মোনায়েম সরকার

কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তী পরিস্থিতির কয়েকটি দিক নিয়ে আলোচনা করা প্রয়োজন বলে মনে করছি। যেহেতু সরকার দেশ চালায়, সেহেতু আলোচনায় সরকারের অবস্থান নিয়ে কথা হবে বেশি।
লক্ষ করা গেছে, কয়েক বছর ধরে যেকোনো দাবি নিয়ে কেউ সোচ্চার হলে দাবিটি ন্যায্য কি অন্যায্য, তা বিবেচনা না করেই সরকার বিরক্ত হয়। অধিকার আদায়ের জন্য মানুষ যখন বিক্ষোভ করে, তখন সরকারের পক্ষ থেকে তা বিবেচনার প্রয়োজন আছে। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বসে তার একটা যুক্তিযুক্ত সমাধান খুঁজে বের করা দরকার হয়। কিন্তু এ সময়টায় দেখা গেছে, সরকার যেন সেই সব ব্যাপারে উদাসীন। কোটা সংস্কার আন্দোলনের ক্ষেত্রেও সেটা দেখা গেছে। আন্দোলন শুরু হওয়ার পর যদি আদালতের দোহাই না দিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতেন সরকারের ঊর্ধ্বতন কেউ, তাহলে হয়তো এত প্রাণ ঝরত না, আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে দুষ্কৃতকারীরা ভাঙচুর-আগুনের মতো দুর্ঘটনা ঘটাতে পারত না, পরিস্থিতি এতটা অস্বাভাবিক হতো না। আবার কেউ এটাও মনে করেন, সরকার শুরুতে উদ্যোগ নিলেও
পরিস্থিতি জটিল করার কোনো না কোনো উসিলা খোঁজা হতোই।
কী হতো তা নিয়ে গবেষণা না করে যা হয়েছে তা নিয়েই কথা বলি। বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী যে প্রসঙ্গ নিয়ে মাঠে নেমেছিল, সেটা কোনো অযৌক্তিক আন্দোলন ছিল না। কেন কোটার পরিমাণ থাকবে মেধার চেয়ে বেশি, সে প্রশ্ন তো উঠতেই পারে। যখন আমরা উন্নয়নের কথা বলছি, তখন কি কর্মসংস্থান বেড়েছে? প্রতিবছর পরীক্ষা দিয়ে বের হচ্ছে যারা, তাদের কত শতাংশ বেকার থাকছে, সেই পরিসংখ্যান কি আছে আমাদের হাতে? বেকারত্বের গ্লানি সে-ই বোঝে, যে এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায়। কর্মসংস্থানের সুযোগ না বাড়ায় সরকারি চাকরির নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজ করাটা দোষের কিছু নয়। কিন্তু মেধার ভিত্তিতে সেই চাকরির নাগাল পেতে হলে কোটার পাহাড় অতিক্রম করে তারপর সেখানে পৌঁছাতে হবে। ফলে চাকরিক্ষেত্রে এত বিপুল পরিমাণ কোটার বিরোধিতা করা খুবই যৌক্তিক ব্যাপার।
আবার এ প্রশ্নও আছে, কোটা সমস্যার সমাধান হলেই কি সব ‘মেধাবী’র সরকারি চাকরি পাওয়ার সুযোগ হবে?
এবার দ্বিতীয় প্রসঙ্গ। আন্দোলন শুরু হওয়ার পর দুষ্কৃতকারীরা এই আন্দোলনে ঢুকে পড়তে পেরেছে সেটাও সরকারের ঔদাসীন্যের কারণেই নয় কি? প্রথম দিকে আদালতের রায়ের দোহাই দিয়ে তারা চুপচাপ বসে ছিল। বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী যখন কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজপথে, তখন এ রকম আচরণ মোটেই সরকারের সদিচ্ছার প্রকাশ নয়; বরং ছাত্রলীগকে লাঠিসোঁটা হাতে আন্দোলন প্রতিরোধের জন্য পাঠিয়ে সংকট আরও গভীর করা হয়েছে। ফল যা ঘটেছে, তা হলো আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এবং তারই পথ ধরে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও। ছাত্রলীগের ডান্ডা যখন আন্দোলনকে ঠান্ডা করতে পারল না, তখন পুলিশ, বিজিবি নামল রাস্তায়। রক্ত ঝরল। তখন যে অস্থির সময়ের জন্ম হলো, তারই সুযোগ নিল দুষ্কৃতকারীরা। তারা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করল। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে তারা সরকারবিরোধী আন্দোলনের রূপ দেওয়ার চেষ্টা করল।
এখানে একটি বিষয়ে দৃষ্টি দিতে হবে। যারা রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে, তারা নিছক দুষ্কৃতকারী নয়। এরা সরকারবিরোধী রাজনীতিরই অংশ। সুযোগ বুঝে এরা আন্দোলনের পথ ধরে জ্বালাও-পোড়াও শুরু করেছে। পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে দিয়ে সরকার পরিবর্তনের স্বপ্নও তারা দেখেছে। রাজনৈতিক ঘটনা নিয়মতান্ত্রিক পথে মোকাবিলা না করার যে অভ্যাস আমাদের সৃষ্টি হয়েছে, এটা তারই একটা দৃষ্টান্ত। ফলে সহিংসতার দায় বিরোধীদলীয় রাজনীতিকদের নিতে হবে।
ছাত্রলীগ যখন ডান্ডা মেরে আন্দোলন ঠান্ডা করার জন্য নামল, তখনকার অবস্থাটা কল্পনা করুন। সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ‘ছাত্রলীগই আন্দোলনকারীদের মোকাবিলায় যথেষ্ট’ বলে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাকে কোনোভাবেই দায়িত্বশীল বলা যায় না। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এত বড় আন্দোলনকে কি সত্যিই মোকাবিলা করতে পারত? ভেবে দেখা যাক, কারা এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। এরা বিপক্ষ রাজনৈতিক শক্তি নয়। যে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কোনো দিন মিটিং-মিছিল করেনি, তারাও কেন এই আন্দোলনে শরিক হয়েছে, সেটা ছাত্রলীগের বোঝা উচিত ছিল। ছাত্রলীগের বোঝা উচিত ছিল, এই আন্দোলন আসলে তাদেরও আন্দোলন। ছাত্রলীগের একটা অংশ চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজির সঙ্গে যুক্ত হয়তো, কিন্তু ছাত্রলীগের বড় অংশকেই তো পড়াশোনা শেষ করে চাকরিতে ঢুকতে হবে। সুতরাং তারাও তো এই বিশাল কোটার কারণে ভুক্তভোগী হবে। তাই ঠান্ডা মাথায় বিবেচনা করলে ছাত্রলীগ তো এই আন্দোলনের শরিক পক্ষই হতে পারত। এখন এই ভয়ংকর দিনগুলো পার হওয়ার পর দেখা যাচ্ছে, ছাত্রলীগ সেদিন যে কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল, সেটা ছিল নিছক আওয়ামী লীগের অবস্থান থেকে পরিস্থিতি বুঝতে না পারার খেসারত। এখন তো দেখাই যাচ্ছে, শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে
নিয়েছে সরকার। কিন্তু এ জন্য দুঃখজনকভাবে এত রক্ত ঝরল।
প্রসঙ্গত আরও একটি বিষয় নিয়ে কথা বলা দরকার। শিক্ষার্থীদের এই সংকটকালে শিক্ষকদের ভূমিকারও বিশ্লেষণ করতে হবে। শিক্ষকদের নিজস্ব একটি অবস্থান থাকতে হবে। যা সত্য, যা যৌক্তিক, তার পক্ষেই থাকতে হবে তাঁর অবস্থান। কিন্তু আমাদের দেশে স্বাধীনতার পর থেকেই ধীরে ধীরে শিক্ষকরাজনীতি এতটাই শক্তিশালী হয়ে উঠেছে যে দলবাজ শিক্ষকেরাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নিয়োগ পান। মেধার চেয়ে দলের প্রতি আনুগত্যই কখনো কখনো নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রধান নিয়ামক হয়ে ওঠে। তাই বিভিন্ন ক্ষেত্রের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যেও দলবাজ শিক্ষক খুঁজে পাওয়া বিচিত্র নয়। তার চেয়েও দুঃখজনক ব্যাপার হলো, যাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান, তাঁদের যোগ্যতাও মূলত ক্ষমতাসীন দলের প্রতি আনুগত্য। এ কারণেই শিক্ষার্থীদের পক্ষে তাঁরা দাঁড়াতে পারেন না। শিক্ষকদের এমন নৈতিক দুর্বল অবস্থান সত্যিই দুঃখজনক।
এই আন্দোলনের একপর্যায়ে আমরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের খুব কমসংখ্যক শিক্ষককেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য শিক্ষার্থীদের পাশে এসে দাঁড়াতে দেখেছি। সংখ্যায় তাঁরা কম হলেও তাঁদের মধ্যে যে দৃঢ়তা দেখা গেছে, তা সাধুবাদযোগ্য। সব শিক্ষকই তো পারতেন এ সময় তাঁদের সন্তানসম শিক্ষার্থীদের পাশে এসে দাঁড়াতে। কে তাঁদের বাধা দিল? বাধা দিল তাঁদের নিয়োগ-প্রক্রিয়া। দলের প্রতি আনুগত্য থাকলে শিক্ষক তাঁর শিক্ষকতার মূল দর্শনকেই অগ্রাহ্য করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষকেরা ব্যর্থ হয়েছেন শিক্ষক হিসেবে তাঁদের অবস্থান পরিষ্কার করতে।
উপাচার্য বলে যে প্রতিষ্ঠানটি আছে, সেটিও আজ প্রশ্নের সম্মুখীন। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যরাও নিয়োগের সময় এমন এক অবস্থান নেন, যা লজ্জাজনক। কেউ কেউ মেয়াদের শেষ দিনে এসে ইচ্ছামতো নিয়োগে সই করেছেন, এমন নজিরও তো আছে। এই আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তো বলেই দিয়েছেন, পরিস্থিতি তাঁর নিয়ন্ত্রণে নেই। পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণেই না থাকে, তাহলে তো এই দায় মাথায় নিয়ে তাঁর পদত্যাগ করার কথা। তিনি কেন পদত্যাগ করলেন না? বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে না পারলে এই পদে আসীন থাকা কি উচিত তাঁর?
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাড়িতে আশ্রয় নিল শিক্ষার্থীরা, তাদের ওপর হামলা হলো, অথচ উপাচার্য মহাশয় দরজা বন্ধ করে বসে থাকলেন। এটা কি সত্যিই কোনো শিক্ষকের কাজ হতে পারে?
শিক্ষকেরা দলদাস হলে শিক্ষার্থীদেরও মেরুদণ্ড থাকবে না। অভিভাবককে ক্ষমতাসীনদের কেরানি হিসেবে দেখলে শিক্ষার্থীরাও তো ধীরে ধীরে সেই কলা রপ্ত করে ফেলবে। এই অনৈতিকতা থেকে শিক্ষকদের বেরিয়ে আসতে হবে। ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের ক্ষেত্রেই শুধু নয়, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই নিজ মেরুদণ্ডের সন্ধান করতে হবে। হারানো মেরুদণ্ড খুঁজে পাওয়া প্রয়োজন।
শেষে আমার বলার কথা, শাসক দল আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে। টানা চার মেয়াদে ক্ষমতায় থেকে দলটি সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী না হয়ে বরং দুর্বল যে হয়েছে তা এবার স্পষ্ট হয়েই সামনে এল। আওয়ামী লীগ যদি জনসম্পৃক্ত রাজনৈতিক দল থাকত, জনবিচ্ছিন্ন হয়ে না পড়ত তাহলে হয়তো শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দলটির নেতা-কর্মীরা মাঠ ছেড়ে লাপাত্তা হতো না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৪ জুলাই এডিটর গিল্ডসের সভায় বলেছেন, ‘জঙ্গিদের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আন্দোলনকারীদের জাতির কাছে একদিন জবাব দিতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘদিনের একজন সুহৃদ হিসেবে আমার বিনীত জিজ্ঞাসা, মানুষের মন-মেজাজ বুঝতে না পারার ব্যর্থতার জন্য আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব কি কারও কাছে কোনো জবাবদিহি করবেন না?
লেখক: রাজনীতিবিদ, লেখক

কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তী পরিস্থিতির কয়েকটি দিক নিয়ে আলোচনা করা প্রয়োজন বলে মনে করছি। যেহেতু সরকার দেশ চালায়, সেহেতু আলোচনায় সরকারের অবস্থান নিয়ে কথা হবে বেশি।
লক্ষ করা গেছে, কয়েক বছর ধরে যেকোনো দাবি নিয়ে কেউ সোচ্চার হলে দাবিটি ন্যায্য কি অন্যায্য, তা বিবেচনা না করেই সরকার বিরক্ত হয়। অধিকার আদায়ের জন্য মানুষ যখন বিক্ষোভ করে, তখন সরকারের পক্ষ থেকে তা বিবেচনার প্রয়োজন আছে। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বসে তার একটা যুক্তিযুক্ত সমাধান খুঁজে বের করা দরকার হয়। কিন্তু এ সময়টায় দেখা গেছে, সরকার যেন সেই সব ব্যাপারে উদাসীন। কোটা সংস্কার আন্দোলনের ক্ষেত্রেও সেটা দেখা গেছে। আন্দোলন শুরু হওয়ার পর যদি আদালতের দোহাই না দিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতেন সরকারের ঊর্ধ্বতন কেউ, তাহলে হয়তো এত প্রাণ ঝরত না, আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে দুষ্কৃতকারীরা ভাঙচুর-আগুনের মতো দুর্ঘটনা ঘটাতে পারত না, পরিস্থিতি এতটা অস্বাভাবিক হতো না। আবার কেউ এটাও মনে করেন, সরকার শুরুতে উদ্যোগ নিলেও
পরিস্থিতি জটিল করার কোনো না কোনো উসিলা খোঁজা হতোই।
কী হতো তা নিয়ে গবেষণা না করে যা হয়েছে তা নিয়েই কথা বলি। বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী যে প্রসঙ্গ নিয়ে মাঠে নেমেছিল, সেটা কোনো অযৌক্তিক আন্দোলন ছিল না। কেন কোটার পরিমাণ থাকবে মেধার চেয়ে বেশি, সে প্রশ্ন তো উঠতেই পারে। যখন আমরা উন্নয়নের কথা বলছি, তখন কি কর্মসংস্থান বেড়েছে? প্রতিবছর পরীক্ষা দিয়ে বের হচ্ছে যারা, তাদের কত শতাংশ বেকার থাকছে, সেই পরিসংখ্যান কি আছে আমাদের হাতে? বেকারত্বের গ্লানি সে-ই বোঝে, যে এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায়। কর্মসংস্থানের সুযোগ না বাড়ায় সরকারি চাকরির নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজ করাটা দোষের কিছু নয়। কিন্তু মেধার ভিত্তিতে সেই চাকরির নাগাল পেতে হলে কোটার পাহাড় অতিক্রম করে তারপর সেখানে পৌঁছাতে হবে। ফলে চাকরিক্ষেত্রে এত বিপুল পরিমাণ কোটার বিরোধিতা করা খুবই যৌক্তিক ব্যাপার।
আবার এ প্রশ্নও আছে, কোটা সমস্যার সমাধান হলেই কি সব ‘মেধাবী’র সরকারি চাকরি পাওয়ার সুযোগ হবে?
এবার দ্বিতীয় প্রসঙ্গ। আন্দোলন শুরু হওয়ার পর দুষ্কৃতকারীরা এই আন্দোলনে ঢুকে পড়তে পেরেছে সেটাও সরকারের ঔদাসীন্যের কারণেই নয় কি? প্রথম দিকে আদালতের রায়ের দোহাই দিয়ে তারা চুপচাপ বসে ছিল। বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী যখন কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজপথে, তখন এ রকম আচরণ মোটেই সরকারের সদিচ্ছার প্রকাশ নয়; বরং ছাত্রলীগকে লাঠিসোঁটা হাতে আন্দোলন প্রতিরোধের জন্য পাঠিয়ে সংকট আরও গভীর করা হয়েছে। ফল যা ঘটেছে, তা হলো আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এবং তারই পথ ধরে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও। ছাত্রলীগের ডান্ডা যখন আন্দোলনকে ঠান্ডা করতে পারল না, তখন পুলিশ, বিজিবি নামল রাস্তায়। রক্ত ঝরল। তখন যে অস্থির সময়ের জন্ম হলো, তারই সুযোগ নিল দুষ্কৃতকারীরা। তারা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করল। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে তারা সরকারবিরোধী আন্দোলনের রূপ দেওয়ার চেষ্টা করল।
এখানে একটি বিষয়ে দৃষ্টি দিতে হবে। যারা রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে, তারা নিছক দুষ্কৃতকারী নয়। এরা সরকারবিরোধী রাজনীতিরই অংশ। সুযোগ বুঝে এরা আন্দোলনের পথ ধরে জ্বালাও-পোড়াও শুরু করেছে। পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে দিয়ে সরকার পরিবর্তনের স্বপ্নও তারা দেখেছে। রাজনৈতিক ঘটনা নিয়মতান্ত্রিক পথে মোকাবিলা না করার যে অভ্যাস আমাদের সৃষ্টি হয়েছে, এটা তারই একটা দৃষ্টান্ত। ফলে সহিংসতার দায় বিরোধীদলীয় রাজনীতিকদের নিতে হবে।
ছাত্রলীগ যখন ডান্ডা মেরে আন্দোলন ঠান্ডা করার জন্য নামল, তখনকার অবস্থাটা কল্পনা করুন। সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ‘ছাত্রলীগই আন্দোলনকারীদের মোকাবিলায় যথেষ্ট’ বলে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাকে কোনোভাবেই দায়িত্বশীল বলা যায় না। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এত বড় আন্দোলনকে কি সত্যিই মোকাবিলা করতে পারত? ভেবে দেখা যাক, কারা এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। এরা বিপক্ষ রাজনৈতিক শক্তি নয়। যে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কোনো দিন মিটিং-মিছিল করেনি, তারাও কেন এই আন্দোলনে শরিক হয়েছে, সেটা ছাত্রলীগের বোঝা উচিত ছিল। ছাত্রলীগের বোঝা উচিত ছিল, এই আন্দোলন আসলে তাদেরও আন্দোলন। ছাত্রলীগের একটা অংশ চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজির সঙ্গে যুক্ত হয়তো, কিন্তু ছাত্রলীগের বড় অংশকেই তো পড়াশোনা শেষ করে চাকরিতে ঢুকতে হবে। সুতরাং তারাও তো এই বিশাল কোটার কারণে ভুক্তভোগী হবে। তাই ঠান্ডা মাথায় বিবেচনা করলে ছাত্রলীগ তো এই আন্দোলনের শরিক পক্ষই হতে পারত। এখন এই ভয়ংকর দিনগুলো পার হওয়ার পর দেখা যাচ্ছে, ছাত্রলীগ সেদিন যে কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল, সেটা ছিল নিছক আওয়ামী লীগের অবস্থান থেকে পরিস্থিতি বুঝতে না পারার খেসারত। এখন তো দেখাই যাচ্ছে, শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে
নিয়েছে সরকার। কিন্তু এ জন্য দুঃখজনকভাবে এত রক্ত ঝরল।
প্রসঙ্গত আরও একটি বিষয় নিয়ে কথা বলা দরকার। শিক্ষার্থীদের এই সংকটকালে শিক্ষকদের ভূমিকারও বিশ্লেষণ করতে হবে। শিক্ষকদের নিজস্ব একটি অবস্থান থাকতে হবে। যা সত্য, যা যৌক্তিক, তার পক্ষেই থাকতে হবে তাঁর অবস্থান। কিন্তু আমাদের দেশে স্বাধীনতার পর থেকেই ধীরে ধীরে শিক্ষকরাজনীতি এতটাই শক্তিশালী হয়ে উঠেছে যে দলবাজ শিক্ষকেরাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নিয়োগ পান। মেধার চেয়ে দলের প্রতি আনুগত্যই কখনো কখনো নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রধান নিয়ামক হয়ে ওঠে। তাই বিভিন্ন ক্ষেত্রের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যেও দলবাজ শিক্ষক খুঁজে পাওয়া বিচিত্র নয়। তার চেয়েও দুঃখজনক ব্যাপার হলো, যাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান, তাঁদের যোগ্যতাও মূলত ক্ষমতাসীন দলের প্রতি আনুগত্য। এ কারণেই শিক্ষার্থীদের পক্ষে তাঁরা দাঁড়াতে পারেন না। শিক্ষকদের এমন নৈতিক দুর্বল অবস্থান সত্যিই দুঃখজনক।
এই আন্দোলনের একপর্যায়ে আমরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের খুব কমসংখ্যক শিক্ষককেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য শিক্ষার্থীদের পাশে এসে দাঁড়াতে দেখেছি। সংখ্যায় তাঁরা কম হলেও তাঁদের মধ্যে যে দৃঢ়তা দেখা গেছে, তা সাধুবাদযোগ্য। সব শিক্ষকই তো পারতেন এ সময় তাঁদের সন্তানসম শিক্ষার্থীদের পাশে এসে দাঁড়াতে। কে তাঁদের বাধা দিল? বাধা দিল তাঁদের নিয়োগ-প্রক্রিয়া। দলের প্রতি আনুগত্য থাকলে শিক্ষক তাঁর শিক্ষকতার মূল দর্শনকেই অগ্রাহ্য করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষকেরা ব্যর্থ হয়েছেন শিক্ষক হিসেবে তাঁদের অবস্থান পরিষ্কার করতে।
উপাচার্য বলে যে প্রতিষ্ঠানটি আছে, সেটিও আজ প্রশ্নের সম্মুখীন। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যরাও নিয়োগের সময় এমন এক অবস্থান নেন, যা লজ্জাজনক। কেউ কেউ মেয়াদের শেষ দিনে এসে ইচ্ছামতো নিয়োগে সই করেছেন, এমন নজিরও তো আছে। এই আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তো বলেই দিয়েছেন, পরিস্থিতি তাঁর নিয়ন্ত্রণে নেই। পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণেই না থাকে, তাহলে তো এই দায় মাথায় নিয়ে তাঁর পদত্যাগ করার কথা। তিনি কেন পদত্যাগ করলেন না? বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে না পারলে এই পদে আসীন থাকা কি উচিত তাঁর?
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাড়িতে আশ্রয় নিল শিক্ষার্থীরা, তাদের ওপর হামলা হলো, অথচ উপাচার্য মহাশয় দরজা বন্ধ করে বসে থাকলেন। এটা কি সত্যিই কোনো শিক্ষকের কাজ হতে পারে?
শিক্ষকেরা দলদাস হলে শিক্ষার্থীদেরও মেরুদণ্ড থাকবে না। অভিভাবককে ক্ষমতাসীনদের কেরানি হিসেবে দেখলে শিক্ষার্থীরাও তো ধীরে ধীরে সেই কলা রপ্ত করে ফেলবে। এই অনৈতিকতা থেকে শিক্ষকদের বেরিয়ে আসতে হবে। ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের ক্ষেত্রেই শুধু নয়, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই নিজ মেরুদণ্ডের সন্ধান করতে হবে। হারানো মেরুদণ্ড খুঁজে পাওয়া প্রয়োজন।
শেষে আমার বলার কথা, শাসক দল আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে। টানা চার মেয়াদে ক্ষমতায় থেকে দলটি সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী না হয়ে বরং দুর্বল যে হয়েছে তা এবার স্পষ্ট হয়েই সামনে এল। আওয়ামী লীগ যদি জনসম্পৃক্ত রাজনৈতিক দল থাকত, জনবিচ্ছিন্ন হয়ে না পড়ত তাহলে হয়তো শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দলটির নেতা-কর্মীরা মাঠ ছেড়ে লাপাত্তা হতো না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৪ জুলাই এডিটর গিল্ডসের সভায় বলেছেন, ‘জঙ্গিদের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আন্দোলনকারীদের জাতির কাছে একদিন জবাব দিতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘদিনের একজন সুহৃদ হিসেবে আমার বিনীত জিজ্ঞাসা, মানুষের মন-মেজাজ বুঝতে না পারার ব্যর্থতার জন্য আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব কি কারও কাছে কোনো জবাবদিহি করবেন না?
লেখক: রাজনীতিবিদ, লেখক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তী পরিস্থিতির কয়েকটি দিক নিয়ে আলোচনা করা প্রয়োজন বলে মনে করছি। যেহেতু সরকার দেশ চালায়, সেহেতু আলোচনায় সরকারের অবস্থান নিয়ে কথা হবে বেশি। লক্ষ করা গেছে, কয়েক বছর ধরে যেকোনো দাবি নিয়ে কেউ সোচ্চার হলে দাবিটি ন্যায্য কি অন্যায্য, তা বিবেচনা না করেই সরকার বিরক্ত হয়। অধিকার আদা
২৬ জুলাই ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তী পরিস্থিতির কয়েকটি দিক নিয়ে আলোচনা করা প্রয়োজন বলে মনে করছি। যেহেতু সরকার দেশ চালায়, সেহেতু আলোচনায় সরকারের অবস্থান নিয়ে কথা হবে বেশি। লক্ষ করা গেছে, কয়েক বছর ধরে যেকোনো দাবি নিয়ে কেউ সোচ্চার হলে দাবিটি ন্যায্য কি অন্যায্য, তা বিবেচনা না করেই সরকার বিরক্ত হয়। অধিকার আদা
২৬ জুলাই ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তী পরিস্থিতির কয়েকটি দিক নিয়ে আলোচনা করা প্রয়োজন বলে মনে করছি। যেহেতু সরকার দেশ চালায়, সেহেতু আলোচনায় সরকারের অবস্থান নিয়ে কথা হবে বেশি। লক্ষ করা গেছে, কয়েক বছর ধরে যেকোনো দাবি নিয়ে কেউ সোচ্চার হলে দাবিটি ন্যায্য কি অন্যায্য, তা বিবেচনা না করেই সরকার বিরক্ত হয়। অধিকার আদা
২৬ জুলাই ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তী পরিস্থিতির কয়েকটি দিক নিয়ে আলোচনা করা প্রয়োজন বলে মনে করছি। যেহেতু সরকার দেশ চালায়, সেহেতু আলোচনায় সরকারের অবস্থান নিয়ে কথা হবে বেশি। লক্ষ করা গেছে, কয়েক বছর ধরে যেকোনো দাবি নিয়ে কেউ সোচ্চার হলে দাবিটি ন্যায্য কি অন্যায্য, তা বিবেচনা না করেই সরকার বিরক্ত হয়। অধিকার আদা
২৬ জুলাই ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫