ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

ফেসবুকে না জেনে হারাম খাচ্ছি—শিরোনামে একটি পোস্ট শেয়ার করা হচ্ছে। পোস্টটিতে একটি চকলেটের মোড়কের ছবি যুক্ত করে এমালসিফায়ার কোড নামে একটি কোড উল্লেখ করে বলা হচ্ছে, এমালসিফায়ার কোড নির্দেশ করে খাবারটি হারাম বা হালাল। এই কোডগুলোর একটি ই৪৭৬ (E476 )। এই কোডের অর্থ হচ্ছে PIG Fat অর্থাৎ শূকরের চর্বি ব্যবহার করা হয়েছে এমন পণ্য। পোস্টটের চকলেটের মোড়কে এই কোড রয়েছে।
গত ৩ ডিসেম্বর ফেসবুকে এমন দাবি করে ফাহাদ ইবনে হাসান হৃদয় নামের ফেসবুক পেজ থেকে দেওয়া এমন এক পোস্ট আজ মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) বেলা ১টা পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার বার শেয়ার হয়েছে। এতে রিয়েক্ট পড়েছে প্রায় ৪ হাজার। মন্তব্য পড়েছে ৪০০–এর বেশি। ফেসবুক ব্যবহারকারীদের এসব মন্তব্যে বিভিন্নজনকে সতর্ক করতে দেখা গেছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, কোড ই৪৭৬ মানেই সেটি পিগ ফ্যাট বা শূকরের চর্বি বিশিষ্ট নয়।
কোড ই৪৭৬ নিয়ে আলোচনার আগে এর সঙ্গে থাকা ই–এর অর্থ নিয়ে আলোচনা করা যাক। ইউরোপিয়ান ফুড সেফটি অথোরিটির (ইএফএসএ) ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, ই—যুক্ত নম্বর দিয়ে প্যাকেটজাত খাদ্যদ্রব্যে ব্যবহৃত ফুড অ্যাডিটিভস শনাক্ত করা হয়। ফুড অ্যাডিটিভস হলো এমন পদার্থ, যা প্যাকেটজাত খাদ্যদ্রব্যে বিশেষ কিছু কাজ যেমন, খাদ্যসামগ্রী রং করা, মিষ্টি করা বা খাবার সংরক্ষণে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। এই দ্রব্যগুলোকে সব সময় প্যাকেটজাত খাবারের মোড়কে উল্লেখিত উপাদান তালিকার সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করে দিতে হয়। খাদ্যের মোড়কে প্রদর্শিত সবচেয়ে সাধারণ ফুড অ্যাডিটিভ হলো— অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, রং, এমালসিফায়ার, স্টেবিলাইজার, জেলিং এজেন্টস ও থিকেনার্স, প্রিজারভেটিভস এবং সুইটেনার্স।
‘E476’ (অপর নাম পলিগ্লিসারল পলিরিসিনোলিয়েট) কোড দিয়ে একটি ‘এমালসিফায়ার’–কে নির্দেশ করা হয়। এমালসিফায়ার হচ্ছে এমন ফুড অ্যাডিটিভ যা প্যাকেটজাত খাবারে গুনগতমান দীর্ঘদিন ধরে রাখতে ব্যবহার করা হয়। এটি বিশেষত চকলেট তৈরির সময় থকথকে ভাব কমানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি এক ধরনের পলিগ্লিসারল এস্টার। পলিগ্লিসারলকে ঘনীভূত ক্যাস্টর অয়েল ফ্যাটি অ্যাসিড সহযোগে অ্যাস্টারিফিকেশনের মাধ্যমে এটি তৈরি করা হয়। এটির ইউপোরীয়ান ফুড অ্যাডিটিভ নম্বর E476।
এই এমালসিফায়ার ব্যবহার করে তৈরি খাদ্য কি ইসলাম ধর্মমতে হারাম— এমন জিজ্ঞাসায় হালাল বা হারাম সম্পর্কে যাচাইকারী যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হারাম অর হালাল ডট ইউকে এক নিবন্ধে জানায়, প্যাকেটজাত খাদ্যদ্রব্যে ব্যবহৃত ই–যুক্ত নম্বরে ‘ই’ দিয়ে ইউরোপ বোঝায়। ‘ই’ কোড দ্বারা ইউরোপিয়ান ফুড সেফটি অথোরিটি (ইএফএসএ) অনুমোদিত খাদ্যদ্রব্যে ব্যবহৃত বিশেষ উপাদানকে (ফুড অ্যাডিটিভ) নির্দেশ করা হয়।
ইউরোপে ১৯৬২ সালে সর্বপ্রথম ফুড কালারিং এজেন্টে ‘ই’ নম্বর ব্যবহার করা হয়। পরবর্তীতে প্রিজারভেটিভস, এমালসিফায়ার, জেলিং এজেন্ট ও থিকেনারসহ আরও বেশ কিছু উপাদান এই তালিকায় যুক্ত করা হয়।
ওয়েবসাইটটিতে বলা হয়, ই৪৭৬ হলো হলুদাভ বর্ণের একটি এমালসিফায়ার। চকলেট, পাউরুটি, সালাদ ও বিস্কুটের মতো খাদ্যপণ্যে এই এমালসিফায়ার ব্যবহার করা হয়। নির্দিষ্ট কিছু উদ্ভিদ ও শূকর ই৪৭৬–এর অন্যতম উৎস। তাই এই এমালসিফায়ার দিয়ে তৈরি পণ্যের ক্ষেত্রে ইসলামি শরিয়তের নির্দেশনা হচ্ছে মাশবূহ, অর্থাৎ এটি হালাল নাকি হারাম তা স্পষ্ট নয়। তবে কোনো পণ্যে ব্যবহৃত ই৪৭৬–এর উৎস সম্পর্কে যদি নিশ্চিত জানা যায় এবং সেটি যদি হয় শূকরের চর্বি তাহলে হারাম হওয়ার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।
ইসলামি জিজ্ঞাসার ওয়েবসাইট ইসলামকিউএতে মুসলমানদের জন্য ই৪৭৬ হালাল না হারাম সে সম্পর্কে আলোচনা পাওয়া যায়। যুক্তরাজ্যের মুসলমানদের বিভিন্ন বিষয়ে মাসআলা–মাসায়েল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান দারুল ইফতা বার্মিংহামের মুফতি মোহাম্মদ তছির মিয়ার অনুমোদন নিয়ে ওয়েবসাইটটিতে ই৪৭৬ সম্পর্কে মাওলানা মুকতাউর রহমান নামে একজন আলেম লেখেন, ই৪৭৬ এমালসিফায়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি কৃত্রিম চর্বি বা উদ্ভিজ্জ চর্বির সঙ্গে অন্যান্য উপাদান মিশিয়ে তৈরি করা হয় এবং খাওয়া হালাল।
ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দের ওয়েবসাইটে অনেকগুলো ‘ই’ কোডের সঙ্গে ই৪৭৬ হালাল নাকি হারাম সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে মাদ্রাসাটির ফতোয়া বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, আমাদের কাছে এই কোড নম্বরগুলো হারাম হওয়ার ব্যাপারে কোনো নিশ্চিত তথ্য নেই।
ইসলামিক রিলিজিয়াস কাউন্সিল অব সিঙ্গাপুর, সিঙ্গাপুরের একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি হালাল সার্টিফিকেশন পরিষেবা দেয় এবং দেশটির হালাল শিল্প নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে ফুড অ্যাডিটিভের একটি তালিকা খুঁজে পাওয়া যায়। তালিকাটিতে ই৪৭৬ যুক্ত পণ্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে সরাসরি হালাল বা হারাম কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। বরং বলা হয়েছে, এর বৈধতা নির্ভর করে ই৪৭৬–এর উপাদান কোন উৎস থেকে এসেছে বা এর উৎপাদন প্রক্রিয়ার ওপর।
পাকিস্তানের কমসেটস ইউনিভার্সিটি ইসলামাবাদের সেন্টার অব ইসলামিক ফাইন্যান্স তাদের ওয়েবসাইটে ই৪৭৬ সম্পর্কে জানায়, মুসলমানদের জন্য এটির ব্যবহারের নির্দেশনা হলো ‘মাশবূহ’, অর্থাৎ হালাল–হারাম স্পষ্ট নয়। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে হারাম ‘ই’ নম্বর হিসেবে ই১২০ উল্লেখ করা হয়েছে। এটি কিছু অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়, লাল আপেল সস, মাংস, দই ইত্যাদি পণ্যে ব্যবহার করা হয়।
ই৪৭৬ সম্পর্কে শিয়া মুসলিমদের আধ্যাত্মিক নেতা আলী আল হোসাইনী আল সিস্তানির অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, যদি ই৪৭৬ উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে আসে, তবে হালাল। যদি পশু উৎস থেকে আসে, তবে হালাল–হারাম নির্ভর করে ওই পশুটিকে শরিয়ামতে জবাই করা হয়েছে কি না তার ওপর।
ওপরের এসব আলোচনা থেকে স্পষ্ট, কোনো পণ্যের মোড়কে ই৪৭৬ থাকলেই সেটি হারাম বলা যাবে না। বরং ই৪৭৬ হালাল না হারাম তা নির্ভর করে এটি কোন উপাদান দিয়ে তৈরি আর এসবের উৎস কী। ই৪৭৬ যদি উদ্ভিজ্জ চর্বি থেকে উৎপাদিত হয়, তাহলে সেটি হালাল।
উদ্ভিজ্জ উপাদান দিয়ে তৈরি কিনা বোঝা যাবে কীভাবে
কোনো পণ্য উদ্ভিজ্জ না প্রাণীজ উপাদান দিয়ে তৈরি তা বোঝা যায় পণ্যটির মোড়ক যাচাই করে। যদি কোনো খাদ্যপণ্যের গায়ে সাদা বর্গের ভেতর সবুজ বৃত্ত থাকে, তবে বুঝতে হবে সেই খাবারটি কেবল উদ্ভিজ্জ উপাদান দিয়ে তৈরি। এতে কোনো ধরনের প্রাণিজ উপকরণ নেই। অপরদিকে প্যাকেটের গায়ে সবুজের পরিবর্তে বাদামি বৃত্ত থাকলে তা নির্দেশ করে এই খাবারে প্রাণিজ উপকরণের অস্তিত্ব আছে।
যদি কোনো পণ্যের মোড়কে পণ্যের উপাদান তালিকায় ই৪৭৬ কোড এবং একই মোড়কে যদি সাদা বর্গের ভেতর সবুজ বৃত্তের চিহ্ন থাকে তাহলে ইসলামি বিশেষজ্ঞদের মতে, সেটি খাওয়া হালাল। তাই ফেসবুকে প্রচারিত চকলেটসহ কোনো পণ্যের মোড়কে উপরোক্ত বিষয়গুলোর উল্লেখ থাকলে সেটি মুসলমানদের জন্য হারাম নয়।
সিদ্ধান্ত
খাদ্যসামগ্রী রঙিন করতে, মিষ্টি বা সুস্বাদু করতে আবার কখনো খাবার সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে খাবারে বিভিন্ন উপাদান সংযোজন করা হয়, এগুলোকে বলে ফুড অ্যাডিটিভ। ইউরোপের খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থা নিরাপদ ফুড অ্যাডিটিভের তালিকা দেয়। এসব অ্যাডিটিভকে চিহ্নিত করতে ইংরেজি ‘ই’ অক্ষরের পর নির্দিষ্ট নম্বর দেওয়া হয়। ‘এমালসিফায়ার’ এমন একটি ফুড অ্যাডিটিভ।
ই৪৭৬ নম্বরযুক্ত এমালসিফায়ার মূলত চকলেট জাতীয় খাদ্যে ব্যবহার করা হয়। এটি প্রাণিজ বা উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে পাওয়া যায়। এই ফুড অ্যাডিটিভ যুক্ত খাবার মুসলমানদের জন্য হালাল নাকি হারাম সেটি নির্ভর করে উপাদানটির উৎসের ওপর।

ফেসবুকে না জেনে হারাম খাচ্ছি—শিরোনামে একটি পোস্ট শেয়ার করা হচ্ছে। পোস্টটিতে একটি চকলেটের মোড়কের ছবি যুক্ত করে এমালসিফায়ার কোড নামে একটি কোড উল্লেখ করে বলা হচ্ছে, এমালসিফায়ার কোড নির্দেশ করে খাবারটি হারাম বা হালাল। এই কোডগুলোর একটি ই৪৭৬ (E476 )। এই কোডের অর্থ হচ্ছে PIG Fat অর্থাৎ শূকরের চর্বি ব্যবহার করা হয়েছে এমন পণ্য। পোস্টটের চকলেটের মোড়কে এই কোড রয়েছে।
গত ৩ ডিসেম্বর ফেসবুকে এমন দাবি করে ফাহাদ ইবনে হাসান হৃদয় নামের ফেসবুক পেজ থেকে দেওয়া এমন এক পোস্ট আজ মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) বেলা ১টা পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার বার শেয়ার হয়েছে। এতে রিয়েক্ট পড়েছে প্রায় ৪ হাজার। মন্তব্য পড়েছে ৪০০–এর বেশি। ফেসবুক ব্যবহারকারীদের এসব মন্তব্যে বিভিন্নজনকে সতর্ক করতে দেখা গেছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, কোড ই৪৭৬ মানেই সেটি পিগ ফ্যাট বা শূকরের চর্বি বিশিষ্ট নয়।
কোড ই৪৭৬ নিয়ে আলোচনার আগে এর সঙ্গে থাকা ই–এর অর্থ নিয়ে আলোচনা করা যাক। ইউরোপিয়ান ফুড সেফটি অথোরিটির (ইএফএসএ) ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, ই—যুক্ত নম্বর দিয়ে প্যাকেটজাত খাদ্যদ্রব্যে ব্যবহৃত ফুড অ্যাডিটিভস শনাক্ত করা হয়। ফুড অ্যাডিটিভস হলো এমন পদার্থ, যা প্যাকেটজাত খাদ্যদ্রব্যে বিশেষ কিছু কাজ যেমন, খাদ্যসামগ্রী রং করা, মিষ্টি করা বা খাবার সংরক্ষণে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। এই দ্রব্যগুলোকে সব সময় প্যাকেটজাত খাবারের মোড়কে উল্লেখিত উপাদান তালিকার সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করে দিতে হয়। খাদ্যের মোড়কে প্রদর্শিত সবচেয়ে সাধারণ ফুড অ্যাডিটিভ হলো— অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, রং, এমালসিফায়ার, স্টেবিলাইজার, জেলিং এজেন্টস ও থিকেনার্স, প্রিজারভেটিভস এবং সুইটেনার্স।
‘E476’ (অপর নাম পলিগ্লিসারল পলিরিসিনোলিয়েট) কোড দিয়ে একটি ‘এমালসিফায়ার’–কে নির্দেশ করা হয়। এমালসিফায়ার হচ্ছে এমন ফুড অ্যাডিটিভ যা প্যাকেটজাত খাবারে গুনগতমান দীর্ঘদিন ধরে রাখতে ব্যবহার করা হয়। এটি বিশেষত চকলেট তৈরির সময় থকথকে ভাব কমানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি এক ধরনের পলিগ্লিসারল এস্টার। পলিগ্লিসারলকে ঘনীভূত ক্যাস্টর অয়েল ফ্যাটি অ্যাসিড সহযোগে অ্যাস্টারিফিকেশনের মাধ্যমে এটি তৈরি করা হয়। এটির ইউপোরীয়ান ফুড অ্যাডিটিভ নম্বর E476।
এই এমালসিফায়ার ব্যবহার করে তৈরি খাদ্য কি ইসলাম ধর্মমতে হারাম— এমন জিজ্ঞাসায় হালাল বা হারাম সম্পর্কে যাচাইকারী যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হারাম অর হালাল ডট ইউকে এক নিবন্ধে জানায়, প্যাকেটজাত খাদ্যদ্রব্যে ব্যবহৃত ই–যুক্ত নম্বরে ‘ই’ দিয়ে ইউরোপ বোঝায়। ‘ই’ কোড দ্বারা ইউরোপিয়ান ফুড সেফটি অথোরিটি (ইএফএসএ) অনুমোদিত খাদ্যদ্রব্যে ব্যবহৃত বিশেষ উপাদানকে (ফুড অ্যাডিটিভ) নির্দেশ করা হয়।
ইউরোপে ১৯৬২ সালে সর্বপ্রথম ফুড কালারিং এজেন্টে ‘ই’ নম্বর ব্যবহার করা হয়। পরবর্তীতে প্রিজারভেটিভস, এমালসিফায়ার, জেলিং এজেন্ট ও থিকেনারসহ আরও বেশ কিছু উপাদান এই তালিকায় যুক্ত করা হয়।
ওয়েবসাইটটিতে বলা হয়, ই৪৭৬ হলো হলুদাভ বর্ণের একটি এমালসিফায়ার। চকলেট, পাউরুটি, সালাদ ও বিস্কুটের মতো খাদ্যপণ্যে এই এমালসিফায়ার ব্যবহার করা হয়। নির্দিষ্ট কিছু উদ্ভিদ ও শূকর ই৪৭৬–এর অন্যতম উৎস। তাই এই এমালসিফায়ার দিয়ে তৈরি পণ্যের ক্ষেত্রে ইসলামি শরিয়তের নির্দেশনা হচ্ছে মাশবূহ, অর্থাৎ এটি হালাল নাকি হারাম তা স্পষ্ট নয়। তবে কোনো পণ্যে ব্যবহৃত ই৪৭৬–এর উৎস সম্পর্কে যদি নিশ্চিত জানা যায় এবং সেটি যদি হয় শূকরের চর্বি তাহলে হারাম হওয়ার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।
ইসলামি জিজ্ঞাসার ওয়েবসাইট ইসলামকিউএতে মুসলমানদের জন্য ই৪৭৬ হালাল না হারাম সে সম্পর্কে আলোচনা পাওয়া যায়। যুক্তরাজ্যের মুসলমানদের বিভিন্ন বিষয়ে মাসআলা–মাসায়েল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান দারুল ইফতা বার্মিংহামের মুফতি মোহাম্মদ তছির মিয়ার অনুমোদন নিয়ে ওয়েবসাইটটিতে ই৪৭৬ সম্পর্কে মাওলানা মুকতাউর রহমান নামে একজন আলেম লেখেন, ই৪৭৬ এমালসিফায়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি কৃত্রিম চর্বি বা উদ্ভিজ্জ চর্বির সঙ্গে অন্যান্য উপাদান মিশিয়ে তৈরি করা হয় এবং খাওয়া হালাল।
ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দের ওয়েবসাইটে অনেকগুলো ‘ই’ কোডের সঙ্গে ই৪৭৬ হালাল নাকি হারাম সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে মাদ্রাসাটির ফতোয়া বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, আমাদের কাছে এই কোড নম্বরগুলো হারাম হওয়ার ব্যাপারে কোনো নিশ্চিত তথ্য নেই।
ইসলামিক রিলিজিয়াস কাউন্সিল অব সিঙ্গাপুর, সিঙ্গাপুরের একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি হালাল সার্টিফিকেশন পরিষেবা দেয় এবং দেশটির হালাল শিল্প নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে ফুড অ্যাডিটিভের একটি তালিকা খুঁজে পাওয়া যায়। তালিকাটিতে ই৪৭৬ যুক্ত পণ্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে সরাসরি হালাল বা হারাম কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। বরং বলা হয়েছে, এর বৈধতা নির্ভর করে ই৪৭৬–এর উপাদান কোন উৎস থেকে এসেছে বা এর উৎপাদন প্রক্রিয়ার ওপর।
পাকিস্তানের কমসেটস ইউনিভার্সিটি ইসলামাবাদের সেন্টার অব ইসলামিক ফাইন্যান্স তাদের ওয়েবসাইটে ই৪৭৬ সম্পর্কে জানায়, মুসলমানদের জন্য এটির ব্যবহারের নির্দেশনা হলো ‘মাশবূহ’, অর্থাৎ হালাল–হারাম স্পষ্ট নয়। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে হারাম ‘ই’ নম্বর হিসেবে ই১২০ উল্লেখ করা হয়েছে। এটি কিছু অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়, লাল আপেল সস, মাংস, দই ইত্যাদি পণ্যে ব্যবহার করা হয়।
ই৪৭৬ সম্পর্কে শিয়া মুসলিমদের আধ্যাত্মিক নেতা আলী আল হোসাইনী আল সিস্তানির অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, যদি ই৪৭৬ উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে আসে, তবে হালাল। যদি পশু উৎস থেকে আসে, তবে হালাল–হারাম নির্ভর করে ওই পশুটিকে শরিয়ামতে জবাই করা হয়েছে কি না তার ওপর।
ওপরের এসব আলোচনা থেকে স্পষ্ট, কোনো পণ্যের মোড়কে ই৪৭৬ থাকলেই সেটি হারাম বলা যাবে না। বরং ই৪৭৬ হালাল না হারাম তা নির্ভর করে এটি কোন উপাদান দিয়ে তৈরি আর এসবের উৎস কী। ই৪৭৬ যদি উদ্ভিজ্জ চর্বি থেকে উৎপাদিত হয়, তাহলে সেটি হালাল।
উদ্ভিজ্জ উপাদান দিয়ে তৈরি কিনা বোঝা যাবে কীভাবে
কোনো পণ্য উদ্ভিজ্জ না প্রাণীজ উপাদান দিয়ে তৈরি তা বোঝা যায় পণ্যটির মোড়ক যাচাই করে। যদি কোনো খাদ্যপণ্যের গায়ে সাদা বর্গের ভেতর সবুজ বৃত্ত থাকে, তবে বুঝতে হবে সেই খাবারটি কেবল উদ্ভিজ্জ উপাদান দিয়ে তৈরি। এতে কোনো ধরনের প্রাণিজ উপকরণ নেই। অপরদিকে প্যাকেটের গায়ে সবুজের পরিবর্তে বাদামি বৃত্ত থাকলে তা নির্দেশ করে এই খাবারে প্রাণিজ উপকরণের অস্তিত্ব আছে।
যদি কোনো পণ্যের মোড়কে পণ্যের উপাদান তালিকায় ই৪৭৬ কোড এবং একই মোড়কে যদি সাদা বর্গের ভেতর সবুজ বৃত্তের চিহ্ন থাকে তাহলে ইসলামি বিশেষজ্ঞদের মতে, সেটি খাওয়া হালাল। তাই ফেসবুকে প্রচারিত চকলেটসহ কোনো পণ্যের মোড়কে উপরোক্ত বিষয়গুলোর উল্লেখ থাকলে সেটি মুসলমানদের জন্য হারাম নয়।
সিদ্ধান্ত
খাদ্যসামগ্রী রঙিন করতে, মিষ্টি বা সুস্বাদু করতে আবার কখনো খাবার সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে খাবারে বিভিন্ন উপাদান সংযোজন করা হয়, এগুলোকে বলে ফুড অ্যাডিটিভ। ইউরোপের খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থা নিরাপদ ফুড অ্যাডিটিভের তালিকা দেয়। এসব অ্যাডিটিভকে চিহ্নিত করতে ইংরেজি ‘ই’ অক্ষরের পর নির্দিষ্ট নম্বর দেওয়া হয়। ‘এমালসিফায়ার’ এমন একটি ফুড অ্যাডিটিভ।
ই৪৭৬ নম্বরযুক্ত এমালসিফায়ার মূলত চকলেট জাতীয় খাদ্যে ব্যবহার করা হয়। এটি প্রাণিজ বা উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে পাওয়া যায়। এই ফুড অ্যাডিটিভ যুক্ত খাবার মুসলমানদের জন্য হালাল নাকি হারাম সেটি নির্ভর করে উপাদানটির উৎসের ওপর।
ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

ফেসবুকে না জেনে হারাম খাচ্ছি—শিরোনামে একটি পোস্ট শেয়ার করা হচ্ছে। পোস্টটিতে একটি চকলেটের মোড়কের ছবি যুক্ত করে এমালসিফায়ার কোড নামে একটি কোড উল্লেখ করে বলা হচ্ছে, এমালসিফায়ার কোড নির্দেশ করে খাবারটি হারাম বা হালাল। এই কোডগুলোর একটি ই৪৭৬ (E476 )। এই কোডের অর্থ হচ্ছে PIG Fat অর্থাৎ শূকরের চর্বি ব্যবহার করা হয়েছে এমন পণ্য। পোস্টটের চকলেটের মোড়কে এই কোড রয়েছে।
গত ৩ ডিসেম্বর ফেসবুকে এমন দাবি করে ফাহাদ ইবনে হাসান হৃদয় নামের ফেসবুক পেজ থেকে দেওয়া এমন এক পোস্ট আজ মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) বেলা ১টা পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার বার শেয়ার হয়েছে। এতে রিয়েক্ট পড়েছে প্রায় ৪ হাজার। মন্তব্য পড়েছে ৪০০–এর বেশি। ফেসবুক ব্যবহারকারীদের এসব মন্তব্যে বিভিন্নজনকে সতর্ক করতে দেখা গেছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, কোড ই৪৭৬ মানেই সেটি পিগ ফ্যাট বা শূকরের চর্বি বিশিষ্ট নয়।
কোড ই৪৭৬ নিয়ে আলোচনার আগে এর সঙ্গে থাকা ই–এর অর্থ নিয়ে আলোচনা করা যাক। ইউরোপিয়ান ফুড সেফটি অথোরিটির (ইএফএসএ) ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, ই—যুক্ত নম্বর দিয়ে প্যাকেটজাত খাদ্যদ্রব্যে ব্যবহৃত ফুড অ্যাডিটিভস শনাক্ত করা হয়। ফুড অ্যাডিটিভস হলো এমন পদার্থ, যা প্যাকেটজাত খাদ্যদ্রব্যে বিশেষ কিছু কাজ যেমন, খাদ্যসামগ্রী রং করা, মিষ্টি করা বা খাবার সংরক্ষণে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। এই দ্রব্যগুলোকে সব সময় প্যাকেটজাত খাবারের মোড়কে উল্লেখিত উপাদান তালিকার সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করে দিতে হয়। খাদ্যের মোড়কে প্রদর্শিত সবচেয়ে সাধারণ ফুড অ্যাডিটিভ হলো— অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, রং, এমালসিফায়ার, স্টেবিলাইজার, জেলিং এজেন্টস ও থিকেনার্স, প্রিজারভেটিভস এবং সুইটেনার্স।
‘E476’ (অপর নাম পলিগ্লিসারল পলিরিসিনোলিয়েট) কোড দিয়ে একটি ‘এমালসিফায়ার’–কে নির্দেশ করা হয়। এমালসিফায়ার হচ্ছে এমন ফুড অ্যাডিটিভ যা প্যাকেটজাত খাবারে গুনগতমান দীর্ঘদিন ধরে রাখতে ব্যবহার করা হয়। এটি বিশেষত চকলেট তৈরির সময় থকথকে ভাব কমানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি এক ধরনের পলিগ্লিসারল এস্টার। পলিগ্লিসারলকে ঘনীভূত ক্যাস্টর অয়েল ফ্যাটি অ্যাসিড সহযোগে অ্যাস্টারিফিকেশনের মাধ্যমে এটি তৈরি করা হয়। এটির ইউপোরীয়ান ফুড অ্যাডিটিভ নম্বর E476।
এই এমালসিফায়ার ব্যবহার করে তৈরি খাদ্য কি ইসলাম ধর্মমতে হারাম— এমন জিজ্ঞাসায় হালাল বা হারাম সম্পর্কে যাচাইকারী যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হারাম অর হালাল ডট ইউকে এক নিবন্ধে জানায়, প্যাকেটজাত খাদ্যদ্রব্যে ব্যবহৃত ই–যুক্ত নম্বরে ‘ই’ দিয়ে ইউরোপ বোঝায়। ‘ই’ কোড দ্বারা ইউরোপিয়ান ফুড সেফটি অথোরিটি (ইএফএসএ) অনুমোদিত খাদ্যদ্রব্যে ব্যবহৃত বিশেষ উপাদানকে (ফুড অ্যাডিটিভ) নির্দেশ করা হয়।
ইউরোপে ১৯৬২ সালে সর্বপ্রথম ফুড কালারিং এজেন্টে ‘ই’ নম্বর ব্যবহার করা হয়। পরবর্তীতে প্রিজারভেটিভস, এমালসিফায়ার, জেলিং এজেন্ট ও থিকেনারসহ আরও বেশ কিছু উপাদান এই তালিকায় যুক্ত করা হয়।
ওয়েবসাইটটিতে বলা হয়, ই৪৭৬ হলো হলুদাভ বর্ণের একটি এমালসিফায়ার। চকলেট, পাউরুটি, সালাদ ও বিস্কুটের মতো খাদ্যপণ্যে এই এমালসিফায়ার ব্যবহার করা হয়। নির্দিষ্ট কিছু উদ্ভিদ ও শূকর ই৪৭৬–এর অন্যতম উৎস। তাই এই এমালসিফায়ার দিয়ে তৈরি পণ্যের ক্ষেত্রে ইসলামি শরিয়তের নির্দেশনা হচ্ছে মাশবূহ, অর্থাৎ এটি হালাল নাকি হারাম তা স্পষ্ট নয়। তবে কোনো পণ্যে ব্যবহৃত ই৪৭৬–এর উৎস সম্পর্কে যদি নিশ্চিত জানা যায় এবং সেটি যদি হয় শূকরের চর্বি তাহলে হারাম হওয়ার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।
ইসলামি জিজ্ঞাসার ওয়েবসাইট ইসলামকিউএতে মুসলমানদের জন্য ই৪৭৬ হালাল না হারাম সে সম্পর্কে আলোচনা পাওয়া যায়। যুক্তরাজ্যের মুসলমানদের বিভিন্ন বিষয়ে মাসআলা–মাসায়েল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান দারুল ইফতা বার্মিংহামের মুফতি মোহাম্মদ তছির মিয়ার অনুমোদন নিয়ে ওয়েবসাইটটিতে ই৪৭৬ সম্পর্কে মাওলানা মুকতাউর রহমান নামে একজন আলেম লেখেন, ই৪৭৬ এমালসিফায়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি কৃত্রিম চর্বি বা উদ্ভিজ্জ চর্বির সঙ্গে অন্যান্য উপাদান মিশিয়ে তৈরি করা হয় এবং খাওয়া হালাল।
ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দের ওয়েবসাইটে অনেকগুলো ‘ই’ কোডের সঙ্গে ই৪৭৬ হালাল নাকি হারাম সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে মাদ্রাসাটির ফতোয়া বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, আমাদের কাছে এই কোড নম্বরগুলো হারাম হওয়ার ব্যাপারে কোনো নিশ্চিত তথ্য নেই।
ইসলামিক রিলিজিয়াস কাউন্সিল অব সিঙ্গাপুর, সিঙ্গাপুরের একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি হালাল সার্টিফিকেশন পরিষেবা দেয় এবং দেশটির হালাল শিল্প নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে ফুড অ্যাডিটিভের একটি তালিকা খুঁজে পাওয়া যায়। তালিকাটিতে ই৪৭৬ যুক্ত পণ্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে সরাসরি হালাল বা হারাম কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। বরং বলা হয়েছে, এর বৈধতা নির্ভর করে ই৪৭৬–এর উপাদান কোন উৎস থেকে এসেছে বা এর উৎপাদন প্রক্রিয়ার ওপর।
পাকিস্তানের কমসেটস ইউনিভার্সিটি ইসলামাবাদের সেন্টার অব ইসলামিক ফাইন্যান্স তাদের ওয়েবসাইটে ই৪৭৬ সম্পর্কে জানায়, মুসলমানদের জন্য এটির ব্যবহারের নির্দেশনা হলো ‘মাশবূহ’, অর্থাৎ হালাল–হারাম স্পষ্ট নয়। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে হারাম ‘ই’ নম্বর হিসেবে ই১২০ উল্লেখ করা হয়েছে। এটি কিছু অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়, লাল আপেল সস, মাংস, দই ইত্যাদি পণ্যে ব্যবহার করা হয়।
ই৪৭৬ সম্পর্কে শিয়া মুসলিমদের আধ্যাত্মিক নেতা আলী আল হোসাইনী আল সিস্তানির অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, যদি ই৪৭৬ উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে আসে, তবে হালাল। যদি পশু উৎস থেকে আসে, তবে হালাল–হারাম নির্ভর করে ওই পশুটিকে শরিয়ামতে জবাই করা হয়েছে কি না তার ওপর।
ওপরের এসব আলোচনা থেকে স্পষ্ট, কোনো পণ্যের মোড়কে ই৪৭৬ থাকলেই সেটি হারাম বলা যাবে না। বরং ই৪৭৬ হালাল না হারাম তা নির্ভর করে এটি কোন উপাদান দিয়ে তৈরি আর এসবের উৎস কী। ই৪৭৬ যদি উদ্ভিজ্জ চর্বি থেকে উৎপাদিত হয়, তাহলে সেটি হালাল।
উদ্ভিজ্জ উপাদান দিয়ে তৈরি কিনা বোঝা যাবে কীভাবে
কোনো পণ্য উদ্ভিজ্জ না প্রাণীজ উপাদান দিয়ে তৈরি তা বোঝা যায় পণ্যটির মোড়ক যাচাই করে। যদি কোনো খাদ্যপণ্যের গায়ে সাদা বর্গের ভেতর সবুজ বৃত্ত থাকে, তবে বুঝতে হবে সেই খাবারটি কেবল উদ্ভিজ্জ উপাদান দিয়ে তৈরি। এতে কোনো ধরনের প্রাণিজ উপকরণ নেই। অপরদিকে প্যাকেটের গায়ে সবুজের পরিবর্তে বাদামি বৃত্ত থাকলে তা নির্দেশ করে এই খাবারে প্রাণিজ উপকরণের অস্তিত্ব আছে।
যদি কোনো পণ্যের মোড়কে পণ্যের উপাদান তালিকায় ই৪৭৬ কোড এবং একই মোড়কে যদি সাদা বর্গের ভেতর সবুজ বৃত্তের চিহ্ন থাকে তাহলে ইসলামি বিশেষজ্ঞদের মতে, সেটি খাওয়া হালাল। তাই ফেসবুকে প্রচারিত চকলেটসহ কোনো পণ্যের মোড়কে উপরোক্ত বিষয়গুলোর উল্লেখ থাকলে সেটি মুসলমানদের জন্য হারাম নয়।
সিদ্ধান্ত
খাদ্যসামগ্রী রঙিন করতে, মিষ্টি বা সুস্বাদু করতে আবার কখনো খাবার সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে খাবারে বিভিন্ন উপাদান সংযোজন করা হয়, এগুলোকে বলে ফুড অ্যাডিটিভ। ইউরোপের খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থা নিরাপদ ফুড অ্যাডিটিভের তালিকা দেয়। এসব অ্যাডিটিভকে চিহ্নিত করতে ইংরেজি ‘ই’ অক্ষরের পর নির্দিষ্ট নম্বর দেওয়া হয়। ‘এমালসিফায়ার’ এমন একটি ফুড অ্যাডিটিভ।
ই৪৭৬ নম্বরযুক্ত এমালসিফায়ার মূলত চকলেট জাতীয় খাদ্যে ব্যবহার করা হয়। এটি প্রাণিজ বা উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে পাওয়া যায়। এই ফুড অ্যাডিটিভ যুক্ত খাবার মুসলমানদের জন্য হালাল নাকি হারাম সেটি নির্ভর করে উপাদানটির উৎসের ওপর।

ফেসবুকে না জেনে হারাম খাচ্ছি—শিরোনামে একটি পোস্ট শেয়ার করা হচ্ছে। পোস্টটিতে একটি চকলেটের মোড়কের ছবি যুক্ত করে এমালসিফায়ার কোড নামে একটি কোড উল্লেখ করে বলা হচ্ছে, এমালসিফায়ার কোড নির্দেশ করে খাবারটি হারাম বা হালাল। এই কোডগুলোর একটি ই৪৭৬ (E476 )। এই কোডের অর্থ হচ্ছে PIG Fat অর্থাৎ শূকরের চর্বি ব্যবহার করা হয়েছে এমন পণ্য। পোস্টটের চকলেটের মোড়কে এই কোড রয়েছে।
গত ৩ ডিসেম্বর ফেসবুকে এমন দাবি করে ফাহাদ ইবনে হাসান হৃদয় নামের ফেসবুক পেজ থেকে দেওয়া এমন এক পোস্ট আজ মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) বেলা ১টা পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার বার শেয়ার হয়েছে। এতে রিয়েক্ট পড়েছে প্রায় ৪ হাজার। মন্তব্য পড়েছে ৪০০–এর বেশি। ফেসবুক ব্যবহারকারীদের এসব মন্তব্যে বিভিন্নজনকে সতর্ক করতে দেখা গেছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, কোড ই৪৭৬ মানেই সেটি পিগ ফ্যাট বা শূকরের চর্বি বিশিষ্ট নয়।
কোড ই৪৭৬ নিয়ে আলোচনার আগে এর সঙ্গে থাকা ই–এর অর্থ নিয়ে আলোচনা করা যাক। ইউরোপিয়ান ফুড সেফটি অথোরিটির (ইএফএসএ) ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, ই—যুক্ত নম্বর দিয়ে প্যাকেটজাত খাদ্যদ্রব্যে ব্যবহৃত ফুড অ্যাডিটিভস শনাক্ত করা হয়। ফুড অ্যাডিটিভস হলো এমন পদার্থ, যা প্যাকেটজাত খাদ্যদ্রব্যে বিশেষ কিছু কাজ যেমন, খাদ্যসামগ্রী রং করা, মিষ্টি করা বা খাবার সংরক্ষণে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। এই দ্রব্যগুলোকে সব সময় প্যাকেটজাত খাবারের মোড়কে উল্লেখিত উপাদান তালিকার সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করে দিতে হয়। খাদ্যের মোড়কে প্রদর্শিত সবচেয়ে সাধারণ ফুড অ্যাডিটিভ হলো— অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, রং, এমালসিফায়ার, স্টেবিলাইজার, জেলিং এজেন্টস ও থিকেনার্স, প্রিজারভেটিভস এবং সুইটেনার্স।
‘E476’ (অপর নাম পলিগ্লিসারল পলিরিসিনোলিয়েট) কোড দিয়ে একটি ‘এমালসিফায়ার’–কে নির্দেশ করা হয়। এমালসিফায়ার হচ্ছে এমন ফুড অ্যাডিটিভ যা প্যাকেটজাত খাবারে গুনগতমান দীর্ঘদিন ধরে রাখতে ব্যবহার করা হয়। এটি বিশেষত চকলেট তৈরির সময় থকথকে ভাব কমানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি এক ধরনের পলিগ্লিসারল এস্টার। পলিগ্লিসারলকে ঘনীভূত ক্যাস্টর অয়েল ফ্যাটি অ্যাসিড সহযোগে অ্যাস্টারিফিকেশনের মাধ্যমে এটি তৈরি করা হয়। এটির ইউপোরীয়ান ফুড অ্যাডিটিভ নম্বর E476।
এই এমালসিফায়ার ব্যবহার করে তৈরি খাদ্য কি ইসলাম ধর্মমতে হারাম— এমন জিজ্ঞাসায় হালাল বা হারাম সম্পর্কে যাচাইকারী যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হারাম অর হালাল ডট ইউকে এক নিবন্ধে জানায়, প্যাকেটজাত খাদ্যদ্রব্যে ব্যবহৃত ই–যুক্ত নম্বরে ‘ই’ দিয়ে ইউরোপ বোঝায়। ‘ই’ কোড দ্বারা ইউরোপিয়ান ফুড সেফটি অথোরিটি (ইএফএসএ) অনুমোদিত খাদ্যদ্রব্যে ব্যবহৃত বিশেষ উপাদানকে (ফুড অ্যাডিটিভ) নির্দেশ করা হয়।
ইউরোপে ১৯৬২ সালে সর্বপ্রথম ফুড কালারিং এজেন্টে ‘ই’ নম্বর ব্যবহার করা হয়। পরবর্তীতে প্রিজারভেটিভস, এমালসিফায়ার, জেলিং এজেন্ট ও থিকেনারসহ আরও বেশ কিছু উপাদান এই তালিকায় যুক্ত করা হয়।
ওয়েবসাইটটিতে বলা হয়, ই৪৭৬ হলো হলুদাভ বর্ণের একটি এমালসিফায়ার। চকলেট, পাউরুটি, সালাদ ও বিস্কুটের মতো খাদ্যপণ্যে এই এমালসিফায়ার ব্যবহার করা হয়। নির্দিষ্ট কিছু উদ্ভিদ ও শূকর ই৪৭৬–এর অন্যতম উৎস। তাই এই এমালসিফায়ার দিয়ে তৈরি পণ্যের ক্ষেত্রে ইসলামি শরিয়তের নির্দেশনা হচ্ছে মাশবূহ, অর্থাৎ এটি হালাল নাকি হারাম তা স্পষ্ট নয়। তবে কোনো পণ্যে ব্যবহৃত ই৪৭৬–এর উৎস সম্পর্কে যদি নিশ্চিত জানা যায় এবং সেটি যদি হয় শূকরের চর্বি তাহলে হারাম হওয়ার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।
ইসলামি জিজ্ঞাসার ওয়েবসাইট ইসলামকিউএতে মুসলমানদের জন্য ই৪৭৬ হালাল না হারাম সে সম্পর্কে আলোচনা পাওয়া যায়। যুক্তরাজ্যের মুসলমানদের বিভিন্ন বিষয়ে মাসআলা–মাসায়েল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান দারুল ইফতা বার্মিংহামের মুফতি মোহাম্মদ তছির মিয়ার অনুমোদন নিয়ে ওয়েবসাইটটিতে ই৪৭৬ সম্পর্কে মাওলানা মুকতাউর রহমান নামে একজন আলেম লেখেন, ই৪৭৬ এমালসিফায়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি কৃত্রিম চর্বি বা উদ্ভিজ্জ চর্বির সঙ্গে অন্যান্য উপাদান মিশিয়ে তৈরি করা হয় এবং খাওয়া হালাল।
ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দের ওয়েবসাইটে অনেকগুলো ‘ই’ কোডের সঙ্গে ই৪৭৬ হালাল নাকি হারাম সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে মাদ্রাসাটির ফতোয়া বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, আমাদের কাছে এই কোড নম্বরগুলো হারাম হওয়ার ব্যাপারে কোনো নিশ্চিত তথ্য নেই।
ইসলামিক রিলিজিয়াস কাউন্সিল অব সিঙ্গাপুর, সিঙ্গাপুরের একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি হালাল সার্টিফিকেশন পরিষেবা দেয় এবং দেশটির হালাল শিল্প নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে ফুড অ্যাডিটিভের একটি তালিকা খুঁজে পাওয়া যায়। তালিকাটিতে ই৪৭৬ যুক্ত পণ্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে সরাসরি হালাল বা হারাম কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। বরং বলা হয়েছে, এর বৈধতা নির্ভর করে ই৪৭৬–এর উপাদান কোন উৎস থেকে এসেছে বা এর উৎপাদন প্রক্রিয়ার ওপর।
পাকিস্তানের কমসেটস ইউনিভার্সিটি ইসলামাবাদের সেন্টার অব ইসলামিক ফাইন্যান্স তাদের ওয়েবসাইটে ই৪৭৬ সম্পর্কে জানায়, মুসলমানদের জন্য এটির ব্যবহারের নির্দেশনা হলো ‘মাশবূহ’, অর্থাৎ হালাল–হারাম স্পষ্ট নয়। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে হারাম ‘ই’ নম্বর হিসেবে ই১২০ উল্লেখ করা হয়েছে। এটি কিছু অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়, লাল আপেল সস, মাংস, দই ইত্যাদি পণ্যে ব্যবহার করা হয়।
ই৪৭৬ সম্পর্কে শিয়া মুসলিমদের আধ্যাত্মিক নেতা আলী আল হোসাইনী আল সিস্তানির অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, যদি ই৪৭৬ উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে আসে, তবে হালাল। যদি পশু উৎস থেকে আসে, তবে হালাল–হারাম নির্ভর করে ওই পশুটিকে শরিয়ামতে জবাই করা হয়েছে কি না তার ওপর।
ওপরের এসব আলোচনা থেকে স্পষ্ট, কোনো পণ্যের মোড়কে ই৪৭৬ থাকলেই সেটি হারাম বলা যাবে না। বরং ই৪৭৬ হালাল না হারাম তা নির্ভর করে এটি কোন উপাদান দিয়ে তৈরি আর এসবের উৎস কী। ই৪৭৬ যদি উদ্ভিজ্জ চর্বি থেকে উৎপাদিত হয়, তাহলে সেটি হালাল।
উদ্ভিজ্জ উপাদান দিয়ে তৈরি কিনা বোঝা যাবে কীভাবে
কোনো পণ্য উদ্ভিজ্জ না প্রাণীজ উপাদান দিয়ে তৈরি তা বোঝা যায় পণ্যটির মোড়ক যাচাই করে। যদি কোনো খাদ্যপণ্যের গায়ে সাদা বর্গের ভেতর সবুজ বৃত্ত থাকে, তবে বুঝতে হবে সেই খাবারটি কেবল উদ্ভিজ্জ উপাদান দিয়ে তৈরি। এতে কোনো ধরনের প্রাণিজ উপকরণ নেই। অপরদিকে প্যাকেটের গায়ে সবুজের পরিবর্তে বাদামি বৃত্ত থাকলে তা নির্দেশ করে এই খাবারে প্রাণিজ উপকরণের অস্তিত্ব আছে।
যদি কোনো পণ্যের মোড়কে পণ্যের উপাদান তালিকায় ই৪৭৬ কোড এবং একই মোড়কে যদি সাদা বর্গের ভেতর সবুজ বৃত্তের চিহ্ন থাকে তাহলে ইসলামি বিশেষজ্ঞদের মতে, সেটি খাওয়া হালাল। তাই ফেসবুকে প্রচারিত চকলেটসহ কোনো পণ্যের মোড়কে উপরোক্ত বিষয়গুলোর উল্লেখ থাকলে সেটি মুসলমানদের জন্য হারাম নয়।
সিদ্ধান্ত
খাদ্যসামগ্রী রঙিন করতে, মিষ্টি বা সুস্বাদু করতে আবার কখনো খাবার সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে খাবারে বিভিন্ন উপাদান সংযোজন করা হয়, এগুলোকে বলে ফুড অ্যাডিটিভ। ইউরোপের খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থা নিরাপদ ফুড অ্যাডিটিভের তালিকা দেয়। এসব অ্যাডিটিভকে চিহ্নিত করতে ইংরেজি ‘ই’ অক্ষরের পর নির্দিষ্ট নম্বর দেওয়া হয়। ‘এমালসিফায়ার’ এমন একটি ফুড অ্যাডিটিভ।
ই৪৭৬ নম্বরযুক্ত এমালসিফায়ার মূলত চকলেট জাতীয় খাদ্যে ব্যবহার করা হয়। এটি প্রাণিজ বা উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে পাওয়া যায়। এই ফুড অ্যাডিটিভ যুক্ত খাবার মুসলমানদের জন্য হালাল নাকি হারাম সেটি নির্ভর করে উপাদানটির উৎসের ওপর।

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
০৩ নভেম্বর ২০২৫
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
০২ নভেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
২৮ অক্টোবর ২০২৫
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫আজকের পত্রিকা ডেস্ক

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি একটি সম্পূর্ণ ভুয়া ফটোকার্ড।
আজকের পত্রিকা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করছে, এই ধরনের কোনো খবর আজকের পত্রিকাতে কখনোই প্রকাশিত হয়নি। ফটোকার্ডটিতে আজকের পত্রিকার লোগো ব্যবহার করা হলেও এর ভেতরের খবর ও শিরোনাম সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
আজকের পত্রিকা সর্বদা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
বর্তমান সময়ে এ ধরনের ভুয়া ফটোকার্ড ও খবর নিয়ে পাঠকদের সচেতনতা জরুরি। যেকোনো সন্দেহজনক খবর যাচাই করার জন্য অনুরোধ রইল।

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি একটি সম্পূর্ণ ভুয়া ফটোকার্ড।
আজকের পত্রিকা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করছে, এই ধরনের কোনো খবর আজকের পত্রিকাতে কখনোই প্রকাশিত হয়নি। ফটোকার্ডটিতে আজকের পত্রিকার লোগো ব্যবহার করা হলেও এর ভেতরের খবর ও শিরোনাম সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
আজকের পত্রিকা সর্বদা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
বর্তমান সময়ে এ ধরনের ভুয়া ফটোকার্ড ও খবর নিয়ে পাঠকদের সচেতনতা জরুরি। যেকোনো সন্দেহজনক খবর যাচাই করার জন্য অনুরোধ রইল।

ফেসবুকে না জেনে হারাম খাচ্ছি—শিরোনামে একটি পোস্ট শেয়ার করা হচ্ছে। পোস্টটিতে একটি চকলেটের মোড়কের ছবি যুক্ত করে এমালসিফায়ার কোড নামে একটি কোড উল্লেখ করে বলা হচ্ছে, এমালসিফায়ার কোড নির্দেশ করে খাবারটি হারাম বা হালাল। এই কোডগুলোর একটি ই৪৭৬ (E476 )।
১২ ডিসেম্বর ২০২৩
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
০২ নভেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
২৮ অক্টোবর ২০২৫
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতে রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এই ভিডিও শেয়ার করে দাবি করছেন, একটি সিসিটিভি ফুটেজ। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের পেঞ্চ এলাকার। ওই ব্যক্তি দেশীয় মদ পান করে মাতাল হয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। তিনি এতটা মাতাল ছিলেন যে বাঘকেও মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। বাঘ অবশ্য তাঁর হাতে মদ্যপানে রাজি হয়নি! পরে ওই বাঘটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগ। বাঘটি ওই ব্যক্তির কোনো ক্ষতি করেনি।

ভিডিওটি দেখে অনেকেই বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন—কেউ বিশ্বাস করেছেন, এটি বাস্তব কোনো ঘটনা; কেউ আবার মনে করছেন, এটি নিছকই কৃত্রিম ভিডিও। কিন্তু সত্যিটা কী? দ্য কুইন্টের সাংবাদিক অভিষেক আনন্দ ও ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা বুম বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করেছে।
বুম ভিডিওটি নিয়ে বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে এ-সম্পর্কিত প্রতিবেদন অনুসন্ধান করেছে, কিন্তু কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এরপর তারা সরাসরি মধ্যপ্রদেশের সেওনি জেলার পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করে। দ্য কুইন্ট ও বুমকে সেওনি জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে স্পষ্ট জানানো হয়—তাদের জানামতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।
পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি যাচাই করা হয়। তিনি বলেন, ভিডিওটির সঙ্গে পেঞ্চ এলাকার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আরও ব্যাখ্যা দেন, বনের বাঘের সঙ্গে এমন ঘনিষ্ঠভাবে মানুষের যোগাযোগ সম্ভব নয়, যদি না বাঘটিকে বন্দী করে দীর্ঘদিন ধরে পোষ মানানো হয়। তাঁর ভাষায়, ‘বনের বাঘ কখনো এমন আচরণ করে না, এটা বাস্তবে সম্ভব নয়।’
ভিডিওর সন্দেহজনক দিক বা ভিজ্যুয়াল অসংগতি
বুম ভিডিওটির একটি উচ্চমানের সংস্করণ সংগ্রহ করে তাতে কিছু অস্বাভাবিক দিক লক্ষ করে। দেখা যায়, ভিডিওটির পটভূমির দৃশ্যে কিছু অস্পষ্ট বস্তু নড়াচড়া করছে, যা বাস্তব ভিডিওর মতো স্বাভাবিক নয়।
বাঘের মাথায় হাত রাখা ব্যক্তির আঙুলগুলো বিকৃতভাবে বাঁকানো, যেন সফটওয়্যারে তৈরি কৃত্রিম ছায়া। এমনকি হাতে থাকা বোতলের মুখ কখনো দেখা যায়, আবার মিলিয়ে যায়—এই ভিজ্যুয়াল অসংগতিগুলো ইঙ্গিত দেয়, এটি ধারণকৃত কোনো ফুটেজ নয়। সব মিলিয়ে ভিডিওটির একাধিক ফ্রেমে গ্রাফিক বিকৃতি স্পষ্ট।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিশ্লেষণ
এরপর ভিডিওটি পরীক্ষা করা হয় ডিপফেক-ও-মিটার নামের একটি উন্নত টুলে। এটি তৈরি করেছে ইউনিভার্সিটি অব বাফেলোর মিডিয়া ফরেনসিকস ল্যাব। এই টুল ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ বিশ্লেষণ করে দেখায়, এতে ‘উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক নির্মাণের চিহ্ন’ রয়েছে।

এরপর বুম তাদের অংশীদার ডিপফেক অ্যানালাইসিস ইউনিটের সাহায্য নেয়। তারা ভিডিওটি পরীক্ষা করে ‘Is It AI’ এবং ‘AI Or Not’—নামক দুটি আলাদা টুলে। উভয় টুলের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬৯ শতাংশ।
এই ফলাফল অনুযায়ী বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভিডিওর মানুষের সঙ্গে প্রাণীর মিথস্ক্রিয়া এবং আলো-ছায়ার ত্রুটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে এটি আসল নয়, বরং জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো একটি দৃশ্য।
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বহু ব্যবহারকারী এটিকে সত্যি বলে বিশ্বাস করেছেন। কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওর ওই ব্যক্তির নাম রাজু পাতিল। ৫২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একজন দিনমজুর। তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রাস্তায় বাঘটিকে আদর করছিলেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে অক্ষত অবস্থায় রয়ে গেছেন।
একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ টুলের ফলাফল এবং প্রশাসনিক যাচাই মিলিয়ে নিশ্চিতভাবে বলা যায়—ভিডিওটি বাস্তব নয়, বরং এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি একটি কৃত্রিম দৃশ্য। পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহও সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই ভিডিওর কোনো অংশই পেঞ্চের নয়। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতে রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এই ভিডিও শেয়ার করে দাবি করছেন, একটি সিসিটিভি ফুটেজ। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের পেঞ্চ এলাকার। ওই ব্যক্তি দেশীয় মদ পান করে মাতাল হয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। তিনি এতটা মাতাল ছিলেন যে বাঘকেও মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। বাঘ অবশ্য তাঁর হাতে মদ্যপানে রাজি হয়নি! পরে ওই বাঘটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগ। বাঘটি ওই ব্যক্তির কোনো ক্ষতি করেনি।

ভিডিওটি দেখে অনেকেই বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন—কেউ বিশ্বাস করেছেন, এটি বাস্তব কোনো ঘটনা; কেউ আবার মনে করছেন, এটি নিছকই কৃত্রিম ভিডিও। কিন্তু সত্যিটা কী? দ্য কুইন্টের সাংবাদিক অভিষেক আনন্দ ও ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা বুম বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করেছে।
বুম ভিডিওটি নিয়ে বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে এ-সম্পর্কিত প্রতিবেদন অনুসন্ধান করেছে, কিন্তু কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এরপর তারা সরাসরি মধ্যপ্রদেশের সেওনি জেলার পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করে। দ্য কুইন্ট ও বুমকে সেওনি জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে স্পষ্ট জানানো হয়—তাদের জানামতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।
পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি যাচাই করা হয়। তিনি বলেন, ভিডিওটির সঙ্গে পেঞ্চ এলাকার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আরও ব্যাখ্যা দেন, বনের বাঘের সঙ্গে এমন ঘনিষ্ঠভাবে মানুষের যোগাযোগ সম্ভব নয়, যদি না বাঘটিকে বন্দী করে দীর্ঘদিন ধরে পোষ মানানো হয়। তাঁর ভাষায়, ‘বনের বাঘ কখনো এমন আচরণ করে না, এটা বাস্তবে সম্ভব নয়।’
ভিডিওর সন্দেহজনক দিক বা ভিজ্যুয়াল অসংগতি
বুম ভিডিওটির একটি উচ্চমানের সংস্করণ সংগ্রহ করে তাতে কিছু অস্বাভাবিক দিক লক্ষ করে। দেখা যায়, ভিডিওটির পটভূমির দৃশ্যে কিছু অস্পষ্ট বস্তু নড়াচড়া করছে, যা বাস্তব ভিডিওর মতো স্বাভাবিক নয়।
বাঘের মাথায় হাত রাখা ব্যক্তির আঙুলগুলো বিকৃতভাবে বাঁকানো, যেন সফটওয়্যারে তৈরি কৃত্রিম ছায়া। এমনকি হাতে থাকা বোতলের মুখ কখনো দেখা যায়, আবার মিলিয়ে যায়—এই ভিজ্যুয়াল অসংগতিগুলো ইঙ্গিত দেয়, এটি ধারণকৃত কোনো ফুটেজ নয়। সব মিলিয়ে ভিডিওটির একাধিক ফ্রেমে গ্রাফিক বিকৃতি স্পষ্ট।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিশ্লেষণ
এরপর ভিডিওটি পরীক্ষা করা হয় ডিপফেক-ও-মিটার নামের একটি উন্নত টুলে। এটি তৈরি করেছে ইউনিভার্সিটি অব বাফেলোর মিডিয়া ফরেনসিকস ল্যাব। এই টুল ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ বিশ্লেষণ করে দেখায়, এতে ‘উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক নির্মাণের চিহ্ন’ রয়েছে।

এরপর বুম তাদের অংশীদার ডিপফেক অ্যানালাইসিস ইউনিটের সাহায্য নেয়। তারা ভিডিওটি পরীক্ষা করে ‘Is It AI’ এবং ‘AI Or Not’—নামক দুটি আলাদা টুলে। উভয় টুলের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬৯ শতাংশ।
এই ফলাফল অনুযায়ী বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভিডিওর মানুষের সঙ্গে প্রাণীর মিথস্ক্রিয়া এবং আলো-ছায়ার ত্রুটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে এটি আসল নয়, বরং জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো একটি দৃশ্য।
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বহু ব্যবহারকারী এটিকে সত্যি বলে বিশ্বাস করেছেন। কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওর ওই ব্যক্তির নাম রাজু পাতিল। ৫২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একজন দিনমজুর। তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রাস্তায় বাঘটিকে আদর করছিলেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে অক্ষত অবস্থায় রয়ে গেছেন।
একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ টুলের ফলাফল এবং প্রশাসনিক যাচাই মিলিয়ে নিশ্চিতভাবে বলা যায়—ভিডিওটি বাস্তব নয়, বরং এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি একটি কৃত্রিম দৃশ্য। পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহও সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই ভিডিওর কোনো অংশই পেঞ্চের নয়। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া।’

ফেসবুকে না জেনে হারাম খাচ্ছি—শিরোনামে একটি পোস্ট শেয়ার করা হচ্ছে। পোস্টটিতে একটি চকলেটের মোড়কের ছবি যুক্ত করে এমালসিফায়ার কোড নামে একটি কোড উল্লেখ করে বলা হচ্ছে, এমালসিফায়ার কোড নির্দেশ করে খাবারটি হারাম বা হালাল। এই কোডগুলোর একটি ই৪৭৬ (E476 )।
১২ ডিসেম্বর ২০২৩
সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
০৩ নভেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
২৮ অক্টোবর ২০২৫
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
ভারতের সংবাদমাধ্যমটি গতকাল এক প্রতিবেদনে দাবি করে, পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস, যেখানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের মানচিত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
সিএ ফ্যাক্ট চেক জানায়, প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক ইউনূস উপহার দিয়েছেন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি চিত্রসংকলন—যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন গ্রাফিতি ও দেয়ালচিত্র সংকলিত হয়েছে।
‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি সচিত্র দলিল, যেখানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত বিপ্লবের ইতিহাস ফুটে উঠেছে।
গ্রাফিতি সংকলনের প্রচ্ছদে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাইদের পিছনে রক্তরাঙ্গা বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।
প্রচ্ছদে দৃশ্যমান মানচিত্রটি গ্রাফিতি হিসেবে অঙ্কিত হওয়ায় বাংলাদেশের মূল মানচিত্রের পরিমাপের কিছুটা হেরফের হয়েছে বলে কারো কাছে মনে হতে পারে। কিন্তু ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনো অংশ গ্রাফিতি মানচিত্রটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে দাবি করাটা সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত। বাংলাদেশের মানচিত্রের সাথে উল্লেখিত গ্রাফিতিতে দৃশ্যমান মানচিত্রের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, অঙ্কিত মানচিত্রটিতে বাংলাদেশের প্রকৃত মানচিত্র প্রায় হুবহুভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা এর আগেও একই গ্রাফিতি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জাতিসংঘের মহাসচিব, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্ব নেতাদের উপহার দিয়েছেন।

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
ভারতের সংবাদমাধ্যমটি গতকাল এক প্রতিবেদনে দাবি করে, পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস, যেখানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের মানচিত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
সিএ ফ্যাক্ট চেক জানায়, প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক ইউনূস উপহার দিয়েছেন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি চিত্রসংকলন—যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন গ্রাফিতি ও দেয়ালচিত্র সংকলিত হয়েছে।
‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি সচিত্র দলিল, যেখানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত বিপ্লবের ইতিহাস ফুটে উঠেছে।
গ্রাফিতি সংকলনের প্রচ্ছদে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাইদের পিছনে রক্তরাঙ্গা বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।
প্রচ্ছদে দৃশ্যমান মানচিত্রটি গ্রাফিতি হিসেবে অঙ্কিত হওয়ায় বাংলাদেশের মূল মানচিত্রের পরিমাপের কিছুটা হেরফের হয়েছে বলে কারো কাছে মনে হতে পারে। কিন্তু ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনো অংশ গ্রাফিতি মানচিত্রটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে দাবি করাটা সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত। বাংলাদেশের মানচিত্রের সাথে উল্লেখিত গ্রাফিতিতে দৃশ্যমান মানচিত্রের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, অঙ্কিত মানচিত্রটিতে বাংলাদেশের প্রকৃত মানচিত্র প্রায় হুবহুভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা এর আগেও একই গ্রাফিতি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জাতিসংঘের মহাসচিব, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্ব নেতাদের উপহার দিয়েছেন।

ফেসবুকে না জেনে হারাম খাচ্ছি—শিরোনামে একটি পোস্ট শেয়ার করা হচ্ছে। পোস্টটিতে একটি চকলেটের মোড়কের ছবি যুক্ত করে এমালসিফায়ার কোড নামে একটি কোড উল্লেখ করে বলা হচ্ছে, এমালসিফায়ার কোড নির্দেশ করে খাবারটি হারাম বা হালাল। এই কোডগুলোর একটি ই৪৭৬ (E476 )।
১২ ডিসেম্বর ২০২৩
সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
০৩ নভেম্বর ২০২৫
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
০২ নভেম্বর ২০২৫
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।
ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।
ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে
ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।
ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই
ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত
ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।
সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল
এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।
কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।
কথিত জেসিকা র্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।
ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।
ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে
ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।
ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই
ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত
ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।
সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল
এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।
কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।
কথিত জেসিকা র্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

ফেসবুকে না জেনে হারাম খাচ্ছি—শিরোনামে একটি পোস্ট শেয়ার করা হচ্ছে। পোস্টটিতে একটি চকলেটের মোড়কের ছবি যুক্ত করে এমালসিফায়ার কোড নামে একটি কোড উল্লেখ করে বলা হচ্ছে, এমালসিফায়ার কোড নির্দেশ করে খাবারটি হারাম বা হালাল। এই কোডগুলোর একটি ই৪৭৬ (E476 )।
১২ ডিসেম্বর ২০২৩
সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
০৩ নভেম্বর ২০২৫
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
০২ নভেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
২৮ অক্টোবর ২০২৫