
আজকের পত্রিকা: চলমান জ্বালানি-সংকটের মূল কারণ কী?
এম শামসুল আলম: দেশের চলমান জ্বালানি-সংকটের মূল কারণ চাহিদার সঙ্গে সরবরাহের সামঞ্জস্য নেই। চাহিদা তৈরির ক্ষেত্রে সরবরাহের যখন সীমাবদ্ধতা থাকে, তখন তা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে হয়। কিন্তু আমরা চাহিদা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রাখিনি। আবার সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য যেসব নীতি ও কৌশল গ্রহণ করেছি, সেগুলো বাস্তবসম্মত ছিল না। এ কারণে দেখা যাচ্ছে, আমরা দীর্ঘদিন ধরে জ্বালানি-সংকট, লোডশেডিং, ঘাটতি, মূল্যবৃদ্ধি এবং আর্থিক সংকটে আছি।এই সংকটের জায়গাটিকে নানাজন, নানা দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখে।আমাদের নীতি ও কৌশলে বিভ্রান্তি রয়েছে। আর নীতিগত বিভ্রান্তি থাকলে কৌশলগত ত্রুটি তৈরি হবেই। এতে করে পরিকল্পনাও ভুল হতে বাধ্য। পরিকল্পনা ভুল হওয়ায় সেটি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে জ্বালানিনিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। চাহিদামতো সরবরাহ না হওয়ায় টেকসই জ্বালানিনিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।
আজকের পত্রিকা: নীতিগত সমস্যার জায়গাটা কী রকম?
এম শামসুল আলম: প্রথম কথা হলো, জ্বালানি খাত সেবা না বাণিজ্যিক খাত—এ বিষয়ে রাষ্ট্রকে আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। খাদ্যকে কি আমরা বাণিজ্যিক পণ্য হিসেবে বিবেচনা করি? রাষ্ট্রীয় দর্শন ও রাষ্ট্রীয় আদর্শের জায়গা থেকে খাদ্যকে রাষ্ট্র নিশ্চয় বাণিজ্যিক পণ্য হিসেবে দেখে না। খাদ্যের অভাবে ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছে। সেই সময় আমরা কৃষিতে সবুজ বিপ্লবের মাধ্যমে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা ভেবেছি। কিন্তু আমরা তা অর্জন করতে পারিনি। এরপর প্রতিবছর প্রচুর পরিমাণ খাদ্য আমদানি করতে হয়েছে। এতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয়েছে। সেখান থেকে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে নিজস্ব সক্ষমতা অর্জন করার জন্য রাষ্ট্রীয় দর্শন ও নীতি দ্বারা আমরা উদ্বুদ্ধ হয়েছি। সে কারণে প্রতিবছর বাজেটে কৃষি খাতে একটা ভালো ভর্তুকির ব্যবস্থা থাকে। শুধু উৎপাদন বৃদ্ধি করা নয়, সেই উৎপাদিত খাদ্য মানুষ তার সাধ্য ও সামর্থ্য অনুযায়ী যাতে কিনতে পারে, সে জন্য ভর্তুকি দিয়ে উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে খাদ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়েছে। সেই নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে সরকারকে প্রচুর পরিমাণ ভর্তুকি দিতে হয়েছে। সেই ভর্তুকি না দিলে সরকারের পক্ষে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হতো না।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই সীমিত চাহিদা থাকায় জ্বালানির তেমন প্রয়োজন পড়ত না। একসময় আমাদের কৃষকেরা লাঙল-গরু দিয়ে জমি চাষ করতেন। আর পানির জন্য প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। সেই সময় কৃষিব্যবস্থা এত আধুনিকও ছিল না। কিন্তু একসময় কৃষিতে ব্যাপক আকারে সেচব্যবস্থা চলে আসে। কৃষির সবকিছু একসময় যন্ত্রনির্ভরশীল হওয়ায় কৃষিতে বিপুল পরিমাণে জ্বালানির চাহিদা তৈরি হয়। গ্রামে বিদ্যুতের দরকার হতো না। মানুষ হেঁটে বা গরু, মহিষের গাড়িতে আশপাশের এলাকায় এবং ঘোড়ার গাড়িতে জেলা, মহকুমা, থানা শহরে যাতায়াত করত। পাশাপাশি দেশে শিল্পায়নও বাড়তে থাকে। এসব পরিপ্রেক্ষিতে একসময় জ্বালানির চাহিদা বাড়তে থাকে। কিন্তু আগে থেকে জ্বালানি নিয়ে না ভাবার কারণে তখন এর চাহিদা মেটানোর জন্য নিজস্ব জ্বালানি উন্নয়নে আমরা এগিয়ে আসিনি। আমাদের চাহিদা সীমিত থাকায় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাণিজ্যিক বিবেচনায় রপ্তানির উদ্দেশ্যে আমাদের জ্বালানি সম্পদের উন্নয়নে এগিয়ে আসে। সরকার পিছিয়ে থাকে। তাদের উন্নয়ন নীতি ও কৌশল তারা সরকারকে দিয়ে তাদের স্বার্থে, তাদের মতো করে করিয়ে নেয়। তেল, গ্যাস, কয়লা রপ্তানিবিরোধী আন্দোলনের মুখে সরকার রপ্তানি করার নীতি থেকে সরে আসে। ফলে অভ্যন্তরীণ বাজার তাদের জন্য লাভজনক না হওয়ায় তারা বিনিয়োগ করা থেকে পিছিয়ে যায়। ফলে আমাদের জ্বালানি সম্পদ উন্নয়নে গতি হারায়।
এখন তেল, এলএনজি, কয়লা, এমনকি বিদ্যুৎ আমদানি করেও চাহিদামাফিক বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। ভর্তুকি কমানোর লক্ষ্যে কয়লা, এলএনজি, তেল আমদানি কমানো হয়। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে। অতীতের মতো ভর্তুকি কমানোর জন্য বিদ্যুতের দাম আর বাড়ানো যাচ্ছে না। ফলে লোডশেডিং অনিবার্য। অবশ্যম্ভাবী জ্বালানি-সংকট এভাবেই তৈরি হয়েছে।
জ্বালানিকে বাণিজ্যিক খাত করতে গিয়ে এ সমস্যা তৈরি হয়েছে। আর বাণিজ্যিক খাত করতে গিয়ে সরকার বিনিয়োগবিমুখ হয়ে গেছে।যারা জ্বালানি খাতের উন্নয়নে বিনিয়োগ করবে তারা লাভবান হবে। তারা সেই লাভের জন্যই বিনিয়োগ করতে আসবে। সুতরাং এটিই দর্শন ও নীতিগত ব্যাপার। দর্শনটা হলো, সরকার এ খাত উন্নয়নে টাকা খরচ করবে না, কিন্তু জ্বালানিনিরাপত্তা নিশ্চিত হবে এবং যত বেশি উন্নয়ন হবে, সরকার তত বেশি রাজস্ব পাবে। আর নীতিটা হলো এ খাত উন্নয়ন ব্যক্তি বিনিয়োগে হবে। জ্বালানি উন্নয়নের এমন দর্শনে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সরকারকে উদ্বুদ্ধ করলেন। এতে জনগণের কল্যাণ নাকি সর্বনাশ হবে, এমন চিন্তা যদি সরকারের মাথায় তখন আসত, তাহলে জ্বালানি-সংকট অবশ্যম্ভাবী হতো না। খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করার মতোই জনগণের কল্যাণে জ্বালানিনিরাপত্তা নিশ্চিত করাও সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব। সে দায়িত্ব পালনে সরকার বিভ্রান্তির শিকার।
আজকের পত্রিকা: বর্তমানে জ্বালানি-সংকট থেকে মুক্তি পেতে সরকার দরপত্র দিয়ে বিদেশি কোম্পানিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। তাতে কি সমস্যার সমাধান হবে?
এম শামসুল আলম: সমস্যার সমাধান খুঁজতে হলে পেছনে ফিরতে হবে। নিজস্ব সম্পদ এবং নিজস্ব সক্ষমতায় আমরা উন্নয়ন করব। নিজস্ব সম্পদ উন্নয়নের জন্য আমাদের সক্ষমতা উন্নয়ন দরকার। এর জন্য স্বাধীনতা লাভের পরপরই আমরা গ্যাস খাত উন্নয়নে তিনটি কোম্পানি গঠন করলাম। ২০১০ সালে ভোক্তার অর্থে গ্যাস উন্নয়ন তহবিল হলো। গ্যাস, তেল ও বিদ্যুৎ খাত উন্নয়নে প্রতিযোগিতাবিহীন ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ বেশি বেশি আনা হলো। এসব কেন করা হলো? মানে আমরা কম দামে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ করব।
এতে জনগণ কম দামে জ্বালানি সেবা পাবে। এভাবে আমাদের জ্বালানিনিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। এই ছিল আমাদের জ্বালানির দর্শন। সে কারণে আমরা পাইপলাইনে গ্যাস ও সাগরের গ্যাস এলএনজি করে রপ্তানি করা থেকে পিছিয়ে এলাম। সে জন্য আইওসিগুলোর সঙ্গে আমাদের লড়াই করতে হলো। ভারত আমাদের গ্যাস নেওয়ার জন্য পাগল হয়ে গেল। বিবিয়ানার গ্যাস রপ্তানি করতে দিলাম না।
ভোলার গ্যাসও বিদেশি বিনিয়োগকারীর পরিকল্পনামতো ব্যবসা করার জন্য তাদের হাতে ছেড়ে দিলাম না। পরে বিদেশি বিনিয়োগে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন করে ৮০ শতাংশ রপ্তানির চেষ্টা চলে। তাতে কৃষির সর্বনাশ হতো। কৃষক পথে বসতেন। ভূগর্ভস্থ পানির সর্বনাশ হতো। ফলে উন্মুক্ত খনি ও কয়লা রপ্তানির প্রতিবাদে মানুষ রাস্তায় নামল। জীবন দিল। তারপর সেসব বন্ধ হলো। এই সবকিছুর একটাই উদ্দেশ্য তা হলো—আমরা কম খরচে জ্বালানি পাব এবং আমাদের টেকসই নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
পরবর্তী পর্যায়ে দেখা গেল, গ্যাস ও কয়লা রপ্তানি করা হলো না। রপ্তানি না করলে তা নিজস্ব বিনিয়োগ সক্ষমতায় উত্তোলন করতে হবে। কেন উত্তোলন হলো না? কারণ, সরকার বিনিয়োগে এগিয়ে এল না। বিদেশিরা বিনিয়োগ করত, যদি তাদের ব্যবসা হতো। তাদের ব্যবসা হবে না বলে তারা চলে গেল। ফলে গ্যাস ও কয়লা উত্তোলন এবং তেল অনুসন্ধান হলো না। সরকার জ্বালানি আমদানিতে মনোযোগী হলো। কয়লা, এলএনজি ও তেল আমদানি বৃদ্ধি হলো। জ্বালানি ও বিদ্যুতের সরবরাহ ব্যয় বেড়ে গেল। জ্বালানিনিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ঝুঁকি বাড়ল।
এখন প্রতিযোগিতাভিত্তিক বিদেশি বিনিয়োগে গ্যাস উত্তোলনের উদ্যোগ জ্বালানিনিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ইতিবাচক বলা যায়।বিনিয়োগকারী কর্তৃক উত্তোলন করা গ্যাস আমরা কিনে নেব। না কিনলে সেই গ্যাস এলএনজি হিসেবে রপ্তানি হবে। সেই সঙ্গে ব্যয়বহুল এলএনজি আমদানি অব্যাহত থাকবে। আবার তেল ও কয়লা আমদানি করে বিদ্যুৎ উৎপাদনও অব্যাহত থাকবে। চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সঞ্চালন এবং বিতরণের ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। এমন সব নানা উন্নয়ন কাণ্ড-কারখানা করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। এখন দেখার বিষয়, আলোচ্য গ্যাস উত্তোলন ও সরবরাহ বৃদ্ধিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কী পরিমাণ এলএনজি, কয়লা, তেল আমদানি কমে এবং জ্বালানি আমদানি ব্যয় সাশ্রয় হয় কি না?
আজকের পত্রিকা: দেশের অনেক গ্যাসক্ষেত্র অনাবিষ্কৃত আছে। কিন্তু সরকার বাপেক্সকে নিষ্ক্রিয় করে রেখেছে। এখন কি এই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে?
এম শামসুল আলম: এই অবস্থার পরিবর্তনের এখনো কোনো আলামত দেখা যাচ্ছে না। বাপেক্সের ক্যাপাসিটি বিল্ডআপ করার জন্য, অর্থাৎ আর্থিক ও কারিগরি সক্ষমতা উন্নয়ন করার জন্য গ্যাস উন্নয়ন তহবিলে বছরে দেড় হাজার কোটি টাকা ভোক্তারা দেয়। সেই টাকা তারা খরচ করতে পারে না। ২০২২ সালের হিসাবে দেখা যায়, তহবিলের ৬৫ শতাংশ টাকা খরচ হয়নি। বাকি টাকার বেশির ভাগই খরচ হয়েছে গ্যাস উত্তোলনে নিয়োজিত বিদেশি ঠিকাদারের বিল পরিশোধে। এই টাকায় বাপেক্সের দ্বারা যেমন গ্যাস উত্তোলন করা হলো না, তেমনি সেই টাকা দিয়ে বাপেক্সের সক্ষমতাও উন্নয়ন হলো না।
সকল পর্যায় থেকে বলা হয়েছে, স্থলভাগের গ্যাস অনুসন্ধানে বাপেক্সের সক্ষমতা আছে। আমরা সবাই জানি, তাদের দিয়ে উত্তোলন করালে গ্যাসের উৎপাদন ব্যয় কম হবে। কিন্তু বাপেক্সের নামে গ্যাস উন্নয়ন তহবিলের টাকা খরচ হয় বাপেক্সের কাজে নিয়োজিত বিদেশি ঠিকাদারের বিল পরিশোধে। ফলে বাপেক্স যে খরচে গ্যাস উত্তোলন করতে পারত, তার চেয়ে দুই থেকে আড়াই গুণ খরচ বেড়ে গেল। এভাবে বিদেশি ঠিকাদার দিয়ে গ্যাস উত্তোলন করে একদিকে উত্তোলন ব্যয় বাড়ানো হলো, অন্য দিকে বাপেক্সকে নিষ্ক্রিয় করে রাখা গেল। বিষয়টি পরিকল্পিত, ভুল কিংবা অন্য কিছু নয়। জাতীয় সক্ষমতা উন্নয়নের এমন জাতীয় প্রত্যাশাকে এভাবেই দাফন করা হলো।
এ থেকে বোঝা যায়, একটা চক্র স্বাধীনতার পর থেকেই এ খাতটাকে বিদেশি তেল-গ্যাস কোম্পানির ব্যবসার কেন্দ্রে পরিণত করতে চেয়েছে। আর সেই জায়গায়, বিশেষ করে আমলারা কাজ করেছেন। কানাডার গোয়েন্দা সংস্থা যখন নাইকো দুর্নীতির ঘটনাটা উন্মোচন করল, তখন জানা গেল, কীভাবে চার মিলিয়ন ডলার ঘুষের বিনিময়ে নাইকো ভার্জিন ছাতক (পূর্ব) গ্যাসক্ষেত্রকে পতিত গ্যাসক্ষেত্র হিসেবে নিয়েছিল। সেখানে কারা কীভাবে জড়িত ছিল এবং তারা কে কত ডলার পেয়েছে, তার হিসাব প্রকাশ পেয়েছিল। আর এসব ক্ষেত্রে মূল কাজটি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে জ্বালানি বিভাগের বড় কর্মকর্তারা। সেই কর্মকর্তারাই ভার্জিন গ্যাসক্ষেত্রকে পতিত হিসেবে নাইকোর হাতে তুলে দিয়েছিলেন।
আজকের পত্রিকা: জ্বালানি আমদানিনির্ভরতা কমাতে আমরা এখন কী করতে পারি?
এম শামসুল আলম: এখন গরমের কারণে লোডশেডিং শুরু হয়ে গেছে। প্রতিবছরই গরমের সময় এটা হচ্ছে। অবস্থার কোনো ধরনের উন্নতি হচ্ছে না। অথচ সরকার দাবি করছে, আমরা অনেক উন্নতি করেছি। এই যে সমস্যা, সেটা আগে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে বুঝতে হবে।আসলে আমাদের জ্বালানি খাতে কোনো উন্নয়ন হয়নি, লুণ্ঠন হয়েছে। নইলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ (বিশেষ) ২০১০ বহু আগেই রহিত হতো, বিইআরসি আইন ২০০৩ সংশোধনী দ্বারা গণশুনানি রহিত করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্যহার নির্ধারণের ক্ষমতা সরকার নিজের হাতে নিয়ে বিতর্কিত হতো না, তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা এত বেশি বৃদ্ধি করা হতো না এবং সেই সঙ্গে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত ফার্নেস অয়েলের প্রায় ৯০ শতাংশ আমদানির ক্ষমতা ব্যক্তি খাত বিদ্যুৎ ব্যবসায়ীদের হাতে ছেড়ে দিয়ে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি করা হতো না। এটাই আসল কথা। আর এ কথা আগে আমাদের সবার বুঝের মধ্যে আসতে হবে। সুতরাং সবার আগে লুণ্ঠন ঠেকাতে হবে। লুণ্ঠন ঠেকানোর জন্য প্রথম কাজ হচ্ছে: (১) এই খাতকে সরকারের রাজস্ব আহরণ ও বাণিজ্যিক খাত হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না এবং (২) এ খাতকে কৃষির মতো সেবা খাত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
সরকার তার সব কোম্পানিকে যেভাবে মুনাফার জন্য ব্যবহার করছে, তার মানে একদিকে কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে সরকার করপোরেট ট্যাক্স নিচ্ছে, অন্যদিকে কোম্পানির লাভের অংশ পাচ্ছে। এই ট্যাক্স ও লভ্যাংশ বৃদ্ধির জন্য অসাধু ব্যবসায়ীদের মতোই সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা এখন মরিয়া। আবার বছরের পর বছর ধরে কোম্পানিগুলোর সঞ্চিত উদ্বৃত্ত অর্থ আইন করে তারা সরকারি কোষাগারে নিয়ে যাচ্ছেন। এতে ভয়ংকরভাবে সরকারের অসাধু ব্যবসায়িক ও বাণিজ্যিক চরিত্রের প্রকাশ ঘটেছে। সরকারকে জনগণের কল্যাণ করার জন্য রাষ্ট্রের দর্শন ও আদর্শ বাস্তবায়ন করতে হবে।

আজকের পত্রিকা: চলমান জ্বালানি-সংকটের মূল কারণ কী?
এম শামসুল আলম: দেশের চলমান জ্বালানি-সংকটের মূল কারণ চাহিদার সঙ্গে সরবরাহের সামঞ্জস্য নেই। চাহিদা তৈরির ক্ষেত্রে সরবরাহের যখন সীমাবদ্ধতা থাকে, তখন তা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে হয়। কিন্তু আমরা চাহিদা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রাখিনি। আবার সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য যেসব নীতি ও কৌশল গ্রহণ করেছি, সেগুলো বাস্তবসম্মত ছিল না। এ কারণে দেখা যাচ্ছে, আমরা দীর্ঘদিন ধরে জ্বালানি-সংকট, লোডশেডিং, ঘাটতি, মূল্যবৃদ্ধি এবং আর্থিক সংকটে আছি।এই সংকটের জায়গাটিকে নানাজন, নানা দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখে।আমাদের নীতি ও কৌশলে বিভ্রান্তি রয়েছে। আর নীতিগত বিভ্রান্তি থাকলে কৌশলগত ত্রুটি তৈরি হবেই। এতে করে পরিকল্পনাও ভুল হতে বাধ্য। পরিকল্পনা ভুল হওয়ায় সেটি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে জ্বালানিনিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। চাহিদামতো সরবরাহ না হওয়ায় টেকসই জ্বালানিনিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।
আজকের পত্রিকা: নীতিগত সমস্যার জায়গাটা কী রকম?
এম শামসুল আলম: প্রথম কথা হলো, জ্বালানি খাত সেবা না বাণিজ্যিক খাত—এ বিষয়ে রাষ্ট্রকে আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। খাদ্যকে কি আমরা বাণিজ্যিক পণ্য হিসেবে বিবেচনা করি? রাষ্ট্রীয় দর্শন ও রাষ্ট্রীয় আদর্শের জায়গা থেকে খাদ্যকে রাষ্ট্র নিশ্চয় বাণিজ্যিক পণ্য হিসেবে দেখে না। খাদ্যের অভাবে ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছে। সেই সময় আমরা কৃষিতে সবুজ বিপ্লবের মাধ্যমে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা ভেবেছি। কিন্তু আমরা তা অর্জন করতে পারিনি। এরপর প্রতিবছর প্রচুর পরিমাণ খাদ্য আমদানি করতে হয়েছে। এতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয়েছে। সেখান থেকে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে নিজস্ব সক্ষমতা অর্জন করার জন্য রাষ্ট্রীয় দর্শন ও নীতি দ্বারা আমরা উদ্বুদ্ধ হয়েছি। সে কারণে প্রতিবছর বাজেটে কৃষি খাতে একটা ভালো ভর্তুকির ব্যবস্থা থাকে। শুধু উৎপাদন বৃদ্ধি করা নয়, সেই উৎপাদিত খাদ্য মানুষ তার সাধ্য ও সামর্থ্য অনুযায়ী যাতে কিনতে পারে, সে জন্য ভর্তুকি দিয়ে উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে খাদ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়েছে। সেই নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে সরকারকে প্রচুর পরিমাণ ভর্তুকি দিতে হয়েছে। সেই ভর্তুকি না দিলে সরকারের পক্ষে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হতো না।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই সীমিত চাহিদা থাকায় জ্বালানির তেমন প্রয়োজন পড়ত না। একসময় আমাদের কৃষকেরা লাঙল-গরু দিয়ে জমি চাষ করতেন। আর পানির জন্য প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। সেই সময় কৃষিব্যবস্থা এত আধুনিকও ছিল না। কিন্তু একসময় কৃষিতে ব্যাপক আকারে সেচব্যবস্থা চলে আসে। কৃষির সবকিছু একসময় যন্ত্রনির্ভরশীল হওয়ায় কৃষিতে বিপুল পরিমাণে জ্বালানির চাহিদা তৈরি হয়। গ্রামে বিদ্যুতের দরকার হতো না। মানুষ হেঁটে বা গরু, মহিষের গাড়িতে আশপাশের এলাকায় এবং ঘোড়ার গাড়িতে জেলা, মহকুমা, থানা শহরে যাতায়াত করত। পাশাপাশি দেশে শিল্পায়নও বাড়তে থাকে। এসব পরিপ্রেক্ষিতে একসময় জ্বালানির চাহিদা বাড়তে থাকে। কিন্তু আগে থেকে জ্বালানি নিয়ে না ভাবার কারণে তখন এর চাহিদা মেটানোর জন্য নিজস্ব জ্বালানি উন্নয়নে আমরা এগিয়ে আসিনি। আমাদের চাহিদা সীমিত থাকায় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাণিজ্যিক বিবেচনায় রপ্তানির উদ্দেশ্যে আমাদের জ্বালানি সম্পদের উন্নয়নে এগিয়ে আসে। সরকার পিছিয়ে থাকে। তাদের উন্নয়ন নীতি ও কৌশল তারা সরকারকে দিয়ে তাদের স্বার্থে, তাদের মতো করে করিয়ে নেয়। তেল, গ্যাস, কয়লা রপ্তানিবিরোধী আন্দোলনের মুখে সরকার রপ্তানি করার নীতি থেকে সরে আসে। ফলে অভ্যন্তরীণ বাজার তাদের জন্য লাভজনক না হওয়ায় তারা বিনিয়োগ করা থেকে পিছিয়ে যায়। ফলে আমাদের জ্বালানি সম্পদ উন্নয়নে গতি হারায়।
এখন তেল, এলএনজি, কয়লা, এমনকি বিদ্যুৎ আমদানি করেও চাহিদামাফিক বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। ভর্তুকি কমানোর লক্ষ্যে কয়লা, এলএনজি, তেল আমদানি কমানো হয়। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে। অতীতের মতো ভর্তুকি কমানোর জন্য বিদ্যুতের দাম আর বাড়ানো যাচ্ছে না। ফলে লোডশেডিং অনিবার্য। অবশ্যম্ভাবী জ্বালানি-সংকট এভাবেই তৈরি হয়েছে।
জ্বালানিকে বাণিজ্যিক খাত করতে গিয়ে এ সমস্যা তৈরি হয়েছে। আর বাণিজ্যিক খাত করতে গিয়ে সরকার বিনিয়োগবিমুখ হয়ে গেছে।যারা জ্বালানি খাতের উন্নয়নে বিনিয়োগ করবে তারা লাভবান হবে। তারা সেই লাভের জন্যই বিনিয়োগ করতে আসবে। সুতরাং এটিই দর্শন ও নীতিগত ব্যাপার। দর্শনটা হলো, সরকার এ খাত উন্নয়নে টাকা খরচ করবে না, কিন্তু জ্বালানিনিরাপত্তা নিশ্চিত হবে এবং যত বেশি উন্নয়ন হবে, সরকার তত বেশি রাজস্ব পাবে। আর নীতিটা হলো এ খাত উন্নয়ন ব্যক্তি বিনিয়োগে হবে। জ্বালানি উন্নয়নের এমন দর্শনে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সরকারকে উদ্বুদ্ধ করলেন। এতে জনগণের কল্যাণ নাকি সর্বনাশ হবে, এমন চিন্তা যদি সরকারের মাথায় তখন আসত, তাহলে জ্বালানি-সংকট অবশ্যম্ভাবী হতো না। খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করার মতোই জনগণের কল্যাণে জ্বালানিনিরাপত্তা নিশ্চিত করাও সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব। সে দায়িত্ব পালনে সরকার বিভ্রান্তির শিকার।
আজকের পত্রিকা: বর্তমানে জ্বালানি-সংকট থেকে মুক্তি পেতে সরকার দরপত্র দিয়ে বিদেশি কোম্পানিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। তাতে কি সমস্যার সমাধান হবে?
এম শামসুল আলম: সমস্যার সমাধান খুঁজতে হলে পেছনে ফিরতে হবে। নিজস্ব সম্পদ এবং নিজস্ব সক্ষমতায় আমরা উন্নয়ন করব। নিজস্ব সম্পদ উন্নয়নের জন্য আমাদের সক্ষমতা উন্নয়ন দরকার। এর জন্য স্বাধীনতা লাভের পরপরই আমরা গ্যাস খাত উন্নয়নে তিনটি কোম্পানি গঠন করলাম। ২০১০ সালে ভোক্তার অর্থে গ্যাস উন্নয়ন তহবিল হলো। গ্যাস, তেল ও বিদ্যুৎ খাত উন্নয়নে প্রতিযোগিতাবিহীন ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ বেশি বেশি আনা হলো। এসব কেন করা হলো? মানে আমরা কম দামে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ করব।
এতে জনগণ কম দামে জ্বালানি সেবা পাবে। এভাবে আমাদের জ্বালানিনিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। এই ছিল আমাদের জ্বালানির দর্শন। সে কারণে আমরা পাইপলাইনে গ্যাস ও সাগরের গ্যাস এলএনজি করে রপ্তানি করা থেকে পিছিয়ে এলাম। সে জন্য আইওসিগুলোর সঙ্গে আমাদের লড়াই করতে হলো। ভারত আমাদের গ্যাস নেওয়ার জন্য পাগল হয়ে গেল। বিবিয়ানার গ্যাস রপ্তানি করতে দিলাম না।
ভোলার গ্যাসও বিদেশি বিনিয়োগকারীর পরিকল্পনামতো ব্যবসা করার জন্য তাদের হাতে ছেড়ে দিলাম না। পরে বিদেশি বিনিয়োগে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন করে ৮০ শতাংশ রপ্তানির চেষ্টা চলে। তাতে কৃষির সর্বনাশ হতো। কৃষক পথে বসতেন। ভূগর্ভস্থ পানির সর্বনাশ হতো। ফলে উন্মুক্ত খনি ও কয়লা রপ্তানির প্রতিবাদে মানুষ রাস্তায় নামল। জীবন দিল। তারপর সেসব বন্ধ হলো। এই সবকিছুর একটাই উদ্দেশ্য তা হলো—আমরা কম খরচে জ্বালানি পাব এবং আমাদের টেকসই নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
পরবর্তী পর্যায়ে দেখা গেল, গ্যাস ও কয়লা রপ্তানি করা হলো না। রপ্তানি না করলে তা নিজস্ব বিনিয়োগ সক্ষমতায় উত্তোলন করতে হবে। কেন উত্তোলন হলো না? কারণ, সরকার বিনিয়োগে এগিয়ে এল না। বিদেশিরা বিনিয়োগ করত, যদি তাদের ব্যবসা হতো। তাদের ব্যবসা হবে না বলে তারা চলে গেল। ফলে গ্যাস ও কয়লা উত্তোলন এবং তেল অনুসন্ধান হলো না। সরকার জ্বালানি আমদানিতে মনোযোগী হলো। কয়লা, এলএনজি ও তেল আমদানি বৃদ্ধি হলো। জ্বালানি ও বিদ্যুতের সরবরাহ ব্যয় বেড়ে গেল। জ্বালানিনিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ঝুঁকি বাড়ল।
এখন প্রতিযোগিতাভিত্তিক বিদেশি বিনিয়োগে গ্যাস উত্তোলনের উদ্যোগ জ্বালানিনিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ইতিবাচক বলা যায়।বিনিয়োগকারী কর্তৃক উত্তোলন করা গ্যাস আমরা কিনে নেব। না কিনলে সেই গ্যাস এলএনজি হিসেবে রপ্তানি হবে। সেই সঙ্গে ব্যয়বহুল এলএনজি আমদানি অব্যাহত থাকবে। আবার তেল ও কয়লা আমদানি করে বিদ্যুৎ উৎপাদনও অব্যাহত থাকবে। চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সঞ্চালন এবং বিতরণের ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। এমন সব নানা উন্নয়ন কাণ্ড-কারখানা করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। এখন দেখার বিষয়, আলোচ্য গ্যাস উত্তোলন ও সরবরাহ বৃদ্ধিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কী পরিমাণ এলএনজি, কয়লা, তেল আমদানি কমে এবং জ্বালানি আমদানি ব্যয় সাশ্রয় হয় কি না?
আজকের পত্রিকা: দেশের অনেক গ্যাসক্ষেত্র অনাবিষ্কৃত আছে। কিন্তু সরকার বাপেক্সকে নিষ্ক্রিয় করে রেখেছে। এখন কি এই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে?
এম শামসুল আলম: এই অবস্থার পরিবর্তনের এখনো কোনো আলামত দেখা যাচ্ছে না। বাপেক্সের ক্যাপাসিটি বিল্ডআপ করার জন্য, অর্থাৎ আর্থিক ও কারিগরি সক্ষমতা উন্নয়ন করার জন্য গ্যাস উন্নয়ন তহবিলে বছরে দেড় হাজার কোটি টাকা ভোক্তারা দেয়। সেই টাকা তারা খরচ করতে পারে না। ২০২২ সালের হিসাবে দেখা যায়, তহবিলের ৬৫ শতাংশ টাকা খরচ হয়নি। বাকি টাকার বেশির ভাগই খরচ হয়েছে গ্যাস উত্তোলনে নিয়োজিত বিদেশি ঠিকাদারের বিল পরিশোধে। এই টাকায় বাপেক্সের দ্বারা যেমন গ্যাস উত্তোলন করা হলো না, তেমনি সেই টাকা দিয়ে বাপেক্সের সক্ষমতাও উন্নয়ন হলো না।
সকল পর্যায় থেকে বলা হয়েছে, স্থলভাগের গ্যাস অনুসন্ধানে বাপেক্সের সক্ষমতা আছে। আমরা সবাই জানি, তাদের দিয়ে উত্তোলন করালে গ্যাসের উৎপাদন ব্যয় কম হবে। কিন্তু বাপেক্সের নামে গ্যাস উন্নয়ন তহবিলের টাকা খরচ হয় বাপেক্সের কাজে নিয়োজিত বিদেশি ঠিকাদারের বিল পরিশোধে। ফলে বাপেক্স যে খরচে গ্যাস উত্তোলন করতে পারত, তার চেয়ে দুই থেকে আড়াই গুণ খরচ বেড়ে গেল। এভাবে বিদেশি ঠিকাদার দিয়ে গ্যাস উত্তোলন করে একদিকে উত্তোলন ব্যয় বাড়ানো হলো, অন্য দিকে বাপেক্সকে নিষ্ক্রিয় করে রাখা গেল। বিষয়টি পরিকল্পিত, ভুল কিংবা অন্য কিছু নয়। জাতীয় সক্ষমতা উন্নয়নের এমন জাতীয় প্রত্যাশাকে এভাবেই দাফন করা হলো।
এ থেকে বোঝা যায়, একটা চক্র স্বাধীনতার পর থেকেই এ খাতটাকে বিদেশি তেল-গ্যাস কোম্পানির ব্যবসার কেন্দ্রে পরিণত করতে চেয়েছে। আর সেই জায়গায়, বিশেষ করে আমলারা কাজ করেছেন। কানাডার গোয়েন্দা সংস্থা যখন নাইকো দুর্নীতির ঘটনাটা উন্মোচন করল, তখন জানা গেল, কীভাবে চার মিলিয়ন ডলার ঘুষের বিনিময়ে নাইকো ভার্জিন ছাতক (পূর্ব) গ্যাসক্ষেত্রকে পতিত গ্যাসক্ষেত্র হিসেবে নিয়েছিল। সেখানে কারা কীভাবে জড়িত ছিল এবং তারা কে কত ডলার পেয়েছে, তার হিসাব প্রকাশ পেয়েছিল। আর এসব ক্ষেত্রে মূল কাজটি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে জ্বালানি বিভাগের বড় কর্মকর্তারা। সেই কর্মকর্তারাই ভার্জিন গ্যাসক্ষেত্রকে পতিত হিসেবে নাইকোর হাতে তুলে দিয়েছিলেন।
আজকের পত্রিকা: জ্বালানি আমদানিনির্ভরতা কমাতে আমরা এখন কী করতে পারি?
এম শামসুল আলম: এখন গরমের কারণে লোডশেডিং শুরু হয়ে গেছে। প্রতিবছরই গরমের সময় এটা হচ্ছে। অবস্থার কোনো ধরনের উন্নতি হচ্ছে না। অথচ সরকার দাবি করছে, আমরা অনেক উন্নতি করেছি। এই যে সমস্যা, সেটা আগে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে বুঝতে হবে।আসলে আমাদের জ্বালানি খাতে কোনো উন্নয়ন হয়নি, লুণ্ঠন হয়েছে। নইলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ (বিশেষ) ২০১০ বহু আগেই রহিত হতো, বিইআরসি আইন ২০০৩ সংশোধনী দ্বারা গণশুনানি রহিত করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্যহার নির্ধারণের ক্ষমতা সরকার নিজের হাতে নিয়ে বিতর্কিত হতো না, তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা এত বেশি বৃদ্ধি করা হতো না এবং সেই সঙ্গে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত ফার্নেস অয়েলের প্রায় ৯০ শতাংশ আমদানির ক্ষমতা ব্যক্তি খাত বিদ্যুৎ ব্যবসায়ীদের হাতে ছেড়ে দিয়ে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি করা হতো না। এটাই আসল কথা। আর এ কথা আগে আমাদের সবার বুঝের মধ্যে আসতে হবে। সুতরাং সবার আগে লুণ্ঠন ঠেকাতে হবে। লুণ্ঠন ঠেকানোর জন্য প্রথম কাজ হচ্ছে: (১) এই খাতকে সরকারের রাজস্ব আহরণ ও বাণিজ্যিক খাত হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না এবং (২) এ খাতকে কৃষির মতো সেবা খাত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
সরকার তার সব কোম্পানিকে যেভাবে মুনাফার জন্য ব্যবহার করছে, তার মানে একদিকে কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে সরকার করপোরেট ট্যাক্স নিচ্ছে, অন্যদিকে কোম্পানির লাভের অংশ পাচ্ছে। এই ট্যাক্স ও লভ্যাংশ বৃদ্ধির জন্য অসাধু ব্যবসায়ীদের মতোই সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা এখন মরিয়া। আবার বছরের পর বছর ধরে কোম্পানিগুলোর সঞ্চিত উদ্বৃত্ত অর্থ আইন করে তারা সরকারি কোষাগারে নিয়ে যাচ্ছেন। এতে ভয়ংকরভাবে সরকারের অসাধু ব্যবসায়িক ও বাণিজ্যিক চরিত্রের প্রকাশ ঘটেছে। সরকারকে জনগণের কল্যাণ করার জন্য রাষ্ট্রের দর্শন ও আদর্শ বাস্তবায়ন করতে হবে।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

এম শামসুল আলম দেশের বিশিষ্ট জ্বালানি বিশেষজ্ঞ। চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক। বর্তমানে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের ডিন। ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় গঠিত কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা।
২১ এপ্রিল ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

এম শামসুল আলম দেশের বিশিষ্ট জ্বালানি বিশেষজ্ঞ। চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক। বর্তমানে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের ডিন। ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় গঠিত কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা।
২১ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

এম শামসুল আলম দেশের বিশিষ্ট জ্বালানি বিশেষজ্ঞ। চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক। বর্তমানে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের ডিন। ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় গঠিত কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা।
২১ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

এম শামসুল আলম দেশের বিশিষ্ট জ্বালানি বিশেষজ্ঞ। চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক। বর্তমানে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের ডিন। ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় গঠিত কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা।
২১ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫