বিভুরঞ্জন সরকার

ডিসেম্বর মাস এলেই আমার কাছে তিন বছরের তিনটি ডিসেম্বরের স্মৃতি উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। তিনটি ডিসেম্বরের তিন ঘটনা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রভাব বিস্তার করেছিল। আমাদের দেশের রাজনীতিতে বড় অভিঘাত তৈরি করেছিল। ডিসেম্বর আমাদের কাছে বিজয়ের মাস হিসেবে পরিচিত, ডিসেম্বর মাসই বিজয়ের ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিল। আবার ডিসেম্বরেই আমাদের শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ডিসেম্বর এলে আমরা যেমন বিজয়ের আনন্দ উদযাপন করি, শহীদদের স্মরণ করি, তেমনি অর্জিত বিজয়কে কতটুকু সংহত করতে পেরেছি, তার একটি খতিয়ান করারও চেষ্টা করি।
পেছন ফিরে তাকালে প্রথমেই মনের পর্দায় উজ্জ্বল হয়ে ভাসে ১৯৭০ সালের ডিসেম্বরের কথা । ওই বছর ৭ ডিসেম্বর পাকিস্তানে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এবং প্রত্যাশার সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বিপুল বিজয় অর্জন করেছিল। পাকিস্তানে কেন্দ্রীয় সরকার গঠনের হকদার হয়েছিল আওয়ামী লীগ। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান তথা পূর্ব বাংলায় আওয়ামী লীগের একচেটিয়া সাফল্য সম্পর্কে পাকিস্তানি শাসকদের কাছে আগাম তথ্য থাকলে হয়তো নির্বাচনই হতে দিত না তারা। শেখ মুজিবের দল নির্বাচনে ভালো করবে, তাঁর জনপ্রিয়তা বেড়েছে, এটা বুঝলেও পাকিস্তানিরা ভাবতে পারেনি, আওয়ামী লীগ ছাড়া পাকিস্তানের পূর্ব অংশে আর কোনো দল মানুষের সমর্থন পাবে না।
শেখ মুজিব তাঁর জীবনসাধনার মধ্য দিয়ে, ক্রমাগত জেল-জুলুম-অত্যাচার সহ্য করে বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম এগিয়ে নিতে দৃঢ়চিত্ত থেকে বাঙালির কাছে যে মুকুটহীন রাজায় পরিণত হয়েছিলেন, সেটা পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর মোটা মাথায় ঢোকেনি। শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দিয়ে তাঁকে পাকিস্তানের প্রতিপক্ষ বানিয়ে শাসকগোষ্ঠী চরম ভুল করেছিল। তারা বানিয়েছিল প্রতিপক্ষ আর বাঙালি তাঁকে নিয়েছিল আপনপক্ষ করে।
১৯৬৬ সালে ৬ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করার মধ্য দিয়ে শেখ মুজিব কার্যত বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা হয়ে উঠেছিলেন। আগরতলা মামলার পর তাঁর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে ওঠে। ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে কেবল সামরিক একনায়ক আইয়ুব খানের শাসন অবসান হলো না, পাকিস্তান রাষ্ট্রযন্ত্রই নড়বড়ে হয়ে পড়েছিল। শেখ মুজিব বাঙালির কাছে বরিত হলেন ‘বঙ্গবন্ধু’ হিসেবে। শুরু হলো এক নতুন ইতিহাস নির্মাণের যাত্রা।
আইয়ুব পদত্যাগ করলে সেনাপ্রধান আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান ক্ষমতা গ্রহণ করে নির্বাচনের আয়োজন করতে বাধ্য হলেন। নানা বিধিনিষেধও জারি করলেন। তবে সত্তরের নির্বাচনের ফলাফল শাসকগোষ্ঠীর কাছে ছিল অপ্রত্যাশিত। সংরক্ষিত ১৩ নারী আসনসহ পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্যসংখ্যা ছিল ৩১৩। ৩০০ আসনের মধ্যে পূর্ব অংশে ছিল ১৬২ আর পশ্চিমে ১৩৮। নারী আসন পূর্বে ৯ ও পশ্চিমে ৬। গোটা পাকিস্তানে বাঙালি সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ায় এখানে জনসংখ্যার ভিত্তিতে আসনসংখ্যা বেশি ছিল। অথচ সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়েও বাঙালি ছিল শোষিত-বঞ্চিত। পাঞ্জাবি শাসকেরা সোনার বাংলাকে শ্মশানে পরিণত করেছিলেন।
৭ ডিসেম্বরের নির্বাচনে পূর্ব বাংলায় ১৬২ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ১৬০টি আসনে বিজয়ী হয়ে নির্বাচনের ইতিহাসে রেকর্ড তৈরি করে। পশ্চিম পাকিস্তানে জুলফিকার আলী ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি ৮১টি আসন পায়। বাকি আসনগুলো পেয়েছিলেন অন্যান্য দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। পূর্ব বাংলায় আওয়ামী লীগের বাইরে দুটি আসন পেয়েছিলেন ময়মনসিংহর একটি আসনে পিডিপির নুরুল আমিন এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে রাজা ত্রিদিব রায়। মনে রাখতে হবে, এই দুজনই মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান বাহিনীর পক্ষ অবলম্বন করেছিলেন।
পূর্ব বাংলায় বিভিন্ন ইসলামি দল পাঁচ শতাধিক প্রার্থী দিলেও একটি আসনেও জয় পায়নি। তবে তারা ১৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। অন্যদিকে, পশ্চিম পাকিস্তানে আওয়ামী লীগ ৯ জন প্রার্থী দিলেও কোনো আসনেই জয়ী হতে পারেনি। পাকিস্তানের দুই অংশের এই রাজনৈতিক বিভাজনই পাকিস্তান ভাঙার ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিল।
পূর্ব বাংলায় আওয়ামী লীগ ১৬০টি (+৯ নারী আসন) আসন পেয়েছিল। প্রাপ্ত ভোট ছিল ৭২ দশমিক ৫৭ শতাংশ। প্রায় ২৮ শতাংশ মানুষ ওই জোয়ারের সময়ও আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়নি। এ বিষয়টিও আমাদের বিবেচনায় রাখতে হবে। আওয়ামী লীগকে যাঁরা ভোট দিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যেও সবাই পাকিস্তান ভেঙে যাওয়া সমর্থন করেননি। ফলে এটা ভুলে গেলে চলবে না যে, সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ বাংলাদেশ চাইলেও বিরোধিতা করার লোকের সংখ্যাও একেবারে কম ছিল না।
আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা নির্বাচনের পর থেকেই ইয়াহিয়া খান করেছিলেন। তাঁকে কুপরামর্শ দিয়েছেন ক্ষমতালোভী জুলফিকার আলী ভুট্টো। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ম্যান্ডেট পাওয়ার পরও বঙ্গবন্ধুর হাতে ক্ষমতা না দিয়ে ইয়াহিয়া এবং তাঁর পরামর্শদাতারা পাকিস্তানের ভাঙন অনিবার্য করে তুলেছিলেন। পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী পোড়া মাটির নীতি অনুসরণ করে বাঙালিদের দাবিয়ে রাখতে চেয়েছিল। সত্তরের নির্বাচনে গণরায় পেয়েই বঙ্গবন্ধু বলতে পেরেছিলেন, ‘কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না’। বাঙালিকে স্বাধীনতার প্রশ্নে
দাবিয়ে রাখা যায়নি।
নানা নাটকীয় ঘটনার পর ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালি জাতির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। বাধ্য করেছিল প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশ নিতে। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানি শাসকদের বদমতলব উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। কিন্তু তিনি আগ বাড়িয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী হওয়ার অপবাদ নিতে চাননি। তবে তিনি জানতেন শান্তিপূর্ণ উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তর না হলে কী করতে হবে। তাই একাত্তরের মার্চ মাসের ৭ তারিখেই ‘যার যা আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকার’ আহ্বান দেশবাসীর প্রতি জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। তিনি হুকুম দিতে না পারলেও বিজয় ছিনিয়ে আনার লড়াই চালিয়ে যেতে বলেছিলেন। ২৫ মার্চ রাতে সেই লড়াই শুরু হয়ে শেষ হয় ১৬ ডিসেম্বর।
নয় মাসের অসম যুদ্ধে বাঙালি বিজয় অর্জন করে। জেনারেল নিয়াজীর নেতৃত্বে ৯০ হাজার পাকিস্তানি সৈন্য একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর বিকেলে মিত্র ও মুক্তিবাহিনীর যৌথ কমান্ডের কাছে আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়। এর আগে নয় মাস পাকিস্তানি বাহিনী বাংলাদেশজুড়ে ভয়াবহ গণহত্যা চালিয়েছে। পাকিস্তানি বাহিনী এবং তাদের এ দেশীয় দোসররা সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার করেছে, নারীদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে, প্রায় এক কোটি মানুষকে দেশত্যাগে
বাধ্য করেছে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রতিবেশী ভারত আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ও অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছে।
ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ছিলেন আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অকৃত্রিম বন্ধু। তিনি ঝুঁকি নিয়েছেন। পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়েছেন। চীন-আমেরিকাসহ মুসলিম বিশ্বের বিরোধিতা ও চাপ উপেক্ষা করার সাহস দেখিয়েছেন। সোভিয়েত ইউনিয়নসহ সমাজতান্ত্রিক বিশ্ব বাংলাদেশের পক্ষে দাঁড়িয়ে ভারতকে ভরসা জুগিয়েছে। বাংলাদেশের ভেতরে যেমন মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি ছিল, তেমনি দেশের বাইরেও অনেক দেশ বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের বিরোধিতা করেছে। সব বিরোধিতা মোকাবিলা করে বাঙালি জয়ী হয়েছে। তবে মুক্তির মন্দির সোপানতলে বলীদান হয়েছে লাখ লাখ জীবন। মুক্তিযোদ্ধা এবং কোটি কোটি সাধারণ মানুষের অসাধারণ আত্মত্যাগ ও দেশপ্রেমের কাছে পরাভূত হয়েছে পাকিস্তানি বর্বর সেনাদল এবং তাদের এ দেশীয় দোসর-অনুচরেরা।
একাত্তরের ডিসেম্বরে আমরা যে বিজয় অর্জন করেছিলাম, যে নতুন স্বপ্নের দেশ আমরা পেয়েছিলাম, সেই দেশে বিজয়ের ধারা অব্যাহতভাবে এগিয়ে নিতে পারিনি। বিজয় অর্জনের মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মতো নারকীয় ঘটনাও দেশে ঘটেছে। যেসব আদর্শ ও মূল্যবোধ ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের ভিত্তি, তা এখন আর অটুট নেই। অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, সমতাভিত্তিক বাংলাদেশ যেন আমাদের হাতছাড়া হয়ে গেছে।
এরপর ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরেও আমরা একটি বড় বিজয় অর্জন করেছিলাম। প্রবল গণ-আন্দোলনের মুখে সামরিক স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ৬ ডিসেম্বর পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে জিয়াউর রহমান ও এরশাদের হাত ধরে যে পাকিস্তানি ধারার সামরিক শাসন জাতির ওপর চেপে বসেছিল, তার অবসানের একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। দেশ আবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরবে বলে আশা করা হয়েছিল। গণতন্ত্র বিকশিত হবে, নির্বাচন ছাড়া আর কোনো উপায়ে সরকার পরিবর্তন হবে না—এটাই ছিল নব্বইয়ের আন্দোলনের লক্ষ্য। কিন্তু আজ তিন দশক পরে এসে আমরা কি দৃঢ়ভাবে বলতে পারছি যে আমাদের সে লক্ষ্য পুরোপুরি অর্জিত হয়েছে? নব্বইয়ের বিজয়ও ধরে রাখা যায়নি।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে আমাদের আত্মজিজ্ঞাসার মুখোমুখি হওয়া প্রয়োজন। কেন আমরা বিজয় ধরে রাখতে পারি না? কোথায় আমাদের গলদ বা ত্রুটি? কেন আমরা শত্রু-মিত্র চিনতে বারবার ভুল করি? পরাজিত শক্তি কোন ফাঁকে বা আমাদের কোন দুর্বলতায় মাথা তুলে দাঁড়াতে সক্ষম হয়?
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় নিতে সক্ষম হয়েছেন। তাঁর সাহস এবং দূরদর্শিতা অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করেছে। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচার হয়েছে। যুদ্ধাপরাধী পালের গোদারা ফাঁসিতে ঝুলে মৃত্যুবরণ করেছেন। অনেকের বিরোধিতা সত্ত্বেও স্বপ্নের পদ্মা সেতু আজ বাস্তবের মুখে। আরও নানা অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে। তারপরও অপূর্ণতা আছে। আছে অপ্রাপ্তি। রাজনীতিতে সহনশীলতা অনুপস্থিত।
দুর্নীতি কমছে না। সুবচন আজ যেন সত্যি নির্বাসনে। বাড়ছে বৈষম্য। প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনব্যবস্থা। গণতন্ত্র যেন শ্বাসকষ্টে ভুগছে।
বাঙালির রাজনৈতিক আন্দোলনের মিছিলে একটি জনপ্রিয় স্লোগান ‘লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই’। স্বাধীনতার ৫০ বছরের মাথায় এসে সামাজিক-অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই জরুরি হয়ে পড়েছে। কারণ, সব ধরনের বৈষম্যের অবসান ঘটানোই ছিল একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের একটি অন্যতম লক্ষ্য।
লেখক: বিভুরঞ্জন সরকার সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা

ডিসেম্বর মাস এলেই আমার কাছে তিন বছরের তিনটি ডিসেম্বরের স্মৃতি উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। তিনটি ডিসেম্বরের তিন ঘটনা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রভাব বিস্তার করেছিল। আমাদের দেশের রাজনীতিতে বড় অভিঘাত তৈরি করেছিল। ডিসেম্বর আমাদের কাছে বিজয়ের মাস হিসেবে পরিচিত, ডিসেম্বর মাসই বিজয়ের ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিল। আবার ডিসেম্বরেই আমাদের শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ডিসেম্বর এলে আমরা যেমন বিজয়ের আনন্দ উদযাপন করি, শহীদদের স্মরণ করি, তেমনি অর্জিত বিজয়কে কতটুকু সংহত করতে পেরেছি, তার একটি খতিয়ান করারও চেষ্টা করি।
পেছন ফিরে তাকালে প্রথমেই মনের পর্দায় উজ্জ্বল হয়ে ভাসে ১৯৭০ সালের ডিসেম্বরের কথা । ওই বছর ৭ ডিসেম্বর পাকিস্তানে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এবং প্রত্যাশার সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বিপুল বিজয় অর্জন করেছিল। পাকিস্তানে কেন্দ্রীয় সরকার গঠনের হকদার হয়েছিল আওয়ামী লীগ। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান তথা পূর্ব বাংলায় আওয়ামী লীগের একচেটিয়া সাফল্য সম্পর্কে পাকিস্তানি শাসকদের কাছে আগাম তথ্য থাকলে হয়তো নির্বাচনই হতে দিত না তারা। শেখ মুজিবের দল নির্বাচনে ভালো করবে, তাঁর জনপ্রিয়তা বেড়েছে, এটা বুঝলেও পাকিস্তানিরা ভাবতে পারেনি, আওয়ামী লীগ ছাড়া পাকিস্তানের পূর্ব অংশে আর কোনো দল মানুষের সমর্থন পাবে না।
শেখ মুজিব তাঁর জীবনসাধনার মধ্য দিয়ে, ক্রমাগত জেল-জুলুম-অত্যাচার সহ্য করে বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম এগিয়ে নিতে দৃঢ়চিত্ত থেকে বাঙালির কাছে যে মুকুটহীন রাজায় পরিণত হয়েছিলেন, সেটা পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর মোটা মাথায় ঢোকেনি। শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দিয়ে তাঁকে পাকিস্তানের প্রতিপক্ষ বানিয়ে শাসকগোষ্ঠী চরম ভুল করেছিল। তারা বানিয়েছিল প্রতিপক্ষ আর বাঙালি তাঁকে নিয়েছিল আপনপক্ষ করে।
১৯৬৬ সালে ৬ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করার মধ্য দিয়ে শেখ মুজিব কার্যত বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা হয়ে উঠেছিলেন। আগরতলা মামলার পর তাঁর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে ওঠে। ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে কেবল সামরিক একনায়ক আইয়ুব খানের শাসন অবসান হলো না, পাকিস্তান রাষ্ট্রযন্ত্রই নড়বড়ে হয়ে পড়েছিল। শেখ মুজিব বাঙালির কাছে বরিত হলেন ‘বঙ্গবন্ধু’ হিসেবে। শুরু হলো এক নতুন ইতিহাস নির্মাণের যাত্রা।
আইয়ুব পদত্যাগ করলে সেনাপ্রধান আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান ক্ষমতা গ্রহণ করে নির্বাচনের আয়োজন করতে বাধ্য হলেন। নানা বিধিনিষেধও জারি করলেন। তবে সত্তরের নির্বাচনের ফলাফল শাসকগোষ্ঠীর কাছে ছিল অপ্রত্যাশিত। সংরক্ষিত ১৩ নারী আসনসহ পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্যসংখ্যা ছিল ৩১৩। ৩০০ আসনের মধ্যে পূর্ব অংশে ছিল ১৬২ আর পশ্চিমে ১৩৮। নারী আসন পূর্বে ৯ ও পশ্চিমে ৬। গোটা পাকিস্তানে বাঙালি সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ায় এখানে জনসংখ্যার ভিত্তিতে আসনসংখ্যা বেশি ছিল। অথচ সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়েও বাঙালি ছিল শোষিত-বঞ্চিত। পাঞ্জাবি শাসকেরা সোনার বাংলাকে শ্মশানে পরিণত করেছিলেন।
৭ ডিসেম্বরের নির্বাচনে পূর্ব বাংলায় ১৬২ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ১৬০টি আসনে বিজয়ী হয়ে নির্বাচনের ইতিহাসে রেকর্ড তৈরি করে। পশ্চিম পাকিস্তানে জুলফিকার আলী ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি ৮১টি আসন পায়। বাকি আসনগুলো পেয়েছিলেন অন্যান্য দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। পূর্ব বাংলায় আওয়ামী লীগের বাইরে দুটি আসন পেয়েছিলেন ময়মনসিংহর একটি আসনে পিডিপির নুরুল আমিন এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে রাজা ত্রিদিব রায়। মনে রাখতে হবে, এই দুজনই মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান বাহিনীর পক্ষ অবলম্বন করেছিলেন।
পূর্ব বাংলায় বিভিন্ন ইসলামি দল পাঁচ শতাধিক প্রার্থী দিলেও একটি আসনেও জয় পায়নি। তবে তারা ১৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। অন্যদিকে, পশ্চিম পাকিস্তানে আওয়ামী লীগ ৯ জন প্রার্থী দিলেও কোনো আসনেই জয়ী হতে পারেনি। পাকিস্তানের দুই অংশের এই রাজনৈতিক বিভাজনই পাকিস্তান ভাঙার ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিল।
পূর্ব বাংলায় আওয়ামী লীগ ১৬০টি (+৯ নারী আসন) আসন পেয়েছিল। প্রাপ্ত ভোট ছিল ৭২ দশমিক ৫৭ শতাংশ। প্রায় ২৮ শতাংশ মানুষ ওই জোয়ারের সময়ও আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়নি। এ বিষয়টিও আমাদের বিবেচনায় রাখতে হবে। আওয়ামী লীগকে যাঁরা ভোট দিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যেও সবাই পাকিস্তান ভেঙে যাওয়া সমর্থন করেননি। ফলে এটা ভুলে গেলে চলবে না যে, সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ বাংলাদেশ চাইলেও বিরোধিতা করার লোকের সংখ্যাও একেবারে কম ছিল না।
আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা নির্বাচনের পর থেকেই ইয়াহিয়া খান করেছিলেন। তাঁকে কুপরামর্শ দিয়েছেন ক্ষমতালোভী জুলফিকার আলী ভুট্টো। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ম্যান্ডেট পাওয়ার পরও বঙ্গবন্ধুর হাতে ক্ষমতা না দিয়ে ইয়াহিয়া এবং তাঁর পরামর্শদাতারা পাকিস্তানের ভাঙন অনিবার্য করে তুলেছিলেন। পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী পোড়া মাটির নীতি অনুসরণ করে বাঙালিদের দাবিয়ে রাখতে চেয়েছিল। সত্তরের নির্বাচনে গণরায় পেয়েই বঙ্গবন্ধু বলতে পেরেছিলেন, ‘কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না’। বাঙালিকে স্বাধীনতার প্রশ্নে
দাবিয়ে রাখা যায়নি।
নানা নাটকীয় ঘটনার পর ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালি জাতির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। বাধ্য করেছিল প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশ নিতে। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানি শাসকদের বদমতলব উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। কিন্তু তিনি আগ বাড়িয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী হওয়ার অপবাদ নিতে চাননি। তবে তিনি জানতেন শান্তিপূর্ণ উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তর না হলে কী করতে হবে। তাই একাত্তরের মার্চ মাসের ৭ তারিখেই ‘যার যা আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকার’ আহ্বান দেশবাসীর প্রতি জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। তিনি হুকুম দিতে না পারলেও বিজয় ছিনিয়ে আনার লড়াই চালিয়ে যেতে বলেছিলেন। ২৫ মার্চ রাতে সেই লড়াই শুরু হয়ে শেষ হয় ১৬ ডিসেম্বর।
নয় মাসের অসম যুদ্ধে বাঙালি বিজয় অর্জন করে। জেনারেল নিয়াজীর নেতৃত্বে ৯০ হাজার পাকিস্তানি সৈন্য একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর বিকেলে মিত্র ও মুক্তিবাহিনীর যৌথ কমান্ডের কাছে আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়। এর আগে নয় মাস পাকিস্তানি বাহিনী বাংলাদেশজুড়ে ভয়াবহ গণহত্যা চালিয়েছে। পাকিস্তানি বাহিনী এবং তাদের এ দেশীয় দোসররা সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার করেছে, নারীদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে, প্রায় এক কোটি মানুষকে দেশত্যাগে
বাধ্য করেছে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রতিবেশী ভারত আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ও অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছে।
ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ছিলেন আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অকৃত্রিম বন্ধু। তিনি ঝুঁকি নিয়েছেন। পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়েছেন। চীন-আমেরিকাসহ মুসলিম বিশ্বের বিরোধিতা ও চাপ উপেক্ষা করার সাহস দেখিয়েছেন। সোভিয়েত ইউনিয়নসহ সমাজতান্ত্রিক বিশ্ব বাংলাদেশের পক্ষে দাঁড়িয়ে ভারতকে ভরসা জুগিয়েছে। বাংলাদেশের ভেতরে যেমন মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি ছিল, তেমনি দেশের বাইরেও অনেক দেশ বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের বিরোধিতা করেছে। সব বিরোধিতা মোকাবিলা করে বাঙালি জয়ী হয়েছে। তবে মুক্তির মন্দির সোপানতলে বলীদান হয়েছে লাখ লাখ জীবন। মুক্তিযোদ্ধা এবং কোটি কোটি সাধারণ মানুষের অসাধারণ আত্মত্যাগ ও দেশপ্রেমের কাছে পরাভূত হয়েছে পাকিস্তানি বর্বর সেনাদল এবং তাদের এ দেশীয় দোসর-অনুচরেরা।
একাত্তরের ডিসেম্বরে আমরা যে বিজয় অর্জন করেছিলাম, যে নতুন স্বপ্নের দেশ আমরা পেয়েছিলাম, সেই দেশে বিজয়ের ধারা অব্যাহতভাবে এগিয়ে নিতে পারিনি। বিজয় অর্জনের মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মতো নারকীয় ঘটনাও দেশে ঘটেছে। যেসব আদর্শ ও মূল্যবোধ ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের ভিত্তি, তা এখন আর অটুট নেই। অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, সমতাভিত্তিক বাংলাদেশ যেন আমাদের হাতছাড়া হয়ে গেছে।
এরপর ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরেও আমরা একটি বড় বিজয় অর্জন করেছিলাম। প্রবল গণ-আন্দোলনের মুখে সামরিক স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ৬ ডিসেম্বর পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে জিয়াউর রহমান ও এরশাদের হাত ধরে যে পাকিস্তানি ধারার সামরিক শাসন জাতির ওপর চেপে বসেছিল, তার অবসানের একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। দেশ আবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরবে বলে আশা করা হয়েছিল। গণতন্ত্র বিকশিত হবে, নির্বাচন ছাড়া আর কোনো উপায়ে সরকার পরিবর্তন হবে না—এটাই ছিল নব্বইয়ের আন্দোলনের লক্ষ্য। কিন্তু আজ তিন দশক পরে এসে আমরা কি দৃঢ়ভাবে বলতে পারছি যে আমাদের সে লক্ষ্য পুরোপুরি অর্জিত হয়েছে? নব্বইয়ের বিজয়ও ধরে রাখা যায়নি।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে আমাদের আত্মজিজ্ঞাসার মুখোমুখি হওয়া প্রয়োজন। কেন আমরা বিজয় ধরে রাখতে পারি না? কোথায় আমাদের গলদ বা ত্রুটি? কেন আমরা শত্রু-মিত্র চিনতে বারবার ভুল করি? পরাজিত শক্তি কোন ফাঁকে বা আমাদের কোন দুর্বলতায় মাথা তুলে দাঁড়াতে সক্ষম হয়?
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় নিতে সক্ষম হয়েছেন। তাঁর সাহস এবং দূরদর্শিতা অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করেছে। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচার হয়েছে। যুদ্ধাপরাধী পালের গোদারা ফাঁসিতে ঝুলে মৃত্যুবরণ করেছেন। অনেকের বিরোধিতা সত্ত্বেও স্বপ্নের পদ্মা সেতু আজ বাস্তবের মুখে। আরও নানা অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে। তারপরও অপূর্ণতা আছে। আছে অপ্রাপ্তি। রাজনীতিতে সহনশীলতা অনুপস্থিত।
দুর্নীতি কমছে না। সুবচন আজ যেন সত্যি নির্বাসনে। বাড়ছে বৈষম্য। প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনব্যবস্থা। গণতন্ত্র যেন শ্বাসকষ্টে ভুগছে।
বাঙালির রাজনৈতিক আন্দোলনের মিছিলে একটি জনপ্রিয় স্লোগান ‘লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই’। স্বাধীনতার ৫০ বছরের মাথায় এসে সামাজিক-অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই জরুরি হয়ে পড়েছে। কারণ, সব ধরনের বৈষম্যের অবসান ঘটানোই ছিল একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের একটি অন্যতম লক্ষ্য।
লেখক: বিভুরঞ্জন সরকার সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

ডিসেম্বর মাস এলেই আমার কাছে তিন বছরের তিনটি ডিসেম্বরের স্মৃতি উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। তিনটি ডিসেম্বরের তিন ঘটনা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রভাব বিস্তার করেছিল। আমাদের দেশের রাজনীতিতে বড় অভিঘাত তৈরি করেছিল। ডিসেম্বর আমাদের কাছে বিজয়ের মাস হিসেবে পরিচিত, ডিসেম্বর মাসই বিজয়ের ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিল। আবার ডিসেম্বরে
০৫ ডিসেম্বর ২০২১
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

ডিসেম্বর মাস এলেই আমার কাছে তিন বছরের তিনটি ডিসেম্বরের স্মৃতি উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। তিনটি ডিসেম্বরের তিন ঘটনা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রভাব বিস্তার করেছিল। আমাদের দেশের রাজনীতিতে বড় অভিঘাত তৈরি করেছিল। ডিসেম্বর আমাদের কাছে বিজয়ের মাস হিসেবে পরিচিত, ডিসেম্বর মাসই বিজয়ের ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিল। আবার ডিসেম্বরে
০৫ ডিসেম্বর ২০২১
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ডিসেম্বর মাস এলেই আমার কাছে তিন বছরের তিনটি ডিসেম্বরের স্মৃতি উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। তিনটি ডিসেম্বরের তিন ঘটনা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রভাব বিস্তার করেছিল। আমাদের দেশের রাজনীতিতে বড় অভিঘাত তৈরি করেছিল। ডিসেম্বর আমাদের কাছে বিজয়ের মাস হিসেবে পরিচিত, ডিসেম্বর মাসই বিজয়ের ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিল। আবার ডিসেম্বরে
০৫ ডিসেম্বর ২০২১
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

ডিসেম্বর মাস এলেই আমার কাছে তিন বছরের তিনটি ডিসেম্বরের স্মৃতি উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। তিনটি ডিসেম্বরের তিন ঘটনা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রভাব বিস্তার করেছিল। আমাদের দেশের রাজনীতিতে বড় অভিঘাত তৈরি করেছিল। ডিসেম্বর আমাদের কাছে বিজয়ের মাস হিসেবে পরিচিত, ডিসেম্বর মাসই বিজয়ের ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিল। আবার ডিসেম্বরে
০৫ ডিসেম্বর ২০২১
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫