাবে সহ্য করতে পারেন।
ক্রীড়াবিদেরা ব্যথা সহ্য করার সত্যিকারের পরিক্ষার্থী। বহু গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণ মানুষের তুলনায় ক্রীড়াবিদেরা ব্যথা বেশি সহ্য করতে পারেন, আর সেখানে নারী-পুরুষের তুলনায় নারী ক্রীড়াবিদদের সহ্যক্ষমতা কম নয় বরং অনেক সময় বেশি। যদিও নারীরা ব্যথা বেশি অনুভব করেন, তবু তারা তুলনামূলক ইনজুরি নিয়েও বেশি সময় ধরে খেলতে পারেন।
অস্ট্রেলিয়ার পার্থের ইডিথ কোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোর্টস বিভাগের উপ-উপাচার্য সোফিয়া নিমফিয়াস বলেন, এটি আসলে জীববিজ্ঞান এবং অভিজ্ঞতার মিশ্রণ। ১৯৮১ সালের একটি গবেষণায় স্পষ্ট বলা হয়, ‘নারী ক্রীড়াবিদদের ব্যথা সহ্যক্ষমতা এবং সহ্যসীমা সর্বোচ্চ।’
২. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা
মানুষসহ অধিকাংশ স্তন্যপায়ী প্রাণীর মধ্যে নারীর রোগ প্রতিরোধক্ষমতা পুরুষের তুলনায় শক্তিশালী। এর পেছনে রয়েছে ইস্ট্রোজেন হরমোন এবং নারীদের দুটি ‘এক্স’ ক্রোমোজোম, যা রোগ প্রতিরোধব্যবস্থায় বৈচিত্র্য ও শক্তি জোগায়।
২০০৯ সালের এক নিবন্ধে মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবর্তন জীববিজ্ঞানী মার্লেন জুক লিখেছেন, ‘কে বেশি অসুস্থ হয়, এ বিষয়ে কোনো বিতর্ক নেই—প্রায় সব সময়ই তা পুরুষ।’
তবে এর একটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও আছে। অধিক প্রতিরোধব্যবস্থার কারণে নারীরা অটোইমিউন রোগে বেশি আক্রান্ত হন। এ যেন রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে নিজেদের শরীরই আঘাত পায়।
৩. স্থিতিস্থাপকতা
দীর্ঘ সময় ধরে শারীরিক পরিশ্রমে নারীদের শরীর কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দীর্ঘমেয়াদি ব্যায়ামের তথ্য অনুযায়ী, শারীরিক চাপ সামলাতে নারীর শরীর পুরুষের তুলনায় কম ক্ষয় হয়। উদাহরণস্বরূপ, ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশন ৪০ বছরের ওপরের ৩০০ জন অ্যাথলেটের রক্তনালির অবস্থা পরীক্ষা করে। এদের মধ্যে ছিলেন দীর্ঘ দৌড়বিদ, সাইক্লিস্ট, রোয়ার এবং সাঁতারু।
গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষ অ্যাথলেটদের রক্তনালির বয়স বেড়ে হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি বেড়েছে, কখনো কখনো ১০ বছর পর্যন্ত। তবে নারীদের ক্ষেত্রে এর বিপরীত ফল পাওয়া গেছে। তাদের রক্তনালি জৈবিকভাবে আরও তরুণ এবং হৃদ্রোগের ঝুঁকি কম।
৪. দীর্ঘায়ু
মানবদেহের চূড়ান্ত পরীক্ষাই হলো জীবনকাল। আর সেখানে নারীরাই এগিয়ে। প্রায় প্রতিটি সমাজ ও প্রজাতিতে নারীরা পুরুষদের তুলনায় বেশি দিন বাঁচে।
এর কিছুটা ব্যাখ্যা আচরণগত। কারণ পুরুষ বেশি ঝুঁকি নেয়, নারীরা পুরুষদের তুলনায় বেশি দিন বাঁচে। তবে এটি মূলত জৈবিক। নারী রোগ, অপুষ্টি ও আঘাত থেকে পুরুষদের তুলনায় বেশি টিকে যায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষদের ওয়াই ক্রোমোজোম সময়ের সঙ্গে বেশি ক্ষয় হয়, যাকে বলা হয় ‘মোজাইক লস অব ওয়াই’। এই ক্ষয়ের সঙ্গে পুরুষদের হৃদ্রোগ, ক্যানসারসহ নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি যুক্ত।
এ কারণে নারীর জীবনকাল সাধারণত পুরুষের থেকে দীর্ঘ হয়।
ঐতিহ্যগতভাবে আমরা শক্তিকে বোঝাই পুরুষের প্রাধান্যযুক্ত দক্ষতা—যেমন সর্বোচ্চ ওজন তোলা বা দ্রুততম দৌড়। অথচ যদি পরিমাপ হয় ধৈর্য, পুনরুদ্ধার, টিকে থাকার ক্ষমতা আর দীর্ঘায়ু দিয়ে—তাহলে সেই শক্তির সংজ্ঞায় নারীদেহই এগিয়ে থাকবে।
তবে এখনো নারীকে নিয়ে পর্যাপ্ত গবেষণা পরিচালনা হয় না। তারা পুরুষের মতো প্রশিক্ষণ বা উৎসাহ পায় না। ২০২১ সালের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ক্রীড়া ও ব্যায়ামবিষয়ক গবেষণার মাত্র ৬ শতাংশ নারীর শরীর নিয়ে হয়েছে।
তথ্যসূত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট

ছয় দফা দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে। শনিবার থেকে সারা দেশের স্বাস্থ্য সহকারীরা ঢাকায় এসে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন।
১৮ ঘণ্টা আগে
বেতনকাঠামোর দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে হাসপাতালসহ দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে রোগী এবং তাদের স্বজনেরা। গত ৩০ নভেম্বর থেকে...
১ দিন আগে
দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের হাসপাতালে প্রতিবছরই বাড়ছে সেবাগ্রহণকারীর সংখ্যা। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রেই শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য অথবা ন্যূনতম মানের নয়। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। আর প্রতিবন্ধী রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও তীব্র।
২ দিন আগে
দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন আক্রান্ত ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

নিয়োগবিধি সংশোধন, বেতনবৈষম্য দূরীকরণ এবং টেকনিক্যাল পদমর্যাদা প্রদানের দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। আজ বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে দিনভর অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী শনিবার (৬ ডিসেম্বর) থেকে সারা দেশের স্বাস্থ্য সহকারীরা ঢাকায় সমবেত হয়ে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করবেন।
গত শনিবার (২৯ নভেম্বর) থেকে শুরু হওয়া কর্মবিরতি প্রথম দুই দিন চলেছিল শহীদ মিনারে। পরে তাঁরা অবস্থান নেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে। বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে এ আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন দেশের ৬৪ জেলার স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য পরিদর্শকেরা।
এই কর্মসূচির কারণে কয়েক দিন ধরে সারা দেশে ১ লাখ ২০ হাজার অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে টিকা নিতে এসে অনেক মা ও শিশু ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
স্বাস্থ্য সহকারীদের এ কর্মসূচির কারণে সারা দেশে ১ লাখ ২০ হাজার অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের সেবা কয়েক দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে টিকা নিতে এসে মা ও শিশুরা ফিরে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য সহকারীদের দাবি, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে বঞ্চিত করে কর্মবিরতিতে যেতে তাঁরা চাননি। কিন্তু দীর্ঘদিনের বঞ্চনা ও কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের কারণে তাঁরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হয়েছেন। দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে বারবার প্রতিশ্রুতির আশ্বাস মিললেও বাস্তবে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
দাবি আদায়ে অনড় অবস্থান জানিয়ে নেতারা বলেন, ‘আমাদের ১৬তম গ্রেড থেকে ১৪তম গ্রেডে উন্নীত করার সরকারি আদেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত আমরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করব না। এখন শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি চলছে, প্রয়োজনে আরও কঠোর হতে বাধ্য হব।’

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে স্বাস্থ্য সহকারীদের নানা বঞ্চনার চিত্রও তুলে ধরে আন্দোলনকারীরা জানান, টিকাদানের আগে মাসজুড়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা, জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধন, নবজাতক ও গর্ভবতী মায়ের রেজিস্ট্রেশন, যক্ষ্মা রোগী শনাক্তকরণ, ডটস (সরাসরি পর্যবেক্ষণ থেরাপি) পদ্ধতিতে ওষুধ খাওয়ানো, উঠান বৈঠক, মা সমাবেশসহ বিভিন্ন সেবা তাঁরা দিয়ে থাকেন। সপ্তাহে তিন দিন কমিউনিটি ক্লিনিকে নিয়মিত সেবা দেওয়ার পরও তাঁদের মাসিক ভ্রমণভাতা মাত্র ৬০০ টাকা। আর বেতন মোট ৯ হাজার ৭০০ টাকা।
আন্দোলনকারীদের দাবির মধ্যে রয়েছে, নিয়োগবিধি সংশোধন করে স্নাতক বা সমমানের যোগ্যতা যুক্ত করে ১৪তম গ্রেড প্রদান, ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমাধারীদের ১১তম গ্রেডসহ টেকনিক্যাল পদমর্যাদা দেওয়া, ধারাবাহিকভাবে উচ্চতর গ্রেডে পদোন্নতি নিশ্চিত করা, প্রশিক্ষণ ছাড়াই স্নাতক স্কেলে অন্তর্ভুক্ত করা, বেতনস্কেল পুনর্নির্ধারণের সময় টাইম স্কেল বা উচ্চতর স্কেল সংযুক্ত করা এবং ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমা (এসআইটি) সম্পন্নকারীদের সমমান স্বীকৃতি প্রদান।
বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় পরিষদের সদস্যসচিব ফজলুল হক চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, আমাদের ফাইল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখানে এখনো বিশ্লেষণ শুরু হয়নি।’
তিনি আরও জানান, ৬৪ জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে আলোচনা করে আগামী শনিবার থেকে লাগাতার কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এ বি এম আবু হানিফ আজ সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তাদের দাবির বিষয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। এখানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ছাড়াও অর্থ মন্ত্রণালয় এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাজ রয়েছে। সেখানে প্রক্রিয়াগতভাবে কিছুটা সময় লাগছে। গত তিন দিন তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান করছে। আমরা কাজ করছি। আমরা আশা করছি, সবকিছু ভালোভাবে সমাধান হবে।’

নিয়োগবিধি সংশোধন, বেতনবৈষম্য দূরীকরণ এবং টেকনিক্যাল পদমর্যাদা প্রদানের দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। আজ বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে দিনভর অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী শনিবার (৬ ডিসেম্বর) থেকে সারা দেশের স্বাস্থ্য সহকারীরা ঢাকায় সমবেত হয়ে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করবেন।
গত শনিবার (২৯ নভেম্বর) থেকে শুরু হওয়া কর্মবিরতি প্রথম দুই দিন চলেছিল শহীদ মিনারে। পরে তাঁরা অবস্থান নেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে। বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে এ আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন দেশের ৬৪ জেলার স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য পরিদর্শকেরা।
এই কর্মসূচির কারণে কয়েক দিন ধরে সারা দেশে ১ লাখ ২০ হাজার অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে টিকা নিতে এসে অনেক মা ও শিশু ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
স্বাস্থ্য সহকারীদের এ কর্মসূচির কারণে সারা দেশে ১ লাখ ২০ হাজার অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের সেবা কয়েক দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে টিকা নিতে এসে মা ও শিশুরা ফিরে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য সহকারীদের দাবি, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে বঞ্চিত করে কর্মবিরতিতে যেতে তাঁরা চাননি। কিন্তু দীর্ঘদিনের বঞ্চনা ও কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের কারণে তাঁরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হয়েছেন। দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে বারবার প্রতিশ্রুতির আশ্বাস মিললেও বাস্তবে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
দাবি আদায়ে অনড় অবস্থান জানিয়ে নেতারা বলেন, ‘আমাদের ১৬তম গ্রেড থেকে ১৪তম গ্রেডে উন্নীত করার সরকারি আদেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত আমরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করব না। এখন শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি চলছে, প্রয়োজনে আরও কঠোর হতে বাধ্য হব।’

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে স্বাস্থ্য সহকারীদের নানা বঞ্চনার চিত্রও তুলে ধরে আন্দোলনকারীরা জানান, টিকাদানের আগে মাসজুড়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা, জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধন, নবজাতক ও গর্ভবতী মায়ের রেজিস্ট্রেশন, যক্ষ্মা রোগী শনাক্তকরণ, ডটস (সরাসরি পর্যবেক্ষণ থেরাপি) পদ্ধতিতে ওষুধ খাওয়ানো, উঠান বৈঠক, মা সমাবেশসহ বিভিন্ন সেবা তাঁরা দিয়ে থাকেন। সপ্তাহে তিন দিন কমিউনিটি ক্লিনিকে নিয়মিত সেবা দেওয়ার পরও তাঁদের মাসিক ভ্রমণভাতা মাত্র ৬০০ টাকা। আর বেতন মোট ৯ হাজার ৭০০ টাকা।
আন্দোলনকারীদের দাবির মধ্যে রয়েছে, নিয়োগবিধি সংশোধন করে স্নাতক বা সমমানের যোগ্যতা যুক্ত করে ১৪তম গ্রেড প্রদান, ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমাধারীদের ১১তম গ্রেডসহ টেকনিক্যাল পদমর্যাদা দেওয়া, ধারাবাহিকভাবে উচ্চতর গ্রেডে পদোন্নতি নিশ্চিত করা, প্রশিক্ষণ ছাড়াই স্নাতক স্কেলে অন্তর্ভুক্ত করা, বেতনস্কেল পুনর্নির্ধারণের সময় টাইম স্কেল বা উচ্চতর স্কেল সংযুক্ত করা এবং ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমা (এসআইটি) সম্পন্নকারীদের সমমান স্বীকৃতি প্রদান।
বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় পরিষদের সদস্যসচিব ফজলুল হক চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, আমাদের ফাইল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখানে এখনো বিশ্লেষণ শুরু হয়নি।’
তিনি আরও জানান, ৬৪ জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে আলোচনা করে আগামী শনিবার থেকে লাগাতার কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এ বি এম আবু হানিফ আজ সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তাদের দাবির বিষয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। এখানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ছাড়াও অর্থ মন্ত্রণালয় এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাজ রয়েছে। সেখানে প্রক্রিয়াগতভাবে কিছুটা সময় লাগছে। গত তিন দিন তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান করছে। আমরা কাজ করছি। আমরা আশা করছি, সবকিছু ভালোভাবে সমাধান হবে।’

নারীর শারীরিক শক্তি নিয়ে প্রচলিত ধারণা বদলে যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই তাঁরা পুরুষদের ছাপিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি একাধিক নারী ক্রীড়াবিদ এমন নজির স্থাপন করেছেন, যা কেবল ক্রীড়াঙ্গনের সীমানায় সীমাবদ্ধ নয়। বরং এসব সাফল্য আমাদের শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে বহু পুরোনো ধ্যানধারণার ভিতে নাড়া দিচ্ছে।
০১ জুন ২০২৫
বেতনকাঠামোর দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে হাসপাতালসহ দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে রোগী এবং তাদের স্বজনেরা। গত ৩০ নভেম্বর থেকে...
১ দিন আগে
দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের হাসপাতালে প্রতিবছরই বাড়ছে সেবাগ্রহণকারীর সংখ্যা। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রেই শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য অথবা ন্যূনতম মানের নয়। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। আর প্রতিবন্ধী রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও তীব্র।
২ দিন আগে
দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন আক্রান্ত ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বেতনকাঠামোর দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে হাসপাতালসহ দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে রোগী এবং তাদের স্বজনেরা। গত ৩০ নভেম্বর থেকে টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা কর্মবিরতি পালন করছেন।
এদিকে দাবি আদায়ে বৃহস্পতিবার কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচিতে যাওয়ার কথা রয়েছে আন্দোলনকারীদের। তবে কঠোর এই কর্মসূচিতে যাওয়ার আগে গতকাল রাতে বৈঠকে বসেছেন আন্দোলনকারীরা। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের কর্মবিরতির কারণে রোগীরা চরম ভোগান্তিতে পড়লেও দাবি আদায়ে দিনভর কঠোর অবস্থানে ছিলেন তাঁরা। কর্মবিরতির সময় হাসপাতালের জরুরি সেবা চালু থাকলেও অনেককে সেবা না পেয়ে চলে যেতে দেখা গেছে।
আন্দোলনরতরা জানান, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের ফাইল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আটকে আছে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় দীর্ঘদিনেও বিষয়টির সমাধান হয়নি। এর আগে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার, ডিপ্লোমা নার্স ও ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের ১১তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। ফলে দাবি আদায়ে এবার কঠোর কর্মসূচি পালন করছেন তাঁরা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন ১০ হাজারের বেশি মানুষ চিকিৎসাসেবা নিতে যায়। এসব সেবাপ্রার্থীর বড় অংশ ঢাকার বাইরে থেকে আসে। টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের গতকালের কর্মবিরতির কারণে অনেকে চিকিৎসা না পেয়ে চলে যায়।
বিভিন্ন স্থানে দিনভর ভোগান্তি
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে সেবা বন্ধ রেখে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। এতে ভোগান্তিতে পড়ে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনেরা।
কর্মবিরতি চলাকালে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের ফার্মেসিতে বিনা মূল্যে সরকারি ওষুধ বিতরণ, রক্ত পরীক্ষা, এক্স-রে, আলট্রাসনোগ্রামসহ রোগনির্ণয়ের বিভিন্ন সেবাকেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। এ সময় হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও সেবাকেন্দ্রগুলোয় কর্মবিরতির ব্যানার ঝুলছিল। তবে হাসপাতালের অন্যান্য সেবা কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল। চমেক হাসপাতালে রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের একজন কর্মচারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, কর্মবিরতির ফলে এক্স-রে করা সাময়িক বন্ধ ছিল।
একই দাবিতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের সামনে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। বুধবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। এ সময় আন্দোলনকারীরা বলেন, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ও নার্সদের মতো তাঁদেরও চাকরিগত মর্যাদা দশম গ্রেডে উন্নীত না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ সদরে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মবিরতির কারণে হাসপাতালে সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং ওষুধ বিতরণ বন্ধ ছিল।
আবদুল্লাহ নামের এক রোগী বলেন, ‘সিটি স্ক্যান করানোর জন্য এসেছিলাম। এসে শুনি, কর্মবিরতি দিয়েছে। এ জন্য ফিরে যাচ্ছি।’
উল্লাপাড়ার আনিসুর নামের এক বৃদ্ধ বলেন, ‘কোমরে ব্যথা। তাই ডাক্তারের কাছে এসেছি। এসে শুনি, দুপুরের আগে চিকিৎসা হবে না।’
একই দাবিতে রাজবাড়ীতে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা চার ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেছেন। বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই কর্মবিরতি পালন করেন তাঁরা। কর্মবিরতি কর্মসূচিতে দাবি আদায় না হলে ৪ ডিসেম্বর থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালনের মাধ্যমে হাসপাতাল শাটডাউন ঘোষণার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।

বেতনকাঠামোর দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে হাসপাতালসহ দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে রোগী এবং তাদের স্বজনেরা। গত ৩০ নভেম্বর থেকে টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা কর্মবিরতি পালন করছেন।
এদিকে দাবি আদায়ে বৃহস্পতিবার কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচিতে যাওয়ার কথা রয়েছে আন্দোলনকারীদের। তবে কঠোর এই কর্মসূচিতে যাওয়ার আগে গতকাল রাতে বৈঠকে বসেছেন আন্দোলনকারীরা। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের কর্মবিরতির কারণে রোগীরা চরম ভোগান্তিতে পড়লেও দাবি আদায়ে দিনভর কঠোর অবস্থানে ছিলেন তাঁরা। কর্মবিরতির সময় হাসপাতালের জরুরি সেবা চালু থাকলেও অনেককে সেবা না পেয়ে চলে যেতে দেখা গেছে।
আন্দোলনরতরা জানান, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের ফাইল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আটকে আছে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় দীর্ঘদিনেও বিষয়টির সমাধান হয়নি। এর আগে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার, ডিপ্লোমা নার্স ও ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের ১১তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। ফলে দাবি আদায়ে এবার কঠোর কর্মসূচি পালন করছেন তাঁরা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন ১০ হাজারের বেশি মানুষ চিকিৎসাসেবা নিতে যায়। এসব সেবাপ্রার্থীর বড় অংশ ঢাকার বাইরে থেকে আসে। টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের গতকালের কর্মবিরতির কারণে অনেকে চিকিৎসা না পেয়ে চলে যায়।
বিভিন্ন স্থানে দিনভর ভোগান্তি
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে সেবা বন্ধ রেখে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। এতে ভোগান্তিতে পড়ে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনেরা।
কর্মবিরতি চলাকালে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের ফার্মেসিতে বিনা মূল্যে সরকারি ওষুধ বিতরণ, রক্ত পরীক্ষা, এক্স-রে, আলট্রাসনোগ্রামসহ রোগনির্ণয়ের বিভিন্ন সেবাকেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। এ সময় হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও সেবাকেন্দ্রগুলোয় কর্মবিরতির ব্যানার ঝুলছিল। তবে হাসপাতালের অন্যান্য সেবা কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল। চমেক হাসপাতালে রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের একজন কর্মচারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, কর্মবিরতির ফলে এক্স-রে করা সাময়িক বন্ধ ছিল।
একই দাবিতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের সামনে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। বুধবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। এ সময় আন্দোলনকারীরা বলেন, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ও নার্সদের মতো তাঁদেরও চাকরিগত মর্যাদা দশম গ্রেডে উন্নীত না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ সদরে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মবিরতির কারণে হাসপাতালে সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং ওষুধ বিতরণ বন্ধ ছিল।
আবদুল্লাহ নামের এক রোগী বলেন, ‘সিটি স্ক্যান করানোর জন্য এসেছিলাম। এসে শুনি, কর্মবিরতি দিয়েছে। এ জন্য ফিরে যাচ্ছি।’
উল্লাপাড়ার আনিসুর নামের এক বৃদ্ধ বলেন, ‘কোমরে ব্যথা। তাই ডাক্তারের কাছে এসেছি। এসে শুনি, দুপুরের আগে চিকিৎসা হবে না।’
একই দাবিতে রাজবাড়ীতে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা চার ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেছেন। বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই কর্মবিরতি পালন করেন তাঁরা। কর্মবিরতি কর্মসূচিতে দাবি আদায় না হলে ৪ ডিসেম্বর থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালনের মাধ্যমে হাসপাতাল শাটডাউন ঘোষণার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।

নারীর শারীরিক শক্তি নিয়ে প্রচলিত ধারণা বদলে যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই তাঁরা পুরুষদের ছাপিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি একাধিক নারী ক্রীড়াবিদ এমন নজির স্থাপন করেছেন, যা কেবল ক্রীড়াঙ্গনের সীমানায় সীমাবদ্ধ নয়। বরং এসব সাফল্য আমাদের শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে বহু পুরোনো ধ্যানধারণার ভিতে নাড়া দিচ্ছে।
০১ জুন ২০২৫
ছয় দফা দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে। শনিবার থেকে সারা দেশের স্বাস্থ্য সহকারীরা ঢাকায় এসে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন।
১৮ ঘণ্টা আগে
দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের হাসপাতালে প্রতিবছরই বাড়ছে সেবাগ্রহণকারীর সংখ্যা। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রেই শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য অথবা ন্যূনতম মানের নয়। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। আর প্রতিবন্ধী রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও তীব্র।
২ দিন আগে
দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন আক্রান্ত ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
৩ দিন আগেমুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের হাসপাতালে প্রতিবছরই বাড়ছে সেবাগ্রহণকারীর সংখ্যা। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রেই শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য অথবা ন্যূনতম মানের নয়। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। আর প্রতিবন্ধী রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও তীব্র। কারণ হাসপাতালে প্রতিবন্ধী রোগীদের উপযোগী শৌচাগার ১ শতাংশেরও কম।
হাসপাতাল পরিচালনা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিবন্ধীবান্ধব শৌচাগার একটি হাসপাতালের মৌলিক পরিকাঠামোর অংশ হওয়া উচিত। তবে দেশে এ ধরনের সুবিধার মারাত্মক ঘাটতি রয়েছে। বিশেষ করে সরকারি হাসপাতালগুলোতে ঘাটতি বেশি। ফলে রোগীরা শুধু ভোগান্তিতেই পড়ছেন না; বরং গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকিরও সম্মুখীন হচ্ছেন। দীর্ঘ সময় শৌচাগার ব্যবহার করতে না পারার ফলে কিডনি জটিলতা, ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (মূত্রনালি সংক্রমণ) ও পানিশূন্যতাসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিষয়ক গবেষণা প্রকাশনা সংস্থা পাবলিক লাইব্রেরি অব সায়েন্সের প্লস ওয়ান সাময়িকীতে বাংলাদেশে হাসপাতালের শৌচাগার নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ পায়। গবেষণার শিরোনাম ‘ইনঅ্যাডিক্যুইট স্যানিটেশন ইন হেলথকেয়ার ফ্যাসিলিটিজ: অ্যা কম্প্রিহেনসিভ ইভ্যালুয়েশন অব টয়লেটস ইন মেজর হাসপাতাল ইন ঢাকা, বাংলাদেশ’। গবেষণাটি করেছেন অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের নয়জন গবেষক।
গবেষণায় রাজধানীর ১০টি সরকারি ও ২টি বেসরকারি হাসপাতালে মোট ২ হাজার ৪৫৯টি শৌচাগার পর্যবেক্ষণ করা হয়। এর মধ্যে প্রতিবন্ধী রোগীদের উপযোগী শৌচাগারের সংখ্যা মাত্র ১০টি, যা ১ শতাংশেরও কম বা শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। প্রায় ৯৯ শতাংশ শৌচাগার হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী বা চলাফেরায় সীমাবদ্ধ রোগীদের জন্য ব্যবহারযোগ্য নয়। অধিকাংশ শৌচাগারে দরজা সংকীর্ণ, কমোডের উচ্চতা অনুপযুক্ত, গ্র্যাব-বার বা হাতল নেই এবং প্রবেশপথে র্যাম্পের সুবিধাও নেই। ফলে প্রতিবন্ধী রোগীরা শৌচাগার ব্যবহার করতে গিয়ে চরম ভোগান্তি এবং নিরাপত্তাহীনতায় পড়েন।
দেশে ক্যানসার রোগীদের জন্য সর্বোচ্চ সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল ঘুরে এখানকার দুটি ভবনের কোথাও প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য নির্ধারিত শৌচাগার পাওয়া যায়নি।
একইভাবে হৃদরোগ চিকিৎসার জন্য সরকারের বিশেষায়িত চিকিৎসাকেন্দ্র জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের তিনটি ভবনের কোথাও নেই প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য নির্ধারিত শৌচাগার। তাঁদের জন্য আলাদা শৌচাগার না থাকার কথা স্বীকার করেন এই হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখানে ভর্তি রোগীরা বেডসাইড টয়লেট ব্যবহার করেন। বিভিন্ন হাসপাতালের জন্য নতুন যেসব ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে, সেখানে প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য শৌচাগার, হুইলচেয়ার বা শয্যাসহ ওঠানামার জন্য প্রয়োজনীয় র্যাম্প রাখা প্রয়োজন।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে নির্ধারিত শয্যার ২-৩ গুণ রোগী ভর্তি থাকেন। দৈনিক বহির্বিভাগে রোগী আসেন সক্ষমতার ৪-৫ গুণ। স্বাভাবিক রোগীদের জন্য উন্নত শৌচাগারের ব্যবস্থাপনা নেই। প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্যও আলাদা শৌচাগার রাখা যায়নি। তবে আমরা এ বিষয়ে পরিকল্পনা করছি।’

দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের হাসপাতালে প্রতিবছরই বাড়ছে সেবাগ্রহণকারীর সংখ্যা। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রেই শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য অথবা ন্যূনতম মানের নয়। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। আর প্রতিবন্ধী রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও তীব্র। কারণ হাসপাতালে প্রতিবন্ধী রোগীদের উপযোগী শৌচাগার ১ শতাংশেরও কম।
হাসপাতাল পরিচালনা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিবন্ধীবান্ধব শৌচাগার একটি হাসপাতালের মৌলিক পরিকাঠামোর অংশ হওয়া উচিত। তবে দেশে এ ধরনের সুবিধার মারাত্মক ঘাটতি রয়েছে। বিশেষ করে সরকারি হাসপাতালগুলোতে ঘাটতি বেশি। ফলে রোগীরা শুধু ভোগান্তিতেই পড়ছেন না; বরং গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকিরও সম্মুখীন হচ্ছেন। দীর্ঘ সময় শৌচাগার ব্যবহার করতে না পারার ফলে কিডনি জটিলতা, ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (মূত্রনালি সংক্রমণ) ও পানিশূন্যতাসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিষয়ক গবেষণা প্রকাশনা সংস্থা পাবলিক লাইব্রেরি অব সায়েন্সের প্লস ওয়ান সাময়িকীতে বাংলাদেশে হাসপাতালের শৌচাগার নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ পায়। গবেষণার শিরোনাম ‘ইনঅ্যাডিক্যুইট স্যানিটেশন ইন হেলথকেয়ার ফ্যাসিলিটিজ: অ্যা কম্প্রিহেনসিভ ইভ্যালুয়েশন অব টয়লেটস ইন মেজর হাসপাতাল ইন ঢাকা, বাংলাদেশ’। গবেষণাটি করেছেন অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের নয়জন গবেষক।
গবেষণায় রাজধানীর ১০টি সরকারি ও ২টি বেসরকারি হাসপাতালে মোট ২ হাজার ৪৫৯টি শৌচাগার পর্যবেক্ষণ করা হয়। এর মধ্যে প্রতিবন্ধী রোগীদের উপযোগী শৌচাগারের সংখ্যা মাত্র ১০টি, যা ১ শতাংশেরও কম বা শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। প্রায় ৯৯ শতাংশ শৌচাগার হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী বা চলাফেরায় সীমাবদ্ধ রোগীদের জন্য ব্যবহারযোগ্য নয়। অধিকাংশ শৌচাগারে দরজা সংকীর্ণ, কমোডের উচ্চতা অনুপযুক্ত, গ্র্যাব-বার বা হাতল নেই এবং প্রবেশপথে র্যাম্পের সুবিধাও নেই। ফলে প্রতিবন্ধী রোগীরা শৌচাগার ব্যবহার করতে গিয়ে চরম ভোগান্তি এবং নিরাপত্তাহীনতায় পড়েন।
দেশে ক্যানসার রোগীদের জন্য সর্বোচ্চ সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল ঘুরে এখানকার দুটি ভবনের কোথাও প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য নির্ধারিত শৌচাগার পাওয়া যায়নি।
একইভাবে হৃদরোগ চিকিৎসার জন্য সরকারের বিশেষায়িত চিকিৎসাকেন্দ্র জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের তিনটি ভবনের কোথাও নেই প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য নির্ধারিত শৌচাগার। তাঁদের জন্য আলাদা শৌচাগার না থাকার কথা স্বীকার করেন এই হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখানে ভর্তি রোগীরা বেডসাইড টয়লেট ব্যবহার করেন। বিভিন্ন হাসপাতালের জন্য নতুন যেসব ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে, সেখানে প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য শৌচাগার, হুইলচেয়ার বা শয্যাসহ ওঠানামার জন্য প্রয়োজনীয় র্যাম্প রাখা প্রয়োজন।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে নির্ধারিত শয্যার ২-৩ গুণ রোগী ভর্তি থাকেন। দৈনিক বহির্বিভাগে রোগী আসেন সক্ষমতার ৪-৫ গুণ। স্বাভাবিক রোগীদের জন্য উন্নত শৌচাগারের ব্যবস্থাপনা নেই। প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্যও আলাদা শৌচাগার রাখা যায়নি। তবে আমরা এ বিষয়ে পরিকল্পনা করছি।’

নারীর শারীরিক শক্তি নিয়ে প্রচলিত ধারণা বদলে যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই তাঁরা পুরুষদের ছাপিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি একাধিক নারী ক্রীড়াবিদ এমন নজির স্থাপন করেছেন, যা কেবল ক্রীড়াঙ্গনের সীমানায় সীমাবদ্ধ নয়। বরং এসব সাফল্য আমাদের শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে বহু পুরোনো ধ্যানধারণার ভিতে নাড়া দিচ্ছে।
০১ জুন ২০২৫
ছয় দফা দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে। শনিবার থেকে সারা দেশের স্বাস্থ্য সহকারীরা ঢাকায় এসে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন।
১৮ ঘণ্টা আগে
বেতনকাঠামোর দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে হাসপাতালসহ দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে রোগী এবং তাদের স্বজনেরা। গত ৩০ নভেম্বর থেকে...
১ দিন আগে
দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন আক্রান্ত ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন আক্রান্ত ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
এ নিয়ে চলতি বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৩৮৬ জনের মৃত্যু হলো। আর আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগী সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯৫ হাজার ৫৭৭। এর মধ্যে ৬২ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৭ দশমিক ৬ শতাংশ নারী।
আজ মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল সোমবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত তথ্য জানানো হয়।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে তাঁরা পুরুষ। তাঁদে বয়স যথাক্রমে ৫৫ ও ৬৫ বছর।
চলতি বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে নভেম্বর মাসে। ওই মাসে ১০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার আগে অক্টোবর মাসে ৮০ জন ও সেপ্টেম্বর মাসে ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৮২, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৯৫, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১২৭ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৮৮ জন, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৩, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৫, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩০, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) তিন ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) একজন রয়েছে।

দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন আক্রান্ত ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
এ নিয়ে চলতি বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৩৮৬ জনের মৃত্যু হলো। আর আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগী সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯৫ হাজার ৫৭৭। এর মধ্যে ৬২ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৭ দশমিক ৬ শতাংশ নারী।
আজ মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল সোমবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত তথ্য জানানো হয়।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে তাঁরা পুরুষ। তাঁদে বয়স যথাক্রমে ৫৫ ও ৬৫ বছর।
চলতি বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে নভেম্বর মাসে। ওই মাসে ১০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার আগে অক্টোবর মাসে ৮০ জন ও সেপ্টেম্বর মাসে ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৮২, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৯৫, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১২৭ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৮৮ জন, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৩, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৫, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩০, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) তিন ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) একজন রয়েছে।

নারীর শারীরিক শক্তি নিয়ে প্রচলিত ধারণা বদলে যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই তাঁরা পুরুষদের ছাপিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি একাধিক নারী ক্রীড়াবিদ এমন নজির স্থাপন করেছেন, যা কেবল ক্রীড়াঙ্গনের সীমানায় সীমাবদ্ধ নয়। বরং এসব সাফল্য আমাদের শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে বহু পুরোনো ধ্যানধারণার ভিতে নাড়া দিচ্ছে।
০১ জুন ২০২৫
ছয় দফা দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে। শনিবার থেকে সারা দেশের স্বাস্থ্য সহকারীরা ঢাকায় এসে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন।
১৮ ঘণ্টা আগে
বেতনকাঠামোর দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে হাসপাতালসহ দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে রোগী এবং তাদের স্বজনেরা। গত ৩০ নভেম্বর থেকে...
১ দিন আগে
দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের হাসপাতালে প্রতিবছরই বাড়ছে সেবাগ্রহণকারীর সংখ্যা। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রেই শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য অথবা ন্যূনতম মানের নয়। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। আর প্রতিবন্ধী রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও তীব্র।
২ দিন আগে