মহিউদ্দিন খান মোহন

বিএনপির সাম্প্রতিক সমাবেশগুলোতে লোকসমাগমের প্রাচুর্য দলটির নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করেছে, পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দলের শিরঃপীড়ার কারণ হয়ে উঠেছে বলে রাজনীতিসচেতন ব্যক্তিদের ধারণা। তাঁরা মনে করেন, সমাবেশগুলোতে শুধু দলীয় নেতা-কর্মী নন, উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সাধারণ মানুষও অংশ নিচ্ছে; বিশেষ করে প্রতিটি সমাবেশে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষে সরকারের বাধাদান দলটির কর্মীদের ভেতরে একধরনের জেদের সঞ্চার করেছে।
যার প্রতিফলন ঘটেছে গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়া সত্ত্বেও নেতা-কর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতিতে। তাঁদের কেউ এসেছেন মাইলের পর মাইল হেঁটে, কেউ রিকশা-ভ্যানগাড়িতে, কেউ ইঞ্জিনচালিত নৌকায়, এমনকি বরিশালের সমাবেশে অনেককে কলাগাছের ভেলায় চড়েও সমাবেশে যোগ দিতে দেখা গেছে। নেতা-কর্মীদের এই উদ্দীপনা দলটির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির প্রমাণ বহন করে কি না, সেটা তর্কসাপেক্ষ ব্যাপার। তবে এটা স্বীকার করতেই হবে যে গত প্রায় এক যুগের মধ্যে এবারই বিএনপির নেতা-কর্মীরা ভয়ভীতি উপেক্ষা করে দলীয় কর্মসূচি সফল করতে সচেষ্ট হয়েছেন। দীর্ঘদিনের শীতনিদ্রার পর বিএনপির এই আড়মোড়া ভেঙে জেগে ওঠাকে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে। তারা বলছে, বিএনপির এই উদ্দীপ্ত অবস্থা নিকট ভবিষ্যতে দেশের রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহে বড় রকমের প্রভাব ফেলতে পারে।
একই সঙ্গে এ প্রশ্নও উঠেছে যে তাহলে কি সরকারের জনপ্রিয়তার সূচক নিম্নমুখী হয়েছে? এ বিষয়ে ১৪ নভেম্বর একটি দৈনিকে ‘বিএনপির কর্মসূচিতে উপস্থিতি নিয়ে চিন্তিত সরকার’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিএনপির গণসমাবেশ কর্মসূচিতে মানুষের উপস্থিতি নিয়ে চিন্তিত আওয়ামী লীগ সরকারের নীতিনির্ধারকেরা। প্রকাশ্যে স্বীকার না করলেও তাঁদের অনেকেই বলছেন, সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রচার তেমন কাজে আসছে না। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, সার, জ্বালানি-তেল, বিদ্যুৎ-গ্যাস সংকট এবং দুর্নীতি সরকারের সাফল্যকে কিছুটা হলেও ম্লান করেছে। দেশবাসী সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সুফল ভোগ করলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেকেই নেতিবাচক দিকগুলোই সামনে আনছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এসব কারণেই বিএনপির সমাবেশগুলোতে উপস্থিতি বাড়ছে।
তবে আওয়ামী লীগের নেতারা তা স্বীকার করতে অনাগ্রহী। তাঁরা বলছেন ভিন্ন কথা। দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী পত্রিকাটিকে বলেছেন, এখানে সরকারের কোনো ব্যর্থতা আছে বলে তিনি মনে করেন না। তাঁর মতে, বর্তমান সরকারের উন্নয়নের কারণে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হয়েছে, কম সময়ে মানুষ যেকোনো স্থানে যেতে পারছে। এ জন্য সমাবেশগুলোতে বিএনপির নেতা-কর্মীরা যেতে পারছেন। জাহাঙ্গীর কবির নানক মনে করেন, বিএনপির সমাবেশে কেমন লোক হয়েছে তা দিয়ে জনপ্রিয়তা প্রমাণিত হয় না। এর মাধ্যমে বিএনপিসহ কোনো মহল যদি সরকারের ব্যর্থতা খোঁজে তাহলে ভুল হবে। তাঁর মতে, জনপ্রিয়তা প্রমাণের একটাই পথ—নির্বাচন।
তিনি আশা করেন, বিএনপি নির্বাচনে এসে জনপ্রিয়তার প্রমাণ দেবে। তবে উল্লিখিত আওয়ামী লীগ নেতারা বিএনপির সমাবেশে জন-উপস্থিতির বিষয়টিকে অবজ্ঞা করতে চাইলেও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বাস্তবতাকে অস্বীকার করতে পারেননি। কয়েক দিন আগে তিনি ঢাকায় একটি সরকারি অনুষ্ঠানে বিএনপির সমাবেশে বিপুল লোকসমাগমের বিষয়টি প্রকাশ্যেই স্বীকার করেছেন।

বিএনপির সাংগঠনিক দুর্বলতার কথা মাথায় রেখেও এটা বলা নিশ্চয়ই অসংগত হবে না যে তৃণমূলে দলটি এখনো বেশ জনসমর্থনপুষ্ট।দীর্ঘ দেড় দশক ধরে দলটি নানা প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবিলা করছে। হাজার হাজার মামলায় লাখ লাখ কর্মী আসামি হয়ে ফেরারি জীবন কাটাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের মতদ্বৈধতা এবং তার প্রভাবে সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলা দলটিকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। তারপরও বিএনপির তৃণমূলের কর্মীরা যে এতটুকু হতোদ্যম হননি, তার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে সমাবেশগুলোতে। কর্মী-সমর্থকেরা এতটাই উজ্জীবিত যে দুদিন আগে সমাবেশস্থলে এসে উন্মুক্ত মাঠে রাত যাপনেও পিছপা হচ্ছেন না।
বিএনপির এই গাত্রোত্থানকে আওয়ামী লীগ ভালো নজরে দেখছে না। বলা যায় এটা তাদের চিন্তাভাবনায় বড় রকমের একটি ধাক্কা দিয়েছে। এর আগে বিএনপির দুরবস্থা এবং আন্দোলনে ব্যর্থতা নিয়ে তাঁরা হাসি-ঠাট্টা কম করেননি। ‘বিএনপির কোমরে জোর নাই’, ‘বিএনপির মরা গাঙে জোয়ার আসবে না’, ‘তাদের মাঠে নামার সাহস নাই’, ‘আন্দোলনের মুরোদ নাই’ ইত্যাকার কথা বলে টীকা-টিপ্পনী কেটেছেন। কিন্তু বিএনপি যেই মাঠে পা রাখতে শুরু করেছে, নানা কায়দায় বাধা দিয়ে তারা তা ঠেকানোর চেষ্টা করছেন। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, বিএনপির সমাবেশকে উপলক্ষ করে বাস, ট্রাক, লরি, লঞ্চ ধর্মঘট ডাকা হলেও কেউই এর দায়িত্ব নিচ্ছেন না। কেউ বলছেন, মালিক-শ্রমিক সংগঠন ধর্মঘট ডাকছে। আবার মালিকেরা বলছেন, তাঁরা জানেনই না কারা ধর্মঘট আহ্বান করছে। এ যেন ভানুমতির খেলা। গায়েবি আওয়াজে ধর্মঘট হচ্ছে, গায়েবি নির্দেশেই আবার উঠে যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, বিএনপির সমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করার এই ব্যর্থ চেষ্টা জনসমক্ষে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভাবমর্যাদাকে যথেষ্ট ক্ষুণ্ন করেছে। আওয়ামী লীগের অনেক সমর্থককে এ নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করতে দেখেছি।
বিএনপির সমাবেশগুলোতে জনসমাগমের ব্যাপকতা যে শাসক মহলে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা সৃষ্টি করেছে, তা দলটির নেতাদের কথাবার্তায় স্পষ্ট। তাঁরা এই বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করছেন যে বিএনপি যদি আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়, তাহলে রাজপথে তার সমুচিত জবাব দেওয়া হবে। কেউ কেউ বলছেন, ‘খেলা হবে।’ তবে সে খেলা কী ধরনের তা অবশ্য পরিষ্কার করছেন না। খেলা যদি হয় জনসমর্থন পক্ষে নিয়ে ভোটে জয়ী হওয়ার, বলার কিছু থাকে না। কিন্তু বক্তাদের শরীরী ভাষা (বডি ল্যাঙ্গুয়েজ) অন্য রকম খেলার ইঙ্গিত দেয়; যা গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে কখনোই কাম্য নয়।
এ কথা অস্বীকার করা যাবে না, বর্তমান সরকারের আমলে দেশের অবকাঠামো খাতে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। যোগাযোগব্যবস্থায় এসেছে যুগান্তকারী পরিবর্তন। সে তুলনায় কি সরকারের জনসমর্থন বেড়েছে? যদি না বেড়ে থাকে তার কারণ কী? সরকারের নীতিনির্ধারণী মহল কি তার কারণ অনুসন্ধান করে দেখেছে? উন্নয়নের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যে দেশে দুর্নীতিরও মহোৎসব চলছে, তা কি অস্বীকার করা যাবে?
পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অগ্নিমূল্যের তাপ প্রতিটি মানুষকে স্পর্শ করেছে। সরকার হাজারো চেষ্টা করেও বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাজার-সিন্ডিকেটের কাছে সরকারকে অসহায় মনে হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে সামনের দিনগুলোতে কী ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে, তা ভেবে কমবেশি সবাই উদ্বিগ্ন। সাধারণ মানুষের একটি বিরাট অংশ তাই সরকারের ওপর বিরক্ত। এ অংশটি যদি বিরোধী দল তথা বিএনপির দিকে ঝুঁকে পড়ে, তাহলে আগামী নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণে তা ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।
সরকারের ওপর জনগণের অসন্তোষের আরকটি কারণ হলো, দেশের প্রায় সর্বত্র ক্ষমতাসীন দলের কর্মী-ক্যাডারদের উৎপাত; বিশেষ করে ছাত্রলীগ-যুবলীগের একশ্রেণির নেতা-কর্মীর উপদ্রবে জনজীবনে এক অস্বস্তিকর পরিবেশ বিরাজ করছে। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দখল, খুন, অপহরণ, ধর্ষণের পর এখন তাঁরা গরু চুরির মতো অরুচিকর অপরাধেও নাম লেখাচ্ছেন। তাঁদের নানা অপকর্ম জনমনে মারাত্মক নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। দলীয় কর্মীদের সন্ত্রাস ও অপরাধমূলক কাজকর্ম সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে চাপা দিয়ে ফেলছে। এসব জনবিরোধী কার্যকলাপ আঘাত হানছে এমন এক জায়গায়, যার প্রতিক্রিয়া পড়বে ভোটের বাক্সে। পদ্মা সেতু পার হয়ে যাওয়া মানুষটি যদি সরকারি দলের কর্মীর দ্বারা লাঞ্ছিত হন, ভোট দিতে গিয়ে তো তাঁর সে কথাটি মনে পড়বেই।
সাম্প্রতিক সমাবেশ কর্মসূচি সফল হওয়ায় বিএনপির নেতারা বেশ উৎফুল্ল সন্দেহ নেই। তাঁদের কথা বলার স্টাইলে এসেছে পরিবর্তন।মাবেশ কর্মসূচি শেষে তাঁরা সরকার পতনের নতুন আন্দোলন-কর্মসূচি দেবেন বলে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করে, সমাবেশ সফল হলেও রাজনৈতিক বায়ুপ্রবাহ বিএনপির দিকে ঘুরে গেছে—এমনটি মনে করার সময় এখনো আসেনি। তাদের মতে, নেতিবাচক কিছু কর্মকাণ্ডের কারণে জনসাধারণ সরকারের ওপর বিরক্ত হলেও বিএনপি তাদের আন্দোলন সফল করতে পারবে—এমন নিশ্চয়তা নেই। একটি কর্মসূচির সফলতা মানেই চূড়ান্ত সফলতা নয়। চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে অনেক চড়াই-উতরাই পার হতে হয়। সামনের দিনগুলোতে বিএনপি তা কতটা পারবে, তার ওপরই নির্ভর করছে ফলাফল।
লেখক: সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক

বিএনপির সাম্প্রতিক সমাবেশগুলোতে লোকসমাগমের প্রাচুর্য দলটির নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করেছে, পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দলের শিরঃপীড়ার কারণ হয়ে উঠেছে বলে রাজনীতিসচেতন ব্যক্তিদের ধারণা। তাঁরা মনে করেন, সমাবেশগুলোতে শুধু দলীয় নেতা-কর্মী নন, উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সাধারণ মানুষও অংশ নিচ্ছে; বিশেষ করে প্রতিটি সমাবেশে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষে সরকারের বাধাদান দলটির কর্মীদের ভেতরে একধরনের জেদের সঞ্চার করেছে।
যার প্রতিফলন ঘটেছে গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়া সত্ত্বেও নেতা-কর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতিতে। তাঁদের কেউ এসেছেন মাইলের পর মাইল হেঁটে, কেউ রিকশা-ভ্যানগাড়িতে, কেউ ইঞ্জিনচালিত নৌকায়, এমনকি বরিশালের সমাবেশে অনেককে কলাগাছের ভেলায় চড়েও সমাবেশে যোগ দিতে দেখা গেছে। নেতা-কর্মীদের এই উদ্দীপনা দলটির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির প্রমাণ বহন করে কি না, সেটা তর্কসাপেক্ষ ব্যাপার। তবে এটা স্বীকার করতেই হবে যে গত প্রায় এক যুগের মধ্যে এবারই বিএনপির নেতা-কর্মীরা ভয়ভীতি উপেক্ষা করে দলীয় কর্মসূচি সফল করতে সচেষ্ট হয়েছেন। দীর্ঘদিনের শীতনিদ্রার পর বিএনপির এই আড়মোড়া ভেঙে জেগে ওঠাকে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে। তারা বলছে, বিএনপির এই উদ্দীপ্ত অবস্থা নিকট ভবিষ্যতে দেশের রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহে বড় রকমের প্রভাব ফেলতে পারে।
একই সঙ্গে এ প্রশ্নও উঠেছে যে তাহলে কি সরকারের জনপ্রিয়তার সূচক নিম্নমুখী হয়েছে? এ বিষয়ে ১৪ নভেম্বর একটি দৈনিকে ‘বিএনপির কর্মসূচিতে উপস্থিতি নিয়ে চিন্তিত সরকার’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিএনপির গণসমাবেশ কর্মসূচিতে মানুষের উপস্থিতি নিয়ে চিন্তিত আওয়ামী লীগ সরকারের নীতিনির্ধারকেরা। প্রকাশ্যে স্বীকার না করলেও তাঁদের অনেকেই বলছেন, সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রচার তেমন কাজে আসছে না। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, সার, জ্বালানি-তেল, বিদ্যুৎ-গ্যাস সংকট এবং দুর্নীতি সরকারের সাফল্যকে কিছুটা হলেও ম্লান করেছে। দেশবাসী সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সুফল ভোগ করলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেকেই নেতিবাচক দিকগুলোই সামনে আনছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এসব কারণেই বিএনপির সমাবেশগুলোতে উপস্থিতি বাড়ছে।
তবে আওয়ামী লীগের নেতারা তা স্বীকার করতে অনাগ্রহী। তাঁরা বলছেন ভিন্ন কথা। দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী পত্রিকাটিকে বলেছেন, এখানে সরকারের কোনো ব্যর্থতা আছে বলে তিনি মনে করেন না। তাঁর মতে, বর্তমান সরকারের উন্নয়নের কারণে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হয়েছে, কম সময়ে মানুষ যেকোনো স্থানে যেতে পারছে। এ জন্য সমাবেশগুলোতে বিএনপির নেতা-কর্মীরা যেতে পারছেন। জাহাঙ্গীর কবির নানক মনে করেন, বিএনপির সমাবেশে কেমন লোক হয়েছে তা দিয়ে জনপ্রিয়তা প্রমাণিত হয় না। এর মাধ্যমে বিএনপিসহ কোনো মহল যদি সরকারের ব্যর্থতা খোঁজে তাহলে ভুল হবে। তাঁর মতে, জনপ্রিয়তা প্রমাণের একটাই পথ—নির্বাচন।
তিনি আশা করেন, বিএনপি নির্বাচনে এসে জনপ্রিয়তার প্রমাণ দেবে। তবে উল্লিখিত আওয়ামী লীগ নেতারা বিএনপির সমাবেশে জন-উপস্থিতির বিষয়টিকে অবজ্ঞা করতে চাইলেও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বাস্তবতাকে অস্বীকার করতে পারেননি। কয়েক দিন আগে তিনি ঢাকায় একটি সরকারি অনুষ্ঠানে বিএনপির সমাবেশে বিপুল লোকসমাগমের বিষয়টি প্রকাশ্যেই স্বীকার করেছেন।

বিএনপির সাংগঠনিক দুর্বলতার কথা মাথায় রেখেও এটা বলা নিশ্চয়ই অসংগত হবে না যে তৃণমূলে দলটি এখনো বেশ জনসমর্থনপুষ্ট।দীর্ঘ দেড় দশক ধরে দলটি নানা প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবিলা করছে। হাজার হাজার মামলায় লাখ লাখ কর্মী আসামি হয়ে ফেরারি জীবন কাটাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের মতদ্বৈধতা এবং তার প্রভাবে সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলা দলটিকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। তারপরও বিএনপির তৃণমূলের কর্মীরা যে এতটুকু হতোদ্যম হননি, তার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে সমাবেশগুলোতে। কর্মী-সমর্থকেরা এতটাই উজ্জীবিত যে দুদিন আগে সমাবেশস্থলে এসে উন্মুক্ত মাঠে রাত যাপনেও পিছপা হচ্ছেন না।
বিএনপির এই গাত্রোত্থানকে আওয়ামী লীগ ভালো নজরে দেখছে না। বলা যায় এটা তাদের চিন্তাভাবনায় বড় রকমের একটি ধাক্কা দিয়েছে। এর আগে বিএনপির দুরবস্থা এবং আন্দোলনে ব্যর্থতা নিয়ে তাঁরা হাসি-ঠাট্টা কম করেননি। ‘বিএনপির কোমরে জোর নাই’, ‘বিএনপির মরা গাঙে জোয়ার আসবে না’, ‘তাদের মাঠে নামার সাহস নাই’, ‘আন্দোলনের মুরোদ নাই’ ইত্যাকার কথা বলে টীকা-টিপ্পনী কেটেছেন। কিন্তু বিএনপি যেই মাঠে পা রাখতে শুরু করেছে, নানা কায়দায় বাধা দিয়ে তারা তা ঠেকানোর চেষ্টা করছেন। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, বিএনপির সমাবেশকে উপলক্ষ করে বাস, ট্রাক, লরি, লঞ্চ ধর্মঘট ডাকা হলেও কেউই এর দায়িত্ব নিচ্ছেন না। কেউ বলছেন, মালিক-শ্রমিক সংগঠন ধর্মঘট ডাকছে। আবার মালিকেরা বলছেন, তাঁরা জানেনই না কারা ধর্মঘট আহ্বান করছে। এ যেন ভানুমতির খেলা। গায়েবি আওয়াজে ধর্মঘট হচ্ছে, গায়েবি নির্দেশেই আবার উঠে যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, বিএনপির সমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করার এই ব্যর্থ চেষ্টা জনসমক্ষে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভাবমর্যাদাকে যথেষ্ট ক্ষুণ্ন করেছে। আওয়ামী লীগের অনেক সমর্থককে এ নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করতে দেখেছি।
বিএনপির সমাবেশগুলোতে জনসমাগমের ব্যাপকতা যে শাসক মহলে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা সৃষ্টি করেছে, তা দলটির নেতাদের কথাবার্তায় স্পষ্ট। তাঁরা এই বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করছেন যে বিএনপি যদি আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়, তাহলে রাজপথে তার সমুচিত জবাব দেওয়া হবে। কেউ কেউ বলছেন, ‘খেলা হবে।’ তবে সে খেলা কী ধরনের তা অবশ্য পরিষ্কার করছেন না। খেলা যদি হয় জনসমর্থন পক্ষে নিয়ে ভোটে জয়ী হওয়ার, বলার কিছু থাকে না। কিন্তু বক্তাদের শরীরী ভাষা (বডি ল্যাঙ্গুয়েজ) অন্য রকম খেলার ইঙ্গিত দেয়; যা গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে কখনোই কাম্য নয়।
এ কথা অস্বীকার করা যাবে না, বর্তমান সরকারের আমলে দেশের অবকাঠামো খাতে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। যোগাযোগব্যবস্থায় এসেছে যুগান্তকারী পরিবর্তন। সে তুলনায় কি সরকারের জনসমর্থন বেড়েছে? যদি না বেড়ে থাকে তার কারণ কী? সরকারের নীতিনির্ধারণী মহল কি তার কারণ অনুসন্ধান করে দেখেছে? উন্নয়নের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যে দেশে দুর্নীতিরও মহোৎসব চলছে, তা কি অস্বীকার করা যাবে?
পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অগ্নিমূল্যের তাপ প্রতিটি মানুষকে স্পর্শ করেছে। সরকার হাজারো চেষ্টা করেও বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাজার-সিন্ডিকেটের কাছে সরকারকে অসহায় মনে হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে সামনের দিনগুলোতে কী ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে, তা ভেবে কমবেশি সবাই উদ্বিগ্ন। সাধারণ মানুষের একটি বিরাট অংশ তাই সরকারের ওপর বিরক্ত। এ অংশটি যদি বিরোধী দল তথা বিএনপির দিকে ঝুঁকে পড়ে, তাহলে আগামী নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণে তা ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।
সরকারের ওপর জনগণের অসন্তোষের আরকটি কারণ হলো, দেশের প্রায় সর্বত্র ক্ষমতাসীন দলের কর্মী-ক্যাডারদের উৎপাত; বিশেষ করে ছাত্রলীগ-যুবলীগের একশ্রেণির নেতা-কর্মীর উপদ্রবে জনজীবনে এক অস্বস্তিকর পরিবেশ বিরাজ করছে। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দখল, খুন, অপহরণ, ধর্ষণের পর এখন তাঁরা গরু চুরির মতো অরুচিকর অপরাধেও নাম লেখাচ্ছেন। তাঁদের নানা অপকর্ম জনমনে মারাত্মক নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। দলীয় কর্মীদের সন্ত্রাস ও অপরাধমূলক কাজকর্ম সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে চাপা দিয়ে ফেলছে। এসব জনবিরোধী কার্যকলাপ আঘাত হানছে এমন এক জায়গায়, যার প্রতিক্রিয়া পড়বে ভোটের বাক্সে। পদ্মা সেতু পার হয়ে যাওয়া মানুষটি যদি সরকারি দলের কর্মীর দ্বারা লাঞ্ছিত হন, ভোট দিতে গিয়ে তো তাঁর সে কথাটি মনে পড়বেই।
সাম্প্রতিক সমাবেশ কর্মসূচি সফল হওয়ায় বিএনপির নেতারা বেশ উৎফুল্ল সন্দেহ নেই। তাঁদের কথা বলার স্টাইলে এসেছে পরিবর্তন।মাবেশ কর্মসূচি শেষে তাঁরা সরকার পতনের নতুন আন্দোলন-কর্মসূচি দেবেন বলে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করে, সমাবেশ সফল হলেও রাজনৈতিক বায়ুপ্রবাহ বিএনপির দিকে ঘুরে গেছে—এমনটি মনে করার সময় এখনো আসেনি। তাদের মতে, নেতিবাচক কিছু কর্মকাণ্ডের কারণে জনসাধারণ সরকারের ওপর বিরক্ত হলেও বিএনপি তাদের আন্দোলন সফল করতে পারবে—এমন নিশ্চয়তা নেই। একটি কর্মসূচির সফলতা মানেই চূড়ান্ত সফলতা নয়। চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে অনেক চড়াই-উতরাই পার হতে হয়। সামনের দিনগুলোতে বিএনপি তা কতটা পারবে, তার ওপরই নির্ভর করছে ফলাফল।
লেখক: সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

বিএনপির সাম্প্রতিক সমাবেশগুলোতে লোকসমাগমের প্রাচুর্য দলটির নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করেছে, পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দলের শিরঃপীড়ার কারণ হয়ে উঠেছে বলে রাজনীতিসচেতন ব্যক্তিদের ধারণা।
২৭ নভেম্বর ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

বিএনপির সাম্প্রতিক সমাবেশগুলোতে লোকসমাগমের প্রাচুর্য দলটির নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করেছে, পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দলের শিরঃপীড়ার কারণ হয়ে উঠেছে বলে রাজনীতিসচেতন ব্যক্তিদের ধারণা।
২৭ নভেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

বিএনপির সাম্প্রতিক সমাবেশগুলোতে লোকসমাগমের প্রাচুর্য দলটির নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করেছে, পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দলের শিরঃপীড়ার কারণ হয়ে উঠেছে বলে রাজনীতিসচেতন ব্যক্তিদের ধারণা।
২৭ নভেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

বিএনপির সাম্প্রতিক সমাবেশগুলোতে লোকসমাগমের প্রাচুর্য দলটির নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করেছে, পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দলের শিরঃপীড়ার কারণ হয়ে উঠেছে বলে রাজনীতিসচেতন ব্যক্তিদের ধারণা।
২৭ নভেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫