জাহাঙ্গীর আলম

সব দেশের মানুষের মধ্যেই মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে। লাখ লাখ মানুষ নানা ধরনের মানসিক সমস্যায় ভোগেন। কিন্তু অনেক মানুষই নিজের রোগ সম্পর্কে সচেতন থাকেন না। ফলে তাঁরা চিকিৎসকের কাছেও যান না। আবার বাংলাদেশের মতো কিছু দেশে সাধারণ মানুষের অসচেতনতার পাশাপাশি স্বাস্থ্য অবকাঠামোও অত্যন্ত অপ্রতুল।
গবেষণা বলছে, দেশের ৯২ শতাংশ মানুষই মানসিক স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। মাত্র ৮ শতাংশ মানুষ এই সেবার আওতায় রয়েছে। আর বর্তমানে মানসিক সমস্যায় ভুগছেন দেশের ১৭ শতাংশ মানুষ।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স অন মেন্টাল ইলনেসের তথ্য অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি পাঁচজন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে একজন প্রতি বছর মানসিক অসুস্থতার সম্মুখীন হন। এ ছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রে ১ শতাংশের বেশি প্রাপ্তবয়স্ক সিজোফ্রেনিয়া এবং প্রায় ২ দশমিক ৬ শতাংশ বাইপোলার ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত।
এই ধরনের ব্যাধিগুলো তুলনামূলক ভাবে স্পষ্ট। চিকিৎসক এবং অন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেশাদাররা সাধারণ নির্ণয় পদ্ধতি ব্যবহার করেই রোগগুলো শনাক্ত করতে পারেন। কিন্তু এমন কিছু মানসিক সমস্যা রয়েছে যেগুলো অত্যন্ত বিরল এবং সুনির্দিষ্ট ভাবে শনাক্ত করা বেশ কঠিন। কিন্তু রোগগুলো ভয়ংকর। এতে আক্রান্ত ব্যক্তির পাশাপাশি তার আশপাশের অন্যরাও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।
এ রকম ১৫টি রোগের বর্ণনা নিচে দেওয়া হলো:
স্টেনডাল সিনড্রোম
স্টেনডাল সিনড্রোম যাদের আছে তাঁদের ক্ষেত্রে শারীরিক এবং মানসিক উদ্বেগের পাশাপাশি প্যানিক অ্যাটাক, বিচ্ছিন্ন অভিজ্ঞতা, বিভ্রান্তি এবং কোনো শিল্পকর্ম দেখার পর হ্যালুসিনেশনের মতো ঘটনা ঘটতে পারে। সাধারণত যে শিল্পকে বিশেষভাবে সুন্দর বলে মনে করা হয় বা যখন একটি স্থানে বিপুল পরিমাণে শিল্পকর্ম রাখা থাকে সেখানে গেলে এমন অভিজ্ঞতা হতে পারে। যেমন জাদুঘর বা আর্ট গ্যালারিতে অতিমাত্রায় স্নায়ু উদ্দীপনা তৈরি হতে পারে। মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইট মেডস্কেপে বলা হচ্ছে, এসবের পাশাপাশি প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখেও একই ধরনের প্রতিক্রিয়া হতে পারে। উনিশ শতকের ফরাসি লেখকের নামে এই সমস্যার নামকরণ করা হয়েছে। ১৮১৭ সালে ফ্লোরেন্স ভ্রমণের সময় লেখক এমন উপসর্গ অনুভব করেছিলেন। স্টেনডাল সিনড্রোম আবার হাইপার কালচারেমিয়া বা ফ্লোরেন্স সিনড্রোম নামেও পরিচিত।
অ্যাপোটেমনোফিলিয়া
শরীরের অখণ্ডতার ধারণা বিকার নামেও পরিচিত। অ্যাপোটেমনোফিলিয়া আক্রান্ত ব্যক্তি দেহের কোনো সুস্থ অঙ্গ শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করার প্রবল ইচ্ছা পোষণ করেন। অবশ্য এই মানসিক সমস্যা সম্পর্কে খুব একটা জানা যায় না। মনোবিদেরা এটিকে স্নায়বিক ব্যাধি বলেই মনে করেন। আক্রান্ত ব্যক্তি নিজের অঙ্গ কেটে ফেলার চেষ্টা করতে পারেন বা এমন ভাবে কোনো অঙ্গের ক্ষতি করতে পারেন যে সেটি সারাতে অস্ত্রোপচার জরুরি হয়ে পড়ে।
মস্তিষ্কের ডান প্যারিয়েটাল লোব কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হলে অ্যাপোটেমনোফিলিয়ার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। এ ধরনের রোগের চিকিৎসা বেশ চ্যালেঞ্জিং, কারণ আক্রান্ত ব্যক্তি সাধারণত চিকিৎসকের কাছে যান না। কগনিটিভ বিহ্যাভিওরাল থেরাপি এবং অ্যাভারসন থেরাপির মাধ্যমে অ্যাপোটেমেনোফিলিয়ার চিকিৎসা করা হয়।
এলিয়েন হ্যান্ড সিনড্রোম
এই সিনড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তি মনে করেন তাঁর হাত আসলে তাঁর নয়। হাতের যেন আলাদা জীবন আছে। এলিয়েন হ্যান্ড সিনড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তির অন্যান্য স্বাভাবিক অনুভূতি আছে। কিন্তু তাঁরা মনে করেন, তাঁদের হাত যেন এক স্বাধীন জীবন্ত বস্তু, হাতের নিজস্ব ইচ্ছা অনুভূতি আছে। আক্রান্ত ব্যক্তিরা অঙ্গটিকে একটি পৃথক সত্তা হিসেবে বিবেচনা করতে শুরু করেন। হাত তার নিয়ন্ত্রণে থাকে না। আক্রান্ত হাতের নিজস্ব এজেন্ডা থাকে!
কর্পাস ক্যালোসামের ক্ষতি হলে এমন সমস্যা দেখা দেয়। এই অংশটি মস্তিষ্কের দুটি সেরিব্রাল গোলার্ধকে সংযুক্ত করে। অন্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে-স্ট্রোক এবং প্যারিয়েটাল লোবের ক্ষতি। হাতগুলোর মধ্যে তখন ‘আন্তঃব্যক্তিক দ্বন্দ্ব’ বা ‘আইডিওমোটর অ্যাপ্রাক্সিয়া’ আছে বলে মনে হয়। অর্থাৎ মনে হয় যেন একটি হাত আরেক হাতের বিরুদ্ধে লড়ছে।
ক্যাপগ্রাস সিনড্রোম
এই সিনড্রোমের নাম রাখা হয়েছে জোসেফ ক্যাপগ্রাস নামে এক ফরাসি মনোরোগ বিশেষজ্ঞের নামে। তিনি ক্যারিয়ারের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ দ্বিত্বের বিভ্রম অন্বেষণে ব্যয় করেছেন। ক্যাপগ্রাস সিনড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তির মনে হয় যেন তাঁর কোনো এক প্রিয়জনের স্থলে একইরকম দেখতে আরেক খারাপ লোক ছদ্মবেশ ধরে ঢুকে পড়েছে। এটি স্বামী, স্ত্রী, ঘনিষ্ঠ বন্ধু বা পরিবারের সদস্যের ক্ষেত্রে হতে পারে। অর্থাৎ কোনো এক প্রিয় জনকে অন্য ব্যক্তি বলে ধারণা হওয়ার বিভ্রমের মধ্যে থাকেন তিনি। মনে হয় যেন, তার স্বামী আর আগের ব্যক্তিটি নেই। তিনি তাঁর ক্ষতি বা তাঁকে খুন করার ষড়যন্ত্র করছেন। এটি সিজোফ্রেনিয়া, নিদ্রাহীনতা, মৃগীরোগে আক্রান্ত এবং মস্তিষ্কে আঘাত পাওয়া ব্যক্তির মধ্যে দেখা দিতে পারে।
অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড সিনড্রোম
অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড সিনড্রোম (এআইডব্লিউএস), টড সিনড্রোম নামেও পরিচিত। এটি একটি স্নায়বিক বিকার জনিত সমস্যা। আক্রান্ত ব্যক্তির মনে হয় তার দেহের ছবি, স্থান এবং/অথবা সময় যেন বিচ্যুত বা বিকৃত হচ্ছে। তাঁরা চারপাশের পরিবেশ বিকৃত ভাবে দেখে।
অ্যালিস যেমন বাড়ির উচ্চতার চেয়েও অনেক লম্বা হয়ে যায়, অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড সিনড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তিরও এ ধরনের অনুভূতি হয়। তাঁরা শান্ত বা জোরে শব্দ শুনতে পান, বস্তুর আকার প্রকৃত আকারের চেয়ে ছোট বা বড় দেখেন। এমনকি সঠিক বেগ বা টেক্সচারের অনুভূতিও হারান। আক্রান্ত ব্যক্তি তার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের আকার আকৃতি নিয়ে বিভ্রান্তির মধ্যে থাকেন।
এই উপসর্গগুলো আতঙ্ক ও ভয়ের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তি ঘন ঘন মাইগ্রেন, মস্তিষ্কের টিউমার আক্রান্ত বা ড্রাগ আসক্ত হয়ে যেতে পারেন। ৫ থেকে ১০ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে এমন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এ ধরনের ব্যক্তির হ্যালুসিনেশন, সংবেদের বিকার এবং গতি বেগের পরিবর্তিত অনুভূতি হতে পারে।
সৌভাগ্যবশত, এলিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড সিনড্রোম অত্যন্ত বিরল। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাঁদের ২০-এর দশকে যাদের ব্রেন টিউমার বা ড্রাগ নেওয়ার ইতিহাস আছে তাঁদের মধ্যে দেখা গিয়েছিল।
বোয়ানথ্রপি
খুব বিরল কিন্তু ভীতিকর মানসিক ব্যাধি এটি। বোয়ানথ্রপিতে আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেকে গরু বলে মনে করেন। তাঁরা প্রায়শই গরুর মতো আচরণ করেন। কখনো কখনো তাঁদের মাঠে গরুর মতো চরতে দেখা যায়। গরুর পালের মধ্যে চার পায়ে হাঁটেন, ঘাস চিবান এবং নিজেকে গরুর পালেরই একজন সদস্য বলে মনে করেন। বোয়ানথ্রপি আক্রান্ত ব্যক্তি বুঝতে পারে না যে তাঁরা গরুর মতো আচরণ করছেন। গবেষকেরা মনে করেন, এই অদ্ভুত মানসিক ব্যাধি স্বপ্ন বা সম্মোহন থেকেও আরোপ করা যেতে পারে। মজার ব্যাপার হলো, বাইবেলেও বোয়ানথ্রপির কথা উল্লেখ আছে। সেখানে ব্যাবিলনের রাজা নেবুচাদনেজারকে ‘মানবগোষ্ঠী থেকে বেরিয়ে গিয়ে ষাঁড়ের মতো ঘাস খেয়েছিলেন’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে।
ক্লিনিক্যাল লাইক্যানথ্রোপি
বোয়ানথ্রপির মতো, যারা ক্লিনিক্যাল লাইক্যানথ্রোপিতে ভুগছেন তাঁরাও বিশ্বাস করেন যে, তাঁরা পশুতে পরিণত হতে সক্ষম। নিজেকে নেকড়ে বলে মনে করেন। কখনো অন্য প্রাণী বলেও মনে হয়। ক্লিনিক্যাল লাইক্যানথ্রোপিতে আক্রান্ত ব্যক্তি পশুর মতো আচরণ করেন। নিজেকে নেকড়ে বা বাঘ সিংহ বলে মনে হলে তিনি তখন তেমন হিংস্র আচরণ করতে শুরু করেন। প্রায়শই বনে-জঙ্গলে গিয়ে থাকেন বা কখনো বনে গিয়ে পালিয়ে থাকেন।
কোটার্ড ডিলিউশন
দ্য ওয়াকিং ডেড বা হালের হলিউডি জম্বি সিনেমা নিয়ে মানুষের আগ্রহ ব্যাপক। কিন্তু কারও কারও ক্ষেত্রে ব্যাপারটা নিয়ন্ত্রণের সীমা ছাড়িয়ে যায়। তাঁরা এটিকে সত্যি সত্যি স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে ভাবতে শুরু করেন। এমনকি নিজেকেই এক সময় ওয়াকিং ডেড বা জম্বি ভাবেন। একেই বলে কোটার্ড ডিলিউশন। এই ভয়ানক মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তি বিশ্বাস করতে শুরু করেন যে, আক্ষরিক অর্থেই তিনি ওয়াকিং ডেড বা ভূত হয়ে গেছেন। শরীর ক্রমেই ক্ষয়ে যাচ্ছে এবং/অথবা শরীরের সমস্ত রক্ত এবং অভ্যন্তরীণ প্রত্যঙ্গ হারিয়ে ফেলেছেন। শরীর পচে গলে যাওয়ারও একটা অনুভূতি হতে পারে। কোটার্ড ডিলিউশনে ভোগা রোগীর বিষণ্নতার শিকার হওয়া স্বাভাবিক। কিছু ক্ষেত্রে রোগীর না খেয়ে মরার চিন্তাও আসতে পারে।
এই ভয়ংকর ব্যাধিটি ১৮৮০ সালে প্রথম বর্ণনা করেন স্নায়ুবিদ জুলস কোটার্ড। অবশ্য কোটার্ড ডিলিউশন অত্যন্ত বিরল রোগ। কোটার্ড ডিলিউশনের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনাটি ঘটেছিল হাইতিতে। সেখানে এক ব্যক্তি দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করতেন যে, তিনি এইডসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এবং বর্তমানে জাহান্নামে আছেন।
ডায়োজেনিস সিনড্রোম
ডায়োজেনিস সিনড্রোমকে সাধারণত এক ধরনের ‘মজুতদারি’ বোঝায়। অর্থাৎ অকারণে জিনিস পত্র জমিয়ে রাখার একটা সমস্যা। এ কারণে এই রোগ সম্পর্কে প্রায়ই ভুল বোঝাবুঝি হয়। গ্রিক দার্শনিক সিনোপের ডায়োজেনিসের নামে এই রোগের নাম রাখা হয়েছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, জায়োজেনিস নিজে আসলে মিনিমালিস্ট! আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে অকারণে জিনিসপত্র সংগ্রহ করার প্রবণতা দেখা যায়। অনিয়ন্ত্রিত মজুত ছাড়াও, ডায়োজেনিস সিনড্রোমের সঙ্গে নিজের প্রতি চরম অবহেলা, নিজের বা অন্যদের প্রতি উদাসীনতা, সমাজকে অগ্রাহ্য করা এবং নিজের ‘বদভ্যাসের’ জন্য কখনোই লজ্জিত না হওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। বয়স্ক, নিদ্রাহীনতায় আক্রান্ত এবং যারা জীবনের কোনো এক সময় পরিত্যক্ত হয়েছিলেন বা যারা কোনো স্থিতিশীল পরিবেশে বেড়ে ওঠেননি তাঁদের মধ্যে ডায়োজেনিস সিনড্রোম দেখা যেতে পারে।
বিচ্ছিন্ন পরিচয় বোধের সমস্যা
ডিসোসিয়েটিভ আইডেন্টিটি ডিসঅর্ডার (ডিআইডি)। একসঙ্গে একাধিক ব্যক্তিত্ব ধারণের ব্যাধি নামেও পরিচিত। এটি একটি ভয়ংকর মানসিক রোগ। এ ধরনের সমস্যা নিয়ে অসংখ্য সিনেমা এবং টেলিভিশন শো নির্মিত হয়েছে। এ ধরনের সমস্যায় ভোগা লোকের দুতিনটি আলাদা পরিচয় থাকে। কখনো কখনো আরও বেশি। ভুক্তভোগীরা নিয়মিতভাবে ব্যক্তিত্ব পরিবর্তনের একটি চক্রের মধ্যে থাকেন। কয়েক ঘণ্টা বা কয়েক বছর পরপর তিনি আলাদা একটি পরিচয়ে বিরাজ করেন। তাঁদের আত্মপরিচয় মুহূর্তের মধ্যে বদলেও যেতে পারে। পরিচয় বদলের আগে তাঁদের মধ্যে কোনো ধরনের সতর্কতার লক্ষণও দেখা যায় না। এ ধরনের সমস্যায় যে তিনি আক্রান্ত, এটা তাকে বোঝানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এই কারণে, ডিসোসিয়েটিভ আইডেন্টিটি ডিসঅর্ডার যাদের আছে তাঁরা স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে অক্ষম। তাঁদের মানসিক হাসপাতালে পাঠাতে বাধ্য হন স্বজনেরা।
ফ্যাকটিশাস ডিসঅর্ডার বা কপট বিকার
হাঁচির সঙ্গে গায়ে কাঁপুনি দেওয়া সর্দি-জ্বর বা অন্য কোনো অসুস্থতার ইঙ্গিত। কিন্তু ফ্যাকটিশাস ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে এটা সত্য নয়। এরা অসুস্থতা নিয়ে মিথ্যা বলে, কপট আচরণ করে। আদতে এটি একটি ভয়ংকর মানসিক ব্যাধি। ফ্যাকটিশাস ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত অধিকাংশ ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেকে অসুস্থ করে তোলেন। তাঁদের মধ্যে অসুস্থ হওয়ার একটা অবসেশন দেখা যায়। ডাক্তারের শরণাপন্ন যেন হতে হয় সেই চেষ্টাই তাঁরা সব সময় করেন। কখনো কখনো তাঁরা অসুস্থতার ভান করেন। মানুষকে বিশ্বাস করানোর জন্য নানা ভাবে চেষ্টা করেন। রোগ নিয়ে বিশাল গল্প ফেঁদে বসেন, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে লক্ষণ উপসর্গ বলেন এবং হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ছুটে বেড়ান। অসুস্থতার প্রতি এই জাতীয় আবেশ (অবসেশন) প্রায়ই অতীতের কোনো আঘাত বা গুরুতর অসুস্থতা থেকে তৈরি হতে পারে।
ক্লুভার-বুসি সিনড্রোম
হাভাতের মতো একটি বইয়ের স্বাদ কল্পনা করা বা একটি গাড়ির সঙ্গে যৌন সম্পর্কের আকাঙ্ক্ষা করা- ক্লুভার-বুসি সিনড্রোমে দ্বারা আক্রান্তরা এমন অদ্ভুত আচরণই করেন। তাঁদের মধ্যে স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া, অখাদ্য বস্তু খাওয়ার ইচ্ছা এবং অটোমোবাইলের মতো নির্জীব বস্তুর প্রতি যৌন আকর্ষণ অনুভব করার মতো আচরণ দেখা যায়। ক্লুভার-বুসি সিনড্রোমে আক্রান্তরা অতি পরিচিত বস্তু বা ব্যক্তিকেও চিনতে পারেন না। এই ভয়ানক মানসিক ব্যাধি শনাক্ত করা কঠিন। মস্তিষ্কের টেমপোরাল লোবে গুরুতর আঘাতের ফল এই রোগ। এই রোগের কোনো প্রতিকার নেই। ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি হয়তো সারা জীবন এই সমস্যায় ভোগেন।
অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার
এই সমস্যাটির কথা ব্যাপকভাবে শোনা যায়। অনেকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে উপহাস করেন। খুব কম লোকই অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার (ওসিডি) বুঝতে পারেন। ওসিডি বিভিন্ন ভাবে প্রকাশ পেতে পারে। তবে আতঙ্কে জড়োসরো থাকা, উদ্বেগ এবং পুনরাবৃত্তিমূলক দুশ্চিন্তা গ্রস্ত থাকা এসব লক্ষণ দেখে ওসিডি চিহ্নিত করা যেতে পারে। বারবার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার মতো কাজের পুনরাবৃত্তি করে থাকেন এসব লোক। অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট কাজ করার অবসেশন দেখা যায় তাঁদের মধ্যে। ওসিডি আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রায়শই পুরোপুরি সচেতন থাকেন যে তাঁদের ভয় বা উদ্বেগ একেবারে অযৌক্তিক, এই উপলব্ধি তখন তাঁদের মধ্যে আরেক উদ্বেগের জন্ম দেয়। ফলে তিনি উদ্বেগের একটি চক্রে ঢুকে পড়েন।
প্যারিস সিনড্রোম
প্যারিস সিনড্রোম একটি অত্যন্ত অদ্ভুত অস্থায়ী মানসিক ব্যাধি। এ ধরনের ব্যক্তি প্যারিস শহরে গিয়ে অভিভূত হয়ে যান। মজার ব্যাপার হলো, এটা জাপানি পর্যটকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। প্রতি বছর প্যারিসে আনুমানিক ৬০ লাখ জাপানি পর্যটক যান। তাঁদের মধ্যে এক থেকে দুই ডজন জাপানি অতিমাত্রায় উদ্বেগ, কোনো কিছুতে ব্যক্তিত্ব আরোপ, অবাস্তব অনুভূতি, নিপীড়নমূলক চিন্তাভাবনা, হ্যালুসিনেশন এবং ভয়ংকর ভ্রান্তিতে ভোগেন। এগুলোই প্যারিস সিনড্রোমের বৈশিষ্ট্য। দেখা গেছে, প্যারিস সিনড্রোমে আক্রান্ত বেশির ভাগ লোকের মানসিক রোগের কোনো ইতিহাস নেই। ধারণা করা হয়, ভাষাগত সীমাবদ্ধতা, শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি এবং কল্পনার সঙ্গে প্যারিসের বাস্তবতার পার্থক্য এই মারাত্মক মানসিক সমস্যা তৈরি করে।
রিডুপ্লিকেটিভ অ্যামনেসিয়া
রিডুপ্লিকেটিভ অ্যামনেসিয়া, ক্যাপগ্রাস সিনড্রোমের মতোই। এখানে মানুষের ডুপ্লিকেট ভাবার বদলে আক্রান্ত ব্যক্তি স্থানের ডুপ্লিকেট ভাবে। অর্থাৎ কোনো স্থানে গিয়ে তার কাছে স্থানটি অন্য কোনো স্থানের অনুরূপ বলে মনে হয়। এই বিশ্বাসটি বিভিন্ন ভাবে প্রকাশ পেতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে, একটি স্থান একই সঙ্গে দুই জায়গাতে বিরাজ করছে। ধরা যাক, বান্দরবানে দেখা কোনো পাহাড়কে রাঙামাটিতে গিয়ে দেখা আরেকটি পাহাড়ের অনুরূপ মনে হচ্ছে। হোটেল কক্ষকে তার মনে হচ্ছে বাড়িতে নিজের ঘর। ‘রিডুপ্লিকেটিভ অ্যামনেসিয়া’ শব্দটি প্রথম ১৯০৩ সালে ব্যবহার করেন স্নায়ুবিদ আর্নল্ড পিক। স্মৃতিভ্রংশ (আলঝেইমার) রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে তিনি এ শব্দ ব্যবহার করেছিলেন। টিউমার, নিদ্রাহীনতা, মস্তিষ্কের আঘাত বা অন্যান্য মানসিক রোগীদের মধ্যে এই সমস্যাটি দেখা যায়।
আরও পড়ুন:

সব দেশের মানুষের মধ্যেই মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে। লাখ লাখ মানুষ নানা ধরনের মানসিক সমস্যায় ভোগেন। কিন্তু অনেক মানুষই নিজের রোগ সম্পর্কে সচেতন থাকেন না। ফলে তাঁরা চিকিৎসকের কাছেও যান না। আবার বাংলাদেশের মতো কিছু দেশে সাধারণ মানুষের অসচেতনতার পাশাপাশি স্বাস্থ্য অবকাঠামোও অত্যন্ত অপ্রতুল।
গবেষণা বলছে, দেশের ৯২ শতাংশ মানুষই মানসিক স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। মাত্র ৮ শতাংশ মানুষ এই সেবার আওতায় রয়েছে। আর বর্তমানে মানসিক সমস্যায় ভুগছেন দেশের ১৭ শতাংশ মানুষ।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স অন মেন্টাল ইলনেসের তথ্য অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি পাঁচজন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে একজন প্রতি বছর মানসিক অসুস্থতার সম্মুখীন হন। এ ছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রে ১ শতাংশের বেশি প্রাপ্তবয়স্ক সিজোফ্রেনিয়া এবং প্রায় ২ দশমিক ৬ শতাংশ বাইপোলার ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত।
এই ধরনের ব্যাধিগুলো তুলনামূলক ভাবে স্পষ্ট। চিকিৎসক এবং অন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেশাদাররা সাধারণ নির্ণয় পদ্ধতি ব্যবহার করেই রোগগুলো শনাক্ত করতে পারেন। কিন্তু এমন কিছু মানসিক সমস্যা রয়েছে যেগুলো অত্যন্ত বিরল এবং সুনির্দিষ্ট ভাবে শনাক্ত করা বেশ কঠিন। কিন্তু রোগগুলো ভয়ংকর। এতে আক্রান্ত ব্যক্তির পাশাপাশি তার আশপাশের অন্যরাও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।
এ রকম ১৫টি রোগের বর্ণনা নিচে দেওয়া হলো:
স্টেনডাল সিনড্রোম
স্টেনডাল সিনড্রোম যাদের আছে তাঁদের ক্ষেত্রে শারীরিক এবং মানসিক উদ্বেগের পাশাপাশি প্যানিক অ্যাটাক, বিচ্ছিন্ন অভিজ্ঞতা, বিভ্রান্তি এবং কোনো শিল্পকর্ম দেখার পর হ্যালুসিনেশনের মতো ঘটনা ঘটতে পারে। সাধারণত যে শিল্পকে বিশেষভাবে সুন্দর বলে মনে করা হয় বা যখন একটি স্থানে বিপুল পরিমাণে শিল্পকর্ম রাখা থাকে সেখানে গেলে এমন অভিজ্ঞতা হতে পারে। যেমন জাদুঘর বা আর্ট গ্যালারিতে অতিমাত্রায় স্নায়ু উদ্দীপনা তৈরি হতে পারে। মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইট মেডস্কেপে বলা হচ্ছে, এসবের পাশাপাশি প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখেও একই ধরনের প্রতিক্রিয়া হতে পারে। উনিশ শতকের ফরাসি লেখকের নামে এই সমস্যার নামকরণ করা হয়েছে। ১৮১৭ সালে ফ্লোরেন্স ভ্রমণের সময় লেখক এমন উপসর্গ অনুভব করেছিলেন। স্টেনডাল সিনড্রোম আবার হাইপার কালচারেমিয়া বা ফ্লোরেন্স সিনড্রোম নামেও পরিচিত।
অ্যাপোটেমনোফিলিয়া
শরীরের অখণ্ডতার ধারণা বিকার নামেও পরিচিত। অ্যাপোটেমনোফিলিয়া আক্রান্ত ব্যক্তি দেহের কোনো সুস্থ অঙ্গ শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করার প্রবল ইচ্ছা পোষণ করেন। অবশ্য এই মানসিক সমস্যা সম্পর্কে খুব একটা জানা যায় না। মনোবিদেরা এটিকে স্নায়বিক ব্যাধি বলেই মনে করেন। আক্রান্ত ব্যক্তি নিজের অঙ্গ কেটে ফেলার চেষ্টা করতে পারেন বা এমন ভাবে কোনো অঙ্গের ক্ষতি করতে পারেন যে সেটি সারাতে অস্ত্রোপচার জরুরি হয়ে পড়ে।
মস্তিষ্কের ডান প্যারিয়েটাল লোব কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হলে অ্যাপোটেমনোফিলিয়ার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। এ ধরনের রোগের চিকিৎসা বেশ চ্যালেঞ্জিং, কারণ আক্রান্ত ব্যক্তি সাধারণত চিকিৎসকের কাছে যান না। কগনিটিভ বিহ্যাভিওরাল থেরাপি এবং অ্যাভারসন থেরাপির মাধ্যমে অ্যাপোটেমেনোফিলিয়ার চিকিৎসা করা হয়।
এলিয়েন হ্যান্ড সিনড্রোম
এই সিনড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তি মনে করেন তাঁর হাত আসলে তাঁর নয়। হাতের যেন আলাদা জীবন আছে। এলিয়েন হ্যান্ড সিনড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তির অন্যান্য স্বাভাবিক অনুভূতি আছে। কিন্তু তাঁরা মনে করেন, তাঁদের হাত যেন এক স্বাধীন জীবন্ত বস্তু, হাতের নিজস্ব ইচ্ছা অনুভূতি আছে। আক্রান্ত ব্যক্তিরা অঙ্গটিকে একটি পৃথক সত্তা হিসেবে বিবেচনা করতে শুরু করেন। হাত তার নিয়ন্ত্রণে থাকে না। আক্রান্ত হাতের নিজস্ব এজেন্ডা থাকে!
কর্পাস ক্যালোসামের ক্ষতি হলে এমন সমস্যা দেখা দেয়। এই অংশটি মস্তিষ্কের দুটি সেরিব্রাল গোলার্ধকে সংযুক্ত করে। অন্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে-স্ট্রোক এবং প্যারিয়েটাল লোবের ক্ষতি। হাতগুলোর মধ্যে তখন ‘আন্তঃব্যক্তিক দ্বন্দ্ব’ বা ‘আইডিওমোটর অ্যাপ্রাক্সিয়া’ আছে বলে মনে হয়। অর্থাৎ মনে হয় যেন একটি হাত আরেক হাতের বিরুদ্ধে লড়ছে।
ক্যাপগ্রাস সিনড্রোম
এই সিনড্রোমের নাম রাখা হয়েছে জোসেফ ক্যাপগ্রাস নামে এক ফরাসি মনোরোগ বিশেষজ্ঞের নামে। তিনি ক্যারিয়ারের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ দ্বিত্বের বিভ্রম অন্বেষণে ব্যয় করেছেন। ক্যাপগ্রাস সিনড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তির মনে হয় যেন তাঁর কোনো এক প্রিয়জনের স্থলে একইরকম দেখতে আরেক খারাপ লোক ছদ্মবেশ ধরে ঢুকে পড়েছে। এটি স্বামী, স্ত্রী, ঘনিষ্ঠ বন্ধু বা পরিবারের সদস্যের ক্ষেত্রে হতে পারে। অর্থাৎ কোনো এক প্রিয় জনকে অন্য ব্যক্তি বলে ধারণা হওয়ার বিভ্রমের মধ্যে থাকেন তিনি। মনে হয় যেন, তার স্বামী আর আগের ব্যক্তিটি নেই। তিনি তাঁর ক্ষতি বা তাঁকে খুন করার ষড়যন্ত্র করছেন। এটি সিজোফ্রেনিয়া, নিদ্রাহীনতা, মৃগীরোগে আক্রান্ত এবং মস্তিষ্কে আঘাত পাওয়া ব্যক্তির মধ্যে দেখা দিতে পারে।
অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড সিনড্রোম
অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড সিনড্রোম (এআইডব্লিউএস), টড সিনড্রোম নামেও পরিচিত। এটি একটি স্নায়বিক বিকার জনিত সমস্যা। আক্রান্ত ব্যক্তির মনে হয় তার দেহের ছবি, স্থান এবং/অথবা সময় যেন বিচ্যুত বা বিকৃত হচ্ছে। তাঁরা চারপাশের পরিবেশ বিকৃত ভাবে দেখে।
অ্যালিস যেমন বাড়ির উচ্চতার চেয়েও অনেক লম্বা হয়ে যায়, অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড সিনড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তিরও এ ধরনের অনুভূতি হয়। তাঁরা শান্ত বা জোরে শব্দ শুনতে পান, বস্তুর আকার প্রকৃত আকারের চেয়ে ছোট বা বড় দেখেন। এমনকি সঠিক বেগ বা টেক্সচারের অনুভূতিও হারান। আক্রান্ত ব্যক্তি তার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের আকার আকৃতি নিয়ে বিভ্রান্তির মধ্যে থাকেন।
এই উপসর্গগুলো আতঙ্ক ও ভয়ের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তি ঘন ঘন মাইগ্রেন, মস্তিষ্কের টিউমার আক্রান্ত বা ড্রাগ আসক্ত হয়ে যেতে পারেন। ৫ থেকে ১০ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে এমন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এ ধরনের ব্যক্তির হ্যালুসিনেশন, সংবেদের বিকার এবং গতি বেগের পরিবর্তিত অনুভূতি হতে পারে।
সৌভাগ্যবশত, এলিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড সিনড্রোম অত্যন্ত বিরল। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাঁদের ২০-এর দশকে যাদের ব্রেন টিউমার বা ড্রাগ নেওয়ার ইতিহাস আছে তাঁদের মধ্যে দেখা গিয়েছিল।
বোয়ানথ্রপি
খুব বিরল কিন্তু ভীতিকর মানসিক ব্যাধি এটি। বোয়ানথ্রপিতে আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেকে গরু বলে মনে করেন। তাঁরা প্রায়শই গরুর মতো আচরণ করেন। কখনো কখনো তাঁদের মাঠে গরুর মতো চরতে দেখা যায়। গরুর পালের মধ্যে চার পায়ে হাঁটেন, ঘাস চিবান এবং নিজেকে গরুর পালেরই একজন সদস্য বলে মনে করেন। বোয়ানথ্রপি আক্রান্ত ব্যক্তি বুঝতে পারে না যে তাঁরা গরুর মতো আচরণ করছেন। গবেষকেরা মনে করেন, এই অদ্ভুত মানসিক ব্যাধি স্বপ্ন বা সম্মোহন থেকেও আরোপ করা যেতে পারে। মজার ব্যাপার হলো, বাইবেলেও বোয়ানথ্রপির কথা উল্লেখ আছে। সেখানে ব্যাবিলনের রাজা নেবুচাদনেজারকে ‘মানবগোষ্ঠী থেকে বেরিয়ে গিয়ে ষাঁড়ের মতো ঘাস খেয়েছিলেন’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে।
ক্লিনিক্যাল লাইক্যানথ্রোপি
বোয়ানথ্রপির মতো, যারা ক্লিনিক্যাল লাইক্যানথ্রোপিতে ভুগছেন তাঁরাও বিশ্বাস করেন যে, তাঁরা পশুতে পরিণত হতে সক্ষম। নিজেকে নেকড়ে বলে মনে করেন। কখনো অন্য প্রাণী বলেও মনে হয়। ক্লিনিক্যাল লাইক্যানথ্রোপিতে আক্রান্ত ব্যক্তি পশুর মতো আচরণ করেন। নিজেকে নেকড়ে বা বাঘ সিংহ বলে মনে হলে তিনি তখন তেমন হিংস্র আচরণ করতে শুরু করেন। প্রায়শই বনে-জঙ্গলে গিয়ে থাকেন বা কখনো বনে গিয়ে পালিয়ে থাকেন।
কোটার্ড ডিলিউশন
দ্য ওয়াকিং ডেড বা হালের হলিউডি জম্বি সিনেমা নিয়ে মানুষের আগ্রহ ব্যাপক। কিন্তু কারও কারও ক্ষেত্রে ব্যাপারটা নিয়ন্ত্রণের সীমা ছাড়িয়ে যায়। তাঁরা এটিকে সত্যি সত্যি স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে ভাবতে শুরু করেন। এমনকি নিজেকেই এক সময় ওয়াকিং ডেড বা জম্বি ভাবেন। একেই বলে কোটার্ড ডিলিউশন। এই ভয়ানক মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তি বিশ্বাস করতে শুরু করেন যে, আক্ষরিক অর্থেই তিনি ওয়াকিং ডেড বা ভূত হয়ে গেছেন। শরীর ক্রমেই ক্ষয়ে যাচ্ছে এবং/অথবা শরীরের সমস্ত রক্ত এবং অভ্যন্তরীণ প্রত্যঙ্গ হারিয়ে ফেলেছেন। শরীর পচে গলে যাওয়ারও একটা অনুভূতি হতে পারে। কোটার্ড ডিলিউশনে ভোগা রোগীর বিষণ্নতার শিকার হওয়া স্বাভাবিক। কিছু ক্ষেত্রে রোগীর না খেয়ে মরার চিন্তাও আসতে পারে।
এই ভয়ংকর ব্যাধিটি ১৮৮০ সালে প্রথম বর্ণনা করেন স্নায়ুবিদ জুলস কোটার্ড। অবশ্য কোটার্ড ডিলিউশন অত্যন্ত বিরল রোগ। কোটার্ড ডিলিউশনের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনাটি ঘটেছিল হাইতিতে। সেখানে এক ব্যক্তি দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করতেন যে, তিনি এইডসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এবং বর্তমানে জাহান্নামে আছেন।
ডায়োজেনিস সিনড্রোম
ডায়োজেনিস সিনড্রোমকে সাধারণত এক ধরনের ‘মজুতদারি’ বোঝায়। অর্থাৎ অকারণে জিনিস পত্র জমিয়ে রাখার একটা সমস্যা। এ কারণে এই রোগ সম্পর্কে প্রায়ই ভুল বোঝাবুঝি হয়। গ্রিক দার্শনিক সিনোপের ডায়োজেনিসের নামে এই রোগের নাম রাখা হয়েছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, জায়োজেনিস নিজে আসলে মিনিমালিস্ট! আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে অকারণে জিনিসপত্র সংগ্রহ করার প্রবণতা দেখা যায়। অনিয়ন্ত্রিত মজুত ছাড়াও, ডায়োজেনিস সিনড্রোমের সঙ্গে নিজের প্রতি চরম অবহেলা, নিজের বা অন্যদের প্রতি উদাসীনতা, সমাজকে অগ্রাহ্য করা এবং নিজের ‘বদভ্যাসের’ জন্য কখনোই লজ্জিত না হওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। বয়স্ক, নিদ্রাহীনতায় আক্রান্ত এবং যারা জীবনের কোনো এক সময় পরিত্যক্ত হয়েছিলেন বা যারা কোনো স্থিতিশীল পরিবেশে বেড়ে ওঠেননি তাঁদের মধ্যে ডায়োজেনিস সিনড্রোম দেখা যেতে পারে।
বিচ্ছিন্ন পরিচয় বোধের সমস্যা
ডিসোসিয়েটিভ আইডেন্টিটি ডিসঅর্ডার (ডিআইডি)। একসঙ্গে একাধিক ব্যক্তিত্ব ধারণের ব্যাধি নামেও পরিচিত। এটি একটি ভয়ংকর মানসিক রোগ। এ ধরনের সমস্যা নিয়ে অসংখ্য সিনেমা এবং টেলিভিশন শো নির্মিত হয়েছে। এ ধরনের সমস্যায় ভোগা লোকের দুতিনটি আলাদা পরিচয় থাকে। কখনো কখনো আরও বেশি। ভুক্তভোগীরা নিয়মিতভাবে ব্যক্তিত্ব পরিবর্তনের একটি চক্রের মধ্যে থাকেন। কয়েক ঘণ্টা বা কয়েক বছর পরপর তিনি আলাদা একটি পরিচয়ে বিরাজ করেন। তাঁদের আত্মপরিচয় মুহূর্তের মধ্যে বদলেও যেতে পারে। পরিচয় বদলের আগে তাঁদের মধ্যে কোনো ধরনের সতর্কতার লক্ষণও দেখা যায় না। এ ধরনের সমস্যায় যে তিনি আক্রান্ত, এটা তাকে বোঝানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এই কারণে, ডিসোসিয়েটিভ আইডেন্টিটি ডিসঅর্ডার যাদের আছে তাঁরা স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে অক্ষম। তাঁদের মানসিক হাসপাতালে পাঠাতে বাধ্য হন স্বজনেরা।
ফ্যাকটিশাস ডিসঅর্ডার বা কপট বিকার
হাঁচির সঙ্গে গায়ে কাঁপুনি দেওয়া সর্দি-জ্বর বা অন্য কোনো অসুস্থতার ইঙ্গিত। কিন্তু ফ্যাকটিশাস ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে এটা সত্য নয়। এরা অসুস্থতা নিয়ে মিথ্যা বলে, কপট আচরণ করে। আদতে এটি একটি ভয়ংকর মানসিক ব্যাধি। ফ্যাকটিশাস ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত অধিকাংশ ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেকে অসুস্থ করে তোলেন। তাঁদের মধ্যে অসুস্থ হওয়ার একটা অবসেশন দেখা যায়। ডাক্তারের শরণাপন্ন যেন হতে হয় সেই চেষ্টাই তাঁরা সব সময় করেন। কখনো কখনো তাঁরা অসুস্থতার ভান করেন। মানুষকে বিশ্বাস করানোর জন্য নানা ভাবে চেষ্টা করেন। রোগ নিয়ে বিশাল গল্প ফেঁদে বসেন, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে লক্ষণ উপসর্গ বলেন এবং হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ছুটে বেড়ান। অসুস্থতার প্রতি এই জাতীয় আবেশ (অবসেশন) প্রায়ই অতীতের কোনো আঘাত বা গুরুতর অসুস্থতা থেকে তৈরি হতে পারে।
ক্লুভার-বুসি সিনড্রোম
হাভাতের মতো একটি বইয়ের স্বাদ কল্পনা করা বা একটি গাড়ির সঙ্গে যৌন সম্পর্কের আকাঙ্ক্ষা করা- ক্লুভার-বুসি সিনড্রোমে দ্বারা আক্রান্তরা এমন অদ্ভুত আচরণই করেন। তাঁদের মধ্যে স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া, অখাদ্য বস্তু খাওয়ার ইচ্ছা এবং অটোমোবাইলের মতো নির্জীব বস্তুর প্রতি যৌন আকর্ষণ অনুভব করার মতো আচরণ দেখা যায়। ক্লুভার-বুসি সিনড্রোমে আক্রান্তরা অতি পরিচিত বস্তু বা ব্যক্তিকেও চিনতে পারেন না। এই ভয়ানক মানসিক ব্যাধি শনাক্ত করা কঠিন। মস্তিষ্কের টেমপোরাল লোবে গুরুতর আঘাতের ফল এই রোগ। এই রোগের কোনো প্রতিকার নেই। ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি হয়তো সারা জীবন এই সমস্যায় ভোগেন।
অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার
এই সমস্যাটির কথা ব্যাপকভাবে শোনা যায়। অনেকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে উপহাস করেন। খুব কম লোকই অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার (ওসিডি) বুঝতে পারেন। ওসিডি বিভিন্ন ভাবে প্রকাশ পেতে পারে। তবে আতঙ্কে জড়োসরো থাকা, উদ্বেগ এবং পুনরাবৃত্তিমূলক দুশ্চিন্তা গ্রস্ত থাকা এসব লক্ষণ দেখে ওসিডি চিহ্নিত করা যেতে পারে। বারবার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার মতো কাজের পুনরাবৃত্তি করে থাকেন এসব লোক। অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট কাজ করার অবসেশন দেখা যায় তাঁদের মধ্যে। ওসিডি আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রায়শই পুরোপুরি সচেতন থাকেন যে তাঁদের ভয় বা উদ্বেগ একেবারে অযৌক্তিক, এই উপলব্ধি তখন তাঁদের মধ্যে আরেক উদ্বেগের জন্ম দেয়। ফলে তিনি উদ্বেগের একটি চক্রে ঢুকে পড়েন।
প্যারিস সিনড্রোম
প্যারিস সিনড্রোম একটি অত্যন্ত অদ্ভুত অস্থায়ী মানসিক ব্যাধি। এ ধরনের ব্যক্তি প্যারিস শহরে গিয়ে অভিভূত হয়ে যান। মজার ব্যাপার হলো, এটা জাপানি পর্যটকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। প্রতি বছর প্যারিসে আনুমানিক ৬০ লাখ জাপানি পর্যটক যান। তাঁদের মধ্যে এক থেকে দুই ডজন জাপানি অতিমাত্রায় উদ্বেগ, কোনো কিছুতে ব্যক্তিত্ব আরোপ, অবাস্তব অনুভূতি, নিপীড়নমূলক চিন্তাভাবনা, হ্যালুসিনেশন এবং ভয়ংকর ভ্রান্তিতে ভোগেন। এগুলোই প্যারিস সিনড্রোমের বৈশিষ্ট্য। দেখা গেছে, প্যারিস সিনড্রোমে আক্রান্ত বেশির ভাগ লোকের মানসিক রোগের কোনো ইতিহাস নেই। ধারণা করা হয়, ভাষাগত সীমাবদ্ধতা, শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি এবং কল্পনার সঙ্গে প্যারিসের বাস্তবতার পার্থক্য এই মারাত্মক মানসিক সমস্যা তৈরি করে।
রিডুপ্লিকেটিভ অ্যামনেসিয়া
রিডুপ্লিকেটিভ অ্যামনেসিয়া, ক্যাপগ্রাস সিনড্রোমের মতোই। এখানে মানুষের ডুপ্লিকেট ভাবার বদলে আক্রান্ত ব্যক্তি স্থানের ডুপ্লিকেট ভাবে। অর্থাৎ কোনো স্থানে গিয়ে তার কাছে স্থানটি অন্য কোনো স্থানের অনুরূপ বলে মনে হয়। এই বিশ্বাসটি বিভিন্ন ভাবে প্রকাশ পেতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে, একটি স্থান একই সঙ্গে দুই জায়গাতে বিরাজ করছে। ধরা যাক, বান্দরবানে দেখা কোনো পাহাড়কে রাঙামাটিতে গিয়ে দেখা আরেকটি পাহাড়ের অনুরূপ মনে হচ্ছে। হোটেল কক্ষকে তার মনে হচ্ছে বাড়িতে নিজের ঘর। ‘রিডুপ্লিকেটিভ অ্যামনেসিয়া’ শব্দটি প্রথম ১৯০৩ সালে ব্যবহার করেন স্নায়ুবিদ আর্নল্ড পিক। স্মৃতিভ্রংশ (আলঝেইমার) রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে তিনি এ শব্দ ব্যবহার করেছিলেন। টিউমার, নিদ্রাহীনতা, মস্তিষ্কের আঘাত বা অন্যান্য মানসিক রোগীদের মধ্যে এই সমস্যাটি দেখা যায়।
আরও পড়ুন:

জীবনে রঙের অস্তিত্ব না থাকলে কেমন হতো? নির্জীব, একঘেয়ে কেমন যেন নিরানন্দ কিংবা নেই কোনো উৎসাহ-উদ্দীপনা। রঙিন কিছু দেখলেই আমাদের মন যেন উৎফুল্ল হয়ে ওঠে, খাবারের বেলায়ও এটি একই রকম সত্য।
২ দিন আগে
ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, সেই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন অটল থাকা অনেকের ক্ষেত্রে আরও কঠিন। সঠিক অনুপ্রেরণা না থাকলে ওজন কমানো শুরু করাই কঠিন হয়ে পড়ে। আর শুরু করলেও মাঝপথে থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল অনুসরণ করলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন সহজ হতে পারে।
৪ দিন আগে
থাইরয়েড হরমোন আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একধরনের হরমোন কিংবা প্রাণরস। এটি গলার সামনে থেকে নিঃসৃত হলেও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরে কাজ করে।
৪ দিন আগে
সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের অন্যতম ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের একেকটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘এ’, ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

জীবনে রঙের অস্তিত্ব না থাকলে কেমন হতো? নির্জীব, একঘেয়ে কেমন যেন নিরানন্দ কিংবা নেই কোনো উৎসাহ-উদ্দীপনা। রঙিন কিছু দেখলেই আমাদের মন যেন উৎফুল্ল হয়ে ওঠে, খাবারের বেলায়ও এটি একই রকম সত্য।
রঙিন খাবারে সাজানো প্লেট দেখতে আমাদের মন এমনিতেই খাবারের দিকে আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। খাবার দেখার ও ঘ্রাণ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের মস্তিষ্ক হজমের প্রস্তুতির জন্য নানা সংকেত পাঠাতে শুরু করে।
তবে দেখতে সুন্দর তা ই নয়, রঙিন খাবারের প্লেট আসলে পুষ্টির ‘পাওয়ার হাউস’ বা এক শক্তিশালী ভাণ্ডার। ফলমূল ও শাকসবজিতে রঙের অস্তিত্ব জানান দেয় এসবে আছে উদ্ভিজ্জ রঞ্জক বা পিগমেন্ট— যার সংখ্যা ২ হাজারেরও বেশি। এর মধ্যে রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েড, ক্যারোটিনয়েড ও অ্যান্থোসায়ানিন। এসব রঞ্জক ‘ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট’ নামে পরিচিত।
আমাদের শরীর নিজে থেকে এসব ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট তৈরি করতে পারে না, অথচ নানা রোগ, প্রদাহ, সংক্রমণ এমনকি কিছু ধরনের ক্যানসার থেকে সুরক্ষা দিতে এগুলোর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
খাবারের প্রতিটি রং আমাদের শরীরের জন্য কি কি উপকার নিয়ে আসে চলুন জেনে নেওয়া যাক—
১. লাল রঙের খাবার: লাইকোপিনে ভরপুর
লাল রঙের ফল ও সবজিতে থাকে লাইকোপিন নামের এক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি প্রকৃতিতে পাওয়া সবচেয়ে কার্যকর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলোর একটি।

যে কারণে লাল রঙের খাবার বেশি খাওয়া উচিত
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সুপারস্টার: শরীর থেকে ক্ষতিকর পদার্থ বা টক্সিন বের করতে সাহায্য করে, সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং কোষকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে।
চোখের সুরক্ষা: এক গবেষণায় দেখা গেছে, লাইকোপিন চোখের ম্যাকুলা অংশের ক্ষয় ধীর করতে সাহায্য করে।
ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক: প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে কাজ করে লাইকোপিন। এছাড়াও স্তন ক্যানসারের অগ্রগতিও ধীর করতে পারে।
মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য: অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে মস্তিষ্কের কোষকে সুরক্ষা দেয়।
হৃদ্স্বাস্থ্য: রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং প্রদাহ কমায়, যা হৃদ্রোগের বড় ঝুঁকির কারণ।
লাল রঙের খাবারের সেরা উৎস: টমেটো (রান্না করা বা ব্লেন্ড করা টমেটো সবচেয়ে বেশি কার্যকর), তরমুজ, লাল পেয়ারা, জাম্বুরা এবং লাল গাজর।

২. কমলা ও হলুদ রঙের খাবার: ত্বক, চোখ ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার বুস্টার
এই উজ্জ্বল রংগুলোর উৎস বিটা-ক্রিপ্টোজ্যানথিন নামের একটি গুরুত্বপূর্ণ যৌগ, যা কোষের পারস্পরিক যোগাযোগ ও রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সহায়তা করে।
উপকারিতা:
শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: বয়স দ্রুত বাড়ানো, প্রদাহ ও দীর্ঘমেয়াদি রোগের জন্য দায়ী ফ্রি র্যাডিক্যালকে নিষ্ক্রিয় করে।
প্রো-ভিটামিন এ: শরীরে সহজে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়, যা চোখের দৃষ্টি ও সুস্থ ত্বকের জন্য অপরিহার্য।
রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: ইমিউন কোষের গঠন ও কার্যকারিতা উন্নত করে। বিশেষ করে নিরামিষ খাদ্যাভ্যাসে, যেখানে ভিটামিন এ গ্রহণ তুলনামূলক কম হতে পারে, সেখানে এটি খুবই উপকারী।
সেরা উৎস: আম, পেঁপে, কমলা, কুমড়া, হলুদ ক্যাপসিকাম।

৩. সবুজ রঙের খাবার: ক্লোরোফিল ও ডিটক্সের জাদু
সবুজ খাবারের রং আসে ক্লোরোফিল থেকে। প্রকৃতিতে পাওয়া সবচেয়ে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবারের তালিকায় সবুজ শাকসবজি শীর্ষে।
কেন সবুজ খাবার জরুরি?
বিটা-ক্যারোটিন: ধমনিতে চর্বি জমা (অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস), ক্যানসার, দৃষ্টিশক্তি হ্রাস ও ডিএনএ ক্ষতি প্রতিরোধে সহায়ক।
উচ্চ আঁশ (ফাইবার) : অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, ক্ষতিকর এলডিএল কোলেস্টেরল কমায় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
ভিটামিন কে ও পটাশিয়াম: রক্ত জমাট বাঁধা ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
সালফোরাফেন ও আইসোথায়োসায়ানেটস: শরীরের ডিটক্স প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে, কোলনের স্বাস্থ্য রক্ষা করে এবং ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে ভূমিকা রাখতে পারে।
সেরা উৎস: পালং শাক, ব্রকলি, কেল, সজনে পাতা, মেথি শাক, সবুজ হার্বস, অ্যাসপ্যারাগাস, কিউই, বাঁধাকপি, অঙ্কুরিত বীজ (স্প্রাউটস) ও গ্রিন টি।
৪. নীল ও বেগুনি রঙের খাবার: অ্যান্থোসায়ানিনের শক্তি
অ্যান্থোসায়ানিন আছে এমন খাবারে এই রংগুলো থাকে। যা থেকে বুঝা যায় এ খাবারগুলো শক্তিশালী ফ্ল্যাভোনয়েড এবং প্রদাহনাশক ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণে ভরপুর।
উপকারিতা:
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: স্ট্রোক ও কিডনি রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
হৃদ্স্বাস্থ্য: কোলেস্টেরল ও প্রদাহ কমায়, ধমনিতে প্লাক জমা রোধে সহায়ক।
মস্তিষ্কের সুরক্ষা: স্মৃতিশক্তি ও বুদ্ধিবৃত্তিক কার্যকারিতা উন্নত করে, ডিএনএ ক্ষতি প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।
ক্যানসারের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা: ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি ধীর বা বন্ধ করতে সহায়তা করতে পারে।
সেরা উৎস: ব্লুবেরি, ব্ল্যাকবেরি, বেগুনি বাঁধাকপি, বেগুন, আঙুর, বরই, ডুমুর।

৫. সাদা ও বাদামি খাবার: নীরব চিকিৎসক
লাল-নীল-সবুজ এমন রঙিন খাবারের ভিড়ে কিন্তু ফ্যাকাশে বা বাদামি রঙের খাবারকে হালকাভাবে নেওয়া যাবে না। কেন না এসব খাবারে রয়েছে অ্যালিসিন, কোয়ারসেটিন, ক্যাম্পফেরল মতো যৌগ। এগুলোর প্রতিটিই স্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রাখে।
উপকারিতা:
অ্যালিসিন: এই উপাদানটি রসুনে থাকে। এটি ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাসের বিরুদ্ধে কার্যকর, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, কোলেস্টেরল ও রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
কোয়ারসেটিন: শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহনাশক, অ্যালার্জি এবং হৃদ্স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক।
ক্যাম্পফেরল: হৃদ্রোগ ও কিছু ধরনের ক্যানসার থেকে সুরক্ষা দেয়।
সেরা উৎস: রসুন, পেঁয়াজ, ফুলকপি, মাশরুম ও মুলা।
আপনার প্রতিদিনের ‘রেইনবো ডায়েট’ সাজাতে পারেন যেভাবে—
১. আপনার প্লেটের অর্ধেক পূর্ণ করুন সবজি দিয়ে।
২. প্রতিদিন দুটি ফল খান।
৩. সর্বোচ্চ তাজা ও পুষ্টির জন্য মৌসুমি এবং স্থানীয় ফল ও সবজি বেছে নিন।
৪. প্রতিদিন একটি নতুন রঙের খাবার যোগ করুন।
৫. খাবার পরিকল্পনার সময় ক্যালরির পরিবর্তে রঙের দিকে মন দিন।
বিজ্ঞান বারবার প্রমাণ করেছে, যখন ফাইটোনিউট্রিয়েন্টের কথা আসে, তখন সাপ্লিমেন্ট বা কৃত্রিম ওষুধের চেয়ে প্রাকৃতিক খাবার অনেক বেশি কার্যকর। প্রাকৃতিক খাবারে বিদ্যমান ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের যে সম্মিলিত শক্তি থাকে, কোনো ওষুধ বা পিল তা দিয়ে পূরণ হয় না। তাই প্রতিদিনের পুষ্টির লক্ষ্য নির্ধারণে রঙকেই বেছে নিন।

জীবনে রঙের অস্তিত্ব না থাকলে কেমন হতো? নির্জীব, একঘেয়ে কেমন যেন নিরানন্দ কিংবা নেই কোনো উৎসাহ-উদ্দীপনা। রঙিন কিছু দেখলেই আমাদের মন যেন উৎফুল্ল হয়ে ওঠে, খাবারের বেলায়ও এটি একই রকম সত্য।
রঙিন খাবারে সাজানো প্লেট দেখতে আমাদের মন এমনিতেই খাবারের দিকে আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। খাবার দেখার ও ঘ্রাণ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের মস্তিষ্ক হজমের প্রস্তুতির জন্য নানা সংকেত পাঠাতে শুরু করে।
তবে দেখতে সুন্দর তা ই নয়, রঙিন খাবারের প্লেট আসলে পুষ্টির ‘পাওয়ার হাউস’ বা এক শক্তিশালী ভাণ্ডার। ফলমূল ও শাকসবজিতে রঙের অস্তিত্ব জানান দেয় এসবে আছে উদ্ভিজ্জ রঞ্জক বা পিগমেন্ট— যার সংখ্যা ২ হাজারেরও বেশি। এর মধ্যে রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েড, ক্যারোটিনয়েড ও অ্যান্থোসায়ানিন। এসব রঞ্জক ‘ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট’ নামে পরিচিত।
আমাদের শরীর নিজে থেকে এসব ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট তৈরি করতে পারে না, অথচ নানা রোগ, প্রদাহ, সংক্রমণ এমনকি কিছু ধরনের ক্যানসার থেকে সুরক্ষা দিতে এগুলোর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
খাবারের প্রতিটি রং আমাদের শরীরের জন্য কি কি উপকার নিয়ে আসে চলুন জেনে নেওয়া যাক—
১. লাল রঙের খাবার: লাইকোপিনে ভরপুর
লাল রঙের ফল ও সবজিতে থাকে লাইকোপিন নামের এক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি প্রকৃতিতে পাওয়া সবচেয়ে কার্যকর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলোর একটি।

যে কারণে লাল রঙের খাবার বেশি খাওয়া উচিত
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সুপারস্টার: শরীর থেকে ক্ষতিকর পদার্থ বা টক্সিন বের করতে সাহায্য করে, সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং কোষকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে।
চোখের সুরক্ষা: এক গবেষণায় দেখা গেছে, লাইকোপিন চোখের ম্যাকুলা অংশের ক্ষয় ধীর করতে সাহায্য করে।
ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক: প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে কাজ করে লাইকোপিন। এছাড়াও স্তন ক্যানসারের অগ্রগতিও ধীর করতে পারে।
মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য: অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে মস্তিষ্কের কোষকে সুরক্ষা দেয়।
হৃদ্স্বাস্থ্য: রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং প্রদাহ কমায়, যা হৃদ্রোগের বড় ঝুঁকির কারণ।
লাল রঙের খাবারের সেরা উৎস: টমেটো (রান্না করা বা ব্লেন্ড করা টমেটো সবচেয়ে বেশি কার্যকর), তরমুজ, লাল পেয়ারা, জাম্বুরা এবং লাল গাজর।

২. কমলা ও হলুদ রঙের খাবার: ত্বক, চোখ ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার বুস্টার
এই উজ্জ্বল রংগুলোর উৎস বিটা-ক্রিপ্টোজ্যানথিন নামের একটি গুরুত্বপূর্ণ যৌগ, যা কোষের পারস্পরিক যোগাযোগ ও রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সহায়তা করে।
উপকারিতা:
শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: বয়স দ্রুত বাড়ানো, প্রদাহ ও দীর্ঘমেয়াদি রোগের জন্য দায়ী ফ্রি র্যাডিক্যালকে নিষ্ক্রিয় করে।
প্রো-ভিটামিন এ: শরীরে সহজে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়, যা চোখের দৃষ্টি ও সুস্থ ত্বকের জন্য অপরিহার্য।
রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: ইমিউন কোষের গঠন ও কার্যকারিতা উন্নত করে। বিশেষ করে নিরামিষ খাদ্যাভ্যাসে, যেখানে ভিটামিন এ গ্রহণ তুলনামূলক কম হতে পারে, সেখানে এটি খুবই উপকারী।
সেরা উৎস: আম, পেঁপে, কমলা, কুমড়া, হলুদ ক্যাপসিকাম।

৩. সবুজ রঙের খাবার: ক্লোরোফিল ও ডিটক্সের জাদু
সবুজ খাবারের রং আসে ক্লোরোফিল থেকে। প্রকৃতিতে পাওয়া সবচেয়ে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবারের তালিকায় সবুজ শাকসবজি শীর্ষে।
কেন সবুজ খাবার জরুরি?
বিটা-ক্যারোটিন: ধমনিতে চর্বি জমা (অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস), ক্যানসার, দৃষ্টিশক্তি হ্রাস ও ডিএনএ ক্ষতি প্রতিরোধে সহায়ক।
উচ্চ আঁশ (ফাইবার) : অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, ক্ষতিকর এলডিএল কোলেস্টেরল কমায় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
ভিটামিন কে ও পটাশিয়াম: রক্ত জমাট বাঁধা ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
সালফোরাফেন ও আইসোথায়োসায়ানেটস: শরীরের ডিটক্স প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে, কোলনের স্বাস্থ্য রক্ষা করে এবং ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে ভূমিকা রাখতে পারে।
সেরা উৎস: পালং শাক, ব্রকলি, কেল, সজনে পাতা, মেথি শাক, সবুজ হার্বস, অ্যাসপ্যারাগাস, কিউই, বাঁধাকপি, অঙ্কুরিত বীজ (স্প্রাউটস) ও গ্রিন টি।
৪. নীল ও বেগুনি রঙের খাবার: অ্যান্থোসায়ানিনের শক্তি
অ্যান্থোসায়ানিন আছে এমন খাবারে এই রংগুলো থাকে। যা থেকে বুঝা যায় এ খাবারগুলো শক্তিশালী ফ্ল্যাভোনয়েড এবং প্রদাহনাশক ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণে ভরপুর।
উপকারিতা:
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: স্ট্রোক ও কিডনি রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
হৃদ্স্বাস্থ্য: কোলেস্টেরল ও প্রদাহ কমায়, ধমনিতে প্লাক জমা রোধে সহায়ক।
মস্তিষ্কের সুরক্ষা: স্মৃতিশক্তি ও বুদ্ধিবৃত্তিক কার্যকারিতা উন্নত করে, ডিএনএ ক্ষতি প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।
ক্যানসারের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা: ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি ধীর বা বন্ধ করতে সহায়তা করতে পারে।
সেরা উৎস: ব্লুবেরি, ব্ল্যাকবেরি, বেগুনি বাঁধাকপি, বেগুন, আঙুর, বরই, ডুমুর।

৫. সাদা ও বাদামি খাবার: নীরব চিকিৎসক
লাল-নীল-সবুজ এমন রঙিন খাবারের ভিড়ে কিন্তু ফ্যাকাশে বা বাদামি রঙের খাবারকে হালকাভাবে নেওয়া যাবে না। কেন না এসব খাবারে রয়েছে অ্যালিসিন, কোয়ারসেটিন, ক্যাম্পফেরল মতো যৌগ। এগুলোর প্রতিটিই স্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রাখে।
উপকারিতা:
অ্যালিসিন: এই উপাদানটি রসুনে থাকে। এটি ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাসের বিরুদ্ধে কার্যকর, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, কোলেস্টেরল ও রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
কোয়ারসেটিন: শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহনাশক, অ্যালার্জি এবং হৃদ্স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক।
ক্যাম্পফেরল: হৃদ্রোগ ও কিছু ধরনের ক্যানসার থেকে সুরক্ষা দেয়।
সেরা উৎস: রসুন, পেঁয়াজ, ফুলকপি, মাশরুম ও মুলা।
আপনার প্রতিদিনের ‘রেইনবো ডায়েট’ সাজাতে পারেন যেভাবে—
১. আপনার প্লেটের অর্ধেক পূর্ণ করুন সবজি দিয়ে।
২. প্রতিদিন দুটি ফল খান।
৩. সর্বোচ্চ তাজা ও পুষ্টির জন্য মৌসুমি এবং স্থানীয় ফল ও সবজি বেছে নিন।
৪. প্রতিদিন একটি নতুন রঙের খাবার যোগ করুন।
৫. খাবার পরিকল্পনার সময় ক্যালরির পরিবর্তে রঙের দিকে মন দিন।
বিজ্ঞান বারবার প্রমাণ করেছে, যখন ফাইটোনিউট্রিয়েন্টের কথা আসে, তখন সাপ্লিমেন্ট বা কৃত্রিম ওষুধের চেয়ে প্রাকৃতিক খাবার অনেক বেশি কার্যকর। প্রাকৃতিক খাবারে বিদ্যমান ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের যে সম্মিলিত শক্তি থাকে, কোনো ওষুধ বা পিল তা দিয়ে পূরণ হয় না। তাই প্রতিদিনের পুষ্টির লক্ষ্য নির্ধারণে রঙকেই বেছে নিন।

সব দেশের মানুষের মধ্যেই মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে। লাখ লাখ মানুষ নানা ধরনের মানসিক সমস্যায় ভোগেন। কিন্তু অনেক মানুষই নিজের রোগ সম্পর্কে সচেতন থাকেন না। ফলে তাঁরা চিকিৎসকের কাছেও যান না। আবার বাংলাদেশের মতো কিছু দেশে সাধারণ মানুষের অসচেতনতার পাশাপাশি স্বাস্থ্য অবকাঠামোও অত্যন্ত অপ্রতুল।
১০ অক্টোবর ২০২১
ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, সেই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন অটল থাকা অনেকের ক্ষেত্রে আরও কঠিন। সঠিক অনুপ্রেরণা না থাকলে ওজন কমানো শুরু করাই কঠিন হয়ে পড়ে। আর শুরু করলেও মাঝপথে থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল অনুসরণ করলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন সহজ হতে পারে।
৪ দিন আগে
থাইরয়েড হরমোন আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একধরনের হরমোন কিংবা প্রাণরস। এটি গলার সামনে থেকে নিঃসৃত হলেও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরে কাজ করে।
৪ দিন আগে
সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের অন্যতম ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের একেকটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘এ’, ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়।
৪ দিন আগেফিচার ডেস্ক

ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, সেই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন অটল থাকা অনেকের ক্ষেত্রে আরও কঠিন। সঠিক অনুপ্রেরণা না থাকলে ওজন কমানো শুরু করাই কঠিন হয়ে পড়ে। আর শুরু করলেও মাঝপথে থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল অনুসরণ করলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন সহজ হতে পারে।
নিজেকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি না ভাঙা
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া বেশ ভূমিকা রাখতে পারে। কেউ কেউ লিখিত পরিকল্পনা বা অ্যাপের মাধ্যমে প্রতিদিনের লক্ষ্য ঠিক করেন। আবার কেউ জিমের সদস্যপদ বা ব্যায়াম ক্লাসে ভর্তি হয়ে নিজেকে দায়বদ্ধ করে তোলেন। এতে মাঝপথে হাল ছেড়ে দেওয়ার প্রবণতা কমে।
জীবনযাপনের সঙ্গে মানানসই পরিকল্পনা বেছে নেওয়া
যে ডায়েট বা ব্যায়াম পরিকল্পনা দীর্ঘদিন মেনে চলা সম্ভব নয়, তা এড়িয়ে চলা ভালো। অতিরিক্ত কঠোর নিয়ম অথবা সবকিছু একেবারে বাদ দেওয়ার মানসিকতা অনেক সময় উল্টো ফল বয়ে আনে। বরং ক্যালরি নিয়ন্ত্রণ, খাবারের পরিমাণ কমানো, অতি প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খাওয়া এবং বেশি করে ফল ও সবজি অন্তর্ভুক্ত করার মতো অভ্যাসগুলো দীর্ঘ মেয়াদে উপকারী।
পছন্দের ব্যায়াম খোঁজা
ওজন কমাতে শারীরিক কার্যকলাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে যে ব্যায়াম আপনার ভালো লাগে না, তা বেশি দিন চালিয়ে যাওয়া কঠিন। হাঁটা, সাঁতার, নাচ, সাইক্লিং কিংবা জিম—যে ধরনের ব্যায়াম উপভোগ করেন, সেটিই বেছে নেওয়া ভালো।
যে বিষয়গুলো অনুপ্রেরণা জোগায়
ওজন কমানোর পুরো যাত্রায় শুধু শেষ লক্ষ্যের দিকে তাকিয়ে থাকলে হতাশা আসতে পারে। তাই ছোট ছোট প্রক্রিয়াগত লক্ষ্য ঠিক করা জরুরি। যেমন সপ্তাহে নির্দিষ্ট কয়েক দিন ব্যায়াম করা বা প্রতিটি খাবারে সবজি রাখা। এসব লক্ষ্য পূরণ হলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। নিজের অগ্রগতি লিখে রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। খাবার ও দৈনন্দিন অভ্যাসের হিসাব রাখলে কোথায় ভুল হচ্ছে কিংবা কোন অভ্যাস ওজন বাড়াচ্ছে, তা সহজে ধরা পড়ে।
সামাজিক সহায়তা এবং ইতিবাচক মনোভাব
পরিবার ও বন্ধুদের নিজের লক্ষ্য জানালে তারা মানসিক সমর্থন দিতে পারে। কেউ কেউ ওজন কমানোর সঙ্গী পেলে আরও অনুপ্রাণিত বোধ করে। পাশাপাশি নিজের সঙ্গে ইতিবাচকভাবে কথা বলা এবং পরিবর্তনের প্রতি দৃঢ় মনোভাব রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
বাধা এলে যা করতে হবে
জীবনে নানা ধরনের চাপ এবং সামাজিক অনুষ্ঠানের কারণে পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতির জন্য আগেই মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকলে আবার সঠিক পথে ফেরা সহজ হয়। নিখুঁত হওয়ার চেষ্টা না করে নিজের ভুল মেনে নেওয়া এবং নিজেকে ক্ষমা করাও অনুপ্রেরণা ধরে রাখতে সহায়ক।
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণাই সবচেয়ে বড় শক্তি। সবার অনুপ্রেরণার উৎস এক নয়। তাই নিজের জন্য কার্যকর পদ্ধতি খুঁজে নেওয়াই হলো মূল চাবিকাঠি।
তবে ধৈর্য ধরুন, ছোট ছোট সাফল্য উদ্যাপন করুন
এবং প্রয়োজনে সাহায্য চাইতে সংকোচ করবেন না। সঠিক পরিকল্পনা ও সমর্থন থাকলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব।
সূত্র: হেলথ লাইন

ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, সেই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন অটল থাকা অনেকের ক্ষেত্রে আরও কঠিন। সঠিক অনুপ্রেরণা না থাকলে ওজন কমানো শুরু করাই কঠিন হয়ে পড়ে। আর শুরু করলেও মাঝপথে থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল অনুসরণ করলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন সহজ হতে পারে।
নিজেকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি না ভাঙা
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া বেশ ভূমিকা রাখতে পারে। কেউ কেউ লিখিত পরিকল্পনা বা অ্যাপের মাধ্যমে প্রতিদিনের লক্ষ্য ঠিক করেন। আবার কেউ জিমের সদস্যপদ বা ব্যায়াম ক্লাসে ভর্তি হয়ে নিজেকে দায়বদ্ধ করে তোলেন। এতে মাঝপথে হাল ছেড়ে দেওয়ার প্রবণতা কমে।
জীবনযাপনের সঙ্গে মানানসই পরিকল্পনা বেছে নেওয়া
যে ডায়েট বা ব্যায়াম পরিকল্পনা দীর্ঘদিন মেনে চলা সম্ভব নয়, তা এড়িয়ে চলা ভালো। অতিরিক্ত কঠোর নিয়ম অথবা সবকিছু একেবারে বাদ দেওয়ার মানসিকতা অনেক সময় উল্টো ফল বয়ে আনে। বরং ক্যালরি নিয়ন্ত্রণ, খাবারের পরিমাণ কমানো, অতি প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খাওয়া এবং বেশি করে ফল ও সবজি অন্তর্ভুক্ত করার মতো অভ্যাসগুলো দীর্ঘ মেয়াদে উপকারী।
পছন্দের ব্যায়াম খোঁজা
ওজন কমাতে শারীরিক কার্যকলাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে যে ব্যায়াম আপনার ভালো লাগে না, তা বেশি দিন চালিয়ে যাওয়া কঠিন। হাঁটা, সাঁতার, নাচ, সাইক্লিং কিংবা জিম—যে ধরনের ব্যায়াম উপভোগ করেন, সেটিই বেছে নেওয়া ভালো।
যে বিষয়গুলো অনুপ্রেরণা জোগায়
ওজন কমানোর পুরো যাত্রায় শুধু শেষ লক্ষ্যের দিকে তাকিয়ে থাকলে হতাশা আসতে পারে। তাই ছোট ছোট প্রক্রিয়াগত লক্ষ্য ঠিক করা জরুরি। যেমন সপ্তাহে নির্দিষ্ট কয়েক দিন ব্যায়াম করা বা প্রতিটি খাবারে সবজি রাখা। এসব লক্ষ্য পূরণ হলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। নিজের অগ্রগতি লিখে রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। খাবার ও দৈনন্দিন অভ্যাসের হিসাব রাখলে কোথায় ভুল হচ্ছে কিংবা কোন অভ্যাস ওজন বাড়াচ্ছে, তা সহজে ধরা পড়ে।
সামাজিক সহায়তা এবং ইতিবাচক মনোভাব
পরিবার ও বন্ধুদের নিজের লক্ষ্য জানালে তারা মানসিক সমর্থন দিতে পারে। কেউ কেউ ওজন কমানোর সঙ্গী পেলে আরও অনুপ্রাণিত বোধ করে। পাশাপাশি নিজের সঙ্গে ইতিবাচকভাবে কথা বলা এবং পরিবর্তনের প্রতি দৃঢ় মনোভাব রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
বাধা এলে যা করতে হবে
জীবনে নানা ধরনের চাপ এবং সামাজিক অনুষ্ঠানের কারণে পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতির জন্য আগেই মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকলে আবার সঠিক পথে ফেরা সহজ হয়। নিখুঁত হওয়ার চেষ্টা না করে নিজের ভুল মেনে নেওয়া এবং নিজেকে ক্ষমা করাও অনুপ্রেরণা ধরে রাখতে সহায়ক।
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণাই সবচেয়ে বড় শক্তি। সবার অনুপ্রেরণার উৎস এক নয়। তাই নিজের জন্য কার্যকর পদ্ধতি খুঁজে নেওয়াই হলো মূল চাবিকাঠি।
তবে ধৈর্য ধরুন, ছোট ছোট সাফল্য উদ্যাপন করুন
এবং প্রয়োজনে সাহায্য চাইতে সংকোচ করবেন না। সঠিক পরিকল্পনা ও সমর্থন থাকলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব।
সূত্র: হেলথ লাইন

সব দেশের মানুষের মধ্যেই মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে। লাখ লাখ মানুষ নানা ধরনের মানসিক সমস্যায় ভোগেন। কিন্তু অনেক মানুষই নিজের রোগ সম্পর্কে সচেতন থাকেন না। ফলে তাঁরা চিকিৎসকের কাছেও যান না। আবার বাংলাদেশের মতো কিছু দেশে সাধারণ মানুষের অসচেতনতার পাশাপাশি স্বাস্থ্য অবকাঠামোও অত্যন্ত অপ্রতুল।
১০ অক্টোবর ২০২১
জীবনে রঙের অস্তিত্ব না থাকলে কেমন হতো? নির্জীব, একঘেয়ে কেমন যেন নিরানন্দ কিংবা নেই কোনো উৎসাহ-উদ্দীপনা। রঙিন কিছু দেখলেই আমাদের মন যেন উৎফুল্ল হয়ে ওঠে, খাবারের বেলায়ও এটি একই রকম সত্য।
২ দিন আগে
থাইরয়েড হরমোন আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একধরনের হরমোন কিংবা প্রাণরস। এটি গলার সামনে থেকে নিঃসৃত হলেও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরে কাজ করে।
৪ দিন আগে
সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের অন্যতম ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের একেকটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘এ’, ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়।
৪ দিন আগেডা. মো. মাজহারুল হক তানিম

থাইরয়েড হরমোন আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একধরনের হরমোন কিংবা প্রাণরস। এটি গলার সামনে থেকে নিঃসৃত হলেও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরে কাজ করে।
হাইপোথাইরয়েডিজমের লক্ষণ
শীতকালীন সবজি খাওয়ায় সতর্কতা
কাবেজ জাতীয় সবজি; যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, লেটুসপাতায় থাকে গয়ট্রোজেন নামে একধরনের উপাদান। এটি থাইরয়েড হরমোন তৈরিতে বাধা দিয়ে থাকে। তাই যাঁদের হাইপোথাইরয়েড আছে, তাঁদের এসব সবজি কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যাবে না। কিন্তু রান্না করে অল্প খাওয়া যাবে।
শীতকালে থাইরয়েড রোগীদের হরমোনের চাহিদা বেড়ে যায়। তাই অতিরিক্ত দুর্বল লাগে, ঠান্ডা ভাব এবং কাজের গতি ধীর হতে পারে।
শীতকালে থাইরয়েড রোগীদের করণীয়
গরম থাকার চেষ্টা করুন: জ্যাকেট কিংবা কম্বল ইত্যাদির মতো গরম কাপড় ব্যবহার করতে হবে। গরম খাবার বেশি খেতে হবে; যেমন স্যুপ কিংবা চা।
ভিটামিন ‘ডি’ বাড়ান: সকাল ৯ থেকে ১০টার দিকে রোদে থাকার চেষ্টা করুন। ভিটামিন ‘ডি’ লেভেল বেশি কম থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে ভিটামিন ‘ডি’ সাপ্লিমেন্ট নিতে পারেন।
খাদ্যাভ্যাস: পর্যাপ্ত পানি পান করুন। ভিটামিন ‘সি ও বি’ সমৃদ্ধ এবং প্রোটিনযুক্ত খাবার বেশি খেতে হবে। প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খান।
মন নিয়ন্ত্রণ করুন: মুড সুইং খুবই সাধারণ বিষয় থাইরয়েড রোগীদের জন্য। তাই নিজের মন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ ছাড়া প্রফুল্ল থাকার চেষ্টা করুন, কর্মঠ থাকুন, দুশ্চিন্তা ঝেড়ে ফেলুন। প্রয়োজনে লাইট থেরাপি নিতে পারেন।
শীতে থাইরয়েড রোগীদের ত্বকের যত্ন
থাইরয়েড রোগীদের ত্বক স্বভাবতই শুষ্ক থাকে। শীতকালে তা আরও শুষ্ক হয়ে ওঠে। তাই শীতকালে গোসলের পর ময়শ্চারাইজার, লোশন কিংবা ক্রিম নিয়মিত ব্যবহার করুন। ত্বকে চুলকানি অথবা র্যাশ থাকলে চর্ম ও যৌন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেবেন।
নিয়মিত ফলোআপ
৩ থেকে ৬ মাস পরপর আপনার হরমোন ও থাইরয়েড, বিশেষত এন্ডোক্রাইনোলজিস্টের পরামর্শ নিন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধের মাত্রা কম কিংবা বেশি করা যাবে না।
এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতাল, কাকরাইল, ঢাকা

থাইরয়েড হরমোন আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একধরনের হরমোন কিংবা প্রাণরস। এটি গলার সামনে থেকে নিঃসৃত হলেও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরে কাজ করে।
হাইপোথাইরয়েডিজমের লক্ষণ
শীতকালীন সবজি খাওয়ায় সতর্কতা
কাবেজ জাতীয় সবজি; যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, লেটুসপাতায় থাকে গয়ট্রোজেন নামে একধরনের উপাদান। এটি থাইরয়েড হরমোন তৈরিতে বাধা দিয়ে থাকে। তাই যাঁদের হাইপোথাইরয়েড আছে, তাঁদের এসব সবজি কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যাবে না। কিন্তু রান্না করে অল্প খাওয়া যাবে।
শীতকালে থাইরয়েড রোগীদের হরমোনের চাহিদা বেড়ে যায়। তাই অতিরিক্ত দুর্বল লাগে, ঠান্ডা ভাব এবং কাজের গতি ধীর হতে পারে।
শীতকালে থাইরয়েড রোগীদের করণীয়
গরম থাকার চেষ্টা করুন: জ্যাকেট কিংবা কম্বল ইত্যাদির মতো গরম কাপড় ব্যবহার করতে হবে। গরম খাবার বেশি খেতে হবে; যেমন স্যুপ কিংবা চা।
ভিটামিন ‘ডি’ বাড়ান: সকাল ৯ থেকে ১০টার দিকে রোদে থাকার চেষ্টা করুন। ভিটামিন ‘ডি’ লেভেল বেশি কম থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে ভিটামিন ‘ডি’ সাপ্লিমেন্ট নিতে পারেন।
খাদ্যাভ্যাস: পর্যাপ্ত পানি পান করুন। ভিটামিন ‘সি ও বি’ সমৃদ্ধ এবং প্রোটিনযুক্ত খাবার বেশি খেতে হবে। প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খান।
মন নিয়ন্ত্রণ করুন: মুড সুইং খুবই সাধারণ বিষয় থাইরয়েড রোগীদের জন্য। তাই নিজের মন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ ছাড়া প্রফুল্ল থাকার চেষ্টা করুন, কর্মঠ থাকুন, দুশ্চিন্তা ঝেড়ে ফেলুন। প্রয়োজনে লাইট থেরাপি নিতে পারেন।
শীতে থাইরয়েড রোগীদের ত্বকের যত্ন
থাইরয়েড রোগীদের ত্বক স্বভাবতই শুষ্ক থাকে। শীতকালে তা আরও শুষ্ক হয়ে ওঠে। তাই শীতকালে গোসলের পর ময়শ্চারাইজার, লোশন কিংবা ক্রিম নিয়মিত ব্যবহার করুন। ত্বকে চুলকানি অথবা র্যাশ থাকলে চর্ম ও যৌন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেবেন।
নিয়মিত ফলোআপ
৩ থেকে ৬ মাস পরপর আপনার হরমোন ও থাইরয়েড, বিশেষত এন্ডোক্রাইনোলজিস্টের পরামর্শ নিন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধের মাত্রা কম কিংবা বেশি করা যাবে না।
এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতাল, কাকরাইল, ঢাকা

সব দেশের মানুষের মধ্যেই মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে। লাখ লাখ মানুষ নানা ধরনের মানসিক সমস্যায় ভোগেন। কিন্তু অনেক মানুষই নিজের রোগ সম্পর্কে সচেতন থাকেন না। ফলে তাঁরা চিকিৎসকের কাছেও যান না। আবার বাংলাদেশের মতো কিছু দেশে সাধারণ মানুষের অসচেতনতার পাশাপাশি স্বাস্থ্য অবকাঠামোও অত্যন্ত অপ্রতুল।
১০ অক্টোবর ২০২১
জীবনে রঙের অস্তিত্ব না থাকলে কেমন হতো? নির্জীব, একঘেয়ে কেমন যেন নিরানন্দ কিংবা নেই কোনো উৎসাহ-উদ্দীপনা। রঙিন কিছু দেখলেই আমাদের মন যেন উৎফুল্ল হয়ে ওঠে, খাবারের বেলায়ও এটি একই রকম সত্য।
২ দিন আগে
ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, সেই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন অটল থাকা অনেকের ক্ষেত্রে আরও কঠিন। সঠিক অনুপ্রেরণা না থাকলে ওজন কমানো শুরু করাই কঠিন হয়ে পড়ে। আর শুরু করলেও মাঝপথে থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল অনুসরণ করলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন সহজ হতে পারে।
৪ দিন আগে
সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের অন্যতম ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের একেকটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘এ’, ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়।
৪ দিন আগেমো. ইকবাল হোসেন

সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের অন্যতম ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের একেকটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘এ’, ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়। আবার ত্বক, চুল ও প্রজননতন্ত্রের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ই’-এর ভূমিকা অনেক বেশি। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন রকমের পেশি এবং স্নায়ুতন্ত্রের সুরক্ষায় খনিজ লবণের ভূমিকা অনেক বেশি।
এই ভিটামিন ও খনিজ লবণগুলো আমরা প্রধানত শাকসবজি ও ফলমূল থেকে পেয়ে থাকি। কিন্তু কিছু অসাবধানতার ফলে শাকসবজি ও ফলমূলের পুষ্টির একটা বড় অংশ হারিয়ে যায়।
আমরা ঐতিহ্যগতভাবে শাকসবজি কাটার পর পানি দিয়ে কয়েকবার ধুয়ে থাকি। এতে পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন ‘বি ও সি’ পানির সঙ্গে মিশে শাকসবজির বাইরে চলে যায়। ফলে আমরা ওই শাকসবজি থেকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ লবণ পাই না। তাই সেগুলো কাটা বা খোসা ছাড়ানোর আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। এতে ময়লা পরিষ্কারের পাশাপাশি সব পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ন থাকবে। শাকসবজি কাটার আগে বঁটি, ছুরি বা গ্রেটারও খুব ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
শাকসবজি রান্নার নামে দীর্ঘ সময় আগুনের তাপে রাখা যাবে না। অল্প তাপেই শাকসবজিতে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু মারা যায়। এগুলো যত কম সময় সেদ্ধ করা হবে, তত বেশি পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ণ থাকবে। যেমন দীর্ঘ সময় ধরে রান্না করলে শাকসবজির প্রায় ৫০ শতাংশ পটাশিয়াম নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু এটি শরীরের জন্য অতিপ্রয়োজনীয় খনিজ। ফলে অল্প আঁচে ভাপানো শাকসবজি খাওয়া ভালো।
প্রতিটি শাকসবজির নিজস্ব রং বজায় রেখে রান্না করলে তার পুষ্টিগুণ বেশি বজায় থাকবে। যেমন গাজর রান্নার পর লাল রং, শিম রান্নার পর সবুজ রং কিংবা ফুলকপির সাদা রং বজায় থাকতে হবে। রান্না করতে গিয়ে শাকসবজির রং যত নষ্ট হবে, তার পুষ্টিগুণ তত বেশি নষ্ট হবে।
অনেক সময় রাতে শাকসবজি কেটে রেখে দেওয়া হয় সকালে রান্না করার জন্য। অথবা সকালে কেটে রাখি দুপুরে রান্না করার জন্য। এভাবে দীর্ঘ সময় কেটে রেখে দিলে শাকসবজির কাটা অংশ বাতাসের সংস্পর্শে এসে জারণ-বিজারণ বিক্রিয়ার মাধ্যমে পুষ্টিগুণ নষ্ট করে। এভাবে কেটে রাখা শাকসবজিতে বিষক্রিয়াও হতে পারে। তাই এর সঠিক পুষ্টিগুণ বজায় রাখতে রাতে কেটে না রেখে রান্নার আগে কেটে দ্রুত রান্না করুন।
শাকসবজি কাটার কাজে ধারালো বঁটি অথবা ছুরি ব্যবহার করতে হবে। ভোঁতা বঁটি বা ছুরি দিয়ে এগুলো কাটার পর অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান নষ্ট হতে পারে। এ ছাড়া ভোঁতা বঁটি বা ছুরি দিয়ে কেটে রাখা শাকসবজিতে দ্রুত ব্যাকটেরিয়া কিংবা ছত্রাকের আক্রমণ হতে পারে।
সবজি ছোট টুকরা করে না কেটে যথাসম্ভব বড় টুকরা করে কাটবেন। ছোট টুকরা করে কাটলে তাপে বেশি পরিমাণে পুষ্টিগুণ নষ্ট হতে পারে। কিন্তু টুকরা বড় রাখলে বেশি তাপে রান্নায়ও ভেতরের পুষ্টিগুণ সহজে নষ্ট হয় না।
গাজর, পটোল, লাউ, শসা, মিষ্টিকুমড়ার মতো সবজিগুলো খোসাসহ রান্না করতে হবে। এসব সবজির খোসায়ও অনেক ভিটামিন ও মিনারেল থাকে।
শাকসবজি ভাজা ভাজা না করে রান্না করে খেলে বেশি পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়। প্রথমত ভাজা করতে হলে খুব ছোট টুকরা করে কাটতে হয়। দ্বিতীয়ত ভাজি করতে হলে দীর্ঘ সময় তাপে রাখতে হয়। এই দুটি বিষয় শাকসবজির পুষ্টিগুণ অনেক কমিয়ে দেয়। তাই এগুলো ঝোল করে রান্না করে খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের অন্যতম ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের একেকটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘এ’, ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়। আবার ত্বক, চুল ও প্রজননতন্ত্রের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ই’-এর ভূমিকা অনেক বেশি। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন রকমের পেশি এবং স্নায়ুতন্ত্রের সুরক্ষায় খনিজ লবণের ভূমিকা অনেক বেশি।
এই ভিটামিন ও খনিজ লবণগুলো আমরা প্রধানত শাকসবজি ও ফলমূল থেকে পেয়ে থাকি। কিন্তু কিছু অসাবধানতার ফলে শাকসবজি ও ফলমূলের পুষ্টির একটা বড় অংশ হারিয়ে যায়।
আমরা ঐতিহ্যগতভাবে শাকসবজি কাটার পর পানি দিয়ে কয়েকবার ধুয়ে থাকি। এতে পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন ‘বি ও সি’ পানির সঙ্গে মিশে শাকসবজির বাইরে চলে যায়। ফলে আমরা ওই শাকসবজি থেকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ লবণ পাই না। তাই সেগুলো কাটা বা খোসা ছাড়ানোর আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। এতে ময়লা পরিষ্কারের পাশাপাশি সব পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ন থাকবে। শাকসবজি কাটার আগে বঁটি, ছুরি বা গ্রেটারও খুব ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
শাকসবজি রান্নার নামে দীর্ঘ সময় আগুনের তাপে রাখা যাবে না। অল্প তাপেই শাকসবজিতে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু মারা যায়। এগুলো যত কম সময় সেদ্ধ করা হবে, তত বেশি পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ণ থাকবে। যেমন দীর্ঘ সময় ধরে রান্না করলে শাকসবজির প্রায় ৫০ শতাংশ পটাশিয়াম নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু এটি শরীরের জন্য অতিপ্রয়োজনীয় খনিজ। ফলে অল্প আঁচে ভাপানো শাকসবজি খাওয়া ভালো।
প্রতিটি শাকসবজির নিজস্ব রং বজায় রেখে রান্না করলে তার পুষ্টিগুণ বেশি বজায় থাকবে। যেমন গাজর রান্নার পর লাল রং, শিম রান্নার পর সবুজ রং কিংবা ফুলকপির সাদা রং বজায় থাকতে হবে। রান্না করতে গিয়ে শাকসবজির রং যত নষ্ট হবে, তার পুষ্টিগুণ তত বেশি নষ্ট হবে।
অনেক সময় রাতে শাকসবজি কেটে রেখে দেওয়া হয় সকালে রান্না করার জন্য। অথবা সকালে কেটে রাখি দুপুরে রান্না করার জন্য। এভাবে দীর্ঘ সময় কেটে রেখে দিলে শাকসবজির কাটা অংশ বাতাসের সংস্পর্শে এসে জারণ-বিজারণ বিক্রিয়ার মাধ্যমে পুষ্টিগুণ নষ্ট করে। এভাবে কেটে রাখা শাকসবজিতে বিষক্রিয়াও হতে পারে। তাই এর সঠিক পুষ্টিগুণ বজায় রাখতে রাতে কেটে না রেখে রান্নার আগে কেটে দ্রুত রান্না করুন।
শাকসবজি কাটার কাজে ধারালো বঁটি অথবা ছুরি ব্যবহার করতে হবে। ভোঁতা বঁটি বা ছুরি দিয়ে এগুলো কাটার পর অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান নষ্ট হতে পারে। এ ছাড়া ভোঁতা বঁটি বা ছুরি দিয়ে কেটে রাখা শাকসবজিতে দ্রুত ব্যাকটেরিয়া কিংবা ছত্রাকের আক্রমণ হতে পারে।
সবজি ছোট টুকরা করে না কেটে যথাসম্ভব বড় টুকরা করে কাটবেন। ছোট টুকরা করে কাটলে তাপে বেশি পরিমাণে পুষ্টিগুণ নষ্ট হতে পারে। কিন্তু টুকরা বড় রাখলে বেশি তাপে রান্নায়ও ভেতরের পুষ্টিগুণ সহজে নষ্ট হয় না।
গাজর, পটোল, লাউ, শসা, মিষ্টিকুমড়ার মতো সবজিগুলো খোসাসহ রান্না করতে হবে। এসব সবজির খোসায়ও অনেক ভিটামিন ও মিনারেল থাকে।
শাকসবজি ভাজা ভাজা না করে রান্না করে খেলে বেশি পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়। প্রথমত ভাজা করতে হলে খুব ছোট টুকরা করে কাটতে হয়। দ্বিতীয়ত ভাজি করতে হলে দীর্ঘ সময় তাপে রাখতে হয়। এই দুটি বিষয় শাকসবজির পুষ্টিগুণ অনেক কমিয়ে দেয়। তাই এগুলো ঝোল করে রান্না করে খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

সব দেশের মানুষের মধ্যেই মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে। লাখ লাখ মানুষ নানা ধরনের মানসিক সমস্যায় ভোগেন। কিন্তু অনেক মানুষই নিজের রোগ সম্পর্কে সচেতন থাকেন না। ফলে তাঁরা চিকিৎসকের কাছেও যান না। আবার বাংলাদেশের মতো কিছু দেশে সাধারণ মানুষের অসচেতনতার পাশাপাশি স্বাস্থ্য অবকাঠামোও অত্যন্ত অপ্রতুল।
১০ অক্টোবর ২০২১
জীবনে রঙের অস্তিত্ব না থাকলে কেমন হতো? নির্জীব, একঘেয়ে কেমন যেন নিরানন্দ কিংবা নেই কোনো উৎসাহ-উদ্দীপনা। রঙিন কিছু দেখলেই আমাদের মন যেন উৎফুল্ল হয়ে ওঠে, খাবারের বেলায়ও এটি একই রকম সত্য।
২ দিন আগে
ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, সেই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন অটল থাকা অনেকের ক্ষেত্রে আরও কঠিন। সঠিক অনুপ্রেরণা না থাকলে ওজন কমানো শুরু করাই কঠিন হয়ে পড়ে। আর শুরু করলেও মাঝপথে থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল অনুসরণ করলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন সহজ হতে পারে।
৪ দিন আগে
থাইরয়েড হরমোন আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একধরনের হরমোন কিংবা প্রাণরস। এটি গলার সামনে থেকে নিঃসৃত হলেও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরে কাজ করে।
৪ দিন আগে