ফারুক মেহেদী

আজ ওরা যখন কঠিন মনোবল আর আবেগের বিস্ফোরণে বিপন্নপ্রায়, ওরা যখন নিজেদের অধিকার আদায়ে মৃত্যুর সঙ্গে সন্ধি করছে; আমার তখন প্রায় ২৬ বছর আগের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়ছে! ছিমছাম, সবুজ, সুন্দর, নির্মল প্রকৃতি। উঁচু-নিচু টিলা আর সমতলের মেলবন্ধনে অপূর্ব নৈসর্গিক ল্যান্ডস্কেপ। বিকেল হলেই এলএইচের (লেডিস হল) রাস্তায় জুটিদের হাত ধরে হাঁটাহাঁটি, প্রেম বিনিময়। ওই সময় ছেলেদের কাছে প্রেম ছিল সোনার হরিণ! ছেলেরা প্রেমে পড়ত আর মেয়েরা প্রেম করত, মানে সংখ্যায় ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা অনেক কম হওয়ায়, একজন মেয়ের জন্য একই সময়ে অনেক ছেলের প্রেমের অফার পাওয়ার ঘটনাই ছিল সবচেয়ে বেশি। তো ভাগ্যবান কোনো জুটি ক্যাম্পাসের এখানে-সেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা প্রেম করছে—এ দৃশ্য প্রেমহীন বেশির ভাগ ছেলের কাছে ছিল ঈর্ষার বিষয়! তারপরও রোমান্টিক ওই সব দৃশ্য কাউকে কাউকে অপ্রার্থিব ভালো লাগায় ভরিয়ে দিত! মনে হতো–আহা, আমাদের না হয় প্রেম নেই–ওরা তো করছে, মন্দ কী!
তখন প্রেমহীন ছেলেদের শ্রান্তি-বিনোদন বলতে প্রধান ফটকের দিকে এক কিমি হেঁটে যাওয়া, টঙে বসে জম্পেশ আড্ডা, বিকেলের বাসে চড়ে শহর ঘুরে আসা, বিডিআরের সিনেমা হলে সন্ধ্যারাতে এক টিকিটে দুটি সিনেমা দেখা, সেখানের দর্শক সারিতে কখনো কখনো কোনো শিক্ষককে পেয়ে গিয়ে না দেখার ভান করা–এসবই ছিল ভালো লাগায় ভরপুর এক ক্যাম্পাসজীবন। ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাই সবাইকে চেনেন। দেখা হলেই কথাবার্তা, খোঁজখবর অসম্ভব আন্তরিকতাপূর্ণ সম্পর্ক। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছে তাঁদের শিক্ষকেরা ছিলেন অভিভাবকতুল্য। মিনি অডিটরিয়ামে ছাত্র-শিক্ষকেরা উৎসাহের সঙ্গে রম্য বিতর্ক করতেন। ছাত্ররাজনীতি ছিল, তবে তা ছিল অনেকটাই শৃঙ্খলিত। ভিন্নমত থাকলেও সবার সঙ্গে সবার বন্ধুত্বটাই ছিল সবকিছুর ঊর্ধ্বে। কোনো ভবনের দেয়ালে কেউ স্লোগান লেখা বা চিকা মারতে পারত না। এ আইন সবাই মেনে চলত। শিক্ষকদের অবাধ্য হয়ে কেউ কথা বলত না। অন্য দেশের সঙ্গে খেলায় বাংলাদেশ জিতে গেলে দল-মত-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবাই উৎসবে মাতোয়ারা হতো। ছাত্র-শিক্ষক ভেদাভেদ ভুলে একে অপরের মুখে রং মাখত! আর তখন প্রগতিশীল চিন্তা ও মুক্ত সংস্কৃতিচর্চার নেতৃত্বের সামনে থাকায় আমরা তখন ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যারসহ আরও অনেককে আমাদের নায়ক মানতাম। কিছু হলেই আমরা তাঁদের কাছে ছুটে যেতাম! তাঁরা যা বলতেন, আমরা তা-ই করতাম। শ্রদ্ধা, ভালোবাসায় তাঁরাই ছিলেন আমাদের আদর্শ। সম্ভবত এ সম্পর্কগুলো এখন প্রশ্নবিদ্ধ!
একবার হল ও ভবনের নামকরণ আন্দোলনে টানা সাত মাস বন্ধ ছিল ক্যাম্পাস। একবার আওয়ামী লীগ সরকার থাকার মধ্যেও ছাত্রলীগ-ছাত্রদল সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকে ক্যাম্পাস থেকে বহিষ্কার করা হয়। কোনো চাপের মুখে তদন্ত কমিটির প্রধান ড. জাফর ইকবাল স্যারকে টলানো যায়নি। তারপরও ছাত্রলীগ জাফর স্যারের প্রতি ক্ষোভ ও অসন্তোষ পুষে রাখেনি। আবারও তাঁকে শ্রদ্ধাভরে গ্রহণ করে শিক্ষা কার্যক্রমে সবাই স্বাভাবিক থেকেছে। টানা অবরোধে উপাচার্যসহ সিনিয়র শিক্ষকেরা অবরুদ্ধ থাকলেও পুলিশ দিয়ে আন্দোলন থামানো হয়নি।
এ রকম অসংখ্য ঘটনায় ছাত্ররা যেমন স্যারদের সহায়তা করেছে, তেমনি শিক্ষকেরাও ছাত্রদের কখনো প্রতিপক্ষ ভাবেননি। পুলিশ দিয়ে পেটানো দূরের কথা; বরং ক্যাম্পাসে পুলিশ এলেই ছাত্র-শিক্ষক এক সুরে এর প্রতিবাদ করতেন। নিজেদের সমস্যা নিজেরা সমাধান করতেন।
প্রায় দুই দশক আগে ছেড়ে আসা ওই ক্যাম্পাসে কয়েক দিন ধরে যা ঘটছে, তাতে রীতিমতো বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি। গণমাধ্যমে যা দেখছি, শুনছি–তা এককথায় অপ্রত্যাশিত এবং হতাশাজনক। ছাত্রীদের সাধারণ কয়েকটি সমাধানযোগ্য দাবি নিয়ে আলোচনা না করে, প্রতিরোধ ও দমনের মধ্য দিয়ে পুরো ছাত্রসমাজকে প্রতিপক্ষ করা হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে। আমি মনে করি, এটা রীতিমতো সামন্ততান্ত্রিক মনোভাব ও চূড়ান্ত অদূরদর্শিতা। ক্যাম্পাসের সাবেক গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে এ রকম অসংখ্য ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীর অভিজ্ঞতায় বলতে পারি, এর আগে ওই ক্যাম্পাসেই ঘটে যাওয়া এর চেয়েও জটিল ও স্পর্শকাতর অঘটনও এমন নৃশংসভাবে মোকাবিলা করতে হয়নি। শীর্ষ পর্যায়ে সংযম, ধৈর্য আর সহনশীলতার এতটা অভাব এবারই প্রথম দেখলাম।
যে প্রাসাদে এখন উপাচার্য মহোদয় বসবাস করেন, মনে পড়ছে প্রায় ২১-২২ বছর আগে একবার ছাত্র আন্দোলনে ওই প্রাসাদে ভাঙচুর করা হয়। এখন যে গাছগুলো বিশাল মহিরুহ হয়েছে, সেগুলো তখন লকলক করে উঠছিল–সেগুলোরও মাথা কেটে ফেলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। তখনকার উপাচার্য অধ্যাপক হাবিবুর রহমান স্যারের তাতে বিন্দুমাত্র ধৈর্যচ্যুতি ঘটেনি। পুলিশ ডেকে এনে ছাত্রদের পেটানো হয়নি। এলাকাবাসীর সঙ্গে ঘটা আরেকটি আন্দোলনে আহত ছাত্রদের দেখতে তিনি রাত আড়াইটায় ওসমানী হাসপাতালে ছুটে গেছেন। তাতে তিনি ছোট হয়ে যাননি। তাঁর উদারতা ও মমতামাখা দায়িত্বশীলতাই প্রকাশ পেয়েছিল।
আজ কী দেখছি? আজ দেখছি আন্দোলনের শুরুতেই উপাচার্য মহোদয় ধৈর্যহারা। মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টার অবরুদ্ধ জীবন থেকে মুক্তি পেতে তিনি পুলিশ দিয়ে নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীদের ওপর নির্বিচারে রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড, শটগানের গুলি ছুড়ে তাদের আহত করলেন! এত দিনে তাদের দেখতে যাওয়া দূরের কথা, সমবেদনা পর্যন্ত জানাননি।
এর প্রতিক্রিয়ায় শিক্ষার্থীরা এখন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশন করছেন। এরই মধ্যে শিক্ষার্থীরা একে একে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। অনশনস্থল থেকে থেমে থেমে অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন বাজছে। এ লেখা পর্যন্ত অন্তত ১৫ জন অনশনকারী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। যাঁরা এখনো অনশনস্থলে আছেন, তাঁদের শরীর জীর্ণ, ফ্যাকাশে কিন্তু চোখে-মুখে কঠিন মনোবল। তাঁরা বলছেন, মরে যাবেন, তবু আন্দোলন ছেড়ে যাবেন না! কী ভয়ংকর শক্ত প্রাণশক্তি!
অথচ দেয়ালের ওপারে ছায়াঘেরা সুরম্য ওই প্রাসাদে উপাচার্য মহোদয় নির্বিকার, ভূমিকাহীন। তিনি দীর্ঘ শিক্ষকতায় সমৃদ্ধ, অথচ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মনের ভাষা পড়তে পারছেন না। তাঁরা যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন, অথচ তিনি হয়তো বসে বসে টিভি দেখছেন, না হলে বই পড়ছেন! তাঁর চোখের দূরত্বে দেয়ালের এপারে নিজ ক্যাম্পাসের ২০-২২ বছরের আবেগপ্রবণ অভুক্ত শিক্ষার্থীদের মনের ভেতরের দ্রোহ আর ক্ষোভের লেলিহান শিখায় তাঁরা পুড়ছেন, অথচ তিনি একচুলও নড়ছেন না। খিদের জ্বালায় তাঁদের ডুকরে ওঠা গোঙানি তাঁর কানে পৌঁছাচ্ছে না। তিনি হয়তো পণ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কেউ যদি মরেও যায়, তবু তিনি স্নিগ্ধ কণ্ঠে দরজাটি খুলে, তাঁদের মাথায় হাত বোলাতে যাবেন না। তিনি হয়তো ভাবছেন বিনা কারণে কেনই-বা নিজেকে ছোট করবেন তাঁদের কাছে! তিনি তো উপাচার্য। তাঁর তো আপস মানায় না। যদি এমনটি না হতো তাহলে তিনি হয়তো এত সময় নিতেন না। একজন মানবিক মানুষের এত সময় নেওয়ার কথা নয়। যাঁরা তাঁকে চান না, যাঁদের মনে তাঁর প্রতি ক্ষোভ কিংবা দ্রোহের উদ্রেক হয়েছে, সেখানে ক্ষমতাকে তুচ্ছ করে সাধারণের কাতারে ফেরা তাঁর জন্য হয়তো কঠিনই বটে।
আমাকে আমাদের সমসাময়িক অনেকে কয়েক দিন ধরে ফোন করছেন। তাঁদের অনুরোধ, বড় কোনো দুর্ঘটনার আগে, কারও মৃত্যু বা এ রকম অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটার আগেই, যত দ্রুত সম্ভব সমস্যাটির যাতে সমাধান হয়, এমন ব্যবস্থা করা। সম্ভব হলে সরকারের শীর্ষ কারও সঙ্গে কথা বলে কিছু করা যায় কি না, তা দেখা। আসলে কে করবে ব্যবস্থা? কার কথা কে শোনে? উপাচার্য মহোদয় তো নিজেই সমস্যার সমাধান করতে পারেন। তিনি নিজেই এখন সমস্যার কেন্দ্রে। অনশনকারীদের একটাই দাবি–তিনি যেন চলে যান। এখন তিনি তা আমলে নিচ্ছেন না বলেই আন্দোলনটি এখনো শেষ হচ্ছে না! হয়তো তিনি এর শেষ দেখতে চান। এর আসলে শেষ কোথায়? ওরা কী তবে জীবন দিয়ে তাঁদের দাবি প্রতিষ্ঠা করে যাবেন? এটাই চান উপাচার্য মহোদয়? তাঁদের ‘মরিয়া প্রমাণ করিতে হইবে’ যে তাঁরা যে আন্দোলন করছিলেন, সেটি শেষ পর্যন্ত সঠিক। এটুকু না দেখা পর্যন্ত তিনি কি নমনীয় হবেন না? তিনি কি নিজের হৃদয়খানিকে একটু কোমল করে সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে তাঁদের তৃষ্ণার্ত মুখে পানি তুলে দেওয়ার চেষ্টাটাও করতে পারেন না? তাঁরা কী তবে মরে যাবেন?
লেখক: ফারুক মেহেদী,সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা

আজ ওরা যখন কঠিন মনোবল আর আবেগের বিস্ফোরণে বিপন্নপ্রায়, ওরা যখন নিজেদের অধিকার আদায়ে মৃত্যুর সঙ্গে সন্ধি করছে; আমার তখন প্রায় ২৬ বছর আগের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়ছে! ছিমছাম, সবুজ, সুন্দর, নির্মল প্রকৃতি। উঁচু-নিচু টিলা আর সমতলের মেলবন্ধনে অপূর্ব নৈসর্গিক ল্যান্ডস্কেপ। বিকেল হলেই এলএইচের (লেডিস হল) রাস্তায় জুটিদের হাত ধরে হাঁটাহাঁটি, প্রেম বিনিময়। ওই সময় ছেলেদের কাছে প্রেম ছিল সোনার হরিণ! ছেলেরা প্রেমে পড়ত আর মেয়েরা প্রেম করত, মানে সংখ্যায় ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা অনেক কম হওয়ায়, একজন মেয়ের জন্য একই সময়ে অনেক ছেলের প্রেমের অফার পাওয়ার ঘটনাই ছিল সবচেয়ে বেশি। তো ভাগ্যবান কোনো জুটি ক্যাম্পাসের এখানে-সেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা প্রেম করছে—এ দৃশ্য প্রেমহীন বেশির ভাগ ছেলের কাছে ছিল ঈর্ষার বিষয়! তারপরও রোমান্টিক ওই সব দৃশ্য কাউকে কাউকে অপ্রার্থিব ভালো লাগায় ভরিয়ে দিত! মনে হতো–আহা, আমাদের না হয় প্রেম নেই–ওরা তো করছে, মন্দ কী!
তখন প্রেমহীন ছেলেদের শ্রান্তি-বিনোদন বলতে প্রধান ফটকের দিকে এক কিমি হেঁটে যাওয়া, টঙে বসে জম্পেশ আড্ডা, বিকেলের বাসে চড়ে শহর ঘুরে আসা, বিডিআরের সিনেমা হলে সন্ধ্যারাতে এক টিকিটে দুটি সিনেমা দেখা, সেখানের দর্শক সারিতে কখনো কখনো কোনো শিক্ষককে পেয়ে গিয়ে না দেখার ভান করা–এসবই ছিল ভালো লাগায় ভরপুর এক ক্যাম্পাসজীবন। ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাই সবাইকে চেনেন। দেখা হলেই কথাবার্তা, খোঁজখবর অসম্ভব আন্তরিকতাপূর্ণ সম্পর্ক। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছে তাঁদের শিক্ষকেরা ছিলেন অভিভাবকতুল্য। মিনি অডিটরিয়ামে ছাত্র-শিক্ষকেরা উৎসাহের সঙ্গে রম্য বিতর্ক করতেন। ছাত্ররাজনীতি ছিল, তবে তা ছিল অনেকটাই শৃঙ্খলিত। ভিন্নমত থাকলেও সবার সঙ্গে সবার বন্ধুত্বটাই ছিল সবকিছুর ঊর্ধ্বে। কোনো ভবনের দেয়ালে কেউ স্লোগান লেখা বা চিকা মারতে পারত না। এ আইন সবাই মেনে চলত। শিক্ষকদের অবাধ্য হয়ে কেউ কথা বলত না। অন্য দেশের সঙ্গে খেলায় বাংলাদেশ জিতে গেলে দল-মত-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবাই উৎসবে মাতোয়ারা হতো। ছাত্র-শিক্ষক ভেদাভেদ ভুলে একে অপরের মুখে রং মাখত! আর তখন প্রগতিশীল চিন্তা ও মুক্ত সংস্কৃতিচর্চার নেতৃত্বের সামনে থাকায় আমরা তখন ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যারসহ আরও অনেককে আমাদের নায়ক মানতাম। কিছু হলেই আমরা তাঁদের কাছে ছুটে যেতাম! তাঁরা যা বলতেন, আমরা তা-ই করতাম। শ্রদ্ধা, ভালোবাসায় তাঁরাই ছিলেন আমাদের আদর্শ। সম্ভবত এ সম্পর্কগুলো এখন প্রশ্নবিদ্ধ!
একবার হল ও ভবনের নামকরণ আন্দোলনে টানা সাত মাস বন্ধ ছিল ক্যাম্পাস। একবার আওয়ামী লীগ সরকার থাকার মধ্যেও ছাত্রলীগ-ছাত্রদল সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকে ক্যাম্পাস থেকে বহিষ্কার করা হয়। কোনো চাপের মুখে তদন্ত কমিটির প্রধান ড. জাফর ইকবাল স্যারকে টলানো যায়নি। তারপরও ছাত্রলীগ জাফর স্যারের প্রতি ক্ষোভ ও অসন্তোষ পুষে রাখেনি। আবারও তাঁকে শ্রদ্ধাভরে গ্রহণ করে শিক্ষা কার্যক্রমে সবাই স্বাভাবিক থেকেছে। টানা অবরোধে উপাচার্যসহ সিনিয়র শিক্ষকেরা অবরুদ্ধ থাকলেও পুলিশ দিয়ে আন্দোলন থামানো হয়নি।
এ রকম অসংখ্য ঘটনায় ছাত্ররা যেমন স্যারদের সহায়তা করেছে, তেমনি শিক্ষকেরাও ছাত্রদের কখনো প্রতিপক্ষ ভাবেননি। পুলিশ দিয়ে পেটানো দূরের কথা; বরং ক্যাম্পাসে পুলিশ এলেই ছাত্র-শিক্ষক এক সুরে এর প্রতিবাদ করতেন। নিজেদের সমস্যা নিজেরা সমাধান করতেন।
প্রায় দুই দশক আগে ছেড়ে আসা ওই ক্যাম্পাসে কয়েক দিন ধরে যা ঘটছে, তাতে রীতিমতো বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি। গণমাধ্যমে যা দেখছি, শুনছি–তা এককথায় অপ্রত্যাশিত এবং হতাশাজনক। ছাত্রীদের সাধারণ কয়েকটি সমাধানযোগ্য দাবি নিয়ে আলোচনা না করে, প্রতিরোধ ও দমনের মধ্য দিয়ে পুরো ছাত্রসমাজকে প্রতিপক্ষ করা হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে। আমি মনে করি, এটা রীতিমতো সামন্ততান্ত্রিক মনোভাব ও চূড়ান্ত অদূরদর্শিতা। ক্যাম্পাসের সাবেক গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে এ রকম অসংখ্য ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীর অভিজ্ঞতায় বলতে পারি, এর আগে ওই ক্যাম্পাসেই ঘটে যাওয়া এর চেয়েও জটিল ও স্পর্শকাতর অঘটনও এমন নৃশংসভাবে মোকাবিলা করতে হয়নি। শীর্ষ পর্যায়ে সংযম, ধৈর্য আর সহনশীলতার এতটা অভাব এবারই প্রথম দেখলাম।
যে প্রাসাদে এখন উপাচার্য মহোদয় বসবাস করেন, মনে পড়ছে প্রায় ২১-২২ বছর আগে একবার ছাত্র আন্দোলনে ওই প্রাসাদে ভাঙচুর করা হয়। এখন যে গাছগুলো বিশাল মহিরুহ হয়েছে, সেগুলো তখন লকলক করে উঠছিল–সেগুলোরও মাথা কেটে ফেলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। তখনকার উপাচার্য অধ্যাপক হাবিবুর রহমান স্যারের তাতে বিন্দুমাত্র ধৈর্যচ্যুতি ঘটেনি। পুলিশ ডেকে এনে ছাত্রদের পেটানো হয়নি। এলাকাবাসীর সঙ্গে ঘটা আরেকটি আন্দোলনে আহত ছাত্রদের দেখতে তিনি রাত আড়াইটায় ওসমানী হাসপাতালে ছুটে গেছেন। তাতে তিনি ছোট হয়ে যাননি। তাঁর উদারতা ও মমতামাখা দায়িত্বশীলতাই প্রকাশ পেয়েছিল।
আজ কী দেখছি? আজ দেখছি আন্দোলনের শুরুতেই উপাচার্য মহোদয় ধৈর্যহারা। মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টার অবরুদ্ধ জীবন থেকে মুক্তি পেতে তিনি পুলিশ দিয়ে নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীদের ওপর নির্বিচারে রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড, শটগানের গুলি ছুড়ে তাদের আহত করলেন! এত দিনে তাদের দেখতে যাওয়া দূরের কথা, সমবেদনা পর্যন্ত জানাননি।
এর প্রতিক্রিয়ায় শিক্ষার্থীরা এখন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশন করছেন। এরই মধ্যে শিক্ষার্থীরা একে একে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। অনশনস্থল থেকে থেমে থেমে অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন বাজছে। এ লেখা পর্যন্ত অন্তত ১৫ জন অনশনকারী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। যাঁরা এখনো অনশনস্থলে আছেন, তাঁদের শরীর জীর্ণ, ফ্যাকাশে কিন্তু চোখে-মুখে কঠিন মনোবল। তাঁরা বলছেন, মরে যাবেন, তবু আন্দোলন ছেড়ে যাবেন না! কী ভয়ংকর শক্ত প্রাণশক্তি!
অথচ দেয়ালের ওপারে ছায়াঘেরা সুরম্য ওই প্রাসাদে উপাচার্য মহোদয় নির্বিকার, ভূমিকাহীন। তিনি দীর্ঘ শিক্ষকতায় সমৃদ্ধ, অথচ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মনের ভাষা পড়তে পারছেন না। তাঁরা যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন, অথচ তিনি হয়তো বসে বসে টিভি দেখছেন, না হলে বই পড়ছেন! তাঁর চোখের দূরত্বে দেয়ালের এপারে নিজ ক্যাম্পাসের ২০-২২ বছরের আবেগপ্রবণ অভুক্ত শিক্ষার্থীদের মনের ভেতরের দ্রোহ আর ক্ষোভের লেলিহান শিখায় তাঁরা পুড়ছেন, অথচ তিনি একচুলও নড়ছেন না। খিদের জ্বালায় তাঁদের ডুকরে ওঠা গোঙানি তাঁর কানে পৌঁছাচ্ছে না। তিনি হয়তো পণ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কেউ যদি মরেও যায়, তবু তিনি স্নিগ্ধ কণ্ঠে দরজাটি খুলে, তাঁদের মাথায় হাত বোলাতে যাবেন না। তিনি হয়তো ভাবছেন বিনা কারণে কেনই-বা নিজেকে ছোট করবেন তাঁদের কাছে! তিনি তো উপাচার্য। তাঁর তো আপস মানায় না। যদি এমনটি না হতো তাহলে তিনি হয়তো এত সময় নিতেন না। একজন মানবিক মানুষের এত সময় নেওয়ার কথা নয়। যাঁরা তাঁকে চান না, যাঁদের মনে তাঁর প্রতি ক্ষোভ কিংবা দ্রোহের উদ্রেক হয়েছে, সেখানে ক্ষমতাকে তুচ্ছ করে সাধারণের কাতারে ফেরা তাঁর জন্য হয়তো কঠিনই বটে।
আমাকে আমাদের সমসাময়িক অনেকে কয়েক দিন ধরে ফোন করছেন। তাঁদের অনুরোধ, বড় কোনো দুর্ঘটনার আগে, কারও মৃত্যু বা এ রকম অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটার আগেই, যত দ্রুত সম্ভব সমস্যাটির যাতে সমাধান হয়, এমন ব্যবস্থা করা। সম্ভব হলে সরকারের শীর্ষ কারও সঙ্গে কথা বলে কিছু করা যায় কি না, তা দেখা। আসলে কে করবে ব্যবস্থা? কার কথা কে শোনে? উপাচার্য মহোদয় তো নিজেই সমস্যার সমাধান করতে পারেন। তিনি নিজেই এখন সমস্যার কেন্দ্রে। অনশনকারীদের একটাই দাবি–তিনি যেন চলে যান। এখন তিনি তা আমলে নিচ্ছেন না বলেই আন্দোলনটি এখনো শেষ হচ্ছে না! হয়তো তিনি এর শেষ দেখতে চান। এর আসলে শেষ কোথায়? ওরা কী তবে জীবন দিয়ে তাঁদের দাবি প্রতিষ্ঠা করে যাবেন? এটাই চান উপাচার্য মহোদয়? তাঁদের ‘মরিয়া প্রমাণ করিতে হইবে’ যে তাঁরা যে আন্দোলন করছিলেন, সেটি শেষ পর্যন্ত সঠিক। এটুকু না দেখা পর্যন্ত তিনি কি নমনীয় হবেন না? তিনি কি নিজের হৃদয়খানিকে একটু কোমল করে সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে তাঁদের তৃষ্ণার্ত মুখে পানি তুলে দেওয়ার চেষ্টাটাও করতে পারেন না? তাঁরা কী তবে মরে যাবেন?
লেখক: ফারুক মেহেদী,সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

আজ ওরা যখন কঠিন মনোবল আর আবেগের বিস্ফোরণে বিপন্নপ্রায়, ওরা যখন নিজেদের অধিকার আদায়ে মৃত্যুর সঙ্গে সন্ধি করছে; আমার তখন প্রায় ২৬ বছর আগের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়ছে! ছিমছাম, সবুজ, সুন্দর, নির্মল প্রকৃতি। উঁচু-নিচু টিলা আর সমতলের মেলবন্ধনে অপূর্ব নৈসর্গিক ল্যান্ডস্কেপ।
২৪ জানুয়ারি ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

আজ ওরা যখন কঠিন মনোবল আর আবেগের বিস্ফোরণে বিপন্নপ্রায়, ওরা যখন নিজেদের অধিকার আদায়ে মৃত্যুর সঙ্গে সন্ধি করছে; আমার তখন প্রায় ২৬ বছর আগের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়ছে! ছিমছাম, সবুজ, সুন্দর, নির্মল প্রকৃতি। উঁচু-নিচু টিলা আর সমতলের মেলবন্ধনে অপূর্ব নৈসর্গিক ল্যান্ডস্কেপ।
২৪ জানুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

আজ ওরা যখন কঠিন মনোবল আর আবেগের বিস্ফোরণে বিপন্নপ্রায়, ওরা যখন নিজেদের অধিকার আদায়ে মৃত্যুর সঙ্গে সন্ধি করছে; আমার তখন প্রায় ২৬ বছর আগের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়ছে! ছিমছাম, সবুজ, সুন্দর, নির্মল প্রকৃতি। উঁচু-নিচু টিলা আর সমতলের মেলবন্ধনে অপূর্ব নৈসর্গিক ল্যান্ডস্কেপ।
২৪ জানুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আজ ওরা যখন কঠিন মনোবল আর আবেগের বিস্ফোরণে বিপন্নপ্রায়, ওরা যখন নিজেদের অধিকার আদায়ে মৃত্যুর সঙ্গে সন্ধি করছে; আমার তখন প্রায় ২৬ বছর আগের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়ছে! ছিমছাম, সবুজ, সুন্দর, নির্মল প্রকৃতি। উঁচু-নিচু টিলা আর সমতলের মেলবন্ধনে অপূর্ব নৈসর্গিক ল্যান্ডস্কেপ।
২৪ জানুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫