মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

দেশের মানুষের দীর্ঘমেয়াদি ও অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার ক্রমেই বাড়ছে। প্রতিবছর যত মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, তার দুই-তৃতীয়াংশের বেশি মারা যাচ্ছেন এসব রোগের কারণে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে, দেশের প্রায় ৫৩ শতাংশ পরিবারের অন্তত একজন সদস্য কোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত। বড় রোগের এ বোঝা চিকিৎসার জন্য রোগীর নিজের ব্যয় বাড়িয়ে দিচ্ছে, যাকে বিশেষজ্ঞরা বলেন, আউট-অব-পকেট এক্সপেনডিচার বা ওওপি।
জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা তথা অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলছে এ বিষয়টি।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় দেশে দীর্ঘমেয়াদি রোগের পরিস্থিতির এ তথ্য উঠে এসেছে। ‘ইকোনমিক ডায়নামিকস অ্যান্ড মুড অ্যাট হাউসহোল্ড লেভেল ইন মিড ২০২৫’ শীর্ষক এ গবেষণাটি ৮ হাজার ৬৭টি পরিবারের ৩৩ হাজার ২০৭ জন সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে সম্পন্ন করা হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, ৫২ দশমিক ৫ শতাংশ পরিবারের অন্তত একজন দীর্ঘমেয়াদি রোগে (ক্রনিক ডিজিজ) আক্রান্ত রোগী রয়েছেন। কোনো কোনো পরিবারে একাধিক সদস্য এ ধরনের রোগে ভুগছেন। সবচেয়ে বেশি লোক যে দীর্ঘমেয়াদি অসুখে আক্রান্ত, তা হচ্ছে উচ্চ রক্তচাপ। ৩৪ দশমিক ৬ শতাংশ পরিবারের সদস্য এ রোগে ভুগছেন। সংখ্যার হিসাবে এর পরে রয়েছে যথাক্রমে গ্যাস্ট্রিক আলসার (২৬ দশমিক ৫ শতাংশ), ডায়াবেটিস (২৩ শতাংশ), হৃদ্রোগ বা হৃদ্রোগের জটিলতা (১৫ দশমিক ৭ শতাংশ), চর্মরোগ বা অ্যালার্জি (১১ দশমিক ২ শতাংশ), অ্যাজমা (১০ দশমিক ৪ শতাংশ), হাড়ের সমস্যা অস্টিওপোরোসিস বা ক্যালসিয়াম ঘাটতির রোগ (৯ দশমিক ৭ শতাংশ) চোখের সমস্যা (৭ শতাংশ), বাত বা আর্থ্রাইটিস (৪ দশমিক ৫ শতাংশ) এবং অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি রোগ (৪ দশমিক ৮ শতাংশ)।
পিপিআরসি বলছে, দীর্ঘমেয়াদি রোগের ক্ষতি শুধু আক্রান্ত ব্যক্তির দুর্ভোগের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এর চিকিৎসার ব্যয় পরিবার ও রাষ্ট্রের ওপর প্রভাব ফেলে। দীর্ঘমেয়াদি রোগের বোঝা এবং তার আর্থিক প্রভাব ব্যাপকভাবে অনুভূত একটি সাধারণ সমস্যা। এটি ধনী কিংবা গরিব, শহর বা গ্রামবাসী-নির্বিশেষে সব শ্রেণির মানুষের জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলতে পারে। তাই স্বাস্থ্যনীতি ও সেবা পরিকল্পনায় এর ওপর বিশেষ মনোযোগ দেওয়া জরুরি।
যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) সংজ্ঞামতে, যেসব স্বাস্থ্য সমস্যা এক বছর বা তার বেশি স্থায়ী থাকে এবং যার জন্য নিয়মিত চিকিৎসা প্রয়োজন হয়; কিংবা দৈনন্দিন কাজকর্ম সীমিত করতে হয়—তা-ই দীর্ঘমেয়াদি রোগ। ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, বাতের মতো সাধারণ হয়ে ওঠা রোগ ছাড়া ক্যানসার ও কিডনির অসুখও এর মধ্যে পড়ে। ধূমপান, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যসূচি, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা ও মদপান—এ চারটি ঝুঁকিপূর্ণ অভ্যাসের কারণে অনেক দীর্ঘমেয়াদি রোগের সৃষ্টি হয়, যেগুলো কি না প্রতিরোধযোগ্য।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) অনুযায়ী, দীর্ঘমেয়াদি রোগের মধ্যে অসংক্রামক রোগ (এনসিডি) এবং সংক্রামক রোগ—দুই ধরনের অসুখই রয়েছে। এর মধ্যে এনসিডি রোগগুলো সাধারণত দীর্ঘস্থায়ী এবং ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। ডব্লিউএইচওর তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে মৃত্যুর প্রধান কারণ হৃদ্রোগ বা ক্যানসারের মতো এনসিডি।
পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ও গবেষণার মুখ্য গবেষক ড. হোসেন জিল্লুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, দেশে কত শতাংশ পরিবারে দীর্ঘমেয়াদি অসুখের রোগী রয়েছেন, তা জানা ছিল না। পিপিআরসির গবেষণায় প্রথমবারের মতো ধারণা পাওয়া গেল যে, দেশের ৫০ শতাংশের বেশি পরিবারে এ রকম রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি রয়েছেন। নিয়মিত ওষুধসহ সার্বিক চিকিৎসার খরচ বেশির ভাগ পরিবারের ওপর বড় ধরনের অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করছে। এই চাপ কমানোর জন্য কার্যকর কোনো সহায়তা নেই।
ড. জিল্লুর রহমান বলেন, সরকারকে দীর্ঘমেয়াদি রোগাক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য ওষুধের খরচ কমাতে নতুন সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির কথা বিবেচনা করা উচিত। এ ছাড়া রোগগুলো প্রতিরোধযোগ্য। তাই যথাযথ প্রতিরোধ কার্যক্রম চালাতে হবে। জনস্বাস্থ্যের এ বড় সমস্যাটিকে কমানোর জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে একত্রে কাজ করতে হবে। পরিবেশ দূষণ, অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার ও জীবনাচার—এসবও এ ধরনের রোগ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ বুলেটিন দেশের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি সম্পর্কে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনা। গত বছরের জুনে প্রকাশিত ‘হেলথ বুলেটিন ২০২৩’-এ বলা হয়েছে, দেশ এখন সংক্রামক রোগ থেকে অসংক্রামক রোগের দিকে ধাবিত হচ্ছে। অসুস্থতা ও মৃত্যুর প্রধান কারণ হয়ে উঠেছে অসংক্রামক রোগ। বিশেষ করে ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, ক্যানসার এবং দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসতন্ত্রের রোগ ব্যাপকভাবে দেখা যাচ্ছে। দেশে এখন বিভিন্ন রোগে মোট মৃত্যুর ৭০.২৬ শতাংশই ঘটছে অসংক্রামক রোগে। এর মধ্যে হৃদ্রোগে ৩৪ শতাংশ, ক্যানসারে ১০ শতাংশ, দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসতন্ত্রের রোগে ৭ শতাংশ, ডায়াবেটিসে ৪ শতাংশ এবং অন্যান্য অসংক্রামক রোগে ১১ শতাংশ মানুষের মৃত্যু ঘটে। অন্যদিকে সংক্রামক রোগে মৃত্যুর হার ২৩ শতাংশ।
দীর্ঘমেয়াদি রোগের অর্থনৈতিক প্রভাবের দুটি দিক তুলে ধরেছেন স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদেরা। তাঁরা বলেছেন, কেউ এসব রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর অসুস্থতা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও আগের মতো অর্থনৈতিক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারেন না। এতে করে তাঁদের আয় কমে যায়। পাশাপাশি চিকিৎসার খরচ বেড়ে যাওয়ায় পরিবারের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. শাফিউন নাহিন শিমুল বলেন, দীর্ঘমেয়াদি রোগ দেশের সামগ্রিক দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রভাব ফেলছে। অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে সরকারি পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়। দেশে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় দীর্ঘমেয়াদি রোগও বাড়ছে। যদি সরকারিভাবে সময়মতো যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া যায়, তাহলে এসব রোগ মারাত্মক হয়ে উঠবে না এবং চিকিৎসা ব্যয়ও কম থাকবে।
ডব্লিউএইচওর পরিভাষা অনুযায়ী, স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার জন্য ব্যক্তি বা পরিবার যে অর্থ নিজের পকেট থেকে খরচ করে, তাকে ‘আউট-অব-পকেট’ (ওওপি) ব্যয় বলা হয়। ওওপির হার বেশি হলে তা দারিদ্র্য ও আর্থিক সংকট সৃষ্টি করতে পারে। কারণ এটি অন্যান্য মৌলিক চাহিদা পূরণে ব্যাঘাত ঘটায়। ওওপি ৪০ শতাংশের বেশি হলে তাকে বিপর্যয়কর স্বাস্থ্য ব্যয় বলা হয়। উচ্চ ওওপি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি এবং স্বাস্থ্যব্যবস্থার ওপরও চাপ সৃষ্টি করে।
সরকারের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট জানিয়েছে, বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণে ব্যক্তির নিজস্ব ব্যয় (ওওপি) ৬৭ শতাংশ। তবে বিশ্বব্যাংকের হিসাবে এটি ৭৪ শতাংশ। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) তথ্য অনুযায়ী, চিকিৎসার উচ্চ ব্যয়ের কারণে দেশের ১৮ শতাংশ পরিবার বিপর্যয়কর অবস্থার মধ্যে পড়েছে। ২০২২ সালে এ কারণে দেশে ৬১ লাখের বেশি মানুষ দরিদ্র হয়েছেন।
পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট (ইলেক্ট) অধ্যাপক ডা. আবু জামিল ফয়সাল বলেন, দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা প্রায় পুরোপুরি চিকিৎসাভিত্তিক (কিউরেটিভ), ততটা প্রতিরোধমূলক নয়। অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করতে হলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। এ জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার আইন করা জরুরি, যাতে সরকার এ সেবা দিতে বাধ্য হয়।
আবু জামিল ফয়সাল আরও বলেন, দীর্ঘমেয়াদি ও অসংক্রামক রোগের নিয়ন্ত্রণ এখনো নজরের বাইরে। শুধু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যথেষ্ট নয়, এখানে শিক্ষা, স্বাস্থ্যশিক্ষা, পরিবেশ, খাদ্যাভ্যাস, জীবনাচার এবং বিপজ্জনক রাসায়নিক ও কীটনাশকের অতি ব্যবহার—এসব বিষয় জড়িত। এ জন্য সমন্বিত কার্যক্রম ছাড়া কার্যকর নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।
দেশের মানুষের দীর্ঘমেয়াদি ও অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার ক্রমেই বাড়ছে। প্রতিবছর যত মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, তার দুই-তৃতীয়াংশের বেশি মারা যাচ্ছেন এসব রোগের কারণে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে, দেশের প্রায় ৫৩ শতাংশ পরিবারের অন্তত একজন সদস্য কোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত। বড় রোগের এ বোঝা চিকিৎসার জন্য রোগীর নিজের ব্যয় বাড়িয়ে দিচ্ছে, যাকে বিশেষজ্ঞরা বলেন, আউট-অব-পকেট এক্সপেনডিচার বা ওওপি।
জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা তথা অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলছে এ বিষয়টি।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় দেশে দীর্ঘমেয়াদি রোগের পরিস্থিতির এ তথ্য উঠে এসেছে। ‘ইকোনমিক ডায়নামিকস অ্যান্ড মুড অ্যাট হাউসহোল্ড লেভেল ইন মিড ২০২৫’ শীর্ষক এ গবেষণাটি ৮ হাজার ৬৭টি পরিবারের ৩৩ হাজার ২০৭ জন সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে সম্পন্ন করা হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, ৫২ দশমিক ৫ শতাংশ পরিবারের অন্তত একজন দীর্ঘমেয়াদি রোগে (ক্রনিক ডিজিজ) আক্রান্ত রোগী রয়েছেন। কোনো কোনো পরিবারে একাধিক সদস্য এ ধরনের রোগে ভুগছেন। সবচেয়ে বেশি লোক যে দীর্ঘমেয়াদি অসুখে আক্রান্ত, তা হচ্ছে উচ্চ রক্তচাপ। ৩৪ দশমিক ৬ শতাংশ পরিবারের সদস্য এ রোগে ভুগছেন। সংখ্যার হিসাবে এর পরে রয়েছে যথাক্রমে গ্যাস্ট্রিক আলসার (২৬ দশমিক ৫ শতাংশ), ডায়াবেটিস (২৩ শতাংশ), হৃদ্রোগ বা হৃদ্রোগের জটিলতা (১৫ দশমিক ৭ শতাংশ), চর্মরোগ বা অ্যালার্জি (১১ দশমিক ২ শতাংশ), অ্যাজমা (১০ দশমিক ৪ শতাংশ), হাড়ের সমস্যা অস্টিওপোরোসিস বা ক্যালসিয়াম ঘাটতির রোগ (৯ দশমিক ৭ শতাংশ) চোখের সমস্যা (৭ শতাংশ), বাত বা আর্থ্রাইটিস (৪ দশমিক ৫ শতাংশ) এবং অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি রোগ (৪ দশমিক ৮ শতাংশ)।
পিপিআরসি বলছে, দীর্ঘমেয়াদি রোগের ক্ষতি শুধু আক্রান্ত ব্যক্তির দুর্ভোগের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এর চিকিৎসার ব্যয় পরিবার ও রাষ্ট্রের ওপর প্রভাব ফেলে। দীর্ঘমেয়াদি রোগের বোঝা এবং তার আর্থিক প্রভাব ব্যাপকভাবে অনুভূত একটি সাধারণ সমস্যা। এটি ধনী কিংবা গরিব, শহর বা গ্রামবাসী-নির্বিশেষে সব শ্রেণির মানুষের জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলতে পারে। তাই স্বাস্থ্যনীতি ও সেবা পরিকল্পনায় এর ওপর বিশেষ মনোযোগ দেওয়া জরুরি।
যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) সংজ্ঞামতে, যেসব স্বাস্থ্য সমস্যা এক বছর বা তার বেশি স্থায়ী থাকে এবং যার জন্য নিয়মিত চিকিৎসা প্রয়োজন হয়; কিংবা দৈনন্দিন কাজকর্ম সীমিত করতে হয়—তা-ই দীর্ঘমেয়াদি রোগ। ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, বাতের মতো সাধারণ হয়ে ওঠা রোগ ছাড়া ক্যানসার ও কিডনির অসুখও এর মধ্যে পড়ে। ধূমপান, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যসূচি, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা ও মদপান—এ চারটি ঝুঁকিপূর্ণ অভ্যাসের কারণে অনেক দীর্ঘমেয়াদি রোগের সৃষ্টি হয়, যেগুলো কি না প্রতিরোধযোগ্য।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) অনুযায়ী, দীর্ঘমেয়াদি রোগের মধ্যে অসংক্রামক রোগ (এনসিডি) এবং সংক্রামক রোগ—দুই ধরনের অসুখই রয়েছে। এর মধ্যে এনসিডি রোগগুলো সাধারণত দীর্ঘস্থায়ী এবং ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। ডব্লিউএইচওর তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে মৃত্যুর প্রধান কারণ হৃদ্রোগ বা ক্যানসারের মতো এনসিডি।
পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ও গবেষণার মুখ্য গবেষক ড. হোসেন জিল্লুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, দেশে কত শতাংশ পরিবারে দীর্ঘমেয়াদি অসুখের রোগী রয়েছেন, তা জানা ছিল না। পিপিআরসির গবেষণায় প্রথমবারের মতো ধারণা পাওয়া গেল যে, দেশের ৫০ শতাংশের বেশি পরিবারে এ রকম রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি রয়েছেন। নিয়মিত ওষুধসহ সার্বিক চিকিৎসার খরচ বেশির ভাগ পরিবারের ওপর বড় ধরনের অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করছে। এই চাপ কমানোর জন্য কার্যকর কোনো সহায়তা নেই।
ড. জিল্লুর রহমান বলেন, সরকারকে দীর্ঘমেয়াদি রোগাক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য ওষুধের খরচ কমাতে নতুন সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির কথা বিবেচনা করা উচিত। এ ছাড়া রোগগুলো প্রতিরোধযোগ্য। তাই যথাযথ প্রতিরোধ কার্যক্রম চালাতে হবে। জনস্বাস্থ্যের এ বড় সমস্যাটিকে কমানোর জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে একত্রে কাজ করতে হবে। পরিবেশ দূষণ, অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার ও জীবনাচার—এসবও এ ধরনের রোগ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ বুলেটিন দেশের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি সম্পর্কে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনা। গত বছরের জুনে প্রকাশিত ‘হেলথ বুলেটিন ২০২৩’-এ বলা হয়েছে, দেশ এখন সংক্রামক রোগ থেকে অসংক্রামক রোগের দিকে ধাবিত হচ্ছে। অসুস্থতা ও মৃত্যুর প্রধান কারণ হয়ে উঠেছে অসংক্রামক রোগ। বিশেষ করে ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, ক্যানসার এবং দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসতন্ত্রের রোগ ব্যাপকভাবে দেখা যাচ্ছে। দেশে এখন বিভিন্ন রোগে মোট মৃত্যুর ৭০.২৬ শতাংশই ঘটছে অসংক্রামক রোগে। এর মধ্যে হৃদ্রোগে ৩৪ শতাংশ, ক্যানসারে ১০ শতাংশ, দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসতন্ত্রের রোগে ৭ শতাংশ, ডায়াবেটিসে ৪ শতাংশ এবং অন্যান্য অসংক্রামক রোগে ১১ শতাংশ মানুষের মৃত্যু ঘটে। অন্যদিকে সংক্রামক রোগে মৃত্যুর হার ২৩ শতাংশ।
দীর্ঘমেয়াদি রোগের অর্থনৈতিক প্রভাবের দুটি দিক তুলে ধরেছেন স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদেরা। তাঁরা বলেছেন, কেউ এসব রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর অসুস্থতা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও আগের মতো অর্থনৈতিক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারেন না। এতে করে তাঁদের আয় কমে যায়। পাশাপাশি চিকিৎসার খরচ বেড়ে যাওয়ায় পরিবারের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. শাফিউন নাহিন শিমুল বলেন, দীর্ঘমেয়াদি রোগ দেশের সামগ্রিক দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রভাব ফেলছে। অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে সরকারি পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়। দেশে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় দীর্ঘমেয়াদি রোগও বাড়ছে। যদি সরকারিভাবে সময়মতো যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া যায়, তাহলে এসব রোগ মারাত্মক হয়ে উঠবে না এবং চিকিৎসা ব্যয়ও কম থাকবে।
ডব্লিউএইচওর পরিভাষা অনুযায়ী, স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার জন্য ব্যক্তি বা পরিবার যে অর্থ নিজের পকেট থেকে খরচ করে, তাকে ‘আউট-অব-পকেট’ (ওওপি) ব্যয় বলা হয়। ওওপির হার বেশি হলে তা দারিদ্র্য ও আর্থিক সংকট সৃষ্টি করতে পারে। কারণ এটি অন্যান্য মৌলিক চাহিদা পূরণে ব্যাঘাত ঘটায়। ওওপি ৪০ শতাংশের বেশি হলে তাকে বিপর্যয়কর স্বাস্থ্য ব্যয় বলা হয়। উচ্চ ওওপি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি এবং স্বাস্থ্যব্যবস্থার ওপরও চাপ সৃষ্টি করে।
সরকারের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট জানিয়েছে, বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণে ব্যক্তির নিজস্ব ব্যয় (ওওপি) ৬৭ শতাংশ। তবে বিশ্বব্যাংকের হিসাবে এটি ৭৪ শতাংশ। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) তথ্য অনুযায়ী, চিকিৎসার উচ্চ ব্যয়ের কারণে দেশের ১৮ শতাংশ পরিবার বিপর্যয়কর অবস্থার মধ্যে পড়েছে। ২০২২ সালে এ কারণে দেশে ৬১ লাখের বেশি মানুষ দরিদ্র হয়েছেন।
পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট (ইলেক্ট) অধ্যাপক ডা. আবু জামিল ফয়সাল বলেন, দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা প্রায় পুরোপুরি চিকিৎসাভিত্তিক (কিউরেটিভ), ততটা প্রতিরোধমূলক নয়। অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করতে হলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। এ জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার আইন করা জরুরি, যাতে সরকার এ সেবা দিতে বাধ্য হয়।
আবু জামিল ফয়সাল আরও বলেন, দীর্ঘমেয়াদি ও অসংক্রামক রোগের নিয়ন্ত্রণ এখনো নজরের বাইরে। শুধু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যথেষ্ট নয়, এখানে শিক্ষা, স্বাস্থ্যশিক্ষা, পরিবেশ, খাদ্যাভ্যাস, জীবনাচার এবং বিপজ্জনক রাসায়নিক ও কীটনাশকের অতি ব্যবহার—এসব বিষয় জড়িত। এ জন্য সমন্বিত কার্যক্রম ছাড়া কার্যকর নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।

ছয় দফা দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে। শনিবার থেকে সারা দেশের স্বাস্থ্য সহকারীরা ঢাকায় এসে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন।
১৮ ঘণ্টা আগে
বেতনকাঠামোর দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে হাসপাতালসহ দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে রোগী এবং তাদের স্বজনেরা। গত ৩০ নভেম্বর থেকে...
১ দিন আগে
দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের হাসপাতালে প্রতিবছরই বাড়ছে সেবাগ্রহণকারীর সংখ্যা। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রেই শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য অথবা ন্যূনতম মানের নয়। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। আর প্রতিবন্ধী রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও তীব্র।
২ দিন আগে
দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন আক্রান্ত ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

নিয়োগবিধি সংশোধন, বেতনবৈষম্য দূরীকরণ এবং টেকনিক্যাল পদমর্যাদা প্রদানের দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। আজ বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে দিনভর অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী শনিবার (৬ ডিসেম্বর) থেকে সারা দেশের স্বাস্থ্য সহকারীরা ঢাকায় সমবেত হয়ে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করবেন।
গত শনিবার (২৯ নভেম্বর) থেকে শুরু হওয়া কর্মবিরতি প্রথম দুই দিন চলেছিল শহীদ মিনারে। পরে তাঁরা অবস্থান নেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে। বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে এ আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন দেশের ৬৪ জেলার স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য পরিদর্শকেরা।
এই কর্মসূচির কারণে কয়েক দিন ধরে সারা দেশে ১ লাখ ২০ হাজার অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে টিকা নিতে এসে অনেক মা ও শিশু ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
স্বাস্থ্য সহকারীদের এ কর্মসূচির কারণে সারা দেশে ১ লাখ ২০ হাজার অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের সেবা কয়েক দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে টিকা নিতে এসে মা ও শিশুরা ফিরে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য সহকারীদের দাবি, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে বঞ্চিত করে কর্মবিরতিতে যেতে তাঁরা চাননি। কিন্তু দীর্ঘদিনের বঞ্চনা ও কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের কারণে তাঁরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হয়েছেন। দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে বারবার প্রতিশ্রুতির আশ্বাস মিললেও বাস্তবে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
দাবি আদায়ে অনড় অবস্থান জানিয়ে নেতারা বলেন, ‘আমাদের ১৬তম গ্রেড থেকে ১৪তম গ্রেডে উন্নীত করার সরকারি আদেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত আমরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করব না। এখন শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি চলছে, প্রয়োজনে আরও কঠোর হতে বাধ্য হব।’

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে স্বাস্থ্য সহকারীদের নানা বঞ্চনার চিত্রও তুলে ধরে আন্দোলনকারীরা জানান, টিকাদানের আগে মাসজুড়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা, জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধন, নবজাতক ও গর্ভবতী মায়ের রেজিস্ট্রেশন, যক্ষ্মা রোগী শনাক্তকরণ, ডটস (সরাসরি পর্যবেক্ষণ থেরাপি) পদ্ধতিতে ওষুধ খাওয়ানো, উঠান বৈঠক, মা সমাবেশসহ বিভিন্ন সেবা তাঁরা দিয়ে থাকেন। সপ্তাহে তিন দিন কমিউনিটি ক্লিনিকে নিয়মিত সেবা দেওয়ার পরও তাঁদের মাসিক ভ্রমণভাতা মাত্র ৬০০ টাকা। আর বেতন মোট ৯ হাজার ৭০০ টাকা।
আন্দোলনকারীদের দাবির মধ্যে রয়েছে, নিয়োগবিধি সংশোধন করে স্নাতক বা সমমানের যোগ্যতা যুক্ত করে ১৪তম গ্রেড প্রদান, ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমাধারীদের ১১তম গ্রেডসহ টেকনিক্যাল পদমর্যাদা দেওয়া, ধারাবাহিকভাবে উচ্চতর গ্রেডে পদোন্নতি নিশ্চিত করা, প্রশিক্ষণ ছাড়াই স্নাতক স্কেলে অন্তর্ভুক্ত করা, বেতনস্কেল পুনর্নির্ধারণের সময় টাইম স্কেল বা উচ্চতর স্কেল সংযুক্ত করা এবং ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমা (এসআইটি) সম্পন্নকারীদের সমমান স্বীকৃতি প্রদান।
বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় পরিষদের সদস্যসচিব ফজলুল হক চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, আমাদের ফাইল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখানে এখনো বিশ্লেষণ শুরু হয়নি।’
তিনি আরও জানান, ৬৪ জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে আলোচনা করে আগামী শনিবার থেকে লাগাতার কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এ বি এম আবু হানিফ আজ সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তাদের দাবির বিষয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। এখানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ছাড়াও অর্থ মন্ত্রণালয় এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাজ রয়েছে। সেখানে প্রক্রিয়াগতভাবে কিছুটা সময় লাগছে। গত তিন দিন তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান করছে। আমরা কাজ করছি। আমরা আশা করছি, সবকিছু ভালোভাবে সমাধান হবে।’

নিয়োগবিধি সংশোধন, বেতনবৈষম্য দূরীকরণ এবং টেকনিক্যাল পদমর্যাদা প্রদানের দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। আজ বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে দিনভর অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী শনিবার (৬ ডিসেম্বর) থেকে সারা দেশের স্বাস্থ্য সহকারীরা ঢাকায় সমবেত হয়ে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করবেন।
গত শনিবার (২৯ নভেম্বর) থেকে শুরু হওয়া কর্মবিরতি প্রথম দুই দিন চলেছিল শহীদ মিনারে। পরে তাঁরা অবস্থান নেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে। বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে এ আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন দেশের ৬৪ জেলার স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য পরিদর্শকেরা।
এই কর্মসূচির কারণে কয়েক দিন ধরে সারা দেশে ১ লাখ ২০ হাজার অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে টিকা নিতে এসে অনেক মা ও শিশু ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
স্বাস্থ্য সহকারীদের এ কর্মসূচির কারণে সারা দেশে ১ লাখ ২০ হাজার অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের সেবা কয়েক দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে টিকা নিতে এসে মা ও শিশুরা ফিরে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য সহকারীদের দাবি, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে বঞ্চিত করে কর্মবিরতিতে যেতে তাঁরা চাননি। কিন্তু দীর্ঘদিনের বঞ্চনা ও কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের কারণে তাঁরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হয়েছেন। দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে বারবার প্রতিশ্রুতির আশ্বাস মিললেও বাস্তবে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
দাবি আদায়ে অনড় অবস্থান জানিয়ে নেতারা বলেন, ‘আমাদের ১৬তম গ্রেড থেকে ১৪তম গ্রেডে উন্নীত করার সরকারি আদেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত আমরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করব না। এখন শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি চলছে, প্রয়োজনে আরও কঠোর হতে বাধ্য হব।’

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে স্বাস্থ্য সহকারীদের নানা বঞ্চনার চিত্রও তুলে ধরে আন্দোলনকারীরা জানান, টিকাদানের আগে মাসজুড়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা, জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধন, নবজাতক ও গর্ভবতী মায়ের রেজিস্ট্রেশন, যক্ষ্মা রোগী শনাক্তকরণ, ডটস (সরাসরি পর্যবেক্ষণ থেরাপি) পদ্ধতিতে ওষুধ খাওয়ানো, উঠান বৈঠক, মা সমাবেশসহ বিভিন্ন সেবা তাঁরা দিয়ে থাকেন। সপ্তাহে তিন দিন কমিউনিটি ক্লিনিকে নিয়মিত সেবা দেওয়ার পরও তাঁদের মাসিক ভ্রমণভাতা মাত্র ৬০০ টাকা। আর বেতন মোট ৯ হাজার ৭০০ টাকা।
আন্দোলনকারীদের দাবির মধ্যে রয়েছে, নিয়োগবিধি সংশোধন করে স্নাতক বা সমমানের যোগ্যতা যুক্ত করে ১৪তম গ্রেড প্রদান, ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমাধারীদের ১১তম গ্রেডসহ টেকনিক্যাল পদমর্যাদা দেওয়া, ধারাবাহিকভাবে উচ্চতর গ্রেডে পদোন্নতি নিশ্চিত করা, প্রশিক্ষণ ছাড়াই স্নাতক স্কেলে অন্তর্ভুক্ত করা, বেতনস্কেল পুনর্নির্ধারণের সময় টাইম স্কেল বা উচ্চতর স্কেল সংযুক্ত করা এবং ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমা (এসআইটি) সম্পন্নকারীদের সমমান স্বীকৃতি প্রদান।
বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় পরিষদের সদস্যসচিব ফজলুল হক চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, আমাদের ফাইল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখানে এখনো বিশ্লেষণ শুরু হয়নি।’
তিনি আরও জানান, ৬৪ জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে আলোচনা করে আগামী শনিবার থেকে লাগাতার কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এ বি এম আবু হানিফ আজ সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তাদের দাবির বিষয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। এখানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ছাড়াও অর্থ মন্ত্রণালয় এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাজ রয়েছে। সেখানে প্রক্রিয়াগতভাবে কিছুটা সময় লাগছে। গত তিন দিন তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান করছে। আমরা কাজ করছি। আমরা আশা করছি, সবকিছু ভালোভাবে সমাধান হবে।’

দেশের মানুষের দীর্ঘমেয়াদি ও অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার ক্রমেই বাড়ছে। প্রতিবছর যত মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, তার দুই-তৃতীয়াংশের বেশি মারা যাচ্ছেন এসব রোগের কারণে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে, দেশের প্রায় ৫৩ শতাংশ পরিবারের অন্তত একজন সদস্য কোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত।
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বেতনকাঠামোর দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে হাসপাতালসহ দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে রোগী এবং তাদের স্বজনেরা। গত ৩০ নভেম্বর থেকে...
১ দিন আগে
দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের হাসপাতালে প্রতিবছরই বাড়ছে সেবাগ্রহণকারীর সংখ্যা। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রেই শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য অথবা ন্যূনতম মানের নয়। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। আর প্রতিবন্ধী রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও তীব্র।
২ দিন আগে
দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন আক্রান্ত ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বেতনকাঠামোর দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে হাসপাতালসহ দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে রোগী এবং তাদের স্বজনেরা। গত ৩০ নভেম্বর থেকে টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা কর্মবিরতি পালন করছেন।
এদিকে দাবি আদায়ে বৃহস্পতিবার কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচিতে যাওয়ার কথা রয়েছে আন্দোলনকারীদের। তবে কঠোর এই কর্মসূচিতে যাওয়ার আগে গতকাল রাতে বৈঠকে বসেছেন আন্দোলনকারীরা। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের কর্মবিরতির কারণে রোগীরা চরম ভোগান্তিতে পড়লেও দাবি আদায়ে দিনভর কঠোর অবস্থানে ছিলেন তাঁরা। কর্মবিরতির সময় হাসপাতালের জরুরি সেবা চালু থাকলেও অনেককে সেবা না পেয়ে চলে যেতে দেখা গেছে।
আন্দোলনরতরা জানান, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের ফাইল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আটকে আছে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় দীর্ঘদিনেও বিষয়টির সমাধান হয়নি। এর আগে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার, ডিপ্লোমা নার্স ও ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের ১১তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। ফলে দাবি আদায়ে এবার কঠোর কর্মসূচি পালন করছেন তাঁরা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন ১০ হাজারের বেশি মানুষ চিকিৎসাসেবা নিতে যায়। এসব সেবাপ্রার্থীর বড় অংশ ঢাকার বাইরে থেকে আসে। টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের গতকালের কর্মবিরতির কারণে অনেকে চিকিৎসা না পেয়ে চলে যায়।
বিভিন্ন স্থানে দিনভর ভোগান্তি
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে সেবা বন্ধ রেখে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। এতে ভোগান্তিতে পড়ে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনেরা।
কর্মবিরতি চলাকালে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের ফার্মেসিতে বিনা মূল্যে সরকারি ওষুধ বিতরণ, রক্ত পরীক্ষা, এক্স-রে, আলট্রাসনোগ্রামসহ রোগনির্ণয়ের বিভিন্ন সেবাকেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। এ সময় হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও সেবাকেন্দ্রগুলোয় কর্মবিরতির ব্যানার ঝুলছিল। তবে হাসপাতালের অন্যান্য সেবা কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল। চমেক হাসপাতালে রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের একজন কর্মচারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, কর্মবিরতির ফলে এক্স-রে করা সাময়িক বন্ধ ছিল।
একই দাবিতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের সামনে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। বুধবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। এ সময় আন্দোলনকারীরা বলেন, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ও নার্সদের মতো তাঁদেরও চাকরিগত মর্যাদা দশম গ্রেডে উন্নীত না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ সদরে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মবিরতির কারণে হাসপাতালে সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং ওষুধ বিতরণ বন্ধ ছিল।
আবদুল্লাহ নামের এক রোগী বলেন, ‘সিটি স্ক্যান করানোর জন্য এসেছিলাম। এসে শুনি, কর্মবিরতি দিয়েছে। এ জন্য ফিরে যাচ্ছি।’
উল্লাপাড়ার আনিসুর নামের এক বৃদ্ধ বলেন, ‘কোমরে ব্যথা। তাই ডাক্তারের কাছে এসেছি। এসে শুনি, দুপুরের আগে চিকিৎসা হবে না।’
একই দাবিতে রাজবাড়ীতে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা চার ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেছেন। বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই কর্মবিরতি পালন করেন তাঁরা। কর্মবিরতি কর্মসূচিতে দাবি আদায় না হলে ৪ ডিসেম্বর থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালনের মাধ্যমে হাসপাতাল শাটডাউন ঘোষণার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।

বেতনকাঠামোর দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে হাসপাতালসহ দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে রোগী এবং তাদের স্বজনেরা। গত ৩০ নভেম্বর থেকে টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা কর্মবিরতি পালন করছেন।
এদিকে দাবি আদায়ে বৃহস্পতিবার কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচিতে যাওয়ার কথা রয়েছে আন্দোলনকারীদের। তবে কঠোর এই কর্মসূচিতে যাওয়ার আগে গতকাল রাতে বৈঠকে বসেছেন আন্দোলনকারীরা। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের কর্মবিরতির কারণে রোগীরা চরম ভোগান্তিতে পড়লেও দাবি আদায়ে দিনভর কঠোর অবস্থানে ছিলেন তাঁরা। কর্মবিরতির সময় হাসপাতালের জরুরি সেবা চালু থাকলেও অনেককে সেবা না পেয়ে চলে যেতে দেখা গেছে।
আন্দোলনরতরা জানান, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের ফাইল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আটকে আছে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় দীর্ঘদিনেও বিষয়টির সমাধান হয়নি। এর আগে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার, ডিপ্লোমা নার্স ও ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের ১১তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। ফলে দাবি আদায়ে এবার কঠোর কর্মসূচি পালন করছেন তাঁরা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন ১০ হাজারের বেশি মানুষ চিকিৎসাসেবা নিতে যায়। এসব সেবাপ্রার্থীর বড় অংশ ঢাকার বাইরে থেকে আসে। টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের গতকালের কর্মবিরতির কারণে অনেকে চিকিৎসা না পেয়ে চলে যায়।
বিভিন্ন স্থানে দিনভর ভোগান্তি
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে সেবা বন্ধ রেখে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। এতে ভোগান্তিতে পড়ে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনেরা।
কর্মবিরতি চলাকালে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের ফার্মেসিতে বিনা মূল্যে সরকারি ওষুধ বিতরণ, রক্ত পরীক্ষা, এক্স-রে, আলট্রাসনোগ্রামসহ রোগনির্ণয়ের বিভিন্ন সেবাকেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। এ সময় হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও সেবাকেন্দ্রগুলোয় কর্মবিরতির ব্যানার ঝুলছিল। তবে হাসপাতালের অন্যান্য সেবা কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল। চমেক হাসপাতালে রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের একজন কর্মচারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, কর্মবিরতির ফলে এক্স-রে করা সাময়িক বন্ধ ছিল।
একই দাবিতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের সামনে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। বুধবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। এ সময় আন্দোলনকারীরা বলেন, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ও নার্সদের মতো তাঁদেরও চাকরিগত মর্যাদা দশম গ্রেডে উন্নীত না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ সদরে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মবিরতির কারণে হাসপাতালে সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং ওষুধ বিতরণ বন্ধ ছিল।
আবদুল্লাহ নামের এক রোগী বলেন, ‘সিটি স্ক্যান করানোর জন্য এসেছিলাম। এসে শুনি, কর্মবিরতি দিয়েছে। এ জন্য ফিরে যাচ্ছি।’
উল্লাপাড়ার আনিসুর নামের এক বৃদ্ধ বলেন, ‘কোমরে ব্যথা। তাই ডাক্তারের কাছে এসেছি। এসে শুনি, দুপুরের আগে চিকিৎসা হবে না।’
একই দাবিতে রাজবাড়ীতে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা চার ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেছেন। বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই কর্মবিরতি পালন করেন তাঁরা। কর্মবিরতি কর্মসূচিতে দাবি আদায় না হলে ৪ ডিসেম্বর থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালনের মাধ্যমে হাসপাতাল শাটডাউন ঘোষণার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।

দেশের মানুষের দীর্ঘমেয়াদি ও অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার ক্রমেই বাড়ছে। প্রতিবছর যত মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, তার দুই-তৃতীয়াংশের বেশি মারা যাচ্ছেন এসব রোগের কারণে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে, দেশের প্রায় ৫৩ শতাংশ পরিবারের অন্তত একজন সদস্য কোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত।
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছয় দফা দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে। শনিবার থেকে সারা দেশের স্বাস্থ্য সহকারীরা ঢাকায় এসে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন।
১৮ ঘণ্টা আগে
দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের হাসপাতালে প্রতিবছরই বাড়ছে সেবাগ্রহণকারীর সংখ্যা। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রেই শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য অথবা ন্যূনতম মানের নয়। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। আর প্রতিবন্ধী রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও তীব্র।
২ দিন আগে
দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন আক্রান্ত ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
৩ দিন আগেমুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের হাসপাতালে প্রতিবছরই বাড়ছে সেবাগ্রহণকারীর সংখ্যা। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রেই শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য অথবা ন্যূনতম মানের নয়। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। আর প্রতিবন্ধী রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও তীব্র। কারণ হাসপাতালে প্রতিবন্ধী রোগীদের উপযোগী শৌচাগার ১ শতাংশেরও কম।
হাসপাতাল পরিচালনা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিবন্ধীবান্ধব শৌচাগার একটি হাসপাতালের মৌলিক পরিকাঠামোর অংশ হওয়া উচিত। তবে দেশে এ ধরনের সুবিধার মারাত্মক ঘাটতি রয়েছে। বিশেষ করে সরকারি হাসপাতালগুলোতে ঘাটতি বেশি। ফলে রোগীরা শুধু ভোগান্তিতেই পড়ছেন না; বরং গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকিরও সম্মুখীন হচ্ছেন। দীর্ঘ সময় শৌচাগার ব্যবহার করতে না পারার ফলে কিডনি জটিলতা, ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (মূত্রনালি সংক্রমণ) ও পানিশূন্যতাসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিষয়ক গবেষণা প্রকাশনা সংস্থা পাবলিক লাইব্রেরি অব সায়েন্সের প্লস ওয়ান সাময়িকীতে বাংলাদেশে হাসপাতালের শৌচাগার নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ পায়। গবেষণার শিরোনাম ‘ইনঅ্যাডিক্যুইট স্যানিটেশন ইন হেলথকেয়ার ফ্যাসিলিটিজ: অ্যা কম্প্রিহেনসিভ ইভ্যালুয়েশন অব টয়লেটস ইন মেজর হাসপাতাল ইন ঢাকা, বাংলাদেশ’। গবেষণাটি করেছেন অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের নয়জন গবেষক।
গবেষণায় রাজধানীর ১০টি সরকারি ও ২টি বেসরকারি হাসপাতালে মোট ২ হাজার ৪৫৯টি শৌচাগার পর্যবেক্ষণ করা হয়। এর মধ্যে প্রতিবন্ধী রোগীদের উপযোগী শৌচাগারের সংখ্যা মাত্র ১০টি, যা ১ শতাংশেরও কম বা শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। প্রায় ৯৯ শতাংশ শৌচাগার হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী বা চলাফেরায় সীমাবদ্ধ রোগীদের জন্য ব্যবহারযোগ্য নয়। অধিকাংশ শৌচাগারে দরজা সংকীর্ণ, কমোডের উচ্চতা অনুপযুক্ত, গ্র্যাব-বার বা হাতল নেই এবং প্রবেশপথে র্যাম্পের সুবিধাও নেই। ফলে প্রতিবন্ধী রোগীরা শৌচাগার ব্যবহার করতে গিয়ে চরম ভোগান্তি এবং নিরাপত্তাহীনতায় পড়েন।
দেশে ক্যানসার রোগীদের জন্য সর্বোচ্চ সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল ঘুরে এখানকার দুটি ভবনের কোথাও প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য নির্ধারিত শৌচাগার পাওয়া যায়নি।
একইভাবে হৃদরোগ চিকিৎসার জন্য সরকারের বিশেষায়িত চিকিৎসাকেন্দ্র জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের তিনটি ভবনের কোথাও নেই প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য নির্ধারিত শৌচাগার। তাঁদের জন্য আলাদা শৌচাগার না থাকার কথা স্বীকার করেন এই হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখানে ভর্তি রোগীরা বেডসাইড টয়লেট ব্যবহার করেন। বিভিন্ন হাসপাতালের জন্য নতুন যেসব ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে, সেখানে প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য শৌচাগার, হুইলচেয়ার বা শয্যাসহ ওঠানামার জন্য প্রয়োজনীয় র্যাম্প রাখা প্রয়োজন।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে নির্ধারিত শয্যার ২-৩ গুণ রোগী ভর্তি থাকেন। দৈনিক বহির্বিভাগে রোগী আসেন সক্ষমতার ৪-৫ গুণ। স্বাভাবিক রোগীদের জন্য উন্নত শৌচাগারের ব্যবস্থাপনা নেই। প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্যও আলাদা শৌচাগার রাখা যায়নি। তবে আমরা এ বিষয়ে পরিকল্পনা করছি।’

দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের হাসপাতালে প্রতিবছরই বাড়ছে সেবাগ্রহণকারীর সংখ্যা। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রেই শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য অথবা ন্যূনতম মানের নয়। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। আর প্রতিবন্ধী রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও তীব্র। কারণ হাসপাতালে প্রতিবন্ধী রোগীদের উপযোগী শৌচাগার ১ শতাংশেরও কম।
হাসপাতাল পরিচালনা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিবন্ধীবান্ধব শৌচাগার একটি হাসপাতালের মৌলিক পরিকাঠামোর অংশ হওয়া উচিত। তবে দেশে এ ধরনের সুবিধার মারাত্মক ঘাটতি রয়েছে। বিশেষ করে সরকারি হাসপাতালগুলোতে ঘাটতি বেশি। ফলে রোগীরা শুধু ভোগান্তিতেই পড়ছেন না; বরং গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকিরও সম্মুখীন হচ্ছেন। দীর্ঘ সময় শৌচাগার ব্যবহার করতে না পারার ফলে কিডনি জটিলতা, ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (মূত্রনালি সংক্রমণ) ও পানিশূন্যতাসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিষয়ক গবেষণা প্রকাশনা সংস্থা পাবলিক লাইব্রেরি অব সায়েন্সের প্লস ওয়ান সাময়িকীতে বাংলাদেশে হাসপাতালের শৌচাগার নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ পায়। গবেষণার শিরোনাম ‘ইনঅ্যাডিক্যুইট স্যানিটেশন ইন হেলথকেয়ার ফ্যাসিলিটিজ: অ্যা কম্প্রিহেনসিভ ইভ্যালুয়েশন অব টয়লেটস ইন মেজর হাসপাতাল ইন ঢাকা, বাংলাদেশ’। গবেষণাটি করেছেন অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের নয়জন গবেষক।
গবেষণায় রাজধানীর ১০টি সরকারি ও ২টি বেসরকারি হাসপাতালে মোট ২ হাজার ৪৫৯টি শৌচাগার পর্যবেক্ষণ করা হয়। এর মধ্যে প্রতিবন্ধী রোগীদের উপযোগী শৌচাগারের সংখ্যা মাত্র ১০টি, যা ১ শতাংশেরও কম বা শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। প্রায় ৯৯ শতাংশ শৌচাগার হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী বা চলাফেরায় সীমাবদ্ধ রোগীদের জন্য ব্যবহারযোগ্য নয়। অধিকাংশ শৌচাগারে দরজা সংকীর্ণ, কমোডের উচ্চতা অনুপযুক্ত, গ্র্যাব-বার বা হাতল নেই এবং প্রবেশপথে র্যাম্পের সুবিধাও নেই। ফলে প্রতিবন্ধী রোগীরা শৌচাগার ব্যবহার করতে গিয়ে চরম ভোগান্তি এবং নিরাপত্তাহীনতায় পড়েন।
দেশে ক্যানসার রোগীদের জন্য সর্বোচ্চ সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল ঘুরে এখানকার দুটি ভবনের কোথাও প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য নির্ধারিত শৌচাগার পাওয়া যায়নি।
একইভাবে হৃদরোগ চিকিৎসার জন্য সরকারের বিশেষায়িত চিকিৎসাকেন্দ্র জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের তিনটি ভবনের কোথাও নেই প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য নির্ধারিত শৌচাগার। তাঁদের জন্য আলাদা শৌচাগার না থাকার কথা স্বীকার করেন এই হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখানে ভর্তি রোগীরা বেডসাইড টয়লেট ব্যবহার করেন। বিভিন্ন হাসপাতালের জন্য নতুন যেসব ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে, সেখানে প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য শৌচাগার, হুইলচেয়ার বা শয্যাসহ ওঠানামার জন্য প্রয়োজনীয় র্যাম্প রাখা প্রয়োজন।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে নির্ধারিত শয্যার ২-৩ গুণ রোগী ভর্তি থাকেন। দৈনিক বহির্বিভাগে রোগী আসেন সক্ষমতার ৪-৫ গুণ। স্বাভাবিক রোগীদের জন্য উন্নত শৌচাগারের ব্যবস্থাপনা নেই। প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্যও আলাদা শৌচাগার রাখা যায়নি। তবে আমরা এ বিষয়ে পরিকল্পনা করছি।’

দেশের মানুষের দীর্ঘমেয়াদি ও অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার ক্রমেই বাড়ছে। প্রতিবছর যত মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, তার দুই-তৃতীয়াংশের বেশি মারা যাচ্ছেন এসব রোগের কারণে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে, দেশের প্রায় ৫৩ শতাংশ পরিবারের অন্তত একজন সদস্য কোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত।
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছয় দফা দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে। শনিবার থেকে সারা দেশের স্বাস্থ্য সহকারীরা ঢাকায় এসে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন।
১৮ ঘণ্টা আগে
বেতনকাঠামোর দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে হাসপাতালসহ দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে রোগী এবং তাদের স্বজনেরা। গত ৩০ নভেম্বর থেকে...
১ দিন আগে
দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন আক্রান্ত ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন আক্রান্ত ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
এ নিয়ে চলতি বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৩৮৬ জনের মৃত্যু হলো। আর আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগী সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯৫ হাজার ৫৭৭। এর মধ্যে ৬২ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৭ দশমিক ৬ শতাংশ নারী।
আজ মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল সোমবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত তথ্য জানানো হয়।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে তাঁরা পুরুষ। তাঁদে বয়স যথাক্রমে ৫৫ ও ৬৫ বছর।
চলতি বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে নভেম্বর মাসে। ওই মাসে ১০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার আগে অক্টোবর মাসে ৮০ জন ও সেপ্টেম্বর মাসে ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৮২, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৯৫, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১২৭ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৮৮ জন, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৩, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৫, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩০, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) তিন ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) একজন রয়েছে।

দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন আক্রান্ত ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
এ নিয়ে চলতি বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৩৮৬ জনের মৃত্যু হলো। আর আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগী সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯৫ হাজার ৫৭৭। এর মধ্যে ৬২ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৭ দশমিক ৬ শতাংশ নারী।
আজ মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল সোমবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত তথ্য জানানো হয়।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে তাঁরা পুরুষ। তাঁদে বয়স যথাক্রমে ৫৫ ও ৬৫ বছর।
চলতি বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে নভেম্বর মাসে। ওই মাসে ১০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার আগে অক্টোবর মাসে ৮০ জন ও সেপ্টেম্বর মাসে ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৮২, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৯৫, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১২৭ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৮৮ জন, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৩, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৫, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩০, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) তিন ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) একজন রয়েছে।

দেশের মানুষের দীর্ঘমেয়াদি ও অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার ক্রমেই বাড়ছে। প্রতিবছর যত মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, তার দুই-তৃতীয়াংশের বেশি মারা যাচ্ছেন এসব রোগের কারণে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে, দেশের প্রায় ৫৩ শতাংশ পরিবারের অন্তত একজন সদস্য কোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত।
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছয় দফা দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে। শনিবার থেকে সারা দেশের স্বাস্থ্য সহকারীরা ঢাকায় এসে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন।
১৮ ঘণ্টা আগে
বেতনকাঠামোর দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে হাসপাতালসহ দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে রোগী এবং তাদের স্বজনেরা। গত ৩০ নভেম্বর থেকে...
১ দিন আগে
দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের হাসপাতালে প্রতিবছরই বাড়ছে সেবাগ্রহণকারীর সংখ্যা। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রেই শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য অথবা ন্যূনতম মানের নয়। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। আর প্রতিবন্ধী রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও তীব্র।
২ দিন আগে