ড. সুব্রত বোস

আমরাও পারব, তবে সত্য একটা প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে হবে। সুন্দর পিচাই, গুগলের সিইও। এক ট্রিলিয়ন ডলারের কোম্পানি। সত্য নাদেলা, মাইক্রোসফটের সিইও। মার্কেট ভ্যালু মোটামুটি একই রকম। এক ট্রিলিয়ন ডলার। শান্তনুর নারায়ণ, সফটওয়্যার কোম্পানি অ্যাডোবির সিইও। অরভিন্দ কৃষ্ণা, আইবিএমের। আইবিএম হলো বিশ্বের অন্যতম সফটওয়্যার এবং প্রযুক্তি পরামর্শক কোম্পানি। সঞ্জয় মেরোতা মাইক্রোনের; নিকেশ ওরোরা পালো, আলটোর; জয়শ্রী উল্লাল আরিশটা নেটওয়ার্কের। প্রযুক্তি বা পরামর্শক কোম্পানিতে ভারতীয় সিইওদের এই তালিকা অনেক দীর্ঘ। সম্প্রতি এই তালিকায় যোগ হয়েছেন আরও একজন। টুইটারের সিইও পরাগ আগরওয়াল। এর আগে পেপসির ছিলেন সিইও ইন্দিরা নুয়ই, ম্যানেজমেন্ট কনসালটিং কোম্পানি ম্যাকেঞ্জির সিইও ছিলেন রজত গুপ্ত। টেকনোলজি থেকে পরামর্শক–বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বছরের পর বছর ধরে ভারতীয় পেশাজীবীদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে। বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন স্তরে গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন ভারতীয়রা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে একই চিত্র।
পাশ্চাত্যের তুলনায় সস্তা শ্রম, অভিজ্ঞতা, পেশাগত দক্ষতা, পেশাজীবীর সংখ্যা, স্বল্প সময়ে পেশাজীবীর নিয়োগের সুবিধা, কোম্পানির প্রতি আনুগত্যসহ বিভিন্ন কারণে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো একের পর এক ভারতে শাখা বিস্তার করে চলেছে। দুই দশকে এর ব্যাপ্তি কল-সেন্টার থেকে ছাড়িয়ে গেছে। জটিল গাণিতিক সফটওয়্যার নির্মাণ বা বহুজাতিক কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদি কৌশল নির্ধারণ, সবকিছুর জন্যই পাশ্চাত্যের কোম্পানিগুলোর পছন্দের তালিকায় ভারত এখনো শীর্ষে রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে ভারতে অবস্থানরত পেশাজীবীদের বেতন পাশ্চাত্যের পেশাজীবীদের প্রায় সমান। তারপরও দক্ষতার কারণে অনেক কোম্পানিই ভারতকে বেছে নিচ্ছে। জনশক্তিকে জনসম্পদে রূপান্তরের এক দারুণ উদাহরণ ভারত। এই দক্ষ জনগোষ্ঠীর ওপর ভিত্তি করেই ভারতে একের পর এক গড়ে উঠছে বিলিয়ন ডলারের কোম্পানি। এই সংখ্যা ৩৩৫-এর মতো, যা কিনা জার্মানি, ফ্রান্স, কানাডা এবং সাউথ কোরিয়া থেকে বেশি। অতিমারির মধ্যেই এ বছরে, ভারতে ৩৩টির বেশি স্টার্টআপ কোম্পানি এক বিলিয়ন ডলারের ক্লাবে পৌঁছে গেছে।
এই দক্ষ জনগোষ্ঠীই বিশ্বজুড়ে আধুনিক ভারতের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমীহ আদায় করেছে গোটা বিশ্বের। আত্মবিশ্বাসী এক নতুন প্রজন্ম গড়ে উঠছে। বাবা ছোটখাটো চাকরি করেন। মা গৃহিণী। দুই কামরার ঘর। সাধারণ স্কুল। সেখান থেকে তীব্র প্রতিযোগিতা করে ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকা। এ রকম স্বপ্নবাজ যুবকেরাই গুগল, মাইক্রোসফট আর অ্যাডোবির সিইও হচ্ছেন। সবকিছুই সম্ভব। ভারতীয় তরুণ-তরুণীদের কাছে এটা একেবারে সত্য হয়ে গেছে। দাঁতে দাঁত চেপে লেগে থাকো, ভালো করে পড়াশোনা করো, আর প্রথম সারির ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ঢুকে যাও। ভারতীয়দের এই সাফল্যের একটা বড় কারণ, স্বাধীনতার পর থেকে সে দেশে একের পর এক বিশ্বমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষার গবেষণাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর সিইওদের অনেকেই এসেছেন আইআইটির মতো অভিজাত ভারতীয় প্রতিষ্ঠান থেকে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে তোলার পেছনে ছিলেন পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু। কেমব্রিজ-শিক্ষিত নেহরু তাঁর সময়ের রাজনৈতিক নেতাদের চেয়ে অনেক দূরদর্শী ছিলেন। ইতিহাস, সমাজ, সাহিত্য, দর্শন ও বিজ্ঞানে তাঁর সমান আগ্রহ ছিল। আগ্রহ বললে ভুল হবে। আসলে ছিল অগাধ পাণ্ডিত্য। ডিসকভারি অব ইন্ডিয়া বা গ্লিম্পসেস অব ওয়ার্ল্ড হিস্ট্রিতে নেহরুর মেধা-মনন আর আন্তর্জাতিকতার প্রমাণ পাওয়া যায়। সাতচল্লিশের স্বাধীনতার পরে ভারতের সমস্যার অন্ত ছিল না। প্রায় ৮০ লাখ শরণার্থী। খাদ্যের সমস্যা। পাঁচ শর মতো ছোট ছোট রাজ্য, যা কিনা রাজা-মহারাজা-শাসিত। ভারত প্রজাতন্ত্রে তাদের যুক্ত করার তাগিদ। নানাবিধ চাপ সত্ত্বেও নেহরু সুদূরপ্রসারী স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন। পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত নেহরু জানতেন দারিদ্র্য থেকে মুক্তির উপায় বিজ্ঞান-প্রযুক্তি। সাধ্যের বাইরে গিয়েছিলেন নেহরু। মন দিয়েছিলেন একাধিক বিজ্ঞানভিত্তিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে। এর মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে ছিল গবেষণা প্রতিষ্ঠান। ১৯৫১ সালে গড়ে উঠল খড়গপুর আইআইটি, তারপর বোম্বে, চেন্নাই, কানপুর আর দিল্লি। বিক্রম সারাভাই, মেঘনাথ সাহা, সিভি রমন, হোমি ভাবা। নিজ নিজ ক্ষেত্রে বিশ্বমানের বিজ্ঞানী। তাঁদের দায়িত্ব দিলেন বিজ্ঞান গবেষণাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে। সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা করার জন্য নিয়ে এসেছিলেন প্রশান্ত মহলানবিশের মতো খ্যাতিমান পরিসংখ্যানবিদকে। স্বাধীনতার পরবর্তী ১০ বছরে ভারতে ২২টির মতো স্বয়ংসম্পূর্ণ বিজ্ঞান গবেষণাগার প্রতিষ্ঠিত হয়। ভারতের মহাকাশ জয় এই গবেষণাগার প্রতিষ্ঠার কারণে আজ সফল হয়েছে। স্বাধীনতার পর ভারতের প্রায় ৭০ শতাংশ লোক দারিদ্র্যসীমার নিচে ছিল। তারপরও পণ্ডিত নেহরু তাঁর দূরদর্শিতার কারণে প্রতিষ্ঠান গড়তে মন দিয়েছিলেন। ভারতের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আজ একজন-দুজন নয়, লাখ লাখ পেশাজীবী তৈরি করছে। নেহরু স্বপ্ন দেখেছিলেন, স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছিলেন। স্বপ্নের রূপকার খুঁজে বের করতে নেহরু একদমই ভুল করেননি। শুরুটা যেকোনো সময় করা যায়। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের দারুণ অগ্রগতি হয়েছে। কৃষিতে, বিশেষ করে বিভিন্ন রকমের ফল, মাছ চাষে আমরা বিশ্বের একটি প্রধান শক্তিতে পরিণত হয়েছি। কৃষিকে কেন্দ্র করে আমাদের সুদূরপ্রসারী উচ্চাকাঙ্ক্ষী পরিকল্পনা নেওয়া যেতে পারে। গড়ে তোলা যেতে পারে একাধিক গবেষণাগার। আপাতদৃষ্টিতে হয়তো সেই পরিকল্পনা আমাদের সাধ্যের বাইরে হতে পারে। হোক না। কিন্তু সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা যেতে পারলে, আগামী কয়েক প্রজন্ম এর সুফল পাবে। বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা বাড়ছে, কমে যাচ্ছে আবাদি জমির পরিমাণ। আমাদের বিজ্ঞানীরা একাধিক উচ্চফলনশীল বিভিন্ন জাতের ফসল তৈরি করছেন। পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এটাকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব। আগামী ২৫ বছরে বিশ্বব্যাপী দক্ষ জনগোষ্ঠীর সংকট দেখা দেবে। অঙ্ক, কম্পিউটারবিজ্ঞান, বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো বিষয়গুলোয় দক্ষ জনগোষ্ঠীর এখনই বেশ বড় ধরনের চাহিদা শুরু হয়েছে। উচ্চমানের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা গেলে দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরি করা খুব কঠিন নয়। সমস্যাটা হলো ‘মান’ নিয়ে। মান নিশ্চিত করার জন্য দরকার দেশপ্রেমিক দূরদর্শী বিশ্বমানের শিক্ষকের। প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে প্রয়োজন সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা, সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা, সদিচ্ছা আর স্বপ্নবাজ মানুষের। যিনি কিনা নিজে স্বপ্ন দেখতে পারেন, সঙ্গে অন্যদেরও স্বপ্ন দেখাতে পারেন।
ভারত পেরেছে, চীন পেরেছে। পাশ্চাত্যের দেশগুলো থেকে শিক্ষিত মেধাকে নিজ দেশে নিয়ে গেছে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা দিয়ে। একটা বড় অংশ ফিরে গিয়ে সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয় আর গবেষণাপ্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০০১ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রায় ৬৫ লাখ শিক্ষার্থী বিদেশে পড়তে এসেছিলেন। ৪০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী পড়ালেখা শেষ করে ফিরে গেছেন দেশে। তাঁদের একটা বড় অংশ চীনের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং গবেষণাকাজে যোগ দিয়েছেন। শিক্ষা শেষ করে দেশে ফেরার হার চীনের মতো না হলেও ভারতীয়রা আগের তুলনায় বেশি নিজ দেশে চলে যাচ্ছেন বিদেশে উচ্চশিক্ষা শেষ করার পর। মেধাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা শুরু হলে, কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করা গেলে, বিদেশে অবস্থানরত উচ্চশিক্ষিত বাংলাদেশি পেশাজীবীদের একটা বড় অংশ ধীরে ধীরে দেশে যেতে শুরু করবেন। বাংলাদেশের ছেলেমেয়েদের প্রশিক্ষিত করতে পারবেন মেধাভিত্তিক অর্থনীতির জন্য। বিশ্ববিদ্যালয় আর গবেষণাগারগুলোকে ‘প্রতিষ্ঠানে’ রূপ দেওয়ার জন্য ‘ভিশনের’ প্রয়োজন রয়েছে। সেই সঙ্গে একাধিক মানুষের নিরলস সৎ প্রচেষ্টা।

আমরাও পারব, তবে সত্য একটা প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে হবে। সুন্দর পিচাই, গুগলের সিইও। এক ট্রিলিয়ন ডলারের কোম্পানি। সত্য নাদেলা, মাইক্রোসফটের সিইও। মার্কেট ভ্যালু মোটামুটি একই রকম। এক ট্রিলিয়ন ডলার। শান্তনুর নারায়ণ, সফটওয়্যার কোম্পানি অ্যাডোবির সিইও। অরভিন্দ কৃষ্ণা, আইবিএমের। আইবিএম হলো বিশ্বের অন্যতম সফটওয়্যার এবং প্রযুক্তি পরামর্শক কোম্পানি। সঞ্জয় মেরোতা মাইক্রোনের; নিকেশ ওরোরা পালো, আলটোর; জয়শ্রী উল্লাল আরিশটা নেটওয়ার্কের। প্রযুক্তি বা পরামর্শক কোম্পানিতে ভারতীয় সিইওদের এই তালিকা অনেক দীর্ঘ। সম্প্রতি এই তালিকায় যোগ হয়েছেন আরও একজন। টুইটারের সিইও পরাগ আগরওয়াল। এর আগে পেপসির ছিলেন সিইও ইন্দিরা নুয়ই, ম্যানেজমেন্ট কনসালটিং কোম্পানি ম্যাকেঞ্জির সিইও ছিলেন রজত গুপ্ত। টেকনোলজি থেকে পরামর্শক–বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বছরের পর বছর ধরে ভারতীয় পেশাজীবীদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে। বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন স্তরে গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন ভারতীয়রা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে একই চিত্র।
পাশ্চাত্যের তুলনায় সস্তা শ্রম, অভিজ্ঞতা, পেশাগত দক্ষতা, পেশাজীবীর সংখ্যা, স্বল্প সময়ে পেশাজীবীর নিয়োগের সুবিধা, কোম্পানির প্রতি আনুগত্যসহ বিভিন্ন কারণে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো একের পর এক ভারতে শাখা বিস্তার করে চলেছে। দুই দশকে এর ব্যাপ্তি কল-সেন্টার থেকে ছাড়িয়ে গেছে। জটিল গাণিতিক সফটওয়্যার নির্মাণ বা বহুজাতিক কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদি কৌশল নির্ধারণ, সবকিছুর জন্যই পাশ্চাত্যের কোম্পানিগুলোর পছন্দের তালিকায় ভারত এখনো শীর্ষে রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে ভারতে অবস্থানরত পেশাজীবীদের বেতন পাশ্চাত্যের পেশাজীবীদের প্রায় সমান। তারপরও দক্ষতার কারণে অনেক কোম্পানিই ভারতকে বেছে নিচ্ছে। জনশক্তিকে জনসম্পদে রূপান্তরের এক দারুণ উদাহরণ ভারত। এই দক্ষ জনগোষ্ঠীর ওপর ভিত্তি করেই ভারতে একের পর এক গড়ে উঠছে বিলিয়ন ডলারের কোম্পানি। এই সংখ্যা ৩৩৫-এর মতো, যা কিনা জার্মানি, ফ্রান্স, কানাডা এবং সাউথ কোরিয়া থেকে বেশি। অতিমারির মধ্যেই এ বছরে, ভারতে ৩৩টির বেশি স্টার্টআপ কোম্পানি এক বিলিয়ন ডলারের ক্লাবে পৌঁছে গেছে।
এই দক্ষ জনগোষ্ঠীই বিশ্বজুড়ে আধুনিক ভারতের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমীহ আদায় করেছে গোটা বিশ্বের। আত্মবিশ্বাসী এক নতুন প্রজন্ম গড়ে উঠছে। বাবা ছোটখাটো চাকরি করেন। মা গৃহিণী। দুই কামরার ঘর। সাধারণ স্কুল। সেখান থেকে তীব্র প্রতিযোগিতা করে ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকা। এ রকম স্বপ্নবাজ যুবকেরাই গুগল, মাইক্রোসফট আর অ্যাডোবির সিইও হচ্ছেন। সবকিছুই সম্ভব। ভারতীয় তরুণ-তরুণীদের কাছে এটা একেবারে সত্য হয়ে গেছে। দাঁতে দাঁত চেপে লেগে থাকো, ভালো করে পড়াশোনা করো, আর প্রথম সারির ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ঢুকে যাও। ভারতীয়দের এই সাফল্যের একটা বড় কারণ, স্বাধীনতার পর থেকে সে দেশে একের পর এক বিশ্বমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষার গবেষণাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর সিইওদের অনেকেই এসেছেন আইআইটির মতো অভিজাত ভারতীয় প্রতিষ্ঠান থেকে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে তোলার পেছনে ছিলেন পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু। কেমব্রিজ-শিক্ষিত নেহরু তাঁর সময়ের রাজনৈতিক নেতাদের চেয়ে অনেক দূরদর্শী ছিলেন। ইতিহাস, সমাজ, সাহিত্য, দর্শন ও বিজ্ঞানে তাঁর সমান আগ্রহ ছিল। আগ্রহ বললে ভুল হবে। আসলে ছিল অগাধ পাণ্ডিত্য। ডিসকভারি অব ইন্ডিয়া বা গ্লিম্পসেস অব ওয়ার্ল্ড হিস্ট্রিতে নেহরুর মেধা-মনন আর আন্তর্জাতিকতার প্রমাণ পাওয়া যায়। সাতচল্লিশের স্বাধীনতার পরে ভারতের সমস্যার অন্ত ছিল না। প্রায় ৮০ লাখ শরণার্থী। খাদ্যের সমস্যা। পাঁচ শর মতো ছোট ছোট রাজ্য, যা কিনা রাজা-মহারাজা-শাসিত। ভারত প্রজাতন্ত্রে তাদের যুক্ত করার তাগিদ। নানাবিধ চাপ সত্ত্বেও নেহরু সুদূরপ্রসারী স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন। পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত নেহরু জানতেন দারিদ্র্য থেকে মুক্তির উপায় বিজ্ঞান-প্রযুক্তি। সাধ্যের বাইরে গিয়েছিলেন নেহরু। মন দিয়েছিলেন একাধিক বিজ্ঞানভিত্তিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে। এর মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে ছিল গবেষণা প্রতিষ্ঠান। ১৯৫১ সালে গড়ে উঠল খড়গপুর আইআইটি, তারপর বোম্বে, চেন্নাই, কানপুর আর দিল্লি। বিক্রম সারাভাই, মেঘনাথ সাহা, সিভি রমন, হোমি ভাবা। নিজ নিজ ক্ষেত্রে বিশ্বমানের বিজ্ঞানী। তাঁদের দায়িত্ব দিলেন বিজ্ঞান গবেষণাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে। সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা করার জন্য নিয়ে এসেছিলেন প্রশান্ত মহলানবিশের মতো খ্যাতিমান পরিসংখ্যানবিদকে। স্বাধীনতার পরবর্তী ১০ বছরে ভারতে ২২টির মতো স্বয়ংসম্পূর্ণ বিজ্ঞান গবেষণাগার প্রতিষ্ঠিত হয়। ভারতের মহাকাশ জয় এই গবেষণাগার প্রতিষ্ঠার কারণে আজ সফল হয়েছে। স্বাধীনতার পর ভারতের প্রায় ৭০ শতাংশ লোক দারিদ্র্যসীমার নিচে ছিল। তারপরও পণ্ডিত নেহরু তাঁর দূরদর্শিতার কারণে প্রতিষ্ঠান গড়তে মন দিয়েছিলেন। ভারতের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আজ একজন-দুজন নয়, লাখ লাখ পেশাজীবী তৈরি করছে। নেহরু স্বপ্ন দেখেছিলেন, স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছিলেন। স্বপ্নের রূপকার খুঁজে বের করতে নেহরু একদমই ভুল করেননি। শুরুটা যেকোনো সময় করা যায়। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের দারুণ অগ্রগতি হয়েছে। কৃষিতে, বিশেষ করে বিভিন্ন রকমের ফল, মাছ চাষে আমরা বিশ্বের একটি প্রধান শক্তিতে পরিণত হয়েছি। কৃষিকে কেন্দ্র করে আমাদের সুদূরপ্রসারী উচ্চাকাঙ্ক্ষী পরিকল্পনা নেওয়া যেতে পারে। গড়ে তোলা যেতে পারে একাধিক গবেষণাগার। আপাতদৃষ্টিতে হয়তো সেই পরিকল্পনা আমাদের সাধ্যের বাইরে হতে পারে। হোক না। কিন্তু সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা যেতে পারলে, আগামী কয়েক প্রজন্ম এর সুফল পাবে। বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা বাড়ছে, কমে যাচ্ছে আবাদি জমির পরিমাণ। আমাদের বিজ্ঞানীরা একাধিক উচ্চফলনশীল বিভিন্ন জাতের ফসল তৈরি করছেন। পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এটাকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব। আগামী ২৫ বছরে বিশ্বব্যাপী দক্ষ জনগোষ্ঠীর সংকট দেখা দেবে। অঙ্ক, কম্পিউটারবিজ্ঞান, বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো বিষয়গুলোয় দক্ষ জনগোষ্ঠীর এখনই বেশ বড় ধরনের চাহিদা শুরু হয়েছে। উচ্চমানের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা গেলে দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরি করা খুব কঠিন নয়। সমস্যাটা হলো ‘মান’ নিয়ে। মান নিশ্চিত করার জন্য দরকার দেশপ্রেমিক দূরদর্শী বিশ্বমানের শিক্ষকের। প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে প্রয়োজন সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা, সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা, সদিচ্ছা আর স্বপ্নবাজ মানুষের। যিনি কিনা নিজে স্বপ্ন দেখতে পারেন, সঙ্গে অন্যদেরও স্বপ্ন দেখাতে পারেন।
ভারত পেরেছে, চীন পেরেছে। পাশ্চাত্যের দেশগুলো থেকে শিক্ষিত মেধাকে নিজ দেশে নিয়ে গেছে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা দিয়ে। একটা বড় অংশ ফিরে গিয়ে সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয় আর গবেষণাপ্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০০১ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রায় ৬৫ লাখ শিক্ষার্থী বিদেশে পড়তে এসেছিলেন। ৪০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী পড়ালেখা শেষ করে ফিরে গেছেন দেশে। তাঁদের একটা বড় অংশ চীনের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং গবেষণাকাজে যোগ দিয়েছেন। শিক্ষা শেষ করে দেশে ফেরার হার চীনের মতো না হলেও ভারতীয়রা আগের তুলনায় বেশি নিজ দেশে চলে যাচ্ছেন বিদেশে উচ্চশিক্ষা শেষ করার পর। মেধাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা শুরু হলে, কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করা গেলে, বিদেশে অবস্থানরত উচ্চশিক্ষিত বাংলাদেশি পেশাজীবীদের একটা বড় অংশ ধীরে ধীরে দেশে যেতে শুরু করবেন। বাংলাদেশের ছেলেমেয়েদের প্রশিক্ষিত করতে পারবেন মেধাভিত্তিক অর্থনীতির জন্য। বিশ্ববিদ্যালয় আর গবেষণাগারগুলোকে ‘প্রতিষ্ঠানে’ রূপ দেওয়ার জন্য ‘ভিশনের’ প্রয়োজন রয়েছে। সেই সঙ্গে একাধিক মানুষের নিরলস সৎ প্রচেষ্টা।
ড. সুব্রত বোস

আমরাও পারব, তবে সত্য একটা প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে হবে। সুন্দর পিচাই, গুগলের সিইও। এক ট্রিলিয়ন ডলারের কোম্পানি। সত্য নাদেলা, মাইক্রোসফটের সিইও। মার্কেট ভ্যালু মোটামুটি একই রকম। এক ট্রিলিয়ন ডলার। শান্তনুর নারায়ণ, সফটওয়্যার কোম্পানি অ্যাডোবির সিইও। অরভিন্দ কৃষ্ণা, আইবিএমের। আইবিএম হলো বিশ্বের অন্যতম সফটওয়্যার এবং প্রযুক্তি পরামর্শক কোম্পানি। সঞ্জয় মেরোতা মাইক্রোনের; নিকেশ ওরোরা পালো, আলটোর; জয়শ্রী উল্লাল আরিশটা নেটওয়ার্কের। প্রযুক্তি বা পরামর্শক কোম্পানিতে ভারতীয় সিইওদের এই তালিকা অনেক দীর্ঘ। সম্প্রতি এই তালিকায় যোগ হয়েছেন আরও একজন। টুইটারের সিইও পরাগ আগরওয়াল। এর আগে পেপসির ছিলেন সিইও ইন্দিরা নুয়ই, ম্যানেজমেন্ট কনসালটিং কোম্পানি ম্যাকেঞ্জির সিইও ছিলেন রজত গুপ্ত। টেকনোলজি থেকে পরামর্শক–বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বছরের পর বছর ধরে ভারতীয় পেশাজীবীদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে। বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন স্তরে গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন ভারতীয়রা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে একই চিত্র।
পাশ্চাত্যের তুলনায় সস্তা শ্রম, অভিজ্ঞতা, পেশাগত দক্ষতা, পেশাজীবীর সংখ্যা, স্বল্প সময়ে পেশাজীবীর নিয়োগের সুবিধা, কোম্পানির প্রতি আনুগত্যসহ বিভিন্ন কারণে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো একের পর এক ভারতে শাখা বিস্তার করে চলেছে। দুই দশকে এর ব্যাপ্তি কল-সেন্টার থেকে ছাড়িয়ে গেছে। জটিল গাণিতিক সফটওয়্যার নির্মাণ বা বহুজাতিক কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদি কৌশল নির্ধারণ, সবকিছুর জন্যই পাশ্চাত্যের কোম্পানিগুলোর পছন্দের তালিকায় ভারত এখনো শীর্ষে রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে ভারতে অবস্থানরত পেশাজীবীদের বেতন পাশ্চাত্যের পেশাজীবীদের প্রায় সমান। তারপরও দক্ষতার কারণে অনেক কোম্পানিই ভারতকে বেছে নিচ্ছে। জনশক্তিকে জনসম্পদে রূপান্তরের এক দারুণ উদাহরণ ভারত। এই দক্ষ জনগোষ্ঠীর ওপর ভিত্তি করেই ভারতে একের পর এক গড়ে উঠছে বিলিয়ন ডলারের কোম্পানি। এই সংখ্যা ৩৩৫-এর মতো, যা কিনা জার্মানি, ফ্রান্স, কানাডা এবং সাউথ কোরিয়া থেকে বেশি। অতিমারির মধ্যেই এ বছরে, ভারতে ৩৩টির বেশি স্টার্টআপ কোম্পানি এক বিলিয়ন ডলারের ক্লাবে পৌঁছে গেছে।
এই দক্ষ জনগোষ্ঠীই বিশ্বজুড়ে আধুনিক ভারতের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমীহ আদায় করেছে গোটা বিশ্বের। আত্মবিশ্বাসী এক নতুন প্রজন্ম গড়ে উঠছে। বাবা ছোটখাটো চাকরি করেন। মা গৃহিণী। দুই কামরার ঘর। সাধারণ স্কুল। সেখান থেকে তীব্র প্রতিযোগিতা করে ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকা। এ রকম স্বপ্নবাজ যুবকেরাই গুগল, মাইক্রোসফট আর অ্যাডোবির সিইও হচ্ছেন। সবকিছুই সম্ভব। ভারতীয় তরুণ-তরুণীদের কাছে এটা একেবারে সত্য হয়ে গেছে। দাঁতে দাঁত চেপে লেগে থাকো, ভালো করে পড়াশোনা করো, আর প্রথম সারির ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ঢুকে যাও। ভারতীয়দের এই সাফল্যের একটা বড় কারণ, স্বাধীনতার পর থেকে সে দেশে একের পর এক বিশ্বমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষার গবেষণাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর সিইওদের অনেকেই এসেছেন আইআইটির মতো অভিজাত ভারতীয় প্রতিষ্ঠান থেকে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে তোলার পেছনে ছিলেন পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু। কেমব্রিজ-শিক্ষিত নেহরু তাঁর সময়ের রাজনৈতিক নেতাদের চেয়ে অনেক দূরদর্শী ছিলেন। ইতিহাস, সমাজ, সাহিত্য, দর্শন ও বিজ্ঞানে তাঁর সমান আগ্রহ ছিল। আগ্রহ বললে ভুল হবে। আসলে ছিল অগাধ পাণ্ডিত্য। ডিসকভারি অব ইন্ডিয়া বা গ্লিম্পসেস অব ওয়ার্ল্ড হিস্ট্রিতে নেহরুর মেধা-মনন আর আন্তর্জাতিকতার প্রমাণ পাওয়া যায়। সাতচল্লিশের স্বাধীনতার পরে ভারতের সমস্যার অন্ত ছিল না। প্রায় ৮০ লাখ শরণার্থী। খাদ্যের সমস্যা। পাঁচ শর মতো ছোট ছোট রাজ্য, যা কিনা রাজা-মহারাজা-শাসিত। ভারত প্রজাতন্ত্রে তাদের যুক্ত করার তাগিদ। নানাবিধ চাপ সত্ত্বেও নেহরু সুদূরপ্রসারী স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন। পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত নেহরু জানতেন দারিদ্র্য থেকে মুক্তির উপায় বিজ্ঞান-প্রযুক্তি। সাধ্যের বাইরে গিয়েছিলেন নেহরু। মন দিয়েছিলেন একাধিক বিজ্ঞানভিত্তিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে। এর মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে ছিল গবেষণা প্রতিষ্ঠান। ১৯৫১ সালে গড়ে উঠল খড়গপুর আইআইটি, তারপর বোম্বে, চেন্নাই, কানপুর আর দিল্লি। বিক্রম সারাভাই, মেঘনাথ সাহা, সিভি রমন, হোমি ভাবা। নিজ নিজ ক্ষেত্রে বিশ্বমানের বিজ্ঞানী। তাঁদের দায়িত্ব দিলেন বিজ্ঞান গবেষণাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে। সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা করার জন্য নিয়ে এসেছিলেন প্রশান্ত মহলানবিশের মতো খ্যাতিমান পরিসংখ্যানবিদকে। স্বাধীনতার পরবর্তী ১০ বছরে ভারতে ২২টির মতো স্বয়ংসম্পূর্ণ বিজ্ঞান গবেষণাগার প্রতিষ্ঠিত হয়। ভারতের মহাকাশ জয় এই গবেষণাগার প্রতিষ্ঠার কারণে আজ সফল হয়েছে। স্বাধীনতার পর ভারতের প্রায় ৭০ শতাংশ লোক দারিদ্র্যসীমার নিচে ছিল। তারপরও পণ্ডিত নেহরু তাঁর দূরদর্শিতার কারণে প্রতিষ্ঠান গড়তে মন দিয়েছিলেন। ভারতের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আজ একজন-দুজন নয়, লাখ লাখ পেশাজীবী তৈরি করছে। নেহরু স্বপ্ন দেখেছিলেন, স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছিলেন। স্বপ্নের রূপকার খুঁজে বের করতে নেহরু একদমই ভুল করেননি। শুরুটা যেকোনো সময় করা যায়। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের দারুণ অগ্রগতি হয়েছে। কৃষিতে, বিশেষ করে বিভিন্ন রকমের ফল, মাছ চাষে আমরা বিশ্বের একটি প্রধান শক্তিতে পরিণত হয়েছি। কৃষিকে কেন্দ্র করে আমাদের সুদূরপ্রসারী উচ্চাকাঙ্ক্ষী পরিকল্পনা নেওয়া যেতে পারে। গড়ে তোলা যেতে পারে একাধিক গবেষণাগার। আপাতদৃষ্টিতে হয়তো সেই পরিকল্পনা আমাদের সাধ্যের বাইরে হতে পারে। হোক না। কিন্তু সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা যেতে পারলে, আগামী কয়েক প্রজন্ম এর সুফল পাবে। বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা বাড়ছে, কমে যাচ্ছে আবাদি জমির পরিমাণ। আমাদের বিজ্ঞানীরা একাধিক উচ্চফলনশীল বিভিন্ন জাতের ফসল তৈরি করছেন। পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এটাকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব। আগামী ২৫ বছরে বিশ্বব্যাপী দক্ষ জনগোষ্ঠীর সংকট দেখা দেবে। অঙ্ক, কম্পিউটারবিজ্ঞান, বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো বিষয়গুলোয় দক্ষ জনগোষ্ঠীর এখনই বেশ বড় ধরনের চাহিদা শুরু হয়েছে। উচ্চমানের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা গেলে দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরি করা খুব কঠিন নয়। সমস্যাটা হলো ‘মান’ নিয়ে। মান নিশ্চিত করার জন্য দরকার দেশপ্রেমিক দূরদর্শী বিশ্বমানের শিক্ষকের। প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে প্রয়োজন সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা, সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা, সদিচ্ছা আর স্বপ্নবাজ মানুষের। যিনি কিনা নিজে স্বপ্ন দেখতে পারেন, সঙ্গে অন্যদেরও স্বপ্ন দেখাতে পারেন।
ভারত পেরেছে, চীন পেরেছে। পাশ্চাত্যের দেশগুলো থেকে শিক্ষিত মেধাকে নিজ দেশে নিয়ে গেছে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা দিয়ে। একটা বড় অংশ ফিরে গিয়ে সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয় আর গবেষণাপ্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০০১ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রায় ৬৫ লাখ শিক্ষার্থী বিদেশে পড়তে এসেছিলেন। ৪০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী পড়ালেখা শেষ করে ফিরে গেছেন দেশে। তাঁদের একটা বড় অংশ চীনের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং গবেষণাকাজে যোগ দিয়েছেন। শিক্ষা শেষ করে দেশে ফেরার হার চীনের মতো না হলেও ভারতীয়রা আগের তুলনায় বেশি নিজ দেশে চলে যাচ্ছেন বিদেশে উচ্চশিক্ষা শেষ করার পর। মেধাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা শুরু হলে, কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করা গেলে, বিদেশে অবস্থানরত উচ্চশিক্ষিত বাংলাদেশি পেশাজীবীদের একটা বড় অংশ ধীরে ধীরে দেশে যেতে শুরু করবেন। বাংলাদেশের ছেলেমেয়েদের প্রশিক্ষিত করতে পারবেন মেধাভিত্তিক অর্থনীতির জন্য। বিশ্ববিদ্যালয় আর গবেষণাগারগুলোকে ‘প্রতিষ্ঠানে’ রূপ দেওয়ার জন্য ‘ভিশনের’ প্রয়োজন রয়েছে। সেই সঙ্গে একাধিক মানুষের নিরলস সৎ প্রচেষ্টা।

আমরাও পারব, তবে সত্য একটা প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে হবে। সুন্দর পিচাই, গুগলের সিইও। এক ট্রিলিয়ন ডলারের কোম্পানি। সত্য নাদেলা, মাইক্রোসফটের সিইও। মার্কেট ভ্যালু মোটামুটি একই রকম। এক ট্রিলিয়ন ডলার। শান্তনুর নারায়ণ, সফটওয়্যার কোম্পানি অ্যাডোবির সিইও। অরভিন্দ কৃষ্ণা, আইবিএমের। আইবিএম হলো বিশ্বের অন্যতম সফটওয়্যার এবং প্রযুক্তি পরামর্শক কোম্পানি। সঞ্জয় মেরোতা মাইক্রোনের; নিকেশ ওরোরা পালো, আলটোর; জয়শ্রী উল্লাল আরিশটা নেটওয়ার্কের। প্রযুক্তি বা পরামর্শক কোম্পানিতে ভারতীয় সিইওদের এই তালিকা অনেক দীর্ঘ। সম্প্রতি এই তালিকায় যোগ হয়েছেন আরও একজন। টুইটারের সিইও পরাগ আগরওয়াল। এর আগে পেপসির ছিলেন সিইও ইন্দিরা নুয়ই, ম্যানেজমেন্ট কনসালটিং কোম্পানি ম্যাকেঞ্জির সিইও ছিলেন রজত গুপ্ত। টেকনোলজি থেকে পরামর্শক–বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বছরের পর বছর ধরে ভারতীয় পেশাজীবীদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে। বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন স্তরে গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন ভারতীয়রা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে একই চিত্র।
পাশ্চাত্যের তুলনায় সস্তা শ্রম, অভিজ্ঞতা, পেশাগত দক্ষতা, পেশাজীবীর সংখ্যা, স্বল্প সময়ে পেশাজীবীর নিয়োগের সুবিধা, কোম্পানির প্রতি আনুগত্যসহ বিভিন্ন কারণে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো একের পর এক ভারতে শাখা বিস্তার করে চলেছে। দুই দশকে এর ব্যাপ্তি কল-সেন্টার থেকে ছাড়িয়ে গেছে। জটিল গাণিতিক সফটওয়্যার নির্মাণ বা বহুজাতিক কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদি কৌশল নির্ধারণ, সবকিছুর জন্যই পাশ্চাত্যের কোম্পানিগুলোর পছন্দের তালিকায় ভারত এখনো শীর্ষে রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে ভারতে অবস্থানরত পেশাজীবীদের বেতন পাশ্চাত্যের পেশাজীবীদের প্রায় সমান। তারপরও দক্ষতার কারণে অনেক কোম্পানিই ভারতকে বেছে নিচ্ছে। জনশক্তিকে জনসম্পদে রূপান্তরের এক দারুণ উদাহরণ ভারত। এই দক্ষ জনগোষ্ঠীর ওপর ভিত্তি করেই ভারতে একের পর এক গড়ে উঠছে বিলিয়ন ডলারের কোম্পানি। এই সংখ্যা ৩৩৫-এর মতো, যা কিনা জার্মানি, ফ্রান্স, কানাডা এবং সাউথ কোরিয়া থেকে বেশি। অতিমারির মধ্যেই এ বছরে, ভারতে ৩৩টির বেশি স্টার্টআপ কোম্পানি এক বিলিয়ন ডলারের ক্লাবে পৌঁছে গেছে।
এই দক্ষ জনগোষ্ঠীই বিশ্বজুড়ে আধুনিক ভারতের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমীহ আদায় করেছে গোটা বিশ্বের। আত্মবিশ্বাসী এক নতুন প্রজন্ম গড়ে উঠছে। বাবা ছোটখাটো চাকরি করেন। মা গৃহিণী। দুই কামরার ঘর। সাধারণ স্কুল। সেখান থেকে তীব্র প্রতিযোগিতা করে ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকা। এ রকম স্বপ্নবাজ যুবকেরাই গুগল, মাইক্রোসফট আর অ্যাডোবির সিইও হচ্ছেন। সবকিছুই সম্ভব। ভারতীয় তরুণ-তরুণীদের কাছে এটা একেবারে সত্য হয়ে গেছে। দাঁতে দাঁত চেপে লেগে থাকো, ভালো করে পড়াশোনা করো, আর প্রথম সারির ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ঢুকে যাও। ভারতীয়দের এই সাফল্যের একটা বড় কারণ, স্বাধীনতার পর থেকে সে দেশে একের পর এক বিশ্বমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষার গবেষণাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর সিইওদের অনেকেই এসেছেন আইআইটির মতো অভিজাত ভারতীয় প্রতিষ্ঠান থেকে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে তোলার পেছনে ছিলেন পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু। কেমব্রিজ-শিক্ষিত নেহরু তাঁর সময়ের রাজনৈতিক নেতাদের চেয়ে অনেক দূরদর্শী ছিলেন। ইতিহাস, সমাজ, সাহিত্য, দর্শন ও বিজ্ঞানে তাঁর সমান আগ্রহ ছিল। আগ্রহ বললে ভুল হবে। আসলে ছিল অগাধ পাণ্ডিত্য। ডিসকভারি অব ইন্ডিয়া বা গ্লিম্পসেস অব ওয়ার্ল্ড হিস্ট্রিতে নেহরুর মেধা-মনন আর আন্তর্জাতিকতার প্রমাণ পাওয়া যায়। সাতচল্লিশের স্বাধীনতার পরে ভারতের সমস্যার অন্ত ছিল না। প্রায় ৮০ লাখ শরণার্থী। খাদ্যের সমস্যা। পাঁচ শর মতো ছোট ছোট রাজ্য, যা কিনা রাজা-মহারাজা-শাসিত। ভারত প্রজাতন্ত্রে তাদের যুক্ত করার তাগিদ। নানাবিধ চাপ সত্ত্বেও নেহরু সুদূরপ্রসারী স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন। পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত নেহরু জানতেন দারিদ্র্য থেকে মুক্তির উপায় বিজ্ঞান-প্রযুক্তি। সাধ্যের বাইরে গিয়েছিলেন নেহরু। মন দিয়েছিলেন একাধিক বিজ্ঞানভিত্তিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে। এর মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে ছিল গবেষণা প্রতিষ্ঠান। ১৯৫১ সালে গড়ে উঠল খড়গপুর আইআইটি, তারপর বোম্বে, চেন্নাই, কানপুর আর দিল্লি। বিক্রম সারাভাই, মেঘনাথ সাহা, সিভি রমন, হোমি ভাবা। নিজ নিজ ক্ষেত্রে বিশ্বমানের বিজ্ঞানী। তাঁদের দায়িত্ব দিলেন বিজ্ঞান গবেষণাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে। সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা করার জন্য নিয়ে এসেছিলেন প্রশান্ত মহলানবিশের মতো খ্যাতিমান পরিসংখ্যানবিদকে। স্বাধীনতার পরবর্তী ১০ বছরে ভারতে ২২টির মতো স্বয়ংসম্পূর্ণ বিজ্ঞান গবেষণাগার প্রতিষ্ঠিত হয়। ভারতের মহাকাশ জয় এই গবেষণাগার প্রতিষ্ঠার কারণে আজ সফল হয়েছে। স্বাধীনতার পর ভারতের প্রায় ৭০ শতাংশ লোক দারিদ্র্যসীমার নিচে ছিল। তারপরও পণ্ডিত নেহরু তাঁর দূরদর্শিতার কারণে প্রতিষ্ঠান গড়তে মন দিয়েছিলেন। ভারতের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আজ একজন-দুজন নয়, লাখ লাখ পেশাজীবী তৈরি করছে। নেহরু স্বপ্ন দেখেছিলেন, স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছিলেন। স্বপ্নের রূপকার খুঁজে বের করতে নেহরু একদমই ভুল করেননি। শুরুটা যেকোনো সময় করা যায়। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের দারুণ অগ্রগতি হয়েছে। কৃষিতে, বিশেষ করে বিভিন্ন রকমের ফল, মাছ চাষে আমরা বিশ্বের একটি প্রধান শক্তিতে পরিণত হয়েছি। কৃষিকে কেন্দ্র করে আমাদের সুদূরপ্রসারী উচ্চাকাঙ্ক্ষী পরিকল্পনা নেওয়া যেতে পারে। গড়ে তোলা যেতে পারে একাধিক গবেষণাগার। আপাতদৃষ্টিতে হয়তো সেই পরিকল্পনা আমাদের সাধ্যের বাইরে হতে পারে। হোক না। কিন্তু সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা যেতে পারলে, আগামী কয়েক প্রজন্ম এর সুফল পাবে। বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা বাড়ছে, কমে যাচ্ছে আবাদি জমির পরিমাণ। আমাদের বিজ্ঞানীরা একাধিক উচ্চফলনশীল বিভিন্ন জাতের ফসল তৈরি করছেন। পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এটাকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব। আগামী ২৫ বছরে বিশ্বব্যাপী দক্ষ জনগোষ্ঠীর সংকট দেখা দেবে। অঙ্ক, কম্পিউটারবিজ্ঞান, বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো বিষয়গুলোয় দক্ষ জনগোষ্ঠীর এখনই বেশ বড় ধরনের চাহিদা শুরু হয়েছে। উচ্চমানের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা গেলে দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরি করা খুব কঠিন নয়। সমস্যাটা হলো ‘মান’ নিয়ে। মান নিশ্চিত করার জন্য দরকার দেশপ্রেমিক দূরদর্শী বিশ্বমানের শিক্ষকের। প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে প্রয়োজন সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা, সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা, সদিচ্ছা আর স্বপ্নবাজ মানুষের। যিনি কিনা নিজে স্বপ্ন দেখতে পারেন, সঙ্গে অন্যদেরও স্বপ্ন দেখাতে পারেন।
ভারত পেরেছে, চীন পেরেছে। পাশ্চাত্যের দেশগুলো থেকে শিক্ষিত মেধাকে নিজ দেশে নিয়ে গেছে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা দিয়ে। একটা বড় অংশ ফিরে গিয়ে সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয় আর গবেষণাপ্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০০১ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রায় ৬৫ লাখ শিক্ষার্থী বিদেশে পড়তে এসেছিলেন। ৪০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী পড়ালেখা শেষ করে ফিরে গেছেন দেশে। তাঁদের একটা বড় অংশ চীনের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং গবেষণাকাজে যোগ দিয়েছেন। শিক্ষা শেষ করে দেশে ফেরার হার চীনের মতো না হলেও ভারতীয়রা আগের তুলনায় বেশি নিজ দেশে চলে যাচ্ছেন বিদেশে উচ্চশিক্ষা শেষ করার পর। মেধাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা শুরু হলে, কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করা গেলে, বিদেশে অবস্থানরত উচ্চশিক্ষিত বাংলাদেশি পেশাজীবীদের একটা বড় অংশ ধীরে ধীরে দেশে যেতে শুরু করবেন। বাংলাদেশের ছেলেমেয়েদের প্রশিক্ষিত করতে পারবেন মেধাভিত্তিক অর্থনীতির জন্য। বিশ্ববিদ্যালয় আর গবেষণাগারগুলোকে ‘প্রতিষ্ঠানে’ রূপ দেওয়ার জন্য ‘ভিশনের’ প্রয়োজন রয়েছে। সেই সঙ্গে একাধিক মানুষের নিরলস সৎ প্রচেষ্টা।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

আমরাও পারব, তবে সত্য একটা প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে হবে। সুন্দর পিচাই, গুগলের সিইও। এক ট্রিলিয়ন ডলারের কোম্পানি। সত্য নাদেলা, মাইক্রোসফটের সিইও। মার্কেট ভ্যালু মোটামুটি
০৭ ডিসেম্বর ২০২১
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

আমরাও পারব, তবে সত্য একটা প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে হবে। সুন্দর পিচাই, গুগলের সিইও। এক ট্রিলিয়ন ডলারের কোম্পানি। সত্য নাদেলা, মাইক্রোসফটের সিইও। মার্কেট ভ্যালু মোটামুটি
০৭ ডিসেম্বর ২০২১
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

আমরাও পারব, তবে সত্য একটা প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে হবে। সুন্দর পিচাই, গুগলের সিইও। এক ট্রিলিয়ন ডলারের কোম্পানি। সত্য নাদেলা, মাইক্রোসফটের সিইও। মার্কেট ভ্যালু মোটামুটি
০৭ ডিসেম্বর ২০২১
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আমরাও পারব, তবে সত্য একটা প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে হবে। সুন্দর পিচাই, গুগলের সিইও। এক ট্রিলিয়ন ডলারের কোম্পানি। সত্য নাদেলা, মাইক্রোসফটের সিইও। মার্কেট ভ্যালু মোটামুটি
০৭ ডিসেম্বর ২০২১
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫